আমি আর আমার বোন খুব বেশী ছোট বড় না। আমি হাঁটতে পারতাম না আর আপু হাঁটতে শিখে গেছে তখন এই ছিলো আমাদের মধ্যেকার পার্থক্য! আমার বোন আমি হবার পর আমাকে মেনে নিতে অনেক টাল বাহানা করেছে। ছোট বাচ্চারা আরেকটা ছোট বাচ্চাকে দেখলে ভাবে যে আরেকজন মায়ের সব আদর নিয়ে নিলো মনে হয়। আমার বোনের ভাবনাটা অনেকটা এমনই ছিলো। আমি হবার পর ওর মনে হয়েছিলো আমি ইঁদুর! আম্মু বলে আপু ইঁদুর বলতে পারতো না। আপু নাকি আমাকে দেখে আম্মুকে জিজ্ঞেস করেছিলো ‘আম্মু এতা কী!’ আম্মু বলেছে ‘এটা তোমার বুনু’ আমার আপু সাথে সাথে কাঁদতে কাঁদতে বলছে ‘না! বুনু না! এতা উঁদুর’। আমাকে সে অন্যদের কাছে দিয়ে দিবে বাসায় রাখবে না। আদর করবে না। হাত দিয়ে ধরে না এমন কি আমি উঁদুর বলে সে পা দিতেও ভয় পায়! আমার সেই বোনের কাছেই কিছুদিনের মধ্যে আমি আদরের খেলার পুতুল হয়ে গেলাম! আমার আপু ছিলো মেয়ে শরীরের মধ্যে জ্বলজ্যান্ত একটা ছেলে! আমার আব্বু আম্মুর ধারণা কোন মেয়ে বাচ্চা এতো দুষ্টু হতে পারে না। আমার বোনের জন্য আমার ছোটবেলাটা ছিলো খুব রঙিন। আর আমার আম্মুর কাছে এখনো আমাদের সেই ছোটবেলার কথা বলা একটা আনন্দের ব্যাপার। সব গল্প আম্মু-আব্বু, আর আপুজী (নানীমা) আর খালামনির কাছ থেকে শোনা। তবে আমাদের গল্পগুলো বলার মতোই মজার।
আমি যতদিন পর্যন্ত হাঁটতে না শিখেছি ততোদিন আপুর তেমন মজা ছিলো না। আমি শুয়ে থাকতাম আর আমি যেন কান্নাকাটি না করি তার জন্য আমার বোন খেলা বাদ দিয়ে আমার কাছে বসে থাকতো। আমি তাও কান্নাকাটি করলে সে আবার আমাকে জোরে বকাও দিতো ‘বলছি না কাঁদো না আম্মু কাজ করে? আবার কাঁদো তুমি? ওওওওও’। এই বকা শুনে আমি কী বুঝতাম কে জানে! তবে সব সময় আমি থেমে যেতাম। আমার যখন এক বছরের একটু বেশী তখন আব্বুর চাকরীর সুবাদে আমরা রাজশাহী চলে যাই। বলতে গেলে তখনই আমাদের পাখা গজিয়ে গেলো। আমার নানী বাড়ীর সামনে অনেক বড় খেলার মাঠ ছিলো। এক পাশে পুকুর ছিলো। বারান্দায় দাঁড়ালে সেই সব দেখা যেত। রাজশাহীতে আমরা যেই বাসায় গেলাম সেই বাসার সামনেও ঐরকম মাঠ ছিলো, পুকুর ছিলো। আর বাসার পাশে যেই বাসাটা ছিলো সেটা নানী বাড়ীর পাশের বাড়ীর মত দেখতে। আমরা দুইজন প্রথমে বুঝতেই পারি নাই আমরা অন্য আরেক জায়গায় চলে এসেছি! ঘুম থেকে উঠেই আম্মুর সাথে কান্নাকাটি শুরু আপুজী কোথায় আর মিতা আন্টি কোথায়? আম্মু আমাদের বুঝাতেই পারে না যে এটা অন্য জায়গা। আমাদের দোষ দেয়া যায় না এই ভুলের জন্য অবশ্যই। সব কিছু একরকম দেখলে আমরাই বা কীভাবে বুঝবো!
আমাদের অভ্যাস ছিলো বিকাল হলেই জামা কাপড় বদলে পাউডার দিয়ে, কপালের একপাশে কাজলের টিপ দিয়ে চামিলী (পাড়াতো খালা) আন্টিদের বাসায় বেড়াতে যাওয়া আম্মুর সাথে। রাজশাহী যেয়ে আমরা বিকালে দুইজন চিৎকার করে কান্না চামিলী বাসায় যাবার জন্য। আম্মু যতবার জিজ্ঞেস করে ‘চামিলী বাসা আমি কোথায় পাবো?’ ততোবার আমরা পাশের বাড়ী দেখাই। রাজশাহী যেয়ে আমাদের একটু কষ্টই হয়ে গিয়েছিলো মানিয়ে নিতে। তবে বাচ্চারা বেশীদিন কিছু মনে রাখতে পারেনা। আমরাও রাজশাহীতে নিজেদের মত মজা খুঁজে নিলাম।
আমরা অনেক বেশী মিশুক ছিলাম। সবার সাথে আমাদের খাতির হয়ে যেতো। রাজশাহী যাবার পর আমরা একদিনের মধ্যে পুরো পাড়ার সবার কাছে পরিচিত হয়ে গেলাম। রাজশাহী যাবার পর আব্বুর সাইটের ইঞ্জিনিয়ার, কন্ট্রেক্টররা আমাদের বাসায় এসেছিলো দেখতে। কেউ খালি হাতে আসে নি। অনেক প্যাকেট মিষ্টি জমে গেছে বাসায়। আপু আম্মুকে বলতে শুনেছে যে ‘এতো মিষ্টি এখন আমি কী করবো!’ আমার আপু মিষ্টির ব্যবস্থা করার জন্য জানালার কাছের টেবিলের উপর উঠে দেখে বাসার সামনের মাঠে অনেক ছেলে খেলে। ওদের কে ডাক দিয়ে জিজ্ঞেস করেছে ‘এই মামা মিষ্টি খাবা?’ ওরা বলেছে খাবো। আপু আর আমি সাথে সাথে জানালা দিয়ে দোতালা থেকে মিষ্টি ছুঁড়ে ছুঁড়ে নীচে ফেলতে শুরু করলাম। মিষ্টি তো আর কেউ ধরতে পারে না সব মাটিতে পরে নষ্ট হচ্ছে। আম্মু কিছুই জানে না তখনো। জিতু মামা বাসায় এসে আম্মুকে বলেছে ‘আপা বাবুরা জানালা দিয়ে সব মিষ্টি নীচে ফেলে দিচ্ছে ওদের কিছু বলেন!’ আম্মু যেয়ে দেখে এক প্যাকেটের সব মিষ্টি ফেলে দেয়া শেষ। আম্মুকে দেখেই আপু খুব হতাশ হয়ে বললো মিষ্টি শেষ করার জন্য অনেক চেষ্টা সে করেছে কিন্তু কেউ মিষ্টি ধরতেই পারে না। সবাইকে বাসায় ডেকে আম্মুর আবার ওদের কে মিষ্টি খাওয়াতে হলো।
আমাদের এই খাবার বিতরণ অভ্যাস খুব ছিলো। কিছু একা খেতাম না। সব মানুষকে দিয়ে খাওয়া লাগবে। বড় এক ডালা পেয়ারা দিয়ে গেছে আব্বুর সাইটের কে যেন। আমরা নিজেরা একটা করে খেয়েছিলাম কিনা সন্দেহ। দুপুরে আম্মু ঘুমানোর পর সব পেয়ারা সবার মধ্যে বিলি করে দিয়েছিলাম দুইজন মিলে। সেদিনও আম্মু টের পেয়েছিলো ছেলেদের চিল্লাচিল্লি শুনে। বারান্দায় যেয়ে দেখে অনেকে কার্নিসের উপর উঠেছে পেয়ারা নেবার জন্য। আম্মু যখন বারান্দায় গেছে তখন বাড়ীওয়ালার ছেলে কার্নিসের উপর ছিলো। আম্মুকে দেখেই বলে 'আন্টি ওরা সবাইকে দিয়ে দিচ্ছে তাই আমিও নিতে আসছিলাম'। আম্মু আর কী বলবে! আমাদের জন্য আম্মু কিছুই রাখতে পারতো না। সবাইকে ডেকে ডেকে বলতাম ‘আমি এটা খাই তুমি খাবা?’
এগুলো তেমন কোন কিছু ছিলো না সব বাচ্চারাই এমন করে। রাজশাহীতে বেশ কিছুদিন হয়ে যাবার পর আমরা আমার আম্মুকে যেভাবে অত্যাচার করতাম সেটা আর বলার মতো না।
মুরগী জবাই খেলা
আমার আম্মুর অভ্যাস ছিলো দুপুরে আমাদের দুইবোনকে নিয়ে ঘুমানো। আমি কোলের বাচ্চা ছিলাম তাই আম্মুর কোলের মধ্যে শুয়ে ঘুমিয়ে পড়তে দেরী হতো না। কিন্তু আমার বোন ছিলো ঐ বয়েসেই পাকা অভিনেত্রী। আপু ঘুমিয়েছে কিনা দেখার জন্য আম্মু আপুর হাত তুলে ছেড়ে দিয়ে দেখতো আর আপুও ঘুমন্ত মানুষের মত অভিনয় করে সেই হাত পড়ে যেতে দিতো। এমন একটা ভাব যে সে হাত পা ছেড়ে দিয়ে ঘুমাচ্ছে। আম্মুও নিশ্চিন্ত হয়ে ঘুমিয়ে যেতো। আম্মু ঘুমিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে আপু আমাকে ঘুম থেকে তুলে নিয়ে যেতো খেলার জন্য। একদিন এরকম আমাকে নিয়ে বারান্দায় গেছে খেলার জন্য। আমাদের এক খাঁচা লাভ বার্ড ছিলো। আব্বুর খুব আদরের ছিলো পাখিগুলো। আমার মেজো চাচার কাছে থেকে কান্নাকাটি করে আমি কিনেছিলাম ঐ পাখিগুলো। বাসায় তখন আমরা মাঝে মাঝেই দেখতাম আম্মু কাজের মেয়েকে সাথে নিয়ে মুরগী জবাই করে তারপর রান্না করে। সব মেয়েদের ছোটবেলার খেলাগুলোর মধ্যে রান্নাবাটি খেলা খুব কমন। আমরাও খেলতাম। আম্মু যা রান্না করতো আমরাও কাগজ ছিঁড়ে সেগুলো রান্না করতাম আর কাঠি দিয়ে মুরগী জবাই করে সেই কাঠি কুটি কুটি করে ভেঙে মুরগী রান্না করতাম। আমি তো দেড় বছরের তাই আমার পক্ষের এর থেকে বেশী উদ্ভাবনী খেলা বের করা সম্ভব ছিলো না। কিন্তু আমার বোন (!) সে ছিলো অভিনব খেলা বের করায় ওস্তাদ মানুষ! সেদিন আমাকে নিয়ে বারান্দায় যেয়ে পাখির খাঁচা দেখে মনে হলো কেন আমরা কাঠি নিয়ে মুরগী রান্না করবো! আমরা এই পাখি দিয়ে মুরগী জবাই করে রান্না করবো! কি ভয়াবহ কথা!! সেই খাঁচা ছিলো বারান্দায় ঝুলানো (বেশ উঁচুতে একটা বাচ্চার জন্য)। আপু খাঁচা নামানোর জন্য নিয়ে আসলো সোফার টুল। তারপর টুলের উপর উঠে খাঁচা আর নামাতে পারে না। শেষে কী আর করা খাঁচার দরজা খুলে পাখি বের করার চেষ্টা করে। পাখিগুলো অনেকদিন খাঁচায় থেকে উড়া ভুলে গিয়েছিলো। আমরা অনেকক্ষণ পাখির পিছে ছুটাছুটি করে ততক্ষণে খুব ক্লান্ত হয়ে গেছি। আপু রান্নাঘরে যেয়ে কী খাওয়া যায় খুঁজতে থাকে। আমার আপুজী (নানীমা) আমাদের জন্য অনেক নাড়ু বানিয়ে রাখতো সেই নাড়ুর কৌটা থেকে নাড়ু বের করার সময় আম্মু সেই শব্দে ঘুম থেকে উঠে আমাদের জিজ্ঞেস করে ‘কি করো?’ আপু সাথে সাথে আম্মুকে বলে, ‘আম্মু বেশী না দুইটা দুইটা!’ আম্মু তো বোঝেনি তখনো কী হয়েছে। আমাকে ডাক দিয়ে বলে, ‘বাবু আসো ঘুমাতে’। আমিও সুন্দর মত আম্মুর কোলের মধ্যে শুয়ে আম্মুর গলা জড়িয়ে ধরে আম্মুকে বলছি, ‘জানো আম্মু আমরা না মুরগী জবাই মুরগী জবাই খেলছি! আম্মু জানে আমরা কীভাবে খেলি তাই কিছু চিন্তা না করেই বলে, ‘আচ্ছা ভালো করেছো এখন ঘুমাও’। আমি তো জানি কী করেছি তাই আরো জোর দিয়ে বলি, ‘কাঠি দিয়ে না সত্যি সত্যি মুরগী জবাই’। আম্মু তখন উঠে বসে জিজ্ঞেস করে, ‘কি দিয়ে?’ আমি ভালো মানুষের মত করে বললাম, ‘পাখি দিয়ে’। আমার আম্মু সাথে সাথে বিছানা থেকে উঠে দৌড় দিয়ে বারান্দায় যেয়ে দেখে খাঁচায় কোন পাখি না। আর পুরো বাসার লন্ডভন্ড অবস্থা। আম্মু তো সাথে সাথেই একটা চিৎকার আপুর নাম ধরে। আপুকে তখন ধরে এনে জিজ্ঞেস করছে আম্মু, ‘পাখি কি করেছো’? তখন সে যেই কাহিনী আম্মুকে বলেছে তাই শুনে আম্মুর অজ্ঞান হয়ে যাবার অবস্থা!
পাখি খাঁচার দরজা খোলার সাথে সাথে বের হয়ে যায় নি। আপু পাখি বের করে বটি দিয়ে পাখির গলা কেটে একটা রেখেছে ছোট খেলার পাতিলের মধ্যে। এই দৃশ্য বাকী পাখি দেখে ভয়ে সব খাঁচা থেকে বের হয়ে উড়তে না পেরে হেঁটে হেঁটে এদিক ওদিকে চলে গেছে। পাখি চলে যাচ্ছে দেখে সেগুলোকে আবার ডেকে আনার জন্য ওর মনে হয়েছে এগুলোকে খেতে দিলে চলে আসবে তাই সে এক ডিস ভাতের মধ্যে ড্রাম থেকে চাল মিশিয়ে পাখি যেদিকে যেদিকে গেছে সেদিকে সেদিকে ছিটিয়েছে! তাই বলতে গেলে পুরো বাসা, নিচের তলা, সিঁড়ি চাল দিয়ে ভরা। পরে ডালের কৌটা থেকে ডাল বের করেও ছিটানো হয়েছে। সব কিছু শুধু মাত্র পাখিদের আবার ডেকে আনার জন্য কিন্তু পাখি আর আসে নাই। আম্মু এই কথা শুনে চিৎকার দিয়ে বলেছে ‘আজকে আমি তোকে মেরেই ফেলবো’। আপু খুব ভালো করেই বুঝেছে যে সে ভয়াবহ মাত্রার অন্যায় করেছে। তাই আম্মুর সাথে পাল্লা দিয়ে চিৎকার দিয়ে আমার ছোট খালামনি যেই রুমে ঘুমিয়ে ছিলো সেদিকে দৌড়। আপুর দেখাদেখি আমিও চিৎকার করতে করতে গেলাম। দুইজন যেয়ে ঝাপ দিয়ে আমার ঘুমন্ত ছোট খালার গায়ের উপর পড়লাম। আমাদের কান্নাকাটি, আম্মুর চিৎকার, সেই সাথে আমার ছোট খালা ঘুম থেকে উঠে আমাদের জড়িয়ে ধরে কী হয়েছে বুঝতে না পেরে চিৎকার সব মিলিয়ে পুরো নারকীয় অবস্থা। আমার আম্মু ছোট থাকলে কী হবে তার মাইকের মতো গলা ছিলো। পুরো এলাকার মানুষ বাসায় ডাকাত পরেছে মনে করে ততক্ষণে চলে এসেছে। আম্মুর চিল্লাচিল্লিতে নিচের তলার মহিলা আম্মুকে ডাক দিয়ে বলে, ‘এই জুঁইয়ের মা কি হয়েছে কি বাসায়?’ আম্মু যখন বললো আমরা পাখি কেটেছি তাই শুনে ঐ আন্টি বলে, ‘এই দেখেন আমাদের উঠানের উপর আপনাদের পাখি পরে আছে গলা কাটা’। ঐ আন্টি প্রথমে ভেবেছে বিড়াল বোধ হয় পাখি খেয়েছে পরে উনাদের উঠানে চাল পরতে দেখে আরো অবাক হয়ে অপেক্ষা করছিলো আম্মুর জন্য। আম্মুর চিল্লাচিল্লি শুনে তখন বুঝেছে যে আসলে এই বিড়ালটা কে!
আমাদের মামারা সেদিন আমাদের উদ্ধার করেছিলো কঠিন মারের হাত থেকে। ওরা বাসায় এসেই কোলে করে আমাদের দুইবোনকে নিয়ে বাইরে চলে গেছে। আব্বু আসার পর আমাদের কে নিয়ে বাসায় ঢুকেছিলো। যদিও এই পাখি কাটার ঘটনাতে আব্বু খুব ভয় পেয়েছিলো। আব্বুর কথা আমি আপুর পুরাই পোষা ছিলাম। আমাকে যদি বলতো তুমি শুয়ে পড়ো তোমাকে কাটি আমি নাকি তাই করতাম!!
আমাদের অবস্থা এর পর থেকে খুব খারাপ ছিলো পুরো এলাকাতে অনেকদিন। আমাদের দুই বোনকে দেখলেই সবাই বলতো ঐ দেখ ডাকাত আসছে!!!
পেয়ারা পাতা
আমার আপুর একটা গুণ ছিলো সেটা হলো আম্মুর কথা না শোনা। আম্মু আপুকে যদি বলে এটা করবা না ঠিক আছে বাবু? বাবু হ্যা আর না মাঝামাঝি একটা চেহারা করে চুপ করে থাকবে। আম্মু কখনোই বুঝতো না আপু কথাটা মেনে নিলো নাকি নিলো না। তবে কিছুক্ষণ পরেই আম্মু সেটা বুঝতে পারতো যে আপু আম্মুর কথা শোনেনি। যেটা করতে না করেছে সে আম্মু একটু দূরে যাওয়ার সাথে সাথে করে দেখেছে কেন না করলো বোঝার জন্য। আমার বোনের সব দুষ্টামীর ইতিহাস ঘাঁটলে বোঝা যাবে আম্মুই বলতে গেলে আপুর মাথায় ঢুকাতো সেই কাজ করার কথা মানা করতে যেয়ে।
আমাদের একা একা বাসার নিচে যাওয়া বারণ ছিলো। কারণ আমরা নিচে গেলেই হারিয়ে যেতাম। আসলে হারাতাম না। আম্মু আমাদের খুঁজে পেতো না। প্রত্যেকদিন এই আতংক আম্মুর ভালো লাগতো না তাই জোর করে আমাদের দুপুর বেলা ঘুম পাড়ানোর চেষ্টা করতো। আমরা তো ঘুমাতাম না আম্মু নিজেই ঘুম পাড়ানি ঘুম পাড়ানি করতে করতে ঘুমিয়ে পড়তো। আর আপু আমাকে নিয়ে দরজার নিচ দিয়ে বের হয়ে নিচে চলে যেতো। দরজার নিচ দিয়ে কিভাবে বের হতো সেটা একটা ইতিহাস! সেটা না বললেই না।
রাজশাহীতে আমরা যে বাসায় ছিলাম সেটার সামনে পেছনে দুইদিক দিয়েই সিঁড়ি ছিলো পেছনের সিঁড়ি দিয়ে সোজা পুকুর পাড়ে চলে যাওয়া যেতো! কোন দরজাই খুলতে পারার মত বড় আমরা ছিলাম না। কিন্তু পিছনের দিকের যেই দরজা ছিলো সেই দরজার নিচে একটু ফাঁক ছিলো। মানুষ সহজে বের হবার মতো ফাঁকা না অবশ্যই!!! বিড়াল বের হতে পারে এমন হবে! কিন্তু আমার বোন সেই দিক দিয়ে শুধু নিজে বের হতো না আমাকেও বের করে পুরো পাড়া টই টই করে বেড়াতো। বের হবার বিশেষ পদ্ধতি ছিলো। আপু আমার সব জামা প্যান্ট খুলে দিয়ে দরজার নিচ দিয়ে ঢেলেঢুলে বের করে দিতো। তারপর আমার জামা কাপড়, স্যান্ডল দিয়ে দিতো। তারপর নিজের গুলোও দরজার নিচ দিয়ে বের করে দিতো!! তারপর সেও দরজার নিচ দিয়ে মুড়ামুড়ি করতে করতে বের হয়ে আসতো!! আমরা কেউ তখন কাপড়ের উল্টা সোজা চিনি না। আমি তো একা একা জামাও পড়তে পারি না। আমাকে জামা পড়িয়ে নিজেরটা পড়ে আমরা নিচে নেমে যেতাম। জামা কাপড়ের অবস্থা দেখেই সবাই বুঝতো যে আমরা আম্মুকে না বলে বের হয়েছি।
যা হোক যেই ঘটনা বলতে শুরু করেছিলাম সেটা বলি। পুরো এলাকার সব অল্প বয়েসী ছেলেরা তখন আমাদের মামা আর মেয়েরা খালামনি। আমরা দুপুরে বাসা থেকে বের হয়ে যেয়ে ওদের পিছে পিছেই ঘুরতাম। নাহলে কোনো খালামনির বাসায় চলে যেতাম। তখন মামারা নতুন সিগারেট খাওয়া ধরেছে। লুকিয়ে লুকিয়ে সিগারেট খায় তাই খাওয়া শেষ করে পেয়ারা পাতা লবণ দিয়ে খেতো। আমরা তো এইসব বুঝতাম না। আমরা দেখি ওরা পাতা খায়। গাছ চেনার তো প্রশ্নই আসে না। সবাই খায় আমরাও খাবো। আমরা সেদিন বিকালেই বাসা থেকে বের হয়েছি হাতে লবণ নিয়ে। ওরা বড় গাছের পাতা ছিঁড়ে খায় আমরা তো এতো বড় গাছ হাতে পাবো না তাই ছোট গাছের পাতা লবণ দিয়ে খেয়েছি। একটুপর আম্মু দেখে আমি আর আপু সিঁড়ি দিয়ে উঠে আসছি। দুইজনার কেউ কথা বলতে পারছি না শুধু চোখ দিয়ে পানি পরছে আর মুখ দিয়ে লালা ঝরছে। আম্মু পেয়েছে ভয়। বার বার জিজ্ঞেস করে ‘কি খেয়েছো?’ সেই কথার উত্তর দেবার অবস্থা নাই আমাদের তখন। আম্মু কিছু বোঝার আগেই আমাদের বাড়ীওয়ালী হাতে তেঁতুল নিয়ে নেমে এসে আম্মুকে বলে ‘এই তেঁতুল গুলে ওদের খাওয়াও’। আম্মু তখনো জানে না ঘটনা কী! আমাদের তেঁতুল খাওয়ানোর পর একটু যখন গলা খুলেছে তখন আমরা দুইবোন চিৎকার করে কান্না। তখন আন্টি আম্মুকে বলেছে সে আমাদের বাসার নিচে যেই মান কচুর গাছে আছে সেখানে দাঁড়িয়ে পাতা ছিঁড়ে খেতে দেখেছে। তিন তলা থেকে মানা করছিলো কিন্তু আমরা শুনতে না পেয়ে মান কচুর পাতা খেয়ে ততোক্ষণে মান কচুর বিষে আমাদের জবান বন্ধ হয়ে গেছে! কী করবো ভেবে না পেয়ে আমরা বাসায় চলে গেছি। একটু কান্না বন্ধ হবার পর আম্মু আপুকে জিজ্ঞেস করেছিলো এতো কিছু থাকতে মান কচুর পাতা খেতে গেলাম কেন? তখন ও বলেছে মামারা খায় তাই ভেবেছিলো অনেক মজা মনে হয়। আমার আব্বু এই ঘটনা শুনে বলে বাসা ভর্তি খাবার কিনে রাখি তাও পাতা খাওয়া লাগবে! খাবারের কি অভাব ছিলো পৃথিবীতে?!
বাচ্চাদের তো কতো কিছু খেতে ইচ্ছা করে তাই বলে এমন করার কী আছে!!
(চলতে পারে)
মেঘা
toree.ahmed এট ইয়াহু ডট কম
মন্তব্য
বাপরে!!
চলুক চলুক!
হুম আমরা দুইবোন এই রকম বাপরে টাইপের বাচ্চাই ছিলাম।
সেটাই তো -- এমন করবার কী আছে! ডাকাতদের করতে দিন না ডাকাতি!
আমার খুব ভালো লেগেছে। লেখা চললে খুশি হবো।
অনেক ধন্যবাদ সৌরভ ভাইয়া অনেক অনেক ঘটনা আছে লেখার মতো। লিখবো আশা করি।
অদ্ভুত রকমের ভালো লেগেছে । অপেক্ষার প্রহর গুনতে শুরু করলুম
অনেক ধন্যবাদ রেজা ভাই। লিখবো আরো কিছু ঘটনা।
এরকম লেখা পরতে ভালো লাগে অনেক। চালিয়ে যান।
ধন্যবাদ কানিজ আপু। আমার আম্মুর প্রিয় বিষয় গল্প করার জন্য এগুলো এখনো
বাপরে! এরপরের ঘটনা না জানি কেমন হবে, ভয় লাগে তো!
সেটাই!!! আমার এখন শুনলে বেশ অবাক লাগে আমরা ঐটুকু বয়েসে এইসব করতাম কী করে!!
অনেক ধন্যবাদ
এরকম লেখা পড়তে ভাল, নিজেরাও ছোট বেলায় এরকম করতে ভাল; কিন্তু আমাদের ছেলে-মেয়েরা এমন হলে আপনাদের তুলনায় আমার বাচ্চা ফেরেশতা। চলুক ডাকাতি।
ভাইয়া বেশীর ভাগ বাচ্চাই আমাদের দুইবোনের তুলনায় ফেরেশতা এটা আমার আব্বুর ধারণা। মেয়ে বাচ্চা যে এতো বদ হয় আমার আব্বু নাকি আমাদের তার নিজের বাসায় না দেখলে বিশ্বাস করতো না।
পড়ার জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া।
দারুন স্মৃতিচারণ।
নিয়মিত পাঠক হয়ে গেলাম। লিখতে থাকুন।
ডাকঘর | ছবিঘর
আমার আম্মুর এগুলো হলো সবচেয়ে সুখের স্মৃতি। ছবি দেবার ইচ্ছা ছিলো আমাদের ঐসময়ের। কিন্তু ছবি দিতেই পারছিলাম না কেন জানি।
উৎসাহ দেবার জন্য ধন্যবাদ দাদা। তাহলে লিখি আরো কিছু ঘটনা। আশা করি ভালো লাগবে।
ছবি দেয়ার জন্য ফ্লিকার একাউন্ট ব্যাবহার করতে পারেন। । আর বিস্তারিত দেখতে সচলের এই ফ্লিকার সম্পর্কিত ভিডিওটি দেখুন।
ডাকঘর | ছবিঘর
ধন্যবাদ দাদা
বেশ ডাকাবুকো শৈশবতো! চলুক
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
পুরাই সেই রকম শৈশব। আমার আম্মু সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চিৎকার করতো আমাদের পিছে। আমরা কোন কারণে চুপ হয়ে থাকলে আম্মু টেনশনে পরে যেতো কারণ চুপ হয়ে যাবার মানে ছিলো আরো বড় ধরণের শয়তানির প্ল্যান করা।
ধন্যবাদ।
চলতে পারে মানে?? অবশ্যই চলতে হবে।
আপনার আপুর মুরগী জবাই কাহিনী শুনে মনে পড়ে গেল আমার এক কাজিনের ছোটবেলায় লবন দিয়ে জ্যান্ত মুরগীর বাচ্চা খাওয়ার কাহিনী।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
লবণ দিয়ে জ্যান্ত মুরগীর বাচ্চা খেয়ে পেয়েছিলো? কী ভয়াবহ কথা!!
ভাইয়া লেখা দিবো। অনেক ধন্যবাদ। অনেকদিন পর সচলে লেখা দিলাম আবার। একটু ভয় লাগছিলো পাব্লিশ হবে কিবা এটা ভেবে তাই লিখেছিলাম চলতে পারে।
সুন্দর লিখেছেন।কল্পনা করে নিতে বেগ পেতে হয়নি।
__________________________
বুক পকেটে খুচরো পয়সার মতো কিছু গোলাপের পাঁপড়ি;
ধন্যবাদ ভাইয়া।
মুরগি জবাই দেখেই এই অবস্থা, কোরবানী দেখলে যে কী করতেন!
যাহোক, চলুক
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
কোরবানী দেখলে তাহলে আমার বোন আমাকেই কেটে ফেলতো মনে হয়। আব্বুর খুব ভয় ছিলো এটা নিয়ে। অনেক পাজি ছিলো তো!
ধন্যবাদ ভাইয়া।
খুব মজা পেলাম আপু । আমি আর আপুও নানা ধরনের দুষ্টুমি করতাম অর মস্তিষ্ক প্রসূত পরিকল্পনা নিয়ে।তবে বাসার ভিতরেই।
আমরাও বাসার মধ্যে করতাম আবার বাইরেও করতাম এবং অবশ্যই আমার বোনের বুদ্ধিতে। আমি খুব শান্ত ছিলাম। আম্মু যদি বলতো বাবু এখানে বসে থাকো কোথাও যাবা না তাহলে আমি বসেই থাকতাম যতক্ষণ আপু না এসে বলতো! আমি আবার আপু কথা ফেলতে পারতাম না।
পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
খুবই মজা পেলাম পড়ে। পরের পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম।
ধন্যবাদ। পরের পর্ব অবশ্যই লিখবো।
সাবাশ। এই নাহলে শৈশব! আপনেরে আর আপনের বোনরে
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ধন্যবাদ ভাইয়া। আপনার বাচ্চাগুলো এমন হোক কি বলেন?
কী যে বলেন! আমার পোলাপাইন যদি বাপ কা বেটা/বেটি হয় তাইলে বাই ডিফল্টই মাঙ্কি-শাবক হয়ে যাবে জেনেটিক কোডানুসারে। সমস্যা হবে এগুলোকে সামলানোর জন্য মাঙ্কিনী, আই মিন ধুগোনীর মধ্যে যথাযথ ট্রেনিং থাকবে কিনা!
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
আহ কি একটা দৃশ্য হবে আপনার ছেলে মেয়ে ধুগোনীর চুল ধরে ধরে ঝুলে আছে । আমার আব্বু আম্মু কেউ অবশ্য আমাদের মত ছিলো না (আমাদের নানী দাদীদের কথা মতে) তাতেই আমরা যা হয়ে ছিলাম আর আপনি নিজেই মাঙ্কি তো বাচ্চারা হবে সুপার মাঙ্কি। বারী শুদ্ধ সব লোক দৌড়ের উপর থাকবে দেখবেন।
বেশ ভালো লাগলো আপনার শৈশবের এই স্মৃতিচারণ । আমার ছোটবেলার অনেক ঘটনায় নাড়িয়ে দিয়ে গেলেন। চালিয়ে যান লেখা।
ধন্যবাদ বন্যা আপু (বন্যা আন্টি লিখে ফেলতে যাচ্ছিলাম। একটা খালামনির নাম বন্যা) ছোটবেলার কথা লিখে ফেলুন। শুনতে চাই।
বাপরে কি ডানপিটে ছেলে!-
শিলনোড়া খেতে চায় দুধভাত ফেলে!
একটার দাঁত নেই, জিভ দিয়ে ঘষে,
একমনে মোমবাতি দেশলাই চোষে!
আরজন ঘরময় নীল কালি গুলে,
কপ্ কপ্ মাছি ধরে মুখে দেয় তুলে!
খালি ছেলের জায়গায় মেয়ে হবে।
___________________
রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি
হাহাহাহা আমাদের অবস্থা অনেকটা এই কবিতার মতই ছিলো!!
অসংখ্য ধন্যবাদ
মেঘা আপু, অনেক সুন্দর করে লিখলেন তো।
ভালো লেগেছে আমার। লেখা চলুক।
এবিএম ভাইয়া অনেক ধন্যবাদ পড়ার জন্য। আমার আগের কোন লেখা বোধ হয় পড়েন নি! আমি রম্য তেমন ভালো লিখি না। আমি সব স্যাড গল্প লিখি
শৈশব নিয়ে যেকোন লেখাই দারুণ
ফুঁ বাবা ধন্যবাদ
(গুড়) রাজশাহীর কোথায় থাকতেন !
facebook
শিরোইল, শান্তিবাগ ছিলো জায়গাটার নাম। মঠ পুকুরের কাছে। আব্বুর কাছ থেকে শুনে লিখলাম। আমি এতোই ছোট ছিলাম আমার কিছুই মনে নাই।
ধন্যবাদ অণু ভাইয়া।
বাপরে!
পড়তে ব্যাপক লাগল।
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
অসংখ্য ধন্যবাদ সজল ভাই।
পোলাপান দুষ্টু হলে মাদের বেশ কষ্ট হয়, কিন্তু সেই পোলাপান বড় হলে তাদের কাছে মনে হয় আহা কিসব দিন ছিল। আপনার ঘটনাময় বাচ্চাকাল ব্যাপক আনন্দে কেটেছে বোঝা যাচ্ছে। লেখা পরে মেলা আনন্দ পেলাম, নিজের কিছু ঘটনা ও মনে পড়ে গেল সাথে। এটা একটা সিরিজ করে ফেলতে পারেন মেঘা।
বন্দনাপু আসলেই অনেক মজার ছিলো আমার ছোটবেলাটা। আমার বোন একাই ২০০ ছিলো সবাইকে দৌড়ের উপর রাখার জন্য। আপনার ঘটনা গুলো লিখে ফেলেন আপু। মজার সব স্মৃতি থাকুক একসাথে।
সিরিজ করার ইচ্ছা আছে। উৎসাহ দেবার জন্য ধন্যবাদ আপু।
আপু
তোমার শৈশবে আমি নাই
শ্রাবণী আপুর ঐ ঘটনা মনে পড়ছে, "চল মেঘা, আমরা এদের সাথে খেলব না এরা পচা"
রিক তুই তো আমার থেকেও ছোট ভাইয়া। এটা আমার দেড় বছরের কথা তুই কোথেকে আসবি বল?! বড় বেলায় আসবে তোর কথা যদি লিখি।
শ্রাবণী জীবনে তো ঘটনা কম ঘটায় নাই। লিখবো এটাও
আমার লেখা কেন নেয় না? (
আপনার বোন ন্শংস মহিলা ছিল বলতে হবে
-------------------------------------------------
ক্লাশভর্তি উজ্জ্বল সন্তান, ওরা জুড়ে দেবে ফুলস্কেফ সমস্ত কাগজ !
আমি বাজে ছেলে, আমি লাষ্ট বেঞ্চি, আমি পারবো না !
আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি, আমি সত্যি মূর্খ, আকাঠ !
আমার বোন অনেক মজার ছিলো। ওর সব কিছু খুব ভালো করে দেখতে ইচ্ছা করতো তাই এমন করতো। আম্মুর ভয় ছিলো কবে না আবার আমাকে কেটে কুটে দেখতে চায়
--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি
চলুক চলুক।
তিন পর্যন্ত চলেই গেলো!
--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি
আপু আপনার লিখাটি পড়ে আমার ছোটবেলার কথা ( আম্মুর মুখ থেকে শোনা ) মনে পড়ে গেল । একটা কথা শেয়ার করি । আমার নানি ঢাকায় থাকতেন । আর আমরা ছিলাম গাজীপুরে । তিনি আমাদের বাসায় বেড়াতে এলে আমার খুব ভাল লাগত । আমি এটা সেটা তাকে দেখাতাম । আমাদের কুমড়ো গাছে কুমড়ো ধরেছিল । সেটা ছোট কাঁচা । আমি সেটা ছিঁড়ে নিয়ে নানুকে দেখালাম । নানু বললেন এটা তো কাঁচা খাওয়া যাবে না । আমি তখনি সেটা যেখান থেকে ছিঁড়েছিলাম সেখানে লাগিয়ে রেখেছিলাম । মানে আমার ব্যাপারটা ছোটবেলায় একটু ভিন্ন ছিল । আমি একটু শান্তশিষ্টই ছিলাম বোধহয়
নতুন মন্তব্য করুন