গতমাসের শেষের দিকে একটি নোটিশ দেখে আনন্দে চমকে উঠলাম, 'ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৬ তম সমাবর্তন আগামী ৩১ মার্চ' । এদিকে মাস্টার্স পরীক্ষার তারিখ পরে গেছে। রুটিনও দিয়ে দিয়েছে। জানি সমাবর্তনে অংশ নিতে এখানে ওখানে দৌড়াতে হবে। ব্যাংক থেকে শুরু করে রেজিস্টার ভবনেও পড়বে লম্বা লাইন। পরীক্ষার মধ্যে ওই কয়েকটি ঘন্টাও অনেক মূল্যবান (যেহেতু সাধারনত আমি পরীক্ষা ঘাড়ে এসে পরলেই পড়া শুরু করি)। তবুও মনের কোথায় জানি সপ্নের মতো কনভোকেশনের বিশাল গাউন, টুপি আর সার্টিফিকেট হাতে তোলা হাজার হাজার ছাত্রদের সাথে নিজের একটি ছবি বারবার ভেসে উঠতে লাগলো। তাই পরীক্ষার মধ্যে সুযোগ বুঝে তবুও কনভোকেশনের রেজিস্ট্রেশনের কাজটুকু সমাপ্ত করলাম। এবছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রায় ১৬,৫৫০ জন গ্রাজুয়েট, ৭৫ জন এম ফিল, ৮৯ জন পি এইচ ডি কে সনদ দেয়া হবে। আর প্রায় ৬১ জন ছাত্র ছাত্রীকে ভালো ফলাফল করার জন্য স্বর্নপদক দেয়া হবে।
তারপর এলো সেইদিন, টি.এস.সি থেকে গাউন আর টুপি নিতে হবে। সাধারনত ছুটি থাকলে আমার ঘুমটা একটু বেশিই হয়। কিন্তু কনভোকেশনের গাউন আনার আনন্দে সেইদিন একটু আগেই নাস্তা সেরে দৌড় দিলাম ক্যাম্পাসে। দিনটি ছিল ২৮ মার্চ, গত বুধবার। গাউন নেবার জন্য ডিপার্টমেন্ট অনুযায়ী আলাদা বুথের ব্যবস্থা থাকলেও অত্যন্ত অবাক হয়ে লক্ষ্য করলাম গিফট এবং কনভোকেশনের টুপি নেবার জন্য টি এস সির ইনডোর গেমস রুমে মাত্র অল্প কয়েকটি বুথের ব্যবস্থা করা হয়েছে !
জানিনা কোন সে অতিজ্ঞানী ব্যক্তি (!) যিনি আশা করেছিলেন ১৬,৫৫০ জন্য ব্যক্তিকে ইনডোর গেমস রুমের মাত্র গোটাকয়েক বুথ থেকে মাত্র তিনদিনে (এর মধ্যে একদিন রিহার্সেল) কনভোকেশনের বাকি জিনিষগুলি গছিয়ে দিতে পারবেন!! অতিজ্ঞানীর অজ্ঞানতার ফলসরূপ একটি অনাকাঙ্খিত ঘটনার সৃষ্টি হয়, প্রথম আলো রিপোর্ট করে পরের দিন। প্রথম আলোর রিপোর্টের নিচে অনেকেই কমেন্ট করেছেন। কিন্তু খুব খারাপ লাগলো যখন দেখলাম কিছু অজ্ঞ ব্যক্তি সম্পূর্ন ঘটনা না জেনেই নিজের জ্ঞান জাহির করার জন্য মন্তব্য করে যাচ্ছেন। এবং এই কমেন্টগুলির অনেকগুলোই আসলে দেয়া হয়েছে ঢাবির শিক্ষার্থীদের খানিকটা কিছুটা হেয় করার উদ্দেশ্য থেকে।
আচ্ছা, যারা প্রথম আলোর রিপোর্টটির নিচে কমেন্ট করে গেছেন, তারা কি নিশ্চিত জানেন আসলেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাধ্যমেই বিশৃংখলাটি ঘটেছে? আপনারা কি ছিলেন ওখানে?
অতিজ্ঞানী যারা নিচে কমেন্ট করেছেন - "মনে হয় এই শিক্ষা দেয়া হয়েছে" অথবা "To tell the truth, there is hardly any education delivered in Dhaka University. Wide spread copying, no classroom teaching, no ethical punishment, gang violence, even petty theft are the day to day affairs of Dhaka University. Its a shame." তারা আসলেই সারা জীবনে কখনও কি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছায়ায় এসেছেন কি?
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমার্বতনে অংশগ্রহন করে থাকে চার ধরনের শিক্ষার্থীঃ
১. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদের শিক্ষার্থীরা।
২.ঢাবির অন্তর্গত সরকারী মেডিকেল কলেজ গুলোর শিক্ষার্থীরা।
৩.ঢাবির অন্তর্গত বেসরকারী মেডিকেল কলেজ গুলোর শিক্ষার্থীরা।
৪.ঢাবির অন্তর্গত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গুলোর শিক্ষার্থীরা।
অন্যকারও প্রতি ইঙ্গিত না করে, তর্কের খাতিরে ধরে নিলাম আসলেই এটা শুধুই ঢাবির শিক্ষার্থীদের দ্বারাই হয়েছে, ধরেই নিচ্ছি তারা অতিশয় বখাটে, ধ্বংস ছাড়া কিচ্ছু বুঝেনা! তবুও যারা কমেন্ট করে গেছেন আপনাদেরকেই বলছি- আপনারা দেখেছেন কি, নাম না জানা দরিদ্র ছাত্রের 'মা' যখন অর্থের অভাবে অপারেশনের টেবিলে শুঁয়ে অর্থলিপ্সু মেডিকেল ব্যবস্থাপনার জিম্মি হয়ে অবহেলিত হয়ে পরে থাকেন, তখন ঠিক কিভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরাই কার্জন হল আর কলাভবনের গেটে দাঁড়িয়ে থেকে সেই মায়ের জন্য অর্থ সংগ্রহ করে দেয়?
আপনারা জানেন কি একটি দরিদ্র শিশুর মা যখন তার শিশুটির জন্য রক্তের জন্য উদ্ভ্রান্ত্রের মতন এদিক ওদিক ছুটে বেড়ায় ঠিক তখনই ঢাবি'র 'বাঁধন' ছুটে গিয়ে দাড়ায় ওই অসুস্থ শিশুটির পাশে, তার মায়ের পাশে। হলের হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে থেকে তারা ঠিকই ওই শিশুটির জন্য রক্ত যোগাড় করে নিয়ে আসে।
অনার্স জীবনের গত চারটি বছর আমি এরকম অসংখ্য ইতিবাচক ঘটনার মুখোমুখি হয়েছি। বারবার এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাই এগিয়ে এসেছেন ওই দরিদ্র শিশুটির জীবন বাঁচাতে, দরিদ্র 'মা' টির অপারেশনের খরচ যোগাতে।
কই এসব খবর কেন কখনই পত্রিকায় আসেনা? কারন এখবরে কোন রগরগে রাজনীতি নেই, কোন ধ্বংস নেই, উত্তেজনা নেই। উত্তেজনা না থাকলে মানুষ কেন পেপারটি কিনবে? উত্তেজনা না থাকলে মানুষ কেন কমেন্ট করবে? ইতিবাচক এই ঘটনাগুলি মিডিয়ায় যে আসে না, নেতিবাচক খবরগুলিই যে খবরের কাগজের প্রথম পাতাটি দখল করে নেয়, তার দায় বহন করতে হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীর। শুধু অল্প কয়েকজনের ছাত্ররূপী ব্যক্তির জন্যে সম্পূর্ন বিশ্ববিদ্যালয়কে দায়ী করা কি আসলেই সঠিক?
পড়াশুনোর কথা বলছেন? একবার দেখে আসুন, উচ্চশিক্ষার্থে বহির্বিশ্বে যতজন শিক্ষার্থী রয়েছে তাদের মধ্যেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের খুঁজে পাবেন। আপনি যখন - "... there is hardly any education delivered in Dhaka University..." এইধরনের মন্তব্য করছেন , তখন আপনি নিজে আসলে কতটুকু জানেন, সে প্রশ্ন চলে আসে।
আপনারা আসলে জানেন না, আপনারা আসলে জানবেনও না। ঢাবির প্রতি, ঢাবির শিক্ষার্থীদের আবেগ আপনাদের বোঝার ক্ষমতা নেই। যদিও বা শুধুই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা ঘটনাটি ঘটিয়ে থাকে, যদিও বা রাজনীতির আঁচলে লুকিয়ে থাকা কারও মাধ্যমেই ঘটে থাকে ঘটনাটি তাদের সংখ্যা আসলে অতি নগন্য। সম্পূর্ন বিষয় না জেনে যারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রাচীনকালের অসভ্য লীলাভূমি হিসেবে উল্লেখ করতে চাইছেন তাদের আমি বলবো একটু চোখ মেলে দেখুন।
আর কাল ৩১ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তনে যারা অংশগ্রহন করছেন তাদের সবার প্রতি শুভকামনা রইল (আমি সহ) ।
দায়ীন (frdayeen)
মন্তব্য
মনের কথা বলসিস। তারপরও যে কারনে ঐ ঘটনার শুরু হইসিলো সেটাও লেখা যেতো। ৪০ মিনিটের মতো মনে হয় ভাব মেরে বিতোরন বন্ধ রাখা হইসিল। আর এত এত ছাত্র ছাত্রী দাঁড়িয়ে। তারপর একটা মাত্র ব্যাংকে জীবন বাজি রেখে কিভাবে টাকা জমা দিসি সেটা তো আর কেউ জানেনা। অনেকে ৫-৭ ঘন্টা ও অপেক্ষা করসে । আবার গাউন আর গিফট নিতে টিএসসি তে ঐ অবস্থা! আর প্রথম কালো আর অন্যান্য প্রসঙ্গে নাহয় আর কিছু না এ বললাম !
হুম সেটাই। ক্যাম্পাসে এতোগুলি ব্যাংকের শাখা রয়েছে! না জানি কেন তারা টি এস সি'র জনতা ব্যাংক ছাড়া কিছুই ভাবতে পারেনা! শেষদিন তাদের মাথায় ঢুকছিল যে সব শাখায় টাকা জমা নেয়া উচিত। এই সিদ্ধান্ত আগে নিলে আর কোনই ঝামেলা হতোনা! একই কথা টুপি আর গিফটের ক্ষেত্রেও খাটে।
লেখাটা পছন্দ হল। আমরা এদিক ওদিক না ভেবেই প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বসি, এতে যে সাথে গণহারে আরো অনেককেই নেতিবাচক দৃষ্টিতে দেখা হয়ে যাচ্ছে সেটা দেখার সময় কোথায় আমাদের!
কনভোকেশন করা হচ্ছে না এবার, যাঁরা করতে পারছেন তাঁদের জন্য শুভেচ্ছা আর অভিনন্দন-
আর "বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে শেষ সুতোটা ছিঁড়ে যাচ্ছে কনভোকেশন দিয়েই'- এ কথাটা যাঁরা ভাবছেন তাঁদের জন্য সমবেদনা।
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...
আপনার 'পথিকের চোখে' লেখাটাও দেখলাম। কেন জানি মনটা খারাপ হয়ে গেলো!
আমাদের কষ্ট কেউ বুঝবে না, শুধু গালিই দিয়ে যাবে।
ব্যাপার নাহ! কতজনে কত কি বলে! সবার কথা শুনলে কি আর চলে?
তবে অতিরিক্ত গুজবের অবশ্যই প্রতিবাদ করা উচিত। সেজন্যই লিখলাম।
সমাবর্তনের গাউন ও কিটস বিতরণ নিয়ে আজকে চরম বিশৃঙ্খলা হয়েছে টিএসসিতে!!! মাননীয় উপাচার্যসহ আয়োজকরা দুষলেন ছাত্র-ছাত্রীদের। তারা নাকি সমাবর্তনের জিনিস হরিলুট করেছে!!! আমি বলি, এ কোন ব্যবস্থাপনারে ভাই???? প্রায় ১৭ হাজার ছাত্র-ছাত্রীর গাউন-কিটস একটা জায়গা থেকে মাত্র ২/৩ দিনের মধ্যে কী আদৌ শৃঙ্খল ভাবে দেয়া সম্ভব??? এই সহজ উপলব্ধিটা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের মাথায় আসেনি??? বিভাগ/অধিভুক্...ত প্রতিষ্ঠান অনুযায়ী ভাগ করে দিলে তো ব্যপারটা অনেক সহজ হতো।
উন্নয়ন আর সভ্যতার অগ্রগতির অন্যতম একটি নির্দেশক ব্যবস্থাপনা দক্ষতা। যে দেশ/জাতি যত শৃঙ্খলা ও দক্ষতার সাথে ইভেন্ট আয়োজন করতে পারে তারাই বস!!! বাকীরা ছাগলের তিন নাম্বার বাচ্চা! অন্যের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হয়। বাংলাদেশের সরকারি ব্যবস্থাপনা ছাগলের ১৪ নাম্বার বাচ্চা!!!
আর আসল ঘটনা না জেনে যারা মিডিয়া নির্ভর হয়ে যারা ফালা ফালি করে তাঁদের সম্পর্কে কিছু বলতে চাচ্ছি না (প্রয়োজনও বোধ করছি না)
সহমত। বিভাগ আর অধিভুক্ত প্রতিষ্ঠান অনুযায়ী ভাগ করে দিলে কখনই সমস্যা হতো না। গাউন নিতে কিন্তু বেশি সময় লাগেনি। টুপি আর গিফটের লাইনে গিয়ে জ্যাম বেধে গেছিল।
আমলাতান্ত্রিক ব্যবস্থা ছাড়া একটি জিনিষ যে সহজভাবে করা যায় এদেরকে সেটা কে বোঝাবে? পরীক্ষার ফর্ম পূরন থেকে শুরু করে কোন একটা কাজে ডিপার্টমেন্ট, হল, রেজিস্টার, চৌদ্দ জায়গায় দৌড়ানো লাগে! আসলেই অদ্ভুত।
এ ব্যপারটা বুঝলাম না, আমাদের সমাবর্তনে এমন কিছু হয়নি। কিন্তু আজ আমার ভাই গিয়ে সমাবর্তনের কিটস কিছুই পায় নি। এখানে সাধারন ছাত্রছাত্রীদের কি করার থাকতে পারে? যারা ব্যবস্থাপনার দায়িত্তে তারা কি করছে বসে বসে?
পত্রিকার কথা কিছু বলতে চাই না। আমাদের মিডিয়া যা ইচ্ছে তাই লিখে দেয়াটাকে স্বাধীনতা মনে করে। আর কিছু মানুষ সেসব পড়ে না বুঝেই মন্তব্য করতে থাকে।
আপনার ছোট ভাইয়ের কথাটা শুনে খারাপ লাগলো।
প্রথম কথা হচ্ছে গুটিকয়েক লোকের অপকর্মের উপর ভিত্তি করে ঢালাও মন্তব্য করা ঠিক না। আমার কাছে মনে হয় ঢাকা বিশবিদ্যালয়ের অনুষদের শিক্ষার্থীদের নিয়ে আলাদা সমাবর্তন করা উচিত।
১০০% সহমত। ঢাবির অনুষদ্গুলির আলাদা সমাবর্তন হওয়া উচিত।
যারা প্রথম আলোর ঐ লেখায় মন্তব্য করেছে তারা বোধকরি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মানে জানে না বা বোঝে না। পেপারে পড়েচিলাম, কিন্তু ই-পেপারের মন্তব্যগুলো এখন পড়লাম। খগুব মেজাজ খারাপ লাগছে যারা মন্তব্য করেছে তাদের উপর।
আপনাদের সমাবর্তন আনন্দের হোক।
আপনাকে
ঠিক কি কারনে এই ঘটনা ঘটেছে এটা আসলে অনেকেই জানে না, আর কেউ কেন জানি জানাতেও চায় না। আপনিও এড়িয়ে গেছেন। তবে ঢাকা ইউনিভার্সিটির মত জায়গায় এই রকম ঘটনা ঘটলে লোকজন তো খেপবেই। কিছু মনে করবেন না, সাধারন ছাত্রছাত্রীরা যে সব ভাল কাজ করতেছে, তার সবই কিন্তু আপনাদের নিম্নমানের ছাত্র রাজনীতিবিদ দের জন্য চাপা পড়ে যাচ্ছে। বাইরের লোকজনের সমস্যা সমাধানের আগে নিজেদের ছাত্রদের সমস্যা সমাধান করুন। কেন আমার ছোট ভাই দুই বছর পরে এখনও হলে সীট পায় না, এই বেপারটা আমার মাথায় ঢুকেই না। যারা এই ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হয়েছে তাদের স্বাভাবিকভাবেই ঢাকা ইউনিভার্সিটির প্রতি বাজে ধারনা গড়ে উঠবে। সমালোচনা সহজভাবে নিতে শিখুন এবং ভাবুন কেন লোকজন সমালোচনা করছে।
"সমালোচনা সহজভাবে নিতে শিখুন - এইটা কোথায় থেকে শেখা যায় একটু বলবেন কি?
লেখার কোথাও আমার কাছে মনে হয়নি যে লেখক বাইরের সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করেছেন।
কিছু মনে না করলে একটা কথা বলি, আপনি কোন বছর ঢাবিতে ভর্তি পরীক্ষা দিয়েছিলেন?
আগে নিজে নিজের সমালোচনা করতে শিখুন, তাহলেই শিখতে পারবেন সমালোচনা কিভাবে সহজভাবে নেয়া যায়
আপনার শেষ কথাটা অনেকটা সামু ব্লগের কমেন্ট এর মত মনে হইল। বুঝিনা ঢাবি বা বুয়েট কে নিয়া কিছু বললেই কেন লোকজন খেপে যায়। ঢাবির পলিটিক্স নোংরা পলিটিক্স- এটা সবাই জানে। কোথায় আপনারা বেপারটা জেনে এটা সমাধান করার চেস্টা করবেন, তা না করে কেউ এটা নিয়া কিছু বললেই খেপে জান। মনে হয় খেপে গেলে লোকজন আর এটা নিয়া কথা বলবে না। ঢাবিতে প্রথম বর্ষের কেউ হল এ সিট পায় না, আর কেউ যদি পায়ও তার জায়গা হয় কমন রুম এ কিংবা ২-৩ জনের এক বেড এ। তারপরও যারা এইভাবে কষ্ট করে থাকে তাদেরকে প্রতি রাতেই মিছিলে যোগ দিতে হয়, প্রতি রাতেই তাদের হাযিরা দিতে হয় বড় ভাইদের কাছে পরের দিনের কার্যক্রম জানার জন্য। আরেকটা বেপার, পাব্লিক ইউনিভার্সিটি তে আপনারা কিন্তু পড়তেছেন জনগনের টেকায়। এইজন্য জনগনের জন্য ভাল কিছু করাটা আপনাদের এক ধরনের দায়িত্ব। দায়িত্বশীলরা দায়িত্ব পালন করবে এটাই স্বাভাবিক, এইজন্য এটাকে কেউ খুব বড় করে দেখে না, কিন্তু দায়িত্বশীলরা দায়িত্ব ভংগ করলে লোকজন এটা নিয়া কথা বলবেই। কেন লোকজনকে অযথা সু্যোগ দেন বলেন ত ?
প্রথম কমেন্টটা দেখতে পারেন এ ব্যাপারে।
ছাত্র রাজনীতির দোষ কাদের উপর আসে বলেন তো ? আপনার ভাই সিট পায়না। আমার অনেক বন্ধু মেস থাকে। মাস্টার্স এ পরে। কিন্তু এই কথা এখানে কেন? দোষ দিলে সেইসব শিক্ষক কে দেন যারা রাজনীতি করেন এবং বাজে রাজনীতি সাপোর্ট দেন। প্রথম আলোতে ঐ নিউজ এ কমেন্ট করে আসেন যে স্যার রা তো শিক্ষার কথা বললেন কিন্তু সাধারন ছাত্রদের সুবিধা কি উনারা ও দেখছেন? কারন সিট পাওয়ার দোষ টা কি হলের প্রোভস্ট এর ঘাড়েও পরে না? শিক্ষকরা চাইলে অনেক কিছুই করতে পারেন। গুরু ই যদি এভাবে রাজনীতি করেন তাহলে ছাত্র ত করবেই!
সিট না পাওয়ার এই ইতিহাস অনেক পুরোনো। এতকিছুর পর ও ঢাকা ইউনিভার্সিটির যেসব ছাত্র ছাত্রীদের ইচ্ছা আছে তারা দেশে বিদেশে অনেক ভাল করছে । সেই পুরনো সেসন জট ও নেই । ঢাকা ইউনিভার্সিটি আরো এগিয়ে যাক...
ঠিক আছে, সিট না পাওয়াটা ঢাবির ছাত্রদের জন্য নিয়ম হয়ে গেছে, এটা নিয়া হয়ত আর কথা বলা ঠিক হবে না। কিন্তু অবাক লাগে এই ভেবে আপনারা কেমনে বেপারটা মেনে নিছেন?সাধারন ছাত্ররা এক হলে অনেক কিছুই করা যায়, কিন্তু যদি মনে করেন সিট না পাওয়াটাই স্বাভাবিক তাইলে আর কি
এত কিছুর পরও যারা ঢাবিতে পড়ে দেশের জন্য সম্মান বয়ে আনছে তাদের জন্য, শুধু তাদের জন্য শুভকামনা
"যারা এই ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হয়েছে তাদের স্বাভাবিকভাবেই ঢাকা ইউনিভার্সিটির প্রতি বাজে ধারনা গড়ে উঠবে"- লক্ষ্য করুন, কেন আমার ভাই এর সিট না পাওয়ার বেপারটা এখানে আসছে। যাদের ঢাবির প্রতি বাজে ধারনা, তারা তো ঢাবি নিয়া নেগেটিভ কমেন্ট করবেই।
গঠনমূলক সমালোচনা অবশ্যই স্বাগতম। কিন্তু অজ্ঞ ব্যক্তিদের বিজ্ঞ কমেন্ট নয়। যারা প্রথম আলোর খবরের নিচে মন্তব্য করেছে তাদেরটা কি আপনার কাছে গঠনমূলক সমালোচনা বলে মনে হচ্ছে? অন্তত আমার মনে হচ্ছে না। প্রথম আলো ছেপেছে তাদের কাটটি বাড়ানোর জন্য, আর উনারা কমেন্ট করেছে নিজেদের মাতব্বরি দেখানোর জন্য। এদের মন্তব্যকে 'সমালোচনা' শব্দটির সাথে তুলনা করার মানে হলো অপাত্রে অধিকতর সম্মান প্রদান, আর কিছুই নয়।
নতুন মন্তব্য করুন