অনেকদিন থেকেই ভাবছি একখানা ফটোব্লগ দেই। শুধু ভাবলেই তো হবে না! এমনিতে পায়ে পেরেক পোতা। নট নরন চরন। ঘরের বিছনাপাতি, আসবাব, পেনদানি, হাবিজাবি, বাড়ীর লোকেদের পোট্রেট তুলে জিবির পর জিবি খরচ হয়ে গেছে। তো এইসব ছাইপাষ দিয়েতো আর লোক হাসানো যায় না, কি বলেন?
হঠাৎ এক বন্ধু ফোন করে বোল্লো, চ, ঘুরে আসি। একটা ট্রাভেল ম্যাগে একটা নতুন যায়গার কথা পড়ে ও বুকিং করে ফেলেছে। দ্যাখো ছোড়ার কান্ড!
শিলিগুড়ি থেকে বাসে কালিংপং, সেখান থেকে শেয়ার জিপে চল্লিশ মিনিটের পথ আলগাড়া। আবার আলগাড়া থেকে ভাড়া করা গাড়ীতে মিনিট দশেকেই রিকিসুম। আলগাড়া - লাভা রাস্তার পাশেই এক ছোট্ট পাহাড়ী গ্রাম।
পাহাড়ে তো আলাদাভাবে দেখার কিছু নেই, আবার পুরোটাই দেখার। এই দেখছেন, চারদিক ঝকঝকে পরিষ্কার, এরি মধ্যে কোথা থেকে ঝুপ করে নেমে এলো মেঘের দল, গোটা পাহাড়-উপত্যকায় কত্থক-ভরতনাট্যম দেখিয়ে আবার ভ্যানিস!
রিকিসুমে কোনো হোটেল নেই। যেটা আছে, সেটাকে ওরা বলে 'হোম স্টে'। একধরনের কমিউনিটি বেস্ট টুরিজম। এলেবেলে ভাবার মোটেই কারন নেই। বাড়ীর মধ্যে কাঠের কুটির বানিয়ে সেখানেই নৈশ্যযাপনের আয়োজন। রাতে কম্বলের উষ্ণ সান্নিধ্য। আর আতিথেয়তা? এসেই দেখুন।
দুপুরে মাছের ঝোল-ভাত দিয়ে ভুরিভিজের পর একটু বিশ্রাম নিয়ে বেরিয়ে পরলাম। পাহাড়ের গা বেয়ে দীর্ঘ পাইনের সারি। নির্জনতার গন্ধ। শব্দ বলতে রিনরিনে বাতাস আর পাহাড়ী পাখির কনসার্ট। সঙ্গে ফ্রী গিফট বন্য লতা-গুল্ম-জংলী ফুল।
অনেকটা চড়াই পথ ডিঙিয়ে একটা উচু উপত্যকায় পৌছানো গ্যালো। উরিব্বাস, একখানা পুরোনো বাংলোর ধ্বংসস্তূপ। ইংরেজ আমলের। পারেও বটে! জনমানবশূণ্য পাহাড়ী উপত্যকাও ছাড়েনি ওরা।
ফেরার পথে আবার হুড়মুড় করে নেমে এলো মেঘের দল।
সকালে সাত তাড়াতাড়ী ঘুম ভেঙে গ্যালো। আসলে রাতে কিছুই করার নেই। তাই নটার মযে সোজা কম্বলের ভেতরে। চা-ফা খেয়ে একটু হাট্তে বেড়োলাম। সঙ্গে ক্যামেরাবাবাজিও ছিলো।
সকালের খেয়েদেয়ে বাক্স-প্যাটরা নিয়ে ফেরা। সোজা পথ নয়। ভায়া পেডং। মোটামোটো কিলোমিটার দশেক দূরের এক ছোট্ট পাহাড়ী জনপথ। সপ্তদশ শতাব্দীর এক প্রাচীন বৌদ্ধ মন্দির এখানকার প্রধান আকর্ষন। নাম না জানা বাদ্যযন্ত্রের দ্রিমিদ্রিমি ধ্বনী আর প্রার্থনাসংগীত এখোনো কানে লেগে আছে।
******************************************
# দীপালোক
মন্তব্য
-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে
খুব ভাল
চমৎকার!
ভালো লাগলো।
__________________________
বুক পকেটে খুচরো পয়সার মতো কিছু গোলাপের পাঁপড়ি;
ভালো লাগলো রিকিসুমের পথে পথে বেড়ানো।
-------------
পথিক পরাণ
সংগে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
ফটোব্লগ হিসেবে ভালো লাগলো, কিন্তু আরো ভালো লাগতো যদি ট্রাভেলগ হতো
আমি দার্জিলিং, কালিম্পং কিংবা লাভা লোলেগা ডেলো গেলেও, রিকিসুমের নাম মনে করতে পারছি না- সে কারণেই আমি আরো জানতে আগ্রহী। যদি সম্ভব হয় আরো ডিটেইলসসহ একটা ট্রাভেলগ নামিয়ে ফেলুন।
আর গোম্ফার সেই প্রার্থনা সংগীতের কোন রেকর্ডেড কপি কি আছে আপনার কাছে ? আমি গতবছর দার্জিলিং -এ ড্রুকপা গোম্ফাতে শুনেছিলাম, রেকর্ডও করেছিলাম কিন্তু ভুলেভালে ডিলিট হয়ে গিয়েছে। যদি থাকে এবং সম্ভব হয়, ওটাও শেয়ার করতে পারেন।
আপনার আরো লেখা পড়ার অপেক্ষায় থাকলাম।
অলমিতি বিস্তারেণ
প্রথমেই অনেক ধন্যবাদ।
রিকিসুম হয়তো সেভাবে টুরিষ্ট ম্যপে যায়গা করে নিতে পারেনি। আসলে একটা ট্র্যাভেল ম্যাগে পড়ি রিকিসুমের কথা। ব্যাস। চলো।
যদি নির্ভেজাল ছুটি কাটাতে চান, আরাম করে, আয়েস করে, যেখানে ট্রাভেল এজেন্সির তাড়া নেই, তাহলে ঘুরে আসা যেতেই পারে রিকিসুম।
আর, প্রার্থনা সংগীতের ভিডিও আছে, দেখি, কাট ছাট করে কিছু একটা বানাতে পারি কি না।
ভালো থাকবেন।
বাহ, ভারি সুন্দর ছবি।
ভালো হয়েছে, চালিয়ে যান - আরো লেখা পড়ার অপেক্ষায় থাকলাম।
চমৎকার লাগলো রিকিসুম। এই জায়গাটার নামও শুনিনি।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
সময় সুযোগ হলেএকবার বেরিয়া আসুন। আরো ভালো লাগবে।
রিকিসাম গিয়েছিলাম একবার। কালিম্পং থেকে যেতে পয়তাল্লিশ মিনিট লেগেছিলো (ওরা বলেছিলো কালিম্পং থেকে পনের কিমি উত্তরে)। সম্ভবত একটা গেস্ট হাউসে ছিলাম, নামটা মনে করতে পারছিনা (স্বর্ণ, স্বর্ণালী, স্বর্ণ শিখর এই জাতীয় নাম)। কাছাকাছি একটা ষোলশ শতকে তৈরি দূর্গ ছিল, এংলো-ভূটানী যুদ্ধে সেটা ধবংস হয়।
রিকিসাম থেকে কালিম্পং, দার্জিলিং আর সিকিমের পাহাড় আর অতি অবশ্যই কাঞ্চনজংঘার মনোরম দৃশ্য দেখা যায়। তবে সেক্ষেত্রে আবহাওয়ার আনুকুল্য পাওয়াটা জরুরি।
...........................
Every Picture Tells a Story
ঠিকই বলেছে।
দূর্গটার ওখান থেকে আকাশ পরিষ্কার থাকলে সিকিম-টিকিম সব দেখা যায়। কিন্তু মেঘ-কুয়াশার ষড়যন্ত্রে আমরা সে দৃষ্য থেকে বঞ্চিত হয়েছি।
দেখা যাক, কোন একদিন...
স্বপ্নের মত ছবি
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
ওখানকার সবকিছুই এত সুন্দর। দেখি আগামী বছর হয়তো বেঁচে থাকলে পুরো কয়েক সপ্তাহ দার্জিলিং উপত্যকা চষে বেড়ানোর ইচ্ছে রাখি।
ফুডুব্লগ নামাতে থাকেন ভাইডি।
ডাকঘর | ছবিঘর
স্বাগত।
দেখি পুরোনো ছবি খুঁজেপেতে, কিছু একটা করা যায় কি না।
আমারে একটা খবর দিয়েন দাদা।
আর শিলিগুড়িতে আমার এইখানে ঘুইরা যায়েন।
দিলেন তো আগুন লাগাইয়া, আজকে থেকে রিকিসুমের স্বপ্নে নির্ঘুম কাটবে আগামী কয়দিন।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
চইলা আসেন।
দারুণ সব ছবি ; ভালো লাগলো
_________
"এসো এসো এসো আজ জয়ের বন্দরে,
হাত দুখানি দেখ মেলেছি ধরে,
প্রেম পুণ্য মায়া আর মমতায়,
একাকার রব ধরণী জুড়ে,
বিপ্লবী সুর অস্পষ্ট বর্ণ,
ভালবাসার আকুলতা,
থেমে থেমে জ্বলে"
__অভয়
দারুণ লাগল দাদা।
এত কাছে থেকেও আমিও জায়গাটার নাম শুনিনি।
পরেরবার শিলিগুড়িতে এলে জানাবেন।
আর আপনার মেইল আই।ডি টা কি দেবেন?
আমারটা
pradiptamay1 অ্যাট জিমেইল ডট্ কম্
সময় সুযোগ হলে একবার ঘুরে আসেন রিকিসুম।
এতো কাছাকাছি থাকি, দেখা হবে কোনোদিন।
আমার মেইল আই ডি:
ভালো থাকবেন।
ঘোরাঘুরি চলতে থাকুক।
facebook
চেষ্টা করি দাদা, কিন্তু সবসময় হয়ে ওঠেনা।
নতুন মন্তব্য করুন