তৃতীয় বিশ্বে পানি ফুটিয়ে খেলে কেন সাধারণ ডায়রিয়ার ভ্যাক্সিন হিসেবে কাজ করবে

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: বুধ, ১২/০৯/২০১২ - ২:২৭পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

অনন্ত জলিলের পরের ছবির শেষ দৃশ্যঃ তার বন্দুকে গুলি এক কিন্তু শত্রু দুই। এক নম্বর শত্রু ইউটিউবে ভিডিও আপ্লোডকারি আর অন্যজন সুজন চৌধুরী, যে কিনা তার ভুরিওলা কার্টুন একেছিল। এখন যদি সে একগুলিতে দুই শত্রুকে খতম করতে চায় তাইলে তার রজনিকান্তের বলাকা ব্লেড থিওরি ছাড়া উপায় নাই!!

কিন্তু আমাদের মানে তৃতীয় বিশ্বের মানুষদের (সাধারণ) ডায়রিয়া প্রতিরোধে গুলির কোন অভাব নাই। তার জন্য চাই শুধু মাঝে মধ্যে দু-একবার ডায়রিয়া হওয়া। অবশ্য অন্য একটা উপায়ও আছে, সেটা হচ্ছে সাপ্লাই (উদাহরণ হিসেবে বলা যায় ওয়াসার পানি) বা কুয়া/পুকুর/খাল-বিলের পানি ভালমত ছেঁকে ফুটিয়ে পান করা, যেটা এখানে আমরা আলোচনা করব। তবে গল্পটা শুরুর আগে দুটো জিনিষ আমরা জেনে নেই।

১) ভ্যাক্সিনঃ ধরেন আপনার প্রায়ই মাথা ব্যাথ্যা করে। বাইরে বের হবার আগে আপনি তাই একটা প্যারাসিটামল খেয়ে বের হন যাতে মাথা ব্যাথ্যা না করে। মানে আপনি আগে থেকেই সতর্ক বা জানেন মাথা ব্যাথ্যাকে কিভাবে মোকাবেল করতে হয় (ডাক্তারি পরিভাষায় একে বলে Prophylaxis)। ভ্যাক্সিনটাও অনেকটা এরকম তবে প্রধান পার্থক্য হল ব্যাথ্যার ওষুধ আপনাকে নিয়মিত খেতে হয় আর ভ্যাক্সিনটা দীর্ঘমেয়াদি জীবনে একবার-দুবার বা মাঝে সাঝে নিলেই হয়। “নিলেই’ বললাম কারণ বেশিরভাগ ভ্যাক্সিন ইঞ্জেকশনের মাধ্যমেই নিতে হয়। তবে মুখে খাবারও অনেক ভ্যাক্সিন আছে। ভ্যাক্সিনকে আমরা প্রধান দুটো ভাগে ভাগ করতে পারি একটা প্রোটিন আর অন্যাটা পলিসেকারাইড বেইসড ভ্যাক্সিন। এই দুইভাগের মধ্য প্রোটিন বেইসড ভ্যাক্সিনটা বেশী দীর্ঘমেয়াদি (লাইফ লং) পলিসেকারাইড বেইসড ভ্যাক্সিন থেকে (পলিসেকারাইড বা প্রোটিন বেজড ভ্যাক্সিন নিয়ে বিস্তর আলোচনার সুযোগ আছে সেটা হয়ত পরে করা যেতে পরে)। আবার কিছু কিছু ভ্যাক্সিন আছে সিজনাল যেমন ফ্লু ভ্যাক্সিন আবার কিছু আছে রোগ-বালাই যেখানে বেশি হয় সেখানে যাবার আগে আগে নিতে হয় যেমন কলেরা ভ্যাক্সিন

২) ডায়রিয়াঃ শরীর থেকে অতিরিক্ত পানি(এবং লবণ) বের হয়ে যাওয়া এবং ফলে পানি শূণ্যতা সৃষ্টি হওয়া। (আমাদের ডায়রিয়া অনেক কারনেই হতে পারে তবে নিচের ছবি-২ তে সাধারণ অণুজীব ঘটিত ডায়রিয়া কিভাবে হয় সেটাই সহজ করে বলতে চেষ্টা করেছি)

ছবি – ১ এটা একটা অণুজীবের কার্টুন। এই অণুজীবের মাথার দিকে লাল, নীল, সাদা আর গোলাপি রংয়ের কিছু ত্রিভুজ, চতুর্ভুজ দেখা যাচ্ছে। এই রংগুলি দিয়ে বিভিন্ন আকারের লিপোপলিসেকারাইডকে বুঝানো হয়েছে।


ছবি – ২ এই ছবিতে আমাদের পেটের ভিতরের নাড়িভুড়ির একটা অংশকে বড় করে দেখান হয়েছে। সাধারণ অবস্থায় এপিথেলিয়াল সেলগুলি একটার সাথে আরেকটা ‘আবুল আঠা” দিয়ে শক্ত করে লাগানো থাকে তাই এধারকা পানি ঊধার বা উধারকা পানি এধারে ইচ্ছা হলেই চলে আসতে পারে না (আমাদের শরীরের হাড্ডি মাংস বাদে সবই কিন্তু পানি)। একইকারণে অণুজীব বা অন্য কিছু যা আমরা হজম করতে পারি না (উদাহরণ: দুবাই ফেরত যাত্রীর পেটে বহন করা সোনার বার!!) এই এপিথেলিয়াল সেলের "টাইট জাংশান" ভেদ করে অন্য কোথাও যেতে পারে না। এখন দেখা যাক সাধারণ ডায়রিয়া ঘটায় এমন একটা ব্যাকটেরিয়া কিভাবে ডায়রিয়া করে (ছবি – ৩ দ্রষ্টব্য)


ছবি – ৩ ডায়রিয়া ঘটায় এমন ব্যাকটেরিয়া যখন অনার্য সঙ্গীতের গিলেখাদকের চোখ ফাঁকি দিয়ে এখানে আসে তখন করে কি আবুলকে ম্যানেজ করে আস্তে করে দুই এপিথেলিয়ালের ভিতরে একটা গ্যাপ সৃষ্টি করে যার ফলে হয় কি পানির ফ্লো যেদিকে বেশি থাকে সেদিকেই যেতে থাকে আর ফলাফল হিসেবে অতিরিক্ত পানি হাগুর মাধ্যমে শরীর থেকে বের হয়ে যাবার জন্য আমাদের ‘হাগন কি থলিতে” (রেক্টামে) ঘন ঘন জমা হয় এবং আমাদের ঘন ঘন বাথরুমে যেতে হয়। তাই এই পানি শূন্যতা পুষিয়ে নেবার জন্য খাবার স্যালাইন খেতে হয়।


ছবি - ৪ গিলেখাদকদের আবার অনেক ভাগে ভাগ করতে পারি আমরা। একধরণের গিলেখাদক আছে যারা ব্যাকটেরিয়াকে পুরা আলুভর্তা বানিয়ে মেরে ফেলে তবে আর একধরণের গিলেখাদক আছে যারা শুধু হাড্ডি মাংস আলাদা করতে পারে কিন্ত ভর্তা করে মেরে ফেলতে পারে না। তারা তখন করে কি ত্রিভুজ বা চতুর্ভুজ আকৃতির লিপোপলিসেকারাইডগুলোকে তার শরীরের বাইরে এক একটা দাগী আসামী যেমন পিচ্চি হান্নান বা মুরগি মিলন হিসেবে প্রেজেন্ট করে। আর তখন রেবের হাতে পরলে তাদেরকে সরাসরি ক্রসফারায়ে ফেলে দেয়। এখন কথা হল রেব এর ভুমিকায় যেসব সৈনিক থাকে তারা তাদেরকে কিভাবে চিনে। সহজ উত্তর হলো তাদের অকৃতি দেখে। একবার হয়ত দেখলো ওরা ত্রিভুজ আকৃতি নিয়ে ঘোরাফেরা করে তাই ওরা তখন ত্রিভুজ আকৃতির বল্লম দিয়েই তাদের ধরে ধরে ক্রসফারায়ের জন্য নিয়ে যায়। তাই পরেরবার যখন ওরা দেখে আমাদের শরীরের ত্রিভুজ আকৃতি নিয়ে একটা ব্যাকটেরিয়া প্রবেশ করেছে তখন তাদের আর হাইকমান্ডের অনুমতির জন্য (গিলেখাদকদের লিপোপলিসেকারাইড প্রেজেন্টের জন্য) অপেক্ষা করতে হয় না এমনি এমনি বেটাদের ধরে ক্রসফায়ার দিয়ে দেয় (ছবি - ৫ দ্রষ্টব্য)

এখন কথা হচ্ছে এই সৈনিকরা যখন ব্যারাকের বাইরে টহল দিয়ে বেরায় তখন ব্যাকটেরিয়ারা সঙ্গত কারণেই সুবিধা করতে পারে না তাই আমাদের ডায়রিয়াও হয় না। কিন্তু যদি এমন হয় ব্যাকটেরিয়াও আর আসছে না তখন এই সৈনিকরা ব্যারাকের বাইরে থেকে কি করবে। সরকারতো (আমাদের শরীর) এইখাতে অযথা পয়সা খরচ করবে না। তখন তাদেরকে ব্যারাকে ফিরিয়ে নিয়ে যায়। কিন্তু হঠাৎ করে যদি একই ধরণের ডায়রিয়া করে ব্যাকটেরিয়া আমাদের শরীরে প্রবেশ করে তখন আবার ছবি - ৩ এর মত ঘটনার পুনরাবৃতি হয় এবং ছবি - ৪ এর মত অবস্থায় যেতে আরও কিছুদিন সময় লাগে।

এখন চলুন দেখি একটা ব্যাকটেরিয়াকে সিদ্ধ করলে কি হয়। অনেকটা হাড্ডি মাংস আলাদা হবার মত একটা সিচুয়েশন তৈরী হবে কিন্তু ত্রিভুজ/চতুর্ভুজ আকৃতি গুলো সেই রকমই থাকবে। তাই যখন শুধু ত্রিভুজ/চতুর্ভুজ আকৃতি গুলো আমাদের শরীরে ঘন ঘন প্রবেশ করবে (তৃতীয় বিশ্বের পানি নিয়মিত সিদ্ধ করে খেলে এই রকম হতে পারে) তখন সরকার বাহাদুর আর সৈনিকদেকে ব্যারাকে ফিরিয়ে নিয়ে যাবে না এবং তারা টহল দিতেই থাকবে এবং আপনার আর এই জাতীয় জীবাণুর দ্বারা ডায়রিয়া হবে না।

এখন আমরা আবার চলে যাই বস্তি, গুলশান, আর বিদেশী পাবলিকে। বস্তির পোলাপান পানি ফুটায়ে খাচ্ছে না (৯০% সাপ্লাই পাচ্ছে লাল ত্রিভুজের), গুলশানের পোলাপান মাঝে মাঝে খাচ্ছে কারণ এখন তারা বেশির ভাগ সময় ফিল্টারের পানি খায় (৫০% সাপ্লাই পাচ্ছে লাল ত্রিভুজের) আর বিদেশীরা বিদেশী পানি খাচ্ছে যেখানে সাধারণ ডায়রিয়া করে এমন অণুজীবের সংখ্যা খুবই কম (১০% সাপ্লাই পাচ্ছে লাল ত্রিভুজের) আর তাই বস্তির পোলাপান রেবের নজরদারিতে আছে সর্বখন, গুলশানের পোলাপান মাঝে মাঝে আর বিদেশীর রেব কি জানেই না!! আর তাই যখন বিদেশীরা আমাদের মত তৃতীয় বিশ্বের দেশে এসে পিচ্চি হান্নাদের কবলে পরে তাদের বেশ কিছুদিন বাথরুমে কাটাইতে হয়।

এখন বাংলাদেশীরা যদি প্রথম প্রথম আমেরিকা বা জাপান যেয়ে কাচা শামুক ঝিনুক বা সুসি খায় তাইলে কি বাংলাদেশীদের পাতলা হাগু হবে না। অবশ্যই হবে কিন্তু আমেরিকান বা জাপানিদেরতো হচ্ছে না। ওরাতো ডেইলি খাচ্ছে। পানি থেকে এদের ধরে সুরুত করে পেটে চালান করে দিচ্ছে। কেন হচ্ছে না সেটা আশাকরি এখন বুঝাতে পেরেছি (এক্সপোসার)। ওদেরও একধরণের সৈনিক আছে যারা সব সময় কালো ড্রেস পরে টহল দেয়। ওদেরকে বলে "নিনজা"!!

তাই আগের পোস্টে বলেছিলাম ‌ওয়াসার পানি ভাল মত ফুটিয়ে পান করুন প্রতিদিন তাহলেই ভ্যাকসিনের কাজ করবে সাধারণ ডায়রিয়া মোকাবেলায়।

কিন্তু তারপরেও কেন আমরা মাঝে মাঝেই ডায়রিয়াতে ভুগছি? তার কারণ হলো পিচ্চি হান্নান বা মুরগি মিলন নামক ব্যাকটেরিয়া গুলো যখন রেব এর হাতে কুপোকাত হচ্ছে তাদের ত্রিভুজাকৃতির জন্য তখন তার চেল-চামুন্ডারা (নেক্সট জেনারশন) সতর্ক হয়ে যাচ্ছে ওদের ব্লগ (ডিএনএ চিঠি) পরে তাই তারা যখন পরে আবার কোন মিশনে যায় তখন ত্রিভুজের উপরে একটা বোরকা পরে নেয় তখন আর রেব তাদের চিন্তেও পারে না ক্রসফারায়েরও দিতে পারে না অনেকটা নিচের ছবির মত। তাই তারা আমাদের ডায়রিয়া ঘটায়। সেই বিষয়ে আরেকদিন।

ক্লোন৯৯


মন্তব্য

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

চমৎকার। পাঁচতারা।
সময় নিয়ে এটাসেটা জিজ্ঞেস করব একটু পরেই হাসি

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

ক্লোন৯৯ এর ছবি

হাসি মোস্ট ওয়েলখাম!!

আপনে কি জিগাইবেন আন্দাজাইতে পারতেছি মনে হয় দেখি মিলে কিনা চোখ টিপি

আর এই রিভুটার লিংকু দিতে চাইছিলাম আগের কমেন্টে সামহাউ ভুলে গেছিলাম। যদিও একটু পুরান (২০০৬) এর তয় খারাপ না। http://www.annualreviews.org/doi/pdf/10.1146/annurev.immunol.24.021605.090650

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

এহ! দিলেন তো! এইবার পড়াশোনা করে এসে কথা বলতে হবে। মেলা দেরি হবে মন্তব্য করতে। হাসি

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

ক্লোন৯৯ এর ছবি

হেহ হেহ মন্টব‌্য ডেলেইড মন্টব্য ডিনাইড!!

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

অনেক দেরি করেছি। পড়াশোনার সময়ও পাইনি। তবুও মন্তব্য করে যাই। পরে আর করা হবে না।

আমি যে গিলেখাদকদের কথা বলেছি তারা টি সেল নয়। আমি ফ্যাগোসাইটদেরকে গিলেখাদক বলি। টি সেল সরাসরি দ্বিতীয় পর্যায়ের রোগ প্রতিরোধী কোষ।

পানি ফুটিয়ে খেলেই যে কেন ভ্যাকসিনের কাজ করবে না, সেই বুঝিয়ে বলতে দীর্ঘ লেখার প্রয়োজন। এককথায় বলি, জীবাণুর কণা রোগপ্রতিরোধী কোষেদের সংস্পর্শে আসলে তা ভ্যাক্সিন হিসেবে কাজ করবে তখন, যখন সেই কণা 'বিশেষ' গঠন/গড়ন/বৈশিষ্ট সম্পন্ন হবে। এইভাবে জীবাণুর কণা শরীরে পৌঁছানো লটারি পাওয়ার মতই কঠিন। সম্ভাবণা আছে কিন্তু খুবই কম।

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

অতিথি লেখক এর ছবি

সময় করে লিখে ফেলেন কেন কাজ করবে না। আপনি যদি এন্টিজেনের এমাউন্ট নিয়ে সন্দিহান থাকেন তাহলে বলব নরমাল ফ্লোরাদের কথা মাথায় রাখতে কঠিন সাপ্লাই!! আর আমি যেখানে এম্ফেসিস দিচ্ছি সেটা হলো পলিসেকারাইড (সুগার চেইন) তাই উচ্চ তাপে (পানি ফুটালে) আকৃতির কোন হের ফের নাই এন্টিজেনেসিটি একই থাকবে। এই ফরমুলাতেই কলেরা ভ্যাকসিন বা নিউমোক্কাল পলিসেকারাইড ভ্যাক্সিন কাজ করে (লিংক শমসের এর কমেন্টে দিয়েছি)

আমি যে গিলেখাদকদের কথা বলেছি তারা টি সেল নয়। আমি ফ্যাগোসাইটদেরকে গিলেখাদক বলি। টি সেল সরাসরি দ্বিতীয় পর্যায়ের রোগ প্রতিরোধী কোষ।

সেইটা অতীতকালে মনে করা হইত:

Human gamma delta T cells: a lymphoid lineage cell capable of professional phagocytosis". Journal of immunology, (2009) 183 (9): 5622–9.

ধন্যবাদ

প্রতিফলন এর ছবি

এক কথায় চমৎকার! আর, ছবিগুলোতো অসাধারণ! আচ্ছা, ছবিগুলো কি নিজে এঁকেছেন?

ক্লোন৯৯ এর ছবি

ধন্যবাদ।
হ্যা ছবিগুলো নিজেই করেছি MS PowerPoint এর basic shapes ব্যাবহার করে।

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি
ক্লোন৯৯ এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

হিমু এর ছবি

এখানে ব্যারাকটা আসলে কী?

(আপনি লেখা পোস্ট করার আগে প্রিভিউ করে নিতে পারেন একবার। নিজের লেখা নিজে একবার পড়লে টাইপো শুধরানো যায়, টেম্পো কেটে গেলে সেটাও ঠিক করা যায়।)

চলুক।

ক্লোন৯৯ এর ছবি

ব্যারাক (গ্যারিসন বা ক্যান্টনমেন্ট) -টা একটা মেটাফোর হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে এখানে। সৈনিক (টি-সেল)-রা মরে যায় বা নিষ্ক্রিয় হয়ে যায় শুনতে খারাপ লাগে তাই ব্যারাকে ফিরে যাবার কথা লিখেছি। আপনি আরও আগ্রহী হলে দেখতে পারেন মেমরি টি সেল বা শুধু টি-সেল ইমুনলজি

(সাজেশনের জন্য ধন্যবাদ। নেক্সট টাইম ফলো করব।)

ধন্যবাদ

সত্যপীর এর ছবি

সবই বুঝতে পার্সি (আসলে না).

আমাদের অণুজীব ভাইয়ের চেহারাছবি সোন্দর চিন্তিত

..................................................................
#Banshibir.

ক্লোন৯৯ এর ছবি

অণুজীবদের শুধু চেহারা মোবারক না হাত পা-ও খুব সুন্দর সুন্দর তাই ইন্জিনিয়াররা নেক্সট জেনারেশন প্রপেলারারের ডিজাইন করতেছে এদের থেকে আইডিয়া নিয়ে। হাসি

পীরবাবা কি অণুজীবদের জন্য কোন ফতোয়া দিবেন না? দেঁতো হাসি

সত্যপীর এর ছবি

ফতোয়ার হাদিয়া কো?

..................................................................
#Banshibir.

ক্লোন৯৯ এর ছবি

আইতাছে এট্টু ওয়েটান চোখ টিপি

অতিথি লেখক এর ছবি

ক্লোন ভাই,
চমৎকার বর্ণনা, যদিও অনেক কিছুই বুঝি নাই ( বোঝার কথাও না)। ইয়ে, মানে...
যাক জীবাণু ভাইয়ের লগে একজন অণুজীব ভাইও পাইলাম সচলে।

নির্ঝরা শ্রাবণ

ক্লোন৯৯ এর ছবি

অনেক কিছুই বুঝেন নাই মন খারাপ
আমি অবশ্য ভাল লেখতে পারি না তাই না বোঝাইতে পারা জন্য সরি।

যাক জীবাণু ভাইয়ের লগে একজন অণুজীব ভাইও পাইলাম সচলে।

হাসি

জীবাণু ভাই রক্স!!

ধন্যবাদ

স্যাম এর ছবি

চমৎকার !!

ক্লোন৯৯ এর ছবি

ধন্যবাদ

songjukta  এর ছবি

খুব ভাল লাগলো।খুব সোজা ভাবে বলার জননো ভালো লাগলো বেশি। চলুক

ক্লোন৯৯ এর ছবি

ধন্যবাদ

দুর্দান্ত এর ছবি

জব্বর দরকারি লেখা। ধরেন কয়েক বছর পরে বিদেশ থেইকা দেশে যামু। যাওয়ার এক সপ্তাহ আগে যদি ঢাকা থেইকা ওয়াসার পানি আমদানি কইরা ফুটাইয়া খাই, তাইলে কি ঢাকা গিয়া আমার ডাইরিয়া হবেনা? পেট-প্রতি কি পরিমান ওয়াসার পানি কয়দিন খাওয়া লাগতারে, কইতারেন?

ক্লোন৯৯ এর ছবি

হাহ হাহ মজাদার কমেন্ট!!

আমদানি কইরা ঢাকা ওয়াসার পানি খাইবেন আপনেতো আমার ব্যবসার পেটে লাথ্থি মারবেন।

তাইলে কি ঢাকা গিয়া আমার ডাইরিয়া হবেনা? পেট-প্রতি কি পরিমান ওয়াসার পানি কয়দিন খাওয়া লাগতারে, কইতারেন?

না হবে না। তবে আমি হইলে দুই তিন সপ্তাহ আগে থেইকা খাইতাম সেফ সাইডে থাকার জন্য।

তবে একটা বড় কিন্তু আছে। আপনার ডায়রিয়া তখনই হবে না যদি আপনার আমদানী করা ফুটানো পানিতে যে সব অণুজীব ছিল সেসব অণুজীবই ঢাকায় যাবার পরে ওয়াসার পানিতে থাকে। তবে নতুন ধরণের ডায়রিয়া ঘটায় এমন অণুজীব থাকলে একটু আধটু ডায়রিয়া হতে পারে।

পেট-প্রতি প্রতিদিন ৭-৮ গ্লাস সিদ্ধ কইরা পানি খাইতে হবে। এতে দুইটা কাজ হবে আপনার ডেইলি পানির নিডও মিটবে প্লাস ত্রিভুজ/চতুর্ভুজের সাপ্লাইও যথেস্ট থাকবে।

এইবার আমার হাদিয়াটা দিয়া দেন চোখ টিপি

দুর্দান্ত এর ছবি

বাহ ব্রেশ ব্রেশ। এইবার কইন্চাইন ঢাকার পানি জৃাল দিয়া ১০ লিটাররে ১সিসি বানাইয়া আবার বিদেশে আইনা লুকাল পানির সাথে মিলাইলে কি একই ফল পাওয়া যাইতারে?

ক্লোন৯৯ এর ছবি

দুর্দান্ত আইডিয়া!!

৩০ মিনিট ধইরা ফোটানোতে ত্রিভুজ/চতুর্ভুজের স্ট্রাকচারাল কোন পরিবর্তন হয় না এবং তাদের কার্যকারিতাও একই থাকে। তার বেশি সময় ফুটাইলেও ফলাফল একই থাকার কথা তবে সেইটা নিয়া কেউ গবেষণা করছে বইলা আমার জানা নাই।

তাই এই মুহুর্তে আপনার প্রশ্নের জবাবে আমার উত্তর হইতেছে "হ্যা" একই ফল পাওয়া যাইতে পারে। এই মুহুর্তে বল্লাম কারণ এখন যদি কেউ ভাল কোন ল্যাবের রেফারেন্স দেখায় যে ত্রিভুজ/চতুর্ভুজরে পানিতে ৬০ মিনিট ফুটাইলে তাদের আকৃতির পরিবর্তন হয় তাইলে আবার উত্তর হইয়া যাইব "না"।

যদিও আমার ব্যাবসার আইডিয়াটা অন্যখানে তবে আপনে রাজি থাকলে এবং ৯৮% ইনভেস্ট করলে আপনারে আমার ব্যবসার পার্টনার করতে রাজি আছি দেঁতো হাসি

শমশের এর ছবি

আপনার লেখা অত্যন্ত সুখপাঠ্য হয়েছে। আপনার বর্ণনা ভংগী অসাধারণ। চলুক

আপনার প্রথম লেখাটিতেই কমেন্ট করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু বাসা পরিবর্তনের পরে ইন্টারনেট কানেকশন ছিলনা দুই সপ্তাহ। অফিসে বসে লেখা গুলো দ্রুত পড়ে ফেলেছি, কিন্তু কমেন্ট করার সুযোগ পাইনি।

আপনার এই লেখাটির মূল হেডিং এর সাথে আমার দ্বিমত আছে।
ওয়াসার পানিতে জীবানু থাকতেই পারে এবং তা অবশ্যই ফুটিয়ে খেতে হবে, কিন্ত এটা ঐসব জীবানুর বিরুদ্ধে ভ্যাকসিনের কাজ করবে, বিষয়টা এত সহজ ভাবে হওয়ার কথা নয়।
আপনার লেখায়ই আছে ভ্যাকসিন সাধারণত তৈরী করা হয় প্রোটিন বা পলিস্যাকারাইড এন্টিজেন থেকে।
পলিস্যাকারাইড এন্টিজেন থেকে যে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে উঠে তা 'টি -সেল' এর সাহায্য ছাড়াই হয়, এজন্য এটি মেমরি রেসপন্স তৈরি করতে পারেনা। অপরপক্ষে প্রোটিন এন্টিজেন অত্যন্ত ভাল প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরী করতে পারে।
কিন্ত প্রোটিন ফুটানোর পরে এর কাঠামো নষ্ট হয়ে যায়। ঠিক এই কারনেই জীবানুরা আামাদের শরীরের ক্ষতি করতে পারেনা। কারন অধিকাংশ জীবানুই এসব প্রোটিনের মাধ্যমেই রোগ সৃষ্টি করে।
আমাদের শরীরের জীবানু প্রতিরোধ ক্ষমতার প্রথম পর্যায়ে আমাদের ইমিউন সেল গুলো জীবানুগুলোকে সনাক্ত করে কিছু কাঠামো সনাক্তকরন রিসেপ্টর (প্যাটার্ন রিকগনিশন রিসেপ্টর) এর সাহায্যে; যেমন টিএলআর, নড ইত্যাদি। এই সব রিসেপ্টর এন্টিজেনের কাঠামো পরিবর্তন হলে তা সনাক্ত করতে পারবে না।
পলিস্যাকারাইড এন্টিজেন গুলো কিন্ত দীর্ঘস্থায়ী ইমিউনিটি তৈরী করেনা।
তাত্বিকভাবে ক্রমাগত ভাবে এই এন্টিজেনের প্রবেশ ঘটলে (যা আপনার প্রস্তাবিত ওয়াসার পানি নিয়মিত ফুটিয়ে খাওয়ার ফলেও হতে পারে) শরীরে সবসময়ই উচ্চমাত্রার এন্টবডি তৈরী হতে পারে, কিন্তু এরা দীর্ঘমেয়াদে প্রতিরোধ নাও করতে পারে।

এই বিষয়গুলো নিয়ে বাংলায় লেখালেখিকে স্বাগতম জানাই।
আমার টাইপিং খুবই ধীর। পরে আরো আলোচনা করার আশা রইল।

অতিথি লেখক এর ছবি

যেহেতু আপনে টোল আর নড নিয়া আসছেন আপনের মন্তব্যে তাই ধইরা নিলাম আপনেও এই লাইনের তাই আগের পোস্টে করা এক কমেন্টের মত আবারও বলি আমার টার্গেট সাধারন পাঠক (জেনারেল রিডার) তাই এইখানে ইমুনলজি ১০১ বা ২০১ আলোচনা কইরা খুব একটা লাভ নাই নিজেদের মধ্যে, সেইটা আমরা ফেবু বা ইয়াহুতে করতে পারি। আরও একটা বিষয় হইল মাঝের অনেক স্টেপ জাপ্ম করতে হইছে জিনিসটারে সাধারণ ভাবে উপস্থাপন করতে তবে মূল ভাবটা অক্ষুন্ন রাখতে চেষ্টা করছি সেইটার তরাতম্য ঘটলে অবশ্যই আলোচনা চলে। এইবার আসি আপনার কমেন্টে।

আপনার এই লেখাটির মূল হেডিং এর সাথে আমার দ্বিমত আছে।
ওয়াসার পানিতে জীবানু থাকতেই পারে এবং তা অবশ্যই ফুটিয়ে খেতে হবে, কিন্ত এটা ঐসব জীবানুর বিরুদ্ধে ভ্যাকসিনের কাজ করবে, বিষয়টা এত সহজ ভাবে হওয়ার কথা নয়।

হেডিংয়ের সাথে শুধু আপনার বা অনার্য সঙ্গীতের দ্বিমত না সাইন্টেফিক কমিউনিটিরই অনেকর মধ্যে দ্বিমত আছে এবং থাকাটাই স্বাভাবিক কারণ সাইন্সে এইটাই স্বাভাবিক। আপনে যদি ৯০ দশকের শুরুর দিকের কোন বইতে বা জার্নালে "টোল" খুজতে যান সেইাটর অস্ত্বিত্ব কোথাও খুজে পাবেন না তখন পাবেন "এপিটোপ" আর "প্যারাটোপ" ঠিক কিনা হাসি কিন্তু এখনতো সারা ইমুনলজি দুনিয়া টোলময়!!

আপনার লেখায়ই আছে ভ্যাকসিন সাধারণত তৈরী করা হয় প্রোটিন বা পলিস্যাকারাইড এন্টিজেন থেকে।
পলিস্যাকারাইড এন্টিজেন থেকে যে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে উঠে তা 'টি -সেল' এর সাহায্য ছাড়াই হয়, এজন্য এটি মেমরি রেসপন্স তৈরি করতে পারেনা। অপরপক্ষে প্রোটিন এন্টিজেন অত্যন্ত ভাল প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরী করতে পারে।
কিন্ত প্রোটিন ফুটানোর পরে এর কাঠামো নষ্ট হয়ে যায়। ঠিক এই কারনেই জীবানুরা আামাদের শরীরের ক্ষতি করতে পারেনা। কারন অধিকাংশ জীবানুই এসব প্রোটিনের মাধ্যমেই রোগ সৃষ্টি করে।

প্রোটিন আর এলপিএস (পলিসেকারাইডে) ভ্যাক্সিনের গুনাগুনে একমত তবে এলপিএস কেন মেমরি রেসপন্স তৈরী করতে পারবে না সেইটা বুঝি নাই। ইংরেজিতে বলি: The immune response to a pure polysaccharide vaccine is typically T-cell independent, which means that these vaccines are able to stimulate B cells without the assistance of T-helper cells.

আমাদের শরীরের জীবানু প্রতিরোধ ক্ষমতার প্রথম পর্যায়ে আমাদের ইমিউন সেল গুলো জীবানুগুলোকে সনাক্ত করে কিছু কাঠামো সনাক্তকরন রিসেপ্টর (প্যাটার্ন রিকগনিশন রিসেপ্টর) এর সাহায্যে; যেমন টিএলআর, নড ইত্যাদি। এই সব রিসেপ্টর এন্টিজেনের কাঠামো পরিবর্তন হলে তা সনাক্ত করতে পারবে না।

ঠিক। এই কারণেই ত্রিভুজের উপরে ছাতা বসানো হইছে শেষ ছবিতে

পলিস্যাকারাইড এন্টিজেন গুলো কিন্ত দীর্ঘস্থায়ী ইমিউনিটি তৈরী করেনা।

এই লাইনের উত্তর আপনি নিজেই দিয়েছেন হাসি

তাত্বিকভাবে ক্রমাগত ভাবে এই এন্টিজেনের প্রবেশ ঘটলে (যা আপনার প্রস্তাবিত ওয়াসার পানি নিয়মিত ফুটিয়ে খাওয়ার ফলেও হতে পারে) শরীরে সবসময়ই উচ্চমাত্রার এন্টবডি তৈরী হতে পারে, কিন্তু এরা দীর্ঘমেয়াদে প্রতিরোধ নাও করতে পারে।

দীর্ঘ মেয়াদে যে প্রতিরোধ করবে না সেই জন্যই উপরে এক কমেন্টে বলেছি

পেট-প্রতি প্রতিদিন ৭-৮ গ্লাস সিদ্ধ কইরা পানি খাইতে হবে। এতে দুইটা কাজ হবে আপনার ডেইলি পানির নিডও মিটবে প্লাস ত্রিভুজ/চতুর্ভুজের সাপ্লাইও যথেস্ট থাকবে।

আর একটা কথা হিট কিলড কলেরা ভ্যাক্সিন বা পলিসেকারাইড বেসড নিউমোক্কাল ভ্যক্সিন যদি মানুষে কাজ করতে পারে তাইলে ইটেক (ETEC) ভ্যাক্সিন কেন কাজ করবে না?
আলোচনার দরজা সব সময়ই খোলা আর বাংলা টাইপিং আমারও খুব ধীর সো নো চিন্তা।

ধন্যবাদ আবারও।

ক্লোন ৯৯

অতিথি লেখক এর ছবি

ছবিগুলা সুন্দর দেঁতো হাসি

ইফতি

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ।

ক্লোন ৯৯

চারু হক এর ছবি

অদ্ভুত, অসাধারণ। মুগ্ধ হলাম

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।