এই স্বল্প জানার পরিধি নিয়েও এমন একটা লেখা ফেঁদে বসার কথা আমার নয়। কিন্তু গত কালকের একটা ঘটনা মনে হলো একটু আলোচনায় আনতে পারলে অন্তত কে কি ভাবছে সেটা জেনেও নিজের দুর্বলতা কিছুটা দূর হবে। লেখাটিকে কেউ রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বিচার করবেন না আশা করি।
বিকেলের দিকে সায়েন্স ল্যাব থেকে রাজধানী বাসে উঠি আদাবর আসার জন্য। বাসের সব আসন মোটামুটি ভরাই ছিল। ৩২ নাম্বারের কাছে বাসে দুইজন ছেলে উঠে। দেখে মনে হলো কেবল ইউনিভার্সিটিতে গিয়েছে অথবা বছর খানেক হয়েছে। যথেষ্ট স্মার্ট। সাথে ব্যাগ। তারা সরাসরি বাসের পিছন দিকে চলে গেল আমাকে পাশ কাটিয়ে। বোধহয় ১৫ / ২০ সেকেন্ড পরেই দেখি তারা আবার আমার পাশে এবং এইবার তাদের হাতে দুইটা খাম। সেটা থেকে একটা করে কাগজ বের করে খুব দ্রুততার সাথে সবার হাতে দিয়ে দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে বাসের সামনের দিকে। আমি মাঝামাঝি বসা ছিলাম। আমি হাতের কাগজটা পড়া শুরুর আগেই পিছন থেকে 'এ্যই ছেলেরা শোন' এবং আরও কিছু ডাক ভেসে আসে। ডাকাডাকি শুরু হওয়ার পরেই প্রথম তিন সারি সিটে তখন কাগজ না দিয়েই তারা লাফিয়ে নেমে যায় বাস থেকে।
হাতের কাগজের দিকে তাকিয়ে দেখি অফসেটে ছাপা এক পাতার দুই পৃষ্ঠাব্যাপী ছাপা হিযবুত তাহরীর এর একটা প্রচার পত্র। একবারে উপরের হেডিংটা বর্তমান সরকারের আমেরিকা-ভারত এর সাপোর্টে দেশপ্রেমী সেনাবাহিনী অফিসারদের গুম করা সংক্রান্ত।
আমি এবং বেশ কয়েকজন না পরেই ফেলে দিলেও অনেককেই দেখলাম বেশ আগ্রহের সাথে পরছে। অনেকেই আবার ভাজ করে পকেটেও ঢুকালেন।
আমার প্রশ্ন হচ্ছে, নিষিদ্ধ একটা দল কিভাবে এইবয়েসি ছেলেদের মগজ ধোলাই করতে পারে? এইটা তো একদিনে বা গোপনে হওয়া সম্ভব নয়। তারপরেও একটা মোটামুটি পড়াশোনা জানা ছেলের মাথায় আমেরিকা - ভারত উভয় দ্বারা সমর্থিত সরকারের আইডিয়াটা ঢুকাতে পারাটাও কম চমকপ্রদ নয়। এই দলগুলি কিভাবে কি করছে আমি জানিনা। কিন্তু কাদেরকে ব্যবহার করছে তাদের অন্যায় কাজে তা বুঝতে পারছি। সরকারীদল বা অন্যদলগুলি যে এ ব্যপারে ধোয়া তুলসীপাতা তাও নয়। প্রতিদিনের সংবাদ মাধ্যমগুলিই তার উপযুক্ত স্বাক্ষী।
এই যারা ব্যবহৃত হচ্ছে বাধ্য হয়ে অথবা ভুল বুঝে; তারা তো আমাদেরি নিজেদের কেউ। যেমন আমার ভাগ্নে আছে ওই বয়েসী। আমি কি আসলেই জানি সে কি করছে? আসলেই তার ইউনিভার্সিটিতে যাচ্ছে? গেলেও কি পড়াশুনার ক্লাস করছে নাকি কোন চরমপন্থি দলের?
আমরা মাদক নিয়ে বলি। অনেক কিছু করি। নিজেদের কেউ মাদকাসক্ত হলে চিকিৎসা করাই। এটা তো মাদকের চেয়েও ভয়াবহ সমস্যা। যারা মাদক নেয় তাদের আচরণে বোঝা যায়। সাবধান হওয়ার সময় পাওয়া যায়। এদেরটা বুঝব কীভাবে?
আমার হিসাবে এই ধরনের মগজ ধোলাইয়ের ব্যপারগুলো এবং তার কুফল গণ-মাধ্যমে আসাটা খুবই জরুরী। তাহলে গড়পড়তা সবার সাথেই সেটা নিয়ে কথা বলা যায় সচেতন করতে। যেমন এইডস।
এদের প্রচারটা কিন্তু লোকজন পড়ছে। কিন্তু তাঁদের সামনে যদি চিন্তা করার মতো যথেষ্ট খোরাক না দাওয়া হয় তবে এদের মিথ্যে প্রচারে অনেকেই বিভ্রান্ত হবে। আমাদের বোধহয় এখনই আরও অনেক কিছুর মতোই এব্যাপারেও সোচ্চার হওয়া প্রয়োজন।
- তদানিন্তন পাঁঠা
মন্তব্য
এই তরুণদের জীবনে হয়তো একটু থ্রিল দরকার। ওদের বয়সী অন্যরা থ্রিলের খোঁজে হয়তো পাহাড়ে ট্রেকিং করতে যায়, ওরা হিযবুত তাহরীরের হয়ে লিফলেট বিলাচ্ছে। দুইদিন পর হয়তো হিযবুত তাহরীরের হয়ে বোমা মারবে। অভিভাবকদের একটু খেয়াল রাখা উচিত। আইবিএর ঐ মহিউদ্দিন সাহেবের কী অবস্থা এখন? তিনি কি বহাল তবিয়তে শিক্ষকতা চালিয়ে যাচ্ছেন?
নাহ , উনি এখনও কাস্টডি তে। IBA এর চাকরিও খুব সম্ভব নাই। তবে তার পরিবার এখনও গ্রিন রোড IBA teachers colony র বাসাএ আছে। তাই চাকরির যাওয়ার বেপারে নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না।
আমার কাছে পুরা ব্যাপারটাই ঘোলা-- এ সম্পর্কিত লেখাটি নিয়ে দেশের একটি পত্রিকায় খবর ছাপা হয়েছিল। এর পর তো কিছু জানা যায়নি। সত্য-মিথ্যা কোনটাই পরিষ্কার না। গুজব হওয়ার সম্ভাবনাই বেশী, তবুও সন্দেহ থেকেই যায়। কেউ কিছু জানেন কি?
আম্রিকা-ভারতের দরকার নেই, দেশপ্রেমিক জনগণেরই উচিত এইসব মহা-মহা দেশ-প্রেমিক সেনা 'অপিচারদের' দেশছাড়া করা।
আমার ভার্সিটিতে দেখতাম, ছেলেরা দল বেঁধে কোন রেস্টুরেন্ট বুক করে বা কমুনিটি সেন্টার ভারা নিয়ে তাদের কর্মপরিকল্পনা করে। এত টাকা কই পায় জানি না, তবে তারা সবাই খুব সিরিয়াস - মানে এদের মাথা পুরাই ওয়াশড!
একদল লোক 'অবৈধভাবে' রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করতে চাইতেছে, এবং তার জন্য যে বিভিন্ন তরিকা নিছে, তারই একটা তরিকা নিয়া আপনি আপনার উৎকণ্ঠার কথা লিখছেন। এই উৎকণ্ঠার অরাজনৈতিক সমাধান দুরাশা।
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
হিজবুত তাহরিরকে নিষিদ্ধ করাটারে কি রাজনৈতিক সমাধান বলবেন, না অরাজনৈতিক সমাধান?
সংবিধান রাজ"নীতি"। সংবিধান লঙ্ঘনকারীদের নিষিদ্ধ করাটা এই অর্থে রাজনৈতিক।
কিন্তু সংবিধান যদি আইনও। রাজনীতির আইন। রুলস অফ দা গেইম। সুতরাং সংবিধান লঙ্ঘনকারীদের নিষিদ্ধ করাটা প্রধানত আইনী। আনুশাসনিক ব্যবস্থা। বস্তুত অপরাধীকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলার কিছু নাই। আইনী ব্যবস্থা প্রত্যাশিত, সম্ভাব্য এবং উপযুক্ত।
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
আমারও তেমনটাই মনে হয়। সরকারের এই নিষিদ্ধকরণের জাজমেন্টের উপর আস্থা রাইখা ভাবতেছি যে হিজবুত তাহরির এমন অবস্থায় চইলা গেছিল যে তারে স্বাভাবিক রাজনীতির বাইরে আইসা আইনীভাবে মোকাবিলা করার প্রয়োজন পড়ছে। সেক্ষেত্রে, তার কার্যকলাপ যেহেতু এখন নিষিদ্ধ ও আইনীভাবে মোকাবিলার বিষয়, এখানে তারে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলার তেমন সুযোগ তো আর নাই। সেই প্রেক্ষিতে আপনার "এই উৎকণ্ঠার অরাজনৈতিক সমাধান দুরাশা" ব্যাপারটা বুঝি নাই। নিষিদ্ধ কইরা ফেলার পর তো এখন রাজনৈতিক সমাধানই বরং দুরাশা।
ওইদিকে রাস্তাঘাটে এইচটি যেই উৎপাত চালাইতো, সেই উৎপাত দেখি এখনো ঘটমান! এখন খালি পুলিশের আশায় বইসা থাকতে হবে। অনুজদের যদি কই নিষিদ্ধ ফল খাইয়ো না, তেমন একটা সুবিধা হবে দেখতে পারতেছি না। তাদের বরং সংবিধানের রাজনীতিটাই মনে হয় বুঝানো দরকার। তাতে যদি তারা একটা বস্তুনিষ্ঠ কারণ পায় সেইটা বর্জনের। এইচটির সংবিধান লঙ্ঘনের ব্যাপারটা আরও পরিষ্কার হওয়া দরকার। তাড়া নাই, পারলে সময় কইরা বইলেন।
আমার পয়েন্ট হইল
রাজনৈতিক + আইনী একটা সমাধান। এই ক্ষেত্রে প্রয়োজন, কারণ সামাজিক স্তরে আইন একক প্লেয়ার না।
শুধু আইনী একটা সমাধান। এই ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত না। কারণ বাংলাদেশের আইন প্রয়োগকারীদের বৈশিষ্ট্য, ক্ষমতা ও প্রবণতা পূর্ণাঙ্গ সমাধানের নিশ্চয়তা দেয় না।
শুধু রাজনৈতিক আরো এক রকম সমাধান। কিন্তু এই ক্ষেত্রে সংবিধান লঙ্ঘনের পর সেই অপশন আর নাই। আইন বাধ্য ব্যবস্থা নিতে।
ফাইনালি, অরাজনৈতিক সমাধান বইলা কোনো কিছু নাই। আমার প্রথম মন্তব্যে এইটাই বুঝাইছিলাম।
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
আমি বুয়েটও দেখি কিছু ছেলে খুব সুচারুভাবে হিজবুত তাহ্রির এর আদর্শ দিয়ে সাধারন ছাত্রদের মগজ ধোলাই করার আপ্রান চেষ্টা করে যাচ্ছে। অনেকেই জানেনা যে তারা হিজবুত তাহ্রির এর লোক।তারা অনেক সাহিত্যিক নোট লিখে আর প্রতিদিন তিন চারটা করে স্ট্যাটাস দেয়।সব কিছুই পলিটিকাল প্রোপাগান্ডা,এইটা হয়ত অনেকেই বুঝতে পারেনা।
এক্কেরে পাক্কা কথা...নিউট্রাল কোন পজিশন হতে পারে না। সেফ সাইডে থাইকা শুধু গেল গেল বলে ফ্যানা তুললে হবে না।
আমার খুব সন্দেহ হচ্ছে আপনারা আসলে আর্মি অফিসার অপহরণের ব্যাপারটা নিয়ে খুব একটা জানেন কিনা। পিলখানার ঘটনা ঘটে যাবার পরেও আপনারা হয়ত অনেকে বুঝতে পারছেন না দেশের সেনাবাহিনীকে নিয়ে ব্যাপক ষড়যন্ত্র হচ্ছে। আমারদেশ পত্রিকায় মেজর জিয়ার অপহরণের খবর এসেছে। এই খবরটি অন্য অনেক মিডিয়ায় পাঠানো হয়েছিল তখন তাদের ফ্রিডম অফ স্পিচ কই যেন হারিয়ে যায়
আর এই গুরুত্বপূর্ণ একটা ইস্যুতে একটা ধর্মভিত্তিক দল কথা বছে আর আপনাদের এটা পছন্দ হচ্ছে না, কারণটা জানতে পারি ? আপনাদের এত এলার্জি কেন ? আপনারা কি দেখছেন না, মুসলিম দেশগুলোতে আমেরিকা সেনাবাহিনীকে হাত করেছে মিশরে আর সিরিয়াতে তাদের প্রভাব টিকিয়ে রাখার জন্য ? আর কোন ইস্লামী দল এর প্রতিবাদ করলে আপনাদের আপত্তি। আশচর্য !
কিন্তু লেখক তার উদ্বেগটা ধর্মভিত্তিক দল দেখে না, বরং নিষিদ্ধ দল দেখে প্রকাশ করছেন।
মেজর জিয়াও কি হিযবুত তাহরীর করে?
ধন্যবাদ সবাইকে তাঁদের গুরুত্বপূর্ণ মতামত প্রকাশের জন্য। এখানে কয়েকটা পয়েন্ট দেখতে পাচ্ছি -
১। সামরিক বাহিনীকে ধংস করা হচ্ছে।
২। রাজনৈতিক / অরাজনৈতিক / আইনি সমাধান। কোনটা প্রযোজ্য?
৩। বুয়েটিয়ানদের -এর মতো মেধাবীদের মাঝেও এরা আছে।
৪। ধর্মীয় দল কিছু করলে কেন অনেকেই সহ্য করতে পারে না?
৫। কেন এই লেখাটিকে রাজনৈতিক লেখা হিসেবে না দেখার অনুরোধ করেছি।
আমার ব্যক্তিগত ধারণা উপরোক্ত বিষয়গুলোতে এরকম -
১। বাংলাদেশে অতীতেও সামরিক শাসন এসেছে। ভবিষ্যতে আসবে কিনা জানিনা। খুব বেশিদিন আগে তো নয়। বাংলাদেশের মানুষ যাকে আমেরিকান ৯ /১১ এর স্টাইলে ১/১১ বলতে অভ্যস্থ। আমরা প্রত্যক্ষ ভাবে না হলেও পরোক্ষ ভাবে কি তখন সামরিক শাসন দেখিনি?
পিলখানার যে ঘটনা তার বিচার চলছে। দোষীদের শাস্তিও হচ্ছে। সেটা যদি বড় কোনও ষড়যন্ত্রের অংশও হয়ে থাকে তবে তা এতোদিনে অন্তত সামরিক বাহিনীর কাছে প্রকাশিত হতোই এবং তাঁরা সেভাবেই ব্যবস্থা নিতেন। যদি একটা দেশের সামরিক বাহিনী নিজেদেরকে নিজেদের দেশের ভিতর শান্তিপূর্ণ অবস্থায় রক্ষা করতে না পারে তাহলে তারা এই দেশের কি রক্ষা করার জন্য আছেন তাও বিবেচ্য। এই ধ্বংস হওয়ার নাটকটিতে দুই একটা নাম ব্যতীত আর কোনও কিছুই কি সেভাবে জানা গেছে? শাক দিয়ে যেমন মাছ ঢাকা যায় না তেমনি এইসব তথ্যও গোপন থাকত না সত্যি হলে।
২। এইটা আসলেই আমাদের মতো দেশগুলোর একটা বড় সমস্যা। যে আসলে কোনটা প্রযোজ্য। যে দেশে পাওনা খাবার চাওয়ার অপরাধে মারা পরতে হয় শুধুমাত্র যার কাছে চাওয়া হয়েছিল তার গায়ে সরকারী লেবাস থাকায়। যে দেশে অনলাইনে একটা ব্যক্তিগত স্ট্যাটাস এর ফলে আইন নিজে এসে ছয় মাসের জেল দেয়। সেই দেশে আসলে কোনটাকে আমরা মানদণ্ড ধরব?
এইখানে আমি বলব - 'যাহার জন্য প্রযোজ্য' থিওরিটা ব্যবহার করা ভালো। যেমন দেশের খনিজ সম্পদ নিয়ে ব্যবসা করার প্রতিবাদে যখন একটা মিছিল হয়, তা কোনও নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের না হলেও রাজনৈতিক প্রতিবাদ হিসেবেই গণ্য। এরশাদ বিরোধী আন্দলোনের সময় যখন সাধারণ ছাত্র-ছাত্রী জনতা মাঠে নেমে আসল তাঁরা কিন্তু সেভাবে কোনও রাজনৈতিক দলের ব্যানারে আসেননি। এসেছিলেন একটা দাবী প্রতিষ্ঠা করতে। কিন্তু অবশ্যই সেটা রাজনৈতিক প্রতিবাদ / দাবী / চাওয়া ছিল। আবার এরশাদ পতনের পর তাঁকে কী করা হবে সেই সিদ্ধান্ত কিন্তু আর রাজনৈতিক থাকা উচিৎ নয়। সেটা দেশের আইন অনুযায়ী হওয়া উচিৎ।
গতপরশু আমার একজনের সাথে পরিচয় হলো। উনার একটা বক্তব্য ছিল এরকম - 'মুক্তিযুদ্ধে গোলাম আযম / সাকা / দেলোয়ার রাজাকার ছিল কিনা তার অনেক লিখিত এবং অডিও-ভিজ্যুয়াল আমরা দেখেছি। বিচার ব্যপারটাই তাদের পাওনা ছিলোনা। উচিৎ ছিল সরাসরি মেরে ফেলা। কিন্তু তা না করে একবার তাদেরকে যখন বিচারের সামনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, এখন নিজেদের স্বার্থেই সুষ্ঠু বিচার করতেই হবে। সময় হয়তো লাগবে কিন্তু এটা এড়িয়ে গেলে নিজেদেরকে অপমান করা হবে।'
৩। স্পেসিফিক ভাবে বুয়েটিয়ান উল্লেখ করার দুইটা কারণ আছে আমার। একটা হলো মন্তব্যে বুয়েটের কথা আছে। দ্বিতীয়ত যারা বুয়েট এর মতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সুযোগ পান, তাঁরা একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ আইকিউ এর অধীকারি/নী বলেই আমার জানা (আমি কিন্তু অন্যদের ছোট করার জন্য বলিনি কথাটা)। যেখানে এঁরাও ধোঁকা খায় সেখানে আমার মতো যারা নিম্ন বুদ্ধিবৃত্তির আছে তাদের জন্য ব্রেনওয়াশ হওয়াটাতো সময়ের ব্যপার মাত্র যদি কেউ সাবধান করে না দেয়।
৪। ধর্মীয় দল কিছু করলে অনেকেরই আপত্তি কেন তার এক কথায় উত্তর দিতে হলে আমি যে উত্তর দেব তা হলো - 'ঐটি একটি ধর্মীয় দল দেখেই।'
একটু ব্যখ্যা দেয়ার চেষ্টা করি আমার দৃষ্টিভঙ্গিটা - যখন আমরা কোনও মতের সমর্থিত কোনও দল দেখি যেমন 'কম্যুনিজম'; তখন আমরা জানি সেটার প্রবক্তা কে। তিনি নিজে মানুষ, তিনি মানুষের ভাষাতেই তাঁর কথা বলেছেন। এতো আগের নন যে তার অরিজিন্যালিটি জানা সম্ভব না। কাজেই কেউ যদি তার মতের ভুল ব্যখ্যা দিয়ে (যেমন বলা হয়ে থাকে রাশিয়ার কথা) কিছু বলে, আমদের সাধারণদের একটা সুযোগ থাকেই সরে আসার। (তবে যদি তারা ক্ষমতায় আসে তবে কেমন দুর্ভোগ পোহাতে হয় সাধারণদের সেটারও উদাহরন ওই রাশিয়াই। তারপরেও বলব একটা সুযোগ থাকেই। রাশিয়ানরা সময়ে সেই সুযোগ নেননি দেখে পড়ে ভূগেছেন।)
কিন্তু ধর্ম ব্যপারটাই বিশ্বাসের। যখন এই মতবাদটি নিয়ে কেউ একটি রাজনৈতিক দল গঠন করে তখন প্রথমেই যে কথাটা মনে আসে তা হলো 'খাইছে।' অর্থাৎ এদের কাছ থেকে সরে গেলে সাধারণরা হয়ে যাবে অবিশ্বাসী, এরা যে মতের দাবী নিয়ে কথা বলবে তার সঠিক ব্যখ্যা করবে এরকম গিয়ান সাধারণের থাকে না। ধর্মগ্রন্থ গুলো প্রবর্তন হয়েছিল ব্যক্তি মানুষের বিশ্বাসকে অবলম্বন করে। অর্থাৎ আমার কাছে মনে হলো যে ইসলাম অথবা খ্রিস্টধর্ম তে যে ভাবে জীবন যাপনের কথা বলা আছে সেটা ভালো; তাহলে আমি সেই ধর্মের অনুসারী হতে পারি। সেই ধর্মের প্রবক্তাকেও মানলাম। কিন্তু তারমানে এইনা যে তাঁকে বোঝার ক্ষমতা আমার চলে আসল। এইখানেই বিশ্বাসের শুরু। এই বিশ্বাসের একটা বড় ফাঁক থাকে সাধারণদের কাছে। যেহেতু সৃষ্টিকর্তা এই মুহূর্তে সরাসরি তদারকি করছেন না, সেহেতু আমার স্বার্থের বিপক্ষে গেলে বা না বুঝলে আমি চুপচাপ ধর্মের সেইসব ব্যপার এড়িয়ে যাই।
কিন্তু যখন এইটা মানানোর জন্য কেউ একজন উপরে বসে বলে আমারটাই তোমাকে বুঝতে হবে, আমি যেভাবে বলব সেভাবেই এই ধর্মের সৃষ্টিকর্তা চেয়েছিলেন; তখনি এই বিশ্বাসী কিন্তু সুবিধাবাদী মন বলে উঠে 'এহ! বললেই হলো? তুমিওতো শালা আমার মতোই মানুষ। নির্ঘাত আমার মতোই কোনও স্বার্থে টান পড়ছে তোমার। আমারে এখন ব্যবহার করবা।' এবং বেশিরভাগ সময় এই আশংকাই সত্যি হয়। কাজেই মর্তের মানুষ যখন ধর্মের নামে ধর্ম পালনের বাইরে অন্য কিছু করার চেষ্টা করে সেখানেই আমাদের আপত্তি। কারন এখানেই থাকে আমাদের বিশ্বাসকে ব্যবহার করে যন্তর-মন্তর ঘরে নিয়ে মগজ ধোলাইয়ের চেষ্টা। আর যাদের অস্তিত্বই মানতে আমার আপত্তি, তারা যত ভালো কিছু নিয়েই নিজেদের আড়াল করুক আমি বলবই যে নিশ্চই কোনও ধান্দা আছে। গোলাম আযম যতই ভাষা সৈনিক বা প্রফেসর এর লেবাস গায়ে চরাক, আমি বলবই বেটা রাজাকার।
আমি আবারও বলি, সব দলের পক্ষ থেকেই কম-বেশি মগজ ধোলাই করা হয়। যাদের আমরা অন্ধ সমর্থক বলি। কিন্তু ধর্মীয় দল কোনও ভাবেই রাজনৈতিক দল হওয়ারই যোগ্যতা রাখেনা। এখানেই পার্থক্য। এ জন্যেই আমাদের অন্তঃত আমার এলার্জি। বাংলাদেশ সকল ধর্মের দেশ হলেও ইসলাম সংখ্যা গরিষ্ঠ। অন্য দলের হর্তা কর্তারাও আছেন মুসলমান। তাঁরা এই জন-গুরুত্বপূর্ণ ব্যপার নিয়ে বলুক। আমরাও না হলে গলা মিলাব। যদি বলেন ইস্লামী দল ছাড়া কেউ জাতের মুসল্মান না তাইলে আমিও হইলাম না ওরকম মুসল্মান।
৫। কেউ কোনও কিছু নিয়ে কথা বললে আমি নিজে আগে বোঝার চেষ্টা করি সে কোন দল করে বা আদৌ করে কিনা। আমি যে কোনও রাজনৈতিক দলের পক্ষে প্রচারনা চালানোর জন্য এই লেখাটা দেইনি সেটাই বুঝাতে চেয়েছি। আসলে আমার বলার ভঙ্গিটাই ভুল হয়েছে। খেয়াল করলে দেখবেন যে ট্যাগে কিন্তু রাজনীতি আছে। ভুলের জন্য ক্ষমাপ্রার্থী।
তবে এইটাও ঠিক যে, এই লেখার শুরুতে আমার টার্গেট ধর্মীয় দল ছিলনা। এখনও নেই। সিভিট কথা তুলালেন তাই বললাম এতকিছু। ধ্রুব বর্ণন- কে ধন্যবাদ আমার মূল লেখার টোনটা ধরিয়ে দেয়ার জন্য।
অ. ট.ঃ হিমু ভাই, আপ্নের দুইটা প্রশ্নের একটারও জবাব জানা নেই আমার। আমিও জানতে চাই। আর পিপিদা, আপ্নিও কোনও আপডেট পেলে জানিয়েন।
আবারো ধন্যবাদ সবাইকে।
বুয়েটিয়ানদের মধ্যে মৌলবাদী চিন্তাভাবনা দেখলে আমি আশ্চর্য হই না। বাংলাদেশে "ভাল ছাত্র" বলতে তাদেরকেই বোঝায় যারা পড়ালেখার চাপে দৈনিক পত্রিকা পড়ারও সময় পায় না। স্কুল-কলেজ মিলিয়ে ১৪ বছর দমবন্ধ পড়াশোনার পর বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে কিছুটা বহিঃবিশ্বের সাথে সংযোগ স্থাপন হয়, তখনই বাংলাদেশের ধর্মাসক্ত সামাজিক আবহের হেতু এই ভাল ছাত্রদের ধর্মভীতিকে পুঁজি করে তাদের উপর মৌলবাদী দলগুলো হামলে পড়ে। ছোটবেলা থেকেই যদি তাদের একটু বাইরের বই পড়ার সুযোগ থাকত, তাহলে হয়ত এত সহজে এই ভাল ছাত্রগুলা তাবলীগ কিংবা জামায়াত-হিযবুতের ফাঁদে পড়ত না। নটরডেমে আমার পাশে বসা এক টিপিক্যাল ভাল ছাত্রকে বলতে শুনেছি, "মেয়েরা ঘরের বাইরে কাজ কইরা কি এমন দেশ উদ্ধার করল?", তাও আবার বাংলা ক্লাসে বেগম রোকেয়ার প্রবন্ধ পড়ার সময়।
সঙ্গত কারণেই, বাংলাদেশের প্রগতিশীল বুদ্ধিজীবি মহলে হিউম্যানিটিজের লোকজনের সংখ্যাই বেশি থাকে। অন্তত আমার পর্যবেক্ষণে আমি তাই দেখছি।
হিজবুত তাহ্রীত ধর্মভিত্তিক দল কবে থিকা দাদা? আল-কায়েদাও কি ধর্মভিত্তিক দল? ঝাইড়া কাশেন।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
ভূতের মুখে রামনাম কীর্তন শুনতে থাকলে কোনো সুস্থ স্বাভাবিক মানুষেরই যেমন সেটা ভালো লাগার কথা না। তেমনি হিজবুত তাহরীর, হরকাতুল জিহাদ, জামাতে ইসলামী ইত্যাদি বালছাল মার্কা দলগুলোর মুখে বাংলাদেশ প্রেমের কথা শুনলেও সেটা কোনো সুস্থ মানুষের পক্ষে মেনে নেয়া সম্ভব না। যেটা বুঝতে হবে, সেটা হলো এদের এই দেশপ্রেমের ভেক ধরার পেছনে জটিল কোনো সর্পফণার পরিকল্পনা রয়েছে। সেগুলোর বাস্তবায়নে নিজের বুদ্ধি, বিবেক আর মগজ বন্ধক দিয়ে রেখেছে আপনার মতো কিছু অকাটছাগল। আপনাদের জন্য কাঁঠালপত্র না, দরকার চিকন দেখে পেয়ারা গাছের ডাল।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ধুগোদাকে
পাগলরে রাস্তার মাথায় ট্রাফিক কন্ট্রল করতে দেখা যায় বলে পাগল দিয়ে ট্রাফিক কন্ট্রোল করাতে হবে নাকি?
_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩
@ সিভিট ১২ : তাহলে আম্রিকা মিসর আর সিরিয়ায় 'সেনাবাহিনী হাত করার' বিরুদ্ধে সে সব দেশের তাবৎ ইসলামি দলগুলো আন্দোলন করছে ? কই, বিশ্ব-মিডিয়ায় তো তার কোন খবর দেখি না ! ঐ সব দেশের ইসলামি দলগুলো তো এখন তলারটা কুড়োতেই ব্যস্ত - তাই না কি ?
লেখা পড়ে সত্যিই ভয় পেয়ে গেলাম।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
একটা প্রশ্ন ছিল লেখকের কাছে আপনি যারা কমিউনিজম নিয়ে মগজ ধোলাই করে তাদের কি বলবেন? জানি না মন্তব্যটা প্রকাশ করে হবে কি না?
আর মিশরের নির্বাচনের ফলাফল কি দেখেছেন?
আমি আগেও বলেছি। আবারো বলছি। আমি আপাতত কোনও নিজমের পক্ষেই না। কারন সব কয়টাকেই মুষ্টিমেয় কিছু লোক তাঁদের স্বার্থের কাজে ব্যবহার করছে। আমি যেটা বলছি তা হলো - এই সব অন্যান্য মগজ ধোলাইয়ের বিপক্ষে কি কি বলা যায় সেই পয়েন্টগুলো কেউ যদি নাও জানে, একটু চেষ্টা করলেই জানতে পারে। পক্ষে বিপক্ষে তথ্যর কোনও অভাব নেই। কাজেই যখন এঁদের হাতে পড়া কাউকে বলা হয় যে তুমি যেটা করছ সেটা ভুল, সেইখানে যুক্তি ব্যবহার করা যায়। কিন্তু ধর্মীয় বিশ্বাসের যায়গায় এই ব্যপারটা খাটেনা। এখানে মগজ ধোলাই হয়না আসলে, মগজটাই বের করে নেয়া হয়। তাই ধর্মটা ধর্ম এবং বিশ্বাসের গন্ডীতেই থাকা উচিৎ বলে আমি মনে করি। আপনি যদি একটু নজর দিয়ে দেখেন তাহলে বোধহয় খুব সহজেই পৃথিবীতে আত্মঘাতী এই পর্যন্ত যারা হয়েছে (যুদ্ধাবস্থা ছাড়া) তাদের একটা গড় করে নিতে পারবেন যে কোন ধরনের লোক বেশী। আমি বলছি না সে ইসলাম ধর্মাবলম্বীই হবে। কিন্তু বেশিরভাগের পিছনেই দেখবেন একটা ধর্মীয় চেতনা (!) ব্যবহার হয়েছে। আমাদের দেশের জামাত-শিবির এর তো খুব পছন্দের একটা শ্লোগানই আছে - মরলে শহীদ, বাঁচলে গাজী।
ঢাকায় এবং দেশের অনেক যায়গাতেই অনেক রাস্তা-ঘাট চওড়া করা হয়েছে যান-বাহনের চাপ বেশী দেখে। অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা বা অংশবিশেষ ভাঙ্গা পড়েছে তাতে। কিন্তু গোলাপ শাহ-র মাজার অথবা সোবহানবাগ মসজিদ কিন্তু আছে বহাল তবিয়তেই। আমার ভয়টা এখানেই।
নতুন মন্তব্য করুন