ফেসবুকে আমি বেশ কিছু প্রগতিশীল আর মুক্তমনা তরুণকে সাবস্ক্রাইব করি। বিভিন্ন বিষয়ে তাদের উক্তি এবং মন্তব্য আমাকে উদ্দীপ্ত করে। বাম ধারায় বিশ্বাসী এই যুবকদের মন্তব্যে ব্যাপক লাইক এবং শেয়ার পরে, আমি নিজেও দেই। কিন্তু বিপত্তিটা ঘটে যখন তারা মাওবাদ আর কমিউনিজম সম্পর্কে পোষ্ট গুলো দেন। হতাশ হয়ে দেখি, আমাদের প্রগতিশীলদের শ্রেণী মুক্তির ধারনা এখনো কৈশোরের রোমান্টিকতার স্টেজ পার হয়নি।
আধুনিক বিশ্বের বাম এর ধারনা যোজন যোজন পথ পার হয়ে গেছে কিন্তু আমাদের বামপন্থিরা এখনও পিকিং পন্থি আর মস্কো পন্থিদের আদর্শ নিয়ে তর্ক করেন, যেখানে পিকিং আর মস্কো এর লোকজন সেই পন্থা গুলো বিসর্জন দিয়ে এসেছেন বিশ বছর আগে।
একজন বামপন্থি এর আল্টিমেট গোল হলো শ্রেণী শোষণ থেকে মুক্তি ও সম্পদের সুসম বণ্টন নিশ্চিত করা।এই স্বপ্নকে মাথায় রেখে আজকের পৃথিবীতে বামেরা এখনো আদর্শিক লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে দেশে দেশে। বিশাল মাল্টি ন্যাশনাল এর পুঁজির কর্পোরেট আগ্রাসন আর আই এম এফ , ওয়ার্ল্ড ব্যাংক এর অর্থনৈতিক আগ্রাসন এর মুখে মুক্ত বাজার অর্থনীতিতে বাম এর ধারণা এখনো বহাল।
পার্থক্য হচ্ছে অভীষ্ট লক্ষে পৌঁছানোর জন্যে আমাদের বামপন্থিরা এখনো কমিউনিজম এর মতো পরীক্ষিত ভাবে ফেইলড একটা সিস্টেমের স্বপ্ন দেখেন আর ভিন্ন দেশের বামেরা , বাজার অর্থনীতি এর বাস্তবতাকে মেনে নিয়ে , ওই সিস্টেমটাকে বিভিন্ন ভাবে পরিবর্তন করে, বঞ্চিতদের অধিকার আদায় এর জন্য যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন। এই পার্থক্যটা আমাদের দেশের সব সেক্টর এর মতো, আমাদের বামদের বুদ্ধি-ভিত্তিক দ্বীনতা প্রকাশ করে।
কমিউনিজম কেন ফেইল করছে, এই বিতর্ক বিশ বছর আগে শেষ।কিন্তু আমাদের বামেরা এখনো এই বাস্তবতাকে অস্বীকার করে, এমন একটা ইলজিকাল জগতে বাস করছেন, যে জগত থেকে কোনও কার্যকর রেজাল্ট আশা করা বাংলাদেশের নৌ-বাহিনী এর পারমানবিক সাবমেরিন দিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দখল করার স্বপ্ন দেখার মতই অলৌকিক এবং অবাস্তব।
কমিউনিজম ছিল একটা মহান স্বপ্ন। যে কোনও প্রগতিশীল মানুষ ঐ স্বপ্নে উজ্জীবিত হতে বাধ্য। সমাজে কোন শোষণ থাকবেনা। কারো নিজস্ব সম্পদ থাকবেনা। কোনও ধনি বা গরিব থাকবেনা। রাষ্ট্র হবে সকল সম্পদের মালিক আর রাষ্ট্রের সকল সম্পদ নাগরিক সমভাবে শেয়ার করবে। এমন-ভাবনা যে কোনও প্রগতিশীল মানুষ কে উজ্জীবিত করবে।মার্কস এর সম্পদের সম বণ্টন এর অন্যদিকে ছিল, মানুষের অসীম কর্ম স্প্রীহা এর উপর আস্থায় তৈরি করা পুঁজিবাদ। এডাম স্মিথ এর ধারনায়, যে পুঁজিবাদ এর মুল শক্তি হলো,মানুষর নিজেকে এবং নিজের পরিবারে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার অদম্য স্পৃহা। যে স্প্রিহার কারণে একটা সুস্থ প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশে থেকে মানুষ আপন কর্ম উদ্দীপনায় সম্পদ সৃষ্টির মাধমে নিজের এবং চাকুরী সৃষ্টির মাধ্যমে অন্যের অর্থনৈতিক উত্তরণ ঘটাবে, রাষ্ট্রর হস্তক্ষেপ এর বাহিরে থেকে।
এক পক্ষে রাষ্ট্র আরেক পক্ষে ব্যক্তি। উনবিংশ শতক এর ইতিহাস এই সম্পূর্ণ বিপরীতমুখী এর দুটি দর্শন এর সংঘর্ষের ইতিহাস।
কিন্তু যতই দিন যেতে লাগল, ততই এটা ক্লিয়ার হলো, প্রতিটি কম্যুনিস্ট রাষ্ট্র নাগরিকদের ব্যক্তিসত্তাকে শোষণ করে, এক নায়ক বা একটা এলিট গ্রুপ পরিচালিত পুলিশি রাষ্ট্রে পরিণীত হয়েছে। প্রথম বিশ্বের ভালো ভাবে পরিচালিত অধিকাংশ পুঁজিবাদী রাষ্ট্রের জনগণ রাষ্ট্রের বন্ধন এর বাহিরে থেকে আপন কর্ম উদ্দীপনায় এবং সুস্থ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে সম্পদ সৃষ্টি করে পরিপূর্ণ জীবন উপভোগ করছে।
কম্যুনিস্ট দেশ গুলো তাই নিজেরা তাদের শাসকদের বিরুদ্ধে অস্ত্র তুলে িয়ে এবং নাটকীয় ঘটনা প্রবাহে নব্বই সালে বিশ্বজুড়ে কমিউনিজম এর পতন ঘটে।এবং দুই একটা ব্যতিক্রম বাদে, সাড়া বিশ্বে পুঁজিবাদী সিস্টেম প্রচলন হয়।
কমিউনিজম এর পতন আর পুঁজিবাদ এর বিজয় হয়েছে বলে বামপন্থা এর প্রয়োজনীয়তা এবং দর্শন হারিয়ে গেছে তা কিন্তু নয়। সম্পদের সুষম বণ্টন এবং সমাজে বঞ্চিত দের রক্ষা করার প্রয়োজন বাম পন্থি দের স্বপ্ন থেকে হারিয়ে যায়নি । সম্পদ এর সুসম বণ্টন অনেক ভাবেই নিশ্চিত করা যায়। এমনকি ,উচ্চ ট্যাক্স দিয়ে কিন্তু ধনিদের থেকে সম্পদ কেড়ে নিয়ে ও গরিবদের জন্যে সেফটি নেট সৃষ্টি করা যায় । এটাও দিনে দিনে স্পষ্ট হয়েছে যে, সফল হয়েছে বলেই রাষ্ট্রের হস্তখেপহীন ঢালাও পুঁজিবাদ কোনও ভাল সমাধান নয়। এডাম স্মিথ এর মার্কেট নিয়ন্ত্রণকারী গোপন হাত বঞ্চিতদের জন্য চিন্তিত নয়। এবং এটা দেখা গেল সুযোগ পেলে সম্পদ স্রস্টি কারি ধনিক শ্রেণি কর্মী দের উপর ইচ্ছে মত শোষণ করতে থাকে। তাই এই পুঁজিবাদী রাষ্ট্রে বাম পন্থিদের প্রয়োজন আর বেশি করে অনুভূত হতে লাগলো দেশে দেশে ।
গত বিশ বছরে, বাস্তবতাই বিশ্বব্যাপী বামপন্থিরা একটা বিবর্তন এর মধ্যে দিয়ে গেছে। পুঁজিবাদ অর্থনৈতিক সিস্টেম এর মাধ্যমে যে শোষণ আবহ সৃষ্টি হয় তাকে খুঁজে বিভিন্ন পদ্ধতিতে তাকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্যে কাজ করে যাচ্ছেন বামপন্থিরা দেশে দেশে। এখনো তাদের গোল অভিন্ন -সম্পদের সুসম বণ্টন। সর্ব নিন্ম মজুরি, চাকরি এর সুরক্ষা, ট্রেড ইউনিয়ন এর অধিকার, রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত সার্বজনীন শিক্ষা ও স্বাস্থ্য বেবস্থা, ব্যাঙ্ক এবং বিশাল কর্পোরেট দের উপর অমব্যাডসম্যন এর মাধ্যমে রাস্ট্রের নিয়ন্ত্রন, অতি ধনী দের উপর উচ্চ ট্যাক্স সহ নানা বিষয়ে বাম পন্থি রা খুজে পেয়েছে দরিদ্রদের কে মুক্ত করার রাস্তা।
স্বাধীনতা এর পর থেকে পুঁজিবাদ সিস্টেম এর মধ্যে থেকে শ্রেণী বিপ্লব রাজনীতি চল্লিশ বছর ধরে জনসমপ্রিক্ততা সৃষ্টির ব্যর্থতা সত্ত্বেও আমাদের বাম পন্থিরা নিজেদের পথের দর্শন এর উৎকৃষ্টতা নিয়ে চরম আত্মতৃপ্তিতে ভুগেন।
শ্রেণী বৈষম্য দুর করার লক্ষে একটা বাস্তবায়ন যোগ্য নতুন দর্শন খুঁজে পাওয়ার বদলে সকাল বিকাল পুঁজিবাদকে গালি দেয়াই যেন আমাদের বামপন্থিদের মূল ইনটেলেক্টচূয়াল ডিস-কোর্স হয়ে দাঁড়িয়েছে।
কিন্তু পুঁজিবাদী অর্থনীতিতে কিভাবে দরিদ্রদের জন্য সেফটি-নেট করা যায়,কিংবা কিভাবে সর্বনিম্ন মজুরিকে সম্মানজনক পর্যায়ে নিয়ে শ্রমিকদের মুক্তি দিয়া সম্ভব, কম্পিটিশন কমিশনের মাধ্যমে রাষ্ট্র কিভাবে লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড সৃষ্টি করতে পারে, বা অমব্যাডসম্যন সৃষ্টির মাধ্যমে আজকে ক্রেডিট কার্ড এর অন্যায় চার্জ এবং ব্যাংকিং সিস্টেম এর অন্যায় গুলো থেকে নাগরিককে মুক্তি দিতে পারে সেই সব যুক্তি আমাদের বাম পন্থিদের কোন আলোচনার মধ্যেই নেই।
সি.বি.এ নেতাদের হাতে কিভাবে আমাদের রাষ্টীয় অসাধারণ অসাধারণ বৃহৎ কল কারখানা এবং প্রতিষ্ঠান গুলো একে একে ধংস হয়ে গেল তা নিয়ে কোনো আত্বসমালোচনা এবং বিশ্লেষণ ও দেখা যায়নি কোনো বামপন্থির লেখায়। মার্কস বা মাও এর বই হতে মন্ত্রের মত কিছু স্লোক জপ করে যাওয়াটাই ফ্যাশন। যে যত বেশি শ্লোক জানে সে তত বড় বাম পন্থী। এর চেয়ে বেশি লেজি বামপন্থি সাড়া দুনিয়াতে নাই।
আজ তাই বামপন্থি প্রগতিশীলদের কমিউনিজম এর রোমান্টিসিজম থেকে বেরিয়ে এসে পুঁজিবাদী অর্থনৈতিক সিস্টেম টাকে অনেক গভীর থেকে পর্যালোচনা করতে হবে। এন্টারপ্রেণারশিপকে ঘৃণা করা আমাদের বামপন্থিদের একটা ফ্যাশন।অথচ এন্টারপ্রেণার রাই জব সৃষ্টি এর মাধ্যমে দরিদ্রদের দরিদ্রতা থেকে মুক্তি দেয়। এই ধরনের অনেক বেসিক ভুল আমাদের বামপন্থিদের হল মার্ক।এই গুলো থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
সাড়া বিশ্বে বামপন্থিরা এগিয়েছে ব্যাপক গবেষণা এবং বিতরকের এর মধ্যে দিয়ে।তাদের বুদ্ধি ভিত্তিক আলোচনায় পুঁজিবাদকে মেনে নিয়ে শ্রেণী বৈষম্যকে নির্মূল করার পথ খুজছেন তারা। কিভাবে পুঁজিবাদের ভিতরেই শোষিতদেরকে প্রোটেক্ট করা যায় তার রাস্তা খুঁজছেন তারা। দেশে দেশে তাই আজ বামপন্থিরা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় যেতে পেরেছে তাদের ধারনা এর বাস্তবতা এবং জন্ সম্পৃক্ততার কারণে।
বারাক ওবামা বা ফ্রান্স এর অলিন্দ এই ধরনের বাম রাজনীতি থেকে উঠে এসেছেন।
কিন্তু এখনো বালখিল্য পিকিং এর মস্কো পন্থা এর তর্ক আর মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ কে গালি দেয়ার আবর্তে ঘুরছে আমাদের বামপন্থিদের অর্থনৈতিক মুক্তির পথ।
তাই শুধু মাত্র তেল গ্যাস এর আন্দোলন বাদে আর তেমন কোথাও জন মানুষ কে সম্পৃক্ত করতে পারছেননা আমাদের বামপন্থিরা, আওয়ামি আর বিনপি এর খুল্লাম খুল্লা দুর্নীতি আর শোষণে সাধারণ মানুশের নাভিশ্বাস ওঠা সত্তেও।
নতুন প্রগতিশীল একটিভিস্টরা যত তাড়াতাড়ি এই বিষয় গুলো বুঝে নিয়ে সঠিক বিতর্কে এর আবহ সৃষ্টি করতে পারবেন তত তাড়াতাড়ি আমাদের বামপন্থি প্রগতিশীল রাজনীতি জন্য মানুষের জন্য সত্যিকারের পরিবর্তন আনতে পারবে এবং দুই মনশাএর লেজুর বৃত্তি না করেই ক্ষমতার ধারে কাছে যেতে পারবে।
Blogger Armchair Economist as Guest Writer
মন্তব্য
আপনার ব্যক্তিগত ধারণা ও চিন্তা-ভাবনার সাথে আমার নিজের মতামতের মিল খুঁজে পেলাম, ভালো লাগলো। পরিবর্তন আবশ্যক। সেটা যে ক্ষেত্রেই হোক। রাজনৈতিক মতবাদ এবং চিন্তা-চেতনায়ও এর প্রয়োজন আছে বৈকি। কম্যুনিজম এর আদর্শে অনুপ্রাণিত হওয়া যতটা না সহজ বাস্তব ক্ষেত্রে প্রয়োগ ঠিক ততটাই কঠিন। কিন্তু তার মানে এই নয় যে এই আদর্শ বৃথা, একে বাস্তবতার সাথে সম্পৃক্ত করার মধ্যেই এর সফলতা নিহিত। শ্রেণী ধারণার নির্মূল যেখানে সম্ভব নয় সেখানে শ্রেণী বৈষম্য/ব্যবধান (বেতন/আয়ের পরিমান/হার) কমিয়ে আনার মাঝে সাফল্য আছে বৈকি। রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পের বিকাশের জন্য জনমত সৃষ্টি, দেশকে অর্থনৈতিকভাবে স্বনির্ভর করে তোলা এবং আন্তর্জাতিক দাতা গোষ্ঠির থেকে ঋণ গ্রহনের মাধ্যমে জনগনের কাঁধে দায়ের বিশাল বোঝা চাপিয়ে দেয়ার নীতি বন্ধ করা এসবই দায়িত্ব এবং কাজের মধ্যে পড়ে। এগুলো নিয়ে ভাবতে হবে। প্রগতিশীলদের আরও একটি সমস্যা তাদের ঐক্য নেই। "যত মাথা তত মত" পদ্ধতিতে কোন রাজনৈতিক কর্মকান্ড অগ্রসর হতে পারেনা। বামদলগুলোর ঐক্যবদ্ধভাবে রাজনৈতিক কর্মসূচি আমাদের দেশে শুরু হলে তা প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য ভয়ের হতো বলেই মনে করি। এই প্রতিযোগিতায় বামদলগুলো শুধুমাত্র ঐক্যবদ্ধ কার্যপদ্ধতির অভাবে পিছিয়ে আছে সেই শুরু থেকেই।
তবে লেখার ব্যাপারে কিছু প্রশ্ন-
রাষ্ট্র যদি উদ্যোক্তার ভুমিকা পালন করে তাহলে কি সেটা ব্যক্তি উদ্যোগের একটি সাধারণ অল্টারনেটিভ হয়ে দাঁড়াতে পারেনা? অবশ্যই পারে। ব্যক্তিগত উদ্যোগে চাকরির সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে বৈকি কিন্তু তা একটি নির্দিষ্ট শ্রেনীকে শোষনের সুযোগও করে দিচ্ছে। দেশে যেহারে শিল্পের প্রাইভেটাইজেশন হয়েছে সে হারে কি অর্থনীতির চাকা ঘুরেছে? কিংবা বেসরকারী সংস্থাগুলো আমাদের দেশের অর্থনীতির সামগ্রিক প্রবৃদ্ধিতে ঠিক কতোটা প্রতক্ষ্য ভূমিকা রাখতে পারছে? আবার বেসরকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়ন্ত্রনের ক্ষেত্রেও সরকার ঠিক কতোটা সফল? এই অনেক প্রশ্নই কিন্তু আপনার লেখায় আলোচনা হতে পারতো, তা হয়নি। আশা রাখি ভবিষ্যতে উঠে আসবে।
এই কথাটা কিন্তু আমার কাছে অযৌক্তিক মনে হয়েছে। পুঁজিবাদে যেখানে একটি শ্রেণী সবসময়ই শোষিত সেখানে সেই শ্রেনীকে কিভাবে আপনি "প্রটেক্ট" করতে চাচ্ছেন সেটা জানা জরুরি। নাকি আপনি বলতে চেয়েছেন শোষনের মাত্রা কমিয়ে তাকে সহনশীল পর্যায়ে নিয়ে আসা? আর তাই যদি হয় এই পদ্ধতিতে শোষণ আদৌ কি বন্ধ হবে? যদি না হয় তাহলে শোষণ হবেই এটা মেনে নিয়ে আমাদের এগিয়ে যাওয়ার বদলে শোষণ হবেনা এরকম একটি অর্থনতিক কাঠামো নিয়ে কি চিন্তা করা উচিত নয়?
এরকম কয়েকটি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের নাম উদাহরণ হিসেবে জানতে চাইছি।
এরকম আরো কিছু প্রশ্ন রয়েছে। তবে আপনার লেখাটি আরও গোছানো এবং কিছু তথ্য-পরিসংখ্যান বিশিষ্ট হলে ভালো হতো। কিছু কিছু জায়গায় ধারনাগুলোর পেছনে যুক্তির কাঠামো ঠিক মনে হয়নি।
আর একটি বিষয়, প্রচুর বানান ভুল, এরকম লেখায় বারবার যদি দৃষ্টি আটকে যায় তাহলে খাপছাড়া লাগে। সচলে দেয়ার আগে একবার বানাগুলো দেখে নিলে যথাসম্ভব এই বিড়ম্বনা এড়ানো সম্ভব।
লিখতে থাকুন, আপনার একটি লেখা ইংরেজি সেকশনে সেদিন পড়েছি, ভালো লেগেছে।
----------------------------------------------------------------------------------------------
"একদিন ভোর হবেই"
একমত, অরফিয়াস এর মন্তব্যের সাথে।
অরফিয়াস ভাই, আমি এই মন্তব্যে অনেকের প্রশ্ন কে এক সাথে উত্তর দেয়ার চেষ্টা করব।
মানুষের intrisic একটা চেতনা হচ্ছে স্বার্থপরতা। আপনি, আমি , আপনার ভাই, আপনার বাবা, সবাই প্রতি মুহূর্তে হিসেব করছি কিভাবে আমাদের নিজের স্বার্থ টাকে অর্জন করা যায় এবং সেই হিসেবেই আমরা আমাদের কাজ কর্ম চালাচ্ছি । ওই তাড়না থেকেই, আপনি আমি ব্লগ এ আসি, পড়া শোনা করি, চাকুরী করি, ব্যবসা করি। একটা সমাজে আমার স্বার্থ আপনার স্বার্থ সব সময় একটা দ্বন্দ্বের মধ্যে থাকে এবং ওই দ্বন্দ্ব এক সময় একে অপর কে nutralize করে। mathematical model e এই theory টা game theory নাম এ পরিচিতি। ওই game theory কারণে নোবেল পেয়েছিল John Nash (যার জীবন নিয়ে পরবর্তী Beautiful Mind নামে দারুণ একটা মুভি হয় Russel Crow এর অভিনয়ে).
ওই intrinsic চেতনা আমাদের সন্তানের প্রতি ভালোবাসা, সুন্দরী নারী এর প্রতি আকর্ষণ এর মতো একটা built in মানসিক প্রবণতা। ওই টাকে অস্বীকার করে আপনি যেইসব ideal সিস্টেম দাড়া করাবেন, তা altruistic এবং irrational । এটা নিয়ে আকাশ কুসুম স্বপ্ন দেখতে ভালো লাগবে কিন্তু এটা বাস্তবে কার্যকর হবে না এবং হয় নি। এইটা গত একশ বছরের ইতিহাসের রায়। যুগে যুগে দেশে দেশে লক্ষ লক্ষবার এইটা প্রমাণিত হয়েছে। অস্বীকার করার কোন সুযোগ নাই। এইটাই communism এর মতো একটা দারুণ আদর্শ বাদি সিস্টেম এর পতনের কারণ এবং পুঁজি বাদ এর বিশ্ব জয় এর মূল প্রতিপাদ্য।
আপনাকে যখন একটা জমি দিয়ে বলা হবে ওই জমি সবার এবং ওই খানে কাজ করে যে ফসল হবে তা হবে সবার। সেই খানে আপনি built in ভাবে lazy হয়ে যাবেন। বাসায় বসে ছেলে মেয়ে, বৌ এর এর সাথে সময় কাটাবেন, আর সকালবেলা খ্যাতে গিয়ে যা আবশ্যকীয় কাজ তে কোন মতে করে, ঠিক পাঁচ টা বাসায় ফিরে আসবেন।
আর আপনাকে যদি বলা হয়, ওই জমি টা আপনার। ওই খান থেকে আপনি যা ফলাতে পারেন তা হবে আপনার। আপনি তখন পাগল এর মতো খুঁজবেন কেমনে জমির ফসল বাড়ানো যায়, কি সার দিলে উৎপাদন বাড়বে এবং কি ওষুধে পোকা মরবে।
রাষ্ট্র যদি উদ্যোক্তার ভূমিকা নেয় তাতে কোন ক্ষতি নাই। নিয়েছেও। কিন্তু পৃথিবীতে যুগে যুগে দেশে দেশে লক্ষ লক্ষবার এইটা প্রমাণিত হয়েছে , রাষ্ট্রীয় সিস্টেম থেকে উদ্ভাবন বেরিয়ে আসেনা, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানে অদক্ষতা ভর করে। ঘুরে ফিরে game theory। কারণ ওই প্রতিষ্ঠান এর সিদধান্তে যারা থাকেন তারা ক্রমাগতই ব্যক্তি গত স্বার্থ উদ্ধার এর জন্যে তাদের ক্ষমতা কে ব্যবহার করে, লুটপাট চালু রাখেন। এবং শেষ পর্যন্ত প্রতিষ্ঠান একটা অদক্ষ-এবং অনুতপাদনশিল লোহা লক্কড়ে পরিণত হয়,যা কারো জন মঙ্গল জনক নয়। Steve jobs আপনাকে যে ipad দিয়েছে টা রাষ্ট্রের পক্ষে উদ্ভাবন করা অসম্ভব।কোন উদাহারন নাই।
এমন কি আমি দেখেছি বড় প্রতিষ্ঠান গুলো টাও উদ্ভাবনী শক্তি থাকেনা। প্রতিষ্ঠান বড় হলেই আপনাকে burocracy সৃষ্টি করতে হবে। আর burocracy উদ্ভাবন এবং উৎপাদন শীলতার সব চেয়ে বড় শত্রু। এইটা এখন organizational study এর দিকে চলে যাচ্ছে। কিন্তু এইটা বাস্তবতা ।
তাই এটা পরিষ্কার, সম্পদ সৃষ্টির দায় ব্যক্তি এর উপর থাকা টাই রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক প্রগতির জন্যে সহায়ক। এবং তার সাথে সাথে, আপনি যেটা বলছেন সেটাও game theory এর বাস্তবতা - যে একজন উদ্যোক্তা , তাঁর সর্বোচ্চ মুনফা এর স্বার্থে শ্রমিক দের উপর শোষণ করবে।
পুঁজিবাদী রাষ্ট্রে ওই খানেই থাকে বাম দের ভূমিকা ।
একটা পুঁজি বাদী রাষ্ট্রে এই শোষণ টা হবেই । এবং উপরের মতো আবার বলছি। এই খানেই একটা পুঁজি বাঁদি রাষ্ট্রে বামপন্থী দের ভূমিকা আসে। এই টা শোষণ কে সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসার প্রশ্ন নয়। এই টা হল , শ্রমিকের কাজের এমন একটা মূল্য নির্ধারণের প্রশ্ন যা দিয়ে শ্রমিক সুন্দর জীবন এর নিশ্চয়তা পায়।
এখানে বোঝা জরুরি classical পুঁজি বাদ এ এই বিষয় গুলোতে তে রাষ্ট্রর নজর নাই। কারণ পুঁজিবাদী সিস্টেমে এ, প্রতিযোগিতার মাধ্যমে শ্রমিকের শ্রম এর মূল্য নির্ধারণ হওয়ার কথা। . তাই রাষ্ট্রকে একটা সম্মানজনক মূল্য নির্ধারণে বাধ্য করতে বামপন্থি দের প্রয়োজন।
রাষ্ট্র কে বলতে হবে, প্রতি ঘণ্টা শ্রমিক মজুরি কত হবে, ধরে নিন এখন শেখ হাসিনা বলে দিল, প্রতি ঘণ্টা কাজের জন্যে ২০০ টাকা করে দিতে হবে। তাহলে দেখবেন অর্থনৈতিক শোষণ automatic বন্ধ। কারন স্রমিক ন্যায্য মুল্ল্য পাচ্ছে। অথবা বাসার কাজের লোক দের সপ্তাহে একদিন ছুটি দিতে হবে(কিছু দিন আগে সিঙ্গাপুরে এ এটা করা হইসে)।
(আমার পুরো রচনার প্রতিবাদ্য কমুনিজম এর জন্নে সকাল বিকাল অস্রু বিসর্জন না দিয়ে এই বিষয় গুলো নিয়ে কাজ করতে। )
এটা শোষণের মাত্রা সহনশীল করার বিষয় নয়। এই খানে একটা important distinction করা খুব জরুরী। শ্রম মানেই শোষণ নয়।সকল ধরনের অর্থনীতিক সিস্টেম এ, শ্রম দিতে হয়। যে শ্রম দিবে সে শোষিত, যে শ্রম নিবে সে শোষক এই ধারণা টা আমাদের সব communist দের মাথায় প্রথিত। এই ধারণা থেকে কোথাও যাওয়া সম্ভব নয়।
শ্রমিক শ্রম দিয়ে যদি, ন্যায্য মজুরি না পায়, এবং সেই মজুরি দিয়ে যদি সে ভালো ভাবে চলতে না পারে, সেই টা শোষণ। তাই রাষ্ট্র যদি এমন একটা structure সৃষ্টি করে যে, যেখানে সপ্তাহে ৫ দিন,, গড়ে আট ঘণ্টা শ্রমিক এর শ্রম এর মূল্য তার চিকিৎসা, শিক্ষা, বাড়ি সহ একটা সুন্দর জীবন এর নিশ্চয়তা পাওয়া যায়, তাতে আমি বলব রাষ্ট্র মানুশ কে অর্থনৈতিক মুক্তি দিয়েছে।
আমি বিলাতে কিছু দিন কামলা দিছি। ওই খানে দেখেছি superstore এর
ঘর ঝাড়ু দিলেও আপনি নিজের মতো একটা বাসা কিনতে পারবেন, পাঁচ বছর কাজ করে, গাড়ি কিনতে পারবেন এক বছরেই।
আর এর alternative হিসেবে যদি একটা inefficient সিস্টেম দেন যেখানে আমি কাল বিকেল উদ্যম হীন পরিশ্রম করে দিনের শেষে লাইনে এ দাঁড়িয়ে ration এর রুটি নিয়ে বাসায় ফিরবো। এবং নিজেকে রাষ্ট্রের সব সম্পদের সম অংশীদার ভেবে সুখে শান্তিতে দিনাতিপাত করতে থাকবো আর নিজের সব স্বপ্নকে বিসর্জন দিয়ে রাষ্ট্রের আর পলীটবূরো এর হাতে শোষিত হব-. আর তাকে যদি আপনি ভালো সিস্টেম বলেন তো আমি তা মানতে রাজি নই।
বিশ্বের বৃহত্তম পাট কারখানা আদমজী
একটা পাল্টা প্রশ্ন করি, প্রতিযোগিতার মুখে, বেসরকারি প্রতি দ্বন্দ্বী দের থেকে ভালো করছে এমন একটা রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের নাম জানতে চাইছি।
সুন্দর মন্তব্যের জন্যে আবার ধন্যবাদ।
প্রথমত আমার জানা মতে আপনার যুক্তিটা ভুল। যেভাবে ব্যাখ্যা করলেন তা নিয়ে "game theory" কাজ করেনা, এটা কাজ করে একটি নির্দিষ্ট সমস্যা সমাধানের আলাদা আলাদা পন্থা নিয়ে, যেটাকে মোদ্দা কথায় বলা যায়, "ডিসিশন মেকিং"। আপনি যেটা নিয়ে আলোচনা করলেন সেটা মানুষের মানসিকতার একটি বৈশিষ্ট্য। "game theory" নিয়ে এভাবে বলা যেত, যেমন একটি সমস্যার সমাধান আপনার কাছে যেরকম আমার কাছে সেরকম নয়। আমাদের এপ্রোচ ভিন্ন এবং তাতে সেই সমস্যাটিতে কি ধরনের প্রভাব পড়ে সেটাই দেখার বিষয়। (মুভিটা দেখেছি অনেক আগেই।)
খোড়া যুক্তি। ভালোবাসা কিংবা সৌন্দর্য্য কোন একক দিয়ে পরিমাপযোগ্য নয় তাই এর উদাহরণ অবান্তর। সন্তানের প্রতি ভালোবাসা মানব সমাজেই একেক জায়গায় একেক রকম, প্রাণী জগতে অনেক পিতা-মাতা সন্তান জন্মের পরে লালন-পালন এর মতো কাজগুলো পর্যন্ত করে না। তাই এখানে কোন নির্দিষ্ট মানদন্ড নেই। আবার সুন্দরী নারী দিয়ে আপনি কি বোঝালেন আপনি নিজেই জানেন, যে নারী আপনার কাছে সুন্দরী সে আরেকজনের কাছেও একই আবেদন এর হবে এটা চিন্তা করা ভুল। একইভাবে এখানেও মানদন্ডের সমস্যা। এখানে অস্বীকার করার কিছু নেই তেমনি ধ্রুব কোন মানদন্ড নেই।
আবার ভুল, লক্ষ লক্ষবার কোথায় কোথায় ভুল প্রমাণিত হলো সেটাই কিন্তু কথা ছিলো। বরং জাপানের কাছ থেকে প্রচন্ড যুদ্ধে বিধ্বস্ত হওয়ার পরেও চীন মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে এই কম্যুনিজমকেই ভিত্তি করে, একইভাবে ভিয়েতনামকে পরাজিত করতে পারেনি শক্তিশালী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সেই একই রাজনৈতিক মতাদর্শের জন্য। হালের কিউবা টিকে আছে হাজারো নিষেদ্ধাজ্ঞার ভেতরে তাও এই আদর্শ নিয়ে। বরং হঠাৎ গণতন্ত্র পাওয়া দেশগুলোতে বিপর্যস্ত অবস্থা দেখতে হলে বেশি দুরে যেতে হয়না। আশেপাশেই সেটা বিদ্যমান।
আপনার লেখার একটা উদ্দেশ্য ছিলো, দেশের তরুণ কমরেডদের পড়াশোনার দ্বীনতা দেখানো, তাদেরকে যুগের সাথে নিজেকে উন্নত করতে হবে, ধ্যান ধারণার পরিবর্তন করতে হবে। কিন্তু আপনিও সেই পুরনো বুলি আউড়ে যাচ্ছেন, যেটা অনেক আগেই কম্যুনিজম এর ধারক-বাহকরা বলে গেছেন, যুক্তি দিয়ে দেখিয়ে গেছেন ছিদ্রগুলো।
Marx And Engels কি বলে গেছেন দেখুন-
এই ফুটো যুক্তি দিয়ে তো আর চলেনা, দেখতেই পাচ্ছেন সমস্যাটা কোথায়। আর যেই পুঁজিবাদী সিস্টেমকে আপনি মেনে নিতে বলছেন, তা মেনে নেবে কেন একটা মানুষ সেটা বলবেন? যেই পুঁজি আপনার শ্রমে উপার্জিত নয় বরং বংশানুক্রমে প্রাপ্ত সেটা আপনার পুঁজি এরকম ভাবার যে মানসিকতা সেটাই কি সমস্যাটাকে আরও জটিল করে তোলেনা? আর শ্রমিকের কিংবা কর্মচারীদের ঐক্যবদ্ধভাবে উপার্জিত মুনাফার যে বড় অংশটা কর্তাদের পকেটে যাচ্ছে তার সাথে কর্মচারী কিংবা শ্রমিকের শ্রমের এবং আয়ের যে পার্থক্য সেটা পূরণ পুঁজিবাদী সমাজে কখনো কি সম্ভব? আর তাহলে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত মুনাফার যে ধারণা সেটাই তো ভুল। কারণ এক শ্রেনীর কষ্টার্জিত পুঁজি আসলে আরেকটি শ্রেনীর মনোপলির শিকার।
ধরুন, আমি কষ্ট করে উপার্জন করি। আর তার একটি অংশ আমি ব্যাঙ্কে রাখি। আমার মতো এরকম অনেকের উপার্জিত অর্থ ব্যাঙ্কে থাকে। সমষ্টিগত এই অর্থ ব্যাঙ্ক নিজের পুঁজি হিসেবে নানা জায়গায় খাটায়। তার সিদ্ধান্ত নেয় ব্যাঙ্কের উঁচুতলার কর্তারা। কিন্তু এই পুঁজির মালিক তারা নয়। কিন্তু পুঁজি আমার থাকা সত্ত্বেও এর সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা আমর কাছে নেই। যদি আজকে ব্যাঙ্কের ভুল সিদ্ধান্তে বিপুল পরিমান লোকসান হয় তাহলে সেটার দায় আমার কাঁধেই পড়বে, যদিও এটার পেছনে আমার হাত নেই। আর যদি লাভও হয় তাতেও সামগ্রিক লাভের তুলনায় আমার কিংবা পুঁজির আসল মালিকদের লাভ কিছুই না।
দেখা যাচ্ছে, দেশে সেভিংস একাউন্ট ব্যবহার করতে আমাকে টাকা দিতে হচ্ছে। এটিএম ব্যবহার করতে টাকা দিতে হচ্ছে, এমনকি এটিএম থেকে ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট বের করতেও টাকা কাটা যাচ্ছে। সব বলা হচ্ছে, সার্ভিস চার্জ। কিন্তু আমার টাকার উপরে মুনাফার পরেও আমাকে এই চার্জগুলো কেন দিতে হচ্ছে সেটার জবাব দেয়া যায় কি?
পুঁজিবাদী একটি সমাজে ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকের কাজের মজুরি যদি রাষ্ট্রকেই নির্ধারণ করে দিতে হয় তাহলে সেটা রাষ্ট্র নিজের রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানে করলে কি সমস্যা? তাহলে এখানে ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠানকে বাজারে মনোপলি সৃষ্টির সুযোগ করে দেয়ারই বা কি দরকার পড়ে? শুধু তাই না, শুধু শ্রমিক এর কথা কেন, এক্সিকিউটিভ পর্যায়ে কাজ করা কর্মচারী হতে শুরু করে আস্তে আস্তে উপর দিকে গেলেও তো সেই আয়ের পার্থক্য চোখে পড়ার মতো। একগাদা মানুষ খেঁটে খেঁটে কয়েকজনের পকেট ভারী করে চলেছে।
কেউ তো সকাল বিকেল অশ্রু বিসর্জন দিচ্ছেনা, শোষক,শোষণ আর শোষিত নিয়ে কথা বললেই সেটা অশ্রু বিসর্জন কেন মনে হবে? কথাগুলো তো ভুল কিছু নয়। আমাদের দেশেই নয় অনেক দেশেই এখন পুরো দেশ নিয়ন্ত্রণ করে পুঁজিপতিরা। নির্বাচন হতে শুরু করে সরকার, আবার বাজার থেকে শুরু করে চাহিদার মানসিকতা সবই নিয়ন্ত্রণ করছে পুঁজিমালিকরা। এই যে একচ্ছত্র আধিপত্য সেটা কি গ্রহনযোগ্য?
আর কম্যুনিজম মানে তো শুধুই বিপ্লব নয়। বিপ্লব না হলে তো সমাজ অচল, সেটা সব ক্ষেত্রেই, শিল্প বিপ্লব হতে শুরু করে আজকে আমাদের সামাজিক বিপ্লব। পৃথিবীতে সমাজ ব্যবস্থা তো বিপ্লবের মধ্য দিয়েই এগিয়ে যাচ্ছে। আজকের পৃথিবীতে প্রযুক্তিগত বিপ্লব সব থেকে বেশি আলোচনার। সামাজিক বিপ্লব কখনোই এই গতির বাইরে তো নয়। কম্যুনিজম এ যে রাষ্ট্র কাঠামো পরিবর্তনের বিপ্লবের কথা বলে সেটা তো কোন অবাস্তব ধারণা নয়। এটা একটা পদ্ধতি যেটা যুগের সাথে অগ্রসর হচ্ছে। একটি কম্যুনিস্ট সরকার দুর্নীতির মনোপলি শুরু করলে তাকে সড়িয়ে দেয়ার জন্যও বিপ্লব দরকার। সমাজ ব্যবস্থা তো কোন রিজিড সিস্টেম নয় যে পুঁজিবাদ এবং এর অন্যায় মেনে নিয়েই আমাদের চলতে হবে।
কম্যুনিস্টরা এরকম ধারণার মধ্যে কখনো থাকে বলে তো মনে হয়না। শ্রম আর শোষনের মাঝে তফাৎ বোঝার ক্ষমতা তাদের আছে। শ্রম অনুযায়ী জীবন যাপনের অর্থ উপার্জন হচ্ছে কিনা সেটা নিয়েই তো মতবিরোধ। শ্রম তো কম্যুনিস্ট রাষ্ট্রতেও দিতে হবে।
সেই একই Tautology (rhetoric)। প্রাইভেট প্রপার্টি ধারণার বিলুপ্তি হলেই যে মানুষ নেংটা হয়ে থাকবে তা তো নয়। বরং পুঁজিবাদের ঝান্ডা উঠানো দেশগুলোর ভেতরের অবস্থাই করুন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এখন মানুষ চাকরিতে ঢোকার আগেই তার কাঁধে ঋণের বোঝা। ছাত্ররা স্টুডেন্ট/এডুকেশন লোন নিয়ে পড়া শেষ করছে আর তারপরে পরবর্তী জীবন এই টাকা শোধ করতে করতে সময় যাচ্ছে। ঋণে কেনা সম্পত্তি নিজের করতে করতে এক জীবন পার হয়ে যাচ্ছে। উচ্চমূল্যের সুদে এখন নানা দেশেই মানুষের ঋণ শোধ করতে ঠেলা বেড়িয়ে যাচ্ছে। এই জিনিসগুলো তো আপনার জানার কথা। কিছুদিন আগেও একটা লেখায় পড়লাম এখন পাশ্চাত্যের তরুনেরা সমাজতন্ত্র নয়তো কম্যুনিজমের দিকে ঝুকছে শুধু এই ঋণের বোঝা মাথায় চেপে থাকার কারণেই।
আদমজীর বন্ধ হওয়ার পেছনে যতদুর জানি সরকারের পরিচালনার ব্যর্থতা আর স্বার্থান্বেষী মহলের চক্রান্তের কথা।
ভারতে কিংফিশার দেউলিয়া হয়ে গেছে এয়ার ইন্ডিয়া কিন্তু এখনও টিকে আছে।
----------------------------------------------------------------------------------------------
"একদিন ভোর হবেই"
জাপানের চেয়ে আরও বেশি হত্যা করেছে মাও জেডং (প্রায় চার কোটি মানুষ)। মাও যাকে গোপন ক্যাপিটালিজমপন্থী হিসাবে সন্দেহ করতো, সেই Deng Xiaoping মাওয়ের প্রস্থানের পর ইকোনমিক রিফর্ম করে, যার মূল ভিত্তি ছিলো বাজার খুলতে থাকা, পুঁজিবাদি মার্কেটের সুযোগ তৈরি করা, ব্যক্তিগত ব্যবসার সুযোগ তৈরি করা। চীনের মাথা তুলে দাঁড়ানো তার আগের ঘটনা, এমন ক্লেইম ahistorical। এটা পুঁজিবাজারের পক্ষে একটা শক্ত পর্যবেক্ষণসিদ্ধ প্রমাণ।
তা পুঁজিবাদ এতোই যদি খারাপ, সেটা রাষ্ট্রকে অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহায়তা করে কেনো? পুঁজিবাদ কি জিরো সাম গেইম? পুঁজিবাদ কি প্রিন্সিপালি একটা খারাপ ধারণা? সর্বতোভাবে ক্ষতিকর?
পুঁজিবাদের দু’টি দিক। একটা এর পর্যবেক্ষণসাধ্য সাক্সেস। বহু রাষ্ট্রে এটা নট এ জিরো সাম গেইম প্রমাণ হয়েছে। পুঁজিবাদের কারণে মালিক, শ্রমিক, ভোক্তা সকলের better off থাকার প্রমাণ আছে অনেক। তার সাথে সমস্যাও তৈরি হয়েছে অনেক। সেই সাক্সেস আর সমস্যাকে একত্রে দেখলে আর সম্পূর্ণ পুঁজিবাদরহিত রাষ্ট্রসমূহের সাক্সেস আর সমস্যাকে পাশাপাশি রাখলে একটা স্পষ্ট কন্ট্রাস্ট তৈরি হয়। সম্পূর্ণ পুঁজিবাদরহিত রাষ্ট্রগুলোতে একটা বড় সমস্যা হচ্ছে গণহত্যা। লক্ষ থেকে কোটির ঘরে মানুষ হয় না খেয়ে মরছে, না হলে নিধন হয়েছে। এটা তার চরিত্রের অংশ। সাম্রাজ্যবাদ যতোটা পুঁজিবাদী রাষ্ট্রের চরিত্রের অংশ, ততোটাই। তথ্য উপাত্তের ভিত্তিতে সম্পূর্ণ পুঁজিবাদরহিত রাষ্ট্রের সাস্টেইন করার উদাহরণই বা কয়টি?
পুঁজিবাদের অন্য দিকটি হচ্ছে প্রিন্সিপল। এই দিকেই সংঘাতটা সবচেয়ে বড়। একজন কমিউনিস্ট যদি মনে করে প্রোপার্টি রাইট্স থাকা উচিত নয় বা একসময় উঠে যাওয়া উচিত, তাহলে পুঁজিবাদে যতোই পর্যবেক্ষণসাধ্য সাক্সেস তৈরি হোক, সেটা তাদের আগ্রহী করবে অল্পই। কারণ অ্যাক্সিআম তথা কলেমাতেই যে পার্থক্য। পুঁজিবাদে প্রিন্সিপল হচ্ছে প্রোপার্টি রাইট্স থাকা বাঞ্ছনীয়। প্রোপার্টি রাইট্স মানুষের ন্যাচারাল রাইট্স। এবং এক অর্থে প্রোপার্টি রাইট্স মানব সভ্যতার একটা সাধারণ বিকাশের অংশ। বরং এটা থাকা উচিত নয়, এমন চিন্তাটাই অসাধারণ (uncommon)। ফলে মানুষের ইন্ট্রিন্সিক বৈশিষ্ট্য, এমন কি দরিদ্র শ্রমিকদেরও, যে প্রোপার্টি রাইট্সের প্রতি একটা ন্যাচারাল সমর্থন থাকা। এর বিপরীত অবস্থানের জন্যে বরং তাদেরকে নানাভাবে মার্ক্সের যুক্তিগুলো বোঝানোর দরকার পরে। সেটা অসম্ভব তাও নয়। তবে উপরে অতিথি বার বার মানুষের যে ইন্ট্রিন্সিক বৈশিষ্ট্যের কথা বলছেন, সেটার দিকেই ইঙ্গিত করছি। মানুষের ইন্ট্রিন্সিক বৈশিষ্ট্যকে কি অগ্রাহ্য করা সম্ভব?
প্রোপার্টি রাইট্স নিয়ে এই লেখাটা পড়তে পারেন।
পুঁজিবাদে কোনকালে সমানে সমানে প্রতিযোগিতা হয়? কেউ জন্ম থেকেই ধনী আর কেউ জন্মেই কাঙ্গাল, তাদের এক মঞ্চে একই পদ্ধতিতে প্রতিযোগিতা করতে বলে কি লাভ? যদি ব্যক্তিগত সম্পদ না থাকে তাহলে তো প্রতিযোগিতা সম্ভব এই সম্ভাবনাই বা উড়িয়ে দেই কেন?
আপনি কম্যুনিস্ট দেশগুলোর খারাপ দিকগুলি যেমন দেখেন ভালো দিকগুলো যদি সেভাবে দেখতেন তাহলে কথা ছিলো। চীন যদি প্রথমে ঐ পুঁজিবাদ এর ঢোল বাজিয়ে অগ্রসর হতো তাহলে চীন আর চীন থাকতো না। সাম্রাজ্যবাদের ঠেলায় এমনিতেই হাওয়া হয়ে যেত। একটা ভিত্তি তৈরী করার পরে তাতে মাতব্বরি করা সহজ কিন্তু ঐ ভিত্তিটা তৈরী করাই কঠিন। কম্যুনিস্ট বিপ্লবে যদি দেশটা এক না হতো তাহলে ইকনমিক রিফর্ম এর আগেই বাকি সব রিফর্ম হয়ে যেত।
এখানে উল্লেখ্য, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর আত্মজীবনী গ্রন্থেও সেসময়ের চীনের স্মৃতিচারণ দেখলাম, যুদ্ধ বিদ্ধস্ত একটি দেশের মাথা তুলে দাঁড়ানোর জন্য যে কম্যুনিস্ট ব্যবস্থা তাকে তো সমর্থনই করেছেন দেখলাম। বরং এধরনের কর্মপন্থা আর নেতৃত্ব এবং জনগনের লড়াই করে বেঁচে থাকার মানসিকতাকে তিনি সাধুবাদ জানিয়েছেন।
একটা দেশের সামগ্রিক সম্পদের প্রায় ৮০ ভাগ যদি একটা নির্দিষ্ট শ্রেনীর হাতে থাকে আর বাকি ২০ ভাগ নিয়ে যদি কামড়াকামড়ি করে সন্তুষ্ট থাকতে হয়, এটারে কি সাকসেস বলবেন? যদি বলেন, তাহলে আপত্তি নাই। এমনিতেও দেশে এই করেই পার হয়েছে এতগুলো বছর।
ব্যক্তিগত সম্পদের ধারনাটাই সুন্দর। সেটা আফিমের মতো নেশা জাগায় ঠিকই। একজন শ্রমিকের ঘর ভাড়া দেয়ার টাকা নাই তবুও সে ব্যক্তিগত হাড়ি-পাতিলের স্বপ্নেই বিভোর থাকে এটাই স্বাভাবিক কারণ সমাজে এভাবেই চলে আসছে। কিন্তু কম্যুনিস্ট রাষ্ট্রে কি ব্যক্তিগত সম্পদ কেড়ে নেয়ার কথা বলা হয় কোনখানে? নাকি সমগ্র সম্পদের সুষম বন্টনের মাধ্যমে সবার সমান সুযোগ নিঃশ্চিত করার কথা বলা হয়?
রাশিয়াতে স্তালিন কোটি মানুষ হত্যা করছে, চীনে কম্যুনিস্ট পার্টি ক্ষমতায় আসার পরে হত্যা হয়েছে, হয়েছে আরো অনেক দেশেই আর তার মানেই কম্যুনিজম খারাপ, এটা সঠিক ভাবনা। নাকি কম্যুনিজমকে দলীয় মনোপলির শিকার হতে হয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে কেউ উঠে দাঁড়াতে পারেনি এটা সঠিক ভাবনা?
পুঁজিবাদ ভালো ধারণা, গ্লোবালাইজেশনের যুগে যখন আমাদের ম্যাকডোনাল্ডস আর কোক ছাড়া চলেনা চীন এর মতো দেশগুলো তো এখনও চেষ্টা করছে নিজেদের জিনিস টিকিয়ে রাখতে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যেখানে মায়ানমারের রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে মাথা ঘামায় না বরং কোক কোম্পানির চুক্তি অনুযায়ী সেখানে কারখানা গড়তে বেশি মনোযোগী তাই সরকারের সাথে আপোষে কাজ সারতে চায় তাহলে পুঁজিবাদ কোনসা মানবতার ঝান্ডা তুলে দৌড়ে চলেছে?
যেখানে সর্বোচ্চ মুনাফা আর ব্যক্তিগত সম্পদের বৃদ্ধি হচ্ছে প্রধান পন্থা সেখানে শোষণ হবে না এটা ভাবাই তো ঠিক না।
----------------------------------------------------------------------------------------------
"একদিন ভোর হবেই"
চীনের ইকোনমিক রিফর্ম মার্ক্স আর মাও উভয় কমিউনিজম বিরুদ্ধ। আমরা ধারণাগুলোকে আলাদা করে উভয়ের ভালো মন্দ বের করার চেষ্টা করছি, ঝগড়া করার চেষ্টা করছি না। চীনের একতাবদ্ধ হবার কাঠামো তৈরি করাটা যদি কমিউনিজমের একটা ভালো দিক হয়, তাদের পুঁজিবাজার তৈরি করে অর্থনৈতিক উন্নয়ন করাটাও তো পুঁজিবাদের ভালো দিক। আমার উদ্দেশ্য তুলনামূলক আলোচনার উদ্দেশ্যে পুঁজিবাদ কেনো কাজ করে সেটাকে সামনে আনা। সেটা ছাড়া তর্কগুলো একতরফা হচ্ছে।
বঙ্গবন্ধু বললেও মাওয়ের হাতে চার কোটি লোক মারা গেছে, না বললেও চার কোটি লোক মারা গেছে। সে সময়ের ইতিহাসটা দয়া করে একটু পড়ুন। চীনের সরকারও এখন আর সে সময়ে মাওয়ের পলিসি নিয়ে বড়াই করে না। Deng Xiaoping আরো অনেক আগে থেকেই পুঁজিবাজার করার পক্ষে ছিলেন। মাও তার কালচারাল রেভল্যুশন করে গণহত্যা ঘটিয়ে সেটাকে পিছিয়ে দিয়েছেন।
একটা মাত্র দল থাকলে দলীয় মনোপলি না থাকবে কীভাবে? দলীয় মনোপলি মার্ক্সই চেয়েছিলেন। এটাকে শিকার হওয়া বলাটা অদ্ভুত। কারো উঠে দাঁড়ানোর সব পথ বন্ধ করার ব্যাপারে একমত হয়ে আবার "তার বিরুদ্ধে কেউ উঠে দাঁড়াতে পারেনি" বলাটা আরো অদ্ভুত। সমগ্র জনগোষ্ঠিকে লাইনে আনতে দলীয় মনোপলি দরকার, এটাই ছিলো মূল ভাবনা। কিন্তু দল মনোপলি নেওয়ার পর মেকানিজমটা কীভাবে কাজ করবে, সেটা নিয়ে কমিউনিস্টদের মোটামুটি একটা উপেক্ষা, অনীহা, অজ্ঞতা আছে।
একটা সাস্টেনেবল সিস্টেমের সেল্ফ কারেকশনের ব্যবস্থা থাকতে হবে। সেটা না থাকার অর্থ সেখানে নেতাদের ইচ্ছাশক্তির উপর মূলত নির্ভর করা হচ্ছে। নেতা যেহেতু মনোপলি ভোগ করছে, ভুল হলেও অস্বীকার করাটা তার জন্যে স্বাভাবিক। ফলে ভুল বাড়তে থাকে। তার পরিণতি হয় অর্থনীতি ধ্বংস, গণহত্যামূলক নীতি, ইত্যাদি। এটাকে কীভাবে কারেক্ট করা যাবে সেটা নিয়ে কমিউনিস্টরা আজো কোনো সমাধান অফার করতে অনীহ।
উপরে দেখুন আপনি নিজেই বলছেন মার্ক্স বলেছেন -
মার্ক্স তো ব্যক্তিগত সম্পত্তি abolish করার কথাই বলছেন। গণসম্পত্তির বণ্টন আর ব্যক্তিগত সম্পত্তি দুটো পরস্পর বিরোধী ধারণা। ব্যক্তিগত সম্পত্তি থাকার অর্থ, আমার যা কিছুই আছে, সরকার বা আপনি বা যেকেউ তা বণ্টন বা অন্যকিছুর নামে আমার অধিকারের বাইরে নিতে পারবে না। ব্যক্তিগত সম্পত্তির উপর একটু পড়াশোনা করলে হয়তো আপনার কাজে দিবে। অন্তত এর বিরুদ্ধ আপনার অভিযোগগুলো আরো মিনিংফুল হবে।
আসুন আমরা আলোচনা করি। তথ্য উপাত্ত দেই। উপরে আমি সুনির্দিষ্ট প্রশ্ন করেছি।
এই সবগুলোর উত্তর আপনি মার্ক্সের অবস্থান থেকে দিতে পারেন। সেটাও একটা ভালো সুসংহত আলোচনা হবে। সেটুকুও করা না গেলে এটা আলোচনার বদলে বচসায় পরিণত হবে।
আমার মনে হয় মার্ক্সের দর্শন পড়া থাকলে এই প্রশ্নগুলো উদয় হওয়ার কথা না। যদিও মার্ক্সের দর্শন কোন মুখের কথা না, বোঝা সহজ না মোটেও। সবটা বুঝতেই হবে এরকম নয়, তবে যে জিনিসগুলো বোঝার তা চেষ্টা করা উচিত। তার লেখা থেকেই কিছু অংশও টুকে দেই।
এইবার আপনার এই অভিযোগ নিয়ে কিছু বলি।
দলীয় মনোপলি মার্ক্স চেয়েছিলেন এটা আমার কাছে সব থেকে খোড়া মনে হয়। তিনি বারবার উল্লেখ করেছেন, যে বিপ্লব কোন রিজিড কিছু নয় এটা বহমান। বিপ্লবের সাথে সাথে সমাজ অগ্রসর হয়।প্রলেতারিয়তদের বিপ্লবের কারণে যে নতুন রাষ্ট্র কাঠামো আর সরকার আসবে তা যদি আবার মনোপলির সৃষ্টি করে তাদেরও পূর্বের উপায়ে বিদায় নিতে হবে। কারণ তখন আবার একটি প্রলেতারিয়েত বিপ্লবের সূচনা হবে।
আমাদের বড় ব্যর্থতা আমাদের পুঁজিবাদী মানসিকতার জন্য আমরা মার্ক্সের দর্শনকে গন্ডিবদ্ধ করে রাখি এবং সেভাবেই প্রচার করি। কিন্তু কখনোই এর গভীরে যাওয়ার চেষ্টা করিনা একটি মাত্র ভয় থেকে যে আমার ব্যক্তিগত সম্পদ যদি কেড়ে নেয়া হয়। কিন্তু যদি সঠিকভাবে এই দর্শনকে মূল্যায়ন করা হয় আমার মনে হয় এর বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ এই দর্শনেই খন্ডন করে দেয়া আছে। যদি অভিযোগ আনতেই হয় তো আসুক কম্যুনিস্ট পার্টিগুলোর অপকর্মের বিরুদ্ধে। যেভাবে অভিযোগ আসবে গণতন্ত্রের নামে পরিবারতন্ত্র কিংবা দলীয় স্বৈরাচার চালানো সরকারগুলোর বিরুদ্ধে। সেই অভিযোগ অবশ্যই গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে নয় বরং একে ব্যবহার করে ফায়দা লোটা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে।
----------------------------------------------------------------------------------------------
"একদিন ভোর হবেই"
আমার প্রশ্নগুলো তো অর্থনীতি সংক্রান্ত এবং এর অনেকগুলোই গবেষণাযোগ্য ও পর্যবেক্ষণসাধ্য। ফলে এর উত্তরগুলোর জন্যে আমাদের তথ্য উপাত্ত পর্যবেক্ষণ আর মার্ক্সপরবর্তী অর্থনীতির গবেষণার দিকে চোখ দেওয়া উচিত, তাই না? এর বদলে
তো ভয়াবহ ধরনের কথা। পর্যবেক্ষণলব্ধ নতুন তথ্য উপাত্ত দিয়ে যে প্রশ্নগুলোর উত্তর জানার চেষ্টা করা জরুরি, সেগুলোর সকল নাকি দেওয়া আছে দেড়শ বছর পুরনো কতগুলো লেখায়! তাহলে আপনার কাছে বিজ্ঞানের দর্শন নিয়েই একটা মৌলিক প্রশ্ন করি। একটা পর্যবেক্ষণসাধ্য প্রশ্নের সকল উত্তর কি একটা দর্শনের বইতে সব দেওয়া থাকতে পারে বলে মনে করেন? নাকি মনে করেন যে এর উত্তরের জন্যে প্রতি নিয়ত প্রাপ্ত পর্যবেক্ষণ ব্যবহার করে গবেষণা করে যাওয়ার দরকার আছে?
মার্ক্সের দর্শন একেবারে না পড়া নয়। কিন্তু এক লেখকের পাঠক হলে তো সমস্যা। প্রাইভেট প্রোপার্টি সম্পর্কে শুধু মার্ক্সের কথা শুনলেই কি যথেষ্ঠ? সেজন্যে আপনাকে উপরে একটা আর্টিকেল দিয়েছিলাম।
আর আপনি মার্ক্সের যে বাণী তুলে দিলেন, সেখানেও তিনি পুনর্বারই বলছেন যে উনি "ব্যক্তিগত সম্পত্তি" abolish করতে চান এবং কেনো চান। এই তো। এটা একটা মোরাল অবস্থান। এ বিপরীত আমার উত্তর হচ্ছে, ওনার এই ধারণাটা মানুষের অর্থনীতির জন্যে অনুকূল নয়। মার্ক্সের প্রধান ভুল যেটা অনেক অর্থনীতিবিদরা বলেন, উনি ভেবেছিলেন বাজার একটা জিরো সাম গেইম। কিন্তু সেটা যদি না হয়, তাহলে সময়ের সাথে মালিক শ্রমিক ভোক্তা সকলেই বেটার অফ হবে। অর্থাৎ অর্থনৈতিক উন্নয়ন হবে। এই পথেও ধীরে ধীরে একটা সমাজে দারিদ্র ও অন্যান্য সমস্যা যদি দূর হয়, তরপরেও অন্যের কেনো আমার চেয়ে বেশি টাকা আছে বলাটার ভিত্তি দুর্বল হয়।
তাহলে আপনি মনে করেন যে একটা কমিউনিস্ট পার্টি দেশে দলীয় মনোপলি কায়েম করছে এটা মানা যায় না? যেমন ক্যাস্ট্রোর পার্টি?
ভয়ঙ্কর একটা কথা বললেন! কিছুক্ষণ থ হয়ে ছিলাম এই কথা শুনে। শুনুন। বিজ্ঞানের দর্শন সম্পর্কে একটু জানার চেষ্টাও করুন। তাহলে আপনি এই কথাটাই কখনো বলতে পারতেন না। যে দর্শন মানুষের প্রশ্ন উদয়ের পথ বন্ধ করে দেয়, সেটা ধর্মে পরিণত হয়। প্রশ্নই একমাত্র যা চির জাগ্রত, উত্তর নয়।
ধরুন বিবর্তন নিয়ে আপনাকে প্রশ্ন করা হলো। আপনি নিশ্চয়ই বলবেন না যে রিচার্ড ডকিন্সের বই পড়লে অমুক প্রশ্নের উদয় হবার কথা নয়। যেখানে বিবর্তন নিয়ে গবেষণা চলমান এবং এর উত্তরগুলোরও পরিমার্জন চলছে। আর বিজ্ঞান ও দর্শনের মানুষেরা প্রশ্ন করাকেই উৎসাহিত করে।
তো মানুষের অর্থনীতি তো আরও দুঃসাধ্য বিষয়। সেটা কীভাবে গবেষণা ছাড়া এগুবে?
উপরের প্রশ্নগুলোকে গবেষণা প্রশ্ন হিসেবে বিচার করুন। কিছু অর্থনীতি বিষয় নতুন বই বা গবেষণা প্রবন্ধ ঘাটলে দেখবেন এই প্রশ্নগুলো এখন আরো আরো প্রাসঙ্গিক। প্রতি নিয়ত চেষ্টা চলছে উত্তরগুলো পাওয়ার, পরিমার্জন করার। সেখানে আপনি যদি বলেন যে সকল উত্তর মার্ক্সের দর্শনে দেওয়া আছে, কিংবা মার্ক্সের দর্শন পড়লে এই প্রশ্নগুলোর উদয়ই হতো না, তাহলে কেমন হবে বলেন তো? আপনার এই কথাগুলোর অসাড়তা যদি একটুও উপলব্ধি করেন, তাহলে আশা করবো প্রশ্নগুলোকে একজন চিন্তক হিসেবে বার বার চিন্তা করার যোগ্য হিসেবে দেখবেন, একজন ধার্মিক হিসেবে অউদয়যোগ্য প্রশ্ন হিসেবে নয়। এরপর হয়তো উত্তরগুলো বের করার চেষ্টা করলেন। সময় নিয়ে। আমিও করছি। তারপর একসময় পরে আমাদের জানাটা আমরা শেয়ার করে নিলাম। আপনার কাছ থেকে কিছু জানলাম, আপনার নিজের ভাষায় করা ব্যাখ্যা। সেটা মার্ক্স ঘেঁষাও হতে পারে। কিন্তু যখন আপনি চিন্তা ভাবনা করে তথ্য উপাত্ত যোগ করে পর্যবেক্ষণসিদ্ধ করে একটা উত্তর করবেন, সেটা আপনার উত্তর। সেটা আর মার্ক্সের উদ্ধৃতি এক জিনিস নয়।
একটু বোঝার ভুল হলো, আমারই দোষ, আমি শেষে এক কথায় উপসংহার টেনে দিলাম। আমি আপনার পুঁজিবাদ সংক্রান্ত প্রশ্নগুলোর উত্তরের জন্য কথাটা বলিনি, বলেছি আপনি যে প্রশ্নগুলো মার্ক্সের দর্শন আর কম্যুনিস্ট পার্টির কার্যক্রম নিয়ে বলেছেন। আর তাছাড়া ক্যাপিটেল আর ব্যক্তিগত সম্পদের ব্যাপারটায় আপনার উক্তিগুলোর জবাবে আমার ধারনাটা বলেছি।
আপনি কিউবা নিয়ে এর আগেও আমাকে প্রশ্ন করেছেন, হয়তো এটা আপনার একটা ফ্যাসিনেশন। যাই হোক, যদি কিউবার আপামর জনগন কাস্ত্রোর দলীয় শাসনে খুশি না হয় তাহলে ভিন্ন কথা। আর এখানে কাস্ত্রো কিউবার অর্থনীতিতে ঠিক কতটা দলীয় মনোপলি জারি রেখেছেন সেটারও প্রশ্ন। যদি মনোপলি বিস্তার না করে থাকেন, আর তাতে অর্থনীতিতে সাধারণ জনগনের কোন সমস্যা না থাকে, সে ক্ষেত্রে কাস্ত্রোর শাসনের কোন সমস্যা তো আমি দেখিনা। যদি নেতৃত্ব ঠিক থাকে তাহলে সেই নেতৃত্বের অধীনে বছরের পর বছর টিকে থাকতে তো সমস্যা হওয়ার কথা না।
প্রশ্ন উদয় হওয়া আর যে প্রশ্নের উত্তর দেয়া আছে সেটাই বার বার করার মাঝে একটা পার্থক্য থাকে। আপনি মার্ক্সের দর্শন থেকে তার দলীয় মনোপলি সংক্রান্ত ব্যাপারে প্রশ্ন করলেন, আবার একইভাবে প্রপার্টি নিয়ে একই প্রশ্ন তুললেন, সেই প্রশ্নগুলোর উত্তর তো তার দৃষ্টিভঙ্গিতে দেয়া আছে। এটা বলার কারণে আপনি থ মেরে বসে গেলেন কোন দুঃখে?
----------------------------------------------------------------------------------------------
"একদিন ভোর হবেই"
ঠিক আছে।
তবে কিউবা আমার ফ্যাসিনেশনের বিষয় নয়, চিন্তা ভাবনার বিষয়। কিউবা অন্যান্য কমিউনিস্ট রিজাইমের তুলনায় এখন পর্যন্ত টেকসই প্রমাণ হয়েছে। তাই আমাদের সেটাকে স্টাডি করা উচিত। নির্মোহ হতে পারলে সেটা আমাদেরই মঙ্গল।
কিউবা প্রসঙ্গে সমস্যাটা বলি। রাশিয়ার কমিউনিস্ট পার্টি ততোটাই বিপ্লব করে ক্ষমতায় এসেছে যতোটা ক্যাস্ট্রো এসেছে। রাশিয়া নিজ দেশে গণহত্যা, ম্যানিপুলেশন, এসব কী না চালিয়েছে। ক্যাস্ট্রো তা চালায় নি। এই পার্থক্যটা আমরা জানতে পারছি আফটার দ্য ফ্যাক্ট। কিন্তু ক্যাস্ট্রো যখন ক্ষমতা দখল করছিলেন, তখন কীভাবে বলা সম্ভব হতো ক্যাস্ট্রো কী পথে হাঁটবেন? সেটা অপর্যবেক্ষণসাধ্য। সেখানে আমাদের নির্ভর করতে হবে পার্টির প্রধানের ইচ্ছার উপরে। উনি মনোপলির অসদ্ব্যবহার করছেন কিনা, তার চেয়েও বড় ব্যাপারটা হলো, ওনার সেই সুযোগ আছে।
কিন্তু আমরা যখন বৈজ্ঞানিক আলোচনায় যাবো, তখন আমরা পূর্বাভাসযোগ্য তত্ত্ব দেওয়ার চেষ্টা করবো। একটা ব্যাংকগুলো ইচ্ছে মতো টাকা ছাপালে মুদ্রাস্ফীতি বাড়বে। একটা পূর্বাভাস। সেরকম কী কথাটা বলা সম্ভব, যখন একটা দল বিপ্লবের মাধ্যমে ক্ষমতার মনোপলি গ্রহণ করে? উত্তরটা ভীষণ অনিশ্চিত। তবে কিছু কিছু ধারণা আমরা পেতে পারি। যেমন, কেবল একটা দল যদি মনোপলি ক্ষমতা ব্যবহারের সুযোগ পায়, তার সাথে মানুষের স্বাভাবিক আচরণের যোগসূত্র ঘটালে পাই যে মানুষ সেটার অপব্যবহার করবে। যার উদাহরণ হলো রাশিয়ার বিপ্লব, মাওয়ের বিপ্লব, এমন আরো অনেক। তবে মানুষের মাঝে ব্যতিক্রমও যেহেতু আছে, তাই উল্টো উদাহরণও আছে, যেমন কিউবা।
মনোপলি ক্ষমতা পাওয়া মানুষের প্রবণতা কোনটার দিকে বেশি? শোষণ, ম্যানিপুলেশন। ফলে আগামিতে ধরুন বাংলাদেশে কোনো কাস্ট্রো যদি বিপ্লব করে একটা ব্যতিক্রমী রিজাইম গড়তে চায়, তাকে বিশ্বাস করার কী কী পর্যবেক্ষণলব্ধ উপায় আমাদের আছে? প্রায় কিছুই নেই। হয়তো শোনা যাবে তার ত্যাগ তিতীক্ষার কিছু অ্যানেক্ডোট, ইত্যাদি। তাহলে যেখানে মনোপলি ক্ষমতা পাওয়া মানুষের হাতে দেশের ভয়াবহতম দুর্যোগটি ঘটার সম্ভাবনা এতোটা বেশি, সেখানে কোনো রকম পর্যবেক্ষণলব্ধ প্রমাণ ছাড়া ওই লোকের হাতে ইন দ্য ফার্স্ট প্লেইস ক্ষমতা দেওয়াটাই কি একটা বিরাট রিস্ক নয়?
ক্ষমতার মনোপলি শোষণমূলক হওয়াটাই স্বাভাবিক ঘটনা। তাই একে সীমিত করার জন্যেই গণতন্ত্র। যেখানে একদল ক্ষমতায় থাকলেও অন্য দল ভিন্ন মত দিতে পারে। এর জন্যে মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতা থাকাটা সর্বাবস্থায় জরুরি। এটা কোনো সাময়িক প্রয়োজন নয়। ক্যাস্ট্রোর মতো মহৎ মানুষের শাসনও একে নিয়ন্ত্রণকে জাস্টিফাই করে না। উনি মানুষ। দেবতা নন। উনি কাল দুষ্কর্ম করবেন না, এমন ধর্মিক ভরসা আমরা দিতে পারি না। তাই সিস্টেমের সেল্ফ কারেকশনের জন্যে, ফেইল সেফ হবার জন্যে সর্বাবস্থায় মত প্রকাশের সুযোগ থাকা জরুরি।
মার্ক্স বলছেন একেকটা বিপ্লব হবে, সে ভালো ঘটাবে নয়তো প্রলয়কাণ্ড ঘটাবে, মানুষ তার বিরুদ্ধে প্রতিবিপ্লব ঘটাবে। কিন্তু এই প্রফেসির পরিণামটা চিন্তা করেছেন? এটা কিন্তু প্রকারান্তে বিপ্লব করে মনোপলি ক্ষমতা গ্রহণকে বাই ইটসেল্ফ অগ্রহণযোগ্য বলছে না। যখন গণহত্যা হবে, মানুষ প্রতিবাদ করবে, তখন অগ্রহণযোগ্য। কিন্তু মনোপলি ক্ষমতা গ্রহণ বাই ইটসেল্ফ খারাপ কিছু না। কিন্তু এখন এতো পর্যবেক্ষণলব্ধ প্রমাণের পর আমরা যেহেতু জানি যে মানুষের স্বাভাবিক আচরণের ফলস্রুতিতে মনোপলি ক্ষমতার ফলাফল খারাপ হবার সমূহ সম্ভাবনা থাকে, তাই এই প্রক্রিয়াটাকেই সমালোচনা করার দরকার পড়ছে। আমরা মানুষের উপর তো এভাবে বদ্ধ মনোপলি ব্যবস্থা জারি করে ভালো কিছু ঘটতে পারে এই আশায় পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে পারি না।
হ্যাঁ, এটা ভাববার বিষয় বৈকি। ক্ষমতা তো যেকোনো উপায়ে গ্রহণ করা যায় কিন্তু তারপরে ক্ষমতাধর ব্যক্তির প্রতিক্রিয়া কি হবে সেটা ভাবনার বিষয়। এই সম্পর্কে কি আসলেই কোন পূর্ভাবাস দেয়া সম্ভব? মনে হয়না।
যেমন আমরা দেখি কম্যুনিস্ট সরকারগুলো একচ্ছত্র ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে তাদের দেশগুলোতে একইসাথে কিছু কিছু জায়গায় তারা সাধারণ গণতান্ত্রিক সরকার ব্যবস্থা থেকে বেশ ভালোই করেছে। আবার একইসাথে দেখুন, গণতন্ত্রে একটা সংখ্যাগরিষ্ঠ দল যখন ক্ষমতা গ্রহণ করে তখন যে তারা দলীয় মনোপলি করবেনা তাও তো নয়।
বাংলাদেশের কথাই ধরি। সরকার বদল হয় মানুষের ভোটে, কিন্তু সরকারগুলো কি শেষপর্যন্ত মানুষের আশা ধরে রাখতে পারে? যদি সরকার বদলের সাথে উন্নয়নের কোন সম্পর্কই না থাকে তাহলে যে দলই থাকুক না কেন বড় মাপের কোন পরিবর্তন তো আসবেনা। আবার সরকারগুলো ক্ষমতা পাওয়ার পরেই শুরু করে দলীয় মনোপলি, তা অর্থনীতি হোক আর সমাজনীতি, কিন্তু কয়জন সাধারণ মানুষ তার বিরুদ্ধে সরব হয়? আর হলেও সেটার কোন প্রভাব কি পড়ে? যদি প্রভাব নাই পড়ে তাহলে এই প্রতিবাদের কোন মূল্য তো নেই। আমি আজকে হইচই করে খুশি কারণ আমার মত প্রকাশের স্বাধীনতা আছে কিন্তু এর প্রভাব যদি না থাকে সেই স্বাধীনতায় কি লাভ?
তবে আর একটা জিনিস, কম্যুনিস্ট সরকার ক্ষমতায় এলেই গণহত্যা হবে এটা আমরা ধরে নিচ্ছি কেন? যদি অতীতের নানা ঘটনার পর্যবেক্ষণলব্ধ হয়ে থাকে তাহলেও তো সেই ঘটনাগুলোর মতো নতুন আরেকটি কম্যুনিস্ট সরকারও একই পথে হাঁটবে এটা ভাবা তো একপাক্ষিক চিন্তা হয়ে যাবে তাইনা?
----------------------------------------------------------------------------------------------
"একদিন ভোর হবেই"
ব্যাপারটা তুলনামূলক বিচারের। গণতন্ত্রেও তো যে দল জেতে সে সাময়িক মনোপলিই ভোগ করে। কিন্তু গণতন্ত্রে সেল্ফ কারেকশন, ফিডব্যাক, ফেইল সেইফের পদ্ধতি রাখা আছে। এটা যথেষ্ট নয়, কিন্তু আবশ্যক। এটা থাকা আর না থাকার পার্থক্য সম্পর্কে আমরা পর্যবেক্ষণসাধ্য পূর্বাভাস করতে পারি, যাতে অতীতের পর্যবেক্ষণ আমাদের সাহায্য করবে। এটা ছাড়া যে ব্যাপারটা আরো ভয়াবহ হবার অবারিত সম্ভাবনা থাকে, এটাই বলতে চাচ্ছি। দল ভুল করলে সেটা বলার সুযোগ থাকাটা ভালো নাকি সেটা অনেক সময় মানুষ ব্যবহার করে না বা খুব কাজে দিচ্ছে না দেখে না থাকাটা ভালো? যদি মনে করেন সিস্টেমের বিন্দুমাত্র সেল্ফ কারেকশন মেকানিজম দরকার, সবার আগে দেখবেন বলার স্বাধীনতার কথা মনে পড়বে। এটা যথেষ্ট অবশ্যই নয়। কিন্তু এটা ছাড়া কোনো প্রকার সেল্ফ কারেকশন মেকানিজম শুরুই তো করা সম্ভব নয়। কিন্তু দেখুন, প্রায় সকল কমিউনিস্ট রিজাইম সেল্ফ কারেকশনের স্টার্টিং পয়েন্ট মত প্রকাশের স্বাধীনতাকেই অস্বীকার করছে। ক্যাস্ট্রোর মতো মহৎ নেতাও বিরোধী মতধারীকে জেলে পুরছে। অর্থাৎ সেল্ফ কারেকশন থাকার প্রয়োজনকে অস্বীকার করে একটা ডিনায়ালের মধ্যে যাপন করছে। ফলে মত প্রকাশ নিয়ে সবার আগে বিতর্ক করার প্রয়োজন পড়ছে।
গণতন্ত্র বলছে যে ক্ষমতা মূলত একটা খারাপ জিনিস, কিন্তু না পারতে আমরা সেই সিস্টেমকে বহাল রাখছি, এবং সেটা যাতে লাগামহীন না হয় তার জন্যে কিছু ফেইল সেফ মেকানিজম রাখছি, যাতে মানুষের ভিন্ন মত বলার, সেটার পক্ষে একাট্টা হবার মাধ্যমে মনোপলিকে ব্যালেন্স করার সুযোগ থাকে।
সেখানে সেল্ফ কারেকশন আর ক্ষমতার স্বরূপের বাস্তবতা নিয়ে কমিউনিজমের ভাষ্য কী?
আমার ভার্সিটির কোন কোন কমরেড এর অর্থনীতি বিষয়ে পড়া একমাত্র বই হচ্ছে ''ছোটদের সমাজতন্ত্র'' ।
এরাই আবার ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয় ''এবার একটা বিপ্লব চাই''
বাম রাজনীতি নিয়ে লেখাটি ভালো লেগেছে এই কারণেই যে এটি আলোচনার বা তর্কের সুযোগ করে দেবে। বেশ কয়েকটি জায়গায় দ্বিমত রয়েছে। বিশ বছর আগেই কমিউনিজম শেষ কথাটি বলতে কি বোঝানো হয়েছে? সোভিয়েতের ভাঙন? তাহলে মার্কস এর দ্বান্দিক বস্তুবাদের কি হবে? মার্কস কি তাহলে রাশিয়াকে সামনে রেখে কমিউনিস্ট মেনুফেস্টো িরচনা করেছিলেন? যতদূর জানি মার্কস ও েএ্যঙ্গেলস বিপ্লবের সবচেয়ে সম্ভাবনাময় অঞ্চল হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন ইংল্যান্ডকে। যেহেতু তার সময়কালে ওটাই ছিল বিশ্বে শিল্পে অগ্রসর দেশ। এখন বেঁচে থাকলে হয়তো যুক্তরাষ্ট্রে এই সম্ভাবনা দেখতে পেতেন। আশাহতও হতেন না নিশ্চয়ই। অন্তত ওয়াল স্ট্রিট আন্দোলন তাকে ভীষণ আশাবাদী করে তুলত নিশ্চয়ই, যেখানে বামধারার পুস্তিকা ও লিফলেটের জনপ্রিয়তা দিন দিন বেড়েছে (আন্দোলন চলাকালীন খবরগুলোতে চোখ বুলালে নিশ্চিত হতে পারবেন)।
মস্কো আর পিকিং পন্থার ভূত আমাদের দেশের বাম রাজনীতিতে বিরাট ক্ষত এর সৃষ্টি করেছে, বিভক্ত করে রেখেছে প্রায় অর্ধ শতক। এখানে সহমত পোষণ করছি। বামধারা জনবিচ্ছিন্ন হয়ে আছে। এও সত্য। কিন্তু পুঁজির বিশ্লেষণ ছাড়া রাজনীতি চলছে। দাবীআদায়ের রাজনীতি থেকে বিচ্যুত, এ কথা কিভাবে স্বীকার করি? গার্মেন্টস শ্রমিক আন্দোলন, রিকশঅ শ্রমিক আন্দোলন, তেল-গ্যাস-বিদ্যুত-বন্দর রক্ষা আন্দোলন, টিফা চুক্তির বিরোধীতা, ট্রানজিট, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, টিপাইমুখ, তিস্তা, আরো অজস্র যা চলমান।
গত পাঁচ বছরের হিসেবে বিএনপি-জামাত জাতীয় ও আন্তর্জাতিক কয়টি ইস্যুতে জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে? এতো যে ভারত বিরোধী টিপাইমুখ প্রশ্নে প্রথমে মুখে কুলুপ এঁটে ছিল। অথচ প্রথম দিন থেকেই বামরা রাস্তায়। গার্মেন্টস শ্রমিকদের নতুন মজুরি যা বামরা এখনও অেন্যায্য বলে আসছে তাও অর্জিত হয়েছে বামদের আন্দোলনের ফলে।
হ্যা আরো অনেক র্যাডিক্যাল ও জনসম্পৃক্ত হওয়া জরুরী। কিন্তু এখানে অর্থ একটা বিরাট বিষয় হয়ে সামনে দাঁড়ায়। যেহেতু বিদেশি সাহায্যপুষ্ট নয়। গণমাধ্যম বিমাতার মতো আচরণ করছে যেখানে সেখানে খর্ব শক্তি নিয়ে কতটা মানুষের কাছে যাওয়া যায়? আরো অনেক পথ রয়েছে এটা সত্য মেনেই বলছি, ১৯৯০ এর পরবর্তী বামরাজনীতি যে ্ত্থান পতনের মধ্য দিয়ে এসেছে, বিচ্ছিন্ন হয়েছে সেখানে কিছুটা দৈর্য্য আমরা দেখাতেই পারি।
উপরে অরফিয়াসের মন্তব্যের সাথে সহমত পোষণ করে বলতে চাইছি, সহনীয় মাত্রায় শেঅষণ নাকি শোষণহীন আমরা কিসের স্বপ্ন দেখব? আর শোষণহীনের স্বপ্ন দেখতে গেলে ক্রম রাষ্ট্রায়ত্বকরণের বাইরে কোনও পথ আছে কি? বামরা কি সত্যিই উদ্যোক্তাদের রিুৎসাহিত করে? রাষ্ট্রায়ত্বকরণ থেকে আমরা ক্রমেই বেরিয়ে আসার কারণ কি শুধূ সিবিএ? পুঁজিবাদী বিশ্ব যে কেন্দ্রের কথঅ বলে সেই কেন্দ্র এখন কি বলছে? হান্টিংটনের ইতিহাসের শেষ এখন কোন ইতিহাসের খোঁজে? বৃত্ত পরিধর দিকে এগিয়ে নিজেকে কতটা সম্প্রসারণ করতে পারবে? এসব নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হতে পারে। প্রতিটিই ভিন্ন ভিন্ন আলোচনার দাবী রাখে। এ সঙ্ক্রান্ত লেখা পেলে বা মন্তব্য পেলে ভালো লাগবে।ধন্যবাদ
স্বয়ম
অত্যন্ত দুরূহ বিষয় নিয়ে লেখার প্রয়াস।
মানে বামপন্থা আর কম্যুনিজমকে আলাদা করতে চাইছেন - এই তো? বামেরও তো আবার অনেক প্রকারভেদ আছে। যেমন অতিবাম বা চলতি বাংলায় সর্বহারা, বাম যেমন কম্যুনিজম ও সোশ্যালিজম, ডানঘেঁষা বাম যেমন, সোশ্যাল ডেমোক্রেসি ও ডেমোক্রেটিক সোশ্যালিজম। আপনি ঠিক কোন বামপন্থীদের কথা বলতে চাইছেন? স্পষ্ট করা উচিত। আর এই বাম-ডান তো আসলে এসেছে সংসদে বসার স্থান অনুযায়ী।
বিপ্লবের নামে একটা নিরপরাধ ব্যক্তির হত্যাও কিন্তু ভীষণ অপরাধ। নলশালরা যাদের মেরেছিল, তাদের সবাইই কিন্তু শোষক বা খুনীও ছিল না। শ্রেণীশত্রু খতমের নামে অত্যন্ত হঠকারিতার পরিচয় দিয়ে তারা দোষীদের সাথে বহু নির্দোষ লোককেও মেরেছিল এবং ভারত ও পশ্চিমবঙ্গ সরকারও অত্যন্ত বর্বরোচিতভাবে বিনা দোষে বহু আদর্শবাদী তরুণকে মেরেছিল। মাও সে তুং , স্তালিন এবং ক্রুশ্চেভ কারো আন্তর্জাতিক নীতিই সমালোচনার ঊর্ধ্বে নয়। চীনের বা রাশিয়ার নেতাদের থেকে অনুপ্রেরণা নেয়া যায় কিন্তু তাদের নেতা মেনে নেয়াটা হাস্যকর।
কম্যুনিজম ব্যক্তিস্বাধীনতার বিরুদ্ধে -এটা কোথাও কিন্তু পড়িনি। স্তালিন আমলের গুপ্তচরবৃত্তির উদাহরণ থেকে এটা বলা যায় না যে, কম্যুনিজম কিংবা তার অগ্রজ সমাজতন্ত্রে ব্যক্তিস্বাধীনতা নেই কারণ স্তালিন কম্যুনিজমের প্রবক্তা নন সমর্থকমাত্র। তাছাড়া, কম্যুনিজমের পতনের পেছনে বিবিসি সহ ইঙ্গো-মার্কিন প্রচার মাধ্যমগুলোই কিন্তু আমাদের জানার উৎস! ক্রুশ্চেভ আসলেই মার্কিন প্রলোভনে বিক্রি হয়ে গিয়েছিলেন কিনা -তাও কিন্তু আমাদের অজানা।
'এন্টারপ্রেনারশিপ' কি বস্তু? বানানটা বাংলায় লেখা শক্ত কিন্তু এভাবে লিখলে কিন্তু 'বেসিক' নিয়ে নিঃশঙ্ক হওয়া যায় না!
আপনি কি ওয়েলফেয়ার স্টেট এর কথা বলতে চাইছেন? সেখানেও কিন্তু মৌলিক অধিকারসংক্রান্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর বড় একটা অংশ রাষ্ট্রায়ত্ব!
সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে গেলে বিশ্বের সবগুলো দাদা দেশকেই সমাজতন্ত্রী করতে হবে, যেটা আসলেই অসম্ভব। তাই শীতল যুদ্ধের নামে চলবে পৃথিবীকে ধ্বংস করবার চক্রান্ত। মানুষের জিন ও প্রবৃত্তিতেই আছে ধ্বংসের বীজ।
তবে আয়ের পরিমান অনুযায়ী ট্যাক্স উত্তরোত্তর বাড়ানো উচিত। মানুষের মৌলিক অধিকারসংক্রান্ত বিষয়গুলো ব্যক্তিমালিকানায় থাকলে আ কোনদিনই সম্ভব না। সেটা আরেকটা ফ্যান্টাসি।
নির্ঝর অলয়
আপনি বিশুদ্ধ রাষ্ট্রবাদী বামদেরকে ঠেলে ঠুলে পুঁজিবাদী কাঠামোকে সহ্য করানোর চেষ্টা করছেন।
এটার সমস্যা বলি। আপনি দেশের-বামদের-বাস্তবতা-অস্বীকার-করা অবস্থানকে সরানোর জন্যে আশা দেখাচ্ছেন যে পুঁজিবাদী ব্যবস্থাতেই বাম লক্ষ্যগুলো পূরণ করা সম্ভব। কিন্তু এর জন্যে বিশুদ্ধ পুঁজিবাদ বিরোধীদেরকে প্রথমে পুঁজিবাদকে মেনে নিতে হবে, যেটা তাদের কাছে এই মুহূর্তে প্রায় বিশুদ্ধভাবে অগ্রহণযোগ্য। এবং সেটা প্রিন্সিপল্ড অবস্থান, পর্যবেক্ষণসিদ্ধ না হতে পারে, তবে প্রিন্সিপল্ড। সেখান থেকে তারা কেনই বা সরে আসবে?
একটা কারণ হতে পারে, তারা তাদের প্রিন্সিপল থেকেই সরে আসলো। মনে করা শুরু করলো যে ব্যক্তির সম্পদ থাকার ন্যাচারাল রাইট্স আছে, যা কেউ কেড়ে নিতে পারে না। কিন্তু আপনি নিজেই তো ব্যক্তির সম্পদের অধিকার নিয়ে পরিষ্কার নন।
আরেকটা কারণ হতে পারে যে আপনি পর্যবেক্ষণলব্ধ তথ্য দিয়ে দেখালেন (মোটা দাগে হলেও) যে কীভাবে একটা পুঁজিবাদী কাঠামো একটা কমিউনিস্ট রাষ্ট্রের চেয়ে এমন সব বিষয়ে সমাজের উন্নয়ন ঘটায় যেগুলোকে বামরাও উন্নয়ন হিসাবে গ্রহণ করতো। সেটাও লেখায় অনুপস্থিত। ব্যবসা আর মুনাফা করা যায় যেই সমাজে সেই সমাজের ভালো দিক কী কী সেটা না দেখালে তারা কীসের আশায় সরাসরি রাষ্ট্র দিয়ে সকল সম্পদ হস্তগত করে তারপর বণ্টন না করিয়ে প্রথমে মানুষকে তাদের ব্যক্তিগত সম্পত্তি বিনিময় ও মুনাফা করতে দিবে, তারপর সেখানে একটু চালাচালি করে সমতা করার চেষ্টা করবে? কমিউনিস্ট রাষ্ট্রের পৌনঃপুনিক ব্যর্থতা ব্যক্তিগত ব্যবসাকে সমর্থন করার দুর্বল কারণ, অনেকটা না পারতে। আপনি কি না পারতে ব্যক্তিগত ব্যবসাকে সমর্থন করছেন? নাকি এর মধ্যে এর চেয়ে বেশি কিছু যুক্ত আছে বলে মনে করেন, যা মূল্যবান? কী সেই বস্তু যা মানুষের ব্যক্তিগত সম্পত্তি বিনিময় আর মুনাফার মধ্যে আছে কিন্তু কমিউনিষ্ট রাষ্ট্রে নেই? সেটা নিয়ে বলার দরকার ছিলো।
তবে আলোচনাটা উত্থাপনের জন্যে আপনার ধন্যবাদ প্রাপ্য।
কোনো কমুনিস্ট-এর পক্ষে কী আসলেই পুঁজিবাদী ব্যবস্থাকে অস্বিকার করা সম্ভব?? মার্কসবাদী literature-এ খুব পরিষ্কার ভাবেই দেখানো হয়েছে যে পুঁজিবাদ সামাজিক বিবর্তনের একটা ধাপ। উত্পাদনের হাতিয়ার (means of production) এর শ্রেণীকরণের একটা বিশেষ পর্যায়| এটা বৈজ্ঞানিক সত্য...যে চোখ বুজে থাকতে চাইবে সেটা তার সমস্যা...আমাদের বামদেরও সমস্যা হতে পারে। আপনি মানেন বা না মানেন সমাজকে এই রকম একটা ব্যবস্থার মধ্যে দিয়ে যেতে হবেই| কিন্তু পশ্চাত্পদ একটা সমাজের ওপর (in terms of the volume of production, state of industrialization etc.) আপনি দুম করে communism চাপিয়ে দেবেন ততো হয়না| এরকম বিভিন্ন চাপানো অবস্থার অসফলতাকেই কী communism-এর অসফলতা বলে দাবি করা যায়|
Communist literature-এ কী আছে? শুরু থেকেই সেখানে আছে পুঁজির বিশ্লেষণ/পুঁজিবাদী সমাজব্যবস্থার বিশ্লেষণ....পণ্য ও মূল্যের বিশ্লেষণ...কিভাবে মানুষ মুল্য আর উদ্বৃত্ত মুল্য তৈরী করে সেটার বিশ্লেষণ....কিভাবে পুঁজির মালিক সেই উদ্বৃত্ত মুল্য আত্মসাত করে সেটার বিশ্লেষণ| আরো আছে সমাজব্যবস্থার বিবর্তন....আদিম সমাজ, দাসপ্রথা, সামন্ত, পুঁজিবাদ....কেন, কিভাবে, উত্পাদনের কোন অবস্থায় একটা থেকে আরেকটায় গেছে, সেটা বিশ্লেষণ করা হয়েছে....হচ্ছে| খুব বৈজ্ঞানিক ভাবেই বাপার গুলোকে ব্যাখ্যা করা হয়েছে| এর বিপরীতে কোন theory আছে.....না "marginal utility of value" - one of the very bogus and unscientific of theories....there is nothing intrinsic about value....শুধু demand-supply দ্বারা তা নিয়ন্ত্রিত হয়??? অনেকটা আপনার শুকতলার উচ্চতা আপনার উচ্চতার নির্ণায়ক হওয়ার মত....ওটা বাড়লে কমলেও তো আপনার উচ্চতা বাড়ে কমে|
যাইহোক....কোন তর্কটা আপনার মতে বিশ বছর আগে সমাধান হয়ে গেছে? Communism failed...বাজার অর্থনীতি সর্বশ্রেষ্ঠ সমাজব্যবস্থা......শোষণহীনতা নয়....সেটাকে একটু সহনীয় করে তোলাই শ্রেয়| আপনি কী বাজার অর্থনীতির ফাঁপা রূপটা এখনো ধরতে পারেননি.....যে অর্থনৈতিক অবস্থায় টাকা দিয়ে টাকা কিনে সেটা থেকে লাভবান হওয়া যায় (আমি পুঁজিবাজার/অর্থবাজার এর কথা বলছি....এটাই তার সর্বশেষ রূপ)....এক গ্রাম আসল উত্পাদন না করে....সেই ব্যবস্থাকে আপনি বলছেন উন্নত....কারণ এটা বাস্তব??? আমি তো দেখছি এটা বর্তমানে একটা failed ব্যবস্থা....গায়ের জোরে টিকিয়ে রাখা একটা ব্যবস্থা......বিশ্বজোড়া সন্ত্রাসবাদ আর সাম্রাজ্যবাদের যুগলবন্দী| এই প্রশ্নটাও নিশ্চই ২০ বছর আগে স্থির হয়ে গেছিল....যে এরকম একটা strawman না থাকলে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদ চালানো সম্ভব না| মানুষের টাকায় যুদ্ধ করে corporation-এর পকেট ভারী করা সম্ভব না......আর দুই পক্ষকেই অস্ত্র বিক্রি করে মজা লোটাও সম্ভব না| এটা কিভাবে সম্ভব হয়েছে জানেন......এতটা চুশেও, এতটা নগ্নতা থাকা সত্তেও মানুষকে ভুলিয়ে রাখা? কারণ মানুষের productivity প্রায় জ্যামিতিক হারে বেড়েছে.....বলতে দ্বিধা নেই....পুঁজিবাদেরই কারণে| এর উচ্ছিষ্ট দিয়েই মানুষকে কিছুটা পেটেভাতে রাখা যায়| কিন্তু এই প্রভূত উন্নতি যেখানে মানুষের বিশাল কল্যানে আসতে পারত....সেটা ব্যবহৃত হচ্ছে মানুষকে দমিয়ে রাখতে| আর আপনার মত লোকেরা আছে শুধু ওপরটা দেখে একটা মতামত জাহির করতে....যেখানে ভেতরের ঘটনার বিশ্লেষণ অনেক আগেই করা হয়েছে....এখনো হচ্ছে|
আমাদের একটা উন্নততর সমাজব্যবস্থা দরকার.....আজকের বাংলাদেশে সেটা হয়ত পুঁজিবাদের একটা নিয়ন্ত্রিত রূপ...কিন্তু ওটা পার হয়ে একসময় অবশ্যই সমাজবাদের একটা রূপ| Form-টা কী হবে আমরা এখনো জানি না....আগের থেকে ওটা বলে দেয়া অনেকটা prophecy করার মত| রাশিয়ান সমাজবাদ, চৈনিক সমাজবাদ, ভিয়েতনামি সমাজবাদ....প্রত্যেকটাই একেকটা রূপ যা তাদের উত্পাদনের পর্যায়, বৈপ্লবিক অবস্থার তৈরী এবং নেতৃত্ব, বিশ্ব-রাজনৈতিক অবস্থা ইত্যাদির মিলিত ফলাফল....এগুলো failure নয়, শিক্ষা| আর আপনি failure বলছেন কী করে......এই বিপ্লবের কারণে রাশিয়া ২০ বছরের মধ্যে একটা super power বনে গেল.....আমেরিকার সঙ্গে technology-তে পাল্লা দিয়ে এগিয়ে গেল, বিশ্বে একটা ভারসাম্যের (balance of power) অবস্থা সৃষ্টি করলো...সেটাকে আপনি failure বলছেন কয়েকটা মুর্খ, নৈতিক ভাবে ক্ষীন মানুষের কারণে (আমি স্তালিন আর পরবর্তী প্রজন্মের কথা বলছি)? একই কথা China-র ক্ষেত্রে....India একই প্রায় একই সময়ে স্বাধীনতা পেয়েছে....তথাকথিত democracy ছিল....capitalism ছিল....জগাখিচুড়ি অহিংসাও ছিল এক কোনায়....কোথায় India আর কোথায় China আজকে?? ভিয়েতনাম, বাংলাদেশ-ও প্রায় একই সময় স্বাধীনতা পেয়েছে.....বাংলাদেশ-এর থেকে কয়েকগুন মানুষ Vietnaam যুদ্ধে মারা গেছে....নাপাম দিয়ে আমেরিকা প্রায় মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়েছে একটা অংশ....আজকে কোথায় Vietnaam কোথায় বাংলাদেশ?? ওদের নেতৃত্ব গেছিল communist party-র হাতে আর আমাদেরটা গেছিল লুটে খাওয়া পার্টি-র হাতে| সমালোচনা থাকতেই পারে....তবে সেটা হতে specific...তথ্য উপাত্ত সহ...ঢালাও ভাবে বললে চলবে কেমন করে যে communism failed? চোখ বন্ধ করে শুধু শিখিয়ে দেয়া বুলি পড়লে তো আপনি ওই বুলি কপচানো বামদের দলেই পড়লেন??
পরীক্ষিত সাকসেস্ফুল সিস্টেম (অর্থনৈতিক / রাজনৈতিক / সামাজিক) কোনটি? গণআন্দোলনে আইয়ুব খানের পতন হলে বুঝলাম যে সামরিক শাসন ফেইল করল। কিন্তু তারপরে ইয়াহিয়া খান - জিয়াউল হক - পারভেজ মুশাররফ বা জিয়াউর রহমান - হো মো এরশাদরা ফিরে আসলে কি বলতে পারবো যে সামরিক শাসন পাশ করলো? বারে বারে নানা কায়দায় অকম্যুনিস্ট দেশগুলোর নানা ব্যবস্থা হুড়মুড় করে ভেঙে পড়লে সেক্ষেত্রে অকম্যুনিজমকে কি পাশ করাবো নাকি ফেইল করাবো? এই উপমহাদেশে চোলা রাজবংশ এক হাজার পাঁচশত ঊনাশি বছর একটানা রাজত্ব করে গেছে। তাহলে রাজতন্ত্র কি পাশ করলো নাকি ফেইল করলো?
অটঃ মাঝেমধ্যে ভাবি ভাগ্যিস মা-বাবা বাংলা ভাষাটা বানান করে পড়তে শিখিয়েছিলেন। নয়তো জ্ঞানী লোকদের লেখা জ্ঞানী কথাবার্তা কী করে পড়তে পারতাম! কিন্তু সেগুলো শুধু পড়তেই পারি, বুঝতে পারি না। দোষটা বোধকরি আমার অভিভাবকদেরই। তারা শুধু বানান করে পড়তে শিখিয়েছেন কিন্তু জ্ঞানী লোকদের কথা বুঝতে শেখাননি।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
facebook
অজ্ঞাতবাস
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
গুগ্ল ভাষা ট্রান্সলেটরের মত একটা জ্ঞান-ট্রান্সলেটরও বানাইলে বড়ই ভাল হইত। যাতে 'দুর্গম গিরি কান্তার মরু দূস্তর পারাবার' - সম জ্ঞানসঙ্কুল কথাবার্তাগুলিরে বক্সের ভিতর ফালায়া 'ট্রান্সলেট' বাটনে একটা চিবি দেওয়া মাত্র সেগুলি সুড়সুড় করে আমার মত অক্ষর-সর্বস্ব মানুষের উপযোগী হয়ে জলবৎ-তরলং হয়ে বাইর হয়া আসে। ....কি যে ভাল হইত এমন একটা 'ট্রান্সলেটর' থাকলে!! এখন তো 'অ'-তে অজগর, 'আ'-তে আম, এইভাবে পড়তে পড়তে দাতকপাটি লাগার অবস্থা।
****************************************
বেশ ভালো আলোচনা হচ্ছে।
[আমার চারপাশ]-[ফেবু]-[টিনটিন]
ব্যাক্তিগত সম্পত্তির ধারণাটা বেশ মধুর। একটা গাড়ি একটা বাড়ি একটা সুন্দরী নারী নম্বর থিরির স্বপ্নে কোন খারাপ কিছু নেই। বাড়ির স্বপ্নটা বাস্তবায়ন করতে পূঁজিবাদ যে রিয়াল এস্টেটে সবার মাথা ঢুকাইসে, সেই ভ্রন্ত ধারমা থেকে বেরিয়ে আসতে দুনিয়া এখনও হিমসিম খাচ্ছে। একটা বাড়ির স্বপ্নে নিজের সর্বস্ব সপে ব্যাংকে জমা রাখা বেহেস্ত দোজখে পরিনত হয়েছে। সেখান থেকে বের হয়ে এখন অনেকেই খোদার দেয়া জমিনে চীত হয়ে আসমানের তারা গোনে তাবুর ফাঁক দিয়ে।
রেয়াল এস্টেট লাভবান হলে ব্যাক্তিবিশেষের একাউন্ট ভারী হতো। তা যখন হল না, এখন তার দেখবালের দায়ীত্ব সরকারের হাতেই দেয়া উচিৎ। শুধু জার্মান সরকার হাইপো রেয়াল এস্টেট বাঁচাতে তাকে কিনে নিয়েছে এক লক্ষ্য কোটি (একশ মিলিয়ার্দেন) ইউরো দিয়ে।
এই ভাবেই পূঁজিবাদ লাভ করলে নিজের পকেটে ঢোকায় আর লোকশান করলে জনগনের কাধে চাপিয়ে দেয় সব দায়-দায়ীত্ব।
এমন ঝুকি বিহীন ব্যাবসা করতে কার না মঞ্চায়।
একটা সময় ছিল যখন ইষ্টিয়া কোম্পানী মনে করত ভারত তাদের ব্যাক্তিগত সম্পত্তি। তার দেখ-ভালের সব দায়ীত্ব যখন তাদের হাতে, তখন তারা আমাদেরকে বাধ্য করেছিল ধানের বদলে নীল চাষ করতে। মসলিনের কারিগরদের হাত কেটে দিয়েছিল বিলেতী কাপড় বিক্রি করতে। দাষ বানিয়ে আফ্রিকায় নিয়ে গেয়েছিল রেলপথ নির্মানের শ্রমিক হিসাবে। তবুও ভাগ্য ভাল বলতে যে, কাল আফ্রিকানদের মতো কৃতদাষ হিসাবে ইষ্টিণ্ডিয়া কম্পানী ভারতীয়দের বিক্রি করে নি। তখনও কৃতদাষরা ব্যক্তিগত সম্পত্তি হিসাবেই বিবেচিত হত।
দুনিয়ার সব জায়গা যারা জবর দখল করেছে তাদের জন্য ব্যক্তিগত সম্পত্তি একটা পবিত্র উহি। যে কোন মূল্যে তাকে রক্ষা করতে হবে। তা পৃথিবীর যেখানেই হোক। এসিয়া থেকে ফিরে এলেও আমেরিকা আফ্রিকার প্রায় সবটাই এখন দখলদার বাহিনীর বাপদাদার সম্পত্তি। তাকে রক্ষা করতে যে কোন উহি ঈশ্বর নাজিল করবেনই। কথা হল এতে সর্বহার লাভ কতটুকু। গনতান্ত্রিক ভাবে বিচার করলেও দুনিয়ার বেশীর ভাগ মানুষের কোন ব্যক্তিগত সম্পত্তি নেই। তা হলে ধারণাটা রক্ষিত হচ্ছে সংক্ষ্যালঘু কিছু মানুষের জন্য। পূঁজিবাদ বলছে এর নাম গনতন্ত্র।
সেটাও আবার রক্ষার জন্য খরচ হচ্ছে ট্রিলিয়ন ট্রিলয়ন ডলার। আর তার শত্রু হচ্ছে সাদ্দাম না হলে গাদ্দাফি। এক ইরাক যুদ্ধে আমেরিকার জনগন খরচ করেছে তিনশ বিলিয়ন ডলার। তার থেকে ডিক চেনীর ট্রান্সপোর্ট কম্পানী পেয়েছে মাত্র দশ হাজার কোটি ডলার। মজার ব্যাপার হচ্ছে, আমেরিকার জনগন টাকাটা দিয়েছে, গনতন্ত্র রক্ষা করতে হবে না।
অবশ্য আফগান যুদ্ধ ভিন্ন প্রসংগ। সেখানে ধর্মহীন সমাজতন্ত্রের বিরোদ্ধে জিহাদী জনতাকে সাহাজ্য করা আমেরিকার জন্য ফর্জে আইন। পূঁজিবাদকে রক্ষা করার জন্য সব কিছু আল্লাহ হালাল করেছেন। হোক সে জিহাদীরা দুনিয়ার যে কোন দেশের ধর্মিয় মৌলবাদী। এখন সেই মৌলবাদীদের বিরোদ্ধে আবার জিহাদ ঘোষণা করেছে আমেরিকা। ধূকে ধূকে মরছে শুধু আফগান জনগন। অবশ্য সবই করা হচ্ছে তাদের মঙ্গলের জন্য।
তো মঙ্গলময় সেই পূঁজিবাদের পূঁজা করা যে কোন মুমিনের জন্য দোজাহানের অশেষ নেকী হাসিলের মতো। লেখক বলছেন পূঁজিবাদের ভেতরেই শ্রমিক শ্রেনীর সার্থের রক্ষা কবজ লুকিয়ে আছে। আমাদের বামরা শুধু তা ধরতে পারছেন না। দুনিয়ার অনেক উন্নত দেশে বামরা পূঁজিবাদের ভেতরেই শ্রমিকের সর্বনিম্ন মজুরী নির্ধারণ করতে সক্ষম হয়েছেন। জার্মানে তো তার কোন আলামত দেখলঅম না এখনো! বরং শোষণের পথ আরো উম্মুক্ত হয়েছে তথাকথিত বামদের সহযোগীতায়।
বদলি শ্রমিক (শ্রমিক যোগান দেয় এমন সংস্থা) সংস্থা বড় বড় কোম্পানীকে শ্রমিক ভাড়া দিচ্ছে ধরুণ ঘন্টায় ২০ টাকায়। আর শ্রমিককে বেতন দিচ্ছে ৫-৮ টাকা ঘন্টায়। তাদের পূঁজি একটা অফিস আর টেলিফোন। এত অল্প বেতনে সেই শ্রমিকের সংসার চলে না। বাকীটা দিচ্ছে সরকার বা জনগন। সরকারের তহবিলে নেই টাকা। কারণ শ্রমিক টেক্স দিচ্ছে তার বেতণের প্রায় অর্ধেক। কিন্তু শেয়ার বাজারে শেয়ার কেনাবেঁচার কোন টেক্স নেই। যদিও পূঁজির বেশীর ভাগ বিনিয়োগ সেখানেই। সেই বড় বিনোয়োগকারী ব্যবসা করছে বিনে শুল্কে। আর ৫-৮ টাকা ঘন্টায় কাজ করা শ্রমিক দিচ্ছে তার বেতনের অর্ধেক। তবুও রাজ কোষে টাকা নেই কারণ; পূঁজির বড় অংশ তো কোন টেক্সই দিচ্ছে না।
সরকার বাধ্য হচ্ছে শ্রমিকের বেঁচে থাকা নিশ্চিত করতে তাকে সাহাজ্য দিতে। যা আবার কর্জ করছে বিনা শুল্কে বিনিয়োগকারী শেয়ার বাজার থেকে। এই হল পূঁজিবাদ জিবীত রেখে শ্রমিকের সর্ব নিম্ন মজুরী রক্ষার নমুনা। অবশ্য এখন শেয়ার বাজার বলছে; তোমরা তোমাদের শ্রমিককে এত বেশী সুবিধা দিলে আমরা আর তোমাদের শেয়ার কিনব না। সূদের হার বারিয়ে দিয়েছে। সরকার বাধ্য হচ্ছে শ্রমিক ছাটাই করতে। শ্রমিকরা বাধ্য হচ্ছে পথে নামতে।
সমাজ তন্ত্রের নামে পৃথিবীতে অনেক কিছুর চর্চা হয়েছে, হবে। কিন্তু কাল মার্ক্স কী কোথাও সমাজ তান্ত্রিকরাষ্ট্রের সংজ্ঞা দিয়ে গেছেন? বুজর্গ ব্যক্তিরা আলোকিত করুণ।
একটা ভাল বা শোষণহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা শিক্ষা নির্ভর নয়। মানে সমাজের মঙ্গলময় কোন পরিবর্তন করতে হলে তা বই পড়ে শিখতে হয় না। মঙ্গলময় কিছুর উদ্ভব হয় মঙ্গলময় চিন্তা থেকে। মঙ্গলময় চিন্তা সমাজপতিদের মাথায় থাকলে ভাল কাজের জন্য বহু শিক্ষিত মানুষ তাদের উদ্ভাবন নিয়ে আপনা থেকেই এগিয়ে আসেন। বিশেষজ্ঞ পর্যায়ের মানুষ পাওয়া কঠিন নয়।
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
কথা ভালো লাগছে।
----------------------------------------------------------------------------------------------
"একদিন ভোর হবেই"
নতুন মন্তব্য করুন