‘’রুট বিয়ার আছে?’’ একটা ফাস্ট ফুড শপে শোয়েবের এমন প্রশ্নে আমি তো থ! ও যেভাবে কথায় কথায় হাদিস শোনায়, তাতে তো এই ব্যাপারটা ওর সাথে যায় না। অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করি, ‘’তুই, বিয়ার খাওয়া শুরু করলি কবে থেকে?’’ শোয়েব আমাকে অভয় দেয়,‘’এই বিয়ারটা খাইতে পারস। এইটা হালাল। উইদাউট এলকোহল‘’। সেদিন কিঞ্চিত অবাক হলেও পরে আর হইনি; কারণ বিভিন্ন পার্টিতে শোয়েবের সাথে আমাকেও যে গলা ভেজাতে হয় কালে-ভদ্রে! এবং সেগুলো যে ‘উইদাউট এলকোহল’ থাকে না, তা বলাই বাহুল্য।
শোয়েবের হারাম-হালাল আমাকে প্রায়ই ধন্দে ফেলে দেয়। কখন কোন জিনিসটি যে ওর কোপানলে পড়তে যাচ্ছে, তার আগাম হিসাব কষা প্রায় অসম্ভব। অথচ একটা অতি ধার্মিক পরিবারেই শোয়েবের জন্ম ও বেড়ে উঠা, কোরান-হাদিসের পূর্ণ পাঠ যেখানে ছোটবেলাতেই হয়ে যাওয়ার কথা। আর শোয়েবের যে সেই পাঠ হয়নি, তাও নয়। শোয়েবের ধর্মপাঠ বরং ক্ষেত্রবিশেষে মাত্রা ছাড়িয়েছে। এর সর্বোৎকৃষ্ট সাক্ষী হলাম আমরা যারা শোয়েবের সাথে ওঠা-বসার সুফল ভোগ করি প্রতি মুহূর্তে। অল্পদিনের ভিতর আমাদেরও কোরান-হাদিসের উপর একটা ভাল দখল চলে আসে; কারণ মিনিটে মিনিটে শোয়েবের ভিতর থেকে হাদিসের ফোয়ারা নিঃসরিত হতে থাকে আর ভিজিয়ে দিতে থাকে আমাদের মত সৌভাগ্যবান আদম সন্তানদের!
শুধু হাদিস কেন, দোআর স্টকেও কোন কমতি নেই আমাদের বন্ধু শোয়েবের! লিফটে উঠবে, তো আলহামদুলিল্লাহ পড়তে থাকে। লিফট থেকে নামবে, বিড় বিড় করে সোবহানাল্লাহ আওরাতে থাকে। খাওয়ার আগে দোআ। গোসলের আগে দোআ। ঘুমানোর সময়ও দোআ। এমন কি টয়লেট পর্ব সাড়ার সময়ও দোআ পড়ে নিতে ভুল হয় না শোয়েবের। ইতিমধ্যে পারিবারিক রেওয়াজ মোতাবেক চিল্লাকর্মও সুসম্পন্ন করেছে।
আরেকটি রেওয়াজ রয়েছে শোয়েবদের পরিবারের, যা সমাজে ব্যাপকভাবে স্বীকৃত ও বহুল প্রশংসিত। এ পরিবারের সদস্যরা যৌবন থাকতেই হজকর্ম সমাধা করে ফেলেন। শোয়েবও ২০১৫ সালের টার্গেট নিয়ে রেখেছে। সব কিছুই ঠিক আছে। শুধু একটাই প্রবলেম হয়ে যাচ্ছে শোয়েবের। নামায কর্মটি নিয়মিত করতে পারছে না। আর যৌবনের কিছু আহবানও ফিরিয়ে দেয়া সম্ভব হচ্ছে না ওর পক্ষে। কিন্তু তা নিয়ে খুব একটা চিন্তিত নয় শোয়েব। ইমান তো এক চুলও নষ্ট হয়নি এবং এটাই সবচেয়ে গূরত্বপূর্ন। তাছাড়া, এই শয়তান কবলিত দেশে ইমান অটুট রাখতে পারাই কি সবচেয়ে বড় আমল নয়?
এই ফাঁকে বলে রাখি, শয়তান চিহ্নিতকরণে আমাদের শোয়েবের আসলেই কোন জুড়ি নাই। গত পহেলা বৈশাখে আমরা সদলবলে পান্তা খেতে গিয়েছিলাম রমনায়। তো পান্তাপর্ব শেষে বন্ধুরা মিলে মেয়ে দেখছি ধুমায়ে, এমন সময় শোয়েব আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলল, ‘’সং সাজা শয়তান দেখতে চাস তো, ঘাড় ঘুরা।’’ আমরা ওর কথা মত কাজ করি। চোখের সামনে তখন ঢাক-ঢোল-বাদ্য-মাছ-পাখি সমেত চারুকলার বিশাল শোভাযাত্রা। রংয়ের বিশাল ঢেউ তুলে উপস্থিত হয়েছে আমাদের সামনে।
আমার ভীষণ মন খারাপ হয়। শোয়েবকে বলি, ‘’শয়তান কেন বলছিস? ওরা তো কোন খারাপ কাজ করছে না। বাংলাদেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য তুলে ধরছে!’’ শোয়েবের নির্লিপ্ত উত্তর, ‘’আমাদের পাড়ার হুজুর বলছে, চারুকলায় পড়া পোলাপাইনগুলো এক একটা সাক্ষাৎ শয়তান হয়ে বের হয়। ওদের ভিতর ইসলামের কোন নিশানাই থাকে না তখন’’। আমি হুজুরের কথা শুনে সত্যি চুপসে যাই। হুজুরকে অবিশ্বাস করব, এমন কথা মনে আনাও যে পাপ!
শোয়েবের দোয়ার ভাণ্ডার যে কত সুবিশাল ও সর্ববিস্তৃত, তা চাক্ষুষের মহা সুযোগ ঘটে একদিন। আকাশদের বাসায় বড় পার্টি। আকাশের বাবা-মা তাদের বিয়ের চল্লিশ বছর পূর্ণ করতে যাচ্ছেন। সে উপলক্ষে বিশাল আয়োজন। মোটর বাইকে করে আমরা কয়েক বন্ধু হই-হল্লা করে পার্টিতে যাই। পার্টি সাড়ার পর আমরা আকাশদের ছাদে উঠে পড়ি। আকাশ আগেই বোতল লুকিয়ে রেখেছিল। আমরা বোতলে পুরো বেতাল হয়ে আছি, এমন সময় দুঃসংবাদটা এলো, আমাদের সহপাঠী অমিত মারা গেছে। ও অনেকদিন ধরে ক্যানসারে ভুগছিল। খবরটা শুনে আমরা সবাই মর্মাহত। পড়িমরি করে ছুটে যাই অমিতদের বাসায় ।
সৎকারের যোগাড়যন্ত্রে আমরা অমিতের দাদাকে যতদূর সম্ভব সাহায্য করতে থাকি। শোয়েবও আমাদের সাথে ছিল; কিন্তু ও ঠায় দাঁড়িয়ে রইল। আমি এক সময় বিরক্ত হয়ে বলি, ‘’তুই কি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দৃশ্য দেখার জন্য এসেছিস?’’ শোয়েব নিঃস্পৃহ ভঙ্গিতে বলে, ‘’তুই যদি ধর্ম মানস, আমাদের এখন দোয়া পড়া ছাড়া আর কিছু করার নাই।‘’ শোয়েবের ধর্মীয় পটভূমি জানা থাকাতে, আমি আর কথা বাড়াই না। কিন্তু কিছুক্ষণ বাদেই শোয়েবের দোয়া পাঠের আওয়াজ কানে আসে, ‘’ইন্নাল্লিজিনা কাফারু মিন আহলিল কিতাবি ওয়াল মুশরিকিন, ফি নারি জাহান্নামা খালিদিনা ফিহা, উলাইকা হুম শাররুল বারিয়াহ।‘’ আমি আর থাকতে না পেরে জিজ্ঞেস করি, ‘’কি রে, অমিতের জন্য তুই আরবি দোয়া পড়ছিস? ও তো হিন্দু ঘরের ছেলে।‘’ শোয়েব কণ্ঠ নামিয়ে ফিসফিস করে বলে, ‘’হাদিসে আছে, কোন বিধর্মী মারা গেলে তার জাহান্নাম কামনা করে দোয়া করতে হবে।‘’
আমার তখন বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার মত অবস্থা, ‘’কি বললি, তুই তাহলে এতক্ষণ অমিতের জন্য বদ দোয়া করলি?’’ শোয়েবের পান্ডিত্যমাখা বাণী, ‘’আন্তর্জাতিক বা রাষ্ট্রীয় প্রয়োজনে দরকার হলে সান্ত্বনা জানানোর পারমিশন আছে, কিন্তু কোন হিন্দুর মৃত্যু পরবর্তী শান্তির জন্য দোয়া করার কোন হুকুম নাই। কেউ করলে সেটা না-জায়েজ কাজ হবে।‘’ আমি প্রবল বেগে মাথা নাড়ি, ‘’ না না, এটা হতেই পারে না। একটি শান্তির ধর্ম কখনো মানুষের মৃত্যুতে বদ দোয়া করার হুকুম দিতে পারে না।‘’ কিন্তু শোয়েব নিজের মত প্রমাণে ব্যগ্র। চ্যালেঞ্জের সুরে বলে, ‘’তাইলে চল, হুজুররে গিয়া জিগাই’’ হুজুরের কথা শুনে আমি অবশ্য বরাবরের মতই দমে যাই। হুজুরের মত আলেমরা যখন বলেছেন, তখন আমার এ নিয়ে আর বাগাড়ম্বর করা সাজে না!
কিন্তু সেদিন দমে গেলেও আমাদের বাহাস কিন্তু চলতেই থাকে। এইতো সেদিন। বাসা থেকে বাইরে বেরুনোর প্রস্তুতি নিচ্ছি। হঠাৎ শোয়েবের ফোন, “শুনলাম, সিনেপ্লেক্সে পাইরেটস অব ক্যারিবিয়ান আইছে। দেখতে যাবি?’’ আমি বললাম, ‘’আজ যেতে পারব না রে। এখন শিল্পকলা একাডেমীর প্রোগ্রামে যাচ্ছি। একটা ইনভিটেশন কার্ড পেয়েছি।‘’ শোয়েব উৎসুক হয়ে জিজ্ঞেস করে, ‘’কি অনুষ্ঠান?’’ আমি জবাব দেই, ‘’কবিগুরুর সার্ধশত জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে গান-বাজনা হবে।’’ শোয়েব বিদ্রূপের স্বরে বলল, ‘’ও আচ্ছা, এই ব্যাপার! এই জন্য আবার কার্ডও যোগাড় করছিস? নাহ! তোর বিধর্মী-প্রীতি আর গেল না।‘’ আমি অবাক হয়ে বলি, ‘’এর ভিতর বিধর্মী-প্রীতি দেখলি কই?’’ শোয়েবের উত্তর, ‘’ভালবাসার টানে ভুইলাই গেছস যে, রবীন্দ্রনাথ মুসলিম না।‘’ আমার চরম রাগ ধরে, ‘’ এটা কিরকম ভাষা! লোকটা কিন্তু আমাদের কাছ থেকে একটা মিনিমাম শ্রদ্ধা ডিসার্ভ করে। এইটা তো অন্তত অস্বীকার করতে পারবি না যে, উনি আমাদের জাতীয় সংগীতের রচয়িতা।’’ শোয়েবের শ্লেষমাখা কন্ঠ, ‘’শেখ মুজিব হইল জাতির আব্বা, আর রবীন্দ্রনাথ হইল জাতির আব্বার আব্বা। এবার মিলাইয়া নে, সহজেই ধরতে পারবি আমাদের জাতীয় সংগীতের রহস্য। ভাবতে লজ্জাই লাগে, একটা মুসলিম দেশের জাতীয় সংগীত লেখছে কিনা এক হিন্দু লোকে।’’
শোয়েবের অন্য ধর্ম মাত্রেই ঘৃণা আমার ভিতর প্রবল বিবমিষা জাগায়। আমি বলি, ‘’আচ্ছা, বিধর্মীরাও তো মানুষ। তুই তাদের নাম শুনলেই ক্ষেপে যাস কেন?’’ ‘’ওরা মানুষ কিনা জানি না; তবে সুরা ফাতেহার বাংলা অর্থ কখনও পইড়া দেখছস? সেখানে স্পষ্ট বলা আছে, বিধর্মীদের পথে আমাদের পরিচালিত কইরো না। হাদিসেও বিধর্মীর সংস্কৃতি বা বেশভূষা দ্বারা প্রভাবিত হতে নিষেধ করা আছে।‘’ কোরআনের জ্ঞান আমার সামান্যই। কিন্তু সুরা ফাতেহার অর্থ সেই ছোটবেলা থেকেই পাঠ্যপুস্তকে পড়ে আসছি। তাই আমি প্রতিবাদ করে উঠি, ‘’না, তুই ভুল বলছিস। সুরা ফাতেহায় বরং লেখা আছে, তাদের পথ নয়, যারা অভিশপ্ত ও পথভ্রষ্ট।‘’ শোয়েব উত্তপ্ত স্বরে বলে উঠে, ‘’আরে গাধা, ঐ অভিশপ্ত ও পথভ্রষ্টরাই হইল গিয়া বিধর্মী, বুঝলি। বিশ্বাস না হইলে, হুজুরের কাছে চল’’। আমি হুজুরের কথা শুনে আবারো দপ করে নিভে যাই। আমি কখনোই হুজুরের মুখোমুখি হতে চাই না। হুজুরের কোপানলে পড়ে পুলসিরাত ফেল করব নাকি?
কিন্তু হুজুরকে এড়ানো আমার কপালে ছিল না। একদিন শোয়েবদের বাসায় গেছি। শোয়েব নিউজ দেখছিল। ওর মুখ থমথমে। আমি জিজ্ঞাস করি, ‘’কি রে, মুখটা একেবারে বাংলা পাঁচের মত করে রেখেছিস কেন?’’ শোয়েবের কণ্ঠ থেকে গনগনে ক্ষোভ ঝরে পড়ে, ‘’সব শালারা নপুংসক। নইলে মুসলমানদের দেশ থেকে আল্লাহর নাম তুলে দিতে পারে।‘’ আমি ভাবলাম, ব্যাপারটা আমার আগেই আঁচ করা উচিত ছিল। সম্প্রতি সংবিধানের ১৫তম সংশোধনী নিয়ে দেশব্যাপী তোলপাড় চলছে। গত কয়েকদিন টকশোগুলো এ নিয়েই সরব। ইসলামি দলগুলো ‘আল্লার উপর আস্থা ও বিশ্বাস’’ বাদ দেয়াতে চরম বেজার। তাদের মতে, সরকার তার নির্বাচনী ওয়াদা ‘’কোরান ও সুন্নাহ পরিপন্থী কোন কিছু করা হবে না’’ পুরাই বরখেলাপ করেছে। অন্যদিকে, বাম দলগুলোও রাষ্ট্রধর্ম বহাল রাখায় চরম ক্ষুদ্ধ। তাদের মতে, বাহাত্তরের সংবিধান ফিরিয়ে আনার নামে জনগণের সাথে প্রতারণা করেছে সরকার।
যাহোক, আমি আমার বন্ধুকে শান্ত করার জন্য বলি, ‘’দেখ, এত চিন্তা করিস না। বিসমিল্লাহতে তো অন্তত আল্লাহর উপর আস্থার কথা বলা আছে। তাছাড়া রাষ্ট্রধর্ম ইসলামও তো বাতিল হয় নাই।‘’ শোয়েব আমার দিকে চোখ বড় বড় করে তাকায়। চোখ দিয়ে আগুন ঠিকরাচ্ছে। কিছু না বলে আমাকে প্রায় জোর করে ঘরের বাইরে নিয়ে আসে। আমি ওর এই অস্বাভাবিক আচরণের মাথামুণ্ড কিছুই বুঝতে পারিনা, জিজ্ঞেস করি, ‘’কি হল, তুই এমন করছিস কেন?’’ শোয়েব বলে, ‘’চল আমার সাথে, বেশি দূর যাব না।‘’ আমি শঙ্কিত কণ্ঠে বলি, ‘’না, আগে বল, কই যাচ্ছিস?’’ শোয়েবের নির্লিপ্ত উত্তর, ‘’হুজুরের রিমান্ডে! তোর উপর বদজিন আসর করছে। তাড়াতাড়ি না ছাড়াইলে তুই সাক্ষাৎ শয়তান হয়ে যাবি।’’
শোয়েবের উপুর্যুপুরি দোয়ার বাহারে ক্ষণে ক্ষণে মূর্ছা যেতে হয়। আর ওর তাত্ত্বিক গুরুর আদালতে গেলে যে গর্দান নিয়ে নেবে না, তা কে বলতে পারে? আমি এক ঝটকায় নিজেকে মুক্ত করে বলি, ‘’কি পাগলামি শুরু করলি! হুজুরের কাছে যাওয়ার আমার বিন্দুমাত্র ইচ্ছা নেই।‘’ কিন্তু শোয়েব নাছোড়বান্দা, ‘’ দ্যাখ, তুই যদি আমার সাথে না যাস, তাইলে মনে করবি, আমাদের সম্পর্ক আজই শেষ।’’ তো বন্ধুত্ব টিকিয়ে রাখতে অগত্যা আমাকে ভীতিকর ট্যাবলেটটি গিলতেই হয়।
মাওলানা আসিফ উদ্দিন মাজহার আমাদের দেখে খুব খুশি হন। বোঝাই যায়, শোয়েবের সাথে উনার অনেক দিনের সম্পর্ক। হুজুরের বয়স খুব বেশী না; কিন্তু চোখের অবস্থা করুণ। বিবর্ণ চোখদুটি পুরোপুরি মেলতে উনার মনে হয় বেগ পেতে হয়। তাই অর্ধনিমীলিত চোখেই আমাদের সাথে কথা বললেন, ‘’মসজিদ বোঝাই থাকে বৃদ্ধ লোকে। অথচ খেলাফত কায়েমের জন্য জরুরি হইল তোমাদের মত যুবক ছেলেবৃন্দের অংশগ্রহণ।‘’ শোয়েব কাল বিলম্ব না করে হুজুরের নিকট বিনীত আবেদননামা পেশ করে, ‘’হুজুর, আমরা আপনের কাছ থেকে একটা বিষয় জানার জন্য আসছি।’ হুজুরের তড়িৎ অনুমোদন, ‘’একটা কেন, সব বিষয়েই তোমাদের জানা দরকার। না জানার কারণেই তো আজ মুসলিম জাতির এই দুর্দশা! তাড়াতাড়ি বইলা ফালাও’’। শোয়েব উত্তেজিত কণ্ঠে জিজ্ঞাসা করে, ‘’হুজুর, সংবিধানে যে বিসমিল্লাহ আছে, তার ভিতর কি আল্লাহর উপর আস্থার কথা বলা আছে?’’
হুজুরের মুখমণ্ডল অনেকটাই প্রসারিত হয় প্রশ্নটি শুনে। খুশী ভরা কণ্ঠে বলেন, ‘’খুব সময়োপযোগী একটা প্রশ্ন করছ বাবা। বিসমিল্লাহ নিয়া আসলে ভয়ানক খেলা চলতাছে। বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম-এর বাংলা অর্থ আগে ছিল ‘পরম দয়ালু আল্লাহর নামে’। আর এখন করছে ’পরম করুণাময় সৃষ্টিকর্তার নামে’। অন্যদিকে, ‘আল্লাহর উপর আস্থা’ও বাদ দিয়া দিছে। এখন তাইলে তোমরাই কও, এই দেশের মুসলমান কার উপর আস্থা রাখব? তোমরা কিছু বুঝতাছ?’’
আমাদের দুজনের মুখেই কোন রা নেই। আমাদের হতভম্ব মুখ দেখে আমোদিত হন হুজুর। আধবোজা চোখে আবার বয়ান শুরু করেন, ‘’সংবিধান মানলে এই দ্যাশের মুসলমানগো এখন থেকে আস্থা রাখতে হবে সৃষ্টিকর্তার উপর। আর এই সৃষ্টিকর্তা বিধর্মীদের, আমাদের না। সুতরাং, এই বিসমিল্লাহকে বিশ্বাস কইরো না। এই বিসমিল্লায় গলদ আছে। মারাত্মক গলদ।‘’
শোয়েব অর্ধেক বিজয় অর্জন করেছে; এখন পূর্ণ বিজয়ের লক্ষ্যে হুজুরকে ঝটপট দ্বিতীয় প্রশ্নটা করে ফেলে, ‘’আর রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম যে বহাল আছে, সেই ব্যাপারে আপনার মত কি হুজুর?‘’ হুজুরের প্রজ্ঞাপূর্ণ উত্তর, ‘’এইটাতেও গলদ। খেয়াল করলে দেখবা, অন্য ধর্মরেও সমান মর্যাদা দেয়া হইছে। তাছাড়া মুসলিম দেশগুলোর সাথে সম্পর্ক রাখার বিধানও বাতিল করছে। সুতরাং, এই রাষ্ট্রধর্ম নিয়াও মাতামাতির কিছু নাই। সব ফাঁকিবাজি!’’ এতক্ষণ বাদে শোয়েবের মুখে হাসি ফুটে। বিজয়ীর ভঙ্গিতে বলে, ‘’দেখলি তো, বলছিলাম না?’’ আমি রণে ভঙ্গ দিয়ে হার মেনে নেই।
হুজুরের কথার উপর আর কোন কথা চলে না। তবু নিছক কৌতূহল বশে জিজ্ঞাসা করি, ‘’তো হুজুর, এই গলদি বিসমিল্লাহর বিরুদ্ধে আপনারা আন্দোলন নামবেন না?’’ হুজুরের কণ্ঠ জ্বালাময়ী হয়ে উঠে এবার, ‘’তুমি কি মনে করছ? আল্লাহর বান্দারা বইসা বইসা আয়েস করতাছে? অনেক আগেই তারা মসজিদ থেকে আল্লাহর রাস্তায় বের হয়ে গেছে। গলদ দূর না হওয়া পর্যন্ত তারা আর ঘরে ফিরবে না। পথেই থাকবে। তোমরাও যত দ্রুত সম্ভব জিহাদে শরীক হইয়া যাও।‘’
জিহাদের কথা শুনে আমি সত্যি সত্যি ভিরমি খাই। তবু হুজুরকে তো নারাজ করা যায় না। তাই বলি, ‘’আপনি ঠিকই বলেছেন, হুজুর। বিসমিল্লাতেই ভয়ানক গলদ লেগে আছে। তা দূর না হওয়া পর্যন্ত আমাদের তো পথে পথেই ঘুরতে হবে। তার আগে শান্তির ঘরে ফেরার প্রশ্নই উঠে না।‘’ জানি না, আমার কথা হুজুরের কানে গেল কিনা। তার চোখ তখন পুরোই নিমীলিত। বিসমিল্লাহর গলদ মনে হয় সেখানে শক্ত তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে!
কাজি মামুন
১১/০২/২০১২
১
মন্তব্য
আপনার বন্ধুটি ইতরশ্রেণীর!
আপনার সঙ্গে তার প্রাথমিক কিছু কার্যকলাপের পর বন্ধুত্ব ছিল অথবা এখনো বন্ধুত্ব আছে ভেবে খুবই অবাক হচ্ছি!
শেষ ৬ প্যারায় আপনার আপনার বন্ধুর এবং এবং হুজুরের মধ্যে তফাৎ করতে পারলাম না। হুজুর/আপনার বন্ধুর কথায় আপনার সম্মতি না থাকলে (যেটা নেই বলেই আপনি দূর্বলভাবে উল্লেখ করার চেষ্টা করেছেন) আপনার পক্ষের যুক্তিটিও এখানে থাকার দরকার ছিলো!
শেষ পর্যন্ত পড়ে মনে হলো, রাষ্ট্র, ধর্ম, ইত্যদি বিষয়ক যে সংশয় ছিল তা হুজুরের কথা শুনে আপনার মন থেকে দূর হয়েছে! যে কথাটি আপনি বলতে পারেননি তা কি বন্ধু এবং হুজুরের মুখ দিয়ে বলালেন?
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
না ভাই; বরং যে কথাটি এই বন্ধু বা হুজুরকে সাহস করে বলতে পারিনি, তাই এখানে বলতে চেয়েছি। দেখুন আমাদের সমাজে এমন বন্ধু বা হুজুরদের সংখ্যাই বেশী। বেশী থাকার কারণ হল, মুসলিমরা সমাজ বিবর্তনে পিছিয়ে পড়েছে সারা বিশ্বেই। বিপ্লব পাল খুব সুন্দর করে ব্যাখ্যা করেছেন মুক্তমনায় 'দেরিদার ডিকনস্ট্রাকশন তত্ত্বের আলোকে ধর্মগ্রন্থের ব্যাখ্যা'' শিরোনামের লেখাটিতে।
আমার মূল বার্তাটি রয়েছে সমাপ্তি প্যারায়:
দেখুন হুজুরের মত আমিও বিসমিল্লাহর গলদের কথা বলেছি; কিন্তু হুজুরের অর্থ আর আমার অর্থ এক নয়। আমি বিসমিল্লাহর সেই গলদের কথা বলেছি, যা হুজুরের মত বিশ্বব্যাপী অসংখ্য মুসলিমের চোখে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে, তাদের অন্ধ করে রেখেছে। তারা সমাজ বিবর্তনে পিছিয়ে পড়ছে। এই জন্যই তাদের পথে পথে জিহাদ করে বেড়াতে হয়, অন্য জাতিরা যখন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নয়নে পরস্পরের সাথে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হচ্ছে। মোট কথা, মুসলিমদের বিসমিল্লায় আসলেই গলদ রয়েছে (মানে ধর্মের ব্যাখ্যায়/ট্রিটমেন্টে গলদ রয়েছে, যা উপরের লেখায় বিপ্লব পাল দেখিয়েছেন), যার কারণে মুসলিম বিশ্ব সহিংস, অস্থির ও অশান্ত; শান্তির ঘর-দুয়ার আর জীবন-যাপন তাদের জন্য সুদূর পরাহত।
এবার মনে হয় বোঝাতে পেরেছি। কষ্ট করে লেখাটা পড়ার জন্য ও মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। ভাল থাকবেন।
চমতকার ভাবে বর্ণনা করেছেন বাংলাদেশের একটা বিশেষ শ্রেনীর লোকের বৈশিষ্ট্য। খুব উদ্বেগের কথা হল, এই শ্রেনীর লোক দেশে দিনকে দিন খুব দ্রুতগতিতে বেড়ে চলেছে। আর এইসব ধর্মীয় বিষয়গুলোকে স্পর্শকাতর মনে করে উদারপন্থিরা চুপ করে থাকে বলেই (যেমনটি এই গল্পের উত্তম পুরুষ করেছেন) এইসব শ্রেনীর লোকজনের সাহস দিনে দিনে আরো বাড়তে থাকে।
অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া আপনার মন্তব্যের জন্য।
চুপ করে থাকা ছাড়া উপায় কি বলেন? এদের সংখ্যাই যে বেশী। ধর্মের নিয়ম-কানুনের ব্যাপারে আপনার অবহেলা সহ্য করলেও, ধর্মের প্রতি আপনার আনুগত্যের অভাবকে মোটেই সহ্য করা হবে না। ধর্মের নামে যেসব কুসংস্কার বা পশ্চাৎপদ চিন্তা-ভাবনা রয়েছে, তার প্রতি আপনার শতভাগ আনুগত্য বা বিশ্বাস থাকতে হবে। আমাদের সমাজে এই বিশ্বাসটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ; আপনি নামায, রোযা, যাকাত ইত্যাদি না পালন করেও এই সমাজের ভালবাসা পাবেন; কিন্তু মৌলবাদী চিন্তাভাবনার বিরোধিতা করুন, আপনি এই সমাজের দ্বারা চরমভাবে ঘৃণিত ও নিগৃহীত হবেন। অবশ্য এই সমাজকে এজন্য পুরোপুরি দোষ দেয়া যায় না। মূল কারণ হল, মুসলিমদের সমাজ বিবর্তনে পিছিয়ে পড়া। বিপ্লব পাল খুব সুন্দর করে ব্যাখ্যা করেছেন মুক্তমনায় 'দেরিদার ডিকনস্ট্রাকশন তত্ত্বের আলোকে ধর্মগ্রন্থের ব্যাখ্যা'' শিরোনামের লেখাটিতে।
সুন্দর মন্তব্যের জন্য আবারো ধন্যবাদ!
ভালো লিখেছেন, আমার মতে সব মানুষের দুইটা চেহারা, একটা যেটা তারা মুখোশ হিসেবে ব্যাবহার করে, আরেকটা যেটা তারা মুখোশের আড়ালে রাখে, আর আড়ালের ঐ চেহারাটাই আসল, আপনার বন্ধুর মানসিক সুস্থতার জন্য শুভকামনা রইলো|
----------------------------------------------------------------------------------------------
"একদিন ভোর হবেই"
অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া। আপনি অন্তত বুঝতে পেরেছেন লেখাটার উদ্দেশ্য। শোয়েবের মত আপাদমস্তক স্ববিরোধী ও ধর্মীয় উন্মাদ একটি চরিত্রকে ফুটিয়ে তুলতে চেয়েছি এই লেখায়। আমার লেখা কাঁচা হতে পারে, কিন্তু তীব্র কষ্ট হচ্ছে এই ভেবে যে, অনেকে আমাকেই শোয়েব বানিয়ে ফেলল!
এই বিষয়ে বা কাছাকাছি বিষয়ে সচলে আরো বেশ কিছু লেখা আছে। গল্পের ছলে যে মেসেজ দিতে চাইলেন সেটা বুঝতে পারছি, কিছু ব্যাপারে সহমতও আছে, কিন্তু লেখার ধরনটা আরো পরিণত হতে পারত।
---
সংযুক্তিঃ লেখাটা আরেকবার পড়লাম। খুব অস্পষ্ট এবং ধোঁয়াটে একটা লেখা। পরিষ্কার করে লিখেন।
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
ভাই, আপনার কাছে যদি ধোঁয়াটে লাগে, সেটা আমারই ব্যর্থতা। এবং আমি সেই দায়ভার মাথা পেতে নিতে রাজী আছি। আমি অনার্য সংগীত ভাই এবং সচল জাহিদ ভাইয়ের মন্তব্যের উত্তরে আমার অবস্থান নিয়ে লিখেছি। আশা করি, আপনি বুঝতে পারবেন। সবচেয়ে বড় কথা হল, আমার দুর্বল লেখার সমালোচনা করতে যেয়ে আমাকেই শোয়েব বানিয়ে ফেলেননি; এজন্য আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ। পড়ার জন্যও ধন্যবাদ। আমার লেখার ভুল-ত্রুটি দেখিয়ে দিলে খুব খুশি হব।
কাজি মামুন
১১/০২/২০১২
ইমেইল আইডিঃmkazimamun@gmail.com ,
লেখাটিতে আপনার বক্তব্য ও অবস্থান বুঝতে পারিনি। আমি কি পাঠক হিসেবে বুঝতে ব্যার্থ, নাকি লেখক হিসেবে আপনি বুঝাতে ব্যার্থ, নাকি আপনি আপনার অবস্থান পরিষ্কার করতে চাচ্ছেননাঃ এই বিষয়গুলি সম্পর্কে স্বচ্ছ কিছু বলবেন কি?
আপনি ফুটনোটে লিখেছেনঃ
এই লেখায় এই দুটি শ্রেনীর প্রতিনিধিত্ত্বকারী কারা? আপনি নিজে কোন শ্রেনীর বলে নিজেকে মনে করেন?
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
দেখুন ভাইয়া, সমাজের যে বিষয়গুলো আমাকে ভাবায়, তা লেখায় প্রকাশ করি। যে অসংগতিগুলো চোখে পড়ে, বিভিন্ন চরিত্রের আলোকে বলার চেষ্টা করি। গল্পের উত্তম পুরুষ হলেন উদারপন্থী মুসলিম এবং তার বন্ধু শোয়েব হলেন অনুদার গোষ্ঠীর মুসলিম।
রূপম (ধ্রুব বর্ণন) ভাইয়ার 'নাস্তিক মুসলিম' লেখাটিতে উনি তিন শ্রেণীর মুসলিমের কথা বলেছেন; (১) কেতাবি মুসলিম, যারা সবকিছুকে কেতাবের আলোকে ব্যাখ্যা করেন, সুনির্দিষ্ট নিয়ম-কানুনের ছকে যারা মুসলিমদের চরিত্র নির্ধারণ করতে চান; (২) নাস্তিক মুসলিম, যারা মুসলিম ধর্মকে বর্জন করেন কেতাবি মুসলিমদের দেয়া ছকের আলোকে তাকে ব্যাখ্যা করে এবং সত্যিকার মুসলিম চরিত্র ধরতে যারা ব্যর্থ; (৩) সাধারণ মুসলিম, যারা কোন কেতাবি নিয়ম-কানুনে বন্দী থাকেন না; কেতাবের জ্ঞানও যাদের সামান্য; এরাই মুসলিমদের চরিত্র বদলে দেন; সংস্কৃতি, রীতি-নীতি বদলে যায় এদের হাত ধরেই এবং মুসলিম চরিত্র বা সংস্কৃতি বুঝতে হলে এদের উপরই নির্ভর করতে হবে। লালন, সুফিবাদ প্রভৃতির জন্ম এই সাধারণ মুসলিমদের হাতেই; তাই এদেরকে গ্রহণযোগ্যতার দৃষ্টিতে দেখা হয়েছে। কিন্তু এই কেতাবি জ্ঞান রহিত সাধারণ মুসলিমদের ভিতর দুটো গ্রুপ রয়েছে, (১)উদার , (২)অনুদার। আমার মতে, অনুদার সাধারণ মুসলিমদের কিছুতেই গ্রহণ করা যায় না। শুধুমাত্র উদারপন্থী মুসলিমদের হাতেই সার্থক-ভাবে মুসলিম চরিত্র বদলে যাওয়া সম্ভব। অনুদারদের প্রচেষ্টা এ ক্ষেত্রে ধ্বংসাত্মক হতে বাধ্য।
দয়া করে লেখাটির সমাপ্তি প্যারা পড়ুন। দেখতে পাবেন, এই লেখার হুজুর চরিত্রটি 'বিসমিল্লাহর গলদ' নিয়ে চিন্তিত। পাশাপাশি, শোয়েবও তার ভাবশিষ্য হিসেবে চিন্তিত। কিন্তু লেখার 'উত্তম পুরুষ' (যাকে আমি সাধারণ উদার মুসলিম হিসাবে দেখিয়েছি) কি চিন্তিত? উত্তর হল, সেও চিন্তিত। কিন্তু তার চিন্তার কারণ হুজুরের কারণ থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। উত্তম পুরুষ বিসমিল্লাহর সেই গলদের কথা বলেছে, যা হুজুরের মত বিশ্বব্যাপী অসংখ্য মুসলিমের চোখে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে, তাদের অন্ধ করে রেখেছে। যে কারণে তারা সমাজ বিবর্তনে পিছিয়ে পড়ছে। এই জন্যই তাদের পথে পথে জিহাদ করে বেড়াতে হয়, অন্য জাতিরা যখন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নয়নে পরস্পরের সাথে প্রতিযোগিতা করছে। মোট কথা, মুসলিমদের বিসমিল্লায় আসলেই গলদ রয়েছে (মানে ধর্মের ব্যাখ্যায়/ট্রিটমেন্টে গলদ রয়েছে, যা বিপ্লব পাল মুক্তমনায় 'দেরিদার ডিকনস্ট্রাকশন তত্ত্বের আলোকে ধর্মগ্রন্থের ব্যাখ্যা'' শিরোনামের লেখায় দেখিয়েছেন), যার কারণে মুসলিম বিশ্ব তুলনামূলক সহিংস, অস্থির ও অশান্ত; শান্তির ঘর-দুয়ার আর জীবন-যাপন তাদের জন্য সুদূর পরাহত। উপনিবেশবাদীদের সবচেয়ে বড় শিকার তাই মুসলিমরাই।
মনে হয়, কিছুটা হলেও আমার অবস্থান পরিষ্কার করতে পেরেছি। যদি না পেরে থাকি, তা আমারই ব্যর্থতা, পাঠকের ব্যর্থতা হওয়ার প্রশ্নই আসে না।
আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
কাজি মামুন
১১/০২/২০১২
ইমেইল আইডিঃ
,
একটু গিয়ানজাম আছে ভাইডি।
দুই নম্বর গ্রুপে নাস্তিক মুসলমান ছিলো না। মানে যারা ''মুসলিম ধর্মকে বর্জন করেন কেতাবি মুসলিমদের দেয়া ছকের আলোকে তাকে ব্যাখ্যা করে এবং সত্যিকার মুসলিম চরিত্র ধরতে যারা ব্যর্থ;'' তাদেরকে আমি নাস্তিক মুসলমান নাম দেই নাই। তাদের আসলো কোনো নামই দেয়া হয় নাই লেখায় (একবার 'আক্ষরিকতাবাদী নাস্তিক' কথাটা উল্লেখ করেছি মনে হয়)। হয়তো তারা কেবলই নাস্তিক বা নব্যনাস্তিক বা প্রাক্তন-মুসলমান নাস্তিক। অন্যদিকে নাস্তিক মুসলমান টাইটেলটা কিন্তু আনয়ন করেছি ভিন্ন একটা গোষ্ঠির জন্যে, যারা উপর্যুক্ত তিনটা ভাগের একটার মধ্যেও পড়ে না। ফলে দুই নম্বর গ্রুপেও পড়ে না। দুই নম্বর গ্রুপে কেমনে পড়বে, তারা তো ঈশ্বরের অস্তিত্বে অবিশ্বাস করলেও সকল প্রকার মুসলমানিত্ব বর্জন করে উঠে নাই। মানে সেইটা নিয়ে তাদের সংগ্রাম নাই। মুসলমান বিরোধিতা তাদের সংগ্রাম না। ফলে নাস্তিক মুসলমান বলতে পারেন চার নম্বর গ্রুপ, যাদেরকে সহজেই দুই নম্বর গ্রুপের বলে ভুল হয়।
তা আপনার লেখার শৈলী, পূর্ণতা, বক্তব্যের স্পষ্টতা নিয়ে মন্তব্য করবো না। তবে মন্তব্যে আপনার আলোচ্যটা বেশ স্পষ্ট হয়েছে। আপনার মন্তব্যের ভিত্তিতে আপনার উত্থাপিত বিষয় নিয়ে আলোচনা করি।
আপনি বলছেন, "এই কেতাবি জ্ঞান রহিত সাধারণ মুসলিমদের ভিতর দুটো গ্রুপ রয়েছে, (১)উদার , (২)অনুদার।" অর্থাৎ তিন নম্বর গ্রুপের মুসলমানদের মধ্যে উদার অনুদার, দুইভাগ। কথা মোটা দাগে সত্য। আমার লেখায় তিন নম্বর গ্রুপের উদার অংশের কথাই আসলে আছে, অনুদার অংশ নাই। আপনার এই বিভাজন পক্ষগুলোকে স্পষ্ট করলো।
সাধারণ মুসলমানদের মধ্যে অনুদার যে অংশটা, তাদের খুঁটি বা যৌক্তিক শক্তি কিন্তু আবার একনম্বর গ্রুপ, অর্থাৎ কেতাবি মুসলমানেরা। আপনার গল্পের হুজুরটি কেতাবি মুসলমানের প্রতিনিধি। তিনি কোরান হাদিসভিত্তিক একটা আক্ষরিক, ডিডাক্টিভ সিস্টেম থেকে ওই সিস্টেমের ভেতরে সঙ্গতিপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো ডিরাইভ করে দেন। এর সাথে যদিও অবধারিতভাবে যুক্ত হয় নিজের মনমানসিকতা ও নিজের মতো করে নেয়া পাঠের প্রভাব। তবে বৈশিষ্ট্যে এরা ডিডাক্টিভ। এর সাথে থেকে থেকে গল্পের শোয়েবও কিন্তু অনুদার সাধারণ মুসলমান হতে গ্রুপ ১ তথা কেতাবি, ডিডাক্টিভ মুসলমান হয়ে উঠছে।
এখন যদি গ্রুপ ৩ এর সাধারণ মুসলমান নিয়ে চিন্তা করেন, 'অনুদার' সাধারণ মুসলমানদেরকে নৈতিক সমর্থন দেওয়ার জন্যে আছে গ্রুপ ১-এর কেতাবি মুসলমানেরা। ফলে নব্যনাস্তিকদের আক্রমণ তাদের তেমন মনোভাব পরিবর্তন করে উঠতে সক্ষম হয় না। কারণ তারা বিষয়টা গ্রুপ ১ এর চেয়ে কম বোঝে। আবার গ্রুপ ১ তাদেরকে কেতাবি মালমশলা দিয়ে সন্তুষ্ট রাখে। ফলে নব্যনাস্তিকের আক্রমণের সরাসরি শিকার হয় উদার মুসলমান। নব্যনাস্তিকরাও অধুনা সিদ্ধান্ত নিয়েছে মডারেট মুসলমানদের কোনো ছাড় দেয়া নয়। 'উদার' সাধারণ মুসলমান আবার গ্রুপ ১ এর কেতাবি মুসলমান ও তাদের চেলা অনুদার সাধারণ মুসলমানেরও আক্রমণের শিকার। কিন্তু ধর্মীয় নিপীড়নের বিচারে তাদের দোষও সবচেয়ে কম, প্রায় নাই। তাই তাদেরকে সমর্থন করা প্রয়োজন বলে প্রস্তাব করেছিলাম।
অনুদারদের জুড়ি যেমন গ্রুপ ১ এর কেতাবি মুসলমান, উদারদের জুড়ি হিসেবে তেমনি নাস্তিক মুসলমানের আবির্ভাব ঘটতে পারে। তারা উদারদেরকে তাদের মুসলমানিত্বের মধ্যে থেকেই উদারতার চর্চা করে যাওয়াটাকে নৈতিকভাবে সমর্থন দিতে পারেন। এতে সাংস্কৃতিক সঙ্কটও তৈরি হয় না। কারণ উদার মুসলমানদের সাথে (একই সমাজের) নাস্তিক মুসলমানদের সাংস্কৃতিক পার্থক্য বেশ নগণ্য হবার কথা।
এর বিকল্প হলো তাদের সকলকে মুসলমানিত্ব ছেড়ে দিতে বলা, যেটা আমার কোনো বাস্তব সমাধান মনে হয় না, যেটার প্রতি আমার কোনো নৈতিক সমর্থনও নেই। কারণ এটা মানুষের ধর্ম পালনের মৌলিক অধিকারটিকেই অস্বীকার করে। উদাররা বাই ডেফিনিশানই যেহেতু উদার, তাদের মুসলমান ধর্ম বিশ্বাসে বা পালনে কার আর কী কী সমস্যা বাকি থাকতে পারে, সেটা আমার বোধগম্য হয় না।
রূপম (ধ্রুব) ভাইয়া,
আমি এই লেখায় খুব করে আপনাকে চাইছিলাম; আপনার মন্তব্য পেয়ে তাই প্রচন্ড খুশী হয়েছি।
আমার এই লেখার চরিত্রগুলো আমার বহুদিন ধরে চেনা; গল্পের শোয়েব ও তার হুজুরের আচার-আচরণ ও কথা-বার্তা আমাকে দীর্ঘদিন ধরেই পোড়াচ্ছে! আর মনের ভিতরে জন্ম দিচ্ছে ভয়াবহ দ্বন্দ্বের! অনেক কাছের মানুষকে যখন অন্য ধর্মকে নিয়ে প্রবল ঘৃণা জড়ানো কটাক্ষ করতে দেখি, তখন হৃদয় বিদীর্ণ হয়। আবার, অনেক চরমপন্থি নাস্তিককে যখন নিরীহ ও শান্তিপ্রিয় মুসলমানকে নিয়ে হাসি-তামাসা করতে দেখি, তাও মেনে নিতে পারি না।
এরই মাঝে মুক্তমনায় ''হিজাবী মেয়ে বেহেস্তি সুখ'' শীর্ষক নিবন্ধে আপনার মন্তব্যে ''নাস্তিক মুসলমান'' এর লিংক পাই; সেখানে আবার পেয়ে যাই ''খোদার প্রকোপের প্রায় বাইরে বা নাস্তিকের চেয়েও কম কম আস্তিকতা'' এর লিংক। বিশ্বাস করুন, আমার বহুদিনের দ্বন্দ্বের একটা মীমাংসা সেখানে পেয়ে যাই। আমি যে কি পরিমাণ আলোড়িত হয়েছিলাম, তা আমার মন্তব্য পড়লেই বোঝা যাবে।
আপনার লেখা দুটি পড়ে আমি আমার চেনা-জানা মানুষদের সাথে মেলাতে থাকি। আমি সবাইকে পাই: কেতাবি মুসলিম (হুজুর), সাধারণ উদার মুসলিম (গল্পের উত্তম পুরুষ), দার্শনিক মুসলিম (আমার শিক্ষক), কেতাবি নাস্তিক ও দার্শনিক নাস্তিক। কিন্তু অনুদার সাধারণ মুসলিম আপনার লেখাতে পাই না, যাদেরকে আমি আমার চারপাশে খুব করে পেয়েছি। তখনই আমার মাথায় গল্প লেখার ভুত চেপে বসে! এই হল, 'বিসমিল্লায় গলদ' গল্পের জন্ম-কথা!
আপনার এই সমাধান আমার ভিতরের সব দ্বন্দ্বের আপাত অবসান ঘটিয়েছে।
এখানে এসে আমার মধ্যে নতুন দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে। কেন ধর্ম পালনের অধিকারকে মৌলিক মনে হয় আপনার? কেউ যদি তার দুরারোগ্য ব্যাধিকে বয়ে বেড়াতে ইচ্ছুক হয়, আপনি কি একে ফ্রি উইল বা বেসিক হিউমান রাইট বলবেন?
ভাইয়া, উদার হোক বা অনুদার হোক, ধর্মকেই বাই ডেফিনিশন একটা সমস্যা হিসাবে অনেক ক্ষেত্রে দেখা হয়। তসলিমা নাসরিন এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন:''কিছু উদারপন্থী লোকজন আছেন, যারা এ প্রশ্নে ইসলামকে ডিফেন্ড করেন, আর সমস্ত সমস্যার জন্য কেবল মৌলবাদীদের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে ক্ষান্ত হন। কিন্তু ইসলাম নিজেই তো নারী নির্যাতনকারী। ইসলাম নিজেই তো গণতন্ত্র সমর্থন করে না। আর সমস্ত মানবিক অধিকার হরণ করে।'' (তথ্যসূত্র: নৈতিকতা কি শুধুই বেহেশতে যাওয়ার পাসপোর্ট, অভিজিৎ রায়, ৫ম অধ্যায়, বিজ্ঞান ও ধর্ম - সংঘাত নাকি সমন্বয়?, মুক্তমনা ই-বুক)।
(পুনশ্চঃ আমার মনে আসা প্রশ্নগুলো করলাম। এর পেছনে কোন উদ্দেশ্য নেই। আমি কোন পক্ষ নিয়ে প্রশ্ন করিনি।)
আপনি কি ধর্মকে দুরারোগ্য ব্যাধি বলতে চাইছেন। এইসব তুলনাগুলো খুব মারাত্মক। শুনতে গালভরা। কিন্তু খেয়াল করবেন, একটা দুরারোগ্য ব্যাধির ভৌত ক্ষতির আলামত আছে, নিশ্চিতভাবে যে সেটা ক্ষতিকর জানা আছে। ধর্মের ক্ষেত্রে সেরকম মেডিকেল লেভেলের ডিডাক্টিভ প্রমাণ কিন্তু নেই। আপনি বড়জোর বলতে পারেন যে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ধর্ম পালন করলে অমুক হতে দেখা যায়। কিন্তু তার মানে কিন্তু এই না যে ধর্ম পালন করলেই অমুকটা হবেই। কিছু কিছু ক্ষেত্রে যদি সমস্যা হয়, তার জন্যে আইন আদালত আছে, কিন্তু বাই ইটসেল্ফ, আমার একটা বা দশটা বা শূন্যটা ঈশ্বরে বিশ্বাস কার কী সমস্যা তৈরি করতে পারে? লক্ষ্য রাখবেন, অধিকারের সাথে কিন্তু অন্যের অধিকার হরণের প্রশ্ন জড়িত। আমার রোগ যদি অন্যের ক্ষতি না করে, সেক্ষেত্রে সেটা না সারানোর অধিকার আমার আছে। বাংলাদেশে আছে। সকল গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রেই আছে। কিউবায় নাই যদিও। যা যা করলে আপনার ক্ষতি হয় না, তার সকল করার অধিকার আমার কেনো নাই?
এখানে আবার ইসলামকে কর্তা হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। এখানে তসলিমা কেতাবি নাস্তিক সাজতেছেন। ইসলামের মাত্র একটা রূপ দেখছেন। এই কথার ইম্প্লিকেশান হলো ইসলাম মানা সকল মুসলমানই নারী নির্যাতন করে, গণতন্ত্র সমর্থন করে না, সমস্ত মানবিক অধিকার হরণ করে। উনি বলবেন, আমি ইসলামের কথা বলেছি, মুসলমানের কথা বলি নাই। আমি বলবো, মুসলমানের বাইরে আলাদা করে ইসলামের পরিচয়টা আপনি কোথা হইতে উদ্ধার করলেন? আল্লা আইসা আপনেরে বইলা গেছে? আল্লা তো নাই। তাইলে মুসলমান যা মানে তার বাইরে কীভাবে ইসলামের একটা অস্তিত্ব থাকে আপনার কাছে?
আর যদি মুসলমান যা মানে সেই ইসলামের কথায় আসেন, তাহলে নারী নির্যাতন মানবিক অধিকার হরণ এগুলো আর ডিডাক্টিভ ফ্যাক্ট থাকে না। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ঘটতে পারে, সকল ক্ষেত্রে ঘটে এটা একটা ডাহা মিথ্যা কথা। এর বিন্দুমাত্র বৈজ্ঞানিক মূল্য নাই। পরিসংখ্যানগত মূল্য নাই। গবেষণার ভাষায় বললে কথাটা হয়তো হবে যে পরিসংখ্যানে দেখা গেছে মুসলমানদের মধ্যে অমুক পারসেন্ট নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। তা সেটার ভিত্তিতে যদি তারা ধর্ম পালনের অধিকার হরণ করতে চায়, তার আগে আরো অনেক বিষয়েই তাদেরকে আপত্তি উত্থাপন করতে হবে। হাউ অ্যাবাউট মদ্যপান? মদ্যপান করে মানুষ গোলাগুলি করে, গাড়ি চালিয়ে অন স্পট অন্যকে মেরে ফেলে। মদ্যপানের মেডিকেল তেমন কোনো উপকারিতা নেই, অপকারিতা ভয়াবহ। তাইলে ওইটাকে তারা একটা সমস্যা হিসেবে দেখে না কেনো? কারণ তারা মনে করে যে মদ্যপান তারা নিজ বুঝে ঠিক মতো করে মানুষকে না মেরে ঠিকই চলতে পারবে। কিন্তু কোনো একটা অদ্ভূত কারণে ধার্মিকের পক্ষে তার নিজ ধর্ম পালন করে অন্যের অধিকারে ব্যাঘাত না ঘটিয়ে ঠিক ঠিক চলা কোনোভাবেই সম্ভব না। তাই না? এইসব খোঁড়া যুক্তি। একমাত্র কম্যুনিস্টরাই মনে করে ধর্ম বাই ডেফিনিশান ক্ষতিকর ও সেটা পালনের মানুষের অধিকার নাই। সকল গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রেই ধর্ম পালনের মানুষের মৌলিক অধিকার আছে। থমাস জেফারসনের ভাষায়
পুরা পোস্টটা পড়ে কোনভাবেই বুঝতে পারলাম না এইরকম ইতর টাইপের একটা লোকের সাথে এখনও বন্ধুত্ব রাখার চেষ্টা করতেসেন কেন। যেটুক বুঝতেসিলাম সেটা হল, আপনে এই ভন্ডামিগুলা ঠিকই বোঝেন, কিন্তু হুজুরের সামনে গিয়া আর কথা বলার সাহস পান না। কিন্তু লাস্টের ছোট্ট অক্ষরে লেখা ফুটনোট পড়ে আবার ধন্ধে পড়ে গেলাম।
==========================
আবার তোরা মানুষ হ!
ভাই, এটা তো একটা গল্প। আর বাস্তব জীবনে কি এমন ধর্মোন্মাদ বন্ধুর সাক্ষাৎ আমরা একেবারেই পাই না? ধর্মীয় ও রাজনৈতিক মতভেদ স্বত্বেও কিন্তু বন্ধুত্ব হয়! খেলার মাঠে বন্ধুত্ব হয়। শিক্ষালয়ে বন্ধুত্ব হয়। পাড়ায় পারস্পরিক সহযোগীতার মাধ্যমেও বন্ধুত্ব হয়। দেখুন শোয়েব কিন্তু ক্রিমিনাল নয়। সে পারিবারিক ও সামাজিক শিক্ষার দ্বারা প্রভাবিত হয়ে অনেক চরমপন্থি ধ্যান-ধারনা মনের ভিতর পুষে রাখে। আর এই ধরনের বন্ধু পাওয়া খুব অস্বাভাবিক নয়। এদের চরিত্রই উন্মোচন করতে চেয়েছি এই লেখায়। দুর্বল লেখনীর জন্য আপনার পড়তে সমস্যা হলে ক্ষমা প্রার্থী। পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
কাজি মামুন
১১.০২.২০১২
ইমেইল আইডিঃ
,
হুজুরদের এত ভয়ের আছেটা কি! মুখের উপর ঠাস ঠাস করে বলে দিবেন পৃথিবীতে আরো অনেক কিছু জানার আছে, আসমানি কিতাবের বাইরেও।
facebook
তারেক ভাই, আপনার মন্তব্য পড়ে বুকে কিছুটা বল ফিরে পেলাম। অনেকে আমাকেই যেভাবে শোয়েব (যার ধর্ন্মোন্মাদ চরিত্র আঁকতে চেয়েছি এই লেখায়) বানিয়ে ফেলল, তাতে প্রচন্ড রক্তক্ষরণ হচ্ছিল হৃদয়ে। প্রথম থেকেই আপনার আশীর্বাদ পেয়ে আসছি; লেখার দুর্বলতা কিভাবে কাটিয়ে যায়, সে ব্যাপারে আপনার পরামর্শ পেলে কৃতজ্ঞ থাকব!
আপনি এই ধরনের মানুষের সাথে সারাদিন ঘুরাঘুরি করেন। আপনারে নিয়াই তো সন্দেহ হইতেছে ভাই!
একটি চরিত্র আঁকার চেষ্টা করেছি গল্পের মাধ্যমে; যে নামায-রোযা কিছুই করে না, মদ-মেয়ে-ধোয়ার নেশা যার ভালমতই আছে, কিন্তু পরিবার ও সমাজ থেকে লভ্য ধর্মিয় শিক্ষার কারণে যে আবার ভয়ানক অমুসলিম বিদ্বেষী, ধর্মিয় আমল না করলেও, দোয়া-দরুদ-কথার দ্বারা যে তার আনুগত্য অটুট রাখে ষোল আনা (খেয়াল করুন, সমাজ আপনার নামায-রোযা না পড়াকে ক্ষমা করে দেবে যদি দোয়া-দরুদ-জিহাদি কথাবার্তার দ্বারা আপনি মৌখিক আনুগত্য প্রদর্শন করতে পারেন)। তো এই চরিত্রের অনেক বন্ধু থাকে,যার ভিতর উদারপন্থীও থাকে কিছু যাদের একজন গল্পের উত্তম পুরুষ। আপনি কি নিশ্চিত আপনার কোন ধর্মান্ধ বন্ধু নেই? বাস্তব জীবনে আমাদের কিন্তু নানা ধরনের বন্ধু থাকে। এমনকি অনেক 'সন্ত্রাসি' বা 'জঙ্গি' বন্ধু থাকে, যদিও তাদের সন্ত্রাস বা জঙ্গিপনার সাথে আমাদের কোনই সম্পর্ক থাকে না। তো এই উত্তম পুরুষ বন্ধুটি গল্পের শেষে কিন্তু বলে যে, বিসমিল্লায় গলদের কারণেই মুসলিম জাতিকে পথে পথে ঘুরতে হয়, মানে সে এখানে বিসমিল্লায় গলদ বলতে মুসলিম জাতির কিছু আদি সমস্যার দিকে ইংগিত করেছে, যে কারণে তারা সমাজ বিবর্তনে পিছিয়ে পড়েছে।
ভাই, আপনার সন্দেহ দূর হয়েছে? আর যদি সন্দেহের পেছনে সারাদিন ঘুরঘুর করেন, তো সন্দেহ কখনোই দূর হবে না। বাস্তবে যেসব চরিত্র দেখেছি, তাই লেখায় তুলে ধরেছি।
কাজি মামুন
১১.০২.২০১২
ইমেইল আইডিঃ
,
গল্পে বর্ণিত চরিত্রটি আমার কাছে ধোঁয়াশে মনে হচ্ছে। মনে হচ্ছে যেন আপনি বর্ণনা দেয়ার সময় খুব বেশী এক্সাজোরেইট করে ফেলছেন। শোয়েব নামক চরিত্রটিকে পরিপূর্ণ ভাবে ফোটাতেও ব্যার্থ হয়েছেন বলে মনে হচ্ছে। নব্যকাঠ মোল্লারা আজকাল পাড়ার হুজুরদের খুব বেশী পাত্তা দেয়না বলেই আমার বিশ্বাস, তাদের জন্য জোকার নায়েক আর হারুন ইয়াহিয়া আছে। পাড়ার হুজুরদের সাথে কনসাল্টিং করা মোল্লাদের আজকাল ব্যাকডেটেড ধরা হয়। যা হোক, ধরে নেই কথায় কথায় হুজুর দেখানো মানে যদি পদে পদে কোরান-হাদিসের রেফারেন্স দেয়া মানুষও হয়, তাহলেও শোয়েব চরিত্রটিকে যদি আপনি অনুদার শ্রেণীরও ধরেন তার পরেও অনেক গলদ আছে চরিত্রটি নিয়ে। বিধর্মী ম'রে গেলে জাহান্নামে যাবার জন্য দোয়া করে, এমন মানুষকে অনুদার ধার্মীক বলেও আমার মনে হচ্ছে না, রীতিমতন সাইকো মনে হচ্ছে। পরিশেষে সচল জাহিদের প্রশ্নটাই আবার করছি,
এই লেখায় এই দুটি শ্রেনীর প্রতিনিধিত্ত্বকারী কারা? আপনি নিজে কোন শ্রেনীর বলে নিজেকে মনে করেন?
দেখুন আমি আমার এক পরিচিত অতি স্বাভাবিক মানুষকেই এই দোয়া ব্যবহার করতে দেখি। সে আমাকে জানায়, তাকে ছোটবেলায় 'ইন্নালিল্লাহ' এর সাথে 'ফি নারি জাহান্নামা' ও শেখানো হয়েছিল। আমি অনেককে বিষয়টি জিজ্ঞাসা করি, তারাও ছোটবেলায় হুজুরের কাছে দোয়াটা শিখেছিল বলে জানাল। ইতিমধ্যে, এক মওলানার মত শুনি টিভিতে দোয়াটার ব্যাপারে; উনি বলেন আমাদের সমাজের ব্যাপক ব্যবহৃত দোয়াটির আসলে কোরান-হাদিসগত ভিত্তি নেই। আমি এই বিষয়টা এক উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাকে অবহিত করি, যিনি মওলানার মতকে অবিশ্বাস করেন এবং এক ধর্মিয় পুস্তক রচয়িতা জ্ঞানী মুসলিম ব্যক্তিকে ডেকে আনেন বিষয়টা সম্পর্কে জানতে। ঐ জ্ঞানী ব্যক্তি উড়িয়ে দেন মওলানার উক্তিকে এবং বিধর্মিদের মৃত্যুতে 'ফি নারি জাহান্নামা' পাঠ যে সঠিক, সে রায় দেন। উনি বরং আমার ধর্ম বিশ্বাস নিয়ে ঘোরতর সন্দেহ পোষণ করেন।
আমাদের সমাজে এই ধরনের লোক প্রচুর রয়েছেন যারা তাদের যুগ যুগ ধরে লালিত ধর্মিয় কুসংস্কার যতই ভ্রান্ত বলে প্রমাণিত হোক না কেন, তা যক্ষের ধনের মতই আগলে রাখেন; কিন্তু পরিবর্তনের ডাকে সাড়া দেননা। আমি এইসব ঘুমন্ত লোকের চিত্র এঁকেছি।
সচল জাহিদ ভাইয়ের মন্তব্যের জবাব দিয়েছি ইতিমধ্যে। আপনি মনে হয় আপনার প্রশ্নের জবাব সেখানে পেয়ে যাবেন।
কাজি মামুন
১১.০২.২০১২
ইমেইল আইডিঃ
,
দারুন ভাইয়া, আপনি তাহলে আমার মত একজন ধর্মোন্মাদ ব্যক্তির পরিচয় পেয়ে গেলেন এই লেখার মাধ্যমে? অন্তত এজন্য একটা ধন্যবাদ আমার পাওনা যে, এই লেখাটি না লিখলে আমার মত একজন কপট ধর্মোন্মাদ লোকের পরিচয় আপনার অজানা থাকত!
ধরুন, এমন কোন বন্ধু আপনার থাকতে পারে না, যে আপনার বিপদ-আপদে আপনাকে সাহায্য করেছে, শিক্ষাঙ্গনে যার কাছ থেকে অনেক সহযোগিতা আপনি পেয়েছেন, এক সাথে খেলেছেন ইত্যাদি। তো সেই বন্ধু যদি রাজনীতি বা ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে চরমপন্থি হয়, আপনি অবলীলায় ত্যাগ করতে পারবেন তাকে?
কাজি মামুন
১১.০২.২০১২
ইমেইল আইডিঃ
,
এটি কি গল্প? আপনি এতগুলো ট্যাগ ব্যবহার করে তো সংশয়ের মধ্যে ফেলে দিলেন।
যদি 'চিন্তাভাবনা' ট্যাগ সঠিক হয় তাহলে আমার মনে হয় আপনি আংশিক শোয়েবাক্রান্ত!
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
ভাই, আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে যেটুকু বুঝি, তা হল, 'চিন্তাভাবনা' থেকেই 'গল্পের' জন্ম হয়! প্রতিটি গল্পের উৎসই লেখকের বাস্তব অভিজ্ঞতা সঞ্চারিত চিন্তাভাবনা! আর আমি শোয়েবদের দেখেছি, তাদের উদার বন্ধুদেরও দেখেছি (গল্পের উত্তম পুরুষ)। শোয়েবের উদার বন্ধুটি কিন্তু গল্পের শেষে বলেছে যে, হুজুরের চোখে ''বিসমিল্লাহর গলদ'' তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে; এই ''বিসমিল্লাহর গলদ'' মানে হুজুরের বর্ণিত গলদ না, এটি মুসলিমদের সমাজ বিবর্তনে পিছিয়ে পড়ার কারণ যে ধর্মিয় গোঁড়ামি তাকেই ইংগিত করছে।
সুতরাং, এখনো আমাকে শোয়েবাক্রান্ত বলবেন?
কাজি মামুন
১২.০২.২০১২
ইমেইল আইডিঃ
,
গল্প নাকি চিন্তাভাবনা? এই আপ্নি যদি আপনি হন তাহলে আপনার অবস্থান নিয়ে সংশয়ে পড়ে গেলাম। শোয়েবদের অবস্থান নিয়ে সংশয় নেই। সংশয় তাদেত সঙ্গিসাথীদের নিয়ে। লেখায় আপনি আপনার অবস্থান অস্পষ্ট রেখেছেন।
এগুলাকি আপনার কথা? নাকি স্যাটায়ারিক ঢংএ লেখা? যদি আপনার কথা হয় তাহলে সমস্যা, আর যদি স্যাটায়ার হয় তাহলে বলব, স্যাটায়ার এখানে পরিষ্কার নয়।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
যদি পরিষ্কার না করতে পারি, সেটা আমারই ব্যর্থতা। এবং সে জন্য আপনার কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। সিনিয়র লেখক হিসাবে এইটুকু আপনার কাছে আশা করতেই পারি।
তবে নীচের লাইনটি যদি দয়া করে পড়েন, তাহলে খুশী হব:
'বিসমিল্লাহর গলদ' হুজুরের চোখে কিসের শক্ত তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে বলে আপনার মনে হয়? আমি তো বোঝাতে চেয়েছি, হুজুরের জ্ঞানের দরজা শক্ত তালা দিয়ে আটকানো! তাই তার চোখ ক্রমেই পূর্ণ নিমীলিত হতে থাকে।
আগের লাইনে গল্পের উত্তম পুরুষ কি বলেছে? দেখুন:
এই "বিসমিল্লায় গলদ' আর হুজুরের 'বিসমিল্লায় গলদ' এক নয় এবং এটাই লেখাটির মূল বার্তা। সচল ভাইয়ের মন্তব্যের জবাবে যা লিখেছি, তা এখানে আবার কোট করছি যেহেতু এটাই আমার লেখার মূল কথা:
আপনার আগের করা এক মন্তব্যের জবাবে লিখেছিলাম, ''কখনো কখনো অচেনা মানুষও কত আপন হয়ে যায় সামাজিক প্রতিষ্ঠানের বদৌলতে!'' আর এখন মনে হচ্ছে, উল্টো কথাটাও সমান সত্য, ''কখনো কখনো চেনা মানুষও কত পর হয়ে যায় সামাজিক প্রতিষ্ঠানের বদৌলতে!''
মামুন ভাই, ক্ষমা প্রার্থনার আসলে কিছু নেই। আপনার লেখা থেকে কিছু জিনিস সবার কাছে অস্পষ্ট লেগেছে, সেটা নিয়ে সবাই প্রশ্ন করেছেন। আপনি বেশ অনেকদিন ধরেই সচলে আছেন, এটা আপনার এতদিনে বুঝে যাওয়ার কথা, যে এখানে কিছু প্রশ্নে অবস্থান নড়বড়ে মনে হলে, আপনি একচুল ছাড় পাবেন না। এবং সেই নড়বড়ে অবস্থানটা জানার জন্যে আপনার লাছে যাওয়ার কিন্তু কোন উপায় নেই, আপনার লেখাই ভরসা।
আপনি হয়ত দেখেছেন, অনেকদিনের পরিচিত সচলরাও এখানে চরম তর্ক-বিতর্ক করেন, কিন্তু সেটা একান্তই লেখা থেকে যে মেসেজটুকু পাওয়া যায় সেটার ওপর ভিত্তি করে। সেখানে পরিচিত অপরিচিত ব্যাপারগুলো তেমন আসে না। আপনি আজকে লেখার কিছু অস্পষ্টতার কারণে সমালোচিত হলেন, আপনি হয়ত ভবিষ্যতে লেখা পোস্ট করার আগে আরেকবার ভাববেন, যে আপনি যা বোঝাতে চাইছেন, আপনার লেখা আসলেই সেটা বোঝাচ্ছে কিনা? আশা করি সবার কড়া সমালোচনায় ভেঙ্গে পড়বেন না। সচলের আগের অনেক পোস্ট বা ইতিহাস ঘাটলে দেখবেন, এর চেয়ে অনেক বেশি সমালোচিত হয়েছেন অনেকেই কোন একটা বিশেষ লেখার জন্যে। ভাল থাকবেন, লিখুন আরও।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
এরকম মেসেজ মানুষ হরহামেশাই দেয়ার চেষ্টা করে, তো নতুন কিছু পেলাম না আপনার লেখায়।
নতুন কিছুর প্রতি আপনার এই আকুতি দেখে খুব ভাল লাগছে। আমার লেখা আপনাকে হতাশ করলে ক্ষমাপ্রার্থী। সামনে চেষ্টা করব নতুন কিছু উপহার দেয়ার জন্য। ভাল থাকবেন।
লেখাটায় লেখকের কিছু না বলা কথা রয়ে গেছে। যেহেতু এটা একটা বাস্তব অভিজ্ঞতার ( সম্ভবত) ফসল তাই লেখকের তরফ থেকে একটা নিজস্ব যুক্তির উপর আলোকপাত করার প্রয়োজন ছিল। সেটা না করায় লেখার মধ্যে লেখকের অবস্থান নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। মনে হয়েছে মানুষটা একটি দুর্বল গোত্রের মানুষ। তবে বিরাম চিহ্ন এর উপর নজর দিলে দেখা যায় যে লেখকের লেখার অন্তর্নিহিত অর্থ হয়তো আলাদা, কিন্তু প্রকাশে কিছুটা দুর্বলতা রয়ে গেছে, যা প্রথমেই বলেছি।
তবে আমার এটাও মনে হয়েছে যে লেখকের সাথে গল্পে বর্ণিত ছাগুদের কোন সাদৃশ্য নেই। যদি থাকত তাহলে গল্পের ছলে হলেও লেখক এমন উচ্চাচার করতো না । আমার কাছে এটা প্রতিবাদই মনে হয়েছে। যদিও স্যাটায়ার এর উপস্থাপনা ভালো ভাবে প্রতিফলিত হয়নি। একটু পরিষ্কার করার দরকার ছিল, যা লেখকের মন্তব্যের ঘরে পরিষ্কার করতে দেখেছি।
লেখার মধ্যে লুকিয়ে থাকা মূল সুরটি আমি ব্যাক্তিগত ভাবে হয়তো খুঁজে পেয়েছি। কিন্তু লেখককে একটা অনুরুধ করব, এই ধরণের লেখায় যেহেতু অনেক স্পর্শকাতর বিষয় জড়িয়ে থাকে তাই লেখায় খুবই ক্লিয়ার ভাবে তার ব্যাখ্যা দরকার হয়, আগামীতে এই ব্যাপার গুলো খেয়াল রাখবেন। আর তা না থাকলে সেই লেখাটা এবং তার পাঠক আইডেনটিটি ক্রাইসিস এ ভুগে।
গুড লাক।
ডাকঘর | ছবিঘর
তাপসদা,
আমি আবেগাপ্লুত আপনার মন্তব্য পড়ে। লেখাটি লিখে ভেবেছিলাম, এক শ্রেণীর ধর্মোন্মাদ মানুষের মুখোশ উন্মোচন করেছি (যারা নামায-রোযা কিছুই করে না, মদ-মেয়ে-ধোয়ার নেশা যাদের ভালমতোই আছে, কিন্তু পরিবার ও সমাজ থেকে লভ্য ধর্মিয় শিক্ষার কারণে যারা আবার ভয়ানক অমুসলিম বিদ্বেষী, ধর্মিয় আমল না করলেও যারা সমাজের ক্ষমা পেয়ে যায় শুধু দোয়া-দরুদ-জিহাদি কথাবার্তার দ্বারা শতভাগ মৌখিক আনুগত্য প্রদর্শন করার মাধ্যমে)। কিন্তু অবাক হয়ে দেখলাম অনেকে উল্টো আমারই মুখোশ উন্মোচন করে ফেলেছে! তাই হৃদয়ে প্রচণ্ড রক্ত ক্ষরণ হচ্ছিল। আপনার মন্তব্য পড়ার পর কখন যে চোখ বেয়ে অশ্রু নেমে এলো, টেরই পায়নি!
আপনার পরামর্শ মাথা পেতে নিলাম! ভাল থাকবেন।
এত ভেঙে পড়বেন না। আপনার বক্তব্য আপনার মন্তব্যে আশা করি সবার কাছেই ক্লিয়ার হয়েছে। হাত খুলে লিখতে থাকুন। যদি মনন এবং যুক্তি দিয়ে কথা বলেন, তাহলে পাশে পাবেন সবসময়।
ডাকঘর | ছবিঘর
ভাই, এত আহত হলে ক্যাম্নে কী!
আপনাকে মানুষ লেখার মাধ্যমেই চিনে, চিনবে। গুছিয়ে ভাল করে লিখুন, অন্যান্য সচলদের লেখা পড়ে ধারণা নিন।
শুভেচ্ছা
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
নতুন মন্তব্য করুন