রঙিন খামে সাদা কালো চিঠি
সেই ছোটবেলায় একটা হিন্দি মুভি দেখেছিলাম ‘মেইনে পিয়ার কিয়া’ । ছবিতে নায়ক নায়িকার কাছে তার মনের কথা জানিয়েছিল এক টুকরো কাগজে আর বার্তা বাহক হিসেবে বেছে নিয়েছিল খুব ধবধবে সাদা কবুতর। জানিনা এসব কবুতর ঠিক কোন প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষণ নিয়েছিল তবে চিঠির প্রাপকের কাছে ঘরের সকলের চক্ষুর আড়ালে সেই বার্তা পত্রটি পৌঁছে দিতে একেবারেই ভুল হত না তার। চিঠি পেয়ে নায়িকার মুখের হাসি আর তৃপ্তির ঘন ঘন শ্বাস আর যেন সরে না । কি লেখা ওই চিঠিতে যে নায়িকা একেবারে স্বপ্নের রাজ্যে চলে গেল মুহূর্তের মধ্যে ? খুশীর জোয়ারে ভেসে গেল তার মন প্রাণ । বয়স অল্প হলেও সেই পাকামো ডাউট কিন্তু মনের মধ্যে ঠিকই উঁকি দিয়েছিল ।খুব অবাক হতাম তখন এও কি সম্ভব !
এই আধো আধো সন্দেহ নিয়ে ওই যাত্রায় ছবি শেষ হয়েছিল । তারপর কেটেছে অনেক সময়। এরপর একদিন ক্লাস ফাইভে থাকতে আমার এক সহপাঠী একটা চিরকুট মেরেছিল আমাদেরই ক্লাসের আর এক ছাত্রীকে ।সেই ভাঁজ করা দলা পাকানো কাগজের ভাজে কি লেখা ছিল জানিনা তবে অংকের রাজ্জাক স্যারের কাছে ধরা খেয়ে তার পিঠ একেবারে লাল হয়ে গিয়েছিল। হিন্দি মুভির ওই চিরকুটের সাথে সেদিনকার এই কাগজের আবেদনের খুব একটা পার্থক্য চোখে পড়েনি তবে দুই জায়গার রিএ্যাকশান দুই রকমের দেখলাম।
আমাদের গ্রামের এক কলা ব্যবসায়ী সদ্য সৌদি আরবে গলাকাটা ভিসা করে গেছেন । বেস কয় মাস তার কোন খবর না পেয়ে তার মা একদিন আমাদের বাসায় এসে আমাকে একটা চিঠি লিখে দিতে বললেন। কাজেই চিঠির বিষয়বস্তু কি হবে যথারীতি তাকে জিজ্ঞাসা করতে হল। এর উত্তরে তিনি আমাকে যা বললেন তাতে আমি হতবাক।তিনি শুধু ভাবার্থ বলেই খালাস আমাকে নাকি বাকিটুকু সাজিয়ে লিখতে হবে একেবারেই আমার মত করে। যথারীতি আমিও চিঠি লিখে ফেললাম এবং তাকে পড়েও শুনালাম। চিঠির ভাষা শুনে তো তিনি মহা খুশি। আমার খুব প্রশংসা করলেন এবং আমি জীবনে যেন অনেক বড় হতে পারি সেরকম দোয়া করে দিলেন। এর কিছুদিন পর তিনি আবার এলেন তবে একটা খবর দিতে। আর তা হল তার ছেলে আমার লেখা চিঠিটি পেয়েছেন এবং আর একটা চিঠি পাঠিয়েছেন । বুঝতেই পারছেন আমাকে আবার সেই চিঠি পড়ে তার উত্তর লিখে দিতে হল নিজের মত করে। লেখা শেষে একবার রিভিশন আর তাকে পড়ে শোনানো । এভাবেই তরতর করে বেড়ে উঠছিল আমার হাইস্কুল জীবনের চিঠি লেখার হাত।
এভাবে দিন দিন চিঠি লেখার হাত ভালোই এগিয়ে যেতে থাকলো।। আস্তে আস্তে দেখলাম পাড়ার দুই এক বন্ধুকে তাদের বান্ধবীদের চিঠি লিখতে। সে কি আবেগ আর দরদ মাখানো রগরগে ভাষা । আমার চিঠি লেখার হাত তখন অনেকের কাছেই জানা। অনেকে আবার হায়ার করে নিতে থাকলো চিঠি লেখার জন্য। । তার মানে বুঝতেই পারছেন একেবারে ইঁচড়ে পাকা যাকে বলে।খুব বেশী লেখা লাগেনি কারণ একবার এক বন্ধুর তার বান্ধবীর কাছে হাতের লেখা ধরা খেয়ে যাচ্ছেতাই অবস্থা হয়েছিল। সেই থেকে হায়ারে খেলতে যাওয়া বাদ দিলাম। তবে নিজেও যে একটু আধটু খেলবো সে গুঁড়ে বালি। চেহারা হয়ত খুব ভ্যাবাচেকা টাইপের তাই কারো মনে দাগ কাটা তখনও হয়নি। চিঠি লেখার পাঠ তাই হাইস্কুলের শেষ অবধি স্থগিত থাকলো।
এরপর কলেজ জীবন শুরু। চিঠিপত্র লিখতে হত একটু আধটু তবে (আমার স্ত্রীর চোখ একেবারে হামবড়া হয়ে গেল নাকি?) কোন নারীকে নয়। সে গুঁড়ে একেবারে ছ্যাকারিন। আলসেমি করে বেতন দেয়ার নির্দিষ্ট তারিখে কখনও বেতন দেয়া হত না। তাই প্রিন্সিপ্যাল বরাবর বিলম্বে দুই মাসের বেতন একসাথে দেয়ার আবেদন পত্র প্রায়ই লিখতে হত। আবেদনের সাথে বেতন দেয়ার কোন সম্পর্ক ছিল না যদিও কারণ ওই চিঠি আর বেতন একসাথে প্রধান করণিকের কাছেই দিতে হত। জাস্ট ফরমালিটিস ।
এইতো কলেজ জীবন চলছে । কেউ আর চিঠি লেখাতে আসে না তেমন আর নিজের থেকে কাউকে যে লিখবো সেই সুযোগও আর মিলছে না। এভাবেই কলেজ শেষ করে চলে এলাম ভার্সিটিতে । তবে ভার্সিটিতে ভর্তি হবার আগেই সেই আশার গুঁড় মিষ্টি হল।হঠাতি প্রেমে পড়লাম এক ললনার। প্রেম কিভাবে হল সেই বিরাট ইতিহাস না হয় আর একদিন কারণ আজ শুধু চিঠি লেখা আর পড়ার দিন।
মনে আছে প্রথম প্রেমের সেই উপস্থাপনা ছিল একটা চিঠির মাধ্যমে। কিছুদূর কিছু আবেগ আউড়িয়ে তারপর একটা কবিতা । কবিতা শেষ করেছিলাম একটা (?) বোধক চিনহ দিয়ে। নায়িকা তো একেবারেই বোকা বনে গেল। নায়কের সামনে একেবারে কঠিন কবিতার সম্মুখীন হতে হল জীবনে প্রথম। প্রশ্নের হ্যাঁ সূচক উত্তর মানে মিয়া বিবি রাজি আর না সূচক মানে ছাইরা দে মা কাইন্দা বাঁচি।
শেষ পর্যন্ত সে হ্যাঁ সূচক সম্বোধন করেছিল আর সেই সাথে আবার শুরু হল সাদা কাগজের সাথে প্রেম। ভার্সিটিতে ভর্তি হলাম। সারাদিন ক্লাস আর টিউশানি করে রাতে হলে ফিরে প্রথমেই উঁকি মারি দরজার নিচে। তারপর তালা খুলেই ভিতরে ঢুকে এদিক ওদিক তাকাতে থাকি যেন কিছু ফেলে গিয়েছি বহুকাল আগে। কিছুতো ফেলেছিই আর তা হল একচিলতে আশা। সেই আশা যা নিয়ে সেই সকালে ক্লাস শুরু হয়েছে, তারপর হলের ক্যান্টিনের সুস্বাদু খাবার খেয়ে ওই আশায় কিছুটা ঝিমানি নিয়ে লোকাল বাসে চড়ে চলে গেছি সেই মিরপুর, মোহাম্মদপুর ছাত্রীর বাসায়। টিউশানির বকবকানিতে আশা তখন একটু নিস্তেজ হয়ে আবার হল অভিমুখে যাত্রা শুরুর প্রারম্ভে চাঙ্গা হয়ে উঠেছে । আর রুমে ঢুকেই সেই আশা একেবারে প্রাপ্তির মুখোমুখি এসে দাঁড়িয়েছে। কাজেই চিঠি পাবার ব্যাকুলতা যেমন তুঙ্গে সেই সাথে জোরকদমে শুরু হল পত্র লেখার তাগিদও। এভাবেই কাটছে ভার্সিটির প্রেমময় জীবন ।
তখন মোবাইল ছিল কদাচিৎ । কারো কাছে এই তারবিহীন জঞ্জাল থাকা মানে এক্কেবারেই সেরকম ব্যাপার আর কি। হাজারে একটা মোবাইল চোখে পড়া মানে বিশাল ব্যাপার।তাই ওপথে পা বাড়াবার সাহস আর করিনি। তখন চিঠিই ছিল আমাদের দুজনার মনের ভাব প্রকাশ করার, দু জনকে অনুভব করার, সারাদিনের ক্লান্তি ভাগ করার, এক চিলতে সোনালী মুহূর্ত শেয়ার করবার, নানা দাবী ও অধিকার আদায় করবার, নানা ঘাত প্রতিঘাত পার করবার , একজন অপরের প্রয়োজন অনুভব করবার এক বৃহৎ মাধ্যম। প্রতিদিন না হলেও সপ্তাহে দুইএকটা চিঠি না লেখা মানে অনেক অভাবের মধ্যে বড় একটি দিক অপূর্ণ থাকা, সকল ক্লান্তি গায়ে লেগে থাকা, কর্ম স্পৃহার মাইলো মিটার একশ থেকে কুড়িতে নেমে থাকা। সত্যি সাদা কাগজে নিজের বয়ে চলা নানা অনুভূতিকে একাকার করে একেবারেই উজাড় করে দেয়ার যে মজা তা মনে হয় ওই চিঠি ছাড়া আর কিছুতেই পাওয়া যায় না। চিঠির প্রতিটা ভাজে ভাজে যে বিন্দু বিন্দু করে প্রেয়সীর মায়া জড়ানো হাতের ছোঁয়া তা অনুভব করতাম একেবারে নিভৃতে গিয়ে যখন তা পাঠ শুরু করতাম। পত্র লেখিকার মুখচ্ছবি যেভাবে কল্পনায় ভেসে আসতো তা আর অন্য কোন মাধ্যমেই বোধ হয় এত নিজের করে পায়নি কোনদিন ।
একবার ভার্সিটির হল ভ্যাকেট হয়েছিল । অনির্দিষ্ট কালের জন্য ভার্সিটি বন্ধ হল । আশ্রয় হিসেবে এক বন্ধুর মেসে উঠলাম । বাড়ি যেতে পারতাম কিন্তু টিউশানির কারণে আর যাওয়া হল না। মেসের খাওয়া আর ছাত্রী পড়ানোর সব পথই আগের মত উন্মুক্ত রাখা গেলো রুদ্ধ হল শুধু যোগাযোগের সকল দ্বার । ভার্সিটি তখন উত্তাল । হলে পুলিশ পাহার দেয়। কাউকেই হলের মধ্যে যেতে দেয়া হয়না। এরপরও আমি প্রতিদিন একবার হলে যেতাম যদি পাই তার দেয়া সেই নিখাদ হলুদ খামে ভরা জমানো কথা। প্রতিদিনই প্রায় মন খারাপ করে ফিরে আসতাম। ধীরে ধীরে সকল গতি স্তিমিত হতে থাকলো । বাড়তে থাকলো হতাশা। তখন থেকে আরও একবার উপলব্ধি করলাম ওই হলুদ খামে মোড়ানো সাদা কাগজের অশরীরী ক্ষমতা।
তারপর কেটেছে অনেক বছর। এসেছে মোবাইল যার মাধ্যমে এখন পৃথিবীর যে কোন প্রান্ত থেকে একে অপরকে দেখা যায় । বিজ্ঞানের উৎকর্ষে এখন যে কোন ম্যাসেজ চিন্তারও অনেক আগে পৌঁছে যায় অপর প্রান্তে । সাদা কাগজে এখন আর চিঠি লেখা হয়না। নিজের কল্পনাকে আর ঘসতে হয় না অপরকে বুঝবার জন্যে, অপরের দৃশ্যপট মনের অবয়বে আঁকবার জন্যে। নেটের কল্যাণে চাইলেই কাঙ্ক্ষিত মানুষটি মুহূর্তেই এসে হাজির হয় চোখের সামনে।
তারপরও আজও আমরা দুজনে লিখে চলেছি আমাদের প্রতিদিনের দুঃখ আর আনন্দের কথামালা। আজ দূরে থেকে শেয়ার করি নিত্য দিনের বিভিন্ন খুনসুটি । মাঝে মাঝে মনে হয় একেবারে সেকেলে প্রেম , বিয়ের পর আজও আমরা করে চলেছি ল্যাপটপের বাটনের খোঁচায় । প্রতিদিন কিছু লিখে মেইল না করা অবধি যেন একেবারেই অপূর্ণতা থেকে যায় ওইদিন । সবই চলছে আগের মতই , বদলেছেও অনেক কিছু। নানা কাজের ব্যস্ততায় ভুলেছি অনেক কিছুই শুধু ভুলতে পারিনা ওই রঙিন খামে মোড়ান সাদা কালো চিঠির দুর্দান্ত আবেদনগুলো ।
অমি_বন্যা
মন্তব্য
পুরানো দিনের অনেক কথা মনে পড়ে গেল।
যে দিন চলে যাই তাই হয়ে যায় পুরনো । পুরনো দিনগুলো সত্যি ভীষণ মজার । কিছু কিছু মুহূর্তরা হাজির হয় সেইসব পুরনো ক্ষণ নিয়ে। ভালোই লাগছে তোমাকে পুরনো দিনের সেই ক্ষণ মনে করিয়ে দেয়ার উপলক্ষ করিয়ে দিতে পেরে।
স্বীকার করি যে আজকাল মোবাইল আর ইমেইল এর কারনে সেভাবে সাদা কাগজে আর লেখা হয়না। তারপরেও আমি আমার মনের কথা বলার জন্য এখনো ওই সাদা কাগজেই ভরসা করি। এইতো কয়েকদিন আগেই মেজোভাইয়ের সাথে খামাখা ঝগড়া করে তারপর পুরো তিন পাতার একটা বিশাল পত্র দিলাম। যদিও সেটাও কম্প্যুতেই টাইপ করে প্রিন্ট নেয়া ছিল।
শুভ হোক আপনাদের এই যুগল পথচলা। ভাল থাকবেন।
যদি ভাব কিনছ আমায় ভুল ভেবেছ...
সাদা কাগজে লেখা চিঠির আবেদন সবসময় একটু অন্যরকম। মনের কথা প্রকাশ করার মাধ্যম অনেক আছে তবে একটা খাম , অনেক কথা , কিছু প্রতিক্ষা নিয়ে চিঠি চালাচালির যে মজা তা আর কিছুতেই পাওয়া সম্ভব নয়।
তবে জুন , আপনার চিথি লেখার উপলক্ষ ঝগড়া না হয়ে অন্য কোন সুখকর কিছু হক সে কামনায় করছি।
আমাদের যুগল এই পথচলা চলে যাক অনন্ত কাল ধরে ঠিক এখন যেভাবে চলমান সেই প্রত্যাশায় করি সবসময়।
আপনিও ভাল থাকবেন।
খুব মায়া লাগল পড়তে গিয়ে..
শুভ কামনা।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
আপনার জন্যও শুভকামনা। ভালো থাকবেন।
একসময় চিঠি জমানোর শখ ছিল। বন্ধুদের সব চিঠি জমিয়ে রেখেছিলাম একটা বাক্সে। মাঝে মাঝে পড়তাম, হাসতাম, মন খারাপ করতাম। তারপর বাসা বদলানোর সময় অনেক কিছুর সাথে ঐ চিঠিগুলোও সব হারিয়ে যায়। একদিন হয়ত দেশে গিয়ে ঝালমুড়ি খেতে খেতে হঠাৎ চোখে পড়বে একটা লাইন, '' প্রিয় সুমাদ্রী, বন্ধু আছিস কেমন?'' ধন্যবাদ।
অন্ধকার এসে বিশ্বচরাচর ঢেকে দেওয়ার পরেই
আমি দেখতে পাই একটি দুটি তিনটি তারা জ্বলছে আকাশে।।
চিঠি জমানোর শখ আমারও ছিল। অনেক চিঠি আছে এখনও লকার বদ্ধ অবস্থায়। হলুদ খামের এক একটা বানডেল এখনও জমিয়ে রেখেছি অবসরের খোরাক হিসেবে। সময় পেলেই এগুলো বের করে এখনও পড়ি । তখন বেশ নস্টালজিক হয়ে যায় । মনে করিয়ে দেয় ওইসব পুরনো এক একটি মুহূর্তের কথা।
তখন মোবাইল ছিলো না, ছিলো না ইন্টারনেট... ওপারে ল্যান্ড ফোনও ছিলো না...
শুধু চিঠি ছিলো... তুমুল সব চিঠি...
আমাদের চিঠিযুগ...
আহা... কী ছিলো সেই দিনগুলি!
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
নজরুল ভাই আসলেই ভাল বলেছেন - চিঠিযুগ । ওইযুগের দিনগুলো ছিল নানা রঙে রঙিন । চিঠি ছাড়া অন্য কিছুই কল্পনা করা যেত না।
তখন মোবাইল ছিলো না, ছিলো না ইন্টারনেট... ওপারে ল্যান্ড ফোনও ছিলো না...
শুধু চিঠি ছিলো... তুমুল সব চিঠি...
আমাদের চিঠিযুগ...
আহা... কী ছিলো সেই দিনগুলি
বেশ ভালো লাগলো কথাগুলো ।
ভালো লাগলো লেখা পড়ে! আমার এখনো চিঠি লেখার মানুষ আছে, বন্ধু আছে। শুধু ইংরেজীতে লিখা লাগে এই যা ।
বাংলায় ছিল একজন, কোন এক কারনে আর হয়ে ওঠে নি! বাংলাদেশি তো, বিয়ের পর হয়তো ছেলে বন্ধুদের সাথে একটু আলাপ অনেক সমস্যা তৈরী করে। তবে যাকে ইংরেজীতে লেখা হয় বা পাওয়া হয়.. অলমোস্ট ১২ বছর হয়ে গেল! আজো কেউ কাউকে দেখলাম না!
ভালো থাকবেন।
__________________________
বুক পকেটে খুচরো পয়সার মতো কিছু গোলাপের পাঁপড়ি;
একদিন আপনার সেই চিঠি বন্ধুর দেখা পাবেন সেই কামনাই করছি , ক্রেসিডা ।
লেখা ভালো লেগেছে এই নিন
চিঠি লেখা ব্যপারটা আমারও অনেক প্রিয়। কেন যেন মনে হয় কিছু কিছু পুরোন ব্যপার-স্যপার থেকে গেলেই মনে হই ভাল হত।চিঠি সেরকমই একটা জিনিস।
আমিও আপনার সাথে একমত । থেকে গেলেই বোধহয় ভাল হত ঠিক থেকে যাওয়া পুরনো অনেক কিছুর মতোই ।
বাহ্, চমৎকার আইডিয়া! একই ঘরে থেকেও কথা চালাচালি, ভাল লাগলো।
প্রৌড় দা আপনাকে অনেক ধন্যবাদ । কথা চালাচালির এই ধরনটা সত্যি খুব মজার।
সুন্দর-
ধন্যবাদ কড়িকাঠুরে ।
নয় বছর বয়সে প্রথম চিঠি পেয়েছিলাম। লিখেছিলেন আমার বাবা। জেল থেকে। তিনি তখন এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের দায়ে দেশব্যাপী কয়েক হাজার রাজবন্দীর ভেতর একজন।
চিঠিটা রঙ্গিন খামে ছিল না। একটা দুই টাকা দামের হলুদ পোস্ট কার্ডের উপর লেখা ছিল। জেল খানা থেকে খামে ভরে আঙ্গুলের মিহিন সেলাই তুলে চিঠি লেখা যায় না।
পথিক পরাণ
বেশ খারাপ লাগলো পরাণ দা। ভালো থাকবেন ।
#নস্টালজিয়ার হাওয়া লাগল এসে গায়ে, সুন্দর লিখেছেন, অভিনন্দন আপনাকে।
#ভাল থাকুন সবসময়, এ প্রত্যাশা।
………………………………………
শুরু ছিল তাই শেষ ও হল
তাই এমন শক্ত হলাম বুঝি!
ছাড়ছি ধীরে ধীরে চেপে রাখা দীর্ঘশ্বাস
ক্ষনিকেই বের হয়ে গেল
আহ! বড্ডো সেলুকাস
জেনে রেখো, হারিয়ে যাওয়া প্রিয়
আমাতেই ছিল তোমার দীর্ঘ বসবাস।
নস্টালজিক হাওয়া বড়ই মধুর যত পারা যায় মেখে নিন।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ আশরাফ ভাই ।
নস্টালজিক করে দিলেন। চিঠি জমিয়ে রেখে অনেক দিন পর পরতে বড় ভাল লাগত। কিভাবে যেন সব চিঠি হারিয়ে গেল। বেশ ভাল লেখা।
প্রতিক
হারিয়ে ফেললেন কেন?
ধন্যবাদ আপনাকে।
অল্প কিছু হাতে লেখা চিঠি এখনো জমিয়ে রাখা।
হাতে লেখা চিঠির ব্যাপারটাই অন্যরকম। আপনার অভিজ্ঞতা ভালো লাগলো পড়তে।
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
ধন্যবাদ আপনাকে।
আমার প্রেয়সীর কাছে কখনো চিঠি লেখা হয়ে উঠেনি। কারণ মোবাইল এসে যুগ পালটে দিয়েছিল। তবে এক বন্ধুর কাছে লেখা হত নিয়মিত। আপনার লেখা আমাকে আবার সেইসব দিনে ফিরিয়ে নিয়ে গেল।
নির্ঝরা শ্রাবণ
লেখাকি এখন বন্ধ নাকি? তাহলে চালু করুন । এই লেখাগুলি আপনাকে আবার এই সময়ে নিয়ে আসতে পারে।
আপনাকে সেইসব দিনে নিয়ে যেতে পেরে ভালো লাগছে।
ভালো থাকবেন ।
আমার কাছে কেন যেন নিজের হাতে কোন কিছু লিখতেই খুব ভালো লাগে। প্রিয় কথা, কবিতা, গান ডায়েরীতে লিখে রাখি।
একটা সময় স্কুলে আমাদের বান্ধবীদের চিঠি লেখার অভ্যাস ছিলো। অনেক বান্ধবীর মধ্যে হয়ত চিঠি লিখতাম একজনকে। তার মানে সে আমার সবচেয়ে প্রিয় বান্ধবী ব্যাপারটা এমন ছিলো। আমি যদিও মোবাইল খুব ছোটবেলায় হাতে পেয়েছি তাও চিঠি খুব প্রিয়।
বান্ধবীদের দেয়া চিঠি ছিলো প্রায় ১০০ মতো। আপনার লেখা পড়ে চিঠিগুলো বের করে দেখলাম। ছেলেমানুষী ভরা লেখা তবু জটিলতা মুক্ত।
খুব ভালো লাগলো লেখা অমি ভাইয়া।
--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি
আমি এতদিন অমি রে ভাবছিলাম আমি_বন্যা লিখছে চোখের ভুল। বয়স হচ্ছে!!!
__________________________
বুক পকেটে খুচরো পয়সার মতো কিছু গোলাপের পাঁপড়ি;
আমিও তো কোন লেখায় যেন কমেন্ট করেছিলাম অনেক ধন্যবাদ বন্যা আপু
--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি
হয়!! আমিও আপু ভাবছিলাম আর মনে মনে..... যাউকগা...
__________________________
বুক পকেটে খুচরো পয়সার মতো কিছু গোলাপের পাঁপড়ি;
ক্রেসিডা , আপনার সন্দেহ তো অনেক আগেই দূর হবার কথা । আমার লেখা 'আমি যখন বাবা হলাম' এরপর 'প্রেম তুমি কি?' এইসব লেখাগুলো দেখে তো বোঝার কথা। জাউকগা বাদ দেন। আর মনে মনে কি হ্যাঁ ?
না না সন্দেহ আগেই দূর হইছে.. সন্দেহ করার সময়কার কথা কইতেছিলাম আরকি সন্দেহ শব্দটা বোধহয় ছিক হচ্ছে না.. কেমন যেন এখনো সন্দেহ সন্দেহ লাগে
যাক.. অফ টপিক বাদ দেই। কয়েকটা চিঠি স্ক্যান কইরা দিতেন
__________________________
বুক পকেটে খুচরো পয়সার মতো কিছু গোলাপের পাঁপড়ি;
হা হা হা বন্যা আপু । অমি_বন্যা নামটি নিয়ে আর একদিন হয়তো লিখবো ।
ধন্যবাদ মেঘা আপু আপনাকে। চিঠি পাবার মত বন্ধু ছিল আমার ওই একজনই যাকে আজও লিখে চলেছি। অবসরে যেমন ছবির এ্যালবাম খুব ভালো লাগে আমার মনে হয় ধুলোপড়া চিঠিগুলো অনেক দিন পর বাক্স মুক্ত করতেও তেমন ভালো লাগে।
আপনার মত ডায়েরি লেখা হয়নি কখনও তবে এখন থেকে সচলে আমার লেখা গুলো হার্ড ডিস্কে জমানো শুরু করেছি। সেই সাথে জমছে প্রতিদিন লেখা চিঠিগুলোও ।
ভালো থাকবেন আপু ।
খুব সুন্দর পোস্ট। খুব মিষ্টি
“Peace comes from within. Do not seek it without.” - Gautama Buddha
ধন্যবাদ উচ্ছলা ।
পুরানো অনেক স্মৃতি মনে করায়ে দিলেন। একটা সময় গেছে যখন চিঠি লিখতাম অনেক। এবং অপেক্ষা থাকত কখন ডাকপিয়ন এসে হলুদ রঙের খামটা দিয়ে যাবে। খামের উপরে ঠিকানা দেখা, আবেগ-উত্তেজনায় সেটার মুখ খুলে ভেতরের লেখা কাগজটা বের করা, এই অনুভূতির সাথে কোনোকিছুরই তুলনা চলে না। এখন আধুনিক যুগ। মোবাইল এসেছে। তাতে সেকেন্ডের মাঝে কারো সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব। ইমেইল আছে। তাতে পৃথিবীর যে কোনো প্রান্তে যে কাউকে মুহূর্তের মধ্যে কিছু লিখে পাঠানো সম্ভব। কিন্তু সেই হলুদ খামে মোড়ানো যে অনুভূতি, সেটা এখানে একেবারেই নাই। খুবই মিস করি সেই দিনগুলা। খুব করে চাই এখনও কেউ লিখুক, কাউকে লিখি। কিন্তু কী এক সময় আসলো। কেউ লেখে না, এবং লেখার কাউকে পাইও না।
আমার লেখা সবচেয়ে লম্বা চিঠি ছিল ২২ পাতার। এক বন্ধুর সাথে চিঠি চালাচালি করতাম। প্রতিদিন দেখা হতো। এবং প্রতিদিন আমরা একটা করে চিঠি বিনিময় করতাম। কী অদ্ভুত সব দিন গেছে আগে।
লেখাটার জন্য ধন্যবাদ।
আপনাকেও ধন্যবাদ অ প্র দা। ভালো থাকবেন ।
ঘ্যাচাং
__________________________
বুক পকেটে খুচরো পয়সার মতো কিছু গোলাপের পাঁপড়ি;
কনফিউসিং নিক!! আগে ঠিক এভাবে খেয়াল করি নাই।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
ত্রি ক দা ,এতদিন পরে খেয়াল করলেন এটা !
বন্যা কি ভাবীর নাম নাকি?
__________________________
বুক পকেটে খুচরো পয়সার মতো কিছু গোলাপের পাঁপড়ি;
বলা যাবে না । আর একদিন
হ্যাঁ তাইতো দেহতেছি। কোন লেখায় কমেন্টে মনে হয় আপনাকে বন্যা আপুও বলছি!
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
কিউট এক্ষান লেখা। দারুন লাগল পড়ে। চিঠি......
ডাকঘর | ছবিঘর
ধন্যবাদ তাপস দা। ভালো থাকবেন ।
আহা! সেইসব দিন, এখনও কিছু কিছু চিঠি জমা রয়ে গেছে, এখনও লিখি, লিখতে ভালো লাগে
আসলেই তানিম ভাই সেইসব দিন । একেবারে আহা! বলার মত দিনগুলো । মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
nice
নতুন মন্তব্য করুন