১।
পাইল দোহারিরা সমস্বরে হাঁক ছাড়তেন-- আহা বদর বদর।।
একটা মেয়ের রূপ দেখে মুর্ছায় ঢলে পড়া! হাহ! সে আবার কেমন বীর পালোয়ান! এইটুকু শুনে ফেলে তার কখনো কখনো হাসি পেত ভীষণ। বাবা ততক্ষণে সুর বেঁধে বিরাট নগরে পৌঁছে গেছেন--
মুঠোফোনটা অনবরত ককিয়ে সরব উপস্থিতি জানাতে থাকায় সম্বিৎ আসে তার। সিঁড়ির গোড়ায় দাড়িয়ে বাম পকেট হাতরিয়ে ঠিকা ঝির বেতন আর জলিলের দোকানের মাস কাবারী বাকির ফর্দর ভেতর ডুবে থাকা মুঠোফোনের পর্দাটা সে মেলে ধরল নাক বরাবর।
Samsuddin calling…
কোন মানে হয়? আজ মাসের আঠাশ দিন। বেতনের এখনো চার পাঁচ দিন বাকি। এর ভেতরই বাড়ি থেকে খোঁজ পড়ে গেছে! ফোন যেই করুক, শেষ কথাটি কোথায় ফুড়োবে, তা যেকোনো সময় মফিদুল আন্দাজ করে নিতে পারে এখন। সামসুদ্দিনের দোকানে ফোনটা করতে কে এসেছে, এক লহমায় ভাবতে চেষ্টা করল সে। মা কি নিজেই এসেছে? নাহ। এখন সন্ধ্যা বেশ গাঢ়। গেলো মাসে শুনেছিল মায়ের চোখের অসুখটা বাড়তির দিকে। শেষমেশ চশমা নিতে হল গঞ্জের হাসপাতালে গিয়ে। নিজের জন্য একটা ভালো মুঠোফোন কেনার জন্য একটু একটু করে টাকা জমাচ্ছিল সে কিছুদিন। তখন এই প্রায় বাতিল মুঠোফোনটা বাড়িতে ওদের জন্য পাঠিয়ে দেবার একটা ক্ষীণ ইচ্ছে যে ছিল না, তাও নয়। অথচ জমানো টাকাটা কেমন নির্বিবাদে মুঠো থেকে বেড়িয়ে গিয়ে গঞ্জ, ডাক্তার আর চশমার দোকানের ক্যাশবাক্সে থিতু হল। চোখে কম দেখতে পাওয়া মা এসময় বাড়ির বাইরে আসবেনা হয়তো। তবে কে এসেছে? ছোট ভাই কবির? সে সম্ভাবনা দুর্বল ভীষণ। সেতো নাকি একজন বিশিষ্ট নবাব পুত্র হয়ে উঠেছে আজকাল। দিন পনের আগে মা বলছিল ছেলেটা ভীষণ ছন্নছাড়া হয়ে গেছে। বেলা চড়ে গিয়ে আকাশের বুক বরাবর জ্বলতে থাকলে তার সকাল শুরু হয়। অবেলায় ঘুম থেকে উঠে একেবারে দুপুরের খাবার চারটে মুখে গুঁজেই বেড়িয়ে যায় বাড়ি থেকে। রুদ্রেস্বর বাজারে সারাদিন ফুড়িয়ে বেশ রাত করে বাড়ি ফেরে। ফেরেওনা নাকি কোন কোনদিন। ওকে এই অবেলায় বাড়ির কোন কাজে পাওয়া যাবার কথা নয়। নিশ্চয়ই অন্য কেউ ফোনটা করেছে। ধরে ফেললেই জেনে ফেলা যায় অবশ্য। কিন্তু মফিদুলের ফোনটা ধরার ইচ্ছে তেমন তীব্র হয়ে উঠেনা। আজ মাসের আঠাশ তারিখ, আবার মনে পড়ল তার। কেবল তার কুশল জানতে বাড়ির কেউ নিশ্চয়ই খোঁজ করছে না। তেমনটি খুব যে ঘটে, তাও নয়। বাড়িতে কারো ফোন নেই, কিংবা সত্য কথাটা এভাবে বলে ফেলা যায় যে, কেবল বাড়ির জন্য আরও একটা ফোন কেনার সামর্থ এখনো ওদের হয়ে উঠেনি। বাড়ি থেকে এক হালট দূরে সামসুদ্দিন মিয়ার দোকানের এই ফোনে ডেকে ডেকে বাড়ির লোকদের সাথে কথা বলতে হয়। আজ অসময়ে ফোন আসাতে মফিদুলের একটু ভয় ভয়ও হতে লাগলো হঠাৎ। খারাপ কিছু ঘটলো নাতো আবার? ঘটে ঘটুক। মফিদুলের এখন কোন কিছু জানতে শুনতে মন টানছে না। ‘আর্শিনগর’ গানের মুখকলিটুকু আরও একবার বেজে বেজে থেমে গেলো একসময়। এরপর আবার বাজলো। পর্দায় তখনো একই নম্বর ভেসে ভেসে উঠছিল। দ্বিতীয়বার বেজে বেজে থেমে যাবার পর ফোনটা আর শব্দ তুলল না। মফিদুল ততক্ষণে মুঠোফোনটা বন্ধ করে দিয়েছে। চোখদুটো বন্ধ করে একবুক শ্বাস ধরে গেটের বাইরে পা রাখল সে।
২।
৩।
মেসের খাবার টেবিলে ভাতের বড় বাটিটা উল্টাতে গিয়ে মনে হল আজ বুয়া আসেনি। রান্নাবান্না বন্ধ। টেবিলের উপর স্টিলের বাটি ঠুকে একটু শব্দ হল তবুও। পাশের রুম থেকে বশির ভাইর গলা জেগে উঠল-
- মফিদুল?
- জী ভাই। মিনমিনে স্বরে জবাব দিল সে।
- এদিকে আস একটু।
বশির ভাইকে তার মোটেও ভালো লাগে না। আগে বশির ভাইও ওদের একই এনজিও তে ছিলেন। এখন ছেড়ে দিয়ে নতুন একটায় ঢুকেছেন। মাইনে মনে হয় ভালই পাচ্ছেন ইদানিং। তবুও কঞ্জুসের একশেষ। সুযোগ পেলেই এই লোকটা উপদেশ ঢালা শুরু করে। তাও যেমন তেমন উপদেশ নয়। কিভাবে অল্প টুথ পেস্টে দাঁত মেজে ফেলা যায়, অথবা একটা ব্লেডে কি করে অনেকবার শেভ করা যায় থেকে শুরু করে জুতোর সুকতলা সংরক্ষণ বিষয়ক বহুবিধ সাশ্রয়ী প্রযুক্তি নিয়ে তিনি অযাচিত জ্ঞান দান করে থাকেন। গেলো শুক্রবার মফিদুল দেখে বশির ভাই কিভাবে খুব পাতলা করে মাছের পিঠ পেটি কেটেকুটে অনেকগুলো টুকরো করে ফেললেও মাছ গলে ভেঙ্গে যাবে না, এই সংক্রান্ত এক কর্মশালায় বুয়াকে জ্ঞান দিচ্ছেন। এইরকম কঞ্জুস মানুষকে সহ্য করা একটু কঠিন বৈকি। প্রবল অনিচ্ছায় সে বশির ভাইর রুমের দিকে পা বাড়াল। রুমে ঢুকে দেখে ভদ্রলোক ঘর প্রায়ান্ধকার করে শবাসনে শুয়ে আছেন। সুইচ খুঁজে আলো জ্বেলে মফিদুল বসে পড়ল বিছানার এক কোণে।
মফিদুলের দিকে না তাকিয়েই তিনি জিজ্ঞেস করলেন- তোমার ফোন বন্ধ ক্যান?
মফিদুলের মনে হল, বলে- ভাই। আপনার মতো ব্যাটারির আয়ু বাঁচাচ্ছি। তবে সে মুখে বলল- ব্যাটারির চার্জ শ্যাষ। ক্যান? আপনি ফোন দিছিলেন?
বশির ভাই চোখ মেলে পুর্ণ দৃষ্টিতে ওর দিকে তাকিয়ে বললেন- হুম। ফোন দিছিলাম। খালি আমি না।
- আর কে? মফিদুল ঢোক গিলে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকাল তার দিকে।
- তোমার ছোট বোন। বাড়ির থিকা। বশির ভাই নির্লিপ্ত গলায় বললেন।
ভয়ের একটা তীব্র স্রোত মফিদুলের শিরদাঁড়া বেয়ে নেমে গেলো। খারাপ কিছু একটা শোনার জন্য প্রস্তুতি নেয়া দরকার, মনকে বোঝাল সে।
- তোমারে ফোনে না পাইয়া শেষে আমার এইখানে ফোন দিল।
- কি বলছে সে? মফিদুল প্রায় ককিয়ে উঠে।
- তেমন কিছুনা। তোমার বড় বোনের একটা বাচ্চা হইসে। কন্যা শিশু। ওরা ভালো আছে। আর তোমারে ফোন দিতে কইসে। তোমার ফোন বন্ধ দেইখা চিন্তায় আছে। ওদের ফোন দিয়া জানায়া দেও।
মুঠোফোনের প্রায় ক্ষয়ে যাওয়া বোতামগুলো থেকে ডান দিকের লাল রঙের বোতামটিতে অকারণেই অনেকক্ষণ চেপে চেপে ধরে থেকে মফিদুলের মনে হল, মুঠোফোন জিনিসটা আসলে অতোটা খারাপ না, যতটা তার মনে হয়।
--------------
পথিক পরাণ
মন্তব্য
মজার লেখা
অনেক ধন্যবাদ মন্তব্যর জন্য।
পথিক পরাণ
আপনার গল্পগুলোতে মাঝে মাঝেই না দেখা এক জীবনের ছবি দেখি। এ ব্যাপারটা ভাল লাগে খুব।
আর এ বিষয়বৈচিত্র আপনাকে আলাদা করে নিচ্ছে আপনাতেই, গল্পের সিকিটুকু পৌঁছতেই আন্দাজ করছি লিখিয়ের নাম কি-
পরে মিলিয়ে নিচ্ছি কেবল- 'পথিক পরাণ'
আপনার জন্য অনেক শুভকামনা!
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...
মর্ম ভাই
অনেক দিন দেখিনা আপনাকে।
আপনি এতো মনোযোগ দিয়ে লেখা পড়েন! কৃতজ্ঞতা রইল।
আসলে শহরগুলোর বাইরের বিস্তীর্ণ জনপদের মানুষদের গল্পগুলো খুব আলাদা। আমি নিজেও খুব ভালো করে এই ছবিগুলো আঁকতে পারিনা। চেষ্টা করছি তবুও আপনাদের অনুপ্রেরণা পেয়ে পেয়ে।
আপনার জন্যও শুভকামনা থাকল। ভালো থাকুন।
পথিক পরাণ
বেশ ভাল লাগলো । মাঝখানে যে আশংকা, শেষে হল তা স্বস্তিতে...
কড়িকাঠুরে
কাঠুরে ভাইকে অনেক ধন্যবাদ মন্তব্যর জন্য।
ভালো থাকুন।
পথিক পরাণ
পাভেল ভাই, অনেকদিন পর লিখলেন ! গল্প ভালো লাগল........শেষের দিকটায় মজা পেলাম।
ঠিক অনেক দিন না, মাঝে আরও দু একটা লেখা এসেছে সচলে। আপনার দৃষ্টি এড়িয়ে গেছে হয়ত।
ভালো লেগেছে জেনে উৎসাহ পাচ্ছি। ভালো থাকুন। আর আপনার লেখা কৈ? ছাড়ুন তাড়াতাড়ি---
পথিক পরাণ
আপনার দেখার চোখ আছে। সামনের গ্ল্প্গুলোতে এই বিস্তীর্ণ জীবনের গ্ল্প আরও শুনতে চাই। শুভ্কামনা রইল।
জী ভাই। এই জন্য চশমা দিয়া আমার চোখ সামলে শুমলে রাখি (কিডিং)।
আপনি সম্ভবত একটা অসমাপ্ত গল্প মডারেশনে জমা দিয়েছিলেন। ঐ গল্পটা শেষ করে ছাড়ুন দ্রুত। অপেক্ষায় আছি।
মন্তব্যর জন্য ধন্যবাদ। আর শুভকামনা রইল আপনার জন্যও।
পথিক পরাণ
কয়েকটা সংশোধনীর প্রয়োজন বোধ করছি। যেমন, গ্রামের নাম 'রুদ্রেস্বর' ঠিক হয় না, 'রুদ্রেশ্বর' ঠিক হয়। চম্পাবতী কোথাও কোথাও চম্পাবতি হয়ে গেছে। উপকথার নায়কটির নাম গহর বাদশাহ্, গফুর বাদশাহ্ নয়। মফিদুলের বাবার নাম সোমেশ্বর আলীও একটু বেমানান লাগে, তবে এটার সংশোধনী আবশ্যক নয়। যতদূর জানি পুঁথি দেখে পড়তে হয়। একতারা সহযোগে পুঁথির যে ভোকাল রিসাইটেশন করা হয় তাকে 'গীত' বলা হয়। এটিই যখন দুইজন গায়ক দুইটি চরিত্র বা পক্ষ হয়ে গেয়ে থাকেন তখন সেটা পালাগানের একটা ফরম্যাট হয়। আনুষ্ঠানিক পালাগানের বিষয় সাধারণত একটু গুরুগম্ভীর বা দার্শনিক তত্ত্বের ওপর হয়ে থাকে। স্নাতক পাশের পরে যেটি পাওয়া যায় সেটি সনদপত্র। স্নাতকোত্তর পর্যায়গুলোতে ডিগ্রী পাবার জন্য যে গবেষণাপত্র রচনা করতে হয় সেটিকে অভিসন্দর্ভ বলে। টুকটাক কিছু বানান ভুল আছে যেগুলো আরেকবার দেখে নিতে পারলে আপনিই ঠিক করে ফেলতেন। হাচল হবার আগে সম্পাদনার সুযোগ যেহেতু মিলছে না, তাই লেখা পোস্টানোর আগে লেখা আরেকবার শুধু বানানের জন্যই চেক করে নেবেন।
স্থান হিসেবে দুটো খণ্ডচিত্র দেখতে পেলাম। একটা গ্রামের যেটা তার বৈশিষ্ট্যের অনেক কিছু হারিয়ে একটা ট্রানজিশনের দিকে আগাচ্ছে। আরেকটা মফস্বল শহরের যে নগরের চরিত্র এখনো পুরোপুরি অর্জন করে উঠতে পারেনি।
কাল ও পাত্রের হিসেবে দুটো পর্যায় দেখতে পেলাম। একটা সোমেশ্বর আলীর - যেটা এবং যারা মোটামুটি ইতিহাসের গর্ভে হারিয়ে গেছে। আরেকটা মফিদুলের - যে আরবান হবার এক প্রকার চেষ্টা করে যাচ্ছে, এবং যার পেছনে ফেরার পথ বন্ধ হয়ে গেছে।
এগুলো দেখানোর জন্য শুধু পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা থাকলেই হয় না, স্থান-কাল-পাত্রের জন্য এমপ্যাথিও থাকতে হয়।
এডাম স্মিথের চিন্তার থেকেও অধিক এক অসম প্রতিযোগিতাময় বাজারে মাসোহারা পাবার উপযুক্ত হবার পরীক্ষায় অবতীর্ণ হবার মতো কিছু চমৎকার বাক্য আছে যেটা পাঠককে চমৎকৃত করার পাশাপাশি একটু ভাবাবেও।
গল্প লেখা চলুক, চলতে থাকুক।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
আপনার পুরো মন্তব্যটি পড়লাম। একবার না। কয়েকবার। এবং মুগ্ধ হলাম। প্রথমে পাঠক হিসেবে এটিকে মুল্যায়ন করতে মন চাইছে।
অতিথি লেখক পথিক পরাণের বলতে চাওয়া গল্পটির থেকে ষষ্ঠ পাণ্ডবদার করা ব্যবচ্ছেদটি অনেক অনেক বেশি পরিপুর্ণ আর পরিপক্ক। আপনি মন্তব্যেও নমস্য।
এইবার লেখকের সাফাই---
১। রুদ্রেস্বর বানানটি ভুল লিখেছি। আসলে রুদ্রেশ্বর নামে একটা গ্রাম আছে। ঐ গ্রামটিকে আনতে গিয়ে বানানে ভুল করে ফেলেছি।
২। চম্পাবতী লিখতে গিয়ে অনেক কয়েকবার ভুল করেছি।
৩। সোমেশ্বর আলী নামটি ইচ্ছে করে অমিল রেখে নিয়েছি। কিছুদিন আগেও গ্রামের মানুষ মিলিয়ে মিলিয়ে সন্তানদের নাম রাখার বিষয়টি জানত না।
৪। পুঁথি সাধারণত দেখেই পড়া হয়। আমাদের স্কুলের একজন দপ্তরী পুঁথি পাঠ করতেন। তিনি অনেক বড় বড় হরফে ছাপানো পুরনো মলিন শতচ্ছিন্ন একটা পুঁথি বইকে কি মমতায় আগলে রাখতেন, আমি এখনো সেই ছবিটা দেখতে পাই। পুঁথি পড়ার আগে এবং পরে পুঁথিতে চুমু খেতেন। মাথায় ছোঁয়াতেন। অসম্ভব ভক্তি ছিল তার পুঁথিটার উপর।
এই গল্পের ক্ষেত্রে সোমেশ্বর আলীর সাথে কয়েকজন পাইল দোহারি (সঙ্গী) আছে। তবে গুরুগম্ভীর দার্শনিক ধাঁচের মারেফত শরীয়ত ভিত্তিক কতোগুলো পালাগান হয় গ্রামে। সেসব গানে দুটো পক্ষ (সাধারণত একজন ছেলে ও একজন মেয়ে থাকে) পরপর গান করেন। এক পক্ষ গানের ভেতর প্রশ্ন করেন। অন্য পক্ষ গানের ভেতরই তার জবাব দেন। এই গানগুলোকে ঠিক একটা শক্ত ছকে ফেলা মনে হয় কঠিন।
একটা উদাহরণ দিই। আমরা তখন বেশ ছোট। বছর পনের কি তার একটু আগের কথা হবে। এখনকার বিখ্যাত শিল্পী মমতাজ সেসময় বাবুল সরকার বা এরকম নামে একজন শিল্পীর সাথে বৃহত্তর ঢাকা এবং ময়মনসিংহের বিভিন্ন আসরে গান করতেন। রাত জেগে পালা গান। গানের কথাগুলো বেশিরভাগই মুখে মুখে তৈরি হত। অথবা তাদের কোন একটা বিশেষ ফরম্যাট থাকত। কিন্তু শ্রোতারা দেখতেন মমতাজ খাতা না দেখে একের পর এক গান গেয়ে যাচ্ছেন। গানের ভেতর মারেফত শরীয়ত নিয়ে কঠিন কঠিন প্রশ্ন ছুড়ে দিচ্ছেন। এরপর বাবুল সরকার এসে ঐসব প্রশ্নের জবাব দিচ্ছেন। আমাদের ওদিকে ওদের এই রাতজাগা পালাগান বাউল গানের আসর বলে খুব পরিচিত ছিল। বাউল গান কিন্তু সংজ্ঞা মোতাবেক অনেক ভিন্ন এই আঙ্গিক থেকে।
৫। গহর বাদশা নামটি কোথাও কোথাও (যেমন আমাদের এলাকায়, ময়মনসিংহে) গফুর বাদশা বলেও উচ্চারিত হতে শুনেছি। গোগল করেও এর সমাধান পেলাম না। কোথাও লেখা গহর, আবার কোথাও গফুর! দুটোই বহাল তবিয়তে বর্তমান!!
৬। অভিসন্দর্ভ লেখাটি নেহায়েত অমার্জনীয় হয়েছে আমার পক্ষে। এই ভুলটির জন্য লজ্জিত।
আপনার মন্তব্যের আলো পড়া অন্য বিষয়গুলো আসলে আমি নিজেও এতটা গভীরভাবে ভেবে দেখিনি। যে কোন লেখকের পক্ষে এরকম একটা পাঠ প্রতিক্রিয়া পাওয়া অসম্ভব আনন্দদায়ক অনুভূতির জন্ম দেবে।
অনেক অনেক ভালো থাকুন।
--------------
পথিক পরাণ
ডুপ্লি ঘ্যাঁচাং
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
গল্পের বিষয়, গল্প বলার স্টাইল দুটোই সুন্দর। গ্রামের নাম আর নায়কের বাবার নামগুলো মিলছিলো না কেমন যেন, না মেলাটাও হয়তো আরেকটা সৌন্দর্য। গতানুগতিক সমাপ্তি না হওয়াটাও ভালো লেগেছে।
অ।টঃ অনেক অতিথির নামের শেষে "সচলায়তনের সম্মানিত অতিথি।" লেখা আসছে, এটা কি অতিথিদের ইচ্ছাকৃত নাকি ডিফল্ট ?
রুদ্রেস্বর নামটা আসলে রুদ্রেশ্বর হবে। লেখার সময় খুব মনোযোগী ছিলাম না। পান্ডব দা উপরে শুধরে দিয়েছেন।
বাবার নামটা খুব ইচ্ছে করে অন্যরকম লিখেছি। আসলে কিছুদিন আগেও গ্রামের মানুষ নাম নিয়ে তেমন ভাবত না বোধ হয়। বাবার নাম হুজুর মামুদ, তো ছেলের নাম হয়তো গোলাম আলী। তার মেয়ের নাম নাডিড বেওয়া(স্বামী মারা যাবার পর বেওয়া যোগ হয়েছে)। আমার অফিসে এরকম একটা উপজেলার সকল ভূমি মালিকের গত দুই প্রজন্মের নামের তথ্য আছে। বাবার নামের সাথে মিল রেখে সন্তানদের নামকরণ গ্রামাঞ্চলে খুব বেশিদিন আগে চালু হয়নি মনে হয়। তাই এমনটা করেছি। তবে নামে মিল রাখলে পড়তে ও মনে রাখতে আরাম হয়। এর পরের বার খেয়াল রাখব।
আমি নিজেও ভাবছি-- এতো সম্মানিত হৈলাম কবেত্থে?
আসলে আমি নিজ নামে মেইল এড্রেস দিয়ে সচলে মন্তব্য করতে পারছি না অনেক দিন। অগত্যা অতিথি লেখকের বারোয়ারী খাতা খুলে সেখান থেকে মন্তব্য করি। আর বিজ্ঞ মডারেটরগণ কি ভেবে যেন এরকম অতিথিদের মন্তব্যর শেষে সচলের সম্মানিত অতিথি-র ট্যাগ জুড়ে দিচ্ছেন!!
ভালো থাকুন।
--------------
পথিক পরাণ
অমিলের জন্য না, সোমেশ্বর আলী নামটা কেন জানি যাচ্ছিলো না লাগছিলো।
ভালো তো, সবাই অতি সম্মানিত। কমেন্ট করার আগে ভয়ে ছিলাম, আমাকেও সম্মানিত বানায়ে দেয় কীনা, ভাগ্যিস দেয়নি
ভালো লাগলো
-------------------------------------------------
ক্লাশভর্তি উজ্জ্বল সন্তান, ওরা জুড়ে দেবে ফুলস্কেফ সমস্ত কাগজ !
আমি বাজে ছেলে, আমি লাষ্ট বেঞ্চি, আমি পারবো না !
আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি, আমি সত্যি মূর্খ, আকাঠ !
ভালো।
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
নতুন মন্তব্য করুন