• Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_clear_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_electoral_list_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_results_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_writeins_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).

কন্ডের সাহেবের ঢাকা - ২

সত্যপীর এর ছবি
লিখেছেন সত্যপীর (তারিখ: সোম, ০২/০১/২০১২ - ২:৫৭অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

প্রথম পর্ব এখানে

ঢাকা শহরের লোকেরা বেশ শিষ্ট প্রকৃতির, নিয়মকানুন মেনে চলায় এদের গাফিলতি কম। ইংরেজী ভাষা ও চালচলন অনুসরনে এদের অসীম আগ্রহ। “এদের হাটবাজারের নিম্নমানের দোকানপাটে সাজগোজের বাক্স, লিখার কলমদান, ছুরি কাঁটা চামচ, বাহারি কাপড়, পিস্তল আর পাখিশিকারের যন্ত্রপাতি ইত্যাদি বিলিতি আর সস্তা বিলিতি ইমিটেশনের জিনিষ দেখে বোঝা যায় এরা কতটা ইংরেজপ্রেমী।” বলেন বিশপ। “মহান যীশুর গ্রন্থের অনুসারীও প্রচুর। একটি ব্যাপ্টিস্ট মিশনারী ছাব্বিশটি স্কুল চালায়, সেখানে এক হাজারের ওপর ছাত্র প্রতিদিন বিনা আপত্তিতে নিঊ টেস্টামেন্ট অধ্যয়ন করে।” মূর্তিপুজারী হিন্দুর একটি শাখা, “সত্য গুরু”, মহান যীশুর ধর্মকে মেনেও নিয়েছে।

ঢাকার নবাবের নবাবী বহু আগেই গেছে, কোন রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নেবার ক্ষমতা তাঁর নেই। মাস গেলে হাজার দশেক রূপি আর কিছু পাইক পেয়াদাই তাঁর ভরসা। বিশপ একবার তাঁর পুত্রসহ তাঁর সাথে দেখা করেছিলেন। নবাব সুদর্শন বৃদ্ধ মানুষ, এতই ফর্সা যেন জোর করে প্রমান করার চেষ্টা তাঁর শরীরে উত্তর ভারতের মুসলমান রক্ত বইছে। বিশেষতঃ তাঁর হাত যেকোন ইয়োরোপীয়দের মতই সাদা। তাঁর পরেনে ছিল সফেদ সাদা মসলিন, পাগড়িতে ছোট্ট সোনার ঝুমকা। তাঁর ছেলের মাথায় ছিলো বেগুনী পাগড়ি, সোনা আর রত্নের কাজ করা। দুজনের আঙুলেই ঝলমল করছিলো হিরে। হুক্কা টানতে টানতে নবাব চোস্ত ইংরেজীতে ইতিহাস আর স্প্যানিশ যুদ্ধ নিয়ে জ্ঞান ফলাচ্ছিলেন। তাঁর ছেলের বয়স তিরিশের মত, বাপের চেয়ে কৃষ্ণকায়। শিক্ষাদীক্ষায়ও অগা মনে হল, ইংরেজীতে কিছু বলতে পারছিলো না।

নবাবের লোকেরা খুশবাই আতর নিয়ে এলে আমরা উঠে দাঁড়িয়ে হাত বাড়িয়ে দিলাম। নবাব মৃদু হাস্য করে বললেন, “আমাদের কালাকানুন তো সবই শিখে নিলেন দেখছি!” পরে নবাবের পেছন পেছন সিঁড়ির দিকে এগিয়ে গেলাম। রূপার দন্ডহাতে পেয়াদা দাঁড়িয়ে ছিল, নিচে ঘোড়ার গাড়ি নিয়ে কোচোয়ান। গাড়িটা সেকেন্ড হ্যান্ড মাল, এমনকি হাতলে খোদাই করা আগের মালিকের নামটা পর্যন্ত পড়া যাচ্ছিলো! নবাব গাড়িতে ওঠার সময় পেয়াদারা চেঁচিয়ে নবাবের পরিবারের গুণকীর্তন করছিলো...যুদ্ধের সিংহরাজ, বিজ্ঞ দূরদর্শী, অতি উচ্চ ও পরাক্রমশালী রাজপুত্র হেন তেন। পুরো জিনিষটাই মেকি, যেনো করতে হবে তাই করা। শুনে সত্যিকার ভক্তি হওয়ার বদলে মনে হচ্ছিলো ইংল্যান্ডের কোর্টের বিতং শুনছি।

পরের রবিবার আমরা গীর্জার গোরস্তান দেখতে গেলাম। সে এক জংলী নিরানন্দ জায়গা, চারধারে উঁচু দেওয়াল। মূল শহর থেকে মাইলখানেক দূরে, ঝোপজঙ্গলে ঘেরা বড় গোরস্তান। অল্প কিছু কবর, বেশিরভাগই পুরনো। ঢাকা শহরের প্রথমদিকের কোম্পানীর স্বর্ণযুগের আমলের কথা। এক জায়গায় দেখলাম প্যাগেট সাহেবের কবর, ঠিক একশ বছর আগে ১৭২৪ সালে তিনি কোম্পানীর ধর্মযাজক হিসেবে মৃত্যুবরণ করেন। কয়েকটা কবর ভারি সুন্দর, একটায় ছিলো মুসলমানদের মত গম্বুজওলা টাওয়ার, তাতে আবার আটটা জানালা। বুড়ো দারোয়ান জানালো ওইটা নাকি “কোম্পানী কা নোকর কলাম্বো সাহেব” এর কবর। কোম্পানীর মেলা নোকরের নাম আমার জানা, কলাম্বো সাহেবের কথা কখনো শুনেছি বলে মনে পড়ে না। কলাম্বো নামটাই ইংরেজ নাম হিসেবে সন্দেহজনক, কিন্তু কবরে কোন খোদাই না থাকায় গোরস্তানের দারোয়ানের কথাই মেনে নেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ বিবেচনা করলাম।

আরেক বিকেলে আমরা নৌকা করে গেলাম পাগলার পুল দেখতে, ঢাকা থেকে মাইল চারেক দক্ষিনে। খুব সুন্দর গথিক স্টাইলের স্থাপনা, স্থানীয় লোকজনের তৈরী কিনা বুঝতে পারলামনা। মাঝি বলছিলো ওটা নাকি এক ফরাসী সাহেবের কাজ।

যাহোক ঢাকা ছেড়ে ধলেশ্বরী নদী ধরে আমরা এগোতে থাকলাম। অদ্ভুত এই নদীপাড়ের দেশগুলি, মাটির ঘরগুলি জড়োসড়ো হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। কিছু ঘরবাড়ি আবার পানির উপরে। কিছুদূর এগিয়ে আমরা নবাবগঞ্জ বলে একটা সুন্দর গ্রামে রাত কাটালাম। সেখান থেকে পদ্মা নদী ধরে এগিয়ে আমরা একটা বর্ধিষ্ণু হিন্দু গ্রাম ভগবানগোলায় এসে থামলাম। ভগবানগোলায় তখন ভুট্টামেলার সময়, গ্রামভর্তি গোমস্তা গিজগিজ করছিল। গ্রামের খোলা এলাকায় ছোট বাচ্চারা খেলাধুলা করছিলো, গরু ছাগলও গুনে শেষ করা যায়না। অগুনতি নৌকা বীচে বাঁধা, থেমে থেমে ভেসে আসছিলো নানা রকম বাদ্যযন্ত্রের সুর। কোন কোন ঘরের দাওয়ায় গাতক ফকিরের দল, গানবাজনায় এরা অতি ওস্তাদ। পাশেই ছিলো কিছু মেয়ের দল, সাজপোষাক আর উগ্র আচরন দেখে বোঝা যায় এরা নাচওয়ালী। ভগবানগোলা নদীর ভাঙনে এতবার চুরমার হয়েছে যে গ্রামে একটা পুরোনো বাড়ি কি মন্দির মসজিদ কিছু নেই। পুরো গ্রামটাকে একটা অস্থায়ী শিবির বললে খুব ভুল বলা হয় না।

এরপরে আমরা মুর্শিদাবাদ নদী ধরে বহরমপুরের দিকে রওনা দিলাম।

(শেষ)

সত্যপীর
eval(unescape('%64%6f%63%75%6d%65%6e%74%2e%77%72%69%74%65%28%27%3c%61%20%68%72%65%66%3d%22%6d%61%69%6c%74%6f%3a%6d%69%72%31%37%38%40%79%61%68%6f%6f%2e%63%6f%6d%22%3e%6d%69%72%31%37%38%40%79%61%68%6f%6f%2e%63%6f%6d%3c%2f%61%3e%27%29%3b'))

…...............................................
“ওয়া লাল আখিরাতু খাইরুন লাকা মিনালে উলা”
অতীতের চেয়ে নিশ্চয় ভালো হবে ভবিষ্যত।

পাদটীকা

  • ১. কোম্পানীর মাল কিনার দায়িত্বে নিয়োজিত সরকারী এজেন্ট


মন্তব্য

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

চমৎকার, এমন সিরিজ আরো চলুক।

মিথ্যা বর্ণনা, ভুল ইন্টারপ্রেটেশনে ভরা এক উন্নাসিক ইউরোপীয় বয়ান। এগুলোকে ইতিহাস না বলে ঐতিহাসিক গল্প বলাই ভালো। আফসোস! সে সময়ের কথা এ'দেশীয়দের জবানীতে খুব কমই পাওয়া যায়। আর নিম্নবর্গের মানুষের চোখে দেখা ইতিহাস তো একেবারেই পাওয়া যায় না।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সত্যপীর এর ছবি

কয়টা জায়গা খুব ইন্টারেস্টিং পান্ডবদা, এক হাজার ছাত্র "বিনা আপত্তিতে" বাইবেল পড়ছে দেখে তাঁর বিস্মিত হবার অংশটি লক্ষ্যণীয়। একটা ছেলে বা ছেলের বাপও যে টান দিয়ে মহান যীশুর গ্রন্থ ফেলে দেয়নি তাতে বিশপের মহা আনন্দ। সাদা লোকের প্রতি আমাদের এই অন্ধ ভক্তি আজও আছে, আইএমএফ ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের উচ্চপদের অপদার্থ অফিসারদের রেকমেন্ডেশন আমরা আজও "বিনা আপত্তিতে" মেনে নেই। পাঁচতারা হোটেলে ব্রেকফাস্ট খেতে খেতে তারাও নিশ্চই বিশপ সাহেবের মত আমাদের হাঁদারাম ভেবে মনে মনে হাসে।

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

(Y)

হিমু এর ছবি

নবাবের ছেলে কালো কেন কর্তৃপক্ষ জবাব চাই!

সত্যপীর এর ছবি

দুষ্টু বেগম।

ধুসর গোধূলি এর ছবি
সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি
ওডিন এর ছবি

এইখানে কি নারিন্দার খ্রীস্টান কবরস্থানের কথা বলা হচ্ছে?

আর লেখা চলুক।

সত্যপীর এর ছবি

ঠিক সিওর না, হতে পারে। নবাব বাড়ি থেকে নারিন্দা মাইলখানেক দূরে ঠিকই, কিন্তু জোর দিয়ে বলতে পারছিনা। মূল বইয়ে নাম উল্লেখ নেই।

তবে ধরেছেন কাছাকাছি, আমারো মনে হয় নারিন্দা কবরস্তান হতে পারে। নারিন্দা গীর্জায় গেছি গোরস্তানে যাওয়া হয়নি কখনো।

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

পড়তেছি


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

সত্যপীর এর ছবি

(ধইন্যা)

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

দুই পর্বেই শেষ হলে কেমনে হবে?

সত্যপীর এর ছবি

আমি চরম আইলসা মানুষ, এক ঘন্টার বেশি একনাগাড়ে টাইপ করতে মুঞ্চায়না। দুই তিন পর্বের বেশি এক টপিক লিখা তাই অসম্ভব।

চিন্তা নিয়েন না ভাই, ড্যানিশ ইস্ট ইন্ডিয়া নিয়ে লিখতেসি এখন, শেষ হইলেই পোস্ট দিব দিনকয়েকের মধ্যে। সাথে থাকবার জন্য থ্যাঙ্কু।

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

ড্যানিশই দেন। (Y)

সত্যপীর এর ছবি

দিমু দিমু। 8)

ব্যাঙের ছাতা এর ছবি

(পপ্পন) ডযানিশদের জন্য অপেক্ষায় আছি! :)

সত্যপীর এর ছবি

(কোলাকুলি)

রানা মেহের এর ছবি

দুটো পর্বই খুব ইন্টারেস্টিং। চলুক

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।