১.
হলের মাঠে একটা চোরকে পেটানো হচ্ছে সমানে। সিনিয়র ব্যাচের রাশেদ ভাই বেশ আগ্রহের সাথে কাজটা করে যাচ্ছেন। অন্য ব্যাচের ছেলেরাও চোখমুখ শক্ত করে দাঁড়িয়ে আছে সেখানে। হলে চুরির ঘটনা নতুন কিছু না। দুই দিন আগেও হার্ডডিস্ক আর সিপিইউ চুরির মত ঘটনা ঘটেছে। তার আগের সপ্তাহে মোবাইলও চুরি গেছে বেশ কয়েকটা। কিন্তু চোরটাকে ধরা সম্ভব হয় নি এতদিন। ব্যাটাকে আজ হাতেনাতে ধরা গেছে অনেক কষ্টে। খুব সহজে রেহাই পাবে বলে মনে হয় না। রাশেদ ভাই মোটা একটা ডান্ডা দিয়ে পিটিয়ে যাচ্ছেন অনবরত। হাত পা ফুলে গেছে চোরটার। কিন্তু রক্ত বের হওয়ার কোন নাম গন্ধ নাই। জুনিয়র ব্যাচের ছেলেগুলো বিরক্ত হয় ভীষণ। এভাবে মেরে কি লাভ? হারামজাদার হাত পা ভেঙে দেয়া দরকার ! আসিফ নামের একটা ছেলে শার্টের হাতা গুটিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে আসে, "ভাই, শুয়োরের বাচ্চার মাথায় দুইটা বাড়ি দেন, ঝামেলা শেষ"। রাশেদ ভাইয়ের রক্ত গরম হয়ে যায় আরো। এবার হাত আর পায়ের গিরায় মারতে থাকেন সজোরে। চোরটা আর্তনাদ করে উঠে, "বাবাগো", "মাগো" বলে মূর্ছা যায় বারবার। অবশ্য এই শিক্ষিত, ভদ্র সমাজের কেউ সেটা গায়ে মাখে না।
দুপুরের গনগনে সূর্যটাও একসময় মাথার উপর এসে থমকে দাঁড়ায়। ততক্ষনে চোরটার মাথা ফেটে বেশ কয়েকবার রক্ত ঝরেছে, আবার শুকিয়েও গেছে। চারটা হাত পা-ই সম্ভবত ভেঙে দেয়া হয়েছে, কোনটাই অবশিষ্ট থাকেনি আর। মুখ দিয়ে ক্রমাগত ফেনা বের হচ্ছে বেচারার, আগের মত আর চিৎকার চেঁচামেচিও করছে না। একেবারে নিথর হয়ে পড়ে আছে ঘাসের উপর। রাশেদ ভাই থামলেন অনেকক্ষন পর। ডান্ডাটা ছুড়ে ফেললেন সামনের দিকে। তারপর পায়ের স্যান্ডেলটা মেঝেতে ঘষে একটা বিশ্রী শব্দ করতে করতে হলের ডাইনিংয়ে ঢুকলেন। অনেকদিন পর নিজেকে ভীষণ সাহসী মনে হয় তার। একটা আত্মতুষ্টির অনুভূতিও হয় ভেতরে ভেতরে। কিন্তু সেটা আর বেশিক্ষন থাকে না, মুরগীর পিস্টা দেখে মেজাজ বিগড়ে যায় ভীষণ। অন্যদিন হলে চুপচাপ খেয়ে নিতেন। কিন্তু আজকের ব্যাপারটা আলাদা। আজকে তাই নুরু ভাইকে ডাকলেন চিৎকার করে। তারপর বেশ একটা ঝাড়ি দিলেন। মাগনা তো আর খান না। মাসে মাসে এতগুলা টাকা দিতে হয়। মুরগীর এইরকম পিস্ দেখলে মেজাজ তো একটু খারাপ হতেই পারে !
বিকেলের দিকে খবরটা হলে আসল। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছে চোরটা। খবরটা যখন হলে আসে তখন সবার খারাপ লাগতে থাকে একটু একটু। এতটা না মারলেও হয়ত চলত ! কত আর বয়স হবে বেচারার ? বাইশ তেইশ হবে হয়ত ! নিশ্চয়ই খুব অভাবে পড়ে কাজটা করতে গেছে। গত দুইদিন ধরে হয়ত কিছুই খায়নি। কিংবা কে জানে, ছোট বোনটার বিয়ের জন্য হয়ত অনেকগুলো টাকা দরকার ছিল ! সেটা জোগাড়ের জন্যই হয়ত কাজটা করেছে। রাশেদ ভাইয়ের অবশ্য তেমন কোন ভাবান্তর হয় না। এইসব ছোটলোক দুনিয়া থেকে চলে গেলেই ভালো। দুনিয়ার মানুষগুলো ভালো থাকে তাহলে ! হলের গেইটে দাঁড়িয়ে মাঝবয়সী এক মহিলা কাঁদছিলেন অনেকক্ষন ধরে। সম্ভবত চোরটার মা। সেই কান্না যে কারো ভেতরটা ভেঙে দেয়ার জন্য যথেষ্ট। যে কারো চোখে দু'ফোটা অশ্রু আনার জন্য যথেষ্ট। আর তাই একটু আগেও যে ছেলেগুলো অমানুষিকভাবে পেটাচ্ছিল চোরটাকে, তারাও শার্টের হাতায় চোখদুটো মুছে নিলো। আসিফ নামের যে ছেলেটা চোরটার মাথায় একটা বাড়ি দিয়ে সব ঝামেলা শেষ করে দিতে চেয়েছিল, সেও পকেট থেকে দশ টাকার একটা ছেঁড়া নোট বের করে সামনে ছুড়ে দিলো। তারপর সদ্য কেনা সিগারেটটার ধোঁয়া ছাড়তে ছাড়তে বেরিয়ে গেল।
২.
প্রকৌশলবিদ্যা পাশ করার পর রাশেদ ভাইয়ের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ল। এতদিনের যত স্বপ্ন, সব চোখের সামনে ভেসে উঠতে লাগল একসাথে। দক্ষিনমুখী দোতলা একটা বাড়ির স্বপ্ন, যে বাড়িটার সামনে ঘাসের একটা বিশাল লন থাকবে। আর সাদা ধবধবে দুটো কুকুরছানা সেখানে ঘুরে বেড়াবে সারাদিন। বিশাল একটা পাজেরো গাড়ি থাকবে বাড়ির সামনে। আর একটা সুইমিং পুল। একটা টেনিস কোর্টও অবশ্য থাকা দরকার। কিন্তু চাকরীর বাজারের যে অবস্থা, তাতে এই স্বপ্নগুলো পূরনের জন্য অন্তত আরো একশো বছর বাঁচা দরকার। ইউরোপ আম্রিকা যাবার ইচ্ছাও রাশেদ ভাইয়ের কোনকালে ছিল না। আর তাই অনেক ভেবেচিন্তে শেষপর্যন্ত একটা উপায় বের করলেন। দেশের সেবা আর নিজের সেবা করার ব্রত নিয়ে দেশে থেকে গেলেন। উগান্ডার প্রেসিডেন্ট আর সোমালিয়ার রাজধানীর নাম মুখস্থ করে রোড্স এন্ড হাইওয়েজ ডিপার্টমেন্টে জয়েন করলেন। ভাগ্য ভালো হলে তিন চার বছরেই কোটিপতি হওয়া যাবে হয়ত। আর ভাগ্য যদি সুপ্রসন্ন না হয় ? সেক্ষেত্রেও পাঁচ বছরের বেশি সময় লাগার কথা না। দেশের সেবা আর নিজের সেবা করার এমন সুযোগ জীবনে দুইবার আসে না।
সরকারী অফিসগুলোর কপর্দকশূন্য অবস্থা দেখে ভেতরটা বোঝার উপায় নেই কোনো। এখানকার ভিখারীসদৃশ মানুষগুলোরও কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি। সেটা অবশ্য বাইরে থেকে বোঝা যায় না। রাশেদ ভাইয়ের পোস্টিং হয় যেখানে, সে জায়গাটা আরো বেশি জীর্ণ-শীর্ণ। একেবারে অজপাড়াগাঁয়ে। অপরিষ্কার একটা টেবিল, ভাঙাচোরা একটা চেয়ার আর মাথার উপর অলস ভঙিতে ঘুরতে থাকা ফ্যানসহ একটা নোংরা রুম দেয়া হল তাকে। ভালো লাগার মত একটা কিছুও সেখানে খুঁজে পাওয়া যাবে না। তারপরও কাঁচা টাকার গন্ধে সবকিছু মেনে নিলেন রাশেদ ভাই। ভীষণ মনোযোগ দিয়ে দেশের সেবা শুরু করলেন।
অল্প কদিনের ভেতর অফিসের কেরানী আবদুল করিমের সাথে বেশ খাতির জমিয়ে ফেললেন রাশেদ ভাই। এক পড়ন্ত বিকেলে, অফিস ছুটির ঠিক আগ মুহূর্তে, দুজনে চা খেতে খেতে দেশ নিয়ে আলোচনা করলেন অনেক্ষন। "দেশটা রসাতলে যাচ্ছে"- এই ধরনের ফালতু কথাবার্তা শুনলে মাথায় রক্ত উঠে যায় করিম সাহেবের। "আরে বাবা, দেশ রসাতলে যাবে কেনো ? আমি ভালো আছি, আপনি ভালো আছেন, আপনার আগে যে ইন্জিনিয়ার সাহেব ছিলেন, উনিও মাশাল্লা ভালো আছেন। দেশ তাহলে রসাতলে যায় কেম্নে?" করিম সাহেবের কথায় রাশেদ ভাই অভিভূত হয়ে যান একদম। এত বিচক্ষন মানুষ আগে কোনদিন দেখেন নি তিনি। কি অসাধারন ফিলোসফি ! সত্যিই তো, আমরা ভালো থাকা মানেই তো দেশের ভালো থাকা। এই সহজ জিনিসটাও এতদিনে মাথায় ঢুকল না ! করিম সাহেবের বিপুল ধন সম্পদের কথাও একদিন জানা হয়ে গেল রাশেদ ভাইয়ের। উত্তরায় তার ছয়তলা একটা বাড়ি আছে। মহাখালীতেও চারতলা একটা বাড়ির কাজ চলছে। আর গাজীপুরের দিকে জমি আছে বেশ কয়েক বিঘা। তবে সবচাইতে অবাক করা ব্যাপার হল, এই ক্লাস এইট পাশ মানুষটার দুই ছেলেমেয়েই ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে পড়ছে ! "ছেলেটারে ইন্জিনিয়ার আর মেয়েটারে ডাক্তার বানামু স্যার, দোয়া রাইখেন "- রাশেদ ভাই চুপ থাকেন কিছুক্ষন। এরকমটা আশা করেননি তিনি। অবশ্য এই দেশে সবি সম্ভব। রোড্স এন্ড হাইওয়েজ এর একজন পিয়ন তার ছেলেমেয়েকে ইংলিশ মিডিয়ামে পড়াবে, সেটাই স্বাভাবিক !
দেশের সেবা করাটা এত সহজ কিছু হবে সেটা জানা ছিল না রাশেদ ভাইয়ের। হালকা পাতলা কিছু টেকনিক্যাল কাজ ছাড়া সারাদিন তেমন কিছু করার থাকে না আর। কোন একটা প্রজেক্ট পাশ হবার পর নিয়মমত টেন্ডার কল করা হয়। অবশ্য কোন্ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজটা করবে, সেটা আগে থেকেই ঠিক করা থাকে। তারপর যখন প্রজেক্টের জন্য বরাদ্দকৃত টাকা এসে পৌঁছায়, সেই টাকাটা কয়েক ভাগ করা হয়। একটা ভাগ যায় এমপি সাহেবের পকেটে। একটা ভাগ থাকে ইন্জিনিয়ার সাহেবদের জন্য। অ্যাডমিনিস্ট্রেশন আর পুলিশকেও ম্যানেজ করার ব্যাপার আছে। করিম সাহেবদের জন্যও ছোট একটা ভাগ থাকে। সেই ভাগের টাকাও কম না, ছেলেমেয়েদের ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে পড়ানোর জন্য যথেষ্ট। এতকিছুর পরেও সামান্য যে কয়টা টাকা থাকে, সেটা দিয়ে কোনরকমে একটা রাস্তা বানানো হয়। বছর ঘুরতে না ঘুরতেই সেই রাস্তাটা খোঁড়াখুঁড়ির কাজ শুরু হয় আবার। দেশের বেকুব বান্দারা কয়েকদিন হা-হুতাশ করে এটা নিয়ে, তারপর ভুলে যায় সব। পুরো ব্যাপারটা একটা সিস্টেমের মধ্যে এসে গেছে। একেবারে সাজানো গোছানো। করিম সাহেব ঠিকি বলেছিলেন, এই দেশের বাতাসে টাকা উড়ে আসলে, সেটা ধরতে জানতে হয় শুধু।
বছর আটেক পর রাশেদ ভাইয়ের বেশ ভালোরকমের একটা প্রমোশন হয়ে যায়। সরকারী বাড়ি গাড়ি পেয়ে যান একসাথে। এটা অবশ্য তেমন কিছুই না। ততদিনে যে পরিমান টাকা কামানো গেছে, সেটা দিয়ে একটা রাজপ্রাসাদ বানানো যাবে রীতিমত। বিলাশবহুল একটা গাড়িও কেনা যাবে। অবশ্য রাজপ্রাসাদ বানানোর কিংবা বিলাসবহুল গাড়ি কেনার কোন ইচ্ছা আপাতত রাশেদ ভাইয়ের নেই। নানারকমের ঝামেলা আছে এই কাজে। তারচাইতে সরকারী জিনিস ব্যবহার করাই ভালো। গাড়িটার সাথে আবার ফ্রিতে একটা ড্রাইভারও পাওয়া গেছে। প্রতি সপ্তাহে এই গাড়ি নিয়ে মাদারীপুর থেকে ঢাকায় যাওয়া হয় বেশ কয়েকবার। যাওয়ার সময় মায়ের জন্য কার্টনভর্তি করে মাল্টা, আপেল, কমলা, আর হরলিকস্ নিয়ে যান রাশেদ ভাই। তবে সবচাইতে মজার ব্যাপার হল, এজন্য তার কোন টাকা খরচ করতে হয় না। "সরকারী কাজে তেলবাবদ খরচ"- এর লিস্টে চলে যায় সব। অনেকদিন আগে একটা মুভি দেখেছিলেন রাশেদ ভাই, "লাইফ ইজ বিউটিফুল", সেই মুভির কিছুই বুঝেন নি তখন। কিন্তু এখন বুঝতে পারেন সব। আসলেই, "লাইফ ইজ বিউটিফুল"।
মাদারীপুর থেকে ঢাকা যাবার সময় একবার ভীষণ বিপদে পড়ে যান রাশেদ ভাই। ফেরী পারাপারের ভাড়া দিতে গিয়ে দেখলেন, পকেটে নগদ টাকা একটাও নেই। গাড়ির ড্রাইভার সালামতের পকেটও শূন্য ছিল। গাড়ি থেকে নেমে একটা সিগারেট ধরিয়ে রাশেদ ভাই ভাবতে লাগলেন, কি করা যায়। সালামত এমন সময় মাথা চুলকাতে চুলকাতে সামনে এসে দাড়ায়-
"স্যার, একটা কথা বলতাম, যদি কিছু মনে না করেন........"
"হুমম্, বলো"।
"স্যার, বলতেছিলাম কি, অল্প কিছু অক্টেন বেচতে পারলে বেশ কিছু টাকা পাওয়া যাইত........"।
রাশেদ ভাই চমকে উঠেন বুদ্ধিটা শুনে। সামান্য একটা ড্রাইভারের কাছ থেকে এত অসাধারন একটা আইডিয়া পাবেন, সেটা বুঝতে পারেননি আগে। শুধু ফেরী পারাপারের জন্য না, এখন থেকে আইডিয়াটা অন্য কাজেও লাগানো যাবে। বাজারে অক্টেনের দামটাও বেশ ভালো। "তুমি অক্টেন বেচার ব্যবস্থা কর"। ইন্জিনিয়ার সাহেবের কথায় সালামত দ্রুত কাজে নেমে পড়ে। অক্টেন বেচার মত জানাশোনা লোক তার আছে। এই কাজ সে আগেও অনেকবার করেছে। আগের ইন্জিনিয়ার সাহেবরাও তাকে দিয়ে অক্টেন বেচিয়েছে অনেকবার। তবে এত সহজে কেউ রাজি হয় নি আগে। শুরুতে একটু নাটক-ফাটক করত সবাই। তারপর লাইনে চলে আসত। কিন্তু এই ইন্জিনিয়ার সাহেব অন্যরকম, নাটক ফাটকের ধার ধারে না। অনেক বড় ইন্জিনিয়ার হবে হয়ত ! সালামত মনে মনে শঙ্কিত হয় কিছুটা, এই লোক সুযোগ পেলে দেশের একদলা মাটিও রাখবে না, সব বেচে দিবে।
৩.
সামিরা ভাবীর কথা একবারো বলা হয়নি এখনো। রোড্স এন্ড হাইওয়েজ এর ইন্জিনিয়ার, আমাদের রাশেদ ভাইয়ের বৌ সামিরা ভাবী। ভীষণ রকমের জেদী আর বদমেজাজী। ধনীর দুলালী হলে যা হয় আর কি ! সচিব সাহেবের এই কন্যা সাজুগুজু করতে পছন্দ করেন খুব। দিনের বেশিরভাগ সময় এসি রুমের ভেতর স্টার প্লাসের সামনে বসে থাকেন ভাবী। বাসার কাজ করার জন্য লোকের অভাব নেই বাড়িতে। রান্নাবান্না, ঘর-দোর মোছা, আর বাগান পরিষ্কারের জন্য বাড়িভর্তি কাজের লোক। অবশ্য তাদের একজনকেও দেখতে পারেন না ভাবী। সবকয়টা ফাঁকিবাজ। শুধু চুরির ধান্ধায় থাকে। শাহীনা নামের কাজের মেয়েটাকে তো আজকে হাতেনাতে ধরেও ফেলেছেন ভাবী। ভাবীর বড় ভাই আমেরিকা থেকে আসার সময় অনেকগুলো দামী পেস্ট্রি কেক নিয়ে এসেছিলেন এবার। আর এই হারামজাদী চুরি করে খাচ্ছিল সেগুলো। শাহীনার চুল টেনে ধরে একটা লোহার রড দিয়ে এলোপাতাড়ি অনেক্ষন মারেন ভাবী। গত সপ্তাহে ভাবীর খুব দামি একটা ঘড়িও চুরি গেছে। ভাবী নিশ্চিত, এই ছোটলোকের বাচ্চাই নিয়েছে সেটা। কিন্তু ঘড়ি চুরির কথা স্বীকার করে না শাহীনা। ঠোঁট ফেটে রক্ত বের হয় তার, আর একসময় সহ্য করতে না পেরে অজ্ঞান হয়ে যায়। এবার ভাবী ভয় পেয়ে যান সত্যি সত্যি। মরে গেল নাকি আবার ? রাশেদ ভাইকে ফোন করে খুলে বলেন সবকিছু। "আধঘন্টার মধ্যেই পুলিশ নিয়ে আসছি আমি "। রাশেদ ভাই চিন্তা করতে মানা করেন, আর এইসব ছোটলোক, চোর বাটপারকে অভিশাপ দিতে থাকেন অনবরত।
শাহীনার যখন জ্ঞান ফিরল, তখন সে দেখল তার চারপাশে সবাই দাঁড়িয়ে আছে। স্যার, আপা আর বাড়ির অন্য কাজের লোকেরা। দুইজন পুলিশও দাঁড়িয়ে আছে একটু দূরে। শাহীনার কাঁটা ঠোটের রক্ত শুকিয়ে গেছে ততক্ষনে। কিন্তু শরীরটা দুর্বল লাগছে খুব। সে উঠে দাঁড়ায় অনেক কষ্টে। এই পুলিশদের সাথেই এখন তার থানায় যাওয়া লাগবে। আর কিছু করার নেই তার। শাহীনার মাথায় হঠাৎ খুব অদ্ভুত একটা চিন্তা আসে, মনে মনে ঠিক করে নেয় সে, নিজের ছেলেকেও একদিন চোর বানাবে। তবে তার আগে কলম ধরাটা শিখিয়ে দেবে শুধু, যেন মার খেতে না হয় আর !
-এবিএম
১৭/০৫/২০১২
আমার অন্যান্য লেখা :
মন্তব্য
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
গল্প ভালোই লাগল। তবে লেখার ধরনটা একটু ক্লিশে। লিখতে থাকুন
------------
'আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি, আমি সত্যি মূর্খ, আকাঠ !
রিশাদ ভাই, গল্প ভালো লাগছে জেনে খুশি হলাম।
আর লেখার ধরনের দিকে আরো বেশি খেয়াল রাখবো সামনে।
ভালো লেগেছে
_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩
অনেক ধন্যবাদ।
আমার কাছে অসাধারন লাগলো। এই শাহীনার সাথে ১.নং এর মার খেয়ে মারা যাওয়া চোর এর ক্রন্দনরত মা এর লিংঙ্ক করা যায়, আবার আলাদাভাবেও নেয়া যায়। দারুন।
ক্রেসিডা
আপনার ভালো লাগল জেনে খুশি হলাম ক্রেসিডা।
অনেক ধন্যবাদ।
প্লট চমৎকার। আমার ভাল লেগেছে। আর একটু গতিশীল হলে আরও ভাল লাগত। ওটা নিশ্চয়ই লিখতে লিখতেই ঠিক হয়ে যাবে।
আপনার লেখার ভক্ত আমি। গল্প ভালো লাগছে জেনে খুশি হলাম।
লিখতে লিখতেই গতিশীলতা আসবে আশা করি। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
গল্পটা কি আগে অন্য কোথাও পড়েছি?
লিখুন নিয়মিত।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
গল্পটা অন্য কোথাও পড়ার কথা না, তবে গল্পের বিষয়বস্তু নতুন কিছু না। সে হিসেবে এই ধরনের গল্প পড়ে থাকতে পারেন।
আরো লিখার ইচ্ছা আছে।
গল্পটা পরিচিত লাগতেই পারে। এটা আমাদের আশে পাশের নিত্য নৈমিত্তিক গল্প :(
ভালৈসে------------
ভাল হইছে শুনে ভালো লাগতেছে।
সচলে প্রকাশিত আপনার লেখাগুলোর একটা তালিকা দিতে পারবেন অনুগ্রহ করে। ধন্যবাদ।
মাহবুব ভাই , এই লেখা সহ মাত্র দুটো লেখা প্রকাশিত হয়েছে সচলে।
১। যখন বৃষ্টি নামত (http://www.sachalayatan.com/guest_writer/44035)
২। চোর (http://www.sachalayatan.com/guest_writer/44636)
লিংক যোগ করতে গেলে এরর দেখায় (Your submission has triggered the spam filter and will not be accepted.), তাই এভাবে লিখলাম।
অনেক ধন্যবাদ।
facebook
পড়ার জন্য ধন্যবাদ দাদা।
ভাললাগসে
ভাল লাগছে জেনে খুশি হলাম।
দারুণ! পাঁচ তারা।
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
পাঁচ তারা ?
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
চমৎকার লাগলো, শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত।
পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
অনেক ধন্যবাদ সময় নিয়ে পড়ার জন্য।
১। অত্যন্ত ফালতু একটা লেখা। অবশ্য এই প্লটে গল্প লিখলে হিট বেশি হয়। সবাই এসে উত্তম "ঝাঝা" দিয়ে যায়।
গল্পে আসি, যেহেতু, প্রকৌশলী নায়ক, হলের কথা এসেছে এবং চোরকে মারার পরে ডিমসিতে নেওয়া হয়েছিল, ধরে নিচ্ছি রাশেদ বুয়েটে পড়তেন (ভুলও হতে পারে) । বুয়েটে চোর পিটিয় "খুন" করা হয়েছে, এমন নজির শুনিনি। বা খুন করেও দিব্যি হলের ডাইনিং ঝাড়ি দিয়ে দিয়ে পাশ করে গেছেন, একটু অদ্ভূত ই লাগে। আইন শৃঙ্খলা বাহিনী কী করেছিল?? বা যারা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মার খাওয়া দেখছিল, তার কিছু করেনি? খুনের পরে প্রতিবাদ করেনি?? দশ টাকা ছুড়ে দিয়েই দায়িত্ব শেষ করেছে? শুধু লিখলেই হবে, একটু বাস্তব বা বিশ্বাসযোগ্য কিছু লিখেন দয়া করে।
২। যারা, ইউরোপ আমেরিকা যায় না, তারাই বুঝি জনসেবার নামে, বিসিএস এ ঢোকে?? আর উগান্ডার রাজধানীর নাম মুখস্থ করে বিসিএসএ চান্স পায়, একটু বেশী সরলীকরণ করা হয়ে গেলনা?? এই দেশের হাজার হাজার তরুন ছেলে মেয়েরা সরকারী চাকুরীতে ঢুকছে, তারা কিভাবে চাকুরী করছে, কোন সুযোগ-সুবিধা নিয়ে করছে, শুধুই কি নাকে তেল দিয়ে ঘুমায় একটু জেনে নিয়ে প্লটটা সাজালে ভাল হত।
৩। এত বড় চোর, কোটি কোটি টাকার মালিক, তার আর তার ড্রাইভারের পকেট একই সময়ে শূণ্য হয়ে গেল, কেমন যেন লেগছে। তেল চুরির বিষয়টা আরেকটু বিশ্বাসযোগ্য কোন ঘটনার মাধ্যমে দেখালে ভাল হত। বাচ্চাদের মত হয়ে গেছে এই ব্যাপারটা। আপনার গল্পকে অনেকাংশে দূর্বল করে দিয়েছে।
৪। শুধু রাশের বউ কে দিয়ে কাজের মেয়েকে অত্যাচার করালেন?? রাশেদকে দিয়ে কাজের মেয়েটার দেহ ভোগ করাতেন। তাহলে আরও বিশ্বাসযোগ্য হত।
ভাল থাকুন।
সীমানা ভাই, মাথা ঠান্ডা করেন। গল্প আপনার ভালো লাগেনাই বলে অন্যদেরও লাগবেনা তা না ও হতে পারে।
পেপারে পড়েছিলাম, এক ট্রাকড্রাইভারকে সায়েদাবাদে গাড়িচাপা দেওয়ার অপরাধে পাব্লিক ধরে লাঠি দিয়ে পিটায় এবং ইট দিয়ে মাথা গুঁড়িয়ে দেয়। সায়েদাবাদে গিয়েছেন নিশ্চয়ই, সেখানে থানা আছে মেলা পুলিশ আছে আর আছে হাজার হাজার মানুষ। কে এগিয়ে এসেছিল বলেন দেখি? কেউ না। তাকে সেখানেই পিটিয়ে মারা হয়। তাই আইন শৃঙ্খলা বাহিনী বা সাধারন মানুষের বিবেকহীনতায় কষ্ট পেতে পারেন কিন্তু অবাক হয়েন না। এরকম হয় মাঝে মাঝে।
বুয়েটের কথা জানিনা ঢাবিতে হলে চোর ধরা পড়লে তার কপালে কষা মাইর বরাদ্দ থাকতো। এটা খুব একটা কষ্টকল্পনা মনে হয়নি আমার কাছে।
আপনার ৩ নম্বর পয়েন্টটি একটি কন্সট্রাকটিভ ক্রিটিসিজম।
৪ নম্বরে আপনি লিখকের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করেছেন। তিনি কিভাবে কি তুলে আনবেন গল্পে তা আপনার আমার বলে দেওয়া সাজে না।
..................................................................
#Banshibir.
১। চোর পেটানোর ঘটনা আমার নিজের চোখে দেখা। সামান্য একটা মোবাইল ফোন চুরির জন্য একদল ছাত্র কি অমানুষিকভাবে একটা চোরকে পেটাতে পারে, সেটা না দেখলে বিশ্বাস করবেন না আপনি। আমি নিজের চোখে যে ঘটনাটা দেখেছি, সেই ঘটনায় সত্যি সত্যি হলে খবর এসেছিল যে চোরটা মারা গেছে। হলে পুলিশ ঢুকতে সম্ভবত প্রভোস্ট এর অনুমতি লাগে। আর তাছাড়া গনপিটুনীতে একটা "চোর" মারা গেলে কারো কিছু যায় আসে না।
দশ টাকা ছুঁড়ে দেয়ার মধ্যে অবিশ্বাস যোগ্য কি আছে? আর তাছাড়া কথাটা এখানে রুপক অর্থে ব্যবহার করেছি আমি।
২। যারা ইউরোপ আমেরিকা যায় না, তাদের বিসিএস এ ঢুকতে হবে এমন কথা নেই। তবে তাদের কেউ কেউ ঢুকে। আর সেজন্য অনেক অপ্রয়োজনীয় তথ্য মুখস্থ থাকতে হয়। সরলীকরনটা দরকার ছিল, গল্পের খাতিরে। আর এখানে এই দেশের হাজার তরুন তরুনীকে টেনে আনার দরকার ছিল না। এটা যারা সরকারী চাকুরী করে তাদের গল্প না, স্পেসিপিক একজনের গল্প। আর আমার বিশ্বাস, এইরকম একজন সরকারী ইন্জিনিয়ার খুঁজে পাওয়া যেতেই পারে।
৩। গল্পের রাশেদ ভাই আর তার ড্রাইভারের পকেটে ফেরী পারাপারের জন্য পর্যাপ্ত ভাড়া ছিল না, যেটাকে শূন্য বোঝাতে চেয়েছি। কোটিপতিরা পকেটে কোটি কোটি টাকা নিয়ে ঘুরে, এমনটা জানা ছিল না।
৪। "কাজের মেয়ের দেহভোগ" নিয়ে আপনি একটা গল্প লিখবেন সময় করে। আপনি পারবেন।
আর একটা কথা, এটা চুরি বিষয়ক কোন প্রবন্ধ না। এটা একটা গল্প কেবল। আপনি বোধহয় সেটা ধরতে পারেন নি।
ধন্যবাদ।
@ সীমানা,সত্যপীর ভাইয়া, এবিএম ভাইয়া দুজনেই আপনাকে উত্তর দিয়েছে ,তারপরও বলছি, আপনি যদি বাংলাদেশে বাস করে থাকেন চোর পিটিয়ে মেরে ফেলার ব্যাপারটা আপনার বিশ্বাস করতে কষ্ট হওয়ার কথা না, এদেশে মানুষ পিটিয়ে মেরে ফেলার জন্য চোর হওয়ারও দরকার পড়ে না। আপনার এটা বিশ্বাস করতে কষ্ট কেন হল বুঝলাম না।
বিসিএস এ ঢুকে সবাই চুরি করে এমন কথা কেউ বলছে না, কিন্তু কেউ কেউ যে করে এবং খুব ভালভাবেই করে সেটা ১০০% সত্যি। সরকারি অনেক অফিসেরই পিওনেরও ঢাকায় দুটা বাড়ি থাকে। আমাদের হাসপাতালের স্টোর কিপারের ঢাকায় ৩ টা বাড়ি ছিল , আমরা জানতামও। অবিশ্বাস্য কিছুই না।
আর এই গল্প টা চুরি বিষয়ক , তাই বউ কাজের মেয়েকে চুরির কারনেই অত্যাচার করেছে, গল্পের নাম ও তো চুরি। সেটাকে বিশ্বাসযোগ্য করার জন্য এখানে কাজের মেয়ের দেহভোগ করাতে হবে? নাহলে আপনি বিশ্বাস করবেন না? এটা কেমন যুক্তি বুঝলাম না!
আপনার মন্তব্যর ৩ নাম্বার পয়েন্টটি ঠিকাছে , আপনি লেখক কে এ ধরনের সমলোচনা করতেই পারেন। কিন্তু বাকিগুলো খুব অদ্ভুত লাগল।
চমৎকার লেখা। পড়তে পড়তে আমারো খুব ইচ্ছে হচ্ছে ।। ইস , যদি রোডস এন্ড হাইওয়েতে জয়েন করতে পারতাম
ভালো লাগছে জেনে খুশি হলাম।
বিসিএস দিয়া দেন, দেরি করবেন না।
আমার ভালো লেগেছে। চালিয়ে যান
ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম।
চালিয়ে যাবার ইচ্ছে আছে।
অনেক ধন্যবাদ।
পড়ার জন্য ধন্যবাদ উদাস দাদা।
অনেক ধন্যবাদ পড়ার জন্য।
গল্প ভালো হয়েছে ফুটন।
খুব বেশি ডিটেইল বলতে পারছি না, তাড়াহুড়া করে পড়লাম তো। তবে ময়ূখের কমেন্ট পড়ে মনে হইল, গল্পটা এরকম বর্ণনাত্মক এর বদলে ডায়ালগ/ মনোলগের মতও করা যেত। হয়তো।
শেষ বাক্যটা লক্ষ্যভেদী।
বুঝতে পারতেছি গল্প না পড়েই কমেন্ট করছো।
তারপরও থ্যাংকস জয়, একটা কমেন্ট তো বাড়ল।
তুমি অনেকদিক লেখো না, নতুন কিছু লিখো।
অনেক ধন্যবাদ।
ভালো হয়েছে। লিখে যাও।
উৎসাহের জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, মিনি।
গল্প মোটামুটি হয়েছে, আরও ভাল হতে পারতও। লেখা চালিয়ে যান, ভাল হবে নিশ্চিত।
আমি আরেকটু সরলীকরণ করি। সকল বিসিএস কর্মকর্তার প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বলছি, বিসিএস যদিও একটা অত্যন্ত উঁচুমানের জায়গা, তারপরেও আমার মনে হয় বিসিএসের মাধ্যমে গরুছাগলও কম আসে না। মুখস্ত বিদ্যা আর বিবেকহীন শিক্ষাচর্চার ফসল একগাদা লোকের পুনর্বাসন যে হয় না, তা কিন্তু নয়। মাঝে মাঝে টিভিতে উচ্চ পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তাদের বিভিন্ন ইস্যুভিত্তিক কথাবার্তা শুনলে এমনটাই আন্দাজ করি মাঝে মাঝে
------------------------------------
সময় এসেছে চল ধরি মোরা হাল,
শক্ত কৃপাণে তুলি বরাহের ছাল।
বিপ্লবী ভাই, গল্প আসলেই আরো ভালো হতে পারত। সামনে আরো ভালো লিখার চেষ্টা করব।
আপনার মন্তব্যের শেষ লাইনের সাথে পুরোপুরি একমত।
লেখক ভাই কি বুয়েটের নজরুল ইসলাম হলের কেউ ? গল্পের ১ম অংশ টা পরিচিত মনে হচ্ছে
ভাইয়া, আমি তিতুমীর হলের। বুয়েটের ছেলেদের জন্য গল্পের প্রথম অংশটা অপরিচিত হওয়ার কথা না।
ধন্যবাদ।
বিষয়বস্তু চমৎকার। গল্পটাও সুন্দর, একটা জায়গায় একটু খটকা আছে- রোডস এন্ড হাইওয়েজের যে কোনো ইনজিনিয়ার বা অফিসার এর জন্য বাংলাদেশের সর্বত্র ফেরীর ভাড়া কিন্তু মওকুফ। তাদের গাড়ীর জন্য (সরকারী/বেরকারী যাই হোকনা কেন) ফেরীতে ভাড়া দিতে হয়না।
সব মিলিয়ে ভাল লাগল।
গল্প ভালো লাগছে জেনে খুশি হলাম। ফেরী ভাড়ার ব্যপারে নিচের লিংক টা কষ্ট করে দেখুন।
তেল চুরি (http://www.banglanews24.com/detailsnews.php?nssl=6825e918d7640c8fb263a617334c6b25&nttl=20120420042822105502)
ধন্যবাদ।
ভালো লেগেছে, তবে অনেকগুলা ঘটনা নিয়ে একবারে একটা গল্পে না লিখে আপনি কয়েকটা পর্ব করতে পারতেন।লিখা চালিয়ে যান, আপনার পর্যবেক্ষন বেশ ভাল।
অনেক ধন্যবাদ আপু। অনেকগুলো পর্ব লেখার চিন্তা ছিল না। কারন শুরু করলে শেষ করতেপারবো কিনা সেটা সিউর না।
আরো লেখার ইচ্ছা আছে।
আরো লিখুন ভাই
ইনশাল্লাহ, আরো লিখব।
অনেকের দেখলাম বিসিএস দিয়ে যারা চাকরী পায় তাদের চুরির কামনা বাসনা আছে এটা মানতে বেশ কষ্ট হচ্ছে তবে আমার পরিচিত কিছু বুয়েটের ইঞ্জিনিয়ার আছেন যারা খুব করে লেখা পড়া করে যাচ্ছেন বিসিএস দিয়ে লাইফ গড়ার জন্য আর এই লাইফ যে কীভাবে হবে সেটা বুঝতে মহাবোকা হতে হয় না।
দেশের শিক্ষিত চোরদের কথা......সবার জানাই আছে চুরি কী করে করতে হয়। কিন্তু নিজেদের চুরিটাকে চুরি বলে মনে করেন না এই চোরেরা। দুই টাকার জিনিস পেটের দায়ে যেই মানুষটা চুরি করে এদের কাছে সেই গরীবটা সবচেয়ে বড় চোর!!!!!
লেখা ভালো হয়েছে ভাইয়া। তবে যখন বৃষ্টি নামত লেখাটা খুব ছুঁয়ে গিয়েছিলো। শুভকামনা।
বিসিএস দেবার পর প্রথম শ্রেনীর একজন অফিসারের বেতন খুব সম্ভবত হাজার বিশেক টাকার মত হয়। এই বাজারে বিশ হাজার টাকায় কি হয়? চুরি না করে উপায় কি??
"যখন বৃষ্টি নামত"- টাইপ লেখা আরো লিখব। ওই ধরনের লেখা লিখতেই ভালো লাগে আমার। আপনি ভালো থাকবেন মেঘা আপু।
হ হক্কথা!!! শিক্ষিত্চোর হৌনের কাম, বাড়ি গাড়ি নারী সব হৈত!!!
_____________________
Give Her Freedom!
হক কথার দাম নাই ভাই।
সবকিছু সিস্টেমের মধ্যে আছে।
আমি নিজেই তিতুমির হলে ছিলাম।পুরা ৫ বছরে (২০০৬-২০১১) আমি এইরকম চোর পিটানোর ঘটনা কম করে হলেও ৭ থেকে ১০ বার দেখেছি। আর যে পরিমাণ মাইর টা দেয়া হত, তাতে চোর বাবার মরণ খুব একটা অসম্ভব বিষয় না।।।
দারুন লিখা।।।
ছেলেপেলের এই অসাধারন (!) কীর্তি দেখার সৌভাগ্য (!) আমারো হয়েছে। খুব উৎসাহ নিয়ে পেটাতে দেখছি। যারা দাড়িয়ে ছিল আশেপাশে তাদের আক্রোশ ছিল আরো বেশি।
ভাইয়া গল্পটা পড়ে অনেক ভাল লাগল...... চালিয়ে জান
কিন্তু সমস্যা হল ... আমার নামও রাশেদ আর আমি বুয়েটে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং-এই পড়ছি
তাই নিজেকে নিয়া কেমন জানি লাগছে
শেষটা এককথায় অসাধারণ
রাশেদ, তুমি যেহেতু বুয়েটে সিভিল ইন্জিনিয়ারিং পড়ছ, সুতরাং তোমার জন্য অনেকগুলো অপশন খোলা আছে। তবে সমস্যা হল, দেশের অপশন গুলো খুব একটা পছন্দ হবার মত না। (অন্তত শুরুর দিকে।)
রোডস এন্ড হাইওয়েজ এও জয়েন করতে পারো। তুমি না ঢুকলেও কেউ না কেউ তো ঢুকবেই। সুতরাং এত চিন্তা করার কিছু নাই। শুধু একটা অনুরোধ, গল্পের রাশেদের মত "এত বেশি চুরি" করার দরকার নাই। এতটা না করেও অনেক ভালো থাকতে পারবা । আমি নিশ্চিত।
ভালো লেগেছে লেখা।
ছোটখাট অসঙ্গতি থাকবেই, এসব নিয়ে ভাবলে চলে না।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। ছোটখাট অসংগতি থাকতে পারে।
এসব নিয়ে ভাবলে চলে না।
বেশ ভালো লাগলো লেখাটা। আমি কোলকাতার বাঙালি। কিনতু খুব সহজে মেলানো যায়। কারণ দুটো দেশ-ই তো একি । তবে ভালো মানুষ-ও এখনো আছে এটা-ও সত। লেখা বেশ সাবলিল লাগলো। শুভেছা রইলো।
মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
লেখা সাবলীল লাগল জেনে খুশি হলাম।
চমৎকার প্লট, হৃদয় ছুয়ে গেছে।
গল্প ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম।
অনেক ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য। ভালো থাকবেন।
"শাহীনার মাথায় হঠাৎ খুব অদ্ভুত একটা চিন্তা আসে, মনে মনে ঠিক করে নেয় সে, নিজের ছেলেকেও একদিন চোর বানাবে। তবে তার আগে কলম ধরাটা শিখিয়ে দেবে শুধু, যেন মার খেতে না হয় আর !"
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
দূভাগ্য যে আমাদের দেশে দূর্ণীতিবাজদের নিয়ে গল্প সস্তা জনপ্রিয়তার জন্য হয়, পত্রিকায় তাদের নিউজ ছাপা হয় কাটতির জন্য। কিন্তু এদের একজনের বিপরীতে যে ১০ জন মেধাবী সৎ লোক আছে দেশের প্রতিটি ডিপাটমেন্টে তাদেরকে কেউ প্রমোট করে না। আমরা আরেকজনের খারাপটা নিয়ে ব্যবসা করতে জানি, কিন্তু ভালোটাকে প্রমোট করতে জানি না।
সৎ লোকদের কীভাবে প্রোমোট করা উচিত বলে আপনি মনে করেন?
আপনি লাখ টাকা নিয়ে ধরা খেলে তার খবর ছাপেন, কিন্তু মাঝরাতে যে ইন্জিনিয়ারটা নদীর ভাঙন ঠেকাতে সারা রাত ঝড়ের মাঝে বস্তা ফেলে তার কথা কি আপনি তার কৃর্তি ছাপেন??? দূর্ঘটনা প্রতিরোধে সারা দেশে ব্লাক স্পট চিহ্নিত করতে যে ইন্জিনিয়ারটা ছোটাছুটি করছে তাকে চেনেন বা আর নাম জানেন।।।। কারণ সেটা দিয়ে তো ব্যবসা হয় না।
মাঝরাতে যে ইনজিনিয়ারটা ঝড়ের মাঝে বস্তা ফেলে, সেটা কি তার দায়িত্বের মধ্যে পড়ে, নাকি দায়িত্বের বাইরে? সে কি সারাদিন চেয়ারে পাছা লাগিয়ে বসে থাকার জন্যে চাকরি পেয়েছে, নাকি ওরকম পরিস্থিতিতে বস্তা ফেলার জন্যেই? যদি তার জব ডেসক্রিপশনে বস্তা ফেলা না থাকে, যদি সে নিজের পকেট থেকে বস্তা আর বালুর টাকা ভরে যোগালি ভাড়া করে বস্তা ফেলে থাকে, তাহলে তাকে নিয়ে নিউজ হবে। আর যদি সেটা তার কাজের অংশ হয়, নিউজ হবে না।
লাখ টাকা নিয়ে ধরা খেলে নিউজ হবে কারণ লাখ টাকা নিয়ে ধরা খাওয়া ইনজিনিয়ারের কাজ না।
আপনি তো সস্তা জনপ্রিয়তার বিরোধিতা করলেন। রাতের বেলা বস্তা ফেলার জন্যে নিউজ করলে সস্তা জনপ্রিয়তা নিয়ে আপনি কমপ্লেন করবেন না?
আপনি যদি তাকে এই কঠিন দায়িত্ব পালনের জন্য ধন্যবাদ টুকুও না প্রাপ্য মনে করেন।।। তাহলে আপনার সাথে বিতর্কে যাওয়াটা বৃথা।।।।আপনার এই মনোভাব ৯০% বাংলাদেশী পোষণ করেন বলেই আমি উপরের কমেন্টটি করেছি। আমরা দূর্নিতীবাজ হান্টিং করি, সৎ কর্মঠ লোক হান্টিং করি না। চোরকে মেরে আমরা পুলক লাভ করি। একজন সৎ লোককে নিউজ করতে চাই না। ওতে তো পুলক লাভ হয় না। কেউ জানে না সৎ লোকদের কীভাবে প্রোমোট করা উচিত, আপনিও না-আমিও না।
আপনি পয়েন্টটা মিস করে যাচ্ছেন। ইনজিনিয়ার হিসেবে তার কাজই কঠিন দায়িত্ব পালন করা। ফ্যানের বাতাস খাওয়া না। একটা লোক তার কাজ করছে, সেজন্যে তাকে নিয়ে নিউজ করতে হবে? আপনি যদি নিজে ইনজিনিয়ার হয়ে থাকেন, আপনার আন্ডারে কাজ করা কয়টা কামলার নাম জানেন আপনি? যদি সিভিল ইনজিনিয়ার হন, একটু চিন্তা করে দেখেন তো যেই মহিলাগুলি একেকবারে বিশ কেজি সিমেন্ট বা ইঁট মাথায় নিয়ে কাঁপতে কাঁপতে গ্রাউণ্ড ফ্লোর থেকে উপরে উঠে কিংবা যে লোকগুলি চল্লিশ কেজির বস্তা মাথায় নিয়ে ঝড়ের রাতে নদীতে নিয়ে ফেলে, তাদের কয়জনের নাম আপনি জানেন? ওভারসিয়ার আর লেবার সর্দার ছাড়া কারো নাম বলতে পারবেন? খালি ইনজিনিয়ারের নামই নিউজে আসতে হবে আর ঐ লোকগুলি বাদ পড়ে যাবে?
আপনার মাথায় যে কাজের মডেলটা আছে, সেখানে রাতের বেলা নদীতে বস্তা ফেলাটা একটা "এক্সট্রা" কাজ, একটা অ্যাবাভ অ্যান্ড বিয়ন্ড ডিউটি। আমার মাথায় সেটা নাই। যদি তার কঠিন কাজের পুরস্কার দিতে চান, ডিপার্টমেন্ট থেকে তাকে বোনাস দেন, ইনক্রিমেন্ট দেন, এসিআরে ভালো ভালো কথা লিখে প্রোমোশন দেন, কিংবা আরামদায়ক কাজের জায়গায় বদলি করে তার জায়গায় একটা আইলসারে এনে সেই আইলসারে কাজ শিখান। কিন্তু নিজের কাজ করার জন্য নিউজে নাম আসার তো দরকার নাই।
দুর্নীতিবাজ হান্টিং করা আর সৎ লোককে প্রোমোট করা তো মিউচুয়ালি এক্সক্লুসিভ কিছু না। আপনি ভাত খান বলে কি বাথরুমে যাওয়া বন্ধ করে দিবেন?
"ইনজিনিয়ার হিসেবে তার কাজই কঠিন দায়িত্ব পালন করা।"
"একটা লোক তার কাজ করছে, সেজন্যে তাকে নিয়ে নিউজ করতে হবে" এ দুই পয়েন্টে একমত না।
প্রথমত, কারো রেগুলার দায়িত্বের জন্য আমি তাকে নিয়ে নিউজ করতে বলছি না। ৭০ লাখ টাকার নিয়ে ধরা পড়লে যেমন অফিসারের নাম আসে তেমনি হাজার মানুষের একরাতে নিঃস্ব হয়ে যাওয়া ঠেকাতে পারলে, সংস্লিষ্ট কর্মকর্তা ও তার সহযোগীদের নাম আসা উচিত। তাদের কৃতিত্ব দেশবাসীকে জানানো উচিত। ভালো ও কৃতিত্বপূর্ণ কাজের এপ্রিসিয়েসন না হলে কেউ ভেবেই দেখবে না সারা দেশে ২২০০০ কিমি রাস্তা কিভাবে টিকে আছে, যা তা গল্প ফেঁদে বসবে। জানবে না আইলা দূর্গত এলাকায় মাইলের পর মাইল কাদা পানি ভেঙে কারা পোল্ডার গুলো মেরামত করছে। কেউ ভাববে না হাওর অন্চলে বাম্পার ফলনের জন্য কারা পেছনের কারিগর। না হলে কেউ মনে করবে উনি নিজে ছাড়া দেশে কোন সৎ ব্যাক্তি নেই। কেউ জিজ্ঞেস করবে সৎ লোকের প্রমোটিং ক্যামনে করবো???? বিসিএস দিয়ে দূর্ণীতি করবো সবাই এই মনোভাবেই পরীক্ষা দিতে যাবে।
দুর্নীতিবাজ হান্টিং করা আর সৎ লোককে প্রোমোট করা তো অবশ্যই মিউচুয়ালি এক্সক্লুসিভ।।।।।। দূর্ণীতি বধের পাশাপাশি সেখানে সততা পূর্নপ্রতিষ্ঠা অবশ্যই দরকার।
আপনি কাজের সততা বা পরিশ্রমের স্বীকৃতি নিউজ মিডিয়ার কাছে চাইছেন কেন? সেটা চাইতে পারেন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কাছে। বাংলাদেশে কোটি কোটি লোক সৎভাবে পরিশ্রম করে জীবন যাপন করছে। আপনি যে বাজার থেকে চাল কিনে খান, সেটা একজন কৃষকের হাড়ভাঙা দুর্নীতিবিবর্জিত খাটুনির ফল। আপনি কি তার নাম নিউজ মিডিয়ায় দেখতে চান? যদি সব সৎ লোকের স্বাভাবিক সৎ কর্মের স্বীকৃতি নিউজ মিডিয়ায় আসতে হয়, তাহলে তো ঐ পেপার আপনি আলগাতে পারবেন না একা। নাকি আপনি ভাবছেন বছরে দুই চারদিন কাদা পানি ঠেলে পোল্ডার মেরামত (পোল্ডার ভাঙলে কাদাপানি না ঠেলে উপায় আছে?) করছেন দেখে আপনি দেশে একা সৎ লোক, আর বাকি সব ফালতু?
আপনি ভাত খেলেও আপনার ওপর নিউজ করা উচিত আসলে।
নকীব ভাই, আপনি যুক্তিহীন বকবক করে যাচ্ছেন অনেক্ষন ধরে। খুব সম্ভবত আপনি যুক্তিহীন মানুষ (অবশ্য যুক্তিহীন হলে মনুষ্য ক্যাটাগরিতে ফেলা যায় কিনা সে বিষয়ে সন্দেহ আছে)। অথবা কোন এক অদ্ভুত কারনে আপনার যুক্তিগুলো কাজ করতে চাইছে না। সেটাও সম্ভব। অনেক গরম পড়ছে তো...........
১। আপনি কিভাবে এই হাস্যকর সিদ্ধান্তে উপনীত হলেন যে, এই দেশের ১১ জন সরকারী কর্মকর্তার মধ্যে মাত্র ১ জন দুর্নীতিগ্রস্ত ? বিষয়টা কোনভাবেই বোধগম্য হচ্ছে না আমার। এই দেশের অনেক সরকারী পিয়নের ঢাকায় দুই চারটা বাড়ি আছে। প্রতিটা ডিপার্টমেন্টে যদি ৯০% লোক মেধাবী আর সৎ থাকত, তাহলে এরকমটা হওয়ার কথা ছিল না।
২। প্রতিটা ডিপার্টমেন্টে ৯০% লোক সৎ থাকলে, একজন অসৎ অফিসারও তখন সরকারী গাড়ির তেল বেচার সাহস পেত না কোনভাবে। তার চাকরী যাবার ভয় থাকত তখন।
৩। সৎ নিষ্ঠবান মানুষও এদেশে আছে। তবে তাদের চিন্তাভাবনা আপনার মত না, তারা পত্রিকার পাতায় নিউজ হবার জন্য কাজ করেন না। আর একজন মানুষ সততা আর নিষ্ঠার সাথে তার দায়িত্ব পালন করবে, সেটাই তো স্বাভাবিক। এটা নিয়ে নিউজের কি দরকার ! তাই না ? (নাকি এভাবে ভাবতে পারেন না আপনি ?
আপনি তারপরও একটা কিছু লিখবেন। বলবেন, "তালগাছ আমার"। আপনার মন্তব্যগুলো পড়ে মনে হচ্ছে, আপনি নিজেকে একজন বিশিষ্ট সৎ মানুষ ভাবতেছেন। ঠিক কি কারনে এইরকম অনুভূতি হচ্ছে, একটু জানাবেন প্লিজ।
আমার কমেন্ট পড়ে কি মনে হচ্ছে যে আমি নিজেকে বিশিষ্ট সৎ মানুষ বলে দাবি করছি!!!!
আপনি যে গল্পটা লিখেছেন তা ওই পত্রিকালব্ধ জ্ঞান থেকেই।
আমি মন্তব্যে যে কাজগুলোর কথা উল্লেখ করেছি তা খুবই টেকনিক্যাল, দুরহসাধ্য এবং পরিশ্রমের। এগুলো ভাত খাবার মতো রেগুলার কোন কাজ না-এটা বোঝার মতো অভিজ্ঞতা আপনার নেই।এ জন্যই হয়তো মতামত পাচ্ছি পোল্ডার মেরামত করা দু-চার দিনের কাজ।
পুলিশ চোর ধরে, মাদক ধরে, সব কি খবর হয়?!!! যখন ৫ খুনের আসামী বা ৭০ কোটি টাকার মাদক ধরে তখন খবর হয়। সেরকমই চ্যালেন্জিং,দুঃসাধ্য, টেকনিক্যালি কঠিন কোন কাজ ইন্জিনিয়ারা সম্পন্ন করতে পারলে সেটা অবশ্যই নিউজ হওয়া উচিত।
মডেল শখ ভাত খেলে নিউজ হয়, সারিকার জ্বর হলে পেপারে নিউজ হয়, সেখানের একজন সৎ-দক্ষ অফিসারের অসাধ্য সাধণও আপনাদের চোখে ভাত খাওয়ার মতো দেখায়।
আমাদের কিছু গর্ব করার মতো ইন্জিনিয়ারিং কাজ রয়েছে। তিস্তা ব্যারেজ, কাপ্তাই বাঁধ, জিকে সেচ প্রকল্প, বঙ্গবন্ধু ব্রিজ, শাহ আমানত ব্রিজ, আইলা দূর্গত এলাকায় পোল্ডার মেরামত, চাঁদপুর মোল হেড ইত্যাদি অসংখ্য কাজ একধরনের মাইলফলক-এক্সট্রিম ইন্জিনিয়ারিং(বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে, চিন-জাপান-ইউরোপের সাথে আবার তুলনা দিয়েন না) এদের পেছনের কারিগরদের মূল্যায়ন হয়েছে কি???? ক্রেডিট নিয়ে গেছে রাজনীতিবদিরা, আর আমরাও তার সাথে তাল মিলিয়ে গেছি। কিন্তু সমালোচনা করতে গেলে ইন্জিনিয়ারদের ধুয়ে দিই।
তেল চুরির খবর হয়েছে ১ জন নির্বাহী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে, সড়ক ও জনপথে নির্বাহী প্রকৌশলী আছে ১৫০-এর উপরে। রেশিওটা কত হলো জানাবেন।
সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলীদের সয়সম্পত্তির হিসাব নিলে রেশিওটা ১:১ এর খুব কাছাকাছি হতে পারে।
আপনার আর এ বি এম সাহেবের দুটো কমেন্টের জবাব নিচে দিয়েছি। ব্যক্তিগত ভাবে বাংলাদেশে তৃণমূল পর্যায়ে উন্নয়নমূলক কাজের সাথে জরিত না থাকলে, শুধু ধারণা নিয়ে বিতর্ক করলে আপনার মনে হবে পোল্ডার মেরামত দু-চার দিনের কাজ, মাঝ রাতে ৫-৭ কিলো প্রমত্তার নদীর ভাঙন ঠেকানো আর ভাত খাওয়া একই ধরনের কাজ। এর জন্য আর কি নিউজ হবে????!!!!!!!! নিউজ হবে---প্রভা আবার বিয়ে করলে।
আপনি সস্তা জনপ্রিয়তা নিয়ে শুরুতে বিরাট লেকচার দিয়ে এখন সেই সস্তা জনপ্রিয়তার জন্য একটা দুঃখের ইমো পর্যন্ত দিয়ে দিলেন দেখে আমি নিজেও দুঃখ পেলাম।
আপনার কাজই তো মাঝরাতে ৫-৭ কিলো প্রমত্তা নদীর ভাঙন ঠ্যাকানো। এইটা আপনি স্বীকার করছেন না কেন? ফায়ার সার্ভিসের লোকেরা আপনার চেয়ে বহু রিস্কের কাজ করে, কয়টা ফায়ার ফাইটারের নাম পেপারে আসে? মাঝরাতে ৫-৭ কিলো প্রমত্তা সাগর ঠেলে মাছ ধরতে যায় বাগেরহাটের জেলেরা, সেই মাছের শুঁটকি আপনি খান, কয়জনের নাম পেপারে দেখার জন্য জেহাদ করছেন? মাঝরাতে হাজার হাজার লোক মোট বয়, ক্ষেতে সেচ দেয়, কারখানায় লেট শিফটে কাজ করে, কয়জনের নাম পেপারে দেখতে চান?
মাঝরাতে কোটি কোটি লোক কোটি কোটি মেয়েলোকের সাথে শোয়, কিন্তু পেপারে ঐ প্রভার নামই আসবে। আপনি একজন ইনজিনিয়ার, নিজের রুটিন কাজ করার জন্য পেপারে প্রভার নিউজের নিচে নিজের নাম দেখতে চেয়ে কান্নাকাটি করলে হবে? মিয়া সময় থাকতে তো প্রভারেও বিয়ে করলেন না, পেপারে নাম আসবে ক্যাম্নে?
আপনি যদি মনে করেন, আপনি আন্ডার অ্যাপ্রিশিয়েটেড, তাহলে নিজের হিরোইক কাজের বর্ণনা দিয়ে একটা পোস্ট দেন, নিজের ঢোল নিজে পিটান। সাংবাদিকের হাতে নিজের ঢোল তুলে দেয়া নিজের হোল তুলে দেয়ার মতোই বিপদজনক ব্যাপার, কখন কোন জায়গায় বাড়ি দিয়ে ফাটায় ফেলবে ঠিক নাই।
----------------------------------------------------------------------------------------------
"একদিন ভোর হবেই"
_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩
দেখুন, নিজেকে ব্যক্তিগতভাবে মহান প্রমাণ করা কোন ইচ্ছা আমার নেই। আর আমি ওই রকম কির্তীকর্মাও নই। তবে ব্যপারটা এখন আপনি ব্যক্তিগত পর্যায়ে নিয়ে গেলেন। আমি আমার সমস্ত কমেন্টে ইন্জিনিয়ার কমুনিটি-এর পক্ষ হতে কথা বলেছি। নিজের ঢোল পেটানোর কোন চেষ্টা করিনি। আর আমার কমেন্টের বক্তব্য ইন্জিনিয়ার কমুনিটি-এর জন্য যেমন সত্য, তা বিজিবি,ফায়ার ব্রিগেড, বাগেরহাটের জেলে,কৃষক, কৃষি বিজ্ঞানী ইত্যাদি ইত্যাদি এদের জন্যও সত্য। বিতর্কের সীমাবদ্ধ রাখার খাতিরে আমি শুধু ইন্জিনিয়ার কমুনিটি উদাহরণ ও দৃষ্টকোণ ব্যবহার করেছি।
তবে মাঠপর্যায়ে বাংলাদেশের কি পরিবেশে উন্নয়নমূলক কাজ করা হয় সেটা নিয়ে লেখার ইচ্ছা আছে। চার ডীগ্রীতে এসিতে বসে যে উন্নয়ন পরিকল্পনা করা হয় সেটা ৪০ ডিগ্রীতে এক্সিকিউশন করতে কত কত প্রতিকূলতার মুখোমুখী হতে হয় তা বর্ণনা করা ইচ্ছা রইলো।
আশা করি বিতর্কে সহিন্ষুতার পরিচয় দেবেন। যুক্তি খন্ডন করতে না পারলে, "তাহলে নিজের হিরোইক কাজের বর্ণনা দিয়ে একটা পোস্ট দেন" এই ধরণের আক্রমন শোভন নয়। "মিয়া সময় থাকতে তো প্রভারেও বিয়ে করলেন না, পেপারে নাম আসবে ক্যাম্নে?"-এই ধরণে লঘু-চপল কমেন্ট করে আপনি আপনার যুক্তির দূর্বলতাই মেলে ধরলেন।
আমার প্রথম কমেন্ট ভালো করে দেখুন, আমি কি বলতে চেয়েছি।"সস্তা জনপ্রিয়তা নিয়ে শুরুতে বিরাট লেকচার"-এর সাইজ মাত্র চার লাইন।
আমি সৎ অফিসারদের প্রথমে "প্রতিটি ডিপাটমেন্টে তাদেরকে কেউ প্রমোট করে না"-এ কথা বলেছি। "কিভাবে প্রমোট করা উচিত" এই প্রশ্নের জবাবে আমি বলতে চেয়েছি - এই শূন্যতাটা মিডিয়া পূরণ করতে পারে। তবে তারা ব্যবসায়িক ভিত্তিতেই নিউজ/প্রতিবেদন করতে বেশি পছন্দ করে। নেগেটিভ নিউজে ব্যবসা ভালো হয়। কারণ পত্রিকাগুলো মালিক ব্যবসায়ী।
"অসহিষ্ণু" মন্তব্য করে আপনার কোমল চিত্তে আঘাত দিয়ে থাকলে ক্ষমা চাই। কিন্তু প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে মূল্যায়ন না পেয়ে মিডিয়ার কোলে আশ্রয় খুঁজলে ব্যাপারটা শেষমেশ ঐ পত্রিকার ব্যবসায়ী মালিকের হাতই কিন্তু শক্ত করে, এটা বোঝেন? আপনি পত্রিকার মালিককে আজকে ব্যবসায়ী বলছেন, আবার এই ব্যবসায়ীর কাছেই নিজের মূল্যায়ন চাইছেন, নিজের প্রতিষ্ঠানের কাছে না চেয়ে। আপনি তো নিজের মান নিজেই ডুবাচ্ছেন পোল্ডারভাঙা পানিতে।
আরে মিয়াঁ আপনার মাথায় একটা জিনিস ঢুকতেছে না। মানুষ পড়ালেখা করে ইঞ্জিনিয়ার হয় মাঝরাতে নদী ভাঙ্গন শুরু হলে সেটা ঠেকানোর সমাধান দেওয়ার জন্যে। অফিসে বসিয়ে ফাইল সই আর পাতলা কাগজ ছাড়ার জন্যে বেতন দিয়ে প্রফেশনাল রাখা লাগে না। যার যা কাজ তার জন্যে তাকে মাথায় তুলে নাচার কিছু নাই, বরং ক্রাইসিস মোমেন্টে দায়িত্ব ঠিকমত পালন করার তাকত না থাকলে ছুড়ে ফেলাই দরকার।
_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩
আমি কারো কাছে চাইছি না যে ভালো, সৎ কাজের মূল্যায়ন করতেই হবে। এ সংস্কৃতি যে আমাদের মাঝে নেই সেটাই আমি এতক্ষণ ধরে বুঝাতে চেয়েছি। আমরা ধরে নিচ্ছি যে ভালো কাজ করা একজন প্রফেশসালের দায়িত্ব। কিন্তু তার ভালো কাজটাকে মূল্যায়ণ করা যে আমাদের দায়িত্ব এটা এড়িয়ে যাচ্ছি। যারা সৎ তারা প্রচারণার ধার ধারে না সত্যি কিন্তু তাদেরকে সেই লুকোনো কোন থেকে বের করে এনে আরো বেশি বেশি ভালো কাজ করার জন্য মোটিভেটেড করা কি আমাদের দায়িত্ব না?????!!
নিজের প্রতিষ্ঠান অথবা মিডিয়া বা আমরা কেউই এই দায়িত্বের বাইরে নই।
নকীব ভাই, চোর বাটপারের চেহারা সবার সামনে তুলে ধরা যেমন আমাদের দায়িত্ব, ঠিক তেমনি ভালো মানুষের খবর সবাইকে জানানো ও আমাদের দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে, এটা মানি।
কিন্তু আপনার কি কারনে মনে হল যে আমাদের দেশে ভালো মানুষদের প্রমোট করার জন্য কিছুই করা হয় না ! আজব কথা বলছেন। পত্র পত্রিকায় তাদের নিয়ে বিশেষ ক্রোড়পত্র বের হয় নিয়মিত। আমি প্রথম আলোর শনিবারের বিশেষ ক্রোড়পত্রের কথা বলতে পারি। এইরকম আরো অনেক আছে। টিভি মিডিয়া তে তাদের নিয়ে বিশেষ প্রতিবেদনও হতে দেখেছি। ইত্যাদি তে এইরকম মানুষদের নিয়ে নিয়মিত একটা অংশ থাকে, সেটা দেখে আসতেছি ক্লাস টু থেকে। তারপরও বলবেন প্রমোট করা হয় না? ভালো মানুষদের কোন না কোনভাবে প্রমোট করা হচ্ছে এবং সামনেও হবে। কিন্তু সেজন্য ভালো মানুষের দরকার তো, নাকি?
"সস্তা জনপ্রিয়তার জন্য আমরা এই ধরনের লেখা লিখি"- এই ধরনের সস্তা মন্তব্য না করলেও পারতেন।
আপনার কথাটিকে বেশ ভিত্তিহীন মনে হলো। সরকারী চাকরিতে প্রতি ১১ জনের মধ্যে মাত্র একজন দুর্নীতিবাজ?
দয়া করে কি তথ্য সুত্র দিবেন ??
ভাল লাগল আপনার লেখা।
আপনার দুটো পোষ্টই দারুণ হয়েছে।
নিয়মিত লিখুন।
উৎসাহ দেয়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ দাদা।
অস্থির!!!
এই গল্পটি কেউ কেউ বিশ্বাস করেনি দেখা যাচ্ছে। তারা এর চেয়েও ভয়ংকর চোর দেখেনি বলেই হয়তো। এই দরিদ্র দেশটা কারো কারো জন্য টাকার খনি সেটা নিজ চোখে না দেখলে বিশ্বাস হবে না। আমি গল্পটিতে বিশ্বাস করেছি, তবে কিছু জায়গায় বিশ্বাসযোগ্যতা ক্ষুন্ন হয়েছে যেটা এড়ানো যেতো। লিখতে থাকুন।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
এই ধরনের লেখা কারো কারো ভালো লাগবে, আবার কেউ কেউ একেবারে পছন্দ করবে না, সেটাই স্বাভাবিক।
গল্পের কিছু জায়গা অনেকের কাছে যুক্তিসংগত মনে হয় নি। ব্যক্তিগতভাবে আমার মনে হয়, ওই জায়গাগুলোতে আমি হয়ত খুব দুর্বল কিছু যুক্তি ব্যবহার করেছি। যুক্তিগুলো দুর্বল হতে পারে, কিন্তু একেবারে অসম্ভব কিছু নয়। (একান্তই আমার ধারনা)
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ নীড় সন্ধানী।
আমি যখন মার্কিন দেশে মাস্টার্স ডিগ্রির দ্বিতীয় বছরে তখন ঢাকা থেকে একটা ছেলে এসেছিল সিভিলে মাস্টার্স করতে। দুই মাস পরেই সে চলে গেল, বিসিএসে রোডস এন্ড হাইওয়েজে কাজ পেয়েছে। রেজাল্টের অপেক্ষাতেই থাকতেই চলে এসেছিল আমেরিকাতে।
রোড'সে পয়সা অনেক এই জন্যই যাওয়া - কোন ভনিতা না করেই জানিয়ে দিল সে। চৌর্যবৃত্তির উদ্দেশ্যেই যে চাকরিতে ঢোকা সেই ডিপার্টমেন্টের অবস্থা কি হতে পারে সেটা আন্দাজ করা যায়।
ইঞ্জিনিয়ারের বউয়ের প্রহারে কাজের মেয়ের মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে - পয়সা খরচ করে আবার ঝামেলা মুক্ত হয়েছে এটাও শুনেছি ক্লোজ সার্কেল থেকে।
আমি নিজেও ইঞ্জিনিয়ার তাই বলতে দ্বিধা নেই - এই সম্প্রদায়ের মধ্যে ধর্মান্ধ আর চোর - এই দুই শ্রেণীর লোকের আধিক্য যথেষ্ট।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
আমার মনের কথা এইটা। আমিও একজন ইন্জিনিয়ার।
ভাল লেগেছে লেখাটা। বুয়েটে রড দিয়ে চোর পিটাতে আমি নিজের চোখে দেখেছি। রশীদ হলে সেদিন ছাত্রদের অগ্নিমূর্তি দেখে আমি থামানোর সাহস পাইনি, হলের মামার কাছে যেয়ে সিকিউরিটি অফিসারকে ফোন করতে বললে শুনি তারা ইতমধ্যে খবর দিয়েছে এবং সিকিউরিটি অফিসার আসছে। একটু পরে সিকিউরিটি অফিসার এসে উদ্ধার করে তাকে।
রশীদ, তিতুমীর, নজরুল- এখন পর্যন্ত তিনটা হল থেকে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। তবে অন্য হলগুলোতেও এই ঘটনা ঘটছে, আমি নিশ্চিত।
চোর পেটানোর অতি পরিচিত গল্প। গত সপ্তায়ও এমন ঘটনা ঘটেছে, খবর এসেছে পত্রিকায়। আর ইঞ্জিনিয়ার সংক্রান্ত ঘটনাটাওতো অপরিচিত কিছু না। কিন্তু বলার ধরণটা আরেকটু টান টান হতে পারতো। অন্যভ্যস্থ ঠেকেছে ভাষাটা। গল্প বলার দক্ষতা অর্জন করার জন্যে আরো লিখতে হবে, সাথে পড়াটাও চালানো উচিত। চলুক।
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
আলবাব ভাই, আপনার সাথে পুরোপুরি একমত আমি। গল্প বলায় দক্ষতা অর্জন সহজ কোন বিষয় না। আমাকে আরো লিখতে হবে, আর নিয়মিত পড়ার অভ্যাস তৈরী করতে হবে।
মতামতের জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
নতুন মন্তব্য করুন