প্রাপ্তিস্থান : ট্যাং ডাইন্যাষ্টি, চায়না। সময়কাল : ৬১৮ - ৯০৭ সাল
ছবি : আর্ট ইন্স্টিটিউট অব শিকাগো থেকে সংগৃহীত।
ধর্মপ্রচার নয়, বিভিন্ন ধর্মমত সম্পর্কে যৎসামান্য জানার প্রচেষ্টা মাত্র
গৌতম বুদ্ধের জন্ম ও সময়কাল নিয়ে ঐতিহাসিকদের মধ্যে মতানৈক্য আছে। কারও কারও মতে বুদ্ধের সময়কাল ৫৬৩ খ্রীষ্ট পূর্বাব্দ হতে ৪৮৩ খ্রীষ্ট পূর্বাব্দ।
বুদ্ধের পিতৃদত্ত নাম সিদ্ধার্থ, সম্ভবত তাঁর গোত্রনাম গৌতম অথবা তাঁর পালিকা বিমাতা গৌতমীর নাম থেকেই গৌতম নামের উদ্ভব।
তাঁর পিতা ছিলেন শাক্যবংশীয় রাজা শুদ্ধোধন, মাতা মায়াদেবী।
বুদ্ধের জন্মস্থান : কপিলাবস্তুর সন্নিকটে লুম্বিনি নামক স্থানে (অধুনা নেপাল)।
কথিত আছে, মায়াদেবী পিতৃগৃহে যাবার সময় লুম্বিনি গ্রামের একটি বাগানে সিদ্ধার্থের জন্ম দেন। সিদ্ধার্থের জন্মের সাতদিন পরে মায়াদেবীর মৃত্যু হয় এবং সিদ্ধার্থ তাঁর বিমাতা গৌতমীর নিকট প্রতিপালিত হন।
সিদ্ধার্থের স্ত্রীর নাম ছিল যশোধরা, মতান্তরে যশোধা বা গোপা এবং পুত্রের নাম ছিল রাহুল।
কথিত আছে, সিদ্ধার্থ একদিন তাঁর সহিস চন্নের (মতান্তরে ছন্দক) সাথে ঘুরতে বেরিয়ে একজন জরাগ্রস্থ বৃদ্ধকে দেখলেন, একজন রোগগ্রস্থ দুর্বল ব্যক্তিকে দেখলেন এবং একটি শবযাত্রা দেখলেন যার অনুগামীগণ বিলাপরত ছিলেন। তিনি বিষয়গুলি সম্পর্কে চন্নের কাছে জানতে চাইলেন। চন্ন তাঁকে জানালেন এটাই স্বাভাবিক জীবন ধর্ম। আরেকদিন চন্নের সাথে বেরিয়ে তিনি পীতবস্ত্র পরিহিত একজন প্রসন্নচিত্ত সন্ন্যাসীকে দেখলেন। তাঁর সম্পর্কে জানতে চাইলে চন্ন জানালেন, এই সন্ন্যাসীটি মানব কল্যানের জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন।
এবিষয়গুলো সিদ্ধার্থের অন্তর ছুঁয়ে যায়। দুঃখ, জরা, মৃত্যু ইত্যাদি বিষয়গুলো তাকে ভাবিত করে তোলে।
ঊনত্রিশ বছর বয়সে তিনি বিবাগী হয়ে সংসার ত্যাগ করেন। প্রথমে তিনি আরাল কালাম (মতান্তরে আলারা) নামক একজন শাস্ত্র বিশেষজ্ঞের কাছে যান, সেখানে তিনি সন্তোষজনক উত্তর না পেয়ে উদ্দক নামক আরেক পন্ডিতের কাছে যান। তাঁর কাছেও তিনি মনপুত উত্তর না পেয়ে সঠিক জ্ঞান লাভের নিমিত্ত বৌদ্ধগয়ায় পর্যায়ক্রমে ছয় বৎসরকাল কঠোর তপস্যার মাধ্যমে বোধিজ্ঞান লাভ করেন।
সিদ্ধার্থ তপস্যাকালে অনাহারের কারণে অত্যন্ত কৃশ হয়ে পড়েছিলেন। সে সময়ে তিনি অনশন ভঙ্গ করে সুজাতা নাম্নী এক নারীর কাছ থেকে এক পাত্র পরমান্ন আহার করেছিলেন। অতঃপর তিনি নদীতে স্নান করে পুনরায় ধ্যানরত হন। সে কারণে যে পাঁচ জন তপস্যাসঙ্গী মনঃক্ষুন্ন হয়ে সিদ্ধার্থকে ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন, ছত্রিশ বছর বয়সে বোধিজ্ঞান লাভ করার পর তিনি ঋষিপত্তন মৃগদাবে সর্বপ্রথম তাঁর দর্শন প্রচার করেন সেই পাঁচ জন ভিক্ষুর মাঝে। যাঁরা ছিলেন, বুদ্ধের প্রথম শিষ্যত্ব গ্রহনকারী পঞ্চ বর্গীয় শিষ্য। তাঁরা হলেন, কৌন্ডিন্য, বপ্প, ভদ্দিয়, মহানাম এবং অশ্বজিৎ। পরবর্তিতে তিনি আরও অনেককে দীক্ষাদান করেন।
ইতিহাস পর্যালোচনায় পাওয়া যায় ৪৯০ খ্রীষ্ট পূর্বাব্দের কাছাকাছি সময়ে কোশলরাজ প্রসেনজিতের পাটরানী মল্লিকাদেবী বৌদ্ধ ধর্মের প্রতি অনুরক্ত ছিলেন। মল্লিকাদেবীর প্রিয় সখী বিশাখা বুদ্ধের প্রতি শ্রদ্ধার নিদর্শন স্বরূপ সহস্র প্রকোষ্ঠের একটি সাততলা বিশাল বিহার 'পূর্বারাম মৃগার মাতা প্রাসাদ' বুদ্ধদেবকে দান করেছিলেন (রাহুল সাংকৃত্যায়ন, ভোলগা থেকে গঙ্গা)।
এ সময়ে জৈবলী, উদ্দালক এবং যাজ্ঞবল্ক্য প্রভৃতি ঋষিগণ ব্রহ্মবাদ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তাঁদের মতবাদ প্রচার করছিলেন।
সমসাময়িক কালে 'অজিত কেশকম্বল' নামে এক গৃহত্যাগী ব্রহ্মচারী যিনি ছিলেন একেবারেই জড়বাদী, তিনি ভৌতিক (জড়) পদার্থ ছাড়া আত্মা, ঈশ্বরভক্তি, নিত্য-তত্ত্ব অথবা স্বর্গ-নরক-পুনর্জন্মবাদ মানতেন না।
তিনি বলতেন, 'আত্মা, ঈশ্বর ইত্যাদি নিত্য বস্তু পৃথিবীতে নেই। সর্ব বস্তুই উৎপন্ন হয় এবং অচিরেই বিলীন হয়ে যায়। সংসার কতগুলি বস্তুর প্রবাহ নয়, বরং ঘটনাবলীর স্রোত।' তাঁর প্রচারিত মতবাদ জ্ঞানীরা খুবই যুক্তিসঙ্গত ও হৃদয়গ্রাহী মনে করতেন। কিন্ত ঐ অনাদিবাদে লোক-মর্যাদা, ধনী-গরীব, দাস-স্বামীর প্রভেদ নষ্ট হয়, তাই অজিতের জড়বাদ সামন্ত ও ব্যবসায়ীদের প্রিয় হতে পারলোনা (রাহুল সাংকৃত্যায়ন, ভোলগা থেকে গঙ্গা)।
গৌতম বুদ্ধ নিজের অনাত্মবাদ ও জড়বাদের মধ্যে আরও কিছু যোগ করে তার তিক্ততা কিছুটা দূর করলেন। তাঁর মতে আত্মা নিত্য না হলেও চেতনা-প্রবাহ স্বর্গ কিম্বা নরকের মানুষের মধ্যে এক দেহ হতে আরেক দেহে--- এক শরীর-প্রবাহ হতে আরেক শরীর-প্রবাহে সঞ্চারিত হয় (রাহুল সাংকৃত্যায়ন, ভোলগা থেকে গঙ্গা)। তৎকালে কোশলের নগরবধু আম্রপালী বুদ্ধের কাছে দীক্ষা নিয়ে ভিক্ষুণী হয়েছিলেন। তিনি তাঁর বিশাল প্রাসাদ সঙ্ঘকে দান করেছিলেন। তিনি ভিক্ষুণীসঙ্ঘের প্রধানাও হয়েছিলেন।
বৌদ্ধমতে দীক্ষা নিতে ত্রিশরণ মন্ত্রোচ্চারণ করতে হয়।
(১) বুদ্ধং শরণম গচ্ছামি ( আমি বুদ্ধের শরণ নিলাম)।
(২) ধম্মং শরণম গচ্ছামি ( আমি ধর্মের শরণ নিলাম)।
(৩) সঙ্ঘং শরণম গচ্ছামি ( আমি সঙ্ঘের শরণ নিলাম)।
বুদ্ধ যে সঙ্ঘ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন সেখানে জাতিভেদ, শ্রেণীভেদ ছিলনা। সেখানে সকলেই সমান। সকলকেই সমান শ্রম করতে হবে। ভিক্ষাবৃত্তিই ছিল তাঁদের একমাত্র উপার্জনের পথ। ধনী পৃষ্ঠপোষকেরাও অবশ্য সাহায্য সহযোগিতা করতেন। বৌদ্ধমতে একজন ভিক্ষু, পরিধেয় তিনখন্ড বস্ত্র, মাটির তৈরি একটি ভিক্ষাপাত্র, একটি সুচ, জলপান করবার একটি পাত্র, একটি চিরুনি আর একটি কোমরবন্ধনী, এই হচ্ছে তাঁর নিজস্ব সম্পত্তি আর সবই সঙ্ঘের সম্পদ।
দশটি প্রশ্নে বুদ্ধ নিশ্চুপ থেকে নিস্পৃহ ভাব পোষণ করেছেন, এগুলোকে বুদ্ধের দশ অ-কথনীয় বাক্য বলে চিহ্নিত করা হয়।
শ্রাবস্তীর জেতবনে মোগ্গলিপুত্ত তিস্ম বুদ্ধকে দশটি প্রশ্ন করেছিলেন। প্রশ্ন বিষয়ক উত্তর দানে বুদ্ধ নিস্পৃহ ভাব পোষণ করেছিলেন। এগুলোকেই বুদ্ধধের দশ অ-কথনীয় বাক্য বলা হয়। প্রশ্নবাক্যগুলি,
৹ লোক বিষয়ক :
১) লোক কি নিত্য?
২) লোক কি অনিত্য?
৩) লোক কি সসীম?
৪) লোক কি অসীম?
৹ দেহাত্বা বিষয়ক :
৫) আত্মা ও শরীর কি অভিন্ন?
৬) আত্মা ও শরীর কি ভিন্ন?
৹ নির্বাণপ্রাপ্তী পরবর্তী অবস্থা বিষয়ক :
৭) মৃত্যুর পর তথাগত কি পুনর্ভজন্ম গ্রহণ করেছেন?
৮) মৃত্যুর পর তথাগত কি পুনর্জন্ম গ্রহণ করেননি?
৯) তথাগতের পুনর্জন্ম গ্রহণ করা বিষয়াদি কি সত্য?
১০) তথাগতের পুনর্জন্ম গ্রহণ করা বিষয়াদি কি অসত্য?
গৌতম বুদ্ধ চলমান দার্শনিক বিবাদ এড়াতেই এসকল প্রশ্নের উত্তরে মৌনতা অবলম্বন করেছেন।
এই দশ অ-কথনীয় বাক্য প্রসঙ্গে বুদ্ধ বলেছেন, "আমি একে অ-কথনীয় বলেছি, কারণ, এ সম্বন্ধে আলোচনা গুরুত্বপূর্ণ নয়, ভিক্ষু চর্য বা ব্রহ্মচর্যের জন্যও যোগ্য নয়, আবার নির্বেদ-বৈরাগ্য, শান্তি, পরমজ্ঞান ও নির্বাণপ্রাপ্তির জন্যও এই অ-কথনীয়ের কোন আবশ্যকতা নেই; তাই আমি এগুলিকে বলেছি, অবক্তব্য।" (দর্শন-দিগদর্শন > রাহুল সাংকৃত্যায়ন)।
বৌদ্ধধর্মের ধর্মগ্রন্থের নাম ত্রিপিটক, তিন পিটকের (ঝাঁপি) সমাহার। (১) বিনয়পিটক, (২) সুত্তপিটক ও (৩) অভিধম্মপিটক।
বৌদ্ধদের তীর্থস্থান,
(১) কপিলাবস্তুর লুম্বিনি গ্রাম (বুদ্ধের জন্মস্থান)।
(২) বৌদ্ধগয়া (বুদ্ধের বোধিজ্ঞান লাভের স্থান)।
(৩) সারনাথ (ধর্মচক্র প্রবর্তন স্থান)।
(৪) কুশিনারা (বুদ্ধের পরিনির্বাণপ্রাপ্তিস্থান)।
গৌতম বুদ্ধ আশি বৎসর বয়সে কুশিনগরে দেহত্যাগ করেন। একেই বুদ্ধের পরিনির্বাণপ্রাপ্তি হিসাবে উল্লেখ করা হয়।
দুঃখ, দুঃখহেতু, দুঃখনিরোধ ও দুঃখনিরোধের উপায়--- এই চারটি হল আর্যসত্য, পালি ভাষায় - চত্বারি আর্য্য সত্যানি । এই দুঃখময় পৃথিবীতে দুঃখের কারন নির্ণয় করে সেই কারনকে বন্ধ করার উপায় হিসাবে বুদ্ধ বললেন, প্রবৃত্তির বিনাশে হয় নির্বাণ। আর এই নির্বাণই হল দুঃখ নিরোধের একমাত্র উপায়। তিনি যে মুক্তি মার্গের সন্ধান দিলেন তা গৃহত্যাগী ভিক্ষুর মার্গ। তিনি যে অষ্টাঙ্গিক মার্গের কথা বললেন তা হলো, (১) সম্যক দর্শন, (২) সম্যক কর্ম, (৩) সম্যক সংকল্প, (৪) সম্যক বচন, (৫) সম্যক জীবিকা, (৬) সম্যক প্রজ্ঞা, (৭) সম্যক স্মৃতি, (৮) সম্যক সমাধি।
বুদ্ধ বলেছেন যে দুঃখেরই জন্ম, জরা, মৃত্যু প্রভৃতি নানা রূপ। আর রূপ, বেদনা, সংজ্ঞা, সংস্কার ও বিজ্ঞান--- এই পঞ্চস্কন্ধ সমুপেত দেহই সকল দুঃখের কারন। এই দেহ ধারন করতে না হলেই সুখ, তারই নাম নির্বাণ। জন্ম না হলেই জরা, রোগ, শোক,নৈরাশ্য ও মৃত্যু নেই। অতএব দুঃখ নাশের জন্য জন্মগ্রহণ প্রবণতা নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজন। জন্মনিরোধ আবশ্যক।
বুদ্ধ ভাবলেন, কর্মই জন্মের মূল। কর্মে যে ধর্ম এবং অধর্ম তাই জন্মের হেতু। এই কর্মের উৎপত্তি তৃষ্ণা থেকে। আর ইন্দ্রিয় থেকেই তৃষ্ণার সূচনা। ইন্দ্রিয়ের সংগে বিষয়ের সন্নিকর্ষ হলে যে বেদনা সমুপস্থিত হয়, তাই তৃষ্ণার মূলে, তৃষ্ণা বা বাসনা অবিদ্যামূলক। তাই বুদ্ধ বললেন, অবিদ্যা দূর করতে পারলে বা তৃষ্ণার উচ্ছেদ সাধন হলে জন্মগতি রোধ হয়। সেই জন্মরোধই নির্বাণ, তাই আত্যন্তিক দুঃখনাশ।
জন্ম না হলে তুমি-আমি ভেদ থাকেনা, রূপ-রসাদির বোধ হয়না, আশা-নৈরাশ্যের ঘাত-প্রতিঘাতের সম্ভাবনা থাকেনা। বৌদ্ধমতে কারও কোন চেতনা নেই, কারও কোন নিয়ামক নেই, আপনা আপনিই সকল পদার্থের সৃষ্টি হয়। সুতরাং এই মতে সৃষ্টিকর্তা বা ঈশ্বরের প্রয়োজন নেই। নির্বাণ মুক্তিলাভ করতে পারলেই সব প্রয়োজন সিদ্ধ হয়।
বৌদ্ধমতে জীবন্ত মানবদেহে দশ প্রকার স্বত্বার লক্ষণ বিদ্যমান, (১) বুদ্ধ, (২) বোধিস্বত্ব, (৩) প্রত্যেক বুদ্ধ, (৪) শ্রাবক, (৫) অতিমর্ত, (৬) মানব, (৭) অসুর, (৮) পশু, (৯) প্রেত, (১০) দুরাত্মা।
তপস্যার মাধ্যমে পর্যায়ক্রমে আত্মোন্নয়নের মাধ্যমে বুদ্ধত্ব লাভ সম্ভব।
পরকাল সম্পর্কে বুদ্ধ বলেন, পরকাল নির্ভর করে মানুষের ইহজন্মের কর্মের উপর। মৃত্যুর পর মানুষ ৩১ লোকভূমির যে কোন একটিতে গমণ করে। ৩১ লোকভূমি হচ্ছে : ৪ প্রকার অপায় : (১) তীর্তক (পশু-পাখি কুল), (২) প্রেতলোক (প্রেত-পেত্নী), (৩) অসুর (অনাচারী দেবকুল), (৪) নরক (নিরয়)। ৭ প্রকার স্বর্গ : (১) মনুষ্যলোক, (২) চতুর্মহারাজিক স্বর্গ, (৩) তাবতিংশ স্বর্গ, (৪) যাম স্বর্গ, (৫) তুষিত স্বর্গ, (৬) নির্মানরতি স্বর্গ, (৭) পরনির্মিত বসতি স্বর্গ। ১৬ প্রকার রূপব্রহ্মভূমি, ৪ প্রকার অরূপব্রহ্মভূমি। এই ৩১ প্রকার লোকভূমির উপরে সর্বশেষ স্তর হচ্ছে নির্বাণ (পরম মুক্তি)।
বুদ্ধ পরবর্তী সময়ে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভাজন তৈরি হয়। এখন পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে বুদ্ধের মূল শিক্ষাকে ঠিক রেখে আচার পালনে বিভিন্নতার কারণে নানা পথ ও মত তৈরি হয়েছে।
অবশ্য বুদ্ধের সময়েই তাঁর শিষ্যদের মাঝে কিছু দার্শনিক মতভেদ ছিল। গৌতম বুদ্ধের পরিনির্বাণের পরে তা প্রকটাকার ধারন করে এবং এরই ধাাবাহিকতায় পরবর্তী ১০০ বছরের মধ্যে বৌদ্ধগণ স্থবিরবাদী এবং মহাসাঙ্ঘিক এই দুই নিকায়ে (সম্প্রদায়ে) বিভক্ত হয়ে যায়। স্হবিরবাদীদেরকে থেরবাদীও বলা হয়।
পরবর্তী ১২৫ বছরকালে আবার বিভক্তির মাধ্যমে মহাসাঙ্ঘিকের ছয়টি এবং স্থবিরবাদের বারোটি নিকায় গঠিত হয়। দার্শনিক মতভেদের ধারায় এক সময়ে ১) শূন্যবাদ বা মাধ্যমিক সম্প্রদায়, ২) বিজ্ঞানবাদ বা যোগাচার সম্প্রদায়, ৩) বাহ্যানুমেয়বাদ বা সৌত্রান্তিক সম্প্রদায় এবং ৪) বাহ্যপ্রত্যবাদ বা বৈভাষিক সম্প্রদায় এই চারটি সম্প্রদায় প্রতিষ্ঠা লাভ করে।
ব্যবহারিক সংজ্ঞায় মাধ্যমিক ও যোগাচারকে ১) মহাযান এবং সৌত্রান্তিক ও বৈভাষিককে ২) হীনযান হিসাবে চিহ্নিত করা যায়। দার্শনিক
মতভেদ থাকলেও মূলত বৃহৎ আঙ্গিকে এরা বৌদ্ধধর্মেরই অনুসা
বৌদ্ধধর্মে মানুষের চরিত্র ও জীবনযাত্রার স্তরভেদে শীল পালনের ব্যবস্থা আছে। যারা গৃহী, পিতামাতা-স্ত্রী-পুত্র-কন্যা নিয়ে গৃহে বসবাস করে, তারা দিন ও রাতের অনেকখানি সময় গৃহস্থালির কাজে বা ব্যবসা বাণিজ্যে, কৃষি চাকরি প্রভৃতি বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকে। এ সমস্ত গৃহবাসী মানুষের জন্য ভগবান বুদ্ধ পাঁচটি শীল পালনের নির্দেশ দিয়েছেন। এই শীলকে পঞ্চশীল বা গৃহিশীল বলে।
পঞ্চশীল প্রার্থনা :
১। প্রাণী হত্যা হতে বিরত থাকার শিক্ষাপদ গ্রহণ করছি।
২। অদত্ত বস্তু গ্রহণ বা চুরি করা থেকে বিরত থাকার শিক্ষাপদ গ্রহণ করছি।
৩। অবৈধ কামাচার থেকে বিরত থাকার শিক্ষাপদ গ্রহণ করছি।
৪। মিথ্যা বাক্য বলা থেকে বিরত থাকার শিক্ষাপদ গ্রহণ করছি।
৫। প্রমত্ততার কারণ সুরা মৈরেয় দ্রব্য সেবন করা থেকে বিরত থাকার শিক্ষাপদ গ্রহণ করছি।
আবার গৃহীদের মধ্যে অনেকেই গৃহস্থালী পরিবেশ থেকে হাঁপিয়ে উঠেন। মাঝে মধ্যে সংসার থেকে বিরতি নিয়ে আরো কিছু ঘনিষ্টভাবে ধর্মীয় পরিবেশে নির্ঝঞাট জীবন কাটাতে প্রয়াসী হন। এরকম আগ্রহশীল মানুষের জন্য আটটি শীলের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এ শীলকে অষ্টশীল বা উপোসথ শীল বলে। অমাবস্যা, পূর্নিমা এবং অষ্টম তিথিতে এ শীল পালনের নির্দেশনা আছে। তবে কেউ স্বেচ্ছায় এই শীল প্রত্যহ পালন করতে বাধা নেই। এ শীলের বিশেষত্ব হচ্ছে গৃহীশীলের তৃতীয় শীল বাদ দিয়ে আরো চারটি শীল যুক্ত করা হয়েছে।
অষ্টশীল প্রার্থনা :
১। প্রাণীহত্যা হতে বিরত থাকার শিক্ষাপদ গ্রহণ করছি।
২। অদত্ত বস্তু গ্রহণ বা চুরি করা থেকে বিরত থাকার শিক্ষাপদ গ্রহণ করছি।
৩। অব্রহ্মচর্য থেকে বিরত থাকার শিক্ষাপদ গ্রহণ করছি।
৪। মিথ্যা বাক্য বলা থেকে বিরত থাকার শিক্ষাপদ গ্রহণ করছি।
৫। প্রমত্ততার কারণ সুরা-মৈরেয় মাদকদ্রব্য সেবন করা থেকে বিরত থাকার শিক্ষাপদ গ্রহণ করছি।
৬। বিকাল-ভোজন থেকে বিরত থাকার শিক্ষাপদ গ্রহণ করছি।
৭। নৃত্য-গীত-বাদ্য ইত্যাদি প্রমত্তচিত্তে দর্শন, মালাধারণ, সুগন্ধ দ্রব্য বিলেপন, মূল্যবান বস্তু (স্বর্ণালংকার, দামী বস্ত্র, ইত্যাদি) দ্বারা শরীর সুশোভিত করা থেকে বিরত থাকার শিক্ষাপদ গ্রহণ করছি।
৮। উচ্চশয্যা ও মহাশয্যায় (লেপ-তোষকাদি) শয়ন করা থেকে বিরত থাকার শিক্ষাপদ গ্রহণ করছি।
এই গেল অষ্টশীলের কথা।
জগতে মানুষও আছেন, যাঁরা সংসার করতে চাননা।, স্ত্রী, সন্তানসন্ততি প্রতিপালনকে বোঝা মনে করেন, সাংসারিক বিষয় আশয়কে দুঃখবৎ মনে করেন, এবং সংসার ত্যাগ করে শ্রামণ্য বা সন্ন্যাসজীবন যাপন করতে আগ্রহী, সেসব ত্যাগী শ্রমণ, ব্রাক্ষণ, সন্ন্যাসীদের জন্য বুদ্ধ ধর্মে দশটি শীল পালনের ব্যবস্থা আছে। ভিক্ষু শ্রমণেরা এই শীল পালন করেন বলে এটাকে শ্রমণশীল বা প্রবজ্যাশীলও বলে। ভিক্ষু শ্রমণ ব্যতীত শ্রদ্ধা সম্পন্ন গৃহস্থগণও ইচ্ছা করলে এ শীল পালন করতে পারেন। অথবা দশ সুচরিত শীল পালন করতে পারেন। এই শীলে প্রতিষ্ঠিত থেকে মকল মানুষ পাপ থেকে বিমুক্ত হয়ে সুন্দর জীবনের অধিকারী হতে পারেন।
দশ সুচরিত শীল
১। প্রাণীহত্যা হতে বিরত থাকার শিক্ষাপদ গ্রহণ করছি।
২। অদত্ত বস্তু গ্রহণ বা চুরি করা থেকে বিরত থাকার শিক্ষাপদ গ্রহণ করছি।
৩। অব্রহ্মচর্য থেকে বিরত থাকার শিক্ষাপদ গ্রহণ করছি।
৪। মিথ্যা বাক্য বলা থেকে বিরত থাকার শিক্ষাপদ গ্রহণ করছি।
৫। পিশুন বাক্য বা বিভেদ সৃষ্টিকর কথা বলা থেকে বিরত থাকার শিক্ষাপদ গ্রহণ করছি।
৬। পরুষ বাক্য বা কর্কশ বাক্য বলা থেকে বিরত থাকার শিক্ষাপদ গ্রহণ করছি।
৭। সম্প্রলাপ বা বৃথা বাক্যালাপ থেকে বিরত থাকার শিক্ষাপদ গ্রহণ করছি।
৮। পর সম্পত্তিতে লোভ করা থেকে বিরত থাকার শিক্ষাপদ গ্রহণ করছি।
৯। ক্রোধ-হিংসা বা অন্যের অনিষ্ট চিন্তা করা থেকে বিরত থাকার শিক্ষাপদ গ্রহণ করছি।
১০। মিথ্যাদৃষ্টি (অন্ধবিশ্বাস ও কর্মফলে অবিশ্বাস) থেকে বিরত থাকার শিক্ষাপদ গ্রহণ করছি।
বৌদ্ধমতে চিত্ত ও ভূত এই দুটি হল জগতের মূল তত্ত্ব। এর মানে চিত্ত থেকে সমস্ত চৈত্ত পদার্থের এবং ভূত থেকে জগতের সমস্ত ভৌতিক পদার্থের উৎপত্তি হয়েছে।
ক্ষিতি, অপ, তেজ ও মরুৎ, এই চারটি হল ভৌতিক পদার্থ এবং এই চার ধাতুর বা পরমানুর সংহতি থেকেই বিশ্বের সব কিছুর সৃষ্টি। এই চার ধাতুর আবার চার রকম স্বভাব আছে--- খর, স্নেহ, উষ্ণ ও গতিশীল। আকর্ষণ, বিকর্ষণ প্রভৃতিও এই স্বভাবের অন্তর্গত। চৈত পদার্থের মধ্যে আছে রূপ, বিজ্ঞান, বেদনা, সংজ্ঞা ও সংস্কার। এই পাঁচটি হল অবয়ব। রূপে ইন্দ্রিয়ের সম্বন্ধ, বেদনায় সুখ-দুঃখের অনুভব, বিজ্ঞানে অহংভাব, সংজ্ঞায় ভেদভাব ও সংস্কারে ভাব। এই সংস্কারই মানুষের সমস্ত অবিদ্যার মূলে। এর থেকেই রাগ, দ্বেষ প্রভৃতির জন্ম। ধর্ম-অধর্ম প্রভৃতির ধারনা ও ক্ষণস্থায়ী পদার্থকে চিরস্থায়ী বলে কল্পনা।
বৌদ্ধমতে সবকিছুই ক্ষণিক, দুঃখময়, বিসদৃশ ও অলীক।
বুদ্ধের মৃত্যুর প্রায় চারশো বছর পরে তাঁর বানী লিপিবদ্ধ করা হয়।
চলবে
ধর্মসার- (১) লাও-ৎসু ও 'তাও' এর বাকি অংশ
ধর্মসার- (২) কনফুসিয়াস ও তাঁর ধর্ম
ধর্মসার- (৩) বর্ধমান মহাবীর ও জৈনধর্ম
ধর্মসার- (৪) জরথুসত্র ও পারসীক ধর্ম
"ঝাঁপি খুলে বহু পুরাতন একটি নোটবই পেলুম। তখনকার দিনে আমাদের দেশে ইন্টারনেটের সুবিধা ছিলনা। বই-পুস্তক ঘেঁটেই যা কিছু পাওয়া। কখন, কোথায়, কিভাবে এগুলো পেয়েছিলাম, তা আজ আর মনে করতে পারিনা তাই সূত্র জানাতে পারবোনা। ক্ষমা করবেন।"
প্রৌঢ়ভাবনা
মন্তব্য
পড়ে ভাল্লাগ্লো
বুদ্ধের পুরো নাম সিদ্ধার্থ গৌতম। গৌতম তাঁর গোত্রনামই। তখনকার দিনে গোত্রনাম ব্যবহারের প্রচলন না থাকলেও রাজপরিবারের সদস্যদের ক্ষেত্রে অনেক সময় ব্যবহৃত হতো।
গৌতম বুদ্ধের জন্মের আগেও আরও অসংখ্য বুদ্ধের আগমনের কথা বলা হয়েছে। গৌতম বুদ্ধ নিজেই নাকি বলেছেন বুদ্ধের সংখ্যা আকাশে তারার সংখ্যার চেয়েও বেশি। পরবর্তী বুদ্ধের নাম হবে মৈত্রেয়। গৌতম বুদ্ধের শিক্ষা যখন বিলীন হবে তখন নাকি হবে মৈত্রেয়র আগমন। আবার অনেকের মতে মৈত্রেয় মেটাফোর। কারণ, প্রত্যেকেই যখন বুদ্ধ হতে পারে তখন তেমন একজনের জন্য প্রতীক্ষা অর্থহীন।
ধন্যবাদ, বিস্তারিত মতামতের জন্য।
১. রাহুল সাংকৃত্যায়নের 'ভোলগা থেকে গঙ্গা' ইতিহাস আশ্রয়ী - কিন্তু ইতিহাস নয়। আপনার 'ফ্যাক্ট' লিখতে নিয়ে 'ফিকশন'কে রেফারেন্স হিসেবে ধরাটা কি ঠিক হলো?
২. গৌতম, বুদ্ধ, সিদ্ধার্থ, শাক্যসিংহ, তথাগত, মৈত্রেয় - প্রত্যেকটিই উপাধী/বিশেষণ/জনপ্রিয় নাম। শুদ্ধোধন-মায়াদেবী'র পুত্রের নাম সম্ভবত এখনো অজ্ঞাত।
৩. দশ অকথনীয় বাক্যগুলো কী?
৪. অশ্বঘোষদের আমলেই এই বস্তুবাদী মতটি চূড়ান্তভাবে ধর্মের রূপ পরিগ্রহন করে। মহাযান-হীনযান-বজ্রযান ইত্যাদি অ-বুদ্ধ মতবাদ আজকে বৌদ্ধ ধর্মের নাম নিয়ে টিকে আছে।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
পাণ্ডব দা, বুদ্ধের দশ অকথনীয়গুলো এখানে এই পোস্টের একেবারে নিচের অংশে পাবেন, দেখতে পারেন।
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
@ রণদীপম বসু -- আমার এই লেখার শেষদিকে আপনার লেখার একটি লিঙ্কের উল্লেখ করেছি, আপনার অনুমতি নেবার সুযোগ হয়নি, আমি ক্ষমাপ্রার্থী।
ধন্যবাদ, আপনার বিশ্লেষণমূলক মন্তব্যের জন্য।
উপকৃত হলাম। আগামীতে সাবধান হব।
চরযাপদের সহজিয়া পথ থেকে কিছুটা ধারনা করা যায় সিন্ধু-গনগা-ব্রহ্মপুত্র অববাহিকা এলাকায় মানুষের জীবনদররশনে তান্ত্রিক ধারনা কতটা গভীরে ধরা ছিল। সেখান থেকেও প্রক্ররিত বউদ্ধধরম নিয়ে কিছুটা ধারনা পাওয়া যেতে পারে।
মিথিলা ছিল। কিন্তু দারশনের গতি সম্বন্ধে সীমিত ধারনা নিয়ে যে কেউ বুঝবে যে গউতম নামে কোন রাজপুত্র-সন্য়াসি (যদি থাকে)'র একক প্রচেষ্টায় প্রজ্ণা-উপায়-বোধিজ্ণান 'আবিস্কার' করা অসম্ভব। সব দরশন-ধরমের মতই একটি প্রতিষ্ঠান ও তার পেছনের ক্ষমতা-শক্তির কাঠামো বউদ্ধধরমকে এগিয়ে নিয়ে গেছে।
***
আমাদের জানতে হবে যে অহিনংসার বানীর প্রচার একেবারেই অহিনংস ছিলনা। মোঊরজ-কম্বোজ তলোয়ারের নিচে যে জীবনব্য়াবস্থা অক্সাস থেকে মেকনং মধ্য়বরতী সবগুলো জনপদে প্রসার লাভ করেছে সেটার বিবরতিত অ-তান্ত্রিক ও পউত্তলিকত রূপকে আমরা এখন দেখতে পাই।
একটাও বাদ দেই নি, সবগুল পড়েছি। কত কিছু যে জানতে পারছি আপনার লেখাগুলো থেকে
“Peace comes from within. Do not seek it without.” - Gautama Buddha
ধন্যবাদ, শুরু থেকে উৎসাহ যোগানোর জন্য।
ভাল থাকুন।
আপনার সাথে সহমত পোষণ করে একটু ইতিহাসের দিকে তাকাই।
ইতিহাস ঘেঁটে যেটুকু জানা যায়, বর্নাশ্রম প্রথার কারনে তখন উচ্চ বর্গীয় ব্রাহ্মণদের উপর সাধারন জনেদের ভক্তি বা বিশ্বাসে ভাটা পড়েছিল। বৈদিক রীতি-প্রথার উপর সাধারন জনের বিশ্বাসেও ভাটা পড়েছিল। রাজন্য ও সামন্তদের একাংশের সহায়তায় তখন জৈবলী, উদ্দালক, যাজ্ঞবল্ক্য, গার্গী প্রভৃতি শ্রাস্ত্রজ্ঞগণ ব্রহ্মবাদ ও পূনর্জন্মের ধারনা প্রচার করতে থাকেন। সনাতন ধর্মে এই মতবাদ পূর্বে ছিলনা। এর পাশাপাশি বুদ্ধ তাঁর দর্শন প্রচার করতে থাকেন। তিনি শাক্যবংশীয় হওয়ার কারনে কোশলরাজ্যের রাজধানি শ্রাবস্তীর রাজআমাত্য, সামন্ত ও ব্যবসায়ীগণ প্রচুর ধন-সম্পদ দিয়ে বুদ্ধকে সহায়তা করেছিলেন। বুদ্ধ দর্শনে সকলের অধিকার সমান হওয়ার কারনে সাধারন জনেরাও তাঁর দর্শনের প্রতি আকৃষ্ট হয়। পরবর্তীতে রাজা অশোকের পৃষ্ঠপোষকতায় বৌদ্ধ ধর্মের প্রসার ঘটে।
ধন্যবাদ, সুচিন্তিত গঠনমূলক মন্তব্যের জন্য।
ইতিহাস ও পুরাণ এক করে দেখলে কিছু অসুবিধা হতে পারে।
শুরুতেই যেটা জানা দরকার সেটা হল গৌতম উত্তর ভারতের ক্ষত্রিয় সম্প্রদায়ের একটি গোত্রের নাম, যারা শাক্য জনপদে বাস করত। 'বুদ্ধ' বা 'সিদ্ধার্থ' একটি মানসিক অবস্থার নাম। এই হিসেবে শাক্য জনপদের গৌতম গোত্রের অনেকেই 'বুদ্ধ' বা 'সিদ্ধার্থ' হতে পারে।
বৌদ্ধপুরাণ যে একজন মহামতিকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়, সেই ব্যক্তিটির কোন প্রত্নতাত্ত্বিক প্রমাণ নিদর্শন এখনো কোথাও পাওয়া যায়নি। এমনকি কপিলাবস্তু, লুম্বিনী ইত্যাদি জনপদ ঠিক কোথায় অবস্থিত, সেটাও বিতর্কিত।
দিনের শেষে বৌদ্ধধর্ম একটি ধর্ম। ধর্মের নিয়ম মেনে এর কেন্দ্রীয় চরিত্র বুদ্ধের বসবাস পুরাণে এবং সে বাস্তবতার ধার ধারেনা। গৌতম বৌদ্ধকে তাই ইতিহাসে খোঁজাখুজিতে কোন বাধা নেই, কিন্ত আমাদের হতাশ করে তিনি ইতিহাস থেকে আপাতত ফেরারী।
আরো সহজ ভাষায় লিখলে ভালো হতো
ধন্যবাদ, পড়বার জন্য।
সহজ কথা যায়না বলা সহজে।
সিরিজটা পড়ছি। নতুন করে একটা রিভিউ হচ্ছে আমার
তবে আরেকটু গভীরে গেলে বোধহয় আরেকটু ভালো হয়
রবি ঠাকুরের সাথে সুর মিলিয়ে বলি---- জগতের সবচেয়ে বুদ্ধিমান ব্যক্তিটির নাম বুদ্ধদেব।
facebook
ধন্যবাদ, সচল তারেক অনু।
তা সে প্রায় পঁয়ত্রিশ বছর আগের কথা। ঝোক চেপেছিলো তাই অনেক খুঁজে পেতে যা কিছু পেয়েছিলাম, কিছু নোট করে রেখেছিলাম, সেকালে এ সংক্রান্ত বইপত্রও দূর্লভ ছিল। তাই খুব বেশী গভীরে যেতে পারছিনা। আপনাদের আলোচনা-মন্তব্যের মাধ্যমেই অনেক কিছু উঠে আসবে, আশা করছি।
পড়ছেন জেনে ভাল লাগলো।
চলুক! পড়ে যাচ্ছি, শিখে নিচ্ছি অনেক কিছু!
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
ধন্যবাদ, উৎসাহ যোগাবার জন্য।
আপনার ইমেইল চেক করবেন অনুগ্রহ করে।
নতুন মন্তব্য করুন