জাতির ভাইয়া যখন লনটন থেকে আবার দেশে আসবে তার কয়েকদিনের মধ্যেই সে একবার সাধারণ ডায়রিয়ায় (এখন থেকে লেখায় ডায়রিয়া বললে সাধারণ ডায়রিয়া বুঝতে হবে) ভুগবে। কারণ হলো ঢাকায় পারা দিয়েই সে সবার আগে গুলিস্তানের হকার ইয়েছদিনের হাতে বানানো পিয়াজু, চটপটি, চা আর ডেসার্ট হিসেবে ফালুদা খাবে। (এই গ্রুপকে আমরা বলব "নো এক্সপোসার" বা বিদেশী গ্রুপ)
বিজয় ভাইয়া যখন ল্যান্ড অব অপোরকেচিমটি দেশ থেকে এসে একই জিনিষ খাবে তখন জাতীয় ভাইয়ার মত কনফার্ম ডায়রিয়াতে না ভুগলেও ভোগার লাইনে থাকবে। "কনফার্ম" বললাম এই কারনে যে বিজয় ভাইয়া মাঝে কয়েকবার দেশে আসছিল এবং ধরে নিলাম সে প্রতি ভিসিটে একবার হলেও ইয়েছদিনের দোকানে খেয়েছিল। (এই গ্রুপকে আমরা বলতে পারি মডারেটলি এক্সপোসাড বা গুলশানের পোলাপান)
আর ম্যাঙ্গোপিপল যারা কিনা প্রায়দিনই ইয়েছদিনের দোকানে খাচ্ছে তারা ডায়রিয়ায় ভুগবে না, কারণ তাদের শরীর সয়ে গেছে (এই গ্রুপকে আমরা বলবো টোটালি এক্সপোসড বা বস্তির পোলাপান)
মূল আলোচনায় যাবার আগে একটু ব্যাখ্যা করা দরকার ব্যাকটেরিয়া জনিত সাধারন ডায়রিয়া কে করছে। এটা মূলত করছে কলিফ্রম (Coliforms) গ্রুপের ইএসরেচি(সি)য়া কলাই (Escherichia coli) নামক ব্যাকটেরিয়া গুলো। সংক্ষেপে যাকে আমরা প্রায়ই বলি ই কলিoli। এদের আবার অনেক ভাই বেরাদার আছে। কেউ নিরীহ আবার কেউ ভয়াবহ। এরা আমাদের পেটের ভিতরে জন্ম থেকেই আছে, তাই আমরা এদের বলি "নরমাল ইনটেসটিনাল ফ্লোরা" (বাংলা নাম দেয়া অনার্য সঙ্গীতের কম্ম!!) এরা এতটাই নিরীহ যে আপনি পৃথিবীর সব থেকে উন্নত দেশের খাবার পানিতেও এদেরকে খুজে পাবেন (তবে একটা নির্দিষ্ট মাত্রায়) এবং চোখ বন্ধ করে পানির সাথে সাথে আপনার পেটে চালান করে দিতে পারবেন কোন সমস্যা ছাড়াই।
এখন যে বিষয়টার প্রতি আমাদের নজর দিতে হবে সেটা হলো নির্দিষ্ট মাত্রা বা ব্যাকটেরিয়াল লোড। অংকের খাতিরে ধরে নেই ডায়রিয়া করতে আপনাকে কমপক্ষে ১০০ টা ব্যাকটেরিয়া খেতে হবে। এখন ডায়রিয়া করে এমন জীবাণু যখন আপনি ১০/১২ টা খাবেন (উদাহরণ হতে পারে উন্নত দেশের একগ্লাস খাবার পানি) তখন কিছুই হবে না কিন্তু যখন তৃতীয় বিশ্বের কোন দেশের একই পরিমান পানি খাবেন যেখানে আছে ১০০০ টা ব্যাকটেরিয়া, ডায়রিয়া আপনার হবেই, কেউ ঠেকাইতে পারবে না।
তাহলে চিন্তা করে দেখেন সেই পানি আপনি দিনের পর দিন খেয়েই যাচ্ছেন। তাহলে দেখা যাচ্ছে উপরের সূত্রমতে আপনার প্রতিদিনই ডায়রিয়াতে ভুগতে হইতো। সেইটা কি হচ্ছে। হয়ত বলবেন আপনে "গুলশানের পোলাপান গ্রুপ" (যারা ফিল্টার করা বা ওয়াসার পানি ফুটাইয়া পান করেন) তাই আপনার রেগুলার ডায়রিয়া হয় না, কিন্তু মাঝে মাঝে যখন বাইরের খাবার বা পানি খান তখন হয়।
ওকে তাইলে আপনে বাদ, এইবার নজর দেই "বস্তির পোলাপান গ্রুপে"। তাইলে কি ওরাও উপরের সূত্রমতে সারাদিন হাগু করতেই থাকে বা গ্রামের পোলাপান, যারা ময়লা পুকুর বা ডোবার পানি যখন তখন খাইতেছে, গোছল করতেছে তাদের সাথে সাথে গরু-বাছুরও গোছল করতেছে একসাথে!! আপনার কি আসলেই মনে হয় ওরা সারাদিন ঝোপের আড়ালেই থাকে আর হাগু করে?
উত্তরটা হইলো না!!
[বিদেশী গ্রুপের কথা আর বিস্তারিত আলোচনা করলাম না ওরা এমনি এমনি ডায়রিয়ায় ভুগবে যখন তৃতীয় বিশ্বে ভ্রমণ করবে। আগ্রহীরা দেখতে পারেন ]এখানে
কিন্তু তাইলে কি উপরের সূত্র ভুল। তাও না। ম্যাজিকটা হইলো আমাদের শরীরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। অনার্য সঙ্গীতের এই পোস্টে করা কমেন্টে একটু আলোচনা করেছিলাম, সংক্ষেপে শুধু এইটুকু বলি। আমাদের শরীরের দুই ধরণের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বিদ্যমান: একটা স্বল্প মেয়াদি (ইনেট ইমুনিটি) অন্যটা দীর্ঘ মেয়াদি (হিউমোরাল ইমুনিটি)। কোন "ফরেন পার্টিকেল" (হতে পারে এটা কোন জীবাণু বা জীবাণুর ভগ্নাশং) যখন আমাদের শরীরে প্রবেশ করে তখন প্রথমেই আমাদের শরীরের স্বল্প মেয়াদি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় হয়ে উঠে এবং শরীর থেকে "ফরেন পার্টিকেল" বের হয়ে গেলে তারা আবার ব্যারাকে ফিরে যায়। তাই যখন আপনি ডায়রিয়া করে এমন জীবাণুযুক্ত পানি বা খাবার প্রতিদিন বা ঘন ঘন খাচ্ছেন তখন আর স্বল্প মেয়াদি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাপকদের ব্যারাকে ফেরা হচ্ছে না তারা সদা জাগ্রত ভাবে জীবাণু ধ্বংস করে যাচ্ছে আর তাই বস্তির বা গ্রামের পোলাপান প্রতিদিন ডায়রিয়াতে ভুগছেন না।
তবে এটা মনে রাখতে হবে ডায়রিয়া শুধু এই ধরণের ব্যাকটেরিয়া (এখানে যাদের কথা বলা হয়েছে) দিয়ে হয় না। ডায়রিয়া করে এরকম হাজারটা জীবাণু আছে, যাদের ক্ষেত্রে উপরের ব্যাখ্যা উপযুক্ত না তাই রোগ জীবাণু প্রতিরোধে যতটা সম্ভব পরিস্কার খাবার এবং পানি পান করতে হবে।
তাহলে এই ধরণের ডায়রিয়া থেকে কি বাঁচার কোন উপায় নাই? কোন ভ্যাকসিন কি আছে এই রোগের?
কানে কানে বলি আছে। কাউকে বলবেন না কিন্তু এইটা আমার বিজনেস সিক্রেট: ওয়াসার পানি ভাল মত ফুটিয়ে পান করুন প্রতিদিন তাহলেই ভ্যাকসিনের কাজ করবে।
ক্লোন৯৯
মন্তব্য
এই লেখাটা পড়ার আগেই নিচে এসে নাম দেখে গিয়েছি আপনি লিখেছেন কিনা! আপনার নাম দেখে আগ্রহ বেড়েছে। আপনাকে আপনার মন্তব্য থেকে চিনি। লিখেছেন দেখে ভালো লাগছে। এবার লেখা প্রসঙ্গে আসি।
ইমিউনিটির যে দুটো প্রকারের কথা আপনি বলেছেন সেটি পড়ে মারাত্মকভাবে বিভ্রান্ত হয়ে গেছি।
আপনি বলেছেন,
দুই ধরণের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বিদ্যমান, সেটি নির্ভুল! কিন্তু আপনি ইনেট ইমিউনিটিকে স্বল্পমেয়াদী কেন বলছেন? রোগপ্রতিরোধের দুটি স্তরকে আলাদা করে ফেলা সহজ নয়, এদুটি পরস্পরের সঙ্গে দারুণভাবে সম্পৃক্ত এবং পরস্পরের উপর নির্ভরশীল। কিন্তু সরলভাবে ইনেট ইমিউনিটি হচ্ছে প্রাথমিক রোগ প্রতিরোধ ব্যাবস্থা। যেই রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা সব জীবাণুর জন্যে সবসময় একই রকমভাবে কাজ করে।
নতুন কোন জীবাণুর জন্য ইনেট ইমিউনিটিকে প্রস্তুতি নেয়ার প্রয়োজন নেই। পূর্বে কোন জীবাণু শরীরে এসেছে সেটি ইনেট ইমিউনিটি চিনতে (মনে রাখতে) পারে না। ইনেট ইমিউনিটি স্বতন্ত্রভাবে কখনো উত্তরোত্তর শক্তিশালী হয়ে ওঠে না। ইনেট ইমিউনিটি কখনো স্বল্পমেয়াদী নয়। বরং সার্বক্ষণিক! ইমিউনোলজির প্রথম ক্লাসে এই কথাগুলি পড়তে হয়। (সচলে আমার প্রথমদিককার কয়েকটি লেখা ছিল এই বিষয়ে। অনেকটা অগোছালো হালকা লেখা, কিন্তু রোগপ্রতিরোধের দুইটা স্তর সম্পর্কে লেখা। পড়তে পারেন: ১ এবং ২।)
একটু ব্যাখ্যা করবেন? সর্বক্ষণ ইনফ্লামেশন হলে সেটা রোগপ্রতিরোধে সহায়ক বলছেন কি? মর্মার্থ বুঝতে পারিনি।
শরীরে সয়ে যাওয়ার কৃতিত্ব আপনি আসলে কোন দলকে দিলেন? ইনেট নাকি অ্যাডাপটিভ? আপনার উত্তরের জন্য আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছি।
জীবাণু সেদ্ধ করে খেলে কখনো কখনো তার একটা ভ্যাকসিন হিসেবে কাজ করার সম্ভাবণা রয়েছে কিন্তু সেই সম্ভাবণা লটারি পাওয়ার মত! ওয়াসার পানি ফুটিয়ে খান নিশ্চয়ই, কিন্তু তাতে প্রতিরোধী হয়ে গেছেন ভেবে অসতর্ক হলে বিপদ!
লেখা চালু থাকুক।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
প্রথমেই মডুদের ধন্যবাদ লেখা প্রকাশের জন্য। এইটুকু লিখতেই মানে ইংরেজী থেকে বাংলা করতে পায়ের ঘাম মাথায় উঠে গেছে!! উফফ।
@অনার্য সঙ্গীত, বিভ্রান্ত করার জন্য দু:খিত, এটা হয়ত হয়েছে ল্সট ইন ট্রান্শলেশনের বা বুঝানোর অক্ষমতার জন্য। ইমুনিলজি ভাল লাগে না তাই ক্লাশ খুব ফাকি দিতাম তার ফল হাতে নাতে টের পাচ্ছি এখন। আপনার লেখাগুলো পড়েছি আগেই ধন্যবাদ।
ঠিক!! কিন্তু পরের স্টেপে মানে এনটিজেন প্রেজেন্টেশনেতো ভূমিকা রাখে। তাই যখন একই ব্যাকটেরিয়া দিয়ে হোস্ট আবার ইনফেকটেড বা রিপিটেড ইনফেকশন (এখনে হয়ত ইনজেসন হবে) হচ্ছে তখন আর আপনার গিলেখাদকের প্রসেসিংয়ের জন্য টি-সেলদের অপেক্ষা করতে হচ্ছে না তারা সরাসরি ঢিশুম ঢিশুম করে নতুন আশা ব্যাকটেরিয়াকে মেরে ফেলছে!!
উহু উপরের এপিসি-র কথাই বুঝিয়েছি।
দু-দলকেই
আমি কিন্তু পোস্টে সেটা উল্লেখ করেছি এবং বলেছি শুধুমাত্র সাধারণ ডায়রিয়া করে এমন অণুজীবের জন্য প্রযোজ্য এবং সতর্ক থাকার কথাটা তাই ব্লোড করে দিয়েছি। আসলে এই পোস্ট লেখার ইচ্ছাটা হয়েছে ওয়াসার পানির জন্যই, পরের কোন পোস্টে বিস্তারিত বলার ইচ্ছা আছে।
ধন্যবাদ।
শরীরের প্রাথমিক রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা সকল ক্ষেত্রে জীবাণুর আক্রমণে একই ভুমিকা পালন করে। যে অ্যান্টিজেন প্রেজেন্টেশনের কথা বলছেন, সেটাকে 'সংকেত দেয়া' বলা যেতে পারে। কারো শরীরে একশোবার একই জীবাণু প্রবেশ করলে একশোবারই ইনেট ইমিউনিটি একইভাবে "সংকেত দেবে"। কতবার সংক্রামিত হল তার উপর নির্ভর করে তাদের সংকেত দেয়ার ধরণ বদলাবে না।
অথচ আপনি বলছেন,
এই কথার ব্যাখ্যা আপনি যেভাবে করেছেন সেটি গ্রহনযোগ্য মনে হয়নি। ইনেট ইমিউনিটি সবসময় একই রকম। তাদের ব্যারাকে ফেরা বলে কী বোঝালেন তা বুঝতে পারিনি! তারা সদাজাগ্রত হয়ে জীবাণু ধ্বংস করে যাচ্ছে নিশ্চয়ই কিন্তু প্রথম বারের তুলনায় দ্বিতীয়বার সংক্রমণে সেই জাগ্রত হওয়ার শক্তি বেড়ে যাচ্ছে না। যেমন বললাম, একশোবার একই জীবাণু আসলে একশোবারই ইনেট ইমিউনিটি একই আচরণ করবে।
আগ্রহী পাঠক জানতে চাইতে পারেন, তাহলে ইমিউনিটি শক্ত হয় কখন/কীভাবে?
প্রাথমিক রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা কোন জীবাণু আসলে দ্বিতীয় রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থা'কে (এরপর ২য় দল বলব) সংকেত দিতে পারে (অ্যান্টিজেন প্রেজেন্টেশন ইত্যাদি)। ২য় দলের বিশেষত্ব হচ্ছে এরা জীবাণু চিনতে পারে। কিন্তু সেই চিনতে পারার জন্য এবং লড়াই করার জন্য তাদের প্রস্তুতি নেয়ার সময়ের দরকার হয়। একবার কোন জীবাণু এলে তারা সংকেত পেয়ে যুদ্ধের প্রস্তুতি নেয়, পরের বার জীবাণু এলে তাদের নতুন করে প্রস্তুতি নিতে হয়না। তারা আগের বারই প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। একবার জীবাণুর সংস্পর্শে আসলে যে প্রতিরোধী হয়ে ওঠা যায় সেটির মূল কারণ হচ্ছে এই। ২য় দলের প্রস্তুতি নিয়ে থাকা মানেই আপনি সাধারণভাবে রোগ প্রতিরোধী।
কিন্তু আমি আমার লেখায় বললাম, যে জীবাণু খেয়ে খেয়ে জীবাণু সহনশীল হয়ে যাওয়া একটা ভ্রান্ত বিশ্বাস। সেটি অনেকগুলো কারণে বলেছি:
- ২য় দল সব জীবাণুর ক্ষেত্রে প্রস্তুতি নিয়ে প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলে না।
- অনেক সময় প্রস্তুতি নিলেও তা ক্ষণস্থায়ী। সেইজন্য ক্ষেত্রেবিশেষে আজকে যে আসুখ হয়েছে তা কালকে না হলেও হয়ত দুমাস পরে হতে পারে।
- একই রকমের রোগ অসংখ্য জীবাণু সৃষ্টি করতে পারে। প্রতিরোধের আশায় অসতর্ক হলে প্রতিরোধের আগে আপনার মৃত্যুও হতে পারে।
সাধারণভাবে এইসব কারণে আমি বললাম, (যদিও সংক্রমণের ফলে রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্তা শক্ত হওয়া সম্ভব) "বাঙালির পেটে সব সয় এটা ভ্রান্ত ধারণা"।
আপনি বললেন,
এইটার ব্যাখ্যা হিসেবে আপনি অ্যান্টিজেন প্রেজেন্টেশনের কথা বললেন। কিন্তু এইটা সত্য নয়। ক্রমাগত অ্যান্টিজেন প্রেজেন্টেশন হচ্ছে বলে (যদিও এইটা একটা আজব কথা হল!) কারো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি হবে না। যদি অ্যান্টিবডি তৈরি হয় তাহলে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে। কিন্তু সেইটা সবক্ষেত্রে হবে না, কখনো কম হবে, কখনো একেবারেই হবে না, কখনো ক্ষণস্থায়ী হবে।
আমার কাছে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের রোজ রোজ ডায়রিয়া না হওয়ার অন্য একটি ব্যাখ্যা আছে। প্রথমত, ওয়াসার পানি মানেই "রোগসৃষ্টিকারী" জীবাণু নয়। ওয়াসার পানিতে ক্লোরিন থাকে যেইটা খুবই দারুণ এবং দীর্ঘস্থায়ী জীবাণুনাশক। তবে অবশ্যই তাদের পানি ভালো মানের নয়, এবং অনেক সময়েই জীবাণু থাকা সম্ভব। আবার পুকুরের পানির একটি অনন্য বৈশিষ্ট হচ্ছে, সাধারণভাবে এই পানি ক্ষতিকর জীবাণুমুক্ত। মহামারীর সময় ছাড়া এটাতে হাজারো জীবাণু পাওয়া যাবে কিন্তু রোগসৃষ্টিকারী জীবাণু তারমধ্যে কমই মিলবে। তারপরও এই পানি থেকে ডায়ারিয়া হয়। যখনই সংক্রামিত হতে পারে তখনই হয়। প্রসঙ্গত গ্রামের ছেলেমেয়েরা পুকুরের পানি সাধারণত খেয়ে ফেলে না। গোসল করে, রান্না করে, সরাসরি খায় না। অন্তত নিকট অতীতে আমাদের গ্রামে আমি তা দেখিনি।
সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের রোজ রোজ ডায়ারিয়া হচ্ছেনা তারমানে তাদের রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থা শক্ত, তা নয়। এইসব শিশুরাই পারসিস্টেন্ট ডায়ারিয়ায় আক্রান্ত থাকে। ডিসেন্ট্রি এদের অতি কমন রোগ। এটা এদের জীবনের অংশ হয়ে গেছে। এর জন্য কিন্তু এদেরকে সবসময় ঝোপের আড়ালে বসে থাকতে হয়না।
তারপরও কি রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থা তৈরি হয়না? নিশ্চয়ই। অনেকক্ষেত্রে হতেও পারে। কিন্তু আবারো বলি, অ্যান্টিবডি তৈরি না হলে একশোবার জীবাণু খেলে একশোবারই ডায়রিয়া হবে।
শরীরে সয়ে যাওয়া বলতে যে অ্যান্টিবডি তৈরি হওয়া, সেটির কৃতিত্ব শুধুমাত্র দ্বিতীয় পর্যায়ের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার। দুই দলই এই কৃতিত্ব পায় না। আপনি কেন দুই দলকেই এই কৃতিত্ব দিলেন তা জানিনা!
এটিতেও আপত্তি রয়েছে। ডায়রিয়ার জীবাণু মাত্রই সেদ্ধ করে খেলে ভ্যাকসিনের কাজ করবে না। যদি করত তাহলে এই বিষয়ে বছর পাঁচেক গবেষণা করে ডায়ারিয়ার সর্বব্যপী টিকা তৈরি করে ফেলা যেত। টিকা বিষয়টি ভয়ানক জটিল। আপনি নিশ্চয়ই ভালো জানেন। তবে এই প্রসঙ্গে বেশি কিছু বলার নেই। পানি ভালোমত সেদ্ধ করে সবাই খাক। তাতে যদি ইমিউনিটি তৈরি হয় হোক, নাহলেও যদি কারো মনের জোর বাড়ে তো বাড়ুক। পানি সেদ্ধ করে খেলেই হল।
আমার মন্তব্য খানিকটা তর্কের মত। কিন্তু সেটা আপনার প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই করেছি। আপনার সঙ্গে নিশ্চয়ই বিজ্ঞানের নানা বিষয়ে তর্ক-আলোচনা হবে। আপনি সচলে স্থায়ী হবেন, আরো অনেক লেখা লিখবেন, লেখার সমালোচনা করবেন, মাথা আউলে দেয়া তর্ক হবে, সেই আশায় রইলাম। আমি খুবই আশা করে আছি সচলায়তনে আরো একজন নিয়মিত জীববিজ্ঞান নিয়ে লিখবেন।
শুভেচ্ছা।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
সারছে!! এখন আবার তর্ক করতে হইবো!!জেনারেল রিডাররের জন্য এপিসি বা ইমোনুলজি ১০১ বা ২০১ একটু বেশী হয়ে যায় না। যাউগ্গা পরের পর্বে ক্লিয়ার হইবো আশা করি কি কইতে চাইতেছি আর কি লিখতাছি আমি। কালকে সকালে ল্যাব আছে আপনের বাকী বিষয়ে পরে লিখতাছি।
০১
ক) আপনার, আমার বা আমাদের লাইনের ইমুনলজি জ্ঞাণ সাধারণ পাঠকের থেকে একটু বেশি নি:সন্দেহে, তাই আপনার/আপনার মত যারা আছেন তাদের জন্য আমার বক্তব্য হচ্ছে আমি ইচ্ছা করেই মাঝের কিছু স্টেপ অমিট করে গেছি, সেটা বুঝতে পারছেন বলেই আপনার কাছে হয়ত আমার লেখাগুলো খটমট লাগছে কারণটা হলো আমার মনে হয়েছে এই মাঝের স্টেপগুলোর থেকে ফাইনাল স্টেপ বা তার কাছাকাছি এন্ড প্রোডাক্ট হয়ত সাধারণ পাঠকের (জেনারেল রিডার) জন্য আরাম দায়ক হবে।
খ) আমার বাংলা শব্দ চয়নেও সমস্যা আছে, সেটা হয়ত ভবিষ্যতে ঠিক হবে
গ) ফাইনালি আমার আর আপনার ব্যাখ্যার মূল পার্থক্যটা মনে হয় এটা যে আমি যা বলছি পুরোটাই "সাধারণ (জেনারেল) ডায়রিয়া" ঘটায় এমন জীবাণুর প্রক্ষিতে এবং আমার টোটাল ফোকাস এখন পর্যন্ত সেখানেই আছে আমি ম্যাক্রোফাজকে ফাকি দেয়া ব্যাকটেরিয়া বা রোটা ভাইরাস নিয়ে এখনই কিছু বলতে চাচ্ছি না। তাই আমি বার বার লিখছি "সাধারণ ডায়রিয়া" ঘটায় এমন অণুজীব
০২
T cells cannot recognise, and therefore react to, 'free' antigen. T cells can only 'see' antigen that has been processed and presented by cells via an MHC molecule. Most cells in the body can present antigen to CD8+ T cells via MHC class I molecules and, thus, act as "APCs"; however, the term is often limited to those specialized cells that can prime T cells (i.e., activate a T cell that has not been exposed to antigen, termed a naive T cell). These cells, in general, express MHC class II as well as MHC class I molecules, and can stimulate CD4+ ("helper") cells as well as CD8+ ("cytotoxic") T cells, respectively.
স্বলমেয়াদি বলতে আমি টি সেলের কথাই বুঝাতে চেয়েছিলাম কিন্তু আর সাবক্লাস বা এক্সেপ্লেনশে যাই নি আর আপনার গিলেখাদক যেহেতু এই কাজে জড়িত তাই হয়ত ইনেট ইমুনিটির কথা বলেছিলাম। এখন এখানে যদি অন্য কোন শব্দ বেশী উপযোগি মনে হয় সেটা ব্যবহার করা যেতে পারে (এনি সাজেশন??) এখন আবার ফিরে যাই এক্সপোসারে। যখন আপনি কনসটান্ট সাপ্লাই পাচ্ছেন কোন ব্যাকটেরিয়ার তখন এক ধরণের গিলেখাদকরা সমানে কাজ করে যাচ্ছে মানে এন্টিজেন প্রেজেন্ট করে যাচ্ছে আর টি সেল গপাগপ তাদের সাবার করে চলেছে (আবারও স্টেপ অমিট করে গেলাম)। এখন যদি গ্যাপ দিয়ে দিয়ে এক্সপোসার হয় এপিসি কাজ করতে যদি ১ সপ্তাহ সময় নেয় তাহলে এন্টিজেন প্রেজেন্টেশনে সময় লাগছে ঠিক কিনা? তকন টি সেল কাকে টার্গেট করবে (ব্যারাকে ফিরে যাবার কথাটা সে এঙ্গেলেই বলা)। সেই এক সপ্তাহেতো আর ব্যাকটেরিয়া বসে থাকবে না আমাদের ঠিকই পাতলা হাগু করাইয়া ছাড়বে।
০৩
এইটা আবার আমি বুঝি নাই। আপনে হয়ত ব্লাড বর্ন ইনফেকশেনে কাহিনি বুঝাইতে চাইছেন। আপনার থিংকিংটা যদি শুধু মিউকোসাল ইমুনলজিতে রাখেন তাইলে হয়ত আমার ব্যাখ্যা করতে সুবিধা হয় তাই আর সেইটা আজব লাগবে না, কেন ০২ তে ব্যাখ্যা করছি। আর একটু এড করি যেহেতু এইখানে বি সেলের কোন কাজ কারবার নাই পুরাটাই টি সেল নির্ভর তাই আমার মনে হয় ক্রমাগত এপিসি ইজ ভেরি জরুরী
০৪
আপনেতো দেখি লোকজনরে ভয় পাওয়াইয়া দিতাছেন। আপানর জন্য একটা হোম ওয়ার্ক এই ব্যাকটেরিয়ার নাক কি?
এরা হচ্ছে ই কলির যমজ ভাই তাই আপনার এই লাইনে কঠিন ভাবে দ্বিমত:
আমি ডিসেন্ট্রির কথা বলছি না বলছি জেনারেল ডায়রিয়ার কথা।
সিদ্ধ পানির ভ্যাকসিনের কথা পরের পোস্টে আসছে।
ধন্যবাদ
মন্তব্যে
ও আচ্ছা এই কথা?
..................................................................
#Banshibir.
হুম
ভালো লাগল। আরো লিখবেন আশা রাখি।
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
ভাইরে ইচ্ছাতো করে কিন্তু অনুবাদ করতে গেলে ইচ্ছাটা বাষ্পিভূত হয়ে যায়। ধন্যবাদ
লেখা পড়তে মজা লেগেছে - তবে নতুন কিছু জানতে চাই!
ধন্যবাদ। নতুম কিছু!! (মাথা চুলকানোর ইমো হবে)
আসলে এই অংশটুকু একটু ভূমিকা বলতে পারেন পরের অংশের জন্য (ওয়াসার পানি ফুটিয়ে খাওয়া নিয়ে)। সেটার জন্য কিছু কার্টুন ছবি আকতে হবে যেটা কষ্ট সাপেক্ষ তাই এই পোস্ট মডুরামের দরজা পার হয় কিনা সেটারও টেস্ট বলতে পারেন
"ডায়রিয়া করে" কথাটা জুতসই লাগলো না। আপনি কি "Causes diarrhea" এর বাংলা করতে গিয়ে এটা ব্যবহার করেছেন? এর চেয়ে ডায়রিয়া ঘটায় বেটার।
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
"ডায়রিয়া করে" > "ডায়রিয়া ঘটায়" খারাপ না ভালই তো লাগছে। সাজেশনের জন্য ধন্যবাদ
লেখার ধরন ভাল্লাগসে। তবে অনার্যদার মন্তব্যর একটা জবাব রাখলে আরও কিছু জানতে পার্তাম---
ধন্যবাদ।
রাখলাম
ফুড হিসেবে স্ট্রিটফুড আমার খুব প্রিয়। কিন্তু আপনি তো ভয় পাইয়ে দিলেন!
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ঢাকাইয়া স্ট্রিট ফুড ইজ ডা বেস্ট ফুড ইন ডা ওয়ার্ল্ড!! চটপটি ঝালমুড়ি চা-সিঙ্গারা ছাড়া আমরা বাচুম ক্যামতে? হ্যা একটু ভয়ের বিষয় আছে বটে কিন্তু এইসব না খাইয়া বাইচ্যা থাইকা লাভ কি কন? তয় মাঝে মাঝে খাইলে সমস্যা নাই কবি বলে গেছেন "ডরাইলেই ডর"
চমৎকার।
[আমার চারপাশ]-[ফেবু]-[টিনটিন]
নতুন মন্তব্য করুন