খাঁচার ভিতরে পাখিদের কথা

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: শুক্র, ০৯/১২/২০১১ - ৯:০৮অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

অনেক্ষণ ধরে বসে আছি এই হাসপাতালে, একাকি। নাহ, আরো অনেক মানুষই আছে। কিন্তু আমি যোগাযোগহীন। হয়ত ভাষার জন্য, হয়তবা বয়স বা বর্ণ, অথবা আমি নিজেই। পাখি গুলো কথা বলতে থাকে। খুব সুন্দর চড়ুই এর মত দেখতে অনেক গুলো পাখি। আটকে আছে দুটো দেয়ালের মাঝখানে। এখানে আসা বৃদ্ধ রোগিদের বিনোদনের জন্য। আমিও এসেছি এক বৃদ্ধকে নিয়ে। আমার বাসার কাছেই থাকেন তিনি। আমেরিকার এই ছোট গ্রামে অল্প কয়টি বাঙালির আমরা এই দুই জন। তার স্ত্রী গেছে আরেক বাঙালির পরিবারে বেবি সিটিং করতে। তার মেয়ে অনেক দূরে এক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে। আর তিনি বাংলাদেশের সরকারি চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করে আমেরিকার গ্রিন কার্ড নিয়ে এসেছেন উন্নত জীবনের জন্য তিন বছর আগে। এখনো চাকরি খুজে বেড়ান এই বয়সেও। উন্নত জীবন যে দরকার! এরকমই একটি চাকরির জন্য কিছু টেস্ট দিতেই এখানে হাসপাতালে আসা। জানতে পারলাম চাকরিটা হলে তাকে যেতে হবে হাওয়াই দ্বীপ ছেড়ে আরো পশ্চিমে প্রশান্ত মহাসাগরের আরো গভীরে মার্শাল দ্বীপপুঞ্জে।

- এত দূরে যাবেন?

- চাকরি করলে যেতে তো হবে!

বের হওয়ার পর খিদা লাগলে আমাকে বলেন কোথাও খাব কিনা। আমাকে তিনি খাওয়াবেন। হয়ত তার বাসায় খাওয়া নেই। তাই তাকে বাইরে খেতে হবে। অথবা আমার প্রতি কৃতজ্ঞতা। আমেরিকায় এই উপকার কেই বা করে। আমি তো তার সাথে নাও আসতে পারতাম। কিন্তু আমি এত কিছু ভাবি না। আমি অনেকদিন ধরে ক্ষুধার্ত দেশ থেকে বহু দূরে এই নির্জন ছোট গ্রামে। তাই আমরা বসি ভারতিয় এক রেস্তোঁরায়। তিনি কথা বলতে থাকেন। আমি শুনতে থাকি। বিরক্তি লাগে না। কারণ ওগুলো আমিই বলতাম। দুইজন একাকি মানুষের দুপুরবেলা কাটতে থাকে। বয়সে যোজন যোজন দুরত্ব থাকা সত্বেও দুজনেই যেন এক জায়গায় এসে মিলে যাই। দুজনেরই ভাষা এক হয়ে যায়। মাঝখানে বিরতি নিয়ে আমরা আরো কিছু খাওয়া নিয়ে আসি বুফে থেকে। দুজনের পছন্দও তখন এক হয়ে যায়। আমরা টেবিলে বসে আবার গল্প করতে থাকি আর দেশ উদ্ধার করতে থাকি। বলতে থাকি, দেশের অবস্থা এখন অনেক ভাল। বিদেশে যাওয়ার কোনো দরকার নেই। আশ্চর্য আমরা দুজনেই দেশে ফিরতে থাকি।

অনন্ত
অনন্ত অ্যাট ইয়াহু ডট কম
২০১০/০৬/১২


মন্তব্য

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

চলুক

অনন্ত এর ছবি

ধন্যবাদ।

অনন্ত

নীড় সন্ধানী এর ছবি

গল্প মনে হয়নি। মনে হয়েছে অসমাপ্ত দিনলিপি.........

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

অনন্ত এর ছবি

ঠিক গল্প নয়...... তবে ছোট গল্পের ক্যাটাগরিতে পরতে পারে... ধন্যবাদ পড়ার জন্য।

অনন্ত

 মর্ত্যমানবী এর ছবি

একটুখানি বিষাদ ছুঁলো। আরেকটু বড় করতে পারতেন।

কল্যাণ এর ছবি

মন খারাপ

_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।