গত ১ জানুয়ারি ফেইসবুকে বুয়েটের আপডেট পাচ্ছিলাম বিভিন্ন বন্ধুর স্ট্যাটাস, ব্লগ ও ফেইসবুক পেইজের মাধ্যমে। দেখলাম, সবাইকে বুয়েটে যেতে বলা হয়েছে বিকাল চারটা থেকে পাঁচটার মধ্যে। যাবো কিনা যখন ভাবছিলাম, তখনই ফেইসবুকে ইশানের এক্সরে রিপোর্টের ছবি দেখলাম। এটা দেখে আর থাকতে পারি নাই। ছুটে গেলাম বুয়েটে। ’০৬ ব্যাচের অনেকেই তখন হলে গেছে সারা রাত ক্লান্তির পর হয়তো একটু জিরিয়ে নেবার আশায়। সন্ধ্যার পর থেকে আবারো যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে কিনা! যাই হোক, সন্ধ্যার দিকে আমাদের ’০৪ ব্যাচের বেশ কিছু বন্ধু আসলো, অন্যান্য ব্যাচের স্টুডেন্টরাও আসতে শুরু করলো একে একে। আমরা ’০৬ এর ভাইদের বললাম যে আমরা তাদের সাথে আছি। তারা আমাদের বলল তাদের উদ্দেশ্যে কিছু বলতে। তখন তাদের যে কথাগুলো বলেছিলাম, সেগুলোই আজ এখানে লিখে দিচ্ছি।
এই ঘটনা সম্পর্কে শুনেই আমার মন ফিরে যায় ২ বছর আগের এমনই এক সময়ে (তখন আমরা ছিলাম সিনিয়র মোস্ট ব্যাচ), যখন আমার দুই বছরের জুনিয়র ’০৬ ব্যাচের কিছু ছেলে আমার সাথে বেয়াদবি করেছিলো। মজার ব্যাপার হচ্ছে, যারা তখন আমার সাথে খারাপ ব্যাবহার করে, তারাই কিন্তু সাম্প্রতিক এই আন্দোলনের নেতৃত্ব দেয়। আরো মজার ব্যাপার হচ্ছে, যদ্দূর জানি, আন্দোলনের নেতৃত্ব দানকারী এই ছেলেগুলোও ছাত্রলীগ করতো বা করে। দুই বছর আগে আমি ওদের বলেছিলাম, “তোমরা তো আজ আমার সাথে বেয়াদবি করলা, কিছু দিন পরে যখন তোমাদের দুই বছরের জুনিয়ররা তোমাদের সাথে বেয়াদবি করবে, তখন বুঝতা পারবা, কেমন লাগে!” আমি স্বপ্নেও ভাবি নাই, আমার ভবিষ্যদ্বাণী এভাবে ফলে যাবে! যাই হোক, আমার সাথে তাদের আচরণ ভুলে যাওয়ার চেষ্টা করেই তাদের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছিলাম। কারণ, আমার কাছে ’০৬, ’০৮ ব্যাচ মুখ্য ছিলো না, মুখ্য ছিলো বুয়েটের ট্র্যাডিশনাল জুনিয়র-সিনিয়র সম্পর্কে ফিরিয়ে আনার তাগিদ, বুয়েটকে বাঁচানোর তাগিদ।
মূল কোথায় যাওয়ার আগে বুয়েটের এই সিনিয়র-জুনিয়র সম্পর্কের ইতিহাসটা একটু দেখে নেয়া যাক। বুয়েটের সিনিয়র-জুনিয়র সম্পর্ক বরাবরই অনেক আন্তরিক। অন্যান্য ভার্সিটির স্টুডেন্টরা যেসব বিষয়ে বুয়েটিয়ানদের ঈর্ষা করে, সেসবের মাঝে মনে হয় এটাও একটা। আগেও বুয়েটে রাজনীতি ছিলো, এখনো আছে। কিন্তু কখনোই কোন স্টুডেন্টের রাজনৈতিক পরিচয় তার ব্যাচ, হল কিংবা ডিপার্টমেন্টের পরিচয়ের ঊর্ধ্বে উঠতে পারে নাই। কোন লীগের ছেলে, কিংবা দলের ছেলে যত পাওয়ারফুলই হোক না কেন, সিনিয়রদের সাথে আচরণে তার কোন প্রভাব পড়তে দেখা যেতো না। অবস্থা বদলে যেতে থাকে ২০০৯ সালের শুরু থেকেই। ছাত্রলীগের নেতা ’০৩ ব্যাচের তালাশ (নজরুল ইসলাম হল), শামীম (রশিদ হল) আর ফেরদৌস (সোহরাওয়ার্দী হল) যেন পাগল হয়ে যায় ক্ষমতার লোভে! যেকোনো কিছুতেই তাদের নাক গলানো চাইই চাই। আমরা ’০৪ এর বন্ধুরা মিলে সোহরাওয়ার্দী হল প্রিমিয়ার লীগ (সংক্ষেপে SPL) ক্রিকেট টুর্নামেন্ট চালু করলাম, মাঝে এসে হলের স্বঘোষিত নেতা ফেরদৌস বিশাল হম্বিতম্বি আরম্ভ করলো। আমাদের বলল, “তোরা যেমন বুয়েটের র্যারগ ব্যাচ, তেমনি আমরাও তো ইলেকশনে ২৫০ এর উপরে আসন পাওয়া দল!” এভাবে আমাদের সাথে তার সম্পর্কের অবনতি শুরু। ঠিক একই জিনিস শুরু হলো অন্যান্য হলেও। আমাদের মাথায় ফেরদৌস ভাইয়ের রাজনৈতিক পরিচয়ের চেয়ে তার সিনিয়রিটিই মুখ্য ছিলো। তার সাথে আমরা তেমন ঝামেলায়ও জড়াই নাই। কিন্তু সমস্যা শুরু হলো, যখন ফেরদৌস-শামীম-তালাশ জুনিয়রদেরকে সিনিয়রদের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দেয়া শুরু করলো। প্রত্যেক হলেই তখন এক অবস্থা। সোহরাওয়ার্দী হলের ’০০ ব্যাচের জেমস ভাই বুয়েটে আসায় তাকে শাসিয়ে দিলো ফেরদৌস, যাতে বুয়েটে তাকে আর দেখা না যায়। সবার প্রথম সিনিয়রের গায়ে হাত তুললো শামীম। আমাদের ব্যাচের আর আরো কিছু জুনিয়র ছেলে নিয়ে সে মারলো শেরে বাংলা হলের ’০২ ব্যাচের পলাশ ভাইকে। মনে হয় তখন লীগের এই নেতারা কিছু চ্যালা তৈরি করার চেষ্টা করছিলো। হয়তো তারা স্বপ্নে বিভোর ছিলো, তাদের এই চ্যালারা এক সময় তাদের জন্য অনেক কিছু করবে! কিন্তু দাবার ছক ওলটাতে বেশি সময় লাগলো না। ’০৩ ব্যাচের সেই তিনজনকে তাদেরই স্নেহধন্য, তাদেরই হাতে গড়া ’০৫, ’০৬ ও ’০৭ এর লীগের ছেলেরা ক্ষমতার জন্য আস্তাকুঁড়ে ছুঁড়ে ফেলতে দেরি করলো না। সেই তিনজনকে বুয়েটে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করলো তাদেরই এক কালের ছোট ভাইরা।
তারপর সিচুয়েশন আরো খারাপ হতে থাকলো। ’০৭ এর হাতে ’০৫ এর ছেলে মার খেলো। আর কিছু দিন আগে ’০৬ এর ছেলে মার খেলো ’০৮-’০৯ এর হাতে। আমরা যদি অবস্থার ট্রেন্ডের দিকে তাকাই, তাহলে দেখতে পাবো, অবস্থা যে শুধু খারাপ হচ্ছে, তা না, খারাপের সাথে সাথে অ্যামপ্লিফাইডও হচ্ছে! তালাশ-শামীম-ফেরদৌসরা সিনিয়রদের হুমকি দেয়া শুরু করেছিলো, এরপর গায়ে হাত তোলা, এরপর গেয়ে হাত তুলে হাড়গোড় ভেঙ্গে দেয়া! এরপর কী হবে? এখন তো একজনের দুটো হাতের হাড় ভাংলো, এরপর কি চার হাত পাই গুঁড়িয়ে দেয়া হবে? এরপর কি আরেকজনের সনির মৃত্যু হবে? আমি জানি না, আমি কল্পনাও করতে চাই না।
এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য দুইজন বা তিনজনকে বহিষ্কার করে আদতে কোন লাভ নাই। হ্যাঁ, এই শাস্তি হয়তো সম্প্রতি এরকম ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে পারবে। যদিও খেয়াল রাখতে হবে, আইনের ফাঁক গলে দোষীরা যেন আবার ক্যাম্পাসে ফিরে আসতে না পারে। কিন্তু বছর খানেক পরে যে আবার একই বা এর চেয়েও খারাপ কিছু ঘটবে না, এর নিশ্চয়তা কে দিতে পারে? কাজেই, সমস্যার গোঁড়ায় হাত দিতে হবে। বুয়েটের সিনিয়র, জুনিয়র সবাইকে বুয়েটের ট্র্যাডিশনে ফিরে যেতে হবে। ব্যাচের ইউনিটি বাড়াতে হবে। সিনিয়র-জুনিয়রদের মধ্যে সৌহার্দের সম্পর্কের পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হবে। আমরা তো কখনো কোন সিনিয়রের সাথে বেয়াদবি করি নাই, কিন্তু কখনো কারো কাছ থেকে স্নেহও কম পাই নাই। এমন এক সময় ছিলো, যখন দলের ব্যাচমেটের সমস্যায় ছুটে গেছে তারই লীগের কোন বন্ধু। কেন সেই অবস্থা এখন নাই, সেটা বুয়েটের স্টুডেন্টদেরই খুঁজে বের করতে হবে। স্টুডেন্ট পলিটিক্স ব্যান করতে পারলে সবচেয়ে ভালো। যদি তা সম্ভব নাও হয়, অ্যাট লিস্ট কোন ছাত্র-ছাত্রীর রাজনৈতিক পরিচয় যেন মুখ্য না হয়ে ওঠে, সে ব্যাপারে খেয়াল রাখতে হবে। যদি এগুলো না করা যায়, তাহলে বুয়েটের ভবিষ্যতও রুয়েট কিংবা চুয়েটের মতো হতে হয়তো আর বেশি দেরি নাই। সে অবস্থার সৃষ্টি যেন না হয়, তার জন্য বুয়েটের সব ছাত্র-ছাত্রীকে আহ্বান জানাচ্ছি। বুয়েটের বর্তমান স্টুডেন্টদের বলতে চাই, এবারের ব্যাটল তোমরা আপাতদৃষ্টে জিতেছো, কিন্তু ভেতরে একটা ওয়ার চলছে, সেই ওয়ারেও যেন তোমরা জিততে পারো, সেই চেষ্টা করে যাও। প্রিয় বুয়েটকে নষ্ট না হতে দেবার দায়িত্ব আমাদের সবার।
খালিদ ইমতিয়াজ সা’দ
বুয়েট, ’০৪, সোহরাওয়ার্দী হল
মন্তব্য
পরিস্থিতি ধীরে ধীরে আসলেই খারাপ হচ্ছে। আমরা (০৩ ব্যাচ) যখন বের হয়ে আসি তখন থেকেই এসব ঘটনা ঘটা শুরু হয়েছে। পলাশ ভাইয়ের মার খাওয়ার ঘটনা ঘটল তখন। তার আগে পাঁচ বছর অন্তত সিনিয়র জুনিয়র মারামারির ঘটনা ঘটতে শুনিনি। এর পর থেকে তো অবস্থা খালি খারাপের দিকেই যাচ্ছে।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
সহমত। সবচেয়ে কষ্ট লাগে, যখন বুয়েটের বাইরে থেকে এসব দেখতে হয়। বুয়েটের বর্তমান স্টুডেন্টদেরই বুয়েটকে বাঁচানোর দায়িত্ব সবচেয়ে বেশি। আর যখন সাহায্য দরকার হবে, তখন অ্যালামনাইরাও অবশ্যই পাশে থাকবেন।
আগে অভিনন্দন জানিয়ে নিই আপনাকে, আপনি শশরীরে আন্দোলনে উপস্থির হয়েছেন বলে। আমি আজ সারাটাদিন আনন্দিত মনে ছিলাম। ভাবছিলাম, বুয়েটের ছেলে-মেয়েরা যে অর্জনটা করে দেখালো, রাজনৈতিক দলের পা চাটা প্রসাশনকে নাস্তানাবুদ করে, ক্ষমতাশীল ছাত্রলীগকে ভয় না পেয়ে, কেবল শান্ত ভাবে অবস্থান করে আর দাবী আদায়ের লক্ষ্যে অটুট থেকে, তাতে আনন্দ হয় বৈকি। আমার মতই কেউ আনন্দিত হয়ে ব্লগ লিখেছে কিনা, তাই দেখতে এসেছিলাম। কিন্তু আসলেই হতাশ হলাম, কষ্ট পেলাম, আপনার লেখা পড়ে। পেপার, টিভিচ্যানেলের মত আপনিও আন্দোলন কারী ছাত্র-ছাত্রীদের গায়ে রাজনৈতিক ট্যাগ লাগিয়ে দিলেন? বলে ফেললেন যতদূর জানি, তারা ছাত্রলীগ করত! কাদের গায়ে কাদা লাগাতে আর কাদের ফায়দা দিতে এই কথাটি বললেন বলা যাবে কি?
আজ সকালে আমি খুশিতে বাংলাদেশে ছোট ভাইদের কাছে ফোন করেছিলাম, ওদেরকে অভিনন্দন জানাতে ইচ্ছা করছিল বলে। আমি নিজের চোখে দেখিনি, কারা মুখপাত্র হয়ে কথা বলেছে একদম সামনে দাঁড়িয়ে, কিন্তু নিশ্চিত ভাবেই জেনেছি, ওরা সাধারণ ছাত্র, কোন দলীয় পরিচয় ওদের নেই। আরেকটা কথা, অনেক ছাত্রীও তো ছিলো সেখানে। মেয়েরা ছিলো, পূর্ণ সাহসের সাথে, এটা কত বড় অর্জন ভাবতে পারেন? বুয়েটের মেয়েরা শেল্টার চায়না, দরকারে রণাঙ্গনে এসে উপস্থিত হয়। তাদের ব্যাপারে কিছু বলবেন কি? তাদেরো কি কোন রাজনৈতিক ট্যাগ আছে?
একজন সাধারণ বুয়েট ছাত্রকে নির্মম ভাবে আঘাত করা হয়েছে, এর চেয়ে কি আপনার কাছে বড় ছিল কেবল সিনিয়র জুনিয়র সম্পর্ক রক্ষা? ধরুন ছেলেটি র্যাগ ব্যাচ' ০৬ না হয়ে ০৯ হলে আপনি যেতেন না? ০৮ ব্যাচ ০৯ কে পেটালো তো ট্রাডিশনাল সিনিয়র-জুনিয়র সম্পর্ক নষ্ট কম হত। ঠিক বললাম কি? আপনার সাথে দূর্ব্যবহারের যে উদাহরণটা দিয়ে ব্লগটা লিখলেন, তা কিন্তু তারই ইঙ্গিত বহন করে।
ভাইয়া, আমি ০৩ ব্যাচের মেক্যানিকালের শিক্ষার্থী, সুতরাং যাদের নাম আপনি বলেছেন, তাদের কথা খুব ভালো করে জানি। বিশ্বাস করবেন কিনা জানিনা। ওরা আমাদের পুরো ক্লাসে ৪টা বছর এলিয়েনের মত থাকতে বাধ্য হয়েছে। কোনদিন ক্লাসে গলা উচু করে দুটো কথা বলার সাহস পায়। ১/১ এই ওদের বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে, দাপট দেখাতে হলে বাইরে গিয়ে, ক্লাসে তোমাদের কেউ পাত্তা দেয় না। জেমস ভাইকেও চিনি ভালোভাবেই। জেমস ভাইকে তালাশ, শামীম, ফেরদৌস এরা কিছু করলে মোটেও কমে পার পেতো না তারা। এটা আমরা যেমন জানি, ছাত্রলীগের ঐ তিনজনও অনেক ভালো করেই জানে।
আমি নিজে যেহেতু বুয়েটে ছিলাম, বুয়েটে সিনিয়র জুনির সম্পর্ক কেমন ভালো করেই জানি, কিন্তু আমার দৃষ্টিতে কেবল সিনিয়র জুনিয়র সম্পর্ক বাঁচাতে এই আন্দোলন ছিল না। ছিল ছাত্ররাজনীতির কালো থাবা থেকে বুয়েট কে বাঁচাতে। যখন ছাত্ররা আন্দোলনের ডাক দিয়েছে, তখন এই ডাক দেয় নি, সিনিয়র জুনিয়র সম্পর্ক বাচাতে এগিয়ে আসো। ডাকটা আরো বড় ছিলো, যুদ্ধটা আরো কঠিন ছিলো। ক্ষমতাবানদের সামনে সাধারণ ছাত্রদের একতাই ছিল একমাত্র শক্তি। সিনিয়র জুনিয়র সৌহার্দ বজায় থাক, এটা অবশ্যই চাই, কিন্তু একটা সুন্দর আন্দোলনের চেহারা, যা ভবিষ্যতের জন্য অনুকরণীয় হয়ে থাকবে, এর পর প্রসাশনও যা ইচ্ছে তাই করার আগে ভেবে নেবে এই আন্দোলনের ঘটনাটা, তাকে জিনিয়র-জুনিয়র সম্পর্ক বাচানোর এমন হালকা ইস্যুর নাম দিয়ে বদলে দিয়েন না, অনুরোধ করছি আপনাকে। আন্দোলনটা ছিলো সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে, ক্ষমতার অপব্যবহারের বিরুদ্ধে!
-----------------------------------------------------------------------------
বুকের ভেতর কিছু পাথর থাকা ভালো- ধ্বনি দিলে প্রতিধ্বনি পাওয়া যায়
আমি আন্দোলনের একটা সাইড দেখেছি, আপনি আরো ব্রড সেন্সে লিখেছেন। আপনার কথার সাথে আমার কথার বেসিক কোন দ্বিমত নাই। তবে হলে থাকতে এই কুৎসিত জিনিসটার উত্থান অনেক কাছ থেকে দেখেছি, এজন্যই মনে হয়েছে সিনিয়র-জুনিয়র সম্পর্ক যদি ঠিক থাকতো, তাহলে হয়তো এমনটা হতো না। জুনিয়র কর্তৃক সিনিয়রের অপদস্থ হওয়ার ঘটনা ইদানিং অনেক বেশি ঘটছে কিনা, তাই হয়তো আমার লেখায় এটাই ফোকাস হয়েছে।
আর লীগের ছেলেদের সংশ্লিষ্ট থাকার ব্যাপারটা একটা ভুল বুঝাবুঝি। অ্যাডমিনকে বলেছি ঠিক করে দিতে। আমার ফেইসবুক নোট পড়তে পারেন।
আগের বার কম সময়ে আপনার লেখার এন্সার দিয়েছি। এবার একটু বিস্তারিত দিচ্ছি।
আমি কিন্তু 'স্টুডেন্ট' শব্দটা ব্যবহার করেছি, যার মধ্যে ছেলে, মেয়ে সবাই পড়ে। আমার স্ত্রী, যে আমার ক্লাসমেট, আমি তাকেও আন্দোলনে নিয়ে গিয়েছিলাম। পুলিশের ভয় সে-ও করে নাই। আমি তাকে বলেছি না যেতে। জবাবে সে বলেছিলো, "তুমি আমাকে একটা কাওয়ার্ড বানিয়ে রাখতে চাও? আমার বুয়েটে সমস্যা হচ্ছে, আর আমি যাবো না?"
আপনারা শামীম, তালাশের ব্যাপারে যে স্ট্যান্ড নিয়েছিলেন, তা হয়তো আপনার ক্লাসের জন্য অনেক ভালো ফল এনেছিলো। কিন্তু তারা কয়েকজন বুয়েটের যে ক্ষতি করে গেছে, তা অপূরণীয়। শুধু সিনিয়র জুনিয়র সম্পর্ক না। সাম্প্রতিক রাজনৈতিক কলুষতা তারাই বুয়েটে ইন্ট্রোডিউস করেছে।
হ্যাঁ, এই আন্দোলন অবশ্যই শুধু সিনিয়র জুনিয়র সম্পর্ক বাঁচানোর তাগিদে হয় নাই। কিন্তু এটা অনেক বড় একটা কারণ। আমার মতে, এক লাইনে যদি আন্দোলনের ক্লজ ছিলো, "রাজনৈতিক পরিচয়ধারী জুনিয়রের হাতে নিরপেক্ষ সিনিয়র মার খাওয়ার বিরুদ্ধে আন্দোলন।"
আর আমি মনে করি, সিনিয়র জুনিয়র সম্পর্ক ঠিক থাকলে এই জাতীয় সমস্যা অনেক কমবে। আর পলিটিক্স ব্যান করার বা অ্যাট লিস্ট কমানোর কথা তো পোস্টেই বলেছি...
পরিবেশের বিষয়ে আপনি যা বললেন, সেটির সাথে একমত।
আমি বর্তমান ছাত্র হিসেবে গত দুইদিন ধরে বুয়েটে বন্ধুদের সাথে থাকার সময় যা দেখেছি, শুনেছি- সেটি এই কথাকে একদমই সমর্থন করে না। আমার জানা মতে একদমই সাধারণ ছাত্রদের দ্বারা এই আন্দোলন চলেছে, কেউই রাজনৈতিক ভাবে কোন দলের সাথে সংশ্লিষ্ট নয়।
আপনার লেখায় এই অংশটি সঠিক নয়।
সহমত।
ছাত্রলীগ করা মানেই যে সে লীগের ব্যানারে এসেছে, তা তো আর না। যাই হোক, ঐ অংশটুকু এডিট করতে বলেছি অ্যাডমিনকে।
ছাত্রলীগের কিছু ছাত্রও আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলো, কিন্তু যারা নেতৃত্ব দিয়েছে তাদের কেউই কোনো রাজনৈতিক দলের সাথে সম্পৃক্ত না।
এখন ভাই আমার আর কোন দোষ নাই। সব দোষ অ্যাডমিনের। তারে বার বার বলা সত্ত্বেও সে এইটা না নিজে ঠিক করতেছে, আর না আমারে ঠিক করতে দিতেছে...
লিখেছেন আপনি, আর দোষ এডমিনের(মডারেটরের)? একটা গুরুত্বপূররণ আন্দোলনের সামনে থাকাদেরকে অবলীলায় অতীতের দুষ্ক্রিতিকারী বানিয়ে দিলেন, রাজনীতির ট্যআগ দিয়ে দিলেন; আপনার উদ্দেশ্য নিয়ে আমার সন্দেহ হচ্ছে!
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
সন্দেহ করা ভালো। যত সন্দেহ করবেন, ততই আপনার সামনে সত্য উন্মোচিত হবে, যদি সেই সন্দেহের মাঝে সততা থাকে। বলতে চাইছি, যদি সন্দেহ দূর করার যথেষ্ট উপকরণ আপনার হাতে থাকে, তারপরও আপনার সন্দেহ দূর না হয়, তাহলে সমস্যাটা আপনার নিজের, অন্য কারো না। আমি মনে করি, আপনার এরকম সমস্যা নাই। তাই আমি আপনার সন্দেহ দূর করার চেষ্টা করবো।
রাজনৈতিক ট্যাগ লাগানো একটা ভুল বুঝাবুঝি। এর বেশি কিছু বলতে পারছি না। কারণ আরো কিছু বললে নাম-ধাম সহ বলতে হবে। সেটা অ্যাভয়েড করতে চাচ্ছি।
মডারেটরের দোষ বলেছি, কারণ আমি অনেকবার বলা স্বত্ত্বেও পোস্টের কন্টেন্ট চেইঞ্জ করা হয় নাই। আর আমার নিজের তো সেই এখতিয়ারই নাই! আসলে এটাই সচলে আমার ফার্স্ট পোস্ট। যদি জানতাম যে পরে আর কন্টেন্ট চেইঞ্জ করতে পারবো না, তাহলে হয়তো আরো ভেবে চিন্তে লিখতাম। একই পোস্ট আমার ফেইসবুক নোটেও দেয়া আছে। সেখানে আমি কারেকশন করে দিয়েছি, উপযুক্ত প্রমাণের ভিত্তিতে এটা নিশ্চিত হবার পর যে, আমার দেয়া তথ্যটি পুরোপুরি সঠিক ছিলো না। এখানেই পারছি না!
যারা আন্দোলনের নেতৃত্বে ছিলো, তারা মানুষ, ফেরেস্তা না। তাদের দোষ-ত্রুটি থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। কাজেই, তাদের পূর্বের কোন কাজের সমালোচনা করা যাবে না, এটাও যেমন ঠিক না, তেমনি তাদের পূর্বের কৃতকর্ম তাদের বর্তমান অসাধারণ কাজটাকেও প্রশ্নবিদ্ধ করবে বলে আমি মনে করি না। বরং, লেটস লুক অ্যাট দ্য ব্রাইটার সাইড অফ দ্য স্টোরি। বুয়েটের এই ক্রাইসিস মুহূর্তে আমরা আমাদের সব ভেদাভেদ ভুলে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়িয়েছি। এটা কি আপনার কাছে বড় পাওয়া মনে হচ্ছে না? হ্যাঁ, তাহলে আপনি বলতে পারেন, পুরনো কথা টানার কী দরকার ছিলো? দরকার এই কারণে ছিলো, যাতে সবাই ট্রেন্ডটা বুঝে। আর এই ব্যাপারে আমি অনেক ভালো বলতে পারবো, কারণ আমি ঘটনাগুলোর সাথে ইনভল্ভড ছিলাম। খেয়াল করে দেখেন, দুই বছর আগে যেটা ছিলো বেয়াদবির পর্যায়ে, সেটাই এখন হাড়-গোড় ভেঙ্গে দেয়ার পর্যায়ে উঠেছে। এই ট্রেন্ড যেন না চলে, সেটাই তো পোস্টে বললাম। এবং আন্দোলনে গিয়ে সবার মাঝে দাঁড়িয়েও এই একই কথাগুলো বলেছিলাম।
এরপরেও আমার উদ্দেশ্য নিয়ে সন্দেহ থাকলে আন্দোলনে যারা ছিলো, তাদের সাথে কথা বলে দেখতে পারেন। চাইলে এখানে প্রশ্নও করতে পারেন। ধন্যবাদ।
জনাব খালিদ,
আপনার পোস্ট ও পাঠকদের মন্তব্য মনোযোগ দিয়ে পড়লাম। আলাদা ভাবে প্রতিক্রিয়া জানানোর ইচ্ছা ছিল, কিন্তু আপনার উপরের মন্তব্যটা পড়ে মনে হল এই থ্রেডেই কথা বলা ভাল।
১
আপনি সচলায়তনের মত একটা ফোরামে লেখার আগে নীতিমালা ও অতিথি লেখকদের দিক নির্দেশনা পড়েন নি (বা পড়বার প্রয়োজনবোধ করেন নি)। মডারেশানের উপর দোষ চাপানোর আগে পড়ে দেখুন - নতুন অতিথি সচলদের জন্য
চরম অযত্ন, অবহেলা ও ভুল তথ্যে পূর্ণ লেখাটা প্রকাশিত হওয়ার পর আপনি এখন মডারেশানের দোহাই দিচ্ছেন, তাদের উপর দোষ চাপাচ্ছেন ও পাঠকের প্রশ্ন এড়িয়ে যাচ্ছেন।
২
সচলের নীতিমালায় এডিট করার সীমাবদ্ধতার কথা স্পষ্ট করে লেখা আছে। ফার্স্ট-সেকেন্ড ব্যাপার না, ব্যাপার হল সচলায়তনের নিয়মটা জেনে নেওয়া।
তার মানে এই লেখাটা আপনি যথেষ্ট পরিমাণে ভেবে চিনতে লিখেন নাই? আপনি গুরুত্বপূর্ণ সব তথ্যের ক্ষেত্রে ভুল বকবেন, রাজনৈতিক ট্যাগিং করবেন তারপর পাঠক চেপে ধরলে অযুহাত দিবেন - এটা স্রেফ দায়িত্বজ্ঞানহীনতা।
ব্যক্তিগত ফেইসবুক অ্যাকাউন্ট আর সচলায়তন এক কথা নয়।
এই কথাটা পড়ে অবাক লাগলো। এরকম স্পর্শকাতর ইস্যুতে আপনি ভুল তথ্যের ভিত্তিতে আপনার মতামত জানিয়ে লেখা দিলেন, এখন সংশোধনীর প্রসঙ্গে পাশ-কাটানো কথা বলছেন - এটা তো একদমই ঠিক না। এই ভুলগুলো অবশ্যই মূল বক্তব্যকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।
এ ধরনের ইস্যুতে আশা করি আরো দায়িত্ব ও যত্নের সাথে লেখা দিবেন - এটাই প্রত্যাশা। সচলায়তনে লেখার পাশাপাশি এর পোস্টগুলো নিয়মিত পড়লে ও অন্যান্য পোস্টে মিথষ্ক্রিয়া করলে আপনার ধারণা আরো স্বচ্ছ হবে।
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
আপনার পরামর্শ মাথায় থাকবে।
ধন্যবাদ।
জনাব ফাহিম,
নীতিমালা আগেই পড়া ছিলো। আপনি যে লিংকটা দিলেন, সেটাও পড়লাম। সেখানে লঘুচালের একটা লেখার লিংক পেলাম, সেটাও পড়লাম। কোথাও লেখা দেখলাম না যে, অতিথি লেখক তার লেখা এডিট করতে পারবেন না। আমি যদি মিস করে থাকি, একটু কষ্ট করে দেখিয়ে দিতে পারবেন?
মডারেটর সাহেব, এই অতি সাধারণ নিয়মটা এসব জায়গার কোথাও থাকা উচিত ছিলো, কী বলেন? এই অতিথি লেখকের লেখার নীতিমালায় ইনক্লুড করে দিলে ভালো হয়।
হুদাই এতক্ষণ পেইন খাইলাম!
সহমত
সাদ ভাইয়ের সাথে যে ব্যাপারটা হয়েছিল সেটা ছিল নিতান্তই অনভিপ্রেত। এবং এই ইস্যুতে এখনকার আন্দোলনের সাথে যারা সংশ্লিষ্ট তাদেরকে ঢালাওভাবে দোষারোপ করাটাও কতটুকু যুক্তিযুক্ত সেটাও ভেবে দেখার অনুরোধ করব। তবে আন্দোলনে নেতৃত্ব দানকারী ছাত্ররা ছাত্রলীগ করে/ করত, এটা একটু বেশিই স্বকপোলকল্পিত। তাদের মধ্যে একজন লীগের সাথে সংশ্রব ছিল এটা সত্যি, তবে সেটাও ছিল পরিস্থিতির স্বার্থেই। বাকিরা আপাদমস্তক সাধারণ ছাত্রই, যারা সামনে থেকে এই আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছে।
যাই হোক, মূল কথা হল সিনিয়র-জুনিয়র সম্পর্ক অবনতির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল অনেক আগে থেকেই, হালে সেটা চূড়ান্ত অবস্থায় চলে গেছে মাত্র। এই আন্দোলন সেটাকে তখনই স্তিমিত করতে পারবে যদি আইনের ফাঁক গলে দোষীরা বেরিয়ে যেতে না পারে। কিন্তু কোন শুভঙ্করের ফাঁকিতে যদি বিচারের রায় মুখ থুবড়ে পড়ে, তখন সাধারণ অনেক ছাত্রের ওপরই জীবনের হুমকি আসতে পারে।
ঢালাওভাবে দোষারোপ করি নাই। দোষ দিলে নিজে গিয়ে তাদের সাপোর্ট দিয়ে আসতাম না। শুধু এটাই বলতে চাইছি যে, পরিস্থিতি আস্তে আস্তে খারাপ হচ্ছে। আর আমার রুমে ২০০৯ সালে ৫০ জনের মতো '০৬ ব্যাচের স্টুডেন্ট গিয়েছিলো। সংখ্যাটা নিতান্তই কম না। তারা কি রিসেন্ট এই আন্দলন করে নাই বলতে চান?
কী হয়েছিলো, বিস্তারিত বলা যায় কি?
না থাক!
সমস্যার মূলে আঘাত করতে চেয়েছেন; সেটা ভালো লেগেছে। এজন্যে সাধুবাদ। কিন্তু
...আপনার সঙ্গে একমত হতে পারলাম না। মূল আন্দোলন, যতদূর খোঁজ নিয়েছি, একদম সাধারণ ছাত্ররাই চালিয়েছে। তবে শুনেছি লীগের কিছু ছেলেপেলে ছিলো ফিল্ডে, সেটা প্রধানত ব্যাচ হিসেবে, লীগ হিসেবে না; এবং তারা লিডিং এও ছিলো না।
ঠিক করতে পারছি না, অ্যাডমিনকে জানিয়েছি। দেখি তিনি কী করেন...
@ অ্যাডমিন:
"আরো মজার ব্যাপার হচ্ছে, যদ্দূর জানি, আন্দোলনের নেতৃত্ব দানকারী এই ছেলেগুলোও ছাত্রলীগ করতো বা করে।" এই লাইনটা মুছে দেন। যদিও কথাটা পুরোপুরি অসত্য না, তবে নতুন করে বিতর্কের জন্ম দিতে চাই না। যত দ্রুত এটা করবেন, ততই বেটার...
ধন্যবাদ।
আপনার বক্তব্যের মূল সুরের সাথে মোটামুটিভাবে একমত। তবে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করে দেয়াটা কোনও সমাধান হতে পারে না। বরং স্টুডেন্ট বডিগুলোকে কার্যকর করে তোলা এবং তার মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলোর অঙ্গসংগঠনগুলোকে কম সক্রিয় করে তোলাটা সময়ের প্রেক্ষিতে কার্যকর সিদ্ধান্ত হতে পারে।
আমি '০৫ আর্কিটেকচারে আছি। প্রায় পুরো সময়েই প্রত্যক্ষভাবে ঘটনাগুলো দেখেছি। এরকম কিছু তো মনে হোল না। Rag ব্যাচের শিক্ষার্থীরা পুরোভাগে ছিলো সবসময়।
আপনার ফেসবুক নোটে কিছু পরিবর্তন এনেছেন দেখতে পাচ্ছি। সেটা এখানে উল্লেখ করে দিলে সচল পাঠকদের জন্য সুবিধে হয়।
_____________________________________________________________________
বরং দ্বিমত হও, আস্থা রাখো দ্বিতীয় বিদ্যায়।
ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করা আমার মতে অবশ্যই একটা ভালো সল্যুশন। যদি ব্যান করা সম্ভব নাও হয়, তাহলে অ্যাট লিস্ট যেন রাজনৈতিক পরিচয় কারো মেইন পরিচয় না হয়, তার চেষ্টা করা উচিত। সেন্ট্রাল দল/লীগের হস্তক্ষেপ কমাতে হবে।
ইন্টারেস্টিং লাগল আপনার লেখাটা। আমরা যারা বুয়েটের নয়, কিন্তু বুয়েটকে শ্রদ্ধার চোখে দেখি, আপনাদের লেখা থেকে বুয়েটের পরিবর্তন বুঝতে চেষ্টা করি।
আপনার লেখায় কয়টা ব্যাপার পেলাম
– সিনিয়র-জুনিয়র ট্র্যাডিশন্যাল যে ঈর্ষণীয় ‘আন্তরিক’ সম্পর্ক কিংবা সৌহার্দের পরিবেশ ছিল সেটা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, শুরুটা ২০০৯ এর দিকে। এই ঈর্ষণীয় পরিবেশের মূল মন্ত্র ছিল জুনিয়ররা সিনিয়রদের সাথে ‘বেয়াদবি’ করত না, সিনিয়ররাও ‘স্নেহ’ করত জুনিয়রদের। রাজনৈতিক মতাদর্শ কখনও সিনিয়র-জুনিয়রটির উর্ধে কিংবা ব্যাচের উর্ধে যেত না।
- এর প্রতিকার হিসাবে সেই ট্রেডিশন্যাল সম্পর্ক ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে গুরুত্ব দিয়েছেন, কিভাবে সেটা সম্ভব সে ব্যাপার খুব বিস্তারিত কিছু নেই। ছাত্র-রাজনীতি বন্ধ করাটা খুব জোরের সাথে বলেছেন। বাহ্ বেশ বেশ।
আরেকটা ব্যাপার দেখলাম – যে ছাত্ররা এই ‘আন্দোলনে’ নেতৃত্ব দিয়েছে, তারা জুনিয়র হিসাবে ঈর্ষণীয় ট্র্যাডিশন নষ্ট করার চেষ্টা করেছে, যার প্রমান আপনি নিজে। আবার তারা ছাত্রলীগের, ছাত্রলীগেরই সম্ভাব্য ইন্টারফেয়ারের ব্যাপার 'আন্দোলন' করেছে।
আমি আরেকটা বিষয় দেখলাম, আন্দোলনের সাথে জড়িত ছাত্রছাত্রীদের বর্তমান শিক্ষকবৃন্দ, বিশেষকরে প্রশাসনের সাথে যারা যুক্ত তাদের বিষয়ে মোটেই আস্থা নেই। (এমনও কমেন্ট পড়েছি, মনে হয়েছে তারা আ বাঞ্চ অভ জোকার্স)। সাধারণ তিন ছাত্রের ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণের সামর্থ নেই, সুতরাং ছাত্ররা আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি আদায় করতে হয়েছে।
আবার ভাইরাল ভিডিওতে বুয়েট কর্তৃপক্ষের প্রজ্ঞাপন দেখে চমৎকৃত হলাম। এত চাপের মুখেও তারা আদর্শ ডিসিপ্লিন্যারি প্রসিডিয়্যর ফলো করেছে। তিনজন অভিযুক্তের মধ্যে একজনকে ক্লিন বলা এবং দুজনের ব্যাপারে সর্বোচ্চ শাস্তির সুপারিস তাদের নিরপেক্ষতাকে রিইনফোর্স করে।
চিন্তিত হলাম, জুনিয়র-সিনিয়রের ব্যাপারে এত চিন্তিত, কিন্তু শিক্ষকের উপর আস্থার ব্যাপারে এত উদার কেন। (শিক্ষকের ব্যাপারে অনাস্থার ব্যাপারটা কতটা যৌক্তিক)।
এখানে অ্যাকাডেমিক এক্সেলেন্স নিয়ে কথা হচ্ছে না, হচ্ছে পরিবেশ নিয়ে। দেখলাম বুয়েটে জুনিয়র-সিনিয়রের সম্পর্ক গেছে, ছাত্র-শিক্ষকের সম্পর্ক গেছে। আশংকা প্রকাশ করেছেন রুয়েট কিংবা চুয়েটের ‘অবস্থা’ হয় কিনা বুয়েটের। ফর গড সেক রুয়েট এবং চুয়েটের অবস্থা কী!!!!!!! ভয় পেলাম।
আপনার বিশাল মন্তব্যের শুধু একটা অংশেরই জবাব দেয়ার দরকার মনে করছি, অবশ্য কতক্ষণে এই জবাব প্রকাশ পায় কে জানে!
ব্যক্তিগতভাবে শিক্ষকদের প্রতি আমি যথেষ্ট আস্থাশীল ও শ্রদ্ধাশীল, তবে অবশ্যই যারা দলীয় স্বার্থের কারণে নিজের শিক্ষকত্ব ও আদর্শ বিকিয়ে দেয় (মেধাবী মানেই যে ভালো হবে এমন কোন কথা নাই) তাদের প্রতি না। কারণ আমি ব্যক্তিগতভাবে শিক্ষক পেশার লোকদেরকে অনেক শ্রদ্ধা করি। তবে অনেক ছাত্রের অনাস্থার কারণটা আমি বুঝতে পারি। বুয়েট স্টুডেন্ট না হলে এটা বোঝা একটু কঠিন। তবুও, চেষ্টা করবো।
রিসেন্ট ঘটনার উদাহরণই দেখেন। এক স্টুডেন্ট যদি আরেক স্টুডেন্টকে মেরে হাত ভেঙ্গে ফেলে, তাহলে কি খুব স্বাভাবিকভাবেই যে মেরেছে, তাকে বহিষ্কার করা উচিত না? কারণ এটা তো কোন শাস্তি না, এটা হলো বাকি সব ছাত্রের নিরাপত্তার প্রশ্ন। সে যে দুই দিন পর কারো পা ভাংবে না, তার নিশ্চয়তা কে দেবে? তিন দিন পর যে লাশ ফালাবে না, তার নিশ্চয়তা কে দেবে? এখন, এই যৌক্তিক জিনিসটা আদায় করতেও স্টুডেন্টদের এভাবে আন্দলন করতে হলো। এবার আপনিই বলেন, অনাস্থা থাকা কি খুব অস্বাভাবিক? আমার তো মনে হয় না।
আহত ছাত্রের জন্য বুয়েটের সিনিয়র-জুনিয়র-প্রাক্তন-বর্তমান ছাত্র/ছাত্রীর যে সহমর্মিতা দেখিয়েছে, যেভাবে এগিয়ে এসেছে সেটা নিশ্চয়ই অসাধারণ এবং আমার পূর্ণ শ্রদ্ধা আছে। কিন্তু আমার কাছে, যে কিনা ‘বুয়েট স্টুডেন্ট নয় এজন্য এটা বোঝা একটু কঠিন’ এই আন্দোলনের সাফল্যে ফেস-বুকের প্রতিটি ‘থাম্পস আপ’ প্রতিষ্ঠান হিসাবে বুয়েটকে একধাপ নিচে নামায়।
আপনি বলেছেন, 'রিসেন্ট ঘটনার উদাহরণই দেখেন। এক স্টুডেন্ট যদি আরেক স্টুডেন্টকে মেরে হাত ভেঙ্গে ফেলে, তাহলে কি খুব স্বাভাবিকভাবেই যে মেরেছে, তাকে বহিষ্কার করা উচিত না? কারণ এটা তো কোন শাস্তি না, এটা হলো বাকি সব ছাত্রের নিরাপত্তার প্রশ্ন। সে যে দুই দিন পর কারো পা ভাংবে না, তার নিশ্চয়তা কে দেবে? তিন দিন পর যে লাশ ফালাবে না, তার নিশ্চয়তা কে দেবে? এখন, এই যৌক্তিক জিনিসটা আদায় করতেও স্টুডেন্টদের এভাবে আন্দলন করতে হলো। এবার আপনিই বলেন, অনাস্থা থাকা কি খুব অস্বাভাবিক? আমার তো মনে হয় না'।
বহিষ্কার করা একটা ‘শাস্তি’, যেটা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক্তিয়ারের মধ্যে আছে (ফৌজদারিটা আইনপ্রয়োগকারী এবং আদালতের ব্যাপার)। বিশ্ববিদ্যালয় এই শাস্তি প্রদানের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্ধারিত নিয়ম অনুসরণ করবে, তবে সেই নিয়ম কী তা আমি বিস্তারিত জানিনা। তবে যে কোন ‘সভ্য’ নিয়মে এধরণের শাস্তির জন্য ন্যূনতম দুটা নিয়ম অনুসরণ করা হয় – ১। unbiased ২। the right to a fair hearing
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রাথমিকভাবে অস্থায়ী বহিষ্কার করেছে, পেন্ডিং কমিটি রিপোর্ট। রিপোর্টের পর হিয়ারিং এর সুযোগ দিয়েছে। তারপর বহিষ্কার করেছে। আমিতো কোন ব্যতয় দেখিনা।
যদি ‘পা ভেঙ্গেছে, শুনেই আজীবন বহিষ্কার করা হত, আদালতে এর বিরুদ্ধে দাঁড়ানো যেত? এ ব্যাপার আর লিখতে ইচ্ছে হচ্ছে না, মনে হচ্ছে ‘ত্যানা পেচাচ্ছি’। হয়ত এর আগের ঘটনাপ্রবাহ, যেটা আমি জানিনা সেটা নিশ্চিত করে যে আসলেই প্রশাসন তিনজন ছাত্রের বিরুদ্ধে কিছুই করত না, এবং সে ক্ষেত্রে আসলেই তারা একটা ‘বাঞ্চ অভ জোকার্স’। এখানেই ডিলেমা, এই ‘বাঞ্চ অভ জোকার্স’ যদি বুয়েটের ফ্যাকাল্টি হয় তবে ‘বুয়েট’ নিয়ে ‘গর্ব’ করার বেশি কিছু অবশিষ্ট থাকে কী? যদি না হয় তবে প্রতিষ্ঠানকে এভাবে ডিফ্যাম করার মানেই বা কী?
নিচের মন্তব্যগুলি পড়ে এখনতো দেখতে পাচ্ছি ২০০৯ এর আগেও ‘মারামারি’ চলত। বেশ। এই লেখায় আর ঢোকা উচিত হবে না, যতই পড়ব শ্রদ্ধার লেভেল ততই কমবে...। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট এসব প্রতিষ্ঠান নিয়ে আমি গর্ব করি...।
এটা লেখকের সমস্যা। লেখক নিজে বুয়েটের পরিবেশ সম্পর্কেই ভালোভাবে জানেন বলে মনে হয় না, আর ওই মন্তব্য করতে হলে বুয়েটের বাইরের স্টুডেন্টদের সম্পর্কে যতোটা গভীরভাবে জানা দরকার, তার কোনো প্রমাণ এই পোস্টে পাওয়া যায় না।
বুয়েটে অন্তত গত ১৫ বছরেই কমবেশি মারামারি চলতো। মারামারির লেভেল হয়তো অন্য পাবলিক ইউনি থেকে কমবেশি হতো; কিন্তু ধরন এবং কারণ একইরকম। বুয়েটেও চাঁদাবাজি চলে, হল দখল না হলেও হলের রুম দখল চলে, ক্যাফেতে বাকি খাওয়াও হয়। বুয়েটে ছাত্র রাজনীতির প্রখরতা ঢাবি থেকে কম। এর অনেকগুলো কারণ থাকতে পারে। যেমন, কেন্দ্রে বুয়েট নেতাদেরকে ইন জেনারেল খুব বেশি পাত্তা দেওয়া হয় না। এদেরকে 'ভালো ছাত্র' হিসেবে দেখা হয়, এরা পড়াশুনা করে ইঞ্জিনিয়ার হবে, অপেক্ষাকৃত নিরাপদ ক্যারিয়ারের এই সম্ভাবনা থেকেই রাজনীতির মাধ্যমে ক্যারিয়ার গঠনের আকাঙ্ক্ষা কম থাকে।
সিনিয়র-জুনিয়র সম্পর্কের হিসাবটাই একটা ক্যাচাল। সিনিয়র মানে সে কিছু বাড়তি সুবিধা পাবে আর জুনিয়র মানেই তাকে নতশিরে থাকতে হবে, এরকম পরিস্থিতি দুইজনের জন্যই খারাপ। 'বেআদবি'র কাজটা সিনিয়র-জুনিয়র দুইজনই করতে পারে। সুশীল শ্রেণীর কাছে 'বেআদবি'র সংজ্ঞা ভিন্ন: একটা কেসে সবসময় শুধু জুনিয়রই বেআদব হতে পারে, কেউ মাইর খেলে যে মাইর দিয়েছে সবসময় তাকেই কোনোরকম কনটেক্সট বিচার-বিবেচনা ছাড়া ফাঁসি দিতে হবে!
বুয়েটের পরিস্থিতি খুব খারাপ না; কিন্তু এরচেয়ে ভালো হতে পারতো, যদি বুয়েটের সুশীলশ্রেণী সবসময় বাঁশ হাতে করে না ঘুরতো।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
আপনার কথার সাথে আমার দ্বিমত নাই। তবে আমারো বুয়েট ভালো, না অমুক ভালো, এই জাতীয় আলোচনায় যেতে ইচ্ছা হচ্ছে না। আপনি বুয়েট, ঢাকা ইউনিভার্সিটি নিয়ে গর্ব করেন শুনা ভালো লাগলো।
ভালো থাকবেন। ছোট-খাটো মতপার্থক্য থাকলেও, আমরা ন্যায়ের পথে যেন সবাই সহযাত্রী হতে পারি...
ধন্যবাদ।
মন্তব্যের সাথে একমত। তবে আমার কাছে একটা বিষয় পরিষ্কার নয়।
ছাত্র রাজনীতি বা শিক্ষক রাজনীতি কোনটাই কি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রচলিত ?
প্রশ্নটা একটু খুলে বলবার চেষ্টা করি। নির্বাচিত কোনও ছাত্র-সংগঠন কি বুয়েটে আছে ? অথবা, হল/বিভাগ নির্বিশেষে ছাত্রদের সমস্যার কথা বলবার জন্য কোন প্ল্যাটফর্ম (সংগঠন/ইউনিয়ন ইত্যাদি)? বা দেশের রাজনৈতিক দল গুলির ছাত্র-সংগঠন (ছাত্রদল, ছাত্রলীগ, ছাত্রফ্রন্ট ইত্যাদি) এর মনোনয়ন প্রাপ্ত শাখা? যেখানে নির্বাচিত শাখা-প্রধান বা অন্যান্য পদ রয়েছে?
প্রথমতঃ এগুলো যদি না থেকে থাকে, সেক্ষেত্রে দলীয় রাজনীতির সাথে (আওয়ামী লীগ, বিএনপি ইত্যাদি) যারা জড়িত বলে দাবী করছেন/করেন, তাদের দাবীর ভিত্তি কি? ভবিষ্যতে, যেকোন ব্যক্তি যদি দাবী করেন যে তিনি (দলীয়) রাজনৈতিক পরিচয় বহন করেন, তবে তার কথার সত্যতা নিরুপন হবে কিভাবে? আবার এই যে বুয়েট ক্যাম্পাস থেকে ছাত্র-রাজনীতি নির্মূলের কথা বলা হচ্ছে। কথা হলো, ক্যাম্পাসে যদি দলীয় রাজনীতির চর্চা না'ই থাকে (অর্থাৎ, ছাত্র-সংগঠন, নির্বাচন, নির্বাচিত পদ ইত্যাদি), তাহলে নির্মূল করা হবে কাদের? ব্যক্তিগত ভাবে একজন মানুষ (ছাত্র/শিক্ষক) দলীয় রাজনীতির সাথে যুক্ত থাকতেই পারেন, তিনি চাইলে সংসদ নির্বাচনে নিজের এলাকার প্রতিনিধি পদে নির্বাচন করতে পারেন, অথবা দলের হয়ে কাজ করতে পারেন, সেটা তার নিজস্ব অভিরুচি। এখানে ক্যাম্পাস থেকে রাজনীতি দূরীকরন বলতে কি এটা বলা হচ্ছে যে, রাজনীতির সাথে যুক্ত লোকজন বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশ হতে পারবেন না?
আরেকটা বিষয় হলো, শিক্ষকদের যে সংগঠনটি এ বিশ্ববিদ্যালয়ে আছে, তা'তে সেখানে বার্ষিক নির্বাচন সাপেক্ষে প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়ে থাকে। তবে, সেখানে দলীয় (আওয়ামী লীগ, বিএনপি ইত্যাদি) কোন প্ল্যাটফর্ম থাকে না। তবে চাইলে আওয়ামী/বিএনপি সমর্থক কোন শিক্ষক এতে নির্বাচন করতে পারেন (বস্ততঃ যেকোন শিক্ষকই নির্বাচন করতে পারেন)। সেটা থেকে আপনি তাকে আটকে রাখতে পারেন না (দেশের সংবিধান অনুযায়ী)। তাহলে এই ক্ষেত্রেই বা রাজনীতি নির্মূল করা হবে কিভাবে?
বুয়েটে প্রাতিষ্ঠানিক রাজনীতি, তথা ইউকসু নিষিদ্ধ। তবে অপ্রাতিষ্ঠানিকভাবে দল, লীগ, শিবির ও ফ্রন্ট চালু আছে। এদের সাথে বুয়েটের কোন প্রাতিষ্ঠানিক সম্পর্ক নাই, কিন্তু এরা সবাই স্ব-স্ব সেন্ট্রাল দ্বারা পরিচালিত।
দেশ থেকে রাজনীতি নিষিদ্ধ করার কথা তো বলি নাই। বলেছি বুয়েট থেকে নিষিদ্ধ করার কথা। আর যদি তা নাও করা যায়, তাহলে সেন্ট্রালের হস্তক্ষেপ বুয়েটে যত কম আসে, ততই ভালো। সেক্ষেত্রে ভালো স্টুডেন্টরা পলিটিক্সে হয়তো আসবে, আর হয়তো বর্তমান পলিটিক্যাল দুর্দশা কিছুটা হলেও কমবে (যদিও আমার মনে হয় চান্স অনেক কম)।
একজন শিক্ষকের প্রধান পরিচয় যদি হয় শিক্ষক, যা কিনা একটা নোবেল প্রফেশন, তাহলে তো তার অন্য সব পরিচয় গৌণ। সে তখন কী কারণে নিজ দলের স্টুডেন্টদের ফেভার করবে? একজন ছাত্রের পরিচয় যদি হয় প্রথমে ছাত্র, তাহলে সে কেন নিজের দলের স্বার্থে অন্যায় কাজ করবে? এই ন্যায়-অন্যায় বোধ থাকলে তো দেশের কোথাও কোন প্রবলেম থাকতো না। কিন্তু যেহেতু এই অবস্থা নাই, সেজন্যই সমাধানের পথ বাতলানোর চেষ্টা।
কথাটা স্ববিরোধী হয়ে গেল না? ইউকসু যদি নিষিদ্ধ হয়েই থাকে, তাহলে আপনি অফিসিয়ালি আবার বন্ধ করবেন কিভাবে? বা কাদের কে? আপনি এ নিয়ে তথাকথিত 'ওয়ার' চালাতে গেলে প্রশ্ন আসবে (দলীয় পর্যায়ে বা বুয়েটের এডমিনিস্ট্রেশন হতে)
"আন্দোলন হচ্ছে কাদের বিপক্ষে? যাদেরকে নিশ্চিহ্ন করবার কথা বলা হচ্ছে তাদের তো কাগজে-কলমে কোন অস্তিত্ব নাই"
দলীয় হস্তক্ষেপ কম থাকলে (বা না'ই থাকলে) ভালো ছাত্ররা রাজনীতিতে কিভাবে আসবে, যেখানে ইউকসু নিষিদ্ধ? নাকি আপনি বলতে চাচ্ছেন যে ইউকসু চালু করা হোক, কিন্তু সেখানে বুয়েট শিক্ষক সমিতির মতো কোন দলীয় প্যানেল থাকবে না?
বুয়েটের ঘটনা গুলি যা পড়লাম আপনার লেখাতে (বা কমেন্টে), প্রায় প্রত্যেকটা ঘটনাই আমার কাছে অরাজনৈতিক বলে মনে হয়েছে। সেখানে দলীয় স্বার্থ জড়িত বলে মনে হয় নাই (কারন, রাজনৈতিক সুবিধা আদায়ের জন্য সেগুলো ঘটানো হয় নাই)। বরং বলতে পারেন, দলীয় ক্ষমতা (যদি আদৌ থেকে থাকে) ব্যবহার করে নিজের সুবিধা আদায়ে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালানো হয়েছে। এবং এর কোনটার মিমাংসা/শাস্তি দেশের প্রচলিত আইনে (ফৌজদারী দন্ডবিধি মোতাবেক) হয় নাই। পিটিয়ে কারো হাত-পা ভেঙ্গে দেয়ার শাস্তি হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আজীবন বহিস্কার তুলনীয় কিছু না (ভালো/খারাপের প্রসংগ আসছে না)।
ধোয়াটে একটা বিষয় নিয়ে 'ওয়ার' করার চাইতে আমার কাছে বরং এইসব অপরাধীদের শাস্তি যেন দেশের প্রচলিত আইনে হয়, সেটা নিশ্চিত করা বেশি জরুরী মনে হয়েছে।
আপনি সঠিক জায়াগাতেই প্যাঁচ ধরেছেন। বুয়েটে প্রাতিষ্ঠানিক রাজনীতি অলরেডি নিষিদ্ধ। যেটা আছে, সেটা থাকার কথা না। কাজেই, সেটার বিরুদ্ধে আন্দোলনও করার কিছু নাই। হুম... দ্যাটস আ গুড প্যারাডক্স! এজন্যই উপরে বলেছিলাম, বুয়েটের স্টুডেন্ট না হলে বুঝা যাবে না... যাই হোক, একই কথা আবার বলছি না, অনেকের আবার গায়ে লাগতে পারে।
শাস্তি যেমন দরকার, তেমনি এই ঘটনার রিপিটেশন যাতে না হয়, তার ব্যবস্থা করাও জরুরি। আপনার কাছে শাস্তি বেশি ইম্পরট্যান্ট মনে হয়েছে, আমার কাছে প্রতিকার। কারণ, ঐ দুইজনকে বুয়েট অথরিটি না হয় শাস্তি দিলো, কিন্তু যে ছেলেটা ভাঙ্গা হাড় নিয়ে সারা জীবন কাটাবে, তার হাড় কি ঠিক করে দিতে পারবে পুরোপুরি?
বাংলাদেশের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হিসেবে বুয়েটের ভালমন্দে আমি চিন্তিত হই,উদ্বিগ্ন হই।চলমান পরিস্থিতিতে বুয়েটিয়ান বন্ধুদের সাথে একাত্মতা জানিয়েছি আগেই।এখানে আবারো জানিয়ে গেলাম।
কিন্তু,
এই বাক্যগুলোতে তীব্র আপত্তি জানালাম।নিজেকে ভাল ভাবুন,তবে অন্যরা খারাপ - এমন কোন ভাবনা আকাশ থেকে পেড়ে আনাটা অনাকাংক্ষিত।
আপনি সম্পূর্ণ ভুল বুঝেছেন। আমি অন্য কাউকে খারাপ বলি নাই। চুয়েটে বা রুয়েটে লীগ-শিবিরের মারামারির ইতিহাস সবারই জানা। এ কারণেই তাদের উদাহরণ টেনেছি।
আপনাকে একটা উদাহরণ দেই, যাতে আপনার মনে না হয় যে আমি বুয়েটিয়ান হয়ে অহংকারে ভুগছি। আমার মতে, বর্তমানে পাবলিক 'উয়েট'গুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভালো পরিবেশ কুয়েটে, বুয়েটে না। আমি যদি নিজেদের ঢোল পেটাতে ব্যস্ত থাকতাম বা মিছামিছি নিজেদের সম্পর্কে বড়াই করতাম, তাহলে নিশ্চয়ই এটা বলতাম না।
আর আমার অন্যান্য ভার্সিটিতে প্রচুর ফ্রেন্ড আছে, যারা বুয়েটের সিনিয়র জুনিয়রের সম্পর্ককে এনভি করে। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই ঈর্ষার কথাটা বলেছিলাম।
সেক্ষেত্রে ব্যাখ্যা প্রয়োজন ছিল।আপনি পুরো ব্যাপারটাকে দেখছেন সিনিয়র জুনিয়র সম্পর্কের পার্স্পেক্টিভ থেকে।একেবারে শেষে এসে আশঙ্কা প্রকাশ করলেন রুয়েট-চুয়েটে অবস্থা আগেই খারাপ,বুয়েটেরও হয়তো এমন কিছুই হবে।কেন?উপরে একজন এর মধ্যেই বলে ফেলেছেন
এবং কোন ব্যাখ্যাও দেননি আপনি।এই বিভ্রান্তির অবকাশ রাখছেন কেন?
এর পরেই আবার শিক্ষকদের উপর আস্থা অনাস্থার প্রসঙ্গে বলেছেন
কেন কঠিন?নন-বুয়েটিয়ানরা নিশ্চয়ই এলিয়েন নয়।
আর রাজনৈতিকভাবে যদি দেখেন,আপনি যেটা বললেন লীগ-শিবির মারামারি,তাহলে তো বুয়েটের সাথে রুয়েট আর চুয়েটকে মিলিয়ে ফেলার কোন সুযোগই নেই।রাজশাহী এবং চট্টগ্রামে শিবিরের অবস্থান এবং স্ট্র্যাটেজি সম্পর্কে মোটামুটি জ্ঞান রাখেন আশা করি।বুয়েটের বর্তমান পরিস্থিতির সাথে রাজশাহী-চট্টগ্রামে লীগ শিবির মারামারির প্রেক্ষাপটের কোন মিল নেই।
কয়টা ক্যাম্পাসে আপনার বন্ধু আছে জানি না।তাদের কয়জন বুয়েটের সিনিয়র জুনিয়র সম্পর্ককে হিংসার চোখে দেখে আপনিই ভালো বলতে পারবেন।কিন্তু যখন আপনি অন্য ভার্সিটি বলে সরলীকরণ করেন ( অন্য কিছু ভার্সিটি অথবা অন্য অনেক ভার্সিটি কিংবা অন্য ভার্সিটির কেউ কেউ নয় ) তখন সেটা আপত্তিকর।
বুয়েটের স্টুডেন্ট না হলে কেন বুঝা কঠিন, এই সহজ কথাটা আপনার বুঝে আসলো না বইলা একটু হতাশ হইলাম। আপনার বাবা-মার সাথে আপনার সম্পর্ক কেমন, এটা কি যে আপনাদের বাসায় থাকে না, সে বুঝবে? হ্যাঁ, সে এইটা বুঝতে পারবে যে, তারা আপনাকে অনেক স্নেহ করেন, আপনিও তাদের অনেক ভালোবাসেন, শ্রদ্ধা করেন। কিন্তু সে তো আর আপনাদের মধ্যেকার সম্পর্কের সূক্ষ্ম দিকগুলো সম্পর্কে জানবে না, তাই না? তার মানে কি আপনাদের ফ্যামিলি এলিয়েন?! নাকি ঐ লোকের কোন বাবা-মা নাই?!
আর হ্যাঁ, বুয়েটের বর্তমান পরিস্থিতির সাথে রুয়েট বা চুয়েটের মিল নাই, ঠিক। আমি কি একবারো বলছি যে মিল আছে? আমি বলছি, এখন যে দিকে যাইতেছে, তাতে ঐ অবস্থায় যাইতে আর বেশি দেরি নাই। আর এইখানে লিটারালি লীগ-শিবির মারামারির কথা মিন করি নাই, মিন করছি স্টুডেন্টদের মধ্যে রাজনৈতিক কারণে মারামারির কথা। এইবার ক্লিয়ার হইছে?
আমি অন্য ভার্সিটি বইলা সরলীকরণ করি নাই। ঐটা আপনি বানাইছেন। আমি বলছি 'অন্যান্য' ভার্সিটি। 'অন্য' আর 'অন্যান্য' শব্দদুইটার মধ্যে পার্থক্য একটা অভিধানে দেইখা নিয়েন।
ভাই, আমি কাউরে ছোট করতে চাই নাই। অন্য কেউ ছোট হইতে পারে কোন দিক দিয়া, এইটাই আমি বুঝতেছি না। আমি তো অন্য কাউরেই খারাপ কিছু বলছি বইলা মনে হয় না। দয়া কইরা যাইচা যাইচা নিজের উপরে তুইলেন না জিনিসটারে।
আর
বাকিটা আপনার বিবেচনা।স্টুডেন্টদের মধ্যে মারামারির কারণেই রুয়েট আর কুয়েট একেবারেই খরচের খাতায় চলে গেল যে বুয়েট সে অবস্থায় চলে গেলে সেটা আপনার জন্য রীতিমত আশংকার বিষয়,রুয়েটের ছাত্র হিসেবে এটা জানতে না পারা আমার অপারগতাই বটে,আপনি জানালে বাধিত হই।
অন্যান্য আর অন্য - এদুটোর মধ্যে পার্থক্য আমি জানি,আপনিও জেনে আসুন একটু।সেই পার্থক্যের কারণে বক্তব্যের কোথায় তফাৎ তৈরি করে সেটাও বুঝিয়ে দিলে কৃতজ্ঞ হই।
বাংলাদেশের প্রতিটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়েই শিক্ষকদের সাথে ছাত্রদের এক ধরণের দূরত্ব আছে।আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি এবং অন্যান্য কিছু শিক্ষকের বিরূদ্ধে আন্দোলনের জের হিসেবে দীর্ঘদিন ক্যাম্পাস বন্ধ ছিল।এত খবর যখন রাখেন তখন এটাও জানেন আশা রাখি।বুয়েট বাংলাদেশেরই একটা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়।কাজেই বুয়েটিয়ান না হলে বুয়েটের শিক্ষকদের সমস্যা বোঝা কঠিন - এটা বোধহয় বেশি বলা হয়ে গেল।
যাই হোক,আলোচনার ফোকাস ঘোরানোর দুঃখিত।এ প্রসঙ্গ এ পর্যন্তই থাক।তবে ভবিষ্যতে বাক্য এবং শব্দ ব্যবহারে আরো একটু সতর্ক এবং শ্রদ্ধাশীল হবার অনুরোধ থাকলো।
ভালো থাকুন।
ঠিক আছে। আলোচনা থাক। বাংলাদেশের একজন নাগরিক হিসাবে আমি দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়, সব ক্ষেত্র ভালো থাকুক, তাই চাই। আর কোন ইন্সটিটিউট সম্পর্কেই আমার উন্নাসিক ভাব নাই। হয়তো বিষয়টা আমি আপনাকে বুঝাইতে পারি নাই বা আপনি বুঝতে পারেন নাই। হয়তো বা আমাদের দুইজনেরই ভুল বুঝাবুঝি হইছে।
যাই হোক, আসেন কোলাকুলি করি। ভালো থাইকেন। ভালো থাকুক বুয়েট, কুয়েট, রুয়েট, চুয়েট, আর সব পাবলিক ইউনিভার্সিটি...
এখানে টাইপো,রুয়েট আর চুয়েট হবে।
মেয়েদের অংশগ্রহণ ছিলো দেখার মত। আমার পরিচিত জুনিয়ার মেয়েগুলো দুইরাত ধরে সবার সাথেই ছিলো। আর ওরা কোন পলিটিক্যাল পার্টির সাথে যুক্ত না।
সহমত। মেয়েদের অংশগ্রহণ আসলেই ছিলো অবাক করার মতো!
এ ধরনের ট্যাগিং দেয়া উচিত হয় নাই। আমি যতদূর জানি, আন্দোলনে সাধারন ছাত্র-ছাত্রীরাই লিড দিয়েছে।
ঠিক। অ্যাডমিনরে বলছি ঠিক করতে।
অঃটঃ আপনি কি আমার ব্যাচমেট?
২৪ এবং ২৬ নং এর হুতুমের মন্তব্যের সাথে সহমত। শতভাগ সহমত। আমি একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছি, আমি মনে করিনা যে আমার ক্যাম্পাস বাংলাদেশের অন্য ক্যাম্পাস থেকে অসাধারণ কিন্তু কেউ যখন আমার ক্যাম্পাসকে ছোট করতে চায় তাকে অবশ্য যুক্তি দেখাই, প্রতিবাদ করি। কিন্তু নিজেদের অন্য মার্গে নেবার চেষ্টা করিনা।
ধন্যবাদ, লেখার জন্য।
সেই চেষ্টা এইখানে কেউ করে নাই।
ধন্যবাদ।
মনগড়া কথাবার্তা আপনার, প্রমান দিচ্ছি। সিনিয়র জুনিয়র স্বম্প্ররক আরো অনেক আগেই শেষ হয়েছে। ঐ যে সিনিয়র বললেন "কিছু কিছু সিনিয়রের মুখে যাস্ট মুতে দিতে ইচ্ছে করতো", আপনি ০৪ ব্যাচের হয়ে এখন ক্যাম্পাসে কি করেন? যে ব্যাচের সমস্যা সে বচ এবং বর্তমান বুয়েটে অবস্থানরত ছেলেদেরকেই সামলাতে দেন।
জেমস বুয়েটে থাকতে ফেরদৌসকে "অযথা" মেরেছিলো যখন তখন কই ছিলেন? বুয়েটের কোণ অভিধানে লেখা আছে সিনিয়র জুনিয়কে পেটাতে পারে যদি ক্ষমতার ব্যাবহার সিনিয়র ব্যাচ করতে পারে তখন জুনিয়র ও করতে পারে যেটা ফেরদৌস যখন সিনিয়র হয়েছে তখন দেখায়ছে। আমি ক্যাম্পাসে থাকা কালীন ০০ ব্যাচের বেরুনীকে আওয়ামীলীগ আমলে পাইলে বেরুনীকে পিটাইতাম এবং পারলে হাত পা ভেঙ্গে দিতাম, কারন এই হারামজাদা ০০ ব্যাচের হবার পড়েও কত সিনিয়রকে পিটায়ছে জানেন? ৯৯ ব্যাচের কল্লোল ভাইকে ক্যাম্পাসে আসার কারনে পিটাইছে তখন আপনাদের অনুভূতির কি ভোতা ধরে গিয়েছিলো, এই বেরুনি যখন আমাকে পিটাইছিলো জিমের ঐখানে তখন আমার মরন চিৎকার শুনে কোন বিবেক বাহির হয়ে আসে নাই তো, বুয়েটের কোন জায়গায় লেখা আছে ১০ জন সিনিয়র মিলে একজনকে মারা যায়?
পলিটিক্যালি করাপ্টেড নয় এমন একজন ছেলে নাম বলতে বললে আমি বলতাম "ফেরদৌস" এর নাম। জেমস যেদিন তার ব্যাচের ছেলেদের নিয়ে গিয়ে ফেরদৌসকে পিটাইলো হাজার ব্লকে, তার পর থেকেই চেলেটা আউলে গেলো আটকাইতে পারলাম না, সেই মাইর খাওয়ার আগে ফেরদৌসের সিজি কত ছিলো জানেন? আমরা বুলিং করে ও অনেক ছেলের জীবন নষ্ঠ করতে পারি ফেরদৌস তার প্রমান, আর আমিতো সেই দুঃস্বপনের রাতের কথা ভুলতেই পারিনা।
আমাকে যারা মেরেছিলো তাদের একজনকে অনেকদিন পরে ফেসবুকে ধরেছিলাম, কোন সদুত্তর দিতে পারে নাই, আমাকে মারার পর একজন সিনিয়রের বক্তব্য ছিলো "অনেক দিনের খায়েশ ছিলো আজকে মিটাইলাম"। ব
বুয়েটে কিছু সিনিয়রকে অবশ্যই শ্রদ্ধা করি এবং তাদের সাথে এখনো ভালো স্বম্পর্ক, কিন্তু বেরুনীর মতো , জেমসের মতো সিনিয়র দেখলে যাস্ট তাদের মুখে মুতে দিতে ইচ্ছে করে।
বুয়েটে পূজার ছুটি নিয়ে একবার ঝামেলা হয়েছিলো সেইবার ছাত্রদলের এক ছেলেকে সাধারন ছাত্ররা প্রায় মেরেই ফেলেছিলো, আমি গিয়ে সিভিল ডিপার্টমেন্টের সিঁড়ি থেকে ধরে নিয়ে গিয়ে হাসপাতালে দিয়ে আসি পরের দিন ছাত্রদলের ঐ জুনিয়র আমাকে চেনেই না বলে ছাত্রদলের কাছে জবান বন্দী দেয়! এরপর থেকে এই সব বালছালের আগে পিছে যাইতাম না, শেষের দিকেতো মাইর খাইয়া অনেকের খায়েশ মিটাইলামই, অথচ আমার কোনদিন কাউকে চোখ গরম করে কথা বলার ইতিহাস ও নাই।
আমি কোথায় বলছি, আমি ক্যাম্পাসে? কিন্তু যখন বুয়েটে কোন ঝামেলা হয়, যখন জুনিয়ররা সিনিয়রদের সাহায্য চায়, তখন অ্যালামনাই হিসাবে অবশ্যই আমাদের দায়িত্ব থাকে। এইটা বুয়েটের প্রতি আমাদের ভালোবাসা থেকেই আসে। যদি আপনি এইটা বুঝতে না পারেন, তাইলে বুয়েটের প্রতি আপনার ভালোবাসা নিয়া আমার সন্দেহ আছে।
আমি কি এইটাও কোথাও বলছি, জুনিয়র সিনিয়ররে পিটাইতে পারবে না, কিন্তু সিনিয়র জুনিয়ররে মারতে পারবে? মনগড়া কথা তো আপনি আমার চোখের সামনে বানাইলেন। অন্যায়ভাবে যেটা করা হয়, সেটা কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য না, সেটা সিনিয়র, জুনিয়র যেই করুক না কেন।
আর আপনার সাথে যেটা করা হইছে, সেটা অবশ্যই অনভিপ্রেত। কিন্তু তারপরে ফেরদৌসরা যেটা করছে, সেটাও ভালো কিছু না। তারা যদি অবস্থাটা ঠিক করতে চাইতো, যখন তাদের হাতে পাওয়ার ছিলো, সেটা হইতো সমস্যার আসল রিমেডি। সেইটা না কইরা তারা জুনিয়রদেরকে সিনিয়রদের বিরুদ্ধে লেলায় দিছে। আরো হাজারো আকাম-কুকাম তো করছেই।
যাই হোক, এই জাতীয় পাওয়ারের খেলায় ভিক্টিম অনেকেই। প্রত্যেকেরই নিজ নিজ ইতিহাস আছে। এজন্যই তো সমস্যার গোড়ায় হাত দিতে চাইছি।
মোস্তফার মাইর খাওয়া 'অনভিপ্রেত' (a disapproved; disagreed; un desired; not to one's liking; contrary to one's desire or intention.) বলেই কাজ শেষ! যেন অনিচ্ছাকৃতভাবে একটা ভুল করে ফেলেছে তাকে পিটাইয়া!
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
08 ব্যাচের আপনিতো, ফেসবুক আইডি দেন দেখি, আপনার চেহারা দেখতে খুব মনে চাইতেছে, কারন আমি মোটামুটি হলের সবাইরেই চিনিতাম, আমাকেও অনেকেই চিনতো। ০৪ বলেই আমি আপনি একই সময়ে হলে ছিলাম, তাই দেখার শখ, কতবড় নীতিবান আপনি। ফেরদৌস এখন অনেক খারাপ কাজ করে, ইভেন দেশে যে কয়দিন ছিলাম তার ভেতর থেকেও কিছুটা সময় বের করেছিলাম ফেরদৌস কে বোঝানোর, পারিনি সেটা করতে। যাই হোক ফেরদৌসকে নষ্ঠ করেছে জেমস। বুয়েটের নতুন কমিটি হয়েছে গতবছর তাই এই কমিটির আগ পর্যন্ত দায় দায়িত্ব আমার উপর ও পড়তো, কিন্তু প্রতিজ্ঞা ছিলো যেদিন থেকে ছাত্র জীবন শেষ সেদিনের পর থেকে অন্তত ক্যাম্পাসের কোনদিন রাজনীতি করতে ফিরবোনা। যাই হোক, ০০ ব্যাচের অত্যাচার এতোই বেড়ে গিয়েছিলো যে আমরা ০১, ০২ এবং ০৩ ব্যাচের ছেলেরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম আর একজন কাউরে ০০ ব্যাচের কেউ মারলেই সব কয়টারে হল থেকে বের করে দেবো। বুয়েটের জুনিয়ররা যেমন অসংযত আচরন করছে, সিনিয়রদের ও তেমনই কিছুটা "হাত" সংযত করে চলা দরকার। কারন থাপ্পড় যে খায় তার মনে থাকে, ফেরদৌসের মনে ছিলো আমার আছে...হয়তো আরো অনেকের থাকবে। ফেরদৌস ছাত্রলীগের দুধের মাছি না, জোট সরকার আমল থেকেই ছাত্রলীগ করতো...এবং এখনো করে কিন্তু তাই বলে তার করা অন্যায়কে কোন ভাবেই সমর্থন করা যায় না। তালাসকে আমি ও চিনি, বগুড়ার ছেলে, উচ্চতা খুব বেশি হলে ৫ ফিট, দেখলেই মেজাজ খারাপ হবার মতো চেহারার ছেলেটাকে কোনদিনই ছাত্রলীগের উপযুক্ত কর্মী বলে মনে হয় না, কিন্তু ঐ যে কিভাবে রুখবেন কেউ রাজনীতি করতে চাইলে। বুয়েট নামক শিক্ষাঙ্গনে সুস্থধারার রাজনীতির অনেক কিছু দেওয়ার আছে কিন্তু সব নষ্ঠ হয়ে গেছে, শিক্ষক থেকে শুরু করে বুয়েটের ৪র্থ শ্রেনীর কর্মচারী পর্যন্ত!
আপনার কথার মূল সুরের সাথে একমত। ধন্যবাদ।
আমি গোলাম মোস্তফার সাথে সম্পূর্ণভাবে একমত। ১-১ এর পর যদি আমাকে হল থেকে বাসায় নিয়ে নাহ যাওয়া হইত তাহলে আমিও কয়েকটা সিনিয়র পিতাইতাম খোদার কসম। সিনিয়রদের সাথে আমার ক্ষণস্থায়ী হল জীবন তেমন সুখকর ছিল নাহ
কে আটকাইছে আপনারে? যান, পিডান গিয়া...
বুয়েটের এই অবস্থা হওয়ার পিছনে অনেক কারণ দেখতে পাইতেছি!
অ্যাডমিন, আরো একটা ভুল ইনফো আছে এখানে। অ্যাডমিন সেটাও ঠিক করে দেন। জেমস ভাইয়ের সাথে ফেরদৌস ভাই ঝামেলা করতে গিয়েছিলো, কিন্তু সেটা সম্ভব হয় নাই। কাজেই, "সোহরাওয়ার্দী হলের '০০ ব্যাচের জেমস ভাই বুয়েটে আসায় তাকে শাসিয়ে দিলো ফেরদৌস, যাতে বুয়েটে তাকে আর দেখা না যায়।" এটা রিপ্লেস করে দেন এটা দ্বারা: "সোহরাওয়ার্দী হলের ’০০ ব্যাচের জেমস ভাই বুয়েটে আসায় সেখানেও ঝামেলা করতে চেয়েছিলো ফেরদৌস।"
অনুগ্রহ করে এরকম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে লিখতে গেলে অনেক যত্ন এবং মনোযোগ নিয়ে লিখবেন। এই ব্লগে অতিথি লেখকের লেখা সম্পাদনের অধিকার নেই, বারবার এডমিনকে অনুরোধ করাই প্রমাণ যে আপনার লেখায় সংশোধনের প্রয়োজন রয়েছে।
ব্যাটলে ছিলেন বলে আপনাকে অভিনন্দন, ওয়ারে থাকতে হলেও আপনাদের চাই। এজন্যে আপনাদের দায়িত্বশীল আচরণই কামনা করি।
যে ইনফোগুলো ভুল ছিলো, সেগুলো অবশ্যই অনাকাঙ্ক্ষিত। কিন্তু সেটা আমার লেখার মূল বক্তব্যকে লঙ্ঘন করে না।
ইনফোগুলোর ওপর বেইজ করে বক্তব্য নির্ধারিত হয়। ইনফোতেই ভুল, তাও একটা দুইটা না, অনেকগুলাই, থাকলে বক্তব্য লঙ্ঘন না করে কেমনে? অবশ্য তালগাছ আগেই এক পায়ে খাড়া থাকলে ইনফোর কোনো দাম নাই।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
অনেকগুলা না, মাত্র দুইটা
এই পোস্টটা একটা প্রমান যে বুয়েটের ছাত্ররা "ওয়ারে" থাকবে না।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
না, আমি তা মনে করি না। এভাবে ঢালাওভাবে হতাশ হতে চাই না, যদিও মাঝে মাঝে হতাশা গ্রাস করে...
একটু জেনেশুনে লিখলে কি ক্ষতি হয়? উলটা পালটা তথ্য দিয়ে পরে ত্যানা প্যাচাইয়া সেটা ঢাকার পরিশ্রম করতে হয় না।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
এইটা সচলে ফার্স্ট পোস্ট। বুঝি নাই যে লেখা ছাড়ার পরে আর কোন কন্ট্রোলই থাকবে না!
আমি বুয়েট এর তিতুমীর হল এ সিলাম ৫ দিন বন্ধ্হুর রুম এ. দুক্ষজনক হইলেও সত্যি কেন্টিন এ বন্ধুর সাথে খেতে গিয়ে দেখেসি একজন খাদ্য সম্পাদকের ক্ষমতা.
আমার বন্ধু প্রেম করত বলে তার মেয়ে বন্ধু তার সাথে দেখা করতে এলে বাজে কথা বলত সিনিয়ররা এবং নেতারা যেমন- 'কি হাতের বেয়াম বেসি করতাসো মনে হই....''
হল ফিয়াস্ট এর সময় তাকে অপমান করার পর সে বাধ্য হয়ে কোকে এর বোতল ভেঙ্গে মুখোমুখি দারিয়েসিলো. এবং সারাদেশের আমাদের সব বন্ধুরা এগিয়ে আসছিল যাতে ওকে
আর বিপদে পড়তে না হই কারণ ও তখন হুমকির ভিতরে সিল আর বুয়েট এর কেও হেল্প করতে আসেনি.
সময়কাল ২০০৩ জানুয়ারী. আর আপনি চুয়েট বা রুয়েট নিয়ে যা বলেসেন সেটার অন্য দিকটা জানেন না. চুয়েট এ বড় ভাই ছত ভাইদের সম্পর্ক অনেক ভালো. আর
পলিটিক্স এর কথা যেটা বলসেন সেখানে একটা মজার বেপার আসে. চুয়েট এ ছাত্রসংসদে এ ছাত্রর লেগ বা ছাত্র দোল এরা ক্ষমতা পাল্টানোর সাথে সাথে চাঙ্গে হই,
তাই ক্ষমতা বদল এর সময় মারামারি হই না সাধারনত কিনবা হল দখল কে নিয়ে.
কিন্তু আপনার লেখার উদ্দেশ মহত.
আসলে কী বলতে চাইছেন, বুঝতে পারি নাই। আপনার মনে হয় বাংলা লেখার তেমন অভিজ্ঞতা নাই। যাই হোক, উদ্দেশ্যের সাথে একমত হয়েছেন বলে ধন্যবাদ।
উফ বুয়েট এর এ কি করুন দশা !!!!
নতুন মন্তব্য করুন