পুরাণকথা, পর্ব-৭ (ভারতকথাও বটে)
পুরাণকথা, পর্ব-৭ (ভারতকথাও বটে)
প্রাচীণকালের বিভিন্ন পর্যায়ে দেখছি, অনেক মুনি-ঋষির জন্ম অদ্ভুত ও অলৌকিক। যেমন দখা যাক দ্রোণের জন্ম বৃত্তান্ত। দ্রোণের পিতা মহর্ষি ভরদ্বাজ গঙ্গার ধারে বাস করতেন। একদিন তিনি গঙ্গাস্নানে গিয়ে দেখলেন, ঘৃতাচী নাম্নী এক অপ্সরা গঙ্গায় স্নান করে তীরে দাড়িয়ে আছে। হঠাৎ জোরে বাতাশ এসে ঘৃতাচীর শরীর থেকে সমস্ত বস্ত্র উড়িয়ে নিয়ে গেল। মহর্ষি ভরদ্বাজ, ঘৃতাচীর মত সুন্দরী যুবতী অপ্সরাকে বিবসনা দেখে তখনই তার সঙ্গে বিহারের বাসনায় কাতর হয়ে পড়লেন। আর ঘৃতাচীর সামনেই ব্রহ্মচারী মহর্ষি ভরদ্বাজের রেতঃস্খলন হয়ে গেল। রেতঃস্খলন হবামাত্র মহর্ষি তা দ্রোণী মধ্যে স্থাপন করলেন এবং তা থেকেই ধীমান দ্রোণ উৎপন্ন হলেন।
দ্রোণী শব্দের অর্থ জলের গামলা।
এ রকম মুনিশ্রেষ্ঠদের জন্ম আরও অনেক পাওয়া যায়। আর এক অধ্যায়ে দেখছি, পরাশর মুনি, বিদেহরাজকে বলছেন, 'জন্মনিবন্ধন মহর্ষিদের অপকৃষ্ট হবার কোন সম্ভাবনা নেই। তাঁরা তপোবলেই আত্মার উৎকর্ষ সাধন করে থাকেন। বিশেষতঃ তাঁদের পিতারা, যে কোন স্থানে, যে কোন যোনিতে তাঁদের উৎপাদন করে তপোবলে তাঁদের ঋষিত্ব বিধান করেন।'
বশিষ্ট, বিভাগুরুপুত্র ঋষ্যশৃঙ্গ, বেদ, তান্ড্য, কৃপ, কাক্ষীবান, কমঠ, সবক্রীত, দ্রোণ, আয়ু, মতঙ্গ, দ্রুমদ, মাৎস্য প্রভৃতি মহর্ষিগণ অপকৃষ্ট যোনীতে জন্মগ্রহন করেছেন। তপোবলে ঋষিত্ব লাভ করে বেদবিদগ্রগণ্য ও দমগুন সম্পন্ন হয়েছিলেন।
'যোনি' শব্দের ধাতুগত অর্থ উৎপত্তিস্থান। এখন অপকৃষ্ট যোনি বলতে যদি অপ্সরা বা অনামা স্ত্রীলোক বোঝায় তাহলেই প্রয়োজন হয়ে পড়ে দ্রোণী বা কুম্ভযোনি ইত্যাদি বস্তুর নামের সাহায্য নেওয়া।
যে কোন ভাষ্যে, যে ভাবেই ব্যাখ্যা করা হোক, নরনারীর দৈহিক মিলন ব্যতীত লোকসৃষ্টি একটি অসম্ভব ব্যাপার।
ভারত ইতিহাসের আদিখন্ডেই বিবৃত হয়েছে, 'রামাগণ, আত্মার সনাতন পবিত্রক্ষেত্র, ঋষিদিগের এমন শক্তি নাই যে, স্ত্রী ব্যতিরেকে প্রজা সৃষ্টি করিতে পারেন।'
পুরুষ ব্যতীত স্ত্রী জাতি গর্ভধারণ করিতে পারেন না। স্ত্রী জাতি ব্যতীত পুরুষও কখনও সন্তান উৎপাদনে সক্ষম নয়।
স্ত্রীলোকের ঋতুকালে, (ঋতুস্নানের ১৬ দিন) পুরুষের পরস্পর সহযোগ দ্বারাই সন্তান সন্ততির জন্ম হয়। বেদ ও স্মৃতিশাস্ত্রে নির্দিষ্ট আছে, পিতা হতে অস্থি, স্নায়ু ও মজ্জা, মাতা হতে ত্বক, মাংস ও শোণিত সমুৎপন্ন হয়ে থাকে।
'কুম্ভা' শব্দের অর্থই বেশ্যা। অগস্ত্য ও বশিষ্টের জন্ম কুম্ভা যোনিতে। কালক্রমে কুম্ভার আ-কারটি কেটে দিয়ে কুম্ভ করা হয়েছে।
জন্মের সঙ্গে প্রতিভার কোন সম্পর্ক নেই। এরকম অনেকের কথাই বলা যায়, যাঁরা হীনযোনিতে জন্মেও ব্রাহ্মণ হয়েছিলেন। ব্রাহ্মণ কোন বংশধারায় জন্মাতোনা। প্রতিভা ও জ্ঞান এবং তপোবলের দ্বারাই ব্রাহ্মণত্ব লাভ করা সম্ভব ছিল।
নরনারীর মিলন ব্যতীরেকে কোন সন্তানই উৎপাদন সম্ভব ছিলনা।
বর্তমান কালে অবশ্য ভ্রুণকে স্ত্রীলোকের জরায়ুতে প্রবেশ করিয়ে সন্তান ধারনের বৈজ্ঞানিক চেষ্টাটি সফল হয়েছে।
চলবে
"ঝাঁপি খুলে বহু পুরাতন একটি নোটবই পেলুম। তখনকারদিনে আমাদের দেশে ইন্টারনেটের সুবিধা ছিলনা। বই-পুস্তক ঘেঁটেই যা কিছু পাওয়া। কখন, কোথায়, কিভাবে এগুলো পেয়েছিলাম তা আর এখন মনে করতে পারিনা। তাই সূত্র জানাতে পারবোনা, ক্ষমা করবেন।"
প্রৌঢ়ভাবনা
মন্তব্য
ডাকঘর | ছবিঘর
ধন্যবাদ, পড়বার জন্য।
“Peace comes from within. Do not seek it without.” - Gautama Buddha
ধন্যবাদ।
আর্য পুরাণের মুনি, ঋষি, দেবতারা দেখি সবসময়ই মারাত্নক কামার্ত থাকতেন! সব সময়ই!!
facebook
আর কী বাড়াবাড়ি রকমের পার্ভার্ট উনারা ! লাজ লজ্জার বালাই নাই একদম!!
“Peace comes from within. Do not seek it without.” - Gautama Buddha
আরে এমন এমন সব ব্যাপার আছে যে বলার মতো নয়। শালাদের যে কত ইয়ে ছিল.........
পার্ভার্ট নয় পার্ভার্ট দ্য গ্রেট। আমরা গ্রীক দেব দেবীদের গালাগাল দেই। কিন্তু ওরা তো খুল্লমখুল্লা সব করত, আর এনারা সব করেন কিন্তু লুকিয়ে লুকিয়ে, আবার কি পরম শ্রদ্ধা ভক্তির কথাও বলেন...
এই গুলি নাকি ধর্মের পালনের অঙ্গ ? শালা ব্লাডি .*******.
ডাকঘর | ছবিঘর
"বর্তমান কালে অবশ্য ভ্রুণকে ঋতুকালীন স্ত্রীলোকের জরায়ুতে প্রবেশ করিয়ে সন্তান ধারনের বৈজ্ঞানিক চেষ্টাটি সফল হয়েছে।" - কী অর্থে বললেন বঝি নাই? টেস্ট টিউব বেবি? surrogacy? ঋতুকালীন সময়ে গর্ভধারণ কী স্বাভাবিক?
আর পর্বগুলো কেমন খাপছাড়া লাগছে, কিছুটা অসম্পূর্ণও বটে।
লেখালেখি চলুক, শুভ কামনা
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
নতুন মন্তব্য করুন