এই আবুল-ই সেই আবুল,অতঃপর পদত্যাগ,তাহলে আগে করলে কী হতো?
সৈয়দ শাহ সেলিম আহমেদ
পদ্মা সেতু প্রকল্প নিয়ে বিশ্বব্যাংকের সাথে বাংলাদেশ সরকারের দীর্ঘ সময়ে দেন-দরবার, অনেক চিঠি চালাচালি আর বিশ্বব্যাংক কর্তৃক নয়মাসের মাথায় পদ্মা সেতু থেকে নিজেকে গুঠিয়ে নেওয়ার ঘোষণার পর থেকে সরকারের নানা মূনীর নানা রকমের এবং চমকপ্রদ ও মনোরঞ্জন মূলক বক্তব্য প্রদানের পর থেকে গতকাল হঠাৎ করে আবার বিশ্বব্যাংকের প্রধান দাবী মোতাবেক মন্ত্রী আবুল হোসেনর পদত্যাগ ও সচিব মোশারফ হোসেনের ছুটিতে চলে যাওয়াতে এই বিষয়টি আবার বেশ লাইম লাইটে চলে এসেছে।অর্থমন্ত্রী মহোদয় বেশ দৃঢ়তার সাথে আশাবাদ ব্যাক্ত করেছেন, বিশ্বব্যাংকের চারটি দাবীর সব কটা দাবীই পূরণ হওয়াতে সহসাই এই প্রকল্পে আবার বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নের ঘোষণা আসতে পারে বলেছেন।তার কিছু আগে খোদ প্রধানমন্ত্রী এক সমাবেশে নিজেদের অর্থায়নে পদ্মা সেতু করার কথা দৃঢ়তার সাথে বলেছেন।মন্ত্রী আবুল হোসেনের পদত্যাগে বিরোধীদল এই প্রকল্পে সরকারের দূর্ণীতির সাথে জড়িত থাকার সুস্পষ্ট প্রমাণ হিসেবে দেখছে, একথা বেশ ঘটা করে বিএনপি নেতা ফখরুল ইসলাম এবং মওদূদ আহমদ সহ অনেক নেতাই মিডিয়ায় বলেছেন।
নয়/দশ মাস আগে এই পদ্মা সেতু প্রকল্পের অর্থায়ন সংক্রান্ত বিষয়ে চুক্তি হবার পরে এর প্রধান ষ্টেক হোল্ডার বিশ্বব্যাংক যখন কতিপয় ব্যাক্তির নাম উল্লেখ করে বাংলাদেশ সরকারকে এর বিরুদ্ধ্বে ব্যাবস্থা নিতে বলে, তখনইতো বাংলাদেশ সরকারের উচিৎ ছিলো এই ব্যাপারে তার অবস্থান পরিষ্কার করা।তা না করে সরকার নানা ঠাল-বাহানা করে, নানা ছল-চাতুরী ও অপ-কৌশলের আশ্রয় নিয়ে উল্টো তাদের দাবীর বিপরীতে যেন দূর্ণীতির অভিযোগ উঠলো যাদের বিরুদ্ধ্বে তাদেরকে রক্ষার ফন্দি-ফিকির করে চললো,আর দুদুক নামক নখ-দন্ত্যহীন এক প্রতিষ্টানকে দিয়ে নিজেদের স্বচ্ছতার তথাকথিত সার্টিফিকেট হাজির করে এটাকে আরো হাস্যকর করে তুললো,যা বিশ্ব পরিমন্ডলে বাংলাদেশ সরকারের স্বচ্ছতার ইমেজকে আরো প্রশ্নবিদ্দ্ব ও নেগেটিভ সিগন্যাল হিসেবে প্রতিবিম্বিত করে তুললো।অথচ শুরুতেই যদি ব্যাবস্থা নেওয়া হতো, তাহলে একদিকে যেমন সরকারের ইমেজ সংকট হতোনা, ভাব-মূর্তি যেমন বৃদ্ধ্বি পেতো, বিশ্বব্যাংক ও আন্তর্জাতিক দাতা-গোষ্টীর কাছে সরকারের দক্ষতা,স্বচ্ছতা ও এফেসিয়েন্সীর এবং ট্রান্সপারেন্সীর ব্যাপারের জোরালো এক ইতিবাচক সংকেত যেতো, প্রকল্পের কাজ ও দ্রুততর টার্গেটকৃত সময়ে শেষ করা যেতো,অন্যদিকে জনগণের কাছেও এই সরকারের দক্ষতা এবং দূর্ণীতির বিরুদ্ধ্বে অবস্থান, সেটা যেমন পরিস্কার হতো, নির্বাচনকালীন সময়ে ভোটের রাজনীতির হিসেবে সরকার অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারতো কোন প্রকারের অপ-রাজনীতি না করেই।
সরকার এবং তার মন্ত্রী পরিষদ কথায়-কথায় বিগত সরকার ও চার দলীয় জোট সরকারের নানামুখী দূর্ণীতির সমালোচনা করে বক্তব্য অহরহ দিয়ে চলেছেন, যা মিডিয়ায় প্রতিনিয়ত ফলাও করে প্রকাশিত হচ্ছে।নানান প্রকল্পের দূর্ণীতির কথা বলা হচ্ছে, অথচ সরকার ও তার দল ও মন্ত্রীমহোদয়দের একটা কথা ভালো করেই জানেন যে, বিগত জোট সরকারের দূর্ণীতির কারণেইতো জনগণ এবং বিশেষ করে নতুন প্রজন্ম আপনাদেরকে বিপুল ভোটে ক্ষমতায় বসিয়েছে, কাজ, যথা সময়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা মূলক প্রশাসনিক ব্যাবস্থা গড়ার লক্ষ্যেই জনগণ আপনাদেরকে ক্ষমতায় বসিয়েছে, অহেতুক ঝগড়া-ফ্যাসাদ,আর বাক-বিতন্ডা করে সময় নষ্ট করার জন্য জনগণ ম্যান্ডেট দেয় নাই।
বিশ্বব্যাংক শুরুতেই যে কথা বলেছিলো, যে সরকারের ভাষায়, চারটি অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যাবস্থা নিতে বলেছিলো, সেই সব দিক দেখে দেশ,জাতি ও জনগণের স্বার্থের কথা চিন্তা করলে, জনকল্যাণে সরকার নিয়োজিত থাকলে, অবশ্যই সেই সব ব্যাপারের তড়িৎ না হউক আস্তে-আস্তে ব্যাবস্থা নিয়ে বিশ্বব্যাংকের সাথে সমঝোতা ও আস্থার পরিবেশ নিয়ে কাজে মনোনিবেশ করে এগিয়ে যেতে পারতো।কিন্তু তা না করে সরকার নিজেই বিশ্বব্যাংকে প্রতিপক্ষ হিসেবে দাড় করিয়ে দিতে ব্যাস্ত হয়ে পড়লো, কিন্তু কেন? এতে কার লাভ হলো? যে বা যারা ঘুষ কেলেংকারীর সাথে জড়িত বা লাভালিনের সাথে অবৈধ লেন-দেনের সাথে জড়িত তাদের লেন-দেন আড়াল করা কিংবা তাদের অবৈধ সকল কর্মকান্ড ঢাকার জন্যই কি এতোসব নেগেটিভ পদক্ষেপ নিয়ে আজকে আবার সরকারের শেষ মুহূর্তে এসে নির্বাচনী ইমেজ বজায় রাখার কৌশলের এক ঢিলে দুই পাখী মারার নীতির অপ-কৌশলী এই নোংরা রাজনৈতিক খেলা বিশ্ব মন্ডলে কতটুকু প্রভাব বিস্তার করে তা অবশ্যই দেখার অবকাশ রাখে।সরকারের উপদেষ্টা, মন্ত্রী আর সচিবেরা ভালো করেই জানেন যে বিশ্বব্যাংক কিংবা দাতা গোষ্টী বা বিদেশী সংস্থা সাধারণত শুরুতেই যে দাবী-দাওয়া করে থাকে, যথাযথভাবে সেই সব দাবী-দাওয়া যদি এড্রেস করতে ও নেগোশিয়েট করতে ব্যার্থতার বহ্নিপ্রকাশ ঘটানো হয়, তাহলে ওরা কখনো আমাদের মতো তাদের পয়েন্ট থেকে সরে আসেনা, আর যেখানে বৃহৎ আর্থিক বিষয় জড়িত,সেখানেতো এমন করে যেন-তেন ভাবে জোড়া-তালি মার্কা খোলা-পিলিসি যে কোনভাবেই কাজে আসবেনা, তা সরকারের সকল মহলেরই ভালো করে জানা উচিৎ ছিলো।তারপরেও কেন যে একজন আবুল হোসেন, কিংবা তার সাকো ইন্টারন্যাশনাল ও এর সাথে জড়িতদের ব্যাপারের শুরু থেকেই দৃশ্যমান কোন ব্যাবস্থা না নিয়ে তাদের রক্ষা ও একের পর পুরুস্কার দিয়ে চললো, কোন সুস্থ্য ও সচেতন মানুষ তা যেমন বুঝতে অক্ষম, একই সাথে এটাও বোধগম্য যে, গোল্ডেন ডিম দানকারী কিংবা জোগানদানকারীর যত্ন সকল ক্ষেত্রেই বেশ আরাম-আয়েশের সাথেই করা হয়ে থাকে।এটা একজন সাধারণ মানুষও বুঝতে পারেন।সরকার নিদেন পক্ষে যে প্রকল্পে টাকা খাটানো হয়নাই বলে বক্তব্য দিয়ে জোড়ালোভাবে দূর্ণীতি হয়নাই বলে ঢালাওভাবে প্রকাশ্যে বক্তব্য দিয়ে চলেছে, তা যেমন ধুপে টিকেনা, একইভাবে এটাওতো ভাবা দরকার, সরকারের যদি এর সাথে সংশ্লিষ্টতা নাই থাকবে, তাহলে মাত্র পাচ থেকে ছয় জন ব্যাক্তিকে রক্ষা করার জন্য সমগ্র সরকারের প্রশাসন কেন উঠে-পড়ে লাগবে?যেখানে সরকারের উচিৎ ছিলো, এদের বিরুদ্ধে স্বচ্ছ তদন্ত কাজ পরিচালনা করলে, জড়িত থাকলে আইনানুগ ব্যাবস্থা নেওয়া, না থাকলে বিশ্বব্যাংকের পলিসি মেইকিং টিমের কাছে হস্থান্তর করে দাবী রিভিউ এর আবেদন যথাযথ পন্থায় করা, তা না করে সরকার তাদেরকে যেমন রক্ষা করতে ব্যাতিব্যাস্ত থাকলো, অন্যদিকে বিশ্বব্যাংকের বিরুদ্দ্বে অ-রাজনৈতিকসূলভ বক্তব্য প্রদান করতে থাকলো।এটা কী স্বচ্ছ গণতান্ত্রীক কোন সুস্থ্য রাজনীতি?
এই আবুল হোসেন এতো কাট-খড় পুড়িয়ে সরকারের গ্রীন সিগন্যালে আবার পদত্যাগ করলো,কিন্তু আগে নয় কেন?পদত্যাগ ভিন্ন কোন পন্থা যখন খোলাই রইলোনা, বিশ্বব্যাংক কর্তৃক অর্থায়ন স্থগিত কিংবা তুলে নেওয়ার আগে করলে কী হতো?এই আবুল হোসেন ১৯৯৬ সালে নিজের অসততার জন্য আরো একবার মন্ত্রী পরিষদ থেকে পদত্যাগ করে আওয়ামীলীগ সরকারকে বিব্রতকর অবস্থার মুখোমুখী করেছিলো।আমরা সাধারণ মানুষ বুঝতে অক্ষম, একজন অসৎ রাজনীতিবিদ, যিনি কিনা একবার অসততার দায়ে অভিযুক্ত, তাকে আবারও কেন মন্ত্রী পরিষদে ঠাই দিয়ে এতো তোষামোদ করে আরামে-আহ্লাদে তাকে রক্ষার জন্য গোটা সরকারের প্রশাসন যন্ত্রকে ব্যাবহার করে একেবারে বিশ্বব্যাংকের সাথে একরকম স্নায়ূযুদ্ধ্বে জড়াতে হবে? কি এতো ইন্টারেষ্ট এই একটিমাত্র লোক এবং তার চক্রের সাথে? এতেতো যে কাউকেই আরো সন্দেহ প্রবণ প্রবল ভাবে করে তোলার জন্যই যথেষ্ট।জুলিয়ান এসাঞ্জের মার্কিন উইকিলিকস ফাস হওয়া তার বার্তায় এই আবুল হোসেনকে একজন অসৎ রাজনীতিবিদ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে এবং ঘুষ কেলেংকারীর সাথে জড়িত বলে উল্লেখ করা হয়েছে।কিন্তু সরকার বলছে, এমনকি আবুল হোসেন নিজেও দেশবাসীর কাছে খোলা চিঠিতে বলছেন, তিনি দূর্ণীতি করেননি? কে সত্য? কার কথা জনগণ বিশ্বাস করবে?যে টাকা দিলো তাকে, নাকি যে টাকা নিলো,এবং তা নিয়ে কোন ফল দেখাতে পারলোনা, তাকে? আমাদের বিশ্বাসের মাত্রা এখন এতো তীব্রতা পেয়ে পেয়ে আজ এতো বেশী ক্ষয় ও ম্রীয়মান হতে চলেছে যে, নিজেকেও এখন আর বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়।
এখন আবার শুনা যাচ্ছে, সমঝোতা করেই নাকি পদত্যাগ, মানে সুরঞ্জিত বাবুর মতো পতাকা থকবে, পদ থাকবেনা, আমাদের সরকার কতো যে রং ধরতে পারে, তাতো বেশ ভালোভাবেই দেখিয়ে যাচ্ছে।পদত্যাগী মন্ত্রী আবার দফতর বিহীন মন্ত্রী-তাবত বিশ্বকে আমরা বোকা ভাবি।মন্ত্রী থাকেন সংবিধানের শপথের সাথে, তিনি যখন পদ ত্যাগ করেন, তিনি আর মন্ত্রী থাকেন কী করে? সংবিধানের কতো রকম যে ব্যাখ্যা হবে, আল্লাহই জানেন।কারণ উনারাতো বাংলাদেশের দামী বস্ত, শফিক রেহমানের ৩০ সেট অলংকারের মতো সাজিয়ে না রাখলে কী আর চলে?
জেফরী রবিনসন, নিউইয়র্কের অরিজিন, বর্তমানে ব্রিটেনে বসবাস করেন, টেরর মানি, ডার্টি ক্রাইম ইন দ্য অফশোর ওয়ার্ল্ড নামে বিখ্যাত এক গ্রন্থ আছে যার নাম শৃংক,সেখানে ব্লাড মানির এক পর্যায়ে তিনি ঐ টেরর গোষ্টীর সংলাপ এবং নিজেদের আলোচনার পর্ব বেশ সুন্দরভাবে উপস্থাপণ করেছেন,সেখানে দেখা যাচ্ছে, এক পর্যায়ে তারা বলছে, we sold your product so you owe us the money for the total face value of the coupons plus a handling charge.(shink, page no 311,published from UK in 2003,Jeffrey Robinson)। আরেক জায়গায় বইয়ের আরো এক উল্লেখযোগ্য অংশ হলো-That’s one of the tricks of private banking…sometimes called settlements accounts, they are temporary homes for money without a home, monies that are waiting to be claimed or monies that have not yet been properly designed to an account.(page no.102). আমাদের আবুল হোসেন এবং তার এসোসিয়েটস, যা সরকারের প্রভাবশালী ও শক্তিশালী অংশ এবং তার সাকো ইন্টারন্যাশনাল লাভালিনকে নিয়ে কতোভাবে যে ঘূষের লেন-দেন করেছেন, বা সম্মত বা এরাঞ্জম্যান্টস করে রেখেছিলেন অথবা অগ্রীম ফান্ড গ্রহণ করেছিলেন, এদিক থেকে সেদিকে নিয়ে গিয়েছিলেন, তারতো কোন ডকুমেন্টারী প্রমাণ নেই শৃংক বইয়ের বর্ণনার মতোই তা কেবল বক্তব্য উপস্থাপন করা যায়, কিন্তু ইন্টিভেষ্টিগেশন-এর কাজে যা কেবল সুনিপুণ কারিগরের দ্বারাই স্বচ্ছতার আলো দেখতে পায়, তাতো এতো ভিতরের অন্দর মহলের নানা ছলা-কলা বিশ্বব্যাংক আর দাতা গোষ্টী কি করে অন্ধ থাকে?আবুল হোসেনদেরতো তা আরো ভালো করে জানার কথা।
প্রত্যেকটা সরকারের সময়ই এই আবুল হোসেনরা বেশ জমকালোভাবে আসর জমিয়ে থাকেন, যেমন থেকেছিলেন জোট সরকারের সময় হারিস আর মামুন চৌধুরীরা, কিন্তু সরকারের আপদ ও সংকটকালীন সময়ে এই হারিস-আবুলেরা কখনো ঝুকি নেননা, যতটূকু ঝুকি নিয়ে থাকেন তাদের রক্ষাকারীরা, বরং সংকট আর আপদকালীণ সময়ে তারা থাকেন ধরা-ছোয়ার বাইরে, পালিয়ে বেড়ান,মাজখান থেকে দেশ জাতি জনগণ সরকার আর দলকেই খেসারত দিতে হয়।কিন্তু আর কতো?এইভাবে বেহায়াপণা আর কতোভাবে এই জাতির ঘাড়ে চেপে বসবে?এই জন্য কী এই জাতির মহান বীর পুরুষেরা নিজেদের বুকের তাজা রক্ত অকাতরে বিলিয়ে দিয়ে গিয়ে এই দেশ টাকে স্বাধীন করে আমাদের জন্য বাসভূমি করে দিয়ে গেছেন?এইভাবে যথেচ্ছাচার আর চলতে দেওয়া যায়না?
Salim932@googlemail.com
25th July 2012. UK
সৈয়দ শাহ সেলিম আহমেদ, ইউ,কে থেকে-
মন্তব্য
বিশ্লেষণ ভালো লেগেছে। সাম্প্রতিক বিষয়গুলোতে এরকম বিশ্লেষণধর্মী লেখা পড়তে চাই আপনার কাছে থেকে।
ডুয়াল পোস্টিং। সচলায়তনের নীতিমালাটি অনুগ্রহ করে মনোযোগ দিয়ে পড়ে দেখুন।