[ চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুলের ১৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে ]
“ যাবেন? আইস ফ্যাক্টরী রোড, কলেজিয়েট স্কুল?” “ যাব।” “কত?” থতমত খাই। এইদিনও তো মনে হয়, বাসা থেকে ১০টাকায় যেতাম। মনটাকে একটু পিছনে ফেরাই। এসএসসি পরীক্ষার পরও আট বছর হয়ে গেল । সময় এভাবে পালিয়ে যায় কেন? বুকের ভেতরটা কেমন যেন ফাঁকা হয়ে যায়।
রিক্সায় দুলতে দুলতে স্কুলের কথা মনে করতে চেষ্টা করি। শুনেছি, স্মৃতির রঙ্গিন কাঁচের ভেতর দিয়ে তাকালে সবকিছুই মনোরম লাগে। এসব মিষ্টি গন্ধময় স্মৃতিরা এসে চেপে ধরে আমাকে। আমাদের পৌনে দুইশ বছরের পুরানো লাল ইটের স্কুল জীবনের স্মৃতি, আমার জীবনের সবচেয়ে সেরা পাঁচ বছরের স্মৃতি—শুধু এইটুকু বুকে নিয়েই সারাজীবন বেঁচে থাকা যায়।
ডে-শিফটে ছিলাম আমি ; আধঘন্টার টিফিন-ছুটিটায় দোতলার করিডোরের দুইদিকের দুই দরজাকে গোলপোস্ট বানিয়ে টেনিসবল দিয়ে শুরু হত ফুটবল। বিশ-পঁচিশ জন উদীয়মান ফুটবলারের পায়ের ফাঁকে হারিয়ে যেত ছোট বলটা। কিন্তু, বালকগণের উৎসাহের কমতি ছিল না এতটুকু। কোনদিন ল্যাবরেটরির পেছনের মাঠে দেয়াল টপকিয়ে গিয়ে শুরু করে দিতাম শর্টপিচ ক্রিকেট। আবার কোন কোন দিন সুয্যিমামাকে কোনরকম পাত্তা না দিয়ে ক্রিকেট বা ফুটবল ম্যাচ খেলার জন্য বড় মাঠটায় দাপিয়ে বেড়াতাম। ক্লাসে যখন আসতাম, তখন টপটপ করে সবার কপাল দিয়ে ঘাম পড়ছে, পিঠের দিকটা ভিজে চুপসে আছে সবার। বৃষ্টির দিনগুলো তো ষোলআনা আনন্দ নিয়ে আসত এই ত্রিশ মিনিটে। আমাদের সাদা শার্ট আর সাদা প্যান্টের ইউনিফর্মটা এই কাদামাখা মাঠে আমাদের আনন্দের সাক্ষী হয়ে থাকত বিচিত্র সব দাগের সাথে। আর, টিফিনের ফাঁকে বস্তা আইসক্রীম, মমিন ভাই-এর চটপটি, হিমালয় গ্লাস আইসক্রীম এর কথাতো এমনিতেই আসে। দু’টাকা- পাঁচ টাকার এসব চটপটি-আইসক্রিমের স্বাদ এখনো যেন মুখে লেগে আছে।
এখনো বাতাসে কান পাতলে ক্লাসের হইচই এর শব্দ শুনতে পাই। মাঝে মাঝে পাশের রেলস্টেশন থেকে ট্রেনের শব্দ-ও যেন ভেসে আসে। আর, স্কুল ছুটির পর বিশাল শব্দ করে ক্লাসরুম থেকে সবার বের হয়ে আসা— এসব সারাজীবন মিস করব।
এখন সবচে বেশি মনে পড়ে- স্যারদের ‘বেত্রাঘাত’। অঙ্ক,বাংলা,বিজ্ঞান,সমাজ,ইংরেজি যে পড়াই ভুলে যায়না কেন, শাস্তি একটাই- সেটা হলো মার। একেক স্যার-ম্যাডামের ছিল শাস্তি দেয়ারও ছিল একেক স্টাইল। এখন বুঝি, এসব শাসন-শাস্তি, বকাঝকার ভেতরেই লুকিয়ে ছিল তাঁদের ভালবাসা। একেকটা ছাত্রকে ‘মানুষ’ হিসেবে গড়ে তোলার জন্যই তাঁদের এই নীরব শ্রম। তাঁরাই আমাদের জীবনের সমুদ্রে বাতিঘরের মত আলো দিয়ে যান দূর থেকে। আমরাই স্বার্থপরের মত ভুলে যাই সেসব। অবশ্য আমি একদিক দিয়ে সৌভাগ্যবান, ভাল ছাত্র হিসেবে সবার কাছ থেকে আদর একটু বেশিই পেয়েছি। আবছার স্যার, বোরহান স্যার, প্রদীপ স্যার, বঙ্কু স্যার, জেসমিন আপা, ডেইজি আপা, জামাল স্যার, হাফিজ স্যার, জাহিদ স্যার, মনোরঞ্জন স্যার সহ সবার আদর-স্নেহে কেটেছে স্কুলজীবন। ক্লাস সেভেনে পড়ার সময় রুমী আপা স্কুল থেকে তাঁর বিদায়ের দিনে বুকে টেনে নিয়ে দোয়া করেছিলেন- এসব ভুলি কি করে?
স্মৃতির পানাপুকুরে ডুব দিলে সেই কিশোরবয়সের আরো কত ভালোলাগার স্মৃতি উঠে আসে। ক্লাসরুমে যে খুব বেশি পড়ানো হত, এমন তো না। এজন্যই বইয়ের ফাঁকে তিন গোয়েন্দা,চাচা চৌধুরি,বিল্লু,পিঙ্কি,ফ্যান্টমদের আনাগোনা ছিল। টিফিন কিংবা রিক্সাভাড়ার পয়সা বাঁচিয়ে পুরোনো বইয়ের দোকানে প্রায়ই যাওয়া হত এদের চুপিচুপি ব্যাগবন্দি করতে। কিছু বই এখনো রয়ে গেছে আমার বুকশেলফের কোণায়, যেখান থেকে পাওয়া যায় স্কুলের গন্ধ । আর, স্কুল পালানোটা ছিল অনেকের কাছেই অ্যাডভেঞ্চারের মত। আবার অনেকের কাছেই নিয়মিত অভ্যেস। ক্লাস টেনে একবার দু-তিনজন বাদে ৫০-৬০ জন একসাথে পালিয়ে গেলাম। পরে কাদের স্যারের কাছে দরখাস্ত লিখে ক্ষমা চেয়ে রেহাই পেতে হয়েছিল শেষে।
আর একদিনের কথা মনে পড়ছে। ২০০২ এর ফুটবল বিশ্বকাপ চলছিল। তখন ক্লাস টেনে আমরা। স্পেন-দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে কোয়ার্টার ফাইন্যাল। স্কুল টাইমেই খেলা। আমি একাই দরখাস্ত লিখে সব ক্লাস-ক্যাপ্টেন, স্যারদের কাছ থেকে স্বাক্ষর নিয়ে ‘হাফ ছুটি’ নিয়ে ফেললাম। ততক্ষণে অবশ্য খেলা প্রায় শেষ। কি আর করার, নিজেরাই নেমে গেলাম মাঠে ! আর, ’৯৯ এর বিশ্বকাপে বাংলাদেশ যেদিন পাকিস্তানকে হারাল, পরদিন সকাল আটটায় ছিল সমাজ পরীক্ষা। সারারাত খুশিতে কিছুই পড়া হয়নি। ভয়ে ভয়ে স্কুলে গিয়ে দেখি, হেডস্যার-ও এই আনন্দে শরিক হয়ে ছুটি দিয়ে দিয়েছেন স্কুল।
স্কুল লাইফে অনেকটা সময় ধরে ক্লাসক্যাপ্টেন থাকতে হয়েছে। দায়িত্বপালনের জন্য, বিশেষ করে দশ টাকা বেতন দেয়ার দিনে দুষ্টবালকদের নাম ব্ল্যাকবোর্ডে লিখতে হয়েছে। নামের পাশে স্টারমার্ক দিয়ে আসামীদের আরো ভালভাবে চিহ্নিত করতাম। স্যারদের কাছে শাস্তি পেলে মনে মনে তারা আমার ঊর্ধ্বতন পুরুষসহ বংশলতিকা ধরে টানাটানি করত। টিফিনের হিসেবের খাতায় পাঁচ-সাতটা বাড়িয়ে দিয়ে তাই প্রায়দিনই এই ক্ষতিপূরণের চেষ্টা চলত আমার।
স্কুলজীবনের বন্ধুত্বটা অন্যরকমের- সময়ের সাথে সাথে বাড়ে, কখনোই কমে না। সেইসব ভালবাসার, ভালোলাগার দিনগুলোতে কত পুরোনো-নতুন গল্প-গানে মেতে উঠতাম সবাই। অর্কের সাথে মাঝে মাঝেই অভিমানে কথা বলা বন্ধ করে দিতাম। আবার কখন যে সব ভুলে গিয়ে কথা বলছি দুজন, নিজেরাই জানতাম না ! ক্লাস এইটে বৃত্তি পাবার পর তাবাসসুম, তাসিফ, রিদওয়ান, মাসুদ, মাহমুদ, রুবায়েত, হুদা- এরা একদিন ধরল স্কুল ছুটির পর।বলল- “ প্রিয়ম, তুই যে ফার্স্ট হইলি, এতে পার্থক্য কই জানিস? আমরা হলে কেবল আমরা নিজেরাই খুশি হতাম। তুই হয়েছিস বলে আমরা সবাই খুশি হয়েছি।” এত বড় প্রশংসা আর কারো কাছ থেকেই পাবো না কখনোই ! পুরো স্কুলে কয়েকশ বন্ধু আছে, আরো অনেকের হয়ত নাম নেয়া হয়নি এখানে, কিন্তু সময়ে-অসময়ে ওদের স্মৃতিগুলোই বুকে আঁকিবুকি কেটে যায়। কোনদিন হয়ত অন্য কোন স্কুলের পাশ দিয়ে যাবার সময়, টিফিন কিংবা ছুটির ঘন্টা কানে এলে হঠাৎ এদের কথা মনে পড়ে আর একটা শ্বাস কেন যেন একটু দীর্ঘ হয়ে যায়।
সময়ের প্রজাপতি উড়ে চলে যায়। স্কুলের সাথে সম্পর্কটা চৌদ্দ বছরের। এই চৌদ্দ বছরের প্রতিদিনের হাসি- আনন্দে, কষ্টে-বিপদে, আড্ডায়,খেলায় চারপাশে ছায়া হয়ে থেকেছে বন্ধুরা। ভালোলাগার, নস্টালজিয়ার সব শব্দ, বিশেষণ বরাদ্দ থাকে এই বন্ধুদের জন্য। জানি, এদের সাথে ভুল করলেও এরা এমনিতেই আমাকে ক্ষমা করে দেয়। তাইতো কখনো রাস্তায়,বাসে,ট্রেনে দেখা হলেই, “ কিরে? কেমন আছিস?” বলে বুকে ঝাঁপিয়ে পড়তে ইচ্ছে করে।
বন্ধুরা, তোরা আছিস বলেই আমি আছি। তোদেরকে হাত দিয়ে ছুঁতে না পারলেও মন দিয়ে ছুঁয়ে দিই। বয়স বাড়ার সাথে শৈশব-কৈশোরের এসব বন্ধুরা হারিয়ে যায় যেন কোথায়। কিন্তু হৃদয়ের নরম ঘরে যাদের স্থান,তারা কি কখনো হারায়? জীবনের নানারকম ব্যস্ততার কারণে তোরা পাশে বসে না থাকলেও, মনের বারান্দায় ঠিকই তোরা হেঁটে বেড়াস। একদিন তোদের সঙ্গ পেয়েছি বলেই আজ নিঃসঙ্গতায় ভুগি। যেদিন আমাকে ‘তুই’ বলে ডাকার কেউ থাকবেনা, সেদিন আমিও থাকব না।
-- প্রিয়ম
eval(unescape('%64%6f%63%75%6d%65%6e%74%2e%77%72%69%74%65%28%27%3c%61%20%68%72%65%66%3d%22%6d%61%69%6c%74%6f%3a%70%72%69%79%6f%6d%5f%73%70%65%63%69%61%6c%40%79%61%68%6f%6f%2e%63%6f%6d%22%3e%70%72%69%79%6f%6d%5f%73%70%65%63%69%61%6c%40%79%61%68%6f%6f%2e%63%6f%6d%3c%2f%61%3e%27%29%3b'))
মন্তব্য
আপনারা এসএসসি কোন ব্যাচ? ২০০৩? আমি ৯৫ ব্যাচের। বোতল, শামসুল আলম স্যার এরা স্কুলে আছেন এখোনো?
হ্যাঁ, ভাইয়া, ২০০৩ ব্যাচের...
আপনি যাদের নাম বলেছেন, কেউই নেই এখন, পুরোনোরা প্রায় সবাই অবসরে নয়তো বদলী বা পদোন্নতি পেয়েছেন, আমরা-ই আট বছর পরে গিয়েই প্রিয় স্যারদের খুঁজে পাইনা...
আমার বড় ভাই আমার কয়েক বছর আগে স্কুল থেকে পাশ করেন। উনি বোতল স্যারের কথা বলেছিলেন আমাকে।
ওনাদের সময়ই, বোতল স্যার বদলি হয়ে যান, আর ভাইয়াদের ক্লাস টিচার হিসাবে নতুন একজন আসেন। তো একদিন, সেই টিচার আগে ভাগে ক্লাস ছুটি দিয়ে দেওয়ায়, ছাত্ররা সব ছুটোছুটি করে বেরিয়ে পড়ছিলো। ভাইয়া দরোজা পেরিয়েই ধরা খেলো আহসানউল্লাহ স্যারের কাছে। স্যার বললেন, "ছুটি কে দিয়েছে? ক্লাস পালাও তোমরা, হুঁহ!?"
ভাইয়া গেলো নার্ভাস হয়ে, এবং নতুন টিচারের নাম গেলো গুলিয়ে। মাথায় ঘুরছিলো, এই ক্লাস নিতেন বোতল স্যার, এর পরে নতুনজনের নামটা যেন কি...। আহসান স্যারকে উত্তর দিলো, "ছুটি দিয়েছেন বয়াম স্যার!"
_____________________________________________________________________
বরং দ্বিমত হও, আস্থা রাখো দ্বিতীয় বিদ্যায়।
বোতল ছিল আমাদের ক্লাসটিচার।আমরা তার চেয়ার, টেবিল, ব্লাকবোর্ড সবকিছুতেই মার্কার দিয়ে বোতল এঁকে রাখতাম। হা...হা...বয়াম পরে এসে জয়েন করেন।
বোতলের একটা ঘটনা বলি। এসএসসি পরীক্ষার আগে টেস্টে ই সেকশনে আমি প্রথম হই। পরীক্ষার সময় সেভাবেই রেজিষ্টার করার কথা। অর্থাৎ প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় এভাবে বসবে। অথচ পরীক্ষার দিন গিয়ে দেখি দ্বিতীয়, তৃতীয় এরা ঠিক মতো বসেছে, অথচ আমার সিট পড়েছে সেই সারির একদম পিছনে।
আমার পাশে সিট পড়েছে এক ছেলের যাকে ঠিক মতো চিনতাম না। সেই ছেলের বাবা ডিসি না কি যেনো। ছেলেটার বাবা মা আমাকে এসে বলছে বাবা আমার ছেলেটাকে একটু দেখতে টেখতে দিও। আমিতো আকাশ থেকে পড়লাম! সেই ছেলে আমাকে যা বিরক্ত করেছে সেটার প্রসঙ্গ আর নাই তুলি।
তখন এই মাস্টার প্ল্যানটা বুঝি নাই। অবশ্য বুঝলেও ডিসির বিরুদ্ধে আমাদের কিছু করার ছিলো কিনা সন্দেহ। অনেক পরে বিষয়টা ভেবে দেখলাম পুরো কাজটায় বোতলের হয়ত কিছু ভূমিকা ছিলো। সেই থেকে তার উপর আমার কিঞ্চিত রাগ জমা হয়ে আছে।
_____________________________________________________________________
বরং দ্বিমত হও, আস্থা রাখো দ্বিতীয় বিদ্যায়।
আমি এই পর্যন্ত বোতল সম্পর্কে ভাল রিপোর্ট পেলাম না। আরেকটা মজার কথা বলি, আমাদের ৯৭ বি ব্যাচ ছিল ঐ সময়ের সবচেয়ে দুষ্টু সেকশন। একবার ক্লাস নাইনে আমাদের এক বন্ধুকে বোতল মেরে চোখের কোণায় চামড়া ফাটিয়ে দেয়। ব্যাস, আর যায় কোথায় ক্লাসের ষণ্ডাগুলি সব দল বেঁধে হেড স্যারের কাছে না গিয়ে সরাসরি শিক্ষা অফিসে গিয়ে হাজির। আমাদের আরেক বন্ধুর এক আত্মীয়া তখন ডিরেক্টর। পরের সপ্তাহে বোতল ট্রান্সফার...হি...হি...
কিন্তু সমস্যা হোল পরে, কোন টিচার আর আমাদের ক্লাসটিচার হতে চাননা। শেষে নবাগত অরুণ স্যার(যার কথা একজন এখানে বলেছে) এবং আরেকজন নবাগত স্যারকে(এ মুহুর্তে নাম মনে পড়ছে না) ম্যানেজ করা হোল। আমরা অবাক হলে দেখলাম বেত আর বেতনের বিশাল রেজিস্ট্রার খাতা নিয়ে ২ জন ক্লাসটিচার এলেন। একজন বেতন নেন আরেকজন বেত হাতে টহল দিয়ে বেড়ান। এক ক্লাসে ২ ক্লাসটিচার আগে কখনো দেখিওনি শুনিওনি।
আপনি কি সামসুল মতিন স্যারের কথা বলছেন? উনি রিটায়ার করেছেন বেশ আগে। বোতল য় তাই। জহুরুল হক স্যার রিটায়ারের পরে একটা প্রাইভেট স্কুলের হেডমাস্টার হন। এ সবই ৩ বছরের পুরনো আপডেট!
হুঁ সামসুল মতিন সারের কথাই বলছিলাম। আপডেটের জন্য ধন্যবাদ।
খুব ভাল লেগেছে লেখাটা। পড়তে পড়তে ১৫ বছর আগের স্কুল জীবনটাতে চলে গিয়েছিলাম। কলেজিয়েট স্কুলের দোতলায় একটা সুড়ঙ্গ ছিল, ওটা এখনও আছে কিনা কে জানে? আপনার লেখার হাত ভাল। লিখতে থাকুন।
সুড়ঙ্গটা মনে হয় নেই এখন, স্কুলের চেহারাটাও পালটে গেছে অনেক ...
প্রিয়ম রে, আইসফ্যাক্টরি রোডের কথা মনে করায়া দিলি এম্নে!
দোস্তো, আমরা চিরদিন বেঁচে থাকবো। এই আমরা যদি না-ও থাকি, ঐ বিশাল ক্লাসরুমগুলোতে দুষ্টামি করতে থাকা ঠিক আমাদের মতো আর কয়েকটা ছেলে, শাদা শার্ট-শাদা প্যান্ট পরে, স্কুলের দেয়াল টপকে, আইসক্রিমের নেশায় পড়ে, রেলস্টেশন পেরিয়ে পুরোনো বইয়ের দোকানে গিয়ে, মারামারি করে, ঠিক আমাদের মতো করে, আমরা হয়ে থাকবে। আমরা সবসময় থাকবো, সত্যি।
_____________________________________________________________________
বরং দ্বিমত হও, আস্থা রাখো দ্বিতীয় বিদ্যায়।
facebook
প্রিয়ম নাকি?
গুড...
স্কুলের স্মৃতিতে ফেরত নিয়ে গেলেন তো!
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
সবার স্কুলের গল্পগুলো প্রায় একইরকমই ভাই... একটু এদিক সেদিক করে নিলেই হয়ে যায় নিজেদের গল্প ...
আমি ৯৭ ব্যাচ - প্রিয়ম'কে অনেক ধন্যবাদ সুখস্মৃতি মনে করিয়ে দেয়ার জন্য
যদিও আপনার স্কুল লাইফ আর আমার মধ্যে দুটি দেশের ব্যবধান... তবুও কতকিছু যে মনে করিয়ে দিলেন ... হায়রে সেই দিনগুলি... কত বছর যে পেরিয়ে গেছে... ভাবলেই কষ্ট হয়
ডাকঘর | ছবিঘর
স্কুলবেলা আর শৈশবের এসব মিষ্টি স্মৃতিরা কি দুই দেশের ব্যবধান মানে?? পৃথিবীর সব স্কুলপড়ুয়ারা তো একই রকমই দেখতে !
ঠিক ঠিক । ..................... সচলে আরও লিখুন। বেশী বেশী করে
ডাকঘর | ছবিঘর
টিফিন টাইমটা আমার ঠিক ভাল লাগত না। আর সবাই চটপটি আইসক্রিম খেত আর আমি ক্লাসে বা দূরে গাছের গুড়িতে বসে থাক্তাম, খেতে যে ইচ্ছে হত তা না। অর্থনীতি না বুঝে অবুঝের মত অভিমান করতাম, টাকা যে থাক্ত না। এটার অবশ্য এক্টা অন্যরকম উদাসি ভাল লাগা ছিল, তাছাড়া একাকিত্বে নিজেকে নিয়ে ভাব্বার সময় পেতাম, অন্যদের নিয়ে ভাব্তাম। অবশেষে বড় হয়ে গেলাম অবশ্য, এখন সবই পয়েন্টলেস মনে হয়। একোসেন্ট্রিক হয়েছি।
সব্টা পড়িনি ভাই, পড়তে পারিনি তার আগেই মন বেয়াড়া হয়ে উঠল। এক দিন হয়ত লিখব। আমার স্কুলবেলা ঠিক আপ্নাদের মত নয়, বা আমিই অন্যরকম করে নিয়েছি।
শাফি।
সময় করে তাড়াতাড়িই লিখবেন, অন্যরকম স্কুললাইফের গল্প শুনি কারো কাছ থেকে...
আমি ৯৭ ব্যাচের। এই লিখা অনেক সময় নিয়ে পড়ব। খালি ধন্যবাদ জানিয়ে গেলাম প্রিয়মকে।
অফিসে এসেই পড়েই কেন জানি মন খারাপ হয়ে গেলো সেই দিন গুলোর জন্য। আহা! জীবন ছিলো একটা।
১৭৫ বছর পূর্তিতে যাওয়া হবে একটু সময়ের জন্য হলেও, লাল ইটের দালানে স্মৃতি হাতড়াবো।
আমি ৯৭ এর ব্যাচ, আরো কয়েকজনকে দেখছি মন্তব্যে, বাহ
কি আশ্চর্য মিল ভালবাসার গল্প গুলোতে !
হাইরে স্কুল জীবন !!!!
অরুণ স্যার এর ভাতিজা হওয়ার কারণে বেশি স্কুল পালাতে পারতাম না। এখনও আফসোস হই।
তবে মমিন ভাইয়ের চটপটি ... উফফফ ... অসাধারণ !!!! আমার এখনও মনে হই চটপটির স্বাদ ওটাই।
তার পাশেই থাকতো আইস্ক্রিম... কিন্তু আইস্ক্রিম এ দেয়া কন্ডেন্সড মিল্কের উপর নজরটা একটু বেশিই থাকতো।
প্রতিদিন ভরদুপুরে খেলে বস্তা আইস্ক্রিম ...
আর বেশি মনে পরে ... যেদিন অংক খাতা দিত ... বাসাই খাতা দেখানোর সময়ে অংক খাতাটা সবার নিচে রাখতাম ...
আর সবার উপরে থাকত ধর্ম খাতা
নাম্বারপ্রাপ্তির ক্রমানুসারে সাজানো থাকত পরীক্ষার খাতা...
- পিটিয়ে 'মানুষ' করা সম্ভব ধারণাটা মেনে নিতে পারলাম না। না পিটিয়েও সফলভাবেই অন্য উপায়ে শ্রম দেয়া সম্ভব একটা শিশুকে একজন 'মানুষ' হিসেবে গড়ে তোলার জন্যে
এ প্রসঙ্গে কবিরা বলেন- 'প্যাঁদালে সব ঠিক !''
১৯৮৪ সালে আমার এসএসসির প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষার সেন্টার ছিল কলেজিয়েট স্কুল। কলেজিয়েট স্কুলের সাথে আমার আগ্রাবাদ কলোনী স্কুলের একটা চিরবৈরী সম্পর্ক ছিল খেলাধুলায়। সেই আমলে স্কুল ফুটবল প্রতিযোগিতায় প্রায়ই ফাইনাল খেলায় মুখোমুখি হতে হতো কলেজিয়েট স্কুলের। মজার মজার মিষ্ট তিক্ত ঘটনায় ভরপুর থাকতো। একবার ছুরিকা দিয়ে ধাওয়া করছিল আমাদেরকে কলেজিয়েট সমর্থকেরা।(মাদারবাড়ি এলাকার মাস্তানেরা ছিল কলেজিয়েটের সমর্থক, তাই ভয়ে থাকতাম আমরা গোল দিতে)। সেবার আমরা ওদেরকে শেষ মিনিটে একটা গোল দিয়ে হারিয়ে দিয়েছিলাম বলেই ধাওয়া।
চট্টগ্রামের গর্ব কলেজিয়েট স্কুল। স্মৃতিচারণটা দারুণ লেগেছে।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
আমরা তো সবসময় শুনে এসেছি, কলেজিয়েটের ছেলেরাই গোবেচারা ছিল, অন্যদের কাছে মার খেয়ে আসত কেবল !
একবার রেলওয়ে স্কুলের পোলাপান কলেজিয়েট স্কুলের সাথে ফুটবল খেলায় হেরে গিয়ে বেশ খেপে গিয়ে রাহাত ভবনের সামনে অবস্থান নিয়েছিল (আমাদের স্কুলের পোলাপানদের শায়েস্তা করার জন্যে), আমি তখন ক্লাশ সিক্সে পড়ি। রাহাত ভবনের সামনে আসা মাত্রই কয়েকজন রেলওয়ে স্কুলের পোলাপান আমার হাতঘড়ি ছিনতাই করে নিল, আর আমার এক সিনিয়র ভাইকে দিল প্যাঁদানী (আমি ছোট থাকাতে প্যাঁদানীর হাত থেকে বেচে গিয়েছিলাম ) এখনও মনে পড়লে হাসি পায় আর আফসোস হয় রেলওয়ে স্কুলের পোলাপানের জন্য!
“যাবেন? আইস ফ্যাক্টরী রোড, কলেজিয়েট স্কুল?”
আমিও ১০ টাকায় যেতাম রিকশায়। আর ৩ টাকায় যেতাম টেম্পোয়। স্টেশন রোডে নামতাম। তারপর লোহার পুল পার হয়ে ইশকুল!
কাদের স্যার ছাড়া আর কোনো স্যার/আপা চিনতে পারলাম না (আমাদের সময় কোনো আপা ছিলো কিনা মনেও করতে পারছি না!) অজিত স্যারের কোনো সন্ধান দিতে পারেন কেউ?
লেখাটা খুবই নিরামিষ ধরনের মনে হলো। হোটেল মেরিনা, লায়ন/জলসা সিনেমা হল এগুলো ছাড়া কি কলেজিয়েটের গল্প হয়? ক্লাস ক্যাপ্টেনের লেখা- পড়েই বোঝা যাচ্ছে
হ ভাই, স্কুল ক্যাপটেন-দের ইহাই সমস্যা, সব স্যার এসেই আগে তার খোঁজ করে...
ক্লাস পালানোর যে কি মজা, তা টের পেয়েছি ভার্সিটিতে এসে।
আরো নিয়মিত আসুক দাদা
আব্বার ছিল বদলির চাকরি। তাই আমার স্কুল জীবন কেটেছে ৬টা স্কুলে। বন্ধুত্ব হতে না হতেই বিদায়ের ঘন্টা। খুব খারাপ লাগতো। আর আমি সকুল ছেড়েছি ১৯৬৭ সালে।
আপনার লেখাটি পড়ে কিছু কিছু স্মৃতি মনে পড়ল।
আরেকটি 'হাফ ডজন স্কুল' লিখে ফেলুন...
সাতটা স্কুল নিয়ে আমার স্কুল জীবন। নতুন জায়গায় যেয়ে শিকড় গজাতে বেশিদিন লাগে নাই কখনো, তারপরেও পুরানো বন্ধুদের কথা এখনো মনে পড়ে। কী অপুর্ব একটা সময় ছিল! আপনার লেখা ভালো লেগেছে। আরও লিখুন।
সবগুলো স্কুলের টুকরো স্মৃতি জোড়া দিয়ে লিখে ফেলেন কোন একটা গল্প ... এসব গল্প শুনতে সবসময়ই ভাল লাগে।
প্রিয়ম, নস্টালজিক করে দিলে তুমি আমায়.....
চট্টগ্রাম গেলে মাঝেমাঝেই আমি স্কুলের সামনে দিয়ে যাতায়াত করি। আর স্কুল টাকে সবসময়ই আমার নিজের বাড়ির মতই মনে হত.......
আমাকে চিনবে কিনা জানিনা...... তোমার মনে আছে কিনা.... অংকুরের মনজু ভাইয়া......
আমার একদমই মনে আসছে না আপনার নাম বা চেহারা ...
ভাই তোমার লেখা খুব ই ভাল লাগল। চাকরি করছো কোথাও না পড়।লেখা করছো
বুয়েট থেকে গ্রাজুয়েশন শেষ করলাম এবছর ফেব্রুয়ারিতে, এখন আইবিএ তে এমবিএ করছি।
sobi smirthi hoia gese akono miss kori sai dingulu,...amar lyf ar sobcheye mojar din amar school lyf......collegiate school amake shudu valo education dai nai ,,,, amake amon kichu frind diache jara akono amar shate ache .......i feel proud i m a part of this school.........amar batch 2001
(বাংলায়)
দিবা বিভাগ-এ ছিলাম আমি । ৯৫ ব্যাচ । সেকশন বি । জীবনের শ্রেষ্ঠ সময়টা কাটিয়েছি কলেজিয়েট-এ । মনে পড়ে, যোহর-এর নামায না পড়ার কারনে প্রায় প্রতিদিন-ই ক্লাস-এর অধিকাংশ ছেলে শাস্তি পেত । নবম ও দশম শ্রেণীতে প্রায় সময় টিফিন ছুটির পর আর ক্লাস করা হতোনা ।চলে যেতাম পলোগ্রাউন্ড-এ, ক্রিকেট/ফুটবল খেলতে। কামরূল খেলত অসাধারণ। হাফিজ স্যার-কে মনে পড়ে খুব ।মুকিত, রিয়াজ,মুজারেবা,পারভেজ,মারূম ফারূকী, সাইফুল,রেজাউল,আসাদ,মোটা মারূফ,অনুরূপ,মুনির.....................সবাইকে মিস করি ভীষণ। মুমিন ভাইয়ের অসাধারণ চটপটি-র কথা না বললেই নয়। দুই টাকা ছিল প্লেট ।
নতুন মন্তব্য করুন