অজগর

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: শুক্র, ২৯/০৭/২০১১ - ৯:১৮অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

এক,
বাঁ হাতে এগোলেই আরেকটা গলি। দাঁড়িয়ে একটু দম নেয় রঞ্জু। হাতের কাগজটায় লেখা বাড়ির নাম্বারটা আরো একবার দেখে নেয়, ৭৭/সি। অসীম ধৈর্য্য রঞ্জুর। প্রায় পয়তাল্লিশ মিনিট ধরে বাড়িটা সে খুঁজছে। গলি তস্য গলি ঘুরে ঘুরে পায়ে ব্যাথা ধরে গেছে। সেগুনবাগিচা এলাকাটিতে সে তার জন্মের পর আজ প্রথম এসেছে। জীবনের ছাব্বিশ বছরে তার এই এলাকাটিতে আসবার প্রয়োজন পড়েনি। অথচ ঢাকায় জন্ম- বড় হয়েছে রঞ্জু। ঢাকার কিছু কিছু জায়গার নাম শুনলেও খাবি খেতে হয় রঞ্জুকে, জীবনে নামটাও শোনেনি! অবশ্য মুখে কখনো প্রকাশ করেনা সে তার এই অজ্ঞানতার কথা। যদিও বা মাঝে মাঝে বন্ধুদের আড্ডায় বা কোনও কারণে মুখ ফষ্কে কিছু বের হয়েই যায়, তখন গলার রগ ফুলিয়ে ঝগড়া করে, ‘দুনিয়ার সব জিনিস চিনতেই হবে, সব জায়গার নাম মুখস্ত করে রাখতে হবে এমন নিয়ম করা আছে নাকি সংবিধানে?’ যতই রগ ফোলাক রঞ্জু, মনে মনে একটু খিঁচে থাকে ঠিকি নিজের অনেক অজ্ঞানতায়। আজকে যেমন ঢাকা শহরের মধ্যে অসংখ্যবার শোনা জায়গাটায় এসে খাবি খাচ্ছে ঠিকানা খুঁজে বের করতে।

রঞ্জুর বড় ভাই এর শালা বাসা বদল করে এখানে এসেছে দুদিন আগে। আজকে রঞ্জুর উপর দায়িত্ব পড়েছে সেই বাসায় খাবার পৌছে দেয়ার। ’ আরে! বাসা বদল করেছে তো কি হয়েছে?! সেই বাড়িতে কি চুলা নাই? দুটো ডাল-ভাত কি ফুটিয়ে নেয়া যায়না ওতে?! যত্তো সব ঢং।’ রাগে চিড়বিড় করে রঞ্জু, তবুও কিচ্ছু করার নেই। ছয় বাটির ভরা বিশাল টিফিন কেরিয়ারটাকে ছয় মনি বস্তার মত লাগছে, ভারে। কেরিয়ারটাকে একবার হাতবদল করে চেহারা খিঁচিয়ে সামনের বাড়িটার নাম্বার দেখে। ৪৮/এ। ‘আজব! একটু আগেই না দেখলাম ২৩ আর এখন ৪৮?! শালার বাড়ির নাম্বারের কি মা-বাপ নাই নাকি?! কত নম্বর রোড যেন?’ দুই আঙ্গুলে কাগজটা ফাঁক করে রঞ্জু। সড়ক নং ১৪। আশ্চর্য্য! পয়তাল্লিশ মিনিটে না হয় কম করে হলেও সাতাশবার ঠিকানাটা দেখেছে সে, তারপরেও এই সামান্য ঠিকানাটা তার মনেই থাকছেনা কেন?! অস্থিরতায় চিন্তা গুলিয়ে গেল নাকি?! কব্জি উল্টিয়ে হাতের ক্যাসিনো ঘড়িটায় চোখ রাখে। ২.৪৩। এরপর তো এই খাবার রাতের বেলাতেই খেতে হবে তাদের।
‘হোকগে, খাবার যে পৌছচ্ছে এটাই তো আসল কথা।’ কাগজ ধরা হাতটার উল্টোপিঠে কপালের ঘাম মোছে রঞ্জু। একটু এগিয়ে একটা বাড়ির সামনে দাঁড়ানো দারোয়ানটাকে ঠিকানা বলে।
- কত কইলেন?
- জ্বী ৭৭/সি।
- ঐ তো সামনেই। চাইরটা বাড়ির পরই।’ আঙ্গুল তুলে গোলাপী রং-এর একটা বিল্ডিং দেখিয়ে দেয় লোকটা। রঞ্জুর মনে হয় পায়ে হাত দিয়ে সালাম করে লোকটাকে।

দুই,

- আপনি সত্যি কালকে আসবেন তো?
বের হবার মূহুর্তে দরজায় দাঁড়িয়ে প্রশ্ন করে আভা। পেছন ফেরে রঞ্জু। কাতর চোখ দুটো দেখে কেমন যেন লাগে রঞ্জুর। এই দুই আড়াই ঘন্টায় ভাবীর এই বোনটির সাথে কথা হয়েছে সামান্যই। নরম সরম লাজুক মেয়েটিকে রঞ্জু এ বাড়িতে আসার পর রঞ্জু সামান্যই কথা বলতে শুনেছে। খুবই আস্তে প্রায় শোনা যায় না এমন ভাবে কথা বলে আভা এবং খুব কম। যত কথা তা ভাবী একাই বলেছে। আভার ঢাকায় আসার কারণ, তাদের বাসা বদলের কারণ, এসব কথা শুভা ভাবী নিজ থেকেই বলে গেছেন। খাবার টেবিলে আভা ছোট্ট ছোট্ট কথায় টুকটাক জবাব দেয়া আর মিষ্টি করে হাসা ছাড়া সবটুকু সময় প্রায় নীরবই ছিল।

রংপুরের সৈয়দপুরে বাপের বাড়ি শুভা ভাবীর। আভার খুব ইচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে। পড়াশোনায়ও বেশ ভাল সে। আভা যে এসএসসি আর এইচএসসি দুটোতেই গোল্ডেন ফাইভ পেয়েছে তা শুভা ভাবী বেশ গর্বের সাথেই জানিয়ে দিয়েছেন রঞ্জুকে। গত আড়াই মাস ধরে সে বোনের বাসায় থেকে কোচিং করছে ভার্সিটিতে ভর্তি হবার জন্য। মূলতঃ আভার জন্যই জামান ভাইরা বাড্ডার বাসা ছেড়ে সেগুনবাগিচায় এসে উঠেছেন। এখান থেকে আভার ভার্সিটি যাওয়া আসা সহজ হবে। জামান ভাইয়ের অফিসও মতিঝিলে, তার জন্যও সুবিধা।
আগামীকাল আভার পরীক্ষা আর ওদিকে জামান ভাইএর অফিসে অডিট চলছে বলে আভার সাথে যেতে পারবেন না। তাই আভাকে কে নিয়ে যাবে ভেবে শুভা ভাবী অস্থিরতা প্রকাশ করলে রঞ্জুই ভাবীকে বলেছিল, তেমন দরকার পড়লে না হয় আমিই এসে উনাকে নিয়ে যাবো।’ পরে গল্পে কথায় এই ব্যাপারটা ভুলেই গিয়েছিল রঞ্জু। ভাবীও আর তাকে আসার কথা মনে করিয়ে দেননি। পরে তিন বছরের মেয়ে দিশাকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন বলে হয়তো তার মাথা থেকেও কথাটা বেরিয়ে গিযে থাকবে। শুভা ভাবি রঞ্জুকে একটু বসতে বলে শোবার ঘরে ঢুকলেন, তার আর বের হবার নাম নেই দেখে ডাইনিং রুম থেকেই গলা চড়িয়ে বিদায় নিয়ে বেরিয়ে এসেছিল রঞ্জু। বেরোনোর মুখে আভার এই ডাক। একটু অপ্রস্তুত রঞ্জু বোকা হাসে,
- কালকে কয়টায় আপনার পরীক্ষা?
- জ্বী, সাড়ে দশটায় শুরু হবে।
- আচ্ছা ঠিক আছে, আমি সাড়ে নয়টার মধ্যে চলে আসবো। আপনি রেডি হয়ে থাকলে যেতে সময় লাগবেনা।

আভার চোখ মূহুর্তেই সুস্থির হলো মনে হলো। সামান্য ঘাঁড় কাত করে মিষ্টি করে হাসলো। এক পলক সেই দিকে তাকিয়ে রঞ্জু পা চালিয়ে সিঁড়ি দিয়ে নেমে আসে।

তিন,

কান দুটো যে কেন এত গরম গরম আর শরীরটা যে কেন এত ঝাঁ ঝাঁ - তা বুঝতে না পেরে প্রচন্ড অস্বস্তি বোধ করতে থাকে রঞ্জু। রাস্তায় পা দিয়েই একটু নাড়া খেয়ে ওঠে। ভাগ্যিস! বন্ধু বান্ধবের কল্যানে ঢাকা ভার্সিটির ক্যাম্পাসটা মোটামুটি ভালই চেনা হয়ে গেছে তার, তা না হলে ভাল বেইজ্জতি হতে হতো। মনে মনে শান্তির দম ফেলে রঞ্জু।

মহাখালির চেয়ারম্যানবাড়ি এলাকায় রঞ্জুদের নিজস্ব বাড়ি। রঞ্জুর দাদা তার দুই ছেলেমেয়ের জন্য বাড়িটা তৈরী করে গেছেন আর কতগুলো দোকান। দোতলা বাড়িটা পরে ভেঙ্গে চারতলা করেছেন রঞ্জুর বাবা। এই বাড়িতেই জন্ম রঞ্জুর তিন ভাই বোনের। জন্ম থেকে এসএসসি পর্যন্ত বলতে গেলে মায়ের আঙ্গুল ধরে ধরে রাস্তা ঘাটে চলাফেরা করেছে সে। মায়ের হাত ধরে শাহীন থেকে স্কুল শেষ করে বাসার কাছাকাছি তিতুমীর কলেজে ভর্তি হয়েছে। এখান থেকেই কোনমতে ডিগ্রি পাশ করে বাবার নানান জাতের দোকানগুলো দেখাশোনা করছে এখন রঞ্জু। পড়ালেখায় তেমন একটা ভাল সে কখনোই ছিল না। তার জন্য বাবা-মায়ের কাছে কম কথাও শুনতে হয়নি এ জীবনে। এই কারণে, এই এতটা বয়স পর্যন্ত সে এখনো বাবা-মায়ের আদেশ নির্দেশের উপরেই আছে।
‘আরে! সবাই কি ভাল ছাত্র হয় নাকি? কেউ খারাপ রেজাল্ট না করলে ভাল ছাত্রদের কি দাম থাকতো নাকি?!’

রঞ্জুর বড় ভাই মোটামুটি বেশ ভাল রেজাল্ট নিয়ে এমবিএ কমপ্লিট করে ভাল একটা চাকরি করছে। তার বিয়ে হয়েছে পাঁচ বছর হলো। এবার বোধ হয় তার পালা। এরকমটাই শুনেছিলো সে বাবা-মায়ের রুমের সামনে দিয়ে যাবার সময়। বাবা বড় ভাই ভাবীকে বলছিলেন মেয়ে দেখার জন্য। মেয়ের কথায় রঞ্জুর চমক লাগে। সুড়–ৎ করে আভার চেহারাটা মনে পড়ে। আবার কান গরম লাগে রঞ্জুর।
‘ধ্যাৎ! মাত্র দুই তিন ঘন্টাতেই কাউকে ভাল লাগে নাকি?’ নিজেকে শাষিয়ে হাঁক দিয়ে একটা রিক্সা ডেকে উঠে বসে তাতে। এখন আর ভাবনা নেই। রাস্তা চেনা হয়ে গেছে। বেশ রোবের সাথে বলে,’ শান্তিনগর চলেন।’
অন্য দিন হলে রিক্সাভাড়া নিয়ে দরদাম করতো, দুই চারটা রিক্সা যাচাই করতো। ফুর্তি নিয়ে রিক্সায় বসে চারপাশ দেখে রঞ্জু। উঁচু উঁচু বিল্ডিং এ ভরে গেছে এলাকাটা। একটা শীতল স্রোত নামে হঠাৎ পিঠ বেয়ে। পেটে ভুটভুটি ফোটে। গত কিছুদিন ধরে এই এলাকাটায় বিল্ডিং হেলে পড়া - ধ্বসে পড়া নিয়ে আতংক চলছে। ইস! একটা বড় ধরনের ভূমিকম্প হলে কি যে হবে ঢাকায়!! নাহ্ । মাথা ঝাঁকিয়ে জোর করে চিন্তা ঝাড়ে রঞ্জু। এখন আজে বাজে চিন্তা করতে ইচ্ছা করছেনা। আভার কথা ভাবতে ভাল লাগছে। ছাড়া ছাড়া দু’চারটে যেসব বাক্য আভার মুখ দিয়ে বের হয়েছিল সেগুলো মনে করার চেষ্টা করে মন দিয়ে। ভাবীর কি একটা কথায় বেশ একটু জোরেই হেসে উঠেছিল একবার আভা। সেই হাসিটুকু কানে বাজতে থাকে রিন রিন টুং টাং জলতরঙ্গের মত। শান্ত স্নিগ্ধ উজ্জ্বল শ্যামবর্ণের মুখটার উপর টলটলে চোখ দুটো কি নিষ্পাপ! আর অতি ক্ষীণ প্রায় শোনা যায়না এমন নরম আর মিষ্টি স্বর আভার! হঠাৎ কি হয় রঞ্জুর, আবার সেই স্বর শোনার লোভ হয়। পকেট থেকে মোবাইল ফোন বের করে শুভা ভাবীর নম্বর টেপে। আজই নম্বরটা নিয়েছে সে। নাম্বারটা টিপেই কেটে দেয় সাথে সাথে।
‘ধ্যুৎ! ভাবী তো জিজ্ঞেস করবেই কেন ফোন করেছে? তখন কি বলবো?’
কিন্তু আভার গলার স্বর শোনার জন্য ভেতরের অস্থিরতাটা জলোচ্ছাসের তান্ডবের মত রঞ্জুর সব দ্বিধা ভয় ভাসিয়ে নিয়ে যায়। আবার নম্বর টেপে রঞ্জু।
‘যা হোক একটা কিছু বলা যাবে, আগে ফোন তো করি।’ রিং বাজতে বাজতে লাইন কেটে যায়। বিরক্ত রঞ্জু ফোনের দিকে ক্ষানিক রাগ চোখে তাকিয়ে আবার ডায়েল করতে যাবে, রিক্সাঅলার কথায় চমকে ওঠে,
-ভাইজান, কোনখানে নামবেন? এই বাস ইস্ট্যান্ডে না ঐ পাশেরটাত?
রঞ্জু থমকে জায়গাটা দেখে নেয়। হ্যা এটাই তো। রিক্সা থেকে নেমে পার্স বের করে রঞ্জু।
- কত হইছে?
- পঁচিশ ট্যাকা দ্যান।
কপাল কুঁচকে ওঠে রঞ্জুর। এইটুকু রাস্তা পঁচিশ টাকা?! দাম না করে রিক্সায় উঠার ফল। ঠোঁট টিপে রাগ সামলে পঞ্চাশ টাকার একটা নোট বের করে এগিয়ে দেয়। এমন সময় হাতের মোবাইলটা বেজে ওঠে। সামান্য চমকায় রঞ্জু। উচ্চকিত হয়ে স্ক্রীনে চোখ রাখে। শুভা ভাবী!! ধ্বক করে ওঠে কলজেটা! এক হাতে ফোন রিসিভ করে অন্য হাতে রিক্সাঅলার কাছ থেকে টাকা নেয় রঞ্জু। দু’কদম এগিয়ে প্রায় খালি বাস স্টপটার ছাউনির নীচে এসে দাঁড়ায়।

- হ্যালো? হ্যালো? ’ ওপাশের ব্যস্ত উদ্বিগ্ন কন্ঠ শুনে বাকশূন্য হয়ে পড়ে রঞ্জু। আভা!!? ভাবীর গলা এত মিষ্টি না। তবুও বলে,
- হ্যালো? কে ভাবী? আমি রঞ্জু।
- জ্বী, আমি আভা। আপা একটু ঘুমিয়েছে। দরকারি কোন কথা থাকলে আমাকে বলতে পারেন, আমি আপাকে বলে দেবো।

রঞ্জু মনে মনে প্রচন্ড অবাক হয়। সামনা সামনি তো কথাই বলে না এই মেয়ে! আর ফোনে একসাথে এত কথা!! আর.. এত মিষ্টিও হতে পারে মানুষের গলা?! রঞ্জুর কথা জড়িয়ে যায়। কি বলবে বুঝতে পারেনা। বলে বসে,
- ওহ্,না, ইয়ে মানে থাক, আমি পরে ফোন করবো আবার।
- আচ্ছা, ঠিক আছে। রাখি? ওহ্, কালকে আসবেন তো?
আভার প্রশ্নের জবাব দেয়ার আগেই কর্কশ একটা শব্দ কানে আসে রঞ্জুর চাকা ঘষার। ফোনটা তখোনো কানের কাছে ধরা রঞ্জুর। বিষ্ফোড়িত চোখে মৃত্যুকে দেখে রঞ্জু। আভার প্রশ্নের জবাব দেয়া হয়না আর। অভুক্ত অজগরের মত সর্বগ্রাসী হা মেলে প্রচন্ড বেগে রঞ্জুকে গিলতে ধেয়ে আসে একটা মিনিবাস।


মন্তব্য

এম আব্দুল্লাহ এর ছবি

ভাই দিলেন তো হার্টটা প্রায় বন্ধ করে..
কোথায় একটা রোমান্টিক কমেডি'র প্রত্যাশায় ছিলাম।
এম আব্দুল্লাহ

ফাহিম হাসান এর ছবি

লেখা ভাল লেগেছে। কিন্তু নাম না দিলে এমন বকা খাবেন...

বন্দনা কবীর এর ছবি

লেখাটা প্রকাশ করার পর খেয়াল হল নাম লিখিনি নীচে। কি করবো? এভাবে কোনো ব্লগে লিখে নীচে নাম সই করতে হয় না তো তাই অভ্যাস বশেই...

বকাকে ভিষন ভয় পাই গো ভাই... আমার নাম বন্দনা কবীর হাসি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।