“বাবা, এইবার কিছু দায়িত্ব নে না তুই, বোঝাটা একটু হালকা কর আমার?”
মেজাজটা সপ্তমে চড়ে গেল। এমন করে কেন এই লোকটা! প্রতিটা দিন এই একই কথা! সেই সাত-সকালে বেরিয়েছি, সারাদিন ক্লাস-ল্যাব-প্রাইভেট ঘুরে এই কিছুক্ষণ আগে মাত্র ফিরেছি। আর উনি শুরু করে দিলেন।
“অন্ততঃ একটা-দু’টা কাজ এখন থেকে তুই কর? এই যেমন মাসের বাজারটা? তাহলেও একটু হালকা হই আমি। দ্যাখ বাবা, অফিসের চাপ, বাসার এইসব টুকটাক ঝামেলা-- সব লোড যদি এই একটা মাথায় দিয়ে রাখিস--”
“একটু থামবে বাবা? সারাদিন পর এই মাত্র ফিরে খেতে বসলাম আর তুমি শুরু করে দিলে। মাথার ওপর তিন তিনটা অ্যাসাইনমেন্ট ঝুলছে, দুইটা পেপারে উইথহেল্ড খেয়ে বসে আছি। দিশে-মিশে পাচ্ছি না এসব নিয়ে, আর তুমি-- আচ্ছা, তার চেয়ে বরং বলে দাও, পড়াশুনা ছেড়ে দিই, এসব-ই করি-- বাড়ির কেয়ারটেকারের কাজ। কি বল, ভালো হয় না তাহলে?”
বাবা চুপ মেরে গেলেন। খাওয়া শেষে উঠে যাবার সময় শুধু বললেন,
“আজ, এই এখন যদি মরে যাই, তো কাল থেকে শুধু বাজার কেন, করবি সবই। এখন করলে আমার ওপর থেকে বোঝাটা একটু কমত, ক’টা দিন হয়ত বেশি বাঁচতাম-- এই যা! কবরে শুয়ে শুয়ে দেখব আর কি, মহা ব্যস্ত ছেলে আমার বাজার করে, বিল দেয়, সংসারের--”
এই ডায়ালগ শুনতে শুনতে মুখস্থের মত হয়ে গেছে। রাগের মাথায় বলেই ফেললাম,
“সেটা তখন দেখা যাবে।”
আট কি নয় দিন পর একদিন ল্যাবে কাজ করছি। এমন সময় মা’র ফোন। নম্বর দেখে বিরক্তই হলাম। ভাবলাম নিশ্চয়ই ফেরার পথে মরিচ-ধনেপাতা কিছু নিতে বলবেন, হাতের কাজটা আগে সেরে নিই, তারপর কলব্যাক করব। কেটে দিতেই আবার কল দিলেন, সুইচ অফ করলাম ফোন।
ল্যাবের পর গেস্ট টিচারের একটা ক্লাস ছিল। তাড়াহুড়োর মধ্যে ফোন আর অন করতে মনে নেই, মনে পড়ল একদম ক্লাস শেষে। ঘড়িতে বিকেল সাড়ে পাঁচটা। ফোন অন করে মিস্ড কল অ্যালার্ট পেলাম-- দেখি মা’র নম্বর থেকে একচল্লিশটা কল! এতবার ফোন দিবার মানেটা কী! ফোন ধরতেই চরম বিরক্তি ভরা সূরে বললাম,
“কী আনতে হবে বলো।”
কিন্তু ও প্রান্ত থেকে জবাব এলো না কোন। কেমন যেন একটু খটকা লাগলো, জিজ্ঞেস করলাম, “কোন সমস্যা, মা?”
এইবার মা হাউমাউ করে কেঁদে ফেললেন। কিছু একটা বললেন, কিন্তু বুঝলাম না এক বিন্দুও। ছোটবোন ফোন নিল, কিন্তু একই রকম কাঁদছে সেও। শেষমেশ যা বুঝলাম, বেলা আড়াইটার দিকে অফিস থেকে জানানো হয়, বাবা খুব অসুস্থ, হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। সাথে সাথে মা আমাকে ফোন দেন, কিন্তু আমি তা রিসিভ করি না। এরই মধ্যে অবস্থার অবনতি হওয়ায় বাবাকে বারডেমে নেওয়া হয়েছে।
ভীষণ একটা ধাক্কা খেলাম। ছুটলাম বারডেমে। কিন্তু ওয়ার্ডের কাছাকাছি পৌঁছতেই কানে এলো পরিচিত কণ্ঠের আত্মা হিম করা আর্তনাদ। দরজায় উঁকি দিয়ে দেখি, গম্ভীর মুখে স্টেথিস্কোপ নিয়ে বেরিয়ে আসছেন ডাক্তার, অক্সিজেনের নল খুলে ফেলছে নার্স, সাদা কাপড়ে ঢেকে দেওয়া হচ্ছে বাবার মুখ। সব শেষ। একজন বাবার একমাত্র ছেলে, ‘ভীষণ ব্যস্ততা’র কারণে তার অন্তিম মুহূর্তেও পাশে থাকবার সুযোগ পায় না।
আমাকে দেখে ডাক্তার জিজ্ঞেস করলেন, “আপনি ওনার কিছু হন?” পরিচয় পেয়ে মুখ হাঁ করে চেয়ে রইলেন-- বোধ করি, পিতার প্রতি পুত্রের দায়িত্ববোধের অভূতপূর্ব নমুনা দর্শনে বাকরুদ্ধ হলেন।
এরপর? এরপর একে একে মা’র কাছ থেকে জানতে পারি, বাবার হার্টে তিন তিনটা ব্লক ধরা পড়েছিল, বাবার ব্যাক পেইন অস্ত্রোপচার করার মত তীব্র হয়ে উঠেছিল, বাবার কিডনি-লিভার প্রায় অকেজো হয়ে পড়েছিল। এত্তোসব যন্ত্রণা সঙ্গী করে অজাগতিক-পাশবিক দক্ষতায় বাবা আমার সংসারের ঘানি টেনে গেছেন শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত, আমাদের বুঝতে পর্যন্ত দেন নি, কী হয়ে যাচ্ছে ভেতরে। বাবার ডায়াবেটিস আছে জানতাম। কিন্তু তিনি যে সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারছেন না, ইনসুলিন নিচ্ছেন-- এই খবরটুকু পর্যন্ত তার শোবার ঘরের চৌকাঠ পেরোতে পারে নি। একদিন মা কে বলেই ফেললাম, মা, তুমি কি বাবাকে ভালবাসতে না? সব কিছু জেনেও সেটা আমাদের কেন বল নি? কেন জানাও নি? কেন তাকে ধরে-বেঁধে ভালো একটা ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলে না? তুমি কি চাও নি বাবা আর ক’টা দিন বেঁচে থাকুক? কেন করলে এমন?
মা’র হাস্যোজ্জ্বল মুখ অন্ধকার হয়ে গেল। আঁচলে চোখ মুছে ধরা গলায় বললেন,
“মানিক রে, বলেছি বহুবার। কিন্তু জবাবে কী বলত তা তো জানিস না, জানতে চাসও নি কোনদিন। রেগে গিয়ে বলতো, খামোখা পয়সা খরচ করার ধান্দা কর, ছেলেমেয়েগুলোর ভবিষ্যৎ নিয়ে কোন ভাবনা আছে তোমার? এই আকালের যুগে......”
বায়ুমণ্ডলের মধ্যেই আজন্ম যার বাস, বায়ুর মূল্য বোঝার যোগ্যতা তার হয় না কোনদিন। বুকের ভেতর অসহ্য একটা চিনচিনে ব্যথা নিয়ে এখন আমি আমার বাবাকে খুঁজে ফিরি। আকাশ পানে অশ্রুসজল নয়ন মেলে বলি,
“বাবা, আমায় ক্ষমা কর.........”
মৌনকুহর
১৬.০৭.২০১১
মন্তব্য
আমি পাথরের মতো স্তম্ভিত হয়ে গেলাম!
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
হুম্ম.........
এই জন্যই আমরা এখনো ছেলে-মেয়ে,
বাবা- মা নই
আপনার বাবার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করছি।
হুম্ম.........
তবে দিদি, এটা আমার জীবনের ঘটনা নয়। আমার বাবা আল্লাহ্র রহমতে এখনও আমার সাথেই আছেন, দোয়া করবেন সুস্থ দেহে যেন আরও অনেকদিন থাকেন.........
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
চোখে জ্বালা ধরিয়ে দিলেন!
সুমনের একটা গানের সাথে আমাদের পরিবারের অনেক আবেগ জড়িত; গানটা হচ্ছে, “তিনি বৃদ্ধ হলেন, বৃদ্ধ হলেন, বনসপতির ছায়া দিলেন সারাজীবন”; গানটা কোথাও খুঁজে পেলামনা অনলাইনে; কারো কাছে যদি থেকে থাকে তবে আমাদের একটু শুনে নেবার সুযোগ করে দেবেন প্লিজ!!
আমার কাছে নেই, ভাই......
এমন মন খারাপ করা লেখা দিলেন কেন ভাই
কোন ছেলের যদি একটু চৈতন্যোদয় ঘটে-- এই আশায়.........
আসলেই ভাই? এটা আপনের জীবনের সত্য কাহিনি? নাকি ফিকশন?
যদি সত্য কাহিনি হইয়া থাকে তাইলে কষ্ট পাইলাম, দুইজনের জন্যই।
আর যদি হয় ফিকশন, তাইলে একখান কথা মনে পইড়া গেলো ইনস্টা্যন্ট। আক্শয় কুমার এর একখান সিনেমা
দেখসিলাম যৌবনকালে, নাম "ওয়াক্ত ঃ দি রেইস আ্যগেনস্ট টাইম"। বা্যপক মিল ভাই, কিরা কাইতা কইতাছি।
-মেফিস্টো
আরে ভাই, অনেকদিন পরে যে!
এটা আমার জীবনের ঘটনা নয়। ফিকশনও নয়। মুভিটা দেখা হয় নি।
চার বছর ধরে দেশের বাইরে থাকি, দেশে আসলে একটু আরামের মোহে সকালে ঘুম থেকে উঠা হয়না, বাবার সাথে সকালে বাজারে যাওয়ার ইচ্ছাটা পূরণ হয়না বহুদিন, এই বয়েসেও ছেলের কষ্ট হবে দেখে বাবা কিছু বলেননা, লেখাটা পরে সত্তিই মন খারাপ হয়ে গেলো....
হুম্ম.........
অসাধারণ।
বাবারা এমনি হয়।
এম আব্দুল্লাহ
হুম্ম.........
বস আপনের এই লেখাটা পইড়া মনটা অনেক খারাপ হয়ে গেল, আমি আমার বাপরে যমের চেয়েও বেশী ভয় পাইতাম, আমার বাপ যখন আমারে পিটায়তো, তখন মনে হইত শুঁয়োর পিঁটায়তাছে, আমি ছোট বেলায় চিৎকার করে কানতাম, আমার মা আমারে বুকের ভিতর নিয়া, আমার বাপের মার গুলা তাঁর পিঠে খাইত (তিন ইঞ্চি ডায়া এর লাঠির বাড়ি), তখন আমার যন্তনা আরও একশ গুন বাইরা যাইত। ক্লাশ এইট থিকা নকশাল দলের সাথে কাম করা শুরু করি, তখন থিকা আমার বাপ উল্টা আমারে ডরাইত। একদিন বাসায় আইসা দেখি মা রে গরুর মত পিটায়তাছে, সেইদিন মনে হইল এই শালার বাপ বাইচা থাকা আর না থাকা সমান কথা। আমার খাটের তলে একটা দেশী রাইফেল রাখছিলাম কয়েকদিন আগে, একজনের কাছে দিয়া আসনের কথা ছিল আমার। সেই রাইফেলডা দিয়া বাপ রে দুই ঘা দিছিলাম, একটা পিঠে আর একটা কাঁধে, মাটিতে পইড়া গেলে বুকে রাইফেল ঠেকাইয়া ফায়ার করছিলাম, কিন্তু আফসোস রাগের মাথায় গুলি ভরতে ভুলে গেসিলাম। তার পরে মা আমারে উল্টা দশ-বারটা থাপড় মারছিল, আর আমি বেকুবের মত দাঁড়ায়ে মার খাইছিলাম। আজ বুঝি মা সেদিন কেন মারছিল আমারে। কিন্তু আমার কন খেদ নাই, এই কামের লাইগা যদি নরকে ও যাওয়া লাগে আমার রাজী।যখন দেখি সাদা ছোট ছোট বাচ্চাগুলারে তাগো বাপ কি রকম আদর করে, তখন সারা সৃতি হাতড়াইয়ে ও ওইরকম কোন মুহূর্ত খুঁজে পাই না। তাই বস একটা কথা কই সব বাপ আপনের বাপের মত ভাল হয় না। আজ ও আমার বাপ বাইচা আছে কিন্তু সেদিন থিকা আমার "মা" র গায়ে আর কন দিন আমার সামনে হাত তোলে নাই। আজ যখন নামকরা ইউনিভার্সিটিতে বইসা ভালো মানুষের মত ফিউচার এনারজী সোর্স নিয়া পোস্ট-গ্রাজুয়েশন করি, তখন চিন্তা করি আমার মা না থাকলে হয়ত আজ আমার এনারজী সোর্সের অ্যানালাইসিস র্যাব এ করত।
মনে কষ্ট পুষে রাখবেন না, ভাই। আপনি নিজের জীবনে একজন আদর্শ বাবা হবেন-- এই প্রত্যাশা রইল।
কি লেখা দিলেন ভাই, মনটাই খারাপ হয়ে গেল। গত দশ বছর ধরে উনাকে খুজি, পাই না কোথাও। উনি যেখানে গেছেন সেখানে না যাওয়া পর্যন্ত আর পাবও না।
========
আমি জানি না
হুম্ম.........
ঠিক আছে। এই প্লটের গল্প বহুবার পড়েছি। তবে আপনি লিখেছেন ভালোই।
ধন্যবাদ, কৌস্তুভদা।
..........
হুম্ম.........
কষ্ট লাগল
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
হুম্ম.........
কোন লেখা পড়ার জন্য সচলে ঢুকি নাই। অভ্যাস বসত নিজের অজান্তেই ঢুকছিলাম। হঠাৎ 'ছাইপাঁশ' ট্যাগ আর লেখার প্রথমেই 'বাবা' শব্দটা দেখে লেখাটি না পড়ে পারলাম না। আপনি এ লেখাটি আজকেই কেন দিলেন???!!!!
(আজ সকালে আমার বাবা মারা গেছেন)
তাঁর আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।
পিতৃবিয়োগের শোক সহনীয় নয়.............খুব দুঃখের কথা শোনালেন ভাই....................ব্যথিত
জগতে কাকতালীয়তা আছে জানি। কিন্তু তা যে এত নির্মম হতে পারে জানা ছিল না।
সান্ত্বনা দিবার ভাষাও হারিয়ে ফেলেছি। প্রার্থনা করি, তাঁর আত্মা শান্তিপ্রাপ্ত হোক।
আপনার ব্যথার ভার বাড়িয়ে তুলবার জন্য করজোড়ে ক্ষমা চাইছি...............
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
তার আত্মা চিরশান্তিতে থাকুন।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
অসাধারণ গল্প।
"Our sweetest songs are those that tell of saddest thought."
শুভেচ্ছা।
বেশ ভালো লাগলো গল্পখানি তাই ভুটিয়ে দিলেম।
ট্যাগ দিয়েছেন গল্প তাই আমি নিশ্চিত না যে এটা আপনার ব্যাক্তিজীবনের অভিজ্ঞতা কিনা। তবে তা আপনার জীবন থেকে নেয়া হলে বলবো আপনার পিতার আত্মা পরম শান্তিতে থাকুন।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
অনেক ধন্যবাদ, রাতঃস্মরণীয়দা। না, এটা আমার ব্যাক্তিজীবনের অভিজ্ঞতা নয়।
ঠিকই আজকেই আপনি লেখাটা দিলেন? ঠিক গতকালই যখন বাবাকে কবরে রেখে এলাম? এই বারডেম থেকে? যার একদিন আগেও ডক্টররা বলছিলেন কোন সমস্যা নেই...কোন সমস্যা নেই...সময় লাগবে...আমরা আছি না...?
------------------------------------------------------------------
ঠান্ডা মাথার খুনি।
খুব আহত হলাম আরেকবার................আর ডাক্তাররা তো আজকাল ভাঁড়সদৃশ হয়ে গেছে অনেকেই..............
...........
হুম্ম.........
মনটা খারাপ করায়ে দিলেন ভাই।
হুম্ম.........
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
ধন্যবাদ, আশালতাদি।
Very touchy, speechless.
পড়ার জন্য ধন্যবাদ, নামহীন পাঠক।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-
ফেসবুক -.-.-.-.-.- ব্যক্তিগত ব্লগ
কোনটা গল্প আর কোনটা জীবন কে খুজতে যায়? সকল পাঠেই জীবনপাঠ হয়।
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
হুম্ম......
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-
ফেসবুক -.-.-.-.-.- ব্যক্তিগত ব্লগ
নতুন মন্তব্য করুন