আমাদের পীরগণ
"যাহার কোনো পীর নাই তাহার পীর শয়তান"।
কিন্তু এযুগের পীর কী জিনিস? যদি যুগের সাথে তাল মিলিয়ে বাঁচতে চান তাহলে পড়ুন!
কী বুঝলেন? অন্তরে যদি জ্ঞানের আলো না থাকে তাহলে কিছুই বুঝবেন না। আপনারাতো ইংরেজি ইহুদি-নাসারাদের শিক্ষায় শিক্ষিত লোক। দ্বীনের আলো আপনাদের অন্তরে পৌঁছায় না। আপনাদের ভাষায় সহজ করে বলতে গেলে, পীর হচ্ছেন আপনার শিক্ষক, আপনার সুপারভাইজার, একাডেমিক এডভাইজার; আপনার গুরুদেব। শিক্ষক ছাড়া আপনি কোন কিছু শিখতে পারেন? পারেন না। আপনি এক ক্লাস থেকে অন্য ক্লাসে উঠতে পারেন? পারেন না। আপনার কাজ করে ফাটিয়ে ফেললেও পিএইডি শেষ করতে পারেন? পারেন না। তাই পীর ছাড়া আপনার জীবন অন্ধকার। বাঁচতে হলে আপনাকে কোন না কোন পীরের মুরিদ হতে হবে। পীরের মুরিদ হওয়া ছাড়া আপনার পক্ষে আখিরাতে বেহেশত পাওয়া সম্ভব নয়! ওহ, আবার দ্বীনের কথা চলে আসলো; আপনারা সচলায়তনের লেখক-পাঠকদের দিলে মোহর করা। আপনাদের এই বস্তুবাদী দুনিয়ার ভাষায় বলতে গেলে, ভাল পাশ না দিলে, ভাল চাকরি পাবেন না, ভাল গাড়ি-বাড়ি হবে না, ভাল বউ পাবেন না, সমাজে মুখ দেখানোর যোগ্যতা থাকবে না! তাই আপনার পীর খুঁজে নিতে হবে এবং তাকে অন্ধের মত বিশ্বাস করতে হবে। তাকে আপনার সর্বোচ্চ শ্রদ্ধার আসনে রাখতে হবে। তার বিরুদ্ধে কেউ কিছু বললে তার মাথা ফাটিয়ে দিতে হবে- আপনার পীর শুধু আপনার নন, উনি আপনার মত আরও অনেকের পীর; উনি যাদের পীর তারা আপনার ভাই-আপনার বন্ধু, আপনার একান্ত আপন জন।
পীর ছাড়া আপনার জীবন পুরোটাই বৃথা; অথচ আপনার নিজে কিছু করার ক্ষমতা নাই-মুরোদ নাই, আপনি একদম সুশীল। সমাজের কিছু খারাপ লোকের কারণে যেসব কথা আপনি বলতে পারেন না কিন্তু আপনার মনের কথাগুলো কীভাবে যেন বলে ফেলে, আপনার স্বার্থের সাথে পুরোপুরি মিলে যায় এমন কাজগুলো করে, সাথে সাথে সুপারম্যানের মত ক্ষমতাশালীও, এমন একজন পীর আপনার লাগবেই লাগবে। কিন্তু তাকে পাবেন কী করে? এজন্যেই এই নির্বোধের এই লেখাটি লেখা- যেন মমিন বান্দারা সঠিক পীর খুঁজে পান।
পীর পেতে হলে আপনাকে অনেক যাচাই বাছাই করতে হবে। আপনি যদি শুধু পীর নাম দেখেই ঝাঁপিয়ে পড়েন তাহলে হবে না। যেমন ধরুন, সচলায়তনের সত্যপীর -উনি নামে পীর হতে পারেন কিন্তু উনার লেখা দেখলে আপনি উনাকে পছন্দ করার কোন কারণ নাই। আপনাকে অনেক চিন্তা করতে হবে, এবং আপনার সামাজিক অবস্থা-মানসিক অবস্থা-সুযোগ-সুবিধা-ঈমান-আকিদা-কাকে ঘায়েল করতে চান-কাকে পীর হিসাবে নিলে আপনার জন্য সুবিধা হবে-আপনি ক্রিকেটে কোন দেশকে বা রাজনীতিকে কাকে সাপোর্ট করেন এসব হাজারো ফ্যাক্টর আপনার বিবেচনায় নিতে হবে। আর সময়ের সাথে আপনার সুবিধামত পীর পাল্টাতে হতে পারে। আপনি ক্লাস টেনের উচ্চতর গণিতের অঙ্ক করার জন্য ক্লাস ফাইভের বাংলা শিক্ষকের কাছে গেলে লাভ হবে? ওহ, হ্যাঁ, আপনার পীর আবার সাবজেক্ট ডিপেডেন্ট। এই বস্তুবাদী দুনিয়ায় সাবজেক্টের অভাব নাই। সব বিষয়ে আপনি না জানতে পারেন, আপনার একজন পীর সবকিছু নাও জানতে পারে। তাই প্রতি বিষয়ে আপনার একজন পীর দরকার হতে পারে যিনি সেই বিষয়ের সাথে আপনার স্বার্থের-আপনার মনোবাসনার-আপনার আখিরাতের বেহেশতের সংযোগ ঘটিয়ে দেবেন। আর একটা জিনিস খেয়াল রাখতে হবে, দুনিয়াতে প্রতিনিয়ত মানুষ ইসলাম (হিন্দু ভাইরা পড়েন হিন্দুধর্ম, খ্রিস্টান ভাইরা পড়েন খ্রিস্টধর্ম, কম্যুনিস্টরার পড়েন কম্যুনিজম, ...যে নিজেরে যা মনে করেন সেইটা পড়েন, রিভার্স ফ্লো এর কথা একদম চেপে যান) গ্রহণ করছেন...দ্বীন-জ্ঞান-সঠিক আলোর পথে আসতেছে। তাই সুবিধামত যারা আপনার পক্ষে চলে আসছে, আপনার পক্ষে কথা বলছেন, তাদেরকেও আপনি পীর হিসাবে নিতে পারেন।
যেমন ধরেন কাদের সিদ্দিকী! আপনি যদি ক্রিকেটে পাকিস্তানের সাপোর্টার হন, এবং/অথবা দেশে জামায়াতি ইসলামের সাপোর্টার হন, এবং/অথবা সোউদি শরীয়া আইনের সাপোর্টার হন, এবং/অথবা আমরা-পাকি ভাই ভাই মনে করেন, তাহলে একবার চিন্তা করে দেখেনঃ উনি একাত্তরে কী পরিমান খারাপ কাজ করেছেন, আপনার আসল বাপদের (আপনি যাদের গো'য়া দিয়ে পার্টস বাই পার্টস হয়ে বের হয়েছেন) মেরে তক্তা বানিয়ে ফেলেছিল। সেই তিনি এখন আপনার দলে- সত্যের পথে- আলোর পথে এসেছেন! তিনি আপনার বাপের গেলমান বন্ধুদের জন্য কী পরিমান কষ্টই না করছেন- রাস্তায় রাস্তায় বিলাপ করছেন। তার মত বড় মুক্তিযোদ্ধার কথাও এদেশের জালিম-নমরূদ সরকার রাখছে না... তিনি ছিলেন
আসল মুক্তিযোদ্ধা, তিনি সার্টিফিকেট দিয়েছেন যে সাঈদী-গোলাম আযম-নিজামি-সাকাচৌধুরী পবিত্র মানুষ; এর চেয়ে বড় সার্টিফিকেট আর কে দিতে পারবে? আপনি আপনার মনের মত একজন পীর পেয়ে গেছেন। এখনই ফেসবুকে পোস্ট করুন..."এদেশের সোনার সন্তান মুক্তিযোদ্ধারাও আজ নির্যাতিত"। সোনাব্লগ-এ গিয়ে সোনার দেশের এই দুর্দশা নিয়ে একটা জ্বালাময়ী পোস্ট দিন। অনেক পীরভাই-ধর্মভাই পাবেন। এভাবেই আপনি চিনতে পারবেন আপনার সাথে একমত মানুষগুলোকে।
এখন আপনি যদি সত্যিকারের মমিন-মুসলমান হন, তাহলে আপনার জন্য সত্যিকারের ভেজালহীন পীরের কিন্তু একদম অভাব নাই। এদের যে কাউকে বা সবাইকেই আপনি পীর এমনকি আপনার পয়গম্বর-নবী হিসাবে বিবেচনা করতে পারেন। সেই দেড়হাজার বছর আগে যদিও আমাদের শেষ নবী চলে আসছিলেন, কিন্তু এই সময়ে ইহুদি-নাছারাদের ঔদ্ধত্য বন্ধ করতে আপনার অনেক অনেক নবী-পীর-আওলিয়া দরকার। সেই লিস্টে সবার আগে আছেন মহান হিটলার। উনি এত্ত ইহুদি মেরেছেন যে উনাকে নির্দ্বিধায় সাচ্চা মুসলমান হিসেবে আপনি শ্রদ্ধা করেন। উনি বেঁচে থাকলে আজকে দুনিয়াতে আম্রিকা-ইহুদি কেউ থাকতো না। ইসস...কিন্তু বেশি আক্ষেপের দরকার নাই!
এরপরেই আপনার প্রিয় নবীর লিস্টে আছেন 'লাদেন'। পবিত্র সাচ্চা মানুষ- একজন সত্যিকারের মুসলমান যেমন হওয়া উচিত। আপনি প্রথম আলোর মত পত্রিকা একদম পছন্দ করতেন না, কিন্তু এখন প্রথম আলো অনেক দিন ধরে আস্তে আস্তে আপনার প্রিয় পত্রিকার লিস্টে ঢুকে যাচ্ছে; প্রতিদিন লাদেনের মহান লাদি'র (থুক্কু) মানে কর্মকান্ডের যে বিবরণ আপনি পড়ছেন, তাতে উনার প্রতি (এবং প্রথম আলোর প্রতি) আপনার শ্রদ্ধা দিনদিন বাড়ছে। কিন্তু আপনি শিক্ষিত, আপনার বিজ্ঞানে-ইঞ্জিনিয়ারিং এ তিন চারটা পিএইচডিও আছে! তাই জনসমক্ষে আপনার সেই লাদেন-বৃত্তি প্রকাশ করলে একটু সমস্যা হতে পারে। তাই আপনি নানাবিধ বিশ্লেষণসহ তীব্র জ্বালাময়ী ভাষায় 'আল-কায়েদা আসলেই দায়ী কিনা এবং সব আম্রিকার ষড়যন্ত্র কিনা' বলে আপনার জ্ঞান প্রকাশ করেন। প্রথম আলোর কথা যখন আসলোই তখন আপনার পছন্দ বাড়ার আরও অনেক কারণ আপনি বুঝতে পারেনঃ প্রতিদিন পাকিস্তানের কোন খেলোয়াড় কী দিয়ে ভাত (বা রুটি) খাইলো, আফ্রিদীর হাগার আজকে রঙ কী ছিল এইসব খবরতো থাকেই, আরো থাকে পুনম পান্ডে আজকে টুইটারে কী দিল, দুনিয়ায় কোন নায়িকা কাল রাতে অন্তর্বাস পড়লো কী না বা কী কী দেখাইলো, সানি লিওন আজকে কী কী করলো, প্রভার স্বামীর আজ মন কেমন...আহ, এই লিস্ট শেষ হবার নয়।
যাক, আবার প্রসঙ্গে ফেরত আসি। কিন্তু আপনার লাদেন-প্রেম দেখাতে না পারার আক্ষেপ কিন্তু আপনি একদম পুষিয়ে দিতে পারেন, আপনার আরেক নবীর ভিডিও-কথা-জ্ঞান প্রচার করে। সেই নবী যা বলেন তা আপনার কাছে কোরানের আয়াতের চেয়েও বেশি সত্য! উনার কথা শুনে লাখে লাখে মানুষ আলোর পথে চলে আসছে (যেমন সাঈদীর ওয়াজ শুনে অনেক কাফেরই সাথে সাথে মুসলমান হয়ে যায়, এমনই সে যাদু! সত্যকে কে দূরে রাখতে পারে?)। উনি এযুগের হারকিউলিস, একাই সারা দুনিয়ার কাফেরদের বিরুদ্ধে লড়ছেন। তিনি আর কেউ নন, মহান বিজ্ঞানী ডক্টর জাকির নায়েক। আপনি শিক্ষিত হোন বা অশিক্ষিত, আপনার মনের কথাগুলো আর কেউ এভাবে বলতে পারে না! উনার মত পবিত্র-জ্ঞানী মানুষ এই যুগে কেউ নেইঃ উনি থিওরি অভ রিলেটিভিটি থেকে শুরু করে বিবর্তন সব বিষয়ে বিশেষজ্ঞ। যদিও কিছু হারামখোরের দল তাকে 'জোকার' বলে ডাকে, গুগল সার্চ দিলে নানা ইসলাম ধর্মীয় সংগঠন-ধর্মগুরু (থুক্কু চরম উদাস ভাই, পীর-পরহেজগার হবে) তাকে কাফির-ভন্ড-ইতর-ধর্মব্যবসায়ী (পাঠক দিয়ে দেখুন) বলে মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ছড়ায়, কিন্তু ডক্টর নায়েক হচ্ছেন 'প্রফেসর অভ অল প্রফেসরস', দ্বীনের পথে আপনার পিএইডির সুপারভাইজার! আপনার বায়োলজি বা পদার্থবিদ্যায় পিএইচডি থাকলেও আপনি বিশ্বাস করেন বিবর্তন একটা হাস্যকর প্রোপাগান্ডা, পৃথিবী আসলে সমতল, সূর্য পৃথিবীর চারদিকে ঘোরে, এবং নিউটনের সূত্রগুলো আসলে মিথ্যা- খোদা বল না দিলে কিছুই নড়ে না। এবং আপনার এই বিশ্বাস আরও পোক্ত হয় ডক্টর নায়েকের বিদগ্ধ আলোচনায়।
আপনার এই লিস্টের নিচের দিকে, বিদেশের যাদের আপনি নবী না হলেও পীর বলে মানেন তারা হল সাদ্দাম হোসেন (বাপের বেটা), গাদ্দাফি (দ্য রিয়েল বাঘের বাচ্চা, সাচ্চা মুসলমান ছিল), আহমেদিনেজাদ (এমন পবিত্র-সৎ রাজনীতিবিদ দুনিয়াতে আর আছে?), সৌদি শরীয়া আইন, ইমরান খান, হামিদ মীর, মেহেরজান, সাহেবজাদা আফ্রিদী, সাঈদ আনোয়ার-ইনজামাম-মোহাম্মদ ইউসুফ-হাশিম আমলা, মাঝে মাঝে মোহাম্মদ ওবামা, সৌদি বাদশা, পাকিস্তানের সতের কোটি মানুষ, শাহরুখ খান (মুসলমান কিন্তু)...লিস্টে কত নাম!
এইবার ঘরের দিকে মুখ ফেরাই। আবারও বলি বাংলা হইলো পীর-আওলিয়ার দেশ- ইখতিয়ারুদ্দিন মুহম্মদ বখতিয়ার খিলজি, কায়েদে আজম, আইয়ূব খান, ভুট্টো, ইয়াহিয়া, মওদুদীর দেশ। এখানে তাদের বংশধরেরা আছে যেমন গোলাম আযম, নিজামি, সাঈদী, মুজাহিদ, কামারুজ্জামান, সাকা চৌধুরী, আমিনী পীর (মুফতি), শর্ষীনার পীর, দেওয়ান বাগী পীর, চরমোনাই পীর, তারেক জিয়া, মেহেরজান, ইত্যাদি। ইনারা হলেন ধর্মের পীর, বাংলার মাটিতে ইসলামের ধ্বজাধারী প্রদীপ (থুক্কু, চিরাগ)।
এখন আপনি যদি উদার মনের হন, আপনার মন যদি চঞ্চল হয়, আপনি যদি মৌমাছির মত জীবন চান তাহলে দেশের রাজনীতিতে আপনার মনমত পীর হচ্ছেন ব্যারিষ্টার মওদুদ আহমেদ, ব্যারিষ্টার রফিকুল হক, মতিউর রহমান ইত্যাদি। উনারা আজ দেশের বিবেক, দেশের একমাত্র সৎ-পবিত্র ব্যক্তি। কিন্তু দাঁড়ান, আপনার আদর্শ মৌমাছির মত ফুলে ফুলে মধু খাওয়া; তাই উনাদের দলে গোপনে মন বন্ধক দিয়ে কিছুদিন অপেক্ষা করুন। দেশের সেবা (মানে নিজের সেবা, দেশের একজনের সেবা মানেই হল দেশের সেবা) করার জন্য একটা প্রকল্প বানান, তার নামের প্রথমে একটা 'শেখ' অথবা 'বঙ্গবন্ধু নিদেনপক্ষে 'বেগম ফজিলাতুন্নেসা' বসান...টাকা কোন সমস্যা না, বাজেট কোন সমস্যা না, আপা সাথে সাথে পাশ করায়ে দিবেন। আপা তেল খুব পছন্দ করেন, যারা উনার পা চাটেন তাদেরও খুব পছন্দ করেন। এখন সরকারের-আওয়ামী লীগের সবাই সেটা জানেন; যা ইচ্ছা তা করুন- নাম দিন আপাততঃ আপনার এই পাঁচ বছরের পীর (উপরে উপরে কিন্তু, পরের ইলেকশন দেখে পরের পাঁচ বছরের জন্য পীর নির্বাচন করতে হবে) বঙ্গবন্ধুর নামে। এই নামের কী মহিমা!!! দেশের প্রতিটা জিনিসের নাম দিয়ে দিন উনার নামে...সব কাজ জায়েজ হবে, টাকারও অভাব হবে না। আর বিভিন্ন সভা-সেমিনারে বলতে থাকুন, বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকতে স্বপ্ন দেখেছিলেন, দেশের সবাই বঙ্গবন্ধু শহরের বঙ্গবন্ধু এলাকায় বঙ্গবন্ধু গণশৌচাগারে-পেশাবখানায় বঙ্গবন্ধু মার্কা বদনায় বঙ্গবন্ধু মার্কা ট্যাপ থেকে পানি নিয়ে শৌচকর্ম সাধন করে বঙ্গবন্ধুর নামাঙ্কিত ও ছবি সম্বলিত টাকা দিয়ে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক বঙ্গবন্ধু শৌচাগার মালিক সমিতি কর্তৃক নিয়োজিত বঙ্গবন্ধু শৌচাগার দারোয়ান লীগের কারো হাতে শৌচকর্মের দায় পরিশোধ করবেন!
এহ, বার বার বেলাইনে চলে যাই! আবার আপনার কথায় ফেরত আসি। আপনি রাজনীতি ঘৃণা করেন, বিশ্বাস করেন দেশের রাজনীতিবিদরা সবচেয়ে খারাপ, দেশের এই অবস্থার জন্য তারাই একমাত্র দায়ী। তাদের সবাইকে আজ ধংস করে দিলে বাংলাদেশ কাল আমেরিকা-জাপান হয়ে যাবে। দেশের ছাত্ররাজনীতি আজকেই বন্ধ করে দেয়া উচিত। অবশ্য শিক্ষকরা জ্ঞানী মানুষ, রাজনীতি করা তাদের মৌলিক অধিকার। আপনি মনে করেন বিএনপি-আওয়ামী লীগের চেয়ে জামায়াত ভাল; অথবা দেশে এই দুই দলের চেয়ে আপনি তৃতীয় কাউকে চান। আপনি মনে করেন মুক্তিযুদ্ধে যা হওয়ার হয়েছে, এখন সব ভুলে সামনে এগিয়ে যেতে হবে- স্ট্র্যাটেজিক হিসাব করে হাতে-হাতে ধরাধরি করে বড়ভাই পাকিস্তানের পাছায় চুমা দিয়ে তাদের সাথে সম্পর্ক তৈরি করলে ভারত টিঁপাইমুখ বানানো বন্ধ করে দেবে, বিএসএফ বন্ধুক ফেলে ফুল ছুঁড়ে মারবে। কিংবা আপনি শিক্ষিত-মধ্যবিত্ত শ্রেণীর সদস্য হিসাবে মনে করেন, দেশের উন্নয়নের জন্য উটপাখির মত বালিতে মুখ গুঁজে রাখা ঠিক না (যদিও উটপাখি বালিতে কখনোই মুখ গুঁজে রাখে না) এবং আশা নিয়ে আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়ে ভুল করেছেন (আসলে দেন নাই, ভাব বুঝে বলেন আরকী! যেমন আপনি কথায় কথায় বলেন জাফর ইকবাল আপনার প্রিয় লেখক কিন্তু আসকে আপনার প্রিয় লেখক হুমায়ূন আহমেদ) আওয়ামী জালিম সরকারের কারনে অনেক মান্যগণ্য লোকের আজ সম্মান ভুলুন্ঠিত, আপনি রাজনীতি ছাড়াই দেশের অর্থনীতি উন্নত করে ফেলতে চান, রাজনীতি না করেই দুর্নীতি নির্মূল করে ফেলতে চান, ফেসবুকে স্ট্যাটাসের পর স্ট্যাটাস দিয়ে বিপ্লব করে ফেলেন, আপনি চান শিক্ষিত-জ্ঞানী লোক দেশের প্রধান হোক; তাহলেও আপনার পীরের অভাব নেইঃ সবার আগে আছেন বাংলাদেশের একমাত্র অফিসিয়াল নব্যুয়তপ্রাপ্ত আমেরিকার স্নেহধন্য ডক্টর ইউনূস, আছেন জ্ঞানের ভান্ডার সত্যবাদী যুধিষ্ঠির বুদ্ধিজীবি আসিফ নজরুল, আছেন নতুন রাজনীতিমুক্ত সমাজের আহবায়ক মতিউর রহমান, আছেন লেখক সম্রাট (সর্বাধিক জনপ্রিয় লেখক রসময় গুপ্তকে হারিয়ে দেয়া বীর) হুমায়ূন আহমেদ, আছেন তরুণ সত্যবাদী নেতা-তরুণ সমাজের তেজি হারকিউলিস আন্দালিব পার্থ...ইত্যাদি। তারা যা-ই বলেন তা-ই সত্য, এর বাইরে কোন সত্য নাই।
নবী ইউনূসের মত লোক বাংলাদেশের রাজনীতিতে আসলে বাংলাদেশ আমেরিকা হয়ে যাবে, কারণ তিনি হিলারী ক্লিনটনের প্রিয় বন্ধু; তিনি দেশের ক্ষমতায় আসলে দেশে কোন গরীব থাকবে না, সবার ঘরে ঘরে একটা ব্যাংক হয়ে যাবে। ইউনূস নবী যে সে লোক নন, তিনি ব্যাংক-অর্থনীতির জিনিস দিয়ে, শান্তির নোবেল নিয়ে আসছেন দেশে- সহজ কথা? উনি অংক পরীক্ষা দিয়ে বাংলায় ফুল মার্কস পেয়েছেন- এ এক অলৌকিক ব্যাপার! এই অসম্ভবকে সম্ভবকারী লোকটিকে ভাল না বেসে পারা যায়?! উনার এক ডাকে হিলারী এসে বাংলাদেশকে শাসিয়ে গেছেন, উনি বুঝিয়ে দিয়েছেন, একটি স্বাধীন-সার্বভৌম দেশের চেয়ে একটি ব্যাংক ও একজন ব্যক্তি অনেক অনেক বড়! সারা দুনিয়ার কেউ বাংলাদেশ চেনে না, কোন বাংলাদেশীকে চেনে না, বাংলাদেশের দুনিয়াতে কোন গৌরব নেই- এই মহান মানুষটির কারণে সারা দুনিয়া আমাদের ঝুঁকে ঝুঁকে সালাম করে; যেখানেই যাই দুনিয়ার সবাই একবাক্যে চিনে ফেলে আমি ইউনূসের দেশের লোক। এমন লোকের মত নবী-পীর পেয়ে আমরা ধন্য! আমাদের বাংলাদেশি-বাঙালি জীবন ধন্য। এত বড় মানুষটি গ্রামীণ ব্যাংকের জন্য সারা দুনিয়া টলিয়ে দিয়েছেন! অথচ উনাকে খারাপ লোকে সুদখোর বলে, অথচ উনি ব্যবসা করছেন মাত্র! উনি 'শক্তি দই' খাইয়ে সবাইকে কত শক্তিমান করে তুলেছেন, কয়দিন পর সবাইকে হয়তো 'শক্তি পানি' খাওয়াবেন। খারাপ-পরশ্রীকাতর-হিংসাপরায়ণ-গুণীর কদর করতে না জানা বাঙালি কিছু লোক বলে, উনি গ্রামীণ ব্যাংকের জন্য যা করেছেন, তার কোটি ভাগের একভাগ বাংলাদেশের জন্য করলে, তার ক্ষমতা-বন্ধুত্ব গ্রামীণ ব্যাংকের বদলে বাংলাদেশের জন্য কাজে লাগালে বাংলাদেশের নাকি অনেক সাহায্য হতো। আরে সেজন্যেই তো উনাকে আমাদের মাথায় তুলে রাখা উচিত। গ্রামীণ ব্যাংকের উন্নয়ন মানে বাংলাদেশের ১৫ কোটি মানুষের উন্নয়ন। বেকুবের দলগুলো যে কবে বুঝবে!
আপনার আরেক পীর আসিফ নজরুল। যিনি সবসময় সত্য বলেন। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নামে যে প্রহসন-মিথ্যা মামলা চলছে তার বিরুদ্ধে তিনি কলম দিয়ে রক্ত ছোটান- টক শোতে যুক্তির কামানের গোলাতে ধরাশায়ী করেন প্রতিপক্ষকে। সাঈদী-নিজামি যে পবিত্র ব্যক্তি বৃহত্তর জামায়াতে ইসলামীর বাইরে একমাত্র তিনিই জনসমক্ষে বলার সাহস করেন। স্যালুট সেই পীরকে। প্রথম আলোর উনার প্রতিটি লেখা পড়ি আর উনার প্রতি শ্রদ্ধায় মাথা নূঁয়ে যায়। রাজনীতির কূটিলতা আর বার বার মুক্তিযুদ্ধকে টেনে নিয়ে আসা কূটচালগুলো কত সহজ করে তিনি আমাদের তরুণদের বুঝিয়ে দেন। তিনি শিক্ষিত সমাজের মুখপাত্র- তিনি আমাদের এযুগের বুদ্ধিজীবিদের আদর্শ-নায়ক।
আগেই বলেছিলাম, বাংলার মাটিতে পীরের-নবীর-আওলিয়াদের অভাব নাই। সাহিত্য-বিজ্ঞান-দর্শণ-রাজনীতি-অর্থনীতি-ধর্ম-খেলাধুলা সবদিকেই উনারা আছেন। আপনি চিনতে না পারলে বিভিন্ন ব্লগে-ফেসবুকে-টক শোতে-পত্রিকাগুলোতে তাদের এবং তাদের উম্মতদের-তাদের মুরীদবৃন্দের দেখা পেয়ে যাবেন। উনারা আপনার-আমার মত মমিনদের জন্য খুবই জরুরী- নাহলে শয়তানের পাল্লায় পড়ে যাবেন! এখনো না হয়ে থাকলে আজই মুরীদত্ব-উম্মতত্ব পদে নিজের নাম লেখান...এক্ষুণি!
-নির্বোধ
মন্তব্য
পইড়া শান্তি পাইলাম
..................................................................
#Banshibir.
আমি আপনের মুরিদ হইতাম চাই কিন্তু
৫তারা দিলাম। আবার দেবার চান্স থাকলে দিতাম।
__________________________
বুক পকেটে খুচরো পয়সার মতো কিছু গোলাপের পাঁপড়ি;
থ্যাঙ্কু
ওরে নির্বোধ এইটা কী লেখা দিলেন?
ভুল কর্সি?
ধন্যবাদ
-নির্বোধ
চরম নির্বোধ নিকে লেখা শুরু করেন। চরম। আজকে পাঁচতারা দাগানোর উপ্রে আছি।
চরম উদাস আর চরম নির্বোধ দুই ভাই, সত্যপীরের মুরিদ নাই।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
চরম উদাস ভাই আমার গুরু (গুরুদেব না কিন্তু ), আর আমি সত্যপীরের মুরিদ হওয়ার অপেক্ষায় আছি
জট্টিলস কারো পীরানুভুতিতে আঘাত লাগলে কোন পীর ধরবেন ঠিক করসেন ?
উনার নাম দিয়াই শুরু করছি লেখা কিন্তু
-নির্বোধ
ইডা কী পড়লাম- মাথা দিয়া তো ধুমা বাইরয়...
কড়িকাঠুরে
হায় হায়, ধুমা নিবানের জন্য পীর ধরেন তাড়াতাড়ি
পীরের দাড়ি পুইরা ধুমা মাথায় দিলে কী মাথা ঠিক হব...
যুদি অয়- তয়লে কন্- পীরের গুষ্টি শুইধ্যা ধরমু... আয় আইজকা...
কড়িকাঠুরে
দারুন । দেখা গেলো আমারও দুই একটা পীর এই লিস্টে আছে । আমি নিশ্চিত যে লেখকেরও দুই একজন আছে এইখানে । কাউরেই বাদ রাখেন নাই । খালি তারেক বাবাজি নাই । ধন্যবাদ ।
তা তো আছেই ভাই, উনার নাম দিয়াই লেখা শুরু করছি
-নির্বোধ
একটা প্রশ্ন ছিল, দেশের ছাত্র-রাজনীতি যে পর্যায়ে চলে গ্যাছে তারপরও এটাকে চলতে দেয়ার পক্ষে আপনি?
এটা সত্য যে বেশিরভাগ মানুষ সাহস/নিরাপত্তার অভাবে অথবা আমার মত যারা বিদেশে আছে, তারা মাঠে নামেনা। ক্ষোভ প্রকাশের একটাই স্বাধীন মাধ্যম এখন ব্লগ অথবা ফেসবুক। কিন্তু এই প্রতিবাদে একদমই কাজ হয়না তা কিন্তু না, ঝাল লাগে বলেই সরকার এখন বসে বসে ফেসবুকের স্ট্যাটাস পড়ে আর হাইকোর্ট দুই দিন পর পর স্ব-প্রণোদিত হয়।
লেখা খুব ভাল হয়েছে, উপভোগ্য আগাগোড়া!
-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে
আপনি শিক্ষক রাজনীতি আর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রাজনৈতিক প্রশাসন-নিয়োগ বন্ধ করে দেন, আমি তথাকথিত ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করে দিচ্ছি। ছাত্রলীগ-ছাত্রদল-শিবিরের নামে যা হচ্ছে তার জন্য কিন্তু ছাত্ররাজনীতি দায়ী নয় কারণ তথাকথিত ছাত্ররাজনীতির সাথে ছাত্ররাই সম্পর্কিত নয়! এবিষয়ে পরের পর্বে একটা লেখা দেয়ার ইচ্ছা আছে। সেখানে ছাত্ররাজনীতির (তথাকথিত) পেছনের দরজাগুলো দেখানোর ইচ্ছা আছে। দোয়া রাইখেন
ফেসবুকের যেসব কারণে সরকারের চুলকানি হচ্ছে সেগুলো কি আসলেই প্রতিবাদ? সরকারের ঝাল লাগার চেয়ে আমার এগুলো পলিটিক্যাল চিপি দেয়া বলেই মনে হয়। ফেসবুকে বিপ্লব হয় না ভাই, আপনি শুধু আপনার মত প্রকাশ করেন। ফ্রেন্ডলিস্টের কয়েকজনের সাথে তর্ক করেন- কিছু লাইক পান। শেষ! ব্লগ কম্যুনিটি ফোরাম, মতামত-বিপ্লব তৈরি করতে সাহায্য করে। কিন্তু বিপ্লব করতে রাস্তায় না নামলে, প্রতিবাদ ছড়িয়ে না দিলে কিন্তু কিছুই হয় না। উদাহরণস্বরূপ ধরেন ভারত বনধ-এর কথা। ছড়িয়েছে ফেসবুকে, উৎস ব্লগে, পালন-সফল করেছে কারা? বাস্তব জীবনের মানুষেরা। তাই না? নিরাপদ জোনে থাকার চিন্তা করলে এই দেশে মুক্তিযুদ্ধ হতোনা। প্রতিবাদ সফল করতে শুধু মানসিক সাপোর্ট থাকলেই হয় না, সহমত প্রকাশ করে থেমে গেলেই হয় না, তাতে প্রয়োজনমত সশরীরে উপস্থিত থাকার মানসিকতাও থাকতে হবে। ব্লগ দিনদিন শক্তিশালী থেকে আরও শক্তিশালী হচ্ছে। আপনি বিদেশে থাকলে এটাও জানেন ফেসবুকে/ব্লগে আপনি কী করছেন তা অনেক দেশেই সরকারী গোয়েন্দা সংস্থাগুলো নজর রাখে। তাই দিন দিন এ বিষয়ে যেকোন দেশের সরকারেরই চুলকানি বাড়তে থাকবে, এটাই এক্সপেক্টেড- এটাই শক্তি বাড়ার নিদর্শন। সাহিত্য-শিক্ষার বিষয়গুলো ছাড়া রাজনৈতিক বিষয় রাজনীতির মাধ্যমে-প্রত্যক্ষভাবেই সমাধান করতে হবে- সেটাই অপরিহার্য শেষ ধাপ। (এটা আমার ব্যক্তিগত মত!)
-নির্বোধ
ও ভুলে গেছিলাম, -নির্বোধ
আগে একবার লম্বা মন্তব্য করেছিলাম, তাহা কোথায় হারালো? (এখানে কান্নার ইমো)
রেটিং করার ক্ষমতা থাকলে আপনারে ১০ তারা দিতাম। (এখন অফিসে বসে লম্বা মন্তব্য করতে পারছিনা তাই মনে মনে বুঝে নিয়েন (হাসির ইমো))
সচলায়তনে মন্তব্য করার সমস্যা সম্পর্কিত একটি পরীক্ষামূলক মন্তব্য
নির্বোধ ভাই, লেখাটি পড়ার সময় আমার হাসি চাপতে বেশ সমস্যা হয়েছে
আপনার লেখার হাত খুব ভালো। চালিয়ে যান - আরো লেখা দেখতে চাই।
অন্যদের মত আমিও পাঁচ তারা দিলাম
ধন্যবাদ ভাই- নির্বোধ
আপনি এতদিন কই ছিলেন? আপনার লেখার হাত তো মারাত্মক।
আপনার এর আগের লেখাটা পড়েই ভক্ত হয়ে গেছি, আর এটাতো অসাধারণ।
চেষ্টা করতেছি, দোয়া রাইখেন
বস। পুরাই ধুইয়া ফালাইছেন।
লিখতে থাকেন......
ডাকঘর | ছবিঘর
সবই বুঝলাম! মাগার সমাধান টা কি? সবাই সমস্যার কথা বলে িকনতু সমাধান েকউ দেই না।
কাজী
[বঙ্গবন্ধু বিষয়ে স্যাটায়ারটুকু ভালো লাগলো না। উনাকে অসম্মান করা হয়েছে মনে হলো (ব্যক্তিগত মত অবশ্য!)]
_____________________
Give Her Freedom!
দুঃখিত ভাই, আপনি তাহলে মনে হয় ঐ পার্টটা ধরতে পারেন নি। এইখানে বিবেচ্য কিন্তু বঙ্গবন্ধু না, বিবেচ্য তার সুবিধাবাদী চাটার দল। সহজভাবে বলতে গেলে, আল্লাহ-ভগবানের নাম নিয়া সবকিছু করা যায়েজ, তা খুনই করেন আর ধর্ষণ। এখানে খারাপ কাজ করনেওলার উপরই আমি দায় দিতে চাই।
তবু দুঃখ প্রকাশ করছি। আমার মতে বাংলাদেশের রাজনীতিতে পীর হওয়ার মত লোক ছিলেন মাত্র দুইজনই-বঙ্গবন্ধু আর তাজউদ্দিন। পিরিয়ড।
ধন্যবাদ।
বুঝেছি, ঠিকাছে।
_____________________
Give Her Freedom!
পইড়া মজা পাইলাম।
পীর শব্দটা শুনলেই মুখে অশ্লীল কথা চলে আসে। থাক সেসব নাই বললাম। তবে এই ব্যাবসা বন্ধ করার উদ্যোগ নেয়া দরকার।
পীরদের কথা শুনলেই মুখে গালি চলে আসে ভাই।
jatra shuru
নতুন মন্তব্য করুন