আমার বাবা প্রচন্ড ইমোশোনাল মানুষ ছিলেন। কোন কারণে তিনি দুঃখ পেলে মুখ দেখলেই বোঝা যেতো। এমনিতে তিনি ছিলেন খুব হাসিখুশি আর উচ্ছ্বল। কিন্তু কোন কারণে উদ্বিগ্ন আর মন খারাপ হলেই মুহূর্তের মধ্যে তাঁর পুরো চেহারা কালসিটে পড়ে যেতো। চোখের কোণ ভেজা হয়ে থাকতো। আর হয়তো আপনি একটু খেয়াল করলেই দেখতেন উনি পাঞ্জাবির পকেট থেকে রুমালটা বের করে চোখ মুছছেন।
আমাদের যুগের আধুনিকতায় এখন আর রুমাল নেই। দখল করেছে টিসু পেপার। এক সোমবার পুরোদিন অফিস করেছি কাঁদতে কাঁদতে।যখনই কেউ আমার ডেস্কের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে, আমি তড়িঘড়ি করে চোখ মুছেছি।চোখের কাজল থেবড়ে গেছে। আর চেহারা হয়েছে দেখার মত। এমন যে কত সোমবার আমার গিয়েছে টিস্যু পেপারের খালি হয়ে যাওয়া বক্সগুলিই বেশ ভালো জানে।
আমার বাবার মেয়ে প্রমাণ করতেই মনে হয়, আমি যখন মন খারাপ করি, দুঃখ পাই, কিংবা থাকি খুব উদ্বিগ্ন, আমার চোখ, মুখে তা ফুটে ওঠে। আর যেহেতু একজন বিশেষ উপসর্গ এখন আমার জীবনে যুক্ত, ঘণ ঘণ উদ্বিগ্নতা আমার নিত্যকার সাথী হয়ে উঠেছে। সেদিন যেমন গিয়েছি টেইলরের কাছে।গিয়ে প্লাস্টিকের মোড়ায় ঝিম মেরে কিছুক্ষণ বসে ছিলাম। বিশ্ববিদ্যালয় জীবন থেকে চেনা বাদশা দর্জি কি বুঝলো জানিনা, সেও বেশি ঘাঁটালো না। অনেক পরে বললো, কফি খাইবেন? আপ্নের কি মন খারাপ নাকি অসুস্থ?
আমার মাঝে মাঝে মনে হয় মানুষ এত অল্প একটা সময় নিয়ে পৃথিবীতে আসে, তবু কেন এত দুঃখ, বিরহ, ঝগড়া-ঝঞ্জা আর ভুল বোঝাবুঝি নিয়ে জীবন পর্যুদস্ত হওয়া। কেন এত অনিশ্চয়তা, দুশ্চিন্তা আর অনিয়ন্ত্রিত অনুঘটকগুলি যা ভালো , যা মঙ্গল আর যা চাই- তাকে দূরে ঠেলে রাখে। কি জানি হয়তো একারণেই সামনের দিকে এগুনোর স্পৃহা কাজ করে আমাদের।
নাকি এগুলো খুব মন ভোলানো কথা, মন মানানো কথা? কি দ্বৈত ভাবনা! আমার মন অবশ্য যখন খারাপ থাকে তখন যেকোন একটা ঘটনা তার শত শত চেহারা নিয়ে আমার সামনে হাজির হয়। না কি এও এক মনোরোগ!
ইদানিং আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে ঘন ঘন দীর্ঘশ্বাস ফেলছি। গাল ভেঙে গেছে, চোখের নিচে কালি, আর ত্বক কেমন পুড়ে গেছে। ভাবছি মাকড়শা ফিরে এসে চিবুক তুলে যখন জানতে চাইবে তার বউকে এত কষ্ট কেন দিয়েছি কি বলবো? বলবো, তোমার কাছে যাবার কিংবা অন্যান্য সফলতার পথ যেভাবে একনাগাড়ে বাধাগ্রস্ত হয়ে চলেছে, এসব অনিশ্চয়তা, দুরত্ব আর অস্থির অসুস্থ সময় একা একা কাটাতে পারছিলাম না। না বলবো না। কথা দিচ্ছি যখন এই স্থানিক দুরত্ব ঘুঁচে যাবে, অনুযোগগুলি ফেলে আসা কষ্টের দিন নিয়ে বুদবুদ হবে না।
-
মাকড়শার বউ
মন্তব্য
মন খারাপের কথামালা। কিন্তু আবেগ মূল চিন্তাটিকে এলেমেলো করে দিলো কি ??
অট: আপনার নিকটা দারুন!! "মাকড়শার বউ"!!
----------------------------------------------------------------------------------------------
"একদিন ভোর হবেই"
লেখার হাত দারুন কিন্তু পড়ে মন খারাপ হয়ে গেল যে।
[আমার চারপাশ]-[ফেবু]-[টিনটিন]
আপনার নিকটা মনে আছে, আগেও বোধহয় সচলে লিখেছিলেন।
ঘণ ঘণ > ঘন ঘন, দুরত্ব > দূরত্ব, উচ্ছ্বল > উচ্ছল : এইটুকু লেখায় এমন টাইপো থাকলে হবে?
লেখা চলুক।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
অনেকদিন পর লিখলেন। ভালো লাগলো।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
লেখাটা আরেকটু গোছানো হলে শুরুর ভাল লাগাটা শেষে এসে রয়ে যেত।
আরো লিখুন। শুভেচ্ছা।
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...
খানিকটা অস্পষ্টতা থাকলেও লেখাটি ভালো লাগল । ভালো থাকবেন ।
সুন্দর লিখা।
তবে নিকটার জবাব নাই। সচলে অতিথিদের গাইডে লিখা আছে যে শক্ত লেখনি ও চমকপ্রদ বিষয়বস্তু থাকলে সচলত্ব পেতে অতিথিদের সুবিধে হয়। আমি মডু হলে চমকপ্রদ নিকের জন্যই আপনাকে সচলত্ব দিয়ে দিতাম
..................................................................
#Banshibir.
কি সব হাবিজাবি লেখেছি। হিহি। তবু সবাইকে ধন্যবাদ পড়বার জন্য।
তিথী, বানান ভুল থাকা কিন্তু মাঝে মাঝে মন্দ নয়। এই বসন্তে যে চিঠিটা লিখেছি তাতে নাকি বানান ভুল ছিলো দশ- বারোটা। একটানে লেখা চিঠি, ভুল বানান পরে পরখ করে দেখতে ইচ্ছে হয়নি। যদিও ঠিক, কমিউনিটি ব্লগে ভুল বানানে যত্ন নেয়া উচিত। কিন্তু যেহেতু খেয়ালি মনে ভরে করে যখন মাটির দু ফিট উপরে হাওয়ায় ভাসি আর ভাবি , বেখেয়াল, ভুল আর অযোক্তিকতাটাই শুদ্ধতম ভাবতে ভালো লাগে । তবু বলি নির্ঘাৎ বানানশুদ্ধি টাইপ কোন সফটওয়ার আছে। জানাশোনা থাকলে না হয় পরের বার ব্লগে সেঁটে দেয়ার আগে বানানশুদ্ধি ঘুরে এলাম!
সত্যপীর, এজন্যই আপনি মডু নন।
নতুন মন্তব্য করুন