ব্লগগুলোর মধ্যে আমি সর্বপ্রথম লেখা দিই সচলে। অন্যান্য ব্লগগুলোতে ঘুরে দেখেছি সেখানে নানান তরিকার লেখার মধ্যে জিহাদের জোশে জোশপ্রাপ্তদের লেখাও ছাপা হয়, ছাপা হয় চরম ধর্মান্ধ লেখা - আমার বিবমিষা হয়েছে। সবার অনেকরকম ছাড়পত্র থাকতেই পারে (জামাত-শিবির-রাজাকার ছাড়া) কিন্ত আমার নিজ দায়বদ্ধতার জায়গাটুকু ধরে রাখার অধিকারের সাথে আমিইবা আপোষ করবো কেন?
সচলে লেখা দিতে যেয়েই ক্যাপচা নামের তিতকূটে জিনিসটার সাথে একটা আক্রমনাত্মক সম্পর্ক তৈরী হলো!
আমার লেখা ছাপানোতে ছিল তীব্র আপত্তি কিন্ত লেখার তাগিদ ষোল-আনা। আমার এসএমএস এর যন্ত্রনায় বন্ধু আর আমার পছন্দের মানুষদের প্রাণ উষ্ঠাগত যখন, তখন তারা আমাকে ক্রমাগত তাগিদ দিতে থাকলো পত্রিকায় লেখা দেয়ার জন্য - কিন্তু আমার কোন পত্রিকাই আর ভালো লাগেনা। তারপর তারা নিরুপায় হয়েই আমাকে বলে “মামা ব্লগে লেখো”! তাদের এইসব কৌশল এর সাথে আমার পরিচয় আছে। জাহাঙ্গীরনগরে থাকতে দিনরাত গান গাইতাম (এখনও গাই), আমার বন্ধুরা একবার চাঁদা তুলে আমাকে দিলো খুব সিরিয়াস ভাবে, আমার হাতে দুইশো চব্বিশ টাকা দিয়ে বললো ”মামা, আমরা তোমার গলা নিয়ে খুবই চিন্তিত, তোমাকে মাসে মাসে টাকা দিবো, গলার যতনের জন্য হইলেও একটু কম গান গাও”! হাহাহাহা, কি অসাধারন সব বন্ধুভাবাপন্ন শত্রু আমার! (বন্ধুরা আমাকে কোন এক বিচিত্র কারনে মামা বলে ডাকে)
এবং সচলেই আমার জানা হয়ে গেলো পাঠানো লেখা ছাপা না হওয়ার দাবদাহ কতটা তীব্র হতে পারে! আমার এটা জানা ছিলোনা। আবেগ আর অনুভূতি আমার যাপিত জীবন বারো-আনাই বলতে গেলে নিয়ন্ত্রন করে, লেখা ছাপা না হওয়ার এই নতুন অভিমান আমার জীবন অতিষ্ঠ করে তুললো। নিয়মকানুন না জেনে পারলে পেরতেক দিন লেখা দিই, কোনটা ছাপা হলে দেখি “বুকের ভেতর বাদ্য বাজে” আর ছাপা না হলে চারপাশের মানুষ টের পায় পাগলার কোথাও কোন ঝামেলা হয়েছে। বিয়ে কেন করিনা এই প্রশ্নে উষ্ঠাগত প্রাণের সাথে সবকিছু ছাপিয়ে এমনকি ঘুমের ঘোরেও ফাপড় খেতে থাকি - “লেখা তুমি আসোনা কেন ছাপার অক্ষরে!”
আমি সবসময় কষ্টে থাকতাম যে বলার কথাগুলো কেউ বলছেনা, “দিবারাত্রি আপোষ আর আপোষ”- চারিদিকে বাজার বসিয়ে ফেলেছে, এখানে এসে আমার সে কষ্ট অনেকটাই কেটে গেলো। এর মাঝে জাহাঙ্গীরনগরের ছোট ভাইদের হাত ধরে উন্মোচন ব্লগেও লেখা দিই, ওরা আমাকে সদস্যও করে নিলো, সেখানেও প্রথমটায় দেখি ক্যাপচা!
এই ক্যাপচা নামের উপদ্রবে জীবন ফানাফানা, মন্তব্য করতে গেলে বাংলায় লেখোরে, তারপর চোখে চশমা পড়রে, ভালো করে দেখোরে, তারপর টাইপ করোরে -- সব যন্ত্রনা হাসিমুখে পার হয়ে এলেন, তারপর দেখলেন ক্যাপচার পুলসেরাত পার হতে পারলেননা। কি আজব ব্যাপার - লেখালেখির জগতে ক্যপচা দাঁত বের করে হাসে আর আমরা কাঁদি! অনেকবার অনেক পোষ্টে মন্তব্য করতে চেয়েও করতে পারিনি। ”বাঁশ তুশি পথে কেন, নিকটে আসো” ফাপড়ের মতই ক্যাপচা আমাকে ক্রমাগত মনে করিয়ে দিয়ে যেতে থাকে - আমি মানুষ না হয়ে অটোমোটেড কোন একটা কিছু হলেও হতে পারি!
এমনিতেই মানুষ হতে পারিনি! গতকাল রাত্তিরে মা-জননী ফোন করলেন কেমন আছি জানতে। আমি কুয়াকাটায়, গলদা চিংড়ী আর রুপচাঁদা ভাজতে বলে এসেছি কফিহাউজের নজরুলকে আর সাথে বড় ক্র্যাব। মাকে ক্র্যাব এর কথা বলতেই তিনি হায়হায় করে উঠলেন। ছত্রিশ বছর বয়স আমার, তিনি একপর্যায়ে বললেন - তোমার আব্বাকে বলে দেবো। আমি বললাম “বাতাদো বাতাদো লেকিন ক্র্যাব নেহি ছোড়েঙ্গা!" ক্র্যাবেই হায়হায় আর ক্র্যাব খাওয়ার জলজ অনুষঙ্গ দেখলে নির্ঘাত হার্টফেল করতেন।
ক্রমাগত মানুষ হবার চেষ্টা করে যাচ্ছি কিন্তু হতে পারছিনা, বাংলাদেশ আমাকে মানুষ হিসেবে পরিচয় দিতে ক্রমাগত লজ্জিত করে যাচ্ছে, লজ্জিত করে যাচ্ছে চারপাশ। এরমাঝে প্রথম প্রথম বুঝতে না পারলেও আজকে টের পেলাম ক্যাপচা নেই। আক্রমনভাগের খেলোয়াড়দের সাথে ডিফেন্স এর খেলোয়াড়দের শত্রুতা আজন্ম কিন্ত মাঠের বাইরে বন্ধুত্ব হয়; আমি টের পেলাম ক্যাপচা নেই এটা যতটা না আনন্দের তার পাশাপাশি ক্যপচা আমাকে মানুষ বানিয়ে দিয়ে গেছে। আমি এখন আর মানুষ আর সপ্যাম এর মাঝামাঝি আটকে নেই। এবং এটা ঘটেছে সচলের কোন এক চালে!
সচল সংশ্লিষ্ট সবাইকে ক্যপচা কৃত জ্ঞতা এবং খুশীতে আমার প্রাণের একটা গান আপনাদের সম্প্রদান কারকে উপহার দেয়া হলো http://www.youtube.com/watch?v=Ci_sPC4yaiE&feature=related
আমরা সবাই, ইচ্ছেমতন, থাকি ভালো! ----- তানিম এহসান, কুয়াকাটা, ২৯. ০৭. ২০১১
মন্তব্য
প্রিয় তানিম ভাই, একেবেরে আমার মনের কথাগোলো বলে দিলেন!!!! আসলেই এই সিদ্ধান্তটি অনেক বেশি ইউজার ফ্রেন্ডলি হয়েছে!!!! চমৎকার পদক্ষেপটির জন্য সম্মানিত কর্তৃপক্ষ সাধুবাদ প্রাপ্য। আমি সেদিনি বলেছিলাম, আজ আবার বললাম।
অটঃ ভাইয়া একটা প্রশ্ন করেছিলেন উত্তর দিতে পারি নিঃ পরীক্ষা ভালো হচ্ছে ভাইয়া, প্রতি বুধবার থাকে, সামনের বুধবারেই শেষ হয়ে যাচ্ছে!!! কী শান্তি!!!! আপনি কেমন আছেন বলুন তো?
ওহে মৃত্যুময় ইষৎ, পুরাতন ‘কবি মৃত্যুময়’
কিছুদিন ‘পোয়েট অব ডিমাইজ’ নামেও ছিলে
আমি ভালো আছি, জীবনের যাতাকলে
যতটুকু থাকা যায়, যতটুকু বেঁেচ থাকা হয় -
পাষাণ প্রণতি!!
উচ্ছ্বসিত মুহূর্তের দেখা পান সব সময়....................পাষাণ নয়!!!!
captcha নিয়ে আমিও ঝামেলায় ছিলাম, লিখে যান তানিম, শুভেচছা
সাযযাদ ভাই, আপনি করে বললা নাকি!!!
ক্যাপচা আমারেও খুব জালাইছে কয়দিন ... এখন অনেক শান্তি
হ ভাই, আর বইলেননা! শান্তিতেই থাকুন!
তানিম ভাই
লেখা ভালো হইসে। ঢাকা আসবেন কবে?
ঢাকা কবে আসবো বলবোনা
তানিম ভাই লেখা ভালো হইসে। ঢাকা আসবেন কবে?
তানিম এহসান, লেখাটি ভালো হয়েছে, কিন্তু শুনে রাখুন, সচলে অতিথি লেখকদের লুলবৃত্তি কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। আপনাকে আগেই ওয়ার্নিং দেওয়া হয়েছিল, যে আপনার উপর কড়া নজর রাখা হচ্ছে, কিন্তু আপনি তা কানে নেন নি, সচল তিথীডোর থেকে অতিথি আয়নামতি সবার প্রতি নির্বিচারে লুলকমেন্ট করে গিয়েছেন, ওঁদের ওয়ার্নিংকে সমীহ করেন নি। আবার তাঁদের অনুপস্থিতিতে নবাগতা লেখিকারও নামধাম খোঁজ নিতে শুরু করেছেন। এমতাবস্থায় মডুপ্যানেল থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে আগামী একমাস আপনাকে আইপিসহ ব্যান করা হবে।
( আপনি নাকি সঙ্কোচবশত আমাদের 'ছল করে ঝগড়াঝাটি'তে যোগ দিতে চান না? এইবার আপনাকেও টেনে নিলাম... )
খাইছে, এইসব ওয়ার্নিং এর মামলা কবে থেকে একদম সিরিয়াস রুপ নিয়ে নিলো? আপনিতো দেখি একবারে হিষ্ট্রি ধরে টান দিয়েছেন। আপনাকে ধন্যবাদ সবগুলো খুঁজে খুঁজে লিংক ধরে দেয়ার জন্য। ’লুলবৃত্তি’ জিনিসটা বাংলা অভিধানে নতুন যোগ হয়েছে বলে মনে হচ্ছে । ভাই, আমি খুবই নাদান মানুষ, এম্নিতেই নানাবিধ ঝামেলার মধ্যে আছি, আর ঝামেলার মধ্যে জড়ায়েননা। ওম শান্তি!
সচলদের একচেটিয়া লুলবৃত্তির অবসান হোক। এসেছে নতুন অ-চল, তারে ছেড়ে দিতে হবে স্থান। কৌস্তুভ, এই বেলা অবসর নেন।
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
আমি কিন্তু ক্যাপচার সাথে আপনার মানুষ হওয়ার সম্পর্ক বুঝলাম না, লেখাটা বরং অসংলগ্ন লাগলো। এই লেখায় ক্যাপচার তেমন জোড়ালো উপস্থিতিও বুঝলাম না। তবে লেখা পাবলিশ হওয়ার অনুভূতিটা মিলে যায়। এখনো ব্লগ লিখে শুরুর মতই আগ্রহ নিয়ে প্রথম পাতায় আসার অপেক্ষা করতে থাকি।
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
ব্লগরব্লগর রে ভাই, কোন অর্থ বোঝাতে চাইনি, কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে চাইছিলাম, সেটাই ছিলো মূল উদ্দেশ্য। “লুলবৃত্তি” শব্দটা ভালো পাইনা। মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ!
লুলবৃত্তি শব্দের কপিরাইট ঠিক আমার না, আর সবাই মনে হয় এটা মজা করার জন্যই ব্যাবহার করে।
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
subject অসাধারন, লেখার style টাও মজার। আর জাবি'র product হবার জন্য বিশেষ ....
ভাইকি জাবি নাকি? মারহাবা মারহাবা!
হুমম। বুঝ্তেই পারছেন স্বজাতি বলে ক্থা। Jahangirnagar বাংলায় লিখতে পারছি না। তাই জাবি লিখ্লাম, এখ্ন ও পুরাটা স্বা্ক্ষর হতে পারলাম না।
ভালো থাকবেন! শুভেচ্ছা,
আপনার বন্ধুদের কথা শুনে ভাল লাগল। ক্যাপচা জিনিসটা আমারও পছন্দ না। তবে স্প্যম ঠেকায় তো, তাই সহ্য করে নেই।
শুভেচ্ছা।
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
ফাহিম ভাই, ইসকান্দার বরকন্দাজ ভাই এবং দ্য রিডার - সবাই ধন্যবাদ জানবেন। শুভেচ্ছা,
নতুন মন্তব্য করুন