[পর্ব 1]
ওল্ড ফেইথফুল গাইজার
ইয়োলোস্টোনের অসংখ্য গাইজারের মধ্যে সবচাইতে বিখ্যাত গাইজার হচ্ছে ওল্ড ফেইথফুল গাইজার। ওল্ড ফেইথফুলই হচ্ছে ইয়োলোস্টোনের প্রথম গাইজার যাকে প্রথম অফিশিয়ালি নাম দেয়া হয়। ফেইথফুল নাম দেয়ার কারন হচ্ছে এটা ইয়োলোস্টোন জাতীয় উদ্যানের বিশ্বস্ত গাইজার গুলির একটি যেটা প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময় পরপর জলোৎপাত ঘটায় (প্রায় ৯১ মিনিট)।
সব গাইজার নির্দিষ্ট সময় মেনে জলোৎপাত ঘটায় না, এটা অনেকটাই র্যান্ডম। কোন গাইজার কখন জলোৎপাত করবে সেটা বছরের পর বছর সংগ্রহ করা ডাটা থেকে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়। এই ডাটাগুলো যারা সংগ্রহ করেন তারা গাইজার গেজার নামে অত্র এলাকায় সুপরিচিত।
আমার অনেকদিনের ইচ্ছে ছিল ওল্ড ফেইথফুলের জলোৎপাত খুব কাছে থেকে পর্যবেক্ষন করার। আমরা যখন ওল্ড ফেইথফুল পৌছালাম তখন ক্ষনিক আগেই একটা জলোৎপাত হয়ে গেছে। পরবর্তী জলোৎপাত দেখার জন্য প্রায় ৯০ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে। আমাদের গ্রুপের অনেকেই এই সময়টা মধ্যাহ্ন ভোজ করতে চলে গেল। আমিও প্রায় ফাঁকা ময়দান দেখে ক্যামেরা আর ট্রাইপড নিয়ে ওল্ড ফেইথফুলের জলোৎপাতের সবচেয়ে ভালো দৃশ্য দেখা যায় সেরকম একটা জায়গায় সামনের সারির একটা বেঞ্ছে বসে পড়লাম।
[৩] ক্যামেরা আর ট্রাইপড নিয়ে প্রতীক্ষার প্রহর
এবার দীর্ঘ প্রতীক্ষার পালা। বসে বসে ওল্ড ফেইথফুল নিয়ে পড়া নিবন্ধগুলো একে একে মাথাচাড়া দিতে লাগল। ওল্ড ফেইথফুলকে একসময় এলাকাবাসী বস্ত্র ধৌত করার কাজে নিয়মিত ব্যবহার করত। তারা কাপড় চোপড় গুলি গাইজারের জলোৎপাতের প্রবেশপথের উপর রেখে দিত। যখন জলোৎপাত ঘটত তখন প্রচন্ড বেগে বের হওয়া ফুটন্ত জল এবং জলের সাথে মিশে থাকা বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থের বিক্রিয়ায় কাপর চোপড় গুলি ধবধবে পরিস্কার হয়ে যেত! মাঝে মাঝে অবশ্য পানির প্রচন্ড বেগের জন্য কাপড় ছিড়ে ফালা ফালাও হয়ে যেত। আমারও ইচ্ছে করছিল ইয়োলোস্টোন থেকে কেনা টিশার্টটা ওল্ড ফেইথফুলের পানিতে ভিজিয়ে নিতে, কিন্তু এখন কাছে যাওয়া নিষিদ্ধ :(।
কারন হিসবে উদ্যান কর্তৃপক্ষ বলল অনেকসময় ট্যুরিস্টরা পাথর ফেলে গাইজারের ক্ষুদ্র উন্মুখপথ বাধাগ্রস্থ করে ফেলে, যা গাইজারের জলোৎপাতের বিঘ্ন ঘটাতে পারে।
[৪]ওল্ড ফেইথফুলের জলোৎপাত দেখতে আসা ট্যুরিস্টদের একাংশ
প্রতীক্ষার পালা শেষ হওয়ার বেশ আগেই আকস্মিক জলোৎপাত! না না ওল্ড ফেইথফুল নয়, ওল্ড ফেইথফুলের নিকটে অবস্থিত আরেকটি গাইজারের জলোৎপাতের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য!
[৫] ওল্ড ফেইথফুলের নিকটে অবস্থিত আরেকটি গাইজারের জলোৎপাত
ওল্ড ফেইথফুলের এক একটি জলোৎপাতে প্রায় ১৪০০০ থেকে ৩২০০০ লিটার পানি , ৩২ মিটার থেকে ৫৬ মিটার পর্যন্ত উচ্চতায় প্রবল বেগে প্রবাহিত হয়। সম্পুর্ন জলোৎপাতে প্রক্রিয়াটি দেড় থেকে মাঝে মাঝে পাঁচ মিনিট পর্যন্ত স্থায়ী হয়।
অবশেষে প্রতীক্ষার প্রহর শেষ হল। ঘুম থেকে জেগে উঠল ওল্ড ফেইথফুল। প্রাণভরে উপভোগ করলাম ওল্ড ফেইথফুলের অসাধারন সুন্দর ইরাপসনের দৃশ্য!.
আমার ক্যামেরায় ধারন করা ওল্ড ফেইথফুলের জলোৎপাতের ভিডিও।
মন্তব্য
বেশি ছোট লেখা হয়ে গিয়েছে। পড়ে মন ভরল না। আর একটু লিখতে পারতেন।
-ব্যাঙের ছাতা
লিখব, এখন থিসিস লেখা নিয়ে একটু ব্যস্ত সময় যাচ্ছে। লেখা পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
ভিডিও করার সময় যদি ক্যামেরাটা সমান্তরাল না রেখে উল্লম্ব করে ধরতেন, তাহলে হয়তো আর টিল্ট করতে হতো না। পুরোটা ফ্রেমে না আসায় নাটকীয় মুহূর্তটা ফসকে গেছে।
ঠিক বলেছেন হিমু ভাই। এই ব্যাপারটা আমার নাটকীয় মুহূর্তটা আশার সময় খেয়াল হয়েছিল, কিন্তু তখন আর সময় ছিল না ।
চমৎকার জায়গা দেখার মত । আগেরটার মতই বর্ণনা কম। অনেক ভালো একটা বিষয় ।
ধন্যবাদ আপনাকে। চউ দা এখন ইয়োলোস্টোন সফরে আছেন, উনার কাছে থেকে বিস্তারিত লেখা আশা করছি।
ঠিক। তিনি এখন ইয়েলোস্টোন জামে মসজিদে তাবলীগে আছেন। এক চিল্লা দেয়ার আগে মসজিদ থেকে বাইর হওয়ার সিস্টেম নাই মনেহয়।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
আচ্ছা বইতে আগে উচ্চারণটা গেইজার লিখত, আপনি যে গাইজার ব্যবহার করেছেন সেটা কি সঠিক উচ্চারন মতে? একটু জানিয়েন-
facebook
গাইজার ঠিক আছে অণু ভাই, এখানে এরা গাইজারই উচ্চারণ করে। এখানেও দেখলাম বলল গাইজার অথবা গিজার হবে, গেইজার না।
..................................................................
#Banshibir.
আমিও প্রথমে গেইজার বলতাম, কিন্তু এখানকার বন্ধুদের সাথে কথা বলে জানতে পারলাম উচ্চারণ গাইজারই হবে।
চলুক ঘুরাঘুরি...
আবার থাম্ব!
দুর্দান্ত একটা পোস্ট দিলেন ভাই। ভিডিও দেখে মনটা ঠান্ডা হয়ে গেল - আপনার পরিশ্রম সার্থক
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
আপনাদের ভাগ্যকে হিংসাই!
হা হা হিংসা করা ভালো নয় ভাই ডি
আমাদের দেশে এমন গাইজার থাকলে আশপাশটা লন্ড্রির দোকানে ভরে যেত আর স্থানীয় এমপি ও বিরোধী দল এটা দখল দেয়ার জন্য সেরম ব্যাবস্থা নিত
পোষ্ট ভাল লাগল ।
তা যা বলেছেন
লেখা তো ভাল লাগছে অনেক। ছবির কথা আগেই বলেছি
ঘুরাঘুরি লেখালেখি জোরসে চলুক
---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।
আপনার সাথে থাকলে সবই হবে
স্টিমবাথ বলে একটা সেইরকম জিনিস আছে, নাম শুনছি।
গেইজার/গাইজার/গিজারের ছবি দেখে আমার মনে হচ্ছে জায়গামতো একটা তোয়ালে জড়ায়ে, হাতে একটা সুগন্ধি লাক্স বিউটি সাবান নিয়ে ওখানে গিয়ে খাড়ায়ে পড়লে কেমন হয়?
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
আইডিয়া খারাপ না তবে পুচ্ছতে ফোস্কা পড়ে যাবার সম্ভবনা আছে
যুমার নামে আমি একজনকে চিনি আপনি সেই যুমার কিনা বুঝলাম না।
চরম হয়েছে।
অপহত।
নতুন মন্তব্য করুন