জেনেভা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্রেঞ্চ ল্যাঙ্গুয়েজ ক্লাসে বেশ কয়জন বিদেশি ছাত্রছাত্রীর সাথে গল্প হল কাল [২৭.১১.২০১১] এদের অনেকেই নাম করা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে । প্রথমে ভেবেছিলাম ওরা সোশাল সায়েন্স কিংবা পলিটিক্যাল সায়েন্স পড়তে এসেছে এক সেমিস্টারের জন্য। কফি খেতে খেতে ব্রায়ান নামে একজনের সাথে গল্প হল। সে যা বলল তা হচ্ছে [Daniel Bovet] নামে কোনো এক নোবেল লরিয়েট প্রফেসরের বেশ কিছু প্রকাশনা এখনো ফ্রেঞ্চ ভাষায়। ওই প্রফেসরের অল্প কিছু গবেষণা ইংরেজিতে প্রকাশিত হয়েছে যার ভিত্ততে তার নোবেল পুরস্কার প্রাপ্তি। ব্রায়ানের কাজ হচ্ছে প্রফেসর Daniel Bovet এর সবগুলো পাবলিকেশন খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পড়া যদি কোন অজানা তত্ত্ব পাওয়া যায়। আমি জানতে চাইলাম একজন ভাল অনুবাদককে দিয়ে অনুবাদ করায়ে নিলেই তো পারতে, কষ্ট করে সুইজারল্যান্ডে এসে ফ্রেঞ্চ শিখে ... এত স্ট্রেস নেয়ার প্রয়োজন কি? নাকি রথ দেখা কলা বেচার মতো ফ্রেঞ্চ শেখা- সুইস লারকি পটায়ে স্কি করা সাথে একটু পড়ালেখা এক সাথে সব।
সে একটা মুচকি হাসি দিয়ে বলল স্কি আমি আমেরিকাতে করেছি খুব ইচ্ছে আছে একদিন সুইস স্কি রিসোর্টগুলোতে যাবার কিন্তু সময় করে উঠতে পারছি না। পাশাপাশি আমার নিজের কোনো টাকাও নেই ,তাই স্কি করতে গেলে ম্যাকডোনাল্ড কিংবা স্টার বাক্সে পার্ট টাইম জব করতে হবে যেটা এই মুহূর্তে সময়ের সল্পতার জন্য সম্ভব না আমার ফান্ড হার্ভার্ড স্কুল অফ মেডিসিন থেকে দেয় শুধু গবেষণা জন্য। ফ্রেঞ্চ ল্যাঙ্গুয়েজ কোর্সও ফান্ডের একটা অংশ। তাই নৈতিকতার একটা ব্যাপার আছে। তাছাড়া আমার ফ্রেঞ্চ এখনো খুব ভাল না। তাই গবেষণা ফলাফল নিয়ে আমি হতাশ। ব্রায়ান আমাকে আরও বেশ কজনের সাথে পরিচিত করিয়ে দিলো যারা প্রায় একই এসাইনমেন্ট নিয়ে এসেছে। তবে সবাই একই প্রফেসর নয়, একেক জন একেক জন প্রফেসরের এবং ভিন্ন ভিন্ন বিষয় নিয়ে।
পরিচয় হল ‘ইউসিকু মাসাউকির’ সাথে তার ইংরেজি খুব সীমিত সে ফ্রেঞ্চে আমাকে যা বলল জাপান সরকার চায় 'খাঁটি বিজ্ঞান' কোনো বিদেশী ভাষায় নয়, সেটা হতে হবে একদম সহজ এবং নিজের মায়ের ভাষায় । এছাড়াও সে মনে করে জাপানি ভাষা ইংরাজি ভাষার চেয়ে বেশি শ্রুতি মধুর। ব্রায়ানের উচিৎ ছিল প্রতিবাদ করা তাই না? কিন্তু সে প্রতিবাদ না করে বলল তাই ঠিক! বিজ্ঞনের ভাষা হবে মায়ের ভাষা।
[center]পরিচয় হল সিল্ভিয়ার সাথে, সে এসেছে অস্ট্রেলিয়ার কেনভেরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে! হঠাৎ মনে পড়ে গেল গত কিছু দিন ধরে বিজ্ঞান শিক্ষায় মাতৃভাষার গুরুত্বকে অবহেলা করে নানান যুক্তি (আমি বলব কুযুক্তি) দিয়ে লেখা জনাব ফাহাম ও তার সমর্থনকারীদের!
শেষ একটা উদাহরণ দিয়ে সমাপ্তি টানব আমার পি.এইচ.ডি সুপার ভাইজরের মা ফরাসী (সুইস ফ্রেঞ্চ) বাবা ব্রিটিশ তার দুই দেশেরই নাগরিকত্ব আছে পাশাপাশী আছে আইপিসিসির সাথে যৌথ ভাবে নোবেল পুরস্কার প্রাপ্তির বিরল সম্মান। আমি অনেকবার তার ডেস্কে নেচার জার্নালের প্রিন্টেড কপির সাথে ছোট ছোট করে ফ্রেঞ্চ ভাষায় লেখা দেখেছি । আজ তাকে প্রশ্ন করলাম তুমি তো খুব ভাল ইংরেজি বলো তো পাবলিকেশনে চিরকুটের মতো করে ফ্রেঞ্চে লিখ কেন? সে বলল যে তার বাবার ভাষা ইংরেজি হলেও সে মায়ের ভাষায় কথা বলতে/লিখতে বিজ্ঞান বুঝতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করে পাশাপাশি জন্মের পর ১৫ বছর সে সুইজারল্যান্ডে বড় হয়েছে তাই জার্নালের বিভিন্ন প্যরাগ্রাফের সাথে ফ্রেঞ্চে নিজের মতো করে টুকিটাকি লিখে রাখে যাতে দ্বিতীয়বার পড়ার সময় একবার চোখ বুলালেই পুরো ব্যপারটা ধরে ফেলতে পারে। এসব দেখে এটাই বুঝেছি আমাদের প্রয়োজন ‘বিজ্ঞান শেখা’ ‘বিজ্ঞানের ভাষা শেখা’ নয়। আর যারা কষ্ট করে বিজ্ঞানকে বিভিন্ন ভাষা থেকে বাংলা ভাষায় অনুবাদ করে আমি তাদের স্যালুট জানাই
মাহমুদ
জেনেভা বিশ্ববিদ্যালয়
eval(unescape('%64%6f%63%75%6d%65%6e%74%2e%77%72%69%74%65%28%27%3c%61%20%68%72%65%66%3d%22%6d%61%69%6c%74%6f%3a%6d%61%68%6d%75%64%2e%67%65%6e%65%76%61%40%67%6d%61%69%6c%2e%63%6f%6d%22%3e%6d%61%68%6d%75%64%2e%67%65%6e%65%76%61%40%67%6d%61%69%6c%2e%63%6f%6d%3c%2f%61%3e%27%29%3b'))
----------------------------------------------
সচলায়তনে প্রকাশিত আমার টুকিটাকিঃ
-----------------------------------------
[৬] নদীর জন্মকথা
[৫] আমার প্রথম ও শেষ তাবলীগ চিল্লা
[৪] বড় হয়ে আমি ইতালি যাব এটা আমার “ এইম ইন লাইফ”
[৩] পরিবেশ নিয়ে উচ্চ শিক্ষাঃ কোথায় আছে স্কলারশিপ
[২] ভেকেশনে সুইজারল্যান্ড [পর্ব দুই]
[১] কোথায় যাচ্ছেন ভেকেশনে ? চলেন যাই সুইজারল্যান্ড
মন্তব্য
সহমত।
বাংলা ভাষায় বিজ্ঞানচর্চার প্রসারের জন্য যারা শ্রম দিয়ে যাচ্ছেন তাদের স্যালুট।
লেখায়
লেখক কী বলতে চেয়েছেন বুঝতে পেরেছি বলেই মনে হয়। কিন্তু শিরোনামের সঙ্গে সেই বক্তব্যটি মেলালে খানিকটা বিভ্রান্তি তৈরি হয়!
বিজ্ঞানের কী কোনো নির্দিষ্ট ভাষা রয়েছে? আমার মনে হয় রয়েছে। বিজ্ঞানের ভাষা খুবই সুনির্দিষ্ট। এবং সেই ভাষাটা শেখা জরুরী। বিজ্ঞানের ভাষা না জানলে কেউ বিজ্ঞান বুঝবে কীভাবে! সুতরাং বিজ্ঞান শেখা মানেই বিজ্ঞানের ভাষাটিও শেখা। বিজ্ঞান কী বলতে চায় সেটি বুঝতে পারা।
প্রশ্ন হচ্ছে, বিজ্ঞানের এই ভাষাটি কী ইংরেজি? অথবা গ্রীক? অথবা অন্য এমন কোনো ভাষা যেটি কেউ মাতৃভাষা হিসেবে শিখে ফেলতে পারে? আমার মনে হয়, না। বিজ্ঞানের ভাষার অন্য কোনো নাম নেই। এবং এই ভাষা কেউ মাতৃভাষা হিসেবেও শিখে ওঠে না। বিজ্ঞানের ভাষাকে সবাই তার মাতৃভাষাতেই সবচে ভালো বুঝতে পারে। এবং অন্য যে ভাষাতেই অনুবাদ করা হোক, সেই ভাষায় বিজ্ঞানের অর্থ বদলে যায় না। বদলে গেলে সেটি ওই অনুবাদকের দূর্বলতা। বিজ্ঞানের নয়, বিজ্ঞানের ভাষারও নয়।
মাতৃভাষায় বিজ্ঞান চর্চা হোক। মাতৃভাষায় বিজ্ঞান চর্চার যতো প্রতিবন্ধকতা আছে সেসব দূর হোক। মাতৃভাষার রঙিন পথ ধরেই বিজ্ঞান সবার অন্তরে জায়গা পাক।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
আপনার কথাই ঠিক
'মাতৃভাষায় বিজ্ঞনের বিকল্প নেই জাতীয়' শিরোনাম হলে আর কনফিউশন থাকতনা..
আপনার বাংলা বেশ দুর্বল। আপনি প্রতিদিন এক গ্লাস হরলিক্স খাবেন, আর দশ পাতা করে বারট্রাণ্ড রাসেল পড়বেন। এভাবে ছয়মাস চালিয়ে যান। ছয় মাস পর দেখবো আপনার বাংলার গায়ে গত্তি লাগলো কি না।
হিম্ভাইয়ের কি হইছে?
~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~
রাসেল পড়ি জীবন গড়ি
ছোট বেলায় কারেন্ট চলে গেলে আমরা সব ভাই বোন একটা হারিকেনের আলোতে পড়তাম কারো একজনের ঝিমুনি আসলে বাকিদের মধ্যে কেউ একজনের কাজ ছিল আম্মাকে গিয়ে বলা “ আম্মা দেখেন দেখেন ঘুমাইতাছে’ আর আম্মা এসে ঝিমুনিরত অবস্থায় টাস করে থাপ্পর বসায়ে দিয়ে বলত ‘ সারাদিন কি কর যে পড়তে বসলেই ঘুম আসে’
থাপ্পড়টা খাবার পর কয়েক সেকেন্ড ঘোড়ের মধ্যে থাকতাম ঠিক আপনার মন্তব্যের প্রথম লাইন পড়ার পর এই রকম অনুভুতি হল। এখন মনে হচ্ছে ঠিকই আছে আমার বাংলা আসলে খুব জাতের না
যাই হোক এন টিভিতে বলে না হাল ছেড়ো না বন্ধু কণ্ঠ ছাড় জোরে আর এই কথায় অনুপ্রানিত হয়ে ইভা রহমান কণ্ঠ এমনই জোরে ছেড়েছেন যে আর বন্ধই হয়না, এখন আমিও ইভা রহমানের নীতি ধরলাম আগামী ছয় মাস লাগবেনা তার আগেই দেখবেন বাংলা ঠিক
এবার আপনেরে একটা দুঃখের গল্প শুনাই আমার শহরে বানান ঠিক করে দেয়ার মতো কেউ নাই যে কয়জন বাঙালি আছে সবাই ‘মমিন’। দুই বছর আগে এক বাসায় গিয়ে দেখি বাঙালি পাকিস্তানী সবাই এক বাসায়। খাবার দেবার আগে নানান ঈমানি কথা বার্তা, খাবার ঠিক আগের মুহূর্তে একটা মুনাজাত ধরলেন উর্দু ভাষায় সবাই (শুধু আমি ছাড়া) । মুনাজাত শেষে সবাই আমার দিকে অবাক হয়ে তাকায় জানতে চায় কি বিষয়ঃ আমি বললাম বেহেশতে যাব কিনা তা নিয়ে চিন্তা ভাবনা করতেছি কারন বেহেশতে গেলে দেখব তাবলীগের ভাইরা নিম গাছের ডাল নিয়া দাঁত মাযতাছে কেউ বা ঢিলা কুলুপ নিয়া দাড়ায়ে আছে ইস্তেঞ্জার পর। অন্য দিকে দোজকে গেলে দেখা যাবে শিলা কি জবানি গান চলছে কারন সব নায়িকাদের স্থান তো একই যায়গায় ...
তারপর থেকে আমার আমি নিজেই লেখক নিজেই পাঠক...
শেষমেশ আপনেরে একটা অনুরোধ করব। সম্পর্ক নিয়ে একটা লেখা লিখে শেষ করেছি অনেক কষ্ট করে, বানান ঠিক করে দিলে পাবলিশ করা যাবে দিবেন কিনা কন?
ছয় মাস বারট্রাণ্ড রাসেল না পড়লে বাংলা ঠিক হয় নাকি কারো?
মাতৃভাষায় বিজ্ঞান শিক্ষা অনেক কার্যকর তাতে কোনও সন্দেহ নেই. কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি আমার মনে হয় তা সম্ভব না. ২০১৬ এর পর নীলক্ষেত পাবলিকেশন(দুনিয়ার সবচেয়ে বড় প্রকাশনী) এর উপর কি আঘাত আসে তা নিয়ে আমি শঙ্কিত তখন বাংলা তো দুরের কথা, ইংরেজিতেও আর শিক্ষা সম্ভব হবে না. আমাদের মার্কেট খুব ছোট. ফ্রান্স কিংবা আপনার জেনেভাতে যে কোন বিষয়ের পপুলার বইয়ের ফ্রেঞ্চ ভার্সন বের করা সম্ভব এবং তা হচ্ছে. কারণ জনসংখ্যা কম হলেও ছাত্র সংখ্যা বেশি. এখানকার বিব্লোতেক এ অরিজিনাল বই কেনা হয় এবং ছাত্ররাও কেনে. কিন্তু আমাদের এইখানে তা সম্ভব না. আমাদের দেশ এর সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ তা কিনতে পারবে না. আর অনুবাদ কিরকম সুখপাঠ্য হতে পারে তার উদাহরণ কেদারা কিংবা মুঠোফোন . গোলকায়ন (Globalization) এর কারণে আমাদের মত গরিব দেশ এর পক্ষে ইংরেজি ব্যতীত অন্য ভাষায় বিজ্ঞান শিক্ষার কোন বিকল্প দেখি না. তাছাড়া মাতৃভাষায় না শিখেও উন্নতি করার উদাহরণ কিন্তু ভারত. যারা নিজের ভাষায় শিখে উন্নতি করেছে তারা কিন্তু প্রথম থেকেই নিজের ভাষায় শিখেছে. তার কিন্তু আমাদের মত না. আমরা এখন শুরু করতে চাইলে বিসমিল্লাহ থেকে শুরু করতে হবে. যা আসলেই বর্তমান বাস্তবতায় কতটুকু সম্ভব আমার জানা নেই. তবে আমি মাতৃভাষায় বিজ্ঞান চর্চার পক্ষে. আমাদের শুরু করতে হবে. তবে আফসোস শুরু করার পর প্রকাশনা করতে গেলেই ঝামেলা শুরু হবে. জব্বার কাগু বইসা আছে বিজয় নিয়া.উনিও কিন্তু ২০১৭ এর জন্য অপেক্ষা করতেছেন. ধৈর্য ধইরা বাংলার জনগনকে জেলে ভরার সুখস্বপ্নে উনি বিভোর হয়ে আছেন, খবর মতিকন্ঠের.
আমি আপনার দেড়-দুইশ মাইল দুরের প্রতিবেশী, থাকি LYON এ. আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন আইন হয়েছে ইঞ্জিনিয়ারিং মাস্টার্সে ২য় বর্ষে ইন্টার্নশিপ শুরুর আগে সবার আগে সবাইকে ইংরেজি বিষয়ের উপর পরীক্ষা দিতে হবে; তাতে বি ২ না পেলে সে আর ইন্টার্নশিপ এ জেতে পারবে না . তার মানে তার ডিগ্রী পাওয়াও হবে না. এইখান এখন অনেক কোর্স ইংরেজিতে অফার করা হচ্ছে. এমনকি কোর কোর্স পর্যন্ত. বাধ্য হয়ে ইংরেজি শিখতে হচ্ছে সবাইকে.
আমার ধারণা তখন পাবলিক ফাটিয়ে পিডিয়েফ বই পড়বে। আর জব্বার কাগুকে হিসাব থেকে দয়া করে বাদ দিন। কাগুর জন্য ইনসুলিনের টাকা আমরা গামছা দিয়ে গলায় হারমোনিয়াম বেঁধে রাস্তাঘাটে গান গেয়ে তুলবো।
গ্লোবালাইজেশনের বাংলা বিশ্বায়ন। মুঠোফোন শব্দটা খারাপ কীসে? জার্মানে বলে হ্যাণ্ডি, সেটার মানেও কাছাকাছি।
বিসমিল্লাহ থেকে শুরু করার কাজটা আমাদের শিক্ষাবিদেরা কিছুটা করে রেখেছেন। বাকি কাজ আমাদের এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। ডরাইলেই ডর ...
হাফিজ ভাই, আপনারা একটা জিনিস সবসময় ভুল বোঝেন। অনুবাদ মানে প্রত্যেকটা শব্দকে ধরে ধরে বাংলা করা না। বাংলায় অনুবাদ করতে হলে 'মোবাইল'কে মুঠোফোন বলতেই হবে এমন কোন কথা নেই। পরিভাষার অনুবাদ জরুরী নয়। মাধ্যমিক, উচ্চ-মাধ্যমিকের বইয়ে অক্সিজেনকে অক্সিজেনই বলা হয়, সেটার বাংলা পরিভাষা অম্লজান বলা হয় না। আপনারা অনুবাদের সমস্যা দেখাতে গিয়ে এইসব 'কগনিটিভ', 'মোবাইল' এসব পরিভাষা আনতে হয় কেন?
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
আমি তো জানতাম বিজ্ঞানের ভাষা হচ্ছে গণিত
জীবানুজ্ঞানী না মাইন্ড খায়া যায় আবার
~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~
সেইতো, কয়দিন আগে হর আর লবের ইংরাজী শিখলাম, আজকা দেখি আর মনে নাই, নাই মানে এক্কেরে গায়েব। ক্যাম্নে কি!!
হ! কতবার যে শিখলাম আর ভুল্লাম। denominator, এইটা উপরে যায় না নিচে সেইটাই নিয়ে ব্যাপক সংশয়ে থাকি।
এইবার বলেন সমদ্বিবাহু ত্রিভূজের ইংরাজি কি?
~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~
আমার এক বন্ধুর ভাইকে তার প্রাইভেট টিউটর পড়াচ্ছিল "এইটা হইলো হর। মনে রাখবা দুধের "হর" উপ্রে থাকে আর অঙ্কের "হর" নিচে থাকে"।
আশা করি এইবার আর ভুলবেন না
২০০৭ সালে জেনেভাতে এক মেডিকেল স্টুডেন্টের সাথে পরিচয় হয়েছিল; আমি তখন সদ্য মেডিকেল পাশ করে ঢাকার এক হাসপাতালে ইন্টার্ন করছি। স্বভাবতই ওদের মেডিকেল শিক্ষা নিয়ে অনেক কথা হয়েছিল। জেনে আশ্চর্য হয়েছিলাম যে মেডিকেলের সব বই ওরা নিজ নিজ মাতৃভাষাতেই (ফ্রেঞ্চ অথবা জার্মান) পড়ে। পরবর্তিতে পেশাগত প্রয়োজনে বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ড, ভিয়েতনাম, চীন, জাপান, ইরানের মেডিকেল ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে পরিচয় হলে সেক্ষেত্রেও দেখেছি একই চিত্র। মাতৃভাষা ছাড়া অন্য কোন ভাষাকে যারা বিজ্ঞান বা অন্য যে কোন সৃষ্টিশীলতার নিয়ামক মনে করে তাদের দাসমনোবৃত্তিকে করুণামিশ্রিত ঘৃণা ছাড়া আর কিছুই দেয়া যায়না।
আমার মনে হয় যে ভাষায় মানুষ চিন্তা করতে পারে বিজ্ঞান সে ভাষাতেই শেখা উচিৎ। বিজ্ঞানের বই শুধু পড়লে তো চলবে না, পড়ে বুঝতে তো হবে! আমি ইন্টারমিডিয়েট পড়ার সময় আমার বাবা পশ্চিমবঙ্গ থেকে কিছু বিজ্ঞানের পাঠ্যবই এনে দিয়েছিলেন; বইগুলো ইংরেজিতে ছিলো। আমি পরে বুঝতে পেরেছি যে ওই পাঠ্যবই গুলো মানে অনেক উন্নত হলেও আমার জন্য খুব একটা কাজের ছিলো না, কারণ আমি চিন্তা করি বাংলায়। গতিবিদ্যার সাধারণ ব্যাপারগুলো যখন নিজের মাথার ভেতরে নিজের সাথে কথা বলে বলে বুঝতে পারি, তখন সেটা করি বাংলায়। ইংরেজি পাঠ্যবই পড়ে ওকাজ করতে গেলে আমাকে প্রথমে বইয়ে যা পড়ছি তা নিজে অনুবাদ করতে হবে আর সেই অনুবাদকে মাথায় নিয়ে খেলা করতে হবে- খামাখা, যাকে বলে, ত্যানা প্যাঁচানো।
বিজ্ঞানের ভাষা তো গণিত। গণিতে যে যত বেশি ভালো বিজ্ঞান শেখা তার জন্য ততবেশি সহজ।
বিজ্ঞান শেখার জন্য মাতৃভাষার বিকল্প নেই। সে হিসাবে বাংলাদেশে জন্মে-বড় হওয়া একটি শিশু/কিশোর/দামড়ার জন্য বাংলায় বিজ্ঞান শেখার কোন বিকল্প নেই। আজকাল অবশ্য অনেক "গ্যানি লুক" আংরেজি, ফরাসী, জম্মন ভাষায় 'গ্যানের পাদ' দেয়ার কথা বলেন।
নতুন মন্তব্য করুন