সকালে অফিসে এসে আশফিক অনিকের আই ইউ টি'র উপর একটা লেখা পরলাম এখানে দেখুন। লেখাটা অসম্পূর্ণ, ভুল তথ্য সম্বলিত এবং অনুমান নির্ভর। এই লেখার সূত্র ধরে যারা আই ইউ টি সম্পর্কে জানে না তাদের নেতিবাচক ধারণা হবার সুযোগ আছে। তাই মনে হলো এর উত্তর দেয়া জরুরী।
লেখকের লেখার মূল সূত্র হচ্ছে "শুনেছি" সূত্র। কিন্তু উনি লেখার আগে একবারো ভাবলেন না যে যাচাই করে দেখি। উত্তর দেয়ার আগে বলে নেয়া ভালো আমি আই ইউ টিতে পড়াশুনা করেছি এবং এর পর দুই বছর সেখানে শিক্ষকতা করেছি। আমার জানার মধ্যে সীমাবদ্ধতা থাকতে পারে; তার পরও চেষ্টা করবো প্রতিটি কথার উত্তর দিয়ে একটা পরিষ্কার ধারণা দেবার।
প্রথমে একটা কথা বলে নেই, আই ইউ টি কোনো প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় নয়। এটা বাংলাদেশ সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকা কোনো পাব্লিক বিশ্ববিদ্যালয়ও নয়। আই ইউ টি বাংলাদেশে ওআইসি পরিচালিত (এখানে দেখুন) এবং বাংলাদেশ সরকার স্বীকৃত আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয় (UGC লিঙ্ক দেখুন)। ১৯৭৮ সালে ওআইসি যখন তার সদস্য রাষ্ট্রের মানব সম্পদ উন্নয়নের (কারিগরি) জন্য একটি টেকনিক্যাল সেন্টার করবার চিন্তা করে, তখন বাংলাদেশ সরকারের অনুরোধে তা আমদের দেশে করতে ওআইসি সম্মতি প্রকাশ করে। যে সেন্টার সদস্য রাষ্ট্রদের চাঁদার অর্থে পরিচালিত হবে এবং মানব সম্পদের উন্নয়নে কাজ করবে। একই সাথে যেহেতু অধিকাংশ সদস্য রাষ্ট্রের জনগন দরিদ্র, তাই এদের পড়াশুনা এবং অন্যান্য খরচ চাঁদার অর্থ থেকে নির্বাহ করা হবে।
কিন্তু শুরুতেই যে সমস্যা দেখা দেয় তা হচ্ছে তৎকালীন ICTVTR (Islamic Centre for Technical and Vocational Training and Research, বর্তমান IUT) মূলত তিন বছর মেয়াদী Higher Diploma Degree প্রদান করত; যার টিউশন, থাকা, খাওয়া, চিকিৎসা সব খরচ প্রতিষ্ঠান বহন করত। তাতে আমাদের দেশের পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের শিক্ষক/শিক্ষার্থীরা আপত্তি জানায় কারণ আই ইউ টির ডিগ্রি Higher Diploma, কিন্তু তাদের ডিগ্রী হচ্ছে শুধু Diploma. সেই কারণে সরকার তাদের দাবীর মুখে বাংলাদেশী আধিবাসীদের Higher Diploma প্রোগ্রামে ভর্তি নিষিদ্ধ করে। সেই ১৯৮১ থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত এই প্রতিষ্ঠানে বাংলাদেশী শিক্ষার্থী Higher Diploma প্রোগ্রামে ভর্তি হতে পারে না।
পরবর্তীতে ১৯৯৪ সালে চার বছর মেয়াদী ব্যাচেলর প্রোগ্রাম শুরু করবার পর বাংলাদেশী শিক্ষার্থী ভর্তি শুরু হয়। চার বছরের তিন বছরের খরচ ও আই সি থেকে স্কলারশীপ হিসেবে এবং এবং এক বছরের খরচ (US$ ৫০০০) শিক্ষার্থী নিজে বহন করে। প্রতি শিক্ষার্থীর এই চার বছরের থাকা, খাওয়া, চিকিৎসা, বই, এবং লন্ড্রি খরচ প্রতিষ্ঠান বহন করে (সামান্য কিছু ব্যতিক্রম আছে)। .সাথে প্রতি মাসে হাত খরচ হিসেবে US$৪০ দেয়া হয় (চার বছরে US$ ১৯২০ ফেরত পাচ্ছেন)। . চার বছরে যেকোনো পাব্লিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে আপনার থাকা, খাওয়া, চিকিৎসা এবং অন্যান্য খরচ মিলিয়ে নিশ্চয়ই ২-৩ লক্ষ টাকার নিচে খরচ হয় না। আশা করি এতে খরচের ব্যপারে ভুল ধারণার অবসান হবে।
আই ইউ টি তে কেনো মেয়ে শিক্ষার্থী নেয়া হয় না? উত্তর হচ্ছে মূলত স্থান এবং অর্থ সংকট। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নারী শিক্ষার্থী ভর্তি করতে কোনো সমস্যা নাই। হল বানায় দেন, পরের বছরই ভর্তি শুরু করা যাবে। আই ইউ টি শতভাগ আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়। প্রতিটি শিক্ষার্থীর জন্য এখানে হলে সিট বরাদ্দ ভর্তির সাথে সাথে দেয়া হয় এবং সকল শিক্ষার্থী হলে থাকে।আই ইউ টি কে বাংলাদেশ সরকারের দেয়া জায়গায় মাস্টার প্ল্যান আনুযায়ী আর কোনো স্থাপনা নির্মাণ সম্ভব না। নতুন যায়গার জন্য সরকারের সাথে আলোচনা চলছিলো এবং হল তৈরির জন্য অর্থের উৎস খোঁজা হচ্ছিলো (২০০৭ এর কথা, এখনকার অগ্রগতি জানি না)। . আবাসনের ব্যবস্থা না করে মেয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি সম্ভব না। আপনাদের অবগতির জন্য বলি আই ইউ টিতে প্রায় ২৩ টি দেশের শিক্ষার্থী পড়াশুনা করে (২০০৭)। . তাদের সংস্কৃতি ভিন্ন এবং এমন কোনো সুযোগ দেয়া যাবে না যাতে ছেলে মেয়ের অবাধ মেলামেশা অন্য সমস্যা সৃষ্টি করে। আমাদের বাংলাদেশীদের অবাধ মেলামেশা আর সেনেগাল ইজিপ্ট লেবানন ক্যামেরুণের ছেলেমেয়েদের আবাধ মেলামেশা এক প্রকৃতির নয়। আশা করি পৃথক আবাসনের প্রয়োজনীয়তা এখানে বুঝতে পারবেন।
নারী শিক্ষক নিয়োগের ব্যপারে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। Department of Instructor Training and General Studies (ITS) এ আমার থাকাকালীন সময়ে একজন নারী শিক্ষন পার্ট টাইম ক্লাস নিতেন। যে কেউ চাকরির আবেদন করতে পারে। তবে আমরা নতুন শিক্ষক নিয়োগে আমাদের গ্রাজুয়েটদের আগ্রাধিকার দেই যেটা খুবি স্বাভাবিক ।
নামাজ, রোজা ইত্যাদি ব্যপারেও এখানে কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। এটা সম্পূর্ণ নিজের ব্যপার এবং কেউ আপনাকে জোর জবরদস্তি করবে না। একই সাথে আপনি যেকোনো সময় হল থেকে বাইরে আসা যাওয়া করতে পারবেন। কেউ জেল খানায় আটকে রাখবে না। অন্য ধর্মাব্লম্বীদের ভর্তির সুযোগ দেয়া বাংলাদেশ/অন্য কোনো দেশের রাষ্ট্রীয় উদ্যোগের ব্যপার। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের করার সুযোগ অনেক সীমিত।
আইইউটি থেকে এক পাকিস্থানী জঙ্গী আটকের কথা বলে জল ঘোলা করতে চেয়েছেন। জেএমবির আইটি হেড বুয়েটের প্রকৌশলী ছিলো! তাতে এটা প্রমাণ হয় না যে বুয়েট জঙ্গী বানাচ্ছে। যে ছেলে র্যাবের হাতে আটক হয়েছে তার ব্যপারে শিক্ষার্থীরা আগে জানলে নিশ্চিত নিজেরাই আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে তুলে দিতো। আর শিবিরের আনাগোনা !! ওইসব কল্পণার বিষয়। ছাগু বাহিনী শুধু না, স্বাধীনতার পক্ষ শক্তিই বলেন আর ঘোষকের সৈনিকই বলেন, এইসবে আইইউটির কারো কোনো আগ্রহ নাই। আমাদের ওখানে ৪ মাসের প্রতি সেমিস্টারে ৬ সাবজেক্ট, ৬*৪=২৪ কুইজ, ৬ মিড টার্ম, ৬ টার্ম ফাইনাল; সর্বমোট ৩৬ টা পরীক্ষা দিতে হয়। এরপরে আবার ল্যানে গেম খেলা, মুভি দেখা, মিউজিক ভিডিও বানানো, কালচারাল নাইট - ছাগুগিরি করার সময় কই? যেকোনো রাজনৈতিক দলের প্রচারণা চালানো এখানে নিষিদ্ধ এবং অদূরভবিষ্যতে তার ব্যতিক্রম হবার কোনো কারণ দেখি না।
আর পরিশেষে একটা ঘটনা বলি। তখন আমার সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা। পরিক্ষা শেষে দেখি মোবাইলে কয়েকশ মিসকল। কল ব্যাক করে জানলাম আহসান উল্লাহ মাস্টার এমপি নিহত হয়েছেন এবং গাজীপুরে ১৪৪ ধারা চলছে। বাইরে মারামারি, গাড়ী ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ ইত্যাদি। এর জন্য আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হয় নি। ঝড়/ বৃষ্টি/ হরতাল/ অবরোধ/ অসহযোগ যাই হোক, আমরা গর্বের সাথে বলতে পারি আইইউটি কখনো বন্ধ হয় না। বছরের শুরুতে দেয়া প্রতিটা পরীক্ষার তারিখ কঠোরভাবে পালন করা হয়। মাত্র কয়েক বছরে আমরা যে সুনাম চাকরি এবং উচ্চ শিক্ষায় অর্জন করেছি সেটা আমার মনে হয় অন্য অনেক নতুন/পুরাতন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য অনুকরণীয়।
নাছিব আহমেদ আদনান
PhD Candidate, University of Alberta
IUT EEE, Batch 02
মন্তব্য
রাজনৈতিক প্রচারণা মুক্ত শিক্ষাঙ্গনটা আমার কাছে কখনও কাজের কথা মনে হয় না। ওটা জীবানুমুক্ত খেলার মাঠের মতো ব্যাপার। কাজের না।
সবাই ফজরের আযান দিয়ে ফেলছে সময় মতো, এক হুজুর দেরীতে ঘুম থেকে উঠে বেলা বারোটার সময় তেড়েফুঁড়ে ফজরের আযান দিয়ে ফেলল ।
লেখাতে কি নতুন কিছু পেলাম? এ কথাগুলো কিন্তু ইতোমধ্যে আগের পোস্টের কমেন্টেই বলা হয়ে গেছে।
এটা কি যেন বলে, মেটা ব্লগিং না কি সেরকম কিছু কি হয়ে গেলো?
চরম উদাস
S.S.C, H.S.C, B.Sc., M.Sc. PhD (Done)
EEE, Batch 95
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। আমার কাছে আগের লেখায় কমেন্ট করবার চেয়ে আলাদা প্রতিক্রিয়া লেখা শ্রেয় মনে হয়েছে। ব্লগিং এর কোনো অভিজ্ঞতা আসলে তেমন নাই। এটা নীতিমালার বাইরে কিছু করে থাকলে দুঃখিত।
আদনান ভাই, মন্তব্যে মাইন্ড খাইয়েন না। আমি সচলের চরম ফাতরা লোক। কাউরে পচানোর সুযোগ পাইলে ছাড়ি না
আসলে কোন ইস্যুতে প্রতিক্রিয়া দেখাতে হলে সাধারণত সেটা ওই পোস্টের মন্তব্য হিসেবেই সবাই শ্রেয় মনে করে। না হলে দেখা যাবে গরম কোন ইস্যু নিয়ে লেখা দিলে সেটার প্রতিক্রিয়া,পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া, প্রতিক্রিয়ার প্রতিক্রিয়া এরকম নানা লেখা আসতে থাকবে। পাঠক খেই হারিয়ে ফেলবে।
যাই হোক, সচলে স্বাগতম। লেখার কন্টেন্ট নতুন কিছু না হলেও আপনার লেখা গোছানো মনে হয়েছে। আরও লিখুন।
উৎসাহের জন্য ধন্যবাদ। আপনি যা বলেছেন আমি আসলে সেভাবে আগে চিন্তা করে দেখিনি। আশা করি ভবিষ্যতে লেখার মাধ্যমে আপনাদের সাথে আরো যোগাযোগ হবে। তবে আপনার S.S.C, H.S.C, B.Sc., M.Sc. PhD (Done) কমেন্টটা চরম হইসে লেখা সাবমিট করার পর বুঝছি যে একটা বোকামি করছি; চেঞ্জ করার প্রিভিলেজ না থাকায় করতে পারি নাই
..................................................................
#Banshibir.
আমি ও এই কমেন্টখান দিতে চাইছিলাম..আপনি আগে দিয়া ফালাইলেন ক্যান?
-স্বপ্নাদিষ্ট
=======================
যে জাতি নিজের ভাগ্য নিজে পরিবর্তন করে না, আল্লাহ তার ভাগ্য পরিবর্তন করেন না।
S.S.C, H.S.C, B.Sc., M.Sc. PhD (Done) -
পোংটামির কোন স্কেল থাকলে আপনাকে ইউনিট হিসেবে গণনা করা হোক। ১ উদাস, ২ উদাস...
লেখাটাতে পুনরাবৃত্তি থাকলেও প্রতিক্রিয়া হিসেবে আগের পোস্টের ও প্রতি মন্তব্যের চেয়ে গোছানো ও পরিষ্কার। মেটা ব্লগিং সম্পর্কে আমার বেশি ধারণা নাই, ওটা মডারেটাররা ভাল বলতে পারবেন।
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
ইন্সট্যান্ট এগুলা মাথায় আসে ক্যাম্নে এই লোকের !
হইলো না। একক হবে উদাস, কিন্তু এই এককটা অনেক বড় হওয়ায় পরিমাপ করা হবে মিলি-উদাস, মাইক্রো-উদাস দিয়ে। কারণ সাধারণ মানুষের পুংটামি কখনোই ইভেন এক উদাসের সমানও হবে না। সো, মিলি-উদাসই ভরসা!
আর সর্বোচ্চটা চরম উদাস।।
আপ্নে তো দেখা যায় 'প্রথম শ্রেণী' 'দ্বিতীয় শ্রেণী' এইগুলা পড়েন নাই! ছ্যা ছ্যা!
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
ভাইয়া, আপনি পারেনও? কেম্নে? কেম্নে?
-------------------------------------------------
ক্লাশভর্তি উজ্জ্বল সন্তান, ওরা জুড়ে দেবে ফুলস্কেফ সমস্ত কাগজ !
আমি বাজে ছেলে, আমি লাষ্ট বেঞ্চি, আমি পারবো না !
আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি, আমি সত্যি মূর্খ, আকাঠ !
এই পোস্টটার দরকার ছিল না রে ভাই। আগের পোস্ট'টাতেই মন্তব্য করা যেত। আলোচনাও সেখানে হত। সবাই বুঝতে পারত কে কী বলতে চান!
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
আইইউটির নামটি শুনেছিলাম। কিছু জানতাম না। শিক্ষার মান যেমন বললেন তেমন হলে খুবই আশার কথা। এমন একটি প্রতিষ্ঠানকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখতে পারলেই আমাদের মঙ্গল।
___________________
সহজ কথা যায়না বলা সহজে
ধন্যবাদ। কখনো সুযোগ পেলে আমাদের ক্যাম্পাস ঘুরে আসবেন। আমি নিশ্চিত আপনি আশাহত হবেন না।
ছাগুবাহিনীতে কোনো আগ্রহ নাই শুইনা ভালো লাগলো. কিন্তু দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব এইসবে আগ্রহ নাই, এইটা কেমন কথা. এরা পাশ করে তো তাইলে দেশের কোনো উপকারে আসবে না.
সহমত
দ্যাট এক্সপ্লেইনস দ্য শিট।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
Mr.নীলরতন
"স্বাধীনতার পক্ষ শক্তি" আর "ঘোষকের সৈনিক" বলতে এখানে ছাত্রলীগ আর ছাত্রদলকে বোঝানো হয়েছে।
এবার কি কিছু মাথায় ঢুকছে?
দেশ নিয়া কোন মাথাব্যাথাই নাই?? বাহ বাহ বেশ বেশ।
আমি মনে হয় আপনাকে ঠিক বোঝাতে সক্ষম হইনি। এখানে স্বাধীনতার পক্ষ শক্তি / ঘোষকের সৈনিক বলতে দলের সাথে সম্পৃক্ততার কথা বলেছি। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে যেমন অনেকে দলের কত বড় কর্মী তা প্রমাণে ব্যস্ত থাকে, এখানে সে সুযোগ নেই।
সচলায়তনে স্বাগতম আদনান। আশা করছি নিয়মিত লিখবে।
আগের লেখাটিও (আশফাক অনিক) পড়েছি, এটাও পড়লাম। আগের লেখাটি আমার কাছেও অনুমান নির্ভর মনে হয়েছে। ইউনিভার্সিটি অফ আলবার্টাতে পড়বার সুবাদে আই ইউ টির বেশ অনেকজনের সাথে মেশবার সুযোগ হয়েছে। তাই আমার কাছেও মনে হয়েছে আই ইউ টি বাংলাদেশে প্রকৌশল শিক্ষাক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য একটি প্রতিষ্ঠান।
আমার ব্যাক্তিগত অভিমতঃ লেখক সচলের পাঠক অনেক দিন ধরেই কিন্তু লেখক হিসেবে নতুন। তাই 'মেটা ব্লগিং' এই কনসেপ্টটা তার জানা থাকা স্বাভাবিক নাও হতে পারে যদিও সচলায়তনের নীতিমালাতে সুস্পষ্ট ভাবে সেটা উল্লেখ আছে। স্বাভাবিক ভাবে যেমন একটি নিবন্ধের প্রতিক্রিয়ায় আরেকটি নিবন্ধ আসে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে লেখক হয়ত সেই ভাবনা থেকেই হয়ত তার প্রতিষ্ঠানের অবস্থান পরিষ্কার করতে নতুন এই পোষ্টের অবতারনা করেছেন।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
সহমত।
জাহিদ ভাই, ধন্যবাদ উৎসাহ দেবার জন্য। মেটা ব্লগিং এর ব্যপারটা জানা ছিলো না, ভবিষ্যতে মাথায় রাখবো।
লেখা ভাল হইছে আদনান। আগের লেখাটা যেই লেখক লেখছে, সে পুরাটাই “শুনছে”। শুনা কথার দাম কতটুকু সেইটা নিশ্চয় তোমারে বইলা দেয়া লাগবে না। তাই বলছি, প্রেসার নিও না। ঐ লেখাতেই কমেন্টে তারে আই, ইউ, টি'র পোলাপান যা বলার বলছে। তার যদি আক্কেল থাকে তাইলে সে অইখান থেকে যা বুঝার বুঝবে, আর যদি সে মীরাক্কেল হয়, তাইলে তো তারে কওয়া যা, না কওয়া ও তা। সচলে মনে হয় এইটাই তোমার প্রথম লেখা। আর উপরে জাহিদ্ভাই তো যা বলার বইলাই দিল। আরো লেখ।
ধন্যবাদ
বেশ গুছিয়ে লিখেছো। সচলায়তনে যদিও মেটাব্লগিং নিষিদ্ধ তবু জবাবটার দরকার ছিল।
কিছুদিন আগে কিন্তু আইইউটিতে শিবিরের আগ্রাসন নিয়ে বেশ কিছু কথা শোনা গিয়েছিল। অবশ্য শিবির সবসময় আন্ডারগ্রাউন্ডে চোরের মত কাজ করে আগে গুছিয়ে নেয়।
আর আমার এক হিন্দু বন্ধুর খুব শখ ছিল আইইউটিতে পড়ার...
-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...
শান্তনুদা, ধন্যবাদ। শিবিরের ব্যক্তিগত সমর্থক কেউ থাকতে পারে, তবে এত বড় সাহস কোনোদিন হবে না যে প্রকাশ্যে কাউকে দলে ভেড়াতে চেষ্টা করবে। আর আমার এবং আরো অনেক IUTIAN এর রাজনৈতিক চিন্তাভাবনা কেমন তা আপনি নিশ্চয় ভালো জানেন
অন্য ধর্মাবলম্বী ভর্তির ব্যপারটা একটু জটিল। আসলে আমাদের গভার্নিং বডির সদস্য হচ্ছে বিভিন্ন সদস্য রাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত। এদেরকে কনভিন্স করা একটু কঠিন কারন এরা একাডেমিশিয়ান না তার পরে আবার ওআইসি কাউন্সিলে এপ্রুভ করার ব্যপার থাকে। ওই কাউন্সিলে আসলে মিডেল ইস্টের এত বেশী হট টপিক থাকে যে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র ভর্তির ব্যপার নিয়ে আলোচনা উত্থাপন করা খুব সহজ না।
অন্য ধর্মাবলম্বীদের সুযোগ দেয়াটা রাষ্ট্রের ব্যাপার, বিশ্ববিদ্যালয়ের করার কিছুই নাই--- উড ইউ প্লিজ ইলাবোরেট মান্যবর স্যার আদনান (পিএইচডি, ইয়েট টু ডু) ? মুসলমান মুমিন ছাড়া এইখানে অন্যদের নেয়া যাবেনা -এইরকম কোন ফরমান কি বাংলাদেশ সরকারের আছে?
১৯৭৮ সালে প্রতিষ্ঠিত একটা ভার্সিটির নারী হোস্টেল বানানোর জন্য আর কত বছর দরকার?
আমার মনে হয় আপনি উনার কথার সুরটা ধরতে পারেন নাই।
আই ইউ টি তে অন্য ধর্মাবলম্বীদের পড়াশুনার সুবিধাটি আসলে ওআইসির মেম্বার স্টেটগুলোর এই নীতির সমর্থনের উপর নির্ভরশীল। আই ইউ টিতে এই ধরনের নীতি নির্ধারক পর্যায়ে ভার্সিটির অভ্যন্তরীন লোকজন কেউই নেই (আমার জানা মতে) কারন সিদ্ধান্ত গুলো আসলে আসে ওআইসির কমিটি থেকে।
তবে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে তদ্বির করলে কাজ হতে পারে।
এখন আসি নারী হোস্টেল এর বিষয় এ। ব্যাপার টা আপনি যত সহজ মনে করছেন ততটা নয়, কারণ আই ইউ টির খরচ চালায় ও আই সি। উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সবাই তো চেষ্টা করছেন। দেখা যাক কি হয়। তাছাড়া প্রয়োজনীয় জমি নেই। ছাত্রী হোস্টেল ক্যাম্পাসের বাইরে করা যাবে কি যাবে না এ নিয়েও অভ্যন্তরীন মতবিরোধ থাকতে পারে, বর্তমান ক্যাম্পাসে ছাত্রী হোস্টেলের জন্য প্রয়োজনীয় জমি নেই।
এভাবে কি বিতর্ক করবেন? মানুষকে সম্মান করতে না চান ঠিকাছে, অসম্মানটা বোধ হয় ঠিক না (ক্ষেত্র বিশেষ ছাড়া, আর কোন ভাবেই এই বিতর্ক সেই ক্ষেত্র না।) মোসলমান মুমিন মানে?? আপ্নার মন্তব্যটা ফালতু হয়ে গেল, এক্টু যদি ইসলামের প্রতি অসম্মান না দিয়ে প্রশ্নগুলা করতেন, অনেক বেশী গ্রহন যোগ্যতা থাকতে পারত।
অন্য সবার মত আমিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্ম/লিঙ্গ ভেদে পড়ালেখার সুযোগ দেয়াতে লজ্জিত। আশা করছি, যথাযত কর্তৃপক্ষ এর আশু সমাধান করবেন। শিক্ষার অধিকার সবারই সমান।
শাফি।
ভালো লাগলো। কিন্তু অন্য কোন পাবলিক ইউনিভার্সিটিতে পড়তে কীভাবে ২-৩ লাখ টাকা লাগে, সেটা কি একটু ব্রেক ডাউন করে দেখাবেন?
ধন্যবাদ। আপনি যদি হলে থেকে কোনো পাব্লিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করেন প্রতি মাসে আপনার থাকা, খাওয়া, লন্ড্রি, সেমিস্টারে বই কেনার খরচ, চিকিৎসা সব মিলিয়া হাজার পাঁচেক টাকার খরচ হবার কথা। সে হিসেবে বছরে ষাট হাজার, ৪-৫ বছরে ২-৩ লাখ টাকা খরচ হয়েই যায়। টাকার অংক সামান্য এদিক সেদিক হতে পারে। এটা একটা ধারণার উপর বলেছি।
আপনার এই ব্রেক ডাউন দেখে খুবই হতাশ হইলাম। প্রথম কথা, থাকা, খাওয়া, লন্ড্রি, চিকিৎসার খরচ কোন অবস্থাতেই ইউনিভার্সিটিতে পড়ার খরচ হিসাবে গণ্য হইতে পারে না। আপনি যদি কোন ইউনিভার্সিটিতে (হোক আই ইউ টি বা অন্য কোন ভার্সিটি) না পইড়া বাসায় বাপের হোটেলে বইসা বইসা খান, তাইলেও এই টাকাগুলা আপনার লাগবে। আমি বুঝতেই পারলাম না, কোন যুক্তিতে আপনি খাওয়ার খরচ, প্যারাসিটামল কেনার খরচ, কাপড় ধোয়ার খরচরে পড়ার খরচের মধ্যে ধরলেন।
তাইলে ইউনিভার্সিটিতে পড়ার খরচ কোনগুলা? অন্য ভার্সিটির কথা জানি না, তবে আমি বুয়েট থেকে পাস করছি। অতএব এইটার কথা বলি। হলে থাকা কোন স্টুডেন্টের জন্য ব্রেক ডাউন দিলাম (এইগুলা আমি যখন পাস করছি, তখনকার হিসাব):
মেস খরচ: মাস প্রতি ৮০০ টাকা হিসাবে ৪০ মেস মাসে (প্রতি বছর ১০ মেস মাস ধরলাম) ৩২,০০০ টাকা
রেজিস্ট্রেশন: টার্ম প্রতি ৩,৫০০ টাকা হিসাবে ৪ টার্মে ১৪,০০০ টাকা
অ্যাডমিশন: এককালীন ৮,০০০ টাকা
এই হইলো মোট ৫৪,০০০ টাকা।
এই পরিমাণ টাকা বুয়েট তার স্টুডেন্টের কাছ থেকে নেয়। এখন আপনি যদি বই কেনা আর প্রোজেক্টের টাকা এর মধ্যে ধরতে চান, তাইলে আমার কিছু আপত্তি আছে। কারণ, এই টাকা আপনি যেকোনো ভার্সিটিতেই পড়েন না কেন, খরচ করতে হবে। পাবলিক ভার্সিটিতে পড়ার জন্য এইটা এক্সট্রা কোন খরচ না। কাজেই, ভার্সিটিতে (বুয়েটে) পড়ার খরচ আসলে উপরে যতটুকু দেখাইছি ততোটুকুই, এর বেশি না। এরপরও যদি আপনি বই কেনা আর প্রোজেক্ট বা থিসিস খরচ হিসাব করতে চান, তাইলে ৮ টার্মে বই কিনতে, চোথা ফটোকপি করতে ২,০০০ করে প্রায় ১৬,০০০ আর প্রোজেক্ট থিসিস মিলায় প্রায় ১০,০০০ টাকা। আগের ৫৪,০০০ এর সাথে এগুলা অ্যাড করে গ্র্যান্ড টোটাল হইলো ৮০,০০০।
থাকা খাওয়ার খরচ তো কোনোভাবেই ভার্সিটির পড়ার খরচের মধ্যে পড়তে পারে না। এইবার তাইলে আপনি বলতে আই ইউ টি তো থাকা, খাওয়া, লন্ড্রি, বই ফ্রি দেয়, আবার চার বছরে ১,৯২০ ডলার ফেরত দেয়। ভালো কথা, তার মানে আই ইউ টি তে এই খরচগুলা লাগে না। কিন্তু তার মানে তো এই না যে বাকি ভার্সিটিতে এই খরচগুলা লাগে। এগুলা গ্লোবাল খরচ, কাজেই পাবলিক ভার্সিটিতে পড়তে এই খরচ লাগে, এই কথায় তীব্র আপত্তি জানাইলাম।
আপনি এইটা বলতে পারেন যে, আই ইউ টি তে অন্যান্য অনেক প্রাইভেট ভার্সিটির চেয়ে কম খরচ লাগে, তাতে আমি অ্যাগ্রিও করি, কিন্তু আপনি যদি ভুয়া যুক্তি দিয়া বলার ট্রাই করেন যে, আই ইউ টি তে পাবলিক ভার্সিটির মতোই খরচ হয়, তাইলে সরি, আমার আপত্তি আছে। আশা করি ক্লিয়ার করতে পারছি।
প্রথম কথা,টিউশন ফিঃ
ভাই , এককালীন চার লাখ টাকা দেওয়ার ক্ষমতা বাংলাদেশের কয়টা শিক্ষার্থীর আছে ? এরপর কিছু অর্থ ফিরিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে এ সমস্যার সমাধান তো হবে না!
দ্বিতীয় কথা,জঙ্গিবাদ
আমার লেখায় কথাটা সম্ভবত এরকম ছিলঃআই.ইউ.টির ছাত্রকে অতীতে জঙ্গিবাদের সাথেও জড়িয়ে পড়তে দেখা গেছে। এর অর্থ কোনমতেই এটা হতে পারে না যে আই.ইউ.টি জঙ্গিবাদের প্রোডাকশন হাউস!
তৃতীয় কথাঃ নারী ভর্তি নিয়ে আপনার মতামত আমি বুঝিই নাই। হল বানাতে পারছে না বলে আই.ইউ.টি নারী শিক্ষার্থী নিতে পারছে না?আপনি হল বানানোর দায়িত্ব আমারে ক্যান দিতে চাইলেন এইটাও বুঝলাম না!:Dআর খুব খোড়া লেগেছে আপনি অবাধ মেলামেশা বলে যে যুক্তিটা খাঁড়া করাতে চেয়েছেন সেটাকে। ইউরোপ-আমেরিকায় অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের শিক্ষার্থীরা পড়তে যায়, সেখানকার পরিবেশের সাথে তারা খাপ খাইয়ে নেয়! সুতরাং আফ্রিকান একজন শিক্ষার্থী আমাদের এখানকার পরিবেশের সাথে খাপ খাওয়াতে পারবে না?
"ছাগু বাহিনী শুধু না, স্বাধীনতার পক্ষ শক্তিই বলেন আর ঘোষকের সৈনিকই বলেন, এইসবে আইইউটির কারো কোনো আগ্রহ নাই।"
এর মাধ্যমে আপনি কি বললেন আপনার বুঝে আছে? তাহলে বাংলাদেশের মানুষ, আচ্ছা যান, সারা মুসলিম বিশ্বের মানুষ আই.ইউ.টির কাছ থেকে রাজনৈতিকভাবে কি আশা করবে?ল্যানে গেম খেলা, মিউজিক ভিডিও বানানো, মুভি দেখা আর বইয়ে মুখ গুজে পড়াশোনা করা, মাঝেমধ্যে গার্লফ্রেন্ড নিয়ে ডেট করা- এই কি একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর কাজ? যদি আপনার মতে তাই হয়ে থাকে, তাহলে আমার সাথে আর কথা চালানো অর্থহীন! আমি ক্ষমাপ্রার্থী!
আপনাকে একটা প্রশ্ন করি, উচ্চ শিক্ষার জন্য যারা বিদেশ যাচ্ছে, তারা যখন প্রথম দেশ থেকে রওনা হয়, কতখানি খরচ হয় বলে আপনার ধারণা? দেশ টা যদি হয় নর্থ আমেরিকান, তাহলে আমি যদ্দুর জানি কেনাকাটা, প্লেন ফেয়ার, ক্ষেত্র বিশেষে প্রথম সেমিস্টার এর টিউশন ফি (ফান্ডিং যারা পান তাদের কথাই বলছি), সব মিলিয়ে কত খরচ হয় বলে আপনার ধারণা? এতগুলো টাকা দেয়ার ক্ষমতা আসলে কতজনের আছে আমাদের দেশে?
প্রশ্ন করলের অনেক কিছু নিয়েই করা যায়, অনেক ভাবেই করা যায়। এককালীন টাকা জোগাড় করার সামর্থ্য যাদের নেই, তাদের জন্য আমার সমবেদনা। আই ইউ টি যে এককালীন টাকা টা নিচ্ছে এটাকে যাস্টিফাই করার চেষ্টা করতে পারতাম, কিন্তু করতে ইচ্ছা করল না। আমাদের দেশের বহু উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠাণ এর চেয়ে অনেক বেশি টাকা নেয় (যদি ও তা এককালীন নয়), কিন্তু কয়জনের আছে ওই পরিমাণ টাকাটা (কিস্তিতে হলেও) দেওয়ার ক্ষমতা? কই এসব নিয়ে তো কাউকে কথা বলতে দেখলাম না কখন ও, বরং ফেসবুকে তো মাঝে মাঝে কার টিউশন ফি কত বেশী সেটাকে স্ট্যাটাসে গর্ব নিয় প্রচার করে বেড়াতে দেখি। অফটপিক নিয়ে জল ঘোলা না করে বলতে চাই, দেশে আরও প্রৌকশল বিশ্ববিদ্যালয় আছে।
এক্ষেত্রে আসলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কতৃপক্ষের এগিয়ে আসা উচিত বলে মনে করি। যাতে কিস্তিতে টাকাটা দেয়ার সুবিধাটা দেয়া যায়।
কাকে দেখেছেন ভাই? আমি তো আই ইউ টি তে থেকেও কাউকে দেখলাম না। যদ্দুর মনে পড়ে জঙ্গি সন্দেহে একজন পাকিস্তানি ছাত্রকে আটক করা হয়েছিল এবং পরে তাকে বহাল তবিয়তে ছেড়ে দেয়া হয়েছে(যদিও ছেড়ে দেয়ার বিষয়টিকে কোন পত্রিকাই ফলো আপ করে নাই, সম্ভবত তারাও আপনার গোত্রীয় ) ।
আন্দাজি কাক নিয়ে গেছে চিলে টাইপের কমেন্ট করা থেকে বিরত থাকুন।
আর কতবার লিখতে হবে? আই ইউ টি একটি পূর্ণাংগ রেসিডেন্সিয়াল ভার্সিটি। তো হল যদি না থাকে তাহলে মেয়ে ছাত্রী গুলা কই থাকবে? আপনার বাসায় নাকি?
এই যুক্তি পর্যন্ত তো আসার ই দরকার নেই। এর আগেই তো বুঝে যাওয়া উচিত কেন ছাত্রী ভর্তি নেয়া বর্তমান অবকঠামোতে সম্ভব না। আর আমি জানি না, বিদেশে কি ছেলে আর মেয়ে এক ডর্মে থাকে?
আর যাই হোক, স্বাধীনতার পক্ষ শক্তি কিংবা ঘোষকের সৈনিকদের অসুস্থ রাজনীতি না।
আর কি কি কাজ আছে দয়া করে একটু জানাবেন। তাহলে বুঝতে সুবিধা হত।
"আর কি কি কাজ আছে দয়া করে একটু জানাবেন। তাহলে বুঝতে সুবিধা হত।"
- নেতাদের পিছে ঘুরঘুর করা.. রাজনীতি করে ক্ষমতার দাপট দেখানো.. ক্লাস পেছানোর জন্য আন্দোলন করা.. হাতে রামদা নিয়ে ক্যাম্পাসে দৌড়াদৌড়ি করা.. কত কাজ আমাদের সোনার ছেলেদের !
দেশের সব ইন্সটিটিউটে (যে ইন্সটিটিউট আবার সরকারী না) পড়ার ক্ষমতা দেশের সবার থাকতে হবে, এই কথা কোথায় লেখা আছে? আইডিয়াল স্কুল, নটর ডেম, সেন্ট জোসেফ, ভিকারুন্নিসা ইত্যাদি জায়গায় পড়ার ক্ষমতা অনেকেরই নাই। তো? এখন কী করতে হবে? এগুলার খরচ কমায় ফেলতে হবে? অন্য কোন ইন্সটিটিউটের খরচ নিয়া আপনি চিন্তিত না, শুধু আই ইউ টি তে যারা খরচের জন্য পড়তে পারতেছে না, তাদের দুঃখে আপনের কইলজা ফাইট্টা যাইতেছে ক্যান?
আমি ব্লগে যেহেতু আগে লিখি নাই তাই ভুল হলে প্লিজ মাফ করবেন।
১। আমাদের দেশে ছাত্র রাজনিতি থেকে আমরা এখন পর্যন্ত একাত্তর এর পর কি পাইলাম, এটা সম্পরকে আমার তেমন জানা নেই তবে এতা জানি অনেক ছাএ তাদের জিবন হারাইছে, পা হারাইছে, হাত হারাইছে। এমন যদি দেশের রাজনিতি হয় তবে ওই সব রাজনিতি তে আই ইউ টির ছাত্র রা নাই এটা নিসন্দেহে খুশির খবর।
২। আফ্রিকান ও আমাদের দেশের নারিদের পৃথক হোসটেল সুবিধা দেয়ার মত এত বড় জাইগা আমাদের দেশের সরকার আই ইউ টি রে দে নাই। সম্পূর্ণ ইসলামিক মনোভাব থাকায় এই ইন্শিউর না করা পর্যন্ত ও আই সি কখনও মেয়েদের ভর্তি করাবে না, করানো উচিত ও না।
৩। একটা আর্ন্তজাতিক ইউনিভারসটি তে পড়তে একটু খরচ হবে এটা নরমাল। কারন এইটা সরকার চালায় না। তবে এই খরচ টা খুব বেশি তা না। MIT HARVARD এ পড়তে অনেক টাকা লাগে, কিন্তু তাই বলে অগুলাতে কেও পড়লে বলে না যে আমি টাকা দিয়া পড়তেছি।
এসব বেপার এ কথা বলে নিজেকে আপনারা কেন ছোট করতেসেন ভাইসব।
ঘ্যাঁচাং
আদনান ভাই,
শেষ দুইটা প্যারায় আমার কিছু বলার আছে। বাদবাকি উপরের অংশ আমার ভালো ভালো লাগলো। কিছু ব্যাপার জানতাম না, জানতে পারলাম।
আইইউটিতে রাজনীতি নিষিদ্ধ আমরা সবাই সবাই জানি। কিন্তু জামাত শিবিরের রাজনীতি করতে অনুমতি বা স্থান লাগেনা। এরা করে মসজিদ কেন্দ্রিক রাজনীতি। আইইউটি বেশ ভালোভাবেই জামাত শিবির বানানোর মেশিন চলতেছে সেটা 'ইচ্ছা থাকলে' সবারই চোখে পড়বে। সেই ইচ্ছাটা সাধারণ আইইউটিয়ানদের নাই বলেই আমার মনে হয়। দুনিয়াবি নানা কাজে আইটিয়ানরা বিজি সময় কাটালেও তাদের বুকে সবসময় কিন্তু ধর্মানুভূতির আগুন জ্বলেই। আর এই আগুনের এমনই বৈশিষ্ট্য আলোর বদলে অন্ধবার ছড়ায়, তারা দেখেও দেখেনা, বুঝেও বুঝেনা। কেউ ফাদে পা দেয়, কেউ গেম খেলে মনের আনন্দে। আমাদের ব্যাচের একজন আইইউটিতে শিবিরের প্রতিষ্ঠা করেছে। সে আরও অনেককে নিয়েই মিটিং ফিটিং এ যাইতো। এবং সেটা আইইউটিতে পড়াকালীন সময়েই। সে শিবির থেকে উদ্ধার পেয়ে এসেছে। কিন্তু তার পুতে আসা বীজ এখন গাছে পরিনত হচ্ছে সেটা বলাই বাহুল্য। তার সাথে যারা মিটিং এ যেতো তারা নিয়মিত সেই গাছের পরিচর্যা করছে মসজিদ কেন্দ্রিক রাজনীতি করে।
সো আপনার কল্পনার বিষয় বোধহয় আর কল্পনা নাই।
আমার উপরের মন্তব্য এইটুকু অংশের জন্যও প্রযোজ্য।
দিন শেষে আপনার এই অবস্থান আমার মনে হয় মেজরিটি আইউটিয়ানের সবচেয়ে বড় দৃষ্টিভঙ্গীগত সমস্যা। আইইউটি একদল সুবিধাভোগী শ্রেণী তৈরি করছে। যারা মনে করে, ভালো চাকরি আর উচ্চ শিক্ষায় সম্মানই জীবনের আলটিমেট প্রাপ্তি। আর কোনো দিকে তাকায়ে লাভ কী? অবশ্য আইইউটির দোষ দিয়ে লাভ কী, সারা বাংলাদেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানই বোধহয় এখন ভালো চাকর তৈরির সংগ্রাম করে যাচ্ছে, মানুষ তৈরির না।
রায়হানঃ তুমি যা বলেছো তার অনেক কিছুর সাথে আমি আসলে পরিচিত না। আমি যতদিন ছাত্র ছিলাম (২০০৩-২০০৬) আমাদের কেউ শিবিরের কথা চিন্তাও করতে পারতো না। এরপরে যদি এসব শুরু হয়ে থাকে তা খুবই দুঃখজনক এবং শুনে মর্মাহত হলাম।
স্বাধীনতার পক্ষ বা ঘোষক বলতে আমি আসলে সাধারণত বিশ্ববিদ্যালয়ে যে রাজনীতির নামে লেজুড়বৃত্তি হয় তা বুঝিয়েছি। এর সাথে রাজনৈতিক সচেতনতা বা চেতনা গুলিয়ে ফেলো না। আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা বলি, ২০০৩ এ আমি প্রথম আইইউটি কালচারাল নাইটে স্বাধীনতার উপর নাটক করেছিলাম। নাটকের আগে বিকেল বেলা কালচারাল কমিটির চেয়ারম্যান ডেকে আমাকে মানা করলেও অনেক বড় ঝুকি নিয়ে তার কথা অমান্য করেছি। আমাদের সময় ইউসুফ জাই ছিলো ইইই হেড। নাটকের কথা জেনে অনেক পাকি ওইবার কালচারাল নাইটে আসে নাই। প্রতিকূলতা কতটুকু বুঝতে পারছো নিশ্চয়। কিন্তু এত কিছুর পরও আমার মনে হয় ওইদিন অডিটোরিয়ামে কেউ বাকি ছিলো না যে নাটক দেখে জয় বাংলা স্লোগান দেয় নাই (এইটা আওয়ামী জয় বাংলা না ছিলো না বরং একাত্তরের চেতনার)। . আমাদের মধ্যে বেশীরভাগই এধরণের মানসিকতার ছিলো। সেখান থেকে যদি এখনকার ছাত্ররা দূরে সরে যায় তাহলে খুবই কষ্ট পাবো
আর আমাদের মাত্র পনের ষোল বছরের ইতিহাস। এটা দেখে কোনো কিছু বিচার করা সহজ না। আরো কিছুদিন যাক, তারপরে দেশের জন্য কি করলাম তার বিচার করাটা বেশি যুক্তিযুক্ত হবে। তোমার কমেন্ট দেখে আমি আশান্বিত। নিশ্চয় তোমার মত আরো কিছু আইইউটিয়ান আমরা এতোদিনে তৈরি করতে পেরেছি যারা দেশের জন্য, মানুষের জন্য ভাব; শুধু নিজের জন্য না। এদের মধ্য থেকেই আমরা কাউকে নিয়ে একদিন গর্ব করতে পারবো আশা করি।
তুমি করে বললাম, আশা করি কিছু মনে করবে না।
লেখাটা পড়লাম। পড়তে পড়তে কেন জানি মনে হচ্ছিল 'এটা কি আদনান লিখেছে?'। পরে দেখলাম তাই। যদিও কিছুটা মেটা ব্লগিং হয়ে গেলো কিন্তু তবু কিছু তথ্য একটা নির্দিষ্ট পোস্টের মাধ্যমে জানতে পারবে মানুষ। মন্তব্যে অনেক সময় এই তথ্যগুলো দৃষ্টি এড়িয়ে যায়।
সচলায়তনে স্বাগতম। আশা করি ভবিষ্যতেও লিখবে।
টুইটার
নতুন মন্তব্য করুন