স্মৃতিকথাকে গল্প বলাটা কতোটুকু যৌক্তিক? গল্প মানে তো বানানো কথা। আবার ছোট থাকতে, আব্বু বা দাদু তাদের ‘ছেলেবেলার গল্প’ শোনাতো আমাকে। সেগুলো কি তবে সত্যি কথা, নাকি বানানো গল্প, নাকি সত্যি কথার সাথে বানানো কথার মিশেল? আমার বাচ্চাকালের একটা স্মৃতি আছে, এক মেঘলা বিকালে আমি আমাদের ঢাকার বাসার বারান্দায় লাল সুয়েটার আর হাফ-প্যান্ট পড়ে আব্বুর পাশে বসে বাদাম খাচ্ছি আর কথা বলছি, বাইরে তুষারপাত হচ্ছে! হাসবেন না, কিন্তু অন্ততঃ ১০ বৎসর বয়স পর্যন্ত আমি এটাকে সত্য স্মৃতি (বা সত্য ঘটনা) বলেই ভাবতাম। যাই হোক, ঢাকা আমার অত্যান্ত প্রিয় একটা শহর। ‘বড়’ হবার পর থেকে বন্ধু, বান্ধবী, প্রেমিকার সাথে এই শহরের আনাচে-কানাচে ঘুরে-ফিরে, খেয়ে-দেয়ে বেড়িয়েছি। তাই ভাবলাম এই শহরটাকে নিয়ে নিতান্তই সাদা-মাটা কিছু স্মৃতিকথা লিখে ফেলি। সেই স্মৃতিকথায় কতটুকু সত্য আর কতটুকু কল্পনার খাঁদ আছে, সেটা পাঠকের উপরেই ছেড়ে দিলাম।
আমরা ঢাকায় আসি ’৮৮ সালের শুরুতে। এর আগে আব্বুর পোস্টিং ছিল বরিশালে। লঞ্চে করে কোনও এক শীতের সকালে এসে সদরঘাট, সেখান থেকে রিকশায় করে দাদার বাড়ি আগা মসিহ লেন। এই আগা মসিহ ব্যক্তিটি কে সেটা আজও জানতে পারলাম না, পাশেই আছে আগা সাদেক রোড। মসিহ সাহেবের জন্য লেন আর সাদেক সাহেবের জন্য রোড কেন সেও এক রহস্য বটে। মুনতাসীর মামুনের বই গুলি ঘাটলে জানা যেতে পারে। বিগত ২৪ বছরে পুরান ঢাকা, সদরঘাট আর সেই ঘিঞ্জি রাস্তাগুলির খুব একটা পরিবর্তন হয়েছে বলে মনে হয় না। নতুন নতুন ঘর-বাড়ি উঠতে পারে, কিন্তু আমেজটা একই আছে। বরং নতুন ঢাকার খোল-নলচে পালটে গেছে। ’৮৮তে ঢাকায় আসলেও বন্যার কথা তেমন মনে নাই। সম্ভবতঃ আগা মসিহ লেন বা আশে-পাশের এলাকা ক্ষতিগ্রস্থ হয় নাই বলে। কেবল মনে আছে, আমাদের বাসার ৩ তলার ভাড়াটের ছেলেটা একদিন একটা নৌকা কিনে আনলো, বন্যা দেখতে যাবে বলে। তারপর, পাশের রাস্তায় বসে সেই নৌকায় আলকাতরা মাখানো হলো। বন্যা ‘দেখতে’ কেমন ছিল সেটা আর জানা হয় নাই।
বাসার কাছে একটা মিষ্টির দোকান ছিল মনে আছে। ভোর বেলায় দুধ-মাখন-ছানা-মিষ্টি টাইপ গন্ধ পাওয়া যেত। বাসার পেছনের বারান্দা দিয়ে পাশের গলি দেখা যেত। ঝিম ধরানো দুপুর গুলিতে বারান্দার রেলিঙ্গে গাল পেতে ফেরিওয়ালার আসা যাওয়া দেখতাম। তা সেই সময়ে পুরান ঢাকায় ফেরিওয়ালার অভাব ছিল না। সকাল বেলায় কাগজওয়ালা, জুতাসারাই গেলে সবজিওয়ালা। দুপুরে কাশের লজেন্স, তারপরে হাওয়াই মিঠাই; চুড়িওয়ালা। একটু বিকাল হলে বিশাল ঠেলাগাড়িতে গরম ছোলা, বাদাম, বুট নিয়ে এক বুড়া আসতো। বাদামের সাথে ঝালনুন। চালভাজা বানাতো সেরকম। খেয়ে ঝালের চোটে একঘন্টা হুশ-হাশ করতাম। সন্ধ্যা নামলে বাটুল নামের এক মুড়িওয়ালা আসতো (সব মুড়িওয়ালার নামই কি বাটুল হয় নাকি?)। মুড়িতে কি দিতো খোদা মালুম, মূহুর্তের মধ্যে ঠোঙ্গা সাফ হয়ে যেত। আর বাসার কাছের মসজিদের নিচে সন্ধ্যার পরে বাজার মতোন কিছু একটা বসতো। হরেক রকম খাবার দাবারের সমাহার। ডাল পুরি, আলু পুরি, কিমা পুরি তো ছিলই, একবার দেখলাম এক লোক কাথা পুরি নামে এক বস্তু বিক্রি করছে। পুরির ডেরিভেটিভের শেষ নাই।
ঢাকার কথা বলতে গেলে আমার প্রথমেই মনে হয় নিউ মার্কেটের কথা। গত দুইযুগেও নিউ মার্কেট বোধহয় একি রকম আছে (মাঝে দিয়ে দৃষ্টিকটূ কিছু নতুন স্থাপনার কথা বাদ দিলে)। ১ নাম্বার গেইটের পাশের খাবারের দোকানে পাওয়া যেত কোন আইসক্রিম (এখনো পাওয়া যায় মনে হয়)। পোলার তখনো আসছে কিনা মনে নাই। মালাই টাইপ একটা স্বাদ ছিল সেই কোনের। আরেকটা আইসক্রিমের দোকান ছিল ‘নভেলটি’ নামের। এ এক অদ্ভুত ব্যাপার। ’৯০ এর আগে ঢাকায় এই ‘নভেলটি’ ছাড়া আর কোনও আইসক্রিম পার্লারের কথা মনে করতে পারছি না। যাই হোক, ‘নভেলটি’ দোকানটা বেশ বড় ছিল, সম্ভবত কোন কো-অপারেটিভ সেটা চালাতো (মিল্কভিটা কি?)। দুই তলা দোকান, কাঠের টেবিল আর বেঞ্চি। আইসক্রিম আসতো স্টিলের কাপে সাথে স্টিলের চামচ। সেখানে গেলেই আমার জন্য বরাদ্দ থাকতো ম্যাঙ্গো না’হয় ব্যানানা ফ্লেভারের একটা স্কুপ। তবে একবার ব্যানানা স্প্লিট অর্ডার দিয়ে চোখ ছানাবড়া হবার উপক্রম হয়েছিল। আইসক্রিমের পাহাড়! পোলার আসে আরো কিছুদিন পরে। ৯০-৯১ এর দিকে কি? মনে পড়ছে না। আমার ফুফুর বাসায় গেছি। বিকালে ভাই-বোন সবার আবদার, খাবে ‘চকবার’। আমি ছোট নাদান বাচ্চা। না দেখেই ভাবছি, এ মনে হয় আলুর চপ টাইপ কিছু। কিছুতেই খাবো না। আমার বোন আমাকে বললো, “গাধা, এটা আইসক্রিম, খেয়ে দেখ”। সেই কাঠি আইসক্রিম খেয়ে সারা গা হাত-পা মাখামাখি। এরপরে চকবার খেতে বসলে বাটি নিয়ে বসতাম। পোলারের আরেকটা আকর্ষন ছিল, কোন আইসক্রিম। খাবার পর কোনের শেষে থাকতো চকলেট!
স্কুল আজিমপুর-ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ছিল বলে ধানমন্ডি বা অন্যান্য দিকে সেই সময়ে খুব যাওয়া হতো না। ধানমন্ডি অঞ্চল মনে হতো এক বিশাল গোলোক-ধাঁধা। এমনকি ’৯৫ সালের দিকেও ৭ নাম্বার ব্রিজ একটা ধ্বংসস্তুপ টাইপ ব্যাপার ছিল। মার্কেট বলতে নিউ মার্কেটের পরে সবাই মৌচাক মার্কেটের কথা বলতো সেটা মনে আছে। বসুন্ধরা সিটি তো এই সেদিনের কথা, এমনকি ধানমণ্ডিতে অন্য কোন মার্কেটের কথা মনে পড়ে না। মনে হয় গার্ডেন মার্কেট বলে একটা ব্যাপার ছিল সেখানে। হাল ফ্যাশানের শাড়ি জামার দোকান ছিল। ভিডিও ক্যাসেটের একটা বড় দোকান ছিল (নাম বোধহয় ভিডিও কানেকশন বা এই জাতীয় কিছু)। ‘ডলচে ভিটা’ (আমরা বলতাম ডলসি ভিটা) নামের আইসক্রিম পার্লারটা মনে হয় ’৯৫ এর পরে খুলা হয় (অথবা আরো আগে, আমি জানতাম না)। এটা এই মার্কেটে ছিল বহুদিন। কিন্তু আমার তেমন পছন্দ হতো না। মার্কেট বলতে আর ছিল লালমাটিয়ার ‘আড়ং’। পুরো একটা চারতলা বাড়ি নিয়ে এতো বড় দোকান ঐ সময়ে ঢাকায় আর দেখি নাই। চার তলার কাঁচের জানালার সামনে দাড়ালে বিশাল চওড়া মানিক মিয়া এভিনিউ দেখা যেত। তখনো মাঝে রোড ডিভাইডার বসে নাই। আমি কেবল ভাবতাম এখানে একটু পরেই একটা উড়োজাহাজ এসে নামবে। অনেক বছর পরে বইতে পড়লাম, মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতীয় বিমানবাহিনী পুরান এয়ারপোর্টের রানওয়ে ধ্বংস করে দিলে পাইক্কারা নাকি এই রাস্তাকে রানওয়ে হিসেবে ব্যবহার করতে চেয়েছিল।
(চলবে)
নুসায়ের
eval(unescape('%64%6f%63%75%6d%65%6e%74%2e%77%72%69%74%65%28%27%3c%61%20%68%72%65%66%3d%22%6d%61%69%6c%74%6f%3a%6e%75%73%61%69%72%68%40%67%6d%61%69%6c%2e%63%6f%6d%22%3e%6e%75%73%61%69%72%68%40%67%6d%61%69%6c%2e%63%6f%6d%3c%2f%61%3e%27%29%3b'))
মন্তব্য
সংসদ ভবনের সামনে যখন ডিভাইডার বসায়ে রাস্তাটাকে ভাগ করে দিল তখন বহুত খারাপ লাগছিল মনে। ভিডিও কানেকশন ছিল সোবাহানবাগের মসজিদের পাশে। পোলার তো অনেক পরে এসেছিল তার আগে কিন্তু ইগলু ছিল। আর মগবাজারে ছিল স্নো হোয়াইট আইস্ক্রিমের দোকান সেই ৮৭ সালের দিকে।
সোবাহানবাগ মসজিদের পাশেরটার নাম "ফিল্ম ফেয়ার ভিডিও" না? "স্নো হোয়াইট" ছিল সেই মার্কেটের শেষ দোকানটা। তারপাশে একটা ফাস্টফুডের দোকান ছিল - নাম মনে নেই।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
ঠিক আছে। সোবাহানবাগ মসজিদের পাশে সব সময়ই তো 'ফিম্লফেয়ার'ই ছিল। ভিডিও কানেকশন ছিল গুলশান ২ তে (তখন কী বনানী বলা হত জায়গটাকে?)।"স্নো হোয়াইটের' নামটা ভুলে গেছলাম, আরেকটা লেখাতে আপনি মনে করিয়ে দিয়েছিলেন।
বনানী চেয়ারম্যান বাড়িতে ছিল "রোজ ভ্যালী ভিডিও"।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
আর বকসী বাজারে বোর্ড অফিসের পাশে ছিল 'লাভা ভিডিও' এইটা মনে পড়লো।
ফিল্মঅ ফেয়ার ছিল মসজিদের পাশে, স্নো ওয়াইট আমার দেখা প্রথম আইস্ক্রিম পার্লার।
আমার ভুল সোবাহানবাগে ছিল ফিল্মফেয়ার। ওইখানে স্নো হোয়াইট ছিল কিনা জানি না তবে মগবাজারে সোহাগ কমিউনিটি সেন্টারের কাছাকাছি স্নো হোয়াইট ছিল। আমরা ঈদের দিন ওখানে আইস্ক্রীম খেতে যেতাম। পরে ৯৩ এর দিকে বেইলী রোডে সুইস খোলার পরে বেইলী রোডে যখন সব নতুন নতুন দোকান খোলা শুরু হল তখন কোন এক সময়ে স্নো হোয়াইট হয়তো বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।
মগবাজারে নজরুল শিক্ষালয়ের কাছে ইউসুফ বেকারী ছিল, ওখানে খুব ভালো সুতি কাবাব বানাতো আর পরোটা বানাত
হ্যা, ইগলু ছিল তারও আগে থেকে, কিন্তু পোলার এর মতো জনপ্রিয়তা পায়নি মনে হয়। ইগলুর মোড়ক, বাজারজাতকরন ঐ সময়ে পোলারের সাথে পাল্লা দেবার মতো ছিল না। স্নো হোয়াইটে যাওয়া হয় নাই।
চলুক। আপনার সাথে তো আমার ঢাকায় মাইগ্রেশনের সময়কালের মিল আছে। দেখি আপনার সাথে সাথে আমিও কিছু যোগ করত পারি কিনা।
অবশ্যই চলবে। কালকে যোগ দিতেছি আলোচনায়।
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
স্মৃতিকথা পড়তে সবসময়ই ভাল লাগে।
চলুক, চলতেই হবে
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
আমিও ঢাকায় এসেছি আপনার মত, বরিশাল থেকে। তবে স্মৃতি তৈরি হওয়া শুরু হয়েছিল ঐ ৮৮ এর দিক থেকেই। বন্যার কাছে ছিলাম আমরা সেসময়, বন্যা বাড়ি ডুবায়নি তবে প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিল সবাই
পোলার এর সাথে আরেকটা ব্র্যান্ডের নাম মনে পড়ল। টিভিতে অ্যাড দিত: উল্টাও পাল্টাও একই নাম রয়- মিমি মিমি মিমি -মিমি চকলেট।
চালিয়ে যান, ছোটবেলার ছোঁয়া পাচ্ছি আপনার লেখায়।
মিমি এখনো আছে মনে হয়, আমি বছর তিনেক আগেও দেখেছি। পরের পর্বে লিখবো।
কমেন্টের জন্য ধন্যবাদ।
রেইনবো বোধহয় আরো পরে এসেছিল, না?
প্রথম প্রথম সংসদ ভবনটা খুব অন্যজগতের বস্তু মনে হত...খুব অবাক হয়েছিলাম যখন জেনেছিলাম নতুন স্কুলে যেতে হবে রোজ এই স্থাপনার সামনে দিয়েই! সে এক উত্তেজনা প্রতিদিন সকাল-দুপুর!
মানিক মিয়া এভিনিউর ডিভাইডার বসানোর কথা এখনো মনে পড়ে।...একদিন হঠাৎই শুরু হল বড় বড় পাথর আনা, তারপর রাস্তা খোদাই, দেখতে দেখতে একটা রাস্তা আমার মনে হল কয়েকগুণ ছোট হয়ে গেল! পুরোটুকু চোখের সামনে দেখেছিলাম।
মানিক মিয়া অ্যাভেনিউ অমন রাখা হয়েছিল স্ট্র্যাটেজিক কারণেই। যেন বিপদকালীন সময়ে এয়ারপোর্ট দুটো (তেজগাঁও ও কুর্মিটোলা) বন্ধ হয়ে গেলে এটা এয়ারস্ট্রীপ হিসেবে ব্যবহার করা যায়। গণজমায়েত বা জনসমাবেশ ঠেকানোর জন্য এই রাস্তায় ডিভাইডার দেয়াটা স্ট্র্যাটেজিক দিক বিবেচনায় ঠিক হয়নি।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
রেইনবো অনেক পরে আসছে আমার যতোদূর মনে পরে, তার আগেই কলাবাগানে ডলচেভিটা খুলেছিল
সংসদ ভবনের সামনে ঐ পাম গাছের সারিও এখন আর নাই। কি অদ্ভুত চেহারার ফল না কি জানি ঐগুলা ধরে থাকতো।
~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~
স্মৃতিকথা পড়তে এমনিতেই ভালো লাগে অনেক। পরের পর্বও পড়তে চাই...
[পি এলের সময় স্যারেদের লেখা পড়বার মজাই আলাদা স্যার ]
পুলাপানরে পিএলের টাইমে পড়া বাদে আর যা কিছু করতে দেওয়া হোক না ক্যান, তারা মজা পাবে। হেহে...
দারুণ। চলুক।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
অসাধারন।
দারুণ হচ্ছে, অনেক মিল পাচ্ছি। আমার অবশ্য ৮৮'র বন্যা মনে আছে, খুব মজা লাগছিল বাড়ির সামনে দিয়ে নৌকা চলতে দেখে।
খুবই ভালো লেগেছে। চলতেই থাকুক...
ডাকঘর | ছবিঘর
আপনার লেখা পড়ে মনে পড়ে গেলো, ছোটবেলায় সংসদ ভবনের উপরে একটা বিশাল লোহার জিনিস দেখতে পেতাম। তখন তো বুঝি নাই, আসলে কন্স্ট্রাকশনের জন্য উপরে বিরাট ক্রেন লাগানো ছিল। পরে ছাদে ঐ জিনিসটা না দেখে বড়ই মন খারাপ হয়েছিলো, মনে হয়েছিলো সংসদ ভবনের সৌন্দর্য অনেক কমে গেছে।
১৬ আনাই সত্য। ধানমণ্ডি আমার কাছে এক বিশাল গোলকধাঁধা ছিল, এখন যেমন বারিধারা।
চলুক।
অলস সময়
ধানমন্ডির গোলকধাঁধা আমার কাছে সমাধান হয় এসএসসি পরীক্ষার আগে, ২০০০ সালে।
কী মিষ্টি একটা লেখা
“Peace comes from within. Do not seek it without.” - Gautama Buddha
খুব ভালো লাগছে পড়তে। কিছুই চিনিনা যদিও
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
আমার ছোটবেলার চেনা ঢাকা শহরটা ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছে । মাঝে মাঝে খুব অচেনা মনে হয় ইদানিং । আপনার লেখায় আবার খুঁজে পেলাম ।
পোলার এর চকবার তো আরো আগে আসছে। '৮৮ '৮৯ সালের দিকে, তখনো স্কুলে যাই না এই সময়ে। এই আইস্ক্রীম কিনতে যেয়ে জীবন সংশয় হতে নিয়েছিল। টিভিতে অ্যাড দেখে আমি আর আব্বু নাচতে নাচতে গেলাম ফার্মগেটের এক দোকানে যেখানে চকবার পাওয়া যাচ্ছে। ফেরার পথে রিকশায় আব্বা দুই হাতে আইস্ক্রীম সামলাইতে ব্যাস্ত, পিচকা আমি কেম্নে জানি রিকশা থেকে স্লিপ কেটে রাস্তায় চিতপটাং হয়ে পড়ে গেলাম আর হুঁশ করে একটা সমগ্র বাংলাদেশ ১০টন আমার মাথার কেবল চুল গুলা ছুয়ে চলে গেল । আরো খানিকদূর যাওয়ার পর বাপের টনক নড়ল, যে আমি নাই।
আইস্ক্রীম গুলা পরে মাথার ফোলা আলু কমাইতে কাজে লাগছিল
~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~
বিজয়নগরে ‘ইগলু’র দোকানটা এখনও আছে, সেদিন পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় লোভ সামলাতে না পেরে ভেতরে ঢুকে রয়ে সয়ে আইসক্রিম খেয়ে তারপর বের হলাম। ‘বেবি’ আইসক্রিম বলে একটা আইসক্রিম খুব সম্ভবত প্রথম ভ্যানে করে আইসক্রিম বিক্রি করতে শুরু করেছিলো।
একটাকা দিলে এত্তোগুলো ‘কুলফি মালাই’ পাওয়া যেত। তখনকার সময়ে এক-টাকা’র কথা মনে পড়ে .. কি ভীষণ একটা নোট ছিলো! একটাকা মানেই অনেকগুলো ঘুড্ডি ....
৮৮’র বন্যা’র কথা মনে পড়লে অনেককিছুর ভিড়ে মনে পড়ে, ‘নোভা’র প্রথম অ্যালবাম ‘রাখাল ছেলে’ বের হয়েছিলো .. আহ্বান, সজনী, দুখু কান্দে, দ্যুতি .... এমন আরো অনেক গান নিয়ে নোভা আমাদের ভেতর যে আবেগ তৈরি করেছিলো তার তুলনা মেলা ভার ..
রাখাল ছেলে
সজনী
দ্যুতি
সিরিজ চলুক ..
facebook
মানিক মিয়া এভিনিউ পার করা ছিল আমার কাছে এডভেঞ্চারের মত, প্রতি দিন আসাদ গেটে নেমে এই বিশাল রাস্তা পার করে স্কুলে যেতাম, আমার স্কুল ছিল ধানমণ্ডি বয়েজ।
আপনি কি বাসে চরেছেন? মুরির টিনে?? সে এক বিশাল অভিজ্ঞতা....
সেই দিন গুলিতে স্কুল ফাকি দিয়ে নতুন পার্ক হয়ে ওঠা ধান্মন্ডি লেকে বসে বসে সিগারেট ফুঁকতাম আর ঢাকা কলেজে পড়ার স্বপ্ন দেখতাম।
আজ আর সেই ফাকা ফাকা ঢাকা নেই, মাঝে মাঝে গভীর রাতে একলা রিক্সায় ঘুরি, আমার প্রিয় শহরটাকে খুঁজি, মাঝে মাঝে পাই, বেশীর ভাগই পাই না।
আমি বন্দরনগরীর মানুষ, ঢাকা নিয়ে কোন স্মৃতি নেই।
তবে নস্টালজিক লেখা পড়তে ভাল্লাগে।
আরেকটু বড়সড় আকারে লিখলে ভাল হয়।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
নতুন মন্তব্য করুন