ছোটবেলা থেকেই একটা কথা শুনি,‘দেশের বাড়ি’ ।
আমাদের ছোট্ট মফস্বল শহরের বেশিরভাগ মানুষই সেখানকার স্থায়ী বাসিন্দা ছিলেন । বিশেষত আমার সেই বয়সের ছোট্ট যে পরিচিত মহল ছিল তাতে গিরিধারী কাকা বাদে বাকিরা একইরকম ভাষায় কথা বলত। তবে শহরের লোকেদের ভাষা বই এর ভাষার একটু বেশি কাছাকাছি আর যারা গ্রাম থেকে বাজারে দুধ, ফলমূল বেচতে আসত তাদের ভাষা একটু অন্যরকম, অনেকটা আমার গ্রামে থাকা পিসির মতন । কিন্তু গিরিধারী কাকা বলত হিন্দী মেশানো বাংলা । যেদিন করে আমার চুল কাটানো থাকত, বাবার হাত ধরে গিরিধারী কাকার সেলুনে যেতাম । আমাকে বসিয়ে বাবা বাজার করতে যেত । আমি কটকট করে অদের সাথে গল্প করতাম । একদিন গিয়ে দেখি, দোকানটা বন্ধ । শুনলাম ও নাকি দেশের বাড়ি গেছে কারো অসুস্থ হবার খবর পেয়ে । বাবাকে জিজ্ঞেস করে জানতে পারলাম ওর দেশের বাড়ি বিহারে ।
তার পরেই যথারীতি,
-“বাবা, আমাদের দেশের বাড়ি কোথায়?”
-“বাংলাদেশ।”
ভূগোল বইতে পড়েছি এই দেশটার সম্বন্ধে । আমাদের প্রতিবেশী দেশ । কিন্তু বিহার তো একটা রাজ্য । তবে গিরিধারী কাকার দেশের বাড়ি বিহারে কেন ? মাথাটা একটু গুলিয়ে গেল । তবে এটুকু বুঝলাম আমরা যেখানে থাকি শুধু সেটাই আমাদের দেশ বা বাড়ি হয়না । এর বাইরেও প্রত্যেকের একটা করে দেশের বাড়ি থাকে । যাকে সে ভালবাসে, যেখানে সে যেতে চায় । কিন্তু কে জানে কেন, সে সেখানে থাকে না ।
-“বাবা, আমরা তবে বাংলাদেশে থাকি না কেন?”
-“আমি যে এখানে স্কুলে পড়াই, সেটা কিভাবে হবে?”
-“সে তো তুমি বাংলাদেশের স্কুলেই পড়াতে পার! গিরিধারী কাকা দেশের বাড়ি গেছে, চল না আমরাও যাই আমাদের দেশের বাড়ি, বাংলাদেশ।”
-“ঠিক আছে এবার পুজোর ছুটিতে তোকে দেশের বাড়ি নিয়ে যাব।”
সেই পুজোর ছুটি এখনও আসেনি । আমারও দেখা হয়নি দেশের বাড়ি, বাংলাদেশ ।
আস্তে আস্তে বড় হয়েছি । জেনেছি স্বাধীনতা সংগ্রামের গল্প । গর্বিত হয়েছি আমার মহান দেশ ভারতবর্ষের জন্যে । গর্বিত হয়েছি বাঙালীদের জন্যে । বিদ্যসাগর, বিবেকানন্দ, রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, জগদীশচন্দ্র আরও কত কত মহান মানুষ । পড়তে গিয়ে অনেকসময় কতগুলো জায়গার নাম পাই ইতিহাস বইতে – চট্টগ্রাম-ময়মনসিংহ-ঢাকা । পাশে লেখা থাকে “অধুনা বাংলাদেশস্থিত” ।
একটু একটু করে যত ব্যাপারটা পরিষ্কার হতে যায় ততই ঝাপসা হয়ে যায় । বাড়িতে যখন কোন বয়স্ক জেঠু, মেসো, পিসি বা মাসিরা আসে তখন তাদের দেখি ঐসব জায়গাগুলোর কথা বলতে আর কান্নায় ভেঙে পড়তে বা উদাস হয়ে যেতে ।
আমাদের বাড়িতে তখন চোদ্দ ইঞ্চি সাদা-কালো টি,ভি । বাঁশের মাথায় এণ্টেনা । সন্ধ্যেবেলা আটটার সময় বাবা চলে যেত এণ্টেনা ঘোরাতে । ওটা ঘোরালে বাংলাদেশের নাটক আসবে । আমার কাজ হল ছবি পরিষ্কার এল কিনা চেঁচিয়ে বলা ।
-“বাবা, আরেকটু ঘোরাও, আরেকটু ... আরে বেশি হয়ে গেল, ঐদিকে নয়, ঐদিকে ঐদিকে ...। ”
তারপর মুড়ি নিয়ে বসে নাটক দেখা । আমার খুব মজা লাগত । আমাদের এখানকার চ্যানেলে তো শুধু সবসময় বইয়ের মত ভাষা বলে, অথচ বাংলাদেশের নাটকে কী সুন্দর আমাদের মত কথা । তা, ঐ নাটক, বিজ্ঞাপন এসব মিলিয়ে যে দেশটাকে দেখতাম তা তো ঠিক আমাদের দেশেরই মত । আমি বুঝলাম দেশ আলাদা হলেই সবকিছু অন্য কোনরকম হয় না ।
তখনও আমি দ্বিতীয়বার দেশ ভাগ হওয়ার গল্পটা জানিনা । আমার ইতিহাস বই তখনও অনেক পাতলা । বহুদিন ধরে অশোক-মৌর্য-মোঘল পেরিয়ে সবে স্বাধীনতা পর্বে ঢুকেছে । বই এর শেষদিকে যে বঙ্গভঙ্গের কথা পড়লাম, সেটা তো শেষ পর্যন্ত হয় নি । লর্ড কার্জন হেরে গেছে । বাংলার মাটি, বাংলার জলের পূণ্য হয়েছে । তবে এখন আবার আলাদা দেশ কিভাবে হল !
-“বাবা, বাংলা ভাগ তো আটকে গেছিল তাই না ?”
-“হ্যাঁ বাবা ।”
-“তবে বাংলাদেশ আলাদা দেশ কিভাবে ?”
-“ওটা পরে হয়েছে আবার । বড় হয়ে জানবে ।”
-“আচ্ছা সব জায়গায় লিখি আমার দেশ ভারতবর্ষ, তবে আমাদের দেশের বাড়ি বাংলাদেশে কেন ?”
-“আগে তো বাংলাদেশটাও আমাদের সাথে একসাথেই ছিল, তখন আমাদের বাড়ি ওখানে ছিল । তারপর দেশভাগ হল । আমরা এখানে চলে এলাম । এবারে বুঝলে ?”
আস্তে আস্তে আমি বড় হই । আমার মনের ভেতর জমে থাকা কুয়াশাগুলো আস্তে আস্তে কাটতে থাকে । বড় স্কুলে ভর্তি হয়ে নতুন কিছু বন্ধু হয় । তাদের সবাইকে জিজ্ঞেস করি, কার দেশের বাড়ি কোথায় । বেশিরভাগই বলে সিলেট, ময়মনসিংহ, ঢাকা, চট্টগ্রাম, নোয়াখালি । দু-একজন বলে বীরভূম, নদীয়া ইত্যাদি । এরই মধ্যে আমার ধন্ধ আরও বাড়িয়ে দিল একটি ছেলে । সে বলে এটাই আমার দেশ । আমরাই এখানকার আসল বাসিন্দা ।
বাড়ি ফিরে আবার বাবাকে বিরক্ত করি ।
-“বাবা, আমাদের এই কোচবিহার তো একটা জেলা তাই না? এটাও তো ভারতবর্ষ, তাই না?”
-“হ্যাঁ, কেন? পরীক্ষায় ভুল লিখেছিস?”
-“না, না । আসলে বিরাজ বলছিল ওরাই নাকি এখানকার আসল বাসিন্দা । কোচবিহার নাকি একটা আলাদা রাজ্য ছিল । সেটা নাকি ভারতের বাইরের ! ওদের দেশের বাড়ি নাকি এটাই !”
-“হ্যাঁ বাবা, কেন তোমাকে কোচবিহারের রাজবাড়ি দেখিয়ে এনেছি না ? ওখানেই থাকতেন কোচবিহারের মহারাজা । পরে ইংরেজরা চলে গেলে কোচবিহার ভারতের অংশ হয়। বুঝেছ ? এ নিয়ে অনেক বই আছে। বড় হয়ে পড়বে ।”
-“আচ্ছা ।”
আমি মাথা নেড়ে চলে আসি । কতদিন লাগবে আমার বড় হতে বুঝতে পারিনা । যত বড় হই মনে হয় ছোট থাকাই ভাল ছিল । কিন্তু বড় তো হতেই হবে । আর আমাকে এই দেশের বাড়ির রহস্যটা উদ্ঘাটন করতেই হবে ।
এরপর একদিন দিদিমার মত বয়স্ক দেখতে একজন দূর সম্পর্কের জেঠিমার কাছে শুনলাম একটা ভয়ানক যুদ্ধের জীবন্ত গল্প । বন্দুক, কামান, ফাইটার প্লেন, রক্ত, হাত-পা কাটা লাশ এর গল্প । বুঝলাম ছোটবেলায় বাবার মুখে শোনা সেই ‘চলে আসা’ ব্যাপারটা ঠিক কেমন ছিল । কিভাবে করিম চাচা প্রাণের ভয় না করে সবাইকে লুকিয়ে রেখেছিল চকির নীচে । কিভাবে সঈদুল চাচা বীরের মত নৌকা চালিয়েছিল রাতের অন্ধকারে । কিভাবে অসিত মামার বুকে ঢুকে গেছিল ঘাতকের গুলি । কিভাবে কত কত মানুষ প্রাণ দিয়েছিল স্বাধীনতার জন্যে । শুনলাম পশ্চিমবঙ্গের মানুষের পাশে দাঁড়ানোর কথা । শুনলাম শরণার্থী শিবিড় থেকে পা এর নীচে জমি খুঁজে নেওয়ার কথা । আরেকটু বড় হলাম আমি ।
এরপর কলেজজীবনে দক্ষিণবঙ্গে পড়তে গিয়ে দেখলাম আরেকটা ভাগ । জানলাম বাঙালী হবার আগে আমার আরেকটা পরিচয় আছে । আমি বাঙাল । ভেবেছিলাম ওখানেই শেষ । আর কোন ভাগ নেই । কিন্তু না, তারপর আরও একটা ভাগ দেখলাম । চির অবহেলিত উত্তরবঙ্গ আর উন্নত দক্ষিণবঙ্গ ।
আমি ভারতবর্ষ নিয়ে গর্ব করতাম । কিন্তু যখন দেখলাম, আমার দেশ, তার প্রতিবেশী দেশের সাধারণ মানুষকে যারা খুন করছে তাদের শাস্তি দিচ্ছে না, মন ভেঙে গেল । যে বাংলা ভাষা কে আমি এত ভালবাসি, সেই ভাষার ওপর ভর করে একটা গোটা দেশ উঠে দাঁড়িয়েছে পৃথিবীর মানিচিত্রে, গর্ব হল বাঙালী হিসেবে । আবার যখন শুনলাম অনেক মানুষের ভিটে-মাটি ছেড়ে এদেশে এসে ভিখিড়ির মত বেঁচে থাকার করুণ কাহিনী, তখন মন ভেঙে গেল । আমি কলকাতা নিয়ে গর্ব করতাম, কিন্তু যখন দেখলাম সেখানকার মলের পাশাপাশি আমাদের উত্তরবঙ্গের রুগ্ন চা-বাগানের ছবি, মন ভেঙে গেল । আমি কোচবিহারের উদার প্রজাহিতৈষী রাজাদের নিয়ে গর্ব করতাম, কিন্তু যখন দেখলাম ওখানে জন্মেও আমি ওখানকার নই, মন ভেঙে গেল ।
কতবার ভেঙেছে আমাদের ম্যাপ আর কতবার ভেঙেছে কত মানুষের মন সে হিসেব করে রাজনীতির কোন লাভ নেই, শুধুই লোকসান । তাই সে হিসেব কোনদিন হবে না । কার দোষ, কে খারাপ, কে ভালো তা নিয়ে তর্ক চলবে অনেক । আড্ডা ভরে যাবে তার্কিকে । কিন্তু কেউ কি বলবে আমার বাবার মত করে ?
-“মন খারাপ করিস না । আয়, আমার কাছে আয় । কিচ্ছু ভাঙেনি, সব জায়গাতেই তোর মতই বেশিরভাগ মানুষ একা । তোর মতই তারাও কষ্টে আছে । দেখবি কাছে গেলে সবাই তোকে ভালবাসবে । গোটা পৃথিবীটাই তোর ।”
-“কিন্তু বাবা, পৃথিবীটা তো আমি চালাই না, ভারত, বাংলাদেশ, উত্তরবঙ্গ, কোচবিহার কোনটাই আমি চালাই না। যারা চালায়, তারা মিলে মিশে থাকে না কেন ?”
আমার বাবা সেদিন আর এর উত্তর দিতে পারেনি । আমার সেই ছোটবেলার হিরোকে সেদিন প্রথম একটু বয়স্ক লাগল । আর মনে হল এবার আমি বড় হয়েছি । বাবার চলা যেখানে শেষ, এবার আমাকে সেখান থেকে শুরু করতে হবে ।
আমার মত একা একা থাকা সব মানুষগুলোকে একসাথে করে একটা নতুন দেশ জন্ম নিতে পারে না ? যে দেশের নাম মানবতা । যে দেশের দেশবাসী হল মানুষ । যে দেশে একটাই ধর্ম, মনুষ্যত্ব । না, না, পৃথিবীর ম্যাপে আমাদের মাটির দরকার নেই । পৃথিবী জোড়া যে কোটি কোটি মানুষ বাঁচার মত করে বাঁচতে পারছেনা তাঁদের মনের মাটিতেই উঠে দাঁড়াবে এই দেশ ।
আমি জানি, সেদিন আর বাবাকে আমাকে মিলে এণ্টেনার শক্ত বাঁশ ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে, দিকশূণ্য আকাশের দিকে চেয়ে খুঁজে নিতে হবে না দেশের বাড়ির ঠিকানা ।
প্রদীপ্তময় সাহা
pradiptamay1@gmail.com
মন্তব্য
ধন্যবাদ ।
লেখাটা হয়তো প্র্যাকটিক্যাল না, ইমোশনাল।
যাহোক, ভাল্লাগলো
-------------------------------------------------
ক্লাশভর্তি উজ্জ্বল সন্তান, ওরা জুড়ে দেবে ফুলস্কেফ সমস্ত কাগজ !
আমি বাজে ছেলে, আমি লাষ্ট বেঞ্চি, আমি পারবো না !
আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি, আমি সত্যি মূর্খ, আকাঠ !
ধন্যবাদ আশফাক ভাই ।
আপনি ঠিকই বলেছেন লেখাটা সত্যিই প্র্যাকটিকাল নয় । ইমোশনাল ।
আমি আমার আবেগটাকেই প্রকাশ করেছি ।
আর যদি কিছু প্র্যাকটিকাল থেকে থাকে সেটা ঐ আবেগটাই ।
আপনার মতামতের জন্যে আবারও ধন্যবাদ জানাই ।
ভালো থাকবেন ।
অনেক অনেক ভাল লাগল ... লিখতে থাকুন । আবেগময় লেখারও দরকার আছে
বুকে বল পেলাম ।
ধন্যবাদ ।
ভালো থাকবেন ।
@লেখক- আমার একটা প্রশ্ন... পশ্চিমবঙ্গের প্রায় সবাই ভারতবর্ষ বলে, ভারত কেন বলে না?? কারণ ভারতবর্ষতো ১৯৪৭ এর আগের ভারতকে বুঝানো হত।
আমার অজ্ঞানতাকে ক্ষমা করবেন সাই দ , এ ব্যাপারে কোন নির্ভরযোগ্য সূত্র থাকলে জানাবেন দয়া করে।
এর পর থেকে শুধরে নেব । আসলে আমরা ভারত আর ভারতবর্ষ দুটোই বলি । তবে আপনি বলার পর খেয়াল করে দেখলাম আমরা লেখার সময় কিন্তু ভারতবর্ষ লিখি । যদি আপনি বা অন্য কোন অতিথি বা সহ সচল এব্যাপারে একটু আলোকপাত করেন ভাল হয় ।
মন্তব্যের জন্যে আর লেখাটি পড়ার জন্যে ধন্যবাদ ।
ভালো থাকবেন ।
এই আবেগ অনেক অনেক বাঙালির একান্তই গোপনে লুকিয়ে রাখা আবেগ। নিজেকে খুঁজে পেলাম এই লেখায়। ভীষণ ভাললাগল। অপেক্ষায় থাকবো এমন সুন্দর লেখা পড়বার জন্যে।
ধন্যবাদ কুণাল ।
সম্মানিত বোধ করছি ।
আমার মতো আপনিও যে এই আবেগের অংশীদার সেটা জেনে ভালো লাগল ।
মন্তব্যের জন্যে এবং লেখাটি পড়ার জন্যে ধন্যবাদ ।
ভালো থাকবেন ।
আমি 'আমার বাংলাদেশ' নিয়ে যে কারনে গর্ববোধ করি কারন পূর্ববাংলার বাঙালরাই একমাত্র এই উপমহাদেশে ধর্মের মুখে লাথি মেরে নিজের ভাষা,সংস্কৃতি আর জাতিকে প্রাধান্য দিয়ে একটি দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। আমরা বাংলাদেশী এবং তারপর আমরা বাঙালী। আমরা এখনও এমন একটি দেশের জন্য কাজ করছি যে দেশে ধর্ম মানুষের ব্যক্তিগত স্বাতন্ত্র ব্যতীত কিছুই নয়। অনেকটুকু পথ পেরিয়েছি... সামনে অনেক কঠিন পথ জানি। তবে রক্তের ঋন শোধ হবেই, শুধু একথা বিশ্বাস করি।
আপনার সত্যিকারের দেশের বাড়ির প্রতি আপনার ভালোবাসা ও মমত্ববোধ এর কথা জানতে পেরে অসম্ভব ভালো লাগছে আবার আপনার মানসিক অস্থিরতার কথা বুঝতে পেরে কষ্ট লাগছে। কিন্তু বাস্তবতা সত্যিই কঠিনরে ভাই। তবে সীমান্তের কাঁটাতার কোন বাধা নয় যদি আমরা মানসিক বাধা সবার আগে দূর করতে পারি।
আপনার লেখনীর হাত চমৎকার। আরো অনেক ভালো ভালো লেখার প্রত্যাশায় রইলাম
শুভকামনা রইল।
আপনি একদম ঠিকই বলেছেন । আমার জানা নেই গোটা পৃথিবীর ইতিহাসে আর কোথাও ভাষার ওপর ভিত্তি করে একটা দেশ সৃষ্টি হয়েছে কিনা । আর রক্তের ঋন শোধ সত্যিই হবে এই বিশ্বাস রাখি । আর সেটা হলেই শহীদ পাবে তার মর্যাদা আর সেই সকল ম্লান মুখগুলো যাঁদের জীবনের একটা বড় অংশ হারিয়ে গেছে মুক্তিযুদ্ধে অংশ না নিয়েও সেই যুদ্ধেরই অভিঘাতে, তাদের মুখে হাসি ফুটবে ।
সবজায়গাতেই ভালো-খারাপ মানুষ মিলেমিশে থাকে । আমাদের এখানেও তাই । এখানে অনেক মানুষ আছে জানেন , যাঁরা আজও দেখা হলে নিজেদের পরিচয় দেয় রাজশাহী-খুলনা-চট্টগ্রামের মানুষ বলে । আমার মতো অনেক মানুষই এভাবে ভাবেন । আবার অনেকে ভাবেন না এটাও ঠিক । এই বাস্তবতা মানতে হবেই তবু একে সাথে করেই দূর করতে হবে মানসিক দূরত্ব ।
আপনার প্রশংসা আমাকে আত্মবিশ্বাস দিল ।
আর আপনার প্রত্যাশা আমার দায়িত্ব বাড়িয়ে দিল ।
লেখাটি পড়ার জন্যে এবং সুচিন্তিত মন্তব্যের জন্যে অসংখ্য ধন্যবাদ ।
ভালো থাকবেন ।
ভাল লাগল পড়ে।
লেখাটি পড়ার জন্যে আর আপনার অভিমত জানানোর জন্যে ধন্যবাদ ।
ভালো থাকবেন ।
আপনার লেখা মন ছুঁয়ে গেছে! অসাধারন আবেগমাখা কাব্যময় ভাষা আপনার! আর লেখাও দারুন সাবলীল! তাছাড়া মাঝে মাঝেই রয়েছে চিন্তার ব্রেক কষে ধরা কথার সম্ভার!
আমিও ছোটবেলায় আমার বাবাকে ঠিক এভাবেই এন্টিনা ঘোরানার সিগনাল দিতাম ঘর থেকে; তবে আমার টার্গেট ছিল দূরদর্শন।
গভীর অর্থবোধক কথা! তবে জানেন কি এই ভাবনায় দ্বিমত পোষন করার মত লোকের কিন্তু অভাব নেই। বিশেষ করে এক শ্রেণীর মানুষের কাছে এর কোন মূল্যই নেই!
আমাদের উত্তরবঙ্গও (রংপুর বিভাগ) সমান অবহেলিত এবং বোধ করি সবচেয়ে দরিদ্র! তবে বাঙ্গাল-ঘটি, উত্তর-দক্ষিন, স্বদেশ-বিদেশ এসব ভেদনীতি এক সময় আস্তে আস্তে দূর হবে বলে আশা করা যায়!
মনে পড়ে গেল অন্নদা শংকরের সেই বিখ্যাত ছড়া, 'তেলের শিশি ভাংলো বলে খুকির উপর রাগ কর, তোমরা যে সব বুড়ো খোকা দেশটা মিলে ভাগ কর' ।
আপনার লেখার শ্রেষ্ঠ লাইন।
একদম আমার মনের কথা। সবাই যদি এভাবে ভাবতে পারত, তাহলে এখনো এই প্রৌঢ় পৃথিবীকে এত রক্ত দেখতে হত না!
আপনার এই দীর্ঘ মন্তব্যের জন্যে খুবই সম্মানিত বোধ করছি ।
অসংখ্য ধন্যবাদ লেখাটি পড়ার ও মন্তব্য করার জন্যে ।
আপনি ঠিকই বলেছেন, সবাই যদি এভাবে ভাবতে পারত ......... ।
কিন্তু এটা যেমন ঠিক অনেকে এভাবে ভাবে না তেমনি এটাও ঠিক অনেকেই ভাবে । নাহলে কে জানে, হয়তো পৃথিবীটা আরও রক্তমাখা হয়ে যেত । তাই আশা রাখি এভাবে ভাবার মানুষ একদিন সংখ্যায় এত বেড়ে যাবে যে হিংসা মুখ লুকোবার জায়গা পাবে না ।
আপনি মন্তব্যের মধ্যে দিয়ে যেভাবে আপনাদের ওখানকার কথা তুলে ধরেছেন সেটাও খুব ভালো লাগল ।
আপনার ভালোলাগা গুলোকে কোট করে দেওয়ার জন্যে আলাদা করে ধন্যবাদ জানাই ।
ভালো থাকবেন ।
ভালো লাগলো আপনার অনুভূতি গুলো। নিয়মিত লিখুন।
ডাকঘর | ছবিঘর
অসংখ্য ধন্যবাদ লেখাটি পড়ার জন্যে আর আপনার মতামত জানানোর জন্যে ।
চেষ্টা করব নিয়মিত লিখতে ।
ভালো থাকবেন ।
অনেক ভাল লাগল ... ধন্যবাদ
আপনাকেও ধন্যবাদ লেখাটি পড়ার জন্যে আর মন্তব্যের জন্যে ।
ভালো থাকবেন ।
আমি বাঙাল, রাজনীতিতে আবেগের মিশ্রন ভাল লাগে না। তবু আপ্নার মত করে চিন্তা করিনি বল্লে মিথ্যা বলা হবে। লিখুন।
শাফি।
আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ ।
রাজনীতিতে আবেগ ব্যাপারটা নিয়ে আমিও একটু ধন্ধে আছি ভাইয়া । একবার মনে হয় ভালো না কিন্তু আবার ভাবি, রাজনীতি তো মানুষেরই জন্যে, মানুষের কথা তুলে ধরার জন্যে (যদিও নেতারা হয়তো এসব শুনলে খ্যাঁক খ্যাঁক করে হসবেন), তাই একটা আবেগই বোধহয় দরকার মানুষকে ভালোবেসে একটা আদর্শকে আঁকড়ে ধরার জন্যে । তবে যদি ভাবি কূটনীতির কথা তবে সেখানে আবেগের কোন জায়গা নেই । আপনি যদি আরেকটু বুঝিয়ে বলেন আমিও একটু পরিষ্কার হই ।
আবারও ধন্যবাদ জানাই, ভালো থাকবেন ।
রাজনীতি অবশ্যই আমাদের জন্যে। কিন্তু এর ভিতরকার সুক্ষ কৌশল ও সামান্য দূরদর্শিতার অনুপস্থিতিতে অনেক সময় অনেক অপ্রত্যাশিত বিপর্যয় ঘটে যায়, যার নেপথ্যে থাকে আবেগ ও দুর্বল কূটনীতি। আবেগ খারাপ নয়, তাকে ব্যবহার করতে জানতে হবে; লক্ষ রাখতে হবে যেন আমরা আবেগের দ্বারা ব্যবহৃত না হই। তবে সেটা আরও জটিল প্রক্রিয়া। পরে এ নিয়ে হয়ত দীর্ঘ আলোচনা করা যাবে। লিখতে থাকুন। পাশে আছি। বাঙাল যেহেতু, আমাকে আবেগ কাটিয়ে ওঠার মত সঠিক উপাদান দিয়ে দেয়া হয়নি, সুতরাং আপ্নার লেখার মরমার্থ বুঝে যদি আপ্নার সমান কষ্ট না পাই তাহলে আমি রোবট। কিন্তু বাস্তবতা অন্য জিনিস।
শাফি।
একদম হক কথা কইছেন ভাই ।
লেখাটা পড়ে খুব ভাল লাগল । আবেগ দিয়ে হয়ত পৃথিবী চলে না, কিন্তু আবেগের কোনই প্র্য়োজন নেই তাই বা বলি কি করে। আবেগ বাদ দিলেও যে বিষয়টি চোখে পড়ল তা হল আপনার লিখনি শক্তি, সত্যি দারুণ । ভাল থাকবেন আর আমাদের জন্য বেশী বেশী করে লিখবেন ।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ সাবেকা ।
আপনার মন্তব্য আমাকে প্রেরণা যোগাবে, চেষ্টা করব বেশি বেশি লেখার ।
আপনিও খুব ভালো থাকুন ।
আমার দেশের মত এমন দেশ কি কোথাও আছে ? - গানটা মনে পড়ে গেল
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
"হাজার তারার মানিক জ্বলে হেথায় মাটির ঘরে,
সবার মুখের মিষ্টি কথায় সবার হৃদয় ভরে "
সত্যি ফাহিম ভাই, এমন দেশটি কি আর কোথাও খুঁজে পাব না ? তেতো কথায় ভরে যাচ্ছে চারপাশ, মিষ্টি কথা কি আর ফিরে পাব না ? পাব । এ বিশ্বাস আমি রাখি । আমাদের মিষ্টি ভাষা বাংলা যতদিন আছে পৃথিবীর বুকে মিষ্টি কথাও টিকে থাকবে পৃথিবীর বুকে । হয়তো সবাই একদিন ভালো থাকবে, কেউ কারও দিকে আড় চোখে তাকাবে না আর এই পৃথিবীর যেখানেই থাকি না কেন আমরা, খুঁজে পাব আমাদের সেই দেশ ।
লেখাটি পড়ার জন্যে আর মন্তব্যের মধ্যে দিয়ে এত সুন্দর একটা গানকে মনে করে দেবার জন্যে আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ।
ভালো থাকবেন ।
যে মাটির জন্যে এমন হন্যে
এমন আকুল হলাম
সে মাটিতে আমার অধিকার...
- সুমন চট্টোপাধ্যায়
লেখাটার মানবিক আবেদন মন ছুঁয়ে গেল।
অন্যদের সাথে শেয়ার করতে চাই।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ নিলয়দা ।
কবীর সুমনের এই গানটাও আমার খুবই প্রিয় ।
ভালো থাকবেন ।
একটা দমবন্ধ করা ভাব বুকের ঠিক ওপরটায়, গলার কাছে বাষ্পের মতো আটকে থাকলো। আমি কিছুতেই বুঝে উঠতে পারিনা মানুষ কী করে নিজের অস্তিত্বকে ধর্মের খড়গে ভেঙ্গে দু'টুকরো করলো!!
আমিও বুঝতে পারিনা তৌফিক ভাই ।
হয়তো বোঝার মত মাথায় ঘিলু নেই ।
লেখাটা পড়ার ও মন্তব্য করার জন্যে ধন্যবাদ ।
ভালো থাকবেন ।
লেখাটি ভালো লাগলো। মন ছুঁয়ে গেলো। নিয়মিত লিখে চলুন।
এত দিন আগের লেখাটা খুঁজেপেতে কষ্ট করে পড়া এবং মন্তব্য করার জন্যে
অসংখ্য, অসংখ্য ধন্যবাদ ।
খুব ভাল থাকুন ।
শুভেচ্ছা ।
নতুন মন্তব্য করুন