অন্তঃস্বত্তা অবস্থায় মনটা খুব দুর্বল হয়ে যায়। প্রাথমিক শরীরখারাপ ভাব একটু সামলে উঠার পর আমি দেখতে পেলাম চারপাশে অটিস্টিক এবং প্রতিবন্ধি মানুষের সংখ্যা অনেক বেশি। আগে কিন্তু এরা আমার চোখে পড়েনি। আমার গলিতেই চারতলার এক বারান্দায় এক মাকে দেখলাম বুদ্ধি প্রতিবন্ধি ছেলেকে নিয়ে দিশেহারা মুখে বসে থাকেন। অফিস বিল্ডিং এর লিফট ম্যানের কাছে একজন বসে থাকে প্রতিদিন। ট্রাফিক সিগন্যাল এ পড়লে তো হাত নেই, পা নেই, চোখ নেই এমন অনেকে ছুটে আসে টাকা চাইতে। রাস্তার পাশে হিজড়াদের আমার চোখ খুঁজে নিতো। প্রচন্ড ভয়ে মন কুঁকড়ে যেতো। সুদূর শৈশবে বাসার বুয়ার কাছে শোনা গল্প মনে পড়ে যেতো ‘এক মেয়ের সাপের মতো দেখতে বাচ্চা হয়েছে...’। দিনরাত একটাই চাওয়া ‘একটা সুস্থ বাচ্চা হোক’।
শুক্রানু দিয়ে ডিম্বানু নিষিক্ত হবার পরপর তাকে ইংরেজিতে ফিটাস বলেনা, বলে জাইগোট। বাংলায় অবশ্য ভ্রুন ই একমাত্র শব্দ। জাইগোট অবস্থায় ই সেক্স নির্ধারিত হয়ে যায় সবার আগে, আর তার সব কৃতিত্ব বাবার ক্রোমোজমের। প্রথম মাসেই চুলের রঙ, চোখের রঙ ও নিশ্চিত হয়ে যায়। সুতরাং বাকি সময় ধরে বাচ্চা দেখতে কেমন হবে,মেয়ে নাকি ছেলে হবে, চুল-চোখ-নাক-মুখ কেমন হবে এসব ভেবে বিচলিত হবার কিছু নেই। কিন্তু মন কি বৈজ্ঞানিক যুক্তি মানে?
মা’র জন্য ভীষণ আকুলতা আর অস্থিরতা তৈরি হয় অন্তঃস্বত্তা অবস্থায়। আমার মা যেহেতু দূরে থাকতো,নিজেকে সামলে নিতে হতো আমার। বেশি ফোন করলে বা খারাপ কিছু বললে দুশ্চিন্তা করবে এই ভেবে কিছু বলতাম না। কিন্তু সারাক্ষন জপতাম মা, মা, মা। আমি রিয়েলাইজ করতে পারলাম পৃথিবীর সব মা হয়তো আদর্শ মা না। অনেক মা সন্তানের জীবনে অমঙ্গল আর অভিশাপ ও ডেকে আনে অনেক সময়। কিন্তু যে ভয়ানক কষ্ট সহ্য করে একটা সন্তান কে আলোর মুখ দেখান একজন মা, পরে যদি তিনি আদর্শ মা’এর ভূমিকায় ব্যর্থ ও হন তবু তাঁকে সম্মান করা উচিত।
হাজব্যান্ডের কাছে এক্সপেক্টেশন বেড়ে যায় খুব। মেয়েরা তো এমনিতেই চায় তাদের ভালোবাসার মানুষ তাদের ঘিরে থাকুক। অন্তঃস্বত্তা অবস্থায় এই চাওয়া আরো তীব্র হয়। ভালোবাসার জন্য এক ধরনের কাঙ্গালপনা তৈরি হয়। সেক্স লাইফ অনিয়মিত হয়ে যায় তাই মেয়েরা নিরাপত্তাহীন বোধ করে। আমি আর আকর্ষনীয় থাকবোনা এই ভয় তৈরি হয়। (বউ অন্তঃস্বত্তা অবস্থায় হাজব্যান্ডের পরকীয়ার অনেক গল্প চালু আছে!) সেজন্য হাজব্যান্ডদের ভুমিকা খুব খুবই গুরুত্বপুর্ণ। অন্তঃস্বত্তা মেয়েকে শোনাতে হবে তাকে দেখতে কতো সুন্দর লাগছে! তাকে ঘিরে কতো মায়া! অনেক ছবি তুলে রাখা উচিত। চার মাস থেকে বাচ্চা যখন বাড়তে শুরু করে তখন পিঠে ব্যাথা, মেরুদন্ডে ব্যাথা, পাশ ফিরতে কষ্ট এইসব শুরু হয়। যেহেতু আমাদের দেশে প্রফেশনাল ম্যাসাজ নেবার বা থেরাপি নেবার সুযোগ নেই তাই এই কাজ হাজব্যান্ডদের করা উচিত। আমাদের মেয়েদের তো শরীর নিয়ে হেজিটেশেনের সীমা নেই। অস্বস্তি বোধ করলে ডাক্তার কে পর্যন্ত বলা যায়না। বাংলা ভাষার কিছু সীমাবদ্ধতা আছে এখানে। আমি একবার ডাক্তারকে বললাম ‘ভ্যাজাইনাল ইরিটেশন হচ্ছে’, উনি অয়েন্টমেন্ট দিয়ে দিলেন। একই ডাক্তারে কাছে গ্রাম থেকে আসা আরেকজন মেয়ে তার এই সমস্যার কথা বলতে গিয়ে মরমে মরে গেলো। বেচারি বলতে পারেনি। আমি পরে তার সাথে কথা বলে ডাক্তারের দেয়া ঔষধটা ব্যবহার করতে বললাম।
পরিবারের মানুষেরা একটা কমন ভুল করেন প্রেগন্যান্সির সময়। খেতে না চাইলে বা ঔষধ খেতে আপত্তি করলে বলেন ‘তোমার নিজের জন্য না বাচ্চার জন্য...’। এটা খুব কমপ্লেক্স একটা সাইকোলজিকাল অবস্থা। আমার নাড়ি ছিঁড়ে পৃথিবীর আলোয় আসবে যে সে তো আমার সবচে প্রিয়, কিন্তু তার জন্য আমি মূল্যহীন? আদর যত্নের বহর বাচ্চার জন্য,আমি কেউ না ? অন্তঃস্বত্তা মেয়েকে জানান বাচ্চার জন্য তুমি গুরুত্বপুর্ণ না, তোমার জন্যই তুমি...বাচ্চার জন্য কাঁথা বানানোর পাশাপাশি অন্তঃস্বত্তা মেয়েটাকে ও উপহার দিন। ভালো বই, সিনেমা-গানের সিডি-ভিসিডি,স্ট্রেচ মার্কস এর ঔষধ, চকলেট, আরমদায়ক আবার ফ্যাশনেবল পোশাক এই সব হতে পারে উপহার। । তাকে দাওয়াত করে খাওয়ানো বা বেড়াতে নিয়ে যাওয়া উচিত। সবসময় একটা মেসেজ দিতে হবে ‘তুমি ভীষণ স্পেশাল!’
অন্তঃস্বত্তা মেয়েদের সাথে বাচ্চা নিয়ে গল্প করা উচিত। অবশ্যই সুন্দর গল্প। কার কতো ঘন্টা ধরে লেবার পেইন হলো, কে পা পিছলে পড়ে পেটে বাচ্চা মরে গেছে এইসব ভুলেও উচ্চারন করা যাবেনা। কিছুতেই তাকে ভয় দেখানো যাবেনা। প্রথমদিকে কিছুদিন আমার চুল উঠছিলো স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি। এক খালাম্মাকে বললাম কোনো সমাধান বাতলে দিবেন সেই আশায়। উনি বললেন ‘আর চুল, সব পড়ে যাবে’। পরদিন আমি দেখলাম বালিশ কালো হয়ে আছে। বালিশের কাভার ধরে দেখি গোছায় গোছায় চুল। আমি চিৎকার করে উঠলাম, আমার বর ডাকতে লাগলো ‘দিহান, কি হয়েছে? কি স্বপ্ন দেখেছো? ভয়ের স্বপ্ন?’ খালাম্মার ঐ কথাটা এমন বাজে স্বপ্ন হয়ে হাজির হয়েছিলো...
তবে এটাও সত্যি মানুষের মমতা অনুভব করতে পেরেছিলাম প্রথম। আমার পাঁচতলার ফ্ল্যাটে একসাথে উঠতে পারতামনা, তিনতলায় এসে সিঁড়িতেই বসে থাকতাম কিছুক্ষন। কদিন বাদে আমি তিনতলা পৌঁছানোর আগেই বাদিকের ফ্ল্যাটের দরজা খুলে দিলেন এক মহিলা। বললেন ‘আসো একটু বসে জিরিয়ে নাও’। আহ মনটা যেনো ভরে গেলো এই কথায়। আরো দুমাস ওই ফ্ল্যাটে ছিলাম, প্রতিদিন উনার দরজা খুলে দিতেন। একদিন আচার দিলেন আরেকজন প্রতিবেশি। কোটি কোটি মানুষের দেশ বাংলাদেশ, তবু কারো বাচ্চা হবে শুনলে আমরা খুশি হই!
প্রেগন্যান্সির তিনমাস পেরুলে ভ্রুনের দৈর্ঘ্য হয় ২-৩ ইঞ্চি। আর ওজন ১৫-২০গ্রাম। নার্ভাস সিস্টেম, ব্রেন আর অন্য সব প্রত্যঙ্গ তৈরি প্রায় শেষ। তার হৃৎপিন্ড ধুকপুক শুরু করে দেয়,ডপলার দিয়ে হার্টবিট শোনা যায় । চোখ তৈরি হয় আর হাত পা ও নিজস্ব আকৃতি নিয়ে নেয়। চার মাস শেষে নড়াচড়া বোঝা যায়। বাবুটা তখন তার ছোট্ট মুখ খুলতে লাগাতে পারে,আঙ্গুল চুষতে পারে! তার সমস্ত শরীর লোমে ঢাকা, মনুষ্য আকৃতি পেয়েছে অবশ্য। আলট্রাসনোগ্রাফি করালে ছেলে নাকি মেয়ে জানা যাবে।
পেট বড় হতে শুরু করে তখন থেকে। আমাদের দেশে আলাদা প্রেগন্যান্সি আউটফিট নেই তাই ঢিলাঢালা কাপড় পরতে হবে। পেটে চাপ পড়ে এমন কাপড় অ্যাভয়েড করা উচিত। বাচ্চার চাহিদা বাড়ে তাই ক্ষুধা বেড়ে যায়। তবে বড় ‘মিল’ না খাওয়া ভালো, একঘন্টা পরপর অল্প অল্প করে খেলে নিজে বেশি মোটা হবার সম্ভাবনা কমে যায়। একসাথে বেশিক্ষন বসে থাকা যাবেনা, ঘন্টাখানেক পরপর দশ মিনিট করে হেঁটে নিতে হবে।
পাঁচমাস হয়ে গেলে ছোট্টমনির কান একদম তৈরি হয়ে যায়, সে তখন শুনতে পায়! আর মজার ব্যাপার হলো মেয়েদের হাই-ফ্রিকোয়েন্সি গলার স্বর থেকে ছেলেদের নীচু ফ্রিকোয়েন্সির স্বর বাচ্চারা ভালো শুনতে পায়! অতএব বাবারা, গল্প শুরু করুন আপনাদের আত্নজ-আত্নজার সাথে। আমার বর একজন বাঁশুরিয়া (তার সঙ্গে এতোদিন টিকে যাবার এটা একটা অন্যতম কারন!)। সে তখন প্রতিদিন সন্ধ্যায় বাঁশিতে বাজাতো ‘হৃদয় শশী হৃদিগগণে উদিল মঙ্গল লগনে...’। আমাদের বড় মেয়ে দুইমাস বয়স থেকে এই গানটা শুনলে চুপচাপ হয়ে যায়!
সন্ধ্যার আধো আলো আধো অন্ধকারে বারান্দায় বসে বাঁশি শুনতে শুনতে আচমকা বাচ্চার একটা ছোট্ট ডাইভ অনুভব করে আমার ও মনে হতো-
‘ডুবিল কোথা দুখ সুখ রে, অপার ও শান্তির সায়রে
বাহিরে অন্দরে জাগেরে শুধুই সুধা পূর্ণিমা।
চিত্ত মাঝে কোন যন্ত্রে, কী গান মধুময় মন্ত্রে
বাজেরে অপূর্ব তন্ত্রে, প্রেমর কোথা পরিসীমা............’
দিহান
মন্তব্য
দারুণ একটা লেখা হচ্ছে।
সত্যি কথা বলতে গেলে আমি কখনো এই বিষয়ে কোন লেখা পড়িনি। মাঝে মধ্যে টুকরো টুকরো কিছু বিষয় গল্প-উপন্যাস-খবরের কাগজের স্বাস্থ্যপাতায় পেয়েছি, কিন্তু পূর্ণাঙ্গ কোন লেখা এই প্রথম পড়লাম।
অসাধারণ এই সিরিজের জন্য অনেক ধন্যবাদ।
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
নিজের মায়ের কথা মনে হচ্ছিল পড়তে পড়তে।
আগ্রহ নিয়ে পড়ছি।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
আপু কি দেশে না দেশের বাইরে আছেন? প্রথম পর্ব পড়ে ভেবেছিলাম আপনি বোধহয় দেশের বাইরে!
--স্বপ্নাদিষ্ট
=============================
যে জাতি নিজের ভাগ্য নিজে পরিবর্তন করে না, আল্লাহ তার ভাগ্য পরিবর্তন করেন না।
আপু কি যে বলবো, আপনার লিখা পড়লে অন্যরকম একটা ভালো লাগে, নিজের মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা আরো বেড়ে যায়। সাথে সাথে মেয়ে হয়ে জন্মেছি , কোন একদিন মা হব, ঠিক এরকম না হলে ও কাছাকাছি একটা জার্নির মধ্য দিয়ে যাবো, এইজন্য নিজেকে অনেক ভাগ্যবতী ও মনে হয়।
আপনাকে বিরাট সালাম জানাই। খুব ভালো একটা কাজ করছেন।
এটা আসলেই খুব গুরুত্বপূর্ণ ,একটা সুস্থ সবল ছোট্ট বাবুর জন্ম হওয়া।তার জন্য মাকে যে কষ্টটা করতে হয় কোনকিছুর সাথেই তার তুলনাই হয়না।
অসম্ভব ভাল একটা লেখা উপহার দেয়ার জন্য আপনাকে অনেক বেশি ধন্যবাদ দিহান আপু।
আপু, মানে, কোট করতে পারবো না, অনেক জায়গা থেকে করতে হবে তাইলে, এত ভালো লাগলো পড়ে...
মায়েদের জন্যে উপহার খুব জরুরি... বেচারা আমার মা, আমরা দুই ভাই-বোন হবার সময়ে কত কষ্টই না করেছে... আর তারপরেও তাকে কত কষ্ট দেই...
আপনার মেয়েদের নাম কী? বড়জন সেই গানটা শুনলে চুপ করে যায়, পড়ে দারুণ অভিভূত হলাম...
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
আমার স্ত্রীর এই সময়টায় আমি কাছে থাকতে পারিনি। দুই বেডরুমের একটা বাসায় বেচারী একা একা দিন কাটিয়েছে। মাঝে ফোন করে কান্নাকাটি করতো। বড় কষ্ট পেয়েছে সে।
থামাবেন না। আগ্রহ নিয়ে পড়ছি।
যাক, আমাদের ভাইয়ার আরেকটা গুনের কথা জানা গেলো, তিনি বাশরীয়া। আর বড় মেয়েটার গান শুনে চুপ হয়ে যাবার কথা শুনে একটা ভালোলাগা ভাসিয়ে নিয়ে গেলো।
আপনার একটা জায়গায় জোরালোভাবে কথা বলতে চাই, কথা বলা - প্রচুর কথা বলা উচিত। যতভাবে পারা যায় কমিউনিকেট করা উচিত। শিশুর বয়স আমরা জন্মের পর থেকে ধরি কিন্তু তার বয়স আসলে একদম ০ দিন থেকে কাউন্ট করা উচিত। আমাদের দেশে আর্লি চাইল্ড কেয়ার কিংবা প্যারেন্টিং এর বিষয়টা অনেক অবহেলিত। আপনার লেখায় সেগুলো আসছে। আসতে থাকুক।
অনেক শুভেচ্ছা,
শুধু শোনা নয় একটা পর্যায়ে বাইরের আলো ঝাপসা দেখতে পায়। তখন ঘরের আলো বন্ধ করে ছোটো একটা টর্চ লাইট পেটের উপর ধরলে বাচ্চা হাত বাড়িয়ে সেটা ধরতে চায়। তবে বাচ্চা বেশীরভাগ সময় ঘুমিয়ে থাকে বলে সফল হবার সম্ভাবনা কম।
খুব ভাল লাগছে !
দিহান আপু, ভাল হচ্ছে। আপনার লেখায় সব সময় পুরুষতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতি আঘাত কবা হয়। তাই পড়তে আরো ভালো লাগে।
লেখাটা পড়ে বিষ্ময়াভিভুত হয়েছি, প্রধান কারণ আমাদের সমাজে নারীরা সাধারনত রক্ষণশীল। আপনার এই উদ্যোগ সত্যিই প্রসংসনীয়। লেখাটি মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্ত অন্তঃসত্ত্বা নারীদের জন্য একটি দিগনির্দেশনা। লেখাটি তাদের কাছে পৌঁছানোর উদ্যোগ গ্রহন করা প্রয়োজন। সম্ভব হলে কেউ এই কাজটি করুন। ধন্যবাদ আপনাকে, রক্ষণশীলতা পরিহার করে, অনেকের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে এমন একটি বিষয় উপস্থাপন করার জন্য।
ও হ্যাঁ, নামটা জানানো হয়নি, আমি প্রৌঢ়ভাবনা।
আগের দুটো পর্ব মিস করেছি বলে আফসোস হচ্ছে! খুঁজে হয়ত পড়বো। সচলের মডুদের প্রতি একটা বায়না করে যাই......দিহান আপুকে হাচল করে দেয়া হোক। অসাধারণ একটা সিরিজ চালু করার জন্য অনেকক অভিনন্দন! শুভকামনা আপনার জন্য।
এ ধরণের বায়না করে চাপ প্রয়োগ করা ঠিক না। সময় হলে মডুরাই ব্যবস্থা নিবেন।
@মাহবুব মুর্শেদ, আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি, অযাচিতভাবে 'চাপ' প্রয়োগের জন্য! যদিও ওটা শ্রেফ বায়না ভেবেই করা।
পরকীয়া? এইটা মনে হয় আপনাদের এই সময়ে মাথায় ঢুকে যায়...আরে বাবা কিছু ভাল মানুষতো দুনিয়াতে আছে নাকী?
আসলেই একটামাত্র প্রার্থণাঃ সুস্থ একটা বাবু হোক।
এইসময়ের সবচেয়ে বড় ভেজাল মনে হয় খাওয়া-দাওয়া...কোনটা যে ভাল লাগবে আর কোনটা লাগবে না সেটা কেউ বলতে পারেনা! আর বেশ কিছু খাবারে রেস্ট্রিকশনও থাকে। ডায়বেটিস হলেতো কথাই নেই। দেশে অনেকের ধারনা, দুইজনের খাবার খেতে হয়...এটা মনে হয় ঠিক না। শুধু সুষম-পুষ্টিকর খাবার খাওয়াটাই জরুরি-২০০-৩০০ ক্যালোরি এক্সট্রা খেলেই হয়!
আমাদের দেশের কিছু মানুষের বেশ কিছু মানসিক সমস্যা থাকেঃ তার একটা এইসব আজবাজে কথা বলা...এসময় মায়ের মন থাকে দুর্বল। "অমুকের এমন হয়েছে, তমুকের এই সমস্যা হয়েছে"- এইসব কথা কেন যে বলে কে জানে! খুব এফেক্ট পড়ে!
জটিল হচ্ছে সিরিজ...
-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...
সিরিজটা আগ্রহোদ্দীপক হচ্ছে, আপাতত এইটেই বলে যাই।
--------------------------------------------
যদ্যপি আমার গুরু শুঁড়ি-বাড়ি যায়
তথাপি আমার গুরু নিত্যানন্দ রায়।
শুভেচ্ছা...
আমার ঘরে বাঁশি আছে, একটা না। দু দুটা। কিন্তু সমস্যা হলো, আমি তো বাঁশিতে ফু দিলে সুর বের হয় না। বেসুরও না। যা বের হয় তার নাম কসুর। কসুর ক্যান? কারণ, এক সপ্তাহান্তের রাতে বিপুল উৎসাহ, উদ্দীপনা আর যথাযথ ভাবগাম্ভীর্য নিয়ে, অনেক ভাব উত্তোলন করে বাঁশিতে ফু দিয়েছিলাম একটা। সাথে সাথে আমার ঘরের দেয়ালে ধপাধপ কিলের শব্দ! যার বাংলা তরজমা দাঁড়ায়, 'অই গোলাম, অফ গেলি নাকি পুলিশ ডাকুম!' এই অবস্থায় কি অন্তঃস্বত্তা বিবি আর বাবুর সামনে বাঁশি বাজানো ঠিক হবে আমার? বেলুনের বাড়ির ডোজ বাড়ায়া হুদাই কী লাভ!
তার চেয়ে, আমি খুব ভালো বস্তাপঁচা আর খাইষ্টা গল্প করতে পারি। পেট ভর্তি খালি খাইষ্টা কথাবার্তা। বিবিকে এগুলা বললে হবে না?
কিংবা ধরেন, বিশ্ববিখ্যাত কোবতের প্রথম দুই লাইন রচনা করে সুরারোপ করে গেয়ে দিলাম বিবির উদ্দেশ্যে...
গরুর মতো মস্ত তোর দুই নয়ন-
পাগল করে দিলো আমার এই মন
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
পাঠক, ফাহিম,অনার্য,কৈস্তুভ, স্বপ্নাদিষ্ট,বন্দনা, রু, যাযাবর ব্যাকপ্যাকার,আফরিনা হোসেন রিমু,এস এম মাহবুব মুর্শেদ,সুহান রিজওয়ান,তানিম এহসান, বিলাস,সাইফ জুয়েল, আয়নামতি,স্বপ্নহারা, অদ্রোহ,দিগন্ত বাহার, ধুসর গোধূলি, গেস্ট রাইটার- সবাইকে ধন্যবাদ। আমি বিকালে লেখা দিয়ে, অফিস শেষ করে সংসার সমুদ্রে ঝাঁপিয়ে পড়ি। তারপর আর কোনো খোঁজ রাখতে পারিনা। আপনাদের অনেক ধন্যবাদ।(দেরি করার জন্য লজ্জিত!)
ইস্কান্দর বরকন্দাজ, ধন্যবাদ জানবেন।
দিহান আপু, লেখাটা খুব ভালো হচ্ছে। এ বিষয়ে কোনো পড়াশুনাই ছিলো না। আপনার উইটি, তথ্যসম্পন্ন লেখার জন্য ই জানতে পারছি। প্রতিদিন ই ঢু মারি লিখলেন কিনা দেখতে!
অনেক ধন্যবাদ এমন একটা সিরিজ লেখার জন্য। শুভকামনা।
তোমার লেখার জন্য অপেক্ষা করছিলাম। খুব ভাল লাগছে আপু।
বিলম্বে হলেও শেষপর্যন্ত পড়ে উঠতে পেরেছি, আপনার লেখাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ,
নারী-পুরুষ সবার জন্য, শুভেচ্ছা !
....................................
বোধহয় কারও জন্ম হয় না, জন্ম হয় মৃত্যুর !
আপু, সিরিজটা খুবই তথ্যবহুল এবং সুন্দর হচ্ছে । আগামী পর্বের জন্য অপেক্ষায় আছি । চালিয়ে যান ।
পাঁচ মাস হলে শিশু মায়ের গর্ভ থেকে শুনতে পায়, এমন তথ্য এই প্রথম জানলাম। তাই তো নতুন সুরের কোন গান শুনলে আমার কাছে শুধু মনে হয়, আগে কখনো শুনেছি!
বাহ্ কী চমৎকার পরিবার!!!!
পড়ে যাচ্ছি আপু...............লিখে যান.............
অটঃ আর কোন সুস্থ পরিবারে পরকীয়া জাতীয় কিছু হয় না কখনই; এরকম আশঙ্কা কোন মেয়েরই রাখার দরকার নাই!!!!
দিহান, আপনার এই অসাধারণ ভ্রমণ বৃতান্ত পড়ার পর কেবলই মনে হচ্ছে কখন আমি এই ভয়-আনন্দ-উদ্দ্বেগ মেশানো অনুভুতিটুকু উপল্বদ্ধি করতে পারব?
আপনার এবং আপনার রাজকুমারীর জন্য শুভ কামনা।
(এত অসাধারণ ভালোলাগা আর অতুলনীয় ভালোবাসা-আবেগের মধ্য দিয়ে যে জন্মায় তার নামতো রাজকুমারীই হওয়া উচিত। নয় কি? নামটা ভাল লাগলে জানাবেন।)
দীপাবলি
অপর্না, জয়ন্তী, শাহীন হাসান,The Reader ধন্যবাদ। Rajkonya, বাচ্চারা মায়ের পেটে থাকতেই মা-বাবার গলার স্বর চিনে রাখে! মৃত্যুময় ঈষৎ আমাদের পারিবারিক বন্ধন এ গানের একটা বিরাট জায়গা আছে, দোয়া করবেন। দীপাবলি, আমাদের বড় মেয়ের নাম অরুণিমা আর ছোটটার নাম অপরাজিতা। আর সব মেয়েবাচ্চার নামতো এমনিতেই রাজকুমারী বা প্রিন্সেস, তাইনা?
এই সিরিজ ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা ও অনুভূতির লেখা হলে ঠিক আছে। তবে হবু-মা'দের জন্য পরামর্শ বা উপদেশ দেওয়া খুব যুক্তিসঙ্গত নয় বলে মনে হয়। প্রত্যেক মেয়ের মতো প্রত্যেক প্রেগন্যান্সিই স্বতন্ত্র ও অনন্য। সব মেয়ের অর্গানিজম ও মানসিক বৈশিষ্ট্য এক নয়। তাই এই ব্যাপারে সার্বজনীন তরিকা বলে কিছু থাকতে পারে না।
বরং এই জার্নিটা আপনার কেমন কেটেছে, তা ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা হিসেবে লিখে গেলেই বোধহয় ভাল হয়। পরামর্শ বা উপদেশ অনেক ক্ষেত্রে মিসলিডিং হতে পারে, এই সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
প্রিয় দিহান,
আপনি সচলায়তনের রেজিস্ট্রেশন করেছেন কিনা নিশ্চিত নই। আপনার ব্যবহৃত ইমেইল এড্রেসটি ডেটাবেইজে পাওয়া যায়নি। রেজিস্ট্রেশন না করে থাকলে রেজিস্ট্রেশনের পর contact এট সচলে ইমেইল দিয়ে অথবা এই পোস্টে মন্তব্যের মাধ্যমে জানাতে অনুরোধ রইল।
রেজিস্ট্রেশন করেছি।
মনে হয় এখন আপনাকে হাচলত্বের অভিনন্দন জানানো যায়
অপছন্দনীয়, ধন্যবাদ।
খুব খুব খুব ভালো লাগছে! অসাধারণ চলছে!
বলতে গেলে এক নিশ্বাসে পড়ে ফেললাম, শেষে এসে মনটা খারাপ হয়ে গেল কিছুটা, শেষ হয়ে গেল!!
ভালো থাকবেন।
ধন্যবাদ বিবর্ন সময়। আপনি ও ভালো থাকুন সবসময়।
অসাধারণ সিরিজ। ভালো লাগছে। চলুক...
জানি না কেন যেন আমার চোখে পানি চলে আসেছে পড়তে পড়তে। আমার নিজের যদি কোনদিন বাবু হয় তাহলে কেউ আমাকে যদি না থাকে দেখার তাহলে কি ভীষণ কষ্ট হবে।
আমার বান্ধবীর বাবু হবে আর কিছুদিন পর। এতো বেশী অসুস্থ হয়ে গেছে ওকে দেখলেই আমার কেমন ভয় লাগে। মেয়েটা সারাদিন নামাজ পড়ে আর আল্লাহ-র কাছে দোয়া করে ওর বাবুটা যেন সুস্থ হয়।
ভালো লাগা অনেক ভালো লাগা।
-মেঘা
নতুন মন্তব্য করুন