বন্দরনগরী চট্টগ্রাম এলাকা আজ থেকে চারশ বছর আগে ছিলো নির্বাসিত পর্তুগীজ অপরাধীদের অভয়ারণ্য, আরাকান থেকে সুন্দরবনের তীরে দস্যু হার্মাদ১ এর নামে লোকে কাপড় ভিজিয়ে দিত। আজকের লিখাটি ১৮৬৯ সালে টমাস হার্বার্ট লেভিন লিখিত The Hill Tracts of Chittagong and the dwellers therein বইটির কিছু অংশের ভাবানুবাদ।
….........................................................
মোগল সম্রাট আওরঙ্গজেবের মামা শায়েস্তা খাঁ কিছুদিন আগ্রার গভর্নর হিসেবে কাজ করার পরে প্রোমোশন পেয়ে বাংলার গভর্নর ও সেনাবাহিনী প্রধান হিসেবে নিয়োগ পান। এরপরে তিনি বাংলার প্রতিবেশি রাজ্য আরাকানের দিকে নজর দেন।
আরাকান বা মগ রাজ্যে তখন কয়েক প্রজন্মের পর্তুগীজ, খ্রীস্টান দাস, আধা ফিরিঙ্গি আর নানান হাবিজাবি সাদা লোকের বাস। গোয়া, সিংহল, কোচিন, মালাক্কা আর অন্যান্য সাবেক পর্তুগীজ কলোনীর পলাতক লোকেরা এখানে ভিড় জমিয়েছিলো, বিভিন্ন অপরাধ করার পাশাপাশি কেউ কেউ মঠ থেকে পালিয়েছিলো কি দুতিনটে বিয়ে করেছিলো ইত্যাদি। এরা নামেই খ্রীস্টান, যে পাপের নরকে ডুবে থাকতো তাকে জীবন বলা চলে না। অনেক সময় এরা নিজেদের ধর্মযাজককে পর্যন্ত খুন করতো, যদিও মনে করবেননা ধর্মযাজকের জীবন ছিলো খুব পূণ্যে ভরা।
আরাকানের রাজা মোগলদের বেজায় ভয় পেতেন, তাই এইসব বিদেশিদের তিনি খুব তোয়াজ করে চলতেন যেনো তারা তার হয়ে মোগলদের বিরুদ্ধে কাজ করে। এদের খুশি রাখার জন্য তাদেরকে চিটাগং নামের এক বন্দর এলাকা বুঝিয়ে দেন তিনি। সরকারী বাধাহীন জমি বুঝে পেয়ে এরা ইচ্ছেমত লুটপাটের রাজত্ব আরম্ভ করলো, বাংলার চল্লিশ পঞ্চাশ লীগ পর্যন্ত ভেতরে গিয়ে হাটবারে এরা গ্রামসুদ্ধ সব লোক ধরে নিয়ে আসত, মাঝে মাঝে বিয়েশাদীর পরবে হামলাও করতো। যা যা সাথে নেওয়া সম্ভব তা লুট হত, তারপর আস্ত গ্রাম জ্বালিয়ে দিত তারা। এদের যন্ত্রনা এতদূর গিয়েছিলো যে মাত্র কয়েকবছর আগেও যে গ্রাম মানুষে গিজগিজ করতো সেখানে পরে নির্জন বাঘ ভাল্লুকের আখড়া গড়ে ওঠে।
দাসদের সাথে এদের ব্যবহার জঘন্য রকমের, আর এদের এমনই স্পর্ধা যে এরা গতকাল যে গ্রাম লুট করে পরদিন আবার সেই গ্রামে গিয়ে ঐ গ্রামের লোকেদেরই বিক্রি করে! প্রায়ই দেখা যেত কম বয়সী যুবকের দল যারা বাপেদের ফেলে পালিয়েছিলো তারাই আবার চড়াদামে পরিবারের সদস্যদের কিনছে। বুড়োধাড়ি ছাড়া জোয়ান দাসদের তাদের দলে ভেড়ানো হত, অথবা বিক্রি করে দেওয়া হত গোয়া, সিংহল ইত্যাদি স্থানে। এমনকি হুগলীর সভ্য পর্তুগীজের দল অপেক্ষা করে থাকতো চিটাগং এর জলদস্যুদের কাছ থেকে পাইকারি রেটে দাস কেনার জন্য। হাড়বজ্জাত জলদস্যুগুলো বুক ফুলিয়ে বলতো হুগলীর বেকুব মিশনারিগুলো দশ বছরে যত খ্রীস্টান বানাচ্ছে তার চেয়ে ঢের বেশি খ্রিস্টান তারা প্রতি বছর তৈরী করছে।
হুগলী শহরে পর্তুগীজদের পত্তন হয় আওরঙ্গজেবের দাদা জাহাঙ্গীরের আমলে। জাহাঙ্গীর ছিলেন সাদা মনের মানুষ, খ্রিস্টানদের সাথে কোন ঝামেলা ছিলোনা তার। তার ছেলে শাজাহান আবার ছিলেন কট্টর মোল্লা, একবার হুগলীতে পর্তুগীজপল্লীতে গিয়ে তার চোখ কপালে ওঠে। মোগল সম্রাটের অধীনদের জোরপূর্বক ধর্মান্তরিত করে দাস বানানোর ব্যাপারটায় তার মেজাজ চড়ে যায়, পর্তুগীজদের কাছে তিনি ক্ষতিপূরণ দাবী করেন। পর্তুগীজরা তা দিতে অস্বীকার করলে শাজাহান আস্ত হুগলী শহর দখল করে গুষ্টিসুদ্ধ সবাইকে দাস বানানোর হুকুম দেন আর তাদের আগ্রায় পাঠিয়ে দেন। সে এক অবিশ্বাস্য দুঃখের কাহিনী। বিবাহিত অবিবাহিত সুন্দরী মেয়েদের হারেমে চালান দেয়া হয়, একটু বয়স্ক বা কালাকুচ্ছিত মেয়েগুলিকে সরকারী অফিসারদের মাঝে বিলি বাঁটোয়ারা করা হয়। বাচ্চাগুলির প্রত্যঙ্গ কেটে খোজা করা হয়, তাগড়া জোয়ান লোকেরা খ্রিস্টধর্ম বর্জনে আপত্তি জানালে হাতি দিয়ে মাথা গুঁড়িয়ে দেয়া হয়। জাহাঙ্গীরের আমলে তৈরী হুগলীর মনোহর গীর্জা ধ্বসিয়ে দেয় শাজাহানের লোক।
এই সময় চিটাগং এর পাইরেটের দল পর্তুগীজ ভারতের রাজধানী গোয়ায় লোক পাঠায় যে তারা পুরো আরাকান রাজ্য তাদের হাতে তুলে দিতে চায়। এই দস্যুদের সর্দার ছিলো বাস্তিয়ান গঞ্জালেস নামে এক পাইরেট, তার এতই ক্ষমতা যে সে আরাকানের রাজার জামাই হয়ে বসেছিলো। গোয়ার ভাইসরয় অবশ্য বেজায় নাকউঁচু ভদ্রলোক, এইরকম নীচজাতের লোকের কথা শোনার কোন ইচ্ছা তার ছিলোনা।
জলদস্যুর দল সেই সময় গঙ্গায় ঢোকার মুখে সন্দ্বীপ বলে একটা ছোট দ্বীপে আস্তানা গাড়ে। ফ্রা জোন বলে এক কুখ্যাত অগাস্টিন ধর্মযাজক এখানে কিছুদিন চেষ্টা করেছিলো নিজস্ব রাজ্য গড়ার। আবার কিছু বদমাসের দল শাজাহানের ছেলে সুলতান সুজা ঢাকা থেকে আরাকান যাওয়ার পথে তার কিছু মুল্যবান রত্ন চুরি করে, যা পরে পানির দরে বিক্রি হয়। ওলন্দাজ আর অন্যান্য ইয়োরোপীয়ের দল এদের বোঝায় হিরেগুলি হালকা আর নিম্নশ্রেণীর বলে এর দাম কম।
মোট কথা আরাকানের দস্যুদের যন্ত্রনায় মোগল সম্রাটেরা ছিলেন অতিষ্ঠ। আরাকান থেকে বাংলা সুরক্ষিত রাখতে মিলিটারিবাবদ বিরাট বাজেট রাখতে হত, তাতে যে অনেক লাভ হত তাও না। পাইরেটের দল এত দুর্ধর্ষ ছিলো যে তাদের পাঁচ/ছয়টা জাহাজ চোদ্দ/পনেরোটা মোগল জাহাজ জ্বালিয়ে দিত মাঝে মাঝে। বাংলার গভর্নর হয়ে শায়েস্তা খাঁ সাহেব প্রথমেই ঠিক করলেন এই আরাকানি বজ্জাতগুলোর হাড্ডি গুঁড়ো করে দিতে হবে। আরাকান আক্রমনের আরও মোটিভ মিলে গেল দ্রুত। মক্কায় হজ্জ্ব করবার জন্য জাহাজ প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বাংলার সুবাদার শা সুজাকে আমন্ত্রন দিয়ে আনে আরাকানরাজ, তারপর চেহারা পাল্টে সুজাকে লুট করা হয় ও সুজার মেয়ে সম্রাট শাজাহানের নাতনি গুল এ রুখ বানুকে ধর্ষন করা হয়। আওরঙ্গজেব হুকুম পাঠান যে এদের এমন শাস্তি দিতে হবে যেন এরা আর কোনদিন মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারে।
কিন্তু আরাকান দখল সোজা কথা নয়, একে তো আছে বায়ান্নো হাজার নদী তার উপর জলদস্যুর উৎপাত। শায়েস্তা খাঁ ঠিক করলেন ওলন্দাজদের সাহায্য নেবেন, চিরশত্রু পর্তুগীজ দমনের এত বড় মওকা ওলন্দাজ ছাড়লোনা। বাটাভিয়া থেকে দুইটি যুদ্ধজাহাজ পাঠানো হল, তারা গিয়ে চট্টগ্রামে মোগল নৌবাহিনীর সাথে যোগ দিল। শায়েস্তা খাঁ আরাকান রাজা আর পর্তুগীজ দস্যু দুই শত্রুর মোকাবিলা করার চিন্তা বাদ দিয়ে ফোকাস করলেন আরাকান রাজা উচ্ছেদের। তিনি জলদস্যুদের বললেন, আওরঙ্গজেব মহাক্ষিপ্ত...আরাকান রাজার দিন ঘনিয়ে আসছে। ওলন্দাজ জাহাজ আমাদের পাশে, বোকামী না করে মহান আওরঙ্গজেবের পতাকাতলে এসো আরাকান প্রভু ছেড়ে। বাংলায় তোমাদের দুই ডবল জমি দেব, চার ডবল খাজনা তোলা জায়েজ করবো। আরাকান রাজার বিরুদ্ধে একত্র হবে এসো।
এদিকে অন্য এক ঘটনায় আরাকান খুব বড় এক মন্ত্রীকে পর্তুগীজরা খুন করেছিলো, ফলে রাজা কি শাস্তি দেয় ঐ চিন্তায় এরা অস্থির ছিল। শায়েস্তা খাঁর কথা শুনে এরা বালবাচ্চা নিয়ে বাংলায় পাড়ি জমানোই মনস্থঃ করলো।এদেরকে বাংলার একটি বড় শহর ঢাকায় জমিজিরাত দেয়া হল, টাকাপয়সাও কম পেলনা তারা। এরপর তাদের মোগল নৌবাহিনীতে ভেড়ানো হল আরাকান যাত্রার উদ্দেশ্যে। আরাকান পৌঁছানোর বহু আগে সন্দ্বীপ নামে এক দ্বীপে তাদের কোন কারনে নামিয়ে যুদ্ধবিরতি করা হয়, এইখানে ওলন্দাজদের ডেকে শায়েস্তা ধন্যবাদ দেন তাদের সাথে থাকার জন্য কিন্তু বলেন যে তাদের আর মোগল বাদশার প্রয়োজন নেই, তারা বাটাভিয়া ফিরে যেতে পারে। মাথা চুলকাতে চুলকাতে ওলন্দাজ ফিরে গেলো।
আর পর্তুগীজ? রোটি, কাপড়া আর মকানের যে প্রতিশ্রুতি দেখিয়ে তাদের ঢাকা আনা হয় তা কোথায় মিলিয়ে গেল! তাদের শুন্য হাতে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় পাঠানো হয়, যেখানে তারা মোগলের হাতের পুতুল মাত্র। তাদের জাতীয় বিশ্বাসঘাতক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়, মাসকাবারি বেতন ঝুলিয়ে রাখা হয় দিনের পর দিন। চট্টগ্রামের দুর্ধর্ষ জলদস্যুর দল এভাবে মোগল প্রতারনার শিকার হয়ে ধীরে ধীরে হারিয়ে গেলো।
সত্যপীর
eval(unescape('%64%6f%63%75%6d%65%6e%74%2e%77%72%69%74%65%28%27%3c%61%20%68%72%65%66%3d%22%6d%61%69%6c%74%6f%3a%6d%69%72%31%37%38%40%79%61%68%6f%6f%2e%63%6f%6d%22%3e%6d%69%72%31%37%38%40%79%61%68%6f%6f%2e%63%6f%6d%3c%2f%61%3e%27%29%3b'))
মন্তব্য
পর্তুগীজদের গল্প শুনে কেন যেন অলি আহমদের কথা মনে পড়ে গেলো।
[আমার চারপাশ]-[ফেবু]-[টিনটিন]
পড়ছি, চলুক চলুক
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
আপনার প্রত্যেকটা গল্পচ্ছলে ইতিহাসই দারুণ লাগে পড়তে। ধন্যবাদ লেখার জন্য ...
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
অসংখ্য ধন্যবাদ, আরো লিখার আশা রাখি।
ভাল লাগ্ল পড়তে, আরো পর্ব চাই (ঃ
শাফি।
অইবো অইবো, সবুর করেন। আর নেন
আমাদের দেশে তো দেখি শুধু Gore Verbinski আর Rob Marshall এর অভাব, নাইলে জমজমাট একটা মুভি হয়ে যেত এই গল্প দিয়ে। পাইরেটস আফ দ্যা ক্যারাবিয়ানের চেয়ে কোন আংশেই তো দেখি কম না এই পারেটসরা
লিখা জারি থাকুক
এক মুক্তিযুদ্ধ নিয়েই কত জমজমাট মুভি করা যায় ভেবে দেখেন লাবণ্য আপু...আকাট মূর্খদের হাতে দেশটার মিডিয়া।
ভালো লাগলো।
বাহ, ঢাকার চারশত বছরের ইতিহাসের প্রথমদিককার নাগরিক তাহলে এই হার্মাদের দল ???
... এই মনোটোনিক হার্মাদের শহর ... বেশ মজার তো শুনতে
==========================================================
ফ্লিকার । ফেসবুক । 500 PX ।
হাহাহাহাহাহা।
১. বাংলায় ঔপনিবেশিক শক্তিগুলোর পাঠানো প্রতিনিধিদের মধ্যে সবচে’ কুখ্যাত লোকটার নাম সম্ভবত “শায়েস্তা খান”। এর লেভেলে ব্যাপক লুটপাট আর কোন সুবাদার-গভর্ণর কখনো করতে পারেনি। যদি একটা স্কলারশীপ পেতাম তাহলে এর দুষ্কৃতির উপর বিস্তারিত গবেষণা করতাম। “টাকায় আট মণ চাল”-এর ফালতু মীথটা ভেঙে দিতাম।
২. দক্ষিণ বঙ্গে আরাকান আর পর্তুগীজরা শত শত বছর ধরে যে সন্ত্রাসের রাজত্ব চালিয়েছে তার বিস্তারিত ইতিহাস প্রকাশিত হওয়া দরকার। সম্ভব হলে এর ক্ষতিপূরণও আদায় করা দরকার।
৩. ব্রিটিশদের প্রবল প্রতাপে গুটিয়ে যাওয়া প্রত্যেকটি ইউরোপীয় ঔপনিবেশিক শক্তি ভারতবর্ষে দাস ব্যবসার জন্য দায়ী। আর এদের প্রধান পেট্রন ছিল মুঘলরা। দাস ব্যবসা, খোজাকরণ, তাওয়াইফ বানানোর ক্ষেত্রে মুঘলরা ইবলিশের ঠাকুর দাদা শ্রেণীর।
৪. জাহাঙ্গীর আওরঙ্গজেবের পিতামহ বা ঠাকুর দাদা; দাদা বা বড় ভাই নয়। আপনিও বোধহয় সেটাই বোঝাতে চেয়েছেন। জাহাঙ্গীর ছিল অপদার্থ - সাদা মনের মানুষ নয়।
৫. কট্টর মোল্লা ছিল আওরঙ্গজেব, শাহ্জাহান নয়। হুগলী দখল পরবর্তী সময়ে যে অন্যায় হয়েছে সেটা শঠে শাঠ্যং নীতিতে। সেখানে বিজয়ী ও বিজিত উভয়ে মানবতাবিরোধী অপরাধে অপরাধী।
৬. শাহ্ সুজা জীবনের শেষ ভাগে বাংলা ও সেখান থেকে আরাকানে যাবার চেষ্টা করেছিল তার ভাই আওরঙ্গজেবের হাত থেকে বাঁচার জন্য - বাংলার সুরক্ষা নিয়ে তার কোন মাথাব্যথা ছিল না। শায়েস্তা খান তাকে ধরতে পারলে আওরঙ্গজেবের কাছে ফেরত পাঠাতো। সুজা আরাকান থেকে ত্রিপুরা হয়ে মণিপুরে পালিয়ে যায়। সুজার মণিপুর বাসের ইতিহাস ইন্টারেস্টিং। কিন্তু এই অত্যাচারী, অপদার্থটার ব্যাপারে আমার আগ্রহ কম - তাই এর পেছনে সময় নষ্ট করবো না।
৭. Porto Grande চট্টগ্রামে পর্তুগীজদের কর্তৃত্বের অবসান তথা ভারতবর্ষ থেকে তাদের পাততাড়ি গুটানোর জন্য ব্রিটিশ ও ডাচদের যৌথ উদ্যোগ দায়ী। বস্তুত নিজেদের চরম বদস্বভাবের জন্য পর্তুগীজরা অনেকের চেয়ে আগে শুরু করেও দুনিয়ার খুব কম জায়গায় নিজেদের উপনিবেশ টিকিয়ে রাখতে পেরেছিল।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
আরাকানিরা মনে হয় এক অর্থে ক্ষতিপূরন দিচ্ছেই।
****************************************
লেখকের মতে জাহাঙ্গীর সাদা মনের মানুষ কারন "...that prince was free from all prejudice against Christian...", সুতরাং খ্রিস্টপ্রীতি থাকলেই লেখকের কাছে তারা ভাল লোক। আজকাল আমেরিকানদের আবিষ্কৃত একটি টার্ম মনে পড়ে যাচ্ছে, "মডারেট মুসলিম কান্ট্রি"।
মূল লাইন, "Shah Jahan, a more rigid mussulman than his father...", হয়তো আমার লিখা উচিৎ ছিলো "বাপের তুলনায় শাজাহান ছিলেন কট্টর মোল্লা"। দুঃখিত। আপনার কথা ঠিক আওরঙ্গজেব ছিলেন এদের মধ্যে সবচাইতে উগ্র।
ঠিক, তবু মনে হয় মোগল রাজকন্যা ধর্ষনের কারনে আরাকানরাজের উপর আওরঙ্গজেবের ক্রোধ লোক দেখানো নয়। তার সম্ভবত প্ল্যান ছিলো পর্তুগীজ খেদাও, আরাকান মারো আর সুজার চোখে সীসা ঢেলে দাও। এক ঢিলে তিন পাখি। তবে এই গল্প পড়ে আমি একটু কনফিউজড যে শেষ পর্যন্ত ওলন্দাজ পর্তুগীজ ফিরিয়ে দিলেন শায়েস্তা খাঁ তাইলে আরাকান মারলো কে? তাকে কি ছেড়ে দেয়া হয়েছিলো? দেখি অন্য কোন বইয়ে কিছু পাই কিনা।
৭টা দুর্দান্ত কমেন্টে নেন ৭ কেজি ।
সন্দ্বীপে মগধরা নামে একটা জায়গা আছে। শায়েস্তা খান সন্দ্বীপের ওই জায়গায় মগ/আরাকানীদের পরাজিত করেন।
[আমার চারপাশ]-[ফেবু]-[টিনটিন]
আপনার ঐতিহাসিক তথ্যনির্ভর মন্তব্যগুলো মুগ্ধ করছে। বাই দা ওয়ে, তাওয়াইফ কি বস্তু?
..... লিখতে থাকুন। ভালো হচ্ছে ।
ডাকঘর | ছবিঘর
দারুণ হচ্ছে, চলুক।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
আহাঃ ছিলাম দুর্ধর্ষ জলদস্যু আর এখন কি হয়া গেলাম !! চট্টগ্রামবাসীদের পক্ষ থেকে "আঁই মুঘল'র চইদ্দগুশটির ক্ষেতা ফুইত্তাম চা'ইর" ।
আমার আব্বা ছিলেন ঢাবির অধ্যাপক। তিনি একটা কথা বলতেন, "পুলিশের পোলা চোর হয়, আর আমার ছেলেগুলি হইসে গাধা।" আমরা পড়াশুনায় আইনস্টাইন ছিলাম তো তাই। সুতরাং চইদ্দগুশটির যত খুশী ক্ষেতা ফুড়েন কিন্তু মনে রাখবেন সাফল্য বা ব্যর্থতা বংশানুক্রমিক নয়।
_____________________
Give Her Freedom!
ভাল লাগল আপনার ইতিহাস্বের পাঠ। শায়েস্তা খানের শায়েস্তা!
ইতিহাসের*
ইতিহাস পাঠ ভাল লাগছে। লেখা চলুক
খুব ভাল লাগল আপনার অনুদিত ইতিহাস!
এই জায়গাটা বুঝতে পারিনি!
প্রেমের প্রতিমূর্তি শাজাহান তাহলে এমন ছিলেন? ইতিহাসের মজাটাই বোধহয় এখানে; মুহূর্তেই দেবতাকে দানব বানিয়ে ফেলতে পারে!
পরিশেষে, আপনার কাছ থেকে এমন আরো চমকপ্রদ ইতিহাস জানার অপেক্ষায় রইলাম....
ঠিক আগের লাইনটি লক্ষ্য করুন, পর্তুগীজেরা মাঝে মাঝে একটি গ্রামের লোক ধরে নিয়ে গিয়ে পরদিন আবার ঐ গ্রামে নিয়েই বিক্রি করতো...তাই লুটের দিন যুবকেরা যারা বাপকে ফেলে পালিয়েছিলো তারাই আবার বাপকে কিনতো ওদের কাছ থেকে।
প্রেমের প্রতিমূর্তি টুর্তি মিডিয়ার বানানো হাইপ, আকবর ছাড়া মোটামুটি প্রতিটি মোগল সম্রাটই ছিলেন পান্ডবদার ভাষায় "ইবলশের ঠাকুরদাদা শ্রেনীর"।
দাদা, আকবরকে ছাড় দেবার কোন কারণ তো আমি দেখতে পাইনা। কী কারনে আকবরকে "গ্রেট" বলা হবে?
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
আকবরের দ্বীন-ই-ইলাহী জিনিসটা সম্বন্ধে আমার দূর্বলতা আছে, সকল ধর্মের প্রতি সহনশীলতা ব্যাপারটাকে একটা কাঠামোর ভিতর দাঁড় করানোর চেষ্টা করার জন্য তাকে পেলাচ দিতে মঞ্চায়।
তবে আপনি যে অর্থে মোগলদের ইবলিশ বলছেন সেই দোষে আকবর ঠিকই দুষ্ট ছিলেন। তবু তারে বাকি বদমাশগুলোর সাথে এক কাতারে দাঁড় করাতে আমার দ্বিধা হয় দ্বীন-ই-ইলাহীর প্রচেষ্টা জন্য।
ভালো লাগলো।
[আমার চারপাশ]-[ফেবু]-[টিনটিন]
নতুন মন্তব্য করুন