নাচুঁনে বুড়ি আমি আগেই ছিলাম। বহু কষ্টে নিজেকে গৃহবন্দী করে রেখেছিলাম গত ৪টা বছর। কিন্তু তারেক অণু-র ঢোলের বাড়িতে আর সাম্লাতে পারলাম না নিজেকে। তাই তেহজীব যখন বলল যে বলেন কই যাবেন, সব খরচ আমার তখন আর না করতে পারলাম না। অনেক বার ঠিক করার পরেও বিরিশিরি যাওয়া হয়ে উঠেনি এর আগে। তাই গত ১ ডিসেম্বর ২০১১ সকাল বেলা রওনা হয়ে গেলাম ক্যামেরা হাতে। এটি সেই এলোমেলো ভ্রমণেরই গল্প।
সকাল সাড়ে ৭টার দিকে তেহজীব আমাকে অটো-রিক্সায় তুলে নিলো আদাবর থানার সামনে থেকে। গন্তব্য মহাখালী বাসস্ট্যান্ড। ঢাকা টু বিরিশিরি-র গাড়ি বেশ কয়েকটি পেলাম। নাস্তা করে নিয়ে ৮টা ৪৫মিনিটে জারা পরিবহণ এ উঠে পড়লাম। বাসটি দেখতে যেমনই হোক, সত্যি ভালো টানে। ভাড়া ২০০ টাকা করে।
বিরিশিরির আগেই, শ্যামগঞ্জ মোড়ের বেশ কিছুটা পরে আমাদের বাস হটাৎ করেই থেমে গেল। জানা গেল সামনে একটি গাড়ি নষ্ট হয়ে রাস্তা বন্ধ। নেমে সামনে এগিয়ে যা দেখলাম তাতে মনে হলনা এক দুই ঘন্টায় কিছু উপায় হবে।
কিছুটা সামনেই একটা বাজার আছে জানতে পেরে হেঁটেই রওনা দিলাম। সেখানে পেলাম একটা লছিমন এর দেখা। সেটায় করে পূর্বধলা বাজার এ গিয়ে একটা অটো-রিক্সা ঠিক করে রওনা দিলাম সুসং – দুর্গাপুর। অটো-রিক্সা সামনে আর দুজন তুলবে, পিছনে আমরা দুজন। আমাদের কাছ থেকে নেবে ২০০ টাকা। আমাদের ছিল খাওয়ার শুরু এখান থেকেই। একটু পরেই আবিষ্কার করলাম আসলে জনপ্রতি ভাড়া ৩০ টাকা করে। পুরাই ভোঁদাই হয়ে গেলাম।
ওয়াই এম সি এ-তে ফোন এ বুকিং দেয়া ছিল। বিরিশিরি বাজার এই অবস্থিত এটি। দুজনের জন্য রুমের ভাড়া ৩৫০ টাকা প্রতিদিন। রাস্তায় দেরি হওয়ায় বিরিশিরি পৌছুলাম ৩টা ৩০ এ। পূর্বধলার পর থেকে রাস্তার যে অবস্থা তাতে যদি কারও রোলার কোস্টার এ চরার খায়েশ থাকে তবে তা পূরণ হয়ে যাবে প্রশ্নাতিত ভাবেই।
হাতমুখ ধুয়েই বের হয়ে পড়লাম সোমেশ্বরী নদী দেখতে এবং কিছু দানাপানি খেতে। তেহজীব এর নিয়ে যাওয়া আই-প্যাড এর গুগল ম্যাপ আমাদের গাইড হিসেবে পুরো সময়টাতেই ছিল খুব বিশ্বস্ত এবং নিখুঁত।
ম্যাপ থেকেই খুঁজে পেলাম পাশেই একটা সিমেট্রি এবং নদী ও একটা লেক ও সেখানে যাওয়ার সংক্ষিপ্ত পথ।
রাতের খাবার খেয়ে ফিরে এসে শুয়ে পড়লাম, পরের দিনের প্রস্তুতি নিতে।
চলবে..
তদানিন্তন পাঁঠা
মন্তব্য
শেষ ছবিটায় চোখ লেগে আছে। এটাই কি সোমেশ্বরী নাকি ঐ যে লেকের কথা বলছিলেন সেটি? ওদিকটায় মনে হয় গারোদের কিছু গ্রামও আছে, না?
এটাই সোমেশ্বরী। জ্বী, কিছু গারো এলাকা আছে, তবে এখন আর শুধু গারোরা নেই। বাঙালিদের সাথে মিশেই আছেন তাঁরা। ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
লেখকের নাম তো দেখি বেশ ইন্টারেস্টিং!!!
ম্যালাবছর বিরিশিরি যাওয়া হয় না...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
আমাদের মডুরা বেশ রসিক। হটাৎ একদিন দেখি উনারা পাঠক এর পরিবর্তে পাঁঠা লিখেছেন নবাগতদের জন্য। তো আমিও বেশি কষ্ট করতে পারিনা। তাই আগে শুধু একটা তদানিন্তন লাগিয়ে নিলাম। সেই থেকেই আমার এই নাম।
আর বিরিশিরি? ঘুরেই আসুন না আরেকবার। আমিও না হয় আবার সুযোগটা নেব। ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
মারাত্বক লাগছে পাঠা ভাই
ধন্যবাদ গরম থুক্কু, চরম ভাই। কিন্তু আমাদের সাহিত্যিক এর খবর কী? পরেরটা কবে পাচ্ছি?
চলুক ভ্রমণ, চলুক জীবন
facebook
আপনি যে পরেছেন আমার প্যাঁচপ্যাঁচানি আমি তাতেই বর্তে গেলুম। ধন্যবাদ।
কত্তদিন পর দোপাটি ফুল দেখলাম !
পরের পর্ব দেন তাড়াতাড়ি
তাড়াতাড়িই দেব আশা করি। ধন্যবাদ সময় করে পড়া এবং মন্তব্যের জন্য।
চলুক
আপনি ভাই ইমো দাওয়া আমারে এট্টু ট্রেনিং দিবেন? ধন্যবাদ। আশা করি আপ্নারা সহযোগিতা করলে চলতে পারব।
ভালো লেগেছে ছবি গুলি। পরের পর্ব আসুক
আসিতেছে। ইমো কী দেখায়?
আপনার নামটা আমার দারুন পছন্দ হয়েছে। লেখা ভালো লেগেছে। আমি গত দুই বছর ধরে প্ল্যান করছি বিরিশিরি যাবার। আপনার লেখা পড়ে সেই প্ল্যানে আরো ঘি পড়লো।
আপনার নামটাও বেশ। সামনে আরও ঘী আসছে। যেতেই হবে।ধন্যবাদ।
দাদা, বিরিশিরি আর সোমেশ্বরী ঘুরতে মিনিমাম কয়দিন লাগে ? মানে, একদিনে ঢাকায় কি ফেরা যায়?
ফিরতে পারা উচিৎ ছিল। কিন্তু রাস্তার কারনে বড্ড রিস্ক হয়ে যায়। আরও একটা ব্যাপার, বাসেই যাওয়া উচিৎ। যে রাস্তা তাতে ছোট গাড়ি অনেক বেশি রিস্কি হয়ে যাবে। যদি সব ঠিক থাকে তবে ঢাকা থেকে যেতে লাগবে ৫ ঘন্টা। আর ফেরার সময় বিকেল ৪ টায় শেষ বাস।
পরের পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম।
...........................
Every Picture Tells a Story
বিরিশিরি যাওয়া এত সহজ? কালকেই বাসে উঠতেছি...........ওহ....মহাখালি যেতে তো বারো ঘন্টা লেগে যাবে চাঁটগা থেকে।
থাক পরের সপ্তাহে ট্রাই করা যাবে। হোটেল বুকিং দেবার কোন ফোন থাকলে দিতে পারেন।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
ওয়াই ডব্লু সি এ -এর কন্টাক্ট হলো মি. অন্তু। ফোন - ০১৭৪৩৩০৬২৩০। তবে এখন দুর্গাপুর বাজারেও কয়েকটা থাকার যায়গা হয়েছে। আর ওয়াই এম সি এ - ও আছে। ঠিক সাম্নের সপ্তাতেই না গিয়ে আরও হপ্তা তিনেক পর গেলে বলে চিনামাটির পাহাড় এর পানি আরও অনেক নীল ও স্বচ্ছ পাওয়া যাবে। শুভ হোক আপনার যাত্রা।
পুরবধলা হবে না জাইগাটা; হবে জারিয়া
ধন্যবাদ। সংশোধনী এবং পড়া উভয়ের জন্যই।
শীতকাল ছাড়া বিরিশিরি যাওয়া বেশ কষ্টকর, রাস্তা মনে হয় না ইহজনমে ঠিক হবে, আবুল অর নো আবুল। সোমেশ্বরী নিয়ে আমার নিজের পোস্টে নদীর অনেক ছবি দিয়েছিলাম। কিন্তু লেক পর্যন্ত যাওয়া হয়নি সময়াভাবে। লেকের আরও ছবি থাকলে দিয়েন। চীনামাটির পাহাড়ের ছবি আছে? অপরিকল্পিতভাবে খোঁড়াখুঁড়ি করে বিক্রি করে কি নানান কোম্পানি? কোন একটা চীনেমাটি উত্তোলন প্রকল্পের উপরে একটা টিভি রিপোর্ট দেখেছিলাম কোন চ্যানেলে, কয়েক বছর আগে, সেটা বিরিশিরির ছিলো কিনা মনে করতে পারছি না। আমাদেরটা ডে-ট্রিপ ছিলো, রানী খং পর্যন্ত গিয়েছিলাম সোমেশ্বরী বেয়ে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
আপনার পোস্টটা পড়ে আসলাম। সেই সূত্রে হিমুদারটাও। রাস্তা ঘাটের ছবি ততটা তোলা হয়নি আমার। আপনার ছবি গুলো ভালো লাগলো আর হিমুদার লেখা পড়ে মনে হলো আমি ছবি দিয়ে যা ফোঁটাতে পারিনি উনি শুধু কথার যাদুতেই তা ফুঁটিয়েছেন। ছবি আসছে।
অসহ্য সুন্দর! প্রিয় নেত্রকোনায় ২২ বছর পার করেছি...আসলেই সময়টা বড্ড সেলুকাস! কোথায় সেই বিলের জল আর সাদা শাপলা? নমস্য তুমি সময়....শুধু ফুরাবার।
# ভাইয়া অনেক অনেক ভাললাগা...
ধন্যবাদ ভালোলাগা জানানোর জন্য।
পাঁঠা ভাই, কয়েকটা ছবি অচাম। বিরিশিরি যাওয়া নিয়ে আমাদের কয়েক বন্ধুর চরম অভিজ্ঞতা আছে। সময় পেলে একদিন শেয়ার করব।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
ধন্যবাদ। অপেক্ষায় রইলাম।
আপনার লেখাটির সুবাদে 'যাযাবর ব্যাকপ্যাকার' হয়ে 'হিমু' অব্দি পড়ে ফেললাম। বহুকাল আগে থেকেই যাব যাব করেও আজ অব্দি যাওয়া হয়ে ওঠেনি। এখন আপনার চোখে দেখেই সাধ মেটাচ্ছি।
ধন্যবাদ, পরের পর্বটির অপেক্ষায়...।
সাইকেলের সিলুয়েটটা খুব ভালো লেগেছে।
_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩
নতুন মন্তব্য করুন