কম্পিটারের সামনে বসে একটা রিপোর্ট সম্পাদনা করছি, এমন সময় আমার মুঠোফোনটা বেজে উঠল। স্ক্রীনে চোখ রেখে দেখি, বন্ধু তারেকের কল-
'হ্যালো তারেক কেমন আছিস?'
'ভালো, তুই কেমন আছিস?'
'ভালো, তারপর...অনেক দিন পর হঠাৎ মনে পড়ল...'
'হ্যাঁ, একটা ইন্টারেস্টিং জিনিস দেখাব তোকে। যদি সময় দিতে পারিস বিকেলে তোর অফিসে চলে আসি?'
'অবশ্যই, অবশ্যই। পাঁচটা থেকে ন’টা পর্যন্ত অফিসেই আছি। তুই যেকোন সময় চলে আয়।'
'ঠিক আছে।' বলে ফোন রেখে দিল তারেক।
বিকেলে রিসেপশন থেকে ফোন এলো তারেক নামের এক ভদ্রলোক নাকি আমার সাথে দেখা করতে চায়। আমি ওকে ভেতরে পাঠিয়ে দিতে বললাম।
তারেক ভেতরে এলো। হালকা ইয়ার্কি-ঠাট্টার পর আসল কথায় এলাম।
বেয়ারা চা দিয়ে গেছে। ধুমায়িত চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে বললাম, 'তোর চোখে রহস্যের গন্ধ পাচ্ছি...আসল ব্যাপার কী, খুলে বল তো...'
'রহস্যের ব্যাপারটা যখন ধরেই ফেলেছিস, ভণিতা না করে সোজাসুজিই বলি, ‘মুখে মিষ্টি একটা হাসি ফুটিয়ে বলল তারেক, ‘ঈদের ছুটিতে এবার দর্শনায় গিয়েছিলাম শ্বশুর বাড়িতে। দর্শনার কাছেই উথলী গ্রামে বহু পুরোনো একটা জমিদার বাড়ি আছে। কয়েক বছর আগেও সেই বাড়িতে জমিদারের এক বংশধর বাস করতেন। কে জানিস?' আমার দিকে প্রশ্নবোধক দৃষ্টিতে তাকাল তারেক।
ওর এই প্রশ্নের জবাব আমার জানা নেই বলে চুপ থাকলাম।
'ড. মকসুদ জামিল!'
যেন বোমা ফাটাল তারেক। আমি একেবারে থ! জামিল ছিলেন বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী ও আবিষ্কারক। বিচিত্র-অদ্ভুত সব কর্মকাণ্ডের জন্য এখনো বাংলাদেশসহ পৃথিবীর কোটি কোটি বিজ্ঞানপিপাসু মানুষের হৃদয়ে অমর হয়ে আছেন। বেশ কয়েক বছর যাবত তিনি নিখোঁজ। কোথায় আছেন, কেমন আছেন, কিংবা আদৌ বেঁচে আছেন কিনা, তা নিশ্চিত করে বলতে পারে না কেউ। তাঁর অন্তর্ধান নিয়ে বিশ্বব্যাপী তৈরি হয়েছে হাজারো গালগল্প। কোন সত্যি, কোনটা মিথ্যা তা জানি নে, তবে আমার বন্ধুটি যে তাঁর সম্পর্কে গূরুত্বপূর্ণ তথ্য নিয়ে এসেছে তা বেশ বুঝতে পারছি।
তারেক কাঁধের ব্যাগটা খুলে সবুজ রংয়ের একটা ডায়েরি বের করে আমার দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বলল, 'ডায়েরিটা টেনে দ্যাখ-'
আমি ওর কথা শুনে ডায়েরির লম্বালম্বি দুই প্রান্ত ধরে একটু টান দিতেই সেটা কম্পিউটারের সফট ফাইলের মতো লম্বা হতে শুরু করল! আমার চোখ চড়কগাছ! এ কীভাবে সম্ভব? আরো নিশ্চিত হওয়ার জন্য আড়াআড়ি ভাবেও টেনে দেখলাম। এবারও একই অবস্থা। নিজ চোখে দেখেও বিশ্বাস হতে চাইল না। তাই পৃষ্ঠাগুলো ভালোকরে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখলাম- সেগুলো রাবার বা নমনীয় কোনো পদার্থের তৈরি নয়। সাধারণ কাগজের মতোই মনে হলো।
আমার ভ্যাবাচ্যাকা অবস্থা দেখে তারেক বলল, 'এতক্ষণ তো ডায়েরিটা টেনে শুধু লম্বাই করলি। এবার উল্টো কাজটা করে দ্যাখ্... ডায়েরি ছোট হয়ে যাবে।'
আমি ওর কথামতো ডায়েরিটার দু'মাথা ধরে চাপ দিলাম। সত্যি সত্যি ওটা ছোট হয়ে গেল। কীভাবে এমনটা হচ্ছে সে রহস্যটা মোটেও ধরতে পারলাম না। তবে এটুকু বুঝলাম ডায়েরিটার বড় একটা সুবিধা হচ্ছে, পরিবহনের সময় একে ইচ্ছেমতো ছোট্ট বাক্সে যেমন ঢোকানো যায়, তেমনি পড়তে যাতে অসুবিধা না হয় সেজন্য ইচ্ছেমতো টেনে বড় করার এই ব্যবস্থা।
'তাই বলে যত টানবি ওটা তত বড় হবে না-' মাথা চুলকাতে চুলকাতে বলল তারেক। 'মানে আমি বলতে চাচ্ছি, এর সংকোচন প্রসারণেরও একটা সীমা আছে। দৈর্ঘ্যে দেড়ফুট আর প্রস্থে এক ফুটের চেয়ে লম্বা হবে না কখনোই। তেমনি দৈর্ঘ্যে দেড় ইঞ্চি এবং প্রস্থে এক ইঞ্চির চেয়ে ছোটও হবে না কখনো।'
এবার ডায়েরির কভার উল্টিয়ে রেখে ভেতরের একটা পৃষ্ঠা টেনে লম্বা করার চেষ্টা করলাম। কিন্তু কাজ হলো না। বুঝলাম, বন্ধ অবস্থাতেই কেবল টেনে লম্বা কিংবা চেপে সংকুচিত করা সম্ভব।
সেদিন রাতে বিছানায় শুয়ে ডায়েরিটা পড়েছি আর রোমাঞ্চিত হয়েছি। হারিয়ে গিয়েছি যেন কল্পলোকের মায়াময় জগতে। ডা.জামিলের আশ্চর্য সেইসব অভিযানের একটা অংশ ডায়েরির পাতা থেকে পাঠকদের জন্য তুলে ধরছি। সম্ভব-অসম্ভব, সত্য মিথ্যা বিচারের ভার পাঠকদের।
ড. জামিলের ডায়েরি
২০ মার্চ
আমার ব্যক্তিগত ল্যাবরেটরীতে বসে কাজ করছি, পরিচারক জগমোহন এসে বলল, 'সাহেব, বাইরে পিওন দাঁড়িয়ে আছে, আপনাকে খুঁজছে।'
যখন কাজে ব্যস্ত থাকি তখন কেউ আমাকে বিরক্ত করুক, এটা আমি পছন্দ করি না। তাই জগমোহন এটা-ওটা বুঝিয়ে আগন্তুকদের বিদায় করে দেয়। তবে ডাকপিওন, কোনো বিচিত্র ঘটনার সংবাদদাতা কিংবা অতি পরিচিত কিছু বন্ধু বান্ধব এলে তাদেরকে ফিরিয়ে দিতে আমার বারণ আছে।
কাজ রেখে বাথরুমে গিয়ে হাত মুখ পরিষ্কার করে ড্রয়িংরুমে ঢুকে দেখি, বেশ মোটাসোটা একটা রেজিস্ট্রি খাম হাতে নিয়ে পিওন বসে আছে। আমাকে দেখে সালাম জানিয়ে আমার দিকে বাড়িয়ে দিল একটা রেজিস্ট্রি খাতা। সাক্ষর শেষ হলে খামটা আমার হাতে ধরিয়ে দিয়ে আরেকবার সালাম জানিয়ে বেরিয়ে গেল সে। খামটা খুলে দেখি একটা চিঠির সাথে একবোঝা কাগজপত্র। চিঠিটা মেলে পড়তে শুরু করলাম-
প্রিয় জামিল,
আশা করি ভালো আছিস। প্রায় পাঁচ বছর তোর সাথে কোন যোগযোগ নেই। তোর মোবাইল নম্বরটাও জানি না যে ফোন করব। তাই ভাবছি এবার ছুটি পেলে তোর ওখানে বেড়াতে যাব। এদিকে এক বিচিত্র ঘটনা ঘটেছে। খবরটা তোর নজরে পড়েছে কিনা জানি না- হঠাৎ করেই সুন্দরবনে এক বড় ধরনের উল্কাপাত ঘটেছে। উল্কার গন্ধ পেয়ে এরই মধ্যে এখানে এসে হাজির হয়েছে দুই সাদা চামড়ার সাহেব আর এক ইন্ডিয়ান সর্দারজি। এখানে কী যেন খুঁজছে তারা। তবে কী খুঁজছে সে বিষয়ে মুখ খুলছে না। দিন পাঁচেক আগে কালিন্দি নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে দেড়ফুট লম্বা আর চার ইঞ্চি ব্যাসের একটা লোহার রড কুড়িয়ে পেয়েছি। প্রথমে ভেবেছিলাম রডখানা নিরেট। কিন্তু পরশুদিন হঠাৎ রডের গায়ে চুলের চেয়েও সরু এবং চুড়ির মতো গোলাকার একটা দাগ চোখে পড়ে। তখন আমার মনে হলো রডের গায়ে প্যাঁচ আছে। দাগের দু'পাশে রডের দু'মাথা ধরে জোরসে একটা মোচড় দিতেই চচ্চড় শব্দ করে প্যাঁচ ঢিলা হয়ে হয়ে গেল এবং রড বিভক্ত হয়ে গেল দু'ভাগে। রডের ভেতরটা ফাঁপা এবং এর ভেতর থেকে পাণ্ডুলিপি আকারের এক গাদা কাগজপত্র বেরিয়ে এলো। আমার দৌড় ওই পর্যন্তই- শুধুমাত্র দুটো ছবি ছাড়া একঝুড়ি পাণ্ডুলিপির একটা বর্ণও বুঝতে পারলাম না। আমার মনের ভেতর কেন জানি খচখচ করছে। মনে হচ্ছে, এর পেছনে বড় কোনো রহস্য লুকিয়ে আছে। হয়তো এর নেপথ্যেই লুকিয়ে আছে সুন্দরবনে উল্কাপাত ও তিন বিদেশির আগমনের কারণ। আমার বিশ্বাস তুই-ই পারবি এই পাণ্ডুলিপির পাঠোদ্ধার করতে।
আজ আর নয়, নিচে আমার মোবাইল নম্বরটা দিলাম, পাণ্ডুলিপির পাঠোদ্ধার করতে পারলে আমাকে জানাস।
ইতি,
তোর বন্ধু
আফজাল আহমেদ
বিদ্র : মোবইল নং- ০১.........
চিঠিটা ভাঁজ করে পাণ্ডুলিপিটা হাতে তুলে নিলাম। ঠিকই বলেছে আফজাল- একটা হাতে আঁকা পিস্তল আর একটা ট্যাবলেটের ছবি ছাড়া ত্রিশ পৃষ্ঠার ঐ কাগজের স্তূপের একটা বর্ণও বুঝতে পারলাম না। আসলে কোনো বর্ণ দিয়ে পাণ্ডুলিপিটা লেখা নয়- সংখ্যা দিয়ে লেখা। অক্ষরের পরিবর্তে ০-৯ সংখ্যাগুলি বিভিন্ন্ ভাবে পাশাপাশি সাজিয়ে পাণ্ডুলিপিটা লেখা হয়েছে। মনে হচ্ছে, গাণিতিক কোনো সংখ্যাতত্ত্ব ব্যবহার করে লেখা গোপন কোনো প্রবন্ধের পাণ্ডুলিপি এটা। এখন গাণিতিক ফর্মূলাটা ধরতে পারলেই পাণ্ডুলিপির পাঠোদ্ধার করা সহজ হবে।
উল্কাপাত, পাণ্ডুলিপি আর তিন বিদেশিদের সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানার জন্য রাতে আফজালকে ফোন করলাম।
২২ মার্চ
গত ৩০ ঘন্টা অনেক চেষ্টাচরিত করেও পাণ্ডুলিপির পাঠোদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। লিবনিজ, গাউস, ল্যাগ্রাঞ্জ, অয়লার, রামানুজনসহ পৃথিবীর সব হোমরা চোমরা গণিতজ্ঞদের তত্ত্ব ব্যবহার করেও দেখেছি- ফল শূন্য! কুড়িয়ে পাওয়া এই পাণ্ডুলিপিটাকে প্রথমে আমি খুব সাধারণ ভেবেছিলাম। আমার ক্রমাগত ব্যর্থতা ধীরে ধীরে এর রহস্যময়তা বাড়িয়ে দিচ্ছে।
গণিতের সব প্রচেষ্টাই যখন ব্যর্থ, ভাবছি এবার অন্যপথে হাঁটব। মনে হচ্ছে, আফজালের ধারণাই ঠিক, সুন্দরবনের উল্কাপাতের সাথে রহস্যময় পাণ্ডুলিপিটার কোন যোগসাজস রয়েছে। উল্কাপাত সম্পর্কে একটু ভালোকরে খোঁজখবর নেয়া প্রয়োজন।
গত ন'মাস আমি খাওয়া, গোসল ও রাতে কয়েক ঘন্টা ঘুম ছাড়া বাকি সময়টুকু ল্যাবরেটরীতেই কাটিয়েছি জৈব রোবট তৈরির পেছনে। পত্রিকা পড়া, টিভি দেখা কিংবা ইন্টারনেটে বসার সময়টুকুও বের করতে পারিনি। তাই এই ন'মাসে পৃথিবীর কোথায় কখন কী ঘটেছে তা আমার অজানা।
ইংরেজি-বংলা দেশি-বিদেশি মিলিয়ে গোটা বিশেক পত্রিকা ও ম্যাগাজিন রাখি বাড়িতে। আর ইন্টারনেটের ব্লগ পত্রিকার দুনিয়া তো আছেই। জগমোহনকে বললাম ১২ মার্চ থেকে এ পর্যন্ত প্রতিটা দিনের প্রতিটা কাগজ আমার টেবিলে রেখে যেতে ।
২৮ মার্চ
গত পাঁচদিন জৈব রোবট তৈরির প্রজেক্ট থেকে মনটাকে সরিয়ে পুরোপুরি ডুবিয়ে রেখেছিলাম পত্রিকার আর ইন্টারনেরে মধ্যে, বিশেষ লাভ হয়নি। উল্কাপাতের সাথে পাণ্ডুলিপির আদৌ কোনো সম্পর্ক আছে বলে মনে হচ্ছে না। তবে আমি এখনই হাল ছাড়ছি না। এখন ঐ তিন বিদেশি কী খুঁজতে এসেছে জানতে পারলে ভালো হত। ভাবছি আফজালকে ফোন করব। বিদেশিদের পেছনে লেগে থেকে তাদের সম্পর্কে একটু ভালো করে যেন খোঁজ-খবর নেয়।
কিন্তু আফজালের ফোন বন্ধ। আগের দিন ফোন করে ওর ই-মেইল আইডিটা নিয়ে রেখেছিলাম; মেইল করতে গিয়ে দেখি আইডিটা অকার্যকর! ব্যাপারটা ঘোলাটে হয়ে যাচ্ছে। এখন ডাকবিভাগই শেষ ভরসা।
৩০ মার্চ
আফজালকে একটা চিঠি লিখেছি। চিঠিটা পোস্ট করার জন্য জগমোহনকে ডাকব ভাবছি, তার আগেই সে এসে হাজির। আমার হাতে এক কাপ গরম চা ধরিয়ে দিয়ে বলল, 'সাহেব ড্রয়িংরুমে পিওন বসে আছে।'
চা'টা শেষ করে ড্রয়িংরুমে গেলাম। আফজালের চিঠি এসেছে। একই সাথে ভয় ধরানো ও উৎসাহ জাগানো সংবাদ জানিয়েছে চিঠিতে-
প্রিয় জামিল,
আশা করি, কুশলে আছিস। আমি অত্যন্ত ভয়ের মধ্যে দিনযাপন করছি। তোকে আগের চিঠিতে যে তিন বিদেশির কথা জানিয়েছিলাম, ওরা তোর কাছে পাঠানো ঐ দুর্বোধ্য পাণ্ডুলিপির খোঁজেই এদেশে এসেছে। ভাগ্যিস ওটা তোর কাছে পাঠিয়ে দিয়েছিলাম। তা না হলে ওরা পাণ্ডুলিপিটা আমার কাছ থেকে কেড়ে নিয়ে এতো দিনে চম্পট দিত। জানি না ঐ দুর্বোধ্য পাণ্ডুলিপিতে কী আছে! তবে ওটা যে অনেক মূল্যবান তা ওদের আচরণে টের পাওয়া যাচ্ছে। ওরা কীভাবে জানি জেনে গেছে, আমিই পাণ্ডুলিপিটা কুড়িয়ে পেয়েছি।
প্রথমে কদিন খুব ভদ্রভাবে আমাকে পটানোর চেষ্টা করেছে। পটাতে না পেরে এক সময় বড় অঙ্কের টাকাও অফার করে বসে। আমি ওদের অফার চোখ-কান বুজে ফিরিয়ে দিই। শেষমেষ আমাকে কিডন্যাপ করে খুন করে লাশ গুম করে দেয়ার হুমকিও দিয়েছে। ব্যাপারটা পুলিশকে জানিয়েছিলাম। আমার মনে হচ্ছে, বিদেশিদের অনেক ক্ষমতা। পুলিশও ওদেরকে সমীহ করে। গোপনে খোঁজ-খবর নিয়ে বুঝেছি, ওরা সাতক্ষীররা মেবাইল ও ইন্টারনেট নেটওয়র্ক হ্যাকিং করেছে।
আমার মোবাইলে আড়িপাতা ওদের জন্য খুবই সহজ কাজ, তাই মোবাইলের সিমকার্ড চেঞ্জ করেছি শুধু আত্মীয়-স্বজন আর সাধারণ কিছু বন্ধু-বান্ধবের সাথে কথা বলার জন্য। ওই সিম দিয়ে তোর সাথে কথা বলে ওদের কাছে তোর পরিচয়টা জানাতে চাই না। একই কারণে আমার ই-মেইল আইডিটাও ইচ্ছা করে নষ্ট করে ফেলেছি। আমার ধারণা তথ্য-প্রযুক্তির এই যুগে কারও কাছে চিঠি লিখে যোগযোগ করব এটা ওদের মাথায়ই আসবে না। তাই তোকে চিঠি লিখলাম। আমাকে কিছু বলার থাকলে নিচে যশোরের একটা ঠিকানা দিলাম, সেখানে লিখিস, আমি পেয়ে যাব।
জামিল, মনে হচ্ছে, ওটা পাচার হয়ে গেলে আমাদের অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যাবে। তুই ওটা বুক দিয়ে আগলে রাখিস। আর পাঠোদ্ধার করতে পারলে আমাকে জানাস।
আজ তাহলে এখানেই শেষ করি। ভালো থাকিস।
ইতি,
তোর আফজাল
যশোরের ঠিকানা
উদিচী শিল্পগোষ্ঠি
রেলরোড, যশোর
আফজালকে কিছুদিনের জন্য গা ঢাকা দিয়ে থাকার পরামর্শ দিয়ে আমিও যশোরের ঠিকানায় একটা চিঠি লিখলাম।
(চলবে)
----------------------
আব্দুল গাফফার রনি
*শুরু হল জামিল শিরিজের প্রথম কাহিনি 'ভিনগ্রহের পাণ্ডুলিপি'র পথচলা। সচলে লেখক-পাথকদের সাড়া পেলে ধারাবাহিক ভাবে পোস্ট হবে।
মন্তব্য
প্রিয় আব্দুল গাফফার রনি,
আপনার ইমেইল (স্প্যাম ফ্লোডার সহ) চেক করে দেখবেন। আপনার ইমেইল ঠিকানা বরাবর একটি বার্তা যাবার কথা সচলায়তন থেকে।
ধন্যবাদ।
প্রথমেই অভিনন্দন। আপনি বোধহয় হাচল হয়েই গেলেন। আর একটা কথা, আপনার এই ডায়েরীটা এখনও আছেতো নাকি আপনার বইয়ের তাকে থাকা অবস্থায় তেলাপোকা খেয়ে ফেলেছে?
ভাল লাগছে।।। শঙ্কুর কথা মনে পড়ছে খালি। চলুক।
আমারটা খায়নি রে ভাই। ও জিনিস খাওয়ার সাধ্য তেলাপোক, পিঁপড়ে বা ইঁদুরের নেই। ভিনগ্রহের এলিয়েনরাও পারবে না। তবে ভয় হচ্ছে বন্ধুবেশি চোরদের নিয়ে। 'বই চোর চোর নয়' এই প্রবাদে তাঁদের আস্থা শতভাগ!
একটু অবাকই হলাম রনি, লক্ষ্য করে দেখলাম এটা আমার সম্পাদিত কপি নয়।
তাতে অবশ্য কিছু আসে যায় না, লেখকের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করাটা আমি অপছন্দই করি।
তবে এই লেখাটার ক্ষেত্রে আপনি আমার নাম উল্লেখ করেছেন বলেই, বলা।
হাচল হয়ে গেলেন নাকি?
অভিনন্দন।
নিলয়দা, একটু খেয়াল করলেই বুঝতে পারবেন এটা আপনার সম্পাদিত কপিই। যে কপি আপনাকে দিয়েছিলাম সে কপিতে জামিল ইন্টানেট-মোবাইল, এমনকী টেলিফোনও ব্যভার করতেন না, ডায়েরীর ছোট-বড় হয়ে যাওয়ার কায়দাটারও একটা ব্যাখ্যা দেয়া হয়ছে।
----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony
শুধু বিষয়বস্তু নয়, আমি ভাষাগত/বাক্য বিন্যাস ইত্যাদিতেও কিছু পরিবর্তন করে দিয়েছিলাম। সেগুলো দেখছি না।
সে যাক, আপনার নামটা ইংরেজিতে কেন?
(বাংলায়)
এখানেই ত সচলের প্যাঁচটা বুঝে উঠতে পারিনি- দিয়েছি ইংরেজি নাম বসিয়ে! এখন আর কি করা?
----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony
প্রতিদিন আসবে তো???
নিড়পাতা থেকে একটা না সরলে তো আরেকটা পোস্ট করতে পারি না!
অভিনন্দন আপনাকে। পরবর্তী লেখা পাঠিয়ে দিন।
অপেক্ষা করুন
অনেকদিন পর দেশীয় পটভূমিতে রোমাঞ্চকর এক বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী পড়লাম। সিরিজটা জমবে মনে হচ্ছে। সত্যজিত রায়ের মহাপ্রয়াণের পর, প্রফেসর শঙ্কুর মত একটা সিরিজের জন্য মনে একটা আক্ষেপ ছিল। জামিল সিরিজটা সেই অভাব কিছুটা পুরোন করতে পারবে বলে মনে হচ্ছে কেন জানি। একটাই অনুরোধ কাহিনীর গাঁথুনি যেন এর প্রথম পর্বের মতই শক্তভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে থাকে পুরো গল্পে। ধন্যবাদ।
___________________________________
অন্তর্জালিক ঠিকানা
পারব কিনা জানি না তবে চেষ্টা করে যাব...
----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony
সব কিছু একেবারে শঙ্কুর মত হয়ে যাচ্ছে না?
_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩
তা একটু হচ্ছে। আসলে এটা এই সিরিজের প্রথম গল্প, প্ল্যাটফর্মটা শঙ্কুর মতোই করতে চেয়েছিলাম। ইতিমধ্যে এই সিরিজের ২য়, ৩য়, ৪র্থ গল্প সচলে প্রকাশ করেছি- সেগুলো নিশ্চয় শঙ্কুর ওপর আতটা নির্ভরশীল নয়?
----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony
হাচলত্বের অভিনন্দন।
জামিল সিরিজের ব্যাপারটা কী?
এই গল্পে শঙ্কু প্রভাব ভাল মতন আছে, আগের গুলো যেগুলো পড়েছি ওরকম লাগেনি।
কন্ট্যাক্টে আপনার আগের সব লেখার লিঙ্ক ইমেইল করে অনুরোধ করলে লেখাগুলো নিজের একাউন্টে এনে দেবেন সহৃদয় মডুরা।
এটা আসলে জামিল সিরিজের প্রথম গল্প, দেড় বছর আগে লেখা, এখন আর পরিবর্তন করতে মন চাইল না
আবারো ধন্যবাদ, লিঙ্ক সংক্রান্ত তথ্যের জন্য। ভালো থকবেন।
নতুন মন্তব্য করুন