৫.
দরজা দিয়ে ঢুকেই রিপনদার চিরপরিচিত হাসিমাখা মুখটি দেখতে পেল প্রবাল। তার মনে হল কয়েকযুগ পরে পরিচিত কাউকে দেখে সে যেন মুক্তি পেল। তার আনন্দ উপচে পড়তে লাগল। সোফায় হেলান দিয়ে রিপনদা একটানা কিছুক্ষণ প্রবালের দিকে তাকিয়ে রইলেন, চোখ পিটপিট করে বোঝার চেষ্টা করলেন প্রবালের মনোজগত অত:পর বললেন “কেমন আছো, প্রবাল?” “আমি ভাল আছি”, বললো সে।
: তোমার পড়াশুনা কেমন চলছে?
: চলছে একরকম, আপনার অফিস?
: তা যেরকম চলার কথা, দৌড়ুচ্ছি সবসময় জীবনের এ মাথা থেকে ও মাথা পর্যন্ত, কোন সুস্থিরতা নেই। এখন আমি আগের সেই রিপন নেই, বদলে যাচ্ছি দ্রূত বা সোজা বললে ভাল বদলাতে বাধ্য হচ্ছি। বদলাতে কেউ জোরারোপ করছেনা।
: কেন? আপনি এ রকম হচ্ছেন কেন? এ রকম করে বলছেন কেন?
: শোন প্রবাল, আমি এখন ছুটছি শুধু ছুটছি, ছুটে চলেছি উপরে ওঠার জন্য বলা ভালো তাবেদারি করছি। অকুতোভয়ী রিপন এখন অনেক কিছুতেই প্রচন্ড ভীতু স্বভাবের, ইচ্ছে থাকা সত্বেও আগবাড়িয়ে কোন কিছুর জন্য উচ্চ স্বরে কথা বলেনা, ২৪৬ নং রুমের সহনশীলতা ঝড়ো ফুৎকারে মিইয়ে গিয়েছে। দেশ ও দেশের স্লোগানের সাথে চের টি-শার্ট পরে দেওয়া অগণিত সমাজতান্ত্রিক বুলি ওখানেই ফেলে রেখে এসেছি। অনেক পরিশ্রম করেছি বিনিময়ে কোন লাভ হয়নি, আমার অবস্থার দিকে কেউ নজর দেয়নি, শ্রেয়া ফাঁকি দিয়ে গেল আমার বেকারত্বের সুযোগে।
: হুম, জানি।
: সেদিন দেখা হলো এমন ভাব করল যেন আমাকে চিনতেই পারছেনা অথচ চিন্তা করে দেখ তাকে ঘিরে আমার স্বপ্ন কতোদূর পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছিল। তারপরেও ধন্যবাদ জানাই তাকে গায়ে অলংকার থাকা এবং না থাকার পার্থক্যটি দ্রুত ধরে ফেলার জন্য, সবকিছুকে বোঝেও না বোঝার ভানের জন্য। এখন আমি সবকিছুকে ভুলে আছি, বেশ ভাল আছি। সকাল থেকে মধ্যরাত অবধি একজন আন্তরিক অফিসার সাজার চেষ্টা করে চলেছি ক্রমাগত।
: আমার খুব খারাপ লাগছে রিপনদা, আমি আপনাকে সবসময় অনুসরন করার চেষ্টা করেছি।
: এসব খারাপ লাগা তুচ্ছ ব্যাপার, জীবনের একটি বড় অংশ আমি যে জন্য জলাঞ্জলি দিয়েছি সেখান থেকে আমার কোন রিটার্ন আসেনি বরঞ্চ ছুঁড়ে ফেলে দেয়া হয়েছে, সবাই মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল তবে শেষ পর্যন্ত আমি সামলে সুমলে উঠতে পেরেছি এটাই যা আশার কথা।
রিপনদার ওখান থেকে মন খারাপ করে বের হয়ে প্রবাল ভাবল সোজা রুমে ফিরে যাবে। রিক্সায় চড়ে বসে সে ভাবতে থাকল রিপনদার অভিব্যক্তির কথা, রিপনদার সাইকোলজি মেলানোর চেষ্টা করে সে কিন্তু কোনক্রমেই ম্যাচ করাতে পারেনা। এটা ঠিক সবকিছুতে বঞ্চিত হয়ে কষ্ট পেয়েছেন খুব কিন্তু এরকম পরিবর্তন সে আশা করেনি তা যে কোন কারনেই হোকনা কেন।
প্রবাল ভাবতেই থাকে কতো কষ্ট করেইনা সে এতোটা পথ পাড়ি দিয়েছে, ঝামেলার পর ঝামেলা এড়িয়েছে। কখনো কখনো থমকে গেছে সময় কিন্তু সে ঠিক সময়টিতে জানালা খুলে দিয়েছে সময় পরিবর্তনের জন্য। মসৃণ ছিলোনা আগুয়ান হাওয়ারা বরঞ্চ ঝঁড়ো হয়ে টালমাটাল করতে চেয়েছে তার মনের ঘর।
ফ্ল্যাশব্যাক হতে থাকে সব একের পর এক, ক্লাস ফাইভে বৃত্তির লিষ্টে ট্যালেন্টপুলে তার নাম আসায় বাবার আনন্দের উত্তেজনা টের পেয়েছে, উত্তেজনা টের পেয়েছে অন্য সবদিকেও, আশার পারদটি ধীরে ধীরে ভারি হতে থাকে তার উপর।
বেশ কিছুদিন আনন্দে কাটিয়েছিল প্রবাল কিন্তু আনন্দ মিলিয়ে গিয়েছিল যখন কয়েকদিন পর তার গ্রামের শিমুলচাচা স্কুলের মাঠটিতে চুপি চুপি বলেছিলেন:
“ও বাজান, এতো বেশী বেশী নম্বর পাও ক্যান? একটু কম করে পড়ো, তাইলে বালা থাকবা, বুঝছো?”
পরীক্ষায় নাম্বার সে কোনকালেই কম পায়নি বরঞ্চ নাম্বার পাওয়ার মাত্রা বেড়েছিল দিনকে দিন সাথে তার জীবনে ঝামেলার মাত্রাও বেড়ে গিয়েছিল।
৬.
একই গ্রামে বসবাস করা স্বত্বেও মোড়লদের সাথে সকলের সম্পর্ক ছিল অনেকটা এড়িয়ে এড়িয়ে চলার মতোন। মোড়লদের চার ভাইয়ের মধ্যে তিনজনেরই ছিল কুকর্ম করার দীর্ঘদিনের পরিচিতি। মোহনপুর গ্রামের মানুষ এ পরিবারটির যন্ত্রনায় ভয়ে ভয়ে থাকত সবসময়। গেলবারের ঘটনাটির কথা কোনভাবেই ভোলার মতোন নয়।
সকলে একই সাথে ঈদের নামাজ থেকে ফেরার পথে ঘাটের পারে মৃদু বৎসা ঘটে এ পাড়ার লোকদের সাথে মোড়লদের ছোট ছেলেটির। আপাতত মিটে যাওয়ার পরেও তারা ঘটনাটি ভুলে যেতে পারেনি। বিকেল বেলাতেই দু ভাই মওকা মতোন পেয়ে যায় মাঝ পাড়ার ছেলেটিকে, মুখ চেপে ধরে ঘাস কাটার কাঁচি দিয়ে অত্যন্ত নিঁখুত ভাবে আলাদা করে মাথাটি। অত:পর সদ্য সেঁচ দেয়া ধানক্ষেতের পানিতে কাঁচিটি সুন্দর মতোন পরিষ্কার করে আনন্দে বাড়ি ফিরে যায় দু ভাই। সৃষ্টি হয়ে যায় একটি ধারাবাহিক খুনোখুনির সিরিজ গল্পের, যে সিরিজে চলে আসে মোহনপুরের দুই পাড়া এবং তার পার্সপেক্টিভে ক্রমান্বয়ে জড়িত হয় পাশের আলমডাঙ্গা গ্রামের কতিপয় লোকজন।
বৈবাহিক সম্পর্কের সূত্র ধরে মোহনপুরের দুয়েকটি ঘরের হৃদ্যতাপূর্ন যাতায়াত ছিল আলমডাঙ্গায়। আলমডাঙ্গার সে পরিবারের লোকজন সন্ধের পরপরই হামলা চালায় বাদলদের বাড়িতে, তছনছ হয়ে যায় সব, শুধুমাত্র ঘরের মেয়েগুলো লুটপাটের মধ্যিখানে চুপচাপ বসে ছিল, প্রত্যক্ষদর্শী হয়ে থেকেছিল খুনোখুনির দ্বিতীয় পর্যায় বা দ্বিতীয় মাত্রার অবশিষ্টাংশ।
বছর দুয়েক পরে হাজির হয়ে গেল মোড়লদের ভাইগুলো। জেল জরিমানায় সর্বশান্ত হলেও ফাঁসির ফাঁড়ায় না পড়াতে গ্রামের লোকজন অবলোকন করতে থাকল তাদের কাণ্ডকীর্তি। কোথায় লজ্জায় মুখ ঢাকবে তা না করে নিয়মিত কোর্টে হাজিরা দেয়ার পাশাপাশি বাজারে, গঞ্জে সবস্থানে তারা তাদের বীরত্বব্যঞ্জক কাহিনী প্রচার করতে থাকল। এও বলতে থাকল:
“এইরকম দুয়েকটাকে মাঝে মাঝে শায়েস্তা না করলে চলেনা, এইগুলান ব্যাপারনা”
মোড়লদের পরিবারের সাথে বাদলদের রেষারেষির খবরটিও কারো অজানা ছিলনা। ছিলনা শিক্ষা দীক্ষা নিয়ে প্রশ্ন তোলার। মোড়লদের ভাইগুলো কিছুদূর পড়াশোনা করে পুরোদস্তুর গৃহসংসারীতে মনযোগ দিলেও কাউকে শান্তি দিলনা, শান্তি দিলনা বাদলদের পরিবারটিকেও। বিশেষ করে এ বাড়ির বেশ কয়েকজন বিশ্ববিদ্যালয় লেভেলে চলে যাওয়ায় তা তাদের রাতের ঘুম কাভার করে নিয়েছিল। ধীরে ধীরে কমতে থাকে এ পাড়ার সাথে ও পাড়ার লোকজনের সখ্যতা, বাড়তে থাকে মনোমালিন্য। বাদলদের উপর মোড়লদের আরো বেশী ক্ষোভ জমা হয়ে ছিল যে কারনে তা হলো: তাদের যে কোন খারাপ দুষ্কৃতিতে তাদের সহযোগীতা না পাওয়া
সময়ে অসময়ে জমির আইল কাটা নিয়ে চলতে থাকে বৎসা, তবে তা অন্যের প্ররোচনায় বা সাহায্যে শুধুমাত্র চড় থাপ্পর দেয়াতেই সীমাবদ্ধ থাকত। একই গ্রামে বসবাসকারী হওয়া স্বত্বেও সবাই হয়ে গেল যোজন যোজন দূরের বসবাসকারী। খুব প্রয়োজনে না পড়লে এ পাড়ার লোকজন ওপাড়ায় যেতনা। বাদলদের পরিবার ও ভুলে গেল ওপাড়ার কিছু সৌন্দর্য্যের কথা, তাদের কিছু জমির কথা কিংবা তার মাঝখানে পায়ে হাঁটা পথ ধরে রাজেরতলা বাজার ও গঞ্জে যাওয়ার কথা।
আলম তার পরিবারের কথা চিন্তা ভাবনা করে পড়াশোনার পাঠ অর্ধসমাপ্ত রেখে চলে যায় মধ্যপ্রাচ্যের একটি দেশে। অনেক ধরনের প্রতিবন্ধকতা সত্বেও দাড়িয়ে যায় পরিবারটি। ব্যপারটি কোনভাবেই ভাল ঠেকছিলনা মোড়লদের নিকট। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভ্যাকেশনে আলম বাড়িতে যখন যায় তখনো তারা তক্ষে তক্ষে থাকে, কিন্তু সুবিধে করে উঠতে পারেনা।
পড়াশোনার পাঠ না চুকিয়ে বিদেশ চলে যেতে আলমের মন একদমই সায় দেয়নি তবুও সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে সে তার সিদ্ধান্ত পাল্টায় বিশেষভাবে সে দিনটির কথা সে কোনদিনই জীবন থেকে মুছে ফেলতে পারবেনা যেদিন সে মোড়লদের হাত থেকে বড় ধরনের বাঁচা বেঁচে গিয়েছিল।
বড় বটগাছটির পাশেই আলমের সাথে দেখা হয়ে গিয়েছিল মোড়লের মেঝো ছেলেটির। “কেমন আছো?” জিজ্ঞেস করার পূর্বেই আলম সতর্ক হয়ে যায়। তার পঞ্চইন্দ্রিয় তাকে সজাগ করে দেয় কোন একটি কিছু ঘটার। মেঝোটির পাশেই ছোটটিকে দেখতে পেল আলম তার দিকে মুখ করে দাড়িয়ে আছে, ছোটটিকে দেখে দ্বিতীয়বার চিন্তা না করেই আলম উল্টো ঘুরে পায়ের চপ্পল ফেলে রেখেই দিল ছুট, একবার বোধ হয় বুঝতে পারল পেছন পেছন কেউ আসছে। সে ছুটতে ছুটতে সন্ধার দিকেই পৌছুল উত্তর গ্রামের একটি বাড়িতে। দাড়ানোর শক্তি না থাকায় মেঝেতেই চিৎ হয়ে পড়ল সে।
আলমের যখন জ্ঞান ফিরে আসলো তখন সে দেখল সে তার বাড়িতে খাটের উপর শুয়ে আছে। উপর থেকে কিছু উদ্বিগ্ন হওয়া মুখ তার দিকে শংকায় চেয়ে আছে। সচেতন হয়ে সকলকে ঘটনাটি খুলে বলে সে সকলকে। সকলেই নিমিষে বুঝে যায় আসলে কি ঘটতে যাচ্ছিল তার ভাগ্যে। অবশ্য মোড়লদের দুই ভাই সকালে বেমালুম অস্বীকার করে যায় ঘটনাটি। নাকি সুরে বলতে থাকে
“আসলে হ্যারে আমরা জিগাইতে চাইছিলাম হের য়ুনিভার্সিটির ক্লাস ক্যামন চলতাছে, আর হ্যায় বুঝতে পারে নাই, বুঝতে পারে নাই, উল্টা খামোখা দৌড় দিছে। হে তো আমরার গর্ব”
ঘটনার পরপরই আলম দ্রুত দেশ ত্যাগ করে, ভিসা প্রসেসিংয়ের পূর্ব পর্যন্ত সকল কার্যক্রম সে হলে বসেই চালিয়েছিল, ভিসা হাতে পাওয়ার আগপর্যন্ত সে আর ভুলেও বাড়িমুখো হয়নি। ভেবেছিল একবার দেশ ছাড়তে পারলেই হলো, আর জীবনে এ নরক মুখো সে আসবেনা। তার পরিকল্পনা মতোই সে এগিয়ে ছিল এবং দেশ ছেড়েছিল। বছর দশেকের প্রবাস জীবনে শুধুমাত্র একবারই সে দেশে এসেছিল বিয়ের উদ্দেশ্যে, ইচ্ছে ছিল বউকেও সে দেশে নিয়ে যাওয়ার।
আলম ভেবেছিল বছর দশেকের মধ্যে হয়তোবা অনেককিছুই পরিবর্তন হয়েছে। তার ধারাবাহিকতায় সে দ্বিতীয়বারের মতো বাড়িতে এসেছিল। এসে সকলকে আগেরমতোনই হাসিখুসি দেখেছিল। মোড়লদের নিয়ে সামান্য কানাঘুঁষো যা শুনেছিল তা সে আমলেই নেয়নি বরঞ্চ প্রতিবাদী হচ্ছিল ক্রমশ: এ ভেবে যে, সে কেন তার নিজ বাড়িতে যখন খুশি তখন আসতে পারবেনা, যেখানে খুশি সেখানে ইচ্ছেমতোন ঘুরে বেড়াতে পারবেনা। যে ভাবনা সে কাজ আলম একা একাই ঘোরাফেরা করতে শুরু করেছিল।
বার বার ছুটে গেলেও মোড়লরা তক্কে তক্কে ছিল। আলমডাঙ্গার কয়েকজনের সহায়তায় আলমের উপর তারা নজর রাখছিল, শেষ পর্যন্ত আলমকে ধরাশায়ী করে তারা ক্ষ্যান্ত হলো।
৭.
“হ্যামলেটের” সাথে নিজেকে সবসময় গুলিয়ে ফেলে প্রবাল, মাঝে মাঝে ভাবে অন্য কোন দেশে অন্য কোন স্থানে তার জন্ম হলে হয়তোবা তার মনের উপর বা পারিপাশ্বিকতার উপর এতো চাপ পড়তোনা। তাকেও সবসময় জীবনের মানে খুঁজে বেড়াতো হতোনা, হতাশা মাঝে মাঝে তার উপর জেঁকে বসতে পারতনা। সেও হয়তো নির্ভয়ে বদলা নিতে পারতো তাদের পরিবারের উপর যুগ যুগ ধরে বয়ে চলা খড়গটিকে, পাশ কাটাতে পারতো নির্মম অত্যাচারের।
সবকিছু ভুলে সে নূতনভাবে চলা শুরু করেছে, চরম ভদ্র ও বিনয়ী সে ছোটবেলা থেকেই ছিল তার উপর পারিপর্শ্বিকতার চাপে সে আরো যেন মিইয়ে গিয়েছে। তার ম্রিয়মান স্বভাবের কারনেই হলে অবস্থানকালে বেশ কেয়কটি বড়ো ধরনের ঝামেরা সে এড়াতে পেরেছে। প্রবাল শুধু জানে তাকে দাড়াতেই হবে, তা যেকোন উপায়েই হোকনা কেন। ঈদ সহ অন্যান্য ভ্যাকেশনে যখন হল ফাঁকা হয়ে যায় তখনো সে হলেই পড়ে থাকে কিংবা থাকতে বাধ্য হয়। আরো দুয়েকজনকে সাথে পেয়ে সে মনে মনে খুশি হয় কিংবা তাদের মাঝে সান্তনা খুঁজে ফেরে। ভাবে তারাও হয়তো একই যাত্রার পথিক।
ঈদে বাড়ি যাবেনা শুনে শ্রাবনীর বাবা থাকতে না পেরে জিজ্ঞেসই করে ফেলেছিলেন “তুমি বাড়ি যাবেনা কেন?” প্রবাল একদম লজ্জায় পড়ে গিয়েছিল, আবেগের আতিশয্যে সে খানিকটা বলে দিয়েছিল তার পরিবারের ইতিহাস, বলেছিল তার ভাই আলম চৌধুরীর পরিনতির কথা, তার জীবনের উপর সবসময় প্রচ্ছন্ন হয়ে থাকা আশংকার কথা। উত্তরে তিনি খানিকক্ষণ গুম হয়ে বসেছিলেন এবং অবশেষে বলেছিলেন
“হলে তোমার থাকায় কোন অসুবিধা হলে হল খুলে যাওয়া পর্যন্ত তুমি নিশ্চিন্তে আমাদের বাসায় থাকতে পারো” এটুকুতেই আলমের বুক পর্যন্ত কান্না উঠে এসেছিল। বাবা মায়ের নিকট থেকে অনেক দূরে থাকা আলম হঠাৎ করেই যেন স্নেহের পরশ পেয়েছিল এবং সাথে সাথেই শক্ত হয়ে ওঠেছিল।
কোনক্রমেই না, সে ভীতু নয়, বিরুপ পরিস্থিতি সামলানো তার নিকট উঠা বসার মতোই সহজ ব্যাপার। সে নিজেকে মানিয়ে নিতে জানে, সে আরো জানে কিভাবে আরো বিচ্ছিন্ন হতে হয়, কিভাবে নিজেকে কোলাহলপূর্ন স্থান থেকে সরিয়ে নিজেকে আইসোলেটেড করে ফেলতে হয়। প্রয়োজনে সে সারা জীবনের জন্য হাইবারনেশনে চলে যাবে তবুও সে কখনোই হার স্বীকার করবেনা। তার মাথাটিকে সে উঁচু করবেই করবে।
__________________________________________________________________________________________________________
পুনশ্চ: প্রিয় পাঠক, সচেতন ভাবেই আরো দুটো খুনের বর্ণনার কথা এড়িয়ে গিয়েছি এ ভেবে যে, বড্ডো ক্লীশে হতে পারে বিষয়টি। অনেক বছর বাদে আবারো আপনাদেরকে প্রবাল চৌধুরী অথবা প্রবাল চৌধুরী হয়ে ওঠার সত্যি গল্প শোনাবো, তবে আপাতত এ ধারাবাহিক এপিসোডে আর নয়। সচলদের সমর্থনে নূতন একটি গল্প শোনাতে চাই, ভাল লাগলে তবেই..
সামনের অথবা পেছনের ঘটনাবৃত্তান্ত-১
সামনের অথবা পেছনের ঘটনাবৃত্তান্ত-২
পূর্ববর্তী লেখা:
আশরাফুল কবীর
মন্তব্য
এবারেরটা কিছুই বুঝিনাই
#প্রিয় মরুদ্যান ভাই, আমি লাফাচ্ছি, একটু আগেই হাচল হ ওয়ার এক্সেস পেয়েছি, সুন্দরভাবে বুঝামুনে পরে, আপাতত ভালবাসা নিন।
>আশরাফুল কবীর
হাচলত্বের অভিনন্দন!
ডাকঘর | ছবিঘর
প্রিয় তাপস দা, হাচলত্বের অভিনন্দন! জানানোর জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ ও ভালবাসা নিন। ভালো লেগেছে খুব আপনার মন্তব্য পেয়ে।।।
#আমি আমার ছবিটাকে সামনের পেজে এক্সেস করাবো কিভাবে এবং একই সাথে লেখার পাশে বামদিকে প্রদর্শন করবো কিভাবে, জানালে ভালো হয়।
#আবারো ধন্যবাদ আপনাকে, ভাল থাকুন সবসময়
আশরাফুল ভাইকে অভিনন্দন
#ধন্যবাদ প্রিয় অমি_বন্যা আপনাকে, অভিনন্দন জানানোর জন্য কৃতজ্ঞতা বোধ করছি। ভাল থাকুন সবসময়।
পুনশ্চ: আপনিও দ্রূত সচল হোন, এ প্রত্যাশায়
হাচলত্বে শুভেচ্ছা।
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
#ধন্যবাদ শিমুল আপনাকে, লেখা খারাপ হোক বা ভাল হোক পাশে থাকলে খুশি হবো।।।।
>ভাল থাকুন সবসময়
অভিনন্দন।
facebook
#আজ ধনে পাতার ঘ্রান অন্যরকম মনে হচ্ছে, অনেক ধন্যবাদ আপনাকে প্রিয় তারেক অনু ভাই।
#ভাল থাকুন সবসময়
নতুন মন্তব্য করুন