ধর্মপ্রচার নয়, বিভিন্ন ধর্মমত সম্পর্কে যৎসামান্য জানার প্রচেষ্টা মাত্র।
পারসীক ধর্মের আদি নাম 'মজদা য়স্ন'।
জরথুস্ত্রের জন্ম বিষয়ে সুনির্দিষ্ট স্থান এবং সময়ের নির্দেশ পাওয়া যায়না। তাঁর জন্মকাল, স্থান এবং দর্শন নিয়ে ঐতিহাসিকেরা নানা মত পোষণ করেছেন। কারও কারও মতে তাঁর জন্ম ৪০০০ খ্রীষ্ট পূর্বাব্দে। সম্ভবত এটি অতিশয়োক্তি।
আধুনিক কালে ঐতিহাসিকগণ জরথুস্ত্রের সময়কাল নির্ধারন করেছেন, ১২০০ খ্রীষ্ট পূর্বাব্দ থেকে ৮০০ খ্রীষ্ট পূর্বাব্দের মধ্যে।
অনেকের মতে জরথুস্ত্রের জন্ম, বৈদিক 'বল্হীক' (প্রাচীন ব্যাকট্রা), বর্তমান 'বলখ', আফগানিস্তানের উত্তরে আমু দরীয়ার তীরে অবস্থিত, অতীতে পারস্য সাম্রাজ্যের অনর্ভূক্ত ছিল। পারস্যের অনেক গোত্রই জরথুস্ত্রকে নিজেদের গোত্রের বলে দাবী করে।
কোন কোন সূত্র থেকে জানা যায় তাঁর পিতার নাম ছিল, 'পুরুষ্যাসম্প' এবং মাতার নাম 'দুগ্ধ'। তাঁর গোত্রের নাম ছিল 'স্পিতামা'
জরথুস্ত্রের প্রচারিত দর্শন বা ধর্মমত ছিল একেশ্বরবাদী বা একত্ববাদী। তাঁর সময়ে প্রচলিত 'মিথ্রা' ধারনা বা ধর্মমত যা কিনা বেদে 'মিত্র' ধারনা হিসাবে পাওয়া যায়। এই বিধান মতে 'ইন্দ্র' এবং 'বরুন' উভয়ই সম মর্যাদায় পুজিত হতেন। প্রথানুসারে পশু(ষন্ড বা ষাঁড়) বলী দেওয়া হত, এবং 'হাওমা' নামক এক ধরনের মৃদু নেশা জাতীয় দ্রব্য পান করা হত। বেদে এই 'হাওমা'কে 'সোমরস' হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ধারনা ছিল দেবতার উদ্দেশ্যে বলীকৃত পশু বা ষাঁড়ের পুন্য রক্তে ভূমি উর্বরতা লাভ করে।
জরথুস্ত্র এই প্রথার বিরোধিতা করেছিলেন। তিনি একেশ্বরের ধারনা প্রচার করেন। তিনি কখনই নিজেকে প্রভু দ্বারা প্রেরিত কোন দূত হিসাবে নিজেকে দাবী করেননি। এমনকি তাঁর প্রচারিত বানীও প্রভুর নিকট হতে প্রাপ্ত, এমন কথাও তিনি বলেননি। তিনি তাঁর জ্ঞান ও শুভ চিন্তা থেকেই প্রাপ্ত দর্শন মানুষের মধ্যে প্রচার করেছেন।
জরথুস্ত্র, মানুষের ধর্মাচরণের জন্য সুনির্দিষ্ট কোন ক্রিয়া-কর্ম বা আচার-অনুষ্ঠানের কথা বলেননি। একারনে তাঁর প্রচারিত মতকে প্রচলিত অর্থে ধর্মমত না বলে মানব মুক্তির দর্শন বলা যেতে পারে।
৹ দাস প্রথাকে তিনি নিরুৎসাহিত করেছেন। তিনি প্রচলিত শ্রেণীপ্রথার বিরোধিতা করেছিলেন।
৹ জরথুস্ত্র, নর-নারীর সমতা বিধানের কথা বলতেন।
৹ তাঁর উপদেশের মধ্যে আরও ছিল, ভূমি, বায়ু, পানি ও অগ্নিকে পরিশুদ্ধ রাখতে হবে।
৹ অলসতা বর্জন করতে হবে। অপরের শ্রমলব্ধ ফলের উপর অধিকারকে তিনি নিরুৎসাহিত করতেন।
৹ তিনি বলতেন, সকলকে স্ব স্ব প্ররিশ্রমলব্ধ ফলের উপর নির্ভরশীল থাকতে হবে।
৹ কোন রকম উপাসনালয় বা দেবালয় প্রতিষ্ঠাকে তিনি চরমভাবে বিরোধিতা করেছেন।
৹ তিনি অলৌকিকের (যাদুবিদ্যা) ধারনাকেও অস্বীকার করেছেন।
৹ তিনি পশুর প্রতি কোন রকম হিংস্রতাকে প্রচন্ড অপরাধ হিসাবে চিহ্নিত করেছেন।
ধারনা করা হয় তাঁর সময়ে জরথুস্ত্র পারস্যের একজন জ্ঞানী পুরোহিত ছিলেন। তাঁর রচিত 'গাথা'য় ১৭টি স্তোত্রগীত আছে।
তিনি বলেন যে, 'আহুর মাজদা' বা 'অসুর মেধস' একমাত্র সৃষ্টিকর্তা, শক্তি ও জ্ঞানময় ঈশ্বর। সমস্ত প্রাকৃতিক শক্তি ও বস্তু তাঁরই অধীন। 'আহুর মাজদা'কে জরথু্স্ত্র আলোকিত শক্তি রূপে চিহ্নিত করেছেন। তিনি মানুষকে তাদের অন্তরকে আলোকিত করতে বলেছেন।
আলোক এবং অগ্নিকে তিনি মনে করতেন পরিচ্ছন্ন, বিষ্ময়কর এমন বস্তু যা কখনই দুষিত বা অবিশুদ্ধ করা সম্ভব নয় তাই তিনি একে 'আহুর মাজদা'র প্রতীক হিসাবে উল্লেখ করেছেন।
এই বিশ্বব্রহ্মান্ডে সমস্ত কর্মের মাঝে দুটি ধারার নির্দেশ পাওয়া যায়। (১) 'স্পেন্ত মিনু' বা শুভ দিক, (২) 'এঙ্কেরহ মিনু' বা অশুভ দিক। এই দুটি ধারার চালিকা শক্তি হচ্ছে (১) 'আহুর মাজদা' (শুভ শক্তি) ও (২) 'অঙ্গর মইন্যু' (অশুভ শক্তি)।
জরথুস্ত্রের মতবাদে একটি দ্বৈতনীতির অস্তিত্ব বর্তমান। সেখানে শুভ ও অশুভের পরিপুর্ণ পার্থক্যের অস্তিত্ব বিদ্যমান। এর মাঝে দুটি আন্তসংযোজিত পথের নির্দেশ পাওয়া যায়।
(১) মহাজাগতিক দ্বৈতনীতি:
এই বিশ্বব্রহ্মান্ডে প্রতিনিয়ত 'আহুর মাজদা' (আলোকিত শক্তি)র সাথে 'অঙ্গর মইন্যু' (অশুভ শক্তি)র লড়াই চলমান। যদিও 'অঙ্গর মইন্যু', 'আহুর মাজদা'র পর্যাপ্ত প্রতিপক্ষ নয়। তথাপিও 'অঙ্গর মইন্যু' তার বিনাশকারী শক্তি প্রয়োগে 'আহুর মাজদা'র সৃষ্টিশীলতাকে প্রতিহতের চেষ্টায় রত। 'আহুর মাজদা' তাঁর সৃষ্টিশীল শক্তি দ্বারা একটি পবিত্র বিশ্ব সৃষ্টি করেছেন, আর 'অঙ্গর মইন্যু', বার্ধক্য, অসুস্থতা, দুর্ভিক্ষ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, মৃত্যু প্রভিতির দ্বারা প্রতিনিয়ত একে অপবিত্র করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। এই মহাজাগতিক দ্বৈতনীতির কারনে আমরা জীবন-মৃত্যু, দিবা-রাত্রি,শুভ-অশুভের দেখা পাই।
(২) মনোজাগতিক দ্বৈতনীতি:
এই নীতি মানবজাতির মননে শুভ-অশুভের যে বিভেদ তাকেই নির্দেশ করে। 'আহুর মাজদা' এই জ্ঞানময় ঈশ্বর মানুষকে মুক্তচিন্তা ও ইচ্ছাশক্তি দিয়েছেন। তাই মানুষকেই নির্ধারণ করতে হবে সে কি সেই 'দ্রূজ' (দুষ্ট)এর পথ অনুসরন করবে যা তাকে অতীব দুর্বিপাকের মধ্য দিয়ে পরিশেষে নরকের পথে নিয়ে যাবে ? নাকি সে 'আশা' (সত্য)এর পথ অনুসরণ করবে যা তাকে অনাবিল শান্তি ও চিরস্থায়ী স্বর্গের পথে নিয়ে যাবে ? যখন সমগ্র মনুষ্যকূল 'আহুর মাদজা'র পথ বেছে নেবে, তাঁর সহায়ক শক্তিতে পরিনত হবে তখন 'অঙ্গর মইন্যু' সেই অশুভ শক্তি অবশেষে পরাজিত হবে এবং এই পৃথিবীই স্বর্গে পরিণত হবে।
এখানে প্রাসঙ্গিক ভাবে একটি বিষয়ের উল্লেখ করতে চাই। ২০০০ খ্রীষ্ট পূর্বাব্দের কাছাকাছি কোন এক সময়ে আর্যদের কয়েকটি গোত্র একত্রিত হয়ে 'ইন্দ্র' নামক এক সেনানায়কের নেতৃত্বে পরশুজন ও নিম্নমাদ্রজনের উপর আক্রমন করে তাদের অনেক পুরুষ এবং শিশুদেরকে নির্মমভাবে হত্যা করে এবং রমনীগণকে তাদের অধীন করে নেয়।
কয়েক শতাব্দি পরে এই 'ইন্দ্র' দেবতা হিসাবে পূজিত হতে থাকে।
অনেক পার্শব ও নিম্নমাদ্র নরনারী প্রান বাঁচিয়ে বক্ষু উপত্যকা (তাজিকিস্তান) ছেড়ে পশ্চিম দিকে পালিয়ে যায়। তাদের বংশধরেরা পরবর্তিতে দীর্ঘকাল সেখানে বসবাস করায় পার্শব (পার্সিয়ান বা ইরানী) এবং মাদ্র (মিডিয়ান) নামে পরিচিতি লাভ করে। এদের পূর্বপুরুষের উপর 'ইন্দ্র' এর নেতৃত্বে যে অত্যাচার হয়েছিল তা তারা কখনই ভোলেনি।
ধারনা করা হয় জরথুস্ত্র তাদেরই বংশধর ছিলেন, এবং সে কারনেই তিনি 'ইন্দ্র'কে অস্বীকার করেছিলেন।, এবং নতুন পথের সন্ধান করেছিলেন।
১৮০০ খ্রীষ্ট পূর্বাব্দের কাছাকাছি সময়ে বক্ষু উপত্যকা (তাজিকিস্তান) থেকে আগত 'অঙ্গিরা' নামক একজন আর্য ঋষি, তক্ষশিলায় (পশ্চিম আফগানিস্তান) তাঁর নিজ গৃহে জ্ঞানালয় প্রতিষ্ঠা করে শিক্ষার্থীদের মাঝে আর্যদের অতীত ঐতিহ্য, আচারবিধি এবং আর্যরক্তের বিশুদ্ধতা বজায় রাখার জন্য বিভিন্ন বিষয়ে জ্ঞান দান করতেন। সম্ভবত তাঁর নাম থেকেই 'অঙ্গর মইন্যু' বা অশুভশক্তি ধারনাটি নেওয়া হয়েছে।
ঋষি অঙ্গিরা ছিলেন দেবপূজারীদের গুরু।
উল্লেখযোগ্য আরও একটি বিষয় হল, জরথুস্ত্রের গোত্র 'স্পিতামা' সম্পর্কে অথর্ববেদের 'ভার্গব সংহিতা'য় অসুরপুজারীদের গুরু শুক্রাচার্যের গোত্রকে 'স্পিতামা' হিসাবেই উল্লেখ করা হয়েছে।
তাই বলে আমি কিন্তু জরথুস্ত্রের শুভ চিন্তা ও মানুষের মঙ্গল কামনার বিষয়টিকে খাটো করে দেখছিনা।
জরথুস্ত্র বলেছেন, যাঁরা সৎপথে চলবেন তাঁদের ছয়টি আধ্যাত্মিক আদর্শ অবলম্বন করতে হবে। এগুলি হল, ৹ শ্রেষ্ঠ মনন, ৹ সত্য বা সততা, ৹ দৈবশক্তি, ৹ ভক্তি অর্থাৎ ঈশ্বরে অনুরাগ, ৹ পরিপুর্ণতা ও ৹ অমৃতত্ব।
মানুষ এরই সাধনা করবে এবং পালন করবে তিনটি নীতি, (১) শুভ মনন, (২) শুভ কথন, (৩) শুভ কর্ম। এই আদর্শে জীবন যাপন করলে মৃত্যুর পরে তাঁর আত্মা স্বর্গে যাবে আর অন্যথায় ভোগ করতে হবে নরকের শাস্তি। তিনি বলেন, মানুষের আত্মাকে একটি সেতুর উপর দিয়ে ঈশ্বরের বিচারের জন্য যেতে হবে।
জরথুস্ত্র ছিলেন দ্বৈতবাদী। প্রাকৃত ও আধ্যাত্মিক জগতের দুটি মূল কারন তিনি স্বীকার করেছিলেন। মন, বাক ও কর্ম এই তিনের উপর তাঁর ধর্ম প্রতিষ্ঠিত।
তাঁর সময়ে পরশুপুরী (পেশোয়ারের বৈদিক নাম), মাদ্র (মিডিয়া), পৃথু (পার্থিয়া), কুরুশ্রাভন (খোরাসান), বল্হীক (বলখ) প্রভৃতি অঞ্চলে তাঁর দর্শন ও ধর্মমত প্রসার লাভ করেছিল।
উমাইয়া খিলাফতের সময় আরবদের পারস্য অভিযান ও তাদের নিষ্ঠুরতার কারনে বহু পারসী ধর্মাবলম্বী ভারতে অভিবাসিত হন। কিছু সংখ্যক ব্যক্তি জিজিয়া কর প্রদানের মাধ্যমে মুসলিম খিলাফতে বসবাসের অনুমতি পান।
সে সময়ে পারসী ধর্মালম্বীরা ভারতের গুজরাটে চলে এসেছিলেন। বর্তমানে ভারতে প্রায় সত্তর হাজার পারসী আছেন, এঁদের প্রায় অর্ধেক জনগোষ্ঠীই মুম্বাইতে থাকেন।
জরথুস্ত্র রচিত গাথাসমূহ 'য়স্ন' নামক পুস্তকে যা কিনা আদি আবেস্তায় সংযোজিত এবং পরবর্তিতে অন্যান্য অথর্বান পুরোহিতদের রচিত উপদেশাবলী এবং রীতিসমূহ নব আবেস্তা একত্রিত ভাবে আবেস্তা নামকরনে সংকলিত হয়, তাঁর মৃত্যুর অনেক পরে।
আবেস্তা হচ্ছে ৪টি পুস্তকের সমন্বিত রূপ, (১) য়স্ন, (২) উস্ত, (৩) বিসপরত এবং (৪) বিদৈবদাত।
জরথুস্ত্রের মৃত্যুর পর সুবিধাবাদী ধর্মব্যাবসায়ী পুরোহিত শ্রেণী জরথুস্ত্রের দর্শনের মূল চেতনা থেকে সরে আসেন এবং তাঁরা প্রচার করেন যে, জরথুস্ত্র অগ্নিকে উপাসনা করতে বলেছেন, তিনি কিছু আচার-অনুষ্ঠানের বিধানও দিয়ে গেছেন। এই পুরোহিতেরা জরথুস্ত্রকে অগ্নি উপাসক হিসাবে উপস্থাপন করেছেন।
যদিও জরথুস্ত্র এই ধর্মাবলম্বীদের কোন আচার-অনুষ্ঠানের নির্দেশ দেননি তথাপিও পরবর্তীকালে নিজেদের ধর্ম-পরিচিতি রক্ষার জন্য কিছু সংখ্যক জরথুস্ত্রবাদী 'মবড' (পুরোহিত) ও বিদগ্ধজনেরা সম্মিলিতভাবে কিছু ক্রিয়া-কর্মের প্রচলন করেন।
নভজোত বা সেদরেহ পুসি:
পারসী ছেলেমেয়েদের সাত বছর বয়স হলে তাদের দীক্ষা দেওয়া হয়। এই দীক্ষানুষ্ঠানে তাদেরকে পুতপবিত্র লম্বা সাদা কোর্তা এবং কোমর বন্ধনী পরানো হয়। স্বাবালকত্ব প্রাপ্তির পূর্বেই (৭ - ১২ বছর) তাদের এই দীক্ষা গ্রহণ করার বিধি।
উৎসব:
'খোরদাদসাল' (জরথুস্ত্রের জন্মদিন), যদিও জরথুস্ত্রের সুনির্দিষ্ট কোন জন্ম তারিখ পাওয়া যায়না, তাই মনোনিত একটি তারিখেই তাঁরা ফায়ার টেম্পল এ সমবেত হয়ে প্রার্থনা শেষে ভোজ উৎসব করে।
এ ছাড়া আরও কিছু উৎসবও তাঁরা পালন করে। যেমন, মধ্য-বসন্ত, মধ্য-গ্রীষ্ম, শীতকাল, শস্য সংগ্রহ, পশুপাল গৃহে প্রত্যাবর্তন, নওরোজ ইত্যাদি উৎসবে বিশেষ ভোজের আয়োজন থাকে।
বিবাহ:
জরথুস্ত্রবাদীদের বিবাহে দুটি পর্ব আছে। প্রথম পর্বে বর, কনে এবং তাঁদের অভিভাবকগণ একটি বিবাহ চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করেন। দ্বিতীয় পর্বটি পরিবারভেদে তিন থেকে সাত দিন পর্যন্ত্য চলে। এ সময়ে প্রচুর ভোজের আয়োজন থাকে। এই পর্বে বিবাহের আরও কিছু রীতি পালিত হয়। এর একটি এরকম, বর-কনের মাথার উপর ওড়না ধরে রাখা হয় এবং তাদের হাত একত্রিত করে হাতের মাঝে চিনির দলা দিয়ে ঘষে দেওয়া হয় যাতে তাঁদের দাম্পত্য জীবন মধুর হয়। বিবাহ অনুষ্ঠানে বর-কনেকে সাদা পোশাক পরানো হয়। জরথুস্ত্রবাদীরা সাদা রংকে পবিত্রতার প্রতিক মনে করে।
প্রার্থনা:
জরথুস্ত্রবাদীরা একদিনে পাঁচ বার প্রার্থনা করে।
(১) হাওয়ান (সূর্যোদয় থেকে দুপুরের মাঝে)।
(২) রাপিথিউইন (দুপুর থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত্য)।
(৩) উজেরিন (বেলা ৩টা থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত্য)।
(৪) আইউইশরুথ্রেম(সূর্যাস্ত থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত্য্)।
(৫) উষাহিন (মধ্যরাত থেকে সূর্যোদয় পর্যন্ত্য)।
মৃতদেহ সৎকার:
জরথুস্ত্রবাদীরা মৃতদেহকে অপবিত্র মনে করেন। তাঁরা, পাহাড় চুড়ায় একটি বড়সড় আধার নির্মান করে সেই আধারের মাঝে পাথর বসিয়ে তার উপর মৃতদেহটি রেখে আসেন। পাহাড় চুড়ার এই আধারটিকে 'টাওয়ার অব সাইলেন্স' ('ডখমা') বলা হয়। পরবর্তীতে মৃতদেহটি শকুনের খাবারে পরিনত হয়। তৃতীয় দিনে হাড়গোড়গুলো সংগ্রহ করে অন্যত্র কয়লা ও বালির মিশ্রনের মধ্যে রেখে দেওয়া হয়। মনে করা হয়, এই পদ্ধতি অবলম্বন করলে ভূমি বা বায়ু দুষিত হবেনা। পারসী ধর্মে পরিবেশ দুষণকে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।
মৃতদেহ সৎকারের জন্য মুম্বাইতে ৫৭ একর অরণ্য-উদ্যানের মাঝে একস্থানে একটি বিরাটাকার 'ডখমা' বা টাওয়ার নির্মান করা হয়েছে।
হ্যামিস্ট্যাগান:
পারসী ধর্মমতানুসারে মৃত ব্যক্তির আত্মা বিচার দিবসের অপেক্ষায় এই হ্যামিষ্ট্যাগানে অবস্থান করে।
style="font-weight:bold">এই লেখায় আমার বিশ্লেষণ মনপুত না হলে আমায় ক্ষমা করবেন।
চলবে
ধর্মসার- (১) লাও-ৎসু ও 'তাও'
ধর্মসার- (১) লাও-ৎসু ও 'তাও' এর বাকি অংশ
ধর্মসার- (২) কনফুসিয়াস ও তাঁর ধর্ম
ধর্মসার- (৩) বর্ধমান মহাবীর ও জৈনধর্ম
ঝাঁপি খুলে পুরাতন একটি নোটবই পেলুম। তখনকার সময়ে আমাদের দেশে ইন্টারনেটের সুবিধা ছিলনা। বই-পুস্তক ঘেঁটেই যা কিছু পাওয়া। কখন, কোথায়, কিভাবে এগুলো পেয়েছিলাম তা আজ আর মনে করতে পারিনা তাই সূত্র জানাতে পারবোনা। ক্ষমা করবেন।
প্রৌঢ়ভাবনা
মন্তব্য
এই পর্বটাও অনেক ভালো হয়েছে। কিছু কিছু বিশ্লেষণ ও ব্যাখ্যা যুক্ত হওয়াতে আরো ভালো হয়েছে এই পর্বটি। সিরিজ চলুক নিয়মিত , সেই সাথে দ্রুত হাচলত্ব লাভ করুন এই কামনা করি। তবে হাচলত্ব লাভের জন্যে আপনাকে অন্যদের লেখাতেও গঠনমূলক মন্তব্য করতে হবে। শুধু নিজের লেখায় মন্তব্য করাটাকে ব্লগ জগতে ভালো চোখে দেখা হয় না।
ধন্যবাদ, আপনার সহযোগিতা ও উপদেশ আমার জন্য যথেষ্ট সহায়ক হয়েছে। আশা করছি আগামীতেও প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিয়ে সহায়তা করবেন।
ভালো লাগলো
ধন্যবাদ,ভাললাগা জানাবার জন্য। আপনাদের ভালাগাইতো আমার প্রেরনা।
জটিল। আই লাইক!
-মেফিস্টো
ধন্যবাদ,আপনার মন্তব্যটিও আমার পছন্দ হয়েছে।
আপনার এই সিরিজের আমি একজন নিয়মিত পাঠক। এ পর্বটা আগের পর্বগুলোর চেয়ে বেশ শাঁসালো হয়েছে।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
অনবধানতাবশত এই সিরিজের একটি লেখার লিঙ্ক বাদ পড়ে গেছে, সটা সংযোজন করলাম।
ধর্মসার- (২) কনফুসিয়াস ও তাঁর ধর্ম
ধন্যবাদ আপনাকে, সবসময় সাথে থেকে উৎসাহ যোগাবার জন্য।
ভালো লেগেছে।
ভালো লেগেছে।
ধন্যবাদ।
বরাবরের মতো গিলে ফেললাম। সত্যি কথা বলতে এই বিষয়ে আমার একেবারেই আগ্রহ নেই। তবুও আপনি এত্ত খাটনি করে লেখা গুলো চালাচ্ছেন তাতে আপনাকে কুর্ণিশ জানাতেই হচ্ছে। আর পড়ার পর মনে হচ্ছে ক্ষতি তো হয়নি পড়ে ।
অনেক ভালো থাকুন।
ধন্যবাদ, উৎসাহ যোগাবার জন্য।
ভাল লাগল ভাই। তবে সূত্র থাকলে আরও ভাল হত।
ধন্যবাদ, ভাললাগা জানাবার জন্য।
এই সিরিজটা সবসময় ভাল লাগে পড়তে
শুরু থেকে উৎসাহ যোগাবার জন্য ।
আপনার এই সিরিজটা বেশ ভাল লাগে। এই পর্বটাও বেশ ভাল হয়েছে।
-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
ধন্যবাদ। উৎসাহিত বোধ করছি।
ভালো লাগলো।
একটা বিষয়। ভারতীয় উপমহাদেশে জরাথ্রুসটবাদকে সম্ভবত পার্সি ধর্ম হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। পার্সি ধর্মের বেশ কিছু শাখা/ মতবাদ আছে। তাদের কেউ কেউ অগ্নি উপাসক বলে জানি। ইন্দিরা গান্ধীর স্বামী ফিরোজ গান্ধী পার্সি ছিলেন। এবিষয়ে আরও কিছু আপনার ঝুলিতে থাকলে জানার অপেক্ষায় রইলাম।
-------------------------
পথেই আমার পথ হারিয়ে
চালচুলোহীন ছন্নছাড়া ঘুরছি ভীষণ...
আরবদের পারস্য অভিযানের কালে অনেক পার্সী ভারতের গুজরাটে চলে এসেছিলেন। মুম্বাইতে বেশ কিছু পার্সী আছে। এরা সকলেই অগ্নিউপাসক। জরথুসত্র এই ধর্মালম্বীদের কোন আচার-অনুষ্ঠান পালনর নির্দেশ দেননি। তাঁর মৃত্যুর অনেক পরে কিছু ধর্মব্যবসায়ী পুরোহিত নানা প্রকার ক্রিয়া-কর্ম ও রীতি পালনের কথা বলেন। সেই হিসাবে পার্সী ধর্মাবলম্বী ছেলেমেয়েদের সাত বছর বয়স হলেই দীক্ষা দেওয়া হয়। তাদেরকে পূতপবিত্র চাদর ও কোমরবন্ধনী পরানো হয়। এটি একটি প্রতীকি বিষয়।
ধন্যবাদ আপনাকে, সবসময় সাথে থেকে উৎসাহ দেবার জন্য।
জরথুস্ত্রের দর্শন সম্পর্কে আমি অবগত নই বললেই চলে।
এই পোস্টের বক্তব্যগুলো যদি জরথুস্ত্রের দর্শনের সারাৎসার হয়, তাহলে এই দর্শনে বেশ কিছু সবিরোধিতা রয়েছে বলেই মনে হয়। যেমন, অলৌকিকতায় বিশ্বাসী না হলে আত্মাকে সেতুর উপর দিয়ে ঈশ্বরের বিচারের সম্মুখীন হবার ধারণা দার্শনিক স্ববিরোধিতা মনে হয়।
এছাড়া বেদের কাল ও বিষয় বিবেচনায় নিলে যে সময়ে বেদ সংরক্ষিত হয় অর্থাৎ উপনিষদের যুগে, সে সময়কার ব্রাহ্মণ্যবাদীরাই আসলে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি ও দানা বাঁধা দর্শনকে কৌশলে বেদের শেষে ঢুকিয়ে দিয়েছেন অর্বাচীন দশম মণ্ডলে। যা গোটা বেদের আবহ ও বক্তব্যের সাথে সঙ্গতিহীন বলে মনে হয়। অথচ চতুর ব্রাহ্মণ্যবাদীরা সেই দশম মণ্ডলকে ঘিরে পরবর্তী শাস্ত্র রচনায় বেদকে ধর্মগ্রন্থ আখ্যা দিয়ে যে ধুম্রজাল সৃষ্টি করে ফেলে, তারই রেশ হিসেবে পরবর্তীকালের অমানবিক বর্ণাশ্রম প্রথায় সমাজকে ব্রাহ্মণ্যশাসনে আবদ্ধ করে ফেলে। প্রকৃতপক্ষে বেদের এই অর্বাচীন দশম মণ্ডলটাকে বাদ দিলে আনুমানিক ৭০০ খ্রীষ্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত প্রায় দেড়হাজার বছরকাল যাবৎ রচিত হতে থাকা গোটা বেদের মধ্যে কোন দর্শন বা তত্ত্ব জাতীয় আদৌ কি কিছু আছে ? প্রাচীন গোত্রকেন্দ্রিক কিছু শিকারি মানবগোষ্ঠীর শিকার উত্তর খাদ্য তৈরী ও তাকে ঘিরে সামগান জাতীয় অদ্ভুত কিছু নৃত্যগীত উল্লাসের স্বতঃস্ফূর্ত নিরীহ আবেগকে ধর্মবাণী বলে চালিয়ে দেয়ার অদ্ভুত কৌশলটা নিয়েছিলো সেকালের ব্রাহ্মণ্যবাদীরা। আদিম লিপিহীন আর্যদের তাৎক্ষণিক উচ্ছ্বাসে মুখে মুখে রচিত বেদের আদিম দুরুহ ভাষার ছন্দময় অর্থহীনতাই হয়তো চতুর ব্রাহ্মণ্যবাদীদের সুযোগ করে দিয়েছে। মনমতো অর্থ বসিয়ে মহান আধ্যাত্মিকতা আরোপের চতুরতাটা একালে এসে ধরা পড়ে যাচ্ছে ঠিকই।
ধারণা করা যায়, সমসাময়িক কালেরই ছিলেন জরথুস্ত্র। তিনি এই ভণ্ডামিটা ধরতে পেরেছিলেন বলেই সেকালের চার্বাকদের মতোই মানবিক বোধে তিনিও এর প্রতিবাদ করেছেন নিজের মতো করে। এটাই হয়তো জরথুস্ত্রবাদ। পরবর্তীকালের ধর্মবাদীরা এই বাদের উপর আধ্যাত্মিকতা আরোপ করে দর্শনটাকে এরকম স্ববিরোধী করে দিয়েছে বলে ধারণা করি (যদি এই পোস্টের টেক্সটকে ত্রুটিহীন বলে ধরে নেই) । অবশ্যই জরথুস্ত্র সম্পর্কে এটা আমার একান্তই নিজস্ব ধারণা। আগামীতে এ সম্পর্কে প্রয়োজনীয় অধ্যয়নের সুযোগ পেলে ধারণাটাকে সংশোধিত রূপ দিতে পারবো। তবে আপনার সিরিজটা কিন্তু আকর্ষণীয়। মন্তব্য না করলেও নজরে আছে ঠিকই।
অনেক ধন্যবাদ সিরিজটি চালিয়ে যাওয়ার জন্য। সাথে অভিনন্দন।
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
ধন্যবাদ। বিশ্লেষণমূলক একটি দিকনির্দেশনার জন্যে। আমি এইমাত্র আপনার 'জৈন দর্শন' বিষয়ে লেখাটির বেশ কয়েকটা পর্ব পড়লাম। অনেক নাজানা বিষয় জানলাম।
আমি কিন্তু আমার লেখাতেই লিখেছি আদি আবেস্তার য়স্ন পুস্তকের মাত্র ১৭টি স্তোস্ত্রগীত জরথুসত্র রচিত। তিনি সর্বপ্রকার আচার-অনুষ্ঠানের বিরোধী ছিলেন। এমনকি তিনি অগ্নি উপাসনাও করতে বলেননি। তাঁর মৃত্যুর পরে সুবিধাবাদী ধর্মব্যাবসায়ী পুরোহিতগণ অন্যান্য আরও তিনটি পুস্তক যা নব আবেস্তা হিসাবে চিহ্নিত, সেই সব পুস্তকে নানা প্রকার আচার, ক্রিয়া-কর্ম, রীতি ইত্যাদি জরথুসত্রের নামেই প্রচারের উদ্দেশ্যে অনর্ভূক্ত করেন।
সময়কালটা অনুমান করতে পারি, যখন সবেমাত্রই কিছু বুদ্ধিমান জ্ঞানী ব্যাক্তি বুঝতে পেরেছিলেন যে, ধর্মের নামে সাধারন মানুষের শ্রমলব্ধ ফল অন্যেরা অন্যায়ভাবে ভোগ করছে। সে সময়ে অনার্যদের সকল নগর আর্যদের দখলে এসে গেছে এবং আর্য-অনার্য গোত্রগুলো নিজেদের মধ্যে সমঝোতা করে একত্রে বসবাস শুরু করেছে। আর্যদের বিভিন্ন গোত্রের মধ্যে কলহ শুরু হয়েছে। সাধারন মানুষের মধ্যেও এধরনের ধর্মাচরণ নিয়ে সন্দেহের সৃষ্টি হচ্ছে। এই ধরুন, অসঙ্গ, দিঙনাগ, ধর্মকীর্তি প্রমুখের আবির্ভাবের কিছু পূর্বে। আমার ধারনামতে জরথুসত্র ছিলেন শুক্রাচার্যের উত্তরপুরুষ।
আর বেদের কথা বলছেন, এতো রাজানুগ্রহ লাভের আশায় তাদের স্তুতিগীত। রাজা দিবোদাসের গুণগানে শ্লোক রচনা করেছেন, বশিষ্ঠ, বিশ্বামিত্র, ভরদ্বাজ প্রমুখ ঋষিগণ (ঋক্বেদ- ৬।২৬।২, ২৫)।
যাহোক, ভুলত্রুটি থাকলে ক্ষমা করে নিবেন।
এখানে অলৌকিক বলতে মিরাকেল বা যাদুবিদ্যা বুঝাতে চেয়েছি।
ধন্যবাদ।
ব্যাপারটা খুব ঘোলাটে হয়ে গেল না?
তবে আপনার লেখা পড়েই প্রায় তিন হাজার বৎসর পূর্বে জন্ম নেয়া একজন সত্যিকারে মহাপুরুষের কথা জানতে পারলাম। জরথুসত্রের উচ্চ আদর্শ আমাকে মুগ্ধ করেছে। সবচেয়ে ভাল লেগেছে তার আলো ও অগ্নি-কেন্দ্রিক দর্শন, যেখানে উনি এ দুটোকে পরিচ্ছন্ন ও বিস্ময়কর বস্তু হিসাবে চিন্তা করেছেন যাকে কখনই দূষিত বা অবিশুদ্ধ করা যায় না।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ এমন একজন ব্যক্তিত্বকে আমাদের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়ার জন্য।
আমার যৎসামান্য জ্ঞান থেকে বলছি, ইতিহাস থেকে জানা যায়, কয়েকটি ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাভাষী গোত্র (ট্রাইব) যাদেরকে তখন আর্য বলা হত, ২০০০ খ্রীষ্ট পূর্বাব্দের কাছাকাছি সময়ে ইরানে প্রবেশ করে এবং কয়েকটি গোত্র ভারতের দিকে চলে যায়। তাজিকিস্তান থেকে পশ্চিম না বলে উত্তর-পশ্চিম বলাটাই সঠিক ছিল। ইতিহাসে প্রাচীন মিডিয়ান রাজা অজটায়সকে পাওয়া যায় খ্রীষ্ট পূর্বাব্দ ৫৮৪ থেকে খ্রীষ্ট পূর্বাব্দ ৫৪৯ পর্যন্ত্য। পারস্য সম্রাট সাইরাসের সময়কাল খ্রীষ্টপূর্ব ৫৪৯ থেকে ৫৩০ খ্রীষ্ট পূর্বাব্দ।
ধন্যবাদ, মনযোগ দিয়ে পড়ার জন্য।
যতদূর জানতাম সিন্ধু নদীর অপর তীর যেখানে " পার হয়ে " যেতে হত, সেটাকেই এপারের আর্যভাষীরা বলত " পারস্য "। আবার আর্য্য শব্দটাও অপভ্রংশ হয়ে এসেছে " আরিয়ান " থেকে। " আরিয়ান " = " ইরান "। " জেন্দ আবেস্তা "-র ভাষার সাথে বেদের ভাষার যথেষ্ঠ মিল থেকেও ধারণা করা হয় মূলত আদি ইরানীয় ও বৈদিক আর্য্যরা একই ভাষাভাষিক গোত্রের। " টাওয়ার অব সাইলেন্স " এর কথা লিখলেন না যে! দারুণ একটা লিখা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে ধন্যবাদ।
হাঁ, আপনার জানাটা অনেকটাই সঠিক। ধারনা করা হয় ঋগ্বেদের শেষাংসে জরথুসত্রের গাথা সংকলিত। আর নব-আবেস্তাকে যযুর্বেদের অংশ মনে করা হয়।
তাড়াহুড়োতে 'টাওয়ার অব সাইলেন্স'এর কথাটা একেবারেই ভুলে গিয়েছিলাম। ধন্যবাদ আপনাকে ভুলটা ধরিয়ে দেবার জন্য।
পার্সী ধর্মালম্বীরা মৃতদেহকে অপবিত্র মনে করে। সেকারনে তারা পাহাড়চুড়ায় বড় একটি আধার তৈরি করে তার ভিতর পাথর বসিয়ে সেই পাথরের উপর মৃতদেহ রেখে আসে। পরবর্তিতে মৃতদেহটি শকুনের খাবারে পরিনত হয়। তৃতীয়দিনে তারা হাড়গোড়গুলো ওখান থেকে তুলে নিয়ে অন্যত্র বালি ও কয়লার মধ্যে রেখে দেয়।
ওদের দীক্ষার বিষয়টিও এড়িয়ে গেছে।
উৎসাহ দেবার জন্য ধন্যবাদ।
লেখাটা ভালোই লাগছে। চলুক না হয়। অনেক দিন আগে এই ধর্ম নিয়ে বেশ কিছু ষড়যন্ত্র তত্ব পড়ার সুযোগ হয়েছিলো। পারস্যের জুরস্ট্রিয়ান মাঝে এই রকম একটা কথা চালু আছে যে ইসলাম ধর্মের অনেক নয়ম-কানুন নাকি এই ধর্ম থেকে নেওয়া হয়েছে ( ব্যাক্তি ভেদে ধার করা বা চুরি করা যে যেভাবে ইচ্ছা ধরে নেয় )। যেমন: স্বর্গ-নরকের ধারনা, পুনরুত্থান-শেষ বিচারের ধারনা, মিরাজ, এমনকি দৈনিক পাঁচ বার প্রার্থনা করার রীতিনীতি নাকি ওখান থেকেই নেওয়া।
/----------------------------------------------------
ওইখানে আমিও আছি, যেইখানে সূর্য উদয়
প্রিয়দেশ, পাল্টে দেবো, তুমি আর আমি বোধহয়
কমরেড, তৈরি থেকো,গায়ে মাখো আলতা বরণ
আমি তুমি, আমি তুমি, এভাবেই লক্ষ চরণ।।
আলেকজান্ডারের পারস্য অভিযানের ফলে তার অনেক সৈন্যই জরথুসত্রের দর্শনের প্রতি আকৃষ্ট হয়। পরবর্তিকালে মেসিডোনিয়া এবং গ্রীসও জরথুসত্রের দর্শনদ্বারা প্রভাবিত হয়। ধারনা করা হয় জুডাধর্ম, খ্রীষ্টধর্মও এই দর্শন দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিল।
ধন্যবাদ, বহুল আলোচিত একটি বিষয় তুলে আনার জন্য।
বিস্তারিত কথন ভাল লাগল। জরথুসত্রের নামে একটা প্রচলিত ধারণা আছে, উনি মুখে বা শরীরে গলন্ত ধাতু নিয়ে অবিকৃত থেকে অলৌকিক ক্ষমতা (জাদু) দেখাতেন, এই ব্যাপারে মতামত জানিয়েন সম্ভব হলে।
facebook
চমৎকার! অতি উপাদেয় লাগল!
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
ধন্যবাদ, উৎসাহ জাগানিয়া মন্তব্যের জন্য।
নতুন মন্তব্য করুন