‘দ্বিতীয় বিপ্লব’!!
- তানিম এহসান
ঘোর কলিকাল - নষ্টামীর এই দারুন সময়ে আজ তুমি কি লিখো,
কি লিখে ক্রোধের জল - নিজেকে সামলাও কবি?
এখানে ধানের ছড়ার মতন উন্মুখ উনুনেও বিলাপ,
এখানে ভিন্ন রাগে প্রতিদিন কাঁদে মানবতা,
প্রতিরাতে কোন এক নতুন নারী সুবাস বিকিকিনির
হাটে নতমুখে হেটে যায়; ধর্ষিতাকে আবার ধর্ষন করে সমাজ আর রাষ্ট্রযন্ত্র;
কচুর লতিতে লতিতে নুন মাখা নুন যায় শেষ হয়ে,
মরিচের আঘ্রানে আর রুচি মেখে খায়না ভাত
শতকরা আশিভাগ মানুষ - সাধ্যে জোটেনা
ইলিশের মওসুমে ইলিশ আর কত গাছ-মাছ হারিয়ে গেছে
সবুজ বিপ্লবের নামে ।
আরো কত বিপ্লবএসেছে প্রতিদিন সাত সমুদ্র তের নদী
পেরিয়ে - বাংলাদেশ ভিখীরি আছে আজ চল্লিশ বছর!
পুরনো রাজাকার যত ঝাড়ে-বংশে বেড়ে বেড়ে প্রচার প্রসারে
এখনও রাজনীতি করে, জেলে বসে বাড়ীর ভাত খায় আর
তাদের পা টেপে, মাথা বানায় যারা তাদেরও আস্ফালন দেখি,
দেখে দেখে মরে যায় কোন এক বোধ -
বোধেরওতো দাম আছে তবু তারা তুল্য-মূল্যহীন আজ।
চোখে ধুলো পড়ে, বারবার ঘষাকাঁচ চোখদুটি তাকিয়ে দেখে
স্ফিত উদরে উদরে তবু রাজ্যের খিদে নিয়ে রাজনীতি করে একদল
কপট মানুষ, আর তাদের ঝুটা ভাত কাড়াকাড়ি করে খায়
শিক্ষক, শিল্পী, লেখক, কবি আর কিছু ‘বুদ্ধি’যুক্ত কলসীর কানা;
যতটা বলার থাকে তারও বেশী কথা বলে কথা বলা বাক্স,
ছাপার অক্ষরে অক্ষরে মিথ্যার বেসাতি করে ছাপযন্ত্র আর
মুখোশ লুকিয়ে লুকিয়ে ডালে ডালে চরে বসে তার কারিগররা -
প্রতিদিন সকালে সকালে সেই কারিগরী তেতুলিয়া থেকে টেকনাফ
জুড়ে চায়ের টেবিলে টেবিলে, ঘরে, বাইরে পড়ে নাদান মানুষ।
পাছার কাপড় খুলে ষ্টাইল করে অগণিত পুরুষেরা - চোখের মর্যাদা হারিয়ে,
এখানে নাক দিয়ে গান গেয়ে “শেল্পীরা” প্রতিষ্ঠা পায় আর ‘ডিজিটালি’
গান গায়; সবকিছু ‘ডিজিটাল’ হয়ে পড়ে, মায় রাষ্ট্রের চরিত্র;
ভাই-বোন আর বেরাদরে ছেয়ে গেছে হাট-বাজার, চোখতুলে চাইবার জো নেই,
যারা চাইতে জানেনা তারাই শান্তিতে ঘুমিয়ে কাটায় রাতের পর রাত
যারা বলতে জানেনা তারাই ভালো আছে এখন
যারা বুঝতে জানেনা তাদের ঘরে ঘরে চর্চিত ভিনদেশী ভাষা,
জুবুথুবু “বাংলা” শুধু একুশে ফেব্রুয়ারীর অপেক্ষায় প্রহর গোনে।
দুইপাতা ধর্ম শিখে ব্যবসায় হাত পাকে যার তারা আজ ভালো ব্যবসায়ী,
তাদের সীকৃতি দিতে সংবিধান নিয়ে আড়ালে আড়ালে খেলে সব খেলোয়াড়।
যারা দেখতে জানেনা তাদের আর কোন দুঃখবোধ নেই
যারা শুনতে জানেনা তারা সব দ্রোহহীন কোন এক
প্রেম করে, সুখী হয় - বাজারে যেকোন দামে কেনে সব।
আর যারা পেতে জানেনা তারা দিতেও ভুলে গেছে আজ,
যাদের বোধ আছে তারা আজ নিদ্রাহীন সবচেয়ে বেশী,
যাদের মনন আছে তারা আজ বেঁচে আছে সঙ্গীহীন, একাকী -
যারা আজন্ম আগুনে আগুনে খুঁজেছে সবটুকু জল
তাদের আকাশে আজ থেমে থেমে বৃষ্টিহীন মেঘ আসে।
বাংলাদেশ! জননী জন্মভূমি আমার, প্রথম প্রেমের লজ্জা
গর্ব আর সাহসের পদাবলী তুমি - কোথায় এসেছো চলে?
আরো কতদূল গেলে পড়ে তোমার আঁচলে আবার
মুখ মুছে নিতে প্রবল উদ্যমে করে যাব চাষবাস -
গর্বিত হেটে যাব আল বেয়ে, জল বেয়ে, আর মেখে
তোমার মাটিতে মাটিতে সোঁদাগন্ধ জ্বোনাকীর ফুল?
চল্লিশ বছর চলে গেছে দেখে দেখে, সয়ে সয়ে -
আর কত?
জেগে উঠো অঙ্গে-প্রত্যঙ্গে, কোষে-কোষে, শিরায়,
ধমনীতে, প্রতিটি শ্বেত আর লোহিত রক্ত কণিকায়
ইতিহাসের সূচারু অহংকারে আবার সজ্জিত কর
তোমার তোমাকে; আবারও ইতিহাস হও -
মাতাল বিপ্লবে!!
- বরিশাল, ১৩.০৭.২০০১
মন্তব্য
ভালো লিখেছেন তানিম। আমিও আপনার শেষ স্তবকের মতো আশাবাদী।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
ধন্যবাদ - ইদানীং দেখার চাইতে বোঝা হয় বেশী!!
সকল নক্ষত্র পুড়িয়ে বিপ্লবের অগ্নেয়গিরি জ্বালাতেই হবে.................
এভাবে আর ক্ষতবিক্ষত হতে পারি না........... দারুণ তানিম ভাই.............
ওহে ইষৎ! তোমাকে পূর্ণভাবে ধন্যবাদ জানানো হইলো!
ভাল হয়েছে।
বাহ। আপনার আরো লিখার অপেক্ষায় থাকবো।
আবারও, তর্জনী আকাশে লিখুক মুক্তির সনদ!
আশায় বাঁধি আশা.........
আয়নামতি আপা! ইয়াল্লা, আপনি আমার বাড়ীতে! চোখে দেখছি কিন্তু একটা উয়ীদ লাঠি নিয়ে আপনাকে তেড়ে আসতে দেখার দুঃসপ্নেরা আমাকে বিশ্বাস করতে দিচ্ছেনা। “কি যাতনা কিসে, বোঝে কোন মিনসে - উয়ীদ লাঠি দৌড়ায়নি যারে!” - আমি আপনার হুংকারের পাশাপাশি আরও একটা আওয়াজ শুনতাম - নারদ নারদ এবং মনে মনে নিশ্চিত জানতাম এইটা তিথীডোর আপার গলা।
আমি আপনার “কামিং সুনননননন” - এই রণহুংকারের পরবর্তী সময়ে নিজের পিঠে ছালা বাধিয়া ঘুরিয়াছি এবং চুপিচুপি একদিন সচলে আসিয়া আপনার দাগানো ”নোটিশের” কারন দর্শাইয়া গিয়াছি। আমাদের বোঝাবুঝিতে “ভ্রেম” (কপিরাইট ভানু) হইয়াছিলো।
যাই হোক বাড়ীতে যখন এসে পড়েছেন তখন পিঠের ছালা খুলিয়া নির্ভয় নিঃশঙ্কচিত্তে আপনার জন্য গরমাগরম ডাবল ডিম দিয়া মোগলাই, ঠাটারীবাজারের ষ্টারের ফালুদা, আর বিউটি লাচ্ছিঘরের লাচ্ছি নিয়া আসি। রাজশাহী হইতে কিছু রানীপসন্দ আম আনা হইয়াছিলো, যাইবার সময় বাক্সেভরে আপনার সাথে দিয়া দিবো। কিন্তু তিথীডোরকে কোনকিছুই দিবোনা
আপা, আপনার লেখা বড় ভালো পাই!
অনেক ধন্যবাদ!!
ঐ মিয়া, জানেন না, খাওয়া-দাওয়া বিষয়ে আমাকে ট্যাক্স দিতে হয়? ফাঁকিবাজি করলেই আইপিসহ ব্যানের দাবী তুলুম
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
ট্যাক্সো দিতে পারি না ভাই, তবে খাওয়াইতে খুবই পছন্দ করি।
কি খাইবেন কন? এখনতো দুপুর বেলা, ফ্রিজে কাচাঁ আম জমান্তিস আছে কিছু, সরবত বানায়ে দেই। ক্যামেরাটা মুখের সামনে থেকে সরায়ে যুত করে বসেন, আপনের চেহারাইতো দেখতে পারিনা; বরফকুছি সহ সরবত আআরাহা হ্যায়!! চলেঙ্গে?
এত্তোবড়ো হা করলে আপনারে খাওন দিব কে কনতো দেখি। হা ডা একটু ছুটু করেন, আমি দেখি দুধ-কলা কিছু পাওন যায় কিনা
অবশ্যি এইরকম একটা “হা”য়ের সামনে পরিমল, হোসনে আরা কিংবা সাইদী-নিযামী-গোআযম-কাদের-কাশেম ইত্যাকার প্রাণীদের ধরে ধরে ফেলাইতে পারলে কিন্তু ঝাড়পোছ পুরোপুরি শেষ হয়। আছেন নিকি?
বানান খেয়াল থাকবে, ভ্রেম হয়েছে, ধরিয়ে দেয়ার জন্য যারপরনাই খুশী। সবাই ভুল ধরিয়ে দিতে পারেনা, দেয়ওনা। আপনি এবং ষষ্ঠপান্ডব সবসময় এইটা করেন, চমৎকার একটা চারিত্রিক বৈশিষ্ট, মুগ্ধ হই প্রতিবার।
এত জোশের কবিতা লেখেছেন আর আপনি এমন ডরপুক! তাই তো বলি বরিশাল কেন গেলেন! লাঠির ভয়ে অতদূর গেলেন ভাইয়া আপনার পরের মন্তব্য দেখা হয়নি আমার...কিছুদিন ধরে কেবলই দুঃসংবাদ চারিদিকে মনটা তাই বিক্ষিপ্ত থাকে। হুরুমধুরুম যা পাই মন্তব্য করে চলে যাই। ......কী ব্যাপার এত খাতির যত্ন কেন রে বলি এই কী প্রথম পড়লো আয়নামতি আপনার লেখা? গভীর ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছি যেন! আজকাল তো এইটা খুব চলে 'ষড়যন্ত্র'! এর ঘাড়ে চাপিয়ে সব দায়দায়িত্ব থেকে বেঁচে থাকা যায়, বলুন?....থাক এসব ভারি কথা। ঝেড়ে কাশুন তো দাদা! ঘটনা কী? এত্ত খাবার কেনু? আমাকে অন্য কেউ ভেবে বসেননি তো আর তিথীকে দিবেন না মানে! তাইলে তো লাঠির সংখ্যা বাড়াতে হয়...নারদের ভলিউ্যমও তিথীকে ছাড়া আমি জলটি স্পর্শ করবো না বলে দিচ্ছি! ইয়ে কী বলরেন রাজশাহীর আম...তাও আবার রানীপছন্দ! তিথীটা এখন গভীর ঘুমে, এইবেলা একটু চেখে দেখে রাখি টক নাকি আমটা! মেয়েটা টক একদমই খেতে পারেনা কিনা.....
তিথীডোর আপায় কেন এইরকম রণহুংকার দিলো তার কারন এখনো তিনি পষ্ট করেন নাই; লাঠির সংখ্যা বাড়ুক, বাড়তেই থাকুক নারদের ভলিউম, আমি ‘কইছিতো কইছি’! আপনার আর আমার বোঝাবুঝিতে ভ্রেম হয়েছিলো, একটা কবিতাপ্রেমী মানুষ কিভাবে সেইখানে রণতূর্য নিয়া নারদ নারদ বলিয়া রণহুংকার দিয়া যুদ্ধের ডংকা বাজাইয়া দিলো - সেইটার একটা যুতসই ব্যাখ্যা দাবী করা কি আমার গুসতাখি হবে?
ভালোইতো, ভালোইতো, টক আর মিষ্টির অজুহাত খানা দিব্যি মানিয়ে গেলো এইযাত্রা তবে আমি তিথীডোর আপার যে মাজেজা দেখেছি তাতে তিনি যে কড়ায় এবং গন্ডায় আমের হিসাব চুকিয়ে দেবেন - সেইটা বিলক্ষন বুঝতে পারতেছি।
বাইম মাছ, সজনে ডাটা দিয়ে কাঠালের মোচা আর দেশী কই ভাজি করে দিয়ে গেছেন এক কলিগ, আহা ভাবির হাতের রান্না!! পেরতেকটা আইটেমে আমার নিদারুন পছন্দ বেরেসতা ঝলমল করতেছে। একা একা খাইতে ফাপড় লাগে, যাহারা যাহারা ‘লুল’ কন্ট্রোলে ব্যর্থতাকে নিজ নিজ যোগ্যতা বলিয়া মনে করেন, সাদর আমন্ত্রন রইলো, অতিথি অদ্যাবধি নারায়ন!!
বরিশাল জুড়ে আছি আজ অনেক দিন, নানান জায়গায় ছুটোছুটি, বিশেষ করে কোষ্টাল বেল্ট। আরো কিছু কাজ করার আছে, তারপর - “একদিন ছুটি হবে, অনেক দূরে যাব, নীল আকাশের সবুজ ঘাসে, খুশীতে হারাবো .. ট্যানট্যানট্যান”! লাঠির ভয়ে আসি নাই, আসিয়াছি কর্মের সুমহান তাগিদে, শুনেন নাই ওর্ক ইজ ওরশীপ!!
যে কোনো ভালো কাজে উৎসাহ না পেলে যুৎমত কাজটি হয় বলুন? তিথী সেটাই করেছিলো...একটা ভালো কাজে আমাকে উৎসাহ দিয়ে যাক, যাক ওসব চুকেবুকে গেছে। এত আপ্যায়নের পর ওসব ভেবে সময়ক্ষেপনের কাজ নেই, কী বলেন! তাছাড়া আপনি নিজেও তো কবি রে ভাই। শান্তির বাণী শোনান এবার....আগে ঠিক খেয়াল করিনি লেখা শেষে 'বরিশাল' শব্দটা ভেবেছিলাম আপনি ঢাকায় থাকেন। ব্যাপার না দেশটা ছুঁয়েই তো আছেন! সজনেডাঁটা দিয়ে কাঁঠালের মোচা! এমন রেয়ার কম্বো আমি প্রথম শুনলাম। আপনার পছন্দের আইটেম গুলো মন দিয়ে খান ভাই। শুভ খানাদানা বরিশাল নিয়ে একটা পোষ্ট দেন, সাথে কিছু ছবি দিতে ভুলবেন না...জানেন তো আয়নামতির আরেকটা নাম চালু করেছেন কৌস্ত্তভ তাকে সার্থক করতে হবে না ভালো থাকুন আপনি। কাজ শেষে ফিরে আসুন নিজস্ব গন্তব্যে
কত ধরনের কম্বোর মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি এই “আইতে শাল আর যাইতে শাল” এর দেশে এসে বললে বিশ্বাস করবেন না! খুবই কঠিন প্রকৃতী আর তেমনি কঠিন তার মানুষ আর তাদের জীবনযাপন।
সন্ধি! তবে উয়ীদ লাঠিখানা কি জিনিস এবং জন্মবৃত্তান্তসহ উপযোগীতা, কার্যকারন এবং আকার আয়তন সম্পর্কে একটা জাতীয় আগ্রহ তৈরী হয়েছে। কৌসতভ ভাই, ফাহিম ভাই এবং আরো যারা আপনাকে ভালো পান আমার মনে হয় তারা আমার সাথে একমত হবেন।
তিথীডোর আপা, একদমই লেখা পাচ্ছিনা। আসুন, সব শোধবাদ হয়ে গেছে!
আমরা আবারও আমাদের ভীড়ে বুনে দিই একখানি সতেজ শিশির!!
কবিতাকে প্রতিবাদের ভাষা হিসবে বেছে নিয়েছেন দেখে ভালো লাগলো।
শুভেচ্ছা।
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
শামসুর রাহমানের 'একটি মোনাজাতের খসড়া' কবিতাটির কথা মনে করিয়ে দিলেন। আপনার উচ্চারণ আরো স্পর্ধিত, আরো শ্লোগানধর্মী।
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
ধন্যবাদ রোমেল ভাই! অনেক ধন্যবাদ!!
বানানের ব্যাপারে একটু সতর্ক হবেন ভাই। লিখো > লেখো, জুবুথুবু > জবুথবু, ইত্যাদি।
তানিম এহসানের কবিতা আগে পড়া হয় নাই । খুব ভালো লাগলো। কবিতা যে একটা শক্তি উপলব্দি করছি এর পরতে পরতে। আরো লেখা পড়তে চাই।
এনায়েৎ ভাই, ভাই আপনাকে কি বলে ধন্যবাদ দিব বুঝতে পারছিনা। সত্যিকথা বলতে পারার সৎসাহসটা যেন থাকে - আপনার মন্তব্য আমাকে গভীরভাবে ছুয়ে গেলো!
ভাই তানিম এহসান, আপনার কবিতাটি পড়লাম কয়েকবার। বেয়াদবি না নিলে কিছু মন্তব্য করতে চাইঃ
প্রথমত, নিঃসন্দেহে সবকিছুই হতে পারে কবিতার বিষয়বস্তু, এমনকি রাজনীতিও। আমাদের মতো তৃতীয় বিশ্বের কবিদের জন্যে কথাটি বোধহয় আরো সত্য। কিন্তু বিষয়বস্তু যাই হোক না কেনো, কবির প্রয়াস থাকতে হবে কবিতাকে আপাদমস্তক কবিতা করে তোলার, শ্লোগান নয়। শ্লোগান কবিতার শুদ্ধতানাশী। আর একারণেই রাজনীতিক কবিতা লেখা সবচেয়ে কঠিন মনে হয় আমার কাছে। (যদিও এমন কোনো কবি হয়তো পাওয়া যাবে না, যাঁর রচনা সম্পূর্ণরূপে রাজনীতিরহিত।)
দ্বিতীয়ত, রাজনীতিক ভালো কবিতা পরিমাণে খুবই কম, কারণ রাজনীতির মতো বাহ্যবিষয়কে কবিতায় রূপান্তরিত করা খুবই দূরূহ। রাজনীতি বিষয়ে কবিতা রচনার সময় কবিকে বেরিয়ে আসতে হয় তাঁর স্বনির্মিত আন্তর-জগত থেকে, মুখোমুখি হতে হয় এমন এক বাহ্যজগতের যা কবির কাম্য নয়। এই বাহ্যজগতের জনমন্ডলির দাবির মুখে কবিকে অনেকসময় রচনা করতে করতে হয় শুন্য শ্লোগান, যা কবিতা হিসেবে ব্যর্থ হতে পারে।
তৃতীয়ত, একজন কবি হিসেবে আপনি নিশ্চয়ই একমত হবেন যে কবিতার পাঠকশ্রেণীর এক বড়ো অংশ বিমানবিক শিল্প ও আবেগ-উপলব্ধির চেয়ে রাজনীতিক ক্ষোভবিক্ষোভ বেশি পছন্দ করেন। তাই দেখি বাংলায় জনপ্রিয় কবিতাগুলো প্রায়শই রাজনীতিক কবিতা। কিন্তু এই রাজনীতিক কবিতাগুলোকে কি উৎকৃষ্ট কবিতা বলতে পারি? নির্মলেন্দু গুণের ‘হুলিয়া’ কিংবা ‘অসমাপ্ত কবিতা’ বহুল আবৃত্ত ও জনপ্রিয়; কিন্তু কবিতা হিসেবে উৎকৃষ্ট নয়। হুমায়ুন আজাদ বলতেন, “কবি যতই শক্তিশূণ্য হন, ততোই বাড়ে তাঁর চিৎকার”।
চতুর্থত, আপনি বিবৃতিমূলক বাক্য কমিয়ে, আপনার মূল শক্তি যেখানে, অর্থাৎ উপমা-উৎপ্রেক্ষা এবং শ্লেষ-এর প্রয়োগ ঘটালে ভালো ফল পাবেন বলে মনে করি। রাজনীতিক কবিতার ক্ষেত্রে সবচেয়ে মোক্ষম অস্ত্র হচ্ছে শ্লেষাত্মক পংক্তি।
তবে, আপনার ব্যবহৃত উপমা-উৎপ্রেক্ষার বৈদ্যুতিক ঝিলিক প্রমাণ ক্ররে যে আপনার ভেতরে নিঃসন্দেহে রয়েছে কবিতা; তাতে প্রাণসঞ্চার করতে হলে, আমার মতে, আপনাকে বাহ্যজীবনের কলরোলের চেয়ে বেশি শুনতে এবং শুনাতে হবে আপনার আন্তর আলোড়নের কথা। আপনার আন্তর জগৎ হবে সেখানে মুখ্য, আর গৌণ হবে ঝঞ্চামথিত প্রতিবেশ-সমাজ-দেশ।
ভাই তানিম এহসান, উপরের কথাগুলি একান্তই আমার ব্যক্তিগত মতামত। আপনাকে একমত হতে হবে এমন কোনো কথা নেই। আপনি কবি বলে, আপনার সাথে ভাবনাগুলো ভাগাভাগি করলাম মাত্র, এর বেশি কিছু নয়।
যত মত, তত পথ!!
আমি আপনার মন্তব্যটা কয়েকবার পড়লাম, ধন্যবাদ জানবেন। আপনার নতুন লেখার অপেক্ষায় থাকলাম ভাই, আর প্রতিবার এমন মন্তব্য চাই। শুভেচ্ছা,
তানিম,
সুমন তুরহান প্রকৃত শুভাকাঙ্ক্ষীর কাজ করেছেন এবং আমি মনে করি রূঢ় সত্যটিকেই তুলে ধরেছেন। আমার আগের মন্তব্যটি লক্ষ্য করুন। একই কথা আমি স্পষ্ট করে বলতে পারিনি, শুধুমাত্র ইঙ্গিত করেছিলাম।
আরো একটি কথা মনে রাখবেন, কাব্যসিদ্ধি অর্জনের ক্ষেত্রে কবি কতটা জনপ্রিয় কিংবা অজনপ্রিয় সেটি কোন বিষয়ই নয়।
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
রোমেল ভাই!! খুব সাধারনভাবে বেঁচে থাকার চেষ্টা করি, আপনারা সবাই মিলে আমাকে কবি বানিয়ে ফেলবেন দেখছি। আপনার মন্তব্য কেন জানি অন্যরকম একটা দোলা দেয় আমাকে। কারন খুঁজে বের না করে বরং একটা গান শোনাই;
আমার বাসতু জুড়ে গান, তারমাঝে এই এই গানটা আমাকে অবশ করে দেয়! গানটা শুনতে পেলেন কিনা জানাবেন প্লিজ!
http://music.deshergan.com/music/download-bangla-mp3.aspx?id=3408
গানটা সুন্দর তানিম ভাই!!!
উপরের এত সুন্দর আলোচনায় সময়ের অভাবে অংশ নিতে পারলাম না দেখে খারাপ লাগল!!! সুমন ভাই, রোমেল ভাই, তানিম ভাই আপনাদের সবার মন্তব্যের সাথেই একমত। আর আমার লেখাতেও কিন্তু এরকম মন্তব্যালোচনা চাই; আমি সবার কাছ থেকে শিখতে চাই।
শুনেছি ভাই। অনেক অনেক লিখুন!
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
ধন্যবাদ তানিম ভাই। আপনার যে পংক্তিগুলোকে (বা যে ধরনের শব্দগুচ্ছকে) শক্তিধর বলে মনে করি -
১। "...উন্মুখ উনুনে বিলাপ"
২। "বোধেরও তো দাম আছে তবু তারা তুল্য-মূল্যহীন আজ।"
৩। "বারবার ঘষাকঁাচ চোখদুটি তাকিয়ে দেখে ..."
৪। "স্ফিত উদরে তবু ..."
৫। "নাক দিয়ে গান গেয়ে 'শেল্পীরা' প্রতিষ্টা পায়" --- (শ্লেষ)
৬। "জবুতবু বাংলা ..."
৭। "যারা আজন্ম আগুনে আগুনে খুঁজেছে সবটুকু জল"
৮। "তাদের আকাশে আজ থেমে থেমে বৃষ্টিহীন জল আসে"
৯। "প্রথম প্রেমের লজ্জা, গর্ব আর সাহসের পদাবলী তুমি"
১০। "... মাটিতে সোদাগন্ধ জোনাকির ফুল"
পাঠক হিসেবে আমার কাছে মনে হলো- যেহেতু কবিতাটি দীর্ঘ, তাই কোলাহলের ভিড়ে, উপরের এই চমৎকার শব্দগুচ্ছ যতোটুকু impact করার কথা, ততোটা হয়তো করেনি। কে যেনো বলেছিলেন, কবিতায় কখনোই বলবার কথাটি বলতে নেই এবং বক্তব্যে কিছুটা রহস্য রাখা ভালো। অনেক কবি তাই লিখে ফেলার পর, সেকেন্ড ড্রাফট-এর সময় বিবৃতিমূলক অংশবিশেষ বাদ দিয়ে, শক্তিমান শব্দগুচ্ছ identify করে (যেমন উপরের দশটি), সেগুলো দিয়ে কবিতাটি re-write করার চেষ্টা করেও থাকেন। তবে প্রত্যেকের কৌশল আলাদা হওয়াটাই স্বাভাবিক।
আপনাকে আন্তরিক শুভেচ্ছা এই মিথস্ক্রিয়ার জন্যে। আপনার লেখার অপেক্ষায় রইলাম।
বহুদিন ধরে নিজের ভেতরের যে আবেগ আমাকে তাড়া করে ফেরে তা প্রকাশ করেছি লিখে লিখে, সেগুলো কার্ড বানিয়ে দিয়ে, এসএমএস করে পাঠিয়ে, আমার বন্ধুরা, আত্মীয় কিংবা যারা আরো কাছাকাছি তারা একদম ছোটবেলা থেকেই এর সাথে পরিচিত। আমার কখনো ছাপাতে ইচ্ছে করেনি, প্রথম বইটাও বন্ধুরা জোর করে বের করে দিয়েছে। আমার কেবলই মনে হয় কবি হওয়ার যে প্রাথমিক শর্তগুলি অত্যাবশ্যক তা আমার নেই। আমি শুধু জানি না লিখে না ফেললে আমার ভালো থাকা হয়ে উঠেনা।
সচলায়তনে এসে আমার মনে হচ্ছে আমি আবার একটা জলজলকলকলছলছল এর মধ্যে পরে গেলাম। লেখা ছাপা হলো, কি অনবদ্য সেই অনুভূতি আমি বলে বোঝাতে পারবোনা! বন্ধুরা হাসে, তারা জানে যে তাদের এই বন্ধুটি ওবেলিক্স র মত জন্মের পরই কোন এক “ম্যাজিক পোশনে” না পরে পড়ে গিয়েছিলো আবেগের অথৈ সমুদ্রে। তারপর সেই জল থেকে তার আর উঠতে ইচ্ছে করেনা।
চরম বিক্ষুব্ধ ছিলাম, এখনো আছি, আমার এই “লজ্জা, ক্ষোভ , ঘৃনা আর অপেক্ষার” এই বর্ননাগুলো পড়ে সবার দেয়া কমেন্টে আমার ভেতরে কোন একটা তারে টান লেগেছে আবার।
সুমন ভাই আপনি আবার ফিরে এসে কি অদ্ভুত করে কথা বলছেন! মানুষের এই ফিরে ফিরে আসা-যাওয়া আর ছাপ রেখে যাওয়ার সে সবিশেষ ক্ষমতা তা আমাকে আরো বেশী করে জীবনকে ভালোবাসতে শিখিয়ে যায় বারবার।
আমি একটানে লিখি, একবারে শেষ করি, কয়েকবারে করে লিখতে পারিনা, আমার আসেনা।
শুধু একটা জিনিস বলি, লিখে ফেলার পর আবার সেটাকে সাজিয়ে গুছিয়ে আবার লিখতে আমি পারবোনা, ভেতরের কোন নাড়ীর উচাটন বন্ধন ছিড়ে উঠে আসা শব্দগুলোকে আমি কিভাবে হত্যা করি?
শুভেচ্ছা,
অনেক শুভকামনা রইলো। আপনাকে শ্রদ্ধা
আর আপনার জন্য বন্ধুতা! আপনাকে একটা গান দিতে খুব ইচ্ছে করলো! http://youtu.be/5vUDmFjWgVo
ভাল লিখেছেন, কাজ থেকে ফিরে সচলে চোখ রেখে দেখি, আপনার কবিতা।
এখনো শেষ হয়ে যাইনি, খোলা কথা খুলে বলার দিন, ভাল, বেশ ভাল লাগল।
.....
....................................
বোধহয় কারও জন্ম হয় না, জন্ম হয় মৃত্যুর !
ধন্যবাদ শাহীন ভাই!
বেশ ভালো লাগলো, আপনার কবিতার কেমন যেনো একটা শক্তি আছে।
আপনার বন্দনা মাথা পেতে নেয়া হলো! ভালো থাকবেন!!
তুমি Anthropology, জাবি?
কবিতা অসাধারন!
অফকোর্স আমি “এনথ্রোপলজি“, জাবির গর্বিত মানুষ! কৌন হ্যায় ইধার?
জাবি দেখলেই মন উতলা
জাবি শুনলেই চক্ষুজ্বালা
জাবি ভাবলেই সিনা টানটান
জাবি মানেই জাবিতে জাবিতে স্নান!!
আরে লমবু...পুষপ বলছি (Business administration). তোর ভেতরে যে কিছু তাতো জানতাম না! good good
ভাল থাকিস বনধু
পুষপ!!! তুই! কেমনে কি? তোর পিচ্চিটা আছে কেমন? তোর সাথেতো এখন ঝগড়া করতে ইচ্ছা করতেছেরে। আহা, ক্যাম্পাসে কি মজাটাই না করতাম! এখনও কি রেগে গেলে হড়বড় করে কথা বলিসরে
হাহাহা..কি মজা না? Small world! আমি সচলায়তনের একজন নিয়মিত পাঠক। বাংলায় টাইপ করতে পারিনা আর কষট করে লিখতে গিয়ে অনেক সহজ বানান ভুল করে ফেলি তাই comment করা হয় না, কিনতু তোকে চেনার পর আর চুপ থাকতে পারলাম না
পিচ্চি ভাল আছে আর আমি বুঝি হড়বড় করতাম :-/? আমার জানামতে আমি অনেক শানত্ আর লক্ষি মেয়ে ছিলাম;-)
ঠিকইইরে
তোদের যন্ত্রনায় এক দন্ড শান্তিতে থাকতে পারতামনা আমরা, সারাক্ষণ হাউকাউ, তোদের কারনে এখনও আমাদের কান খুব শার্প আছে, কোন সমস্যা থেকে থাকলেও চলে গিয়েছিলো :-P। হ্যারে, আমাদের “আজিজা” কই আছে? বিবিএর তোরাতো অনেকেই ইউকে, আমার চাল্লি মামুন, মহিউদ্দীন “রঙীন” টিপু
ঢাকায় আসলে আওয়াজ দিবি। কিছুদিন আগে “পানি” (ইসিএস- নীপা) আসছিলো, আমি, দিপি, পানি আর মিশুক ধানমন্ডি পিযা হাটে সেইরকম আড্ডা দিলাম, চারপাশের মানুষ আমাদের যন্ত্রনায় পিজা খাইতে পারে নাই। ওরে জ্বলন!!
ফেসবুকে তোর নাম দেখেতো আমি চিনতেই পারি নাই, এই নাম আমরা ইতিহাসের পাতায় পড়েছি, নবাব আলিবর্দী খার সাথে তোদের কোন ফ্যামিলি কানেকশান আছে নাকি লতায় পাতায়
লিখে যা.....
sam
সাযযাদ ভাই!!
প্রিয় মুখ সখা হে, যাপিত জীবনে বারবার ফিরে ফিরে আসে
ঝরাপাতা সাথে নিয়ে একটি হারমোনিকা বাজাতে তুমি
আর আমার গলায় তখন কেবলই গান আসে
তারপর দুজনে মিলে তৈলচিত্র আঁকা -
বারবার বহুভাবে নানা রঙে, তুলিতে তুলিতে!!!
ধন্যবাদ তানিম ভাই, গানটি প্রেরণাজাগানিয়া।
নতুন মন্তব্য করুন