পাঁজরের কবিতা
যে পাঁজর মেখেছিলো জাফরান রোদ
সে পাঁজর এখনো কি বাজায় সরোদ?
কবিতা তোমার ঠোঁট মরমী আঙুল
কবিতা জলের ফোঁটা করোটির ফুল।
অনুযোগসমূহ
বৃষ্টি হয়ে কি আসতে পারো না জানালায় ছুঁয়ে ছুঁয়ে?
রৌদ্র হয়ে কি উত্তাপ আনো ক্লান্ত দুপুর বেলায়?
তোমার স্পর্শ আমার একাকী নির্জন কামরায়
তন্দ্রাবিহীন রাতের শিয়রে শিশির এসেছে নুয়ে।
(ঝরে পড়া কোন শস্যের মোহ এই মন ছুঁয়ে যায়?)
সুসময়
এখানে বাতাস বয়, প্রবাহে উষ্ণ স্বাদুময়
ফুটপাতে বয়ে যায়, চোখে রাতে ঘুম আসে না
তুমি-আমি-আমাদের জাগবার সময় হলে
হঠাৎ দেয়াল জুড়ে ভেসে ওঠে সোনালি জানালা।
শিশিরের স্তনবৃন্ত
অতলের অধিবিদ্যা, নীলিমায় সোহাগী সংকেত
বেদনা-প্লাবিত নদী পার হয়ে মেঘের আবাদ
'বেদনা জাগানো ভালো নয়' - বলে প্রাচীন প্রবাদ
শিশিরের স্তনবৃন্ত খসে পড়ে কবিতা - সমেত।
পাপোষ পুরাণ
জানো না পিতার নাম? হতে পারো তুমিও জারজ
শবে বরাতের রাতে রমণীয় তোমার আরজ
গৃহীত হবেই হবে যদি করো এখুনি আপোষ
যুগের বয়সী ধুলো বয়ে চলা আমার পাপোষ।
প্রবাদিত ধাতব বাতাস
শাদাপাতা, শিলালিপি, ভালোবাসা প্রত্ন আড্ডায়
রুপোলি বজরা চড়ে যাও কোন পৌরাণিক গায়?
বাতাসের ধাতু জানি ততো কাছে তোমাকেই পায়
আপাতত সমর্পণ ছাড়া নেই অন্য উপায়।
অভৌগোলিক
পশ্চিমে পূবর্ আর দক্ষিণে উত্তর দিক,
উড়ে আসে দূর থেকে সহজিয়া ভালোবাসা কার
যতোই একাকী হই মনে পড়ে সেই মুখ তার
আঁধারে পেয়েছি তারে, 'যে আঁধার আলোর অধিক'।
কবি
উদ্ধত গ্রীবা আনত সগৌরবে
কালকুসুমের যতো ত্রুটি বিচু্যতি,
বর্ষার মতো ঢলে পড়ো সৌরভে
আর বুনে চলো শব্দ - ব্রহ্মপুঁতি।
লঘুপদ্য
স্রোতের যতোই বিপরীতে তুমি ঠেলো
আমাকে ততোই হতে হয় এলোমেলো
ততোই আমাকে ক্ষয় হতে হয় ঋণে
এই কবিতাটি তোমাকে, জন্মদিনে।
মোহন মাদুলি
অমরতা চেয়েছিলে তাই আমি দিলাম তোমায়
আমার কবিতা-গান, ভালোবাসা হারানো আধুলি
যতো ঘৃণা ছুঁড়ে দাও সন্ত্রাস অথবা বোমায়
উত্তরে পাঠাই আরো ভালোবাসা, মোহন মাদুলি।
অমরতা চেয়েছিলে তাই আমি দিলাম তোমার
অমৃতের খনি ভরা ভালোবাসা, হীরেসোনামণি!
চারণপদ্য
দিন কাটে
স্মৃতিচারণে,
নানা কারণে, নানা কারণে।
ছল
তুমি কি বালিকাবধূ পার্বতীর সই?
আমাকে উপরে তুলে কেড়ে নাও মই?
ভুলকাব্য
আমার মেঘের নীলে দেখা হয় যদি
আবার বৃষ্টি নামে আমাদের ঠোঁটে
আমাদের ভুল যেনো ফুল হয়ে ফোটে।
প্রস্তাবনা
যদি শুধু একবার ছুঁতে দাও তোমার আঙুল,
আবার দলবেঁধে ফুটবে সমাজতন্ত্রের লাল গোলাপ
হেসে উঠবে শিশুরা
গেয়ে উঠবে শস্যের অমল সবুজ ...
---
মন্তব্য
ভাল লাগলো
অণুকাব্যগুলো পড়ে দারুণ সময় কাটলো ভাইয়া। অসাধারণ লেখেন আপনি, কবি, অসাধারণ!!! কেবলি মুগ্ধতা।
ওহে কবি মৃতু্যময়, আমার এগুলো তো কবিতা হয়ে ওঠেনি। তুমি এর চেয়ে অনেক ভালো লিখতে পারবে। আর পরীক্ষা শেষ হলে লেখা দাও, তোমার লেখা পড়া হয়না অনেকদিন।
ঢের কবিতা হয়েছে ভাইয়া, কলেবরই তো আর সব নয়!!!! ভাইয়া কী যে বলেন!!! আপনি কী নিদারুণ লিখেন, আর আমি!!!! ভাইয়া পরীক্ষা এই ৩ তারিখেই শেষ হয়েছে। অনুবাদটা শেষ করতে হবে। আমি দিব, কিন্তু আপনার লেখা অন্তঃত সপ্তাহান্তে একটি চাই!!
_____________________
Give Her Freedom!
ধন্যবাদ সাইফ জুয়েল । ভালো থাকুন।
প্রিয় সুমন তুরহান ভাই - আমার কেন জানি কবিতাংশগুলোকেই বেশী ভালো লাগে সবসময়। কবিতাংশগুলো কবিতা লেখার দায় থেকে উঠে আসেনা, অনেক সহজ তাদের আত্মপ্রকাশ! প্রশংসা করবোনা, আমরা মনে হয় সে চৌকাঠ পেরিয়ে এসেছি। মুগ্ধতা ছড়িয়ে গেলো বৃষ্টিস্নাত দুপুরে - আজকের দিনটা আমাদের সবার জন্য ভালো হোক!
প্রিয় তানিম ভাই, ধন্যবাদ অনেক।
নতুন মন্তব্য করুন