চুয়েট বন্ধ প্রায় একমাস হতে চলল। গত একমাসে ধরে ভার্সিটিতে কোন উপাচার্য নেই, ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য নেই, উপ-উপাচার্যও নেই – উপাচার্য নেই তাই ক্লাসও নেই। ক্লাস নেই, তাই ছাত্ররাও নেই। আমরা সবাই রাজা আমাদের এই ‘নেই’ এর রাজত্বে।
পত্র-পত্রিকায় পড়লাম শিক্ষকরাও নাকি কিছুদিন আগে কর্মবিরতি, অবস্থান ধর্মঘট পালন করেছেন। তবে আমাদের নেতৃস্থানীয় বড়ভাই এবং তাদের অনুগতদের সিদ্ধান্তে অটো চলছে সেই মার্চের চার তারিখ থেকেই। জানিনা অটো, কর্মবিরতি, মানববন্ধন এসবের ফলে আদৌ কর্তৃপক্ষের টনক নড়ছে কিনা।
একজন ইন্জিনিয়ারের পেছনে চারবছরে সরকারের প্রায় লক্ষাধিক টাকা খরচ হয়। সেই টাকা আসে এদেশের মানুষের কষ্টার্জিত অর্থে। আর আমরা সেই টাকায় ফূর্তি করি, কথায় কথায় ক্লাস বর্জন, ধর্মঘট এসবের ডাক দিই। কিন্তু এর ফলে শিক্ষাজীবনের যে ক্ষতিটা হয় সেটার কথা একবারও চিন্তা করি না।
এই বন্ধে বাসায় বসে বসে বোর হওয়া ছাড়া আর কিছু করা হচ্ছে না। হলের বন্ধুরা যে যার বাসায় চলে গেছে। যারা আছে তারাও টিউশনির বাঁধনে আটকা পড়ে আছে। ক্যাম্পাস যেন ধু ধু মরুভূমি। যেদিকে তাকাই ইট কাঠের লোহার ভবনগুলো যেন ফ্যাল ফ্যাল করে চেয়ে থাকে। কোথায় গেল ক্যাম্পাসের সেই উচ্ছ্ল দিনগুলো। আড্ডা, গান, কেএফসিতে মামার প্যাটিস আর চায়ের স্বাদ প্রায় ভুলতে বসেছি। এশিয়া কাপ দেখলাম বাসায় বসে বসে , বাংলাদেশের একেকটা জয় দেখি আর নিজেকে কল্পনা করি ক্যাম্পাসের বিজয়মিছিলের সামনের সারিতে, রাতের ক্যাম্পাস তখন ‘বাংলাদেশ বাংলাদেশ’ জয়ধ্বনিতে মুখরিত।
উপাচার্য থাকুক আর না থাকুক আমি ক্যাম্পাসে ফিরতে চাই, সকাল আটটা দশ মিনিটে আরামের ঘুম হারাম করে স্যারকে শাপ শাপান্ত করতে করতে সিটি দিতে চাই, ফিফা খেলতে খেলতে ক্লাসের টাইম শুরু হয়ে যাওয়ায় বন্ধুকে ফোন দিয়ে বলতে চাই, দোস্ত প্রক্সিটা দিয়ে দিস, আমি পরের ক্লাসেই আসতেছি।
আমি ফিরে পেতে চাই সেই প্রাণবন্ত ক্যাম্পাসকে যে ক্যাম্পাস পলিটিক্সের নামে দূষিত হয়নি।
সবার শুভবুদ্ধির উদয় হোক।
মন্তব্য
একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নেই, ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য এমনকি উপ-উপাচার্যও নেই আজকে প্রায় মাসখানেক হল ! খুব খারাপ লাগে যখন দেখি এই ব্যাপারটা দেখার মত একটা দায়িত্ববান মানুষও নেই এদেশে ! এভাবে একটা ছাত্রের জীবনের আর কতগুলো বছর নষ্ট হবে কে জানে !
এটা শুধু চুয়েটের ঘটনা না। অদ্ভুত সব কারনে আমাদের দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় গুলো বন্ধ হয়ে যায় নানা সময়ে। রাজনৈতিক হানাহানি, শিক্ষকদের ধর্মঘট, ছাত্রদের দাবিদাওয়া আদায় সংক্রান্ত নানা ঝামেলা, ইত্যাদি ইত্যাদি কারনে মাসের পর মাস বন্ধ থাকে একেকটা ইউনিভার্সিটি। সমস্যা সমাধানে কারো আগ্রহও নেই এতটুকু! ভাবখানা এমন যেন কারো কিছুই যায় আসে না। আসলেই কি তাই ?
সবার শুভবুদ্দির উদয় হোক !
দু:খে গড়াগড়ি দিয়ে কাদতে চাইতাসিলাম। আফসোস তার ইমো টা নাই।।।।।।![গড়াগড়ি দিয়া হাসি গড়াগড়ি দিয়া হাসি](http://www.sachalayatan.com/files/smileys/24.gif)
ভার্সিটি বন্ধ হলে প্রথম দিকে ভালো লাগে- যাক বাবা! কয়েক দিন ক্লাস করতে হবে না। কিন্তু কিছুদিন পরই খারাপ লাগা শুরু হয়।![মন খারাপ মন খারাপ](http://www.sachalayatan.com/files/smileys/2.gif)
_________________
[খোমাখাতা]
এত কম! দৈনিক না হলেও মাসিক খরচ লক্ষাধিক হবার কথা।
আমি যতদূর শুনেছি চার বছরে সরকারের প্রায় ২২ লাখ টাকার মত ব্যয় হয়
আরে এত ঘাবড়াইলে চলে? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪ বছরের অনার্স ও ১ বছরের মাস্টার্স কোর্সে আমাদের মোট ৯ বছর ৭ মাস ৩ দিন লেগেছিল।![চোখ টিপি চোখ টিপি](http://www.sachalayatan.com/files/smileys/3.gif)
জ্ঞান লাভ করতেই করতেই কবরে চলে যাবার বয়স হয়ে গেল। অবশ্য আল্লাহর রসুলে জ্ঞান কেবল আহরণ করার কথাই বলছেন, ব্যবহার করার কথা বলেন নাই। জ্ঞান/ কমন সেন্স ব্যবহার করা হারাম ব্যপার সেপার।
~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~
কাহিনী কি , আমি তো শুনলাম আমার এক ফ্রেন্ডের পি এল এর জন্য বাসায় চলে আসছে , এখন দেখি এই কাহিনি>
সত্যি কেস তো সুবিধার না। লেখা ভাল লাগল।
ও হ্যাঁ, আপনার নামটা নীচে দেননি। এরপর থেকে দিয়ে দেবেন।
আপনার লিখা পড়ে বুয়েটের দিঙ্গুলার কথা মনে পড়ে গেলো, সকালে গিয়ে দেখতাম পোলাপান হয়তো গেটে তালা দিয়ে দিয়েছে সেইদিন অটো নিবে বলে।
বুদ্ধির উদয় হোউক!!!!
নতুন মন্তব্য করুন