নিজেকে ফেমিনিস্ট হিসেবে পরিচয় দিতে আমি খুব একটা স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি না কখনো। এর কারণ হয়ত ছোটবেলা থেকে আমার বেড়ে উঠার পরিবেশ। যৌথ পরিবারের চাচাতো, ফুফাতো ভাইদের সংখ্যাধিক্য আলাদা করে মেয়ে হয়ে বড় হতে শেখায়নি আমাকে। আমার জন্মের পনের বছর পর আমাদের বাড়ির দ্বিতীয় কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। ততদিনে ভাইদের সাথে মারামারি, আড্ডাবাজি, ঘুরাঘুরি এমন কি সাত আট বছর বয়স পর্যন্ত মসজিদে জুম্মা বা ঈদের নামাজ পড়তে যাওয়াও বহাল ছিল।
কৈশোরের যে বয়সটাতে মা হয়ত বলতে পারতেন তোমার বাইরে খেলাধুলা নিষেধ, তার আগেই আমি গল্পের বইয়ের রাজ্যে ডুবে গেছি। আউটডোর গেইমে তেমন পারদর্শী আমি কোন কালেই ছিলাম না। এমনকি স্কুলে মেয়েদের ভলিবল বা হ্যান্ডবল টীমে খেলতে গিয়েও ব্যথা পেয়ে কান্নাকাটি করে অস্থির হয়ে ওই বিষয়ে আগেই আগ্রহ হারিয়েছি। এবং আমার একাধিক ভাইয়ের মধ্যেও দু একজন আমার দলে ছিল। তাই প্রতিদিনের ইনজুরিতে ত্যক্ত হয়ে প্রথম প্রথম বাবাচাচার কাছে অন্যদের নামে নালিশ অতপর কৈশোরের প্রথম দিকেই ওদের ক্রিকেট দলের মেম্বারসীপ স্বেচ্ছায় ত্যাগ। বাড়ির কারো শাসন আমার উপর এ ব্যাপারে চড়াও হয়নি।
আমার খুবই লিবারেল বাবা মা কি বিষয়ে পড়ালেখা করব তা নিয়ে কখনো চাপ দেননি। বাবা এবং মা দুইজনেই বিজ্ঞানের ছাত্র এবং ছাত্রী ছিলেন বলেই হয়ত ওইদিকে ঝোঁক বেশি ছিল। এইচ এস সি’র পর কিছু কিছু আত্মীয় স্বজন বলা আরাম্ভ করল সাইন্স পড়লে নাকি চেহারা খারাপ হয়ে যাবে, আবার কেউ কেউ বলল মেয়েদের নাকি মেডিকেল পড়াই উচিত। চেহারা নিয়ে তেমন মাথা ব্যথা আমার ছিল না এবং ডাক্তার হয়ে সারাজীবন পড়ালেখা করে মাথা নষ্ট করার ইচ্ছাও ছিল না। কোনরকম চার বছরের ব্যাচেলার ডিগ্রী পাশ করে পড়ালেখার ল্যাঠা চুকিয়ে দিতে পারলেই আমার শান্তি, মাথায় কেবল এই চিন্তাই কাজ করত। যদিও কালের বিবর্তনে পরিস্থিতির চাপে সে আশায় গুঁড়ে বালি।
সে যাক গে দুঃখের কাহিনী। গ্র্যাডুয়েশান করার পর সুখের আশায় আমি যখন পড়ালেখায় ক্ষান্ত দিতে চেয়েছিলাম ভাগ্য তখন ভীষণ ভাবে আমার সাথেই ছিল। রেজাল্টের আগেই একটা বড় সড় মাল্টিন্যশেনাল কোম্পানিতে চাকরি পেয়ে যাই। বাবা মা বরাবরের মতই আমার ডিসিশানে আপত্তি করেননি।
প্রথম প্রথম চাকরি পাওয়াটা আমার জন্য এতটাই সহজ ছিল যে আমি অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসীর পর্যায়ে চলে যাই, যাকে বলে এক্কেরে ওভার কনফিডেন্ট। মনে হত আমি তো নিশ্চিত ইন্দ্রা ন্যয়ী’র মত পেপসি কোম্পানির সি ই ও হয়ে যাচ্ছি। ইন্টারভিউ ডাক পড়লেই যেতে হবে, এটা হল আমার বাবার নীতি। যেখানে দেখিবে ছাই...........। জীবনের কোন চান্স অগ্রাহ্য করা যাবে না। এবং সাধারণত কখনই রিজেক্টেড হতাম না। কি দারুন ব্যাপার! এখন ভাবলেও অবাক লাগে। লোকাল কিংবা এম এন সি কত রকম অপশন হাতে। তখন টাকা পয়সার কথাও ভাবতাম না। কোন অফিস ফাঁকি দিয়ে ক্লাস করা যাবে বা ভার্সিটি থেকে কোন অফিস কাছে হবে সেটাই ছিল চাকরি নির্বাচনের মূল কারন। (ওই যে বলেছিলাম পড়ালেখাটা আমার দুর্ভাগ্য।)
এসব ভেবে একটা চাকরিতে যখন মোটামোটি থিতু হয়ে বসেছি, অভিজ্ঞতার ঝুলি কিছুটা ভরেছে এবং প্রমোশানের বদৌলতে কিছুটা মিড লেভেলে এসে পৌঁছেছি তখন শুরু হল সমস্যা।
গ্লাস সিলিং শব্দটার সাথে প্রথম পরিচয় হয় এমবিএ করার সময়। যার প্রকৃত অর্থসহ ব্যাখ্যা কি ভাব সম্প্রসারন হাড়ে মজ্জায় টের পাচ্ছি এতদিনে।
এক্সিকিউটিভ লেভেলে সুন্দর সুন্দর মেয়ে থাকবে, কলিগরা তাদের সাথে ঠাট্টা মশকরা করতে করতে কাজ করবে ব্যাপারটা আমাদের দেশের বর্তমান অবস্থায় যথেষ্ট সহজ পাচ্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু ম্যানেজেরিয়াল পসিশানে কোন মেয়ে অন্যদের উপর ছড়ি ঘোরাচ্ছে এই ব্যাপারটা অনেকের কাছেই হজম করা কষ্টের ব্যাপার দেখা যাচ্ছে। অধীনস্থ অনেক এক্সিকিউটিভদের মানসিকতাটা এমন (অবশ্যই সবার নয়) দেখেছি সমস্যা নিয়ে আমার কাছে আসা ব্যাপারটায় সম্মানিত বোধ করছে না। বরং আমার উপরে যে পুরুষ আছে তার কাছে যাওয়াটাই স্বস্থিকর। ভাবটা অনেকটা এরকম যে “মেয়েরা আবার কি বুঝে?”। আমার সৌভাগ্য বলব অন্তত আমার বস এবং হায়ার অথোরিটির এই মানসিকতা নেই। অনেক অফিসে যে থাকে না তা কিন্তু না।
প্রমোশানের পর এক সহকর্মী কিছুক্ষণ উসখুস করে বলেই ফেলল, “এইসব ঠিক মেয়েদের পোস্ট না, ম্যাডাম আপনাদের জন্য টিচিং প্রফেশানটাই তো ভাল ছিল”। হাসিমুখে সেই সহকর্মীকে বললাম, “অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু, আপনি বরং ম্যানেজমেন্টের সাথে ব্যাপারটা নিয়ে আলাপ করুন না”। টিচিং অবশ্যই অত্যন্ত সম্মানের কাজ। পদার্থ বিজ্ঞানের শিক্ষিকা মা’কে দেখে কখনই নিজের জন্য পারফেক্ট কাজ মনে হয়নি আমার। মায়ের মত ঠিক ততটা ধৈর্যশীলা আমি নই।
এই তো গেল বর্তমান চাকরির অবস্থা। এইরকম নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত আমি এরমধ্যে আরো দুখানা একাডেমিক ডিগ্রী আর কিছু ট্রেনিং এর সার্টিফিকেট গলায় ঝুলিয়ে ভাবলাম এইবার চাকরি বদলানোর সময় এসেছে। তথাস্তু আবার মাঠে নামলাম। স্বাভাবিকভাবেই মিডলেভেলে এ্যাপ্লাই করছি। কিন্তু এখনকার সিনারিও একদম বদলে গেল। ইন্টার্ভিউ এর ডাক পাচ্ছি মোটামোটি ভালই। যেখানেই যাচ্ছি মেয়ে ক্যান্ডিডেট এর পরিমাণ অত্যন্ত কম। আট দশ জনের মধ্যে দেখা যাচ্ছে আমি একাই মেয়ে। এবং গত একবছরে প্রায় একডজন ইন্টার্ভিউ দিয়ে আমার একটা চাকরীও হল না। বেলা বোস কে মনে করে আর গুনগুন গান গাওয়া হল না। অবশ্যই আমি এটাই বিশ্বাস করতে চাই যে যোগ্যতার দিক থেকে হয়ত আমার কিছু একটা কম ছিল, তাই ধোপে টিকতে পারছি না। কিন্তু আমার আগের কনফিডেন্সের বারো দুগুনে চব্বিশটা বাজিয়ে দিয়েছে এইসমস্ত অভিজ্ঞতা। আরো নানাবিধ সমস্যা, যেসব জায়গায় চাকরি হচ্ছে স্যালারি এত কম অফার করছে যে চাকরি পরিবর্তনের ফিসিবিলিটি শূন্য পারসেন্ট।
চাকরির বাজার নাকি খারাপ যাচ্ছে। এই ব্যাপারটা আমি একদমই মানতে পারি না। চাকরির বাজার খারাপের মধ্যেও আমি বরাবরই চাকরির অফার পেয়ে আসছি। জব সাইটগুলো তো ফাঁকা পড়ে নাই। চাকরিগুলো নিশ্চয়ই কারো না কারো হচ্ছে।
একমাত্র সুবিধাজনক অফার পাচ্ছি টেলিকমগুলো থেকে। স্যালারি ভাল এবং পরিবেশ নাকি মেয়েদের জন্য সুবিধাজনক। সম্ভবত মেয়ে বসদের সাথে কাজ করতে ওসব জায়গায় কারো তেমন কোন আপত্তি নেই। কিন্তু আমার একাডেমিক ব্যাকগ্রাউন্ডের সাথে ওই সেক্টরের তেমন কোন মিল নেই আর ক্যারিয়ারের দিক বদলে ওইদিকে যাবার আমার কোন আগ্রহ নেই। এই মধ্যপথে এসে ওদিকে যেতে হলে করতে হবে এইচ আর ডিতে কাজ। এই হল বাংলাদেশে মেয়েদের জন্য আরেকটা স্পেসিফাইড জব। মেয়ে হয়ে কর্পোরেট চাকরি করতে চাইলে হিউম্যান রিসোর্স ডিপার্টমেন্টে কাজ কর। টেকনিক্যাল ফিল্ডে নাকি ভাত নাই মেয়েদের। না হলে সাইন্স পড়ার পাতে পানি ঢেলে ব্যাঙ্কে চাকরি কর। এসবের ব্যাখ্যা কি আমার বোধগম্য হয় না। কেন শুধু নির্দিষ্ট কিছু স্থান পুরুষরা ঠিক করে দিবে যেসব চাকরিতে মেয়েরা ফিট ইন হয়? কেন নয় যোগ্যতা আর অভিজ্ঞতা অনুযায়ী?
বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রতিটি পাবলিক এবং প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অসংখ্য ছাত্রী ভিন্ন ভিন্ন সব বিষয় নিয়ে পাশ করে বের হচ্ছে ঠিকই। নারী শিক্ষার হার বাড়ছে, নারীদের আয় ও বাড়ছে। সেই সাথে কিছু মানসিকতার পরিবর্তন জরুরি নয় কি এখনই? আমি হতাশাবাদী নই। দ্রুতই আশা করছি মধ্যবিত্ত মানসিকতায় এসব পরিবর্তন আসবে।
শাব্দিক
মন্তব্য
আমার সহপাঠী মেয়ে যারা আমার সাথে পাশ করেছিল, চাকরিতে সবাই এক সাথেই ঢুকেছিলাম। সেখানে ছেলে মেয়ে বিভেদ চোখে পড়েনি আমার। কোথাও মেয়েরা ভাল করেছে কোথাও ছেলেরা, নিজ নিজ যোগ্যতাবলেই। আমাদের ব্যাক্গ্রাউন্ড কম্পিউটার সাইন্স।
ধন্যবাদ সাফিভাই মন্তব্যের জন্য। আমাদের অফিসে একটা সিস্টার কন্সারন আছে সফটওয়্যার কম্পানি। ওই অংশে অন্যান্য জায়গার তুলনায় মেয়েদের সংখ্যা বেশি যারা পুরাপুরি ডেস্ক জবে। কিন্তু এখনো এরা এন্ট্রি লেভেলে। মিড লেভেলে যেতে অনেক সমস্যা আমাকে ফেইস করতে হয়েছে। জানি না ডেস্ক জবে থাকলে কতটা হত।
আমি আমার এক বন্ধুকে অনুরোধ করেছি কিছু ইনপুট দিতে, সে ব্যাঙ্কিং সেক্টরে বেশ উপরের দিকে কাজ করেছে।
একদম মনের কথাটি লিখেছেন। আমাদের অফিসগুলোতে এখনো মেয়েদেরকে বস হিসেবে বা কন্ট্রোলিং কোন অবস্থানে দেখতে অভ্যস্ত নয় অথবা দেখার মানসিকতা তৈরি হয়নি। কবে যে তৈরি হবে, কে জানে।
আমি একটি স্বায়ত্বশাষিত (কাগজে কলমে) প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছি এন্ট্রি লেভেলে, এখানে একটা কথা প্রায় ই শুনতে হয়, আমার নোটিং বসেরা হাসতে হাসতে নাকি অনুমোদন দিয়ে দেয়। এদের মাথায় কখন ও ক্লিক করেনা যে আমি একটা প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার মাধ্যমে নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করে এখানে এসেছি । আমার নোটিং অনুমোদন করার মত যুক্তি এবং প্রমান সাপেক্ষেই অনুমোদন হয়।
আপনারা যখন মিড লেভেল এবং টপ লেভেলে যাবেন, অনেক বাধা/জঞ্জাল সরিয়ে যেতে হবে আপনাদেরকে। তবে ১০/১২ বছর পর হয়ত পরিবর্তন হতে পারে, যদি হয় তা হবে আপনার এবং আপনার মত আরো অনেকের হার না মানা প্রচেষ্টার ফলে। আপনার জন্য শুভকামনা রইলো।
মন্তব্য আর শুভ কামনার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। আশা করি এই উহ্য জঞ্জাল আর বাঁধাগুলো সরে যাবে একদিন।
বাংলাদেশে ইন্ডাস্ট্রি যাদের হাতে গড়ে উঠেছে, তাদের একটা বড় অংশ অশিক্ষিত। জিয়াউর রহমানের আমলে শুরু হওয়া আর এরশাদের আমলে ম্যাচিওর করা রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান বেসরকারীকরণের মোচ্ছবের সুফলভোগী এরা। এদের হাতে পুঁজি জমা হলেও কর্মসংস্কৃতিতে শিক্ষার ছাপ পড়েনি। ব্যবস্থাপনার পর্যায়ে গিয়ে এরা শুধু নারীদের ওপরই যে অনাস্থা রাখে, তা-ই নয়, এরা দেশের প্রযুক্তিগত সমাধান বা গবেষণার ওপরও আস্থা রাখতে পারে না। আপনি একটু খোঁজ করে দেখবেন, আমাদের দেশে কয়টা ইন্ডাস্ট্রি প্রযুক্তিগত সমাধানের জন্য ইউনিভার্সিটির দ্বারস্থ হয়। কোনো একটা সমস্যা দেখা দিলে এরা দশগুণ বেশি খরচ করে বিদেশ থেকে লোক আনিয়ে ঠিক করাবে, কিন্তু নিজের ইনজিনিয়ারের পরামর্শ শুনবে না বা সেরকম পরামর্শ দিতে পারে এমন ইনজিনিয়ারকে বেতন দিয়ে পুষবে না। ম্যানেজমেন্ট লেভেলে নারীকে সুযোগ না দেয়ার পেছনে শুধু লৈঙ্গিক তাচ্ছিল্য এবং/অথবা অনাস্থাই একমাত্র ফ্যাক্টর নয়, তার সাথে যোগ দিন আত্মশক্তিতে আস্থার অভাবকেও।
অশিক্ষিত বা স্বল্প শিক্ষিত ইন্ডাস্ট্রিয়ালিস্টদের মানসিকতা এই ক্ষেত্রে বেশ বড় একটা কারণ। যেসব লোকাল কোম্পানিগুলো প্রাথমিক অবস্থা পাড় হয়ে বর্তমানে ফুলে ফেঁপে আকার ধারণ করেছে তাদের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে খুব ভাললোক দের ফাউন্ডার হিসেবে পাওয়া যায় না, বরং কিছু ক্ষমতাবান লোকের নেপথ্যে কাজ করা পয়সাওয়ালা ধনী লোকদের সংখ্যাই বেশি। অনেক প্রতিষ্ঠানে এদের পরবর্তী বংশধরেরা বিদেশে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে এখন হাল ধরলেও সামগ্রিক ভাবে কোম্পানিগুলো কালচারে তেমন পরিবর্তন আসেনি।
এটা আসলেও অনেক জরুরি বিষয়। সরকারি বিশবিদ্যালয়গুলোতে প্রচুর ছাত্রছাত্রী থিসিস করছে এবং দুঃখ জনক হলেও সত্যি যে এইসব ক্ষেত্রে তাদের প্রচুর পয়সা পকেট থেকে দেয়া লাগছে, যেখানে সরকার থেকে দেয়া তো অবশ্যই উচিত যার সামান্য কিছুটা দেয়াও হয় এবং তা চলে যায় শ্রদ্ধেয় সুপারভাইজারদের পকেটে। তাছাড়া এই ইন্ডাস্ট্রিগুলো সহজেই এইসব গবেষণা স্পন্সর করে নিজেরাই লাভবান হতে পারে, যাতে নিজেদের রিসার্চ এন্ড ডেভেলপমেন্ট ডিপার্টমেন্টএর ব্যয় অনেকাংশে কমিয়ে প্রয়োজনীয় ফলাফল পেতে পারে।
লেখাটা পড়ে ভালো লাগলো। বিষয়বস্তু ছাড়াও আপনার শব্দচয়ন বেশ সুন্দর। আশা করি সচলায়তনে নিয়মিত লিখবেন।
এবার আসি লেখার প্রসঙ্গে। আপনি যে প্রসঙ্গটা তুললেন সেটা নিয়ে প্রায়ই আমার স্ত্রীর সাথে আলোচনা হয়। সে বাংলাদেশে নারীদের চাকরী ক্ষেত্রে খুব আশাবাদী। তার বান্ধবীরা সবাই খুব ভালো ভালো মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানীতে পাশ করার সাথে সাথে জয়েন করেছে এ বছরের শুরুর দিকে। আমি তাকে আশাহত করতে চাই না, কিন্তু তবুও না বলে পারি নি যে, আমাকে এমন একজন নারী দেখাতে যিনি এন্ট্রি লেভেলে নয় বরং ম্যানেজারিয়াল পর্যায়ে রয়েছে। সে পারে নি। দেখায় যায় খুব কম সংখ্যক নারী করপোরেট জগতে উপরের দিকে রয়েছেন বাংলাদেশে। উপরে এক মন্তব্যে রাগিব ভাইয়া বলেছেন, আমিও তাঁর সাথে একমত - চিত্রটা বাহিরেও অনেকটা একই। পার্থক্য এতটুকু, ইউরোপ-এ্যামেরিকায় নারী ম্যানেজার হয়তো বিরল নয় কিন্তু সংখ্যায় নিতান্তই নগণ্য। পুরুষতান্ত্রিক সমাজে এই চিত্রটার পরিবর্তন রাতারাতি সম্ভব নয়। তবে আপনার মত অন্যরাও যখন আত্মবিশ্বাসী হয়ে এগিয়ে আসতে শুরু করবে, তখন একটা পরিবর্তন আশা করা যেতে পারে।
টুইটার
ধন্যবাদ লেখা পড়ার এবং মন্তব্যের জন্য।
আসলে প্রথমত মেয়েরা পারিবারিকভাবেই সবসময় সাপোর্ট পায় না জীবনে যে কোন ক্যারিয়ারেই হোক না কেন এগিয়ে যাবার জন্য। এরপর সন্তান হল আরেকটা জরুরি বিষয় অনেক মেয়ের থেমে যাওয়ার পিছনে দায়ী, আমাদের দেশে এখনো তেমন ডে কেয়ার সার্ভিস গড়ে উঠেনি, বা ২/১ টা উঠলেও বাবা মারা তাদের ওসব জায়গায় রাখতে নিশ্চিত বোধ করেন না। এসব নানা রকম সমস্যা নারীদের উপরে উঠতে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়। তারপরও যখন কেউ যোগ্য অবস্থানে পৌঁছে তাকে এইসমস্থ ভোগান্তির মুখে পড়তে হয়।
শাব্দিক।
লেখায়
তবে আমি আশাবাদি এই অবস্থা কেটে যাবে। মেয়েরা হয়ত সংখ্যাধিক্যের বিচারে কিছু কিছু ডিসিপ্লিনে পিছিয়ে আছে। মেয়েরা যখন বেশি বেশি করে প্রকৌশল বা প্রযুক্তিগত বিষয়ে আসবে তাতে করে এই রকম গ্লাস সিলিং প্রবণতা কমবে বলে আমার ধারণা।
ধন্যবাদ। এটাও কিছুটা ঠিক প্রকৌশল বা প্রযুক্তিগত বিষয় পড়ার সংখ্যা এখনো ছেলেদের চেয়ে তুলনামূলকভাবে কম।
শাব্দিক।
র্সারা দুনিয়ায় মেয়েদের প্রতি অসম আচরন করা হয়। নারীস্বআধীনতার কয়েকপ্রজন্ম পরেও পশ্চিমে অসমতার উদাহরন আছে বেশুমার। তবে এই পোস্টে "আশায় গুঁড়ে বালি", "বেলা বোস কে মনে করে আর গুনগুন গান গাওয়া হল না" ধরনের বাক্য়গুলো যে নিরাশা প্রকাশ করছে, তার উতস কি শুধুই আপনার নারীত্ব?
ত্রিশের কাছাকাছি এসে চাকুরিজীবিমাত্রেই নিজের আসল ক্ষমতা ও সম্ভাবনাকে উপলব্ধি করে। এই সত্য়তার সাথে কলেজ বা চাকুরী শুরুর স্বপ্নবিভোরতার কিছুটা বা অনেকটা তফাত থাকে। অনেকে আবার সেই সত্য়কে স্বঈকার না করেই এক "অদৃশ্য় শক্তি" সাথে যুদ্ধ করতেই থাকে, যেটাকে আমরা হলিউডি মধ্য়জীবনের ক্রাইসিসরূপে চিনি। বাকীদের মধ্য়ে এই তফাতটাকে বুঝতে পারার প্রক্রিয়া একেকজনের মধ্য়ে একেকভাবে হয়। অনেকেই পরিবার, পরিস্থিতি বা সমাজের ওপরে তার নিজের সীমাবদ্ধতার দায় চাপায়। অনেক গায়ের রং, জাতীয়তা, বা পুরষত্ব/নারীত্বকে দায়ী করে।
একটা অতিসরলীকরন করার দুঃসাহস করি। স্নাতক শ্রেণিতে ব্য়াবসায় প্রশাসন শিক্ষালাভের সাথে কলা অনুষদের কিছু 'কমদামি' শিক্ষাস্রোতের একটা বড় তফাত হল, ব্য়া-প্র এর ছাত্রছাত্রীরা বিফলতা থেকে শেখার সুযোগ পায়না। জলপাই প্রশিক্ষণ শিবিরের সাথে তাদের এখানে বেশ মিল। যেখানে বুয়েটে দুই একটা কোরসে ফেল করে রিপিট নেয়ার ব্য়াবস্থা আছে, সেখানে আই বি এর বিবি এ কোরসে একটা নিরদিষ্ট সিজিপি এর নিচে গিয়ে নক আউট হয়ে যেতে হয়। একারনে আই বি এ থেকে বিবিএ পাশ করে যে বাজারে আসেন, তাদের জীবনে বিফলতা বা প্রত্য়াক্ষানে কোন অভিজ্ঞতা বেশ সীমিত। ওপরে যে মধ্য় ক্য়ারিয়ার সমস্য়ার কথা বললাম, বিফলতা বা প্রত্য়াক্ষানে অনভিজ্ঞ মানুষের কাছে সেই সমস্য়া প্রয়োজনের চাইতে আরো বেশী প্রকট মনে হয়। এই নতুন উপলব্ধিই যে আসলে সত্য়, আর এতদিন সাফল্য়ের যে উত্তাপ তারা উপভোগ করেছে, সেটা যে একটা মায়া, সেটা তাদের মধ্য়ে অনেকেই বুঝতে পারেনা।
ডিগ্রী করপোরেট খেলার ময়দানে ঢোকার টিকেট। এটা দিয়ে বড়জোর খেলা দেখার অনুমতি পাওয়া যায়। মধ্য়মাঠে তারাই খেলবে যারা খেলার নিয়ম জানে, খেলতে জানে। সেখানে সে তার বিফলতা ও প্রত্য়াক্য়াত হবার অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগায়, কৌশল পরিবরতন করে। তার একটি শক্তিশালি নেটওয়ারক আছে যেখানে সে নারী বা কালা আদমি পরিচয়ের পাশাপাশি নিজেকে একজন ব্য়াক্তি গ্রহনযোগ্য় করে তুলতে হয় সদা সচেষ্ট। মানি পারিস্থিতি সেটা হতে দিতে চায়না, কিন্তু সেটা তো শুধু নারীত্ব নয়, 'তোমার পরিবারের কুলিন নয়', বা 'তোমার একটা হাত নেই' অথবা 'তোমার বিদেশী ডিগ্রী নেই' এরকম আরো অনেক অযুহাতেই সেটা পরিস্থিতি চাইবেনা। আর সেই খেলায় বিজয়ী হবে সে যে পরিস্থিত চেনে, ও সেটাকে নিয়্ন্ত্রণ করতে প্রচেষ্ট হয়।
কেউ কেউ আবার এই ছেলে/মেয়ে থেকে 'ব্য়াক্তি' হয়ে ওঠার প্রক্রিয়াকে স্বআভাবিক বয়োঃপ্রাপ্তির প্রক্রিয়া বলেও মনে করে। তবে সেই বিতর্ক আরেকদিনের জন্য় তোলা থাক।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
আশায় গুঁড়ে বালি, জায়গাটা বোধহয় খেয়াল করে পড়েননি। আমি বলছিলাম বছর বিএসসি’র পর আমার আর পড়ার কোন আগ্রহ ছিল না, ইচ্ছা ছিল শুধু কাজ করব, কিন্তু কাজের প্রয়োজনেই আমাকে নিজের বিষয়ে স্নাতকোত্তর এবং ব্যবসা প্রশাসনে আরো একটা স্নাতকোত্তর ডিগ্রী নিতে হয়েছে। যা আমার ফাঁকিবাজি প্রয়াসে গুঁড়ে বালি।
কিছুটা নিরাশ তো বটেই আমি। যার কারনে এই পোস্টের জন্ম।
এটা তো আগেই বলেছি।
তবে আমি আমার কর্ম প্রতিষ্ঠানে খুব ডিপ্রাইভট অবস্থানে নেই। আপনার মন্তব্য পড়ে মনে হচ্ছে আমি নিজের নারীত্ব দায়ী করছি নিজের বিফলতার কারনে। যে কারনেই হোক আমি ঠিক বিফল হিসেবে নিজের অবস্থানকে মেনে নিতে পারছি না। এখনো আমি আমার সহপাঠী অনেক ছেলেদের ভাল অবস্থানে আছি। আমি কিছু পরিস্থিতির কথা এখানে বলতে চেয়েছি যেগুলোর মুখামুখি হতে হয় প্রতিনিয়ত নারী হবার কারনেই।
শাব্দিক।
আপনি কী দিয়ে বাংলা লিখছেন জানি না, তবে আমি প্রতিটা য-ফলা ভেঙে গেছে দেখছি। আমার পোস্টে আপনার মন্তব্যেও।
"সাইন্স পড়লে নাকি চেহারা খারাপ হয়ে যাবে"
এইচএসসি-র পর সাইন্স নিয়া না পইড়াও তো খুব একটা লাভ হয় নাই আমার।
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
আপু আপনি বিনয়ের দেবী
__________________________
বুক পকেটে খুচরো পয়সার মতো কিছু গোলাপের পাঁপড়ি;
কথা সইত্য না হইলে সৌন্দর্যের দেবী কইতেন।
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
দেবী দেখতে মুঞ্চায়
কামলাগিরি নিয়ে ভয়াবহ টেনশনে আছি। থিতু হয়ে বসার জায়গা পেলে তখন ধুমসে মুখ খুলব।
আপাতত বলি, ভাগ্যিস সায়েন্স পড়িই-নি। এমনিতেই যে চেহারার হাল, রাস্তায় বেরুনো বন্ধ হয়ে যেতো তাহলে।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
হুম তাইতো বলি আমার চেহারার এই বদ-হাল কেন
আমারো
তিথীর ডাগর চোখের যে প্রশংসায় সচলে ছড়াছড়ি তাতে তো মনে হয় রাস্তায় বেরনো এমনিই বন্ধ। ও চোখে আবার কার না কার চোখ পড়ে যায়
হ, এমনিতেই বদসুরত ঢাকতে আমি অদরকারে বাড়ির বাইরে যাই না।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
আদর্শ মুসলিম নারী ।
চেহারা ভাল রেখেও মেয়েরা যে খুব সুবিধা পাচ্ছে আর্টস কিংবা কমার্স নিয়ে পড়ালেখা করে তার গ্যারান্টিই বা কে দিচ্ছে।
হুমম, এইবার সিরিয়াস আলোচনায় আসি। আর্টস কিংবা কমার্স পড়লেই চেহারার জ্যোতি চাঁদের কলার মতো বাড়ে না।
চাপ আছে সবখানেই।
তবে কর্পোরেট দুনিয়ায় মেয়েদর অসুন্দরী হওয়াটাই ভাল। ছ্যাবলা পুরুষ সহকমীদের নানা ধরনের জ্বালাতনের আশঙ্কা কম থাকে তাতে।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
সে তো আরেক রামকাহিনী। লিখতে গেলে কয়খান পোস্ট যে লাগবে আল্লাহ মালুম!
আমার তো মনে হয় বিদ্যান হবার সাথে সাথে চেহারার জ্যোতি বাড়ে বই কমে না, তা সে যে বিষয়ই হোক। আমাদের ডিপার্টমেন্ট এর ডাঃ মাহমুদা গনি পঞ্চান্ন বছর বয়সে যে রূপের অধিকারিণী তাকে দেখে আর যাই হোক কোন নিন্দুকে বলবে না সাইন্সে এ পড়লে চেহারা খারাপ হয়ে যায়।
যা লিখেছেন তার প্রতিটি শব্দ এবং বাক্য সত্য; বাংলাদেশের কর্পোরেট অঙ্গনের নারীরা আপনার বক্তব্যের সাথে সহমত প্রকাশ করবে।
এবং এত প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হবার পরও আপনার মত যে নারীটি বলতে শিখেছেন যে তিনি 'সফল', তিনি আসলেই সফল নিঃসন্দেহে।
চমৎকার পোস্টের জন্য অনেক ধন্যবাদ। আপনার এ জাতীয় অভিজ্ঞতা নিয়ে আরও লিখুন প্লীজ।
“Peace comes from within. Do not seek it without.” - Gautama Buddha
ধন্যবাদ আপু। আসলে যারা এ সমস্থ অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে প্রতিনিয়ত যাচ্ছে তারাই অনুভব করবে এর বাস্তবরূপ।
লেখাটা ভালো লাগলো।
ধন্যবাদ আপনাকে
আমারো লেখা ভালো লাগলো।
__________________________
বুক পকেটে খুচরো পয়সার মতো কিছু গোলাপের পাঁপড়ি;
ধন্যবাদ ভাইয়া।
লেখা তো বাস্তবিক বটেই, তবে পরিবেশ হালকা করার জন্য একটা ভালো গ্লাস সিলিং'য়ের ছবি দিয়ে যাই:
আমার গ্লাস সিলিংটা যদি এমন রঙ্গিন হত, (দীর্ঘ শ্বাসের ইমো হবে)।
বেসরকারি চাকুরির পরিবেশ নিয়ে আমার ধারণা প্রায় নেই বললেই চলে।
সরকারি (বেসামরিক) চাকুরিতে বোধ হয় চাকুরি লাভ বা পদোন্নতির ক্ষেত্রে নারী পুরুষ বিভাজনটি খুব প্রকট নয়। তবে এক্ষেত্রে একটা (জুনিয়র) লেভেল পর্যন্ত সমস্যাটি হয় পদায়ন নিয়ে, বিশেষ করে যেসব সার্ভিসে কেন্দ্র এবং মাঠ - এই দুই পর্যায়ে পদায়ন করা যায়। পদায়নের ক্ষেত্রে বরং নারীরা সুবিধেজনক অবস্থায়ই থাকে। এখন অবশ্য অনেক নারী কর্মকর্তা মাঠে একেবারে প্রত্যন্ত এলাকায় (অনেক সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও) খুব স্বচ্ছন্দে কাজ করছেন। আমার অভিজ্ঞতা এমনই বলে। আর কিছু বিরুপ পরিস্থিতি বা কথাবার্তা কিন্তু সময় বিশেষে নারী- পুরুষ নির্বিশেষে সবাইকে শুনতে হয়।
সরকারী চাকুরিরত একজন নারী ডাক্তার আমার পরিচিত ছিলেন, যার প্রত্যন্তর অঞ্চলে পোস্টিং হয়েছিল। তার কাছে শুনেছি সে তার সহকর্মীর দ্বারা কিছুটা লাঞ্ছনার স্বীকার হয়। বর্তমানে বিসিএস'র চাকরী ছেড়ে সে কানাডা প্রবাসী। এই ধরণের ঘটনা আমাদের দেশের জন্য অত্যন্ত দুঃখজনক।
মেয়েরা তাদের পাশাপাশি কাজ করবে এই পর্যন্ত হজম করার ক্ষমতা বাংলাদেশি পুরুষে অনেক কষ্টে এতদিনে অর্জন করেছে, কিন্তু ম্যানেজার বা বস হিসেবে এখনো তারা মেয়েদেরকে হজম করতে পারে না, হয়ত তাদের পুরুষত্বে লাগে। বাঙ্গালির বেশিরভাগের পুরুষত্ব খুবই ঠুনকো, খুব অল্পতেই বিলীন হয়ে যেতে চায়। শিক্ষা দীক্ষা দিয়ে এই অবস্থা পাল্টাবে কি না জানি না, ফার্মওয়্যারেই গোলমাল আছে, সফটওয়্যার প্যাচ লাগিয়ে সেটা পুরোপুরি দূর করা যাবে না। আবার এরাই খালেদা হাসিনা রে ভোট দেয়। আজিব জাতি!
~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~
সেই! খালেদা হাসিনা বলেন তার আমাদের পাহারা খাতুন, খুকুমনি বলুন সবাই নারী। তারপরো বাঙালি পুরুষদের প্রকৃত মানসিকতার বদল হতে এখনো অনেক দেরি।
বাংলাদেশে চাকরি করার অভিজ্ঞতা আমার সামান্যই।
মার্কিন দেশে বিভিন্ন মহিলা বসের সাথে কাজ করেছি অনেকদিন - ইনফ্যাক্ট আমার হায়ারিং ম্যানেজারও ছিল মহিলা। বিভিন্ন সময়ে কথা বলে জেনেছি এই সমস্যা এই দেশেও আছে। মহিলাদের একটি পর্যায়ের পর উপরে ওঠা আকটে যেতে পারে, বেতন বৈষম্যও তো আছে। সব কোম্পানিতে মেয়ের কাজের পরিবেশ সমান নয়। পুরুষতন্ত্র থেকে মুক্তি পেতে আমাদের অনেক বাকি মনে হয়।
লেখা ভালো লাগলো। এইসব সমস্যার খুঁটিনাটি আরও লিখুন।
###
আপনার পুরানো কিছু লেখা দেখলাম, প্রায় দশটা। এতোগুলো লেখা থাকলে অ্যাকাউন্ট হাচল হিসাবে সক্রিয় হয়ে যাওয়া উচিত। মডুদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
ধন্যবাদ ভাইয়া।
গ্লাস সিলিং শব্দটার ব্যবহার পাশ্চাত্যে শুরু। তা থেকে বোঝা যায় এই সমস্যা ওই অংশেও বিদ্যমান। তার সাথে তুলনা করলে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে এসব সমস্যা দূর করতে আরো অনেক স্বশিক্ষিত হতে হবে জাতিকে।
ভাল লেগেছে।
ধন্যবাদ।
এই সমস্যা সহসায় চোখে পড়ে । বেশ ভালো একটি দিক সুন্দর করে ফুটিয়ে তুলেছেন।
ধন্যবাদ আপনাকে।
দেশে চাকুরীর কোন অভিজ্ঞতাই নেই, পাশ করার একমাস পরেই চলে এসছি, তাই ঠিক কিছু শেয়ার করার নেই। আপনার অভিজ্ঞতা দেখে খুব বেশি অবাক হইনি, এগুলা খুবি সম্ভব আমাদের দেশে। তবে আমার নিজের বড়বোনকে দেখেছি , সেখানে ওর বস বরং সিন্সিয়ারিটী এবং নন-করাপ্টেড বিহেবিয়ারের জন্য মেয়ে এমপ্লয়ীদেরকে বেশ কদর করে। আপু ঐ একি প্রতিষ্ঠানে জব করছে প্রায় বছর দশেক হতে চললো, এখন সহ-ব্যবস্থাপক পদে কাজ করছে, এই ধরনের ব্যাপার অবশ্য ওর কাছে কখন ও শুনিনি, বরং উল্টোটাই শুনেছি।
আমার প্রতিষ্ঠানেও আমার বস বা আমার ম্যানেজমেন্ট আমার কাজকে প্রায়োরিটি দিচ্ছে বলে আমি এই পর্যায়ে আসতে পেরেছি, কিন্তু সব প্রতিষ্ঠানের উপরের লোকজনের মানসিকতা এমন নয় এখনো।
দুখঃজনক হলেও সত্যি যে আমেরিকার মতো দেশেও এই গ্লাস সিলিং আছে। তবে ইদানীং সেটা কিছুটা হলেও কমতে শুরু করেছে। এখন তুলনামূলক ভাবে ছেলেদের চেয়ে মেয়ে পড়াশোনায় ভালো করছে আমেরিকাতে।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া।
আমাদের দেশেও মেয়েরা তুলনামুলক ভাবে পড়ালেখায় পিছিয়ে নেই। এস এস সি বা এইচ এস সির ফলাফল বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় মেয়েরাই এগিয়ে। কিন্তু যত উপরের দিকে উঠা যায় মেয়ের সংখ্যা আনুপাতিক হারে কমে যেতে থাকে।
এরকম পরিস্থিতি শুধু বাংলদেশেই না, দুনিয়ার সবখানেই বোধকরি। গুরুত্বপূর্ণ পজিশন এ গেলেও অনেক বাধার সম্মুখীন হতে হয় নারীদের। আমার নর্থ আমেরিকান কোম্পানির একজন মহিলা ডিরেক্টর এর ভাষায় "ইফ ইউ আর এ ওম্যান এন্ড ওয়ান্ট টু বি ইন আ কমান্ডিং পজিশন, ইউ বেটার হ্যাভ দ্যা স্টমাক টু ডাইজেস্ট দ্যাট পিপল উইল কল ইউ এ বিচ"
অবস্থাটা আসলেও এমনি।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
লেখা পড়তে যেয়ে প্রথমেই যেটাতে টাশকি খেলাম সেটা হলো শাব্দিক আপু (!) ভাইয়া না?!!!!
ক্যাম্নে কী!!!
এবার লেখা প্রসঙ্গে বলি, আমি একটা মেয়ে আর মেয়ে হয়ে চাকরীতে মেয়েদের যেই অবস্থা সেটা এন্ট্রি লেভেল হোক আর মিড লেভেল হোক ব্যাপারটা কাছাকাছি। খুব অল্প সময় চাকরী করার অভিজ্ঞতা আছে আমার। মাত্র ২ মাস। কিন্তু সেই দুই মাসে আমি এমন কিছু অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছিলাম যে আমার আর চাকরী করতে ইচ্ছা করে না এখন। অচল থাকার সময় একবার সেই বিষয়টা আলোকপাত করে লেখা দিতে চেয়েছিলাম কিন্তু লেখাটা কেন যেন প্রকাশিত হয় নি। তবে ইচ্ছা আছে সমস্যাটা নিয়ে লিখবো।
লেখা পড়া শেষ করার পর আমি ব্যবসা করবো ভেবেছি। যেন কেউ ভয় লাগাতে না পারে আমাকে
--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি
ওহ তাই ভেবেই বুঝি দোস্তসুলভ ঝারি দিতে চেয়েছিলেন।
ব্যবসা করাটা অত্যন্ত প্রোডাকটিভ আইডিয়া, কিন্তু মেয়েদের ব্লকের জামা আর পার্লার ব্যবসা ছাড়া অন্যকিছু করতে গেলেই নানারকম বাঁধা বিপত্তির সম্মুখিন হবেনই। তারপরো ওম্যান এন্টারপ্রোন্োর হিসেবে আশা করব সেসব বাঁধা পেরিয়ে আপনি সফল হবেন। শুভ কামনা আপনার জন্য।
হুম তাই তো এইজন্যই তো লিখেছিলাম দোস্ত! মেয়েরা তো বান্ধবী
আপু আমি পার্লার বা বুটিক করবো না। একটা মাস্টার প্ল্যান আছে আমার। দেখি কতটা কী করা যায়। শুভ কামনার জন্য ধন্যবাদ
--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি
আপনের লেখাটা বহুত আগেই পড়ছিলাম। মন্তব্য করা হয় নাই। যা লিখছেন একেবারে খাঁটি কথা। আসলে মানুষের মানসিকতা না বদলালে অফিস বলেন আর বাসায় বলেন এই অবস্থা বদলাবে না। আমার ফ্লাটমেট, মনে করেন পিএইচডি করে, তার জোড় দাবী, একটা মেয়ে কখনও একটা ছেলের সমান হতে পারবে না। প্রমাণ দিলেও নিবে না, এটা তার বিশ্বাস। এরকম লোক ভুড়িভুড়ি উচ্চশিক্ষিত স্পেক্ট্রামে। আর একটু কম শিক্ষিত স্পেক্ট্রামে এখনও তো মেয়েদের মানুষই মনে করে না অনেকে।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। এরকম ছেলেদের সংখ্যা এখনো অনেক বেশি। আমার সবচেয়ে কাছের বন্ধুটি যে আমাকে আমার পড়ালেখা এবং ক্যারিয়ারে সবচেয়ে বেশি উৎসাহ দেয় সে সবসময় বলত সে হাউস ওয়াইফ হতে চায় এমন মেয়ে বিয়ে করবে, এবং বাস্তবেও তাই করেছে।
---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।
এইটা অন্যতম মূল সমস্যা আপু। ছেলেরা নিজের বিয়ের সময় আর চাকুরীজীবী মেয়ে চায়না। সবাই যদি এইভাবে ভাবে তাহলে মানসিকতার বদল আসবে কিভাবে?
__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---
আমার অফিসে একই পদে (ডিজাইন) আমরা চারজন মেয়ে আছি। বসরা এপ্রিশিয়েট করেন বলে আমরা গাধার মতো কাজ করি আর পুরূষ কলিগরা কন্ট্রাক্টরদের সাথে গালগল্প মেরে কাটিয়ে দেয় সারাদিন। সেদিন এক সিনিয়র কলিগ এসে জানিয়ে গেলো, ভাল ব্যবহার পেলেই খুশি হই বলে প্রতি বছর এই পোস্টে মেয়ে নেয়া হয়। তার চাইতে ভয়াবহ ব্যাপার হলো, বসরা নাকি আমাদের নামে কন্ট্রাক্টরদের কাছ থেকে বাড়তি সুবিধা আদায় করে! কলুর বলদ হয়ে খাটছি আবার বদনামের ভাগীদার ও হচ্ছি।
এই ধরণের পরিস্থিতিগুলো সত্যিই ভীষণ দুঃখজনক।
---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।
আপনাকে হাচলত্তের অভিনন্দন। মিষ্টি পাওনা থাকলো ।
ধন্যবাদ।
লন, (গুড়) খান
---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।
মূল বক্তব্বের সাথে সহমত। আমারও নিজেরও ঠিক একই ধরনের অভিজ্ঞতা হয়েছিল দেশে। কখনও বলব।
__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---
লিখে ফেল ঝটপট।
---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।
নতুন মন্তব্য করুন