গ্লাডিয়েটর এর দৃশ্যায়ন, শিকারীর ভূমিকায় প্রশাসন, রক্তাক্ত কুয়েট প্রাঙ্গন ...!

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: রবি, ০৮/০১/২০১২ - ১২:২৭পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:


গত কয়েক দিনে ভৈরবে জল গড়িয়েছে অনেক। সাথে হয়েছে জোয়ার-ভাটা। মুছে নিয়ে গেছে পাড়ের অনেক কিছু, সিক্ত করেছে রুক্ষ মাটিকে। কিন্তু কিছুই করতে পারেনি পাশের ছাত্রহল আর ক্যাম্পাসের রাস্তায় পরে থাকা রক্তের ছোপ কিংবা ড্রেনে পরে থাকা রক্তমাখা চাপাতিকে। হয়ত সেটা এমন এক বড় ভাইয়ের রক্ত, যে বড়ভাই দু'দিন আগেই বুঝিয়ে দিচ্ছিলেন পরীক্ষার পড়াটুকুন বা চা খাচ্ছিলেন একসাথে কিংবা হলের ডাইনিং এ পাশাপাশি বসে খাচ্ছিলেন দুপুরবেলার খাওয়াটুকু। কি অদ্ভূত তুমি রাজনীতি! আপন কে করে দাও পর আর পরকে? নিঃসন্দেহে আরও পর!

কুয়েটে আজ শূণ্য ক্লাসরুম। নিঃষ্প্রাণ ক্যাফেটেরিয়া। আড্ডাহীন টং। কিছুই আর অবশিষ্ট নেই ওখানে। ধু ধু করছে খেলার মাঠ। শহীদ মিনারটাও ভুগছে জনশুণ্যতায়। এ মাসের ২ তারিখ কুয়েটে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। সহপাঠী, সিনিয়র, জুনিয়রের মাঝে ঘটে যাওয়া রক্তক্ষয়ী এক সংঘর্ষে পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে বন্ধ ঘোষণা করা হয় ভার্সিটি।

নতুন বছরে প্রিয়জনকে শুভেচ্ছা জানানো আজকাল অনেকটা রীতির মত হয়ে গেছে। কুয়েটের ছাত্ররা এবার সারা জীবন মনে রাখার মত শুভেচ্ছা পেল তাঁদেরই সহপাঠী, সিনিয়র, জুনিয়র থেকে। ফুল কিংবা কার্ড নয়, ওরা এ বছর শুভেচ্ছা দিতে এসেছে লাঠি আর চাপাতি হাতে। রক্তাক্ত করে গেছে সিনিয়র, জুনিয়র, সহপাঠীকে। জুনিয়র মেরেছে সিনিয়রকে, পাশের সিনিয়র বলছিল আরও মার। এ যেন এক অদ্ভূত খেলা।

রোমান কলোসিয়াম দেখিনি, দেখিনি গ্লাডিয়েটরদেরও, লড়াইয়ে মত্ত অবস্থায় গ্লাডিয়েটরের শরীর থেকে বয়ে যাওয়া রক্তের ঝর্ণাও দেখিনি। গ্লাডিয়েটররা যখন লড়াই করত একটা বন্য পশুর সাথে বা বন্দী অন্য কোন মানুষের সাথে তা দেখে কোন সম্রাটের বিনোদন দৃশ্যও এর আগে দেখার সুযোগ হয়নি। এর সবটুকুই এতদিন শুধু কল্পনাতেই ছিল কুয়েট ছাত্রদের। এবার বাস্তবে সবটুকুই দেখতে পেলো ওরা। আর এটা দৃশ্যায়ন করেছে রাষ্ট্রীয় মদদপুষ্ট সন্ত্রাসী বাহিনী 'ছাত্রলীগ'।

তাহলে একটু বর্ণনা করি কি রকম ছিল এই দৃশ্যায়ন। ঢাল-তলোয়ারহীন এক গ্লাডিয়েটরকে বাঁশ, রড, চাপাতি, কাঁচের বোতল, পাইপ দিয়ে পিটাচ্ছে পশুরা, খুবলে খাচ্ছে গ্লাডিয়েটরের শরীরটাকে। যেন রক্তের নেশা পেয়ে বসেছে ওদের, আজ সবটুকু রক্তপান করা চাইই চাই।
- কে এই গ্লাডিয়েটর? ধর এটাকে! ধরে মার! এটার রক্ত খেয়ে উদরপূর্তি কর!
...
- এটাকে মারা শেষ? তো আরেকটাকে ধর! ধরে ওটাকেও মার! মেরে ওটার রক্তটুকুও শুষে নে! উদরপূর্তি কর!
(আজ ওদের ফিস্টের দিন! সব কটা গ্লাডিয়েটরকে মারবে পশুগুলা, মেরে ওদের রক্ত খেয়ে পেট ভরে ঘুমুতে যাবে।)

মোটামুটি এরকমই ছিল সেদিনকার পরিস্থিতি। আচ্ছা কি সেই মহৎ কারণ, যার জন্য হঠাৎ গ্লাডিয়েটরের দৃশ্যায়ন হল তা জানতে চাইলেন না? না জানতে চাইলেও, আজ আপনাদের জানতে হবে। আমি জোর করে জানাব সেই কারণ। প্রতিটি ঘরে আমাকে এই কথাগুলো পৌঁছাতে হবে। কারণ, এতক্ষণ যাদের পশু বললাম তারাও আমার মতই ছাত্র, আমার মতই কোন না কোন মা'র সন্তান। যে হয়ত বাসায় গিয়ে ভাত খেয়ে মা'র আঁচলে হাত মুছে, মার কোলে মাথা রেখে কথা বলে, বা ছোট বোনটির জন্য বাসায় যাওয়ার আগে একটা বই কিনে নিয়ে যায়, কিংবা টিউশনির টাকা থেকে জমানো টাকায় বাবার জন্য একটা পাঞ্জাবি কিনে। তাহলে, কোন কারণে আমি আজ ওদের পশু বললাম? আমার কি অধিকার আছে বলার? ওরা তো বলেনি আমাকে ওদের পশু ডাকতে। তাহলে? ভুলে গেলেন? ঐ যে ছাত্র হলের করিডোরে যে রক্তটুকু পরেছিল ওরা আমাকে অধিকার দিয়েছে, ঐ ছাত্রগুলোকে পশু বলার। আমি দুঃখিত জননী, আপনার ছেলে পশু হয়ে গেছে, ওকে আমি আর আমার সহপাঠী বা বড়ভাই, ছোটভাই ডাকতে পারব না। ও স্রেফ একটা পশু, জননী। বিশ্বাস করুন আমাকে, ও আর মানুষ নেই, ও অন্য মানুষকে নির্দয়ভাবে প্রহার করে, রক্ত ওর মেখে যায় হাত, তাও ও প্রহার করতে থাকে। ও মানুষ হতে পারে না।

জননী আক্ষেপ আমার, আমাদেরই বর্তমান উপাচার্য ড. মুহাম্মদ আলমগীর। আপনার সন্তানকে পশু বানিয়ে ফেলেছে, এই নির্লজ্জ-বেহায়া লোকটি যেদিন থেকে উপাচার্য হিসেবে ক্যাম্পাসে আছে, তারপর থেকেই মার খেয়ে যাচ্ছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এই বেহায়া উপাচার্য নিয়োগ পাওয়ার আধ ঘণ্টার মাঝেই ক্যাম্পাসের সবাই দু'টি নোটিশ পায়। এক, মুক্তচর্চার নামে ছাত্র রাজনীতির উন্মেষ আর, দুই, রাজনৈতিক কার্যকলাপের জন্য বহিস্কৃত দুই ছাত্রের বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার (যারা পরবর্তীতে কুয়েট ছাত্রলীগ শাখার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হয়েছিল)! বুঝা গেল, দু'টি নোটিশই রাজনৈতিক। যে ক্যাম্পাসে আগে রাজনীতির নামে সন্ত্রাসবাজি চলত না, সেই ক্যাম্পাস আজ বন্ধ হয়ে যায় অনির্দিষ্টকালের জন্য।

অক্টোবর, ২০১১ তে কুয়েটের প্রবেশপথে অবস্থিত একটি ছাত্র হল থেকে আমাদেরই এক বোনকে অনেক বাজে ভাবে উত্যক্ত করা হয়। এবং এ রকম আচরণ আরও আগে থেকেই হয়ে আসছিল। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে '০৮ ব্যাচের তিনজন ছাত্রকে মারধর করা হয় এবং এরই ফলশ্রুতিতে ১২ অক্টোবর ক্যাম্পাসে একটি ছাত্র আন্দোলন হয়। তখনও ভিসির আচরণ ছিল নির্লজ্জের মত সাধারণ ছাত্রদের বিপক্ষে গিয়ে ঐ মদদপুষ্ট ছাত্রলীগের পক্ষে।

পরবর্তীতে মূলত ঐ হলের বোর্ডার যারা ছাত্রলীগ করে তারা এই ঘটনার জের ধরে গত '০৮ ব্যাচের দু'জন ছাত্রকে শারীরিকভাবে আহত করে

এই সেই উপাচার্য যে খুলনার মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেককে সাথে নিয়ে মদ্যপানে মারা যাওয়া কুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতির (যার বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার করেছিল) স্মৃতিফলক উন্মোচন করে। এই সেই নরপশু যার সামান্যতম বিবেক নেই যে একটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মদ্যপানে মারা যাওয়া কারো স্মৃতিফলক লাগানো কতটুকু অশ্লীলতা!

(ডান পাশের মার্ক করা বদমাশই আমাদের ভিসি)

আর এর বিরোধীতাকারী হিসেবে শিক্ষক সমিতি ২ নভেম্বর একটি জরুরি সভার মাধ্যমে কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দেয় ১২ নভেম্বরের মধ্যে স্মৃতিফলকটি সরিয়ে ফেলার। কিন্তু, এই নির্লজ্জ-বেহায়া লোকটির প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপে এই ফলক যা সকল ছাত্রদেরই তিরস্কার করে যাচ্ছে তা রক্ষা করাকে নিজের পবিত্র কর্তব্য মনে করে ঝাপিয়ে পড়েন শিক্ষকদের বিরুদ্ধে। ফলশ্রুতিতে শিক্ষকরা ১৭ তারিখ আরও বৃহৎ পরিসরে আন্দোলনে নামার ঘোষণা দেন। তাঁরা ক্লাস ও পরীক্ষা গ্রহণ ব্যাতীত সকল প্রকার প্রশাসনিক কাজ স্থগিত রাখেন। এবং পরিস্থিতির আরও অবনমন হলে নভেম্বরের ২৮ তারিখ থেকে তিনদিন কোন ক্লাসও না নেয়ার সিদ্ধান্ত নেন শিক্ষকরা। কিন্তু, তবুও এই নোংরা জানোয়ার অবনমিত হয়নি। বেহায়াপনার এই চূড়ায় পৌঁছাতে তাকে প্রত্যক্ষভাবে সহায়তা করে আরেক নির্লজ্জ কুয়েট ছাত্র-কল্যাণ পরিচালক ড. শিবেন্দ্র শিখর শিকদার।

এসব ঘটনাই ছিল শিক্ষার্থীদের আগ্নেয়গিরি হয়ে ওঠার মূল কারণ। যার প্রকাশ পেয়েছে ১ তারিখ রাতে হলে বার্ষিক ফিস্ট আয়োজনে অতি নিম্নমানের খাবার পরিবেশনের পর।

(একুশে হলের প্রভোস্টের রুমের বাইরে অপেক্ষমাণ সাধারণ ছাত্রদের সমাবেশ)
যেখানে জনপ্রতি বাজেট ছিল প্রায় ৯০০ টাকার মত, সেখানে সব মিলিয়ে প্রতি ছাত্র প্রতি ৪০০ টাকাও হবে খাবার পায়নি। তাঁরা এই অনিয়মের কারণ জানতে চায়, জবাব দিতে ব্যর্থ হলে ছাত্ররা হল কমিটিকে (যাদের সবাই ছাত্রলীগের সদস্য) ধাওয়া করে হল থেকে বের করে দেয় এবং চারজন শিক্ষককে হল অফিসে আটকে রাখেন। পরবর্তীতে রাত তিনটায় উপাচার্য এলে ছাত্ররা তাকে দিয়ে এই মর্মে কাগজে স্বাক্ষর করিয়ে নেন যে ভোজন কমিটির সদস্যদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তারপরই কেবল মুক্তি ঘটে অবরুদ্ধ চার শিক্ষকের।
সূত্র : প্রথম আলো
আর পরদিন রক্তারক্তির ঘটনা ঘটেছে সাধারণ ছাত্রদের মাঝে অগ্ন্যুতপাতের পরবর্তীতে ছাত্রলীগের অপমানের প্রতিশোধ হিসেবে। না হলে, ইঞ্জিনিয়ার হতে আসা একজন ছাত্র সামান্য খাওয়া নিয়ে কিই বা আসে যায়। মোদ্দা কথা ছাত্রলীগ, ভিসির যুগপৎ অনিয়ম, অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের এই বিস্ফোরণ।

সাধারণ শিক্ষার্থীদের মারধর করার সময় বাহির থেকে পার্শ্ববর্তী বিএল কলেজ থেকেও ছাত্রলীগ কর্মীদের ডেকে আনে ছাত্রলীগে জানোয়ারগুলো। তারা এসে বিভিন্ন ছাত্রদের সাহায্য করতে যাওয়া শিক্ষকদেরও আঘাত করে। কয়েকজন শিক্ষক আহত হন এ ঘটনায়। ওহ, আরেকটা মজার কথা, প্রথমে ছাত্মরলীগ মঞ্চায়িত করেছিল ভিনদেশী কাহিনী গ্লাডিয়েটরের দৃশ্যপট। আর ঘটনার শেষে ছাত্র কল্যাণ পরিচালক বেহায়া-নির্লজ্জ শিবেন্দ্র শিখর শিকদার ঠিক বাংলা সিনেমার শেষ দৃশ্যের মত পুলিশ ডেকে আনে। আর তার আগেই ছাত্রলীগ নামের সন্ত্রাসী বাহিনী ক্যাম্পাস থেকে নীরবে প্রস্থান করে।

ক্যাম্পাসে অবস্থানরত বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা আবারো পরিণত হয় শিকারে। শিকারী এবার রাষ্ট্রীয় পেটুয়া বাহিনী। আর দালাল রূপে কাজ করে ঐ শুকরের বংশধর ছাত্র কল্যাণ পরিচালক শিবেন।

(মাঝের কালো সুয়েটার পড়া মানুষরূপী জানোয়ারটা হল শিবেন)

এরই মধ্যে বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা ভিসির বাসায় গিয়ে জড়ো হয়ে ভিসিকে বের হয়ে পরিস্থিতি ঠাণ্ডা করতে বলে। কিন্তু, কাপুরুষ ভিসি তো ঐ দিন সকালেই দে ছুট! ক্যাম্পাস চুলায় যাক গে, আমার কি? স্ত্রী-কন্যা নিয়ে পালিয়ে গেছে। ছাত্রকে ফেলে পালিয়ে গিয়েছে দুই পেটুয়া বাহিনীর হাতে। যদিও পরে এই মিথ্যুক ভিসি নির্লজ্জভাবে তার স্বভাব ধরে রেখেছে এই বলে যে, সাধারণ ছাত্ররা নাকি তার পত্নীকে তার বাসভবন থেকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু পুলিশের হস্তক্ষেপের ফলে তা ঘটেনি, কিন্তু তার ১৩ বছর বয়সী মেয়ে নাকি আহত হয়েছে।
অথচ এটা ডাহা মিথ্যা কথা। দুনিয়ার সব নোংরা বস্তুর সাথে তুই পঁচে মরবি আলমগীর। লা'নত তোর উপর। সাংবাদিকরা অনেক ক্ষেত্রেই সাংঘাতিক হয়। এরকমই করেছে প্রথম আলো। আমাদের বিপ্লবী ছাত্রদের বানিয়ে দিয়েছে নারী নির্যাতনকারী। ৪ তারিখের সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে, সাধারণ শিক্ষার্থী হামলা চালালেন খোদ উপাচার্যের বাসভবনে ও প্রশাসনিক ভবনে। তাঁরা উপাচার্যের বাসভবন থেকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করেন উপাচার্য-পত্নীকে। পুলিশের হস্তক্ষেপের ফলে তা ঘটেনি, কিন্তু উপাচার্যের ১৩ বছর বয়সী মেয়ে আহত হয়েছে। [লিংক]
দুঃখিত প্রথম আলো

মার খেলাম আমরা, স্বাভাবিক নিয়মেই মামলাও হল আমাদের নামে। বিচারের বাণী যে এখানেও নিভৃতে কাঁদবে, কাঁদতেই হবে ...
চার জন শিক্ষক, এবং অজ্ঞাত পরিচয়ের তিনশ জনের নামে ভিসি মহোদয়(!) মামলা করে বসেন। আর তারই ছত্রছায়ায় ছাত্রলীগের নেতা জুবায়ের আরেকটি মামলা করে। এজাহারে এই পশু বলে, সোমবার বেলা আনুমানিক দুইটার সময় পূর্বপরিকল্পিতভাবে চার শিক্ষকের নেতৃত্বে ৪০ জনএবং অজ্ঞাত বিবাদীরা দলবদ্ধ হয়ে লোহার রড, চাপাতি, রামদা, হকিস্টিক, হাতুড়ি ইত্যাদি দেশি অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে অমরএকুশে হলে তাঁরকক্ষসহ (২০৫) অন্যান্য কক্ষে ঢুকে ভাঙচুর ও লুটপাট করে। তারা হলে অবস্থানরত ছাত্রদের এলোপাতাড়িভাবে মারধর করে শরীরের বিভিন্ন অংশে জখম করে।’ ...
তোর বাপ আলমগীর, শিবেনের মত সব শিক্ষক হলে শিক্ষক নামটা এতদিনে একটা ঘৃণাবাচক শব্দ হত। তুই একদিন আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হবি জুবায়ের। তোর মা, সন্তান বলে হয়ত তোকে কিছু করবে না, কিন্তু তোর অনাগত প্রজন্ম ধিক্কার দিয়ে তোর মুখে থুথু ছিটাবে। সেদিন আসছে।

‘স্যাররা পূর্বপরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। মারামারির সময় আমি উপস্থিত ছিলাম। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করতে গিয়ে দু-একজনেরগায়ে হাত তুলেছিলাম।’ সে আরও বলে, ‘আমাদের বিরুদ্ধে হামলা করার অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। আসলে যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচাতে সারা দেশে জামায়াত-শিবির-বিএনপি সম্মিলিতভাবে অপতৎপরতা চালাচ্ছে। তারা দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অস্থিরতা সৃষ্টি করছে। তারই অংশ হিসেবে কুয়েটে এই তৎপরতা চালিয়েছে।’
কারও ঘটে যদি বুদ্ধি থাকে তাইলে এই উক্তি থেকেই, বুইঝা নিবে আওয়ামী লীগের শত্রু এই ছাত্রলীগ।

যাইহোক, সেদিন '০৭ ব্যাচের এক ছাত্রকে মারার সময় ছাত্রলীগের পশুরা শ্লোগান দিচ্ছিল "জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু!" হে ধরণী দ্বিধা হও, আমাকে গ্রাস কর। আমি দুঃখিত বঙ্গবন্ধু। আপনার নামে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী আরেকজন ছাত্রনেতাকে মারছে আপনারই প্রতিষ্ঠিত ছাত্রলীগ। এটা ভাবতেই আমি অভিসম্পাত করছি এসব বন্য জানোয়ারদের উপর। গজব নামুক এদের জীবনে। আপনার নামে এরকম রক্তের নহর বয়ে যাওয়া দেখে আপনি কি আপনার পুত্রের মতই "মোনায়েম খার পোলার মতও হইস না" বলে শাসন করতেন না? বুঝতে পারছি পিতা, খুব কষ্টে আছেন আজকাল।

এখন আর কোন কিছু নিয়া আশা লাগে না, হতাশ হয়ে যাচ্ছি দিনকে দিন। আগে ছাত্র রাজনীতির পক্ষে অনেক কিছু বলতাম, এখন আর কিচ্ছু বলি না। কারণ, ছাত্র নামধারী এই সন্ত্রাসীরা শুধু আজকেই না, অনেক আগে থেকেই রক্ত ঝরিয়ে যাচ্ছে সাধারণ ছাত্রদের। তখন অবশ্য এভাবে ভিন্ন মোড়কে রাজনীতিটাকে দেখা হয়নি। আমি জানি না, আর কত মায়ের সন্তানের শরীর থেকে রক্ত শুষে নেবে এই ছাত্রনামধারী সন্ত্রাসীরা? আর কত? আগে নাকি দেবতাদের উদ্দেশ্যে বলি দেয়া হত মানুষকে, ছাত্রলীগ তুমি আর কয়টা মানুষের রক্তপান করবে?

তবুও, আশাবাদী এই আমি স্বপ্ন দেখে যাই। আমি স্বপ্ন দেখি ভিসি আলমগীর, ছাত্র কল্যাণ পরিচালক শিবেনের পদত্যাগ। আমি স্বপ্ন দেখি ছাত্রলীগের নর্দমার কীটগুলোর শাস্তি এবং অতি অবশ্যই তা হল ক্যাম্পাস থেকে বহিস্কার। আমি স্বপ্ন দেখি, এই দেশের মাটিতে থাকবে না কোন রাজনৈতিক সংঘাত। আমি স্বপ্ন দেখি বাংলার মাটিতে মৌলবাদ, সাম্প্রদায়িকতার উৎপাটনের। আমি স্বপ্ন দেখি জামাত শিবিরকে পাকিস্তানে এক্সপোর্টের। আমি স্বপ্ন দেখি ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করে প্রতিটা ভার্সিটিতে খোলা হবে ছাত্র সংসদ। আমি স্বপ্ন দেখি ছাত্র সংসদে হবে কল্যাণমুখী, দেশের জন্য মঙ্গলজনক আলোচনা। আমি স্বপ্ন দেখি ...

যাইহোক, প্রধানমন্ত্রীকে আর কতবার বলব, সামলান আপনার ছাত্রলীগ। আপনাদের বেঁধে দেয়া যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েই পড়তে এসেছিলাম ইঞ্জিনিয়ারিং। কিন্তু ইঞ্জিনিয়ার হতে এসে, লাশ হয়ে আমার মায়ের কাছে ফেরত যেতে চাই না, প্রধানমন্ত্রী। আমাদের এই ছোট্ট দাবিটুকু কি আপনার কানে পৌঁছায় না? কত দূরে থাকেন আপনি? খুব, খুব জানতে ইচ্ছে করে।

ব্লগে আসা কয়েকজন কুয়েটছাত্রের কান্না :
১) রক্তাক্ত হৃদয়ে কুয়েট আমার
২) কাঁদল ছাত্র,কাঁদল শিক্ষক। কুয়েট (পর্ব-১)
৩) কুয়েটের একজন আসামী বলছি

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক,
একজন কুয়েটিয়ান।

ছবি: 
24/08/2007 - 2:03am

মন্তব্য

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

খুবই এক্সপ্লিসিট লেখা।

প্রধানমন্ত্রী। আমাদের এই ছোট্ট দাবিটুকু কি আপনার কানে পৌঁছায় না?

ডিজিটাল যুগে ইচ্ছে করলে সবই দেখা ও শোনা যায়, আবার ইচ্ছে করলেই সুইচ অফ করেও রাখা যায়।

মনে পড়ছে, শেওড়াপাড়ায় শামীম নামে এক সন্ত্রাসীর নামে রাস্তার নামকরণ হয়েছে (অনেক আগে, এই সরকারের দোষ দিচ্ছি না)।

সুমন চৌধুরী এর ছবি

ছাত্রলীগকে শায়েস্তা করার প্রাথমিক মডেল হচ্ছে জাহাঙ্গীরনগরের ২য় ধর্ষণবিরোধী আন্দোলন। পাল্টা ধোলাই ‌ছাড়া এইসব চুতমারানিদের আর কোন চিকিৎসা নাই। ছাত্রলীগ ধ্বংস হোক।

তাপস শর্মা এর ছবি

তবুও, আশাবাদী এই আমি স্বপ্ন দেখে যাই। আমি স্বপ্ন দেখি ভিসি আলমগীর, ছাত্র কল্যাণ পরিচালক শিবেনের পদত্যাগ। আমি স্বপ্ন দেখি ছাত্রলীগের নর্দমার কীটগুলোর শাস্তি এবং অতি অবশ্যই তা হল ক্যাম্পাস থেকে বহিস্কার। আমি স্বপ্ন দেখি, এই দেশের মাটিতে থাকবে না কোন রাজনৈতিক সংঘাত। আমি স্বপ্ন দেখি বাংলার মাটিতে মৌলবাদ, সাম্প্রদায়িকতার উৎপাটনের। আমি স্বপ্ন দেখি জামাত শিবিরকে পাকিস্তানে এক্সপোর্টের। আমি স্বপ্ন দেখি ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করে প্রতিটা ভার্সিটিতে খোলা হবে ছাত্র সংসদ। আমি স্বপ্ন দেখি ছাত্র সংসদে হবে কল্যাণমুখী, দেশের জন্য মঙ্গলজনক আলোচনা। আমি স্বপ্ন দেখি ...

চলুক চলুক চলুক

সাজ্জাদ সাজিদ এর ছবি

"যাদের হৃদয়ে কোন প্রেম নেই-প্রীতি নেই-করুণার আলোড়ন নেই-
পৃথিবী অচল আজ তাদের সুপরামর্শ ছাড়া
যাদের গভীর আস্থা আছে আজও মানুষের প্রতি,
এখনও যাদের কাছে স্বাভাবিক বলে মনে হয়
মহৎ সত্য বা রীতি, কিংবা শিল্প অথবা সাধনা
শকুন ও শিয়ালের খাদ্য আজ তাদের হৃদয়।"

সৌভাগ্য জীবনানন্দের তাকে কেবল ঐটুকু পর্যন্ত লিখতে হয়েছিলো, আজকে আর শুধু হৃদয় খেয়ে পেট ভরছে না শিয়াল-শকুনের, রক্ত চাই তাজা রক্ত.........

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

এটা একটা শেকল বিক্রিয়ার মত কাজ করছে দেখছি। এটা শুধু কুয়েট বা বুয়েটের আলাদা গল্প না, এই গল্প এখন সারা বাংলাদেশের। শুধু পাত্র-পাত্রীর নাম-ধাম বদল করে নিলেই হচ্ছে। কী প্যাথেটিক! এক একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি মানে সাক্ষাৎ শয়তান (ব্যতিক্রম আছে কিনা জানা নেই)! আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর ভবিষ্যত কী আসলে?

আমি শুধু একটা জিনিস বুঝতে পারি না, আওয়ামী লীগ কেন তার ছাত্রদের নিয়ন্ত্রন করছে না? আখেরে কী লাভ হচ্ছে আওয়ামী লীগের?

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

হিমাগ্নি এর ছবি

ভাই,
নিজের চোখের সামনে ঘটনাগুলো ঘটছে। চিৎকার করে কাঁদতে ইচ্ছা করছিল। একজন ছাত্র কিভাবে তার ক্লাসমেটকে এভাবে মারতে পারে??? কিভাবে??? বিশ্বাস করেন, তাদের এতটুকু হাত কাঁপেনি। নিজেরা তো মেরেছেই, বহিরাগতদের দিয়েও মারিয়েছে। এতটাই ক্ষোভ আমাদের উপর??? আমরা তো আমাদের প্রাপ্য অধিকারের জন্য কথা বলেছিলাম। সেটাই কাল হয়ে দাঁড়াল আমাদের জন্য??? মার খেলাম প্রথমে তাদের কাছে, এরপর বহিরাগতদের কাছে, তারপর পুলিশের কাছে... আর কত মার খেতে হবে আমাদের??? আর কত??? জানি, মার খাওয়া এখনো অনেক বাকি আছে। ভার্সিটি খোলার সাথে সাথে তারা আবার আমাদের মারবে। রড,চাপাতি দিয়ে মারবে। মারতে মারতে অজ্ঞান করে ফেলবে। একসময় মেরেও ফেলতে পারে। তাদের কোন বিচার হবেনা। আমি খুব ভালমতই জানি, তাদের কোন বিচার হবেনা।কারণ, সাধারণ ছাত্রদের জন্য কেউ বিচার চায় না। কেউ না।

মনে হয়, এবার মায়ের হাত থেকে কাফনের কাপড় পরে যেতে হবে। সবাই দোয়া করবেন।

পুতুল এর ছবি

হালুয়া রুটির কুত্তারা এমনই হয়। হোক সে ছাত্রলীগের। আওয়ামী বা ছাত্রলীগের সমালোচনা করা মানেই জামাত/শিবির তাদের মতে।
এই শুয়োর গুলোর ধংশ হবে না সহজে। নিজের দল ক্ষমতায়। ভার্সিটি প্রসাশন পক্ষে। পুলিশ পক্ষে। কিন্তু আওয়ামী লিগের বেঁচে থাকার জন্যই এদের বিনাস ভীষণ জরুরী। আশা করি হাসিনা ব্যপারটা মাথায় নেবেন। আপনাদের জন্য রইল সম বেদনা।

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

জিজ্ঞাসু এর ছবি

খুবই দুঃখজনক ঘটনা। ছাত্রশিক্ষকদের আগামী দিনগুলি হয়ত অনেকদিন যাবত আর মসৃণভাবে কাটবে না খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে। আহত ছাত্র-শিক্ষকদের এই দুঃস্বপ্ন তাড়িয়ে বেড়াবে কিছুকাল। কিন্তু আমাদের জাতির কোন পরিবর্তন ঘটবে না। শুধু বাংলাদেশ নামের সাথে সোনা বা ডিজিটাল যোগ করতে পারব। আমাদের এটুকুই পরিবর্তন সম্ভব। কারণ আমাদের মধ্যে হিংসা অনেক বেশি। প্রতিহিংসা, ঘৃণা আমাদের রক্তের কণায় কণায়। তাই আমাদের দেশে কোনদিন কোন অন্যায়ের বিচার হয় না। সবলের অত্যাচারে দুর্বল এদেশে নিগৃহীত, লাঞ্ছিত। ঠিক মগের মুল্লুক বলা চলে। যারা গদিতে বসেন তারা দেশসেবার জন্য বসেন না। তারা বসেন নিজের উদরপূর্তির জন্য। কেউ বসেন প্রতিশোধের জন্য।
ছাত্র রাজনীতি আমাদের পূর্ববর্তী গণআন্দোলনগুলোর পেছনে ভূমিকা রেখেছিল এমন দোহাই দিয়ে যারা বাংলাদেশে ছাত্ররাজনীতির পক্ষে কথা বলেন তারা নেহায়েত অজ্ঞ কিংবা সুবিধাবাদী।
কোন যুক্তিতেই ছাত্ররাজনীতিকে প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়ার কোন কারণ কোনকালে ছিল না।
দেশের সঙ্কটে ছাত্ররা এগিয়ে এসেছে এবং ভবিষ্যতেও আসবে। বিশ্বের অন্যান্য দেশেও এমনটি দেখা যায়। কিন্তু তাই বলে ছাত্রলীগ, শিবির, ছাত্রদল, ছাত্রইউনিয়ন নামে দোকানদারির কোন প্রয়োজন দেখি না।
আমি দোয়া করি সকল আহত ছাত্রশিক্ষকরা যেন তাড়াতাড়ি সুস্থ হন এবং এই ত্রাসযজ্ঞের স্মৃতি ভুলতে পারেন।

___________________
সহজ কথা যায়না বলা সহজে

কালো কাক এর ছবি

কী সুন্দর হলো আমাদের নববর্ষ উদযাপন ! বিশ্ববিদ্যালয়ে রক্ত ঝরিয়ে !
কী বেহায়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ! অতিরিক্ত মদ্যপানে মৃত ছাত্রের (পূর্বে বহিষ্কৃত) জন্য স্মৃতিফলক হয়, তাতে হাত তুলে দোয়া করে ভিসি !
এই লোকগুলা খায় কী ? শুকরের বিষ্ঠা? ছিঃ

সাফি এর ছবি

সুবিচার পাবেন আপনারা এই আশা রাখা ব্যতীত আপাতত কিছু করার নেই। আন্দোলন জারি থাকুক, নিজেদেরটা নিজেদেরই আদায় করে নিতে হবে।

লা'নত তোর উপর

লা'নত মানে কী?
''

পোস্টের লেখক এর ছবি

সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি আমাদের সমর্থন জানিয়ে পাশে থাকার জন্য। আওয়াজ তুলুন, "ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করতে হবে"।

@ সাফি ভাই, লা'নত মানে অভিশাপ টাইপই কিছু। ধর্মীয় শব্দ।

হাসান মোরশেদ এর ছবি

এই বেহায়া উপাচার্য নিয়োগ পাওয়ার আধ ঘণ্টার মাঝেই ক্যাম্পাসের সবাই দু'টি নোটিশ পায়। এক, মুক্তচর্চার নামে ছাত্র রাজনীতির উন্মেষ

আওয়াজ তুলুন, "ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করতে হবে"।

আচ্ছা?

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

বলেন সন্ত্রাসের রাজনীতি বন্ধ করতে; ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করতে হবে কেন?

পোস্টের লেখক এর ছবি

বলেন সন্ত্রাসের রাজনীতি বন্ধ করতে; ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করতে হবে কেন?

এইভাবে আমিও আগে ভাবতাম। কিন্তু এই পরিস্থিতি ভিন্নভাবে ভাবতে শিখাইছে। প্রচলিত ছাত্র রাজনীতিতে প্যাশন থেকে কেউ রাজনীতিতে ঢুকে না। একেবারেই নিরীহ টাইপ ছেলেকে কিভাবে গডফাদার রূপী বড়ভাইরা শেল্টার দেয়ার নামে প্রশ্রয় দেয়, তা দেখেছি নিজ চোখেই। এখন কি পাবেন আপনি এসএসসি, এইচএসসিতে বোর্ড স্ট্যান্ড করা ছাত্রনেতা? ওসব শুধু রূপকথার গল্পই মনে হয়।

ধ্রুব বর্ণন এর ছবি

নিষিদ্ধকরণের বাতিক থেকে সরে আসা দরকার। গণহারে ছাত্রলীগ বন্ধ হওয়াও কাজের কথা না। এগুলো ছদ্ম সমাধানের হাতছানি। ডিল করতে হবে বিভিন্ন ফ্রন্টে। সস্তা সমাধানে ক্ষতি বাড়বে।

পোস্টের লেখক এর ছবি

নিষিদ্ধকরণের বাতিক থেকে সরে আসা দরকার। গণহারে ছাত্রলীগ বন্ধ হওয়াও কাজের কথা না। এগুলো ছদ্ম সমাধানের হাতছানি। ডিল করতে হবে বিভিন্ন ফ্রন্টে।

ভাই আপনার কাছে নিষিদ্ধকরণের দাবিটা কিছু বাতিকগ্রস্ত মানুষের বাতিকের মত লাগলেও, আমি বলতে বাধ্য হয়েছি এই নিষিদ্ধকরণের কথা। লেজুড়ভিত্তিক ছাত্র রাজনীতি অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। কারণ, রাজনীতিকে ওরা শুধুই একটা লাভবান ব্যবসা হিসেবে দেখে, সেবা হিসেবে নয়।

সৃষ্টিছাড়া এর ছবি

আগাগোড়া পচেগলে যাওয়া ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করলে কার ক্ষতি? কি লাভটা হয়েছে এটা যত্ন করে আগলে রেখে শুধুমাত্র রাজনৈতিক দলের ফয়দা লোটা ছাড়া? বিনিময়ে সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা কি পেয়েছে? অমোচনীয় শেসন জট, হামলা-মামলা, মূল্যবান জীবন দান....এটা তো অনেক লম্বা লিস্ট! এত প্রাপ্তি যার জন্য, আমাদের সবার উচিত সেই কালসাপকে দুধকলা দিয়ে আগলে রাখা যাতে করে আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম এই অমোঘ প্রাপ্তিগুলো থেকে বঞ্চিত না হয়!

ধ্রুব বর্ণন এর ছবি

আমি আপনাদের দুঃখ না বোঝা মানুষ না। সেশন জট, ছাত্রলীগ, ছাত্রদল, শিবির, ছাত্র ইউনিয়ন পার কইরা আমিও আসছি। আপনাদের বাস্তবতাকে আপনারা আপনাদের মতো কইরাই বুঝবেন। সমস্যা নাই।

আমার বাস্তবতাবোধ হইলো, আমরা রাজনীতির মধ্যে বাস করি। সেটার অধিকারও সবার আছে। এখন রাজনীতি তার যেসব সমস্যা নিয়া হাজির হয়, সেগুলার কারণে অতিষ্ঠ হইয়া আপনি মানুষের রাজনীতি করার অধিকারটাই রহিত করতে পারেন না। রাজনীতি নিষিদ্ধ করলেও চলতে থাকবে। পুলিশ দিয়াও সেইটা দমাইয়া রাখতে পারবেন না। রাজনীতির পক্ষে তখন বীর বিপ্লবীর জন্ম হবে। আন্দোলন হবে। আপনাদেরই ভাইবোনেরা তখন বইসা বইসা পুলিশের পিটা দেওয়া দেখবে না।

নিষিদ্ধ কইরা দিলে তারপর যদি সবাই সুখে শান্তিতে বসবাস শুরু করতো, তাইলে তো হইতই। কিন্তু নিষিদ্ধ কইরা দিলে যেমনটা সমাধান হবে ভাবতেছেন, তেমনটা আমি ভাবতে পারতেছি না। ওইটা সস্তা সমাধান, ক্ষতি আরও বাড়বে।

এতো বড় বড় একেকটা সমস্যার আপনারা এতো চটজলদি সমাধান চাইয়া বসতেছেন দেইখাই আমার অবাকটা বেশি লাগতেছে। মনে হইতেছে ভাবতেছেন, সরকারের হাতে যাদু আছে। আইসা নিষিদ্ধ কইরা দিয়া গেলো, আর সব সমস্যার সমাধান হইয়া গেলো। ভিসির গলা চাইপা একটা দুইটা নোটিশ আদায় কইরা ফেললেন, আর সমাধান হইয়া গেলো। এই স্ট্রিট জাস্টিসগুলা তো আমাদের আগেও ছিলো, আমাদের সময়েও ছিলো, আপনাদের সময়েও হইতেছে। আপনাদের পরেও যে হবে সেইটাও তো জানেন। কেনো হবে কন দেখি? কারণ স্ট্রিট জাস্টিস ইজ নো জাস্টিস। অবিচারের এই ধারা তাই চলতে থাকে। নিষিদ্ধকরণও হইলো ভিসির দেওয়া বহিষ্কারাদেশের মতো একটা সমাধান। অকার্যকর। ওয়ার্স দ্যান নো সমাধান।

মূল রাজনীতিতেও একই ধরনের কথা শোনা যায়। রাজনীতিতে দুরাচার হইতেছে, তাই রাজনীতিরে প্রকারান্তে নিষিদ্ধকরণের পরামর্শ উঁকিঝুকি দিতেছে বেরাজনৈতিক সুশীল পক্ষ থেকে। ওইখানেও রাজনীতি থাকনের কাম কী? নিষিদ্ধ করলে ক্ষতি কার? প্রথম দর্শনে বেরাজনৈতিক শাসন দেখতে শুনতেও ভালোই লাগবে। আরাম লাগবে। রাস্তাঘাট পরিষ্কার পাবেন। সুন্দর ছিমছাম জীবন পাবেন। ঠিক কি না? এই ধরনের সকল ইউটোপিয়াই ইতিহাসে অউন্নয়ন, অত্যাচার, দুর্ভিক্ষ আর লক্ষ লক্ষ মানুষের মৃত্যু দিয়া শেষ হইছে।

নিষিদ্ধকরণের পক্ষে যতক্ষণ সময় দিতেছেন, ততক্ষণ ধইরা সঠিক সমাধান করার জন্য যেই সময়গুলা দিতে পারতেন, সেই সময়গুলারে নষ্ট করতেছেন। পরের ব্যাচের নতুন ছাত্রগুলা আইসা দেখবে কিছুই আগায় নাই। তারাও তখন অসমাধানের দাবী কইরাই পাঁচ ছয়বছর পার কইরা চইলা যাবে। সমাধানের পথে চাকা একট চুলও ঘুরবে না। টেকসই পরিবর্তন ধীরে ধীরে ঘটে। ধৈর্য ধইরা সঠিক সমাধানের কথা ভাবতে হবে।

সৃষ্টিছাড়া এর ছবি

আমরা রাজনীতির মধ্যে বসবাস করি এটা সত্য। রাজনীতি থেকে মুখ ফিরিয়ে রাখে সাধ্য কার? সচেতন অথবা অবচেতনে রাজনীতি আমাদের দরজায় এসে ঘা মারে প্রতিনিয়ত।
লেজুরবৃত্তি আর সন্ত্রাসের ছাত্ররাজনীতির টেকসই পরিবর্তন কিভাবে সম্ভব? কে দাবি তুলবে? কার কাছে তুলবে ? যাদের কাছে দাবি তুলবে তারা কি সেই মানসিকতা ধারণ করে? টেকসই পরিবর্তন সবচেয়ে কাঙ্খিত কিন্তু সেই পরিবর্তনের ধাপগুলো বাস্তবায়ন করার আদৌ কি কোনো রাস্তা আছে আমাদের দেশে?
আপনার কি জানা আছে সেই রাস্তাগুলো? আপনি কি ধাপগুলো বাস্তবায়নে কাজ শুরু করেছেন?

ধ্রুব বর্ণন এর ছবি

রাজনীতির মধ্যে বাস করাটা নিয়া ক্ষোভবোধ করতেছেন। এর দৌরাত্ম্যে অতিষ্ঠ হইয়া থাকতে হয় সত্য। এটাও সত্য, যেকোনো বেরাজনৈতিক সময়ের চেয়ে অধিক সামাজিক ও অর্থনৈতিক স্বাধীনতা আমরা বর্তমানের রাজনৈতিকতায় ভোগ করতে পারি। নতুন মিডিয়ার কারণে আমাদের সচেতনতা বাড়ায় দাবীও বেড়েছে, যেটা অত্যন্ত সুসংবাদ। এখন সেইটারে বিসর্জন দিয়া ইউটোপিয়া চাইলে কিন্তু পাওয়া যাবে কেবল শর্টকাট ডিস্টোপিয়া।

লেজুরবৃত্তি আর সন্ত্রাসের ছাত্ররাজনীতির টেকসই পরিবর্তন কিভাবে সম্ভব? কে দাবি তুলবে? কার কাছে তুলবে ? যাদের কাছে দাবি তুলবে তারা কি সেই মানসিকতা ধারণ করে?

তাদের কাছেই তো আবার নিষিদ্ধকরণের দাবী তুলতেছেন। যাক অন্তত মানছেন যে নিষিদ্ধকরণ টেকসই পরিবর্তন না। ঝড়ের মধ্যে দুই ঘন্টা স্বস্তির হাওয়া। এরশাদের শাসনের মতো।

টেকসই পরিবর্তন সবচেয়ে কাঙ্খিত কিন্তু সেই পরিবর্তনের ধাপগুলো বাস্তবায়ন করার আদৌ কি কোনো রাস্তা আছে আমাদের দেশে?

আমাদের দেশে একমাত্র টেকসই পরিবর্তনের রাস্তাই খোলা আছে। চিপচুপার রাস্তাগুলা সব ঘুরান দিয়া ব্যাক টু দ্য প্যাভিলিয়নেই ফিরে আসে সবসময় এই দেশে। বিগত সকল শাসনেই সেটা দেখা গেছে। কথা হইতেছে, টেকসই পরিবর্তনের মানসিকতা আমরাই ধারণ করি কি না? সরকার, রাজনীতিবিদ, ছাত্র রাজনীতিবিদ তো জনগণের আচরণেরই প্রতিফলন ঘটাচ্ছে। আমরাই তো পৌনে তেইশ ঘন্টার মধ্যে না হইলে একটা সিদ্ধান্তের জন্যে অপেক্ষা করার ফুরসত রাখি না। রাস্তা থেইকা বাড়ি যাওয়ার আগে, রাস্তার উপরেই জাস্টিস পাইতে হয়। সেই জোশ দিয়া তো একটা মামলার জন্যেও লড়তে দেখা যায় না। অন্যায় ঘটলে প্রতিকার চাওয়ার উপায় কি নাই? বলবেন নাই। সময় দিয়া প্রতিকার করার ক্ষমতা সরকারের নাই, অথচ পৌনে তেইশ ঘন্টার নোটিশে আর নিষিদ্ধকরণের মাধ্যমে তাৎক্ষণিক সুফলের সুবাতাস বওয়ানোর ক্ষমতা সরকারের বা কর্তৃপক্ষের আছে, সেইটা বিশ্বাস করতেছেন।

পথ তো স্থৈর্য্যেই নিহিত। চিন্তাভাবনা নাই, দূরদর্শিতা নাই, ধৈর্য্য নাই। পৌনে তেইশ ঘন্টার নোটিশে সব ঠিকঠাক হইয়া যাবার স্বপ্ন দেখতেছেন। ধাপ বাস্তবায়নের আগে ধাপ জানতে হবে। ধাপ জানার জন্যে চিন্তাভাবনা করতে হবে। ঠাণ্ডা মাথায় আলাপ করতে হবে। যেইটা এখন আমার সাথে করতেছেন। আমিও কইরাই যাইতেছি।

আবেগ দিয়া শর্টটার্ম গোল পূরণ হয়। যেখানে শর্টটাইম গোল আছে, সেখানে আবেগের দরকার আছে। লংটার্ম লক্ষ্য পূরণে আবেগ যথাসম্ভব মিনিমাইজ করতে হবে। সেইটা তাতে নাই হইয়া যাবে না। আবেগ সুযোগ মতো নিজে নিজে জানান দিবেই। তারে আদর কইরা আর লালনের প্রয়োজন নাই। চিন্তা ভাবনা, স্থৈর্য্য আপনাআপনি থাকার জিনিস না। সেইটা চর্চা করতে হবে। দীর্ঘস্থায়ী লক্ষ্য পূরণের ধাপ দীর্ঘ চিন্তাভাবনার মাধ্যমে পাওয়া যাবে।

চিন্তা ভাবনার পরে ধাপ দেখবেন ষোলোটা। আপনারা একটা পূরণ কইরা যাবেন। সেইটার উপর দাঁড়াইয়া পরের ব্যাচ আরেকটা পূরণ করবে। সব ভাইঙা গেলে আবার শুরু করবে প্রথম থেকে। দেয়ার ইজ নো শর্টকাট। ধাপগুলা ফেইসবুকে ব্লগে শেয়ার করবেন। দাবী হিসেবে পেশ করবেন। না মানলে রাজনীতি করবেন। রাজনীতির বাইরে দিয়া কে আপনাদের দাবী পূরণ কইরা যাবে? অন্তর্বর্তীকালীন সরকার?

সৃষ্টিছাড়া এর ছবি

আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ধৈর্য্য ধরে আলোচনা করার জন্য। আসল বিষয় হলো, অনেক মানুষের ধৈর্য্য আর দূরদর্শিতার সমন্বয়।

কুয়েটিয়ান স এর ছবি

ভাই আপনি কোন ক্যাম্পাস পাইছেন এখনও, যেখানে রাজনীতি আছে অথচ হাংগামা নাই ?

ferdous এর ছবি

আওয়াজ তুলুন, "ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করতে হবে"।

বুঝলাম না। পরিস্কার করেন।

পোস্টের লেখক এর ছবি

ভার্সিটিতে ভর্তি হওয়ার আগে ছাত্ররাজনীতি নিয়ে আমারও খুব উচ্চাশা ছিল। কিন্তু, এখানে এসে দেখলাম, কিভাবে জুনিয়রদের রাজনীতিতে জোর করে ঢুকানো হয়। এবং যেসব পোলাপান সত্যি বলতে বেয়াদব টাইপের তাদেরই জোর করে পলিটিক্সে আনা হয়। যাদের প্রতি পরবর্তীতে সাধারণ ছাত্রদের কোনই শ্রদ্ধাবোধ থাকে না। এ ছাড়া হলে তাড়াতাড়ি সিট পাওয়ার জন্য পলিটিক্স! আমি দুঃখিত, এসব যদি স্টুডেন্ট পলিটিক্স হয়, আমি চাই না এই পলিটিক্স।

সাফি এর ছবি

ছাত্র রাজনীতি বন্ধ হলে প্রশাসনের চাপিয়ে দেওয়া সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের প্ল্যাটফর্ম আসবে কোথা থেকে?

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

লেখার শেষে দেয়া লিঙ্কগুলার একটায় দেখতেছি:

"আমি মুক্তিযুদ্ধ দেখিনি, গল্প শুনেছি। সেসব গল্প শুনেশুনে রাজাকার, আল-বদরের যে প্রতিকৃতি আমার মনে তৈরী হয়েছে তার সাথে হুবুহু মিলে যায় ছাত্রলীগের চরিত্র।"

ছাত্রলীগের কুয়েট-তাণ্ডব (?) নিয়া পোস্ট আসুক। সম্পূর্ণ তথ্যমূলক। তথ্যের সাথে "আল্লাহর গজব" ভালো কম্বিনেশন না।

কথাবার্তা যখন এই লাইনে যায়, তখন ধীরে। আবু লাহাবের হস্তদ্বয়ের উপর বিবিধ মানুষ বিবিধ কারণে কুপিত হইতে পারে।

উপরন্তু ডুয়াল পোস্টিংও হইছে দেখা যায়
http://www.amarblog.com/aymanazman/posts/142210


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

পোস্টের লেখক এর ছবি

ছাত্রলীগের কুয়েট-তাণ্ডব (?) নিয়া পোস্ট আসুক। সম্পূর্ণ তথ্যমূলক। তথ্যের সাথে "আল্লাহর গজব" ভালো কম্বিনেশন না।

ঐ পোস্টগুলো আমি নিজেও যে খুব একটা পছন্দ করিনি। আসামী বলছি পোস্টটা হয়েছে মন্দের ভাল। আমি কুয়েটের বর্তমান অবস্থার কারণটা তুলে ধরতে চেয়েছি মূলত।

কথাবার্তা যখন এই লাইনে যায়, তখন ধীরে। আবু লাহাবের হস্তদ্বয়ের উপর বিবিধ মানুষ বিবিধ কারণে কুপিত হইতে পারে।

উপরন্তু ডুয়াল পোস্টিংও হইছে দেখা যায়
http://www.amarblog.com/aymanazman/posts/142210

ব্লগিং করতেছি মোটামুটি অনেকদিন ধরেই। সচল আমার হোম ব্লগ না, এর আগে এখানে মনে হয় ২/৩ টা পোস্ট দিয়েছি মাত্র। বুঝতে পারছি কি বুজ্ঝাতে চেয়েছেন। আর আমারব্লগে আমিই যে পোস্ট করিনি তা বোধ হয় বুঝতে পারবেন ঐ পোস্টে ছবি আর লিংকের অনুপস্থিতি দেখে। ধন্যবাদ।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

পোস্টের লেখক এর ছবি

লোগো নিয়ে আমারও তীব্র নিন্দা আছে। আমরা ভেবেছিও এই লোগো চেঞ্জ করা যায় কিনা। একটা মাদ্রাসার লোগো আইডি কার্ডের সাথে নিয়ে ঘুরে বেড়াই। ফালতু।

কিন্তু, পোস্টের বাহিরে গিয়ে কথা বলাটা কতটুকু সমীচীন তা তো আপনারা ভাল করেই জানেন।

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

ষষ্ঠ পাণ্ডবের মন্তব্য আপনি পড়লেন কিভাবে? চিন্তিত

পোস্টের লেখক এর ছবি

হা হা হা ... প্রথমেই পড়ে ফেলেছিলাম। ভার্সিটির লোগো নিয়ে এরকম কিছু বলেছিলেন যে, যে ভার্সিটির লোগোতে আরবি বাংলায় ঈশ্বরের কাছে জ্ঞান প্রার্থনা করা হয়, সেখানকার ছাত্ররা আল্লাহর গজব, লানত বাদে আর কোন শব্দই বা ব্যবহার করবে? আর অন্য একটি প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের লোগোতেও এরকম একটা বাণী আছে। এসব নিয়ে উনার আজকাল কথা বলতে ভাল লাগে না।

পরে সম্ভবত এডমিন মডারেট করেছেন।

যতটুকু জানি আপনি সচলের উপরের স্তরের কেউ। অতিথি লেখক হয়ে লিখা পাঠানোর পদ্ধতিটা বেশ চমৎকার। তাই, আমি হোম ব্লগ ছেড়ে এখানেই লিখেছি এই পোস্টটা। বুঝেনই তো নাম প্রকাশ করে ক্যাম্পাসে ফিরার আগেই হয়ত মার খেয়ে যেতে পারি। ধন্যবাদ আমার লেখা পোস্ট করার জন্য।

তবে, এখানকার মডারেশন প্যানেলটার একটু সংস্কার দরকার বোধ হয়। আমি অতিথি হয়ে আগেও লিখেছি, কিন্তু সদস্যপদ না পাওয়াতে এখানে লিখার ইচ্ছা চলে গেছে। এই দিকটা ভাবা দরকার মনে হয়। হাসি

হিমু এর ছবি

আপনার জন্য সচলায়তনের মডারেশন প্যানেল পাল্টে ফেলতে হবে হাসি ?

লিখতে ইচ্ছা না করলে লিখবেন না ভাই।

পোস্টের লেখক এর ছবি

হুম, তা ঠিক। আমার জন্য তো আর সচলের মড প্যানেল পালটানো যাবে না, কিন্তু অনেক মানুষ যখন এ রকম বলবে, তখন বোধ হয় পালটানো যেতে পারে।

লিখতে ইচ্ছা করে না দেখেই তো লিখি না।

হিমু এর ছবি

অনেক মানুষের কথা শুনে তো সচলায়তন চলে না ভাইডি।

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

খুব দুঃখজনক। প্যাটার্ণগুলো চীরচেনা। মাঝখান থেকে আপনাদের জীবন থেকে কতগুলো সময় নষ্ট। কুয়েটের ছাত্রদের জন্য শুভকামনা রইল। যা কিছু করবেন আবেগ থেকে বেরিয়ে এসে যুক্তি দিয়ে যাচাই করে করবেন।

অফ টপিক, কুয়েটের লোগোতে আরবী লেখা আছে সেটা জানতাম না। মনে হচ্ছে আরব দেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়!

পোস্টের লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করার জন্য। হাসি

যেই দেশের বেশীরভাগ মানুষ সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতার বদলে ইসলামকে মেনে নেয়ার হেডম দেখায় সেখানে, ধর্মনিরপেক্ষতার দোহাই দিয়ে এই লোগো পালটানো সম্ভব না। কুয়েটের লোগো একটা মাদ্রাসার লোগোর চেয়ে বেশী কিছু না। আমি লজ্জিত এ কারণে।

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রে ব্যক্তির ধর্ম 'মেনে নেয়া'র অপশন নাই এইটা মনে করেন নাকি? "বাংলাদেশে ধর্মনিরপেক্ষতা মানে ব্যক্তির ধর্মহীনতা" এইটা অনেক পুরান জামাত-বিএনপি প্রপাগান্ডা। আপনের কথা থেকে মন হইল, যেহেতু বাংলাদেশের সংবিধানে এখন ধর্মনিরপেক্ষতা আছে (তাও প্রারম্ভিক বিসমিল্লাহ সমেত), তাই ইসলাম মেনে নেয়াটা একটা 'হেডমে'র বিষয়।


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

পোস্টের লেখক এর ছবি

আপনি কথা বুঝতে ভুল করেছেন। আমি নিজেও ধর্মনিরপেক্ষতাকে সাপোর্ট করি। আমাকে ওসব প্রশ্ন করে তেমন ফায়দা নেই ... হাসি

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

ধর্মনিরপেক্ষতাকে সাপোর্ট করা না করার কোনো অপশন বাংলাদেশে নাই। সংবিধানে আছে। সিম্পল। সংবিধান মানতে আইনত বাধ্য সকলে। সংবিধান বদলাইতে দুইতৃতীয়াংশ আসনের সমর্থন লাগবে সংসদে।

বাই দা ওয়ে, আপনাকে কি ফায়দার জন্য প্রশ্ন করা হচ্ছে বলে মনে করেন পরিষ্কার করে বলেন।


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

পোস্টের লেখক এর ছবি

ধর্মনিরপেক্ষতাকে সাপোর্ট করা না করার কোনো অপশন বাংলাদেশে নাই। সংবিধানে আছে। সিম্পল। সংবিধান মানতে আইনত বাধ্য সকলে।

আপনার এ কথাই কিন্তু ব্যাকফায়ার করে। তার মানে যখন সংবিধানে 'আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস' ছিল তখনও আপনি তাকেই সমর্থন দিয়ে গেছেন। এই তো???!!! তাহলে, খুব ভাল, রাস্তা মাপেন আপনের।

ব্লগে তো আছি মোটামুটি বছর দেড়েক। কে কোন মোটিভ থেকে প্রশ্ন করে তা কিছুটা হলেও বুঝতে পারার ক্ষমতা হইছে বোধ করি।

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

দেড় বছর ব্লগিং করছেন, পড়াশুনা কিছু করছেন বইলা মনে হইল না। আগে একটু পড়াশুনা কইরা আসেন। সংবিধানে যখন আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থা ছিল, সেইটা বৈধভাবে ছিল না। অবৈধভাবে ছিল। যেইসব সরকার এই ধারা যোগ করছে তারও বৈধ ভাবে ক্ষমতায় আসে নাই। যারা ঐসব সরকারকে বৈধ মনে করে সেইসব ইতরের সাথে মিলিত হন। আমার রাস্তা আপনের হিসাবে মাপা হবে না জনাব। আমি বেনামে ছাগুপনা করি না।


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

ধ্রুব বর্ণন এর ছবি

সংবিধানে যখন আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থা ছিল, সেইটা বৈধভাবে ছিল না। অবৈধভাবে ছিল। যেইসব সরকার এই ধারা যোগ করছে তারও বৈধ ভাবে ক্ষমতায় আসে নাই।

ঠিকই বলেছেন।

আরেকটু সংশোধন করা যায় কিনা দেখি।

ব্যাপারটা সম্ভবত এরকম যে আগের সরকারগুলো এমন কি বৈধভাবে ২্/৩ মেজরিটির ভোট নিয়ে ক্ষমতায় এলেও সংবিধানের মূলনীতি পরিবর্তন করা তারপরেও সম্ভবত অবৈধ হতো। মানে উপরে যে বলেছেন

সংবিধান বদলাইতে দুইতৃতীয়াংশ আসনের সমর্থন লাগবে সংসদে

সেটা সংবিধানের মূলনীতির ক্ষেত্রে সম্ভবত খাটে না। ব্যাপারটার সাথে গণপ্রজাতান্ত্রিক (republic) বনাম গণতান্ত্রিক (democracy) গঠনের সরকারের পার্থক্যের সাথে সম্পর্ক আছে।

গণপ্রজাতান্ত্রিক রাষ্ট্র কেবলই মেজরিটির শাসন না। চার্টার বা মূলনীতি মেনে চলে। কিছু অলঙ্ঘনীয় নীতি থাকে (যেমন মৌলিক অধিকার) যেগুলো মেজরিটির ভোট দিয়েও গিলে ফেলা যায় না।

এমনিতে মৌখিক সাপোর্ট অর্থে সংবিধান বিরোধী অবস্থানে কোনো বাঁধা দেখি না, যেটা মত প্রকাশের স্বাধীনতার অধীনে পড়ে। কিন্তু সেটা কায়েম করতে যাওয়া অবৈধ। সেই অর্থে সেটার সত্যিই অপশন নাই।

বাস্তববাদী এর ছবি

সন্ত্রাসের ছাত্র রাজনীতি বন্ধ হোক। এশিয়ার অন্যান্য দেশ, যেগুলো এগিয়ে রয়েছে সেগুলো দেখুন, মালয়েশিয়া, জাপান দেখুন - কিভাবে তারা ছাত্র রাজনীতি বন্ধ রেখেছে। ছাত্র রাজনীতিতে আগে সুস্থ মানসিকতার লোকজন আসতেন, এখন সেইটা রূপকথা। ছাত্রদের মানসিকতার উন্নতি ঘটলে তখন আবার শুরু করা যাবে, কি বলেন? যদিও বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতে এমন হার্ড রিবুট দেওয়ার জন্য শক্ত কোন টেকনিশিয়ান দেখতেসিনা।

অফটপিক প্রসংগেঃ মাদ্রাসারে টিজ করেন, আরবি রে টিজ করেন অসুবিধা নাই। আরবি লিখলে আরবদেশ মনে হয়, আর সবখানে ইংরেজি দেইখা ইংল্যান্ড মনে লইতে চামে, নাকি?

হিমু এর ছবি

এই মন্তব্যটা এইবার আরবিতে লিখেন ভাইয়া।

চিলতে রোদ এর ছবি

আমাদের প্রজন্মটি যেমন ফোঁস করে জ্বলে উঠি,তেমনি সহজে নিভেও যাই! বোধগুলো ভোঁতা হচ্ছে ধীরে ধীরে...
আপনাদের সাধারণ ছাত্রদের পক্ষে তো সম্ভব না ওই পশুগুলোর সাথে রাম-দা,হকি-স্টিক নিয়ে লড়ার! আর প্রশাসনিক বা আইনি কোন সাহায্যও যে পাবেন না সেকথা বলাই বাহুল্য(এই লাইনে চেষ্টা করলেই মাইর নিশ্চিত)। সমাধান হলো...
মাসখানেক পর ক্যাম্পাস খুললেই আপনারা সুবোধ ছাত্রের মত নিজের উজ্জ্বল(!) ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে ক্যাম্পাসে চলে যাবেন,হয়ত আরেক দফা মার খেয়ে ক্লাস টেস্টও দিতে বসে যাবেন। আমাদের বাঙ্গালীর গোল্ডফিস মেমোরি, ভুলতে টাইম লাগবেনা!
আমাদের প্রতিবাদ কিছু ব্লগ আর ফেসবুক স্ট্যাটাসেই থাকুক। বুয়েট,কুয়েটের মেধাবীদের জন্য ইউরোপ,এম্রিকার দরোজা খোলা... কি দরকার বিপদ ডেকে আনার? মাঝে মধ্যে দেশ নিয়ে ভেতরে একটু আকু-পাকু করলে ওইখানে বসে দুই-চারটা জ্ঞানী ব্লগ আর ফেসবুক স্ট্যাটাস ঝাড়বেন।

আমাদের আগের প্রজন্মের এই দেশ ছেড়ে যাওয়ার কোন জায়গা ছিলনা দেখেই তো পাকিস্তানি মেশিনগানের সামনে বুক চিতিয়ে দাড়িয়েছিল। এই প্রজন্মের মেধাবীদের সেই চিন্তা নাই। সো... মাঝে মধ্যে দু-একটা হকি-স্টিকের বাড়ি লাগলেও আসুন, আমরা ভবিষ্যতের কথা ভেবে আবার পড়ালেখা করি!... কি বলেন সবাই?

সাই দ এর ছবি

গুরু গুরু

পোস্টের লেখক এর ছবি

ওয়েল সেইড ডুড ... মন খারাপ

তরল এর ছবি

একদম সত্যি কথা। চলুক

সাফি এর ছবি

আমাদের আগের প্রজন্মের এই দেশ ছেড়ে যাওয়ার কোন জায়গা ছিলনা দেখেই তো পাকিস্তানি মেশিনগানের সামনে বুক চিতিয়ে দাড়িয়েছিল।

অ্যাঁ এই মন্তব্যে তিনটা সমর্থনসূচক মন্তব্য দেখে চিন্তিত হয়ে গেলাম আরো।

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

সাফি এর ছবি

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

সাফি ভাই, কেন জানিনা, মন্তব্যটা আমার কাছে, স্যাটায়ারিক মনে হয়েছে। নাকি ভুল বুঝলাম?

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

সাফি এর ছবি

মন্তব্যের কিছু অংশ স্যাটায়ারিক, কিন্তু উদ্ধৃত অংশ না। ঐ টা একটা স্টেটমেন্ট। মুক্তিযুদ্ধ নিয়া স্যাটায়ারের কিছু নাই।

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

হুম বস হইতে পারে, তবে যদি এটা স্যটায়ার হয়, সেটা বোধহয় মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে না, সেটা বোধহয় এই প্রজন্মের দুধভাতদের নিয়ে। তবে এটা ঠিক স্যটায়ার হইলেও কনফিউজিং স্যাটায়ার, ভুল ব্যাখ্যার সুযোগ আছে, আর ভুল ব্যাখ্যার সুযোগের, সুযোগ নেয়ার লোকের অভাব নাই। তাই বর্জন করাই ভাল।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

চিলতে রোদ এর ছবি

জনাব সাফি, আমাদের প্রজন্মটি এক অভাগা প্রজন্ম। মুক্তিযুদ্ধকে নিয়ে আমাদের প্রজন্ম কথায়/লেখায় যতটা আস্ফালন করি বাস্তবে কতটুকু এর চেতনাকে কতটুকু নিজের মধ্যে ধারন করি এই ব্যাপারে আমার যথেষ্ট সন্দেহ আছে। আমার মন্তব্যের অংশটুকু ক্ষোভ থেকে। এর মাঝে অন্য কিছুর গন্ধ খোঁজা দূর্ভাগ্যজনক।

আমাদের আগের প্রজন্মের এই দেশ ছেড়ে যাওয়ার কোন জায়গা ছিলনা দেখেই তো পাকিস্তানি মেশিনগানের সামনে বুক চিতিয়ে দাড়িয়েছিল।

বাস্তবতা হলো শহীদ জননী জাহানারা ইমামের পুত্র রুমী'র মত অনেক মেধাবী ছেলেরা সেদিন উচ্চশিক্ষার স্কলারশীপ ছুড়ে ফেলে দিয়ে অন্যায়ের বিরদ্ধে গেরিলার জীবন বেছে নিয়েছিল। যে দুঃখবোধ থেকে আমার মন্তব্যটি করা সেটি হচ্ছে আমাদের প্রজন্মের মেধাবীদের নিয়ে। নিজের স্বার্থে বিন্দুমাত্র ছাড় দিতে রাজি নই, কিন্তু তর্কের টেবিলে আমাদের সরব উপস্থিতি। আমি মেধাবী না হলেও ব্যক্তিজীবনে সেই কুলাঙ্গার প্রজন্মের বাইরে কেউ না। নিজেকে ধিক্‌।
আজকের শিক্ষাঙ্গনগুলোর এই অসুস্থ পরিবেশ আমরা নির্বিকারভাবে সহ্য করে আগামী প্রজন্মের জন্য এক কালো অধ্যায় রেখে যাচ্ছি। এই বাংলাদেশের আগামী প্রজন্ম যেন আমাদের কোনদিন ক্ষমা না করে... কোনদিনও না।

সাফি এর ছবি

কোন কিছু থেকে গন্ধ বের হলে, সেখানে আলাদা করে গন্ধ খোঁজা লাগেনা। ক্ষোভ বলেন আর দুঃখবোধ বলেন মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এই রকম মন্তব্য করতে পারেন না - সোজা হিসাব। মেধাবীদের বিরুদ্ধে আপনার অভিযোগ শুনলাম। তাদের করণীয় কী হওয়া উচিত? তর্কের টেবিলে তাদের সরব উপস্থিতি হানিকর কেন?

চিলতে রোদ এর ছবি

সাফি,
আমার মন্তব্য যদি কারো ব্যক্তিগত অনুভূতিতে আঘাত করে থাকে তবে আমি আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি। তবে অনুরোধ করব, আমার মন্তব্যের ওই বাক্যটিকে আলাদাভাবে একচোখা দৃষ্টিতে না দেখে যদি সম্পূর্ণ মন্তব্যটিতে আমার বক্তব্যের ভাষ্য কি ছিল সেদিকে নজর দেন হয়ত ভূল বুঝাবুঝির অবসান হবে।

মেধাবীরা কি করতে পারে সেই সম্পর্কে আমার অবস্থানটি একটু পরিষ্কার করি দুটি উদাহরণ দিয়ে...

১। কুয়েটে এখন হল ভ্যাকান্ট। প্রশাসন পরিস্থিতি শান্ত হওয়া(মাইর আর অপমানের কষ্টের মাত্রা কমে আসা) পর্যন্ত অপেক্ষা করছে। এরপর যা হবে, ক্লাস শুরু হলে ভিকটিম ছাত্ররা আবার হলে ফিরে যাবে। এর মধ্যে কেউ কেউ হয়ত আর এক দফা মার খাবে। এবং পরদিন থেকে সবাই ক্লাস করা শুরু করবে...পরীক্ষা দেবে। কিন্তু এর মাধ্যমে যেই ক্ষতিটা হলো, ওই কুত্তাগুলা আরো লাই পেয়ে তাদের নির্যাতনের পরিধি আরো বাড়াবে। এবং এভাবে চলতে চলতে কুয়েটের মত একটি প্রতিষ্ঠান একদিন নোংরা রাজনীতির খোয়াড়ে পরিণত হবে।
কিন্তু...
আজ যদি কেউ ডাক দেয়... আমরা ক্লাস শুরু হলেও হলে যাবনা,ক্লাস করবোনা!যতদিন পর্যন্ত এর সুষ্টু বিচার না হয় অথবা সাধারণ ছাত্রদের দাবী গুলো মেনে নেওয়া না হয়। তখন দেখবেন, আপনার পাশে অপমানিত হওয়া/মার খাওয়া সুবোধ,মেধাবীদের দলটি আর নেই। কারণ ক্লাস বর্জন করে/পরীক্ষা না দিয়ে সারাজীবন ভালো রেজাল্ট করে আসা শিক্ষা জীবনে দাগ লাগানোর ঝুকি নিতে তারা কেউ রাজি না। অথচ এই ছাত্রদের মাঝে যদি মুক্তিযুদ্ধের মাথা না নোয়ানো চেতনার বিন্দুমাত্র অবশিষ্ট থাকতো... তবে এই অপমান তারা কোনোদিন মেনে নিত না। আমার অভিযোগ এই মেধাবী ছাত্রগোষ্ঠীর ওপর যারা মুখে,কলমে আর কম্পিউটারের কি-বোর্ডে নিজের চেতনাবোধকে বসিয়েছ... নিজের অন্তরে নয়।

২। তর্কের টেবিলে মেধাবীদের সরব উপস্থিতি কাম্য, তবে সেটি যেন শুধু সেই পর্যন্ত না হয়।যারা মেধাবী,প্রতিষ্টিত এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে বুকে ধারণ করে বলে দাবী করে তারা কি চাইলে পারেনা নিজের শৈশবের বিদ্যালয়ে গিয়ে সপ্তাহে/মাসে বা বছরে একদিন নতুন প্রজন্মের কিশোর-কিশোরীদের মাঝে নিজের চেতনাবোধটুকু ছড়িয়ে দিতে? আমাদের স্কুল কলেজের পাঠ্যবইগুলো নতুন প্রজন্মকে ৭১ এর মূল চেতনায় দীক্ষিত করার জন্যে যথেষ্ট মনে করেন আপনি?
তর্কের টেবিলে শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে তর্ক/আলোচনা গ্রহনযোগ্য, কিন্তু পরিবর্তনের চেষ্টা প্রথমে নিজেকেই শুরু করতে হবে।

অনেক কথা বলে ফেললাম। যদি ভূল করে থাকি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন আশা করি। ধন্যবাদ হাসি

হুতুম এর ছবি

মুক্তিযুদ্ধকে নিয়ে আমাদের প্রজন্ম কথায়/লেখায় যতটা আস্ফালন করি বাস্তবে কতটুকু এর চেতনাকে কতটুকু নিজের মধ্যে ধারন করি এই ব্যাপারে আমার যথেষ্ট সন্দেহ আছে

আমি মেধাবী না হলেও ব্যক্তিজীবনে সেই কুলাঙ্গার প্রজন্মের বাইরে কেউ না

সবজায়গায় সরলীকরণ শুধু অর্থহীনই নয়,মাঝে মাঝে সেটা বাড়াবাড়ি এবং বিরক্তিকর হয়ে দাঁড়ায়।চেতনাকে কতখানি ভেতরে ধারণ করেন তা নিয়ে আপনার সন্দেহ থাকতে পারে,আমার নেই।এবং এই কুলাঙ্গার প্রজন্মে আমার মত সদস্য একেবারে কম নেই।কাজেই এত মোটাদাগের হিসাব মেনে নিতে পারছি না।

বুয়েট,কুয়েটের মেধাবীদের জন্য ইউরোপ,এম্রিকার দরোজা খোলা

বুয়েট,কুয়েটের কয় ভাগ ছাত্র ইউরোপ এম্রিকায় যায়?একটা পরিসংখ্যান দেখান তো।যায় বলতে একেবারে চলে যায় বুঝিয়েছি।

যে দুঃখবোধ থেকে আমার মন্তব্যটি করা সেটি হচ্ছে আমাদের প্রজন্মের মেধাবীদের নিয়ে। নিজের স্বার্থে বিন্দুমাত্র ছাড় দিতে রাজি নই, কিন্তু তর্কের টেবিলে আমাদের সরব উপস্থিতি

মেধাবীদের ঠিক কোন কোন ব্যাপারে কী কী ভাবে ছাড় দিতে হবে?কেন আপনার মনে হচ্ছে তারা সেই ছাড় দিচ্ছে না?একটু সুনির্দিষ্ট ভাবে বলুন।

তর্কের টেবিলে সরব উপস্থিতি থাকলে সমস্যা কী?ব্লগটকেই বা এত নগন্য মিডিয়া মনে করছেন কেন?সচলে যখন মন্তব্য করছেন তখন নিশ্চয়ই ব্লগের শক্তি সামর্থ্য সম্পর্কে বেশ ধারণা রাখেন,ব্লগের আলোচনা,বিরোধ,যুদ্ধ - এসব সম্পর্কেও জ্ঞান রাখেন আশা করি।যদি রেখে থাকেন তাহলে ব্লগ ফেসবুকের আন্দোলন নিয়ে এত হতাশ হওয়ার কিছু নেই।

আমাদের আগের প্রজন্মের এই দেশ ছেড়ে যাওয়ার কোন জায়গা ছিলনা দেখেই তো পাকিস্তানি মেশিনগানের সামনে বুক চিতিয়ে দাড়িয়েছিল

খুবই আপত্তিকর মন্তব্য।সচলে এধরণের বক্তব্য আশা করিনা।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।