“ইতিহাস রচিত হয় বিজয়ীর হাতে”

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: বিষ্যুদ, ১২/০১/২০১২ - ১০:০৪অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

মিনমিনে ম্যাৎকারধ্বনি শুনতে পাই, ইতিহাস নাকি বিজয়ীর হাতেই লিখিত হয়। ইতিহাসের এ মহাপন্ডিতরা কি ভুলে গিয়েছে বিজয়ীর হাতে লিখিত এ ইতিহাসের খলনায়কদের কি পরিণতি হয়? দু:খ আমাদের এটাই- পলিমাটির দেশে জন্মানো নরম বাঙ্গালী ইতিহাসের সে দ্বিতীয় অধ্যায়টিই লিখতে পারলনা চল্লিশ বছরে। আজ এই বরাহছানারা চার্চিলের বরাত দেয়, ‘History is written by the victors’. দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন অক্ষশক্তির প্রথম সম্মেলন, ১৯৪৩ সালের ১লা ডিসেম্বরের তেহরান সম্মেলনে স্ট্যালিন চার্চিলের কথিত জার্মানপ্রীতিকে কটাক্ষ করে বলছিলেন, ‘যুদ্ধে জিতলে ৫০,০০০-১,০০,০০০ জার্মান যুদ্ধাপরাধীকে ফাঁসিতে ঝোলাবো। রুজভেল্ট ঠাট্টা করে উত্তর দিয়েছিলেন, ‘আমার মনে হয় ৪৯,০০০ জন হলেও চলবে’। আর চার্চিল যথারীতি যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিরোধিতাই করেছিলেন। যুদ্ধাপরাধীর বিচারের ব্যাপারে নিষ্ঠার মানদন্ডে যে পাঁচটি ক্যাটাগরি করা হয়, তার মধ্যে যুক্তরাজ্যের স্থান হয় চতুর্থ ক্যাটাগরিতে, এবং এ কারণে যথেষ্ট সমালোচনার মুখে পড়তে হয় গোটা দেশকেই। আজ বরাহছানাদের মুখে চার্চিলের বাণী শুনে তাই খুব একটা বিস্মিত হইনা। তবে তাদেরকেও শুনিয়ে দিতে চাই, শেষ পর্যন্ত ৬০ হাজারের ওপর যুদ্ধাপরাধীকে বিচারের সম্মুখীন করা হয়েছিল, এবং সে বিচার প্রক্রিয়া আজো চলছে।

এই বেজন্মাদের আরও স্মরণ করিয়ে দিতে চাই ফরাসী বিপ্লবের বিজয়ী ম্যাক্সিমিলিয়ান রবেসপিয়ের হত্যা করেছিলেন ৪০,০০০ প্রতিবিপ্লবী। উরাল পর্বতের পাদদেশে একাতেরিনবার্গে জার রোমানভ ও তার পরিবারকে হত্যা করে, আগুনে পুড়িয়ে ছাই একটি ডোবায় মিশিয়ে দেন বলশেভিকরা। মেনশেভিকদের সাথে গৃহযুদ্ধে মারা যায় লাখের ওপর মানুষ। মাঠে খেলতে থাকা শিশুদের দিকে তাকিয়ে লেনিন বলেছিলেন, ‘এদের জীবন এদের বাবাদের জীবনের চেয়ে অনেক সুখের হবে। তাই তো আমাদের এই আপাত নিষ্ঠুরতা; কিন্তু ইতিহাস আমাদের ন্যায্যাতার মূল্যায়ণ করবে; যখন তারা বুঝবে কিসের বিরুদ্ধে ছিল আমাদের সংগ্রাম’। ইরানের ইসলামি বিপ্লবের পর মুজাহেদিন-এ-খালক, ফেদায়িন, কমুনিস্ট, বানি সাদর এর সমর্থক মিলিয়ে ১০ হাজারের ওপর প্রতিবিপ্লবীকে হত্যা করেন ইমাম খোমেইনি। আমি ইতিহাসবিদ নই, তবু আমার স্বল্পজ্ঞানেই উদাহরণ দিতে পারব আরো অনেক। বলি, ৭১ পরবর্তী শুদ্ধিঅভিযান এখনো বাকির খাতায় লেখা রয়েছে। বিজয়ীর হাতের ইতিহাসই দেখেছেন, হাতের মার এখনো দেখেননি।

সবাই গোলাম আযমের গ্রেফতার নিয়ে উল্লাসে মেতে আছেন; কিন্তু তার দোসররা যতদিন এই পূণ্যভূমিতে নি:শ্বাস নেবে ততদিন শহীদদের আত্মা শান্তি পাবেনা। কাজেই জামাত শিবির অবিলম্বে নিষিদ্ধ করার দাবি জানাই। এরপরও যারা গোপনে বা প্রকাশ্যে, স্বনামে বা বেনামে সেই ঘৃণ্য রাজনৈতিক দলের সাহচর্য করবে তাদেরকে পাইকারি দরে ফাঁসিতে ঝোলানরও দাবি জানাই। এটা করা না হলে জাতি হিসেবে আমাদের কখনোই মাথা উঁচু করে দাঁড়ানো সম্ভব হবেনা।

জামাত শিবির নিষিদ্ধ হোক। ফাঁসি হোক এর সব ঘৃণ্য দোসরদের।

--তৌফিক জোয়ার্দার


মন্তব্য

উচ্ছলা এর ছবি

জামাত শিবির নিষিদ্ধ হোক।

শ্লোগানে গলা মেলালাম।

দারুন ঝাঁঝাঁলো লেখাটির জন্য আপনাকে একটি জ্বালাময়ী গান উপহার :

তৌফিক জোয়ার্দার এর ছবি

ঝাঁঝটাকে ধরে রাখুন। জামাত-শিবিরের রাজনীতি বন্ধের ন্যয্য দাবিতে সোচ্চার থাকতে হবে। তারা অবশ্যই ভিন্নমত পোষণ করতে পারে। কিন্তু একটি সার্বভৌম দেশে সে দেশের সার্বভৌমত্বের প্রতি চ্যালেঞ্জকারী দল রাজনীতি করার অধিকার সংরক্ষণ করেনা। বাকস্বাধীনতার নামে নাৎসী হলোকাস্টের পক্ষে কথা বলাটা যেমন সভ্যদুনিয়ায় অগ্রহণযোগ্য, একাত্তরের গণহত্যাকারীদের দোসরদেরও গণহত্যার পক্ষে অবস্থান করতে দেয়াটা আমাদের জাতীয় লজ্জা।

পাঠক এর ছবি

ভালো লেখা ।

-মেফিস্টো

তৌফিক জোয়ার্দার এর ছবি

ধন্যবাদ।

গৃহবাসী বাঊল এর ছবি

জামাত শিবির নিষিদ্ধ হোক, ফাঁসি হোক এর সব ঘৃণ্য দোসরদের

শ্লোগানে কন্ঠ মেলালাম- জামাত শিবির নিষিদ্ধ হোক, ফাঁসি হোক এর সব ঘৃণ্য দোসরদের

চলুক

তৌফিক জোয়ার্দার এর ছবি

ধন্যবাদ বন্ধু। মেডিকেল লাইফে একবার শিবিরের হুলিয়া মাথায় নিয়ে দিন গুজরান করেছি; আবারো হয়ত তাই হবে। যা থাকে কপালে, আল্লাহ ভরসা।

চরম উদাস এর ছবি

চলুক

তৌফিক জোয়ার্দার এর ছবি

ধন্যবাদ।

রানা মেহের এর ছবি

খোমেইনির ইসলাম বিপ্লবের উদাহরন দেয়া টা কি ঠিক হলো?

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

তৌফিক জোয়ার্দার এর ছবি

Let me be very clear. সাম্রাজ্যবাদের পাচাটা গোলাম রেজা শাহ পাহলাভির বিরুদ্ধে খোমেইনির জাতীয়তাবাদী বিপ্লব আমি অত্যন্ত শ্রদ্ধার চোখে দেখি। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

বিপ্লব সরকার এর ছবি

আজকের শিবির আগামী দিনের ঘৃণিত রাজাকার। এদেরকে নিরমুল করতে ফাসি দেয়া বাধ্যতামূলক হওয়া উচিত বলে আমি মনে করি।

তৌফিক জোয়ার্দার এর ছবি

স্বাধীনতার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া শক্তিগুলোর রাজনীতির লাগাম টেনে ধরা জাতীয় কর্তব্য। সেটা যেই দল বা গোষ্ঠিই করে থাকুক। ধন্যবাদ।

অতিথি লেখক  এর ছবি

পুরোপুরি সহমত পোষণ করছি ........................খুব ভালো লিখেছেন

তৌফিক জোয়ার্দার এর ছবি

ধন্যবাদ।

ধূসর জলছবি এর ছবি

চলুক
জামাত শিবির নিষিদ্ধ হোক, শ্লোগানে গলা মেলালাম ।

তৌফিক জোয়ার্দার এর ছবি

ধন্যবাদ।

ধ্রুবনীল এর ছবি

চলুক

তৌফিক জোয়ার্দার এর ছবি

ধন্যবাদ।

ঝুমন এর ছবি

জামাত শিবির নিষিদ্ধ হোক, ফাঁসি হোক এর সব ঘৃণ্য দোসরদের

তৌফিক জোয়ার্দার এর ছবি

ধন্যবাদ ঝুমন।

শেহাব- এর ছবি

জামায়াতের বিরোধিতা শুধু রাজনৈতিক বিরোধিতা ছিল না। ওরা অফিসিয়ালি যুদ্ধাপরাধে অংশ নিয়েছিল। কাজেই এই সন্ত্রাসী সংগঠনটিকেও নিষিদ্ধ করতে হবে।

তৌফিক জোয়ার্দার এর ছবি

রাজনৈতিক বিরোধিতা করলেও স্বাধীনতার পর নিষিদ্ধ হওয়া উচিত ছিল। সভ্যদেশে স্বাধীনতার বিরোধিতাকারী সংগঠনের রাজনীতি করার অধিকার থাকতে পারেনা। ধন্যবাদ শেহাব।

ধ্রুব বর্ণন এর ছবি

জামাত-শিবিরের নিষিদ্ধকরণ চান ভালো কথা -

এই বেজন্মাদের আরও স্মরণ করিয়ে দিতে চাই ফরাসী বিপ্লবের বিজয়ী ম্যাক্সিমিলিয়ান রবেসপিয়ের হত্যা করেছিলেন ৪০,০০০ প্রতিবিপ্লবী। উরাল পর্বতের পাদদেশে একাতেরিনবার্গে জার রোমানভ ও তার পরিবারকে হত্যা করে, আগুনে পুড়িয়ে ছাই একটি ডোবায় মিশিয়ে দেন বলশেভিকরা। মেনশেভিকদের সাথে গৃহযুদ্ধে মারা যায় লাখের ওপর মানুষ। মাঠে খেলতে থাকা শিশুদের দিকে তাকিয়ে লেনিন বলেছিলেন, ‘এদের জীবন এদের বাবাদের জীবনের চেয়ে অনেক সুখের হবে। তাই তো আমাদের এই আপাত নিষ্ঠুরতা; কিন্তু ইতিহাস আমাদের ন্যায্যাতার মূল্যায়ণ করবে; যখন তারা বুঝবে কিসের বিরুদ্ধে ছিল আমাদের সংগ্রাম’। ইরানের ইসলামি বিপ্লবের পর মুজাহেদিন-এ-খালক, ফেদায়িন, কমুনিস্ট, বানি সাদর এর সমর্থক মিলিয়ে ১০ হাজারের ওপর প্রতিবিপ্লবীকে হত্যা করেন ইমাম খোমেইনি।

এসব দ্বারা কী বোঝাতে চাইলেন বুঝলাম না।

গণ নিধনের ইন্ধন দিচ্ছেন নাকি? পলপট ক্ষমতা গ্রহণের পর পরিকল্পিতভাবে বিশ লাখ শহুরে মেরে ফেললো শ্রেণীশুদ্ধ করার নামে, সেটা বললেন না? বা লেনিনের উক্তির প্রতি শ্রদ্ধা রেখে আপাত নিষ্ঠুরতা বজায় রেখে স্ট্যালিন যে আরো লাখে লাখে মানুষ মারলো, সেটা বলেন? হিটলার মিলিয়ন মিলিয়ন ইহুদি মেরেছিলো ওই শুদ্ধি অভিযানের নামে। যাতে ভবিষ্যত আর্যবংশ সুখে শান্তিতে থাকে, আপাতত নিষ্ঠুরতা শেষে। আর যে বিষয় নিয়ে বলছেন, সেই মুক্তিযুদ্ধেই পাকিস্তান হারামি বাহিনী বাংলাদেশ থেকে বাঙালিত্ব ও হিন্দুত্ব নিশ্চিহ্ন করার জন্য, পাক জাতি শুদ্ধ করার জন্য গণহত্যা করেছে, ধর্ষণ করেছে। সেটাও স্মরণ করায়ে দিলেন না যে?

সেখানে যুদ্ধের পর রাজাকার বা বিহারিদের গণ নিধন ঘটে নি এ কারণে না যে আমরা আবাল, গুরুত্বপূর্ণ জিনিসগুলো খালি বাকির খাতায় রেখে দেই। যুদ্ধ পরবর্তীকালে বাঙালি, বাংলাদেশ সরকার, মুক্তিযোদ্ধারা ও ভারতীয় বাহিনী দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়েছে বলেই এটা ঘটেছে। যাতে বিজয়ের অর্জনের উপর আপনার 'বিপ্লবীদের' ইতিহাসের মতো (যাদের গণহত্যা কর্মকে মোটেও এরকম শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করা হয় না) কালিমা লেপন না ঘটে, সেই ব্যাপারে তারা সতর্ক ছিলো। রাজাকারদের বিনা বিচারে হত্যা, বিহারিদের উপর গণআক্রমণ যাতে না ঘটে তা যেভাবে নিশ্চিত করা হয়েছে, সেটা শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করার মতো একটা ঘটনা। আপনার এই বক্তব্য মুক্তিযুদ্ধের ও মুক্তিযোদ্ধাদের সেই প্রেরণার প্রতি একটা অসম্ভব অসম্মান।

বিচার আর হত্যা এক জিনিস নয়।

জাতি তার একটা কাঙ্ক্ষিত বিচার পেয়ে আরো শক্তিশালী ভিত্তিপূর্ণ হয়ে ওঠার কালে আপনার এই রংহেডেড বিনাশী চিন্তাভাবনার পোস্ট পড়ে ক্ষুদ্ধ হলাম।

কালো কাক এর ছবি

চলুক

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

ধ্রুব বর্ণন এর ছবি

স্যাম এর ছবি

একমত "সেখানে যুদ্ধের পর রাজাকার বা বিহারিদের গণ নিধন ঘটে নি এ কারণে না যে আমরা আবাল, গুরুত্বপূর্ণ জিনিসগুলো খালি বাকির খাতায় রেখে দেই। যুদ্ধ পরবর্তীকালে বাঙালি, বাংলাদেশ সরকার, মুক্তিযোদ্ধারা ও ভারতীয় বাহিনী দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়েছে বলেই এটা ঘটেছে। যাতে বিজয়ের অর্জনের উপর আপনার 'বিপ্লবীদের' ইতিহাসের মতো (যাদের গণহত্যা কর্মকে মোটেও এরকম শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করা হয় না) কালিমা লেপন না ঘটে, সেই ব্যাপারে তারা সতর্ক ছিলো। রাজাকারদের বিনা বিচারে হত্যা, বিহারিদের উপর গণআক্রমণ যাতে না ঘটে তা যেভাবে নিশ্চিত করা হয়েছে, সেটা শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করার মতো একটা ঘটনা। আপনার এই বক্তব্য মুক্তিযুদ্ধের ও মুক্তিযোদ্ধাদের সেই প্রেরণার প্রতি একটা অসম্ভব অসম্মান।" তারপর সেই মানবিকতার/দায়িত্বশীলতার সুযোগ গ্রহন করা ওই পশুরা যেভাবে গত ৩৬ বছর তার প্রতিদান দিয়েছে সেই প্রেক্ষিতও বিবেচনায় রাখা উচিত ধ্রুব - তারপর তৌফিক এর এই লেখার এমন প্রকাশ আমার কম ই মনে হয়েছে! আর কত? তাই এখানে উধ্রিত আপনার সাথে একমত পোষন করা অংশটির শেষ লাইনটি তে দ্বিমত! অন্তত 'অসম্ভব অসম্মান' এর মত কিছু মনে হয়নি!

তৌফিক জোয়ার্দার এর ছবি

আপনার মন্তব্য আমার লেখার প্রেক্ষাপটকেই বিশ্লেষণ করে দিয়েছে। ধন্যবাদ।

তৌফিক জোয়ার্দার এর ছবি

ভাই (অথবা বোন), আপনার উত্তর বেশ কয়েকটি এ্যাঙ্গেল থেকে দেয়া যায়। সেগুলোতে যাওয়ার আগে নিজের পোস্টের কনটেক্সট টা পরিষ্কার করে নেয়া উচিত; না হলে ভুল বোঝাবোঝির অবকাশ থেকে যাবে।

গোলাম আযমের গ্রেফতারের পরপরই বেশকিছু ব্লগে এ বিষয়ে কি লেখালেখি হচ্ছে দেখার কৌতূহল হল। পড়াশুনার চাপ সামলে রাত তিনটার সময় লগইন করে কিছু পশুর মন্তব্য পড়ে নিজেকে সংবরণ করতে পারলামনা। তাদের বক্তব্য হল: জামাত ৭১ এ কোন অপরাধ করেনি; রাজনৈতিক মতামত দিয়েছে মাত্র। গোলাম আযম ফেরেশতাতূল্য; তাকে অপদস্থ করার অপরাধে এ জাতির ওপর লানত পড়বে ইত্যাদি। জামাত শিবির কৌশলগত কারণে এখনো চুপ করে আছে, একটু কার্যক্রম শুরু করলেই এদেশের গণেশ উল্টে যাবে ইত্যাদি। গোলাম আযমের জন্য দেশে বিদেশে দোয়া মাহফিলের আয়োজন হয়েছে; লক্ষ লক্ষ মানুষ চোখের জল ফেলে আল্লাহর কাছে এই জুলুমের প্রতিকার চাচ্ছে। অথচ শেখ মুজিবকে সপরিবারে ধ্বংস করে দেয়ার পরও তার জন্য চোখের জল ফেলার কোন মানুষ নাকি পাওয়া যায়নি। এতেই নাকি প্রমাণিত হয়ে কে বেশি মহান- শেখ মুজিব না গোলাম আযম। আরো অনেক আপত্তিকর কথা।

মাথা গরম করে একটানে লিখে ফেললাম লেখাটা। পোস্ট করে মনে হল এতটা এ্যাগ্রেসিভ আমি ব্যক্তিগতভাবে নই, যতটা আমার পোস্টে প্রকাশ পেয়েছে। অর্থাৎ মারমার কাটকাট অংশটুকুর কথা বলছি; যদিও এদের রাজনীতি বন্ধ করার এবং অপরাধের বিচার চাওয়ার বিষয়ে কোন দ্বিমত থাকতে পারেনা। এদের রাজনীতি বন্ধ হলেও কেউ যদি নিষিদ্ধ সংগঠন করে তাহলে তা প্রতিহত করার বিধান তো আইনেই রয়েছে; যেটা হিযবুত তাহরির কিম্বা বামপন্থী নিষিদ্ধ সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে প্রযুক্ত হতে দেখি। কিন্তু অতিথি লেখক হিসেবে লেখা এডিট করার সুযোগ না থাকায় লেখাটাকে আরেকটু পরিশীলিত, পরিমার্জিত করার সুযোগ ছিলনা।

এবার আসি আপনার উত্থাপিত প্রশ্নগুলোর উত্তর কি কি ভাবে দেয়া যায় সে প্রসঙ্গে। এটাকে আমার ব্যক্তিগত স্ট্যান্ড হিসেবে না ধরে ইন্টেলেকচুয়াল এক্সারসাইজ হিসেবে ধরলে বাধিত হব। এ আলোচনা থেকে আমাদের (আমার-আপনার- যারা পড়ছেন তাদের সবার) নিজেদের স্ট্যান্ড খুঁজে নিতে সুবিধা হবে হয়ত।

এক. স্ট্যালিন, পলপট, হিটলারের হত্যাযজ্ঞের সাথে আমার উল্লেখিত এক্সেকিউশন গুলোর পার্থক্য আছে বলে আমার মনে হয়। স্ট্যালিন প্রমূখরা হত্যা করেছিলেন নিজেদের ক্ষমতা সুপ্রতিষ্ঠিত করার জন্য; গণমুখী আদর্শের জন্য নয় (এটা নিয়ে তর্ক অবশ্যই চলতে পারে)। আমার উদাহরণের হত্যাগুলো হয়েছিল আদর্শের জন্য (এটা নিয়েও তর্ক হতে পারে)। রবেসপিয়েরকে আমরা ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হতে দেখিনি। বলশেভিকদের হাতে যারা প্রাণ হারিয়েছিল তারা মূলত মারা গিয়েছিল গৃহযুদ্ধে। আর ইমাম খোমেইনি যাদেরকে এক্সিকিউট করেছিলেন তাদের বেশিরভাগই ছিল আরো বেশি র‌্যাডিকেল, জনবিচ্ছিন্ন, উগ্র। যাইহোক, এদের কাজকে বৈধতা দেয়া আমার উদ্দেশ্য নয় বলে এ সংক্রান্ত আর কোন তর্কে আমি পরবর্তিতে অংশগ্রগণ করবনা।

দুই. আমার উল্লেখিত হত্যাযজ্ঞগুলোতে যাদেরকে হত্যা করা হয়েছিল তাদের অপরাধ ছিল বিপ্লবী মতাদর্শের বিরোধিতা করা। অনেককেই এক্সিকিউট করা হয়েছিল কেবল সন্দেহের বশবর্তী হয়ে; বিশেষ করে রবেসপিয়ের ছিলেন রীতিমত প্যারানয়েড। এক্সিকিউটেডরা কেউ গণহত্যার সাথেও সংশ্লিষ্ট ছিলেন না। পক্ষান্তরে ৭১এর রাজাকাররা কেবল নীতিগত বিরোধিতা করেই ক্ষান্ত হয়নি, সরাসরি স্বজাতি নিধনে নিয়োজিত হয়েছিল। সেই বিবেচনায়; অর্থাৎ বিপ্লবের বিরোধিতা করার শাস্তি যদি ফাঁসি হয়ে থাকে; সরাসরি গণহত্যার দায়ে জামাত-শিবিরের এক্সিকিউশন দাবি করার জন্য ব্যবহৃত উদাহরণগুলো বরং আমাদের কেইসকে দুর্বল প্রতিপন্ন করে। জামাত-শিবিরের শাস্তি তো আরো বেশিকিছু দাবি করা উচিত।

তিন. স্বাধীনতা বিরোধিদেরকে মহানুভবতার/মানবতার পরাকাষ্ঠা দেখিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়নি; বরং বিচারের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কোন মুক্তিযোদ্ধা তাদেরকে ছেড়ে দিয়েছিল আশা করি সেটা বলে দেবার প্রয়োজন হবেনা। কাজেই আমার বক্তব্য মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী কোর্স অব একশনের সাথে খুব একটা অসামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।

চার. সময় নেই হাতে; পরে জবাব দেব।

ধন্যবাদ।

হিমু এর ছবি

আর ইমাম খোমেইনি যাদেরকে এক্সিকিউট করেছিলেন তাদের বেশিরভাগই ছিল আরো বেশি র‌্যাডিকেল, জনবিচ্ছিন্ন, উগ্র।

এটা খোমেনির পক্ষে খুব দুর্বল সাফাইয়ের মতো শোনালো। খোমেনি যাদের হত্যা করেছিলেন, তারা কি র‍্যাডিকেলত্ব, জনবিচ্ছিন্নতা বা উগ্রতার অপরাধে নিহত হয়েছিলো? তাদের চেয়ে বহুগুণে র‍্যাডিকেল, জনবিচ্ছিন্ন আর উগ্র লোকজন খোমেনির বিপ্লবের পর ইরানে ক্ষমতার চর্চা করেছে এবং গোটা দেশটাকে একটা র‍্যাডিকেল, জনবিচ্ছিন্ন ও উগ্র রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। তাদের খোমেনি কিছু বলে নাই কারণ তারা ছিলো তার পক্ষের র‍্যাডিকেল, জনবিচ্ছিন্ন আর উগ্র লোক। খোমেনির ক্ষমতা দখলের পর ইরানে কত অর‍্যাডিকেল, জনসম্পৃক্ত, নিরীহ লোককে তুচ্ছ কারণে মৃত্যু-কারাভোগ-নজরদারির ভেতর দিয়ে যেতে হয়েছে, চিন্তা করে দেখুন।

পাহলভির কুশাসনের বিপরীতে খোমেনির দুঃশাসনকে মহত্তর বলা যায় কি? ভেবে দেখার অনুরোধ করি।

তৌফিক জোয়ার্দার এর ছবি

আপনার বেশিরভাগ কথার সাথেই একমত; কিন্তু শাহের শাসনের চেয়ে খোমেইনির শাসনকে better মনে করি। ইরানের কন্টেক্সটা বিবেচনায় নিতে হবে। পাশ্চাত্যের তীব্র বিরোধিতার মুখে নিজেদের অবস্থানকে সুরক্ষা দিতে জনবিচ্ছিন্নতাকে (মূলত: বিশ্ববিচ্ছিন্নতা) ঢাল হিসেবে বেছে নিতে হয়েছিল বলে মনে হয়। সেকারণেই এখনো নিজের সার্বভৌম অবস্থানকে সদর্পে জানান দিতে পারছে। অন্যথায় তা সম্ভব হতো বলে মনে হয়না। তাদের কুশাসনের শীকার মানুষগুলোর প্রতি সমবেদনা আর সমর্থন তো থাকছেই। কিন্তু এত কিছুর পরও তারা শিক্ষা, স্বাস্থ্য, gender equality (শুনেছি ওখানে নারী-পুরুষের সমান বেতনের বিধান ইউরোপের বেশিরভাগ দেশের আগে করা হয়েছিল), প্রতিরক্ষা, কূটনীতি, অর্থনীতি, সাহিত্য, শিল্পকলা (বিশেষত: ফিল্ম, ও মিউজিক) ইত্যাদিতে যে অবস্থান গড়ে তুলেছে সেটা অস্বীকার করা যায়না। তাদের ইসলামাইজেশনের কথা যতটা ফলাও করা হয় তাদের ভাল দিকগুলো ততটা পাশ্চাত্য মিডিয়ায় কভারেজ পায়না।

সাফাই গেতে চাচ্ছিলামনা, তর্কের সূত্র উষ্কে দিতেই কমেন্টে কথা গুলো লিখেছি। আপনার মন্তব্য প্রমান করছে উদ্দেশ্যটা সফল হয়েছে।
ধন্যবাদ।

guesr_writer rajkonya এর ছবি

দারুউউউউউউউউন।

তৌফিক জোয়ার্দার এর ছবি

ধন্যবাদ।

রজনী এর ছবি

তৌফিক, মনে হলো ৫ মিনিটের একটা 'বারোয়ারী বিতর্ক' এর স্ক্রিপ্ট লিখলেন। এরকম একটা গুরুত্বপূর্ণ সময়ে এরকম বিধবংসী লেখার সময় চিন্তা করে লেখা প্রয়োজন। একটা কথা আমাদের মনে রাখা ভীষন জরুরী যে মুক্তিযোদ্ধারা কোন 'আপাত বা দীর্ঘায়িত নিষ্ঠুরতা' চালায়নি নিজেদের স্বার্থে এবং আজ আমরাও আদর্শগত কারনে 'প্রতিবিল্পবীদের' 'হত্যা' করতে যাচ্ছিনা। একাত্তরে একদল জামাতী হত্যা করেছে, ধর্ষণ করেছে, লুটতরাজ করেছে, বুদ্ধিজীবী নিধন করেছে, মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে। আমরা তার বিচার করতে শুরু করেছি মাত্র। আমরা অনেক দিন পর শুরু করেছি আর ততদিনে বিষবৃক্ষের বীজ মহীরুহ হয়েছে। কিন্তু আমরা শুরু করেছি আমাদের ন্যায়সংগত মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছিলো তাদের বিচার। আমরা খোমেনী বা লেনিন হয়ে সাধারন মানুষ বা মতের বিরোধীতাকারীদের গনহারে হত্যা করতে নামিনি। আপনার জামাতকে নিষিদ্ধ করার দাবীতে একমত পোষন করছি নিশ্চিত অর্থেই কিন্তু এই উদাহরনগুলো বরং ভীষন ধোঁয়াশা সৃষ্টি করে এবং আমাদের নিজেদেরকে ইতিহাসের অনেক নিষ্ঠুর একনায়কদের কাঁতারে দাড় করিয়ে দেয়। ধ্রুব বর্ণনের প্রশ্নগুলোর উত্তর দেবেন আশা করি।

তৌফিক জোয়ার্দার এর ছবি

আপনার সুন্দর বিশ্লেষণধর্মী মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। ধ্রুব বর্ণনের প্রশ্নগুলোর উত্তর আংশিক দিয়েছি; বাকি অংশ দিচ্ছি। উত্তরটিকে ধ্রুব বর্ণনকে দেয়া উত্তরের continuation হিসেবে বিবেচনা করতে হবে; পৃথক উত্তর নয়।

চার. সারাজীবন হানাদার/রাজাকারের ছবির ক্যাপশনে লেখা দেখেছি
"এই পশুরা মানুষ হত্যা করেছে; আসুন আমরা পশু হত্যা করি।"
আজকে শুনছি ভিন্ন কথা। আমি বিভ্রান্ত; কোন কথা শুনব?

আজকেই একজন ভিন্ন প্রসঙ্গে বলছিলেন, মানবতাবাদ মানুষের জন্য তুলে রাখা উচিত। পশুদের প্রতি মানবতা দেখানোটা অপশনাল। অনেক সময় ভয়ঙ্কর ক্ষতির কারণও।

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

সচলেরই একটা পোস্টে এই 'বিজয়ীর হাতে লেখা ইতিহাস' নিয়ে অনেক কথা হয়েছিল। আমরা বিজয়ীর হাতে লেখা ইতিহাস চাই না। আমরা প্রকৃত ইতিহাস চাই। প্রকৃত ইতিহাসের ভিত্তিতে যুদ্ধাপরাধীদের আইনতান্ত্রিক উপায়ে বিচার চাই। একটা অন্যায়ের কম্পেন্সেশান অন্য অন্যায় দিয়ে হয় না, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে হয়। আমরা কখনই বলি না, বলতে চাইনা গোয়াদের বিচার ছাড়া ক্রসফায়ারে ফেলে দেয়া হোক। দেশের আইনে তাদের কৃতকর্মের জন্যে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই আমরা।

ইরানের ইসলামি বিপ্লবের পর মুজাহেদিন-এ-খালক, ফেদায়িন, কমুনিস্ট, বানি সাদর এর সমর্থক মিলিয়ে ১০ হাজারের ওপর প্রতিবিপ্লবীকে হত্যা করেন ইমাম খোমেইনি। আমি ইতিহাসবিদ নই, তবু আমার স্বল্পজ্ঞানেই উদাহরণ দিতে পারব আরো অনেক। বলি, ৭১ পরবর্তী শুদ্ধিঅভিযান এখনো বাকির খাতায় লেখা রয়েছে। বিজয়ীর হাতের ইতিহাসই দেখেছেন, হাতের মার এখনো দেখেননি।

বিজয়ীর হাতের মার না, আমরা দেখতে চাই আইন অনুসারে এদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

চরম উদাস এর ছবি

চলুক

তৌফিক জোয়ার্দার এর ছবি

আপনার বক্তব্যের সাথে পূর্ণ সহমত। উদ্ধৃত লাইনগুলোর সারমর্ম দেয়া জরুরি বোধ করছি (আমারি লেখার সীমাবদ্ধতা)।
উল্লেখিত বিপ্লব পরবর্তী এক্সিকিউশনগুলো দেখিয়ে বলতে চেয়েছি- ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ পটপরিবর্তনগুলোর পরে প্রায় সব দেশেই প্রচুর মানুষ বিচারের সম্মুখীন হয়েছে। অনেককে ফাঁসিও দেয়া হয়েছে। সেই তুলনায়; আমাদের মুক্তিযুদ্ধের পরে রাজাকারদের অনেক বেশি অপরাধ থাকা সত্বেও তাদের প্রতি যথেষ্ট উদারতা/মানবতা দেখান হয়েছে (ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায়)। আর আমাদের এই উদারতাকে রাজাকারের দোসররা দুর্বলতা ভেবে নিয়েছে; যা তাদের মন্তব্যগুলো থেকে খুব স্পষ্টভাবে বোঝা যায়। তাই আমার বিতর্কিত প্যারাটার শেষ লাইন দিয়ে reemphasize করতে চেয়েছি আমাদের উদারতাকে যেন দুর্বলতা ভেবে নেয়া না হয়; আর তা হলে উপযুক্ত জবাব এদেশের মানুষ দেবে (আমি তাই আশা/বিশ্বাস করি)।

হিমু এর ছবি

আমাদের দেশে সমস্যা হচ্ছে, মুক্তিযুদ্ধকে আমরা আক্রান্ত হবার হাত থেকে আইন দিয়ে সুরক্ষা করতে পারিনি। প্রথম বিশ্বে হলোকস্ট ডিনায়ালের শাস্তি কঠোর। বাংলাদেশে যে কোনো আলেকবালেকখালেকজাণ্ডার গিয়ে টিভিতে পত্রিকাতে রেডিওতে জনসভায় পা চ্যাগায় বুকে থাবা মেরে বলতে পারবে মুক্তিযুদ্ধে ছাব্বিশ হাজার লোক মারা গিয়েছিলো, তিন লক্ষ লোক মারা গিয়েছিলো, কোনো ধর্ষণ হয় নাই, মুক্তিযোদ্ধারাই খুনখারাপি করেছে ইত্যাদি। আইন এক্ষেত্রে অনুপস্থিত। আইনপ্রণেতারা ৪০ বছরেও কেউ মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যা অস্বীকার নিবারণ আইন প্রণয়ন করতে পারেননি। সম্ভবত তাদের সেই দূরদৃষ্টি বা মমত্ববোধ নাই। কিন্তু আম পাবলিক বোঝে এইসব বলা ভালো না। প্রতিক্রিয়ায় আম পাবলিকের রাগের বহিপ্রকাশগুলি প্রায়শই মানবিকতা, সভ্যতা আর আইনী সঠিকত্বের চিকন দাগগুলি টপকে যায়। সেটা অনুচিত যেমন, তেমনই রাষ্ট্রের আইনপ্রণেতাদের উচিত এই ন্যায়ের এই অনুভূত অনুপস্থিতির নিরসনের জন্য মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে অস্বীকৃতিমূলক বক্তব্যকে আইনের আওতায় আনার ব্যবস্থা করা। ব্লগ নিয়ন্ত্রণের জন্য কিছু লোক পুটকিতে বারুদ ঠেসে ভরে লম্ফঝম্প দিচ্ছে, অথচ কত জরুরি আইন প্রণীতও হয় না, আলোচিতও হয় না।

তৌফিক জোয়ার্দার এর ছবি

আপনার মন্তব্য মিস করছিলাম। ভাল লাগল। সারকথা এটাই। কিন্তু এ সংক্রান্ত আইনের ব্যাপারে আমাদের করণীয় কি হতে পারে?

হিমু এর ছবি

বিভিন্ন ফোরামে ব্যাপারটা জোরালোভাবে উপস্থাপন করা। প্রভাবশালী আইন প্রণেতাদের সাথে যোগাযোগ করা। নাগরিকের কথা বলার জায়গাগুলোতে এই ব্যাপারটা বারবার উত্থাপন করা। সমবেত কণ্ঠস্বরে দাবিটা বারবার উচ্চারিত হলে আইনপ্রণেতাদের কানে পানি ঢুকবে হয়তো।

আসিফ নজরুলের মতো তৃতীয় শ্রেণীর কুবুদ্ধিজীবীরা টকশোতে একাত্তরের ঘাতকদের চরিত্র শুদ্ধায়ন আর তাদের বিচারকে অমূলক প্রশ্নে বিদ্ধ করার উদ্দেশ্য নিয়ে গত তিন বছর ধরে কথা বলে যাচ্ছে। অথচ আমাদের এত এত মাথাপাছাভারি বুদ্ধিজীবীরা কেউ বলেন না, মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যার অস্বীকারকে আইন প্রণয়ন করে নিবৃত্ত করা উচিত বা যেতে পারে। একেকজন একেক কিসিমের বালছাল বিবৃতি দিয়ে বেড়ান। মাঝেমধ্যে মনে হয়, ভলতেয়ারও বর্তমান বাংলাদেশে বাস করলে পেগ্লে যেতো। ভলতেয়ারের বাবারা এখন বাক স্বাধীনতার নামে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির অধিকার নিয়ে কান গরম করে ফেলেছে। পত্রপত্রিকায় সব আন্টির ছেলে একাত্তরের ঘাতকদের বিচারে সর্বোচ্চ মানের জন্য কানতে কানতে প্যান্ট ভিজায় ফেলে, কিন্তু গণহত্যা অস্বীকার প্রসঙ্গে নানা বালছাল তত্ত্ব আওড়াতে থাকে। আমি বলি, আমরাও জার্নালিজমের সর্বোচ্চ মান নিশ্চিত হতে দেখতে চাই, তারপর বিচারের সর্বোচ্চ মান নিয়ে কথা শুনবো, তার আগে না। বুদ্ধিবেশ্যা আর বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী সাংবাদিক দিয়ে যেসব কাগজ আর টিভি চলে, তাদের মুখে একাত্তরের ঘাতদের বিচারের মান নিয়ে বড় বড় কথা চোদানো ঠিক মানায় না।

তৌফিক জোয়ার্দার এর ছবি

চলুক

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

চলুক

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।