মেডিকেল কলেজে এবার ভর্তি পরীক্ষা হবে না, এটা মোটামুটি এতখনে সবাই জেনে গেছেন। এই সীদ্ধান্তের স্বপক্ষে-বিপক্ষে অনেক আলোচনাও ইতিমধ্যে হয়ে গেছে। যদিও মনে হচ্ছে বিপক্ষের পাল্লাটাই অনেক ভাড়ি।
মেডিকেলে Admission Test এর duration কতটুকু? মাত্র ১ ঘন্টা!! আর ১০০ টা MCQ!! ব্যাপারটা একটু কেমন অদ্ভূত না?? আপনার ১২ বছরের চেষ্টা-সাধনার ফলাফল নির্ভর করছে মাত্র ১ ঘন্টার একটা পরীক্ষায়, আর ১০০ টা MCQ এর উপর!!!! সত্যিই কি এই রকম একটা Admission Test পারে, সত্যিকার মেধাবি খুজে বের করতে??
হুম এটা সত্যি আমাদের দেশের পাবলিক পরীক্ষার ধরণ এমন যে, সেটা নিয়ে অনেক সমালোচনাই করা যায়। এবং এ+ পাবার সংখ্যাটাও উদ্বেগজনক ভাবে বেশি। কিন্তু এটাও সত্যি যে, পাবলিক পরীক্ষার মধ্যমেই মেধার প্রকৃত প্রতিফলন ঘটে। আর Admission Test এ মেধার সঙ্গে সঙ্গে ভাগ্যের যোগসাজোশও লাগে, এমনকি আমারতো মনে হয়, ভাগ্যটাই এখানে কখনও কখনও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে যায়। আপনি S.S.C. এবং H.S.C. তে দীর্ঘদিন পড়ালেখা করে, প্রতিটা বিষয়ে আলাদা আলাদা করে ৩ ঘন্টার পরীক্ষা দিয়ে মেধার যে স্বার্থক প্রতিফলন ঘটাতে পারবেন, ১ ঘন্টার একটা ছোট্ট Admission Test এর মাধ্যমে সেটা কখনই পারবেন না।
স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের এই প্রচেষ্টাকে সাধুবাদ। তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে এবার একটু চিন্তা করতে হবে পাবলিক পরীক্ষার রেজাল্ট নিয়ে। হুম মানলাম যে, ইদানিং ছাত্র ছাত্রীরা অনেক সচেতন পড়ালেখা নিয়ে, তারা অনেক বেশি সিরিয়াস পরীক্ষার ব্যপারে। কিন্তু তাই বলে যদি, এত বেশি সংখ্যক এ+ পায় তাহলে তাদের মধ্যে কে বেশি ভালো এটা বোঝা কঠিন হয়ে যায়। এটার একটা সমাধান হতে পারে রিলেটিভ গ্রেডিং। রিলেটিভ গ্রেডিং ব্যাপারটা হলো এমন যে, প্রতি বছর প্রত্যেক বিষয়ে একটা নির্দিষ্ট সংখ্যক সবথেকে বেশি নাম্বার প্রাপ্ত ছাত্র-ছাত্রীকে এ+ দেয়া হবে, তার পরের সারিকে এ, এরপর এ-................।
অর্থাৎ ব্যাপারটা এমন না যে, আপনি কোনরকম ৮০ এর উপর পেলেই এ+ পাবেন। কারন কোন বছর প্রশ্ন সহজ হলে এ+ এর সংখ্যা অনেক বেড়ে যাবে, আর কঠিন হলে উল্টো। কিন্তু রিলেটিভ গ্রেডিং হলে সেটাকে মোটামুটি একটা Constant Percentage এ রাখা যাবে। আর ভালো এবং বেশি ভালো এর মধ্যে পার্থক্যটও Better ভাবে করা যাবে।
তবে পাবলিক পরীক্ষা নিয়ে আর একটা অনুযোগ আছে যে, পাবলিক পরীক্ষায় কিছু কমন প্রশ্ন প্রত্যেকবারেই ঘুরেঘুরে আসে। তাই কিছু বাছাই করা প্রশ্ন মুখূস্ত করে গেলেই ভালো রেজাল্ট করা যায়। এই ব্যাপারে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে একটু সচেতন হতে হবে। সব পাবলিক পরীক্ষা যে সৃজনশীল পদ্ধতীতে হবার কথা, সেটার পরিপূর্ণ প্রয়োগ করতে হবে।
এটা নিঃসন্দেহে মানতে হবে যে, আমাদের দেশের এডুকেশন সিস্টেম খুব বেশি একটা ভালো অবস্তায় নেই। কিন্তু তাই বলে তো সিস্টেমকে চেন্জ করবার চেস্টা না করলে, সারাজীবনেই এমন থাকবে। আশা করি এটা মাত্র সেই চেন্জ এর একটা শুরু।
রিজু
মন্তব্য
আপনার যুক্তির ত্রুটিপূর্ণ দিকটা বলি। একজন ডাক্তারের কাজই কিন্তু বেশ অল্প সময়ের মধ্যে রোগীর অসুখ নির্ণয় করে তার নিরাময় করা। একজন শল্যচিকিৎসক সারাজীবনের শিক্ষা প্রয়োগের জন্য অনেক সময়ই মাত্র কয়েক ঘন্টার সুযোগ পান। আর মেধার পরিচয় তার প্রয়োগের গতি থেকেও পেতে হয়। এসএসসি আর এইচএসসি পরীক্ষার উদ্দেশ্য একটা বড় স্পেকট্রামের শিক্ষা শিক্ষার্থী কতটুকু আত্মস্থ করতে পেরেছেন, তার একটা সাধারণ নির্দেশক তৈরি করা। পরবর্তী শিক্ষাজীবনে প্রবেশের জন্য একজন শিক্ষার্থীর আগ্রহ, মনোযোগ, নিষ্ঠা কতটুকু, সেটা ভর্তি পরীক্ষায় প্রতিফলিত হয়। সেই ভর্তি পরীক্ষার ব্যাপ্তি এক ঘন্টার নাকি চব্বিশ ঘন্টার, তাতে কিছু যায় আসে না।
ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়, সিকিউরিটি সিস্টেম কড়াকড়ি করা হোক। কোচিং বাণিজ্য হয়, কোচিং বাণিজ্য নিষিদ্ধ করা হোক। আপনি চিকিৎসক হওয়ার যোগ্যতার বেঞ্চমার্কের সাথে তো আপোষ করতে পারেন না।
আপনার রিলেটিভ গ্রেডিঙের প্রস্তাবটি যৌক্তিক। সেটি যতদিন পর্যন্ত করা না হচ্ছে, মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি পরীক্ষা ততদিন চালু থাকা বাঞ্ছনীয়। যেসব কোচিং সেন্টার অসদুপায় অবলম্বন করা হচ্ছে, সেগুলির মালিককে ধরে জেলে ঢোকানোই কাম্য।
ভিন্নভাবে দেখার জন্য মন্তব্য,
শিক্ষার্থীর আগ্রহ, মনোযোগ, নিষ্ঠা কিন্তু তার বোর্ড পরীক্ষার ফলাফলেও প্রকাশিত হয়। ভর্তি পরীক্ষাতেও শিক্ষার্থীর আগ্রহ, মনোযোগ, নিষ্ঠা প্রতিফলিত হতে পারে নিশ্চয়ই, কিন্তু সেটাকে বোর্ড পরীক্ষার ফলাফলে প্রতিফলিত তার আগ্রহ/মনোযোগ/নিষ্ঠার চাইতে বেশি গুরুত্ব দিয়ে কেন দেখা হবে?
পরীক্ষার প্রস্তুতি নেয়ার জন্য পাওয়া অল্প সময়ের সঙ্গে চিকিৎসার জন্যে পাওয়া অল্প সময় একই পাল্লায় নিতে পারিনি। এই তুলনা করা বোধহয় সহজ নয়।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
ভিন্ন ভাবে চিন্তা করার জন্য বলছি,
১। বোর্ড পরীক্ষার ৬০ হাজার শিক্ষার্থীর আগ্রহ, মনোযোগ, নিষ্ঠা, মেধা সব এক বলে প্রতিফলিত হলে তাদের মধ্য থেকে মাত্র ২৩০০ থেকে ২৫০০ ছাত্র-ছাত্রী যাচাই করার জন্যই ভর্তি পরীক্ষাকে এতদিন গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
২। হিমু ভাইয়ের তুলনাটা বোধহয় মেধা এবং তার প্রয়োগের মানের উৎকর্ষতা কেন্দ্র করে ছিলো। যে মেধাবী সে যত দ্রুত সমস্যা সমাধানে সক্ষম তার তুলনায় কম মেধা শক্তি সম্পন্ন কেউ তত দ্রুত সমস্যা সমাধানে সক্ষম নাও হতে পারে।
আলোকিত মন
না, শিক্ষার্থীকে আমরা সেই সুযোগ আর দিচ্ছি না। একশোতে আশি পেলেই সে বোর্ড পরীক্ষায় আগ্রহী, মনোযোগী আর নিষ্ঠাবান হিসেবে ছাড়পত্র পাচ্ছে। গণিত, পদার্থবিজ্ঞান আর রসায়নের অংশবিশেষ না শিখেও সেই ছাড়পত্র পাওয়া সম্ভব। কারণ বোর্ড পরীক্ষার প্রশ্নের কাঠামোই সেভাবে ভাগ করা। ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নের কাঠামোতে এই নিশ্চয়তা নেই, তাই পরীক্ষার্থীকে বাড়তি ইনপুট দিতে হয়। ঐ বাড়তি ইনপুটের পেছনে সংশ্লিষ্ট শিক্ষাধারায় তার আগ্রহ আর যোগ্যতা যাচাই আরো ভালোভাবে করা সম্ভব।
এই কথাটা আবার পড়ে দেখুন। আমরা যা শিখি, তা প্রয়োগের সুযোগের ব্যাপ্তি খুব বেশি সময়ের হয় না। লেখক ১ ঘন্টার পরীক্ষা দিয়ে সারা জীবনের শিক্ষা যাচাইয়ের বিরোধিতা করেছেন। আমরা যা শিখি তা প্রয়োগের জন্য খুব বেশি সময় তো পাই না। সারা টার্ম ধরে পড়া জিনিসের ওপর পরীক্ষাও কি সারা টার্ম ধরে হয়? শেষ পর্যন্ত তো কয়েক মিনিটেরই মামলা।
৮০ থেকে ১০০'র পার্থক্যটা মনে ধরল!
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
হুম মনে হচ্ছে স্বীদ্ধান্তটা একটু তাড়াহুড়ো করে নেয়া হয়ে গেছে।
তবে ভর্তি পরীক্ষা আর পাবলিক পরীক্ষার মধ্যে খুব একটা পার্থক্য যে আছে, সেটা মনে হয় না। দুটার মাধ্যমেই মেধার যাচাই করা স্বম্ভব, যদি সিস্টেমটা প্রপার হয়। কিন্তু ভর্তি পরীক্ষা আসলেই আমার অনেক বেশি তাড়াহুড়োর একটা ব্যাপার মনে হয়। যে কষ্ট করে দুটো পাবলিক পরীক্ষায় ভালো করেছে, তাকে খারাপ ছাত্র বলবার কোন কারন খুজে পাই না। প্রতিবছর যে বিশাল সংখ্যক এ প্লাস পাচ্ছে, আমার তো মনে হয় সবারেই যোগ্যতা আছে মেডিকেলে পড়বার। কিন্তু এটা আমাদের ব্যর্থতা যে, আমরা তাদেরকে সেই সুযোগ দিতে পারছি না। কিন্তু তার জন্য ভর্তি পরীক্ষার মত আর একটা পরীক্ষা কতটা গ্রহণযোগ্য সেটা নিয়ে হয়ত ভাবার সময় এসেছে।
আসলে দুটো সিস্টেমেরই ভাল খারাপ দুটো দিকেই আছে। কিন্তু তারপরও আমার মনে হ্য়, যেহেতু সমস্যাটা দুই জায়গায়তেই বিদ্যমান, খামাখা ছেলেপেলেদেরকে ভর্তি পরীক্ষার মত এত বিশাল একটা বাড়তি ঝামেলায় ফেলানোর দরকার কি? গ্রামের ছেলে মেয়েদের জন্য হঠাৎ করে শহরে এসে সেটলড করা আর ভর্তি পরীক্ষার জন্য প্রিপারেশন নেয়া অনেক কঠিন হয়ে যায়। তার থেকে যদি পাবলিক পরীক্ষাগুলো আর একটু সিরিয়াসলি এবং প্ল্যান মাফিক নেয়া যায়, সেটা মনে হয় সব দিক থেকেই হেল্পফুল হবে। ছেলেপেলেদেরও কষ্ট কমে যাবে, অর্থরিটিরও ঝামেলা কমবে, কোচিং ব্যবসায়ীদের হাত থেকে ছেলেময়েরা কিছুটা রেহাই পাবে এবং সেইসঙ্গে দূর্নীতির একটা মাধ্যমও কমে যাবে। যদিও এটাই সব সমস্যার সমাধান, তা বলছি না। তবে এই মূহুর্তে এটাকেই better মনে হচ্ছে।
তবে পাবলিক পরীক্ষারও যে অনেক সমস্যা আছে, সেটা আমার লেখাতেই বলেছি। এখন যেটা করতে হবে তা হল, পাবলিক পরীক্ষার গ্রেডিং সিস্টেম, প্রশ্নের ধরন এবং বাকি খুটিনাটি বিষয় গুলোর প্রতি মন্ত্রণালয় একটু মনযোগ দেয়া। পাবলিক পরীক্ষার গ্রহণযোগ্যতা বাড়ানো গেলে সেটা সবদিক থেকেই ভাল হবে। তখন শুধু মেডিকেল না, সব বিশ্ববিদ্যালয়েই এই সিস্টেম কাজে দিবে।
তবে মনে হচ্ছে মেডিকেলের মত একটা সেন্সিটিভ জায়গায় এই এক্সপেরিমেন্ট না করে, নন-টেকনিক্যাল কোন বিশ্ববিদ্যলয় দিয়ে শুরু করা উচিত ছিল। এরপর এর ভালো মন্দ দিকগুলো যাচাই বাছাই করে, হয়ত সব বিশ্ববিদ্যলয়ের জন্য শুরু করা যেত।
গ্রামের ছেলেমেয়েরা তো গ্রামের ইউনিভার্সিটিতে পড়তে পারবে না। তারা জানে তাদের ভবিষ্যৎ শিক্ষাজীবন গ্রাম থেকে দূরে কাটবে। মেডিক্যাল কলেজগুলিও তাদের গ্রাম থেকে বহু দূরে। এই ভৌগোলিক বৈষম্য অনপনেয়, যদি না আপনি প্রত্যেক গ্রামে একটা করে মেডিক্যাল কলেজ খুলতে পারেন। আপনার জ্ঞাতার্থে বলি, গ্রামের ছেলেমেয়েদের এসএসসি আর এইচএসসি পরীক্ষার আসনও অনেক সময় বাড়ি থেকে অনেক দূরে পড়ে। আপনি কি এরপর পাবলিক পরীক্ষাগুলো তাদের উঠানের পাশে বসে নিতে বলবেন?
আপনি যদি দুর্নীতিবাজদের শাস্তি দিতে না পারেন, এখন যে দুর্নীতি ভর্তি পরীক্ষায় হচ্ছে, সেটা তখন পাবলিক পরীক্ষায় হবে।
হিমু ভাই,
এই বাড়তি ইনপুটগুলোর অধিকাংশই পেশার সাথে কোন সম্পর্ক রাখেনা। আপনি প্রশ্নগুলো দেখলে কী বলবেন জানি না। এই মুহূর্তে বিসিএস এর কোন বই সামনে নেই, থাকলে ওইসব প্রশ্নের নমুনা পেশ করতাম(আজকের বিশ্বে সব প্রশ্নই থাকে)! এগুলো মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন নাকি আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বা ব্যবসায় সংক্রান্ত বিষয়ে ভর্তির প্রশ্ন তা ঠাহর করা যায় না! এই মুহূর্তে যেভাবে ঢালাওভাবে পাবলিক পরীক্ষায় নাম্বার দেয়া হয় তাতে মেধার যাচাই হয় না। নাম্বার কাটলেই শিক্ষকদের ডেকে নিয়ে জবাব চাওয়া হয়। যারা ৭০ এর বেশি পাওয়ার যোগ্য না, তাদেরও ৮০ দেয়া হচ্ছে!
আমার এক কলিগ এফ,সি,পি,এস শেষ পর্বের পরীক্ষার্থী, এক সেমিনারে ডিডাকশন শব্দের অর্থ জিজ্ঞেস করেছিলেন প্রফেসরকে, আরেকদিন রিডাকশন মানে! ইনি নাকি প্লেস করা ছাত্রী ছিলেন! তা এদেরকে বিজ্ঞান পড়ার ছাড়পত্রটা কে দিয়েছিল শুনি?
কোচিং প্রথা একটা সামাজিক ব্যাধি। আমরা কি ভেবে দেখেছি যে দু দুটো পাবলিক পরীক্ষার আদৌ কোন প্রয়োগ আমাদের দেশে আছে কিনা? একটা কমিয়ে দিলে কি হয়? এত এত কোচিং আর পরীক্ষার চাপে আমাদের শৈশব-কৈশোর যে খুন হয়ে যাচ্ছে- সেটার কী প্রতীকার?
ডাক্তারি পেশার পরীক্ষা বাস্তব জীবনে মোটেও কম সময়ে হয় না এবং আসলে সারা জীবনই একজন ডাক্তারের পরীক্ষা চলে এবং প্রতিটা রোগীই এক একটা প্রশ্ন। শল্যচিকিৎসক হওয়ার চূড়ান্ত পরীক্ষাগুলো অত্যন্ত দীর্ঘ আর কঠিন। তাছাড়া উন্নত দেশগুলোতে চূড়ান্ত পরীক্ষার মত ট্রেনিংকেও সমান গুরুত্ব দেয়া হয় যার সময়কাল ইন্টার্নশিপসহ ৮-১০ বছর। তবে বাংলাদেশে এফ,সি,পি,এস পরীক্ষায় ট্রেনিং এ সবাই একই রকম গ্রেড পায় বলে এখানে পরীক্ষাটাই প্রধান।
মোদ্দা কথা, প্রচলিত পদ্ধতিও আসলে মেধা যাচাইয়ের কোন ভালো পন্থা নয়। তবে ভর্তি পরীক্ষা বাতিল করে খারাপ হয়েছে। আমার মতে,
এইচ,এস,সি শেষ হবার ২ সপ্তাহের মধ্যেই একটা ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া উচিত যার কাঠামো বিশ্বমানের এম,ক্যাট বা গ্যামস্যাট পরীক্ষাগুলোর মত যা কোনভাবেই মুখস্থনির্ভর নয়। এই ব্যবস্থায় শিক্ষার্থীদের মেধার যাচাইও হবে, আবার তারা পরীক্ষার পর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আগে ২-৩ মাস হেসে-খেলে-খেয়ে-পান করে, সাহিত্যচর্চায় দিনও কাটাতে পারবে। তাহলে রোবটের বদলে বেশি মানুষ তৈরি হবে।
অলয়
ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নের মান নিয়ে তর্ক উঠলে, সেই প্রশ্ন পাল্টানো যেতে পারে। পরীক্ষাটাই কি বাতিল করে দেয়া যায়?
কোচিংকে ভর্তি পরীক্ষার অত্যাবশ্যকীয় শর্ত হিসেবে কেন দেখছি আমরা? যখন কোচিং শুরু হয়নি, তখন কি শিক্ষার্থীরা ভর্তি পরীক্ষা দিতেন না? ভর্তি পরীক্ষা = কোচিং, এই সমীকরণকে ভাঙতে হলে কোচিং বাণিজ্যের রাশ টানতে হবে। আর সেটা করতে গেলে ক্লাসরুমে শিক্ষকদের আরো দক্ষ হতে হবে। কোচিং এর মূল পুঁজি ক্লাসরুমের ওপর শিক্ষার্থী আর অভিভাবকের ভরসার অভাব।
দয়া করে আমার লেখার শেষ প্যারাটা লক্ষ্য করুন। আমি ভর্তি-পরীক্ষা বাতিল করতে নয় বরং তার মানোন্নয়নের কথা বলেছি। মেডিকেল সায়েন্স একটি উচ্চতর বিজ্ঞানের শাখা, এখানে মুখস্থের ভূমিকা থাকা বাঞ্ছনীয় নয়। অথচ ১০০% মুখস্থ-নির্ভর প্রশ্নে কিছু মেধাবীর সাথে অনেক তোতাপাখি মেডিকেলে ঢুকে যায়। মান্ধাতার আমলের মুখস্থবিদ অধ্যাপকদের সাহায্যে কালে কালে এরাও শিক্ষক হয়। চলতে থাকে মুখস্থের দুষ্টদংশনের দুষ্টচক্র। এই তোতাপাখিদের অনেকেই সামান্য সামান্য কথার মানেও বোঝেনা, এবং না বোঝার কারণে এদের প্রায়োগিক দক্ষতা ও যোগাযোগ হয় নিম্নমানের। তাছাড়া অনেকের মধ্যেই মানবিক গুণাবলির অভাব থাকে। কাজেই এদের জন্য সব ডাক্তারকে রক্তচোষা অপবাদ সইতে হয়।
অ্যাপচ্যুড টেস্ট ছাড়া কোন মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষাই গ্রহণযোগ্য নয়। গ্যামস্যাট এবং এমক্যাট পরীক্ষায় বিশ্লেষণ, বোঝার ক্ষমতা, চিন্তা করবার ক্ষমতা ইত্যাদি বিষয় দেখা হয়। আমাদের দেশে ঠিক উলটো কাজ করা হয়-"বেঞ্জিনের সান্দ্রতাঙ্ক কত? রাজিয়া খাতুন কোন গ্রামে জন্ম নেন?-ইত্যাদি হল এদেশে মেধা যাচাইয়ের মানদণ্ড! এমনকী বুয়েটেও গত ৭-৮ বছরে অনেক প্রশ্নই হয়েছে মুখস্থ ও অনুশীলন-নির্ভর! বুয়েট ভর্তি পরীক্ষায় আগে যেমন বেসিক-নির্ভর,বুদ্ধিদীপ্ত-চৌকস প্রশ্ন হত সেগুলো কিন্তু এখন উধাও। এখন যারা অঙ্ক-পদার্থ না বুঝে পাঞ্জেরী ইত্যাদি গাইড রেজাল্টসহ গেলে এমন অনেক লোকও ঢুকে যায়! যদিও বুয়েট পরীক্ষাই এখনো সবচেয়ে ভালো আছে!
অলয়
একমত।
অফটপিক: বুয়েটের গত দুয়েক বছরের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন কি কেউ দিতে পারেন?
বোর্ড পরীক্ষার রেজাল্টের চেয়ে মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষার ফিলটার সিস্টেম অনেক বেশী নির্ভরযোগ্য। ইন্টারে বইয়ের অনেক চ্যাপ্টার উলটাই না দেখেও ( কারণ ওগুলো "ইম্পরট্যান্ট" না) এ-প্লাস পাওয়া যায়। কিন্তু ভর্তি পরীক্ষার জন্য পুরো বই পড়তে হবে। বোর্ড পরীক্ষার লাখ লাখ খাতা দেশের আনাচে কানাচে যে সব একজামিনারদের দিয়ে কাটানো হচ্ছে তাদের মানে আসমান - জমিন ফারাক। তাদের মেজাজ- মর্জির তাপমাত্রাও প্রভাবক হিসাবে কাজ করে একজন ছাত্রের আমলনামাতে। যদি এ- প্লাস পাওয়া কেউ নিজেকে যোগ্য মনে করে, তার ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে টেনশনের কারণ কি ! এছাড়া মেডিক্যালের ভর্তিতে তো এসএসসি - এইচএসসির ফলাফল বেশ ভাল ভুমিকা রাখে।
ভাই আমি এসএসসি ও এইচএসসি ২ টা পরীক্ষায় গোল্ডেন এ প্লাস পেয়েছি।আপনি লিখেছেন
আপনার কথা আমি মানতে পারলাম না।আনইমপরট্যান্ট চ্যাপ্টার না পড়ে আপনি সসম্মানে পাশ করতে পারেন,কিন্তু এ-প্লাস পাবেন না।
আপনি আরো বলেছেন:
একটা বিষয় আপনার বোঝা উচিত,একজন বুড়ো ডাক্তারের চেয়ে একজন বোর্ড এক্সামিনার তার সাবজেক্ট সম্পর্কে বেশি জানেন।কারন,শিক্ষার্থীরা তাদের থেকেই শেখে।
আপনি আরো বলেছেন:
এত কষ্ট করে ৪ বছর ফিজিক্স,কেমিস্ট্রি,বায়োলজি,ম্যাথ পড়ে "আলীবর্দী খা এর বাবার নাম কি?","বতর মানে কি?"
"মেসি কোন দেশের নাগরিক" এইসব প্রশ্ন যদি হয় একজন সাইন্স এর ছাত্রের মেধার মাপকাঠি,তা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না।
ছোট লেখা। খানিকটা হতাশ হলাম। মন্তব্যে বিস্তারিত আলোচনা হবে সেই আশা রাখি।
অ. ট. আপনার নিক/নামের বানানটা বোধহয় 'ঋজু' হবে।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
আশা করি। আমি আসলে শুধু আমার ভাবনা টা বলার চেস্টা করেছি। পক্ষে বিপক্ষে অনেক মতামত থাকতে পরে। দেখা যাক সবাই কি বলে।
আসলে ছোটবেলা থেকেই আমি আমার নামটা এভাবেই লিখি। অভ্যাস হয়ে গেছে। আপনার বানানটার যদিও একটা মিনিং আছে।
কিছু প্রশ্ন মনে জেগেছে। উত্তর আশা করছি।
১। ৬০ হাজারের উপরে এ প্লাস পাওয়া স্টুডেন্ট থেকে কিসের ভিত্তিতে আপনি ২৩০০ জন ছাত্র ছাত্রী নির্বাচন করবেন?? আবার যেখানে গত বছর যারা চান্স পায়নি তাদের নিয়ে সংখ্যাটা আরো বেশী। এই বিচারের মাপকাঠি কি??
২। প্রতিটি শিক্ষাবোর্ডের খাতা মূল্যায়ন পদ্ধতি এক নয়। এখন একটি ট্রাডিশন চালু আছে বোর্ডে যেখানে প্রধান পরীক্ষকদের বোর্ড থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয় নাম্বার বাড়িয়ে দিতে। (কথাটা একটু অবাক করা হলেও সত্য কারণ আমার বাবা-মা দুজনেই ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের প্রধান পরীক্ষক সে হিসাবে ভিতরের কথা গুলো জানতে পারি)। কারণ একটাই, প্রতিবছর এ প্লাস বাড়লে শিক্ষা ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নতি হচ্ছে বলে সরকার গলা ফাটাতে পারে। এখন আপনি এক্ষেত্রে মেধাবী যাচাই করবেন কিভাবে???
৩। ৮০ পাওয়া আর ৯৯ পাওয়া ছাত্র-ছাত্রী কি সমমানের??? তাদের গ্রেড কিন্তু এক।
৪। এবার জিপিএ ৮ পেলেও এপ্লাই করার কথা বলা হয়েছে। আগের নিয়মে কোন কারণে কেউ জিপিএ কম পেলেও ভর্তি পরীক্ষায় ভালো করার মাধ্যমে মেডিকেলে চান্স পাবার স্বপ্ন দেখতে পারতো। এখন তারা কি করবে???
৫। যে কারণ দেখিয়ে ( কোচিং বাণিজ্য, প্রশ্ন ফাঁস ইত্যাদি) ভর্তি পরীক্ষা বাতিল করা হলো সেই কারণ গুলোর জন্য যারা দায়ী তাদের নিবৃত না করে একটা পদ্ধতি বাতিল করে দেয়াটা কি যৌক্তিক?? আর এর মাধ্যমে যে অন্য ধরনের দূর্নীতি বেড়ে যাবে না তার কোন গ্যারান্টি আছে?? মেডিকেল কলেজের প্রভাষক হিসাবে অনেক কাছ থেকে এসব চিত্র দেখেছি বলেই বলছি, এর মাধ্যমে অনেকের আগামী নির্বাচনের বাজেট হয়ে যেতে পারে।
৬। এম সি কিউ পৃথিবীর অধিকাংশ দেশেই প্রচলিত পরীক্ষা পদ্ধতি। যে মেধাবী সে এই পদ্ধতি পার হয়েই তার যোগ্যতার স্বাক্ষর রাখবে। এছাড়া এস এস সি তেও এম সি কিউ সিস্টেম প্রচলিত। তাহলে এমসিকিউ কি দোষ করলো??
আলোকিত মন
১) হয়ত কঠিন হবে, কিন্তু অনেকের রেজাল্ট একই হলে স্পেসিফিক বিষয় এর উপর গুরুত্ব দিতে হবে। প্রাওরিটি বেসিসে বায়োলোজি, কেমিস্ট্রি, ইংলিশ এর গ্রেড দিয়ে ক্রমানুসারে একটা মেধাতালিকা করতে পারে। এরপরও যদি না হয় প্রতিটা বিষয়ের মার্ক বোর্ড থেকে চাওয়া যেতে পারে। আর পরের বছরগুলোতে রিলেটিভ গ্রেডিং সিস্টেমটা চালু করা যেতে পারে।
২) মার্ক বাড়িয়ে দিলে তো সবারটাই বাড়ানো হয়। এতে এই ট্রাডিশনটার অবশ্যই চেন্জ আনতে হবে।
৩) এক নং এর উত্তর
৪) আমাদের ছাত্র ছাত্রী সংখ্যা অনেক, এবং তাদের একটা বড় অংশরেই স্বপ্ন থাকে ডাক্তার হবার। কিন্তু মেডিকেলের আসন সংখ্যা খুবেই সীমিত। এমতাবস্তায় আপনি শুধু বেস্টদেরকেই সেই সুযোগটা দিতে পারেন। আর আমার মনে হয় বেস্ট নির্ণয়ের জন্য পাবলিক পরীক্ষায় যতেষ্ট।
৫) আসলেই কি কোচিং বাণিজ্য, প্রশ্ন ফাঁস...... এসব বন্ধ করা স্বম্ভব? কোচিং বন্ধ করে দেওয়া মনে হয় মন্ত্রণালয়ের জন্য খুব সহজ নয়। আর বন্ধ করে দিলেও খুব বেশি লাভ হবে বলে মনে হয় না। তখন প্রিভিলেজড গ্রুপ হবে গুটিকয়েক টাকাওয়ালা পরিবারের ছেলেমেয়ে, কারন তারা বেশি টাকা দিয়ে হলেও ঠিকই প্রাইভেট টিউটর টাইপের কাউকে খুজে নিবে। আর প্রশ্ন ফাস, সেটা মনে হয় আরও কঠিন। দূর্নীতিটা বাংলাদেশে এমন পর্যায়ে চলে গেছে, আমার মনে হয় স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ওরা বুঝতে পারছে এটা কোনভাবেই পুরোপুরি রোধ করা স্বম্ভব না। পাবলিক পরীক্ষা, ভর্তি পরীক্ষা দুই জায়গায় দূর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবার চেয়ে, শুধু পাবলিক পরীক্ষা নিয়ে আরও ভালভাবে প্লান করা গেলে সবদিক থেকেই লাভজনক হবে।
৬) দোষটা আসলে এম সি কিউ এর না। আমি শুধু বুঝাতে চেয়েছিলাম, পাবলিক পরীক্ষায় সব বিষেয়র এত বড় বড় পরীক্ষা যেখানে হচ্ছে, সেখানে আবার এই ছোট ভার্শনের পরীক্ষার কি দরকর।
বাস্তবিক ক্ষেত্রে ১২ বছর কেউই প্রকৌশল বা মেডিকেলে পড়ার জন্য সাধনা করে না। সর্বোচ্চ ৪ বছর হতে পারে। আসলে গড়ে হয় ৬ মাস।
আরো কিছু নির্মম বাস্তবতাঃ
এসেসসি এইচেসসির বায়োলজি সাবজেক্ট সিংহভাগ বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র অত্যন্ত কম পড়ে, কম চর্চা করে। গৎবাধা প্রশ্ন আসে এবং সেগুলোই তারা মুখস্থ করে। এই রকম একটি সিনারিওতে পাব্লিক পরীক্ষা দিয়ে সব যাচাই বাছাই করা যাবে এটা চিন্তা করা হাস্যকর।
আপনি আদর্শ শিক্ষা ব্যবস্থার কথা বলছেন। আপনাকে বাস্তব জগতে আসতে হবেঃ বাংলাদেশের শিক্ষাবস্থা আদর্শ অবস্থানে নাই। এখানে পাব্লিক পরীক্ষার মাধ্যমে মেধার পূর্ণ প্রতিফলন হয় না। এ্যাডমিশন টেস্টে ভাগ্যের যোগসাজোশ বেশি এমন ধারণা কেন হল বুঝলাম না। ব্যাখ্যা করবেন।
শিক্ষা পদ্ধতি তথা পাব্লিক পরীক্ষার পাঠ্যসূচি-পরীক্ষা পদ্ধতি-প্রশ্নমান পরিবর্তন না করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া ভুল-অন্যায় হয়েছে। এইভাবে মেডিকেল শিক্ষা ব্যবস্থা তথা সামগ্রিক স্বাস্থ্য খাতকে হুমকির মুখে ঠেলে দেওয়া যায় না। প্রতিবাদ করা প্রয়োজন।
তাদের এই সিদ্ধান্তের যে দুটি মুখ্য কারণ তারা বলে তা হলঃ প্রশ্নপত্র ফাঁস আর কোচিং ব্যবসা। অথচ এদুটোই থামানো খুবি সহজ, দরকার শুধু সৎসাহস আর আন্তরিকতা।
গুরুত্বপূর্ণ একটি ইস্যুতে দুর্বল একটি লেখা বেশ বিপজ্জনক। মানুষ বিভ্রান্ত হবে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে।
_____________________
Give Her Freedom!
আপনি চিকিৎসক হওয়ার যোগ্যতার বেঞ্চমার্কের সাথে তো আপোষ করতে পারেন না। <অবশ্যই>
কিন্তু ভর্তি পরীক্ষা যে সেই বেঞ্চমার্ক, তার গ্যারান্টি কতটুকু। আর যারা পরপর দুটি পাবলিক পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করল, তাদেরকে আপনি কিসের জন্য খারাপ বলবেন? আমার তো মনে হয় যারা এ+ পায় তাদের সবারেই যোগ্যতা আছে মেডিকেলে পড়বার। কিন্তু
আমাদের লিমিটেশনের কারনে সেটা স্বম্ভব না।
আসলেই কি কোচিং বাণিজ্য, প্রশ্ন ফাঁস...... এসব বন্ধ করা স্বম্ভব? কোচিং বন্ধ করে দেওয়া মনে হয় মন্ত্রণালয়ের জন্য খুব সহজ নয়। আর বন্ধ করে দিলেও খুব বেশি লাভ হবে বলে মনে হয় না। তখন প্রিভিলেজড গ্রুপ হবে গুটিকয়েক টাকাওয়ালা পরিবারের ছেলেমেয়ে, কারন তারা বেশি টাকা দিয়ে হলেও ঠিকই প্রাইভেট টিউটর টাইপের কাউকে খুজে নিবে। আর প্রশ্ন ফাস, সেটা মনে হয় আরও কঠিন। দূর্নীতিটা বাংলাদেশে এমন পর্যায়ে চলে গেছে, আমার মনে হয় স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ওরা বুঝতে পারছে এটা কোনভাবেই পুরোপুরি রোধ করা স্বম্ভব না। পাবলিক পরীক্ষা, ভর্তি পরীক্ষা দুই জায়গায় দূর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবার চেয়ে, শুধু পাবলিক পরীক্ষা নিয়ে আরও ভালভাবে প্লান করা গেলে সবদিক থেকেই লাভজনক হবে।
বানানটা "সম্ভব", বারবার "স্বম্ভব" পড়তে গিয়ে হোঁচট খাচ্ছি।
প্রথমত, শিক্ষাবোর্ডের প্রশ্নপত্রে মেধার পরীক্ষা আর মেডিক্যাল কলেজের প্রশ্নপত্রে মেধার পরীক্ষার মধ্যে পার্থক্য যদি আপনি আমলে নিতে না চান, তাহলে কথা বাড়ানো নিরর্থক। শিক্ষাবোর্ডের চেয়ে মেডিক্যাল কলেজের প্রশ্নপ্রণেতারা তাদের ভবিষ্যৎ ছাত্রদের আরো ভালোভাবে বাজিয়ে দেখতে পারেন, এই জিনিসটা ধরতে না পারলে তো মুশকিল। যারা পরপর দুটি পাবলিক পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করেছে, তারা হয়তো "সম্ভব"কে "স্বম্ভব" লিখে তারপরও এ প্লাস পেয়েছে। এরকম আরো অনেক খুঁটিনাটি থাকে, যেগুলো ভর্তি পরীক্ষার ছাঁকনিতে গিয়ে ধরা পড়ে। এ প্লাস ভালো না খারাপ, সেটা বিচার্য না, বিচার্য হচ্ছে এই ষাট হাজার এ প্লাসের মধ্যে চিকিৎসাবিজ্ঞানে পড়ার মতো ভালো আড়াই হাজার বেছে নেয়া। সেটা বাছতে ভর্তি পরীক্ষার বিকল্প আপাতত নাই।
কোচিং বাণিজ্য, প্রশ্ন ফাঁস, সবই বন্ধ করা সম্ভব। মন্ত্রণালয়কে কেউ সহজ কাজ করার জন্য ট্যাক্সের পয়সায় পালে না। তাদের কাজই কঠিন কঠিন কাজ করা। সহজ কাজ করতে চাইলে তারা গিয়ে যেন মাটি কাটে।
_____________________
Give Her Freedom!
---------------------
আমার ফ্লিকার
খারাপ কেন বলবো! বলিও নাই। তবে ছাত্র পড়াতে গিয়ে সর্বোচ্চ গ্রেডধারীও যে বিজ্ঞানের ব্যসিক টপিক গুলো জানে না যখন দেখি তখন গ্রেডের গ্রহণযোগ্যতা বুঝে যাই। সারা বছর না পড়ে শুধু ২ দিন শর্টেস্ট সাজেশন দেখে এ+ যে ভুড়িভুড়ি পাচ্ছে এই বাস্তবাতা আপনি জানেন না। কল্পিত স্বর্গে বাস না করে ধূলির মর্ত্যে নেমে আসেন। মেধার প্রতিফলন পাব্লিক পরীক্ষা ঘটাতে পারছে না বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থায়।
আপনার ধ্যান ধারণা, বাস্তবতার সাথে সম্পৃক্ততা সবকিছুই বুঝে নিলাম ভাই। যারা এ+ পায় তাদের মুষ্টিমেয় কয়েকজনের যোগ্যতা আছে মেডিকেলে ভর্তি হবার; অধিকাংশের সেই যোগ্যতা নাই; সেই যোগ্যতা অর্জন করতে হবে; এবং এই ফিল্ট্রেশন করতেই অবশ্যম্ভাবীরূপে ভর্তি পরীরক্ষা দরকার।
_____________________
Give Her Freedom!
আমার তো মনে হয় যারা এ+ পায় তাদের সবারেই যোগ্যতা আছে মেডিকেলে পড়বার।
আমি বুঝলাম না আপনার কিভাবে মনে হল যে তথাকথিত এ + পেলেই সে মেডিকেলে পড়ার যোগ্যতা অর্জন করে। এ+ পাওয়া বেশ কিছু ছাত্র ছাত্রীকে কোন এক পরিক্ষার ইন্টার্ভিউতে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল আমি বাড়ি যায় আর সে বাড়ি যায় এই দুইটা বাক্যের সঠিক ইংরেজি অনুবাদ অনেক এ+ পাওয়া মেধাবীরাই সেদিন পারেনি। কাজেই একটা কথা বলে দিলেই কিন্তু হল না আপনাকে জানতে হবে এই সার্টিফিকেট প্রাপ্তদের প্রকৃত অবস্থা।
আর কোচিং , প্রশ্নপত্র ফাঁস এগুলো সবি বন্ধ করা সম্ভব শুধু ইচ্ছার অভাব।
আর আপনি পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের যেভাবে সাফাই গাইছেন তাতে আপনি এইখানে চাকরি করেন কিনা আমার সন্দেহ হচ্ছে। ভালো লেখা দিন । দয়াকরে সাফাই গাইতে আসবেন না একটি ভুল সিদ্ধান্তের।
অমি_বন্যা
সাফাইটা কি খুব বেশি গাওয়া হয়ে গিয়েছে???
মাঝে মাঝে মনে হয় কোন একটা সরকারি চাকরি করতে পরলে ভালই হত। টেনশন ফ্রী লাইফ। কিন্তু কেন জানি পর্মানেন্ট কোন কিছুর প্রতিই খুব একটা টান নাই। ভয় হয় তাতে জীবনের স্বপ্নগুলো একটা গন্ডির মধ্যে আবদ্ধ হয়ে যাবে। আশা করি আবার এটা ভেবে বসবেন না, আমি লীগের সাপোর্টার।
দ্বিমত পোষণ করছি।দেশের পাবলিক পরীক্ষার রকম সকম বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন রকম।একসময়ের নকলের দুর্ধর্ষ রকমের ভয়াবহতা কমে গেলেও অন্যান্য সমস্যা গুলো খুব একটা কমে নি।যেমন পাবলিক পরীক্ষায় পরীক্ষার হলরুমে শিক্ষক দের আচরণ কিন্তু সবসময় সবজায়গায় একরকম না।তা আপনি নিয়ন্ত্রন করতেও পারবেন না।তিনঘণ্টার একটা পরীক্ষায় কেও সামনে পিছনে দেখে লিখেও ৯০ পেতে পারে।অনেকেই তাই করে প্রতিবছর এ প্লাস পাচ্ছেও।তাদের মেধা ঐভাবে মুল্যায়ন করতে গেলে তো সমস্যা।
আপনার প্রশ্নগুলোর সাথে একমত তবে ভর্তি পরীক্ষার বিকল্প বের করতে চাইলে ব্যাপারটা আরও গোলমেলে হবে আমার মতে।
কাক্কেশ্বর কুচকুচে
পাবলিক পরীক্ষা এর মাধ্যমে কখনই প্রকৃত মেধার প্রতিফলন ঘটেনা। আমি গত বছর এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছি, বিভিন্ন জায়গাতে ভর্তি পরীক্ষা দিয়েছি এবং ভাল একটা প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে পড়ালেখা করছি। আমার অভিজ্ঞতা থেকেই বলছি এটা।
পাবলিক পরীক্ষা তে একেকজনের খাতা একেক জন দেখবে। ফলে একি রকম উত্তর লিখে একেকজন একেক রকম নাম্বার পাবে। পরীক্ষা এর গার্ড সহজ হলে কেও পাশের জনের দেখে দেখে লিখে ভাল নাম্বার পাবে ( পরীক্ষা নকলমুক্ত পরিবেশে হলেও দেখাদেখি মুক্ত পরিবেশে হয় না। প্রায় সব জায়গাতেই কমবেশি দেখাদেখি হয়, কিন্তু ভর্তি পরীক্ষা তে নকল তো পরের কথা, দেখাদেখির সুযোগই প্রায় নেই)।
ব্যবহারিক পরীক্ষা কোথাও কড়াকড়ি ভাবে হয়, কোথাও খুবই ঢিলাভাবে হয়। কোথাও পিওনরা সব করে দেয়, ব্যবচ্ছেদ করা তেলাপোকা কিনতে পাওয়া যায়, কোথাও সবকিছু নিজে নিজে করতে হয়। একি রকম ছাত্র একি রকম প্রস্তুতি নিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রের ভিন্নতার কারণে ৫০ এর মধ্যে ৫০ পেতে পারে আবার ৩৮ ও পেতে পারে। বিজ্ঞানের বিষয়গুলাতে ব্যবহারিক এর উপর ২৫% নাম্বার। চারটি বিজ্ঞানের বিষয়ে যদি এভাবে ৩০-৩৫ নাম্বার কমবেশি হয়, তাহলে একি রকম ছাত্রের একজন ঢাকাতে পড়বে, আর আরেকজন কোথাও চান্স পাবে না।
এ প্লাস পেতে হলে পুরা বই এর ২৫% পড়লেই চলে। অনেকেই পুরা বিষয়বস্তু না বুঝে খালি সাজেশন পড়ে অল্প কিছু প্রশ্ন পড়ে এ প্লাস পাবে। তাহলে যারা বিষয়টা মেধা খাটিয়ে পুরা বিষয় আত্মস্থ করে পড়ল তাদের কি মূল্যায়ন হবে?
এসব প্রশ্নের আগে যথাযথ উত্তর দেন , তারপর সাজেস্ট করেন। আপনাদের মত যারা ভিতরের বিষয়গুলো জানেনা, তারাই খালি বাহ্যিক কিছু আইডিয়া দেখে পুলকিত হয়ে গেছেন, তারাই খালি এগুলো সমর্থন দেন। যাদের জন্য এই সিদ্ধান্ত সেই বয়সী আমার অনেক ফ্রেন্ড আছে। তারা কেওই বিষয়টা সমর্থন করে না, সবাই সরকারের উপর ক্ষিপ্ত। ভর্তি পরীক্ষা তে এখনো ছাত্ররা ভরসা করে শ্রমের ফল তারা পাবে।
রিলেটিভ গ্রেডিং যখন চালু হবে তখন তাহলে এই নতুন নিয়ম করুক। এখন কেন?! ৬০ হাজারের বেশী যেখানে সর্বোচ্চ ভালো ফল করেছে সেখানে কিসের ভিত্তিতে এতো অল্প সিটে ভর্তি করা সম্ভব? আর পাব্লিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য যেই লেখাপড়া করার প্রয়োজন হয় সেটা থেকেই ভালো স্টুডেন্ট বের হয়ে আসে। আমরা যারা গ্রেডিং সিস্টেমে লেখাপড়া করেছি অনেকেই এটা স্বীকার করবে যে আমাদের সাথে এমন অনেকেই হয়ত ছিলো যারা তেমন মেধাবী ছিলো না কিন্তু এসএসসি এইচএসসি তে জিপিএ ৫ পেয়েছে। এইসব স্টুডেন্ট ভর্তি পরীক্ষাতে ঝরে যায়। তাদের সুযোগ না পাওয়াটাকে লাক ছিলো না বলে হয় নি এমন বলাটা আসলে যুক্তিযুক্ত না। এতো বেশী ভালো রেজাল্টের মধ্যে সেজন্যেই বোধ হয় আমাদের টিচাররা বলতেন কোথায় চান্স পাও সেটাতেই বোঝা যাবে আসলে কে সবচেয়ে বেশী মেধাবী।
--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি
আশা করছি, এস এস সি এবং এইচ এস সি তে সাবজেক্টগুলোর প্রাপ্ত নম্বর দিয়েই যাচাই করা হবে, যদিও শিওর না।
আর যে জিপিএ ৫ পায়, তার অবশ্যই যোগ্যতা আছে মেডিকেলে পড়বার। কিন্তু লিমিটেশনের কারনেই সবাইকে সুযোগ দেয়া স্বম্ভব না। কিন্তু তার জন্য ভর্তি পরীক্ষার মত একটা টর্চারও কতটা গ্রহণযোগ্য সেটা নিয়ে আমার স্বন্দেহ আছে।
এম বি বি এস কোর্স নিজেই যত বড় একটা টর্চার,তার তুলনায় মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা নগণ্য মাত্র।আমাদের ব্যাচের একজন জিপিএ ৫ (এস এস সি ২০০১,প্রথম গ্রেডিং ব্যাচ) একবারে সব প্রফ পাস করতে পারেনি বিধায় এখনও তার ইন্টার্নশীপ শেষ করতে পারেনি।অথচ তার চেয়ে কম জিপিএ নিয়ে অনেকেই সময়মত সব শেষ করে বিসিএস,এফ সি পি এস পার্ট ১ করে ফেলেছে।মেডিকেলে পড়ার বা টর্চার নেয়ার যোগ্যতা তাদের কম বা আগেরজনের বেশি-জিপিএ কিন্তু এটা নির্ধারন করে দেয়নি,দিয়েছে ভর্তি পরীক্ষা আর মেডিকেল কারিকুলাম।বর্তমান ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতি খানিকটা ত্রুটিপূর্ন হতে পারে,কিন্তু জিপিএর ভিত্তিতে ভর্তি করার মত অবান্তর নয়।যা বললাম,এটা শুধুমাত্র একটা বাস্তব উদাহরণ,এরকম আরও অনেক মেডিকেলে ছয় বছরে দেখে এসেছি।
লেখাটা দেখে অবাক হলাম। মৃত্যুময় ঈষৎ এর মতই বলছি এরকম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে এত দুর্বল লেখা মানুষকে বিভ্রান্ত করবে।
ভর্তি পরীক্ষার ১ ঘণ্টায় মানুষকে যাচাই করা যায় না, কথাটা যে ভুল তা না, কিন্তু সেক্ষেত্রে বিকল্প উন্নত কোনও ব্যবস্থা ছাড়া সেটা বাতিল করাটাও যুক্তিযুক্ত না। এস এস সি বা এইচ এস সি এর সময়েও ১২ বছরের পড়াশুনার মূল্যায়ন কয়েক ঘণ্টাতেই করা হয়। একটা পরীক্ষা কেউ কোনও কারনে খারাপ দিলে সে অনেক ভাল হওয়া সত্তেও মূল্যায়নের খাতায় নিচে পড়ে যায়। হাজার হাজার ছাত্র কোচিং করে, সাজেশন মুখস্ত করে, পাশের জনের খাতা দেখে, ভাল মার্কস পেয়ে যাচ্ছে। যে ৯৯ পাচ্ছে আর যে ৮১ পাচ্ছে দুজনের মূল্যায়ন সমান হচ্ছে। এক বোর্ড আর এক বোর্ডের চেয়ে এগিয়ে থাকার জন্য মার্কস বেশী দেয়ার অসুস্থ প্রতিযোগিতা করছে। এই যেখানে অবস্থা সেখানে হটাত করেই কোন কিছু ঠিক করার ব্যবস্থা না নিয়ে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা বাদ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়াটা অপরিণত এবং ভুল সিদ্ধান্ত।
এইচ এস সি এর পড়ে সমস্ত ভর্তি পরীক্ষাগুলোর জন্যই ছাত্রছাত্রী দের সাধনা করতে হয়, শ্রম দিতে হয়। অনেকে পরিশ্রম করে আগের ঘাটতি কাটিয়ে উঠে। সেক্ষেত্রে ভাগ্যের যোগসাজশ টা কোথায় ? সেভাবে বলতে গেলে এস এস সি এইচ এস সি এর যে পরীক্ষা পদ্ধতি সেক্ষেত্রেও ভালরা খারাপ খারাপরা ভাল করতে পারে, যে কোনও পরীক্ষাতেই পারে, কিন্তু তাই বলে আগের পরীক্ষার উপর নির্ভর করে পরবর্তী পরীক্ষার মান নির্ধারণ হবে, এটা কেমন যুক্তি। আমি যদি মেডিকেলে ৫ম বর্ষে উঠে বলি আমি প্রথম দুইটা প্রফেই স্ট্যান্ড করেছি তাই আমার ফাইনাল প্রফ নেয়ার দরকার নেই, ডাক্তার বানিয়ে দাও, তাহলে কেমন শোনাবে? অথবা এখন যদি বলি আমি ৩ টা প্রফেই ভাল মার্কস পেয়েছি তাই এফসিপিএস পার্ট ১ এ পাস করিয়ে দাও, বই তো সব একই পড়তে হয়, সমস্যা কি , কেমন শোনাবে?
আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার যে অবস্থা তাতে শিক্ষার্থী দের ধারাবাহিক মূল্যায়ন হয় না কোনভাবেই, সেটা সব ক্ষেত্রেই। ঠিক করতে চাইলে ঠিক করতে হবে একেবারে গোঁড়া থেকে, হটাত করে মাঝ পথ থেকে কেন?
যে কোচিং ব্যবসা বন্ধ করার জন্য সরকারের এত উদ্বেগ সেই কোচিং ব্যবসার সবচেয়ে বড় শিকার তো বাচ্চারা, এখনকার বাচ্চারা স্কুলে ভর্তি হওয়ার আগে কোচিং এ ভর্তি হয় । মেডিকেল কোচিং আলাদা ভাবে কেন এত জরুরী হয়ে পড়ল? এরা দুর্নীতি বেশী করছে,তাই ? এইসব কোচিং এর মালিকেরা কি এতই ক্ষমতাধারী যে এদের কিছুই করা যাচ্ছিল না?
প্রশ্ন পত্র ফাস ? এস এস সি এইচ এস সি প্রশ্ন পত্র ফাস হবে না তার নিশ্চয়তা কি? তখন কি সেগুলোও বাতিল করে দিবে? তবুও যারা ফাস করে তাদের ধরবে না। এতই ক্ষমতাবান তারা?
যে দেশে পড়াশুনার মানদণ্ড হল কে কত গুলো স্যারের কাছে পড়ল, সাজেশন দেয়া নেয়ার মত ব্যপারগুলো , প্রশ্নপত্র ফাস করার মত ব্যপারগুলো তে যেখানে বাবা মা রা সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন, সেখানে হটাত করে অন্য সমস্যা গুলোর সমাধান না করে শুধুমাত্র এই পরীক্ষা বাতিল করলেই কি সব সমাধান হবে? হাতে ব্যথা, এত ঝামেলার দরকার কি, হাত টা কেটেই ফেলি, এই ধরনের ভাবনা চিন্তা করলে শিক্ষা ব্যবস্থা এতদিন যা একটু ছিল এখন তাও ধ্বংস হয়ে যাবে ।
লেখার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। আপনার যুক্তিগুলো কেমন যেন এলোমেলো মনে হলো। মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষা হবে না, আমার জানা ছিল না। নতুন কী পদ্ধতি তে হচ্ছে সেটাও আপনার লেখা থেকে পুরোপুরি বুঝতে পারলাম না। সিজিপিএ মেডিকেলের জন্য একটা রিকয়ার্মেন্ট হতে পারে, কিন্তু মানদন্ডটা হয়ত সাবজেক্টভিত্তিক করা সম্ভব। আলাদা করা ভর্তি পরীক্ষা না দিয়ে এইচ এস সির কয়েকটা সাবজেক্টের প্রাপ্ত নম্বর দিয়েই যাচাই করা হোক।
-রু
এই ব্যাপারে এখনও ডিটেইলস কোন স্বীদ্ধান্ত হয় নাই। তবে মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষা যে হবে না, এটা শিওর। আর আশা করছি, এস এস সি এবং এইচ এস সির কয়েকটা সাবজেক্টের প্রাপ্ত নম্বর দিয়েই যাচাই করা হবে, যদিও শিওর না।
স্বীদ্ধান্ত > সিদ্ধান্ত
--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি
পাব্লিক পরীক্ষার ছাঁকনিতে 'স্বীদ্ধান্ত' আটকা পড়ে নাই।
_____________________
Give Her Freedom!
এবং ভর্তি পরীক্ষার ছাঁকনিতেও না। তাই পরিবর্তন দুটাতেই দরকার। দুই জায়গায় পরিবর্তন আনার থেকে এক জায়গায় পরিবর্তন আনা মনে হয় অনেক সহজ।
ধন্যবাদ হিমু ভাই, বানানগুলো ঠিক করে দেবার জন্য।
প্রথম যে প্রশ্নটি মাথায় এলো - এই সিদ্ধান্তটি কেন এইচএসসি পরীক্ষার আগে জানানো হলো না?
এবার সিদ্ধান্ত নিয়ে আমার মতামতটা বলি- আমি খুব খুশি হতাম যদি এইচএসসির ফলাফলের উপর ভিত্তি করেই ভর্তির জন্য মেধাবিদের ঠিকমত বাছাই করা যেতো। কিন্তু দুঃখের সঙ্গে বলতে হচ্ছে - এইচএসসি পরীক্ষার যে ট্রেন্ড বাংলাদেশে বর্তমানে চালু আছে সেটা সর্বোচ্চ যোগ্যদেরকে স্ক্রীণ করার জন্য যথোপযুক্ত না। হয়তো কারা কারা ৮০% নম্বর বেশি পাবে সেটা এই গ্রেডিং পদ্ধতিতে বাছাই করা সম্ভব, কিন্তু সব মেডিকেলে যেখানে ভর্তি হবার সুযোগ পাবে মাত্র ২৩০০ জন, সেখানে এইচএসসির ফলাফল দেখে ভর্তি করাটা লটারিরই নামান্তর। আমাকে যদি ১০০ জনের মধ্যে থেকে ৫০ জনকে বাছাই করতে বলেন, তাহলে আমি এরকম ক্রুড পদ্ধতি বেছে নেবো। কিন্তু যদি বলেন সেরা ৩ জন বেছে নিতে, আমি এই ক্রুড পদ্ধতির উপর আরো সূক্ষ্ম কিছু বাছাই চালাবো। সেটার একটা ছিলো ভর্তি পরীক্ষা। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এই সূক্ষ্মতা কতোটা জরুরী সেটা এইচএসসি আর ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নের গুণগত মান দেখলেই বোঝা যাবে। এইচএসসির মত পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র তৈরির একটা নিয়ামক হচ্ছে - কোনো বিষয়ের জ্ঞানের বিভিন্ন স্তরে শীক্ষার্থীর দখল কেমন সেটা যাচাইয়ের জন্য বিভিন্ন স্তরের (সহজ, মধ্যম, কঠিন) প্রশ্ন করা। কিন্তু যখন ভর্তিচ্ছুর সংখ্যা কয়েক লাখ আর সিটের সংখ্যা কয়েক শো, তখন কি এই প্রশ্নের মাধ্যমে সেই কয়েক শো'কে আলাদা করা সম্ভব?
আর এই সিদ্ধান্ত যদি কোচিং সেন্টার বন্ধ করার জন্য নেয়া হয় তাহলে আর কী বলবো!। মাথা ব্যথার জন্য মাথা কেটে ফেলার মত ব্যাপারটা।
সীদ্ধান্তটা অবশ্যই আরও অনেক আগে জানানো উচিত ছিল। কিন্তু বুঝতেইছেন তো বাংলাদেশ!!!! তারপরও ভাল যে, তারা কিছু একটা পরিবর্তন আনবার চেষ্টা করছে।
সব পরিবর্তনই কি ভালো?
যথাযথ জিজ্ঞাস্য।
যেমন একটি ছেলে ( এসেসসি+এইচেসসি মিলিয়ে গ্রেড ৯ প্রাপ্ত) বিগত ২-৩ মাস ধরে দিনরাত পরিশ্রম করে মেডিকেল ভর্তিপরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছে। আর কোন বিষয়ের(প্রকৌশল বা অন্য) জন্য প্রস্তুতি নেয় নি। তার এখন কী হবে? সে তো গ্রেড ১০ প্রাপ্তদের ভারে অতলে হারায় যাবে! তার অনিশ্চিত এবং ধ্বংসোন্মূখ জীবনের দায়িত্ব কে নিবে? আপনি নিবেন? কীভাবে এতদিন পরে এটা পরিবর্তন করা হলো? কেন ২০১০ এসেসসি ব্যাচকে আগে জানালো হলো না?
_____________________
Give Her Freedom!
আইএসএসবি বাদ দিয়ে সামরিক বাহিনীতেও শুধুমাত্র এইচএসসির ফলাফলের উপর ভিত্তি করে সামরিক অফিসার নেয়া কি সম্ভব? যদি সেটা সম্ভব হয় তাহলে ডাক্তারির ক্ষেত্রেও সম্ভব হবে।
--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি
সামরিক বাহিনীর রিকায়রমেন্ট পুরায় আলাদা। ওদের যতটা মেধার দরকার ততটাই দরকার শারিরীক ফিটনেসের।
আর ডাক্তারির ক্ষেত্রে দরকার শুধু মেধার। আর আমার পারসপেক্টে পাবলিক পরীক্ষায় এনাফ, সেই মেধার যাচাইয়ের জন্য। আর ভর্তি পরীক্ষাটা অনেকের জন্য একটা টর্চারের মতই হয়ে যায়।
ডাক্তারি পেশাতেও মেধার পাশাপাশি শারীরিক ফিটনেসের প্রয়োজন আছে, কম বা বেশি। আপনি তো জানেন যে ডাক্তারি কিংবা প্রকৌশল যারা পড়েন তাদেরও শারীরিক পরীক্ষা নেয়া হয়। যদি শারীরিক সক্ষমতা না থাকে তাহলেও কিন্তু মেধাতালিকায় থাকা সত্ত্বেও অযোগ্য ঘোষিত হতে পারেন কেউ। কথা সেটা না, কথা হচ্ছে আপনার ভাষাতেই পেশাভিত্তিক 'রিকয়ারমেন্ট'। আমি কি আইএসএসবির রিকয়ারমেন্ট ডাক্তারিতে লাগাবো? লাগাবো না। কারণ, পেশা যখন আলাদা তখন তার ভর্তির রিকয়ারমেন্টো আলাদা। বর্তমান এইচএসসি পরীক্ষা পেশাভিত্তিক রিকয়ারমেন্ট না, আপনিই বলেছেন, এটা পাবলিক। এই পরীক্ষা কি মেডিক্যালের সব রিকয়ারমেন্ট পূরণ করে? সেটা কি প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সব রিকয়ারমেন্ট পূরণ করে? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব রিকয়ারমেন্ট? আমি জাহাঙ্গীরনগরের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ভর্তি পরীক্ষা দিয়েছিলাম। সেখানে প্রশ্ন করা হয়েছিলো বসনিয়াতে ন্যাটোর ভূমিকা সম্পর্কে লিখতে। যারা প্রশ্ন করেছেন তারা এইচএসসির বিষয়গুলির চেয়ে তাদের বিষয়টাকে কেন প্রাধান্য দিলেন?
ডাক্তার হওয়ার জন্য একজন ছাত্রকে কয়েকশো পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হয়। তার অনেকগুলিই প্রচণ্ড শারীরিক আর মানসিক চাপ ফেলে। মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় সেই চাপের এক দশমাংশও পড়ে না। যেসব ছাত্র ভর্তি পরীক্ষার "টর্চার" মোকাবেলা করতে পারবে না, তারা চিকিৎসাবিজ্ঞান না পড়ে অন্য কিছু পড়ুক।
কেবল আলোচনার সুবিধার্থে একটা তথ্য উল্লেখ করি হিমুভাই-
উত্তর আমেরিকায় (কানাডা আর যুক্তরাষ্ট্র) মেডিকেল কলেজ ভর্তি পরীক্ষা (এমক্যাট) হয় প্রায় সাড়ে চার ঘন্টা ব্যাপি। এবং এই পরীক্ষা দিতে পারাটাও তাদের কাছে যোগ্যতার একটা মাপকাঠি।
_____________________
Give Her Freedom!
উত্তর আম্রিকাতে যত দূর জানি, আন্ডারগ্রাডে মেডিকেল পড়ে না। লাইফ সাইন্স টাইপের বিষয়ে বিএসসি করার পরে মেডিকেল পড়ে।
---------------------
আমার ফ্লিকার
জ্বি সাধারনতঃ তাই করে। তবে চাইলে এসব বিষয়ের বাইরে থেকেও কেউ পরীক্ষা দিতে পারে। তবে তাদের অবশ্যই আন্ডারগ্র্যাড ডিগ্রি (যেকোন বিষয় থেকে) থাকতে হবে। সেদিক থেকে দেখতে গেলে তাদের ভর্তি পরীক্ষা আসলে ২টা। কারন আন্ডারগ্র্যাড লেভেলে ভর্তি হতে চাইলেও তাদের কে একটা ভর্তি প্রক্রিয়ার (স্যাট) মধ্যে দিয়ে যেতে হয়।
তবে আমার কাছে মনে হয় না, কোন স্তরে, বা কয়টা ভর্তি পরীক্ষা দিচ্ছে সেটা এখানে একটা ইস্যু। যে কারনে তথ্যটা শেয়ার করেছিলাম, সেটা হলো কিছু কিছু ক্ষেত্রে সহজ উপায় বলে কিছু থাকা উচিত না। আর সেই কারনেই সেসব ক্ষেত্রে যাচাই-বাছাইটাও যতটা সম্ভব সূক্ষ্ণ হওয়া দরকার।
একমত আপনার সাথে।
একটা মাত্র পরীক্ষা হলে মাত্র একটা সুযোগ হচ্ছে। একদিনের এমসিকিউ যেকারো ভালো খারাপ হতে পারে। বিসিএস-এ লিখিত পরীক্ষা যেমন অনেক গুলা বিষয়ের উপরে হয় ঠিক তেমনি এইসব ভর্তি প্রক্রিয়া কয়েকটা স্তরে হওয়া উচিত।
---------------------
আমার ফ্লিকার
আমি জানি না আপনি মেডিকেলে প্রেন কিনা। তবে ডাক্তারি পড়তে শুধু মেধা দরকার এই কথাটা একজন ডাক্তার হিসাবে একেবারেই মানতে পারলাম না। একজন মেডিকেল স্টুডেন্ট কে কতগুলা পরীক্ষা দিতে হয় জানেন??? ফাইনাল ইয়ারের ভাইভার সময় কতজন ছাত্র-ছাত্রী মানসিক এবং শারীরিক সমস্যায় ভোগে জানেন?? সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত টানা পরীক্ষা দেবার কষ্ট কতটা সেটা মেডিকেলের একজন ছাত্রকে জিজ্ঞেস করে দেখবেন। মেধার যাচাই এর কথা বলছিলেন। আমি আমার আগের কমেন্টসে বলেছিলাম যে এখন বোর্ড গুলো ইচ্ছা করে নাম্বার বেশী দেবার প্রতিযোগীতায় মেতেছে। এখানে আপনি মেধা কোথায় পেলেন??? কোন ছাত্র মেডিকেলে পড়বে কিনা সেটা সে অনেক আগে থেকেই ঠিক করে রাখে। এখানে ভর্তি পরীক্ষা টর্চার হবে কেন??? সামান্য ভর্তি পরীক্ষা যদি কারো কাছে টর্চার মনে হয় তাহলে তার মেডিকেলে আসাই উচিত না। প্রফের পরীক্ষা তো তাহলে তার কাছে হাবিয়া দো্যখ। আর ডাবল এ প্লাস ছাত্র-ছাত্রী যখন ক্লাসে জিজ্ঞেস করলে কোষের গঠন বলতে পারেনা তখন ঠিকই বুঝে যায় মেধা কোথা থেকে আসে। সারা বছর প্রাইভেট টিচারদের বাসায় দৌড়ে বেরানো এ প্লাস পাওয়াকে আর যাই হোক মেধাবী বলা যায় না।
আলোকিত-মন
জিপিএ'র ভিত্তিতে সংক্ষিপ্ত তালিকা করে (ধরা যাক ৫ হাজার) তাদের মধ্যে এই ১০০ নাম্বারের পরীক্ষা নেয়া হোক।
আমি বরাবরই সময়-সংবেদনশীল (টাইম সেন্সিটিভ) পরীক্ষার পক্ষপাতি (কারণ আমি এটা ভাল পারি )
হুম সেটাও একটা ভালো সল্যিউশন হতে পরে।
তবে অন্যভাবেও সলভ করা যায়, অনেকের রেজাল্ট একই হলে স্পেসিফিক বিষয় এর উপর গুরুত্ব দিতে হবে। প্রাওরিটি বেসিসে বায়োলোজি, কেমিস্ট্রি, ইংলিশ এর গ্রেড দিয়ে ক্রমানুসারে একটা মেধাতালিকা করতে পারে। এরপরও যদি না হয় প্রতিটা বিষয়ের মার্ক বোর্ড থেকে চাওয়া যেতে পারে।
৮০ তে জিপিএ ৫.০ রাখলে তো মনে হয় শুধুমাত্র সায়েন্সের বিষয় এর উপর ভিত্তি করে তালিকা করলেও জিপিএ ৫ পাওয়ার সংখ্যা (সিট সংখ্যার চাইতে) অনেক বেশি হবে। তখন কিসের ভিত্তিতে বাছাই করা হবে?
ভর্তি পরীক্ষা যদি বাদ দিতেই হয়, তবে সেটা এখন থেকে নয়, আরো বছর চারেক পর শুরু করা উচিত; এখন যেসব ছাত্র-ছাত্রীরা নবম শ্রেনীতে পরে তাদের মাইন্ড সেট ততদিনে ভর্তি পরীক্ষা না দিয়ে শুধুমাত্র পাবলিক পরীক্ষার জিপিএ দিয়ে ভর্তির উপযোগী হয়ে উঠবে; সেক্ষেত্রে যেসব ইস্যুতে নজর দেয়া যেতে পারে তা হল:
১. পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের মানের উন্নতি, ঢালাও নাম্বার দিয়ে এ+ বাড়ানোর প্রবণতা রোধ এবং সর্বপরি একই প্রশ্নপত্রে সমগ্র বাংলাদেশে পরীক্ষা নেয়া; একই প্রশ্নে পরীক্ষা হলে বোর্ডভিত্তিক বঞ্চনা কমবে, অতীতে ৯৫০ পেয়ে ঢাকা বোর্ডে এবং ৯২০ পেয়ে চট্রগ্রাম বোর্ডে প্রথম হতে আমরা দেখেছি, উত্তরপত্র মূল্যায়নের গোলকধাঁধাটা এখানে স্পষ্ট
২. ব্লগ লেখকের রিলেটিভ গ্রেডিং এর ব্যাপারটা সত্যিই ভেবে দেখার মত, রিলেটিভ গ্রেডিং প্রনয়ন সম্ভব হলে নাম্বার ওয়ান এবং নাম্বার ৬০,০০০ তম এর মধ্য ব্যবধান স্পষ্ট হবে; গ্রেডিং এর পাশাপাশি রেটিং করা যেতে পারে ১০০ এর স্কেলে, পুরো ব্যাপারটা নিয়েই অধিকতর রিসার্চের প্রয়োজন আছে বলে মনে করি, দশজন প্রভাবশালী বাস্তবতা বিচার না করে, পাবলিক অপিনিয়ন না দিয়ে, যথাযথ স্টাডি না করে কল্পনাপ্রসূত একটা সিদ্ধান্ত ঘাড়ে চাপিয়ে দিল আর সেটা সবাই মেনে নিবে, এটা অগ্রহনযোগ্য এবং নামকাওয়াস্তে গণতান্ত্রিক দেশ হলেও সেটা অসহনীয়
৩. কোচিং ব্যবসা যদি বাদ দিতেই হয়, তাহলে এইচএসসি পরীক্ষার পরপরই বিজ্ঞান, চিকিত্সা, কৃষি, প্রকৌশল, বানিজ্য, কলা, সমাজবিজ্ঞান, বিভাগ পরিবর্তন, ব্যবসায় প্রশাসন-এইরকম ৮ ক্যাটাগরিতে ঐচ্ছিক পরীক্ষা নেয়া যেতে পারে (একজন সর্বোচ্চ তিন ক্যাটাগরিতে পরীক্ষা দিতে পারবে) এবং এই পরীক্ষাকে ১০০ এর স্কেলে রেটিং করে এইচএসসি পরীক্ষার ৫ এর স্কেলে জিপিএ ভিত্তিক ফলাফলের সাথে পাবলিশ করা যেতে পারে; অত:পর রিলেটিভ গ্রেডিং সিস্টেমের জিপিএ এবং বিশেষায়িত পরীক্ষার রেটিং এই দুয়ের উপর ভিত্তি করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারে, এতে সময়, অর্থ সবকিছুরই সাশ্রয় হবে এমনকি সমস্ত ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আগস্টে ক্লাস নেয়া শুরু করতে পারবে যেটা উন্নত বিশ্বের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং মসৃন একাডেমিক ক্যালেন্ডার পরিচালনার উপযোগী
হুম ভাই, আপনার সঙ্গে পুরোপুরি একমত। আরও কিছুদিন সময় নিয়ে, পরিকল্পনা করে সিদ্ধান্ত নিলে ভাল হত। আর প্রথমেই মেডিকেলের মত একটা সেন্সিটিভ জায়গায় এই এক্সপেরিমেন্ট না করে, নন-টেকনিক্যাল কোন বিশ্ববিদ্যলয় দিয়ে শুরু করা উচিত ছিল। এরপর এর ভালো মন্দ দিকগুলো যাচাই বাছাই করে, হয়ত সব বিশ্ববিদ্যলয়ের জন্য শুরু করা যেত।
রিলেটিভ গ্রেডিং চালু করতে হইলে স্টার স্ট্যান্ড কি দোষ করছিল??ঐটা তো ভালই আছিল।
ভাই, সময় নিয়ে কথা বইলা লাভ নাই। এরপর মেট্রিকের আর ইন্টারের টাইম ধইরা দড়ি টানাটানি হইবো। ঐ ১০০টা প্রশ্ন আমার বাপেরা দিছে, আমিও দিছি আমার পোলা-ও সিস্টেমে ১ ঘণ্টার পরীক্ষা থাকলে দিবো। কোমলমতি কোমলমতি কইরা ভুভুজেলা বাজানোর মানে দেখিনা। যার পড়ার সে ১৫ ঘণ্টা পড়বে চান্সও পাইবো, যার মাছি তাড়ানোর দরকার সে পরীক্ষার হলেত মাছি তাড়াইয়া ঘরে যাইবো। পৃথিবীর সব দেশেই ভালো বিষয়ে পড়াশোনা এত সহজ আর সস্তা না।
কিছু মনে কইরেন না, শিক্ষা সবার জন্য না। সুযোগ সবার জন্য, কিন্তু শিক্ষা না। সবার ইচ্ছাও থাকে না, আর ইচ্ছা থাকলেও সব ইচ্ছা পূরণ হয় না। আমার সাইকেল মিস্ত্রি মামারে মেডিক্যালে পরীক্ষা দিবার সুযোগ দিয়া যাইতে পারে, তার ইচ্ছাও থাকতে পারে তয় ফল কি হইবো তা সাইকেল মেরামতির ধরনে টের পাওন যায়। তবু সে সুযোগ পাইতে পারে, আগের নিয়ম অনুযায়ী। আগের বছর বা এই বছর এইচ এস সি দিয়া থাকলে।
১০০ মার্কের পরীক্ষা কি, পারলে ঐ নুসায়ের স্যারে যে ৪ ঘণ্টার পরীক্ষার কথা বলছে, ঐ পরীক্ষা নেওয়া দরকার।
ওই ১০০ সবার জন্য সমান। বাংলা প্যানপ্যান না, হাতের লেখা না, কাটাকাটি না, পুরা মাথা আর লাক। আরো ভালো হইতো যদি 'এক কথায় উত্তর দাও' চালু করতো সবখানে সব ভর্তি পরীক্ষায়। শালার ওই লাকটাও নাই হইয়া যাইতো।
অলস সময়
---------------------
আমার ফ্লিকার
আপনার "আপেক্ষিক গ্রেডিং" এর তরিকা বিদেশে প্রচলিত, কিন্তু এতে কিছু সমস্যা আছে, এই পদ্ধতিতে সঠিক মূল্যায়ন শুধু ক্ষুদ্র পরিসরে (যেমন, বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন নির্দিষ্ট বিষয়ে, কোন নির্দিষ্ট শিক্ষকের তত্ত্বাবধানে এবং একটি নির্দিষ্ট সেমিস্টারে) সম্ভব, কিন্তু আমাদের দেশের বোর্ড পরীক্ষার মূল্যায়নের পদ্ধতি একদম আলাদা, হাজার পোলাপান পরীক্ষা দেয়, খাতা ভাগ হয়, সেইটা আবার বিভিন্ন জেলায় ডিস্ট্রিবিউট হয় -- ইত্যাদি, সবাই জানেন। একই বোর্ডের অধীনে কোন একটা সেন্টারে (ধরুন সেন্টার 'ক') তে দেখা গেল একটা বিষয়ে সর্বোচ্চ নাম্বার পাইছে ৭০, আবার আরেক সেন্টারে (ধরুন সেন্টার 'খ') ঐ একই বিষয়ে সর্বোচ্চ নাম্বার পাইছে ৮০ -- কিন্তু দেখা যাচ্ছে সেন্টার 'ক' তে সর্বোচ্চ নাম্বার পাওয়া সেই ছাত্র/ছাত্রীর ঐ বিষয়ের জ্ঞান সেন্টার 'খ' তে সর্বোচ্চ নাম্বার পাওয়া ছাত্র/ছাত্রীর থেকে বেশী, একটু কড়া পরীক্ষকের পাল্লায় পড়লে নাম্বার কমে যাইতেই পারে -- এই পদ্ধতিতে সবসময় নিরপেক্ষ মূল্যায়ন করা সমস্যা।
আমার মতে সবচেয়ে সহজ পদ্ধতি হইল, ভর্তি পরীক্ষা একদিন না নিয়ে ৩ দিন ধরে নেওয়া হোক (একই বিষয়ের উপর পরীক্ষা হবে কিন্তু দিন ভেদে প্রশ্নপত্রের ডিফিকাল্টি লেভেল ভিন্ন ভিন্ন হবে বা এই টাইপের কিছু) -- তারপর তার গড় করা হোক। যেহেতু মেডিকেলে কেন্দ্রীয় ভাবে পরীক্ষা হয়, এবং প্রচলিত ধারায় ১ দিনে হয়, আমার ধারণা সেইটা বাড়িয়ে ৩ দিন করতে খুব বেশী কঠিন হওয়ার কথা নয় -- যেমন ১ দিনের যায়গায় ৩ দিন পরীক্ষার জন্য যে অতিরিক্ত খরচ হবে, তা ভর্তি পরীক্ষার ফর্মের দামের উপর দিয়ে চালানো যাইতে পারে।
এইটা ঠিক যে বর্তমানে প্রচলিত ভর্তি পরীক্ষার পদ্ধতি অনেকটা "ওয়ান-ডে" ম্যাচের মত ব্যপার, এইটা কে "টেস্ট" ম্যাচের মত করা হোক -- তাইলেই তো ঝামেলা চুকে যায়। কিন্তু "পরীক্ষা উঠায় দেওয়া" সিদ্ধান্তটা সমর্থনযোগ্য নয়।
যতটুকু জানি এ এবং ও লেভেলের পরীক্ষায় ওরা এই রিলেটিভ গ্রেডিং সিস্টেমটাই অনুসরণ করে। ওখানেও কিন্তু অনেক পরীক্ষার্থী, আর খাতাও দেখে আলাদা আলাদা শিক্ষক। ওখানে যদি এই সিস্টেমটা স্বার্থক ভাবে কাজ করে, তবে আমাদের পাবলিক পরীক্ষায় নয় কেন??
আর আপনার ভর্তি পরীক্ষার আইডিয়াটার ব্যাপারে একমত। কিন্তু মনে হয় সেটা অনেক কঠিন হবে।
কঠিন হওয়ার কি আছে? ১ দিনের পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে পারলে ৩ দিনের করতে সমস্যা কি? পরীক্ষা উঠিয়ে দেয়ার চাইতে সেটা যুক্তিযুক্ত। আর ছেলেমেয়েদের জন্য কঠিন হবে এরকম কিছু যদি বলতে চান তাহলে বলি, মেডিকেলে ঢুকতে চাইলে এরকম কিছু পার হয়েই ঢুকা উচিৎ।মেডিকেলে পড়া এবং ডাক্তারি করা এ দুটা কাজের জন্যই প্রচুর মানসিক চাপ কাটিয়ে উঠার মত যোগ্যতা দরকার হয়। তাই আগে থেকে এরকম মানুষ বেছে নেয়াটাই যুক্তিযুক্ত। সব সময় সব কাজ সহজ হবে এরকম ভাবার কি মানে? আমাদের শিক্ষা মন্ত্রণালয় , স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সবাই যদি এত কঠিন কাজ করতে ভয় পায় তাহলে ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে ঘরে বসে মাছি মারুক, কে না করছে?
@রিজুঃ মানলাম, ইংরাজী মাধ্যমে আপেক্ষিক গ্রেডিং প্রচলিত, কিন্তু আমার জানা মতে ইংরাজী মাধ্যমের পড়ালেখার ধরণ ঠিক বাংলা মাধ্যমের মত নয়, সেখানে প্রশ্নের ধরনও আলাদা, পরীক্ষার খাতার মার্কিং-এর সময় শিক্ষকের ব্যক্তিগত বিবেচনাবোধ, ছাত্রের "লেখার ধরণের" প্রতি বায়াস ইত্যাদি তেমন প্রভাব ফেলে না -- পরীক্ষার অধিকাংশ প্রশ্ন "টু দ্য পয়েন্ট" টাইপের হয়।
বাংলা মাধ্যমের পরীক্ষায় আমার মতে গণিত, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন ইত্যাদি বিষয়ে রিলেটিভ গ্রেডিং কাজে দিলেও দিতে পারে, কিন্তু বাংলা/ইংরাজী সাহিত্য ইত্যাদি বিষয়ে নিরপেক্ষ মূল্যায়ন করা খুবই কঠিন ব্যপার -- আর জিপিএ ভিত্তিক ভর্তি পদ্ধতি চালু হলে এমনকি বাংলা সাহিত্যেও একজন ছাত্র/ছাত্রীকে এ+ পাইতে হবে, যে বিষয়ের দক্ষতা মেডিক্যাল সায়েন্সের জন্য মোটেও জরূরী নয়।
-- রামগরুড়
পরীক্ষা এক ঘন্টার হোক অথবা তিন ঘন্টার অখবা একেবারেই না হোক, এই ধরনের একটা সিদ্ধান্ত উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার অন্তত এক বছর আগে জানানো উচিত নয় কি? মন্ত্রীরা গাধা গর্ধভ দিয়ে পরিবেষ্টিত থাকলে এরকমই হয়|
যোগ
১। বিজ্ঞান শিক্ষার্থীদের এসএসসিতে ৪ আর এইচএসসিতে ৮ এই ১২ সাবজেক্টে ১২*২৫=৩০০ মার্কসের ব্যাবহারিক পরীক্ষা দিতে হয়। ৩০০ মার্কস কিন্তু অনেক বড় একটা ব্যাপার-বিশেষ করে ছাত্র ভর্তির ক্ষেত্রে যেখানে ১ নাম্বারের জন্যও পজিশন বদলে যাবে। এই ৩০০ মার্কস নিয়ে আমাদের দেশে যা হয় তা ফাজলামি ছাড়া আর কিছু না। প্রকাশ্যে খাতা দেখে নকল করতে দেয়া প্র্যাক্টিকাল পরীক্ষার রেওয়াজ। ভাইবা না পারলেও সমস্যা নেই, স্কুল থেকে চাঁদা তুলে আগেই এক্সটারনালকে ম্যানেজ করে রাখা হয়েছে।লবণ মিলাতে পারছেন না? পারবেন কিভাবে, ১০ বছর আগে যে লবণ কেনা হয়েছিল সেটা দিয়ে এখনো কাজ চলছে। অবশ্য 'মামার' পকেটে ২০০ টাকা গুঁজে দিলে উনি লবণের নাম বলে দিবেন,তেলাপোকার পরিপাকতন্ত্র বের করে দিবেন,ফিজিক্স পরীক্ষার সার্কিট মিলিয়ে দিবেন। ঢাকা শহরের কলেজগুলোতে তাও ভাঙ্গাচুরা যন্ত্রপাতি নিয়ে কোনমতে ব্যাবহারিক হয়, গ্রামের দিকের কলেজগুলোতে এগুলোর বালাই নেই। টাকা দিতে পারলে ২৫ এ ২৫ না পারলে ১২। আর রাইভাল কলেজের ঘাড়-ত্যাড়া এক্সটারনাল আসলে তো ১০ নম্বর বিপদ সংকেত।
২।বোর্ড পরীক্ষার খাতা 'উদারভাবে' দেখার 'কঠোর' নির্দেশ থাকে শিক্ষকদের উপরে। এর সুবিধা ভোগ করে মাঝারি মানের ছাত্ররা, বাঁশ খায় ভালো ছাত্ররা। যদি নম্বর যোগ করে দেখা যায় এক ছাত্র ৮০ পেয়েছে আর একজন ৭৭,৭৮ বা ৭৯ তাহলে ২য় জনের মার্কস বাড়িয়ে ৮০ করে দেয়া হয়।কারণ ৭৭,৭৮,৭৯ পাওয়া খাতা বোর্ডে গেলে তা আবার পরীক্ষকের কাছে ফেরত আসে অথবা নিরীক্ষক দিয়ে খাতাগুলোর মার্কস ৮০ করে দেয়া হয়। নতুন সিস্টেমে ভর্তির ক্ষেত্রে ২ জন একই মানের মেধাবী বলে বিবেচিত হবে যা হওয়া উচিৎ নয়।
৩।বোর্ড পরীক্ষার প্রশ্ন পদ্ধতি অত্যন্ত বাজে। কতগুলো কমন প্রশ্নই ঘুরেফিরে আসে। আগের বছরের প্রশ্ন এই বছর আসে না। এই সিস্টেমের সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে ১০০% উত্তর করার জন্য পুরো সিলেবাস পড়া লাগে না। সাজেশন ভিত্তিক ২৫% সিলেবাস কমপ্লিট করে ১০০% উত্তর করা সম্ভব এবং ৯৯% মার্কস তোলা সম্ভব। ৬০,০০০ A+ এর মধ্যে ৫০,০০০ ই এই ক্যাটাগরির। এই ফাঁকিঝুকি দিয়ে A+ পাওয়া পাবলিকেরা ভর্তি পরীক্ষায় গিয়ে ধরা খায়। প্রশ্ন আসে সারা বইয়ের চিপা-চাপা থেকে এবং কোন alternative থাকে না যেখানে বোর্ড পরীক্ষায় প্রতিটি প্রশ্নের alternative থাকে।তাই, সব টপিক পড়া না থাকলে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া সম্ভব না।
৪।ধরুন ঢাকা বোর্ডে ১ম হওয়া শিক্ষার্থী কুমিল্লা বোর্ডে ১ম যে হয়েছে তার চেয়ে ২০ নাম্বার বেশি পেল।কিন্তু এ থেকে আপনি বলতে পারেন না যে ২য় জন কম মেধাবী। কারণ তারা ভিন্ন প্রশ্নে পরীক্ষা দিয়েছে। ভিন্ন ভিন্ন শিক্ষক খাতা মূল্যায়ন করেছেন।এটা খুব বড় একটা ব্যাপার। সাধারণভাবে ছাত্রদের মেধা অনুযায়ী কয়েকটি ভাগে ফেলতে বোর্ড পরীক্ষা ঠিক আছে কিন্তু শুধু এর ভিত্তিতে ভর্তি করা উচিৎ নয়।
৫। নতুন সিস্টেমে সবচেয়ে বড় ফ্যাক্টর হতে যাচ্ছে বাংলা এবং সেহেতু সুন্দর হাতের লেখা।ঢাকা শহরের প্রেক্ষাপটে বলতে পারি সবচেয়ে বেশি A+ মিস যায় বাংলায়। নটরডেম থেকে ২০১০ এ এইচএসসি দিয়েছি। আমাদের ক্লাসের টানা ৯০ জন বাংলায় A+ পায় নি।বিষয়টা বোর্ডে গিয়ে খতিয়ে দেখার পর জানা গেল- 'তোমাদের লাক খারাপ। যে টিচারের কাছে খাতা গিয়েছিল উনি কাউকে A+ দেন নি'। বাংলা একটি রচনামূলক বিষয়। একই খাতা ফটোকপি করে ২০ জন শিক্ষকের কাছে দিলে ২০ রকম মার্কস আসবে। কোন বাংলা শিক্ষক হয়ত ভালো খাতা পেলে ৮৮-৯০ দিয়ে দেন আবার প্রাচীনপন্থী কোন শিক্ষক আগের অভ্যাসবশত ৮০ ই দিতে চান না। ৪র্থ বিষয় বাদ দিয়ে যেহেতু হিসেব করা হবে প্রথম ধাক্কায় বাংলায় ৮০ তুলতে না পারা পাপীরা বাদ যাবে তারা জীববিজ্ঞান আর রসায়নে যতই ভালো করে থাকুক না কেন।
সবশেষে বলতে চাই - আইন করে কোচিং বন্ধ করে দেয়া হোক। প্রশ্ন ফাঁস চাইলেই বন্ধ করা যায়। প্রশ্ন ফাঁস না করেই যদি বছরের পর বছর বুয়েটের ভর্তি পরীক্ষা নেয়া যায় তবে মেডিকেলে কেন তা সম্ভব নয়? ১০০ নাম্বারে সমস্যা থাকলে ৬০০ নাম্বারে পরীক্ষা নেয়া হোক।
এত হিসাবের কি দরকার বুঝলাম না। এসএসসি, এইচএসসি পরীক্ষার সময় কি বলা হইছে যে সেটায় প্রাপ্ত 'নম্বর'এর ভিত্তিতে ভর্তি করা হবে? বলা হয় নাই। সেটায় গ্রেড পাওয়াই মূখ্য ব্যাপার ছিলো, নম্বর না। ভর্তির জন্য ভর্তি পরীক্ষা নেয়া হয়, এটাই চিরাচরিত নিয়ম। এই নিয়ম পালটানো কোনো সমস্যা না; কিন্তু নিয়ম পালটিয়ে যদি এমন কিছুকে পুরো সিদ্ধান্তের নিয়ামক বানানো হয়, যার ওপর পরীক্ষার্থীর আর কোনো হাত নেই, তখন সেটা গ্রহণযোগ্য হয় না।
এই সিস্টেমে ভর্তি ভালো কি খারাপ, সেই আলোচনা পর্যন্ত যাওয়ারই দরকার নাই। এই পদ্ধতি ভালো হলে সামনের বার থেকে ইমপ্লিমেন্ট করুক, যখন ছাত্ররা আগে থেকেই বুঝবে তাদের টার্গেট কি।
শিক্ষাকে বাণিজ্য বানাতে বানাতে এখন পুরা হাঁড়মাংশশুদ্ধা খাওয়ার ব্যবস্থা করেছে। এসএসসি, এইচএসসিতে যেভাবে মেধা মূল্যায়ন করা হয়, শিক্ষাব্যবস্থাকে ধবংস করার জন্য এটাই যথেষ্ট। সেকেন্ড ডিভিশন পাওয়ার মতো পড়াশুনা করা স্টুডেন্টের গ্রেড ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে তাকে প্রাইভেটে ডাক্তারি, ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার টাকা ঢালতে বাধ্য করা হয়। যে সিস্টেমের সর্বোচ্চ গ্রেড পাওয়াদের জন্যই উচ্চ শিক্ষার জন্য পর্যাপ্ত পাবলিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নাই, সে সিস্টেম আলটিমেটলি দেশের জন্য সুফল বয়ে আনে না।
তবে এই সিস্টেম টিকে থাকবে, কারণ, এই পোস্টের লেখকের মতো ঘটনার গভীরে না গিয়ে,
এভাবে শর্টকাট মারা লোকজনই এই সিস্টেম প্রোডিউস করবে, এরাই এই সিস্টেমের পক্ষে গলাবাজি করবে। কোনো না কোনো স্টেজে কেউ ফেল মারলেই এই সিস্টেম তাকে আর ফাইট ব্যাক করার সুযোগ দিবে না। ক্লাস থ্রিতে একবার ফেল করা কেউ ডাক্তারি পড়বে, এই সিস্টেম সেটা মানবে না। একবার জিপিএ ৫ না পেলেই উচ্চশিক্ষা থেকে আউট। আর জিপিএ ৫ পেলে টাকার খেলা শুরু। ঘুষ দাও, অ্যাডমিশন নাও।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
কোচিংয়ে সমস্যা কি?
কোচিংওয়ালা টাকা নেয়, সাথে শিক্ষা দেয়। এই শিক্ষা তাদের এইচএসসিতে সাজেশনভিত্তিক পড়াশুনার কারণে পড়া গ্যাপকে কাভার করে। কোচিং বাধ্যতামূলক না, ঐচ্ছিক। কোচিংয়ের কারণে একটা বিরাট সংখ্যক ইউনিভার্সিটি ছাত্রের পড়ালেখার খরচ যোগাড় হয়।
অন্যদিকে স্কুল-কলেজের শিক্ষকরা বাধ্যতামূলকভাবে প্রাইভেট পড়ায়। তাদেরকে টাকা না দিলে প্র্যাকটিক্যালের নম্বরে বাঁশ দেয়। সরকার সে বিষয়ে কি করে? ঘোড়ার আন্ডা করে।
পুরোটাই দুর্নীতি আর শিক্ষা বিজনেস।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
কোচিং নিয়ে আপত্তিটা আমিও ঠিক বুঝি না। স্কুল-কলেজে প্রাইভেট না পড়লে স্যাররা বদমাইশি করত বলে অনেকে কোচিংয়ে যেতে বাধ্য হত, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে তো এরকম কিছু ঘটছে না।
তাছাড়া ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নের ধরণটাও বিবেচনায় নিতে হবে। মেডিকেলের কথা জানি না, তবে বুয়েটের ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য বোর্ডের অনুমোদিত বইগুলো মোটেই মানসম্পন্ন না। বোর্ড পরীক্ষার মুখস্থভিত্তিক প্রশ্ন মোকাবেলা করার জন্য যেসব বই লেখা হয়েছে, সেগুলো পড়ে ভর্তি পরীক্ষার কনসেপচুয়াল প্রশ্নের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া মোটেই সহজ না। কোচিংয়ে ক্লাস করেই পঠিত বিষয়গুলোর ব্যবহারিক প্রয়োগ আর গাণিতিকভাবে চিন্তা করতে কিছুটা শিখেছি।
প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থা অকার্যকরী দেখেই ভয়েডটা পূর্ণ করার জন্য কোচিংগুলো গজিয়ে উঠেছে। কোচিংব্যবসা বন্ধ করতে চাইলে ধুম করে ভর্তি প্রক্রিয়া বদলে ফেললে হবে না। ধীরে ধীরে প্রশ্নের ধরণ ও সেই অনুযায়ী পাঠ্যবইগুলোও সংস্কার করতে হবে। আমার কাছে পাঠ্যবইয়ের সংস্কারটাই সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে হচ্ছে, বই ঠিক থাকলে যেকোন পরীক্ষা মোকাবেলা করা সম্ভব।
কোচিংয়ের চাহিদা কেন সৃষ্টি হচ্ছে, সেটা অনুসন্ধান না করে কোচিং ব্যবসা জীবনেও বন্ধ করা যাবে না।
একদম ঠিক।
আরেকটা জিনিস লক্ষ্য করেন, কোচিং কিন্তু শুধু ইউনি বা মেডিকেলে ভর্তি কোচিং না। এমনকি কিন্ডারগার্টেনেও ভর্তি কোচিং আছে। আর প্রত্যেক ক্লাসের প্রায় প্রত্যেক বিষয়ের জন্যই কোচিং সেন্টার আছে। সুতরাং শুধু মেডিকেল কেন, বাকি পাবলিক ইউনিভার্টিতেও ভর্তি পরীক্ষা উঠিয়ে দিলেও কোচিংওয়ালাদের ব্যবসায় বন্ধ হবে না।
বাংলাদেশে টপ-টু-বটম, বুয়েট-টু-নার্সারী শিক্ষা নিয়ে আকাম দেখতে দেখতে এতো বিরক্ত যে, এই নিয়ে কথা বলতেই আর ইচ্ছে করে না। শিক্ষা ব্যবস্থা যারা ধবংস করছে, এই অনিচ্ছা সৃষ্টিটা তাদের সফলতাই বলতে হবে।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
কোচিং এর চাহিদা কেন সৃষ্টি হচ্ছে, এই প্রশ্নের উত্তর সবারই জানা --
১. এখন পড়ালেখার উদ্দেশ্য "নাম্বার পাওয়া" -- "শেখা" আর উদ্দেশ্য না।
২. পড়ালেখায় ভাল করা (নাম্বার বেশী পাওয়ার সমার্থক) এখন জীবিকার (জীবন-মরণের) প্রশ্ন।
৩. যেহেতু এখানে জীবিকার ব্যাপার চলে আসে, সেহেতু বেশী নাম্বার পাওয়া এখন স্ট্যাটাসেরও ব্যাপার (সাথে সাথে পরিবারের মান-ইজ্জত, স্ট্যাটাস ইত্যাদিও চলে আসে)।
৪. যেহেতু দেশের অবস্থা গরীব (কর্মসংস্থানের অভাব), সেহেতু "ভাল ছাত্র" মাত্রই "মেডিক্যাল সায়েন্স" বা "ইঞ্জিনিয়ারিং" পড়তে আগ্রহী (আজকাল আবার "ব্যবসায় প্রশাসন" এসব যোগ হয়েছে) -- ৫০-৬০-৭০ দশকের মত আজকের ভাল ছাত্ররা আর অর্থনীতি, পদার্থবিজ্ঞান, গণিত ইত্যাদি পড়তে চায় না।
৫. এখন "নিজের ইচ্ছা"র চেয়ে তার বাবা-মা-অভিভাবক ইত্যাদি লোকজনের চাপ, মুখ-রক্ষা, আশা-আকাঙ্খাই উচ্চশিক্ষায় যাবার জন্য একজন ছাত্র/ছাত্রীর মূল প্রেরণা।
৬. এইসব চতুর্দিকের বিভিন্ন ফাউল প্যাঁচে পড়ে, "যে কোন উপায়ই হোক বেশী নাম্বার পাইতেই হবে" -- এই ধরণের সাইকোলজি থেকে এইসব কোচিং ব্যবসার উদ্ভব।
এই সমস্যার সমাধান কি? -- জানা নাই।
তবে আমার মনে হয়, ছাত্র/ছাত্রীর স্বাভাবিক শিক্ষাজীবন থেকে "বাবা-মা-অভিভাবক" ইত্যাদির মাত্রাতিরিক্ত কু-প্রভাবকে সরানো দরকার, তাহলে মনে হয় অবস্থা একটু সহনীয় হবে।
এসএসসি, এইচএসসির প্রশ্ন করার সময় মাথায় রাখা হয় 'অ্যাভারেজ' স্টুডেন্টদের পাস-ফেলের কথা। কোনো বিশ্ববিদ্যালয় বা মেডিকেলে ভর্তির জন্য সেই বিষয়ে যারা 'স্পেশ্যলিস্ট' হবে, তাদের মধ্যে থেকে 'সেরা'দেরকে 'বাছাই' করা হয় ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে। দুইটা ভিন্ন রিকোয়ারমেন্ট। একারণেই পাবলিক পরীক্ষার নম্বর বা গ্রেড ভর্তির একমাত্র তো দূরের কথা প্রধান যোগ্যতাও হওয়া উচিত না।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
---------------------
আমার ফ্লিকার
কিছুটা অফ্ টপিকঃ সব মেডিকেলে এক সা্থে পরীক্ষার ভাল উদাহরণ ছিল। এটা অন্য জায়্গায় চালু করার যে প্রস্তাব, সেটা নিয়ে সরকার কিছু না করে অহেতুক ঝামেলা ডেকে আনল।
সিদ্ধান্তটি যৌক্তিক মনে হয়নি। পাবলিক পরীক্ষার ফলাফল শেষ কথা নয়। কারণঃ
১। সকল বোর্ডে পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্ন এক ও অভিন্ন নয়। এক বছরের প্রশ্ন বাদ দিয়ে পরের বছরের সাজেসন তৈরি করে পরীক্ষা দিয়ে খুব সহজেই এ প্লাস পাওয়া সম্ভব। পরীক্ষায় গার্ড দেয়া, দেখাদেখি ইত্যাদির সুযোগ, ব্যবহারিকের নম্বর ইত্যাদি নিয়ে অভিযোগের অন্ত নেই। বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ ও শিক্ষকের মানের উপর শিক্ষা ও পাবলিক পরীক্ষার ফলাফলের মান অনেকাংশে নির্ভরশীল।
২। পাবলিক পরীক্ষার খাতা দেখা নিয়ে নানান কথা শোনা যায়। একই বিষয়ের একটি খাতা (ধরা যাক বাংলা) ১০ জন শিক্ষককে দিলে ১০ রকমের নম্বর আসবে। বর্তমান গ্রেডিং সিস্টেমে শোনা যায় ৭৫ নম্বরকে ৮০ করে দেয়া হয়। কিন্তু কেউ সত্যি ৯০ পেয়ে যেতে থাকলে তাঁর নম্বর কমিয়ে দেবার চেষ্টা করাটাই স্বাভাবিক। কাজেই সব এ প্লাস নম্বর সমান মর্যাদা বহন করে না। সব এ প্লাসধারীর মেধা একই রকম ভাববারও অবকাশ নেই। ভর্তি পরীক্ষার এম সি কিউতে কিন্তু এরকম নড়বড়ে মুল্যায়নের সুযোগ নেই। এখানে একটা অপ্রাসঙ্গিক তথ্য দিয়ে রাখি। গেলো পঞ্চম শ্রেণীর সমাপনী পরীক্ষায় কোন এক উপজেলায় দেখা গেলো ১০০ ভাগ ছাত্র পাশ করেছে। কর্তৃপক্ষের সন্দেহ হওয়ায় কিছু খাতা আবার দেখা হল। দ্বিতীয়বার দেখতে গিয়ে দেখা গেলো ৫/১০ পাবার মতো খাতায় শিক্ষক মহোদয়গণ ৩৩ দিয়ে রেখেছেন, যাতে ছাত্রদের পাশের হার ভালো হয় এবং তাঁদের কোন জবাবদিহিতার ভেতর যেতে না হয়। যারা পাবলিক পরীক্ষার খাতা দেখেন, তাঁদের অনেকেই খুব ঢিলেঢালাভাবে খাতা দেখার বিষয়টি কবুল করেন।
৩। আপনি বলেছেন প্রায় ৬০০০০ এ প্লাস ধারীর সবাই মেডিকেলে ভর্তি হবার যোগ্যতা রাখে। আমি বলব কেবল তারাই নয়, তাঁদের নীচের গ্রেডধারীদের অনেকেও মেডিক্যালে ভর্তি হবার যোগ্যতা রাখে। তাহলে আমরা কি লাখ খানেক ছাত্রছাত্রীকে মেডিক্যালে ভর্তির সুযোগ করে দিতে পারব? উত্তরটি হচ্ছে- না। একটা পর্যায়ে কোন বিশেষ শিক্ষা আর অধিকার থাকে না মনে হয় (এই প্রসঙ্গে এখানে বিস্তারিত বলা অপ্রাসঙ্গিক বিধায় অনালোচ্য)। সেইজন্য এখন মাত্র ২৩০০ জনকে বাছাই করতে হবে। এই বাছাইয়ের ভিত্তি হিসেবে বলা হতো পরিক্ষার্থীকে কমপক্ষে জি পি এ ৪ বা এরকম কিছু পেতে হবে। কাজেই ধরেই নেয়া হচ্ছে যে এর ওপরের জি পি এ ধারী সকলেই মেডিক্যালে ভর্তি হবার যোগ্য। তাঁদের ভেতর থেকে যারা আগের নিয়মে ১০০ নম্বরের ভর্তি পরীক্ষায় ভালো করত, তারাই চূড়ান্তভাবে ভর্তির যোগ্য বলে বিবেচিত হত। এই ভর্তি পরীক্ষায় ভালো করার সাথে কিন্তু জিপিএ বেশি পাবার কোন শর্ত নেই। এসব ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন কিন্তু বোর্ডের গতানুগতিক পরীক্ষার মত হয় না মোটেও। ফলে এখানে কেবল তারাই ভালো করে, যাদের ঐ বিষয়টির উপর ভালো দখল থাকে। বইয়ের অনেক অধ্যায় বাদ দিয়েও জি পিএ ৫ পাওয়া হয়ত সম্ভব, কিন্তু এসব ভর্তি পরীক্ষায় ভালো করা প্রায় অসম্ভব, যদি প্রশ্ন ফাঁস না হয়। কাজেই বলা যায়, পরীক্ষাটি মাত্র এক ঘণ্টার হলেও, ছাত্রের মেধার একটি তড়িৎ গভীর মূল্যায়ন বিগত পরীক্ষা পদ্ধতিতে সম্ভব ছিল।
৪। এবার প্রশ্ন ফাঁস প্রসঙ্গ। দেশে এতোগুলো পাবলিক পরীক্ষা হয়, সেখানে তো প্রশ্ন ফাঁসের কথা এখনো শোনা যায় না। একটা সময় বি সি এস এর প্রশ্নও ফাঁস হয়েছে এদেশে। সেই দুর্যোগ কিন্তু আজ আর নেই। এখন প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে, এই অজুহাতে পি এস সি যদি বলে দিত কেবল সার্টিফিকেটের ভিত্তিতে চাকুরি দেয়া হবে- বিষয়টি তবে কেমন হত? আমি বলতে চাইছি, সদিচ্ছা থাকলে যেকোনো পরীক্ষাই সুষ্ঠুভাবে নেয়া সম্ভব। মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা সে তুলনায় ছোট পরিসরের (একদিনে মাত্র এক ঘণ্টার) একটা পরীক্ষা।
৫। যে বিষয়টি আমি সব থেকে বেশি অনুভব করি, সেটি হল আমাদের দেশে শিক্ষাক্ষেত্রে চরম বৈষম্য বিরাজ করছে। মেধা কারুর সমান হয়না। তবুও ধরা যাক কাছাকাছি মেধার দুজন ছাত্র। একজন ঢাকায়। একজন মফস্বলে। ধরেই নেয়া যায়, ঢাকার ছেলেটি খুব ভালো শিক্ষকের কাছে পড়ে ভালো সাজেসন নিয়ে ভালো গ্রেড পাবে। বর্তমান নিয়মটি বহাল থাকলে মফস্বলের ঐ ছেলেটি আর কোনদিন নটরডেম বা ঢাকা কলেজে উঠে আসতে পারবে না। সে মেডিকেল বা ভালো কোথাও ভর্তি হতে পারবে না। এই ব্যবধানটি কিছুটা হলেও ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে কমিয়া আনা সম্ভব ছিল আগের নিয়মে। মফস্বলের ছেলেটি হয়তো একটু কষ্ট করে ৩ মাস ঢাকায় থেকে তাঁর বাকী জীবনের পেশা নির্বাচনের একটা সুযোগ পেত। দুর্ভাগ্য, আমরা তাঁর সেই শেষ সুযোগটি কেড়ে নেবার উপায় তৈরি করেছি।
গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক। সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রাথমিক ও গণশিক্ষা বিষয়ক মন্ত্রণালয়, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করা রাশেদা কে চৌধুরী খালুপেপারে একটি অনন্যসাধারণ প্রবন্ধ ইরশাদ করেছেন [সূত্র]।
এর চুম্বকাংশগুলো হচ্ছে:
ম্যাডাম, লাইফ অ্যাজ আ স্টুডেন্ট ডাজন্ট ঔ এনিওয়ান স্বস্তি। শিক্ষার্থীরা স্বস্তি চাইলে লেখাপড়া বাদ দিয়ে চকবাজারের কোনো আড়তদারের ছেলে বা মেয়েকে বিয়ে করে ঘরজামাই বা ট্রোফি ওয়াইফ হয়ে জীবন কাটিয়ে দিতে পারে। চিকিৎসাবিজ্ঞানের শিক্ষাজীবনের অসোয়াস্তি এই ফুলবাবু ও ফুলবিবিদের কী দরকার?
জ্বি ম্যাডাম, ঠিক। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টারা বিনা পরীক্ষায় বৈতরণী পার হতে পারেন। একজন চিকিৎসককে মেধার চূড়ান্ত পরিচয় দিতে হয়। তবে যারা মাথা চক্কর দিলেই ব্যাংকক-সিঙ্গাপুর দৌড়ান, তাদের এইসব নিয়ে মাথাব্যথা থাকে না।
এই উন্নত দেশটার নাম বলেন না ম্যাডাম। প্লিজ প্লিজ প্লিজ। নামটা বলেন।
আহেম! ম্যাডাম, বাংলাদেশে মেডিক্যাল কলেজগুলিতে একান্ন হাজার সিট নাই। আপনি হয়তো ভেবেছেন, তারা বাসা থেকে সিট নিয়ে কলেজে গিয়েছে। প্লিজ ম্যাডাম, ছাতার নিচ থেকে হাতা বের করে দেখেন বাইরে বৃষ্টি না রোদ। এইভাবে আন্দাজে ঠুসঠাস খালুপেপারে কথাবার্তা লিখে হাসাবেন না। পেটটা ব্যথা করে।
গোল্ডেন জিপিএ পেলেই গোটা দুনিয়ার যাবতীয় সুবিধার চাবি হাতে এসে যায়, এই নিশ্চয়তা কবে কে দিয়েছে ম্যাডাম? তাদের ব্যাপারে আমাদের বক্তব্য হওয়া উচিত, ওয়েইক আপ অ্যান্ড স্মেল দ্য কফি। দুনিয়া বহুত কঠিন জায়গা। ডাক্তারি পড়তে পারো নাই, ঠিকাছে, এখন চেষ্টা করো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হতে পারো নাকি।
চল্লিশ পঞ্চাশ বছর ধরে যেসব লোক প্রশাসনে অংশ নিতে পারে নাই, তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হিসাবে উড়ে এসে জুড়ে বসে তিন মাসে তেলেসমাতি দেখিয়ে ফেলতে পারলে, এক ঘন্টার পরীক্ষায় মেধার যাচাইয়ে সমস্যা কোথায় গো ম্যাডাম?
খুব দুঃখজনক ঘটনা। কিন্তু ষাট হাজার এ প্লাস থেকে যখন সরকারি বেসরকারি মিলিয়ে সাড়ে সাত হাজার সিটে ভর্তি হয়ে ডাক্তার হওয়ার সুযোগ মিলবে, বাকি হতাশ সাড়ে বাহান্ন হাজার ছেলেমেয়েকে আপনি কী বলবেন? তাদের মধ্য থেকে যদি কেউ আত্মহত্যা করে, তখন নতুন কী বুদ্ধি বের করবেন? এরচেয়ে এসএসসি আর এইচএসসির ফলের ওপর ভিত্তি করে এমবিবিএস ডিগ্রিটা খয়রাত করে দেন না ম্যাডাম। ঘরে ঘরে ডাক্তার পাবো। আপনার সর্দি কাশি হলে তো ব্যাংকক সিঙ্গাপুর আছেই।
ম্যাডাম! উন্নত বিশ্বের পাঁচটা দেশের নাম বলেন, যেখানে এ ধরনের পরীক্ষার ব্যবস্থা নাই। প্লিজ ম্যাডাম। প্লিজ প্লিজ প্লিজ। মাত্র পাঁচটা নাম!
মন্তব্যে
এরা কি খেয়ে এত বড় হয়েছেন জানতে মন চাচ্ছে। এ সমস্ত লোকজন গুলা হল আমাদের উপদেষ্টা , দেশের মাথা, যাদের কথাবার্তা শুনে মনে হয় না এদের নিজেদের মাথায় খড়কুটা ছাড়া আর কিছু আছে। সব গুলাকে ধরে পাগলা গারদে ভর্তি করতে ইচ্ছে করে আমার মাঝে মাঝে খুব ,সত্যি সত্যি যদি করতে পারতাম । সব অসুস্থ লোকরাই দেশ চালাচ্ছে বসে বসে।
মন্তব্যের সাথে একমত হইতে পারলাম না, আপার কথা আমার কাছে অমৃত।
ম্যাডামের কথার উপর কোন কথা হইতে পারে না -- এই একই যুক্তি দেশের সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্যও প্রযোজ্য -- সব ভর্তি পরীক্ষা উঠায়ে দেওয়া দরকার অতিসত্বর। এই একই যুক্তি এমনকি বোর্ড পরীক্ষার জন্যও প্রযোজ্য।
আপনারা সবাই মিলে আপারে এই বুদ্ধিটা দেন -- এইচ.এস.সি./এস.এস.সি.র মত মহাযজ্ঞ পরীক্ষারও দরকার নাই, একজন ছাত্র ক্লাস ১ থেকে শুরু করে ক্লাস ১২ পর্যন্ত বার্ষিক, সাময়ীক, ক্লাস-টেস্ট ইত্যাদি মিলে যত পরীক্ষা দেয়, সেই পরীক্ষার মার্ক গুলা এগ্রিগেট করে সেইটা দিয়ে মূল্যায়ন করা হোক (বেবী ক্লাসের দৈনিক হাতের লেখার মার্কও ধরা যাইতে পারে) -- ১২ বছর ধরে সব বার্ষিক পরীক্ষা মিলে টোটাল ৭৯ x ১২ = ৯৪৮ ঘন্টার (কিংবা আরো বেশী) লম্বা সময় পরীক্ষার পিছে ব্যয় করে, তার কি কোন দাম নাই ? মাত্র ৭৯ ঘন্টার হিসাবে ভর্তি কেন?
-- রামগরুড়
তবে,
আমার জানামতে এটা ক্যানাডার জন্য সত্য (ফার্মেসি, ল', নার্সিং, আর্কিটেকচার, অপ্টোমেট্রি বাদে), শুধু বাড়তি একটা ইংলিশ টেস্ট (যেমনঃ IELTS, TOEFL) দেয়া লাগে। এখানে বা এখানে দেখতে পারেন। তবে যেটা উনি বলেননি সেটা হল এসব উন্নত দেশে পড়া ভীষণ ব্যয়বহুল (১, ২), আর, আন্ডারগ্র্যাড লেভেলে স্কলারশিপ-ও খুব কম। তাই শেষমেষ এটাকে আর ঠিক 'সুযোগ' বলা যায় না।
- সাম্য
দুইশো বছর ইংরেজের রামঠাপে পশ্চাদ্দেশ ঢোলা বানানোর পরও আমাদের ইংরেজির বিস্কুটদৌড়ে পার হতে তিন-চারঘন্টার আইইএলটিএস বা টোয়েফল দিতে হয়, সেটা নিয়ে আশা করি মন্ত্রক পর্যায় থেকে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এই বাড়তি টেস্টে কোনো সমস্যা যদি না থাকে, ভর্তি পরীক্ষায় কী সমস্যা?
ভাল কইছেন। হে হে ...
-- রামগরুড়
ঐ লেখার বিপরীতে আসলে পূর্ণ একটি নতুন পোস্ট এলে ভালো হতো মনে হয়। যেখানে স্যাটায়ারের পাশাপাশি সলিড লজিক গুলোও থাকলো। আর এই লেখায় মন্তব্যে যত আলোচনা হয়েছে সেখান থেকে যে উপসংহারে আসা যায় তা আর এই মূল লেখার অবস্থান সম্পূর্ণ বিপরীত। অধিকাংশ এই সিদ্ধান্তের বিরোধী অর্থাৎ ভর্তি পরীক্ষার পুনর্স্থাপন চায়।
এত গবেষণা না করে কমন সেন্স নিয়ে কিছু চিন্তা করি চলুন -
১। ধরি, সিট ২০০০। হুবহু একই জিপিএ পেয়েছে ১০,০০০ জন। যাদের ৫০০০ই ডাক্তার হবার স্বপ্ন দেখে। তাহলে কি দেখে ভর্তি করাব ? বয়স দেখে !!
২। লিখকের মতে ১২ বছরের "কষ্ট"কে কেমনে ১০০ টা প্রশ্ন দিয়ে "যাচাই" করা যায়। কথা হচ্ছে ১২ বছর ধইরা পড়াশুনা করার পরেও যে ১০০ টা প্রশ্ন মোকাবেলা করতে ভ্য় পায়, সে কেমন ছাত্র ! আবার ১০ বছরের কষ্ট কি করে মাত্র ৩ ঘণ্টার এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে "মাপ" করা যায় ! সুতরাং ওটাও বাদ ! শুধু তাই না আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত পরীক্ষা - আইইএলটিএস ( সব মিলায়ে মাত্র ৩ ঘণ্টার মত) এবং জিআরই(মাত্র ৪ ঘণ্টার মত) ও বাতিল করার দাবী জানাচ্ছি আমাদের অস্বাস্থ্যকর স্বাস্থ্য মন্ত্রীর কাছে। আশা করি উনি হার্ভার্ড - ইয়েলরে কঠোর ভাবে নিষেধ করে দিবেন এই সব এক্সামের ব্যাপারে ! এসএসসি -এইচএসসি রেজালটসই ইনাফ !!
৩। এই দেশের প্রায় সবছেলে- মেয়ে তার লাইফের সব থেকে বেশী পড়ালিখা করে মেডিক্যাল - ভার্সিটি - ইঞ্জিনিয়ারিং ভর্তি পরীক্ষার জন্য। কারণ ফাকিবাজি - সাজেসনভিত্তিক পড়াশুনা করে এসএসসি - এইচএসসিতে ভাল ফল করে পার পেলেও ভর্তি পরীক্ষার পুলসিরাত পার হতে অনেক শ্রম লাগে। জীবনে প্রথম সত্যিকারের প্রতিযোগিতামূলক এই কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন হয়ে পরবর্তী জীবনের জন্য প্রস্তুত হয়। (এই অভাগা দুর্নীতির দেশে এই ভর্তি পরীক্ষাটাই সবচেয়ে কম দুর্নীতিপূর্ণ। এটা মেনে নেয়া যায়না ! এটাকেও দুর্নীতি দিয়ে ভরপুর করা হোক !!)
৪। কিছুদিন আগে প্রথম আলোতে এক সরকারী ভার্সিটির শিক্ষক ( যিনি নিজে বি - গ্রেডের এক প্রাইভেট ভার্সিটিতে পড়ে "কঠিন" লবিং করে একটি শীর্ষস্থানীয় সরকারী ভার্সিটিতে "শিক্ষক" হয়েছেন। কিন্তু ওই ভার্সিটিতে ছাত্র হিসাবে ভর্তি পরীক্ষাতে উত্তীর্ণ হতে পারেন নি ! ) আবদার করেছিলেন - ভার্সিটি ভর্তি পরীক্ষার "ধরন" যেন ইংলিশ মিডিয়ামের "উপযুক্ত" করা হয়। কারণ অনেক "মেধাবী" ইংলিশ মিডিয়ামের ছাত্র ঢাবি - চবিতে চান্স না পেয়ে বাইরের ভাল ভার্সিটিতে চলে যাচ্ছে ! ওদেরকে " ধরে" রাখতে পুরা সিস্টেম পালটাই দাও !! (আমাদের দেশের ভার্সিটিগুলার মান এত ভাল জানতাম না !!! )। কাজেই কথায় কথায় সিস্টেম পালটাও নিজের সুবিধামত ! সিংহভাগের স্বার্থ নরকে যাক !
৪। আপনাকে বাংলা সিনেমার হিরো হতে হবে। পুরা লাইফে ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট হতে হবে ! দুর্ঘটনা - অসুস্থতা যাই হোক না কেন ১০০% মার্কস নিয়ে এসএসসি - এইচএসসি পাশ করতে হবে। ৫% ও যদি মিস করছেন তো শেষ! "সব সময়ই সুযোগ থাকে" - এই কথা ফালতু এখানে। একবার ব্যর্থ কেউ যদি ঘুরে দাড়াতে চায় তার কোমর ভেঙ্গে দেয়া হবে !! ভিতরে আন্ডারওয়ার পরিহিত সুপার ম্যান - উইমেন হতে হবে আপনাকে ! যদিও পৃথিবীর প্রায় সব সফলতার জন্ম ব্যর্থতা থেকেই। কিন্তু আমাদের স্বাস্থ্যমন্ত্রী এন্ড এই কলাম লিখক সব সময় 'দাঁড়ান" পাবলিক ! কখনো পতিত হন নাই ! সো নো কাম ব্যাক !
৫। কোচিং সেন্টারগুলার অবৈধ ইনকাম বন্ধ করতে পুরা সিস্টেমই পালটাই দিমু। কিন্তু আইন করে কোচিং সেন্টার গুলান বন্ধ করুম না ! ছাত্রছাত্রী জাহান্নামে যাক !
পরিশেষ - মতামত প্রকাশ মানে যেন এমনতর চানাচুরমার্কা চিন্তাহীনতার প্রকাশ না হয়। শুধু বেশী "হিট - প্রতিক্রিয়া" মানে কিন্তু ভাল লিখা নয়।
আপনার কথার ধরণগুলো, আমার একজন অতি পরিচিত মানুষের মত মনে হচ্ছে। যদিও শিওর না, আপনিই সে ব্যক্তি কিনা, কারন আপনার নিক দেখে সেটা বুঝবার উপায় নাই। সে যাকগে, উপরে অনেকেই অনেক কনস্ট্রাকটিভ মতামত দিয়েছে, আশা করি সেগুলো পড়ে দেখার সময় হবে আপনার। তাতে কোন লাভ হোক আর না হোক, এট লিস্ট "আলোচনা" শব্দটার ব্যাপারে একটা সম্যক আইডিয়া পবেন। আপনার কমেন্টের উত্তরে খুব বেশি কিছু লিখবার ইচ্ছে হচ্ছে না, তারপরও শর্টকাটে কিছু কথা বলি:
১) বোর্ড এর ডাটাবেজে কিন্তু সব বিষয়ের নাম্বার আছে। চাইলেই সেখান থেকে নাম্বার নিয়ে সহজেই একটা মেধাতালিকা বানানো যাবে।
২) জি আর ই এর সঙ্গে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার তুলনাটা ঠিক নিতে পারলাম না!! বুয়েটেরটা হয়ত কিছুটা যায়।
৩) পাব্লিক পরীক্ষার থেকে ভর্তি পরীক্ষা কম দুর্নীতিযুক্ত, এই চিন্তাটা আপনার মাথায় ঠিক কি করে আসল বুঝলাম না??? আমি কিন্তু বারবার বলেছি, পাব্লিক পরীক্ষার সিস্টেম চেন্জ করবার কথা। আমি শুধু বলার চেষ্টা করেছি, দুটো সিস্টেমের কোনটায় পারফেক্ট না, তাহলে ছাত্র-ছাত্রীরা খামাখা কেন কষ্ট করবে?? আর কিছু লোক কেন পাবে বাড়তি কিছু দুর্নীতির সুযোগ?? বাংলাদেশে এখন দুর্নীতির যে চিত্র, এ থেকে উত্তরনের ব্যাপারটা যদি একটু ব্যাখ্যা করতেন??
৪) এখানকার লাইনগুলোর প্রয়োজনীয়তাটা ঠিক বুঝলাম না??
৪) দুর্ঘটনা - অসুস্থতা এগুলোর জন্য কোন সিস্টেমটায় কাম ব্যাক করবার চান্স কম বা বেশি সেটা একটু আর একবার চিন্তা করে দেখবার অনুরোধ রইল।
৫) আগের একটা মন্তব্যে এর উত্তর দিয়েছিলাম:
পরিশেষে: ব্যাপারটা কিন্তু একটা আলোচনার মত ছিল। আশা করি এটুকু বোঝেন, এটা কোন সাহিত্যকর্ম না।
কোন সিস্টেমটা বেশি ভালো সেটা নিয়ে আলোচনা হতেই পারে। আপনার যদি নতুন কোন আইডিয়া থেকে সেটা এখানে বলতে পারেন অথবা নতুন একটা ব্লগ কিংবা বই লিখতে পারেন। অথবা আগের সিস্টেমটাই যে বেস্ট ছিল সেটা আপনার প্রখর চিন্তাশক্তি দিয়ে ডিটেইলস ব্যাখ্যা করতে পারেন। এরকম কিছু একটার আশায় থাকলাম।
পরমাণুঅণুজীব উপরের কমেন্টগুলো দেখে 'আলোচনা' শব্দটির ব্যাপারে সম্যক আইডিয়া না পেলেও আপনার একটা শব্দের ব্যাপারে কোন 'আইডিয়া' আছে বলে মনে হয় না। শব্দটি 'বোধোদয়'।
সকলেই বলার চেষ্টা করছে জিপিএ সিস্টেমটি মানসম্পন্ন নয়, ফাঁকফোকরে ভর্তি। আপনি নিজেও হ্যাঁ হ্যাঁ করে মাথা দুলিয়ে সায় দিচ্ছেন, লেখায়ও পাবলিক পরীক্ষা নিয়ে এন্তার অনুযোগ করেছেন। তবে এত এত 'আলোচনা'র পরেও এই অবশ্যপরিবর্তনীয় জিপিএ সিস্টেমকে 'এখনই' বেঞ্চমার্ক করে নিতে আপনার অবস্থানের পরিবর্তনের লেশমাত্র সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। এখানেই 'আলোচনা' শব্দটি মারা খেয়ে গেল। চেঞ্জের ঠেলায় পরনের লুঙ্গি মাথায় বেঁধে তালগাছের গোড়া জড়িয়ে ধরে দাঁড়িয়ে আছেন।
ভর্তিপরীক্ষার 'টর্চারে'ই ওষ্ঠাগতপ্রাণ সোনামানিকের মেডিকেল জীবন কী দুর্বিসহ হতে পারে তার ধারণাও আপনাকে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে 'আলোচনা'র সম্যকতা ওখানেও মারা খেল। হয়তো এই সোনামানিকের জন্য একদিন কীবোর্ড হাতে তুলে নেবেন এই বলে যে প্রফেশনাল পরীক্ষাগুলো টর্চারের চূড়ান্ত। কত মেধাবী এই টর্চারের বৈতরণী পার হতে না পেরে বিবাগী হয়ে গেল! আইটেম যেহেতু পাশ করেছে, এবং কে না জানে আইটেমে পড়াটা বিশদ হয়, পেন্ডিং খেতে খেতে জীবন অতিষ্ঠ হয়ে যায়; তার ওপর কার্ড, টার্ম, ব্লক, ক্লাস টেস্ট, ওয়ার্ড ফাইনাল(শুনলাম ডিএমসিতে কিছুদিন আগে এক ওয়ার্ড ফাইনাল হয়েছে ভোর সাড়ে পাঁচটায়, সোনামানিকের কী হবে!)এসব তো আছেই। মেডিকেল এডুর গবেষক ভাইয়া আপুরাও এসে মক টেস্ট নিয়ে যায় মাঝে মধ্যে। তাই প্রফের নরক যন্ত্রণা হতে মুক্তি দেয়া হোক। মোর্দাকথা চেঞ্জ উই নিড।
চেঞ্জের তাড়নায় খাবারের মেন্যুতে পুরীষ তুলে এনেছেন, আশা করছেন পুরীষের টেস্ট একদিন পাল্টাবে। তখন খেতে ভালো লাগবে, ততদিন এই-ই সই।
আপনি মনে হচ্ছে অনেকগুলো কমেন্টে পড়েছেন, কিন্তু সবগুলো পড়েছেন কিনা সন্দেহ হচ্ছে। একদম প্রথম কমেন্টেই লিখেছিলাম
আর পরের কমেন্টগুলোয় চেষ্টা করেছিলাম যে যা মতামত দিচ্ছে তার অন্যদিকটাও ভেবে দেখতে। আপনার মত কখনই বলি নাই যে, আমারটাই মানতে হবে।
আর আমার কমেন্টগুলো একটু ভালো করে পড়লেই বুঝতে পারতেন, আমি বারবার বলবার চেষ্টা করেছি দুটি সিস্টেমের কোনটাই খুব বেশি এফেক্টিভ না। টর্চারের কথাটা আসছে এখান থেকেই, সেইসঙ্গে বাড়তি দূর্ণীতির কথাটাও। একটা ইনএফেক্টিভ সিস্টেম দিয়ে কেন খামাখা ঝামেলা বাড়ানো হবে। যদি বেটার কোন উপায় বের করা যায় আমার কোন আপত্তি নেই। একজন সাজেস্ট করেছে, ভর্তি পরীক্ষা কয়েকটা স্টেজে নেবার ব্যপারে। এটার ব্যাপারে চিন্তা করা যেতে পারে।
আর আমি চাওয়া না চাওয়াতে কোন কিছুরেই পরিবর্তন হবে না।
আর ভর্তি পরীক্ষায় ভালো করলেই যে, বিশ্ববিদ্যায়ে যাবার পর সেখানকার পরীক্ষাগুলোয় ভালো করবে নাহলে গন্ডমূর্খ গ্রজুয়েট হয়ে বের হবে, এই ধারনাটাও আপনি কই থেকে পেলেন একটু জানতে ইচ্ছে করছে। আশা করি ডিটেইলসে বলে যাবেন।
কারণ পাঠ্য বইয়ের সিংহভাগ না পরেও সাজেসন ফলো করে এ- প্লাস পাওয়া যায়। এই ফাকিবাজি অনেকটাই অচল ভর্তি পরীক্ষায় ( এখানে কোন সাজেসন নাই। ) এটা জানার জন্য "সাধারণ বুদ্ধি" লাগে। মস্তিস্কের ঘিলু একটু খাটালেই এটা উৎপন্ন হয়।
আপনার লিখা পড়ে বুঝা যাচ্ছে ভর্তি পরীক্ষার প্রতি আপনার কেন জানি একটা বিজাতীয় ক্রোধ বিদ্যমান। আরও বলতে হচ্ছে জিআরই সম্পর্কে আপনার ক্লিয়ার ধারণা নেই । আপনার অবগতির জন্য জানাচ্ছি - ভর্তি পরীক্ষা যদি আপনার কাছে “নিষ্ঠুর” মনে হয় তাহলে জিআরইতো আপনার কাছে রীতিমত নৃশংস মনে হবে। কারণ এই পরীক্ষাতে সময়ের বাঁধন আরও কড়া। ৩০ মিনিটে আপনাকে মিনিমাম ৬টি মহাজটিল কম্প্রিহেন্সন সমাধান করতে হবে। তা ও ২-২ বার। এই পরীক্ষার মোট ব্যাপ্তি প্রায় ৪ ঘণ্টা। আপনি আরও বলতে পারেন - যাব অর্থনীতি / বিজ্ঞান/ সাহিত্য পড়তে,গণিত – ইংলিশ পরীক্ষা দিতে হবে ক্যান ? এছাড়া ৪ বছরের অনার্স, ১ বছরের মাস্টার্স – এগুলার কি কোন “গুরুত্ব” নেই ? এগুলাতে এত জিপিএ পাইলাম, আমার জিআরই স্কোর লাগবে ক্যান ? -আপনি এই প্রশ্নগুলো রুহুল আমিনসহ মিলে আম্রিকান প্রফেসরদের করতে পারেন।
আপনি বলতে পারতেন ভর্তি পরীক্ষা ১ ঘণ্টার না করে ২-৩ ঘণ্টার করতে। কিংবা আরও উন্নত করতে যাতে লাকের প্রভাব কমে যায়, প্রচেষ্টার প্রভাব বেড়ে যায়। সেটা না করে কোন এক বিদ্বেষের কারণে এই যন্ত্রণার “ভর্তি পরীক্ষা”টাকেই গলা টিপে মেরে ফেলতে চাইছেন । ক্যান ? সব দিক বিবেচনা করলে এটা পরিস্কার যে – ভর্তি পরীক্ষা সিস্টেম প্রস্তাবিত সিস্টেম থেকে হাজার গুণ বেটার আমাদের দেশের প্রেক্ষিতে। ভর্তি পরীক্ষা বাদ দিতে হলে এই সিস্টেম থেকে আরও নিখুঁত পদ্ধতি বের করতে হবে। পরিবর্তন চাই কিন্তু বিকৃতি না
১। আমি লিখেছি হুবহু এক রকমের জিপিএ যাদের আছে তাদের বেলায় কি হবে ? আপনি বার বার বোর্ডের রেজাল্টের কথা বলছেন। বোর্ডের রেজাল্ট কি দৈববাণী ? নিখুঁত ? সব বোর্ডের প্রশ্নের ধরন, খাতা কাটা পদ্ধতি, নাম্বার বণ্টন যে যোজন যোজন দূরত্ব নিয়ে অবস্থান করছে এটা বাকী সবাই বুঝলেও আপনি এবং রুহুল আমিনের মাথায় আসছেনা কেন !! আমার এক পরিচিত ইন্টারে যশোর বোর্ড থেকে আর্টস এ ৮০০ এর উপরে মার্কস পেয়েও বোর্ড স্ট্যান্ড করেনি। কিন্তু সেই বছরই ৭৪৩ পেয়ে আমার কাজিন সেই আর্টস থেকেই ৪র্থ স্ট্যান্ড করেছে চিটাগং বোর্ড থেকে ! এর মানে হচ্ছে এক বোর্ডে নাম্বারের বন্যা চললেও আরেক বোর্ডে চলে অনাবৃষ্টি ! আপনি কি করে সেই বোর্ডের রেজাল্টকে একমাত্র স্ট্যান্ডার্ড ধরে ছাত্র - ছাত্রীর মানদণ্ড বিচার করেন ? দেখা যাবে ৮০% মেডিকেল ছাত্রই ২/১ টা বোর্ড থেকে আসছে। বাকী বোর্ডের অভাগারা কি করবে ?
২। পাবলিক পরীক্ষার চেয়ে ভর্তি পরীক্ষায় অনেক কম গাফেলতি- দুর্নীতি হয় এটা জানার জন্য আপনাকে আগে পাবলিক ভার্সিটির ভর্তি পরীক্ষাতে বসে উত্তীর্ণ হতে হবে। যদি আপনি পাবলিক ভার্সিটি - মেডিক্যাল - ইঞ্জিনিয়ারিং এর ছাত্র - ছাত্রী হয়ে থাকেন আপনার তো জানার কথা! শুধু তর্কের খাতিরে আপনি কোন প্রমাণ ছাড়া কিভাবে বুঝলেন যে এখানে( ভর্তি পরীক্ষায় ) দুর্নীতি বেশী হয় ? কয়জন ছাত্র - ছাত্রী বলেছে এই পর্যন্ত যে খুব ভাল ভর্তি পরীক্ষা দিয়েও অনেক কম নাম্বার পেয়েছে কিংবা ভাল সাবজেক্ট পায়নি ? এমসিকিউতে কি সম্ভব এটা ? বরং বোর্ড পরীক্ষাগুলোতে এমন অভিযোগ অসংখ্য। এছাড়া রুহুল আমিন সাহেবদের "কার্যক্রম" দেখলেও বোঝা যায় তারা ভর্তি পরীক্ষা নামক যন্ত্রণার কারণে উপরি আয় করতে না পেরে ক্ষুব্ধ ! এর আগে তাও ভাইভা নামে একটা "সিস্টেম" ছিল। ভালই মাল পানি কামান যেত। ওটাও বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তেনাদের ক্ষেপে যাওয়াই প্রাকৃতিক। এসএসসি - এইচএসসি থেকে যে ভর্তি পরীক্ষা হাজার গুণে ফেয়ার হয় এটা জানার জন্য আপনার কমেন্টের বিপরীতে যে এতগুলো লিখা আসছে, তাদের জিজ্ঞেস করুন। নিজে আবার "মনে হয়" " আমি জানি" এমনতর "পরী- সংখ্যান" পয়দা কইরেন না !
৩। "কোচিং বন্ধ করে দেওয়া মনে হয় মন্ত্রণালয়ের জন্য খুব সহজ নয়। আর বন্ধ করে দিলেও খুব বেশি লাভ হবে বলে মনে হয় না। তখন প্রিভিলেজড গ্রুপ হবে গুটিকয়েক টাকাওয়ালা পরিবারের ছেলেমেয়ে, কারন তারা বেশি টাকা দিয়ে হলেও ঠিকই প্রাইভেট টিউটর টাইপের কাউকে খুজে নিবে। " - সবথেকে বড় তামসা হল এই লাইন ! কোচিং বাণিজ্য বন্ধ করা নাকি বি----শা---ল কঠিন কাজ !! [:O] পলিথিন নিষিদ্ধ করা থেকেও সহজ কাজ এই কোচিং বন্ধ করা। যার মাথায় এক ছটাক ঘিলুও আছে সেও বুঝবে যে এই বাণিজ্য করতে গেলে বহুল বিজ্ঞাপন লাগে ছাত্র নামক "কাস্টমার" কালেকশনের জন্য। সরকার যদি আজকে ঘোষণা দেয় যে ভর্তি বাণিজ্য নিষিদ্ধ। জাস্ট একটু মনিটর করে, কাল থেকে দেখেন ১টা কোচিংও খোলা পাবেন কিনা ! জি হা, লুকিয়ে তো আর কোচিং চালানো যাবেনা, পলিথিন যদিও বেচা যায়। "তখন প্রিভিলেজড গ্রুপ হবে গুটিকয়েক টাকাওয়ালা পরিবারের ছেলেমেয়ে, কারন তারা বেশি টাকা দিয়ে হলেও ঠিকই প্রাইভেট টিউটর টাইপের কাউকে খুজে নিবে।"- তাইলে এইচএসসি -এসএসসি এক্সামও বন্ধ করে দিয়ে হয় !! আরে ভর্তি পরীক্ষা থাকলে ধনী - গরীব ছাত্র ছাত্রীদের মাঝে তুলনামুলক অনেক সুষম একটা প্রতিযোগিতার ক্ষেত্র তৈরি হয় এটা কি চক্ষের মইদ্ধে আঙ্গুল দাবাইয়া বুঝাইতে হইবেক ? বরং আপনার ওই পাবলিক পরীক্ষায় ৬ সাবজেক্টে ১২টা টিচার রেখে ধনীরা সাজেসন ভিত্তিক "কাট পিস" পড়ে উন্নত "নোট" সহকারে ভাল রেজাল্ট পাবে। গরীব পোলাপান ?
৪। যদি আপনি এসএসসি - এইচএসসিও দিয়ে থাকেন আপনার জানার কথা যে প্রতিবছর একটা বড় অংশ ১০০% জিপিএ পায় না। এদের অনেকেই পায় না ২ মাস ধরে চলা পরীক্ষার ধকল সইতে না পেরে ১/২ টা সাবজেক্টে এ এ-প্লাস মিস করে। আপনি তো এদের ভর্তির ফর্মই নিতে দিবেন না !! বলি হারি আপনার কমন সেন্সের !
৫। আমার পরিচিত বেশকিছু পাবলিক আছে যারা জানে ইন্দুর পরিমাণ কিন্তু বলে-লিখে হাতি পরিমাণ, বিজ্ঞাপন দেয় ডাইনোসর সমান। আপনার এই আগা-তলাহীন বেতাল লিখা, আবার এটার জন্য 'জিহাদ" দেখে বুঝাই যাচ্ছে আপনি ওই দলেরই একনিষ্ঠ একজন ! কাজেই আপনি আমার পরিচিত কিনা জানিনা ! বাই দ্য ওয়ে - সদ্য-প্রাক্তন যোগাযোগমন্ত্রীও আমার পরিচিত। যদিও ওই ব্যাটা আমারে চিনেনা !!!
বিশেষ দ্রষ্টব্য -এই দেশে 'প্রথা বিরোধী" নামক একটা মানসিক রোগ অধুনা দেখা যাচ্ছে। সমাজের শুধু ভাল দিকগুলোর সমালোচনা করে আলোচনার মাঝে আসার প্রয়াস এই রোগের প্রধানতম লক্ষণ ! হাটে এদের হাড্ডি - হাড়ি ভাংলে এরা চিক্কুর মারে - বাক স্বাধীনতা গেল ! ব্যাক্তি আক্রমণ !! কিন্তু এরা যে জাতিকেই আক্রমণ করে দুর্বল করে দিচ্ছে ওটা মুলা - শাক দিয়ে ঢাকতে চায় ! ইহা ব্লগে সম্ভব নয় হে বালক/বালিকা !
লেটেস্ট আপডেট --
"তোমাদের জন্য সুখবর হল সামনে ভাল করে ঈদ করতে পারবে, সামনে পরীক্ষা নেই, দৌড়াদৌড়ি কর, বেড়াতে যাও, কক্সবাজার যাও, বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়াও, সিনেমা দেখো"... কিছুক্ষণ আগে ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভিতে প্রচারিত আজকের বাংলাদেশ নামক লাইভ অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী আফম রুহুল হক মেডিকেল ভর্তিচ্ছুদের উদ্দেশ্যে।
--- রামগরুড়
আফম রুহুল হক নিজের চিকিৎসা কোথায় করান, সেটা জানার কোনো রাস্তা আছে? কিছুদিন আগে বিএসএমএমইউ এর উপাচার্য প্রাণগোপাল দত্ত নিজের স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্যে সিঙ্গাপুরে গিয়েছিলেন [সূত্র] ।
হিমু ভাই, কিছুই বলার নাই, এই দেশের শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস করার জন্য অনেক ফালতু পলিসি পয়দা হইছে আগে, যেমন ধরেন --
১. (শাজু তপনের মস্তিষ্ক উদ্ভুত) বিজ্ঞান বইয়ের "এসো নিজে করি" ফর্মুলা (৬ষ্ঠ শ্রেনীর পর থেকে)
২. ৯৪-৯৬ আমলের ৫০০ অব্জেক্টিভ প্রশ্ন ব্যাংক (এস.এস.সি.) ... ইত্যাদি,
খুঁজলে হয়ত আরো পাওয়া যাবে, আমার এই মূহুর্তে মনে আসছে না।
কিন্তু ভর্তি পরীক্ষা বাতিলের মত পুরা কান্ডজ্ঞানহীন চিন্তা ভাবনা মনে হয় উপরের পলিসি মেকাররাও করতে পারে নাই, তাও আবার মেডিক্যাল সায়েন্সের মত বিষয়ে, যেখানে মানুষের জীবন-মৃত্যুর ব্যপার জড়িত।
ভাই, আজকাল প্রাইভেট মেডিক্যালের পোলাপাইনগুলা ভুরভুর কইর্যা ক্যামনে ক্যামনে বাইর হওয়া শুরু করতেছে চিন্তা করলে আমার এখন ডাক্তার দেখাইতে ভয় লাগে (কারণ সরকারী বেসরকারী নির্বিশেষে হগগলের সাইনবোর্ডেই দেখি লেখা থাকে "এমবিবিএস, ডি.ইউ." -- আমি বুঝতারি পারিনা কেডা ডি.এম.সি.র প্রোডাক্ট আর কেডা নর্দার্ন মেডিক্যালের প্রডাক্ট)। এখন আবার সরকারী কলেজ থেকে এই ভর্তি পরীক্ষা না দেওয়া পোলাপান বাহির হওয়া শুরু করলে (যদি সত্যই এরা পাশ করতে পারে) -- ভাই রে ভাই, আমাগো মতোন গরীবরা যামু কই??
-- রামগরুড়
এফসিপিএস এর যন্ত্রণায় ঈদ তো দুরের খাওয়া দাওয়া ঘুমের মত মৌলিক অধিকারই তো পূরণ করতে পারছি না আমরা। আর যারা এখন মেডিকেলে আছে, বেচারারা তো ঈদের শপিং টাও ঠিকমত করতে পারেনি। আমরাও বেড়াতে যেতে চাই, দৌড়াদৌড়ি করতে চাই, সিনেমা দেখতে চাই, হে মহান স্বাস্থ্যমন্ত্রী ,যদি একটু মনোযোগ দিতেন আমাদের দিকে। দুই দিনের দুনিয়া , একটু হেসে খেলে কাটিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করে দিতেন। আপনি চেষ্টা করলে পারবেন, আপনার মন দয়ায় ভর্তি বলে মনে হচ্ছে।
সবাইকে দেখলাম একটা বিষয় নিয়ে খুব লাফাতে
আমি শুধু একটা কথাই বলতে পারি,
সোলাস
নতুন মন্তব্য করুন