- বাবা, কে বেশী পাওয়ারফুল ছিল, রামচন্দ্র না ফেলুদা?
- তোর কি মনে হয়?
- আমার তো মনে হ্য় ফেলুদা। পিস্তল নিয়ে মগনলালের সঙ্গে লড়াই করছে। ঠাঁঠাঁ ক'রে গুলি ছুড়ছে। কিন্তু বাবা, হুতুম্বার সঙ্গে কিন্তু কেউ পারবে না। তাইনা?
- তুইও না?
- পাগল? তুমি না বলো, হুতুম্বার চোখ থেকে লাল রে বের হ্য়। তারপর বাচ্চারা জেদ করলেই ব্যাস। ওমনি ঐ রে চুল ভুরু সব পুড়িয়ে দেবে। আর যে বাচ্চারা হোমটাস্ক কোরবে না, হুতুম্বা তাদের চোখের দিকে তাকাবে, ব্যাস ওমনি জয় বাংলা। চোখ লাল। বিকেলে বন্ধুরা চোখের সামনে দিয়ে মাঠে খেলতে চলে যাবে। ব্যাস, তোমার সানগ্লাস পরে বসে থাকো বারান্দায়।
-আচ্ছা বাবা, হুতুম্বা কোথায় থাকে? আর আমাদের বাড়ীতে য্যামন তুমি, আমি, মা, ঠাকুন আছি, হুতুম্বার বাড়ীতে আর কেকে থাকে? ওদেরোকি ছোট হুতুম্বা আছে?
- থাকবে না? হুতুম্বা বুড়ো হয়ে গেলে তখন কে দেখবে ওকে?
- দেখবে টা কি? হ্যা? চোখ তো আছে ওদের, তাহলে হুতুম্বারা কেন দেখবেনা বুড়ো হুতুম্বাদের, হ্যা?
হঠাৎ ফোনে কিচিরমিচির। বুড়ো হুতুম্বাকে 'দ্যাখা-না দ্যাখা'র ব্যাপারটা নিয়ে বেশীদূর এগোতে পারলাম না। বদলে কলিগের সংগে মেতে উঠলাম সেই গতানুগতিক আফিসিক কুট-কাচালি নিয়ে। এ বিষয়টা নি যে কেউ ঘন্টা কাবার করে দিতে পারে, বিশেষত যদি আউটগোইং ফ্রি থাকে।
দেখি ছেলে ওর খেলনা বন্দুকটা নিয়ে কাল্পনিক শত্রুর সঙ্গে লড়ে যাচ্ছে। বিপক্ষে যে হুতুম্বা, ওটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
খুব ছেলেবেলায়, যখনকার সব কথা মনে থাকে না, আবার কোনো কোনো কথা, স্মৃতি পৃথিবীর কোনো ইরেজার মুছতে পারে না, মনে আছে, বাবা হুতুম্বার গল্প বলতো। অদ্ভুত সব গল্প। বাড়ীর পেছনের বাঁশবাগান হুতুম্বাদের আঁতুরঘর। চোখ গরতে ঢোকা। লাল লাল। কথা না শুনলে সোজা …
আমার গল্প একই। পুরোনো কাঠামোর ওপর কখোনো নতুন কাদামাটি।
সেদিন অফিস থেকে বেরোবো, দেখি ওর ফোন। ছেলের গলা।
'মনে আছে? প্রমিস কোরেছিলে? আরে কুরকুরে। দু প্যাকেট। না আনলে কিন্তু হুতুম্বা… '
বাবার কথা মনে পড়লো।
কে জানে, হ্য়তো এই গাঁজাখুড়ি গল্পগুলো আমার ছেলেও জমা করে রাখছে ওর সিন্দুকে!
**************
#দীপালোক
মন্তব্য
অনুগল্পটিতে প্যারা নেই, বাচ্চাটির সংলাপ ক্ষেত্রবিশেষে বিশ্বাসযোগ্য হয়নি (যেমন, ব্যাস ওমনি জয় বাংলা); তবু গল্পটির বার্তা ধরতে পারা গেছে; মানবজীবনের চিরন্তনতার ইংগিত রয়েছে; রয়েছে অভিনবত্বের ছাপ। দীপালোক আরও দীপ্তিময় গল্প নিয়ে আসবেন, সেই প্রত্যাশা থাকল!
ধন্যবাদ …
ছোটছোট ব্যপারগুলো কেউ ধরিয়ে দিলে বুকে বল পাই। ও, আরেকটা কথা। আমাদের এখানে 'চোখ ওঠা'কে (কনজাংটিভাইটিস) জয় বাংলা বলে।
আমি এখানে আর একটা তথ্য যোগ করতে চাই।
১৯৭১ সালে "চোখ ওঠা" রোগটির প্রকোপ অনেক বেশি হয়েছিল, পাক হানাদারেরাও এতে আক্রান্ত হয়েছিল। ওরা তো এর সাথে আগে পরিচিত ছিল না, তাই বেশি বিপদে পড়েছিল মুক্তিযোদ্ধারা একে নাম দিয়েছিল "জয় বাংলা"
এটা তো জানতাম না
ভাল লাগল।
কনজাংটিভাইটিসের ব্যাপারটা প্রথম শুনলাম, মনগড়া নাতো!
আমি এর বিষয়ে পড়েছিলাম হুমায়ুন আহমেদের বইতে। এই মুহুর্তে উপন্যাসের নামটি মনে করতে পারছিনা তবে কথা দিচ্ছি আমার ইন্টার্নশিপ এর ডিফেন্স এর পরে আপনাকে পৃষ্ঠা নং সহ এইখানে তথ্য সূত্র দিয়ে দিবো। মনগড়া কথা লিখলে সচলে আসতাম না, অন্য কোথাও যেতাম।
আমি ইত্তেফাকে একটা লিঙ্ক পেলাম। ঘটনা ২৪ দ্রষ্টব্য। হুমায়ুনের কোন বইয়ে আমিও পড়েছি স্মরণ হচ্ছে।
..................................................................
#Banshibir.
ধন্যবাদ। আজ সুপারভাইজারের ঝাড়ি হজম করেছি, মন খারাপ। আপনার বার্তা আর লিঙ্ক পেয়ে মন ভালো হয়ে গেলো। "ছোট ছোট মেঘেই সূর্যেরা লুকোচুরি খেলে"
আপনাকে কোনভাবে যদি আহত করে থাকি তার জন্য ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। পোস্টের লেখকের কাছ থেকে এই কনজাংটিভাইটিসের ব্যাপারটা শুনে বিস্ময় প্রকাশ করেছি মাত্র। অন্য কোন অভিপ্রায় আমার ছিল না। হুমায়ুন আহমেদ লিখে থাকবেন, আমি পড়িনি বা পড়লেও ভুলে গেছি। যা হোক একটু গুগলায়ে অনেক কিছু জানতে পারলাম, ঘটনা সত্যি। সবার সাথে শেয়ার করি।
সচল মেহবুবা জুবায়েরের ব্লগ থেকে
গুগল থেকে
উইকির আলোচনা থেকে
আর সত্যপীরের লিঙ্ক তো রইল। এখন আপনার মন ভাল জেনে ভাল লাগছে। ভাল থাকবেন। আপনার জন্য অনেক শুভকামনা।
নারে ভাই, আহত হইনি। দেখলেন না হাসি দিলাম। যেটা মাথায় আসে, সেটাই লিখি; দ্বিতীয় চিন্তা না করে।
ধন্যবাদ। আপনার জন্যও শুভ কামনা রইলো।
খুব ভাল লাগল ।
আরও লিখুন ।
ভাল থাকবেন ।
শুভেচ্ছা ।
অনেক ধন্যবাদ।
বাহ!
আরো লিখুন। সচলে স্বাগতম।
............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্ চিনে।
ধন্যবাদ...
ভালো লাগলো।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
প্রথম লাইনটা টেনে-হিঁচড়ে গল্পের ভেতর এনে ফেলল, বাকি যা করার হুতুম্বা করেছে!!
লেখা ভাল লাগল। আরো লিখুন। শুভেচ্ছা।
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...
আরো লিখুন।
লেখাটি ভাল লেগেছে। ছোটদের মজার জগৎ। আমার নিজের তরোয়ালটার কথা মনে পরলো।
লেখা ভাল লাগল। আরো লিখুন।
[আমার চারপাশ]-[ফেবু]-[টিনটিন]
আরো লিখুন--
facebook
আরো লিখুন।
ক'দিন পর সচলে এলাম। মন্তব্যের ঝুলি টইটুম্বুর দেখে বেশ লাগছে। ধন্যবাদ সবাইকে।
আর 'জয় বাংলা' নিয়ে তো দেখছি ঠেক জমজমাট।
নতুন মন্তব্য করুন