আমাদের দেশে চিকিৎসাসেবার মান নিয়ে আমরা সবাই কম বেশি শঙ্কিত। সাধারণ মানুষের চেয়েও নব্য ডাক্তারদের এ ব্যপারে শঙ্কা বেশি, নব্য ডাক্তার বললাম এই কারণে যে যারা পুরানো হয়ে যান তারা প্রকৃতির নিয়মেই আস্তে আস্তে অভ্যস্ত হয়ে যান। যে কোন মেডিকেল কলেজ থেকে পাস করা ইন্টার্ন ডাক্তারের চেয়ে জনস্বার্থে নিবেদিত প্রাণ মানুষ খুব কমই পাওয়া যাবে। এ সমস্ত ডাক্তারদের একটা বড় অংশ আসে মধ্যবিত্ত , উচ্চ মধ্যবিত্ত শ্রেণী থেকে, হটাত করে মানুষের দুঃখ দুর্দশা দারিদ্র্যের চরম রূপটা দেখে তাদের ভিতরে অনেক বড় ধরনের আলোড়ন হয়। তাই ইন্টার্ন ডাক্তাররা ১৪ ঘণ্টা কাজ করেও ক্লান্ত হয় না, নিজেদের পকেটের টাকা বাঁচিয়ে ফান্ড করে ওষুধ বিলায়, রোগীদের নিয়ে গিয়ে পরীক্ষা করিয়ে নিয়ে আসে(যে দায়িত্বটা ওয়ার্ড বয়দের ), নিজেরা দাড়িয়ে থেকে রোগীদের ওষুধ খাওয়ায়(যে দায়িত্বটা নার্সদের ), ওটি থেকে বাড়তি (যেটা ওই রোগীর আর কাজে আসবে না )হেক্সিসল, গজ, ব্যন্ডিজের মত জিনিসটুকুও সযত্নে নিজের কাছে রেখে অন্য গরিব রোগীদের ড্রেসিং করে (এবং অনেক সময় অপ্রয়োজনীয় ওই জিনিসটুকুও রোগীরা খোঁজ নেয় এবং আমি এ কথাও শুনেছি যে ওগুলো নিয়ে বিক্রি করে আমরা টাকা বানাব, দুঃখ পেয়েছি কিন্তু থেমে যাইনি ) , রক্তের দরকার হলেই হাসিমুখে এগিয়ে আসে। কিন্তু এই ডাক্তাররাই আস্তে আস্তে দিন কে দিন মনুষ্যত্ব হারাতে হারাতে কেন অমানুষ হয়ে পড়ে ( আমাদের দেশের জনগণ এবং মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যানের ভাষ্যমতে ) সেটা নিয়ে আমাদের অবশ্যই গবেষণা করার প্রয়োজন রয়েছে।
এম বি বি এস পাস করার পর প্রায়ই শুনতে হয় মাত্র তো শুরু। এরপরের যাত্রাপথ টা বন্ধুর অবশ্যই কিন্তু সেটা ঠিক কতটা বন্ধুর লিখে আসলে সেটা খুব বেশি বুঝান যাবে না। পোস্ট গ্রাজুয়েশন করাটা শুধুমাত্র পড়াশুনার উপর নির্ভর করে না, সেখানে থাকে রাজনীতি, তৈল বাজি, টাকা আর ক্ষমতার দৌড়ে কে কত দ্রুত দৌড়াতে পারে তার প্রতিযোগিতা। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দ্রুত নিজের পায়ে দাঁড়ানোর একটা পারিবারিক চাপ থাকে। এ সব কিছুর পরও যারা ধৈর্য ধরে সৎ থাকে তারা শুধু পিছিয়েই থাকে তা না যারা এগিয়ে যায় তাদের দুর্নীতির দায়ও তাদের মাথা পেতে নিতে হয়। প্রথম প্রথম সবাই চেষ্টা করে এই নিয়ম টাকে ভাঙ্গতে তারপর জীবনযাপনের চাপ একটা একটা করে বাড়ে আদর্শ নৈতিকতা এই শব্দগুলো একটু একটু করে অচেনা হয়, একসময় হয় নিজে অন্যায় করে অথবা অন্যায়ের সাথে আপস করে নেয়, কিন্তু সেটা আমাদের দেশে কোন শ্রেণীর মানুষ করে না? এই বাস্তবতা আমাদের কাররই কাম্য না কিন্তু অমানুষ বলে গালি দিয়েই তো এই বাস্তবতা পরিবর্তন হবে না। এর মধ্যেও অনেকেই ভাল কাজ করছে, করার চেষ্টা করছে, তাদের জন্য শুভকামনা জানানটাও আমাদের কর্তব্য।
এমবিবিএস পাস করার পর একদল সরকারি চাকরিতে ঢুকে আর একদল পোস্ট গ্রাজুয়েশন ট্রেনিং এর নামে সরকারি হাসপাতাল গুলোতে বিনা বেতনে খাটে। অনারারি করার সময় একজন ডাক্তার কে নুন্নতম ৪২ ঘণ্টা হাসপাতালে সময় দিতে হয়। এরপরে তাকে অন্য ক্লিনিক বা বেসরকারি হাসপাতালে কাজ করতে হয়, মূল্য ৮ ঘণ্টা ডিউটি ৫০০ টাকা।কারন সরকারি হাসপাতালের যাওয়া আসার ভাড়াটা অন্তত জোগাড় করতে হবে। তাই এদের জীবন তিন ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। মর্নিং, এভেনিং, নাইট। একবেলা সরকারি হাসপাতাল, একবেলা ক্লিনিক, একবেলা বাসা। এরমধ্যে পড়াশুনাও করতে হয় সময় বের করে। আর যারা সরকারি চাকরি করে তাদেরও আছে নানা না পাওয়ার অভিযোগ। অন্য যে কোন সরকারি চাকুরের চেয়ে ডাক্তাররা কম সুবিধা ভোগ করে। এরপরও তারা বেতন বাড়ানো অথবা সুযোগ সুবিধা আদায়ের জন্য আন্দোলন করেনা ,কাজ বন্ধও রাখে না। আন্দোলন করে যখন শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হয়। তাই একজন ডাক্তার কে দিয়ে একটা হেলথ কমপ্লেক্স চালাতে হলে তাকে তার প্রাপ্য নিরাপত্তা, কাজের পরিবেশ, সুযোগ সুবিধা দিতে হবে। অন্যথা এ সমস্যা কখনই ঠিক হবে না। পোস্ট গ্রাজুয়েশনের দুঃখজনক প্রক্রিয়া শেষে একজন ডাক্তারকে প্রতিষ্ঠিত হতে কমপক্ষে ১০ বছর সময় লাগে।সবাই এরপরও হয় না, জিতে যাওয়া লটারির মত আমরা শুধু প্রতিষ্ঠিতদেরই দেখতে পাই। বাকিদের খোঁজ রাখি না। এই ১০-২০ বছরের বিদঘুটে প্রক্রিয়াতেই ডাক্তাররা বোধকরি মনুষ্যত্ব হারিয়ে ফেলে। তাই এই প্রক্রিয়ার অসংগতিগুলোকে ঠিক না করে শুধু গালি দিলে কাজের কাজ কিছুই হবে না।
আমাদের আর একটা বড় সমস্যা হল চিকিৎসার ক্ষেত্রে রেফারেল সিস্টেম না থাকাটা। একজন রোগী সামান্য পেটে ব্যথা , ঠাণ্ডা কাশিতেও প্রফেসরদের দেখায়। এজন্যই একদিকে জুনিয়র ডাক্তাররা রোগী পায় না, অন্যদিকে স্যাররা চেম্বারে সময়ের অভাবে রোগীর সাথে ঠিকমতো কথাও বলতে চান না। সরকারি ভাবেই নিয়ম করে রেফারেল সিস্টেমে অভ্যস্ত করতে হবে সবাইকে।
আমাদের দেশের রোগীদের ৩ ভাগে ভাগ করা যায়, এক ভাগ দুস্থ যারা পাবলিক হাসপাতালগুলোতে আসে চিকিৎসা নিতে, আর এক ভাগ মধ্যবিত্ত যারা বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতালের দ্বারস্থ হয় আর এক দল সামান্য হাঁচি কাশি হলেও সিঙ্গাপুর অস্ট্রেলিয়াতে দৌড়ে যায়। এই উচ্চবিত্ত শ্রেণীরা তাদের টাকাটা এদেশে খরচ করলে সেটা চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়নে কাজে লাগত। কারণ একটা ব্যাপার তো পরিষ্কার স্বাস্থ্য সেবা বিনামূল্যে দেয়া সম্ভব না ,তার জন্য খরচটা কাউকে না কাউকে বহন করতে হবে সেটা সরকার হোক অথবা জনগণ।
আমাদের পাবলিক হাসপাতাল গুলোতে ডাক্তার আর নার্সের সংখ্যাটা ভয়ঙ্কর ভাবে অপ্রতুল। বাংলাদেশে প্রতি ৩০১২ রোগীর জন্য একজন ডাক্তার, নার্স দরকার ২ লাখ ৮০ হাজার , আছে ২২ হাজার, প্রতি ২৬৬৫ রোগীর জন্য একটা করে বেড আছে এদেশে (সরকারি হিসাব মতে ) এই ডাক্তার নার্সদের ভিতর আবার একটা অংশ আছে যারা নিজেদের আখের গোছাতেই বেশি ব্যস্ত থাকে। তাই যারা কাজ করতে চায় বা কাজ করছে তাদের জন্য সেটা কতখানি দুরূহ আমাদের ভেবে দেখা উচিৎ।
পরীক্ষা নিরীক্ষা ছাড়া চিকিৎসা করাটা বর্তমান যুগে শুধু অসম্ভব না অনুচিতও । কিন্তু সরকারি হাসপাতাল গুলোতে অনেক যন্ত্রপাতিই নেই, যা আছে তা যত্নের অভাবে নষ্ট হয়ে পড়ে আছে, ঠিক যেগুলো আছে সেগুলোতেও কাজ করার মত টেকনিশিয়ান নেই। আর বেসরকারি হাসপাতাল গুলোতে অথবা ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে পরীক্ষা নিরীক্ষার মানের চাইতে খরচটা খুব অতিমাত্রায় বেশি। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় রক্তের cbc পরীক্ষা করতে সরকারি হাসপাতালে নেয় ৫০ টাকা আর ঢাকার যে কোন বেসরকারি হাসপাতাল বা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রাখে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। আলট্রাসনগ্রাফি অফ অ্যাবডোমেন করতে রাখে ১২০০ থেকে ১৪০০ টাকা যেখানে সরকারি হাসপাতালে রাখে ৪৫০ টাকা, রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা করতে রাখে ২৫০ টাকা যেটা সরকারি হাসপাতালে রাখে ২০ টাকা। যে পরীক্ষা করতে ২০ টাকারও কম খরচ হয় সেটা করতে কেন ২৫০ টাকা রাখতে হবে, কেউ এই প্রশ্ন টা করে না, বরং যে ডাক্তার রোগ নির্ণয়ের জন্য পরীক্ষা করতে পাঠায় তাকে গালি দেয়াটা সহজ। কিছু ডাক্তার এর সাথে জড়িত, তারা কমিশন খায় , এদের খুঁজে বের করে শাস্তি দেয়া উচিৎ। পাশাপাশি ডায়াগনস্টিক সেন্টার গুলো কেমন দাম রাখবে সেটা সরকার থেকেই নির্ধারণ করে দেয়া উচিৎ। তাদের অসততার জন্য সবাইকে সাধারণ মানুষের সন্দেহের মধ্যে পড়তে হচ্ছে । আমাদের এই ব্যাপারগুলো নিয়ে সচেতন হওয়ার সময় এসেছে।
আমাদের চিকিৎসার মুল উপকরণ ওষুধ। আমাদের হাসপাতাল গুলোতে বেড অনুযায়ী ওষুধ সাপ্লাই থাকে। কিন্তু রোগী থাকে সবসময়ই তার ৫ গুন। এই বাড়তি রোগীদের ওষুধ দিতে না পারার দায় ডাক্তারদের ঘাড়েই বর্তায়। এর মধ্যে আবার কিছু অসাধু ডাক্তার, নার্স, স্টোর কিপার ওষুধ নিয়ে ব্যবসা করে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়। প্রয়োজনমত ওষুধের সাপ্লাই, কঠোর নীতিমালা এবং সেটার বাস্তব প্রয়োগ ছাড়া এ সমস্যা সমাধান সম্ভব না। ওষুধের দামের ব্যাপারেও সরকারের কঠোর কোন নীতিমালা নেই অথবা তার প্রয়োগ নেই। এক এক দোকানি এক এক রকমের দাম রাখে নিজেদের ইচ্ছে এবং সুবিধামত। কিছু দামি স্যালাইন আছে যেগুলোর দাম দোকানিরা রোগীদের অজ্ঞানতা আর অসহায়ত্বের সুযোগে ইচ্ছেমত বাড়ায় কমায়। রোগীদের ভোগান্তি যত বাড়ে তারা ডাক্তারদের ব্যপারে তত বেশি বীতশ্রদ্ধ হয়। কিছু ডাক্তারের আর একটি ভয়ংকর অসদাচরণ হল বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির কাছ থেকে টাকা খেয়ে তাদের ওষুধই অন্ধের মত লেখা , সেটা ভাল হোক বা খারাপ, রোগীর সামর্থ্যের মধ্যে থাকুক অথবা না থাকুক। এদের বিরুদ্ধে অবশ্যই অতিসত্বর ব্যবস্থা নেয়া উচিৎ , তাতে অন্য ডাক্তারদের সম্মান টা বাঁচে।
আমাদের ডাক্তার দের সম্পর্কে সবচেয়ে বড় অভিযোগ হল তাদের আচরণ কথাবার্তা। কিছু কিছু ডাক্তারের আচরণ আসলেই দুঃখজনক। ডাক্তারদের মধ্যে এক ধরনের professional cult ঢুকিয়ে দেয়া হয় ছাত্র জীবনেই। সমাজের অতিভক্তি, বাবা মায়ের অতি উচ্ছ্বাস এসবের সাথে যোগ হয়। কিন্তু পাস করার পর প্রত্যাশার সাথে প্রাপ্তির পার্থক্যটা এত বেশি প্রবল যে অনেকের মধ্যেই হতাশা, রোগীর সাথে দুর্ব্যবহারের প্রবণতা তৈরি হয়। প্রতিক্রিয়ায় সাধারণ মানুষও হয়ে উঠে ডাক্তারের ব্যাপারে অসহিষ্ণু। এভাবেই একের সাথে অন্যের সম্পর্ক টা দিন কে দিন নষ্ট হচ্ছে। তাতে ক্ষতি দু দলেরই।
চিকিৎসাসেবা নিয়ে অধিকাংশ মানুষেরই ধারনা পরিষ্কার না। হাসপাতালে রোগী নিয়ে আসলে তারা মনে করে রোগী দেখা, ওষুধ খাওয়ানো, খাবার সরবরাহ, বিছানা পরিষ্কার রাখা, রোগীকে বাথরুমে নিয়ে যাওয়া সহ বাথরুম পরিষ্কারের দায়িত্বটাও ডাক্তারের। ডাক্তার চিকিৎসাসেবার একটা অংশ, অন্য অংশগুলো ঠিক না থাকলে রোগীদের মতই তাদেরও ভোগান্তি সহ্য করতে হয়। হাসপাতালে ওয়ার্ড বয় বা খালাদেরও সংগঠন আছে এবং তাদের অধিকাংশই কাজ করতে আগ্রহী না। তাই যারা করে তাদের পক্ষে প্রতিটা কাজ সুষ্ঠু ভাবে করা সম্ভব হয় না। এজন্য ডাক্তার রোগী দেখে ওষুধ লিখে দিলেও রোগীরা ওষুধ পায় না ঠিকমতো, নার্সিং সেবা পায় না, নোংরা পরিবেশে থেকে ইনফেকশন বাড়ে, একটা ইনফেকশন নিয়ে ভর্তি হয়ে আরও ২ টা বাঁধায়,পরীক্ষা নিরীক্ষার রিপোর্ট ঠিক হয় না অথবা টাকার অভাবে করতে পারে না , হাসপাতালে বেড না পেয়ে ফ্লোরে পড়ে থাকে এবং এ সমস্ত কিছুর জন্য ডাক্তারদেরই দায়ী মনে করে।
সরকারি হাসপাতালে কাজ করতে গিয়ে আর একটা সমস্যা খুব চোখে পড়েছে, দালাল নামক কিছু ভয়ানক মানুষ হাসপাতালের ইমারজেন্সিতে ঘুরে বেড়ায়, যারা গরিব , মূর্খ, অসহায় রোগীদের বুঝিয়ে শুধু যে বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যায় তা না, কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যপারটা আরও ভয়াবহ। বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে রোগীরা পথে বসে কিন্তু চিকিৎসা পায় ঠিকই। কিন্তু এরা নিয়ে যায় এমন কিছু যায়গায় যেখানে নামের আগে ডাক্তার বসিয়ে কিছু অমানুষ রোগীদের চোখ, কিডনি, লিভার কেটে রাখছে। আমার নিজের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা হল ইন্টার্ন এর সময় আমি এক রোগী পেয়েছিলাম যে জমি বিক্রি করে হাসপাতালে আসার পথে তাকে এক দালাল বুঝায় যে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা হয় না, তারপর তাকে এক নার্সিং হোমে নিয়ে যেয়ে চোখের অপারেশনের নাম করে লেন্স খুলে রেখে দেয়। পরবর্তীতে সে হাসপাতালে ভর্তি হয় সর্বস্ব হারিয়ে। চিকিৎসা সম্পর্কিত কোন বিষয়ে দালাল জাতীয় কোন কিছুর অস্তিত্ব যেন না থাকে কঠোর আইনপ্রয়োগের মাধ্যমে সে ব্যবস্থা করতে হবে ।
আমাদের অধিকাংশ রোগীরাই ছুটির সময় লিখে দেয়া ওষুধের কোর্স শেষ করে না। গরিব মানুষ করে না টাকার অভাবে আর সচ্ছলরা করে না জ্ঞানের অভাবে। একটা বড় অংশ ফার্মেসির দোকানদার, কবিরাজ এদের কাছে চিকিৎসা করিয়ে শেষ মুহূর্তে আসে ডাক্তারের কাছে। যে দেশে প্রত্যেকেই ডাক্তার সে দেশের ডাক্তারদের জন্য চিকিৎসা দেয়াটা কতটা কষ্টকর তা একমাত্র যারা সেই চেষ্টা করে তারাই বুঝতে পারবে।
চিকিৎসা দেয়া আর স্বাস্থ্য-ব্যবস্থা পরিচালনা করা এক জিনিস না। এ জন্য পৃথক বিদ্যা আছে। মেডিকেল এন্থ্রপলজি বিষয়ে বিশেষজ্ঞ আমাদের দেশেরই অনেকে আছেন কিন্তু তাদেরকে কাজে লাগানোর কোন উদ্যোগ নেই। বিসিএস এ পাবলিক হেলথ প্রফেশনালদের জন্য কোন পদ নেই। স্বাস্থ্যমন্ত্রী কেন হতে হবে একজন ডাক্তারকেই ? এ বেহাল ব্যবস্থা পরিবর্তন করতে হলে যাদের যে কাজ তাদেরকে দিয়েই সে কাজ করাতে হবে।
আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার ক্ষেত্রে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু আমাদের দেশে প্রাইভেট মেডিকেল কলেজের নামে যে বাণিজ্য চলছে তাতে আর এক দশক পর চিকিৎসাসেবার মান কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে সেটা এখনই ভেবে দেখা দরকার। গত ১৬ বছরের মধ্যে আমাদের দেশে বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হয়েছে ৫৩ টি। গত তিন বছরেই হয়েছে ২৬ টি যেগুলোর অধিকাংশই মানসম্মত না। এভাবে মেডিকেল শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস করে স্বাস্থ্যসেবার মান কিভাবে বাড়ানো যাবে?
আর একটা বিষয় আমাকে খুব ভাবাচ্ছে , সেটা হল গত কয়েক বছর ধরেই মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে যাচ্ছে। আমি যখন ভর্তি পরীক্ষা দিয়েছিলাম আমার এক বন্ধু জানিয়েছিল ৫ লাখ টাকা হলেই প্রশ্ন পাওয়া যাবে। ৫ লাখ টাকা যোগাড়ের চেয়ে পড়াশুনা করাটাই আমার বেশি সহজ মনে হয়েছিল। গত বছর শুনেছি ৫০ হাজার টাকাতেই প্রশ্ন পাওয়া গেছে। ( এ সম্পর্কে আমার কাছে ব্যক্তিগত ভাবে কোন সুনির্দিষ্ট প্রমাণ নেই, কিন্তু বেশ কিছু ছাত্রের কাছে আমি এ ব্যাপারে শুনেছি) কয়েক বছর আগে একবার পরীক্ষা বাতিলের আন্দোলনও হয়েছে সারা দেশ ব্যাপী। গত ২০১১ তেও র্যাব পরীক্ষার আগের রাতে কিছু প্শ্নপত্র উদ্ধার করেছে । আর কয়েকদিন পর হয়ত কয়েকশো টাকাতেই প্রশ্ন পাওয়া যাবে। আগে কিছু ডাক্তার পাস করে বের হয়ে দুর্নীতি করত এখন মেডিকেলে ঢুকার জন্যই দুর্নীতি শুরু হয়ে গেছে। এরা পাস করে বের হয়ে কি করবে আমার কল্পনার বাইরে। সরকার এবং আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর এ ব্যপারে আর একটু সচেতন হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।
আমাদের দেশের সাংবাদিকদের সৃজনশীলতার কথা আমরা সবাই কম বেশি জানি। কোন কিছু সম্পর্কে লেখার জন্য তাদের সেটা দেখার দরকার হয় না, তারা বেশ কল্পনা করে নিতে পারে। যদি কল্পনার সাথে বাস্তবতা মিলে যায় তাহলে ঠিক আছে নয়ত তাদের কীর্তিকলাপে একসময় কল্পনাটাই বাস্তব বলে মনে হয় সাধারণ মানুষের কাছে। তাই সাংবাদিকরা যখন ডাক্তারদের সম্পর্কে লিখে সেটাতে বাস্তব সমস্যার ছোঁয়া কমই থাকে। অবশ্যই অনেক ভাল মানের সাংবাদিক আছেন এদেশে, কিন্তু তাদের মাথা ঘামানোর জন্য আরও বড় বড় সমস্যাও আছে। তাই এই এটা নিয়ে কথা বলার কেউ প্রয়োজন বোধ করছে না যদিও কথা বলাটা খুব বেশি দরকার।
আমাদের বর্তমান সমাজে প্রতিটা পেশার লোকের মধ্যেই পচন ধরেছে। ডাক্তাররাও সেটা থেকে রেহাই পাবে না এটাই স্বাভাবিক। কারণ ঈশ্বর কাউকে ডাক্তার বানিয়ে পাঠাননি, মানুষদের মধ্যেই কেউ কেউ ডাক্তার হয় তাই মানুষের যাবতীয় দোষ গুন তার মধ্যে থাকবেই। পচনরোধে আমাদের সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। যে দোষী তাকে বিচার করে শাস্তির ব্যবস্থা করাটা যেমন জরুরি তেমন যে ভাল কাজ করছে , করতে চাচ্ছে তাকে ভাল কাজের ক্ষেত্র তৈরি করে দেয়া এবং ভাল কাজের জন্য প্রশংসা করাটাও জরুরি। একজন ভাল ডাক্তার হওয়াটা অনেক বেশি কষ্টের কাজ, অনেক অনেক সাধনা করতে হয় অনেক বছর ধরে। সেই কষ্ট, সাধনা কে আবেগের বসে অপমান করে বসলে ক্ষণিক কিছু তৃপ্তি হয়ত পাওয়া যায় কিন্তু তাতে সমস্যা গুলো বাড়বেই। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কেউ হয়ত আর কখনও ডাক্তার হতেই চাইবে না।
(লেখাটা একেবারেই আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে লেখা। সমস্যার ব্যাপকতা আরও অনেক বেশি। আশা করি অন্য অনেকেই সে ব্যাপারে আরও ভাল জানবেন এবং লিখবেন। )
ধূসর জলছবি
মন্তব্য
আপনার অনুভূতিটুকু ভীষণ ভালো লাগলো। খুব গুছিয়ে লিখেছেন।
কিছু ডাক্তার সত্যিই আছেন, যারা অর্থকে বড় করে দেখেন। সেই সাথে আমি নিশ্চিত, অন্য সকল পেশাতেই এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে। নগর পুরলে দেবালয় এড়ায় না। পচন ধরেছে আমাদের মননে, মগজে। সেই পচন কমবেশি সবখানেই ছড়িয়ে পড়ছে। কাজেই কেবল কোন বিশেষ পেশাকে হেয় করা মোটেও যুক্তিযুক্ত নয়।
আরও লিখতে থাকুন--
-----------------------
পথেই আমার পথ হারিয়ে
চালচুলোহীন ছন্নছাড়া ঘুরছি ভীষণ---
ধন্যবাদ ।
আচ্ছা, কেউ যদি প্রশ্ন কিনে ভর্তি পরীক্ষায় পাস করে ডাক্তারি পড়ার সুযোগও পায়, সে ডাক্তারি পাস করবে কীভাবে? মানে ডাক্তারি পরীক্ষাগুলো নিশ্চয়ই না পড়ে পাস করা সম্ভব নয়? নাকি ঐখানেও ঘুলঘুলি আছে?
আমি দেখেছি এদের অনেকেই ২/১ বছর চেষ্টা করে হাল ছেড়ে চলে যায়। তবে যাদের মাঝে কিছুটা ঘিলু আছে তারা ৩/৪ বার করে পরীক্ষা দিয়ে উৎরে যায়। এসব ছেলেপুলেদের বেশিরভাগই নেতা গোছের কিছু বনে যায়,যেটা পরীক্ষা পাসের মহৌষধ। এদের মাঝে যারা একটু চালাক চতুর তারাই সর্বক্ষেত্রে সফল। এই দেশে বোকারাই কেবল বইয়ে নাক ডুবিয়ে ভাল ডাক্তার হওয়ার চেষ্টা করে যায়!!!
প্রশ্ন কিনে ভর্তি পরীক্ষায় পাস করে ডাক্তারি পড়ার সুযোগ পেল। লিখিত নকল করে পার করা যায়। মৌখিক পাস করতে জান বের হোয়ে যায়। মৌখিক পাস করা আবার সোজও। যদি পাওয়া যায় লোভী বা পলিটিক্যাল কোন গুরু।
এ ব্যপারা টা হচ্ছে কয়েক বছর ধরে। এরা এখনও বের হয়নি, তাই আমি নিজে ঠিক জানিনা কিভাবে পড়ছে। আর সবচেয়ে বড় কথা হল ভর্তি পরীক্ষার প্শ্ন যখন পাচ্ছে অন্য পরীক্ষার ও নিশ্চয়ই পাবে। ঘুলঘুলি এখন সবখানেই আছে।
প্রশ্ন অনেক পড়ুয়া ছেলেমেয়েরাও কেনে। ভর্তি নিশ্চিত করার জন্য। তাদের অনেকেই পাশ করা ডাক্তার।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
আপনার কথা সত্যি। কিন্তু প্শ্ন কিনে পাস করতে হবে কেন? আমি নিজে ব্যক্তিগত ভাবে কাউকে চিনিনা বলেই বলেছি আমি ঠিক জানিনা কিভাবে করে। ধন্যবাদ ।
দুইতিনবারে এসএসসি বা এইচএসসি পাশ করা ছাত্র যখন নামসর্বস্ব প্রাইভেট মেডিক্যাল থেকে পাস করে তখন আমার মনে এই প্রশ্নটা আসে। যারা এসএসসি, এইচএসসি পাস করতে পারে না তারা ডাক্তারি পরীক্ষা পাস করে কীভাবে ?
লেখায়
আমাদের চিকিৎসাসেবার সামগ্রিক চালচিত্র এটাই। উত্তরণের চাবিও তো আপনাদের হাতেই, হাসপাতালের হর্তাকর্তা তো চিকিৎসকরাই।
এই কথাটাই এখন পর্যন্ত কাউরে বুঝাইতে পারলামনা। সরকারী হাসপাতালের ডাক্তারের এমনকি ৩য়/৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারির গুপ্তকেশটি পর্যন্ত নাড়াবার ক্ষমতা নাই। তেড়িবেড়ি করলে নগদে মাইর নয়ত ট্রান্সফার।
নাহ, উত্তরনের চাবি শুধু আমাদের হাতে না। শুধু চিকিৎসকরা এটা ঠিক করতে পারবে না। এর জন্য সবার আগে সরকারি ভাবে কিছু নিয়ম নীতি গঠন এবং সেটার বাস্তবায়ন করতে হবে। এ ব্যাপারে টিভি পত্রিকা এদের আরও স্বচ্ছ গঠনমূলক আচরণ করতে হবে। জনগন কে অনেক ব্যপারেই সতর্ক করা এবং তাদের সচেতনতা বাড়াতে হবে। চিকিৎসা সেবা একা ডাক্তারের পক্ষে ঠিক করা সম্ভব না। যেহেতু এখানে রোগীরা জড়িত তাই ডাক্তার রোগীর মিথস্ক্রিয়ার ব্যপারটা অনেক জরুরী । সেক্ষেত্রে এগিয়ে আসতে হবে সবাইকেই । ধন্যবাদ আপনাকে।
@ কুমার
না । এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের চাবি শুধু আমাদের ডাক্তারদের হাতে নেই ।কারণ হাসপাতাল পরিচালনা একটা দলগত কাজ যেখানে ওয়ার্ড বয়,আয়া,দাড়োয়ান,নার্স,ডাক্তার সবাই জড়িত । সেখানে সবাই যদি নিজ নিজ দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন না করে তাহলে শুধু ডাক্তাররা কি করবে ?
অসাধারণ ব্যালেন্সড একটি লেখা। আপনার বলা অনেক কথা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন উপলক্ষ্যে নানা জায়গায় লিখেছি, বলেছি। এমন গুছিয়ে একজায়গায় লেখা হয়নি। গত কয়দিন ধরেই ভাবছিলাম লিখব, সময়ের অভাবে হয়ে ওঠেনি। কাজটি যে আপনি সার্থকভাবে এবং সততার সাথে করেছেন তার জন্য সাধুবাদ জানাই। কিছু বিষয়ে আপনার সাথে সরাসরি মতবিনিময় করতে পারলে ভাল হত। সম্ভব হলে মেইল করবেন:
অথবা
(দ্বিতীয় মেইল এ্যাড্রেসটিই প্রেফার করি, তবে অচেনা আইডি থেকে আসা মেইলগুলো প্রায়শঃ স্প্যামে চলে যায় বলে প্রথমবার প্রথম মেইলটিতে লিখলে খুশি হবো)।
ধন্যবাদ । আসলে আমিও অনেকদিন ধরেই ভাবছিলাম লিখি। কিন্তু আমাদের ডাক্তারদের ব্যস্ততাও তাদেরকে সাধারন মানুষের কাছ থেকে সরিয়ে রাখে,এটাও ভুল্ বুঝাবুঝির একটা কারন। আমি মেইল করছি ১ম টাতেই।
একটা কথা প্রচলিত আছে, ভর্তি হতে পারলে চেয়ার টেবিল একদিন পাশ করে যায়।
একেবারে আসল জায়গাগুলো ধরিয়ে দিয়েছেন।
শুধু ডাক্তার না, প্রায় সবক্ষেত্রেই মনে হয় আমরা একটা দুষ্টচক্রে পড়ে গেছি। হিমু ভাইয়ের প্রশ্নটা আমারও ছিলো। তবে পরে মনে হলো, সর্ষের মধ্যেই ভূত থাকে। দলীয়করণ, চামচামি এসব করে গুটিকতক যেসব ডাক্তার কিংবা মেডিক্যালের অন্যান্য কর্মকর্তা, তাদের ছত্রছায়াতেই এইসব নকলবাজ ছাত্ররা ডাক্তার হয়ে ওঠে আবার। আর ক্রমাগত মানসিক নিষ্পেষনে যেতে যেতে সবাইই মনে হয় মনুষ্যত্ব হারিয়ে ফেলে। মানুষর জীবন কেবলমাত্র তাদের ব্যবসায়ের উপকরণ বা কাঁচামাল।
আমার জানামতে একটা ক্ষুদ্র উদাহরণ দেই। নিয়ম করা হয়েছে যদ্দূরজানি পাশ করা ডাক্তারকে গ্রামে কিংবা থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অন্তত দুই বছর কাটাতে হবে। কিন্তু গ্রামে কেউ যেতে চায় না। এর প্রেক্ষিতে শুধু ডাক্তারকেই দোষারোপ করা হয় যে টাকার লোভে গ্রামে যাচ্ছে না। কিন্তু আমাদের থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্যে যেইসব নূন্যতম সরঞ্জামাদি এবং লোকবল দরকার তার কোনোটা কি আছে? তার উপরে আছে এলাকার বিভিন্নরকম রাজনৈতিক এবং সামাজিক চাপ। এখন একজন নতুন ডাক্তার হুট করেই এমন রিস্ক নিয়ে অস্থিতিশীল পরিবেশে যেতে চাইবে কেন? আমাদের যেই থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স দেখেছি, সেখানে সুস্থ মানুষ গিয়েও অসুস্থ হয়ে যাবে। সেখানে অসুস্থরা টিকবে কীভাবে? ডাক্তার আর নার্সদের কথা বাদই দিলাম। উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি না করে সব দায় দায়িত্ব শুধু ডাক্তার এর উপরে দেয়া এখন নিয়ম হয়ে গেছে। যুগেযুগে পাবলিক সেন্টিমেন্ট ব্যবহার করে যাচ্ছে সব। এর মধ্যেও অনেকে সৎভাবে কষ্টকরে মানব সেবা করে যাচ্ছেন। আর সেটা অন্য পেশা যেমন রাজনীতিবিদের মতোই, এক বালতি বালির মধ্যে একটা মুক্তো।
ঘুণ লেগেছে সবখানেই। একক না, সম্মিলিত একটি জেনারেশনের সমন্বিত প্রয়াস এবং ত্যাগ ছাড়া এই অবস্থার উত্তরণ মনে হয় সম্ভব না।
অতীত
আপনার সাথে পুরোপুরি একমত। আমি বিসিএস দেইনি,কারন এ পরিবেশে গিয়ে থাকা সম্ভব না। কিন্তু সবাই সেটা পারে না। অনেকেরই বাসা থেকে সাপোর্ট দিতে পারে না, তখন তাদের সরকারি চাকরি না নিয়ে উপায় নেই। কিন্তু হেলথ কপ্লেক্স গুলোতে থাকার মত পরিবেশ নেই বেশিরভাগটাতেই , সেক্ষেত্রে একটা মেয়ের পক্ষে থাকাটা অনেক বেশি দুরূহ । তবুও এধ্যেও আমার কিছু বন্ধুরা অসাদ্ধ সাধনের চষ্টা করে যাচ্ছে। কিন্তু কতদিন পারবে ? আমরা মুল সমস্যায় না গিয়ে চোখ বুঝে ডাক্তার দের গালি দেই। তাতে সমস্যা আরও বাড়তেই থাকবে দিনের পর দিন।
সহমত
"ঘুণ লেগেছে সবখানেই। একক না, সম্মিলিত একটি জেনারেশনের সমন্বিত প্রয়াস এবং ত্যাগ ছাড়া এই অবস্থার উত্তরণ মনে হয় সম্ভব না।"
কে শুরু করবে আগে? সব আমিকেই এক সাথে।
বিষদ আলোচনায় অনেক পরিষ্কার ধারনা উঠে এসেছে
ধন্যবাদ।
গুছিয়ে লিখেছেন।
এইসব সমস্যা সমাধানের চাবিও কিন্তু ডাক্তারদের হাতে।
[আমার চারপাশ]-[ফেবু]-[টিনটিন]
এই ধারনাটাই ভুল বলে মনে করি।। শুধু ডাক্তার দের পক্ষে চিকিৎসা সেবার পুরো বিষয়টি ঠিক করা সম্ভব না। এখানে আরও অনেকের অনেক ভুমিকা আছে।আমি সেটাই লিখে বুঝাতে চেয়েছি।
এলাকার বাঘকেই তো আগে হুংকার দিতে হবে।
[আমার চারপাশ]-[ফেবু]-[টিনটিন]
এলাকার বাঘকে আগে হুংকার দিতে হবে তা মানছি । কিন্তু পারিপার্শ্বিক অবস্থা যদি অনুকূলে না থাকে তাহলে বাঘকেও কিন্তু খুব তিক্ত অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হয় ।
সুন্দর গোছান লেখা। অনেক সত্যি কথা উঠে এসেছে আপনার লেখায়। কিন্তু এর থেকে উত্তরনের পথ কী? আমি দুইজন আপুকে চিনি যারা শুধুমাত্র রাজনীতির কারনে এফসিপিএস পার্ট-২ তে পাশ করতে পারছেননা।
বেসরকারী মেডিকেল থেকে বিপুল টাকা খরচ করে চিকিৎসক হচ্ছে অনেকেই কিন্তু পেশাগত দায়বদ্ধতা কি তাদের মধ্যে তৈরি হচ্ছে? এটাকে তো অনেকেই বিনিয়োগ হিসেবে দেখছেন !
এমএস, এমডি তে ভর্তির একটা কোটা আছে। ক্ষমতায় যারা থাকে শুধু তাদের চ্যালারা ঢুকতে পারে। বলতে পারেন ৫ বসরের কনট্রাক্ট। মেধাবীদের জন্যও একটা কোটা আছে। ধরেন ১৫ জনের ১০ জন রাজনৈতিক বিবেচনায়। ৫ জন মেধায়।
এফসিপিএস এ এরকম কিছু শুনি নাই। এফসিপিএস পাশ ফেল জানতাম মেধাতে হয়। মাঝে মাঝে এমনও হয় এক বন্ধু অন্য বন্ধুর পরিক্ষা নেয়। সে ক্ষেত্রে কিছু সুবিধা পেতে পারে। অনেক সময় এমন হয় পাশ করতে না পারলে অনেকে দোহাই দেয় রাজনীতির।
আমার এক সিনিয়ার ভাই একবার বলেছিল রাজনীতিতে ইনভল্ব হও নইলে ফাইসা যাবা। বিনপি পন্থি ছিলাম, কোন মিটিং মিছিল করতাম না, এই ছিল আমার দোষ। আমি উনাকে বলেছিলাম পারলে ফাসইয়েন। উনি পারেন নাই।
এক বার ক্লোজফ্রেন্ড ছাত্রদলের প্রসিডেন্ট এর সাথে গেলাম ট্যনারি পট্টিতে,পিন্টুর অফিসে। ভাইজান এসে বলে তোদের তো পার্টি অফিসে দেখিনা। বন্ধুটির উত্তরটা ছিল আমরা প্রফেসনাল আমাদের পক্ষে সাধারন রাজনীতি করা সমভব না। ওই ছিল আমার শেষ।
আর একটি কথা মেডিকেল কলেজ গুলোতে মেয়েরা রাজনীতিতে খুবই কম জরায় জন্য ওদের সমস্য হতে কখন শুনি নাই। তবে ছেলেদের ব্যাপারে পাষ-ফেল একটা বড় ফেক্টর।
উত্তরনের পথ খুঁজে বের করার জন্য আগে সমস্যা খুঁজে বের করতে হবে, সেটাকে সমস্যা বলে স্বীকার করতে হবে তারপর সমাধানের পথ খুঁজতে হবে। আমাদের সরকার থেকে শুরু করে সাধারন জনগন মনে করে সমস্যা হল এ্কটাই আর সেটা হল ডাক্তার গুলো সব অমানুষ । এই ধারনাটা আগে বদলাতে হবে। আর সমাধান করতে হবে সবাই মিলেই। একা কেউ কিছুই করতে পারবে না।
বেসরকারি মেডিকেল নিয়ে আমার মত জানাতে হলে আবার আর একটা পোস্ট লিখতে হবে। বেসরকারি মেডিকেলের ছাত্র ছাত্রীরা নিজেরাও বুঝে না যে তাদের নিয়ে আসলে বণিজ্য চলছে। সবচেয়ে ভয়ানক ব্যপার হচ্ছে যে যা খুশি করে বেরাচ্ছে এবং আমরা জেনে বুঝেও চুপ করে আছি। কিন্তু আর কতদিন?
মেডিকেল ভর্তির প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়টা সত্য। এবার আমার খুব কাছের একজন ভর্তি পরীক্ষা দিয়েছিল। তখন বাসায় ফোন করে প্রশ্নপত্র বিক্রির কথা বলা হয়েছে। সব কিছুর একটা সীমা থাকে। এরা সীমা পার করে ফেলেছে।
হাতেগোনা কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া সিনিয়ার ডাক্তারদের ব্যবহার বাংলাদেশে খুবই খারাপ। যখনই পরিবারে কেউ অসুস্থ হয়েছে এবং ডাক্তারের সরনাপন্ন হয়েছি, তখনই কিছু তিক্ত অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি। অথচ এই চিত্রটা ইউরোপে সম্পূর্ণ ভিন্ন। এখানে ডাক্তারের কাছে গেলে তারা কথা বলে। অনেক সময় লাগিয়ে কথা বলে। চিকিৎসা কীভাবে করা হচ্ছে, কেন করা হচ্ছে সেটা রোগীর কাছে ব্যাখ্যা করে। অথচ বাংলাদেশের সিনিয়ার ডাক্তাররা রোগী দেখেন চার-পাঁচ মিনিট; তাই দুই বা তিনজন জুনিয়ার ডাক্তার পাশে বসে থাকে। তারাই দেখে, প্রেস্ক্রিপশন লেখে! তাছাড়া, একজন রোগীর সমস্যা অন্য তিনজন ডাক্তারকে জানার জন্যে তো রোগী অনুমতি দেয় নি। তাহলে তারা সেখানে বসে কী করে?
আসলে সমস্যাটা যতটা সরল ভাবে আপনি দেখছেন, ততটা সরল না। আদর্শ, মূল্যবোধ, আইন, উদারতা এবং প্র্যাকটিস - সবগুলোর অভাব জগাখিচুড়ী পাকিয়ে ফেলেছে।
তবে আমি আশাবাদী। আপনার মত মানুষ যারা চান সিস্টেমটা বদলাতে, তাদের সংখ্যা আরো বাড়ুক। শুভ কামনা রইলো।
টুইটার
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে, সময়োচিত লেখারটির জন্য।
বিসিএস দিয়ে একই সাথে কেউ মেডিকেল অফিসার এবং কেউ ম্যাজিস্ট্রেট হচ্ছে। তাদের বেতনও মনেহয় এক। কিন্তু একটা থানা হেল্থ কমপ্লেক্স এ রোগি আর তাদের অভিভাবক রা ডাক্তার দের সাথে এমনভাবে কথা বলে যেন ডাক্তার ওর চাকর। আবার এই লোকগুলাই একই সারির ম্যাজিস্ট্রেটকে দেখে একাধিকবার সালাম ঠুকে। শুধু তাই না সরকারিভাবেও ডাক্তাররা কম সুবিধা পায়।
এইসবের জন্য আমার মনেহয় হেল্থ সেক্টরের বড় বড় ডাক্তাররা বেশি দায়ি। একটা সরকার সে যে দলেরই হোক তারা কখনই ডাক্তারদের কষ্ট বুঝবেনা যেটা একজন ডাক্তার বুঝবে। কিন্তু আমাদের দেশের যারা বিখ্যাত ডাক্তার আছেন তারা কেন জানি তাদের অনুজদের প্রতি উদাস। অনারারি করার সাথে যদি বেতনের ব্যব্স্থা থাকত তাহলে জুনিয়র ডাক্তারদের নিজেদের পেট চালানর জন্য অন্যত্র চাকরির কথা ভাবতে হতনা। বরং তারা আরও মনোযোগী হয়ে রোগী দেখত।
আপ্নাকেও অনেক ধন্যবাদ । আনার কথার সাথে সম্পূর্ণ একমত। রোগীদের এই আচরণ টা নিয়ে আমি সমস্ত বিসিএস ডাক্তার দের ক্ষোভ জমতে দেখছি। এভাবেই একের সাথে আর জনের সম্পর্ক নষ্ট হয়। আমাদের দেশের মানুষ বড় ডাক্তার দেরই শুধু ডাক্তার মনে করে। এবং বলে তারা খারাপ ব্যবহার করে, সময় দেয় না ।। কিন্তু সেরকম ডাক্তার কয়জন। বিখ্যাত ডাক্তার তো এদেশে খুব বেশি নেই। বাকিরা তো শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত ও হচ্ছে প্রায়ই। খুব অদ্ভুত একটা প্রবনতা হল রোগী বেচে থাকলে আল্লাহ বাঁচিয়েছে কিন্তু মরে গেলে ডাক্তার মেরে ফেলছে। হা্সপাতালে আনতে আনতে রোগী মারা গেছে সেই দোষটাও ডাক্তারের ঘাড়ে বর্তায়। আমার নিজের দেখা অভিজ্ঞতা থেকেই বলছি। মানুষের এই ধারনা টাও বদলান উচিৎ।
ডাক্তাররা কি প্রত্যাশা করেন, রোগী তাঁদের উঠতে বসতে সালাম দেবে?
একজন ম্যাজিস্ট্রেটকেই বা একজন নাগরিক উঠতে বসতে সালাম দেবে কেন?
আপনি ব্যাপার টাকে জটিল করে দেখছেন। এটা একটা তুলনা মাত্র। তারপরেও বলছি সরকারি ডাক্তার রা তাদের প্রাপ্য সুবিধা পায়না। এখানে সিস্টেমের দোষ টাই বড় করে দেখিয়েছেন লেখক। আমরা যারা দেশের বড় বড় ডাক্তারদের নামকরা(!) হাসপাতালে চাকরি করি তারাই জানি যে আমাদের গুরুজনেরা তাদের জুনিয়রদের সাথে কতটা একচোখা আচরণ করেন। অথচ দেশের সরকারের কাছে তাদেরই উচিত এই অব্যব্স্থাপনা তুলে ধরা। আবার এনারাই নিজেদের ছেলেমেয়েদের এমবিবিএস পাশ করানোর জন্য একটা মেধাবী ছাত্রকে ফেল করিয়ে দেন। আবার তাদের পোস্টগ্র্যাজুয়েশনও হয়ে যায় কোন ঝামেলা ছাড়াই। এটা হয়ত সবার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য না কিন্তু যারা জানেননা তাদের জন্য উদাহরণ্স্বরূপ বল্লাম।
আমি বাংলাদেশের অন্য সাধারণ মানুষদের মতোই জটিল প্রকৃতির লোক। আপনার ক্ষোভ কি রোগী ডাক্তারকে একাধিকবার সালাম না ঠোকায় (যেমনটা তারা ম্যাজিস্ট্রেটদের ঠোকে), নাকি ডাক্তারের সাথে দুর্ব্যবহার করায়? পরিষ্কারভাবে জানান। রোগী আপনাকে একাধিকবার সালাম ঠুকে হাতজোড় করে না দাঁড়ালে সেটা ডাক্তারের চোখে দুর্ব্যবহারের মধ্যে পড়ে কি না, সেটাও আমি জানতে ইচ্ছুক।
একটা থানা হেল্থ কমপ্লেক্সে কিছুদিন কাটিয়ে আসুন। আশাকরি জবাব পেয়ে যাবেন।
থানা হেলথ কমপ্লেক্সে কিছুদিন কাটিয়ে না এসে আপনার কাছ থেকেই উত্তরটা পাওয়ার আশা করছি। ডাক্তার হিসেবে আপনি কি রোগীর কাছ থেকে একাধিকবার সালাম না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ? ম্যাজিস্ট্রেটদের যেভাবে লোকে একাধিকবার সালাম ঠোকে, আপনাকেও সেভাবে না ঠোকায় আপনার সমস্যা হয়? সরাসরি উত্তর দিন। হাইকোর্ট বা হেলথ কমপ্লেক্স না দেখিয়ে।
দেবারতীদা, আমি তো দেখি লোকজন ডাক্তারকেই বেশি সালাম ঠোকে জজ/ম্যাজিস্ট্রেটের তুলনায়। সরকারী ডাক্তারদের দূর্ব্যবহার সর্বজনবিদিত। ভদ্র ব্যবহার করে এমন সরকারী ডাক্তার খুবই কম। তবে হ্যাঁ, তারা জানে কাকে কেমনভাবে ট্রিট করতে হয়। এটা সম্পূর্ণ আনএথিক্যাল।
আগরকালে নাকি ডাক্তারের ব্যবহারেই রোগী অর্ধেক ভালো হয়ে যেতো। আর আজকাল সরকারী হাসপাতালের ডাক্তারের সাথে কথাই বলা যায়না, কথা বলতে হয় নার্সেস বা ওয়ার্ডবয়েজদের সাথে। আমরা মাঠ ময়দান চরিয়ে খাওয়া মানুষ, এগুলো ভালোই দেখি এবং জানি। মাসে একদিন হাসপাতালে এসে সারা মাসের হাজিরায় সই করে থাকে তেনারা, ঢের দেখেছি।
গত দুই বছর ধরে চেষ্টা করছি নিজের পয়সায় শিশুদের জন্যে দুটো ফ্রি ফ্রাইডে ক্লিনিক চালু করতে, আজ পর্যন্ত পয়সা অফার করেও একটা ডাক্তার পেলাম না, আফসোস! এই না হলে ভলান্টারিজম, এই না হলে চ্যারিটেবল মোটিফ। হাহ্!
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
আপনি যদি নিশ্চিত হয়ে যান যে ডাক্তার রা অমানুষ তাহলে আর কিছু করার নেই আসলে কারন অমানুষ দের কাছ থেকে মনষ্যত্ব আশা করা যায় না। আমি পোস্ট টা লিখেছিলাম, আমরা কাজ করতে গিয়ে কি কি বাধার মুখে পড়ি, কেন কাজ ঠিক ভাবে করতে পারি না, সে সম্পর্কে কিছু জানাতে। আরও বেশ কিছু সমস্যার কথা মানিক বলে দিয়েছে। অন্য সবাই বললে আরও অনেক সমস্যাই বের হত নিশ্চিত । তবে যদি ব্যপারটা এমন হয় যে ডাক্তার রাই সব সমস্যা তৈরি করছে এবং ইচ্ছাকৃত ভাবে সেটা করছে তাহলে আসলে হয় সব ডাক্তার কে ধরে জেলে ভরা উচিৎ নয়ত এই পেশাটাই বাদ দিয়ে দেয়া উচিৎ। আমি অবশ্য একটা কাজ করি সেটা হল আমার ছোট ভাই বোন দের এই পেশায় আসতে না করি। কাজ করেও গালি খাওয়ার কোন মানে হয় না। এতোটা হতাশা নিয়ে অন্য কোন পেশাতে টিকে থাকতে হয় না।
ডাক্তাররা অমানুষ এমন কথা কখোনোই বলবোনা। তবে সমস্য হচ্ছে সংখ্যাগুরুদের আচরণ গোটা সেক্টরের আচরণের প্রতিনিধিত্ব করে। আপনার লেখার সদুদ্যেশ্য নিয়ে কোন সন্দেহ নেই এবং এই লেখা অনেক চিন্তার দোর খুলে দিতে পারে। সমস্য এবং সমাধান নিয়েই আমাদের চলতে হয়। তবে যা লিখেছি তার একবিন্দুও বানোয়াট নয়, বাস্তব অভিজ্ঞতার তিক্ততা থেকে লেখা।
আমার পরিবারে অনেক ডাক্তার আছেন এবং যাদের অনেকেই নিজের কাজের ক্ষেত্রে বিখ্যাত হয়েছেন। যাদের নাম বললে আপনাদের শিক্ষকরা একবারেই চিনবেন। ডাক্তাররা সমস্য তৈরী করেনা, সমস্য জিইয়ে রাখে, এটাই বাস্তবতা। ডাক্তারদের ধরে ধরে জেলে দিলে এর কোনও সমাধান তৈরী হবেনা বরঞ্চ মানুষ সাফার করবে। সরকারী হাসপাতালগুলোতে তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেণীর কর্মীরা যে অরাজকতা চালায় এবং ডাক্তারদের সাথে রোগীদের দুরত্ব সৃষ্টি করে, আপনি কি মনে করেন এতে ডাক্তারদের দায় নেই। যুগের পর যুগ এই অরাজকতা চলে আসছে আর ডাক্তাররা কিছু করতে পারছে না এটা মানা সম্ভব নয়! ডাক্তাররা এখানে কিছু করেনা কারন সরকারী হাসপাতালের এই তৃতীয়-চতুর্থশ্রেণীর কর্মীরাই হাসপাতালের রোগীদের বিভ্রান্ত করে ওইসব ডাক্তারদের প্রাইভেট ক্লিনিকে ভাগিয়ে নিয়ে যায়। আর যেসব ডাক্তারগণ এই অরাজকতা প্রতিরোধ করতে চায়, তারা সংখ্যায় এতোই অল্প যে শেষে মানে মানে রনেভঙ্গ দিতে হয়। সরকারী চাকুরীরত সব ডাক্তার যদি একদিন একযোগে নৈতিকতার বোধে উজ্জীবিত হয়ে যায়, তখন ঠিকই দেখবেন সেই দুষ্টচক্র পালিয়েও বাঁচবে না। কিন্তু অর্থবিত্তের মোহ তাদেরকে এমনভাবে পেয়ে বসেছে যে তাদের আস্কারাতেই এই চলমান অরাজকতা বেঁচেবর্তে আছে এবং আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে থাকবে।
হতাশ হবেন না। আপনাদের পূর্বসূরীদের দ্বারা সৃষ্ঠ একটা বাজে চর্চার কারনে আপনাদের এই হতাশা। এবং এখনওপর্যন্ত তারাই নিরংকুশ সংখ্যগরিষ্ঠ। আপনাদের প্রজন্মের ডাক্তারদের ভিতরে যদি এই চেতনা কাজ করে যে কাজ করে গালি খাবেন না, এবং এই চেতনা যদি ধরে রাখতে পারেন, পূর্বসূরীদের পদচিন্হ অবলম্বন না করে, তবে সেদিন বেশি দুরে নয় যে রোগী স্বেচ্ছায়, স্বপ্রনোদিত শ্রদ্ধায় আপনাদের সাথে কদমবুসি করে কথা বলবে।
আমি আমার মন্তব্যের দ্বারা আপনাকে আহত করে থাকলে ব্যাক্তিগতভাবে ক্ষমাপ্রার্থী। আমার মন্তব্য একদমই আপনাকে হতাশ করার জন্যে নয়। বরঞ্চ আপনাদের জানা বিষয়গুলোকে আরেকটু মনে করিয়ে দিতে এই মন্তব্য।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
ধন্যবাদ ।
এখানেই কবি নীরব। আপনি হ্য়তো এমন ছোটখাট ডাক্তার দের বলছেন যাদের নুন আনতে পান্তা ফুরায় অথবা খুব বড় ডাক্তার যারা নিজেদের পকেট গুছাতেই ব্যস্ত। আর আমার প্রশ্নটা সেখানেই।
আপনারা হয়তো অনেক উদাহরণ দিতে পারবেন ডাক্তারদের বিরুদ্ধে কিন্তু ওই পর্যন্তই। কেন এমন হচ্ছে সেটা কেউ তলিয়ে দেখেননা।
আরেকটা কথা, আমি দা নই, দিদি।
লিঙ্গবিভ্রাটের জন্যে দুঃখিত দিদি। আজকের পকেট গোছানো তথাকথিত বড়ো ডাক্তাররা কিন্তু একদিনেই বড়ো ডাক্তার হয়নি। তারাও একদিন সদ্য পাশ করা তরুন সংগ্রামী পেশাজীবি ছিলো। চারিত্রিক বিবর্তন রাতারাতি হয়না, তবে হয় এবং ব্যাপকভাবেই হয়। এবং এটা সরকারী ডাক্তারদের ক্ষেত্রে অতিরিক্তরকম বেশি। মডারেশন থেকে ছাড়লে একটু ধূসরের মন্তব্যে আমার ব্যাখ্যাটায় একটু চোখ বুলাবেন।
অভিযোগ ডাক্তারদের বিরুদ্ধে নয়, অভিযোগ স্পষ্টতই সিস্টেমের বিরুদ্ধে। সমস্য হচ্ছে সরকারী ডাক্তাররা এই সিস্টেমের শ্রষ্টা বা পৃষ্ঠপোষক। সুতরাং অভিযোগ অবধারিতভাবে তাদের বিরুদ্ধেই যায়। সরকারী হাসপাতালে একজন নবীন ডাক্তার যেটুকু সময় দেওয়ার কথা তার থেকে বেশি ছাড়া কম দেয় এমনটি দেখিনি। কিন্তু যদি বলেন একজন সিনিয়র ডাক্তারের কথা, দুঃখিত দিদি, একদমই মানতে পারছি না। আর খেয়াল রাখবেন, আমি কিন্তু এখানে কেবলমাত্র সরকারী হাসপাতালের ডাক্তারদের কথা বলেছি, অন্য কারোর নয়।
অর্থলিপ্সার কোনও তল নেই, সুতরাং এখানে তলিয়ে দেখার চেষ্টা সময় এবং প্রচেষ্টার অপচয় মাত্র।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
আমি নিজেই বলেছি সিনিয়র ডাক্তার রাই এসব করছে। স্যার দের মধ্যে কিছু ডাক্তার ভাল কিন্তু সরকারিতে অধিকাংশই বিভিন্ন রাজনিতিক দলের সাথে যুক্ত। এরা ডাক্তারি কম রাজনীতি বেশি করে। এদের খারাপ কাজের বোঝা টা আমাদের ঘাড়ে নিতে হয়।
ধন্যবাদ। আপনার কথার সাথে একমত। আমি নিজেই বলেছি অনেক ডাক্তার দের ব্যবহার খারাপ। তবে আপনার একটা কথা বুঝলাম না , আমি সমস্যা টা সরল ভাবে কোথায় দেখলাম। বরং আমি লিখে এটাই বুঝাতে চেয়েছি যে সমস্যা টা মোটেই সরল না। আদর্শ ,মূল্যবোধ, আইন , সরকার, প্রচলি্ত সিস্টেম, শিক্ষা ব্যবস্থা এই সব জায়গাতেই সমস্যা আছে। এ সব কিছু ঠিক না করে শুধু ডাক্তার দের ব্যবহার খারাপ ( যদিও সিনিয়র ডাক্তার দেরই ব্যবহার খারাপ বেশি এরা একাংশ , ডাক্তার মানে শুধু এরাই না ।) এ কথা বলে বা এটাকে প্রধান সমস্যা মনে করে চিকিৎসা ব্যবস্থা ঠিক করা যাবে না। সিনিয়র স্যার রা কেন চেম্বারে রোগীদের সময় দেয় না সেটাও আমি উল্লেখ করেছি। সে ব্যপারেও সরকারের সুনি্দিষ্ট নিয়ম বানান উচিৎ । আমরা বিনা পারশ্রমিক বা নাম মাত্র মূল্যে সারাদিন খেটে যে সম্মান টা অর্জন করি স্যার রা চেম্বারে বসে সেটা নষ্ট করে। আপনি যদি কিছু মনে না করেন আর একটা কথাও বলতে চাই ইউরোপের সাথে তুলনা করাটা বোধ হয় ঠিক হল না। আমাদের অপ্রতুলতা কত বেশি কিছুটা লিখেছি। সমস্যা আরও অনেক বেশি ব্যপক । বাংলাদেশে বাস করে ইউরোপের চিকিৎসা পাওয়া এখনি সম্ভব না। চেষ্টা করলে অদুর ভবিষ্যতে হতে পারে। কিন্তু আমাদের আর একটা বড় সমস্যা হল(এটা কে বড় কষ্টও বলতে পারেন) আমরা ডাক্তাররা প্রায়ই এ তুলনাটার সম্মুখীন হই। আমার অনেক বন্ধুই প্লাব দিয়ে জব করছে , তারা ওখানে ভালও করছে। কিন্তু আমাদের লিমিটেসন কত বেশি সেটা বুঝাতেই পোস্ট টা লেখা। আমি পোস্ট এ বলেছি আবার বলছি হেলথ সিস্টেম একা ডাক্তাররা ঠিক করতে পারবে না। এটা মিথস্ক্রিয়ার ব্যপার। এখানে অনেকেই জড়িত ,তাদের সবার এগিয়ে আসতে হবে।
কষ্ট করে পড়েছেন এজন্য ধন্যবাদ ।
আপনি প্রতিটা সমস্যার আলোচনা করার পরই বলে দিয়েছেন যে ওটার সমাধান হওয়া উচিত। কিন্তু আমার কাছে বিষয়টা অতটা সরল মনে হয় নি। অর্থাৎ চাইলেই সমাধান হবে না। সব কিছু যেমন আইন করে সমাধান করা সম্ভব নয়, আবার সব কিছু আদর্শ দিয়েও প্রতিষ্ঠা করা যায় না। এজন্যে একটু সময় লাগবে। তাছাড়া সমাধানের কিছু প্রস্তাবনাও আশা করেছিলাম যা আমি লেখাটায় পাই নি। হয়তো ভবিষ্যতে আপনি সে বিষয়ে লিখবেন।
ইউরোপের ডাক্তারদের উদাহরণ দিতে গিয়ে আমি সুযোগ-সুবিধার কথা বলি নি কিন্তু। আমি ব্যবহারের কথা বলেছি। মজার বিষয় হলো, বৃটেনের ডাক্তারদের একটা বড় অংশ বাংলাদেশী-ভারতীয়-পাকিস্থানী (আমার ডাক্তারও উপমাদেশীয় ছিল তবে দেশটা কখনও জিজ্ঞেস করি নি)। তাঁরাই নিজনিজ দেশে ফিরে গেলে ব্যবহার খারাপ করছে। বিস্ময়কর, কিন্তু সত্য। যাইহোক, অন্তত ব্যবহারের এই অংশটুকুতো তুলনা করা যায়, তাই না?
টুইটার
বাংলাদেশে চিকিৎসা সেবা যারা নিতে যান, তাদের মনে চিকিৎসা সম্পর্কে সঠিক ধারণাটি নেই। তাদের প্রত্যাশার সাথে প্রাপ্তির পার্থক্য অনেক বেশি, যেটি গোটা চিকিৎসা পরিষেবা ব্যবস্থার মুখ্য প্রতিনিধি, অর্থাৎ চিকিৎসকদের প্রতি তাদের ক্ষুব্ধ করে তোলে। কিন্তু সঠিক ধারণাটি তাদের দেয়া হোক, এ নিয়েও ডাক্তারদের কিছু বলতে শুনি না। সম্ভবত সঠিক ধারণাটি নিয়ে মানুষ বেড়ে উঠলেও প্রভাবশালী চিকিৎসকদেরই ক্ষতি, তারা নানা খ্যাপ মারার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে। ফলে এটি একটি বিষচক্রে পরিণত হয়েছে।
আমি এই পোস্টের লেখকসহ তরুণ চিকিৎসকদের বলবো, আপনারা কী চান, তার একটা আউটলাইন উপস্থাপন করুন। কী পেলে আপনারা মানুষকে উন্নততর চিকিৎসা সেবা দিতে পারবেন?
একজন ডাক্তার দিনে ২৫ জন রোগী দেখলে তার আচরন বা রোগীকে দেয়া সময় যেমন হবে , সে যদি দিনে ২০০ রোগী দেখে তাহলেও কি একই রকম হওয়ার কথা। আমরা অনেকেই চেষ্টা করি এরপরও একই রকম কেয়ার করার। কিন্তু কেউ কেউ ধৈর্য টা ধরে রাখে না অথবা রাখতে পারে না । আর একটা কথা, আমার অনেক সিনিয়র আপু ভাইয়া দের দেখছি , একটা সময় তারা অনেক নিবেদিত ছিল পেশাটাতে , কিন্তু নিজেদের পেশা নিয়ে হতাশা, রোগীদের খারাপ ব্যবহার এই সব কারনে কেমন যেন দিন কে দিন ধৈর্য হারা হয়ে যাচ্ছে। আপনি হয়ত বলবেন ডাক্তার দের এরকম হলে মানায় না। কিন্তু সমস্যা হল মানুষ মাত্রই এরকম । আপনি কাজ করেও গালি খেলে এরপর আপনার কাজের আনন্দ কমতে থাকবে, আগ্রহও কমে যাবে। আপনি বললেন নিজ দেশে গিয়ে খারাপ ব্যবহার করছে অথচ একই মানুষ। তাহলে কেন? এজন্যই বললাম ব্যবহারের অংশটুকু তুলনা করাটাও ঠিক হবে না। আর একটা ব্যপার খারাপ ব্যবহার বেশির ভাগটাই করে স্যারেরা । কারন তারা ভাবে তারা যাই করুক শাস্তি তো দূরের কথা রোগীও কমে যাবে না। এদের ব্যপারে আমাদেরই কোন শ্রদ্ধা বোধ নাই । কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি আমদেরও পাস করা , টিকে থাকার জন্য এদের হাতেই বন্দী থাকতে হয়। এজন্যই বোধ হয় তরুন ডাক্তার রা মুখ খুলে না সহজে।
রোগী উঠতে বসতে সালাম দেবে সেটা যেমন একজন ডাক্তার হিসেবে আমার চাওয়া নয় তেমনি হাসপাতালের যেকোন ধরনের সমস্যায় রোগী কিংবা রোগীর লোকজন গালাগালি করবে, কখনো কখনো গায়ে হাত তুলবে সেটাও আমার চাওয়া নয়।
প্রিয় হিমু ভাই,
রোগী যখন সরকারী হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয় তখন একজন রোগীর সাথে কয়জন করে অ্যাটেনডেন্স থাকে জানেন? একটা সময় তৈরী হয় যখন রোগী সামলানোর চাইতে রোগীর মানুষজন সামলানো খুব কঠিন হয়ে যায়। এমনিতেই রোগী কম নয় তার সাথে যদি রোগীর লোকজনের বাড়তি অপ্রয়োজনীয় একটা চাপ যুক্ত হয় তখন কি আসলে মাথা ঠান্ডা রেখে কাজ করা সম্ভব? বলতে পারেন বাড়তি এই লোকগুলোকে ঢুকতে না দিলেই হয়। বলাটা হিমু ভাই সত্যি সহজ। আমরা ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ইন্টার্ণ করার সময় হাসপাতাল পরিচালককে এই দাবী জানিয়েছিলাম। সেই মোতাবেক হাসপাতাল বহির্বিভাগে পাহারাদার ও বসানো হলো। ফলাফল জঘন্য, নিত্যই সেখানে রোগীর লোকের সাথে দাড়োয়ানের হাতাহাতি হতো। সবারই এক কথা, তাদেরকে কেন ঢুকতে দেয়া হবেনা? কখনো কাউকে বোঝানো যায়নি যে কাজটা তাদের রোগীর স্বার্থেই করা হচ্ছে।
একই সাথে যখন চারটা কিংবা পাঁচটা রোগী আসে, যাদের কারও মায়োকার্ডিয়াল ইনফার্কশন, কারো রেনাল ফেইলিউর এবং কারো সিওপিডি, তখন আসলে সব রোগী একই সাথে সমান মনোযোগের দাবী রাখেন। সাথের অনেকগুলো মানুষ তখন যদি ডাক্তারের কানের সামনে চিৎকার চেঁচামেচি করতে থাকে তখন চিকিৎসার পুরো প্রক্রিয়াটি কিন্তু প্রশ্নের সামনে এসে দাঁড়িয়ে যায়। এটাই ঘটে চলেছে। আমি অন্তত ইন্টার্ণ করার সময় তাই দেখে এসেছি।
এর মাঝে কিছু দালাল শ্রেনীর লোক ঢুকে যায় যারা হাসপাতাল খুব খারাপ, ঠিকমতো চিকিৎসা হচ্ছেনা এই জাতীয় কথা ঐ হযবরল মুহূর্তেই রোগীর লোকজনের সামনে বলা শুরু করেন। এতে সাথে রোগী নিয়ে আসা বিহবল মানুষগুলো আরো ক্ষেপে যান। বিশ্রী একটা পরিস্থিতি তৈরী হয়। বিশ্বাস করুন হিমু ভাই এই পরিস্থিতি গুলো আমার নিজের চোখে দেখা এবং এই জাতীয় পরিস্থিতিতে আমি অসংখ্যবার পরেছি। দালাল গুলোর সামনে দাঁড়িয়ে কিছু বললে দেখা যাবে এই দালালগুলো হাসপাতালের তৃতীয় বা চতুর্থ শ্রেনীর কোন কর্মচারীর আত্মীয় বা বন্ধু স্থানীয় কেউ। তাই কিছু বললেই হাসপাতালে তৃতীয় শ্রেনীর বা চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারীদের হরতাল। ফলাফল হাসপাতালে একধরনের অচলাবস্থা তৈরী হওয়া।
আরেকটা বিষয়তো খুবই জরুরী, সেটা হচ্ছে রোগীর রোগ নির্ণয়ের জন্যে যে নানারকম প্যাথলজিক্যাল, বায়োক্যামিকাল কিংবা মাইক্রোবায়োলজিকাল পরীক্ষা নিরীক্ষা করা। মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এই পরীক্ষা গুলো হয় কলেজ সেকশনে যেটা দুপুর বা বিকেল তিনটার মাঝেই বন্ধ হয়ে যায়। দুপুর দুইটা বা তিনটার আগে আসা রোগীর এইসকল পরীক্ষা কলেজ সেকশনে দেয়া গেলেও এর পরে আসা রোগীগুলোকে কোথায় কি পরীক্ষা করাবো? বাধ্য হয়েই তখন বাইরে এই পরীক্ষা গুলো করাতে পাঠাতে হতো। ফলাফল? ডাক্তার খালি পরীক্ষা করতে দেয়, রোগীর লোকজনের এই হচ্ছে অভিযোগ। কলেজ সেকশনের এই বিভাগগুলোকে যদি ২৪/৭ খোলা রাখার ব্যবস্থা করা যেতো তাহলে হয়তো এই গালিটা থেকে অন্তত নিজের পিঠ বাচাঁতে পারতাম। পারিনি এবং এই সমস্ত অভিযোগ কাঁধে নিয়েই ইন্টার্ণ করে আসতে হয়েছে।
আরো জটিল যে সমস্ত পরীক্ষা নিরিক্ষা রয়েছে সেগুলোর যন্ত্রপাতি হাসপাতালে থাকলেও তা অপারেট করার মানুষ নেই। তখন তো ভাই ডাক্তারদের হাত পা আক্ষরিক অর্থেই বাঁধা।
এই সমস্যাগুলোর সমাধান কিন্তু হাসপাতালের পরিচালনা পর্ষদের হাতে। তাদের এসকল বিষয় জানালেও কাজ হতে দেখিনি। বাধ্য হয়েই গাধার মতো কাজ করতে হয়েছে এবং নিত্য গালি হজম করে যেতে হয়েছে, দেখেছি নিজের মহিলা কলিগের গায়ে অ্যাটেনডেন্সেরা কি করে হাত তোলে এবং কতৃপক্ষ কি করে চুপ করে তা হজম করে যায়।
হিমু ভাই, আরেকটা প্রশ্ন করেছেন, অ্যাডমিশন টেষ্টের প্রশ্ন আউট করে পরীক্ষায় টিকে কি করে পাশ করা যায়। হিমু ভাই, এরা পাশ করেনা। সত্যি পাশ করেনা, এদের পাশ করানো হয়, এর জন্যে আবার কিছু নেতা তৈরী হয়ে থাকেন। মাঝে মাঝে খুব অসহায় লাগে এসব দেখলে। এক্কেবারে তুমুল পর্যায়ের হানাহানি ছাড়া এই জড় কিকরে উপড়ে ফেলতে হয় তা আমার জানা নেই।
আমি নিজেও আপনার বর্ণিত পরিস্থিতি কয়েকবার দেখেছি। সমস্যাটা কিন্তু আস্থার জায়গাতেই। রোগীর সঙ্গে যারা রাখোয়াল আসেন, তাদের এই আস্থাটুকু নাই যে তারা চোখের আড়াল হলে তাদের রোগীর চিকিৎসার অব্যবস্থাপনা হবে না। অথচ চিকিৎসা বলতে কী বোঝায়, সেই ধারণাও হয়তো তাদের নাই। ধরে নিন এটা বাংলাদেশের স্বল্পশিক্ষিত রোগী, যাদের নিয়ে আপনাদের কাজ করতে হবে, তাদের একটা অমোচনীয় বা দীর্ঘকালব্যাপী উদ্যোগে মোচনীয় একটা ফিচার।
এ ধরনের পোস্ট একটা আগেও এসেছিলো, সেখানে আমি বলেছিলাম, রোগীর আত্মীয়দের ম্যানেজ করার জন্যে একটা ইনফো পয়েন্ট রাখা হোক হাসপাতালে। বাস্তবতার নিরিখে আমার প্রস্তাব খুব হাস্যকর শোনাতে পারে, কিন্তু হাসপাতালের জনবলের একটা বড় অংশকে রোগীর রাখোয়াল সামলাতে সময় ও মনোযোগ ব্যয় করতে হয়। আবার এদের ঝেড়েও ফেলতে পারবেন না। কাজেই, এদের ম্যানেজ করতে হবে। প্রয়োজনে ব্যবস্থাটাকে তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে ম্যানেজ করা হোক। হাসপাতালের কমাণ্ড এরিয়ায় যেসব মানুষ আছেন, তাদের প্রয়োজনে ছোটো ছোটো গ্রুপ করে এ ব্যাপারে প্রকৃত করণীয় সম্পর্কে অবহিত করা যেতে পারে, এ কাজে স্কুল-কলেজ-মসজিদ এইসবকেও কাজে লাগানো যেতে পারে।
অ্যাটেনড্যান্টদের অন্যায্য সর্দারি কীভাবে লাঘব করা যায়, আমি জানি না। আপনারাই ভালো বলতে পারবেন। কিন্তু অ্যাটেনড্যান্টদের কিন্তু কেউ গালি দেবে না, এটাও মনে রেখেন। গালি ডাক্তারদের কপালেই জুটবে। মানুষ কোনো অ্যাটেনড্যান্টকে দুই মিনিটের চিকিৎসার বিনিময়ে যেহেতু হাজার টাকা ফি দেয় না, তাদের ক্ষোভ-শ্রদ্ধা সবকিছুরই পাত্র শেষমেশ চিকিৎসকেরা।
ভাই একটা ব্যাপার সজ্ঞানে না অবচেতন মনে বাদ দিয়েছেন। কমিশন!! রক্ত পরিক্ষার ৫০ থেকে ৬০ পারসেন্ট বাদ দিলে রোগীর করচ কমে তাতে রোগীর রাগ ক্ষোবটাও কমে।
এরশাদ শাসনের সময় ১৯৮১-১৯৮২)খুলনার ডিসি গিয়েছিলেন তার ওইফ কে নিয়ে এক গাইনোকোলোজিষ্ট এর কাছে এপয়েন্টমেন্ট না করে। খুলনার ডিসি বলে কথা!! আবদার ছিল এখনি তার ওইফকে দেখতে হবে। ডাক্তার সাহেব শুনে ভিতর থেকে খবর পাঠালেন, এপয়েন্টমেন্ট করে আসতে বল। আমি সিরিয়াল ভেংগে রুগী দেখিনা। ডিসি সাহেব চলে গেলেন এবং তার ক্ষমতা বলে চেম্বার সহ পুরো ক্লিনিকটা বন্ধ করে দিলেন। ওটিতে এই না অই নাই বলে। ডাক্তার সাহেব এক মাসের মধ্যে সব ঠিকঠাক করে ওডিট এর জন্য ডাকলেন এবং আবার রুগী দেখার অনুমতি পেলেন। পরে ডিসি সাহেব ডাক্তার সাহেব এর কাছে এসে দুঃখিত হয়েছিলেন। ডাক্তারের নাম ছিল ডাঃ বাদশা মিয়া। উনি মারা গেছেন ১১ বসর হল। এখনও খুলনার ডাঃ বাদশা মিয়া বললে অনেকেই চেনে। ডাক্তারকে সালাম অর্জন করতে হয়। সত্যিকার ডাক্তারকে মানুষ ঠিকই ছালাম দেয়। গালি দেয় না।
সত্যিকার অর্থে একজন নমস্য মানুষ ছিলেন বাদশা মিয়া। কিন্তু ছেলে-ছেলেবউরা তার নাম রাখতে পারেনি। ওরা খুবই বাণিজ্যিক হয়ে গেছে। ক্লিনিকটা এখনও আছে, আরও আধুনিক হয়েছে। কিন্তু বাদশা মিয়ার নীতিগুলো আর নেই।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
আমিও শুনেছি ভাই উত্তরসুরিদের কথা। ডাঃ বাদশা মিয়া ছালাম পায় কিন্তু তার উত্তরসুরীরা পায়না। তারাওতো ডাক্তার। একই কারনে আজ বেশির ভাগ ডাক্তাররা সম্মান পায়না। ডিসি কেন,উলটো টিনও-মেম্বার দেরও সালাম দিতে হয়। আমিও একজন ডাক্তার। এই আলোচনায় আমি একটা উধারন আনতে চেয়েছি কখন মানুষ সত্যিকারের সম্মান দেয়।
বাদশা মিয়া আমাদের দূরসম্পর্কের আত্মীয়, তবে যোগাযোগের সুতোটা খুবই ক্ষীণ ছিলো এবং তার মৃত্যুর পর থেকে সুতোটা একদম ছিড়েই গেছে। আমি খুবই হতবাক হলাম একদিন যখন তার বিলেতফেরত ডাক্তার ছেলে আবদুল কাইউম শেখের একজন প্রতিনিধি আমার অফিসে গেলো ক্লিনিকের ক্যানভাসারি করতে। প্রতিনিধি যতোটা না কাইউমের যোগ্যতার কথা বলছিলো তারথেকে বেশি ফলাও করছিলো যে কাইউম মরহুম বাদশা মিয়ার ছেলে। তাদের মার্কেটিং-এর ধরণ দেখে লজ্জায় আমার মাথা হেট হয়ে যায়। আমি আর বলিনি যে মরহুম বাদশা মিয়া আমাদের আত্মীয়।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
হিমু ভাই,
যে ইনফো পয়েন্টের কথা আপনি বললেন, তা আপনি নিজেই হাস্যকর বললেও এরকম একটি উদ্যোগ আমাদের হাসপাতালে নেয়া হয়েছিলো। উদ্দেশ্য ছিলো ডাক্তার এবং রোগীর অ্যাটেন্ডেন্টস দের মাঝের দুরত্বটা যাতে কমে। যারা এই পয়েন্টটিতে বসতেন তারাও ডাক্তার ছিলেন, সাথে তৃতীয় এবং চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারীরাও ছিলো। কিন্তু কোন কাজে দিলোনা উদ্যোগটা। ঠিক কেন সেটা কাজে দেয়নি আমি জানিনা। আমার মাঝে মাঝে মনে হয় শ্রেনী ভিত্তিক এই সমিতি গুলো অন্তত হাসপাতাল থেকে ঝেঁটিয়ে বিদায় করতে পারলে খুব ভালো হতো। তখন তৃতীয় শ্রেনীর কোন কর্মচারী দলবল নিয়ে এসে বলতে পারবেনা যে তার শ্বাশুড়ি অসুস্থ, বাড়িতে তার চিকিৎসা হচ্ছে এবং সে জন্যে ঔষধ হাসপাতাল থেকেই দিতে হবে। কিংবা হাসপাতালের আল্ট্রাসনোগ্রাম দুপুর দুইটার পর করানো যাবেনা। রোগীকে বাইরে পাঠিয়ে দিতে হবে। বিশ্বাস করবেন কিনা জানিনা, যে উদাহরনগুলো দিলাম, এর প্রত্যেকটাই আমার নিজের দেখা, কিংবা ঘটনা ঘটার সময় আমি নিজে সেখানে উপস্থিত ছিলাম। সেলুকাস!!
ব্যাপারটা তো এমন নয় যে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কর্মীদের এই ধরনের অন্যায় আচরণ সম্পর্কে অবগত নয়। তাহলে সমস্যাটা কোথায়? প্রায় সব হাসপাতালেই তো দেখি সামরিক বাহিনীর কোনো অবব্রিগেডিয়ারকে মহাপরিচালক বানানো হয়। ওনারা কোনো কাজে আসে না?
না আসে না। উনারা সবই জানেন , কিন্তু কিছুই করেন না। আমরা কপ্লেইন করতে গিয়ে শুনি স্যার রা বলে কিছু করতে গেলে ট্রাইক হবে।
হিমু ভাইয়া আপনার ৩৪ নাম্বার পয়েন্টের সাথে সম্পূর্ণ একমত। কিছু প্রভাবশালী ডাক্তার রাই চান না সব ঠিক হোক। তাতে তাদেরই ক্ষতি। রোগীদের অন্ধকারে রাখতে তারা পছন্দ করেন, ওতে সুবিধা বেশি। কি পেলে উন্নত চিকিৎসা দিতে পারব সেটার আউটলাইন দেয়ার প্রস্তাবনাটাও ভালও লাগল। ভবিষ্যতে লেখার ইচ্ছে রাখি। অন্য যারা আছে তারাও দয়া করে লিখুন ।
মানিক , ইনফো পয়েন্ট কাজ করে নায় , কারন আমরা যা বুঝাতাম , দালাল রা তার উল্টোটা বুঝাত। এই দালালের বের করার জন্য অনেক চেষ্টা হয়েছে। বেশ কয়েকটা মেডিকেলে ইন্টার্ন ডাক্তার রা মারও খেয়েছে দালাল দের হাতে। হাস্যকর হলেও সত্যি এদের কে রাজনিতিক দলভুক্ত স্যারেরাই পুষে। আর আস্থার ব্যপারটাতেই সবচেয়ে গণ্ডগোল। রোগীদের প্রত্যাশার সাথে প্রাপ্তির মিল থাকে না। আর কেন সেটা সবসময় সম্ভব হয় না সেটা তারা বুঝেও না। আমরাও সময়ের অভাবে অনেক সময় পেরে উঠি না। এ ব্যপারে হাসপাতালে আর একটা বাড়তি ইউনিট রাখা দরকার যারা বুঝানের কাজ টা করবে। জনবলের অভাব টা আমাদের সবচেয়ে বড় অভাব। আমাদের মিডিয়ার একতরফা সব ডাক্তার দের দোষ দেয়া আচরনে রোগীদের মধ্যে আগে থেকেই একটা নেগেটিভিটি তৈরি হয়। মিডিয়ার এ আচরন টা বন্ধ হওয়া উচিৎ। মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান যে ভাশন দিয়েছেন এটা শুনার পর যে কোন রোগী ডাক্তারের ব্যপারে আস্থা হারাবে। এভাবেই হারাচ্ছে।
ইউরোপ এর ডাক্তাররা কত ভাল এই নিয়ে দেশের মানুষের আক্ষেপ দেখে দেখে আমি ক্লান্ত। আমি যে দেশে থাকি সেখানে স্বাস্থ্য সেবা প্রদানকারী বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান সরকারী। কেউ যদি ডাক্তার দেখাতে চান তাহরে তাকে ফোন করে আগে সিরিয়াল নিতে হবে। লোকাল হেলথ সেন্টারে একজন ডাক্তার দিনে ৬ জন রোগী দেখবেন। বেশি দেখার জন্য বাধ্য করতে পারবেনা তাকে সিস্টেম। আগে ফোন করলে আগে সিরিয়াল। আপনি কতটুকু মরনাপন্ন সেটা দেখার দায়িত্ব আমার না। সিরিয়াল নিয়ে আসতে পেরেছেন, আপনার সাথে কথা বলার জন্য আমার হাতে ১ ঘন্টা সময় আছে। সারা দিনে দেখবই তো ৬ জন। দেখে একটা এক্স রে প্রয়োজন মনে হল। পরামর্শ দিলাম করার জন্য। কোথায় কিভাবে কয়দিনে করে আসতে পারবেন তা সিস্টেমের ব্যাপার ৭ দিন থেকে কয়েকমাস ও লেগে যেতে পারে আপনার পরীক্ষার সিরিয়াল আসতে। এমন ও দেখেছি রিপোর্ট আসতে আসতে রোগী মরনাপন্ন। বছরে রোগী দেখার একটা কোটা থাকে। ৬ মাসেই যদি পুরোটা শেষ করি বাকি ৬ মাস রোগী না দেখলেও চলে। আয় জানতে চান? যতটুকু লিখলাম এতে আমার আয় দিয়ে দেশে একটা হেলথ কমপ্লেক্স এর সব ডাক্তার এর বেতন দিয়েও আরো থাকবে। অতিরিক্ত কাজের আয় বাদই দিলাম।
আপনার খুব বেশি খারাপ অবস্থা হলে হাসপতালের ইমারজেন্সিতে যেতে পারেন। ট্রায়াজ সিস্টেমে আপনাকে অবস্থার গুরুত্ব ভেদে আপনাকে দেখা হবে। ভাঙ্গা হাত নিয়ে ৮ ঘন্টা বসে থাকতে দেখেছি আউটডোরের চেয়ারে। আপনি কোন নেতার কর্মী বা কোন ভি,আই,পি'র স্বজন তা দেখা আমার দায়িত্ব না। সিস্টেম অনুসারে আপনাকে দেখার যখন সময় হবে তখন দেখবো।
কথায় কথায় জানিয়ে রাখি, সরকারী বা বেসরকারী, ৫ মিনিটের আলাপ আর ১ ঘন্টার, শুধু পরামর্শ দেয়া বা অপরেশন করা, যাই করি না কেন, টাকা আমার টা আমি পাবই পাব। প্রধানমন্ত্রীও ঠেকাতে পারবেনা। টাকা হয় আপনি দিবেন আর আপনি অসহায় হলে আপনার হয়ে সরকার পেমেন্ট করবে। ক্যাশ টা আমি পেয়েই যাবো।
ইউরোপের সেবার সাথে আমাদের দেশের সেবা তুলনা করা যাবে না। যে দেশের রিকশা চালক থেকে সর্বোচ্চ পর্যায় পর্যন্ত সবাই পঁচে আছে, সেখানে আপনি ইউরোপীয় সেবা পেতে পেরেন না। এক হাত দূরের কথা, আপনারা এক আঙ্গুলে তালি বাজানোর কথা বলছেন।
ডাক্তার দের বলছি, দলে দলে দেশ ছাড়ুন আর সরকার যত টাকা খরচ করে আপনাকে ডাক্তার বানিয়েছে বলে বোদ্ধারা বলে বেড়ায়, সে টাকা টা রেমিটেন্স হিসেবে পাঠিয়ে দিয়ে বা দান করে নিজেকে দায়মুক্ত করেন অতি সহজেই। পাবলিক ওই টাকায় বিদেশ থেকে চিকিৎসা নিয়ে আসবে।
যারা ডাক্তার দের আচার আচরন আর নানা বিষয়ে বিরক্ত তারা বয়স থাকলে এখনি মেডিকেল কলেজ এ ভর্তি হয়ে যান নইলে নিজের আত্বীয় স্বজন, ছেলে মেয়েদের মেডিকেল এ ভর্তি করান। সরকারীতে না পারলে বেসরকারীকে করান। দেশের বিশিষ্ট নেতা নেত্রীরা আর সমাজ সেবী ব্যবসায়ীরা আপনাদের জন্যআ খুলে রেখেছে চিকিৎসক বানানোর কারখানা। দলে দলে যোগ দিন, আদর্শ ডাক্তার হোন বা বানান। মানবতার হোলসেল নেন।
টানা ৫ বছর চেষ্টা করেছিলাম দেশের দূর্নিতির মাঝেও বেঁচে থাকার। আমি পারি নি। দেশে যে পরিমান কষ্ট করে ডাক্তারী পাশ করেছি এখানে তার ১০ ভাগের এক ভাগে পোস্ট গ্রাজুয়েশন শেষ করেছি। ভালই আছি। সম্মান নিয়ে বেঁচে আছি। ক্লাস ৫ ও পাশ না করা উপজেলা চেয়ারম্যান কে আমার কাজের কৈফিয়ত দেই না। তার সঙ্গী আর এক লোফারের রোগীকে কেন আগে দেখছিনা সেই জন্য সেই লোফারের হাতে থাপ্পর খেতে হয় না। খেতে খেতে বিরক্ত হয়ে অন্যদের থাপ্পড় মারা শুরু করে মনের সাধ মেটাতে হয় না।
মাঝে মাঝে বলতে ইচ্ছে হয়, বাংলার জনগন ভাল কিছু ডিজার্ভ করে না, করবে না ততদিন, যতদিন স্বজনপ্রীতি, দূর্নিতি আর পরিবারতন্ত্র কে লাথি মেরে দেশ থেকে বের করতে না পারবে।
অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া।
১০০% সহমত। পুরাই গুল্লি হইসে ভাই।
ধন্যবাদ ভাইয়া
ইউরোপ এর ডাক্তাররা কত ভাল এই নিয়ে দেশের মানুষের আক্ষেপ দেখে দেখে আমি ক্লান্ত। আমি যে দেশে থাকি সেখানে স্বাস্থ্য সেবা প্রদানকারী বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান সরকারী। কেউ যদি ডাক্তার দেখাতে চান তাহরে তাকে ফোন করে আগে সিরিয়াল নিতে হবে। লোকাল হেলথ সেন্টারে একজন ডাক্তার দিনে ৬ জন রোগী দেখবেন। বেশি দেখার জন্য বাধ্য করতে পারবেনা তাকে সিস্টেম। আগে ফোন করলে আগে সিরিয়াল। আপনি কতটুকু মরনাপন্ন সেটা দেখার দায়িত্ব আমার না। সিরিয়াল নিয়ে আসতে পেরেছেন, আপনার সাথে কথা বলার জন্য আমার হাতে ১ ঘন্টা সময় আছে। সারা দিনে দেখবই তো ৬ জন। দেখে একটা এক্স রে প্রয়োজন মনে হল। পরামর্শ দিলাম করার জন্য। কোথায় কিভাবে কয়দিনে করে আসতে পারবেন তা সিস্টেমের ব্যাপার ৭ দিন থেকে কয়েকমাস ও লেগে যেতে পারে আপনার পরীক্ষার সিরিয়াল আসতে। এমন ও দেখেছি রিপোর্ট আসতে আসতে রোগী মরনাপন্ন। বছরে রোগী দেখার একটা কোটা থাকে। ৬ মাসেই যদি পুরোটা শেষ করি বাকি ৬ মাস রোগী না দেখলেও চলে। আয় জানতে চান? যতটুকু লিখলাম এতে আমার আয় দিয়ে দেশে একটা হেলথ কমপ্লেক্স এর সব ডাক্তার এর বেতন দিয়েও আরো থাকবে। অতিরিক্ত কাজের আয় বাদই দিলাম।
আপনার খুব বেশি খারাপ অবস্থা হলে হাসপতালের ইমারজেন্সিতে যেতে পারেন। ট্রায়াজ সিস্টেমে আপনাকে অবস্থার গুরুত্ব ভেদে আপনাকে দেখা হবে। ভাঙ্গা হাত নিয়ে ৮ ঘন্টা বসে থাকতে দেখেছি আউটডোরের চেয়ারে। আপনি কোন নেতার কর্মী বা কোন ভি,আই,পি'র স্বজন তা দেখা আমার দায়িত্ব না। সিস্টেম অনুসারে আপনাকে দেখার যখন সময় হবে তখন দেখবো।
কথায় কথায় জানিয়ে রাখি, সরকারী বা বেসরকারী, ৫ মিনিটের আলাপ আর ১ ঘন্টার, শুধু পরামর্শ দেয়া বা অপরেশন করা, যাই করি না কেন, টাকা আমার টা আমি পাবই পাব। প্রধানমন্ত্রীও ঠেকাতে পারবেনা। টাকা হয় আপনি দিবেন আর আপনি অসহায় হলে আপনার হয়ে সরকার পেমেন্ট করবে। ক্যাশ টা আমি পেয়েই যাবো।
ইউরোপের সেবার সাথে আমাদের দেশের সেবা তুলনা করা যাবে না। যে দেশের রিকশা চালক থেকে সর্বোচ্চ পর্যায় পর্যন্ত সবাই পঁচে আছে, সেখানে আপনি ইউরোপীয় সেবা পেতে পেরেন না। এক হাত দূরের কথা, আপনারা এক আঙ্গুলে তালি বাজানোর কথা বলছেন।
ডাক্তার দের বলছি, দলে দলে দেশ ছাড়ুন আর সরকার যত টাকা খরচ করে আপনাকে ডাক্তার বানিয়েছে বলে বোদ্ধারা বলে বেড়ায়, সে টাকা টা রেমিটেন্স হিসেবে পাঠিয়ে দিয়ে বা দান করে নিজেকে দায়মুক্ত করেন অতি সহজেই। পাবলিক ওই টাকায় বিদেশ থেকে চিকিৎসা নিয়ে আসবে।
যারা ডাক্তার দের আচার আচরন আর নানা বিষয়ে বিরক্ত তারা বয়স থাকলে এখনি মেডিকেল কলেজ এ ভর্তি হয়ে যান নইলে নিজের আত্বীয় স্বজন, ছেলে মেয়েদের মেডিকেল এ ভর্তি করান। সরকারীতে না পারলে বেসরকারীকে করান। দেশের বিশিষ্ট নেতা নেত্রীরা আর সমাজ সেবী ব্যবসায়ীরা আপনাদের জন্যআ খুলে রেখেছে চিকিৎসক বানানোর কারখানা। দলে দলে যোগ দিন, আদর্শ ডাক্তার হোন বা বানান। মানবতার হোলসেল নেন।
টানা ৫ বছর চেষ্টা করেছিলাম দেশের দূর্নিতির মাঝেও বেঁচে থাকার। আমি পারি নি। দেশে যে পরিমান কষ্ট করে ডাক্তারী পাশ করেছি এখানে তার ১০ ভাগের এক ভাগে পোস্ট গ্রাজুয়েশন শেষ করেছি। ভালই আছি। সম্মান নিয়ে বেঁচে আছি। ক্লাস ৫ ও পাশ না করা উপজেলা চেয়ারম্যান কে আমার কাজের কৈফিয়ত দেই না। তার সঙ্গী আর এক লোফারের রোগীকে কেন আগে দেখছিনা সেই জন্য সেই লোফারের হাতে থাপ্পর খেতে হয় না। খেতে খেতে বিরক্ত হয়ে অন্যদের থাপ্পড় মারা শুরু করে মনের সাধ মেটাতে হয় না।
মাঝে মাঝে বলতে ইচ্ছে হয়, বাংলার জনগন ভাল কিছু ডিজার্ভ করে না, করবে না ততদিন, যতদিন স্বজনপ্রীতি, দূর্নিতি আর পরিবারতন্ত্র কে লাথি মেরে দেশ থেকে বের করতে না পারবে।
আপনার মত এই কথাগুলো অনেক সিনিয়র রাই বলেন । সবাই আশা করে যত কিছু হোক, যত থাপ্পরই খাই গায়ে লাগাব না,আমার মাঝে মাঝে মনে হয় এদেশে চিকিৎসা করার জন্য রোবট দের দরকার মানুষ না। এখানে রোগী সুস্থ হয়ে গেলে আল্লাহ সুস্থ করে, আর মরে গেলে রোগীরা মেরে ফেলে। আর একটা অদ্ভুত আচরন হল এরা চায় ডাক্তার সারাক্ষন এদের মাথার কাছে দাড়িয়ে থাকবে। দিনে ৪ বার দেখলেও মুখের উপরই বলে ডাক্তার আমাকে দেখছে না। আমি নিশ্চিত এদেশে আর কয়েক বছর পর কেউ ডাক্তার হতে চাইবে না। হতে চাওয়া উচিতও না।
দুঃখিত ডাক্তাররা মেরে ফেলে বলতে চেয়েছি।
ভাই কি গ্রীসে থাকেন? এত কম সেবায় এত বেশি টাকা ইউরোপের কোথায় সম্ভব চিন্তা করতেছি।
আয় সম্পর্কে আরেকটু ডিটেলসে বলেন।ওই সোনার দেশে একজন ইঞ্জিনিয়ারের তুলনায় ডাক্তারের বেতন কেমন? অতিরিক্ত কাজেরও কয়েকটা উদাহরণ দিতে পারেন। রোগীকে হুদাকামে টেস্ট লিখে দেয়ার সিস্টেম আছে নাকি?
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
ভাই রুমানিয়াতেও থাকতে পারেন, বলা যাচ্ছে না। ঐটাও তো ইউরোপে পড়ছে। ইমার্জেন্সির তুলনায় সিরিয়াল মেইনটেইন করার যে কড়া নিয়ম আর গুরুত্ব বর্ণনা করলেন, তাতে ইউরোপবাসী চিকিৎসক না হলেও আমার 'ইউরোপবাসী রোগী' অভিজ্ঞতার সাথে তো মিলে না।
ইউরোপবাসী চিকিৎসক ভাইয়ের মন্তব্য খিয়াল করেন,
চিকিৎসক ভাইয়ের সব কথার আসল কথার মূল কথার গোড়ার কথা হইলো এইটা। ট্যাকা মাটি মাটি ট্যাকা! বাকি সব ফুক্কা।
ইউরোপবাসী চিকিৎসক ভাইসাব, এই যখন আসল কাহিনি তখন
- আর এইসব ওয়াজ ফরমাইয়া কী লাভ বলেন! বাংলার জনগণ আসলেই ভালো কিছু ডিজার্ভ করে না, করবেও না ততোদিন- যতোদিন আপনার মতো বাকওয়াজ টাইপের কিছু স্বার্থবাদীর পেছনে টাকা খরচ করে যাবে। পাঁচ বছর তো ঢের সময়, আমি তো আশ্চর্য হচ্ছি পাঁচ মাসই বা আপনি কেমনে ছিলেন বাংলাদেশ নামক ফালতু একটা দেশে!
তা ভাইসাব, ইউরোপ যাওয়ার ইন্তেজাম কি আপনি পাঁচ বছর উপজেলা চেয়ারম্যান আর তার লোফার সাঙ্গপাঙ্গর সাথে গ্ল্যাডিয়েটর্স ফাইট দেয়ার পর শুরু করছিলেন নাকি এর আগেই?
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ধুগো, টাকা ইনকামের ব্যাপারে আমার সমস্যা নাই। কিন্তু সার্ভিসের সাথে টাকার হিসাব না মিললে সমস্যা। আমিও উনার পোস্টে সার্ভিসের নমুনা পড়ে অবাক হইছি।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
শেষের টাই আগে বলি। আমি আমার কোন রোগীকে অবহেলা করিনি। এ বিষয়ে গুরুত্ব আর অহেতুক টেস্ট এর ব্যাপারে ক্ষমতাশীল বা আমার প্রফেসরদের কথা শুনিনি, এ নিয়ে বিরোধে জড়িয়ে পড়েছি বলে আমার ব্যাক্তিগত অনেক ক্ষতিও হয়েছে। আমার সময় উপজেলা চেয়ারম্যান পদটা ছিল না কিন্তু ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সহ এরকম দেশের মালিক আরও অনেকে ছিল।
দেশের বাইরে আসার ইচ্ছা আমার কোন কালেই ছিল না। আমার স্কলারশিপ হয় কাকতালীয়ভাবে এবং আমি সৌভাগ্যবান একদিক দিয়ে একারনে যে আমি আসলে ঐ স্কলারশিপের জন্য এপ্লাইও করিনি। প্লেনের টিকেট কাটার একদিন আগ পর্যন্তও আমি দ্বিধায় ছিলাম দেশ ছেড়ে আসার ব্যাপারে।
আমার জন্য টাকা কোন কালেই মূখ্য বিষয় ছিল না। এখনো না। দেশে টাকার জন্য দিন রাত এক করে ফেলে এমন লোকদের উদ্দেশ্যেই বলা টাকা চাইলে দেশ ছাড়। এদেশে চিরস্থায়ীও আমি হব না। যদি আমি আমার পরিকল্পনা মত আগাতে পারি তো ২০১৩ বা ১৪ তে আমি দেশে ফিরে আসছি। এ পরিকল্পনা আমার এখানে আসার শুরু থেকেই যে কারনে আমার স্ত্রী ছেলে মেয়ে সবাইকে দেশেই রেখে এসেছি যেন তারা আয়েসী জীবনে অভ্যস্ত না হয়ে পড়ে। ফেরার আগে অবশ্য আর একটা দেশে কিছুদিন মধু চাখার ইচ্ছা আছে যে দেশের চিকিৎসা সেবায় আমাদের জনগন মুগ্ধ।
গালাগালি শুরু করবেন না আবার। আমি ক্লিনিকাল সাইড থেকে সরে যাচ্ছি। দেশে ফিরে একচোখা দৈত্যের হাতে নিজের মান সম্মান আর ভাললাগাকে আবার তুলে দেয়ার ইচ্ছে আমার নেই। আমি হয়তো দেশে গাড়ি চালানোর ক্ষমতা রাখবোনা, লাক্সারিয়াস (আপনাদের ইন্জিনিয়ার বা আর্কিটেক্ট দের মতো। ব্যবসায়ী আর উকিল দের ছোঁয়া তো আপনাদেরও ক্ষমতার বাইরে যদি আপনারা সৎ হন) জীবন পাবো না, ছেলে মেয়েদের নামি দামি কলেজ স্কুলে ভর্তি করানোর ডোনেশনের টাকা হাতে থাকবেনা কিন্তু স্বস্তিতে থাকবো।
বাংলাদেশে আত্মীয়তা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অনেকদূর বিস্তৃত। খুঁজলে সব পরিবার বা এলাকাতেই এখন ডাক্তার পাওয়া যাবে। নিরপেক্ষভাবে আপনার পরিবারের বা এলাকার সেই জনের সঙ্গে কথা বলেই দেখুন না চেষ্টা করে সমস্যাটার মূল কোথায় আর তার সমাধানের পথ বের করা যায় কিনা।
বাংলাদেশ ফালতু দেশ না। এর অনেক অর্জন আছে এখনকার এই দূনীতি ঘেরা সময়েও। সমস্যা হচ্ছে আমাদের অসহিঞ্চুতায়, এটিচ্যুড এ। না পাওয়ার যন্ত্রনায় অতিষ্ট হয়ে বেশিরভাগই হয়তো মানসিকভাবে অসুস্থ (গালাগাল না করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দেয়া স্বাস্থ্যের সংজ্ঞা দেখুন)। আমরা কেউই অন্যের সমস্যা না বুঝে অন্যদের উপর হামলা মামলায় ব্যস্ত। বিদ্যুৎ নেই, পল্লী বিদ্যুৎ অফিস ভাঙচুর, আগুন এর পেছনে দোষী কে? আপনি ইন্জিনিয়ার না নিশ্চই। এটা গ্রামের মানুষকে বোঝানোর চেষ্টা করে লাভ নেই। বি,আর,টি,সির বাস আনতে না আনতেই বিকল, সারানো হয় না বা যায় না। দায় কার? পত্রিকায় তো রিপোর্ট হয় ইন্জিনিয়ার দায়ী। বেসরকারী পরিবহন সংস্থার টাকা খেয়ে এই কাজ করে। কিন্তু আপনি আমি দু জন ই জানি একা ইন্জিনিয়ারের হাতে কিছু নেই।
আমি এই পেজ ছাড়া এ নিয়ে কোথাও কিছু লিখি নি কিন্তু মোটামুটি এ বিসয়ক সব লেখা আর কমেন্ট পড়েছি। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তো সালিশ মানি তালগাছ আমার।
রোগীদের অধিকারের কথা সবাই হয়তো জানেন আপনারা, কিন্তু ডাক্তারদের অধিকার নিয়ে অনেক ডাক্তারই সচেতন না। একতার অভাব ও আছে।
আপনারা যারা ভাবেন সমস্যা বের করার চেষ্টা করে দোষ শুধু ডাক্তারদেরই পাবেন তারা নিজ আত্মীয় স্বজন ভাই বোন ছেলে মেয়েকে পাঠান মেডিকেল এ পড়তে। ভাল পরিবারের ভাল ছেলেমেয়েরা আশা করি কসাই আর অমানুষ হবে না।
ডিজি হেলথ এর রিপোর্ট অনুযায়ী একটা থানা হেলথ কমপ্লেক্স এর ডাক্তারদের বেতন যা তার চেয়ে এখানকার মেডিকেল কলেজের নার্স এর আয় বেশি। আমার এক সহকর্মী নার্স ৪ বছরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন, বেতন ২৭০০০০ টাকা। ইন্জিনিয়ার (কোন বিষয় আর ক্যটাগরী তার উপর নির্ভর করে) খুব ভাল জব যদি পান ৩০০০০০ টাকা, তবে সাধারণত ১৮০০০০ দিয়েই শুরু হয় আর ইন্ডিয়ান দের প্রাধান্য বেশি দেয়া হয়।
রোগীকে গাইডলাইন অনুযায়ী সকল টেস্ট আমি দিতে পারি, না দিলেই বরং জবাবদিহিতার মুখে পড়তে হয়। ৭ দিনের জ্বরে আপনাকে নূন্যতম প্রায় ৩০০০ টাকার টেস্ট এমনিই করতে হবে। পকেট থেকে যায়না বলে পার্মানেন্ট রেসিডেন্টরা টের পায়না আর তাদের মুখে শুনে সকলে ভাবে আহা স্বর্গ। কিন্তু প্রতি মাসে ৩০-৬০% ট্যাক্স আপনার বেতন থেকে আর আপনার চাকরীদাতা প্রতিষ্ঠান থেকে কেটে রাখছে এটা সবাই জানে। আমার এখানে যার ইনকাম যত বেশি তাকে তত বেশি হারে ট্যাক্স পে করতে হয়।
আমি সিস্টেম এনালিস্ট হিসেবে কনসাল্টেন্সি করতে পারি, অতিথি শিক্ষক হিসবে পড়াতে পারি, রিসার্চে অংশ নিতে পারি এবং আরও অনেক কিছু। এর প্রতিটার জন্যই আমি আলাদা ভাবে পারিশ্রমিক পাব। আপনিও পাবেন, তবে কিনা আমার চেয়ে হয়তো কম সুযোগ পাবেন। কারন ডাক্তার রোগীর খারাপ সম্পর্ক এখানেও আছে ( শালীনতা মেপে ) বলে স্হানীয়রা সহজে মেডিকেল কলেজ এ পড়তে যায় না আর এখানকার ডাক্তারদের বেতন কম (!) বলে যারা পড়ে তারাএ এখানে কাজ করে না।
আমি গ্রীসে থাকি না। আর গ্রীসের চেয়ে এখানে বেতন বেশী বলে গ্রীসের প্রচুর ডাক্তার এখানে কাজ করে।
অবাক হবেন না ভাই। এখানে একজন অভিজ্ঞ টেকনিশিয়ান ও গড়ে ৬০০ টাকা পায় প্রতি ঘন্টায়।
সাপ্লিমেন্ট তথ্য
একজন নার্স ৬-৮ জন রোগীর দায়িত্বে থাকে সাধারণত আর তার আবার সহকারীও থাকে। একজন ডাক্তার এর কাজ শুধু রোগীর সাথে সাক্ষাত এ সীমাবদ্ধ নয়।
গড়পড়তা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সিরিয়াল পেতে সময় ৩-১০ দিন। সময়মত আসতে না পারলে ১০০০ জরিমানা। ৫ মিনিট দেরী মানে এখানে দেরী। কন্সালটেন্ট এর সময় পেতে অপেক্ষা করতে হতে পারে মাস পর্যন্ত।
প্রতি ৩০০ জনে ১ জন ডাক্তার।
সব কথার সার কথা তুলনা যেখানে সেখানে করা যাবে না। নিজেদের সীমাবদ্ধতাকে মেনে নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার পথ খুঁজে নিতে হবে আর তা করতে হবে সবাই মিলে। অন্য দেশের সাথে তুলনা করতেই যদি হয় একইরকম রিসোর্স এরকম দেশের সাথে করতে হবে।
৬০০ নয় ৬০০০ টাকা হবে।
এই এক লাইনে ব্যাবাক তামশা ফকফকা হইয়া গেল।
দেশের কষ্টটা বেলাইনে আর বাস্তবমূখী ছিলনা বলতে হবে। এখানে যতটুকু খাটিয়েছে তার পুরোটাই ছিল কাজের। তবে আমরা বাংলাদেশের ডাক্তাররা একটা দিকে অনেক এগিয়ে থাকি, আমাদের অভিজ্ঞতার পাল্লাটা ভারী। সরকারী হাসপাতালে একজন আউটডোর মেডিকেল অফিসার ৮-২ টা (আমাদের সময়ে) ৮০-১২০ জন রোগী দেখতেন। রোগের ধরন ও থাকতো বিচিত্র। ওখানকার একদিন এর অভিজ্ঞতা এখানে মাসেও হয়না। মুশকিল আবার একই জায়গায়। রোগী দেখেই তো সময় শেষ। জানার সময় কোথায়। ভাল চিকিৎসা দেয়ার পূর্বশর্ত ভাল জানা। একটা রোগঅ এখানে আমার কাছে আসার আগেই তার জীবন বৃত্তান্ত আমি পেয়ে যাবো। এটা ভালভাবে পড়া, বিশ্লেষন করা, সমস্যা (নার্স জেনে নিয়ে আমাকে জানিয়েছে) সম্পর্কিত সবকিছু গাইডলাইন থেকে পড়ে নেয়ার পর রোগীর সাথে দেখা করা হয়, রোগীকে দেখার পর আবার সিস্টেমেটিকালী নতুন তথ্য সংরক্ষণ করা হয়। সবমিলিয়ে গড়ে ৪০ মিনিট। সময়টা চিকিৎসককে দেয়া হচ্ছে বলেই হয়তো রোগী তুলনামূলক ভাল সেবা পাচ্ছে। জানাটা সবচেয়ে বেশি জরূরী আর কিভাবে অল্প সময়ে জানার কাজটুকু ভালভাবে করা যায় সেটা বের করাতেই উন্নত বিশ্ব মনোযোগ দেয়া হচ্ছে সবচেয়ে বেশি। আমার ব্যাক্তিগত মতামত কন্টিনিউয়াল নলেজ ডেভেলপমেন্ট আর এটিচ্যুড ডেভেলপমেন্ট এর দিকে এখন নজর দেয়া উচিত বেশি আমাদের দেশে। এম,আই,এস এর সি,আই,এস এর ভূমিকা কি বলে মনে করেন ইন্জিনিয়ার ভাইয়েরা? সম্ভব কি উন্নতি করা এ সেক্টরে? আমি বলি সম্ভব।
যতই মানব ধর্ম বলুন না কেন, সারা বিশ্বে হেলথ কেয়ার একটা ইন্ডাস্ট্রি, সার্ভিস ওরিয়েন্টেড ইন্ডাস্ট্রি। ডিমান্ড-সাপ্লাই চেইন এখানেও আছে। মনোপলি আছে, বিজনেস আছে। সৎ এবং অসৎ এই দুই পক্ষও আছে। প্রফিট শেয়ারিং আর এম আর ভিজিট ও আছে। আনএথিকাল বিজনেজ আর ম্যালপ্রাক্টিস এ আছে। ইউ, এস, এ তেও আছে, ইন্ডিয়া বাংলাদেশেও আছে। আমাদের সমস্যা সমাধানের পথ আমাদেরই বের করে নিতে হবে, আমাদের মত করে।
(কেউ ভারত নিয়ে গান গাইতে আসার আগে মেডিকেল ট্যুরিজম আর সারা ভারতের হেলথ সিস্টেম নিয়ে ভাল করে জেনে নেবেন বলে আশা করছি)
হাদারাম কয় কি?
"ডাক্তার দের বলছি, দলে দলে দেশ ছাড়ুন আর সরকার যত টাকা খরচ করে আপনাকে ডাক্তার বানিয়েছে বলে বোদ্ধারা বলে বেড়ায়, সে টাকা টা রেমিটেন্স হিসেবে পাঠিয়ে দিয়ে বা দান করে নিজেকে দায়মুক্ত করেন অতি সহজেই।"
যাইতে যদি হয় ডাক্তার হওয়ার আগেই যাননা। কে বেধে রাখে? আপনার যায়গায় অন্য একজন ভর্তি হবে যে কিনা আপনার মত না আমার মত না। আমিও আপনার মত একজন কিন্তু আপনার মত করে ভাবিনা।
" যেতে যদি হয় ডাক্তার হওয়ার আগেই যান না। " উনি বোধ হয় ডাক্তার দের উদ্দেশ্য করে বলেছেন যারা আগেই হয়ে গেছেন। তবে এভাবে চিন্তা আমিও করি না। চেষ্টা করা উচিৎ অবশ্যই সবাই মিলে।
আমাদের সমস্যা হচ্ছে, না জেনে না বুঝে বেশি মন্তব্য করা। আর সরকারী চাকুরীজীবীদের ঢালাওভাবে দোষী করা। এতে যারা আসলেই দেশের জন্য কাজ করতে চায় বা করছে তারা যে কী পরিমাণ হতাশ হয় তা কেউ চিন্তা করে না। ডাক্তারদের ব্যাপারে জনগণের ধারণাও সঠিক নয়। যেমন, আপনার সামান্য কোন অসুখ করল। সরকারী মেডিকেলে গেলেন। যেখানে অসংখ্য ভীড়। ডাক্তার হয়ত, আপনাকে তাড়াতাড়ি ওষুধ দিলেন, সঠিক চিকিৎসাই। কিন্তু সেই লোকের হয়ত মন ভরবে না। সে বাইরে গিয়ে বলবে, " অমুক ডাক্তারের কাছে গেছিলাম, এমন পিশাচ, একটু ভালমত দেখলোও না। " এরকম অহরহ শুনতে পাবেন আশেপাশেই।
আর ভাল ব্যবহার, সুন্দর সুন্দর কথা বলা, এগুলো পারিপার্শ্বিক অবস্থার কারণে ধরে রাখা সম্ভব হয় না। সরকারী চাকুরীতে চারিদিকে শুনবেন, নাই নাই। লোক নাই, ওষুধ নাই, যন্ত্রপাতি নাই, পর্যাপ্ত নার্স নাই, আয়া নাই, বেড নাই। এগুলোর মাঝে কাজ করা ভয়ানক কঠিন। এরপরে, ডাক্তাররাও তো মানুষ। তাদেরও পরিবার আছে, বাবা-মা আছে। কিন্তু মাস শেষে কী পায় তারা? ১৭৪৫০ টাকা। এই টাকায় বর্তমান যুগে কিভাবে সংসার চালানো যায়, কেউ হিসাব করে দেখবেন। সচলেই কেউ একজন পোস্ট দিয়েছিলেন, মাসিক লাখ টাকার হিসেবে। আর এক বছরে ইনক্রিমেন্ট হবে ৪৫০ টাকা। হাস্যকর। এই পরিস্থিতিতে না পড়লে বোঝা যায় না। খালি দেশপ্রেম আর জনসেবার ব্রত দিয়ে সংসার চলে না। এরপরে দেখবেন পোস্টিং হয়েছে, চিলমারিতে। হয়ত এখনো সন্ধ্যার পরে সেখানে ইলেক্ট্রিসিটি থাকেনা। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্থানীয় মাস্তান, চেয়ারম্যানদের দৌরাত্ন। আর সবাই "হুজুর" "হুজুর" করবে, এতা আশা না করলেও প্রাপ্য সম্মানটুকু একজন এমমবিবিএস পাশ ডাক্তার আশা করতেই পারে। কারণ এইখানে, শুধু ঐ সম্মানটুকুই প্রাপ্তি।
আপনার সাথে একমত
এই যে চিকিৎসা নিয়ে মানুষজনের "মন না ভরা", এটা চিকিৎসা নিয়ে তার অজ্ঞতার কারণেই। চিকিৎসা তো সামগ্রিক ব্যবস্থা, চিকিৎসক তাতে যেমন অংশ, রোগীও তেমনই। আপনারা এক অংশ আরেক অংশের অজ্ঞতা নিয়ে অভিযোগ করছেন, একটু কি বলবেন, রোগীদের অ্যাওয়্যারনেস বাড়ানোর জন্যে আপনারা নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে কিছু করেছেন কি না?
ডাক্তাররা চিলমারিতে পোস্টিং হবে এ কথা জেনেই সরকারি চাকরিতে যোগ দেন। সেখানে সন্ধ্যার পর ইলেকট্রিসিটি থাকে না, সেটা জেনেই তারা বিসিএস দিতে বসেন। চিলমারিতে সন্ধ্যাবেলা অন্ধকারে বসে থাকার সম্ভাবনা নিয়েই তো সরকারি চাকরিতে যোগ দিয়েছেন আপনি, এমন তো নয় যে কেউ আপনাকে ঠকিয়ে চিলমারি পাঠিয়েছে। একই কথা বেতনের ক্ষেত্রেও খাটে। আর সরকারি চাকরিতে কম বেতনের পাশাপাশি কিছু সুবিধাও তো দেয়া হয়। সরকার কি চিলমারিতে আপনার আবাসনের ব্যবস্থা করে না? কী কী সুবিধা পান, আর কী কী অসুবিধা, সেটা একটু কষ্ট করে বিশদে আমাদের জানান। আপনাদের অসুবিধাগুলোর কথা যদি লোকে না জানে, তাহলে "না বুঝে" অনেক মন্তব্য করবে কিন্তু।
নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে কিছু করাটা আমার/আমাদের পক্ষে সম্ভব না। যাদের পক্ষে সম্ভব তারা সব পচে গেছে।
আমি যেহেতু সরকারি চাকরি করছি না তাই কি কি সুবিধা পাচ্ছে আর কি কি অসুবিধা সেটা যারা করছে তারা বললে ভাল হত। আমি দেখি চেষ্টা করব গুছিয়ে বের করা যায় কিনা লিস্ট গুলো। তবে একটা কথা জানি ডাক্তারের সুবিধা তুলনা মুলক ভাবে সমমনা অন্যদের চেয়ে কম। আবাসনের যে ব্যবস্থা থাকে সেখানে থাকাটা অধিকাংশ জায়গাতেই ছেলেদের ক্ষেত্রেই ভয়াবহ, মেয়েদের জন্য অসম্ভব । কাজ ঠিক মত করাতে চাইলে এটা নুন্নতম মান বজায় রাখা দরকার। আর সেখানে চেয়ারম্যান আর লোকাল মাতব্বর দের যন্ত্রণাটাও খুব অসহ্য পর্যায়ের । এর মধ্যে আছে যন্ত্রপাতি আর লোকবলের অভাব।
@ হিমু ভাই ,
চিকিৎসা ব্যবস্থায় চিকিৎসক আর রোগীর সাথে আরও একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ রয়েছে তা হলো প্রশাসন ।
৫০০ বেডের হাসপাতালে যখন রোগী ভর্তি হয় ১৫০০ তখন কিন্তু ডাক্তারের সংখ্যা একই থাকে ।(ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ইন্টার্ণী করার সময়ের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি ) আর এজন্যেই হয়তো 'মন ভরা আর না ভরার ' ব্যাপারটা এসেছে ।তবে তখন কিন্তু কোনো ডাক্তার বলে না আমি ৫০০ রোগীর চেয়ে বেশি কোনো দেখব ।
আর রোগী কিংবা রোগীর লোক উঠতে বসতে সালাম ঠুকবে এটা যেমন আশা করি না ঠিক তেমনি রোগীর লোক গায়ে হাত তুলতে আসবে এটাও কাম্য না আমাদের । যদিও এমন ভাগ্যবান ডাক্তার খুব কমই আছেন যারা এমন তিক্ত অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়নি ।
আর বিসিএস যারা দিতে বসেন তারা ঠিকই জানেন পোস্টিং চিলমারিতে হতেই পারে । বিশেষ করে আমার মতো যাদের বাপের অঢেল টাকাও নেই ,কিংবা রাজনৈতিক ক্ষমতার জোরও নেই তারা ভেবেই নেই চিলমারির অন্ধকারেই তাকে জীবনটা কাটাতে হবে ।তাই বলে তাকে চেয়ারম্যান আর গ্রামের মাতব্বরের তর্জনি তুলে সাশানো আর আজে বাজে কথাও হাসি মুখে মেনে নিতে হবে ?
অসুবিধার কথা বলে বলে মুখে ফেনা তুলে কি লাভ বলেন ? ওখানকার সার্বিক পরিস্থিতিটা মোটামুটি চলনসই করার জন্য যে সমস্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত এবং যাদের উপর এ দায়িত্ব ন্যস্ত তারা তো আমাদের মতো ডাক্তারদের নাগালের বাইরে ।
ডাক্তারের ওপর চোটপাটকে কিন্তু কেউ সমর্থন করছে না। চিকিৎসা যে বোঝে না, সে চিকিৎসা নিয়ে চিকিৎসকের ওপর মস্তানি করবে, এটা তো কাম্য হতে পারে না। কিন্তু দেবারতির অভিযোগ সেটা ছিলো না। তিনি পরিষ্কারভাবে মানুষের কাছ থেকে অধীনস্থসুলভ আচরণ কামনা করছেন, এবং সেটা মুখ ফসকে বলে ফেলেছেন। রোগী চিকিৎসককে সালাম ঠোকে না, এটা অভিযোগ হিসেবে আপত্তিকর। ওনার দুঃখ, লোকে ম্যাজিস্ট্রেটকে তোয়াজ করে, ডাক্তারকে করে না।
অসুবিধায় পড়লে অসুবিধার কথাগুলো মানুষকে জানানো প্রয়োজন। কারণ অনেকেই হয়তো জানে না ডাক্তারদের কী অসুবিধার মুখোমুখি হতে হয়। তারা ডাক্তারদের কেলেঙ্কারির খবর পত্রিকায় পড়ে, ওটাকেই হয়তো স্বাভাবিক ধরে নেয়। পাবলিক সেন্টিমেন্ট ডাক্তারদের পক্ষে প্রায়ই থাকে না, এটা একটা অস্বস্তিকর বাস্তবতা, কাজেই আপনাদের সেটা হিসাবে ধরেই এগোতে হবে।
খুব অফেন্সিভ একটা কথা বলে ফেললেন। আপনার কথাগুলো পড়লাম এবং অন্যেরা কিছু প্রতিমন্তব্যও করেছেন। আপনি ডাক্তার কি না তা জানিনা কিন্তু অনেক ডাক্তারকেই দেখেছি যারা অন্য পেশার মানুষকে মানুষ বলে গোনে না।
যারা চাকরী করে মাসিক লাখ টাকা কামায়, তারা সেটা তাদের যোগ্যতা দিয়েই কামায়। আর ১৭,৪৫০ টাকার বেতনে ডাক্তাররা কিন্তু জেনেশুনেই যায় এবং সেভাবেই তাদের হিসেব করে দৈনন্দিন জীবনযাপন করতে হয়।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
একই যুক্তিতে বলা যায়, '৫০০-১০০০ টাকা ফি দিয়ে ২/৩ মিনিট দেখানো যাবে এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষা বাবদ আরও উল্লেখযোগ্য খরচ হবে জেনেও অনেক ডাক্তারের চেম্বার এ রোগীরা লম্বা লাইন এ অপেক্ষা করে এবং সেভাবেই তাদের জীবনযাপন করতে হয়' - সঠিক বোধ হচ্ছে কি ?
এটাই সমস্যা, এই সচলেই আমি বেতন নিয়ে পোস্ট দেখেছি।। এই বাজারে এত অল্প বেতনে কিভাবে একজন মানুষ চলে।সে ব্যপারে সবাই একমত হবেন ,কিন্তু ডাক্তার দের বেলায় একমত হবেন না। আমি বলছি না কোন বিসিএস ডাক্তার কে লাখ টাকা বেতন দিতে, কিন্তু অন্য যারা সরকারি চাকরি করে তারা যে সুবিধা গুলো পায় সেগুলো অন্তত দিক।। একজন সেনা অফিসার বেতন বেশি পায় না, কিন্তু মানসম্মত বাসা পাচ্ছে, রেসন পাচ্ছে, সেজন্য তাদের চলতে সমস্যা হচ্ছে না। একজন পুলিস বা মেজিস্ত্রেট ক্ষেত্রেও তাই। যেহেতু এটা একটা পেশা এখানে পেশাদারী মনভাব নিয়ে কাজ করাতে চাইলে কিছু সুযোগ সুবিধা দিতে হবে। আর এরপরও কথা থাকে, যে ১৭৪৫০ টাকা সরকার দিচ্ছে সেটা যে কয়জন রোগী দেখার জন্য দেয়া হয় রোগী থাকে তার ৩ গুন। তাহলে?
ধূসরদা, আমরা ডাক্তারদের শত্রু নই, আমরা পেশাদারিত্ব এবং সাম্যের পক্ষের লোক। আপনার যুক্তি এবং আবেগের প্রতি আমার পরিপূর্ণ শ্রদ্ধা তবুও বলবো-
একটা ব্যাপার আপনাদের বুঝতে হবে যে বেতন কাঠামো সেক্টর থেকে সেক্টরে ভিন্নতর। আমি যেহেতু কেবলমাত্র সরকারী ডাক্তারদের নিয়ে কথা বলতে চাচ্ছি, সেক্ষেত্রে এ্যাবসোলিউটলি প্রাইভেট প্রাকটিশনারদের নিয়ে উদাহরণ দেবোনা। সরকারী চাকুরীতে বেতনকাঠামো আছে। এবং সবাই বলবে যে সেই বেতনে এই বাজারে সংসার চালানো কঠিন। আপনি কি এমন একটা প্রমান দেখাতে পারবেন যে একটা নির্দিষ্ট স্কেলে একজন ডাক্তারের বেতন থেকে একজন অন্য ক্যাডারের আমলার বেতন বেশি? যদি প্রমান থাকে তো অনুগ্রহ করে হাজির করুন। সমান বেতন দিয়ে যদি একজন অন্য ক্যাডারের কর্মকর্তা চলতে পারে, তবে ডাক্তার পারবে না কেনো? আমি ঘুষ-দুর্নীতিকে ঘৃণা করি। মানুষ হাজারো দূরাবস্থার মধ্যে থাকলেও আমি দূর্নীতিকে কোনওদিন জাস্টিফাই করতে পারবো না। তেমনই, যেসব সরকারী ডাক্তার কর্তব্যে গাফিলতি করে, হাসপাতালে সময় না দিয়ে প্রাইভেট প্রাকটিস করে বেড়ায়, প্রাইভেট ক্লিনিক করে বেড়ায়, সেগুলোও বদমায়েশিতে ওই অন্য ক্যাডারের দূর্নীতিগ্রস্থ আমলাগুলো থেকে কোনও অংশে কম নয়।
আমার বিবেচনায় ডাক্তাররা বরঞ্চ অন্য আমলাদের থেকে ভালো অবস্থায় আছে। ডাক্তারদের চাকরীর সময়ের বাইরে কিছুটা হলেও প্রকাশ্যে প্রাইভেট প্রাকটিসের সূযোগ আছে যেটা অন্য ক্যাডারের কর্মকর্তাদের নেই। একজন এসি ল্যান্ড চাইলেই সন্ধায় ভূমিরাজস্ব পরামর্শকের অফিস খুলে নিয়ে বসতে পারেনা। তেমনই একজন প্রকৌশলী অফিস শেষে প্রকাশ্যে নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের বিল-অব-কোয়ান্টিটিজ রিভিউ করতে বসতে পারেনা।
সব থেকে বড়ো কথা হচ্ছে আয় বুঝে ব্যায় করতে হয় এবং জীবনযাত্রার মান ঠিক করতে হয়। আমরা বুঝি, এই বাজারে বাজারদরের উর্ধ্বমূখী গতির সাথে তাল মেলানো হয়তো সম্ভবপর হয়ে ওঠে না। তবুও অন্ততপক্ষে চেষ্টা তো করতে হবে। এটা করতে ব্যার্থ হয়ে অন্যদের উপর ক্ষোভবর্ষণ তো কাজের কথা হয়না।
দু'চারটে পয়েন্ট উল্লেখ করুন যেগুলো ডাক্তাররা পায়না কিন্তু সমপদের অন্যান্য সরকারী কর্মকর্তারা পায়।
স্বাস্থ মন্ত্রণালয়ে যারা ডিজি হিসেবে কাজ করেন, আমার জানামতে তারা সবাই ডাক্তার। জেলা পর্যায়ের সিএসরা সবাই ডাক্তার, মেডিক্যাল কলেজের সুপাররা সবাই ডাক্তার। আমরা সৌভাগ্যবশত বর্তমানে একজন স্বাস্থমন্ত্রী পেয়েছি যিনি নিজেও একজন ডাক্তার। তো আমি সঙ্গত কারনে প্রশ্ন করতেই পারি যে এতকাল ধরে এই মহামতিগণ ডাক্তারদের জন্যে সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত না করে বসে বসে কার কেশোৎপাটন করছেন?
আর্মির কথা বাদ দেই, তাদের নিজস্ব ভূমি বোর্ড আছে। বিভিন্ন সময় আর্মির লোক সরকারপ্রধান হয়েছে এবং আর্মির সুযোগ সুবিধার দিকে বেশি নজর দিয়েছে। তেমনই সরকারের সিভিলিয়ানরা আর্মির 'তালব্য-শ'তে তৈলমর্দনের অংশ হিসেবে আর্মির জন্যে সুবিধার নহর বইয়ে দিয়েছে। কিন্তু পুলিশের সাথে তুলনা ঠিক নয়। ডাক্তারদের কোয়ার্টার দেওয়া হয় কিন্তু ডাক্তাররা সেখানে থাকেনা। উপজেলা লেভেলে পুলিশের জন্যে যেমন সরকারী আবাসন ব্যবস্থা, ডাক্তারদের জন্যে ঠিক তেমনই। বৈষম্য থাকলেও তা দৃষ্টিকটু পর্যায়ের নয়। এই দুইমাস আগেওতো একজন সেবিকা এবং একজন থানার ওসি- দুজনেই সমপদের (দ্বিতীয় শ্রেনীর কমকর্তা) ছিলো। আমি এটা নিয়ে বিতর্কে যাবোনা কিন্তু যদি পুলিশের সাথে আপনাদের সুবিধার (স্ট্যাটাস তো একটা সুবিধাই বটে!) তুলনামূলক বিশ্লেষণে যেতে চান, তবে এটা কিন্তু একটা উদাহরণ হিসেবে টানা যায়। একজন সেবিকা উপজেলা পর্যায়ে তার অধিদপ্তরের তৃতীয় লেয়ারে (টিএইচও>এমও>সেবিকা) অবস্থান করে কিন্তু একজন ওসি তার অধিদপ্তরের প্রথম কর্মকতা।
আপনি হয়তো পেশাদারিত্বের সংজ্ঞায়নের দ্বিধান্বিত। যেটা সম্ভবত হিমু আগেই বলে দিয়েছে। একজন ডাক্তার সরকারী চাকরীতে যোগদানের আগেই জানে তার জন্যে কি কি বেতন-ভাতা, সুবিধা অপেক্ষা করছে। যোগদানের পরে অসন্তোষ প্রকাশের থেকে সেটা আগেই ভাবনা চিন্তা করা কি সমীচিন নয়? এই দুনিয়ায় প্রায় সবারই একটা না একটা পেশা আছে। চাকরীর পেশাদারিত্ব বলতে আমরা বুঝি নির্দিষ্ট আর্থিক মূল্যের বিনিময় এক বা একগুচ্ছ কাজ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সম্পাদনের দায়াবদ্ধতা। তো পেশায় যোগদান করে যদি কেউ ক্রমাগত অসন্তোষ এবং হতাশায় ভূগতে থাকতে, সেটা তার পেশাগত দায়াবদ্ধতা সম্পাদনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে এবং যারফলে সেই ব্যাক্তির পক্ষে পেশার প্রত্যাশিত আউটপুট দেওয়া সম্ভবপর হয়না, এটা সম্পূর্ণ অনৈতিক।
এই জাজমেন্ট যদি দেন, তবে যে মহতী উদ্দেশ্য নিয়ে এই ব্লগটি লিখেছিলেন, তার থেকে আপনি অনেক দূরে সরে যাচ্ছেন। ডাক্তার হয়ে আপনি আপনাদেরকে আউটপুটকে একজন কায়িক দিনমজুর বা পেপার এন্ড ইংক বেইজড করণিকের আউটপুটের পর্যায়ে নিয়ে গেলেন। সেবামূলক পেশাগুলোয় ইনপুট অনেক ভেরিয়েবল এবং পরিস্থিতিভিত্তিক। যদি কোনও দিনে বা মাসে আপনার হিসেবের থেকে এক-তৃতীয়াংশ রোগি দেখতে হয়, তবে কি বেতন ফেরত দেবেন? কিন্তু যে শ্রমিক দৈনিক ১০০ বস্তা টানার পরিবর্তে ৭০ বস্তা টানে, তার পয়সা কিন্তু ঠিকই কাটা যাবে। এখন যদি সবাই বেতনের সাথে তার আউটপুটের কোয়ান্টিফিকেশন করে ফেলে, যেমন-
ডাক্তাররা বলে, "দৈনিক ২০টা বেশি রোগী দেখবো না।"
পুলিশ বলে, "দৈনিক ৫ টার বেশি চোর আর ১ টার বেশি ডাকাত ধরবো না। ধর্ষক ধরবো মাসে ২ টা।"
ম্যাজিস্ট্রেট বলে, "দৈনিক ৪ টার বেশি মামলার মুভ করাবো না।"
তাহলে এই দেশ ও জাতির কপালে অনেক দুঃখ আছে।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
আমার বলা প্রথম ২ টা লাইন এর মানে কখনই এমন ছিল না যে আমি অল্প বেতন পাচ্ছি বলে দুর্নীতি করাটাকে সাপোর্ট করছি। তাহলে এই পোস্ট লিখতে যেতাম না। আপনি নিশ্চয়ই দেখেছেন আমার পোস্ট এর অধিকাংশ যায়গা জুড়েই আমি ডাক্তার রা কি কি ধরনের দুর্নীতি করে সেটাই উল্লেখ করেছি। সাফাই গাইতে আমি চেষ্টা করিনি। বরং আমিও বলেছি দুর্নীতি বন্ধ করা দরকার। সরকারের ব্যবস্থা নেয়া দরকার। আমি প্রথম ২ টা লাইন বলে যেটা বুঝাতে চেয়েছি তা হল সরকারি চাকরি যারা করে তারা সবাই কম বেশি বেতন নিয়ে হা হুতাশ করে, প্রতিবাদ ও করে অনেক সময়, তাতে অন্যরা সায়ও দেয়, ভাবে আসলেই তো এই বেতনে কিভাবে চলা সম্ভব? কিন্তু যখন আমরা ডাক্তাররা এই কথাটা বলি তখন শুনি আগে জেনে শুনেই তো ঢুকেছেন। অথচ বেতন ভাতা নিয়ে প্রতিবাদ আমরা কোনদিন সেরকম ভাবে করিনি।আফসোস করেই বলতে পারি না আবার প্রতিবাদ ! আবাসনের ব্যবস্থা থাকে বলছেন, অথচ একজন ডাক্তার কে ঢুকার পর পোস্টিং দেয়া হয় সাবসেন্টারে যেখানে থাকার ব্যবস্থা থাকে না। তাকে প্রতিদিন সকালে উঠে সেন্টার থেকে প্রথমে রিকসা তারপর বাস তারপর আবার রিকসা করে যেতে হয় ,এভাবে ফেরতও আসতে হয়। আমার এক পরিচিত মহিলা ডাক্তার রাজবাড়িতে এভাবে যাতায়াত করতে গিয়ে আবরসন হয়ে গিয়েছে। আর ডরমিটরিতে যে থাকার ব্যবস্থা করা হয় সেটা কোন ভাবেই একজন মেডিকেল অফিসারের ব্যবস্থা হওয়ার মত না। সরকার ইচ্ছে করলেই পারে ব্যবস্থা টা আর একটু মানসম্মত করতে, এবং সেটা আমরা চাইতেই পারি। আপনি যদি বলেন অন্য সরকারি চাকরি যারা করে তাদেরও এই অবস্থা(যদিও তাদের থাকার ব্যবস্থা আমাদের চেয়ে ভাল ) তাহলে বলব তাদের টাও পরিবর্তন হওয়া দরকার। সুযোগ সুবিধার ক্ষেত্রে নিরাপত্তাও চলে আসে। সরকারি দলের গুন্ডাদের হুমকি ধামকি নিত্ত দিনের ঘটনা। তারা মারামারি করে ছোট ইনজুরি নিয়ে এসে বলবে গ্রিভিয়াস হার্ট এর ইনজুরির কথা লিখে দিতে। না লিখলে মার জুটবে কপালে। সুযোগ সুবিধা মানে শুধু টাকা পয়সা পাওয়াটা না, কাজ করার পরিবেশ, নিরাপত্তাও একটা বড় ব্যপার। এউ এন ও রা সবচাইতে ভালও বাসায় থাকে, এউ এন এইচ পি ও রা সেরকম বাসা পায় না, এউ এন ও সাথে কাজের জন্য গাড়ি থাকে, আর এউ এন এইচ পি ও রা বাস এ ঝুলে যায়। হয়ত অন্যদেরও তাদের চাকরি নিয়ে নানা অসন্তোষ আছে। আমি তাদের নিয়ে বলতে চাই না।
“ এরপরও কথা থাকে, ১৭৪৫০ টাকায় যত রোগী দেখার জন্য দেয়া হয় ,আমরা তার ৩ গুন রোগী দেখি” এ কথাটা বলে আমি এটা কি বুঝালাম যে আমরা এখন থেকে দেখব না। কোনদিন কোন ডাক্তার রা কি বলেছে যে না দেখব না। আমি এই কথাটা বলেছি কারন আমরা যখনি সুযোগ সুবিধা নিয়ে কথা বলতে চাই তখনই আপনারা বলেন জেনে শুনেই তো এসেছেন। আমাদের নামে অভিযোগেরও শেষ নেই ।তাই বললাম আমরা যা পাই তার চেয়ে অনেক বেশি সার্ভিস দেই। এটাই বুঝাতে চেয়েছিলাম। এরপরও মানুষ খুশি না। এটা আফসোস থেকে বলেছি, আমার পেশাটাকে ছোট করার জন্য না।
একজন সেবিকা আর ওসির তুলনা দিলেন, একজন সেবিকা সাধ্যের বাইরে শ্রম দেয়ার পরও যত বাজে আচরন পান মানুষের কাছ থেকে আর একজন ওসি কি তা পান? অথবা ডাক্তাররাই যে আচরন টা পান সমমনা অন্যরা কি তা পান।
আপনাকে একটা ঘটনা বলি, আমার পরিচিত এক ডাক্তার (পেডিয়াট্রিক্স )চেম্বার শেষ করে বের হয়ে যাওয়ার মুখে এক রোগী আসলে সে আবার চেম্বার খুলে রোগীটাকে দেখে দেন,অথচ সেইদিন তার বাসায় আসাটা খুব জরুরী ছিল। রোগী বের হওয়ার পর যখন ডাক্তার বেচারা বের হন তখন সেই রোগীর লোক চেম্বারের বাইরে দাড়িয়ে একজন আর একজন কে বলছেন যে “ আরে বুঝনা একটা রোগী দেখলে কতগুলো টাকা, ডাক্তার গুলার লোভ কত, বের হয়ে গিয়ে আবার ফেরত আসল”। এই ঘটনা গুলোর অনুভূতি আসলে কাউকে বলে বুঝান যাবে না। আমি বৃথাই চেষ্টা করছিলাম।
“যোগদানের পর অসন্তোষ প্রকাশের চাইতে সেটা আগেই ভেবে চিন্তে করাটা কি সমীচীন নয়” । এ যায়গাতেই আপত্তি আমার। আগে ভেবে চিন্তে কেউ যদি আর সরকারি চাকরিতে না ঢুকে সেটা কি কোন সমস্যার সমাধান? (ইদানীং অনেকেই ঢুকছে না, আর সেই সুযোগে বেসরকারি মেডিকেল থেকে আঢক এর নামে ডাক্তার নিয়েছে , আমার একটা মন্তব্যে উল্লেখও করেছি। এরা কাজ করতে খুব একটা ইচ্ছুক না , নাম কামাতে বেশি ইচ্ছুক, আর বেসরকারি মেডিকেল এর শিক্ষা ব্যবস্থাও পরিপূর্ণ না বেশিরভাগের টাই , সেক্ষেত্রে গ্রামের রোগীরা বিপদেই পড়বেন , যেটা আমার কাম্ম না। ) এরকম হওয়ার চেয়ে কাজ করিয়ে নেয়ার জন্য নুন্নতম কিছু প্রয়োজনীয় সুযোগ সুবিধা দেয়া হলে সমস্যার সমাধান হত বলে মনে করেছিলাম। সেই জন্যই পোস্ট টা লেখা।
ডাক্তাররা অসন্তোষ আর হতাশার জন্য প্রয়োজনীয় আউটপুট দিতে পারে না, এরকম কথা আমি বলিনি, কেউ বলবেও না।আমরা হতাশার কথা বলি ঠিকই কিন্তু তাতে কাজ করা থেমে থাকে না।তাহলে এত হাজার জন ডাক্তার বিনা বেতনে হাসপাতালে শ্রম দিতে পারত না বছরের পর বছর। তাহলে আমাদের চিকিৎসা ব্যবস্থা বলে কিছু থাকতই না, পুরোটা ভেঙ্গে পরত, আমরা এই পরিমানে হতাশ। কিন্তু সেটা শুধু বেতন কম পাওয়ার জন্য না, আমাদের হতাশা কেন সেটা নিয়ে লিখতে গেলে একটা বই লেখা হয়ে যাবে। আপনাদের আর অহেতুক যন্ত্রণা দিতে চাচ্ছি না। কিন্তু এখনও আমাদের দেশে চিকিৎসা চলছে, সীমিত সম্পদ আর অজস্র প্রতিবন্ধকতার মুখেও চলছে। কি করলে সেটা আরও ভালও করে চালান যায় সেটা নিয়েই কথা বলতে চেয়েছিলাম। অন্য পেশার লোকের সাথে এই পেশার সবচেয়ে বড় পার্থক্যটা হল এখানে ডাক্তার রোগী উভয়ই সমান ভাবে জড়িত। তাই দু পক্ষেরই জানার প্রয়োজন রয়েছে সমস্যা গুলো কি কি।
কারো অনেক সমস্যা শুনার পর কেউ যদি বলেন জেনে শুনেই এসেছেন তাই এভাবেই জীবন যাপন করতে হবে । তাহলে আসলে আর কিছু বলার থাকে না। তাহলে সমস্যা গুলো সমস্যাই থেকে যাবে। হিমু ভাইয়া বলেছিলেন যে সমস্যা গুলো লিখে জানাতে, কিন্তু এখন তো ভয় হচ্ছে লিখতে, কারন লেখার পর হয়ত কেউ বলবেন আপনারা তো জেনে শুনেই চাকরিতে ঢুকেছেন তাহলে এখন এত কপ্লেইন করা কেন? এবং যদি কেউ সেটা বলেন তাহলে আমার কিছুই বলার থাকবে না। আমি জেনে শুনেই বিনা বেতনে খাটতে হাসপাতালে ঢুকেছি। কিন্তু তবুও আমার মনে হয় আমাকে কিছু বেতন দেয়া হলে হয়ত কাজ টা আরও ভালও ভাবে করতে পারতাম। বাইরে অন্য জায়গায় কাজ করতে না হলে আরও ভালও আউট পুট দিতে পারতাম। কিন্তু সেটা বলাটা বোধ হয় আমার যুক্তিসঙ্গত হত না। তাই আর বলছি না।
হাজার দুরাবস্থার মধ্যে থেকেও আমিও কোনদিন দুর্নীতি কে জাস্টিফাই করব না। কিন্তু দুর্নীতি কেন হচ্ছে, কি করলে কম হবে, এসব নিয়ে চিন্তা করার প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করি আমি।
আর বললেন আমাদের উপরের লেভেলের ডাক্তার রা কি করছে এসব সমস্যা সমাধানে। হিমু ভাইয়ার একটা মন্তব্যের উত্তরে বলেছি তারা কি করে। তারা কিছু করলে আমাদের এত কথা বলতে হত না।
ধন্যবাদ আপনাকে । আর একটা কথা আমি ধূসর দা না দি ।
দু:খিত ধূসরদি, আপনি মনে হয় আমার মন্তব্যে আহত বোধ করছেন যদিও আপনাকে আহত করার বিন্দুমাত্র দুরাভিসন্ধি আমার নেই। আমি চেয়েছিলাম সিনিয়র সরকারী ডাক্তারদের দায়িত্বে অবহেলার বিষয়ে আলোচনায় দু'পয়সা যোগ করতে। কিন্তু আলোচনা অনেকদূর গড়িয়েছে এবং বহুমাত্রিক রূপধারণ করেছে। আমি ধারণা করছি যদি আমি মন্তব্য করা চালিয়ে যাই, তবে আরও ভুলবোঝাবুঝি সৃষ্টি হতে পারে।
আপনার আবেগ এবং অনুভূতির উপর শ্রদ্ধা রেখে বলছি যে আমি এই ব্লগটিতে আপনার আর কোন মন্তব্যে প্রতিমন্তব্য করবো না।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
আপনাকে আহত বা বিরক্ত করাও আমার উদ্দেশ্য ছিল না । আমি আমার আগের মন্তব্যটার ব্যখ্যা দিচ্ছিলাম যে আমি আসলে কি বুঝাতে চেয়েছি। হয়ত এমন কিছু লিখে ফেলেছি যার জন্য আপনি আর কোন মন্তব্য করতে চাচ্ছেন না। আমি দুঃখিত। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ব্লগ টা পড়ার জন্য এবং মন্তব্য করার জন্য। ভাল থাকবেন।
যদিও আপনি আমার প্রশ্নের উত্তর দেন নি, তাও 'পেশাদারিত্ব এবং সাম্যের পক্ষে' আপনার 'অকাট্য' যুক্তিগুলো আবার লিখতে বাধ্য করলো..
প্রথমে ভাবলাম 'আমি কেন বি. সি. এস. দেই নি / দিব না / সরকারী চাকরি করব না' তা লিখি. (ঢাকা মেডিকেল এ ভর্তি হবার সময় 'সরকার পাশ করার পর চাকরি দিতে বাধ্য থাকবে না' জাতীয় কোনো একটা দস্তখত দিয়েছিলাম বলে অল্প অল্প মনে পরে, তবে সেটা ছাড়াও অনেক কারণ মাথায় ঘুরছিল)।
তীব্র সময় সংকটে সিধান্ত পাল্টালাম. শুধু একটা গল্প বলে শেষ করি: ঢাকা মেডিকেল এ কাটানো আমার ৬-৭ বছরে যত শিক্ষকের দেখা পেয়েছি, তাদের এক-দশমাংশ ও ঢাকা মেডিকেল গ্রাজুয়াট নন। আমি বলছি না যাদের পেয়েছি তারা খারাপ কিংবা নিম্নমানের, শুধু বলছি আমার আগের ৬০ টি ব্যাচ এর এত ডাক্তাররা - তথাকথিত দেশের 'ক্রিম' / জাতীয় 'মাখন'লাল রা কোথায় গেল?
গর্বে বুক ভরে যায় যখন হটাথ তাদের কাওকে কাওকে আবিষ্কার করি - অভাবনীয় সব উচ্চতায়, কিনতু কষ্ট পাই যখন তাদের দেশ ছাড়ার কারণ শুনি।
ভুল বোঝার আগেই বলি, এই 'সফল' মানুষগুলোর কেউ অধিক সুবিধা লাভের আশায় দেশ ছাড়েন নি - একজন ও না. (শুধু এই একটা কারণে আমি বলি, আমাদের চিকিত্সা ব্যবস্থার দুরবস্থার কারণ হিসেবে 'ইউ গেট হআট ইউ পে ফর' অতি সরলীকৃত ব্যাখ্যা, শতভাগ সঠিক কখনই না)। তারা ম্যানেজ করতে পারেন নি বলেই ছেড়েছেন। যারা ম্যানেজ করেই আছেন, তাদের আবার আপনি ম্যানেজ করতে চাইলে মুশকিল তো হবেই!
সেকারণেই মিজানুর রহমান সাহেবদের গালাগালি, সাংবাদিকদের 'ম্যানেজমেন্ট' সমস্যা, কিংবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এ 'রাজা-উজির মারা' আমাকে নাড়া দেয়, ভাবায় না। ভাবনা এখন একটাই : হাজার মাইল দুরে বসে দূরালাপনি তে যখন শুনি বাবা অসুস্থ, ভাবনা কেবল - যে দেখছে সে ডাক্তার না কবিরাজ!
শেষ কথা : সবাই কিছু করেই খায়, আপনার ভাষায় 'যোগ্যতা দিয়েই কামায়'।
খালি বুঝিনা 'সমমানে'র অন্যান্য পরীক্ষার তুলনায় ন্যুনতম দেড়গুন (আনুষ্ঠানিকভাবে) বেশি সময় নিয়ে, ন্যুনতম তিনটি 'পেশাগত' পরীক্ষা ও এক-তিন বছরব্যাপী ট্রেনিং পাড়ি দিয়ে এম.বি.বি.এস ডিগ্রী পাস করে লাইসেন্স নিয়ে কোন অযোগ্যতায় বেতন কিংবা সুবিধার বেলায় ডাক্তারদের 'সমমানে'র কথা শুনতে হয়!
জানিনা দুনিয়ার কোথায় আপনার স্বপ্নের 'পেশাদারি এবং সাম্যবাদী' ডাক্তার / কোনো সেবাদানকারীর দেখা পাওয়া যায়!
শুধু জানি, যে দেশে গুণীর কদর নেই, সেই দেশ ও জাতির কপালে সুখ অন্তত লেখা নেই।
সঞ্জয়
সঞ্জয়দা, মূল আলোচনার জায়গায় তো তেমন একটা সমস্যা ছিলোনা, কিন্তু সমস্যা এসে জুটেছে আলোচনার বর্ধিতাংশে এসে। আপনার প্রশ্নটা আমি বুঝতে পারিনি। বুঝতে পারলে ঠিকই উত্তর দিতাম। কিন্তু এখন আর দেবোনা।
এটা নিয়ে মনে হয় আপনারা সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারেন।
আপনি দয়া করে নিজেকে প্রশ্ন করুন যে আপনি নিজে পেশাদার এবং সাম্যবাদী কিনা। যদি আপনি নিজে তা হন, তবে ধরে নেবেন পৃথিবীতে আপনার মতো পেশাদার এবং সাম্যবাদী অনেক মানুষ আছে।
সুখ যে নেই, তা তো দেখতেই পাচ্ছি।
আর একটা কথা: এই ব্লগটিতে আমি আপনার আর কোন মন্তব্যে প্রতিমন্বত্য করবোনা। অনাবশ্যক মন্তব্যের সুতো দীর্ঘায়িত করতে প্রেরণা পাচ্ছিনা। ধন্যবাদ।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
আমি বলেছি "ইউরোপ এ থাকা এক বাংলাদেশি চিকিৎসক" কে। ছোট বেলায় বিলাতি গাব এর কথা মনে আছেতো? আমরা হল বিলেতে বাংলাদেশি গাব। উনি বলেছেন রেমিটেন্স পাঠাবেন। কাকে? বাবাকে না হয় ভাইকে। বললেন না তো দেশকে কি দিবেন?
অনেকে বলছেন এ ভাবে সমালোচনা করলে নাকি কেঊ আর ডাক্তারি পড়বেনা।
এ পর্যন্ত শুনি নাই মেডিকেলে একটা এপ্লিকেশন কম পরছে। আর কোনদিন পড়বেওনা। একটা সময় ছিল যখন নিম্নবিত্ত বা মধ্যবিত্ত শ্রেনী ডাক্তারি পড়তো। উচ্চবিত্তরা হতো জজ-ব্যরেষ্টার। তখন আমরা পেয়েছি ডাক্তার আর এখন? কারন আছে। তখন আসতো মনের তাড়নায়। এখন আসে বাবা-মা'র ইচ্ছায়। তখন আসতো সেবার মানসিকতা নিয়ে আর এখন আসে ,,,,,,,,,,,,,,,,,
লেখা ভালো লাগলো
ডাক্তার/চিকিৎসা বিষয়ক অভিজ্ঞতা আমার দেশে-বিদেশে সবখানেই মোটামুটি তিক্ত, যদিও পরিস্থিতি দুই জায়গায় এক নয়। বিদেশে মাসে মাসে হেলথ ইনশিওরেন্স দেয়ার পরও সামান্য কিছু সার্ভিস দিলেই যেমন মোটা অংকের বিল ধরায়ে দেয় (ইনশিওরেন্স না থাকলে যে কী হতো খোদাই মালুম!), তাতে বুঝি যে এই সিস্টেমটা ভালো না (ইউরোপে শুঞ্ছি নাকি চিকিৎসা ফ্রি!)। আর ডাক্তার ভালো-খারাপ আমার কাছে তার পারসোনালিটির ওপর নির্ভরশীল। যে ডাক্তার হাসি-খুশি, সময় নিয়ে কথা বলে তার কাছে যেতেও ভালো লাগে। হামবড়া টাইপের ডাক্তার পেলে আমি সাথে সাথে চেইঞ্জ করি।
দেশের পরিস্থিতি ভিন্ন। বিদেশের সাথে তুলনা করলে আমার মনে হয় দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা অনেক সাশ্রয়ী, কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে মানসম্মত নয়। সীমিত সম্পদ এখানে একটা বাধা, যার ওপর ডাক্তারদের হাত নাই। তাতে অনেক রোগী অসন্তুষ্ট হয়। কী কী সেবা রোগীকে দিতে পারবেন আর কী কী পারবেন না, তা আগে থেকে রোগীকে জানিয়ে দিলে হয়ত এ ধরনের ঝামেলাগুলো এড়ানো যেতে পারে। অনেক ডাক্তারদের আবার রোগীর সাথে ব্যবহার খারাপ। ডাক্তারী পাশ করার পর প্রত্যাশার সাথে প্রাপ্তির সংযোগ না ঘটলে সে ঝাল রোগীর ওপর ঝাড়াটা অনৈতিক। অনেক ডাক্তার বেশি অর্থ উপার্জনের জন্য রোগীকে বেশি বেশি ও অপ্রয়োজনীয় টেস্ট করতে দেয়, এটাও অনৈতিক। আর উপরে একজন যেমন বলেছেন পাবলিক ম্যাজিস্ট্রেটকে সালাম দেয়, ডাক্তারকে দেয় না- এ ধরনের মানসিকতাও বড় সমস্যা। এতে বোঝা যায় যে এসব ডাক্তার রোগীকে কোন সম্মান দেয় না। বাংলাদেশের এই সামাজিক/মানসিক সমস্যা অন্য অনেক পেশার লোকদের মধ্যে থাকলেও ডাক্তারদের মধ্যে প্রকট (এর নাম 'মুই কী হনুরে সিনড্রোম' )। এ ধরনের সমস্যাগুলো থেকে ডাক্তার ভাইজানেরা যত তাড়াতাড়ি বের হয়ে আসবেন, আম-পাবলিকের গালিগালাজও হয়ত তত কমে আসবে
আমি নিজেও আমার লেখাতে বলেছি প্রফেশনাল কাল্ট থাকার কথা। সেটা কেন তৈরি হচ্ছে তাও বলেছি।অবশ্যই এর ভিতর থেকে বের হয়ে আশা উচিৎ । রোগীর কাছ থেকে সালাম আমি আশা করি না, বয়স্ক রোগী হলে আমিই সালাম দেই। আর অনেক রোগীর কাছ থেকে অনেক ভালবাসাও পেয়েছি। কিন্তু পত্রিকা, টিভি খুললে বা এ্মনিতেই সাধারন মানুষের সাথে কথা বললে বুঝি যে তারা ডাক্তারের উপর ক্ষিপ্ত। সেখানে অনেক ভুল বুঝা বুঝি আছে। এবং কেন সেগুলো তৈরি হয়েছে তাই নিয়েই কিছু বলতে চেয়েছি। সালাম প্রত্যাশা করিনা, কিন্তু অহেতুক গায়ে হাত তুলে, রোগী মারা গেলেই ডাক্তার মেরে ফেলছে ভেবে বাজে আচরন করে, এবং ডাক্তার বিষয়ে কথা বলতে গেলেই চোখ বন্ধ করে সবাই খারাপ এটা বলে দেয়। আমাদের দেশের শিক্ষিত বড় বড় ব্যক্তিরাও সেটা করে। মিডিয়ার খুব বাজে একটা ভুমিকা আছে এ ব্যাপারে । তারা মুল সমস্যা গুলো পাস কাটিয়ে ডাক্তার রা খারাপ, অর্থলোভী এটা বলেই শেষ। কিন্তু আমাদে্র সিস্টেমের হাজারটা সমস্যা আছে তারা সেটা নিয়ে মাথা ঘামায় না। অসংগতি গুলো খুঁজে না বের করলে সমাধান কি করে হবে।
রেমিট্যান্স এর টাকার গুরুত্ব দেশের অর্থনীতিতে অনেক অবদান রাখে বলে বিবৃতি আর পত্রিকায় দেখি। যারা এটা না মানে তাদের জন্য দান করার কথাও বলা আছে। যে ডাক্তার এর টাকার প্রয়োজন বেশি (নানা কারনে হতেই পারে, পারিবারিক, সাংসারিক) তাদের দিয়ে বাংলাদেশের আপামর জনগনের দাবিমত চিকিৎসা সেবা দেয়া সম্ভব না। আর যাদের খুব একটা টাকার প্রয়োজন নেই, চড়, থাপ্পড় খেয়েও ভূলে যেতে পারেন অনায়াসে তারাই হতে পারবেন আদর্শ ডাক্তার। কেউ যদি বলেন প্রফেসরদের তো এ সমস্যা নাই, তারা কেন? কারন ঐ চড় থাপ্পর খেতে খেতেই তারা এত বড় হয়েছেন আর খেতে খেতে তারাও পাল্টে গেছেন। আমি বা আমার মত অনেকে পাল্টাতে চায়না তাই ভিন্ন পথ ধরে।
এপ্লিকেশন শুধু মেডিকেলে না, গ্রামের কলেজেও কম পড়ে না। তেজগাঁও কলেজে অনার্স এর জন্য যত এপ্লিকেশন জমা পড়ে তত এপ্লিকেশন ঢাকার সব মেডিকেল কলেজ এর ভাগেও মনে হয় জুটে না। (তেজগাঁও কলেজের সাথে আমার যোগাযোগ আছে আর যা বলছি, জেনেই বলছি। ঢাকায় কতগুলো মেডিকেল কলেজ আছে তাও জানি।)
দূর্নিতির অংশ না হলে এখানে কেউ কিছু শুনতে চায় না। আমি এমন কয়েকজন বাঙালী চিকিৎসক অধ্যাপককে (ইউরোপে) জানি যারা আমাদের দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা, চিকিৎসক তৈরীর প্রক্রিয়াটাকে পাল্টে দেয়ার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন কয়েকবছর ধরে। পলিসি মেকার বলে বাংলাদেশে এক গোত্র আছে যারা এসব মানতে নারাজ। উল্টো টিটকারী শোনার অভিজ্ঞতা আছে এসব অধ্যাপকের। যাদের কথা বলছি তারা নিজ নিজ ক্ষেত্রে সারা বিশ্বে যথেষ্ট পরিচিত এবং সম্মানের অধিকারী।
যখন দেশে অনেক কষ্ট আর অপমান স্বীকার করেও চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন তাদের নামে কটু কথা শুনলে খারাপ লাগে স্বভাবতই হয়তো স্বগোত্রীয় বলে কিন্তু যারা কথা গুলো শোনাচ্ছেন তাদের ব্যাপারে সৈয়দ মুজতবা আলীর "বই পড়া" প্রবন্ধের একটা লাইন মনে পড়ে যায় (প্যারোডি আকারে)।
যারা প্রবাসে থাকে দেশের জন্য তাদের মায়া কেন জানি না একটু বেশিই হয় (আদিখ্যেতা কিনা জানি না)। তারা চায় যে কোন উপায়েই হোক দেশের উন্নতি হোক। এর পেছনে শেষ বয়সটা দেশেই কাটানোর একটা ইচ্ছা হয়তো কাজ করে। কিন্তু দেশের মানুষ সেটা চায় বলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মনে হয় না। ১৬ কোটি মানুষের দেশে ১৬০০০ লোক হয়তো চরম খারাপ, ১লাখ ৬০০০০ হয়তো তাদের অপকর্মের প্রত্যক্ষ সহযোগী, এদের উপর নির্ভর করে হয়তো দেশের আরও ১কোটি ৬০ লাখ লোক অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে। বাকি ১৪ কোটি ৪০ লাখ কি ছাগলের তিন নম্বর বাচ্চা নাকি। আপনি যদি আপনার জীবনে আপনার প্রভাবশালী মামা, চাচা, বড় ভাই বা এরকম কাউকে বলে কোন সুযোগ নিয়ে থাকেন তাহলে আপনি কিন্তু নিজেও দূর্নিতির অংশীদার আর এরকম লোকের কারনেই আজ সারা দেশে এত অরাজকতা। আমাদের সুবিধাবাদী মন আমাদের কে কোন সিস্টেম মানতে দেয় না আর নিজের দোষ গুলো ঢেকে রেখে অন্যের দিকে আঙ্গুল তুলে গলাবাজী করায় উৎসাহ দেয়। চোরের মায়ের বড় গলা। আমরা যেমন দেশ থেকে পালিয়ে এসে গলাবাজী করে বেড়াই (মোটামুটি সকলেই বলে একথা, নীতি নির্ধারকরা তো বলেই)। কাউকে আঘাত দিতে চাইনা। কিন্তু সকলে মিলে নিজ নিজ জায়গা থেকে ভাল হওয়া শুরু না করলে দেশ আগাবে না।
আপনার কথার সাথে পুরোপুরি একমত। ধন্যবাদ ।
আগ্রহীরা নিচের দুই লিংকের আলোচনা দেখতে পারেন:
'মানবতার কাণ্ডারি' মিজান সাহেবের কাছে এই অধম 'অমানুষ- রক্তচোষার' খোলা চিঠি
জনগণের ট্যাক্স এর টাকায় ডাক্তার হয় না
ইনফ্রাস্ট্রাচারের সমস্যা বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটা সেক্টরে আছে। সামরিক বাজেট কাট করে এটা হয়তো কিছুটা কমানো যাবে। কিন্তু এই সমস্যা থেকে পুরোপুরি মুক্তি পাওয়া সম্ভব না। সুতরাং পুলিশের ঘুষ খাওয়া বা ডাক্তারের টেস্ট লিখে রোগীর পকেট ফাকা করার কারণ হিসেবে কম বেতন, ডাক্তার কম - এগুলা দেখাইয়া লাভ নাই। এগুলা নোতুন কারণ না, ডাক্তারি পড়তে য়াওয়ার আগে থেকেই এগুলো বহাল কারণ।
বাংলাদেশে সব সেক্টরেই ঠ্যাক সিস্টেম চালু আছে। ডাক্তাররাও একই কাম করে। পুলিশের হাতে লাঠি আছে, তারে টাকা না দিয়া পার পাওয়া কঠিন। ডাক্তারের হাতে জীবন মরণের দায় আছে। সুতরাং ডাক্তারের জন্য ঠ্যাক দেওয়া আরো সহজ। হুদাহুদি ওষুধ লিখে দেয়া, অকারণে অপারেশন করা, টেস্ট দেওয়া - সবই ঠ্যাকের অংশ। ডাক্তারেরা রোগীর সংখ্যা বেশি বলে হাহুতাশ করে; কিন্তু ভুল চিকিৎসা আর খামোখা ওষুধ গিলাইয়া তারা নোতুন নোতুন রোগী তৈরি করে। অকারণ টেস্টের কারণেও রোগীজট সৃষ্টি হয়।
টাকা পয়সার হিসাবের সময় ডাক্তারেরা হঠাৎ করে 'মানুষ' হয়ে যান, তাদেরও পরিবার পরিজন থাকে। কিন্তু রোগী দেখার সময় তারা 'ডাক্তার'ই থাকেন। এবং অতি অবশ্যই অপেশাদার ডাক্তার। ডাক্তারি এথিক্সে আছে রোগীকে তার রোগ সম্পর্কে বুঝাইয়া বলার কথা। কিন্তু রোগী প্রশ্ন করলে 'আপনি ডাক্তার, না আমি ডাক্তার?' ঝাড়ি খাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। কারণ কথা বলতে গেলেই সময় যাবে। ২ মিনিট বাড়তি সময় যাওয়া মানে আরেকজন রোগী দেখার সময় পার হওয়া। সরকারী ডিউটির সময় রোগীর ভিড়ের কারণে এই তাড়াহুড়া দরকার হতে পারে। প্রাইভেট প্র্যাকটিসের সময় তো রোগীর সংখ্যা ডাক্তারের নিয়ন্ত্রণে থাকার কথা।
ডাক্তাররা পেশাদার হোন। অপেশাদার লোকজনই তাদের ইউজারবেইজের ওপর সব দোষ চাপায়।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
আপনার মন্তব্য টা পড়ে বুঝতে পারলাম কেন ডাক্তার রা চুপ করে থাকেন। আমার ধারনা ছিল ডাক্তারদের কাজ করার সীমাবদ্ধতা , সমস্যা ডাক্তার ছাড়া অন্য মানুষরা জানলে রোগীদের অসহিষ্ণুতা কমতে পারে । ডাক্তার রোগী সম্পর্ক টা ভালও হওয়া চিকিৎসা ব্যবস্থা ঠিক হওয়ার জন্য খুব জরুরি মনে হয়েছে। ডাক্তার হয়ে যারা বের হয় তাদের মধ্যে মহৎপ্রাণ মানুষ থাকে অল্প কএকজন (সব যায়গাতেই তাই, মেডিকেল এ ভতির আগে মহত্ত্ব টেস্ট করার দরকার। এটা আমার সব সময়ই মনে হয়েছে, এদেশে ডাক্তার যারা হয় তারা সব যেনে বুঝে হয় না। হয়ে যাওয়ার পর টের পায় কোথায় এসে পড়েছে,এ ব্যপার টাও ঠিক করা উচিৎ, হওয়ার আগে যাতে চিন্তা করে সে ব্যপারে কিছু কাউন্সিলিং এর ব্যবস্থা রাখা উচিৎ। ) । ডাক্তার দের মধ্যে বাকিরা সাধারন। ঘাড়ে চেপে মহত্ত্ব আদায় করার চাইতে কিভাবে সাধারন মানুষ দের কাছ থেকেই ভালও কাজ টা আদায় করা যায় সেটা নিয়ে চিন্তা করাটা জরুরি মনে হয়েছিল। ধন্যবাদ আ্পনাকে। পেশাদারী হয়ে কাজ করে যাওয়ার চেষ্টা করব ।
আপনাকেও ধন্যবাদ। ডাক্তারদের কাছ থেকে গত কয়েকদিনে যে কয়টি পোস্ট দেখেছি, আপনার পোস্টটি বক্তব্যের দিক দিয়ে সেরা।
আসলে মহত্ব-ফহত্ব দরকার নাই, প্রত্যেক পেশার লোকজন পেশাদার হলেই ঝামেলা কমে।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে শোনা সেরা মন্তব্যগুলোর মধ্যে এটাকে প্রথম সারিতেই রাখবো। এর উপর আর কথা হয়না। কিন্তু দুঃখ যে সেন্টিমেন্ট, ইমোশান, ইগো, এগুলো প্রায়শই পেশাদারিত্বকে ছাপিয়ে যায়। আর তখনই গোটা প্রক্রিয়া নড়বড়ে হয়ে যায়।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
অসাধারন... সত্য এবং বাস্তব লিখনী... এর পরও যত কষ্টই হোক সত্ ডাক্তার হতে চাই...
দেশে তো আরো অনেক সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আছে, সেখানে তো বছরের পর বছর হাজার হাজার ছাত্র/ছাত্রী পড়ালেখা করে বের হচ্ছে, এরকম উপর্যূপরি প্রশ্নপত্র ফাঁসের মত ব্যাপারতো সেরকম দেখি নাই।
এই প্রশ্নপত্র ফাঁসের ব্যাপারটা আসলেই সত্য, আমার স্কুল জীবনের একজন সহপাঠী এভাবে মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয়, অনেক আগের কাহিনী ১৯৯৯ এর দিকে (পরে অবশ্য সে পাস করে বের হইতে পারে নাই, যাই হোক)। আর এ ধরনের দূর্নীতির পেছনে আমার সেই সহপাঠী পরীক্ষার্থী বন্ধুর চেয়ে তার অভিভাবকদের উৎসাহই ছিল লজ্জাজনক ভাবে বেশী। আর আমার ধারণা এই প্রশ্নপত্র ফাঁসের প্রক্রিয়াটা শুরু হয়েছে আরো আগে, এটা মোটেও ইদানিং কালের ঘটনা নয়।
পেশা যেটাই হোক, পেশাগত হতাশা মানুষের থাকতেই পারে, সে জন্য হয়তো রোগীর সাথে দু-একবার দূর্ব্যবহার মানুষ করতেই পারে, এটা খুবই স্বাভাবিক। এ ধরণের অভিযোগ ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন পত্র ফাঁসের মতো গুরূতর নয়। এরকম অভিযোগ আমরা শুধু মেডিকেল কলেজ ভর্তির ব্যাপারেই বেশি শুনতে পাই, কেন? এটা আসলেই সীমা অতিক্রম
প্রিয় রাতঃস্মরনীয় দা,
আপনি কোথায় ফ্রি ফ্রাইডে ক্লিনিক চালু করতে চাচ্ছেন জানান। কথা দিচ্ছি আর কাউকে না পেলেও আমি নিজে আপনার সেই ফ্রি ফ্রাইডে ক্লিনিকে গিয়ে চিকিৎসা দেবো। আমি রোগীর রোগ সারাবার জন্যে পড়াশোনা করেছি, সবকিছুই টাকা দিয়ে বিচারও করিনা। আমি নিশ্চিত আমার সাথে এরকম অনেক ভলান্টিয়ার পাবো যারা আপনার এই ক্লিনিকে কাজ করতে উৎসাহী হবে।
দাদা, এরপরেও কিন্তু একটা কথা থাকে। এই রকম ভাবে কাজ যদি আমি সারা জীবন করি সেক্ষেত্রে আমার ব্যক্তিগত জীবনটা থাকবেনা। আমি এখন ছাতকের দোয়ারা বাজার হেলথ কমপ্লেক্স এ ইউনিসেফ এর একটা প্রজেক্টে কর্মরত আছি। সেখানে অতি তুচ্ছ কারনে বেতন আটকে আছে। সিভিল সার্জন ঘটিত সমস্যা। টানা চার মাসের বেতন আমি পাচ্ছিনা। তাই বলে কিন্তু আমি চাকরি ছাড়িনি। কাজ করছি। দেখি এটা কোন পর্যন্ত গড়াতে পারে। বলুন কোথায় যেতে হবে?
যাবার প্রথম শর্ত হচ্ছে সেখানে রোগীকে দেবার মতো প্রয়োজনীয় ঔষধ ফ্রি দেবার সামর্থ্য আপনার থাকতে হবে।
দ্বিতীয় শর্ত হচ্ছে আমাদের ওখানে রোগীর ভীড় সামলানোর জন্যে আপনার নিজস্ব ভলান্টিয়ার থাকতে হবে।
তৃতীয় শর্ত ডাক্তারদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে, প্রয়োজনে পুলিশও আনতে পারেন।
চতূর্থ শর্ত রাজনৈতিক কোন শক্তি কাজে হস্তক্ষেপ করতে পারবেনা।
আমাদের অনারিয়াম (আপনি নাকি অনারিয়াম সাধা সত্যেও ডাক্তার পাননি) ঠিক মতো পে করতে হবে।
পারবেন শর্ত গুলো মানতে?
তাহলে আমি সহ আর কয়েকজন ডাক্তার সেখানে যাবেন। কথা দিচ্ছি।
তাহলে যোগাযোগ করতে পারেন ০১৭১১২৪৮১৫০। ফোন না করে আগে আপনার নাম্বার এস এম এস করে পাঠাবেন, পরিচয় সহ, তারপর আপনার সাথে কথা বলা যাবে।
আপনার ঔদার্যের জবাবে ধন্যবাদ জানানোর ধৃষ্ঠতা আমার নেই। আমার পরিকল্পনা আছে খুলনা শহরে একটা আর বাগেরহাট জেলার ফকিরহাট উপজেলার মূলঘর গ্রামে একটা।
আমি একজন স্বল্প আয়ের করণিকগোত্রীয় মানুষ। অনেক কিছুরই ইচ্ছে আছে কিন্তু সাধ্য সীমিত বা নেই। চেয়েছিলাম এলাকায় প্রাকটিসিং একজন ডাক্তার যদি শুক্রবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কিছু সন্মাণীর বিনিময়ে একটু সময় দেয়, তো উদ্যোগটা স্বার্থক হতো।
ভলান্টারিজম দিয়ে যে পেট চলে না সেটা আমি বুঝি। আর সেজন্যেই চেয়েছিলাম এলাকায় প্রাকটিসিং কারো সহযোগিতা যে সপ্তাহে কয়েকটা ঘন্টা কিছু সন্মানীর বিনিময়ে সেবা দেবে। একজন ফুল টাইম একজন ডাক্তার এ্যাফোর্ড করার ক্ষমতা আমার নেই। তাছাড়া দূর থেকে একজন ডাক্তার আনতে হলে তার যে পথখরচা, সেটাও ব্যায়বহুল। তবুও আপনার প্রশ্নগুলোর উত্তর দিচ্ছি যাতে আমার উদ্দেশ্য সম্পর্কে আপনার একটু পরিষ্কার ধারণা হয়-
এটা আমার পরিকল্পনায় আছে। যদি ক্লিনিক চালু করতে পারি, তবে আমার নিজস্ব কানেকশনের মাধ্যমে আমি ঔষধ সংগ্রহ করতে পারবো। এরকম কিছু পাকা আশ্বাসও পেয়েছি। হয়তো সমস্ত ঔষধ থাকবে না, কিন্তু অন্তত কিছু থাকবে। এটা মাথায় রেখেছি যে যাদের জন্যে এই সেবা, তাদের ঠিকমতো ঔষধ কেনার সামর্থ থাকবে না। তবে তার জন্যে আগে ক্লিনিক শুরু করতে হবে।
পর্যাপ্ত সংখ্যক ভলান্টিয়ার পাওয়া যাবে।
পুলিশ ছাড়াও সেটা সম্ভব। আমাকে যারা ব্যাক্তিগতভাবে চেনে, তারা এটা জানে।
এসব সেবামূলক কাজে মনে হয়না যে কেউ ঝামেলা করতে আসবে। আর যদি আসে, তা ঠেকানোর ব্যবস্থা আছে।
যেহেতু অনারিয়ামটা আমার পকেট থেকে আসবে, সেহেতু ফান্ডের জন্যে অপরের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হবেনা।
আগেই বলেছি- একজন ফুল টাইম একজন ডাক্তার এ্যাফোর্ড করার ক্ষমতা আমার নেই। তাছাড়া দূর থেকে একজন ডাক্তার আনতে হলে তার যে পথখরচা, সেটাও ব্যায়বহুল।
আপনার এই মহানুভবতা আমাকে অভিভূত করলো। যদি কখনো উদ্যোগটাকে বড়ো আকারে নিতে পারি, অন্তত দেখাতে হলেও একবার আপনাদেরকে সেখানে আনবো।
তবে একটা ব্যাপার আশ্বস্ত করি, আমি কিন্তু হাল ছেড়ে দেওয়ার বান্দা নই। চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি, বন্ধুদেরকেও তাগাদার উপর রেখেছি। আমি এর শেষ না দেখা পর্যন্ত থামছি না, এটুকু নিশ্চিত। আপাতত আপনাদের শুভকামনা থাকলেই হবে।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
রাতঃস্মরনীয় দা,
একটা বিষয়, এই মাসের শেষের দিকে আমি নিজেই ফ্রি হেলথ ক্যাম্প করতে যাচ্ছি । প্রতি মাসে চারটা। চার শুক্রবার। আসবেন নাকি একবার? সেখানে? নাম্বার তো দিলামই। আশা করছি যোগাযোগ করবেন।
আমি আপনার সাথে যোগাযোগ করবো। যদি সম্ভব হয়, দেশে থাকি, তবে যাওয়ার আগ্রহ রইলো।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
চমৎকার ,গুছানো একটা পোস্টের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ ,ধূসর জলছবি ।
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ইণ্টার্ণী করার সময় আমার নিজের এবং সহকর্মীদের কিছু তিক্ত অভিজ্ঞতার জন্য মাঝেমাঝেই মনে হয় কেনো যে মেডিকেলে পড়তে এসেছিলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে । রোগী আর রোগীর সাথের লোকদের কাছ থেকে পাওয়া আচরণ সম্পর্কে কিছু বলতে গেলে অনেকে আবার বলে বসবেন আমরা তাদের কাছ থেকে উঠতে বসতে সালাম প্রত্যাশা করি । সালাম যেমন প্রত্যাশা করিনা ঠিক তেমনি ভাবে এটাও প্রত্যাশা করি না যে রোগীর লোকজন ডাক্তারদের দিকে তেড়ে আসবে । আর এসব হর হামেশাই ঘটছে .... তখন কোথায় থাকেন আমাদের সাংঘাতিক ভাইয়রা আর কোথায় থাকেন আমদের মানবাধিকার কমিশন ? আর যেসব ডাক্তার থানা হেল্থ কমপ্লেক্সে ডিউটি করেন তাদের সাথে ওখানকার চেয়ারম্যান আর মাতব্বরদের আচরণ দেখলে মনে হয় ডাক্তাররা তাদের চাকর ছাড়া কিছু না ।কথায় কথায় তারা হুমকি ধামকি দিয়ে বেড়ায় ।তাহলে আমরা কর্মস্থলে কতটুকু নিরাপদ ? না-কি ডাক্তার হয়েছি বলে এসব অম্লান বদনে সহ্য করতে হবে ? অন্যায়ের প্রতিবাদ পর্যন্ত করতে পারব না মানবতার সেবক বলে ?
ডাক্তারদের কোনো ছুটি থাকেনা কারণ তাদের মনেহয় পরিবার থাকেনা ,তারা সামাজিক জীব না ! ঈদ কিংবা পূজাতে যখন ডাক্তারের সংখ্যা কম থাকে (রোস্টার ডিউটিতে ডাক্তাররা ঠিকই থাকেন) তখন টিভি ক্যামেরা সহ জনদরদী সাংঘাতিক ভাইয়রা হাসপাতাল টহল দিয়ে বেড়িয়ে দেশ উদ্ধার করেন ।বড় হাস্যকর ব্যাপার ।
৫০০ শয্যার হাসপাতালে যখন ১৫০০ রোগী ভর্তি হয় আর বেড তো বহু দূরের কথা হাসপাতালের বারান্দা পর্যন্ত পা রাখার জায়গা থাকেনা তখন কোথায় থাকেন আমাদের প্রশাসন ? তখন তো কোনো ডাক্তার বলেনা আমি বেডের বাইরের কোনো রোগী দেখব না ,ওটা তো নিয়মে নেই !!
শামিমা রিমা, পোস্ট টা লেখার পর আমার মনে হয়েছে, ভুল করেছি। কারন সবার ধারনা জেনে শুনেই ডাক্তার হয়েছ, তাই এখন যা হবে তাই মেনে কাজ করবা। কেউ এক গালে চড় দিলে আর এক গাল পেতে দিবা। কিচ্ছু করার নেই। এ কথাও শুনলাম মহত্ত্ব দরকার নেই, পেশাদারিত্ব নিয়ে কাজ করলেই হবে। কিন্তু পেশাদারিত্ব নিয়ে কাজ করতে গেলেই পেশার সুযোগ সুবিধা, কাজের পরিবেশ, নিরাপত্তা, এই ব্যপারগুলো চলে আসে । এজন্যই বলতে চেয়েছিলাম, কেন কাজটা আমরা ঠিকমতো করতে পারছি না। রোগীরা যেহেতু চিকিৎসা ব্যবস্থার এটা অংশ তাই তাদেরও জানার দরকার আছে। তবে মনে হয় না এসব কেউ জানতে চায়। ময়মেনসিং এ ইন্টার্ন করার সময় বরং আমি কাজ করে শান্তি পেয়েছি(হাজারটা অপ্রতুলতা মধ্যেও ) , ঢাকাতে অবস্থা আরও খারাপ । আর যারা বিসিএস দিয়ে গ্রামে যাচ্ছে তাদের কাছে শুনে তো আরও ভয় লাগে। ধন্যবাদ আপনাকে।
চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ থেকে পাশ করা ডাক্তারদের 'ফেসবুক গ্রুপে' আলোচনার জন্য লিখাটি এখানে শেয়ার করছি।
বিবেকের আয়নার সামনে দাড়িয়ে ...
মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান মিজান সাহেব যখন 'রক্তচোষা- অমানুষ' বলেন, আমরা অন্তরজালে ছড়িয়ে দেই এর প্রতিবাদ। সবচেয়ে জোরালো প্রতিবাদ হয়তো আমার হাতেই লিখা। এভাবে একটা পেশার সবাইকে দোষারোপ করা ঠিক না, এই ছিলো আমাদের বক্তব্য। কিন্তু কারো আপনজন যখন ভুল চিকিৎসায় অথবা চিকিৎসকের অবহেলায় ক্ষতিগ্রস্ত হন, আবেগের বশবর্তী হয়ে তারা আমাদের কসাই বলে ডাকলে দোষ দেয়া যায় কি? মানুষ ভুলত্রুটির উর্ধ্যে নয়, তবুও গাড়ি চালকের ভুলে কিংবা অবহেলায় যখন এক্সিডেন্ট হয়, চালককে এর জন্য প্রচলিত আইনে শাস্তি পেতে হয়। একজন ডাক্তারের ভুলের জন্য ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ সহ ওই ডাক্তারের শাস্তির বিধান আছে কিনা জানা নেই, কিন্তু বাস্তব প্রয়োগ যে নেই, সেটা বলতেই হয়। একজন ডাক্তার যখন শাস্তি এড়িয়ে যায়, বেপরোয়া হয়ে উঠাই স্বাভাবিক। পরোক্ষভাবে একজন লাইসেন্সধারী খুনিতে পরিনত হয় সে। এর কি কোনও প্রতিকার নেই? কথাগুলো এই ফোরামে লিখলাম, কারন এখানে অন্য পেশার কেউ নেই। মানুষ আইনের উপর আস্থা হারিয়ে ফেলার পর দেখা যায় একজন গাড়িচালক যখন এক্সিডেন্ট করে কাউকে মেরে ফেলে, জনতা আইন নিজের হাতে তুলে নেয়। এমন দিন কি খুব বেশি দূরে, মানুষ ডাক্তারদের ভুল বা অবহেলার শিকার হয়ে ঝাপিয়ে পড়বে না তাদের উপর?
যখন ইন্টার্নশিপ করি, টুকটাক ওষুধ/ প্যাড/ ডায়েরি মাঝে মাঝে টেবিল ঘড়ি টাইপ কিছু উপহারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিলো ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানির ডাক্তারদের প্রতি ভালোবাসার প্রকাশ। ২ টা ফ্রি কলম আর প্যাড পেলেই, আনন্দে হতাম আত্মহারা। পরবর্তীতে কিছুদিন ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানির ম্যানেজমেন্ট এ কাজ করার সময় জানলাম, খাম ভর্তি টাকা মাসোহারা দেয়ার কাহিনী। একবার যাই অফিস ট্যুরে বাগেরহাটে। একজন জনপ্রিয় GP এর চেম্বারে যাই ভিসিটে। অবাক হই শুনে, উনাকে প্রেসক্রিপশান এ কোম্পানির ওষুধ লিখানোর জন্য ২ টা করে 'ফেন্সিডিল' সাপ্লাই দিতে হয় প্রতিদিন। এসব ফোরামের বাইরে লিখার মতো নয়। নিজেদের এই লজ্জা এখানেই শেয়ার করলাম এই কারনে। একবার (২০১০-২০১১) দেশে দিয়ে দেখলাম, হাসপাতালে ডাক্তারকে বাইকে করে পৌঁছে দেয়া, বাজার করে দেয়া হতে শুরু করে এমন কিছু নেই যা করে না একজন মেডিক্যাল রিপ্রেসেন্টিভ। দিন দিন লোভ আর চাহিদা বাড়ছেই। আই-ফোন, আই-প্যাড, ল্যাপটপ, বছরে ২/৩ বার কনফারেন্সের নামে বিদেশ ভ্রমণ, এমনকি হাড়ি- পাতিল (নন-স্টিক প্যান নিজেই দেখা)... কি নেই এই লিস্টে।
প্যাথলজি ল্যাব এর কমিশন এর কথা আর আলোচনায় নাই বা আনলাম। ফোরামের কারোই এগুলো অজানা নয়। সমস্যা হচ্ছে, সততার মাত্রা এখন আপেক্ষিকে এসে দাঁড়িয়েছে। কেউ কেউ কিছু কিছু অন্যায়ে ইমিউনাইজড হয়ে গেছেন। অপরাধের লিস্ট থেকে সেগুলো বাদ দিয়ে বিবেকের কাছে পরিস্কার থাকছেন। কিন্তু অন্যায় তো অন্যায়ই, সে যতো ছোট হোক না কেন। আজকের একটা ছোট অন্যায় প্রলুব্ধ করে, আগামীতে আরেকটু বড় মাপের অন্যায়কে গ্রহন করার মতো মানসিকতা তৈরি করতে।
ফোরামে গাইনি ও অবস এর ডাক্তারদের প্রতি পুর্ন সম্মান রেখেই বলছি, নরমাল ডেলিভারি ও এসিস্টেড ডেলিভারি বলে কিছু আছে কি আর? ডেলিভারি মানেই সিজারিয়ান ডেলিভারি হয়ে উঠতে আর কত দেরি? গত বাংলাদেশ ভ্রমনে কক্সবাজারে চমেকের ২২ জন গিয়েছিলাম বেড়াতে। সেসময় মলয়'দা (৩২ তম ব্যাচ) এ নিয়ে যা পরিসংখ্যান দিলেন, শুনে আঁতকে উথেছিলাম। মনে হচ্ছিলো কোনও সায়েন্স ফ্রিকশান মুভি দেখছি। অপেক্ষা করছি এমন দিনের, যখন কোনও শিশু ভূমিষ্ঠ হয়না সিজারিয়ান ছাড়া!
বাংলাদেশে সবচেয়ে সহজ মনে হয় মেডিক্যালে পড়াশুনা করা। বিশ্বাস না হলে আসে পাশে জিজ্ঞেস করে দেখুন। এবার দেখলাম, চট্টগ্রামে সরকারি মেডিক্যাল থেকে পাশ করা ডাক্তারের চেয়ে USTC থেকে পাশ করা ডাক্তারের পরিমান বেশি। অদুর ভবিষ্যতেই দেখতে পাবেন, চট্টগ্রাম BMA এর নেতৃত্বে USTC এর ডাক্তারগণ। বছর ২০ পড়ে হয়তো পুরোদেশের সাস্থ্যব্যাবস্থার দায়িত্ব নিয়ে নিবেন প্রাইভেট মেডিক্যাল থেকে পাশ করা এলিট সমাজের ডাক্তারগণ। ৩০/৪০ লাখ টাকা (৫/৬ বছরে) ব্যয় করে যারা পাশ করেন প্রাইভেট মেডিক্যাল থেকে ১৫০০০ টাকার বেতনে সরকারি চাকুরি করে তাদের শুধু শিক্ষাবাবদ খরচ হওয়া টাকা তুলতে প্রায় ১৫-২০ বছর লাগার কথা। তারপরও শতাধিক প্রাইভেট মেডিক্যাল-ডেন্টাল কলেজে ছাত্রের অভাব হতে শুনিনি।
সম্মানিত বিএমএ নেতাদের কাছে আমার ব্যক্তিগত দাবি পেশ করছি ফোরামে এই পোস্ট এর মাধ্যমেঃ
* স্বাস্থ্যনীতি চাই।
* মানবিক মুল্যবোধসম্পন্ন ডাক্তার চাই।
* ফার্মাসেউটিক্যাল কোম্পানি এর রিপ্রেজেন্টিভদের ডাক্তারদের সাথে ব্যক্তিগত ভিসিট বন্ধ হোক। প্যাথলজি ল্যাবে কমিশন দেয়া-নেয়া বন্ধ হোক।
* ভুল চিকিৎসা ও চিকিৎসায় অবহেলার জন্য শাস্তির বিধান ও বাস্তব প্রয়োগ চাই।
* বিনা প্রয়োজনে সিজারিয়ান অপারেশনের জন্য ডাক্তার ও ক্লিনিক মালিকের জরিমানা ওয়ার্নিং এবং পরবর্তী একই ধরনের অপরাধে লাইন্সেস/ রেজিস্ট্রেশান বাতিল করা হোক।
* বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের নামে শিক্ষাকে পন্যে পরিনত করার ব্যাবসা হোক। Highly Trusted ব্যাতিত বাকি সবগুলো কলেজ অবিলম্বে বন্ধ করা হোক।
( বিবেকের তাড়নায় লিখা। ফোরামের ২/৩ জনের আপনজনও ভুল চিকিৎসার শিকার। আপনার আমার পরিবারের সদস্যরাও একদিন এর শিকার হবেন নিঃসন্দেহে। সবাইকে আলোচনায় স্বাগতম)
ধন্যবাদ আপনাকে। বেসরকারি মেডিকেল থেকে শুধু যে বেশি ডাক্তার বের হচ্ছে তাই না, গতবার অ্যাঢকে যত ডাক্তার নিয়েছে তার ২/৩ হল বেসরকারি মেডিকেল থেকে পাস করা। অ্যাঢক নিয়ে যে পরিমান দুর্নীতি শুরু হয়েছে তাতে শুধু বি এম এ না কয়েকদিন পর সিভিল সার্জন থেকে স্বাস্থ্যমন্ত্রি সবাই বেসরকারি মেডিকেল এরই হবেন। গত বছর ডি এম সি এর প্রচুর ছাত্র ফেল করিয়ে তারপর স্যার রা বলছিল বেসরকারি মেডিকেল থেকে ছাত্র এনে ইন্টার্ন করাতে। প্রতিবাদের মুখে আর করতে পারেনি। অথচ এসব ছাত্রের (অল্প কিছু বাদে ,) ডোপামিন কিভাবে দিতে হয় সে ধারনা টুকুও থাকে না। আমার নিজের দেখা অভিজ্ঞতা থেকেই বলছি।
আপনার দাবিগুলোর সাথে একাত্ততা ঘোষণা করছি। সাথে আরও কয়েকটা -
* হাসপাতালে ওষুধ বণ্টন নিয়ে আরও সচ্ছ হতে হবে। বাইরেও ওষুধের দাম নি্দিষ্ট করে দিতে হবে।
* ডায়াগনস্টিক সেন্টার গুলোর ডাক্তার দের কমিসন দেয়ার নিয়ম বাদ দিতে হবে এবং তাদের প্রতিটা পরীক্ষার মূল্য সরকার থেকে নির্দিষ্ট করে দিতে হবে।
* থানা হেলথ কপ্লেক্স গুলোর মান বাড়াতে হবে। ডাক্তার থাকার জন্য নুন্নতম পরিবেশ এবং নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে।
* হাসপাতালে যে কর্মচারী ইউনিওন গুলো আছে তাদের ক্ষমতা কমাতে হবে। রাজনীতি করুক বা না করুক ডিউটির সময়ে ডিউটি করতে হবে।
* হা্সপাতালের যন্ত্রপাতি ঠিক করতে হবে সাথে টেকনিশিয়ান বাড়াতে হবে।
* মিডিয়ার লোকজনের সাথে সরাসরি কথা বলতে হবে। অসংগতি নিয়ে লিখতে চাইলে তারা সত্যিকারের অসংগতি খুঁজে বের করে লিখবে। না বুঝে না জেনে না খুঁজে সবাইকে এক কাতারে ফেলে মিডিয়াতে খবর প্রচার বন্ধ করতে হবে। এতে মানুষ বিভ্রান্ত হয় সবচেয়ে বেশি।
* দালাল নামক কোন কিছুর অস্তিত্ব থাকা চলবে না। (সমস্যা হল দালাল স্যার রাই পুষে ) ।
* প্শ্ন পত্র ফাস কেন হচ্ছে বের করতে হবে এবং কোনভাবেই যেন না হয় সে ব্যবস্থা নিতে হবে।
যে দেশে গুণীর সম্মান নেই, সে দেশে গুণী জন্মায় না। আগে নিজে ভাল হন তারপর ডাক্তারের দোষ ধরবেন। পৃথিবীর বাইরের কোন জগত থেকে ডাক্তাররা আসেন না। তাঁরাও আপনার আর আমার মত মানুষ। তাঁদেরও রাগ,দুঃখ, কষ্ট আছে তা আমরা কখনই ভেবে দেখি না ।
এখানে করা একটা কমেন্ট দেখা যাচ্ছে ফেসবুক আর ব্লগে শেয়ার করা হচ্ছে। অসুবিধা শেয়ার এ না, অসুবিধা সেই সকল শেয়ারে পড়তে থাকা কমেন্ট এ যা পড়ে মনে হচ্ছে অনেকেই যা লিখেছি তা বিশ্বাস করেননি। দুইএকজন ইউরোপ বিশেষজ্ঞ তো কয়েককাঠি সরেশ মনে হল। ইউরোপ বলতে ৩/৪ টা দেশকেই কেবল বোঝায়না আর সবাই স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় অভিন্ন নীতি মেনে চলে এটাও ঠিক না। আবার শুধু দেশ না, কিছু কিছু দেশে শহর ভেদেও স্বাস্থ্য সেবার আলাদা আলাদা নীতি আছে। যস্মীন দেশে যদাচার। যে এলাকায় যে সিস্টেমটা সবচেয়ে কার্যকরী বলে মনে হয় সেখানে তা মেনে চলা হয়। আমি ভূল লিখিনি কিছু উপরে। যদিও বেশি ডিটেইলস এ যাইনি। আমার এখানে প্রতিটা লোকাল কমিউনিটিতেই একটা স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র আছে (আছে বাংলাদেশেও)। কমিউনিটির আকার আর গুরুত্ব অনুযায়ী সেখানে নির্দিষ্ট সংখ্যক ডাক্তার বসেন। গড়ে ৪ জন। জেনারেল প্র্যাকটিশনার। বড় কেন্দ্র গুলোতে বিশেষজ্ঞও থাকেন। সিরিয়াল অনুযায়ী আপনাকে দেখা হবে। আপনাকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ফি পে করতে হবে। এ বাবদ বছরে ৯০০০ টাকা পর্যন্ত আপনাকে পকেট থেকে ব্যায় করতে হবে। এর বেশি যদি কিছু হয় তবে সরকার পে করবে ইন্সুরেন্স থাকলে। ঔষধ বাবদ আপনার খরচ বছরে ১৮০০০ টাকা। এর বেশি হলে সরকার (ইন্সুরেন্স থাকলে)। কিন্তু এসবের কেন কিছু আমার দেখার বিষয় না। রোগী আসবে, আমি দেখব, তাকে সেবা দেয়ার চেষ্টা করব। আমার চিকিৎসায় ভাল হচ্ছে না মনে হলে রেফার করব। আমার প্রাপ্য আর নিরাপত্তার ভার সিস্টেমের। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নির্ধারিত সময়ের পর কোন সমস্যা হলে বা দিনের যে কোন সময় গুরুতর অসুস্থ হলে চলে যাবেন নিকটস্থ হাসপাতালের ইমার্জেন্সিতে। একজন দেখলাম বলেছেন ৮ ঘন্টা বসে থাকার ব্যাপারটা বুলশিট। বুলশিট না। চরম সত্য। নিজ চোখে দেখা। ট্রায়াজ সিস্টেমের মাহাত্বই এখানেই। আপনার সমস্যা যত জটিল, আপনি চিকিৎসা পাবেন তত দ্রুত। কিন্তু আপনার সমস্যা জটিল কিনা এটা আপনার মুখের কথায় বিশ্বাস করা হবে না। প্রতিটা লক্ষন বা রোগের জন্য আলাদা আলাদা স্কেল বা গাইডলাইন আছে, সে অনুযায়ী নার্স (ডাক্তার না) আপনাকে মার্ক দেবে আর সিস্টেমে আপ করবে। মার্কিং অনুযায়ী, গ্রেডে উপরের দিকের সকল রোগীকে ম্যনেজ করা শেষেই আপনার পালা আসবে। ধরেন রাত ১২টায় জ্বর নিয়ে হাসপাতালে গেলেন। যার সাথে কথা হল তিনি মনে করলেন জরূরী কিছু না। আপনাকে প্যারাসিটামল খেতে পরামর্শ দিয়ে জানানো হবে আগামীকাল এলাকার স্বাস্থ্যকেন্দ্রে দেখাবেন। আপনার এখানে আসাটাই বৃথা গেল।
মূল যা বক্তব্য ছিল তা হল ভাল কিছু পেতে হলে আপনাকে সিস্টেমকে সম্মান জানানোটা শিখতে হবে। তা আপনি যেই হোন না কেন। বাংলাদেশ ইউরোপ না। সম্পদের সীমাবদ্ধতা আছে। না পাওয়ার ক্ষোভ আছে। চিকিৎসকেরও আছে, রোগীরও আছে। এখানে কি নেই? এখানেও ডাক্তার রোগীর চিরায়ত দন্দ্ব আছে, চিকিৎসা দেয়ার পরও মানুয় মারা যাওয়ার নজীর আছে। কেন মারা গেল তা খুঁজেও দেখা হয়। ভূলটি কার, চিকিৎসক, রোগী (হ্যাঁ, রোগীদের বা তাদের আত্মীয় স্বজনদের ভূল ও ধরা পড়ে) না সিস্টেমের সেটাও বের করার চেষ্টা করা হয় এবং তা দূর করার চেষ্টা করা হয়। আপনি সিস্টেম (চিকিৎসা দেয়ার গাইডলাইন, প্রিসিডেন্স এবং আইন) মেনে চলেছেন, তাতে যদি রোগী মারা যায় তো তার দায়ভার চিকিৎসকের নয়। অভিযোগ হরহামেশাই করা হয় রোগীদের পক্ষ থেকে, গালাগালি, মারামারি বা হাসপাতাল ভাংচুর নয়। শুনে যেটা অবাক লাগতে পারে সেটা হল বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই চিকিৎসক নিরাপরাধ প্রমানিত হন। দোষ পাওয়া যায় ইনফ্রাস্ট্রাকচার বা সময়ের। তাই এখানকার চিকিৎসা ব্যবস্থা রিফর্মের গাইডলাইন এখন STEEEP
Safe—মানে দাড়ায় সিস্টেমটা এখনো সেফ না
Timely—লোকজন মাঝে মাঝে সময়মত চিকিৎসা পায় না
Effective—পাওয়া চিকিৎসা সবসময় কার্যকরী হয় না
Efficient—চিকিৎসা ব্যবস্থা আশানুরূপ দক্ষ না
Equitable—চিকিৎসা সবাই সমান ভাবে প্রাপ্য হতে হবে
Patient-centered-
বেশিরভাগ বাঙালীই এর বেশিরভাগ পয়েন্ট মানতে দিবে না এখনকার প্রেক্ষাপটে মনে হয়। সবাই পাওয়ারফূল। তাকেই আগে দেখতে হবে। কে মরে যাচ্ছে আগে তা দেখার দায়িত্ব কারো না। ক্ষমতার পা চাট। দেশের কোন সেক্টর কে আলাদাভাবে ভাল পাওয়া/করা যাবে না। একটার সাথে আরেকটা জড়িত। নীতি নির্ধারকরা বা উপরের পদে থাকা সৎ নিরপেক্ষ কাউকে জিজ্ঞেস করুন। আমার ধারনা তারাও এটাই বলবেন। আপনি কতটুকু সৎ? সিএনজি বা রিকসা ড্রাইভার এর অন্যায় ভাড়া মেনে নিয়ে আপনি যদি তাদের গাড়িতে চড়েন, তবেতো আপনিই সে ব্যাক্তিদের একজন, যাদের জন্য দেশে দূর্নীতি বেড়েই চলছে। কেউ কেউ এতেও টিটকারী মারবেন। উদাহরন টা একটু স্থুল হলেও সত্য। আপনি যেমন ভাবে অন্যায়কে প্রশ্রয় দিয়ে বেঁচে আছেন, দেশের বাকি সব পেশার লোকজন ও একিভাবে যুদ্ধ করে চলছে প্রতিদিন, ক্ষণ। সবাই যদি একযোগে দেশ উদ্ধারে ব্রতী না হয়ে অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপাতে থাকেন তো শেষ পর্যন্ত সবাই সেই একই গাড্ডায়ই থাকবেন।
ত্যাক্ত বিরক্ত ভাই, আপনি ফোরামের কথা এখানে নিয়ে এসে কিছুটা ভূল করে ফেলেছেন মনে হয়। এটা ইউ,কে এর একটা দেশের মেডিকেল এসোসিয়েশনের ডাইরেকশন অনুযায়ী বলা। বিস্তারিত আপনার মেইলে।
দুঃখের সাথে বলতে হচ্ছে, আমার কমেন্টস এর সাথে আপনার জবাব এর কোনও সম্পর্কই খুজে পেলাম না। ইউরোপের সাথে বাংলাদেশের সাস্থ্যব্যাবস্থার তুলনা কোথাও করা হয়েছে কি? দেশে আমার ব্যক্তিগত কিছু অভিজ্ঞতা থেকেই সেগুলো তুলে ধরা মাত্র। সাথে বিবেকের কাছে নিজের অবস্থান পরিস্কার করার চেষ্টা করেছি। আপনি জবার দেয়ার সময় কোট করে করে নির্দিষ্ট পয়েন্টে আপনার মতামত তুলে ধরলে সুবিধা হতো বুঝতে।
ত্যক্ত বিরক্ত ভাইয়া ইউরোপে থাকা চিকিৎসক সম্ভবত আপনার লেখার জবাব দেন নি। উপরের কমেন্ট গুলো পড়লে বুঝতে পারবেন উনি এসব কেন বলেছেন।
আপনার কমেন্টস এর সাথে আমার বক্তব্যের কোন সংঘর্ষ নেই। চিকিৎসকদের একটা অংশ পরিস্হিতির উন্নয়নের জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছেন এটা আমরা সবসময় জানি। কিন্তু জনগন চেষ্টাটা বুঝবে বলে মনে হয় না। আজকের প্রথম আলোর অর্টিকেল টাই নিন না উদাহরন হিসেবে। তারা প্ররোচিত হবে আর আপনাকে ঐ একই বিশ্লেষনে ডাকতেই থাকবে। কাজের সংজ্ঞা বলে বল প্রয়োগে বস্তুর সরন হলে সেটা কাজ। আমাদের চেষ্টার যদি কোন ফল না আসে সেটা কোন কাজ হবে না আর যেটা কাজ না সেটা এই সময়ে অন্যদের আকৃষ্ট করবে না।
বাংলাদেশের বর্তমান ডাক্তার রোগী সম্পর্ক নিয়ে যারা বিচলিত তারাই এই মূহুর্তে ব্লগ আর সোশ্যাল মিডিয়াতে প্রতিবাদ করে যাচ্ছে। এ প্রতিবাদ করতে গিয়ে আমরা নিজেদের অজান্তে কিছু ক্ষতিও করে ফেলছি (এ সম্পর্কিত হয়ে যাওয়া কিছু রিসার্চ অনুযায়ী)। মিডিয়াতে চিকিৎসক আর মেডিকেল ছা্ত্রদের আচরণ কেমন হওয়া উচিত তা আপনাকে মনে করিয়ে দেওয়াই আমার উদ্দেশ্য ছিল। হয়তোবা গাইডলাইনটা আপনার চোখ এড়িয়ে গেছে। গাইডলাইন এর সম্ভবত ৩য় বা ৪র্থ পয়েন্ট এর সাথে আপনার লেখাটা কনট্রাডিক্ট করে। আপনাকে আঘাত করা বা আপনার কমেন্ট এর সাথে দ্বি-মত পোষন করা এর উদ্দেশ্য নয়।
নীল ফিতা কী জিনিস ভাইয়া?
আগের লেখার শেষ লাইনে ইউ,কে এর জায়গায় ইউরোপ পড়তে হবে।
যারা বিভিন্ন যায়গায় শুধু একটা কমেন্ট পোস্ট করছেন তাদের অনুরোধ রইল গুরুত্বপূর্ণ অন্যান্য দের লেখার চুম্বক অংশ গুলো ও তুলে ধরার জন্য।
একপেশে চিন্তায় সমস্যার সমাধান আসবে না আর দেশের কয়েকলক্ষ ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর মতামত সারা বাংলাদেশের কোটি মানুষের মতামতও না।
যারা নানা উদাহরন দিয়ে প্রমান করতে চাইবেন যে অনলাইন এক্টিভিস্টদের অনেক শক্তি তাদের যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করেই বলছি, বাংলাদেশ এখনো সে অবস্থায় আসেনি যার প্রমান অনলাইনে অর্গানাইজ করা বিভিন্ন ইভেন্ট হাজার হাজার অংশগ্রহণকারী হওয়া সত্ত্বেও কাজের সময় বাচ্চারাও গুনতে পারবে এক জায়গায় দাড়িয়ে এমন সংখ্যক লোকের উপস্থিতি।
অনলাইন এক্টিভিটিকে যে বিশ্বাস ও করা যায়না ঠিকমত তার প্রমাণ ও তো আপনারা গত সপ্তাহেই পেয়েছেন নীল ফিতায়।
অন্যান্যদের কমেন্টস তুলে এনে এখানে প্রকাশ করা কি যুক্তিযুক্ত? এতে অবশ্যই তাদের কাছ থেকে পারমিশান নেয়ার ব্যাপার আছে।
নির্ভর করছে যে সাইট থেকে আপনি কপি করছেন তার লাইসেন্স কোন ক্যাটাগরীর তার উপর। ক্রিয়েটিভ কমনস এর কয়েকটা সেকশন এর আওতায় আপনি তা করতে পারেন।
কিন্তু আমি আসলে অন্য কমেন্টস এখান দেয়ার জন্য বলিনি। বলছি যারা একপেশে ভাবে এখানকার কমেন্ট অন্য জায়গাগুলোতে লিংক ছাড়া পাবলিশ করছে আর্টিকেল হিসেবে তারা তা ঠিক করছেন। কথার পরিপ্রেক্ষিত আর এ ব্যাপারে প্রাসঙ্গিক বক্তব্য ছাড়া যেভাবে কমেন্ট প্রকাশ করা হয়েছে তা একপেশে হয়ে যাচ্ছে। এতে দূরত্ব আরও বাড়বে ।
বলছি যারা একপেশে ভাবে এখানকার কমেন্ট অন্য জায়গাগুলোতে লিংক ছাড়া পাবলিশ করছে আর্টিকেল হিসেবে তারা তা ঠিক করছেন না।
নীল ফিতা কী জিনিস ভাইয়া?
নীল ফিতা কী জিনিস ভাইয়া?
ভাইসব, MBBS পাশ করেছি ৮ বছর আগে, সরকারী চাকরি ৪ বছরের। বেতন পাই সাকুল্যে বিশ হাজার। বাসাভাড়া দেই বার হাজার। বাকী টাকায় নিজেদের খাওয়ার খরচই হয় না, ছোট একটা ছেলে আছে, তার জন্য আবার আলাদা খরচ।
এই অবস্থা আমার মত প্রায় সব তরুণ ডাক্তারের।
ঈদে-পার্বণে বাবা-মা, ছোটভাই, স্ত্রী, আত্মীয়স্বজনদের কিছু দিতে পারিনি অনেকদিন।
নিজের জন্য কিছু করার কথা নাই বা বললাম। জুতোটা ছিঁড়ে গেছে, নতুন কিনতে সাহস পাচ্ছি না, কোন ডিসকাউন্ট শপ থেকে কেনার প্ল্যান করছি।
তাই আমাকে কেউ অমানুষ গালি দিলে খারাপ লাগে না, বাংলাদেশে মানুষ হিসেবে কাউন্ট হবার মত কোন যোগ্যতাই তো আমার নেই।
তবে একটা প্রতিজ্ঞা আছে মনে, উচ্চতর ডিগ্রীটা অর্জন করার সাথে সাথে দেশ ত্যাগ করব, মানুষরূপী এইসব দুপেয়েদের সেবা করার কোন ইচ্ছে আমার নেই।
আর একটা কথা। নিজের পরিবারের কাউকে কখনো এই অমানুষ বানাবার কারখানায় পাঠাবেন না।
@কামরুল হাসান ভাই,
একদম খাঁটি কথা বলেছেন ।
আমিও আমার আত্মীয় স্বজন কাউকে আর ডাক্তার হবার যণ্ত্রনা পোহাতে দিতে চাই না ।
ডাক্তার যদি রোগী না দেখেন তাহলেও সমস্যা, আবার দেখলেও বলি টাকার পাগল। এনারা তাহলে কোন দিকে যাবেন!
আমরা রোগী দেখতে চাই। সরকারি চাকরি যারা করেন তারা ৫০০ বেড এর হাসপাতালে ১৫০০ রোগী দেখেন। সরকার বেতন কিন্তু দেন ৫০০ রোগী দেখার জন্য। কিন্তু কেউ বলতে পারবে না আমরা সেজন্য কোন প্রতিবাদ করেছি। আর যারা বিনা বেতনে খাটি তারাও সেজন্য প্রতিবাদ করি না। বেসরকারি হাপাতালে রোগী ভর্তি হলে রোগীর পকেট খালি করে ফেলে কিন্তু আমরা কিন্তু বেতন পাই ১০০০০ টাকা। তাতেও চুপ করে থাকি । ডাক্তার বললেই সবাই বড় ডাক্তার বুঝে। সেরকম কয়জন আছে? আমাদের মত সাধারন ডাক্তার এর সঙ্খাই বেশি। হেলথ কপ্লেক্স গুলোতে পরিবেশ আর নিরাপত্তা বাড়ানো দরকার। আর সেই সাথে যারা উপস্থিত থাকে না তাদের শাস্তির ব্যবস্থা করা দরকার। এরকম আরও অনেক কথা আমি উপরেও বলেছি আবার বললাম। আমি সবচেয়ে যে ব্যপারটাতে গুরুত্ব দেই টা হল মিডিয়ার আচরন। তারা যদি এভাবে ঢালাও ভাবে সব ডাক্তার কে বিসদ্গার করতে থাকে এতে শুধু ডাক্তার দের ক্ষতি তা না, সাধারন মানুষেরও ক্ষতি। কারন রোগ হলে ডাক্তার এর কাছে যেতেই হবে। আস্থা না বজায় থাকলে সেটা তাদের জন্যও কষ্টকর। আমাদের সীমিত সম্পদ দিয়ে হাজার প্রতিকূলতার মাঝে আমরা যা করার চেষ্টা করে যাচ্ছি সেটাতে সবাই যদি এভাবে গালিগালাজ করে আমরা যারা নব্য ডাক্তার তারা উৎসাহ হারাব, যারা ভবিষ্যতে হতে চায় তারাও হারাবে। অথচ যারা অন্যায় করছে তারা বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেরাচ্ছে। তাদের কেউ ধরছে না,কিন্তু আমাদের সবাইকেই কথাশুনতে হচ্ছে। যে ভুল করবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়াটা জরুরি। কিন্তু পত্রিকায় এভাবে লেখালেখি করলে দেশের মানুষ হাসপাতালে এসেই ডাক্তার এর সাথে নেগেটিভ আচরন করবে। যা বলব তা বিশ্বাস করবে না। কিন্তু সেটা তাদের জন্যও ক্ষতিকর। আমাদের মিডিয়ার উচিৎ সমস্যা গুলো তুলে ধরা সেসব নিয়ে আলচনা করা, কোন ডাক্তার কোথায় কোন অপরাধ করছে সেটা ধরিয়ে দেয়া, কিন্তু পাশাপাশি যারা ভালও কাজ করছে তাদের কথাও বলা, তাদেরকেও উৎসাহ দেয়া।
আজ প্রথম আলোতে একজন সাংবাদিক লিখেছে যে গত ১০ বছরে ওষুধ বিক্রির পরিমান অনেক বেড়েছে। এটা ডাক্তার দের দোষ। কি অদ্ভুত কথা। গত ১০ বছরে জনসঙ্খা বেড়েছে, এখন মানুষ কবিরাজের কাছে কম যেয়ে ডাক্তার এর কাছে যাচ্ছে, আর একটা সমস্যা আমার লেখাতেও উল্লেখ করেছি , মানুষ ফার্মেসির লোকজন , পারামেডিক্স এদের কাছ থেকে ওষুধ নেয় বেশি, এভাবে ওষুধে উলটো পাল্টা ব্যবহার বাড়ছে। কিন্তু সেই সাংবাদিক সে ব্যপারে কোন খোঁজ খবর না নিয়ে ওষুধের ব্যবহার বাড়ছে তাই ডাক্তার রা সব খারাপ এই প্রমান করে দিলেন। কি অদ্ভুত ! এভাবে চলতে থাকলে চিকিৎসার পুরো ব্যপারটাই ভেঙ্গে পড়বে । সে আরও বলেছে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ডাক্তার দের অমানুষ বলেছে এতে নাকি ভালও ডাক্তার রা দুঃখ পায় নাই। কি আজব যুক্তি। আমি বলতে চাই আমরা ভালও ডাক্তার রা অনেক দঃখ পেয়েছি এবং ব্যক্তিগত ভাবে আমি চিন্তা করছি আসলেই এই পেশাতে থাকব কিনা।
মিজানুর রহমানের ঐ উক্তিটিও পত্রিকাতে প্রকাশ করেছে সেই সাংবাদিকরাই, যাদের বিরুদ্ধে আপনি উষ্মা প্রকাশ করছেন। আপনি কি মিজানুর রহমানের নিজের বক্তব্য পড়ে দেখেছেন?
আপনি এবং আপনার মতো আরো তরুণ ডাক্তাররা যারা মিজানুর রহমানের গুষ্টি উদ্ধার করছেন, তারা একবার বলছেন সাংবাদিকরা ডাক্তারদের নিয়ে নেতিবাচক লেখালেখি করছে, আবার সেই সাংবাদিকদের ঢেঁকি-ছাঁটা খবর পড়ে মিজানুর রহমানকে বকাবকি করছেন। ব্যাপারটা ডাবল স্ট্যান্ডার্ড হয়ে যায়। যদি ডাক্তারদের নিয়ে সাংবাদিকের লেখা পাঠককে জেনে-বুঝে বিবেচনা করার আহ্বানই জানাবেন, তাহলে মিজানুর রহমানকে নিয়ে সাংবাদিকের লেখা কেন ক্যাপসুলের মতো বিনা পরীক্ষায় কোঁৎ করে পানি দিয়ে গিলে খাচ্ছেন? তাঁর নিজের বক্তব্য পড়ে তারপর সমালোচনা করুন, তিনি কী বলছেন তা সাংবাদিকের তরফ থেকে জেনে নয়। সাংবাদিকেরা মিসকোট করে, এবং আংশিক কোট করে একটা মানুষের বক্তব্য আমূল পাল্টে দিয়ে অম্লানবদনে পরিবেশন করতে পারে, সেটা তো আপনাদের অজানা থাকার কথা নয়।
এক্ষেত্রে আপনি একটু ভুল বুঝেছেন আমাকে।আমার এই পোস্ট মিজানুর রাহ মান কি বলেছেন তার ভিত্তিতে ছিল না। একেবারেই সত্যি কথা যদি বলি তাহলে বলব এ লেখাটা আমি লিখেছিলাম আরও বেশ কিছুদিন আগে। গুছিয়ে দেয়া হচ্ছিল না , এবং সেটাও একটা মন্তব্বে বলেছি যে অনেকদিন ধরেই চাচ্ছিলাম এসব লিখতে। মিজানুর রামান কিছু না বললেও আমি এটা লিখতাম। আমার মনে হয়েছিল যে আমাদের সমস্যা গুলো আসলে সবাইকে জানান দরকার। নয়ত সব জায়গাতেই সবাই ভুল বুঝে। উদ্দেশ্য টা এরকমই ছিল। আর আমার এই পোস্ট টা লেখার পরের দিন দেখলাম যে মিজানুর রাহমান নিজেই প্রথম আলোতে লিখেছে একটা কলাম যে সে আবেগ তাড়িত হয়ে কয়েকটা কথা বলে ফেলেছে কিন্তু সবাইকে নিয়ে বলেনি । আমি কোথাও মিজানুর রাহ মান কে নিয়ে কিছু বলছি না। শুধু পোস্ট এর এক জায়গায় উল্লেখ করেছি তাও বলেছি আমাদের দেশের জনগন থেকে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান সবাই ডাক্তার দের অমানুষ ভাবে,কেন তারা মনষ্যত্ব হারায় সেটা ভেবে দেখে না । সে কি বলছে সেটা মুখ্য না , কিন্তু আমি বলতে চেয়েছি মিডিয়া সহ বড় বড় ব্যক্তিরা এই যে আচরন টা করছে তাতে সবারই ক্ষতি। শুধু একার ডাক্তারদের না।
আমি এই পোস্ট সহ মন্তব্য গুলোতে কোথায় মিজানুর রহমানের গুষ্টি উদ্ধার করেছি? আমি প্রতিটা জায়গাতেই সাংবাদিক দের কথাই বলেছি। এমন কি আমার পোস্টেও আমি বলিনি মিজানুর রাহমান কি বলল কেন বলল , আমি সাংবাদিক দের বলেছি জেনে বুঝে খবর পরিবেশন করতে। আমার পোস্ট টা মিজানুর রহমানের গুষ্টি উদ্ধারের জন্য ছিল না। আমি শুরু থেকে শেষ অবধি বলেছি আমরা কি কি সমস্যার মুখোমুখি হই । চিকিৎসা ব্যবস্থা টা এমন একটা অবস্থায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে সবারই জানা উচিৎ কি হচ্ছে। সেই তাগাদা থেকেই লেখা।
আপনি তো নিজেই বলছেন আপনি মিজানুর রহমানের কথা শুনে পেশা ছেড়ে দেয়ার কথা ভাবছেন। ওনার কথা যদি এতই ওজস্বী হবে, আশা করি তার নিজের লেখা বক্তব্য আপনি মন দিয়ে পড়ে আপনার প্রতিক্রিয়া জানাবেন।
আপনার এবং আপনার অনেক সহকর্মীদের কথা থেকে জানলাম, হাসপাতালে রোগীর রাখোয়াল, তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারীদের সংগঠিত মাস্তানি এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও তার ডালকুকুর মাস্তানদের অত্যচারে ডাক্তাররা অনেক সময় চাইলেও ভালো চিকিৎসা সেবা দিতে পারেন না। এরা ডাক্তারের ওপর চোটপাট থেকে শুরু করে গায়ে পর্যন্ত হাত তোলে। ওদিকে খবরের কাগজে দেখলাম ডাক্তারদের সংগঠন বিএমএ মানবাধিকার কমিশনের কমিশনার মিজানুর রহমানকে তার "বক্তব্য" (সঠিকভাবে বললে সাংবাদিকের কলমে লিখিত তার বক্তব্যের অপভ্রংশ) প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে প্রচুর গরম গরম কথা বলছে। আপনি কি আমাকে একটু জানাবেন, রোগীর রাখোয়াল-কর্মচারী সংগঠন-জনপ্রতিনিধি-মাস্তানদের অত্যাচার অনাচারের বিরুদ্ধে বিএমএ শেষ কবে সারা দেশ জুড়ে প্রতিবাদ জানিয়েছে? একটা খবর শেয়ার করলেই চলবে।
সেই সঙ্গে যেসব কুলাঙ্গার ডাক্তারদের আচরণের কারণে আপনাদের এতো বদনামের ভাগিদার হতে হয়, সেই ডাক্তারদের অন্তত একজনের বিরুদ্ধে বিএমএ আর বিডিএমসি এ যাবৎ কোনো ব্যবস্থা নিয়েছে কি না, একটু জানান আমাদের। আপনারা নিজেরা আপনাদের কমিউনিটির দুষ্টলোকদের বিরুদ্ধে ঠিক কী মনোভাব পোষণ করেন ও কী ব্যবস্থা নেন, সেটা জানলে সাধারণ রোগীরা ভরসা পাবে হয়তো।
সিবিএ বলে একটা সংগঠন আছে বাংলাদেশে। তার সাথে বি,এম,এর তফাৎ কেবল শিক্ষায়। আচরনে না।
আমি পেশা ছেড়ে দেয়ার কথা ভেবেছি মিজানুর রাহ মানের কথা শুনে না, গত অনেক দিন ধরে বিভিন্ন জায়গায় যা দেখছি পড়ছি , যেসব ঘটনা ঘটছে সেটাতে আপসেট হয়ে।(কয়েকদিন আগে আমার এক বন্ধু সরকারি কাজে যাওয়ার পথে রোড এক্সডেন্ট এ মারা গেছে , খবর টা পত্রিকায় আসেওনি , ডাক্তার দের ব্যপারে মানুষ এতটাই ত্যক্ত বিরক্ত যে ডাক্তার মারা গেছে শুনে কেউ দুঃখ পায় না , অপ্রাসঙ্গিক কথা বলে ফেললাম ) উপরের মন্তব্যে আমারই ভুল, আমি পরিস্কার করে বলিনি। দুঃখিত ।
আপনি জানতে চাচ্ছেন , যে কুলাঙ্গার ডাক্তার দের জন্য এই অবস্থা তাদের বিরুদ্ধে বি এম এ অথবা বি ডি এম সি কোন পদক্ষেপ নিয়েছে কিনা। আমার মত যদি জানতে চান মানে এই অল্প কয়েক বছরে আমি যা দেখেছি তা হল বি এম এ আর বি ডি এম সি এর লোকেরাই সেইসব কুলাঙ্গার অথবা সেসব কুলাঙ্গারদের গুরু । আমরা বাকিরা সবাই তাদের হাতে জিম্মি । এজন্যই তাদের কাছে কোন কপ্লেইন করলে তারা পাস কাটিয়ে যায়। নিজেদের আখের গুছাতে ব্যস্ত থাকে। এবং সৎ লোকেরা এইসব সংগঠনের কর্ণধার হন না। সবাই কিছুদিন প্রতিবাদ করার চেষ্টা করে , তারপর হাল ছেড়ে দিয়ে হয় নিজের আখের গুছাতে তাদের দলে নাম লেখায় অথবা নিজের মত করে এক কোনে পড়ে থাকে। অন্যায় অন্যায়ের মতই চলতে থাকে। বড় স্যার দের মধ্যে যারা ভাল তাদের প্রমোশন হয় না, তারা নিজেরাই নানা ভাবে শোষণের স্বীকার। আর যারা খারাপ তারাই বিভিন্ন রাজনিতিক দলের সাথে যুক্ত, তারা হাসপাতালে না আসলেও কাউ প্শ্ন করার সাহস পায় না, প্শ্ন করে লাভও হয় না। তাদের হাতেই ক্ষমতা থাকে।
আমাদের উপর অন্যায়ের প্রতিবাদে বিএমএ সারাদেশ জুড়ে কখনই প্রতিবাদ জানায় নি। বরং বিভিন্ন সময় আমরা প্রতিবাদ জানাতে গেলে হাসপাতালে ঝামেলা হবে, ট্রাইক হবে এসব বলে প্রতিবাদ থামাতেই চেয়েছে।
আপনাদের সমস্যাগুলো খুব গুছিয়ে লিখে ফেলুন। ক্যাটেগোরাইজ করে, পয়েন্ট বাই পয়েন্ট। সেই সাথে আপনাদের কী প্রয়োজন, সেটাও। লেখাটা সচলে পোস্ট করুন। তার একটা কপি যাতে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যানের হাতে পৌঁছায়, সে চেষ্টা আমি করবো।
পেশাগত কারণে বাংলাদেশ, ভারত, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য-ব্যবস্থা সম্পর্কে আমার স্বল্প সময়ের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতায় এই চারটি দেশের প্রতিটিতেই নিজ নিজ নাগরিকদের নিজস্ব স্বাস্থ্যব্যবস্থা নিয়ে প্রকাশিত অসন্তোষ আমার নজরে এসেছে.
এই চারটি দেশের সাধারণ গ্রহীতার স্বাস্থ্যসেবা প্রাপ্তিতে খাত-ওয়ারী ব্যয় বনাম প্রাপ্ত সেবার তুলনামূলক রেখাচিত্র খুবই আকর্ষনীয় ফলাফল নিয়ে আসবে বলে আমার বিশ্বাস.
বিদ্যমান অসন্তোষ নিয়ে ডাক্তারদের বক্তব্য আমি কিছুটা জানি - ধুসর জলছবির লেখায় আপনারা জানছেন / জানবেন. ভোক্তা হিসেবে আপনাদের অসন্তোষ / চাহিদা (সস্তা গালাগালি ব্যতিরেকে) গুছিয়ে লিখলে সেটাও অবস্থার ইতিবাচক পরিবর্তনের পথে অবদান রাখতে পারে.
সহমত
আমি নিজ দায়িত্বে সেটা মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান সাহেবের কাছে পৌঁছে দেবো। প্রয়োজনের স্বাস্থমন্ত্রীমহোদয়ের কাছেও দিতে পারবো।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
@ রাতঃস্মরণীয় ভাইয়া , আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আমি জানিনা কতোটুকু কি লিখতে পারব , তবে চেষ্টা করব আমাদের সমস্যা গুলোর যতটা সম্ভব আউট লাইন দিতে।
ধন্যবাদ। আমি সাধ্যমত চেষ্টা করব।
যদিও আমি ব্যক্তিগত ভাবে আশা করি না মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান উক্ত লেখাটি পড়ে কোনো উল্লেখযোগ্য কার্যোদ্ধার করবেন, আপনার পরিশ্রম যেন বিফলে না যায় সেই কামনা করি.
সঞ্জয় , এ কাজে আপনিও সাহায্য করতে পারেন বলে মনে হয় আমার।
ভাই, আমার দৌড় মন্তব্য পর্যন্তই (লেখার হাত, ধৈর্য কিংবা সময় কোনটাই পক্ষে নেই ).
তবে আপনার সাথে পরিচিত হতে পারলে আনন্দিত হব, আমি
এই ঠিকানায় আছি - কিভাবে সহায়তা করতে পারি জানাবেন.
অভিনন্দন আপনাকে।
চেষ্টায় দেশে থাকা সবাই কে সম্পৃক্ত করুন। স্যাটেলাইট ক্লিনিক, সাবসেন্টার, থানা স্বাস্থ্য কেন্দ্র, জেলা সদর, মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, প্রাইভেট ক্লিনিক, প্রাইভেট চেম্বার আর প্রাইভেট হাসপাতাল প্রত্যেকের সমস্যার ভিন্ন ভিন্ন মাত্রা আছে। একা একজনের পক্ষে সব আন্দাজ করা সম্ভব নয়। সমমনাদের এক হতে হবে।
বিজনেস ম্যানেজম্যান্ট আর কম্পিউটার সায়েন্স এর ছাত্ররা জানেন স্টেকহোল্ডার এনালাইসিস আর গোল মডেল এর গুরুত্বের কথা। এস,ও,এ আর এম,ডি,এ'র কথা। আফসোস, আমাদের স্বাস্থ্য সেবা নিয়ে যারা নীতি নির্ধারন করেন তারা এ ব্যাপারগুলো জানেন কিনা তা আমি জানি না। পাবলিক হেলথ এর রিফর্ম এ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন স্টেকহোল্ডার অথরিটি আর ফ্যাক্টর হল পলিটিকাল কমিটমেন্ট (গনতান্ত্রিক দেশে)।
ধূসর জলছবি, আপনি যদি আমার মেইল এড্রেস পেয়ে থাকেন একটা মেইল করবেন কি? আমার একটা পরিকল্পনা ঘুরছে কয়দিন ধরে মাথায় এ বিষয়ে। শেয়ার করে দেখতাম সহযাত্রী পাই কিনা।
নীল ফিতা কী জিনিস ভাইয়া?
আসলেই, নীল ফিতা কী? লাল ফিতার কথা শুনেছি, তিথীর নীল তোয়ালের কথাও পড়েছি, কিন্তু নীল ফিতা--সেটা কী?
উনি খুব সম্ভবত মাহী বি চৌধুরীর ' Blue Band Call', যেটার শুরু ফেসবুক থেকে, তার কথা বলতে চাইছেন।
------------------------------------------------------------------
এই জীবনে ভুল না করাই সবচেয়ে বড় ভুল
করাচীনিবাসী বাতিলদা মস্কোপাদ আহসান, যিনি গ্যালো জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজশাহী-৬ আসন থেকে না-ভোটের কাছেও বিপুল ভোটে পরাজিত হয়ে পাকিস্তান থেকে ফাণ্ডিং যোগাড় করে পরিশোধিত জামানত বিসর্জন দিয়ে করাচীর কোচিং সেন্টারে কিছু করে খাওয়ার পাশাপাশি ইউটিউবে অসহনীয় হাস্যকর সব বক্তিমে মেরে কিছু বিকল পোঁদহারাদের একসাথে জড়ো করেছেন, সেই ব্লু ব্যান্ড কলে তো প্রথম দিন থেকেই পানি নাই। এদের পুটকিতে স্টেথো চেপে ধরে "অনলাইন অ্যাকটিভিজমের" পালস মাপতে গেলে তো বিপদ।
তাহলে কি উদাহরন হিসেবে বাংলা ব্লগ দিবস কে নিব? দুপক্ষের তরফেই?
স্বাচিপ আর ড্যাবের মতো? হ্যাঁ, নিতে পারেন।
সেখানেও তো খরা।
তো?
আরো সময় লাগবে
হ্যাঁ। তখন প্রচুর স্মার্ট স্মার্ট লোক এসে স্মার্ট স্মার্ট কথা বলবে, এই আশায় দিন গুণছি।
স্মার্ট লোকে তো এখনি ভরতি। ক্ষেতরাও আশা শুরু করবে সে অপেক্ষায় আছি।
আমি আপনার মেইল অ্যাড্রেস কিভাবে পাব? এড্রেস জানান।
@ধূসর জলছবি: একটা জিনিস জানতে চাচ্ছি, এমন কোন বেসরকারি মেডিকেল কলেজ কি আছে যারা ঠিক মত চিকিৎসা শিক্ষা দেয়।
আমি জানি একটা বেসরকারি মেডিকেল কলেজে ডিএমসি-র শিক্ষকরা ক্লাস নেন। উনারা কি ঠিক মতন শিক্ষা দেন?
আর বেসরকারি থেকে পাস করা কারও কি দক্ষ ডাক্তার হওয়া সম্ভব?
একটু কষ্ট করে জানাবেন।
সাই দ , আসলে এটা আমি বলতে গেলে ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার আলোকে বলতে হবে, সেটা সম্পূর্ণ চিত্র না। আমি হলি ফ্যামিলি মেডিকেল কলেজ এবং বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ থেকে পাস করা আমার কয়েকজন বন্ধু এবং কলিগ কে চিনি যারা ভাল জানে এবং পারে। কিন্তু ঢাকাতে বেসরকারি মেডিকেল ২৬ টি । এদের অনেক টাতেই ঠিকমতো শিক্ষা দান হয় না। সেটা নিয়ে লিখতে গেলে আগে আমাকে ভালও করে জানতে হবে।
বেসরকারি মেডিকেল এ শুধু যে স্যার রা শিক্ষা দেয় না ব্যপারটা তা না। ঝামেলা আরও আছে । সবচেয়ে বড় সমস্যা অবকাঠামো । ওখানে ছাত্ররা রোগী দেখার সুযোগ পায় না, আমরা ৩ বছর ক্লিনিকাল পিরিয়ড এ এবং এক বছর ইন্টার্ন পিরিয়ড এ যত হাজার রোগী দেখি ওরা তার ৫০ ভাগের এক ভাগও দেখতে পারে না। এখানেই সমস্যা। মেডিকেল কলেজ খুলতে হলে তার জন্য একটা বড় এবং ভাল হাসপাতাল থাকা দরকার আগে। শুধু বই পড়ে ডাক্তার হওয়া যায় না, রোগী দেখাটা সবচেয়ে জরুরী।
@আপনাকে ধন্যবাদ। আচ্ছা এমন কোন বেসরকারি মেডিকেল কলেজ কি আছে যারা অবকাঠামোগত সুবিধাগুলি দিতে পারে। বা তারা ইন্টার্ন করতে পারেয় ঠিক মত।
আরেকটা কথা বেসরকারি মেডিকেল কলেজের ছাত্ররা কি সরকারি মেডিকেল কলেজে ইন্টার্ন করতে পারে??
বাজিতপুরের জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ আর ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ অনেক সরকারী মেডিকেল কলেজের চাইতেও ভাল। সরকারী মেডিকেল কলেজ বলতে কিন্তু কেবল ঢাকা, সলিমুল্লাহ, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, রংপুর, রাজশাহী, সিলেট বোঝায় না। ফরিদপুর, কক্সবাজার, দিনাজপুর, পাবনাও কিন্তু সরকারীর আওতাতেই পড়ে। এবং খোঁজ নিন, দেখবেন ওগুলোর কোনটিতেই পর্যাপ্ত শিক্ষক নেই।
বিবেক নাড়া দেয়
নতুন মন্তব্য করুন