জীববিজ্ঞানে ভাইরাসের কর্মকাণ্ডের বড়ো ভাগের জন্যে দায়ী যেমন তার প্রাতিসাম্যিক রূপায়ব বা আকার (Shape) তেমনি আমাদের ‘মিডিয়া’ও প্রতিসাম্যের আয়নায় নিজেকে বারবার দেখে নেয়। তবে সবাই নয়; কারণ সবাই পারেন না। হঠাৎ ‘মিডিয়া’ বিষয়ে আমার আগ্রহের কারন সম্ভবত এই যে, শব্দটির সঙ্গে আমার নতুন পরিচয়। পরিচিত জনেরা কথাটি শুনে হাসেন কেননা বয়সের পাল্লায় আমি বেশ ওজনদার। যদিও সম্প্রতি সুহৃদদের নানামুখী আলোচনায় আমি একটি প্রতিযুক্তিই দিয়েছিলাম যে- আমরা সেই দলের বয়স্ক, যাদের সর্বনামে চন্দ্রবিন্দু লাগে না, অতএব এ বেলাতেও কয়েকটি শব্দ নতুন ঠেকা একেবারেই অসম্ভব নয়।
নিজের দেশে বহুদিন পর এসে প্রথমেই খুঁজে বের করেছিলাম বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের বন্ধুদের; তবে সবাইকে পাওয়া যায়নি। হাতে গুনে যে কয়জন পেয়েছি তাদের মাঝে দুজনই কেবল প্রাণ খুলে আড্ডা দিতে রাজী হলো, কিন্তু বিপত্তি ঘটলো অন্যখানে। দুজনের কেউ-ই কোনো পাবলিক প্লেসে বা রেস্টুরেন্টে আড্ডা দিতে রাজী নয়, অতএব সাব্যস্ত হলো একজনের বাড়িতেই দেখা করা হবে; ঈদের পরের দিন। আমারা যারা বয়স্ক- তাদের কাছে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের স্মৃতি শান্তিনিকেতনী ঝোলায় পুরে রাখা বিশ্বভারতী এডিশনের গীতবিতানের মতো। পুরোনো। ওটাতে হাত বুলিয়ে শান্তি পাই বটে, কিন্তু সাহস করে শেলফে রাখতে পারি না- পাছে বয়েসটা ধরা পড়ে!
পূর্ব ঘোষিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বন্ধুর বাড়ির নেমন্তন্ন রক্ষা করতে গেলাম। এবার দেশে না আসলে বুঝতাম না রবিঠাকুরের আহবান বর্ষাকে কী মাতালই না করেছে। ‘এসো শ্যামল সুন্দর’ বলে যে ডাক তিনি দিয়েছিলেন তাতে সাড়া দিয়ে সেই যে এলো বর্ষা, ভাদ্রতেও তার যাবার নাম-নিশানা নেই। ভাগ্যিস বঙ্গ দেশটা বর্ষার মামা-চাচার দেশ নয়- হলে, আত্মীয়তায় ভাটা পড়তো। বৃষ্টির ছাঁটে কোনো রকমে নিজেকে বাঁচিয়ে সিএনজি’র হাসতে থাকা মিটারটার দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে যখন বনানী পৌঁছলাম, তখন সবে বেলা দশটা। ঋত্বিকের ‘অযান্ত্রিক’ ছবিতে জগদ্দল কতোটা প্রভাবশালী ছিলো জানি না তবে ঢাকার যান্ত্রিক জীবনে সিএনজি একেবারে হাউসফুল। মিটারে যেখানে ৪৭ টাকা আটানা, চালক সেখানে দেড়শ টাকা দাবি করছেন! জিজ্ঞেস করলাম- ট্র্যাফিক নেই, ভাড়া এতো কেনো? চালক বললেন- সেইজন্যই তো বেশি, তাড়াতাড়ি আসলেন, খুশিতে বেশি দেবেন। তো, এই মিটার চালিয়ে রাখা কেনো? সার্জেন্টকে দেখানোর জন্য- পেপসোডেন্টের বিজ্ঞাপন দিয়ে জানালেন চালক। মনে ভাবলাম- এখন কেবল রমনীই রমনকে দেখান না, সিএনজি চালকও সার্জেন্টকে দেখান।
বন্ধুর বাড়িতে গিয়েই ভুলটা ভাঙলো। বয়সের যে বক্তব্যটা আগে দিয়েছিলাম- ওটা দেখছি কেবল আমার জন্যেই প্রযোজ্য, আমার দুই বন্ধু তো দিব্যি পঁচিশেই পড়ে আছে। দুজনেই ছাত্র জীবনে ছিলেন ফতুর বামপন্থী আর কর্মজীবনে হয়েছেন চতুর জার্নালিস্ট। কেনো চতুর? সে আলোচনাও এখন করতে হবে? ধৈর্য্য ধরুন। দু বন্ধুর মধ্যে যার ‘লেটার রিটেন ইন বেঙ্গলি’ নিয়ে ক্যাম্পাসে হাসাহাসি হতো সেই এক আনার শরীফ মিয়ার বিরিয়ানীর আমলে, সে এখন বৃহৎ জাতীয় দৈনিকের বড়ো সম্পাদক; দৈনিকের নাম- ফার্স্ট লাইট। অন্যদিকে যার Letter written in English নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রী উত্যক্তকরণের অভিযোগ উঠেছিলো সেই ছফার গাভীবৃত্তান্তের উপাচার্যের আমলে, সে বর্তমানে Powerful English Daily এর Thoughtful editor.
কী বললেন? ‘ছাত্রী উত্যক্তকরণ’ সম্বন্ধে জানতে চান? বটে- আগেই বোঝা উচিত ছিলো, বাঙালি সিক্সের ছাত্রের কাছে বীজগণিতের সূত্র আশা করলেও, সিক্সটির কাছ থেকে আশা করে কামসূত্র। আমার English Daily এর Thoughtful editor বন্ধুটি পাণিপ্রার্থী নায়িকাকে প্রেমপত্রে Do you love Shakespeare? এর স্থলে Do you love sex-pair? লিখেছিলো। হতচ্ছাড়া সেদিন হাইফেনটা না দিলে কমেডি অব এররস দিয়ে চালিয়ে দিতে পারতাম। সে যাক গে। তো তার পত্রিকার নাম হলো ‘প্রতিদিনের তারা’- যারা আর্টিকেল পড়েছেন, তারা জেনে থাকবেন, নামটির আগে একটি দি বসবে।
তো সর্ব সাকুল্যে মানুষ আমরা পাঁচজন। দুই বন্ধু ও তাদের সহধর্মিনীগণ; অন্যদিকে আমি- অকৃতদার। যে বন্ধুর বাড়ি তার দুই মেয়েকে সিঙ্গাপুরে Eid Shopping গিয়ে ফিরতি টিকেট না পেয়ে গোটা Eid টাই করে আসতে হচ্ছে। আমরা আড্ডায় মশগুল হলাম; তবে অল্পক্ষণেই খেই হারাতে হলো।
কেনো খেই হারালাম, সেটা জানতে চাইলে অপেক্ষা করতে হবে। শুনেছি অচলায়তনের বদ্ধ কুঠুরি থেকে সচলায়তনের মুক্ত বাতায়ন ছোঁয়াটাই জীবনের লক্ষ্য; তবে কর্মটি যে এতো কঠিন- সেটা আগে জানা ছিলো না। সচল হতে গেলে খানিক শ্রম লাগে, মানও লাগে- এটা যদি তরুণ বয়সে জানতাম, তবে খালি রেডবুক পকেটে নিয়ে মধু দা’র অন্ন বিনষ্টে ব্রত হতাম না- সেটা বুঝলাম না বলেই হয়তো আজও বিপ্লবের রাজ্যে ‘অতিথি’-ই হয়ে রইলাম। অতএব, প্রথম লেখাটা যদি নারিন্দার মোড়ের স্ট্রীট লাইটের মতো টিপটিপ করতে করতে জ্বলেই যায় তো জেনে রাখবেন- ‘অতিথি লেখক’ এর আড়ালে আসলে ঘাড় বাঁকিয়ে ‘স্ট্রীট-লাইট’ হামি খাচ্ছে।
আর যদি প্রকাশ না পায়?
তবে আর কী? মানিক মিয়া এভিনিউর যাত্রী ছাউনিতে বসে লুই কানের বানানো বাড়ির বাসিন্দাদের মুখ থেকে শব্দমালা কালেকশনপূর্বক মডারেটরদের সঙ্গে কিঞ্চিৎ বাৎচিত। ব্যাটাদের লজ্জা থাকলে ব্লগ পাড়ায় আর ঢুকবে না।
অতএব- সার-বক্তব্য তিনটি;এক: বাকি লেখা পরের পর্বে
দুই: লেখা প্রকাশ পেলে পাপিয়া সারোয়ারের রবীন্দ্রসঙ্গীত
তিন: প্রকাশ না পেলে সায়েদা আশরাফি পাপিয়ার পার্লামেন্ট স্পিচ
স্ট্রীট-লাইট
মন্তব্য
মৌনতা সম্মতির লক্ষণ- কিন্তু আপনি যে কি সে সম্মতি দিলেন, ঠাহর হলো না।
মতিউর রহমান আপনার বন্ধু নাকি!
খাইসে...
লেখার আগামাথা কিছুই বুঝি নাই
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
আধুনিক কবিতার মতো আধুনিক গদ্য.... মাথার কিঞ্চিৎ উপর দিয়া গেলো...
পরের পর্ব আসুক!
ভাল্লাগছে, পরের পর্ব আসুক।
_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩
পয়লা লেখা তো প্রকাশ পেলো, এবার পাপিয়া সারোয়ারের রবীন্দ্রসঙ্গীত ছেড়ে পরের পর্ব পোস্ট করেন দিকি।
..................................................................
#Banshibir.
পরের পর্ব আসলে দেখি কিছু বুঝতে পারি কি না...
~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~
আমি কিন্তু বেশ পড়ে ফেললাম !
কিছুটা অতীত ঘণ্ট সাথে এক চিমটি আভিজাত্য ও প্রচার বিমুখ প্রচার দিয়া এক কড়া ঘুঁটা দিছে।
পরিশেষে ঈদ হালচাল,তীক্ষ্ণ পর্যবেক্ষণ,সমাজ সচেতনতা,শিক্ষাগত যোগ্যতা,সাহিত্য ও সমাজতন্ত্রের সমাবেশ ,সমসাময়িক বিশ্লেষণ(সি এন জি), পুজিবাদের জাতগুস্টি উদ্ধার(বিদেশে আটকা পড়া),ভাষাতত্ত্ব (অকৃতদার) , ডিজুসিও কথোপকথন (বাৎচিত) , চলচিত্র কথন (অযান্ত্রিক), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর ইতিহাস,মধুদার ক্যান্টিনের শানে নজুল , সেক্সপিয়ার থেকে ছফা, যৌনতার শিহরন ( আমি আবার সেক্স লিখাটা দেখামাত্রই শিহরিত হৈ )
,স্থাপত্য কৌশল ,সচলের মেহমান নির্যাতন,লুই কান থেকে পাপিয়া, গীতাঞ্জলী থেকে শুরু করে পার্লামেন্ট স্পীচ !!!
কি নেই এতে?????
এত অল্প শব্দে এত কিছুর সমাবেশ,এত বিন্যাস !!!
আপনার হবে,
সরি আপনার হয়েছে
নতুন মন্তব্য করুন