পুরান ঢাকা নিয়ে লেখার ইচ্ছা বহু দিনের। পত্রিকায় কাজ করার সুবাদে অনেক ভাবেই তা লিখেছি। কিন্তু ব্লগে লেখার আলাদা একটা ব্যক্তিসত্ত্বা কাজ করে। যা পত্রিকাতে বলা বা লেখা যায়না। তাই সচলায়তনে আসা।
পুরান ঢাকার একটি মহল্লা সুতারনগর। এক সময় নাকি এখানে সুতাররা কাজ করতেন। পাশেই ছিল তাঁতিবাজারের তাঁতদের বসবাস। সেকালে আমার জন্ম হয় নাই। আমি ৮০ তে এই ধরা ধামে আসার পর শৈশব কাটে ঝুলনবাড়িতে। জনশ্রুতি আছে এখানে রাধাকৃষ্ণ মন্দিরে একসময় বড়সড় ঝুলনপুজা হত। ঝুলনবাড়ির সোজা বরাবর যে রাস্তাটা সেখান দিয়ে চলে গেলেই গোয়ালদের রাজ্য গোয়ালনগর। সেখানে জীবনের একটা সময় কাটিয়েছেন বিখ্যাত অভিনেতা ভানু বন্দোপাধ্যায়। আসলে অনেক বিখ্যাতদেরই পুরান ঢাকায় ছিল আদি বসবাস। কালের বিবর্তনে না পুরান ঢাকার ঐতিহ্য বিবর্তনে একসময় বিখ্যাতরা এখান থেকে নতুন ঢাকাতে চলে যায় তা তারাই ভালো বলতে পারবেন।
আজ যদিও পুরান ঢাকা অনেকটাই নিগৃহীত তবু ঐতিহ্য রক্ষার দায়িত্ব তো আমাদেরই। শুধু মাত্র বুড়িগঙ্গার নদীর তীরেই মানুষের বিনোদনের জন্য একটা যে সময় কেটেছে, আজ তা ভাবাই যাচ্ছেনা। বুড়িগঙ্গার ভরা যৌবন আজ বস্তা পচা ফলে, মৃত কুকুরের ভেসে ওঠা মাছিতে, মলমুত্রের নিত্যদিনের ডোবা হিসেবে, কলকারখানার রঙবেরঙের রঙ এ আবার এর মধ্যেই ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানের একমাত্র জায়গা হিসেবে আজও কোন মতে ফাইট দিয়ে যাচ্ছে মানুষের সাথে। স্পষ্টই দেখতে পাচ্ছি বুড়ি তোমার মরিবার দিন ওই এল এল।
পড়ালেখার সুবাধে আমার বেশ কয়েক বছর বাংলাদেশের বাইরে কাটাতে হয়েছিল। সেই গল্প আরেকদিন কিন্তু অনান্য দেশের নদ নদীর কথা বিবেচনা করলে যা দেখায় যায় তাতে আমরাই গলা টিপে হত্যা করছি নদী এ দেশটাকে। ছবি ১ লক্য্ত করুন; ইস্তাম্বুল শহরের বসফোরাস নদীর তীর আর ছবি ২ বাংলাদেশের বুড়িগঙ্গা নদীর তীর (ছবি-ইন্টারনেট)।
আমাদের উন্নতি হচ্ছে কি হচ্ছে না দেশের একজন সাধারন নাগরিক হিসেবে শুধু দেখতে পাই বিশাল বিশাল সুউচ্চ দালান। উন্নতি এতই হচ্ছে যে সোজা উপরে উঠছি দিন দিন।
সম্প্রতি দেশের টিপাই মুখ বাঁধ নিয়ে অনেক লম্ফঝম্পও দেখা হল। কিন্তু সত্যি সেটাই; ভারতের পানি দেয়া বন্ধ করা দেখে আমিও এখন ভাবছি বঙ্গমুল্লুক পানির কি মর্ম বোঝে। যদি বুঝতো তবে বুড়িগঙ্গাও বেঁচে থাকতো আজীবন। অনান্য অনেক দেশের থেকেও অসীম সম্ভাবনার এদেশে এই নদীর তীরে সুস্থ বিনোদনের কেন্দ্র হতেই পারতো। কিন্তু না আমরা তা চাই না । মোট কথা " টাকা আমার চাই নইলে জমি "।
মন্তব্য
সচলে স্বাগতম।
লেখার কলেবর আরেকটু বড় হলে বেশ হত না?
পড়া শুরু করার আগেই শেষ হয়ে গেলো
-------------------------------------------------
ক্লাশভর্তি উজ্জ্বল সন্তান, ওরা জুড়ে দেবে ফুলস্কেফ সমস্ত কাগজ !
আমি বাজে ছেলে, আমি লাষ্ট বেঞ্চি, আমি পারবো না !
আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি, আমি সত্যি মূর্খ, আকাঠ !
অফিসের ফাকে ফাঁকি দিয়ে লেখা তাই তাড়াহুড়ো ... পরেরটাতে পুষিয়ে দেবো।......গ্রেগরীয়ান বালক
লেখাটা কি আরেকটু বড় আর বিস্তারিত হতে পারতনা? পড়তে শুরু করতেই না করতেই শেষ!
'সুতার' বানানটা মনে হয় 'ছুতার' হবে। লিখতে থাকুন।
তাড়াহুড়ো করা ঠিক হয়নি...সুতার না ছুতারই হবে। ধন্যবাদ
এমন পোষ্ট আরো আসুক, পরিবেশ সচেতনতা এবং আমাদের দায়িত্ব নিয়ে।
facebook
সচলে অচল ছিলাম। খেঁকশিয়ালের অনেকবার হুক্কা হুতেও কাজ হয়নি। আজ ওর জন্মদিনে এই লেখাটা ওকেই উৎসর্গ করলাম।
টিপাইমুখ বাধের বিরুদ্ধে আন্দোলন লোকে ক্ষমতা আর খ্যাতির লোভে করছে?
মনে করুন আপনার পায়ুপথে একটা জলপাই ঠেসে বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে। আপনি তার প্রতিবাদ করছেন। সেটা কি আপনি তখন "ক্ষমতা" আর "খ্যাতি"র লোভে করবেন?
ছাগলামির একটা সীমা থাকা উচিত।
টিপাইমুখ নিয়ে খালেদা জিয়া ও তার বুদ্ধিজীবীদের ব্যাপক আন্দোলন শুরু হয়ে যায় এই সরকার ক্ষমতায় বসার পর থেকেই। আমি এক টকশোতে বিএনপিপন্থী বুদ্ধিজীবী সাংবাদিক মাহফুজুল্লাহ সাহেবকে ফোনে প্রশ্ন করেছিলাম, টিপাইমুখ নিয়ে এই আন্দোলন আরো আগে থেকে কি শুরু করা উচিত ছিল না, যখন ঘটনাটি বেশ পুরনো? উনি কৌশলে প্রশ্নটা এড়িয়ে গিয়েছিলেন! তো এখন আপনার কি মনে হয়, টিপাইমুখের আন্দোলনে খালেদা জিয়া ও সহযোগী গংদের কোন ক্ষমতা ও খ্যাতির লোভ কাজ করছে না? আমি নিজেও ভারতীয় আধিপত্যের তীব্র প্রতিবাদ করি! কিন্তু আমাদের দেশের গোষ্টিগত আন্দোলনে প্রায়ই 'ক্ষমতা' ও 'খ্যাতির' লোভ কাজ করে। ভূরি ভুরি উদাহরণ পাওয়া যাবে! আর এর ফলে ঐসব আন্দোলনের ফলও হয় একটা বিশাল শূন্য। আশা করি, বুঝতে পেরেছেন আমি কি বলতে চেয়েছিলাম।
সচলায়তনের নিবিড় পাঠক হিসাবে আপনার এমন ভাষার সাথে পরিচিত। তাই অবাক হইনি। তাছাড়া একজন তুখোড় সাহসী ব্লগার ও জনপ্রিয় লেখক হিসাবে আপনি তো নতুনদের দু-চারটি গালি দেয়ার অধিকার অর্জন করেই ফেলেছেন! তবে কিছুটা কস্ট তো হয়েছেই। কারণ একজন মানুষকে মতের ভিন্নতা হলেই দুম করে গালি দিয়ে বসার সংস্কৃতির সাথে খুব একটা পরিচয় হয়নি এখন অবধি!
আপনি টিপাইমুখের বিরুদ্ধে আন্দোলনকে খালেদা জিয়া আর তার ল্যাংবোটদের পকেটে ঢুকিয়ে দিতে চাচ্ছেন কেন? এরাই খালি টিপাইমুখের বিরোধিতা করে? আর কেউ করে না? ওয়েটল্যান্ডসের ওপর নির্ভরশীল বিশাল জনগোষ্ঠী কি খালেদার মুখ দেখে টিপাইমুখের বিরোধিতা করে নাকি অন্য কোনো কারণও আছে?
মতের ভিন্নতার কম্বল দিয়ে ছাগলামি ঢাকা যায় না।
গালি দেয়াই যখন আপনার লক্ষ্য, তখন আপনি আমার মাত্র কয়েক লাইনের মন্তব্য পড়ে দেখার প্রয়োজন মনে করবেন কেন? আরও একটা গালি দেয়ার অমোঘ ইচ্ছাকে অবদমিত করে রাখলে, দেখতে পেতেন, আমি বলেছি, দেশের মানুষ (যার ভিতর আমিও রয়েছি) অবশ্যই ভারতের আধিপত্যের নিদারুণ শিকার এবং তাদের ব্যাপক ক্ষোভ ও প্রতিবাদও রয়েছে। কিন্তু তাদের নেতাদের 'খ্যাতি' ও 'ক্ষমতা' কেন্দ্রিক স্বার্থের রাজনীতির কারণে তাদের সেই ক্ষোভ কোন ফলাফল বয়ে আনতে পারে না। কিন্তু এইসব কথা আপনাকে বলে কোন লাভ নেই। কারণ আমি নিশ্চিত আপনি আরও একটা 'গালি' হাতে নিয়ে অপেক্ষা করছেন!
আপনি তো প্রথমে সে কথা বলেননি। সরাসরি টিপাইমুখের বিরোধিতাকে "ক্ষমতা" আর "খ্যাতির" লোভের পকেটে ঢুকিয়ে দিয়েছেন। আমার প্রতিক্রিয়া কর্কশ ছিলো বলে আপনি এসে সেটাকে তারপর ঢোকাতে চাইলেন খালেদার ভ্যানিটি ব্যাগে। বহু লোক বহু পরিশ্রম করে টিপাইমুখ নিয়ে অনেক কাজ করছেন, সচলায়তনেই দেখবেন সচল জাহিদ এই ব্যাপারটিকে অ্যাকাডেমিক দৃষ্টিকোণ থেকে অনেকদিন ধরে ব্যাখ্যা করে চলছেন। আপনার ঐ এক লাইনের বিদ্রুপ তার পরিশ্রমটাকেই উড়িয়ে দেয়, আমাদের মতো আরো অনেকের উদ্বেগকেও খালেদার ল্যাংবোটবৃত্তি বানিয়ে দেয়। আপনি পাল্টা আহত হয়েছেন দেখতে পেয়ে আমার ভালো লাগছে। ভবিষ্যতে ফুটনোটগুলোকে মূল মন্তব্যের অংশ করে রাখলে আপনার মন্তব্যগুলোও ছাগলামিরহিত হবে, আমিও রূঢ় মন্তব্য করার গ্লানি থেকে রেহাই পাবো।
আমি তো আমিই আগেই বলেছিলাম, আপনার কাছ থেকে আবারও আসবে। এতে ব্যাপক মজা রয়েছে বোধহয়!
ভারতীয় আধিপত্যবাদীরাও কিন্তু আহত বাংলাদেশীদের দেখে খুব মজা পায়!
তাই নাকি! বলেন কী! উরে তামশা!
আমি ভাই রাজনীতি বুঝিনা, দেশের নদ নদীগুলোর কি হাল হাকিকত তা নিয়ে কারো চিন্তা নেই এটাই দুঃখ এই আর কি।
দুঃখিত আপনার কথা মানতে পারলামনা। টিপাইমুখ নিয়ে দেশের বিশেষজ্ঞমহল থেকে সাধারন জনসাধারন লেখালেখি বা আন্দোলন করছে কোন ব্যাক্তিস্বার্থের জন্য নয়, দেশের স্বার্থের জন্য। এভাবে কোন হুট করে কোন জেনারালাইজড মন্তব্য করবেননা।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
প্রথমেই আপনার বিনীত মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি!
সাধারণ জনগণ ব্যক্তি-স্বার্থের জন্য আন্দোলন করছে, এমন কথা আমি এখানে কোথাও বলিনি! আমি আমাদের দেশের নেতাদের কথাই বলতে চেয়েছি। মূল লেখাটি পড়ুন, দেখতে পাবেন কোন প্রসঙ্গে কথাটা এসেছে। আমাদের শুধু বিদেশী আধিপত্য-বাদীদের বিরুদ্ধে কথা বললেই হবে না; দেশীয় আধিপত্য-বাদীদের দিকেও তাকাতে হবে। মূল লেখাতে সেই কথাটা উঠে আসায় আমি তার সূত্র ধরে আমার মন্তব্যটি করেছি! দেশী হোক বা বিদেশী হোক, এই আধিপত্য-বাদীদের চরিত্র একই! দয়া করে আমাকে ভুল বুঝবেন না!
নতুন মন্তব্য করুন