আমার কিছু ভাবনা, প্রসঙ্গঃ জাগো, শিক্ষামাধ্যম ও মুহম্মদ জাফর ইকবাল

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: বিষ্যুদ, ১৭/১১/২০১১ - ১০:৫০অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

জাগো প্রসঙ্গঃ
বেশ কয়েকবছর আগে একবার নানাবাড়ীতে গিয়েছিলাম। একেবারে অজপাড়া গাঁ। আধুনিকতার ছোঁয়া তখনো এর গায়ে খুব একটা লাগে নি। একদিন ভোরে ঘুম থেকে উঠেই পাশের বাড়ীর হইছই শুনতে পাই। ফ্রেশ হয়ে ভীড় ঠেলে গিয়ে দেখি বাড়ির কর্তা কপাল চাপড়াচ্ছেন। ঘটনা কি? ঘটনা হচ্ছে সিঁদ কেটে এক রাত্তিরেই ঘর ফাঁকা করে দিয়েছে সিঁদেল চোরের দল। হটাৎ পিছনে ধাক্কাধাক্কি অনুভব করলাম। ভীড় ঠেলে গা গলিয়ে দিলেন আর একজন। চুকচুক শব্দ করে বলতে লাগলেন, “আহারে! চোরটার আক্কেল দেখেছো? কিছুই বাকী রাখেনি দেখছি। হতভাগাটার কি হালটাই না করেছে।” শুনে আমিও খানিক চুকচুক করে দুঃখ প্রকাশ করলাম এবং তার সাথে সহমত পোষণ করে চলে এলাম। কিন্তু বাড়ী এসে যা শুনলাম, তাতে তো আমার ভিরমি খাওয়ার যোগাড়। ঐ লোকটা নাকি মদনচোরার ছেলে, চুরি ঘটনাতে যার দিকেই কিনা সবার সন্দেহের আঙ্গুল। কিছুদিন পরে জেনেছিলাম যে, এই সন্দেহ নাকি সত্যি বলে প্রমাণিতও হয়েছিলো।

এখন ভাবুন তো, আপনি যদি ঐ গৃহকর্তা হতেন, তাহলে চোরের পুতের এই সহানুভূতির বাণী আপনার কানে কেমন লাগতো?

তত্ত্বাবধায়ক সরকার আর নির্বাচন নিয়ে চারদিক তখন উত্তপ্ত। বিশেষত কাস্তে মিছিল আর লগি-বৈঠার আন্দোলনে সাধারণ মানুষ দিশেহারা। তখন কতিপয় রাজনৈতিক কর্মী কোনো এক হরতালের আগের রাতে আগুন ধরিয়ে দেয় এক হতভাগ্য সিএনজি চালকের গাড়িতে। অগ্নিদগ্ধ সিএনজি চালক হাসপাতালের বেডে শুয়ে যন্ত্রণায় কাতরাতে থাকেন। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী এবং বিএনপি চেয়ারপার্সন দু’জনই তাকে দেখতে হাসপাতালে যান এবং সমবেদনা জানান। কিন্তু গ্রেফতার হয় নি দায়ীদের কেউ, এমনকি তাদের পরিচয়ও উদঘাটিত হয় নি, জানা যায় নি তারা প্রকৃতপক্ষে কোন দলের কর্মী এবং কার ইশারায় এত বড় অমানবিক একটা কাজ করতে তাদের হাত কাঁপলো না।(লিঙ্ক দিতে পারছি না। কিন্তু এ ঘটনা তখন পত্রিকা ও টিভিমাধ্যমে বেশ সমালোচনার ঝড় তুলেছিলো। তাই অনেকেরই মনে থাকার কথা।)

এখন, নেত্রীদের ঐ সান্ত্বনাবাণী ক্ষতিগ্রস্ত সিএনজি-চালক এবং তার পরিবারের কাছে কতটুকু সান্ত্বনার? সেটা নিশ্চয়ই ভাবনার অবকাশ রাখে?

গার্মেন্টস, শিল্পকল-কারখানাগুলোতে বেতন-বোনাস নিয়ে আন্দোলনের ঘটনাটা বাংলাদেশে এখন আর নতুন কিছু নয়। গত কয়েকবছরে এটা বেশ সাধারণ একটা ব্যাপারেই পরিণত হয়েছে। অনেকসময় রুটিরুজির এই আন্দোলন করতে গিয়ে অনেক মেহনতি মানুষ জীবন পর্যন্ত দিতে হয়। আমরা যাদের টোকাই বলি, তাদের অনেকেরই হয়তো জন্মপরিচয় পর্যন্ত নেই। আবার একটা অংশ আছে, যাদের জন্মপরিচয় আছে, কিন্তু জন্মদাতা-জন্মদাত্রীর সাধ্য নেই ভরণপোষণের। তাই তাদেরকে হাটতে শেখার সাথে সাথেই শিখতে হয় রুটিরুজির সংগ্রামও। এদের অনেকেই সমাজের বঞ্চিত মেহনতি শ্রমিকশ্রেণীর মানুষের সন্তান। আর যারা এই গার্মেন্টস, শিল্পকল-কারখানাগুলোর মালিক, তাদের সন্তান কারা? তাদের সন্তান হলো ঐ যে দামী গাড়িতে চড়া, দামী স্কুলে পড়া, ফটাফট ইংরেজীবলা ‘বেবিডল’গুলো।

যাদের বাবাদের অর্থলিপ্সার কারণে, শোষণের কারণে রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে ফুল বিক্রি করে পেট চালাতে হয় ফুলবানুদের, তাদের সাথে বন্ধুতা? কেমনে সম্ভব? যারা চিরকাল গাড়ীর কাচ দিয়ে ওদের দেখেছে আর নাক কুঁচকে বলেছে, “ডার্টি বিচ!”, আজ তাদের এই বুকে জড়িয়ে নেয়ার প্রবণতা দেখে কি সন্দেহের উদ্রেক হতে পারে না? যে কিনা নিজের শিল্পপতি বাবাকে রাজী করাতে পারেনি তার কারখানার শ্রমিকদের ন্যায্য বেতন-বোনাস দেয়ার জন্য, সে আজ রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে অন্যের গাড়িতে নক করছে টোকাইদের জন্য সাহায্য চেয়ে! এ ও সম্ভব! হুম, সম্ভব। কারণ এটা করলে সে একটা সার্টিফিকেট পাবে। যেটা দিয়ে সে খুব সহজেই এই নোংরা দেশ ছেড়ে পাড়ি জমাতে পারবে তার স্বপ্নের দেশে। এই হলুদ গেঞ্জি, এই আইডি, এই রোদে ছোটাছুটি তার কাছে একটা এডভেঞ্চার, একটা পিকনিক ছাড়া আর কিছুই নয়। তাই একে মায়াকান্না ছাড়া আর কিই বা বলা যেতে পারে? আর তাই এটা কখনোই সহানুভূতি নয়, এটা উপহাস।

মুক্তিযুদ্ধে জামায়াতে ইসলামীর ভূমিকা কি ছিলো সেটা সম্পর্কে আমরা সবাইই কমবেশী জানি। সেই জামায়াতে ইসলামী এখন মুক্তিযোদ্ধাদের পুরষ্কৃত করার জন্য অনুষ্ঠান আয়োজন করে। আর তাতে পুরষ্কার নেওয়ার যোগদান করে আল-মাহমুদ সহ আরো অনেক তথাকথিত মুক্তিযোদ্ধারাও। তাছাড়া মুক্তিযুদ্ধকালীন কাজগুলোকে একটা রাজনৈতিক ভুল হিসেবে আখ্যা দিয়ে তারা এখন তাদের বর্তমানকে জাস্টিফায়েড করতে চাচ্ছে। সুযোগ পেলেই নিজেদেরকে দেশপ্রেমিক বলে জাহির পর্যন্ত করছে। এখন ধরা যাক, জামায়াতে যত যুদ্ধাপরাধী আছে, তাদের শাস্তির আওতায় আনা হলো। ফলে, দলের দায়িত্বে এলো নতুন কিছু মুখ যাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ বা প্রমাণ নেই কিংবা যারা মূলতঃ যুদ্ধ পরবর্তী প্রজন্মের। এখন এই প্রজন্ম যদি হটাৎ করে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষে কথা বলা শুরু করে, আপনার কি একটু হলেও সন্দেহ জাগবে না? একবারও কি মনের মধ্যে কোনো কিন্তু খেলা করবে না? সেই সন্দেহ সত্য কিংবা মিথ্যা সেটা না হয় পরেই প্রমাণিত হবে, কিন্তু সন্দেহ তো হবে, নাকি?

তাই প্রশ্নটা আসে এভাবে, “রক্তচোষা শিল্পপতির ছেলেপুলেদের গরীবপ্রীতি আর নিজামী-মুজাহিদের উত্তরপুরুষদের মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষে কথা বলার মধ্যে কি খুব বেশি পার্থক্য?”

জাগো’র ব্যাপারে ঠিক এরকমই একটা ‘সন্দেহ’ কিংবা ‘কিন্তু’ জন্ম নিয়েছে মানুষের মনে। আর এর পিছনে জাগোর ভলান্টিয়ারদের ভূমিকাও অস্বীকার করা যায় না। তারা মানুষের কৌতুহল-সন্দেহ দূর করার পরিবর্তে গলাবাজি, গালাগালি করেই পার পেতে চেয়েছে, এমনকি স্বয়ং ফাউণ্ডার নিজে আইনী ব্যবস্থা নেয়ার হুমকিও দিয়েছেন। আর যার ফলে অভিযোগের আঙ্গুল সংখ্যায় বৃদ্ধিই পেয়েছে, কমে নি। জাগো’র অবশ্যই অনুধাবন করা উচিত যে, তারা সমাজের এমন একটি অংশকে তাদের কাজে যুক্ত করছে, যাদের সহানুভূতিশীল ভাবমূর্তি সাধারণের কাছে সবসময়ই প্রশ্নবিদ্ধ। সেহেতু, তাদের উদ্দেশ্য যদি যথার্থই মহৎ হয়ে থাকে তবে তাদেরকে অবশ্যই বিতর্কে না জড়িয়ে বরং গ্রহণযোগ্য উপায়ে একে এগিয়ে নিয়ে যাবার উদ্যোগ নিতে হবে। আর বাংলাদেশের জনগণ অবশ্যই তাদের কাছে জবাবদিহিতা চাওয়ার অধিকার রাখে, এটাও তাদের বুঝতে হবে।

শেষে এসে আরো একটা দিক নিয়ে কিছু কথা বলি। জাগোর উদ্যোক্তা করভি রুখসাদ ধ্রুব ২০০৭ সালে এর সূচনা করলেও মূলত এ বছরই এটা সবচেয়ে বেশি আলোড়ন তোলে। এই প্রতিষ্ঠান নিয়ে ধ্রুব’র অনেক আত্মত্যাগের পাশাপাশি বিদেশী দূতাবাস বিশেষত আমেরিকান হাইকমিশন এ ব্যাপারে তাঁকে বেশ সহায়তা করে। ধ্রুব ইতিমধ্যে বেশকিছু পুরষ্কার ও লাভ করেছে এই কাজের জন্য। এখন এই সেবাকাজে কাজের চেয়ে তার ঢাকঢোল পেটানো আয়োজনের আধিক্য দেখে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন জাগে, তার ভলান্টিয়ারদের মতো তিনিও এওয়ার্ডের জন্যই এসব করছেন না তো? বিশেষত, তার সাথে যখন আমেরিকানরা আছেন, তখন অদূর ভবিষ্যতে একখানা নুবেল না হোক অন্তত ম্যাগসেসাই তো তিনি আশা করতেই পারেন, নাকি? তাতে যদি আমেরিকা ইউনুসের দ্বারা সফল না হওয়া উদ্দেশ্যকে সাফল্যের মুখ দেখাতে পারে। কেননা, গত এক দশকে নোবেল পুরষ্কারটা তো একরকম আমেরিকার ইচ্ছাধীন বিষয়েই পরিণত হয়েছে। বারাক ওবামা স্পিচ দিয়ে পান, অর্থনীতির ইউনুসও হয়ে যান শান্তির অবতার; চীনকে চাপে রাখার স্বার্থে দালাইলামাকে, আর হামাস কে ঠেকাতে ইয়াসির আরাফাতকে দেয়া হয় নুবেল পুরষ্কার। বলছি না তাঁরা যোগ্য নয়, বলছি এখানে যোগ্যতাটাই শেষকথা নয়। সবকিছুই তো ঘটছে আমেরিকার ইন্টারেস্ট রক্ষা করেই। তাই, ম্যাডাম বাদ না সাধলে বাঙ্গালী নিশ্চিত ভাবেই আরো একটা নুবেল পাওয়ার আশা তো করতেই পারে, তাই নয় কি?

সবশেষে তাই ‘জাগো’ সম্পর্কে আমার অভিমত এক ফেবুফ্রেণ্ডের এই স্ট্যাটাসের মতো্ই,

দেখিনি একুশ, দেখিনি একাত্তর;
পেয়েছি স্বদেশ স্বাধীনতা-উত্তর।
ইতিহাসের পাতা জুড়ে মিছে কুয়াশা,
'জাগো' ডাকে হবে দূর এই হত আশা?!?

মনে হয় না! এখনো অব্দি একে কেবলই ফক্কিকার বিনে তো কিছু মনে হচ্ছে না!! খুব করে চাই এ আশংকা ভুল প্রমাণিত হোক; কিন্তু হবে কি?

শিক্ষামাধ্যম প্রসঙ্গঃ
ইংলিশ-মিডিয়াম ভার্সেস/বনাম বাংলা-মাধ্যম। মূলত জাগো প্রসঙ্গের হাত ধরেই এই বিতর্কের আগমন। এই বিতর্কে যাওয়ার আগে আমি কয়েকটি প্রশ্নের অবতারণা করতে চাই। যে দেশের মাতৃভাষা আন্দোলনের দিন সারা বিশ্বে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালিত হয়, সে দেশে কেন মাতৃভাষাবর্জিত ইংলিশ মিডিয়াম শিক্ষাব্যবস্থার প্রয়োজন হয়? ধর্মনিরপেক্ষতা যে দেশের সংবিধানে একটি স্তম্ভ হিসাবে পরিগণিত হয়, সে দেশে কীভাবে কওমী ও মাদ্রাসা শিক্ষার মতো একটি কুসংস্কারাচ্ছন্ন, জঙ্গীঘেঁষা শিক্ষাব্যবস্থা টিকে থাকে? ভাষা আন্দোলনের ৫৯ বছরে এসেও কেন আমরা আমাদের ভাষায় স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করতে পারি নি?

কওমী মাদ্রাসাগুলো কাদের অর্থায়নে চলছে, তাদের সেক্টর অব ইন্টারেস্ট কি, কারা কি ধরণের শিক্ষা(নাকি ট্রেনিং!) নিয়ে এখান থেকে বের হচ্ছে, সেটা জানার জন্য মনে হয় না খুব বেশি গবেষণার দরকার আছে। উপরমহল এতো কিছু জানে আরে এদের জানে না? সব জেনেবুঝেও চুপ করে থাকা হচ্ছে কোন অদৃশ্য চাপে? সরকারকে এসব নিয়ে ভাবতে হবে যত শীঘ্র সম্ভব। আর তা না হলে যতদিন দেশে এইসব প্রতিষ্ঠান থাকবে ততোদিন জঙ্গীবাদ থেকে আমাদের মুক্তির স্বপ্ন, স্বপ্নই থেকে যাবে।

কওমী মাদ্রাসাগুলো আমাদের দেশে জন্ম দিচ্ছে, লালন করছে মধ্যপ্রাচ্যীয় ধর্মান্ধগোষ্ঠীর। আর ইংলিশ মিডিয়াম? ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলগুলো তৈরি করছে একটা “ওয়েস্টার্ণ কালচার ব্লাইণ্ড” প্রজন্ম। যারা নিজেদের সংস্কৃতি সম্পর্কে জানে না। বাঙ্গালী ঐতিহ্য-সংস্কৃতির জন্য এদের কোনো ভালোবাসা তো নেইই, বরং অপসংস্কৃতির চর্চা করে প্রতিনিয়ত এর ক্ষতিসাধন করছে। আমরা যদি হিন্দি সিরিয়ালপ্রিয়দের সমালোচনা করি, তাহলে পশ্চিমা ফ্রাসট্রেটেড লাইফের এই সমঝদারদের কেন ছাড় দেবো?

আর তাই, শিক্ষার মাধ্যম হওয়া উচিত একটাই। সেটা আমাদের মাতৃভাষা বাংলা। আর সেখানে শিক্ষামানের ব্যাপারটাও নিতান্তই অবান্তর।

ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল প্রসঙ্গঃ
কলেজে মিজানুর রহমান ভূঁইয়া নামে একজন স্যার আমাদের জীববিজ্ঞান ক্লাস নিতো। হটাৎ একদিন ক্লাসে তিনি কথা প্রসঙ্গে বলে বসেন যে, হুমায়ুন আহমেদ, জাফর ইকবাল আর আহসান হাবীব- এই তিনটা হইলো বাংলামায়ের তিন কুলাঙ্গার! আমি সেদিন নিজের কানকেও প্রথমে বিশ্বাস করতে পারিনি। কিন্তু না, তিনি ‘কুলাঙ্গার’ শব্দটাই ব্যবহার করেছিলেন। হুমায়ুন আহমেদ তখন শাওনকে বিয়ে করে চারদিকে বেশ বিতর্কিত, তাছাড়া তার বইও তখনো আমার খুব একটা পড়া হয়ে উঠে নি। আহসান হাবীবকে চিনতাম না, কেননা ‘উন্মাদ’ এর সাথেও সাক্ষাৎ হয় নি। তাই খটকা লেগেছিলো শুধু একটি নাম নিয়েই। জাফর ইকবাল। আমার প্রিয় লেখক জাফর ইকবাল স্যার সম্পর্কে এমন কথা! পুরো ক্লাসে সেদিন শুধুমাত্র এই আমি দাঁড়িয়ে গিয়ে তার কথার রিপিট করেছিলাম, “স্যার, কথাটা কি মুহম্মদ জাফর ইকবাল সম্পর্কেও সত্য?” স্যার আমাকে ঝাড়ি দিয়ে বসিয়ে দিলেন। তারপর অবতারণা করতে লাগলেন তার ছাগুটাইপ অদ্ভূত যত যুক্তির। সেগুলো যারা ব্লগ পড়েন, তারা প্রায় সবাই কমবেশী জানেন। তাই সেগুলো সম্পর্কে নাইবা বললাম।

জাফর ইকবাল স্যারকে নিয়ে আজ পক্ষে-বিপক্ষে অনেক আলোচনা। কেউ তার সমালোচনায় মুখর তো কেউ তার স্তুতিতে। আমি তার লেখার ও অন্যান্য অনেক কাজেরই গুণমুগ্ধ, কিন্তু তবু স্তুতি করতে চাই না। আমি চাই তার সমালোচনা তথা গঠনমূলক সমালোচনা করতে, শুনতে। আমি তাকে দেবতা নয়, মানুষ ভাবতে চাই, উত্তম মানুষ। কিন্তু উত্তম মানুষেরাও ভুল করেন। গান্ধীজী ভুল করেছিলেন সুভাষ আর নেহেরুর মধ্যে উত্তরসূরী বাছতে গিয়ে, শেখ মুজিব ভুল করেছিলেন তাজউদ্দিন আহমেদের মূল্যায়ন করতে গিয়ে, ভূপেন হাজারিকা ভুল করেছিলেন বিজেপি তে যোগ দিয়ে। কিন্তু জাফর ইকবাল স্যারের ভুল করা চলবে না। কারণ, আজকের বাংলাদেশে তাঁর মতো মানুষের খুব অভাব। আর তাই, আমি চাই তিনি যেন ভুলত্রুটি এড়িয়ে চলতে পারেন, তিনি যেন পথভ্রষ্ট না হোন।

তাই ব্লগারদের প্রতি আহবান থাকবে, তাকে কুরুচিপূর্ণ, অযৌক্তিক সমালোচনায় বিদ্ধ করা থেকে বিরত থাকুন। দরকার নেই অহেতুক স্তুতিগানেরও। যদি পারেন তো, যৌক্তিক সমালোচনা দিয়ে তাকে সঠিক পথে থাকতে সহায়তা করুন। মনে রাখবেন, ওনার মতো মানুষদের অগ্রযাত্রাতে সবচেয়ে বেশি লাভবান হবে এই বাংলাদেশ আর বাংলাদেশীরাই।

(এই লেখাটা নিয়ে অনেকদিন থেকেই ভাবছিলাম। কিন্তু লেখা হয়ে উঠে নি। এরই মধ্যে এই প্রসঙ্গগুলো নিয়ে অনেক নদী-সাগর তোলপাড় হয়ে গেছে। তবু দেরিতে হলেও নিজের ভাবনাগুলো শেয়ার না করে পারলাম না। মেটাব্লগিং সম্পর্কে এখনো ভালো বুঝে উঠতে পারিনি। তাছাড়া লেখাটাও বড় হয়ে গিয়েছে। কোন পোস্টে দিবো সেটাও বুঝতে পারছিলাম না। তাই আলাদা পোস্ট হিসেবেই দিলাম। ব্লগীয় নীতিগত কোনপ্রকার দোষে দুষ্ট হলে, ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রইলো। সেইসাথে যদি ভুল কিংবা দোষগুলো সম্পর্কে অভিহিত করা হয়, তবে বিশেষ উপকৃত হবো।)

--বাংলামায়ের ছেলে


মন্তব্য

নিটোল এর ছবি

আলোচনা 'মোটামুটি' লাগল। কিছু জায়গায় যুক্তির বদলে ব্যক্তিগত মন্তব্যের প্রবেশ লেখার গুরুত্ব কিছুটা কমিয়ে দিয়েছে। বেশ কিছু লাইনের কারণে আলোচনা অন্যদিকে ঘুরে যাওয়ার আশংকা আছে। যেমন- ইউনুস, আমেরিকা, নোবেল ইত্যাদি। তবু চেষ্টার জন্য সাধুবাদ।

_________________
[খোমাখাতা]

বাংলামায়ের ছেলে এর ছবি

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

ব্যক্তিগত মন্তব্যের ক্ষেত্রে আপত্তির জায়গাগুলো উল্লেখ করে দিলে ব্যাখ্যা করতে সুবিধা হত।

উচ্ছলা এর ছবি

"জাগো" সকল গঠোনমূলক সমালোচনাকে সবসময় স্বগত জানিয়েছে এবং ভবিষ্যতেও জানাবে। সমালোচকের মুখে জিলাপী দিয়ে আর শত্রুর মুখে ছাই দিয়ে "জাগো" এগিয়ে যাবে।

তারা মানুষের কৌতুহল-সন্দেহ দূর করার পরিবর্তে গলাবাজি, গালাগালি করেই পার পেতে চেয়েছে, এমনকি স্বয়ং ফাউণ্ডার নিজে আইনী ব্যবস্থা নেয়ার হুমকিও দিয়েছেন।

সেই শুরু থেকেই অশ্রাব্য, কুশ্রী গলাবাজি, গালাগালি করে যাচ্ছে "জাগো" বিরধীরা। "জাগো"র পক্ষ থেকে বেশ কয়েকটি গঠনমূলক বিবৃতি দেয়া হয়েছে ইতিমধ্যে, আপনি পড়েছেন আশা করি।

ধ্রুব হুমকি দিয়েছে বলে আমার মনে হয়না। হুমকি দেবার মত মানুষ সে নয়। অসত্য, অশ্লিল কুৎসা শুনে সে বাধ্য হয়েই আইনি ব্যাপারটা উল্লেখ করেছিল। এটাতেও তার দোষ হয়ে গেল নাকি?

ওদের কর্ম পদ্ধতিতে খুঁত আছে, মানছি। এটাও ভালো করেই জানি, সবকিছু শুধরে নেবার মত মনবল আর সদিচ্ছা ওদের আছে।

বাংলামায়ের ছেলে এর ছবি

এটাও ভালো করেই জানি, সবকিছু শুধরে নেবার মত মনবল আর সদিচ্ছা ওদের আছে।

কয়েকটা বিবৃতি পড়েছি। সেরকম কিছু চোখে পড়ে নি এখনো। যদি সেরকম কোনো তথ্য থাকে তো শেয়ার করলে কৃতার্থ হবো।

বাংলামায়ের ছেলে এর ছবি

আপনার লিঙ্কের আশায় এখনো বসে আছি।

৩ তারিখের ঐ আয়োজনের বেশ আগথেকে শুরু করে এতদিন খোঁজখবর নিয়ে, এমন একটা বহুলচর্চিত বিষয়ে লেখাটা এমনি এমনি লিখি নি।

তবু আপনার এই নিশ্চিত বিশ্বাস সত্যিই ভাবায়।

আশফাক আহমেদ এর ছবি

চলুক

-------------------------------------------------

ক্লাশভর্তি উজ্জ্বল সন্তান, ওরা জুড়ে দেবে ফুলস্কেফ সমস্ত কাগজ !
আমি বাজে ছেলে, আমি লাষ্ট বেঞ্চি, আমি পারবো না !
আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি, আমি সত্যি মূর্খ, আকাঠ !

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

এইটা কী লিখেছেন বুঝতে পারিনি। সব একসঙ্গে গুলিয়ে খাইয়ে দেয়ার মতো লাগলো! একটা বিষয়ে বিস্তারিত বলুন। সব একসঙ্গে কীভাবে খাবো! আপনার ব্যক্তিগত মন্তব্য বাদেও কোথাও কোথাও খটকা লেগেছে। কিন্তু এই লেখাতে আলোচনাতে গিয়ে কুলাতে পারবনা।

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

বাংলামায়ের ছেলে এর ছবি

এইটাকে কতগুলো পরষ্পর সম্পর্কিত বিষয় নিয়ে ভাবনার সমষ্টি বলতে পারেন।

তবু চেষ্টা করেছি বিষয়গুলোকে যতটুকু সম্ভব আলাদা করে উপস্থাপনের।

সব তো একসাথে খাওয়ার দরকার নেই। এক এক করেই খান। আর যদি তাতেও সমস্যা হয়, তবে শুধু পছন্দের অংশটুকুই না হয় খেয়ে দেখুন। ব্যস ।

আর খটকার জায়গাগুলো উল্লেখ করলে ব্যাখ্যা করতে সুবিধা হবে।

ভুল যদি কিছু হয়ে থাকে তো, তা এখনি সংশোধন হয়ে যাক না। আপনারা যদি মুখ ফিরিয়ে নেন, তাহলে শিখবো কীভাবে বলুন?

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

এইটা কী লিখেছেন বুঝতে পারিনি। সব একসঙ্গে গুলিয়ে খাইয়ে দেয়ার মতো লাগলো! একটা বিষয়ে বিস্তারিত বলুন। সব একসঙ্গে কীভাবে খাবো! আপনার ব্যক্তিগত মন্তব্য বাদেও কোথাও কোথাও খটকা লেগেছে। কিন্তু এই লেখাতে আলোচনাতে গিয়ে কুলাতে পারবনা।

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

তাপস শর্মা এর ছবি

খুব ভালো লাগলো আপনার ভাবনা গুলোর প্রকাশ। দু'একটা জায়গায় আমার শুধু খটকা লেগেছে। জাগো নিয়ে আমিও যতটা শুনেছি সবটাই নিউজ চ্যানেল এবং অবশ্যই ব্লগ এর মাধ্যমে। তাই এই নিয়ে আমার সম্পূর্ণ ধারণাও সেই কেন্দ্রিক।

০১
ওই বেবিডল গুলোও কিন্তু মানুষ। তাদেরও একটা জীবন আছে। ওদেরও ভাবনা আছে।

০২
তাদের বাবার জন্য রাস্তার কোনো শিশুকে কেন ফুল বিক্রি করতে হবে? মেনে নিলাম ঐ শিশুর পিতা কিংবা মাতা ঐ জনৈক বেবিডলের বাবার কারখানার শ্রমিক ছিলো, এবং সে বঞ্চিত। কিন্তু তাদের বঞ্চনার ভার সেই বেবিডল কেন নিজের কাঁধে নেবে? কারণ সে ওর বাবার সন্তান? কি যুক্তি দিলেন, সন্দেহ প্রকাশ করলেন - নিজের বাবাকেই বোনাস প্রদানে রাজি করাতে পারলো না – ভাই ওর বাবা ওর কথা শুনতে হবে, এটা কি কোনো যুক্তির কথা। আর বাবাকে রাজি করাতে পারেনি বলে সে দেশের প্রান্তিক মানুষদের জন্য কিছু করতে পারবে না এটা কি ঠিক ?

০৩
সেই বেবিডলরা যদি নিজের ইচ্ছায় কোনো পথ শিশুর সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে চায় তাহলে তাতে আপত্তি কোথায়। প্রশ্ন উঠবে এতদিন কেন বন্ধুত্ব হয়নি? আজ হথাত করে কেন জাগো? আসলে ঐ বেবিডলরা চিরদিনই মাতৃলালিত আর পিতৃপালিত। কিন্তু এর মাধ্যে থেকেও অনেকে ভালো চিন্তা নিয়ে চলাফেরা করেন। (হয়তোবা) তাদেরই একজন হল, ধ্রুব। আমি যতটুকু পড়েছি তাতে দেখলাম উনাকে নাকি বাড়ি থেকে পর্যন্ত বের করে দেওয়া হয়েছিল। আমি ভেবে উঠতে পারিনা ঐ সময় উনি নোবেল চিন্তার ধারণা নিয়েই জাগো শুরু করেছিলেন!! কেননা যদি তাই হতো তাহলে ওর পুঁজিপতি বাপ তাকে বাধা দিতনা, বরং তার পরিচালনায় আরও পুঁজি খাটাত। যতদূর পড়েছি জাগো কিন্তু প্রথমে যে ভাবে শুরু করেছিলো। খুবই কষ্ট করে।

০৪
রক্তচোষা শিল্পপতিদের ছেলেমেয়ের গ্রিবপ্রীতি সঙ্গে............... কার তুলনা কার সাথে করলেন? ভাই রে গরিবপ্রীতি শব্দটা খুবই দৃষ্টিকটু। ও ভাবে দেখছেন কেন?

০৫
আমেরিকা, ধ্রুব, চিন, নোবেল, হাইকমিশন – কি ল্যাজেগোবরে করলেন?

০৬
জাগোর সবটাকেই খারাপ দেখছেন কেন? সমালোচনার সমস্ত তীর বর্ষণ করে আপনি বলছেন, আপনি চান জাগোর ভালো হোক? এটা কি করে হয় রে ভাই ।

০৭
ইংরেজী শিক্ষার জন্য অবশ্যই ব্যাবস্থা নেওয়া দরকার। বাংলা ভাষাই শিক্ষার শ্রেষ্ঠ মাধ্যম হোক। কিন্তু ভাই পাশ্চাত্যের অন্ধ সমালোচনাও তো উচিত নয়। এই প্রসঙ্গে রবীন্দ্রনাথ এবং গান্ধীর কথা মনে আসছে স্বদেশী আন্দোলনকে নিয়ে। কাহিনিটি মোটামুটি এইরকম – রবীন্দ্রনাথ বলেছিলেন , জানালা খোলা রাখা হোক এবং সেখানে বাতাস প্রবেশ করুক, কিন্তু সেই বাতাসের সঙ্গে খড়কোটা যাতে প্রবেশ না করে। অর্থাৎ তিনি পাশ্চাত্যের অন্ধানুকণ করতে বারণ করেছিলেন, তাই তো। আর গান্ধী বলেছিলেন সেই বাতাস যাতে ঘড়কেই উড়িরে না দেয়।
এইবার কথা হল , ইংরেজি শিক্ষার মাধ্যমে যদি দেশের ক্ষতিই হয়, তাহলে তা বন্ধ করা উচিত। কিন্তু মনে রাখা দরকার কিছু কিছু বিষয় অনুকরণ করলে ক্ষতি হয়না। কারণ পাশ্চাত্যের সব কিছুই নিন্দনীয় নয়। কিন্তু গান্ধীর ভাষায় আমাদের এটাও মনে রাখতে হবে আমরা যেন আমাদের শেকড়কে না ভুলি।

০৮
এইবার শেষে বলছি। আপনি এতগুলো বিষয় একসাথে আলোচনা করতে বসেছেন তাতেই বিপত্তি হয়েছে। আসলে মূল কথাটা আচ্ছে এত কথা একসাথে বলতে গেলে অসংলগ্নতা স্বাভাবিক কারনেই চলে আসে। এ ক্ষত্রেও তাই হয়েছে। আর ব্যাক্তিচিন্তা অবশ্যই ঠিক আছে। কিন্তু সমষ্টিচিন্তা বলেওতো কিছু আছে। আপনার চেতনাকে আমি শ্রদ্ধা জানাচ্ছি।
জাগোর কর্মসুচি নিয়ে প্রশ্ন থাকতেই পারে। কিন্তু শুধুমাত্র অভিজাত পরিবারের সন্তানরা এই কাজে অংশ নিচ্ছে এই সওয়াল ধরিয়ে দিয়ে তাদের সমালোচনা করাটা বোধ হয় অন্যায় হবে।
আসলে একটা কাজ শুরু হয়েছে। সেখানে মানলাম যারা কাজটা করছে তারা তথাকথিত এলিট সোসাইটির। বাট ওখানে কিন্তু সবার জন্য দ্বার খোলা আছে। সাধারণ, মধ্যবিত্ত সবাই যোগ দিননা ওখানে, নজর রাখুন আমেরিকা কিংবা পররাষ্ট্র কিংবা কর্পোরেট দেশের ক্ষতি করছে কিনা। যদি দেখেন এমন কিছু হচ্ছে তাহলে জাগোকেই লাথি মারুন, কিংবা ওরা যদি তখন আপনাকে ডার্টিবিচ বলে তাড়িয়ে দেয় তখন লাথি মারুন। কিন্তু ঘরে বসে সমালোচনার ঝড় তুললে কি হবে ভাই ?
আসল কথা হল ওরা কিছু একটা করছে। খারাপ ভালোর মুল্যায়ন কিন্তু করা দরকার। তারজন্য কিন্তু শুধু বিত্তবান পিতার সন্তান কী করে গরিবের প্রতি সম্মান করে, কিংবা জাগোর কর্মসূচি শেষে সিগারেট খায়, কেএফসি তে যায়- এই নিরিখে বিচার হওয়া উচিৎ নয়। তা হওয়া উচিৎ নিরপেক্ষ। আর এর জন্য আপনাকে মাঠে নেমে আসল জিনিষটা দেখতে হবে।

বাংলামায়ের ছেলে এর ছবি

১। হ্যাঁ। তবে কিনা তাদেরকে তাদের বিত্তের জীবন থেকে এই বঞ্চিতদের জীবনের মুখোমুখি করানোর আগে একটু শিখিয়ে পড়িয়ে আনা দরকার, যাতে করে তারা ব্যাপারটা অনুধাবন করতে সক্ষম হয়। এটাকে এডভেঞ্চার না ভেবে মানবিক সহানুভূতি ভাবতে পারে। যাতে তাদের উটকো অনাকাঙ্খিত আচরণে মহৎ উদ্যোগ কলঙ্কিত না হয়। আর যদি সেটা সম্ভব না হয়, তাহলে পথের পাশের মানুষদের কাছে তাদেরকে বেবিডল হিসেবেই গণ্য হতে হবে।

২। ঘরে রক্তচোষা টাকায় বিলাসিতা করে রাস্তায় এসে গরীবের জন্য আহা উহু করাটাকে আপনি সমর্থন করেন? আমি করি না।

৩। আপত্তি কেন ভাবছেন? আমি তো এক্ষেত্রে সন্দেহের যৌক্তিকতাই শুধু তুলে ধরেছি। ঘরপোড়া গরু সিঁদুরে মেঘ দেখলেও ভয় পায়। এটা তো মানেন তো নাকি!

৪। এমন একটা সময় পেরিয়ে এসেছি, যখন ঘরে তিন বেলা ভাত জোটার নিশ্চয়তা টুকুও ছিলো না। নিজের জীবন থেকেই হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছি গরীবির জ্বালা কি জিনিস! ওটা কীবোর্ড আর মনিটর দিয়ে বোঝা সম্ভব নয়।

৫। ল্যাজে গোবরে লাগলো? ধাপে ধাপে পড়ুন। আশা করি বুঝতে পারবেন। প্রসঙ্গের টানেই প্রসঙ্গ আসে। তাই এড়িয়ে যাওয়াটা প্রতারণা বলে মনে হয়।

৬। “নিন্দুকেরে বাসি আমি সবার চেয়ে ভালো......”--এই কবিতাটা পড়েন নি? মহৎ এর তো নিন্দা তে দমে যাওয়ার কথা নয়, বরং নিন্দা থেকে শিক্ষা নিয়ে নতুন উদ্যমে ঝাপিয়ে পড়ার কথা।

৭। হুমম আমিও কালচার ব্লাইণ্ডদের ব্যাপারেই বলছি। ভালো কিছু তো অবশ্যই নেবো। কিন্তু ওই যে সীসা’র মতো জিনিসগুলোও ঢুকে পড়ছে তো এদের হাত ধরেই।
ইংলিশ মিডিয়ামে বাংলার কোনো সাবজেক্ট নেই। আমার এক সুদূরসম্পর্কীয়া ভাগনী ইংলিশ মিডিয়ামে পড়ে। ওর সাথে বাড়ীতেও কারো বাংলা বলা বারণ। চাকর-বাকরদেরও ইংরেজী শিখিয়ে নেয়া হয়েছে ওর সাথে যোগাযোগ চালানোর জন্য। কোনো দেশে এমন একটা ভবিষ্যত প্রজন্ম তৈরি হচ্ছে যারা কিনা তাদের রাষ্ট্রভাষায়(মাতৃভাষা বললাম না, কারণ ওদের মা ও হয়তো ওদের সাথে বাংলায় কথা বলে না) কথা বলতে পারে না, এটা কি যথেষ্ঠ আশংকার ব্যাপার নয়?

৮। মাঠে আছি সবসময়ই। ভবিষ্যতেও থাকবো আশা করি। ২০০৭ এ কিন্তু এই আমরাই গর্জে উঠেছিলাম। দেশের প্রয়োজনে বারবারই গর্জে উঠতে প্রস্তুত আছি।

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

তাপস শর্মা এর ছবি

ভালো কথা।

তবে কিনা তাদেরকে তাদের বিত্তের জীবন থেকে এই বঞ্চিতদের জীবনের মুখোমুখি করানোর আগে একটু শিখিয়ে পড়িয়ে আনা দরকার,

কি শিখিয়ে আনা দরকার ? আর 'এডভেঞ্চার' করার ব্যাপারটা এলো কোত্থেকে? আর 'কলঙ্কিত'ই বা কি করে হল ?

ওরা তো কাজ করছে। আর তাদের কাজকে শুধু বিলাসিতার অঙ্গ হিসেবেই দেখছেন কেন।

ঘরে রক্তচোষা টাকায় বিলাসিতা করে রাস্তায় এসে গরীবের জন্য আহা উহু করাটাকে আপনি সমর্থন করেন? আমি করি না।

আমার সমর্থন কোথায় দেখতে পেলেন ? আমি কি বলতে চেয়েছি সেটা দেখুন ।

ল্যাজে গোবরে লাগলো? ধাপে ধাপে পড়ুন। আশা করি বুঝতে পারবেন। প্রসঙ্গের টানেই প্রসঙ্গ আসে। তাই এড়িয়ে যাওয়াটা প্রতারণা বলে মনে হয়।

পড়েছি। পড়েই খটকা লেগেছে। তাই বলেছি

“নিন্দুকেরে বাসি আমি সবার চেয়ে ভালো......”--এই কবিতাটা পড়েন নি? মহৎ এর তো নিন্দা তে দমে যাওয়ার কথা নয়, বরং নিন্দা থেকে শিক্ষা নিয়ে নতুন উদ্যমে ঝাপিয়ে পড়ার কথা।

ওরা কি দমে গেছে। আর আপনি নিন্দুক হতে যাবেন কেন ?

মাঠে আছি সবসময়ই। ভবিষ্যতেও থাকবো আশা করি। ২০০৭ এ কিন্তু এই আমরাই গর্জে উঠেছিলাম। দেশের প্রয়োজনে বারবারই গর্জে উঠতে প্রস্তুত আছি।

আপনার দেশপ্রেমকে শ্রদ্ধা জানাই। কিন্তু তাই বলে অন্যের কাজের জন্য শ্রদ্ধাও কী থাকা দরকার নয় ।

আর

সন্দেহের যৌক্তিকতাই

- সন্দেহ আর যৌক্তিকতা কি এক জিনিষ।

এমন একটা সময় পেরিয়ে এসেছি, যখন ঘরে তিন বেলা ভাত জোটার নিশ্চয়তা টুকুও ছিলো না। নিজের জীবন থেকেই হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছি গরীবির জ্বালা কি জিনিস! ওটা কীবোর্ড আর মনিটর দিয়ে বোঝা সম্ভব নয়।

আপনি কষ্ট করেছেন জীবনে তাই বলে অন্যের উপর রাগ মিটানোর কারণটা কি। এই ছেলেমেয়ে গুলো তো আপনার কষ্টের জন্য দায়ী নয়।

ব্যাক্তিগত আক্রোশ কি ঠিক।

যাই হোক আপনার এই মন্তব্যে সমালোচনার জন্য বলা নয় , কারণ হল ব্যাক্তিগত একটা প্রকট রাগ এখানে স্পষ্ট। এটা একটা সার্বিক বিষয়। ব্যাক্তিগত জীবন সংগ্রাম তো আপনার নিজের। আর দেশ চিন্তা তো সকলের।

বাংলামায়ের ছেলে এর ছবি

আপনি প্লিজ এটা নিয়ে আগের ব্লগগুলো পড়ুন। তাহলেই বুঝতে পারবেন, কি শিখিয়ে পড়ে আনার কথা বলা হচ্ছে, কলঙ্কিত, এডভেঞ্চার শব্দগুলো কেন আসছে? আলোচনা সংক্ষিপ্ত করার জন্যই এই বহুলচর্চিত শব্দগুলো নিয়ে নতুন করে আলোচনা করিনি।

সমর্থন না করলে তো ওকে।

আর একটা কথা, পরিবর্তনটা আগে ঘর থকেই শুরু করতে হয়। যে সেটা পারে না, তাকে হয় ঘর ত্যাগ করে আসতে হবে, নয়তো তার কোনো অধিকার নেই পরিবর্তনের নাম মুখে আনার। এ ব্যাপারে আমি এতটুকু ছাড় দিতে রাজি নই।

ওদের দমিয়ে দেয়া তো আমার উদ্দেশ্য নয়! যদি সত্যিই ভালো কিছু করতে চায়, তবে ওদের সংশোধনই আমার কাম্য। যেটার কোনো চিণহ এখনো চোখে পড়ে নি।

সন্দেহ আর যৌক্তিকতা এক বলিনি। বলেছি সন্দেহের যৌক্তিকতা। যৌক্তিক সন্দেহ নিয়ে তদন্ত কিংবা আলোচনা করা চলে, অযৌক্তিক সন্দেহ নিয়ে চলে না।

স্যরি, এটা ব্যক্তিগত রাগ নয়। বরং কিছুটা ব্যক্তি অভিজ্ঞতার প্রতিফলন পড়েছে, এটা বলতে পারেন। আর সেটা পড়া কি অস্বাভাবিক কিছু?

তাপস শর্মা এর ছবি

পড়েছি। নিয়মিতই পড়ি। তাই উপরের কথা গুলি বলেছি। যাই হোক আপনি কি বলতে চাইছেন রে ভাই

আর একটা কথা, পরিবর্তনটা আগে ঘর থকেই শুরু করতে হয়। যে সেটা পারে না, তাকে হয় ঘর ত্যাগ করে আসতে হবে, নয়তো তার কোনো অধিকার নেই পরিবর্তনের নাম মুখে আনার। এ ব্যাপারে আমি এতটুকু ছাড় দিতে রাজি নই।

এটা কি কথার কথা। ? বাংলাদেশে কতজন শিল্পপতি আছেন? আর যারা এই কাজে অংশগ্রহণ করেছেন তাদের সবাই সেই কতিপয় শিল্পপতির ছেলেমেয়ে? কি অদ্ভুত সরলীকরণ করলেন ।

ওদের দমিয়ে দেয়া তো আমার উদ্দেশ্য নয়! যদি সত্যিই ভালো কিছু করতে চায়, তবে ওদের সংশোধনই আমার কাম্য। যেটার কোনো চিণহ এখনো চোখে পড়ে নি।

বলছেন ওদের দমিয়ে দিতে আপনি অনিচ্ছুক ? কিন্তু নিজেই আবার বলছেন ওরা যা করছে তার মধ্যে ভালো কিছুর চিহ্ন আপনি খুঁজে পাননি। অদ্ভুত!!

যে সন্দেহের কথা বলেছেন তার অনেক কিছুই অযৌক্তিক। বিশেষত প্রতিটি ছেলেমেয়েই রক্ত শোষক ঘরের সন্তান । কি বলতে কি বলছেন রে ভাই ।

আবারও বলছি 'ব্যক্তি অভিজ্ঞতা' নয় - এখানে আপনার ব্যাক্তিগত ক্ষোভের প্রতিফলন হয়েছে।

- আর একটা কথা আপনি মনোজ মিত্র এর ' চোখে আঙুল দাদ' নাটকটা পড়েছেন কি। যদি পড়ে থেকেন এবং তার সাথে নিজের কোনো মিল খুঁজে পেয়ে থেকেন, তাহলে আমাকে আরেকবার আওয়াজ দিয়েন। নইলে আর কিছু বলতে চাইনা। কারণ আপনি স্রেফ বিরোধিতার জন্য বিরোধিতা করছেন।

বাংলামায়ের ছেলে এর ছবি

আমি এতদিন মাঠে থেকে পর্যবেক্ষণ করেও আমি ভুল। আর আপনি সেই ত্রিপুরা থেকেই কয়েকটা ব্লগ পড়ে(সবগুলো অবশ্যই নয়) দৈবিক আত্মবিশ্বাসে বলে যাচ্ছেন যে, ওরা ভালো কিছুই করছে। বাহ, বেশ তো।

সরলীকরণ নয়, এই কার্যক্রমের সংখ্যাগরিষ্ঠদের নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এই কার্যক্রমের জন্য পাবলিক ভার্সিটি কিংবা স্কুলে গিয়ে ভলান্টিয়ার সংগ্রহ করা হয়নি, কিন্তু ইংলিশ মিডিয়ামে এটা করা হয়েছে। পাবলিক ইউনি থেকে যারা গেছে, তারা নিজ উদ্যোগে গেছে। এবং এদের সংখ্যাটাও তুলনামূলক অনেক কম।

না ভাই, ঐ বই এখনো পড়া হয় নাই।

আপনার জন্য শুভকামনা রইলো।

বন্দনা কবীর এর ছবি

আপনার কলেজ শিক্ষক মিজানুর রহমান ভূঁইয়া মানুষটির বক্তব্যটির মধ্যে ব্যাক্তিগত আক্রোশটাই বেশি দেখতে পেলাম। হুমায়ুন স্যারকে নিয়ে হিংসায় অনেকেই অনেক কিছু বলেন। সেটা মানলাম। মুহাম্মদ জাফর ইকবাল স্যারকে কারা কারা কেন পছন্দ করে না তাও সকলের জানা। তাই এটাও মানলাম। কিন্তু আহসান হাবীব?!! তিনি কার ভাড়া ভাতে কবে ছাঁই দিয়েছেন যে তাকেও কুলাঙ্গার হতে হল?!! হাস্যকর তুলনা।

আর জাগো'র ব্যাপারটা উচ্ছলাই বলে দিয়েছে।
আলোচনা করতে চাইলে চিন্তাটাকেও প্রসারিত করা চাই। মাথা গরম আর এক চোখ বন্ধ রেখে কখনো আলোচনা হয় না।
ভাল থাকুন।

বাংলামায়ের ছেলে এর ছবি

মন্তব্যের প্রথম অংশে সহমত।

আর ২য় অংশ? কিছু বললাম না। মন্তব্যগুলো পড়ুন। উত্তর পেয়ে যাবেন।

শংখ এর ছবি

আপনি শুধু একটা ব্যাপার ভেবে দ্যাখেন... আপনি যখন পনের ছিলেন আপনার ভেতর দেশপ্রেম, মানবতাবোধ এই ব্যাপারগুলো কতটা তীব্র ছিল? অথবা ঠিক কতটা গভীরভাবে আপনি অনুভব করতে পারতেন? একজন পঁচিশ বছরের মানুষ যে উৎসাহ, উদ্দীপনা আর দায়িত্ব নিয়ে একটা কাজ করবে একজন পনের বছরের মানুষও কি তাই করবে?? তার মধ্যে কি প্রথম দুটোর অনুপাতই বেশি থাকবেনা? আপনি কি আশা করেন একটা পনেরো বছরের মেয়ে শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনার বিষয়টি আগাগোড়া বুঝে তারপর সেটা নিয়ে বাপকে কনভিন্সও করে ফেলবে?? আপনি পারতেন??!!

ধরলাম তাদের কাছে এটা একটা অ্যাডভেঞ্চার ছিল... কিন্তু তাওতো তারা কিছু একটা করতে চেয়েছে... হয়তো গভীরতাটা না বুঝেই। কিন্তু গভীরতা বোঝার একটা গ্রাউন্ড তো তৈরি হলো। তারা অন্তত বাস্তব চিত্রটা তো দেখতে পেলো। মাথায় তো কিছু হলেও ঢুকল। কোনও এক প্রাসঙ্গিক পরিবেশে এই ব্যাপারগুলো তাদের মাথায় অবশ্যই স্ট্রাইক করবে। এদের মধ্যেই পরবর্তীতে সত্যিকার চিন্তাশীল দু-একজন উঠে আসবেনা সে গ্যারান্টি আপনি দিতে পারেন? ( ভাত কাপড় নিয়ে যাদের মাথা ঘামাতে হয়না তাদের পক্ষে অন্যের জন্য কাজ করা বেশী সহজ, ভুলে যাচ্ছেন কেন?) এখন প্রথমেই যদি এতো কঠোর সমালোচনা করেন... আর পরে যদি ওরা বলে এদেশে কোনও সেন্সিবল্‌ মানুষ থাকেনা... তখন কাকে দোষ দেবেন?

বাংলামায়ের ছেলে এর ছবি

আচ্ছা ওরা অন্তত কিছু তো করছে বলেই ওদেরকে মাথায় তুলে নাচতে। হাজার টাকার শ্রাদ্ধ করে দশ টাকার ভোজ দিলেও বলতে বলতে হবে বাহ বাহ। তবু কিছু তো দিয়েছে। ৭০০০জন মিলে ১৮০০টা পথশিশুকে একবেলা আনন্দ দিয়েছে, এই তো? ভবিষ্যতে ওরা এমপি-মন্ত্রী হলে পর ১০০০ কোটি টাকার বিল পাশ করিয়ে ১০০ কোটি টাকার কাজ করবে, আর আমরা জনগণ বলবো, আহা, তবুও তো কিছু করেছে। তারপর তাদের সংবর্ধনা দেবো, আরো কত কি করবো। তাই না?

যাদের ভাত কাপড় নিয়ে মাথা ঘামাতে হয় না, তাদের জন্য কাজটা সহজ হলেও বাস্তবতা হচ্ছে তাদের প্রায় কেউই, হ্যা প্রায় কেউই এই সহজ কাজটা করে না। এই জন্যই কেউ করলে চোখে লাগে। সন্দেহ জাগে। বুঝছেন?

ওদের কাছে সেন্সিবল হওয়ার জন্য কি করতে হবে? যাই করুক, হাততালি দিতে হবে। ভালো বলতে হবে। পিঠ চাপড়ে দিতে হবে। কাজটা ভালো লাগুক আর না লাগুক। তাই না?

অতিথি অন্যকেউ এর ছবি

১. একজন মানুষের পিতার ভুল কীভাবে সেই মানুষটাকে দায়ী করে? দুঃখিত, আপনার জাগো সমালোচনা সুপারফিশিয়ালি ভালোমানুষের মতো দেখতে, ভেতর থেকে অন্য ঘ্রাণ পাচ্ছি।
দুই দল, বড়লোকের ছেলেমেয়ে, আর নিজামী মুজাহিদের ছেলেমেয়ের মধ্যে মূলগত পার্থক্য আছে। একদল কোনও আদর্শিক(ধনতান্ত্রিক) ধ্যানধারণা পোষণ করবে এটা স্টিরিওটাইপিঙ করা যায়, নিশ্চিত বলা যায় না। কাজেই তার গরীবের উপকার করার অধিকার আছে কি নাই এটা অন্য কেউ বলে দেবার অধিকার রাখে না। অন্যদিকে, যুদ্ধাপরাধী রাজাকার শুওরের বাচ্চাদের (না, দুঃখিত নই। ওদেরকে গালি ছাড়া সম্বোধন করতে পারি না। আত্মপরিচয়ে ঘা লাগে।) আদর্শিক অনুসারী পরবর্তী প্রজন্ম হুবহু তাদেরই ভাবধারা এবং অন্ধকার চিন্তাচেতনা বহন করে। দুই দলকে একই তালে বিচার করতে চাওয়াটা একারণে অনুক্ত সুপ্ত বিদ্বেষের ঘ্রাণ পেতে দেয়।
(এই কমেন্ট অনেকক্ষণ আগে লেখা। বরং তাপস ভাই অনেক ভালো করে বলেছেন।)

২. বহুলাংশেই সহমত।

৩. যৌক্তিক সমালোচনা দিয়ে তাকে সঠিক পথে থাকতে সাহায্য করতে হবে? তার মানে কি এই যে তিনি ভুল কোনও পথ ধরে চলেছেন? ভুল পথটা কী আসলে? এখনও কোনও 'গঠনমূলক' সমালোচনা তো কারও ভান্ডারে দেখতে পেলাম না।

বাংলামায়ের ছেলে এর ছবি

১।একবার একটু সেই ছেলেটার অবস্থানে নিজেকে ভাবুন, যার বাবা ন্যায্য বেতন-বোনাসের দাবীতে আন্দোলন করতে গিয়ে লাশ হয়ে ঘরে ফিরেছে। আপনি নিজেই তখন এই ধনীগোষ্ঠী ও তার উত্তরসূরীদেরকেও শুওরের বাচ্চা বলে গালি দিবেন।

৩। ভুল পথে যাচ্ছেন না?!!! না গেলেই তো ভালো। তবে কিনা, আমি বিশ্বাস করি প্রতিটা মানুষই ভুল করে, মহাপুরুষ হলেও ভুল করে।

অতিথি অন্যকেউ এর ছবি

১. গ্রস ক্যাটেগোরাইজেশান। যৌক্তিক পথে না থেকে আপনি বালকসুলভ ইমোশনাল কথা পয়দা করছেন। খুবই অপরিপক্ব।

৩. আপনার ব্যক্তিগত বিশ্বাস যদি থাকে, জাফর ইকবাল ভুল করছেন, তাহলে আর কিছুই বলার নাই। সেই একই বালকসুলভ অযৌক্তিক বিশ্বাস। আপনি আপনার বিশ্বাস নিয়েই থাকুন। ধন্যবাদ।

বাংলামায়ের ছেলে এর ছবি

১। গ্রস নয়, সংখ্যাগরিষ্ঠ নিয়ে আলোচনা। তাছাড়া শিরোনামেই তো দেখছেন, "আমার কিছু ভাবনা..."।

প্রতিযুক্তি থাকলে জানান, আমিও সংশোধনের সুযোগ পেয়ে ধন্য হই।

২।নিচে পদ্মজার মন্তব্যের জবাবে বলা হয়েছে।

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

দলের দায়িত্বে এলো নতুন কিছু মুখ যাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ বা প্রমাণ নেই কিংবা যারা মূলতঃ যুদ্ধ পরবর্তী প্রজন্মের। এখন এই প্রজন্ম যদি হটাৎ করে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষে কথা বলা শুরু করে, আপনার কি একটু হলেও সন্দেহ জাগবে না? একবারও কি মনের মধ্যে কোনো কিন্তু খেলা করবে না? সেই সন্দেহ সত্য কিংবা মিথ্যা সেটা না হয় পরেই প্রমাণিত হবে ...

কোনো সন্দেহ হবে না। সন্দেহ থাকা মানে সম্ভাবনা থাকা।

নিঃসন্দেহে এইটা একটা জামাতি স্ট্র্যাটেজি। 'যাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ বা প্রমাণ নেই কিংবা যারা মূলতঃ যুদ্ধ পরবর্তী প্রজন্মের' এইটা ফ্রেজিংটাও জামাতি জামাতি লাগতেছে। বাংলাদেশে জামাতের জন্য যদি বিরাট কোনো বিপর্যয় ঘটে তাইলে জামাতের প্ল্যান বি, বা প্ল্যান সি হইতেছে, তারা 'ক্লিনার ইমেজে'র পোলাপাইন নিয়া আবার পলিটিক্স শুরু করবে। নানা ছলে ব্লগে, ফেইসবুকে তাদের এই ক্লিনার হয়ে ফিরত আসার তত্ত্বের আভাস দেয়া হইতেছে।


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

সাফি এর ছবি

চলুক

বাংলামায়ের ছেলে এর ছবি

জ্বী, এই স্ট্র্যাটেজীর কিছু নমুনা তো উল্লেখ ও করলাম।

আর এজন্যই আমি এর আগেও সচলেই বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ব্লগে বলেছি, এর জন্য দরকার ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করা।

কেননা, স্বাধীনতার পূর্ব থেকে স্বাধীনতা পরবর্তী ৪০ বছরে এদের মোটিভ বুঝতে আর তো কিছু বাকী নেই। জামায়াতে ইসলামী, মুসলিম লীগ, ইসলামী শাসনতন্ত্র ও এই ঘরানার দলগুলোকে বাদ দিলে মনে হয় না খালেদা ম্যাডাম ও তার কিছু একান্ত অনুচর ব্যাতীত দেশের আর কারো কোনো আপত্তি থাকবে। জনগণ বরং সাধুবাদই জানাবে।

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

আমি সন্দেহ করি, ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ হয়ে যাওয়ার উছিলায় নিষিদ্ধ হয়ে যাওয়াটাকে জামাত খুব পছন্দ করবে। কারণ এতে জামাতের ইমেজের কোনো ক্ষতি নাই। কিন্তু যুদ্ধাপরাধের বিচার হয়ে, এই দলের প্রায় সকল বড় নেতা শাস্তি পাওয়ার বিষয়টা জামাতের পছন্দ হবে না। সো, তারা করে কি, এই ব্লগে, ঐ ব্লগে, ফেসবুকে, নানান চিপাচুপায়, নিজেদের ধর্মভিত্তিক হওয়ার মহান-অপরাধটাকে (যেইটা আসলে তাদের টার্গেট কাস্টমারদের জন্য ক্রেডিট) হাইলাইট করে। জামায়াতে ইসলামীর সাথে মুসলিম লীগ, ইসলামী শাসনতন্ত্র এইসব আবাল দলের নাম একসাথে নিয়া, তারা জামাতের এক্সলুসিভ *ুতমারানি ক্যারেকটারটা ব্যাকগ্রাউন্ডে নিয়া যায়। ফোরগ্রাউন্ডে তারা ধর্মের কথা বলা ভালু দল সাজতে পারে।এইটা তাদের স্ট্র্যাটেজি।

কিছুটা অফটপিক:
খালেদা ম্যাডাম ও তার কিছু একান্ত অনুচর ব্যাতীত দেশের আরও বহু লোকই ধানের শীষে ভোট দেয়ার মাধ্যমে জামাতরে ক্ষমতায় বসাইছে। চারদলীয় জোট (জামাত-বিএনপি জোট) ২০০১ সালে মোট ২৩,০৭৪,৭১৪টা ভোট পাইছে। সুতরাং, পুরা বিষয়টা খালেদা ম্যাডাম ও তার কিছু একান্ত অনুচরের উপ্রে চালায়া দেয়াটা একটা ফ্যালাসি।


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

অতিথি অন্যকেউ এর ছবি

চলুক
রাজাকারির বদলে জামাতি শুওরেরা এখন ধর্মভিত্তিক দল হয়ে যাচ্ছে। চমৎকার একটা পয়েন্ট চিহ্নিত করেছেন।

সাদাকালো এর ছবি

১০০% সহমত।

দেবানন্দ ভূমিপুত্র এর ছবি

অনেক কথা বলতে চেয়েছেন। জোগো আর শিক্ষা প্রসঙ্গ নিয়ে আলাদা পোস্ট দিলে ভালো হতো। জাগো-র ভালো-মন্দ বুঝে উঠতে এখনও সময় লাগবে। চোখে রঙিন চশমা পড়া ছেলে-মেয়েরা হঠাৎ কিছু করতে চাইলে ঘটকা লাগাটাই স্বাভাবিক। আবার তারা কিছু করতে পারবে না, তাই বা কেন ভাবব? রাজাকার উত্তরসূরী আর ওদের তুলনাটা আমার কাছে প্রাসঙ্গিক লাগেনি। আর শিক্ষার হাস্যকর কয়েকটি মাধ্যম নিয়ে যা বলেছেন, আমি তার সাথে ১০০ ভাগ একমত। আমি হুমায়ুন আহমেদের লেখা খুব কম পড়েছি। যা পড়েছি, খুব স্বাদু মনে হয়নি। তার সাথে দুইটা বিয়ের কোন সম্পর্ক নাই। সিনেমার নায়ক অভিনয়টা ভালো করেন কি না সেটাই মুখ্য। তাঁর ব্যক্তিগত জীবন একান্তই তাঁর নিজের।

আর জাফর ইকবাল তো বাংলাদেশে একজনই। বিদেশে পাড়ি জমাতে যেখানে মানুষ মরিয়া, েসখানে বিদেশের সম্মানজনক চাকরি ছেড়ে তিনি পড়ে আছেন দেশে- এটাই কি তাঁকে বোঝার জন্যে যথেষ্ট নয়? তাও আবার মৃত্যুভয় নিয়ে।

আপনি অনেক সুন্দর যুক্তি তুলে ধরেছেন। চালিয়ে যান।

বাংলামায়ের ছেলে এর ছবি

ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্যের সাথে প্রায় পুরোই সহমত। আমিও ভাবতে চাই তারা সত্যিই কিছু করতে পারবে। কিন্তু তবু কিছু কারণে আশংকা এড়াতে পারি না। আর কেন এড়াতে পারি না সেটা নিয়েই তো আলোচনা করা হয়েছে।

হুমায়ুন আহমেদ এর ব্যক্তিজীবন বা লেখালেখি কোনোটা নিয়েই আমার কোনো মাথাব্যাথা নেই। আমি ওই সময় হুমায়ুন আহমেদ বা আহসান হাবীব সম্পর্কে তেমন কিছুই জানতাম না। জাস্ট পত্রিকা মারফত তাঁর দ্বিতীয় বিয়ের কথা শুনেছিলাম আর কিছু সমালোচনাও শুনেছিলাম। তাই আমি ভেবেছিলাম স্যার হয়তো ঐ জন্য তাঁর উপর খাপ্পা হয়ে থাকতে পারেন। আফটার অল, তাঁর সম্পর্কে তো আমি কিছু জানি না। তাই অবজেকশন ও জানানো যায় না।

কিন্তু জাফর ইকবাল স্যার কে পছন্দ করতাম এবং তার সম্পর্কে বই পত্রিকা পড়ে কিছুটা জানতাম। তাই তার নাম শুনে খটকা লেগেছিলো। আপত্তি জানিয়েছিলাম।

সালেহ রাজন  এর ছবি

আপনার চিন্তা ধারা কে সাধুবাদ জানায় ।
রাস্তায় ফুল বিক্রি করা তা যে কেউ যে ভাবে নিতে পারে।কেউ এটা কে অ্যাডভেঞ্চার হিসাবে দেখবে কেউ সহনুভুতি হিসাবে দেখবে । আপনি যখন কোন কাজ করতে জাবেন তখন আপনার কিছু স্বেচ্ছাসেবী দরকার । কে কি ভাবে নিল এটা দেখতে গেলে আপনি কাজ তা করতে পারবেন না । আর মানুষ motivate করতে গিয়ে যদি এ্যাওয়ার্ড দেয়া হয় তাহলে সেটা দোষের কি?আপনি একটা সমাজ উন্নয়ন মুলক কাজ করছেন কিন্তু সমাজ যদি আপনাকে প্রণোদিত না করে তাহলে কি আপনি উৎসাহিত হবেন সেই কায করতে??হাজার টা বেবিডল এর মধ্যে হয়তো ১০ টা বেবিডল পথ শিশু দের কষ্ট বুঝবে ।এই ১০ টা বেবিডল বড় হয়ে আর ১০টা উন্নয়ন মুলক কাজ করবে সেখান থেকে আরও ১০০ জন সমাজে ভুমিকা রাখবে ।

আর জাফর একবাল স্যার আমার ও একজন প্রিয় লেখক । স্যার রা সুধু লেখেন এবং বলেন কিন্তু কিছু করেন না। দেশের পরিস্থিতি খারাপ হলে উনারা দেশের বাইরে চলে জান তারপর দেশের পরিস্থিতি ভাল হলে আবার দেশে ফিরে আসেন । আর দেশের সমস্যা গুলো একটা উপন্যাসের মাধ্যমে তুলে ধরেন আর লাখ টাকায় সেই বই বিক্রি করেন । স্যার রাও তো পথ শিশু দের নিয়ে বই লিখে এ্যাওয়ার্ড পাচ্ছেন । স্যার রা কি কখন সেই বইএর থেকে প্রাপ্ত একটা টাকাও কি পথ শিশুদের পিছনে খরচ করেন ???????

নিটোল এর ছবি

আর জাফর একবাল স্যার আমার ও একজন প্রিয় লেখক । স্যার রা সুধু লেখেন এবং বলেন কিন্তু কিছু করেন না। দেশের পরিস্থিতি খারাপ হলে উনারা দেশের বাইরে চলে জান তারপর দেশের পরিস্থিতি ভাল হলে আবার দেশে ফিরে আসেন । আর দেশের সমস্যা গুলো একটা উপন্যাসের মাধ্যমে তুলে ধরেন আর লাখ টাকায় সেই বই বিক্রি করেন । স্যার রাও তো পথ শিশু দের নিয়ে বই লিখে এ্যাওয়ার্ড পাচ্ছেন স্যার রা কি কখন সেই বইএর থেকে প্রাপ্ত একটা টাকাও কি পথ শিশুদের পিছনে খরচ করেন ???????

আমার ঘরের চাল গতকাল বাতাসে উড়ে গেছে, আমি এখন গৃহহীন। কিন্তু জাফর ইকবাল স্যার আমার জন্য কিছুই করলেন না। উনি নিজের ঘরে বসে শুধু বই লিখছেন। উনি একটা খারাপ লুক।

_________________
[খোমাখাতা]

সালেহ রাজন  এর ছবি

আপনার ঘরের চাল উড়ে গেছে, আপনি এখন না পারছেন ত্রান নিতে না পারছেন ঘরের ছাল মেরামত করতে । আপনার কাছে টাকা না থাক সত্ত্বেও আপনি সরকারি টিন নিতে পারছেন না, কারণ আপনার মধ্যে একতা আত্ম সম্মান বোধ আছে । তারপর আপনাকে একটা কেন্দ্রিয় চরিত্র বানিয়ে একটা " দুঃখ মিয়া " টাইপ কাল জয়ী উপন্যাস লিখে ফেললাম । সেই উপন্যাস খুব জনপ্রিয়তা অর্জন করলো । বই বিক্রি করে আমি লাখ টাকা আয় করলাম ।
আমার তো লাখ টাকা আয় করার জন্য আমেরিকা যাওয়া লাগছে না । আর আমার আপনার মত চাল উড়ে যাওয়া লোকের অভাব নেয়। বাংলাদেশ তো উপন্যাস লেখার খনি ......

নিটোল এর ছবি

ও আচ্ছা। এখন বুঝলাম। আপ্নের কথা হইল জাফর ইকবাল বই কেন লেখে? তাইলে বঙ্গদেশে যে আরো কতো মহান লেখকবৃন্দ আছেন উনারা এই অভিযোগ থেকে কীভাবে মুক্তি পান? আপনার কথা অনুসারে সবচেয়ে বড়ো কালপ্রিট তাহলে হুমায়ূন আহমেদ, উনি তো সারাজীবন খালি বই লিখলেন আর কোটি টাকা কামাইলেন। আপনার সমস্যা কোন্টায়? বই লেখায় নাকি টাকা কামানোয়?

আর বই লিখে লাখ টাকা আয় করা কি খারাপ কাজ?এইটা বরং উনার সক্ষমতা প্রমান করে। জাফর স্যার 'দুঃখ মিয়া' লিখলে লাখ টাকা কামাবেন- আপনি কি এই দুঃখে মর্মাহত? বিনয়ের সাথে অনুরোধ করব- আপনি ওরকম উপন্যাস একটা লিখুন না,আমরা সবাই ওটা কিনে আপনাকে লাখপতি বানাব।

_________________
[খোমাখাতা]

অতিথি অন্যকেউ এর ছবি

চলুক চলুক

সালেহ রাজন  এর ছবি

আমি তো সেটাই বলতে চাচ্ছি বই লেখা খারাপ কাজ না ।এ্যাওয়ার্ড পাওয়াটাও খারাপ না। জাগো তো সমাজ উন্নয়ন মুলক কাজ করে এ্যাওয়ার্ড পাচ্ছে আর জাফর একবাল স্যার বই লেখে এ্যাওয়ার্ড পাচ্ছে । একজন কে আপনি দেবতা বানাচ্ছেন আরেকজন কে খল নায়ক । দুই জন ই তো দেশের জন্য কাজ করছে । আমার মনে হয় এবার আপনি আমার পয়েন্ট তা ধরতে পারছেন ।

রাজিব মোস্তাফিজ এর ছবি

আর জাফর একবাল স্যার আমার ও একজন প্রিয় লেখক । স্যার রা সুধু লেখেন এবং বলেন কিন্তু কিছু করেন না। দেশের পরিস্থিতি খারাপ হলে উনারা দেশের বাইরে চলে জান তারপর দেশের পরিস্থিতি ভাল হলে আবার দেশে ফিরে আসেন । আর দেশের সমস্যা গুলো একটা উপন্যাসের মাধ্যমে তুলে ধরেন আর লাখ টাকায় সেই বই বিক্রি করেন । স্যার রাও তো পথ শিশু দের নিয়ে বই লিখে এ্যাওয়ার্ড পাচ্ছেন । স্যার রা কি কখন সেই বইএর থেকে প্রাপ্ত একটা টাকাও কি পথ শিশুদের পিছনে খরচ করেন ???????

ওঁনার নাম তো জাফর ইকবাল-- আপনি তো দেখি আপনার প্রিয় লেখকের নামের বানানই ঠিক করে লিখতে পারেন না ।
আপনার বাকি সব প্রশ্নের উত্তর এই লিংকেগেলে পাবেন

----------------------------------------------------------------------------
একশজন খাঁটি মানুষ দিয়ে একটা দেশ পাল্টে দেয়া যায়।তাই কখনো বিখ্যাত হওয়ার চেষ্টা করতে হয় না--চেষ্টা করতে হয় খাঁটি হওয়ার!!

ফাহিম হাসান এর ছবি

যেই তিনটা ইস্যু নিয়ে লিখেছেন, সবগুলো নিয়েই সচলায়তনে পোস্ট এসেছে। আপনার ভাবনাগুলো ঐখানে যোগ করাই যথেষ্ট ছিল। এই লেখাটায় নতুন কোন চিন্তার খোরাক নাই। ধোঁয়াটে বক্তব্য আর কুযুক্তি মিলে জগাখিচুড়ি (চ্রম উদাসের খিচুড়ি না) হয়েছে।

এছাড়া
ইংলিশ মিডিয়ামে শুধু বেবিডল পড়ে,
বড়লোক মানেই রক্তচোষা,
ধনীর সন্তানের ভলান্টিয়ার কাজ = ভন্ডামি
- এই ধরনের অতি সরলীকরণ অর্থহীন।

আর অতি আবেগে আপনি ঘৃণার যে ছবি আঁকলেন তা কতখানি বাস্তব -

যারা চিরকাল গাড়ীর কাচ দিয়ে ওদের দেখেছে আর নাক কুঁচকে বলেছে, “ডার্টি বিচ!”,

শিক্ষার মাধ্যম হওয়া উচিত একটাই। সেটা আমাদের মাতৃভাষা বাংলা। আর সেখানে শিক্ষামানের ব্যাপারটাও নিতান্তই অবান্তর।

আর যারা আদিবাসী তারা? তারা সবাই নিজেদের ভাষায় শিখবে না?

শিক্ষামানের ব্যাপারটা অবান্তর কেন?

ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলগুলো তৈরি করছে একটা “ওয়েস্টার্ণ কালচার ব্লাইণ্ড” প্রজন্ম। যারা নিজেদের সংস্কৃতি সম্পর্কে জানে না। বাঙ্গালী ঐতিহ্য-সংস্কৃতির জন্য এদের কোনো ভালোবাসা তো নেইই, বরং অপসংস্কৃতির চর্চা করে প্রতিনিয়ত এর ক্ষতিসাধন করছে।

আন্দাজে বললেই হল? আর খালি মাধ্যম পাল্টালেই সবাই বাঙ্গালী সংস্কৃতির ধারক-বাহক হয়ে যাবে?

সত্যি কথা বলতে গেলে কিছু হট টপিক নিয়ে একঘেঁয়ে এই লেখাটা প্রচন্ড এক পেশে আর ফালতু যুক্তিতে ভর্তি। কোমী মাদ্রাসা প্রসঙ্গে লেখার যেটুকু সম্ভাবনা ছিল - ফোকাসে অভাবে তাও ফুটে উঠে নাই। রূঢ় শোনালে দুঃখিত - কিন্তু মেরিটের দিক থেকে এর চেয়ে ভাল আলোচনা সচলের অন্যান্য পোস্টে এমন কী মন্তব্যের ঘরেই দেখতে পাচ্ছি।

শিশিরকণা এর ছবি

আর যারা আদিবাসী তারা? তারা সবাই নিজেদের ভাষায় শিখবে না?

গুড পয়েন্ট!

~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~

নিটোল এর ছবি

চলুক

_________________
[খোমাখাতা]

অতিথি অন্যকেউ এর ছবি

চলুক

বাংলামায়ের ছেলে এর ছবি

ইংলিশ মিডিয়ামে শুধু বেবিডল পড়ে,
বড়লোক মানেই রক্তচোষা,
ধনীর সন্তানের ভলান্টিয়ার কাজ = ভন্ডামি

আমাকে অন্তত ৫০% লোক দেখান, যারা এর ব্যতিক্রম। তাহলেই মেনে নেবো এটা অতি সরলীকরণ। আর নয়ত এটাই সংখ্যাগরিষ্ঠের ছবি।

ওটা বাস্তব, নিজ কানে শোনা। ঐদিন(শিশু দিবস) সেবাকর্ম(!) শেষে মায়ের সাথে ফেরার সময় এক বাচ্চার উক্তি, "ওহ মম, হাউ ডার্টি দিজ গাইজ আর। আই ডোন ওয়ানা স্টে উইথ দিস বিচেস এনিমোর!" এখন আপনি বললে নিজের কানকে অবিশ্বাস করতে পারি! কি বলেন? করবো??

ভাই পুরোটা পড়ে মন্তব্য করেন। ইংলিশ মিডিয়ামে বাংলা পড়ানো হয় না। এমনকি ব্যক্তিজীবনেও বাংলা বলতে নিরুৎসাহিত করা হয়। এর সাথে কি আধিবাসী শিক্ষার কথা আসে? আধিবাসীরা তাদের মাতৃভাষায় শিখবে। নো প্রবলেম। কিন্তু সেখানে বাংলা আর ইংলিশ ও থাকা উচিত দেশ আর বিশ্বের প্রয়োজনে। তাছাড়া বাংলা শুধু মাতৃভাষা না, রাষ্ট্রভাষাও। তাই বাংলাদেশে বাংলাবর্জিত কোনো শিক্ষাব্যবস্থাকে আমি সমর্থন করি না।

মানের ব্যাপারটা অবান্তর, কারণ বাংলা মিডিয়ামে পড়েই অনেকে দেশে বিদেশে বাংলার মুখ উজ্জ্বল করেছেন এবং করে যাচ্ছেন।

আন্দাজে বললাম কই? মাধ্যম পাল্টালে আর কিছু নাই হোক, অন্তত এটা হবে যে আমাদের উত্তরসূরীরা 'হ্যালোউইন' সম্পর্কে জানার আগে 'নববর্ষ' সম্পর্কে জানবে।

আপনি কি আপনার উত্তর পেয়েছেন?

শিশিরকণা এর ছবি

লেখাটা জুইতের হয় নাই। নিজস্ব ব্লগে থাকতে পারে, নিজস্ব চিন্তা ভাবনা হিসেবে, প্রথম পাতায় আসার মতো না।

~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~

বাংলামায়ের ছেলে এর ছবি

আমার তো ভাই নিজস্ব ব্লগ নাই!!!

লেখার মানের চাইতে পাঠককে কিছু চিন্তার খোরাক দিতেই বেশী চেষ্টা করেছি।
সো, লেখার মান নিয়ে যা বলবেন, তাই সই।

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

সজলায়তন এর ছবি

লেখাটাতে ব্যক্তিগত আক্রোশের প্রভাব স্পষ্ট, সেটা আপনি যতই ঢাকার চেষ্টা করুন।
ধনী আর বিত্তশালীদের উপর যুক্তিহীন অন্ধ ক্ষোভ তেমন কোন কাজের কথা না।
আর লেখাটাতে আসলেই এতকিছু নিয়ে বলতে চেয়েছেন সবই বিশাল জটলা পাকিয়ে গেছে।
শিশিরকণা ভাই যেমন বললেন লেখাটা নিজস্ব ব্লগে নিজস্ব চিন্তা হিসেবে মানানসই, এখানে প্রথম পাতায় না।
যা মনে হলো সোজাসুজি বললাম, আশা করি ব্যক্তিগতভাবে কিছু মনে করবেন না।

পদ্মজা এর ছবি

জাফর ইকবাল স্যার প্রসঙ্গে দ্বিতীয় প্যারা পুরোটা, আমার মনে কিঞ্চিত সন্দেহের উদ্রেক করেছে। (দুঃখিত, আমি কিভাবে উদ্ধৃত করতে হয়, করতে পারছিনা।)
লেখক তাঁকে ভুলত্রুটি মুক্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। আমার প্রশ্ন এখানেই। সাম্প্রতিক যে ঘটনার প্রেক্ষীতে স্যার কে নিয়ে এত সমালোচনা, যার কারনে এই লেখা, স্যারের সেই লেখা বা মন্তব্য নিয়ে লেখকের সরাসরি মতামত জানতে চাই।

কারন আমার ধারণা বেশ ঘুরিয়ে এবং ঘোলা জলে লেখক জামাতীদের মত কথা লিখেছেন। আমার ভুল হতে পারে। কিন্তু আমি সরাসরি আপনার মতামত জেনে আমার মনের ধোঁয়াশা দূর করতে চাই।

বাংলামায়ের ছেলে এর ছবি

ঐ লেখা সমর্থন করি। সমর্থন করি না ঐ লেখা নিয়ে যে ধরণের সমালোচনা হয়েছে, সেটাকে।

'জাগো আন্দোলন', 'সাড়া জাগানো ৩০ মিনিট' এর মতো অনুষ্ঠানে স্যারের উপস্থিতিকে সমর্থন করি না।

সমর্থন করি না প্রথম আলো'র যেকোনো অনুষ্ঠানেই স্যারের রেগুলার অতিথির মতো উপস্থিতিকে। আমি মনে করি কর্পোরেট হাউসগুলো তাদের ব্যবসায়িক স্বার্থে অনুষ্ঠানে ভালোকাজ, জনসেবামূলক কাজ, স্বাধীনতার স্বপক্ষের কাজ--এই ধরণের লেভাস দিয়ে স্যারকে উপস্থিত হতে রাজি করছেন এবং তাঁর ইমেজ ব্যবহার করে নিজেরা লাভবান হচ্ছেন। এই কাজগুলোর অনেকগুলোই হয়তো প্রকৃতপক্ষে যা বলা প্রচার করা হচ্ছে, তা নয়। তাই আমি মনে করি এই ব্যাপারে স্যারের সচেতন হবার প্রয়োজন রয়েছে।

আর আমার সম্পর্কে কিছুটা ধারণা পেতে এই ( , ) লেখাগুলো থেকে ঘুরে আসতে পারেন।

তানিম এহসান এর ছবি

খুব আগ্রহ নিয়ে পড়তে শুরু করেছিলাম, শেষ হলো ক্লান্তি দিয়ে। মন্তব্য না করে পারছিনা আসলে,

০১
জাগো’র সাথে জামাতকে জড়িয়ে তুলনামুলক আলোচনা’র তীব্র প্রতিবাদ জানাই। জামাত এর সাথে এইসব তুলনা করে জামাতকে একটা জায়াগা দেয়ার অপচেষ্টা দেখে এসেছি চিরকাল। ধরেই নিতে চাই আপনি সচেতনভাবে এটা করেননি, তবু আশা করবো আপনি এই ভুলটা স্বীকার করবেন।

০২
জাগো’র ব্যপক সমালোচনা করলেন, জাগো’র সাথে জড়িত সবাইকে একটা সরল সমীকরনের মাধ্যমে আপনি আসলে কি বোঝাতে চেয়েছেন আমি বুঝলামনা। শুধুমাত্র কষ্ট করে বড় হয়েছি বলে যারা সোনার চামচ মুখে দিয়ে বড় হয়েছে তাদের সবাইকে চূড়ান্ত অস্বীকার করতে হবে? এটাতো কোনভাবেই কাম্য নয় ভাই।

০৩
আপনার ভাবনাগুলোতে ব্যাক্তিগত ক্ষোভের জায়গাটুকু খুব পষ্ট। শোষণ বিষয়টিকে এতোটা সরল করে বলে দিলেতো আর হবেনা। কষ্ট করে বড় হওয়া একজন মানুষও কি কোনভাবেই কাউকে শোষণ করেনা? এতোটা নিশ্চিত হচ্ছেন কি করে? আমাদের ঘরে যে শিশুটিকে আমরা কাজ করার জন্য রাখি তার প্রতি কর্তব্য আমি আপনিই কতটুকু পালন করি?

০৪
শিক্ষামাধ্যম নিয়ে কোন তর্কনেই, সেটা কেবলই মাত্র মাতৃভাষা হতে পারে। এই বিষয়ে পুরোপুরি সহমত। সেটা কিভাবে কতটুকু দেয়া হবে সেটা আলাদা বিষয়।

০৫
উপরের সবগুলো প্রতি-বক্তব্য আপনি যুক্তি দিয়ে খন্ডন করতে চেয়েছেন, এটাও করবেন। আপনি একটু ভাবুনতো; কেউ কিন্ত আমরা আপনাকে ব্যাক্তিগত কোন কিছুতে কিছু বলছিনা কিংবা ব্যাক্তি আপনাকে বলছিনা। আমরা আপনার বলা বক্তব্যগুলোকে নিয়ে আলোচনা করছি, আপনি আরো কিছু ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গী পাচ্ছেন। সবগুলো দৃষ্টিভঙ্গীইকি পুরোপুরি বর্জনীয়।

আগেও আপনার ব্লগ পড়েছি আমি। খুব বিক্ষুব্ধ সময় কাটাচ্ছেন কি? শুভকামনা রইলো আপনার জন্য।

বাংলামায়ের ছেলে এর ছবি

প্রথমেই ধন্যবাদ জানাচ্ছি সুন্দর কিছু মন্তব্যের জন্য। সেইসাথে আপনার ক্লান্তির কারণ হওয়া এবং একাডেমিক ব্যস্ততায় জবাব দিতে বিলম্বের জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি।

১। হ্যাঁ এটা নিয়ে অনেকেই আপত্তি জানিয়েছেন। আমি শুধু কোন অবস্থা থেকে এই প্রসঙ্গ এনেছি, সেটাই বলছি। আসলে 'জামাত' শব্দের চেয়ে নিকৃষ্ট কোনো তুলনা আমার জানা নেই। মুক্তিযোদ্ধা মামার সান্নিধ্যে থেকে প্রতিনিয়ত এই নরপশুদের প্রতি যে ঘৃণাকে বুকে পুষেছি, সেটা এ জন্মে যাবার নয়।
তবু এই ধরনের তুলনায় জামাতকে জায়গা দেবার মতো কোনো বার্তা জন্ম নিলে সেটা সম্পূর্ণ অনিচ্ছাকৃত। সেক্ষেত্রে, ভুল স্বীকার করে নিতে আমি এতটুকু কুন্ঠিত নই।

২। লেখার শিরোনামে লিখেছি "আমার কিছু ভাবনা..."। শুধু গত ৩ নভেম্বর নয়, তারও বেশকিছু আগে থেকেই আমি জাগো সম্পর্কে খোঁজ-খবর রাখছি। এতোদিনে আমার যা কিছু অভিজ্ঞতা আর চিন্তাভাবনা জমা হয়েছে, এখানে তারই প্রকাশ ঘটেছে। সেক্ষেত্রে, ঠিক সরলীকরণ নয়। আলোচনায় সংখ্যাগরিষ্ঠদের ধরণটাই প্রাধান্য পেয়েছে।

৩।এক্ষেত্রেও ২নং উত্তর প্রযোজ্য। আর টোকাই, হকার কিংবা বঞ্চিত শিশুদের নিয়ে আমার কর্মকাণ্ড সম্পর্কে আলাদা কমেন্টে বিস্তারিত বলার ইচ্ছা রাখি।

৫। সবগুলো দৃষ্টিভঙ্গীই বর্জনীয় হবে কেন?! এতগুলো বিষয়ের অবতারণা করে, এটা আমি কখনোই আশা করতে পারি না যে, সবাই সহমত হবে। এমনকি এটাও আশা করা যায় না যে, আমি সকল বিষয়ে ঠিক হবো। নিজের ভাবনা-চিন্তাগুলোকে সুগঠিত, পরিমার্জিত করার অভিপ্রায়েই তো ব্লগিংএ আসা।

শুভকামনা আপনার জন্যও।

রু (অতিথি) এর ছবি

আগেই পড়েছি, মন্তব্য করা হয়নি। নতুন কিছু বলার নাই, তাই বললাম না।

আশফিক অনিক এর ছবি

সুন্দর লেখা,ভালো লাগল!তবে কেন যেন মনে হল,আরও পরিনত হতে পারত!

আপনার চিন্তাভাবনাকে সাধুবাদ জানাই।আমাদের দেশে এখন এরকম চিন্তা করার মত মানুষেরও অভাব!!

বাংলামায়ের ছেলে এর ছবি

ইউনুস, নুবেল, আমেরিকা---এই বিষয়গুলোর অবতারণা করেছিলাম পাঠকের আলোচনা শোনার অভিপ্রায়ে। কিন্তু সবাই এই প্রসঙ্গগুলোকে কেন জানি না স্কিপ করে যাচ্ছে.........ঘটনা কি???

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।