কৃষক আন্দোলনের নেতা হিসেবে তার রাজনৈতিক জীবনের শুরু। তিনি সবসময় রাজনীতি করেছেন অধিকার বঞ্চিত মানুষের জন্য। দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে সৃষ্টি হওয়া পাকিস্তানে তিনি উড়িয়েছিলেন অসাম্প্রদায়িক রাজনীতির পতাকা। গত ১৭ ই নভেম্বর ছিল মজলুম জননেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর ৩৫ তম মৃত্যুবার্ষিকী। আমরা এই মহান নেতাকে সেইভাবে মনে রাখতে পারিনি। বাম চেতনায় বিশ্বাসী মানুষেরাও তেমনিভাবে স্মরণ করেনি। ফেইসবুক এ বেশ কিছু মানুষের স্ট্যাটাস দেখলাম। অবাক করা বিষয় স্ট্যাটাস-দাতাদের অনেকে আবার সাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী। জামাতের ব্লগ সোনার বাংলাতে দেখলাম মওলানা ভাসানীকে নিয়ে লিখিত লেখার লিঙ্ক। কেন ধর্মান্ধদের ভাসানী স্মরণ? আসুন দেখা যাক কেন অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী মানুষ এই মহান নেতাকে মনে রাখতে পারিনি, কেন ধর্মান্ধরা অস্পষ্ট হলেও অসাম্প্রদায়িক এই নেতাকে স্মরণ করছে। শোনা যাক ইতিহাসের কথা।
৬ দফা আন্দোলনে মওলানা ভাসানীর বিরোধীতাঃ
১৯৬৬ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর আওয়ামী লীগ বাঙালির মুক্তির সনদ ৬ দফা প্রকাশ করে। ৬ দফার সুস্পষ্ট লক্ষ্য ছিল বাঙালি জাতির অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক মুক্তি। পূর্ববাংলার পূর্ণ স্বায়ত্তশাসনের লক্ষ্যে প্রণীত এই ৬-দফার ব্যাপারে বামপন্থীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের কমিউনিস্ট পার্টি আন্তর্জাতিকভাবে কমিউনিস্ট আন্দোলনের বিভক্তির কারণে ৬-দফা কর্মসূচি সমর্থন করা থেকে বিরত থাকে। কিছুটা বিলম্বে হলেও ছাত্র ইউনিয়ন ৬-দফা দাবি সমর্থন করে কিন্তু চীন পন্থী কমিউনিস্ট পার্টির নেতারা ৬-দফাকে পাকিস্তানের সংহতি বিনষ্টকারী ও বিদেশি শক্তি দ্বারা প্রণীত বলে প্রচার চালায়। এদের বক্তব্যের ভাষা এবং আইয়ুব-ভুট্টো-গোলাম আযমদের বক্তব্যের ভাষা ছিল একইরকম। চীনপন্থি উগ্র বামপন্থীদের দ্বারা প্রভাবিত মওলানা ভাসানী ৬ দফাকে সাম্রাজ্যবাদী প্রক্রিয়ার অংশ হিশেবে উল্লেখ করে একে প্রত্যাখ্যান করলেন এবং সংসদীয় গণতন্ত্র, প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসন, স্বৈরাচারী একনায়কতন্ত্রের অবসান এবং সমাজতন্ত্রের জন্য সাম্রাজ্যবাদ-বিরোধী সংগ্রাম প্রভৃতি দাবির উল্লেখ করে ১৪ দফা পেশ করেন। কিন্তু বাঙালি তার মুক্তির সনদ হিসেবে ছয় দফাকে গ্রহণ করল।
শুরু হল আইয়ুব বিরোধী তীব্র আন্দোলন। আইয়ুব বিরোধী আন্দোলনে ইসলামিক ধারা গুলোও অংশগ্রহণ করেছিল কিন্তু লক্ষ্য ছিল পাকিস্তানের আদর্শ ও সংহতির রক্ষা। তাই এদের কাছেও বাঙালির মুক্তির সনদ গ্রহণযোগ্য হল না। এদের নেতা গোলাম আযম শুরু করল ছয়দফা বিরোধী তৎপরতা, এদের তৎপরতাকে বেগবান করল আমাদের মওলানা ভাসানীর ১৪ দফা। যাহোক সকল ষড়যন্ত্র কে রুখে দিয়ে বাঙালি ছয় দফাকেই গ্রহণ করল, তীব্র আন্দোলনের মুখে নড়ে উঠল আইয়ুব এর গদি। গদি রক্ষার জন্য হাজির হল ‘আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা’, বন্দী হলেন বাঙালির মুক্তির সনদের নেতা শেখ মুজিব।
৬০ এর দশকে মওলানা ভাসানী বাঙালির জাতীয় আন্দোলনে সমাজতন্ত্রের নামে সবসময় নেতিবাচক ভূমিকা পালন করেছেন। প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসন চাইলেও তার রাজনীতির মূলকথা ছিল পাকিস্তানের সংহতি ও ভারতবিরোধীতা। মওলানা ভাসানী বললেন[১]-
পৃথিবীর মজলুম মানুষ সবাই এক, তারা যেখানেই বাস করুক। তাছাড়া বেশি বাংলা বাংলা করলে পাকিস্তান ভেঙে যাবে। পৃথিবীর বৃহত্তম মুসলিম রাষ্ট্র, এই দেশকে তোমরা ভাঙতে চাও? তা আমি হতে দেব না
মওলানা ভাসানী ছিলেন আইয়ুব এর পররাষ্ট্র নীতির সমর্থক। নেতা মাও-এর পরামর্শে বেশীরভাগ সময়ে বিভিন্ন ভাবে আইয়ুব এর পক্ষ নিয়েছেন। আইয়ুব তাঁকে তাঁকে অনেক কিছু দিয়েছেন। ১৯৬৩ সালে আইয়ুব মওলানা ভাসানীকে চীনের বিপ্লব বার্ষিকী অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার জন্য পাঠান। এভাবেই ৬০ দশকের বাঙালির মুক্তির আন্দোলনে সবসময় নেতিবাচক ভূমিকা পালন করেছেন। প্রকৃতপক্ষে ৬ দফার সমালোচনা ও এর বিকল্প হিশেবে ১৪ দফা পেশ করে তিনি সাম্রাজ্যবাদ-বিরোধী আন্তর্জাতিক রাজনীতির আড়ালে তিনি বাঙালির মুক্তির আন্দোলনকে হয় এড়িয়ে গেছেন না হয় বিরোধিতা করছেন। উনি এসময় বাঙালিকে পরাধীন রেখে অর্থনৈতিক মুক্তির স্বপ্ন দেখিয়েছেন। অপরদিকে বাঙালির নেতা শেখ মুজিবুর রহমান আগে চেয়েছিলেন পরাধীনতা থেকে মুক্তি এরপরে অর্থনৈতিক মুক্তি। শেখ মুজিবুর রহমান ঠিকি বুঝছিলেন পরাধীন থেকে অর্থনৈতিক মুক্তি সম্ভব নয়। পরাধীন বাঙালি স্বাধীনতা চেয়েছিল বলে নেতা হিশেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান গ্রহণ করেছিল। মওলানা ভাসানী সাম্রাজ্যবাদের বিরোধিতা করতে গিয়ে বাঙালির স্বাধিকারের আন্দোলনকে সবসময় উপেক্ষা করেছেন কিন্তু বাঙালির শোষক সাম্রাজ্যবাদীরা তাঁকে ব্যবহার করে গেছে সুকৌশলে।
৭০ এর নির্বাচনে মওলানা ভাসানীর নেতিবাচক ভূমিকা:
৭০ নির্বাচনে গণ রায়ের মাধ্যমের বাঙালীর মুক্তির আন্দোলন জোড়াল হয়েছিল। এই নির্বাচনের ফলাফল স্বাধীনতার স্বপ্নকে বাস্তব রূপ দিয়েছিল। কিন্তু মওলানা ভাসানী সত্তরের এই ঐতিহাসিক নির্বাচন বর্জন করেছিলেন। ১৯৭০ সালের ১২ নভেম্বরের ঘূর্ণিঝড়ের পর মওলানা ভাসানী নির্বাচন বয়কটের আহ্বান জানিয়ে বলেন-
ভোটের আগে ভাত চাই
তিনি নির্বাচনে অংশগ্রহণকারীদের লক্ষ লক্ষ মানুষের লাশের উপরে দাঁড়িয়ে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ের অভিযোগে অভিযুক্ত করেন। মওলানা ভাসানী বলেন [২]-
‘তাদের ব্যাপারে আমি কিছুই বলতে চাই না, তারা নিজেরাই বলুন যে তারা জাতীয় শত্রু না মিত্র
তিনি শেখ মুজিবুর রহমানকে উদ্দেশ্য করে বলেন [২,৩]-
মুজিব, তুমি স্বাধীন পূর্ব পাকিস্তান সংগ্রামে যোগ দাও। যদি আমেরিকা ও ইয়াহিয়ার স্বার্থে কাজ করো তাহলে আওয়ামী লীগের কবর ’৭০ সালে অনিবার্য
মওলানা ভাসানীর আহ্বান উপেক্ষা করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাজনৈতিক দূরদর্শিতার প্রমাণ দিলেন। হঠকারী উক্তি উচ্চারণ করে তথাকথিত বিপ্লবী দায়িত্ব পালনের বাহবা গ্রহণ অপেক্ষা বাঙালীর মুক্তির দাবি তার কাছে বড় হয়ে দাঁড়াল। তাই তিনি নির্বাচন না পিছিয়ে উপদ্রুত এলাকায় পরবর্তী সময়ে নির্বাচন পরিচালনার পক্ষে মত দেন।
নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। কিন্তু মওলানা ভাসানী বাঙালীর রায় যাচাইয়ের উদ্দেশ্যে একটি গণভোটের দাবি তুলে নিজের অজান্তেই পাকিস্তানিদের ষড়যন্ত্রের রাজনীতিতে সহযোগিতা করে বসেন। নির্বাচন পরবর্তী কিছু ঘটনাও তাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছিল। ১৯৭১ সালের ১৪ ই ফেব্রুয়ারি মওলানা এক অনুষ্ঠানে বলেন-
“শেখ মুজিব ও ভুট্টো পাকিস্তান ভাঙ্গার ষড়যন্ত্র করছে
অথচ ১৯৭০ সালের ৫ ই ডিসেম্বর তিনি স্বাধীন সার্বভৌম পূর্ব পাকিস্তানের ডাক দিয়েছিলেন [২]।
মুক্তিযুদ্ধে মওলানা ভাসানীর ভূমিকা:
১৯৭১ সালের মার্চ মাসে বঙ্গবন্ধুর ডাকা অসহযোগ আন্দোলনে সমর্থন প্রদান করে এবং বঙ্গবন্ধুকে স্বাধীনতা ঘোষণার আহ্বান জানান। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ভারত যান এবং মুজিবনগর সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হন [৪], তিনি এসময় বিশ্বনেতাদের কাছে চিঠি লিখেন। মওলানা ভাসানী চীনের নেতা চেয়ারম্যান মাও সেতুং , প্রধানমন্ত্রী চৌ-এন-লাই এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের কাছে তার বার্তা পাঠিয়ে তাদের অবহিত করেন যে পূর্ববঙ্গে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ব্যাপকহারে গণহত্যা চালাচ্ছে। সেজন্য তিনি প্রেসিডেন্ট নিক্সনকে অনুরোধ করেন এই মর্মে যে, তিনি যেন পাকিস্তানকে অস্ত্র সরবরাহ না করেন। উপরন্তু মওলানা ভাসানী প্রেসিডেন্ট নিক্সনকে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেবার আহ্বান জানান [৪]।
মওলানা ভাসানী কি অসাম্প্রদায়িক ছিলেন?
১৯৫৬তে পাকিস্তান গণপরিষদে যে খসড়া শাসনতন্ত্র বিল পেশ করা হয় তাতে পাকিস্তানকে ইসলামিক রিপাবলিক বলে ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল,তখন মাওলানা ভাসানী পল্টনের জনসভায় তার বিরোধিতা করে সুস্পষ্ট বক্তব্য দিয়েছিলেন৷
১৯৬৭-র ২২ জুন কেন্দ্রীয় সরকার রেডিও ও টেলিভিশন থেকে থেকে রবীন্দ্র সঙ্গীত প্রচার বন্ধ করার নির্দেশ জারি করলে এর প্রতিবাদ করেন।
উপরের তথ্যগুলি তার অসাম্প্রদায়িক আদর্শের জয়গান গায়। এবার মুদ্রার উলটা পিঠ দেখা যাক। ১৯৭০ সালের মার্চ মাসের ২১ তারিখ পশ্চিম পাকিস্তান সফরে যান মওলানা ভাসানী। তিনি ঢাকা বিমানবন্দরে বলেছিলেন[২]-
“পূর্ববাংলায় হিন্দু বামপন্থী নেতারা তাদের ভক্ত নগণ্য মুসলমান কর্মীদের সাথে নিয়ে ন্যাপ ও কৃষক সমিতিকে ধ্বংস করার জন্য উঠে-পড়ে লেগেছে। পূর্ববাংলার জনসংখ্যার শতকরা ৯৯ ভাগই মুসলমান, কাজেই তাদের এ ব্যাপারে বিভ্রান্ত করা সম্ভব নয়
এই বক্তব্যের মাধ্যমে তার সাম্প্রদায়িক চরিত্রের প্রকাশ পায়। এছাড়াও তিনি ধর্মের কারণে ছিলেন প্রচণ্ড রকমের ভারত বিরোধী।
স্বাধীন বাংলাদেশে মওলানা ভাসানীর ভূমিকা:
দেশ শত্রু-মুক্ত হল। এবার দেশ গড়বার পালা। এইসময় দরকার ছিল বঙ্গবন্ধুকে দেশ গড়বার কাজে সহযোগিতা করা। কিন্তু মওলানা ভাসানী বিপ্লবী হয়ে থাকলেন, এদেশের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির নেতাও হতে পারলেন না ঠিক যেমনটি পারেনি এদেশের মানুষের রাজনৈতিক মুক্তির নেতা হতে। মুক্তিযুদ্ধের পর দেশে ফিরেই শুরু করলেন পাগলামি।
১৯৭১ সনের ২১ শে এপ্রিল মওলানা ভাসানী বহু কাকুতি মিনতি করে চীনের চেয়ারম্যান মাও সেতুং ও প্রধানমন্ত্রী চৌ-এন-লাইয়ের নিকট মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশকে সাহায্য করার জন্য পত্র লেখেন
ইতিহাস বলে চীন পাকিস্তানকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করেছিল যার বেশীরভাগ ব্যবহার হয়েছিল বাঙালী নিধনের জন্য। স্বাধীনতার পরেও চীন বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কাজ করে যায়। ১৯৭২ সনে চীন বাংলাদেশের জাতিসংঘ সদস্য অন্তর্ভুক্তির প্রশ্নে ভেটো প্রয়োগ করে। ১৯৭১ সনে চৌ-এন-লাই বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে ‘এক অন্তহীন যুদ্ধের সূচনা মাত্র’ উল্লেখ করেছিলেন [৫] এতকিছুর পরও মওলানা ভাসানীর চীন প্রেম গেল না। তিনি হয়ে গেলেন বিভিন্ন দল উপদলে বিভক্ত মুক্তিযুদ্ধের সরাসরি বিরোধিতা করা চৈনিক পন্থীদের ‘মহান নেতা’।
বিপ্লবী-মন্ত্রে উদ্বুদ্ধ হয়ে মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষ শক্তি চীনকে সমর্থন অব্যাহত রাখা ছড়াও এসময়ে তার ধর্মান্ধ চেহারাও স্পষ্ট হয়ে উঠল। স্বাধীনতা যুদ্ধে পরাজিত শক্তিকে আড়ালে রেখে তাদের স্বপক্ষে কাজ করার জন্য গঠন করলেন: হুকমতে রব্বানী। তিনি বললেন [৫]-
মুসলিম বাংলার জন্য যারা কাজ করছে তাদের আমি দোয়া করছি। আল্লাহর রহমতে তারা জয়যুক্ত হবে
রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতি জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার ভিত্তিতে গৃহীত মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সমুন্নত বাংলাদেশের শাসনতন্ত্র বাতিল করার দাবী জানিয়ে মওলানা ভাসানী বললেন [৫]-
বাংলাদেশর সংবিধান অবশ্যই কোরআন ও হাদিসের ভিত্তিতে প্রণীত হবে
স্বাধীনতা যুদ্ধে বিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনের জন্য সহযোগিতা না করে ঘোষণা দিলেন-
বাংলাদেশকে আমি ভিয়েতনামে পরিণত করে ছাড়বো
এভাবে তার বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তিকে নিজের অজান্তেই সহযোগিতা করে যেতে থাকলেন। মওলানা ভাসানী জীবনের বেশীরভাগ সময় প্রগতিশীল রাজনীতির কথা বলেছেন, নির্যাতন ভোগ করেছেন। জীবনের শেষ প্রান্তে এসে অতি উগ্র বাম ও ডানপন্থীদের দ্বারা তিনি ব্যবহৃত হয়েছেন।
বাঙালির রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক মুক্তির আন্দোলন তাঁকে কোন সময় ভাবাইনি, তার কাছে মুখ্য ছিল আন্তর্জাতিক রাজনীতি। কেউ সম্পূর্ণ নয় কিন্তু মওলানা ভাসানী যেসব কারণে অসম্পূর্ণ সেগুলোই এখন তাঁকে আর মনে করিয়ে দেই না। আবার এসব কারণগুলোর কারণেই মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী এবং ধর্মান্ধ মানুষেরা নেতা হিশেবে তাঁকে স্মরণ করছে।
তথ্য নির্দেশঃ
১) ড. প. মিত্র, "বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামের ইতিহাস ১৯৫৮-১৯৬৬," in বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামের ইতিহাস ১৯৪৭-১৯৭১. আগামী প্রকাশনী, ch. ২.
২) স. গুপ্ত, "বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামের ইতিহাস ১৯৬৯-১৯৭১ সালের মার্চ পর্যন্ত," in বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামের ইতিহাস ১৯৪৭-১৯৭১ . আগামী প্রকাশনী, ch. ৫.
৩) "বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ: দলিলপত্র, দ্বিতীয় খণ্ড," p. ৫৮৪.
৪) উইকিপিডিয়া
৫) অ. আ. সাইয়িদ, “ফ্যাক্টস এন্ড ডকুমেন্টস বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড”
তন্ময়_আহসান
মন্তব্য
দারুণ পোস্ট... অসংখ্য ধন্যবাদ...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
ভালো লেগেছে।
পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কিছু ভুলের জন্য ভাসানীকে আমরা সম্পুর্ণ দোষারোপ করতে পারিনা। গনমানুষের রাজনীতি করা মানুষেরা স্বীকৃতি পায়না কখনো, তাদের ভূলগুলোকেই চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেওয়া হয় বেশী। একথা বললে ভূল হবে যে ৬৯-৭০ এর আগে দেশের বেশীরভাগ মানুষ পৃথক বাংলাদেশ চেয়েছিল। বঙ্গবন্ধু '৭০ নির্বাচন পরবর্তী সময়ের আগেও খুব সম্ভবত স্বাধীনতা নিয়ে তার অবস্থানে সুস্পষ্ট ছিলেন না। ৭মার্চ এর ভাষনের 'মুক্তির সংগ্রামের'র ঘোষনার পরে আবার ইয়াহিয়ার সাথে আলোচনার টেবিলে বসার ঘটনাও যথেষ্ট বিতর্কিত। তবে এসময় ভাসানীর প্রকৃত অবস্থান সম্পর্কে ভিন্নমূখী তথ্য পাওয়া যায়।
আপনার পোস্টটি অনেক তথ্যসমৃদ্ধ হলেও ভাসানী সম্পর্কে বিভ্রান্ত ধারনা সৃষ্টি করতে পারে বলে আশংকা করছি। মানুষের জন্য তার সারা জীবনের সংগ্রামের কিংবদন্তী ইতিহাস তার শেষ বয়সের কিছু ভূলের কাছে ম্লান হতে পারেনা। তার মত একজন গনমানুষের নেতার আমাদের আজ অনেক প্রয়োজন। সবকিছুর উর্ধ্বে তার প্রতি শ্রদ্ধাবনত সম্মান প্রদর্শন করছি।
কেন পারে না?
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
কারন আমি আপনি সবাই ভূল করি। কিন্তু আপনার ও আমার সারাজীবন মানুষের কল্যানের জন্য জীবন উৎসর্গ করে রাজনীতি করার প্রজ্ঞা ও সাহস নেই। বেলা শেষে আমি-আপনি-ভাসানী সবাইকে তো একই পাল্লায় রেখে মাপাটা যুক্তিযুক্ত নয়। তাই নয় কি?
গান্ধী-বঙ্গবন্ধু-ভাসানী সকলেই জীবনের কোন না কোন পর্যায়ে এসে ভূল করেছিলেন। কিন্তু সেই ভূলগুলো দিয়ে তো তাদের স্বরুপ বিবেচনা করা যায়না। তাদের প্রকৃত উচ্চতাকে যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করে মন্তব্য করা উচিত বলে আমি মনে করি।
আপনি পারেন না সেইটা আপনার ব্যাপার, আমি পারি কি না পারি তা আপনি কীভাবে জানলেন? আমাকে আপনার পাল্লায় কীভাবে মাপলেন? কেন মাপলেন?
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
ভাইডি, কোন মন্তব্য ব্যক্তিগত বাদানুবাদের পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার কোন ইচ্ছে আমার ছিলনা, এখনো নেই। কিন্তু আপনি আমার মন্তব্যের একটি 'উপমা'কে ব্যক্তিগত আক্রমন হিসেবে নিয়েছেন দেখে কষ্ট পেলাম। সচলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী ছাড়া অন্য সবাইকে সম্মানের দৃষ্টিতে দেখা হয় বলে জানি। ভাসানীকে শ্রদ্ধা করায় আপনি কি আমাকে সেই দলের ভাবলেন নাকি ভেবে শঙ্কিত হচ্ছি। যাই হোক...
কিছুদিন আগে বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা ও 'জনযুদ্ধের গনযোদ্ধা' বই এর লেখক 'মেজর কামরুল হাসান ভূইয়া'র সাথে এক ব্যক্তিগত আলাপের সময় তার মুখ থেকে ভাসানী সম্পর্কে যেই মন্তব্যটি পাই সেটি এরকম...
আপনাদের ধন্যবাদ।
কথা হল মনে রাখার, কিছু মানুষের ভুলের জন্য আমাদের মূল্য দিতে হয়। যাদের জন্য মূল্য দিতে হয় তাদের মনে রাখতে পারি না।
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
লেখাটিতে ফরম্যাটিং এ সমস্যা কিভআবে হল আমি বুঝলাম না। মেজাজটাই খারাপ হয়ে গেল। এভাবে অতিথি হিশেবে লেখা খুবি বিরক্তিকর ব্যাপার। কবে আমি সচল হব???? আমার লেখাটি কনো ভাবেই এডিট করতে পারছি না।
অনেক নতুন ইতিহাস জানলাম তন্ময় ভাই। মাওলানা ভাসানী সম্পর্কে আমি যতদূর জানি তাতে আমার কাছে উনাকে সাম্প্রদায়িক চরিত্রই মনে হয়েছিলো। তাই হয়তো ভাসানী সম্পর্কে বেশি কিছু জানার তাগিদ বোধ করিনি কখনই। তবুও আমাদের জানা থাকা প্রয়োজন আমাদের দেশের ইতিহাসের সব চরিত্রগুলো।
চালিয়ে যান।
দারুণ একটা লেখা । অনেক ধন্যবাদ । মজলুম জননেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর মধ্যে সম্ভবত অনেক বৈপরীত্য ছিল । আপনার লেখা পড়ে নিচের কথাগুলো জানলাম --
আবার মুহম্মদ জাফর ইকবালের লেখা 'মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস' পড়ে জেনেছি তিনিই সর্বপ্রথম সরাসরি বাংলাদেশের স্বাধীনতার দাবি করেছিলেন । আপনার লেখাতেও আপনি বলেছেন --
----------------------------------------------------------------------------
একশজন খাঁটি মানুষ দিয়ে একটা দেশ পাল্টে দেয়া যায়।তাই কখনো বিখ্যাত হওয়ার চেষ্টা করতে হয় না--চেষ্টা করতে হয় খাঁটি হওয়ার!!
ভাসানী-ই কি ১৯৭২ সালের দালাল আইনে বিচার চলাকালীন অবস্থাতে বলেনি যে, দালাল আইনে বিচার হলে মুজিবের গায়ের চামড়া থাকবে না? বলে নাই?
ভাই এত মাথা গরম করেন ক্যান? সুন্দর করে নিজের যুক্তি গুলোকে তুলে ধরুন । ধন্যবাদ।
আমার কথার জবাব না দিয়ে সুন্দর করে আমার মাথার গরমের অজুহাত দিয়ে কেটে পড়লেন। কোথায় মাথা গ্রম করেছি বলতে পারবেন? আপনার কাছে করা প্রশ্নের উত্তর কি আপনার কাছে নেই?
ভাসানী কেন দালাল আইনের ও ট্রাইবুনালারে বিরোধিতা করেছেন এবং কেন তিনি রাজাকারদের পক্ষ নিয়েছেন? দয়া করে যদি উটর দিতেন, তবে বাধিত হতাম।
দালাল আইনে ছয় হাজার জনকে আসামী করা হয়েছিল। যাদের মধ্যে সাড়ে চার হাজার জনকে বঙ্গবন্ধু ক্ষমা করে দিয়েছিলেন। কিন্তু দেড় হাজার জনকে ক্ষমা করা হয়নি (যেখানে আজকের নিজামী-সাঈদী-মুজাহিদ ও ছিলেন)।
তার মানে গুরুতর অপরাধ সংগঠনকারীরা কেউ ক্ষমা পায়নি। কিন্তু ভাসানী এর বিরোধিতা করেছিলেন অন্য কারনে। সেই সময় রক্ষি বাহিনী অনেক নিরাপরাধ মানুষকে 'দালাল আইন' এর ভয় দেখি ফাঁদে ফেলছিল। ভাসানী এটির বিরোধিতা করেছিলেন। কারণ তিনি 'মজলুম জননেতা' তার এই বিরোধিতা এটি প্রমান করেনা যে তিনি সত্যিকারের যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষায় তিনি সচেষ্ট ছিলেন।
আমি তো জানতাম দালাল আইনে প্রায় সাঁইতিরিশ হাজারকে কারাবন্দী করা হয়েছিলো, যার মধ্যে ছাব্বিশ হাজারের মতো বন্দীকে সাধারণ ক্ষমায় মুক্ত করেছিলেন শেখ মুজিব। আপনি এই ছয় আর সাড়ে চারের তথ্য কোত্থেকে পেলেন একটু জানাবেন?
দুঃখিত হিমু'দা। আমার মনে হয় আগে কোথাও তথ্যটি জানতে ভূল হয়েছে। ব্যক্তিগত আগ্রহে আলাপের সূত্রে মুক্তিযোদ্ধা মেজর কামরুল হাসান আমাকে এই তথ্যটি দিয়েছিলেন। তার ভূল হওয়ার তো কথা নয়। সম্ভবত আমার বুঝতে/শুনতে ভূল হয়ে থাকতে পারে। মার্জনাপ্রার্থী।
এমন আরো লিখুন, অনেক বড় কলেবরে।
facebook
সচল হলে লেখার ইচ্ছাটা অনেক বেড়ে যেত। পড়েছেন, সেই জন্য ধন্যবাদ।
ভাসানী আমাদের ইতিহাসের এক চমৎকার বৈপরিত্যে ভরা চরিত্র, এর কারণেই তাঁকে মূল্যায়ন করা জটিলই বটে।
১. আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা থেকে প্যারোলে মুক্তি দিয়ে মুজিবকে গোলটেবিল বৈঠকে অংশ নেয়ার প্রস্তাবের বিরুদ্ধে সবচাইতে উগ্রভাবে যিনি প্রতিবাদ করেছিলেন তিনি ভাসানী। তিনিই প্রথম বলেছিলেন যে প্যারোলে মুক্তি দেয়া যাবে না, পূর্ণ মুক্তি দিতে হবে।
২. আপনি লিখেছেন, 'এদের নেতা গোলাম আযম শুরু করল ছয়দফা বিরোধী তৎপরতা, এদের তৎপরতাকে বেগবান করল আমাদের মওলানা ভাসানীর ১৪ দফা।' পাঠক হিসেবে এটা কিছুটা তথ্য টুইস্ট করার মতো লাগছে আমার কাছে। গোলাম আযমের সঙ্গে ভাসানীর কি কোনো রাজনৈতিক মিত্রতা ছিল কোনো পর্যায়ে? রেফারেন্স প্লিজ। আলাদা ভাবে গোলাম আযমের তৎপরতা অতি নগন্য ছিল সে সময়। তেল গ্যাস বন্দর রক্ষা কমিটির আন্দোলন এখন এমন সময়ে হচ্ছে, যখন সাঈদী-নিজামীর মুক্তির জন্য জামায়াতও সরকারকে বাটে ফেলতে চাইছে। কিন্তু তেল গ্যাস বন্দর রক্ষা কমিটির আন্দোলন জামায়াতকে বেগবান করার জন্য নয়, তাই না?
৩. ৭০ এর নির্বাচনে ভাসানী ন্যাপের অংশগ্রহন না করাটা আমাদের ইতিহাসের জন্য ভালো হয়েছে। ভাসানী জনপ্রিয় নেতা ছিলেন, তিনি নির্বাচনে থাকলে বাংলার ভোট ভাগ হতো। আওয়ামী লীগের একক সংখ্যাগরিষ্টতা পেতে তখন সমস্যা হতো।
৪. ৭০ এর নির্বাচন বয়কট ভাসানীর রাজনৈতিক অবস্থান ছিল, একে স্বাধীনতার বিরোধিতা করার চেষ্টা হিসেবে যদি ভবিষ্যতের ইতিহাসবেত্তারা মেসেজ পান, তাহলে দুঃখজনক হবে। ভাসানীই বরং অনেক আগে থেকেই 'স্বাধীন পূর্ববাংলা'র আন্দোলন নিয়ে সোচ্চার ছিলেন। তিনি গণমূখী রাজনীতিই করেছেন সবসময়।
------
আমি মনে করি একজন মুজিব আর একজন ভাসানীর মাঝে বড় পার্থক্য হয়েছে, ভাসানীর রাজনৈতিক গ্রুমিংটা হয়েছে অনেকটাই একক ভাবে, আসামের জঙ্গলে। একারণে একদিকে তিনি চীনের লাল মাওলানা, অন্যদিকে তিনি মুরিদদের পানিপড়াও দিয়েছেন, এমন জটিলভাবে চলেছে তার রাজনৈতিক দর্শন।
মুজিব যেভাবে রাজনৈতিক ভাবে আরো গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের সংশ্রবে এসে ঋদ্ধ হতে পেরেছেন, ভাসানী সে সুযোগ পাননি। এ কারণে দূরদর্শিতার অভাব ছিল তাঁর। ভাসানীর রাজনৈতিক সহযোদ্ধাদের মাঝে তাজউদ্দিনের মতো সত্যিকার প্রজ্ঞাবান কেউ্র ছিলেন না। মুজিব শুধু নিজে মুজিব না, তাজউদ্দিনদের নিয়েই তিনি মুজিব হয়ে উঠেছিলেন।
-
ভাসানীকে আমরা মনে রাখিনি, রাখছি না। এর কারণ আসলে উপরের কিছুই নয়, এর বড় কারণ ভাসানীর কোনো কন্যা সন্তান নেই। আওয়ামী বিরোধী ডান-বাম শিবিরের রাজনৈতিক দিকপাল হয়েছেন জিয়া। ভাসানীর একজন মেয়ে থাকলে হয়তো হাসিনার সঙ্গে কোনো সখিনার দেখা পেতাম আমরা, হয়তো খালেদা জিয়া নয়।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
----------------------------------------------------------------------------
একশজন খাঁটি মানুষ দিয়ে একটা দেশ পাল্টে দেয়া যায়।তাই কখনো বিখ্যাত হওয়ার চেষ্টা করতে হয় না--চেষ্টা করতে হয় খাঁটি হওয়ার!!
"ভাসানীকে আমরা মনে রাখিনি, রাখছি না। এর কারণ আসলে উপরের কিছুই নয়, এর বড় কারণ ভাসানীর কোনো কন্যা সন্তান নেই। আওয়ামী বিরোধী ডান-বাম শিবিরের রাজনৈতিক দিকপাল হয়েছেন জিয়া। ভাসানীর একজন মেয়ে থাকলে হয়তো হাসিনার সঙ্গে কোনো সখিনার দেখা পেতাম আমরা, হয়তো খালেদা জিয়া নয়।"
ধন্যবাদ। ১ নম্বর রেফারেন্সটি দেখুন।
@ আরিফ জেবতিক, আপনার ৩ নং পয়েন্ট এ বলেছেনঃ
৩. ৭০ এর নির্বাচনে ভাসানী ন্যাপের অংশগ্রহন না করাটা আমাদের ইতিহাসের জন্য ভালো হয়েছে। ভাসানী জনপ্রিয় নেতা ছিলেন, তিনি নির্বাচনে থাকলে বাংলার ভোট ভাগ হতো। আওয়ামী লীগের একক সংখ্যাগরিষ্টতা পেতে তখন সমস্যা হতো।
ভাসানী কি ভোট ভাগ না হওয়ার জন্য অংশ নেননি? যদি তা-ই হয় তবে খুব ভালো।
কিন্তু লেখক বলছেন নির্বাচন পরবর্তী সময়ে বাংগালীর রায় যাচাইয়ের জন্য তিনি গণভোট চেয়েছিলেন।
নাহ। ভোট ভাগাভাগি না হওয়ার জন্য ভাসানী ভোটে অংশ নেন নি তা না। ভাসানী ভোট প্রত্যাখ্যান করেছিলেন, ভোটের আগে ভাতের দাবীতে যদিও আগের স্বৈরশাসক আইয়ূবকে তিনি এই দাবীতে বিব্রত করেননি।
হিসেবটা জটিল ছিলোনা। ভাসানীর হিসেবে ও ছিলো মোটামুটি গ্রহনযগ্য নির্বাচন হলেও 'ছোকরা' মুজিবর পাকিস্তানের ক্ষমতা পেয়ে যাবে।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
গুরুত্বপূর্ণ পোষ্ট।
ভাসানী রাজনীতি বহুলাংশেই উদ্ভ্রান্ত ও বিভ্রান্তিমুলক।
এই পোষ্টে আরো আসতে পারতো- ভাসানীর সরাসরি শিষ্যদের, বাংলাদেশের রাজনীতিতে অবদান। মুজিব বিরোধীতার নামে সামরিকতন্ত্র আর মৌলবাদকে ফিরিয়ে আনতে ভাসানীপুত্রদের অবদান অনস্বীকার্য্য।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
ভাসানীর সরাসরি শিষ্য বলতে কাদের কথা বলছেন ? আরেকটু বিস্তারিত বলা যায় মোরশেদ ভাই ?
----------------------------------------------------------------------------
একশজন খাঁটি মানুষ দিয়ে একটা দেশ পাল্টে দেয়া যায়।তাই কখনো বিখ্যাত হওয়ার চেষ্টা করতে হয় না--চেষ্টা করতে হয় খাঁটি হওয়ার!!
কে আর ভাই? নয়া পল্টনে বি। এন।পি অফিস এর উল্টাদিকে দ্যাইখেন। দেখবেন মুদ্রায় ওপিঠের মত ভাসানী পুত্রদের অফিস। মান্নান, খোকা'র পর এখন নবপুত্র মীর্জা সাহেব।
----------------------------------------------------------------------------
একশজন খাঁটি মানুষ দিয়ে একটা দেশ পাল্টে দেয়া যায়।তাই কখনো বিখ্যাত হওয়ার চেষ্টা করতে হয় না--চেষ্টা করতে হয় খাঁটি হওয়ার!!
একজনের নাম বলি- আনোয়ার জাহিদ। ভাসানী ন্যাপের প্রতিষ্ঠাকালীন যুগ্ম সম্পাদক।
এ ছাড়া ও '৭৫ এর সামরিকতন্ত্র তথা মৌলবাদকে প্রতিষ্ঠায় যারা অগ্রনী ভূমিকায় ছিলেন তাদের বেশীরভাগ ভাসানীর বাইপ্রোডাক্ট।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
হুমম, ধন্যবাদ !
----------------------------------------------------------------------------
একশজন খাঁটি মানুষ দিয়ে একটা দেশ পাল্টে দেয়া যায়।তাই কখনো বিখ্যাত হওয়ার চেষ্টা করতে হয় না--চেষ্টা করতে হয় খাঁটি হওয়ার!!
ভাসানীর সরাসরি শিষ্য ন্যাপ-এর সাধারণ সম্পাদক ( ভাসানীর মৃত্যুর পর ন্যাপের চেয়ারম্যান )মশিউর রহমান যাদু মিয়া সামরিক জান্তা জিয়ার সরকারে প্রধানমন্ত্রীর মর্যাদায় সিনিয়র মন্ত্রী ছিলেন । তিনি ১৯৭৭ সালে প্রগতিশীল-দেশপ্রেমিক-গণতান্ত্রিক ও জাতীয়তাবাদী শক্তির সমন্বয়ে প্রথমে জাতীয়তাবাদী ফ্রন্ট ও পরবর্তীতে গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রুপ দিতে ন্যাপরে কার্যক্রম স্থগিত করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) গঠনে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৭৮ খ্রীস্টাব্দে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের পরোক্ষ উদ্যোগে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ফ্রন্ট নামের রাজনৈতিক দল গঠিত হলে তিনি ন্যাপ তথা ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির একাংশ নিয়ে এ দলে যোগ দেন। এই দলটি ই কিছুদিন পরে আরো কিছু দলের সাথে এক জোট হয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (সংক্ষেপেঃ বিএনপি) গঠন করে ।(সুত্রঃ উইকি )
“General Zia, who had assumed power in April 1977 after a series of coups and counter-coups, found it difficult to sustain his power solely as a Military ruler. .......Gen. Zia floated political party twice, first as Front in 1977 and later as BNP on Ist September 1978. The BNP was composed of retired military and civil officials and defectors politicians from other left and rightist parties................He organized party politics with the help of Mashiur Rahman Jadu Mia (1923-1979), a leader of NAP (Bhasani), who was designated as Senior Minister in Zia’s cabinet."(Ref:“Coup syndrome in Bangladeshi politics and designs therein”By Rabindranath Trivedi, Asian Tribune 2007-07-01)
নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)
চমৎকার একটি লেখা। মন্তব্যগুলো ছাড়া লেখাটা অসম্পূর্ণই থাকতো মনে হয়
--------------------------------------------------------
দেয়ালে দেয়ালে মনের খেয়ালে/ লিখি কথা ।
আমি যে বেকার, পেয়েছি লেখার/ স্বাধীনতা ।।
হাসান মোরশেদ, নজরুল ইসলাম ও নুরুজ্জামান মানিক-এর মন্তব্যসমূহ গুরুত্বপূর্ণ
নতুন মন্তব্য করুন