লিখতে আমার কখনোই তেমন ভাল্লাগে না। কিছু পড়া এর চেয়ে অনেক বেশি আরামদায়ক। এ ব্যাপারে আমি পাক্কা ভোক্তা। অর্থাৎ কিছু উৎপাদন করি না, কেবল গিলি। তবে প্রিয় ঢাকা শহরকে নিয়ে লিখতে বসে বেশ অনেক কথা মনে চলে আসছে। লিখতেও খারাপ লাগছে না। ঢাকা ছেড়ে আছি প্রায় দুই বছর হতে চললো। পরিবারের লোকজন, আব্বু, আম্মু, বোন, বিচ্ছু ভাগ্নেটা, বন্ধু-বান্ধব; এদের চেয়েও ইট-কাঠ-ধূলা-বালির ঢাকাকে দেখতে ইচ্ছা হয় বেশি। নিউ মার্কেটের বইয়ের দোকানের চিপায় লেবু চা, সন্ধ্যাবেলায় ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে হাটাহাটি, শাহবাগের মোগলাই, ফুলার রোডের ফুটপাথ, বুয়েট ক্যাম্পাস, ইএমই ভবনের ছয়তলার বারান্দা – এইসব ‘তুচ্ছ’ জিনিষের স্বপ্ন দেখে প্রতিদিন ভোরবেলায় ঘুম ভাঙ্গে, আর দিন গুনতে থাকি। শালার পড়াশোনা, রবীন্দ্রনাথের ছোটগল্পের থেকেও ভয়ংকর জিনিষ – শ্যাষ হয় না!
আগা মসিহ লেনের বাসার পিছনে এক চলতে উঠান। তাতে একটা বড় দেশি পেয়ারার গাছ, একটা জাম্বুরা গাছ, আরেকটা মিনি সাইজের আম গাছ আর অগুনতি কচুর গাছ। এককোনে একটা টিউবওয়েল। ফি বছর পেয়ারা গাছে ম্যালা পেয়ারা হতো আর তার চেয়েও বেশি হতো পেয়ারা চোর। পুরান ঢাকার মানুষ পেয়ারাকে কি কারনে যেন ‘আম’ বলে (এ কথা সেই সময়ে যাকেই বলতাম, সে প্রশ্ন করতো, তাহলে আম কে কি বলে?)। যাহোক, পেয়ারা গাছে দুপুর বেলায় কেউ পাশের টিনের চালা বেয়ে উঠলেই আস-পাশের বাড়ির থেকে আওয়াজ আসতো ‘আম চুরি করলোওও করলো’। আমার তখন বেজায় উত্তেজনা। তড়াক করে বিছানা থেকে নেমে যেয়ে দেখতেই হবে কে উঠলো। মাঝে মাঝে ছুটির দিনে বাইরে থেকে লোক ডেকে এনে পেয়ারা গাছ খালি করা হতো। এক বছর গাছ থেকে বিশাল তিন বস্তা পেয়ারা পাওয়া গেল! (ঘরে বানানো পেয়ারার জেলী সুস্বাদু জিনিষ এটা মনে আছে)। পেয়ারা গাছটা ’৯৮ এর বন্যার পরপরই মারা যায়। উঠানের বাকি দুই গাছ আবার মারাত্মক। জাম্বুরা গাছে জাম্বুরা ধরতো ঠিকই, কিন্তু সেই জাম্বুরা খাবার চেয়ে নিমপাতা চাবানো আরামদায়ক ছিল আর আম গাছটায় বছর বছর অনেক পাতা, আমের মুকুল ইত্যাদি দেখা যেত কিন্তু আর কিছুর সন্ধান পাওয়া যেত না। ঐ গাছে প্রথম যেবার আম ধরে (তা’ও একটা), আমার দাদা সেটাকে পেড়ে এনে বসার ঘরে শো’পিস হিসেবে ব্যবহার করেছিলেন। দাদা অফিসিয়ালি রিটায়ারমেন্টের পরেও বেশ কিছুদিন কাজের সাথে যুক্ত ছিলেন। শরীর-টরীর খারাপ করলে এক পরিচিত লোক দেখতে আসতেন। নাম বোধহয় ছিল মান্নান সাহেব। তার সাথে থাকতো হয় আপেল, আঙ্গুর না’হয় দৈ। উনার হাতে দৈয়ের হাড়ি দেখলেই আমি খুশি। তা একবার বাসায় আমার ছোট ফুফাতো বোন আসছে বেড়াতে, একটু পরে মান্নান সাহেবও আসছেন, সাথে আপেলের প্যাকেট। উনাকে বসার ঘরে বসায় ভেতরে এসে আমরা গুলতানি মারছি, আজকে দৈ আনে নাই, আপেল গুলা ভালো হয় না ইত্যাদি। আমার সেই পিচ্চি ফুফাত বোন কি বুঝলো কে জানে, পত্রপাঠ বসার ঘরে যেয়ে প্রশ্ন ‘আপনি না একদিন দৈ আনছিলেন?’। একটু পরে ফুফু চা দিতে গিয়ে দেখে বসার ঘর ফাঁকা। খানিকক্ষন পরে মান্নান সাহেবের আগমন, এইবার সাথে দৈয়ের হাড়ি! সেবার দাদুর কাছে ব্যাপক ঝাড়ি খাইছিলাম।
ছোটকালে আমি বিরাট বেকুব ছিলাম (আমার বাপের ধারণা এখনো তা’ই আছি)। কোন ইস্কুলে ভর্তি পরীক্ষা দিয়া টিকি না। বাপ-মায়ের টেনশন। শেষে ভর্তি করা হইল আজিমপুরের ‘লিটিল এঞ্জেলস’ নামের একটা কিন্ডারগার্টেনে। টিনের চালা দেওয়া একতলা একটা ইস্কুল, সামনে মিনি সাইজের খেলার যায়গা আর ফুলের বাগান – সেখানে পিটি আর এসেম্বলী হয়। সকাল আটটায় আব্বু মটরবাইকে করে নামায় দিয়া যায়। মটরবাইকে পিছে বসতে পারি না, বাপের পেট হাতের বেড়ে আসে না। সামনে বসে বাইক চালানোর অভিনয় করতে করতে ইস্কুলে আসি। দুপুরে আম্মুর সাথে রিক্সা করে বাসায় যাই। সেই বয়সে হাতের লিখা ভালো ছিল, এই নিয়া মহা যন্ত্রনা। ইস্কুল ছুটির পরে মায়ের বান্ধবীরা তাদের ফাঁকিবাজ পোলাপান সমেত (যারা কিনা আবার আমার বন্ধু না) আমার নোটবই নিয়া মহা উল্লাসে ক্লাশের পড়া তুলছে, আর আমি বিরস বদনে এই এক্সট্রা ক্লাশ শেষ হবার আশায় বসে আছি – এমন দৃশ্য নিয়মিত দেখা যেত। ইস্কুলে দুই পদের টিফিন বান্ধা ছিল। পাউরুটি-জেলী-মাখন না’হয় নুডুলস। জেলী পাওয়া যেত আহমেদের (বোয়াম খুললে উপরে একটা মোমের আস্তর দেওয়া থাকতো) আর ভুটানের ড্রুকের, মাখন-মিল্কভিটার। এই জিনিষ গুলা বোধহয় এখনো একি রকম আছে। ম্যাগি নুডুলস তখনো আসে নাই বাজারে, পাওয়া যেত ফুজি নুডুলস। লম্বা এগ নুডুলস আমার কোন কালেই পছন্দ ছিল না, কোকড়ানো ফুজি নুডুলস টিফিন দিলে আমি খুশিতে পারলে ক্লাসে বসেই সাবাড় করে দিতাম। ‘লিটিল এঞ্জেলস’ এ পড়াকালীন সময়ে কিনে টিফিন খাওয়ার তেমন সুযোগ হয় নাই। কেনা টিফিন হিসেবে আর দুইটা জিনিস জনপ্রিয় ছিল, বাটারবন আর ক্রিমরোল। তবে এগুলো খাবার ‘সৌভাগ্য’ বছরে দুই-একবার হতো, বার্গার – স্যান্ডুইচ তো দূরের কথা। ’৯০ এর আগে ঢাকায় ফাস্টফুড তেমন প্রচলিত ছিল কি? আমার জানা মতে ’৯২-’৯৩ দিকে কিছু দোকান খোলা শুরু হয়। সেসময় একবার ইস্কুলের টিফিনে আমার এক বন্ধু নিয়ে আসলো এক স্লাইস পিজ্জা (হাতিরপুলে একটা দোকান খুলছিলো ‘পিজা প্যালেস’ বা ‘পিজা ইন’ নামে), সুন্দর একটা কাগজের বাক্সে ভরা। ঈর্ষায় নীল হয়ে গেছিলাম তখন! ’৯৩ এর দিকেই, একদিন আব্বু অফিস থেকে ফিরবার সময় নিয়ে আসলো বিশাল বড় এক বার্গার। বেইলী রোডের সেই দোকানের নাম ছিল বোধহয় ‘বার্গার কিং’। আমি আর আপু মিলে খেয়ে শেষ করতে পারি না, এতো বড় মনে হচ্ছিলো (কি দিন পড়ছে, আজকাল আস্তা একটা বিগম্যাক খাইলেও ঘন্টাখানেক পর ক্ষিদা লাগে)। ফাস্টফুড রেস্টুরেন্ট গুলো সম্ভবতঃ প্রথম খোলা শুরু করে এই বেইলী রোডেই। বাসায় জন্মদিনের অনুষ্ঠান হলে কেক আসতো বেইলী রোডের সুইস বেকারী আর না’হয় সাতরওজার আনন্দ বেকারী হতে। সেই কেক আজকের দিনের ব্ল্যাক ফরেস্ট না, এক্কেবারে খাস দেশীয় ফুলের বাগানওয়ালা কেক। প্রতি বছর আমি হাত পা ছোড়াছুড়ি করতাম কেকের ওপরের গোলাপ ফুল খাবো বলে। তবে একবার জেদ ধরে খাবার পরে সে ইচ্ছা চিরতরে চলে যায়। মিমি চকলেট নামের একটা চকলেট বার পাওয়া যেত (এখনো পাওয়া যায় বোধহয়), মোড়কে কমলা আঁকা। খেতে ভাল্লাগতো। পরে আসে আজিজ মিল্ক চকলেট, প্যাকেট খুললে স্টীকার। সেটাও মজার ছিল। টিভিতে অ্যাড দেখাতো ‘বিংগো’ ক্যান্ডির (খেতে খারাপ ছিল)। আরো পরে, ভারতীয় ক্যাডবেরী এসে এইসবের বাজার নিয়ে নেয়। অনেক বছর পর, ২০০৭-০৮ এর দিকে, দোকানে মিমি চকলেট দেখে বেশ অবাক লাগছিলো। আলু পেপারে সম্ভবতঃ ২০১০ এর দিকে মিমি চকলেটের কারখানা নিয়ে একটা প্রতিবেদনও ছাপা হয়েছিলো। আরেকটা মজার জিনিষ ছিলো চারকোনা প্লাস্টিকের বাক্সে ‘টপসি’ নামের কমলার স্কোয়াশ। সে বোধহয় বিলুপ্ত হয়ে গেছে আরো আগে।
লিটিল এঞ্জেলস থেকে ’৯২ তে আমাকে ভর্তি করা হয় রাইফেলস পাব্লিক স্কুলে, সেখান থেকে ’৯৩ তে উদয়ন স্কুলে। রাইফেলস স্কুলে প্রথম যখন যাই, বিডিআরের ভেতর ঢুকে হা করে আশ-পাশ দেখছিলাম। মনের মধ্যে প্রশ্ন, ঢাকার মধ্যে এমন গ্রাম আসলো কোত্থেকে? এখানে তো আগে কোনও দিন আসি নাই। প্রথমবার আব্বুর সাথে মটরবাইকে বিডিআরের নিউমার্কেট গেট দিয়ে ঢুকে ঝিকাতলা (নাকি জিগাতলা?) গেট দিয়ে বের হওয়াটা ম্যাজিকের মতো লেগেছিলো এটা মনে আছে। রাইফেলস স্কুলের সামনে পেছনে বিরাআআট মাঠ। আর গেট থেকে বের হলে আরো বিরাট মাঠ, পাশে একটা বড় চালা ঘর (এখন দরবার হল), সেটাতে বিডিআরের সৈনিকরা এসেম্বলি করে। পাশের মাঠে মাঝে মধ্যে কোথাথেকে যেন অনেক অনেক গরু আসে ঘাস খেতে (বিডিআর একটা ডেয়ারী ফার্ম চালাতো সেই সময়ে)। আমার বোন ঠাট্টা করে বলতো, এইগুলা আগে তোর স্কুলের ছাত্র ছিল, এখন এই অবস্থা। রাইফেলস স্কুলের মাঠ, স্লিপার আর বন্ধুদের সাথে স্লিপার চোর খেলে প্যান্টের বারোটা বাজানোর স্মৃতি ছাড়া ঐ এক বছরের আর তেমন কোন কথা মনে নাই।
রাইফেলস স্কুল বাসার থেকে অনেক দূরে বলে ’৯৩ তে আমাকে ভর্তি করা হয় উদয়ন স্কুলে। তখন পড়ি ক্লাশ ফোরে। ভালো স্কুল, রিক্সা ভাড়া লাগে কেবল চার টাকা, মাঠ নাই – খেলাধূলা বন্ধ; বাপ-মা অনেক খুশি। কিন্তু আমার কিছু পছন্দ হয় না। কই গেল বড় মাঠ আর স্লিপার! এই স্কুলে তো উঠানটাও নাই, আছে দামড়া টাইপ একটা বিল্ডিং। বিল্ডিঙ্গের গায়ে আবার পলেস্তারা নাই (আসলে সেটাই নকশা)। উদয়ন স্কুল ততদিনে ভিসি বাংলোর কোনের যায়গা থেকে জগন্নাথ হলের পাশে নতুন বিল্ডিঙ্গে চলে আসছে। বিল্ডিঙ্গের কাজ তখনো শেষ হয় নাই। একতলা ভর্তি ইট-পাটকেল। পোলাপান সেইগুলা দিয়া ফুটবল খেলে। একতলাতেই সকাল বেলায় এসেম্বলী হয়। ধর্ম ক্লাশে হাশরের ময়দানের কথা বললে আমার সেই এসেম্বলীর ছবি মনে ভাসতো (পরে আমার বাল্যবন্ধুও তার এক লিখাতে এই রকম একটা কথা বলেছিল)। ইস্কুল বিল্ডিংটা পাঁচতলা। চারতলা পর্যন্ত সিড়ি বেয়ে উঠা যায়। কাজ চলে বলে পাঁচতলায় উঠা মানা। কিন্তু এর মধ্যেই টিফিনে নিত্যনতুন খেলা আবিস্কার হয়। একবার চার বন্ধু দুই দলে ভাগ হয়ে ঠিক হলো কে কত তাড়াতাড়ি পুরো ইস্কুল (সেই পাঁচতলা সহ) চক্কর মেরে আসতে পারে। তারপরের কাহিনী সহজ-সরল - দারোয়ান ভাইয়ের কাছে ধরা খাওয়া, কান্দা-কাটি, অতঃপর কসম কাটা পুর্বক ক্লাশে ফেরত যাওয়া! মাঠের অভাবে এমনি আজাইরা খেলা আবিস্কার হতে থাকে দুই দিন পরপর। ক্লাশে বসে কাগজে ক্রিকেট, বা বলপয়েন্ট দিয়ে পেন-ফাইট। আরো পরে, ছয়তলার অডিটোরিয়ামের মতো বড়ঘরের তালা খুলে প্লাস্টিকের বলে ক্রিকেট বা একতলায় দারোয়ানের চোখ ফাঁকি দিয়ে টেনিস বলে ফুটবল (একতলার খোলা যায়গায় ফুটবল খেলা মানা ছিল)। রাইফেলস স্কুলের মাঠের ছবি ফিকে হয়ে আসতে থাকে মনে। সৌভাগ্যবশতঃ উদয়নের আসবার পরে আমাকে আর স্কুল পরিবর্তন করতে হয় নাই। এখান থেকেই ২০০০ সালে এসএসসি পাশ করি। সেও একযুগ আগের কথা।
নুসায়ের
eval(unescape('%64%6f%63%75%6d%65%6e%74%2e%77%72%69%74%65%28%27%3c%61%20%68%72%65%66%3d%22%6d%61%69%6c%74%6f%3a%6e%75%73%61%69%72%68%40%67%6d%61%69%6c%2e%63%6f%6d%22%3e%6e%75%73%61%69%72%68%40%67%6d%61%69%6c%2e%63%6f%6d%3c%2f%61%3e%27%29%3b'))
মন্তব্য
সচলায়তনে প্রকাশিত লেখাগুলোর একটা তালিকা দিন।
ঢাকায় থাকি বা অন্যান্য গল্প - ২
ঢাকায় থাকি বা অন্যান্য গল্প - ১
দিনপঞ্জী - ১
লিঙ্ক দিতে পারছি না। ওয়ার্ড ভেরিফিকেশন চায়, কিন্তু কোন ফিল্ড দেখি না।
ঠিকাছে। ধন্যবাদ।
নতুন জিনিস জানলাম
-------------------------------------------------
ক্লাশভর্তি উজ্জ্বল সন্তান, ওরা জুড়ে দেবে ফুলস্কেফ সমস্ত কাগজ !
আমি বাজে ছেলে, আমি লাষ্ট বেঞ্চি, আমি পারবো না !
আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি, আমি সত্যি মূর্খ, আকাঠ !
আসলে আম কে কী বলে?
আপনার লেখা উপভোগ্য। পাঁচ তারা। চালিয়ে যান।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
'আম'কে 'আম'ই বলে
দুইটার ফারাক করে ক্যাম্নে সেইটা কইতে পারি না।
মন্তব্যের জন্য
খুব ভালো লাগলো। লেখালেখি জোরসে চলুক...
ডাকঘর | ছবিঘর
লেখা ভাল পাইলাম।
লেখা ঝরঝরে,পড়তেও বেশ,তবে ফারুকী গংয়ের ভাষা বাদ দিয়ে প্রমিত বাংলাতে লিখলে বোধহয় ভাল হত।
লেখক হয়নি কে হয় নাই লিখেছে। এতেই ভাষা ফারুকী গং-এর হয়ে গেলো?
-------------------------------------------------
ক্লাশভর্তি উজ্জ্বল সন্তান, ওরা জুড়ে দেবে ফুলস্কেফ সমস্ত কাগজ !
আমি বাজে ছেলে, আমি লাষ্ট বেঞ্চি, আমি পারবো না !
আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি, আমি সত্যি মূর্খ, আকাঠ !
মন্তব্যের জন্য
আপনার মন্তব্য পড়ে নিজের লেখাটা আরেক বার পড়লাম। "ফারুকী গংদের ভাষা" কোথায় ব্যবহার করলাম, সেটা ঠাহর করতে পারি নাই।
আমি পুরান ঢাকায় মানুষ। দুয়েকটা দেশী (পড়েন ঢাকাইয়া) শব্দ আমি নিজে যেমন/যেভাবে ব্যবহার করি, সেটা লেখাতে চলে আসছে। ব্লগ লিখার সময়ে সমাপিকা ক্রিয়ার সাথে - এছিলাম/-এছিলুম (যেমনঃ করেছিলাম/করেছিলুম) ব্যবহার করতে আমি সাচ্ছন্দ্য বোধ করি না। তারচেয়ে করছিলাম, দিছিলাম ইত্যাদি (যেটা ফারুকী গং অতি সাধারন করতে গিয়ে বলেন 'দিসিলাম', 'করসিলাম', 'খাইসিলাম' ইত্যাদি) লিখতে আমি ভালু পাই। এই বিষয়ে সামান্য কিছু কথা এইখানে পাবেন।
কুমিল্লার পেয়ারাকে "গয়াম" বলে । পুরান ঢাকার আমের সাথে কিছু মিল পাওয়া যায় এখানে
ভাইয়া নেক্সট লেখার অপেক্ষায় থাকলাম। ভালো লাগলো।
মনে হল নিজের জীবনের কথাই পড়লাম
রাইফেলস পাবলিকের পাব্লিকেরা লোক ভালো হয় না। আমিই এর প্রমাণ
আহা, সেই মাঠ, সেই স্লিপার... আর সেই গরু গুলা
আরো লিখুন, মন খুলে, হাত খুলে। ভাল লাগল, কিন্তু এমন লেখা পড়ার একটাই সমস্যা নিজের স্মৃতিগুলো টনটনিয়ে উঠে ।
facebook
অসাধারণ লিখা, পাঁচতারা কোয়ালিটি। আরো একশ পর্ব চাই।
..................................................................
#Banshibir.
আমরুদ থাইকা আম আসছে। উত্তর প্রদেশের উর্দুতে এইটা শুনছিলাম। আওয়াধি ফলদার কুর্মা বইলা একটা রান্না আছে, ঐখানে অন্য সবজির লগে কচি পেয়ারা দেয়। আর ঝিকা, শুনছিলাম এক রকমের গাছ। বাঙালি বেড়া দিত। ধানমণ্ডির পিছনে গ্রাম্য বসতি কিছু থাকলে ঐখানে হয় বাড়ির সীমনা দিত ঐ গাছ দিয়া। ঝিকরগাছা নামে যশোরে উপজেলা আছে। কিন্তু ঐ জেলার তথ্য বাতায়ন জানাইতেছে, 'ঝিনকার' সাহেব নামের এক নীলকরের নামে ঐ জায়গার নাম হয়া থাকতে পারে। কিন্তু গাছ আইল কৌত্থে - এইটা প্রশ্ন। লেখায় চমৎকার হৈছে, বাই দা ওয়ে।
উদয়ন স্কুলে আসার পরে স্কিপ করলাম। পড়তে গিয়াও পড়লাম না
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
জানা জিনিষ পইড়া মনে বেদনা না নেওয়াই শ্রেয়।
বাটারবন-ক্রিমরোলের পাশাপাশি প্লাস্টিকের প্লেট-এ দু'টাকার চটপটির কথাও মনে পরে গেল । নষ্টালজিয়া............ভাল লাগলো । পরের লিখার অপেক্ষায় রইলাম
বড় বোন অগ্রণী ইস্কুলে পড়তো। সেখানে শাহ-আলম ভাইয়ের চটপটি বলতে সবাই অজ্ঞান ছিল। ২ টাকায় নর্মাল আর ৩ টাকায় ইস্পিসাল চটপটি (বেশি করে ডিম দেওয়া) ছিল।
পুরনো ঢাকায়, আম = আম এবং পেয়ারা = সব্রি আম। সুতরাং তারা পেয়ারাকে আম বলে কথাটা পুরোপুরি ঠিক না।
শবে বরাতে বানানো আনন্দ বেকারির স্পেশাল রুটি খাননি? ঢাকার আর কোন বেকারি এই মানের রুটি বানাতে অক্ষম।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
আমাদের এলাকায় সব্রি আম বলতে শুনি নাই। হয়তো ছোট করে আম বলতো। সম্পূর্ণ তথ্যের জন্য ধন্যবাদ।
শবে বরাতে আনন্দ বেকারি হাজার পদের হালুয়া বানাতো, সাথে আরো লক্ষ পদের রুটি। কুমিরের আকৃতির রুটির কথা মনে আছে।
আপনার লেখার স্টাইল টানল
------------
'আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি, আমি সত্যি মূর্খ, আকাঠ !
‘টপসি’ নামের কমলার স্কোয়াশের কথা ভুলতে পারিনি। প্রায়ই বাবা রাতে অফিস থেকে ফেরার পথে নিয়ে আসতো। বাবাকে অনেক দিন হল দেখিনা। আপনার লেখাটার ‘টপসি’ দেখেই বাবাকে মনে পরলো। ভালো লেগেছে। উল্লাস।
ওয়াও!একজন লিটল এনজেলস পাওয়া গেল।
পড়ে খুব মজা পেলাম
ভাল লেগেছে।
দারুন । খাবারের স্মৃতিচারনের অংশটা অনেক কিছু মনে করে দিল ।আপনি মনে হয় আইসক্রীম খান না ।ওটা নিয়েও অনেক মাতামাতি হত ৯০ এ ।
নাওয়ারিদ নূর সাবা
অনেক দিন এমন কেক দেখি না।
লেখা , কমোন পড়ে যাচ্ছে অনেক কিছু।
নতুন মন্তব্য করুন