(বিনীত অনুরোধ ঃ এটি সেই অর্থে কোনও লেখা নয়, নিজের বিচ্ছিন্ন কিছু ভাবনাকে প্রকাশের চেষ্টা মাত্র। মোডারেটর এর কাঁচি ফাঁকি দিয়ে যদি পাঠকের মুখ দেখে (যদিও আশা কম) দয়া করে সবধরনের ত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন )
আমাদের দেশে বোধহয় না মরলে খেতাব টেতাব পাওয়া যায় না !!!!
না না, আমার কোন খেতাব পাওয়ার শখ হয়নি, এতো আগে মরার তো নয়ই ; খুব খুব প্রিয় আইয়ুব বাচ্চুকে নিয়ে বলছি।
সূত্রপাত এভাবে; গত সপ্তাহের ছুটিতে বাবল র্যাপ দিয়ে জিনিস পত্র পেঁচিয়ে বাধা ছাদা করছিলাম। উদ্দেশ্য পরের সপ্তাহে জাহাজ যোগে কিছু বাড়ি পাঠিয়ে দিব । না না করতে করতেও ৮ বছরে কম জিনিস জমেনি, ফেলতেও মায়া লাগে। এত্ত এত্ত স্মৃতি জিনিসগুলোর সাথে , ফেলতে বললে তো বউ মহাখাপ্পা। যদিও শিপিং কোম্পানি বলছে ১ মাস , ডিসেম্বর এ বাড়ি পোঁছে পেলেই আমি খুশি। শুধু আল্লাহ্ আল্লাহ্ করে বউকে ডাক্তার আটকে না দিলেই হয়।
সিডিগুলো ঝাড়পোছ করতে গিয়ে চোখ পরল হঠাৎ ক্যাপসুল ৫০০ এমজি র উপর। অনেক দিন শোনা হয়নি, অবশ্য ক্ষতি নেই তাতে-এতবার শুনেছি যে ঝারা মুখস্থ হয়ে গেছে সবকটা গান। মুছে রেখে দিতে গিয়েও পারলাম না, মন বলল তো হয়ে যাক না আরেকবার!! এখনো স্মৃতিকাতর হয়ে যাই গান গুলো শুনলে।প্রথম শুনি এ্যালবাম টা তখন ক্লাস ৫/৬ এ পড়ি , থাকি হোস্টেল এ।বাবার একমাত্র ছেলে তাই খুব শখ করে মাদ্রাসায় ভর্তি করেছিলেন ৫ এর বৃত্তি পরীক্ষার পর-আবার ক্লাস ৫ এই।বাবা তখন ফরিদপুরে আর আমি নরসিংদীতে । মাদ্রাসা হোস্টেলের কড়াকড়ির কথা তো বোঝানোর দরকার নেই,পান থেকে চুন খসলেই পিছনের চামড়ায় লাল নীল চিত্রাঙ্কন । তো এরি ভিতর নতুন জিগরি দোস্ত বলল এ্যালবাম টার কথা, কঠিন নাকি !!কিনেছে আজকে। রাত মোটামুটি গভীর হওয়ার পর সদলবলে দেওয়াল টপকে পাশের ধানক্ষেত ।শেখানেই ক্ষেতের আইলে বসে প্রথম পরিচয় আইয়ুব বাচ্চুর শাথে(এবং অবশ্যই সাথে জেমস)।
এরপরে ছুটিতে বাড়ি এলে আবার দেখা তার সাথে ।পরিস্থিতি এবার ভিন্ন। বড় আপা আর দুলাভাইর প্রেমের মাঝখানে হাইফেন হয়ে দাঁড়ানো বাবা। আপার চোখের পানিতে বালিশ ভিজে শেষ আর ভেজা বালিশের পাশে কষ্ট ।এর পরে আর অন্ন কারো ভরসায় থাকিনি , নিজেই সবসময় দোকানে গিয়ে দেখা করেছি। গান কিনে শোনার সেই হাতেখড়ি। প্রথম বিদেশী গান ও আসে আমার কাছে তার হাত ধরে, এক সাক্ষাৎকারে পড়লাম তিনি নাকি পছন্দ করেন ঈগলস ,কার্লোস সান্তানা র মিউজিক। দোকান খুঁজে নিয়ে এলাম তাদের, মুগ্ধ হলাম।
শুধু যে আমাকেই তিনি তার জাদুতে সম্মোহিত করেছেন তাও নয় বিশ্বাস করি । শিক্ষিত , বয়স্ক শ্রেণী থেকে শুরু করে তরুন সম্প্রদায় , সাধারণ রিকশাওয়ালা সবাই ই আছে তার ফ্যান বুক এ। তাহলে দেশের মাথা মাথা মানুষদের কেন এত অনিহা তার নামে?
মিউজিক সংশ্লিষ্ট কিছু হলেই নাম শুনি শুধু ২ জন শিল্পীর , বড়োজোর আরও দুইএকজন সুরকার/গিতিকার এর ।সরকারী বা বেসরকারি , একই কাহিনী । বুঝি না তিনি কি দোষ করলেন। গান করলেন দেশের জন্য, মানুষের জন্য , একজন হকার কিংবা মাধবীর জন্য , রিটায়ার্ড বাবা অথবা শুধুমাত্র এক কাপ চায়ের জন্য । তারপরেও ??
জানি তার শ্রেণীর লোকেরা পদকের আশায় কাজ করেন না কিন্তু তার ভক্ত হিসাবে চাইতে দোষ কি? যেখানে প্রতি বছর কতো কালে ভদ্রে শোনা নাম দেখি একুশে কিংবা স্বাধীনতা পদকের লিস্টে যাদের অবদান কাগজ ছাড়া কোথাও দেখার জো নেই ।
তাহলে কি আমার আশঙ্কা ই সত্যি !!
না বাবা পদক লাগবে না ,আমাদের সাথেই থাকুন।
শুভকামনা আপনার জন্য ।
মুহাম্মাদ_আসাদুজ্জামান
মন্তব্য
রূপালী গিটার ছেড়ে তিনি চলে না যান .. অজস্র ভালো লাগা গানের কারিগর তিনি.. বাংলাদেশ এর মাঝে তিনি কোথাও ছোট্ট কমা হয়ে থাকবেন। তেমনি থাকবেন তার ভক্তদের মাঝেও। যদিও বিগত বছরগুলো ধরে তার গান ওভাবে ভালো লাগে না, শোনাও হয় না.. কিন্তু "কষ্ট" ও তার পূর্ববর্তী সময়ের বাচ্চুভাই সবসময়ই থাকবেন।
__________________________
বুক পকেটে খুচরো পয়সার মতো কিছু গোলাপের পাঁপড়ি;
কি বলে যে ধন্যবাদ দেব বুঝতে পারছি না , তাই দিলাম না. প্রথম লেখার প্রথম মন্তব্য, খানিকটা বোধহয় প্রথম প্রেমের প্রথম ঝলক এর মত .
শুভো কামনা আপনার জন্য .
আমার মনে হয় হুমায়ুন আহমেদ আর আইয়ুব বাচ্চু দুজনে ই একই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন তাদের মাঝ্বেলায় - চানাচুর রোগে.অথবা ভদ্র করে বললে মাত্রাতিরিক্ত পরীক্ষণ রোগে. কিন্তু কি করব বলুন,জীবনের প্রথম বেলায় ই তো পাগল বানিয়ে ছেড়েছেন ;তাই রেশ কাটছে না
আসাদ
আইয়ুব বাচ্চু তো মোটেও আড়ালে পড়ে থাকা শিল্পী নন। আপনার এমন কেন মনে হচ্ছে ?
ধন্যবাদ আপনাকে ।
না, তিনি অবশ্য ই কোনো আড়ালে ঢাকা পড়া শিল্পী নন ; কিন্তু যত টুকু লাইম লাইট এ থাকার কথা তাও কিন্তু নেই।প্রথমে ই মনে হলো অলিম্পিক উদ্বোধনী দেখার সময়, কিভাবে তারা প্রমোট করলো কুইন থেকে হালের ডি জে রাস্কাল পর্যন্ত .বছর বছর রানী সিনিয়র বিভিন্ন আর্টিস্টদের নানা ভাবে সম্মানিত করেন , কাউকে নাইট হুড কাউকে অন্যকিছু .সবাই কিন্তু এলটন জন আর পল ম্যাককার্টনি তে আটকে নেই. কিন্তু আমাদের বড় কোনো জাতীয় পর্যায়ের অনুষ্ঠানে কাউকে দেখেছেন কখনো রুনা আর সাবিনা ছাড়া ?
আইউব বাচ্চুকে নিয়ে লেখাটি ভালো লেগেছে। তার তিনটি পরিচয়- কন্ঠশিল্পী, মিউজিশিয়ান (মূলত গিটারবাদক) এবং সুরকার- এর মধ্যে আমি প্রথমেই তার সুরের ভক্ত এবং তারপর বাকী দুটো। তার সুর করা (এবং লেখা) তপন চৌধুরীর কন্ঠে পলাশ ফুটেছে শিমুল ফুটেছে এসেছে দারুন মাস আমার জীবনে শোনা সবথেকে প্রিয় গানগুলোর মধ্যে প্রথমদিকে আছে এবং থাকবে।
আপনার এবং আমার মধ্যে দুটো জিনিসে মিল দেখতে পাচ্ছি। প্রথমটি বাংলা শব্দের বানানে দুজনেরই উন্নতিসাধন আবশ্যক এবং দ্বিতীয়টি ক'মুনা।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
ভালো কুইজ দিলেন বস
__________________________
বুক পকেটে খুচরো পয়সার মতো কিছু গোলাপের পাঁপড়ি;
সব ই আপনাদের আশীর্বাদ
সব ই আপনাদের আশীর্বাদ
হে হে খুশি লাগতেছে ... আমার তিনটা কমেন্ট আসছে
ভাই বানানের ভুল ইচ্ছে করে করি নাই , এখনো বাংলা সফটওয়ার গুলোর সাথে মিতালি প্রগাড় হয়নি।
দ্বিতীয় টা নাহয় কানে কানেই বলেন , টেনশন হচ্ছে . ডাক্তার বলেছে টেনশন এক্কেবারেই পরিহার করতে ।.
আমার অনুরোধ না হয় না রাখলেন , ডাক্তারের টা রাখেন।
আমি তিন রকম বাচ্চুর ই ভীষণ রকম ভক্ত , তার ব্যান্ড এর ভক্ত, তার এলবাম এর কভার ডিজাইন এর ভক্ত, তার কথার ভক্ত, তার জুনিয়র আর্টিস্ট দের প্রতি অভিভাবকত্বের ভক্ত; এমনকি তার ইউজ করা পারফিউম এরও ভক্ত. তাহলে বুঝুন আমার ভক্তির নমুনা !!!
আসাদ
অতি ভক্তি কিন্তু চোরের লক্ষণ। এটা আমার কথা না ভাই, প্রবাদ বাক্য।
বানান ভুল আর সুসংঘটিত বাক্য জনিত জটিলতায় আমার আবার সুনাম বেশী। তবে যাই বলুন না কেন, অগোছালো অনুভূতিগুলো কিন্তু অদ্ভুত মিলের। এবি দ্যা বস সহ অনেক মিউজিশিয়ানরা যা করেছেন তার জন্য রাষ্ট্রীয় সন্মান দেখানো উচিত। হতাশার কথা হইলো গিয়া, আজম খানইতো সন্মান পান নি। তবুও এই অবস্থার পরিবর্তন দরকার। এবং খুব দ্রুত। কারণ আমরা আমাদের লিজেন্ডদের হারাতে শুরু করেছি।
আরও লিখুন।
শুভ কামনা রইল।
ভাইয়া, হয়ত আমি ধরে ফেলেছি।
দ্বিতীয় মিলটা খুব সম্ভবত 'আইয়ুব বাচ্চু'।
নতুন মন্তব্য করুন