রবীন্দ্রনাথ ২০১০ ইং, রবীন্দ্র-মৌলবাদ ও নিষিদ্ধ মাকসুদুল হক

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: বুধ, ১৯/০৯/২০১২ - ১০:৩০অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

সঙ্গীত এমন একটি শাখা যেখানে আধুনিকতার নিত্য বসবাস। আধুনিকতার ছোঁয়ায় প্রযুক্তি সবসময়ই সঙ্গীতকে নতুন মাত্রা দিয়ে এসেছে। আর তাই সঙ্গীতের বিবর্তনে আধুনিক ইন্ট্রুমেন্টের চমৎকপ্রদ ব্যবহারই পারে নতুন ধারার জোয়ার এনে দিতে।

‘ওগো ভালবাসা’ অ্যালবামে মাকসুদুল হকের করা ‘রবীন্দ্রনাথ ২০১০ ইং’ সম্পর্কে কিছু বলার আগে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের দিকে তাকাতে চাই। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শুধু যে তার যুগেই আধুনিক মনস্ক ছিলেন তা নয়, তিনি এখনও আমাদের কাছে ঠিক তেমনই দীপ্ত ও আধুনিক মনস্ক। আর তাই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কোন একটা যুগের নির্দিষ্ট ঘরানায় আবব্ধ থাকতে পারেন না। তিনি সর্ব যুগের সর্ব কালের।

বাংলা সঙ্গীতে তিনি যোগ করেছেন নতুন মাত্রা। স্বকীয় ধারায় সৃষ্টি করেছেন কালোর্তীর্ণ সব গান। সঙ্গীতে প্রচলিত অনেক প্রকরণের একটি হল ‘ভাঙা গান’। অর্থাৎ অন্যের গানকে ভেঙে চুড়ে শিল্পীর নিজের মত করে একে নতুন মাত্রা দেয়া। আমাদের ‘জাতীয় সঙ্গীত’ ভাঙা গানেরই প্রকরণ। এটি কোন মৌলিক সৃষ্টি নয়। ‘আমার সোনার বাংলা’ গানটিতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নিজে গগণ হরকরার ‘আমি কোথায় পাবো তারে’ গানের ছায়া অবলম্বনে সুরারোপ করেছেন। ঠিক তেমনই নববর্ষ উদযাপনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বহুল জনপ্রিয় ‘পুরানো সেই দিনের কথা ভুলবি কিরে হায়’ গানটি মূলত স্কটিশ গান Auld Lang Syne এর আদলে তৈরী করেছেন। এছাড়াও আরও কিছু রবীন্দ্রসঙ্গীত ‘ভাঙা গানের’ অন্তর্ভুক্ত।

স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর অন্যের সঙ্গীতকে ভাঙার স্পর্ধা দেখিয়েছেন। এবং আমি একাগ্র চিত্তে বিশ্বাস করি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সেই স্পর্ধা দেখানোর যোগ্যতা রাখতেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সময়ে প্রযুক্তি এতটা উন্নত ছিল না। তিনি হারমোনিয়াম আর তবলার যোজনায় সংকলন করছেন তার এক একটি সৃষ্টি।

এখন কথা হল, রবীন্দ্রসঙ্গীতকে তারুণ্যদীপ্ত মেধাবী শিল্পীরা কিভাবে গাইবে?

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সময়ে অত্যাধুনিক ইন্সট্রুমেন্ট ও সাউন্ড সিস্টেম ছিল না। বর্তমান সময়ে আধুনিক ইন্ট্রুমেন্টের অগাধ ব্যবহার যন্ত্রসঙ্গীতের সাথে উতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। আগের যুগে চোঙা মাইকে প্রচারিত গানে শ্রুতিমধুরতার পরিবর্তে কর্ণভেদী তীক্ষ্ণতায় মর্মভেদী হওয়া ছাড়া গতি ছিল না। আর এই চোঙাকৃতি মাইকের গৎবাঁধা প্রচলিত প্রথা ভেঙে মাকসুদুল হক সংযোজন করেন আধুনিক সাউন্ড সিস্টেম। এটাই সত্য যে, মাকসুদুল হকই প্রথম ব্যাক্তি যিনি রবীন্দ্রসঙ্গীতে আধুনিক সাউন্ড সিস্টেমের প্রচলন শুরু করেন সেই ১৯৯০-’৯১ এ। সেই থেকেই রবীন্দ্রসঙ্গীত নবরূপে আবির্ভাব হয়। এই অত্যাধুনিক সাউন্ড সিস্টেম রবীন্দ্রসঙ্গীতকে কিন্তু পেছনে ঠেলে দেয়নি ববং রবীন্দ্রসঙ্গীতে সংযোজন করেছিল এক নতুন মাত্রা।

ব্যান্ড সঙ্গীতের শুরুর সময়ে, যেসব তরুণ শিল্পীরা প্রাশ্চাত্য রক মিউজিকে আকৃষ্ট হয়ে বাংলা ভাষায় সেই রক মিউজিক করার দুরন্ত সাহস ও স্পর্ধা দেখিয়েছিল এবং বাংলা সঙ্গীতে যোগ করেছিল তারুণ্যদীপ্ত এক নতুন ধারার, প্রথাগত মোড়লবৃত্তিয় শিল্পীসমাজ সেই ব্যান্ড সঙ্গীতকে অপসংস্কৃতি বলে অবমূল্যায়ন করেছিল। মাকসুদুল হক সবসময়ই প্রথাভাঙ্গা শিল্পী হিসেবে সব মহলেই পরিচিত। যিনি গানে গানে প্রতিবাদ করেছেন সারাটা জীবন এবং এখনও সেই ধারাবাহিকতা বজায় রেখেই চলেছেন। মাকসুদুল হক আধুনিক মনস্ক তারুণ্যদীপ্ত শিল্পীসত্তারই প্রতিনিধিত্ব করেন।

ফিডব্যাকে থাকাকালীন সময়ে, বাংলা ব্যান্ড সঙ্গীতের ছত্রছায়ায় করেছেন বাউল গান নিয়ে নিরীক্ষামূলক অ্যালবাম ‘বাউলিয়ানা’। উদ্দেশ্য ছিল, তরুণ শ্রোতাদের বাউল গানের দর্শন ও ভাবধারার সাথে পরিচিত করে দেবার অদম্য প্রয়াস। মাকসুদুল ও ফিডব্যাক সফল হয়েছিলেন। আমরা যারা বাউল সঙ্গীতকে শুধু একটা নির্দিষ্ট মহলের সঙ্গীত ভেবেছিলাম, ফিডব্যাকের বাউলিয়ানা আমাদের সেই ধারণাকে ভেঙে একাকার করে দিয়েছিল। যার প্রতিফলনে বর্তমান সময়ে বাউলধারার গানগুলো আধুনিক সঙ্গীতায়োজন ও উপস্থাপনের মাধ্যমে ব্যপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে যা নতুন প্রজন্মের শ্রোতাদের বাউল গানে আকৃষ্ট করছে। বাউল শিল্পীদের নতুন প্রজন্মের কাছে পরিচিত করার মাধ্যমে চিরাচরিত বাংলার আদি রূপ ও রস উপলব্ধির সুযোগ করে দিচ্ছে। এসব কিছুই কিন্তু বাউল গানগুলোকে এগিয়ে নিয়ে যাবার প্রয়াস, পেছনে ঠেলে দেয়া নয়।

তেমনি, রবীন্দ্রসঙ্গীতকে তারুণ্যদীপ্ত যন্ত্রসঙ্গীতে উপস্থাপনের মাধ্যমে মাকসুদুল হক রবীন্দ্রসঙ্গীতকে নতুন মাত্রা দেবার প্রয়াস চালিয়েছিলেন মাত্র। ১৯৯৯-এ প্রকাশিত ‘মাকসুদ ও ঢাকা’র দ্বিতীয় অ্যালবামে করছেন ‘না চাহিলে যারে পাওয়া যায়’ শিরোনামের গানটি। এবং মাকসুদুল হক এই গানটিকে বিশেষায়িত করেছিলেন ‘রবীন্দ্রনাথ ২০১০ ইং’ শিরোনামে। গানটি ‘না চাহিলে যারে পাওয়া যায়’ শিরোনামে ‘ওগো ভালবাসা’ অ্যালবামে সংকলিত হয়নি। বরং ‘রবীন্দ্রনাথ ২০১০ ইং’ শিরোনামেই সংকলিত হয়েছে।

১৯৯৯ সালে প্রকাশ পাওয়া অ্যালবামে ‘না চাহিলে যারে পাওয়া যায়’ শিরোনামের রবীন্দ্রসঙ্গীতটিকে মাকসুদুল হক কেন ‘রবীন্দ্রনাথ ২০১০ ইং’ শিরোনামে উপস্থাপন করেছিলেন ?

এখানেই মাকসুদুল হকের তারুণ্যদীপ্ত দূরদর্শিতার প্রমাণ মেলে। ‘রবীন্দ্রনাথ ২০১০ ইং’ শিরোনামের গানটিতে আধুনিক যন্ত্রসঙ্গীতায়োজনে তিনি উপস্থাপন করতে চেয়েছিলেন এক যুগ পরের দৃশ্যপট। অর্থাৎ সময়ের আবর্তনে সঙ্গীতাঙ্গনে যে বিবর্তন আসবে ২০১০ সালে, তাতে তোঁতা পাখির মত এক ঘেয়েমি সঙ্গীতায়োজনকে ভেঙে তারুণ্যদীপ্ত শিল্পীরা রবীন্দ্রনাথকে উপস্থাপন করবেন নবরূপে। মাকসুদুল হকের সেই ভাবনা একেবারেই বাস্তবে রূপ নিয়েছে। সঙ্গীতশিল্পী অর্ণব বিভিন্ন অ্যালবামে রবীন্দ্রসঙ্গীতকে উপস্থাপন করেছেন আধুনিক সঙ্গীতায়োজনে। রবীন্দ্রনাথের গান নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে করেছেন ‘আধেক ঘুমে’ শিরোনামের একটি পুরো অ্যালবাম। এবং তারই সহধর্মীনি শাহানা বাজপেয়ি বছর খানেক আগে করেছেন ‘নতুন করে পাবো বলে’ শিরোনামের একটি পূর্ণাঙ্গ অ্যালবাম। এছাড়া জনপ্রিয় ব্যান্ড ‘শিরোনামহীন’ করেছে একটি পূর্ণাঙ্গ অ্যালবাম ‘শিরোনামহীন রবীন্দ্রনাথ’। ‘রক উইথ রবীন্দ্রনাথ’ নামেও একটি অ্যালবাম হয়েছে। আরও কিছু অ্যালবাম ও গান রয়েছে ছড়িয়ে ছিটিয়ে। সেই গানগুলো যারা রবীন্দ্রসঙ্গীত শুনতো না, তাদের রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে ভাবতে শেখাচ্ছে কিনা জানিনা, তবে সঙ্গীতে নতুন রবীন্দ্রনাথকে উপলব্ধি করতে শিখছে নতুন প্রজন্মের শ্রোতামহল।

এখন যেসব রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পীরা রবীন্দ্রনাথের দেখিয়ে যাওয়া পথ ধরেই হেঁটে চলেছেন, তারা যদি নতুন এই ধারায় এসে বাধ সাধেন তখন তাদের সংকীর্ণ মানসিকতার কুৎসিত স্বরূপই উন্মোচিত হয়। রবীন্দ্রনাথকে সর্বস্তরে ছড়িয়ে দিতে প্রবীণ শিল্পীদের এই প্রথাগত ভূমিকা অবশ্যই হুমকিস্বরূপ। যারা হারমোনিয়াম আর তবলার যোজনায় সৃষ্ট সঙ্গীতে রবীন্দ্রনাথের গান শুনতে চায়না, ড্রামস্‌-গীটারের ঝঙ্কারে যাদের রক্তে শিহরণ জাগে নিত্য, তাদের কাছে প্রথাগত রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পীরা রবীন্দ্রনাথের গানকে কিভাবে পৌছে দেবেন একবারও কি ভেবে দেখেছেন?

নতুন প্রজন্মের তরুণ শ্রোতাগোষ্ঠির সংখ্যা ধীরে ধীরে বেড়েই চলছে Exponentially এবং এই প্রজন্মের ঠিক পরের প্রজন্ম যারা হার্ড রক কিংবা মেটাল শুনে নিজেদের কান প্রস্তুত করে নিচ্ছে শ্রোতা হিসেবে তাদের জন্য রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পীরা কী ভাবছেন, আদৌ কোন পরিকল্পনা আছে কিনা উঠতি এই প্রজন্ম নিয়ে তা আমার জানা নেই। তবে এইটুকু বলতে পারি, এই তরুণ শ্রোতারাই একদিন প্রবীণ শ্রোতারূপে নিজেদের আবিষ্কার করবেন। আর রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পীরা যদি তাদের মননশীল করে রবীন্দ্রনাথকে উপস্থাপনে ব্যর্থ হন, তখন কি ঘটতে পারে তা ভাবনার বিষয় বলেই আমি মনে করি।

আর রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পীরা যারা রবীন্দ্রনাথকে নিজেদের পারিবারিক সম্পত্তি বলে দাবী করেন, আপনারা অবশ্যই জেনে রাখবেন, হারমোনিয়াম আর তবলার ব্যাঞ্জনে নতুন প্রজন্ম রবীন্দ্রনাথকে গ্রহণ করবে না। (যদিও-বা করে তবে সেই শ্রোতাদের সংখ্যা আনুপাতিক হারে হবে অতি নগণ্য।) নতুন প্রজন্মের কাছে রবীন্দ্রনাথকে উপস্থাপন করতে গেলে নতুন প্রজন্মের উপযোগী করেই উপস্থাপন করতে হবে। সেই সাথে নতুন প্রজন্মের ভালোলাগার সৃজনশীল মূল্যায়ন করা শিখতে হবে। নতুবা প্রজন্মের আবর্তনেই প্রচারবিমুখ এক সঙ্গীতধারা হিসেবে রবীন্দ্রসঙ্গীত অবমূল্যায়িত হলে তার দায়ভার অবশ্যই আপনাদের নিতে হবে।

একজন শিল্পী হিসেবে, মাকসুদুল হক রবীন্দ্রনাথকে নতুন প্রজন্মের উপযোগী করে রবীন্দ্রনাথকে উপস্থাপনের যে প্রস্তাব রেখেছিলেন ‘রবীন্দ্রনাথ ২০১০ ইং’ শিরোনামের গানে, এজন্য এই কৃতিমান শিল্পীকে সেই সময়ে অবমূল্যায়ন করেছিল রবীন্দ্র মৌলবাদীরা। তৎকালীন সময়ে বিটিভি-তে ‘রবীন্দ্রনাথ ২০১০ ইং’ প্রচার পাবার পর রবীন্দ্র-মৌলবাদীদের চাপে বিটিভি-র পক্ষ থেকে শিল্পী মাকসুদুল হককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়!!!! মিডিয়া থেকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল এই মাকসুদুল হককে। মিথ্যে মামলায় গ্রেফতার করাতে পর্যন্ত রবীন্দ্র মৌলবাদীদের বুক কাপেনি একটুও। মিডিয়ায় নিষিদ্ধকরণ, জেল-হাজত, অবমূল্যায়ন কিংবা অপসংস্কৃতির বেড়াজালে প্রথাগত মোড়লবৃত্তিয় গোষ্ঠী অদম্য প্রতিবাদী এই মাকসুদুল হককে প্রতিরোধ করতে পারেন নি। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে মাকসুদুল হক ছিলেন, আছেন এবং থাকবেন তার আগত-অনাগত সকল সৃষ্টিতে। তার একটাই কারণ, মাকসুদুল হক তারুণ্যের হৃদপিন্ডের স্পন্দনকে প্রতিনিধিত্ব করেন।

----------------------------
মোখলেছুর রহমান সজল


মন্তব্য

অরফিয়াস এর ছবি

রবীন্দ্র-মৌলবাদ

প্রথম আপত্তি শিরোনামে।

আর রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পীরা যারা রবীন্দ্রনাথকে নিজেদের পারিবারিক সম্পত্তি বলে দাবী করেন, আপনারা অবশ্যই জেনে রাখবেন, হারমোনিয়াম আর তবলার ব্যাঞ্জনে নতুন প্রজন্ম রবীন্দ্রনাথকে গ্রহণ করবে না। (যদিও-বা করে তবে সেই শ্রোতাদের সংখ্যা আনুপাতিক হারে হবে অতি নগণ্য।)

এই চমৎকার বিশ্লেষণের পেছনে কোন গ্রহনযোগ্য ব্যাখ্যা কিংবা যুক্তি কিংবা নিদেনপক্ষে কোন পরিসংখ্যান? যাতে হারমোনিয়াম-তবলাতে যারা রবীন্দ্রসংগীত গাইছেন তাদের জনপ্রিয়তার হ্রাস সম্পর্কে একটা ধারণা পাওয়া যাবে?

অট: শাস্ত্রীয় সংগীতের শ্রোতা আমাদের দেশে কম, এখন কি সেটাও গিটারের ঝঙ্কারে তুলে আনার কোন ইচ্ছা পোষণ করেন?

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

অরফিয়াস লিখেছেন:
এই চমৎকার বিশ্লেষণের পেছনে কোন গ্রহনযোগ্য ব্যাখ্যা কিংবা যুক্তি কিংবা নিদেনপক্ষে কোন পরিসংখ্যান? যাতে হারমোনিয়াম-তবলাতে যারা রবীন্দ্রসংগীত গাইছেন তাদের জনপ্রিয়তার হ্রাস সম্পর্কে একটা ধারণা পাওয়া যাবে?

বক্তব্যটা বেশী স্ট্রং হয়ে গেছে মানছি। কিন্তু আমি সজলের সাথে একমত।

সজল লিখেছেন:
আপনারা অবশ্যই জেনে রাখবেন, হারমোনিয়াম আর তবলার ব্যাঞ্জনে নতুন প্রজন্ম রবীন্দ্রনাথকে গ্রহণ করবে না। (যদিও-বা করে তবে সেই শ্রোতাদের সংখ্যা আনুপাতিক হারে হবে অতি নগণ্য।)

পরিসংখ্যান হয়তো নেই কিন্তু ক্যাসেট/সিডি বিক্রি কিংবা কনসার্ট আর সঙ্গীত অনুষ্ঠানের দিকে তাকালে একটা ধারণা পাওয়া যাবে। রবীন্দ্রসঙ্গীতের জনপ্রিয়তা যেমন হ্রাস পায়নি তেমন উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধিও পায়নি।

একটা কনজেকচার দেই, প্রমান নেই আমার কাছে। প্রতিটা সঙ্গীত ধারার একটা শ্রোতা গোষ্ঠী থাকে। এরা চিরকাল ওই ধরণের সঙ্গীত ভালোবেসে যাবে। রবীন্দ্রসঙ্গীতের ক্ষেত্রে বর্তমানে মোটামুটি একটা নির্দিষ্ট পরিমান লোক শোনে। যদি এই গ্রুপ জনসংখ্যার ২৫ শতাংশ হয় তাহলে, জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে হয়ত শ্রোতার সংখ্যা বাড়বে কিন্তু বেশী শতাংশ এটাকে গ্রহণ করবে না বলেই "আন্দাজ" করি।

অরফিয়াস এর ছবি

মুর্শেদ ভাই, সংগীতের প্রায় সব শাখাতেই মূল একটা বিশুদ্ধ রূপ থাকে। যুগের পরিবর্তনে শ্রোতার পরিবর্তনে সেটার পরিবর্তন হয় সত্যি কিন্তু তার মানে এই নয় পরিবর্তন মানেই ভালো। ফিউশন এর প্রতি আমার কোন বিরূপ মনোভাব নেই বরং মিশ্রন সবসময়ই পরীক্ষনীয় একটি বিষয়। কিন্তু সব পরীক্ষাই যেমন পজিটিভ ফলাফল আনে না সেরকমই সব ফিউশনই শ্রুতিমধুর হয়না। রাগ সংগীতের চর্চায় যেমন এখনও বিশুদ্ধ ধারাটিই শুনতে ভালো লাগে, আমার কাছে রবীন্দ্রসংগীতের চর্চার ক্ষেত্রেও মূল ধারাটিই ভালো লাগে। তবে এর মানে এই নয় আমি পরিবর্তনের বিরুদ্ধে, কিন্তু বাংলাদেশে কিংবা পশ্চিম বাংলায় রবীন্দ্র সংগীত নিয়ে আমি যেই পরীক্ষাগুলো দেখেছি তা শুধু ভয়ঙ্করই নয় বিরুদ্ধাচারণ করার মতোই। একগাদা যন্ত্রপাতি ধুমধারাক্কা বাজিয়ে গেলেই যে সেটা আধুনিক শ্রুতিমধুর ভার্সন হয়ে যাবে তা তো নয়, কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে তাই দেখা যায়। ইউটিউবে একখানা এরকম ভিডিও দেখার পরে ঐ এলবামের প্রায় সবগুলো গানের ভার্সন শুনি, তারপর থেকে রবীন্দ্রসংগীতের আধুনিকায়ন শুনলেই আমার তাদের কথা মনে পড়ে, সত্যি বলতে গানের অপমান যদি বলা হয় তাহলে হয়তো সেটাকে দৃষ্টান্ত হিসেবে আনা যেত। মনে নেই কাদের কাজ ছিলো, থাকলে ভিভিও দিয়ে দিতাম এখানে।

যারা রবীন্দ্রসংগীত এর আধুনিকায়ন করতে চান তারা এর মূলের সাথে ঠিক কতোটা পরিচিত আর সম্পৃক্ত সেটা জানার অধিকার শ্রোতার আছে বলে মনে করি। শ্রোতার সংখ্যা বাড়ানোর জন্যই যে আধুনিকায়ন করতে হবে এটা আমার কাছে গ্রহনযোগ্য ব্যাখ্যা মনে হয়নি। সংগীতের সব শাখাতেই ফিউশন একইভাবে সাফল্য পেয়েছে তাও নয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষা হোক, কিন্তু পরীক্ষক এর যোগ্যতাও একটা ফ্যাক্ট।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

ধ্রুব বর্ণন এর ছবি

গানের অপমান যদি বলা হয় তাহলে হয়তো সেটাকে দৃষ্টান্ত হিসেবে আনা যেত।

"গানের অপমানে" অসন্তুষ্ট হবার অধিকার আপনের আছে বটেই। প্রশ্ন হলো "গানের অপমান" করার অধিকার কি নেই? বা উচ্চারণের? বা কোনো ধর্মের, বা ধর্মীয় চরিত্রের? বায়বীয় ধারণাকে অপমান করার অধিকার খুব ট্রিভিয়ালিই থাকার কথা। না থাকলে সেই উদ্দেশ্যে একটা ধর্ম বানালে হয়তো কাজে দিবে। তখন অপমান করার অধিকার না দিলে ধর্মানুভূতিতে আঘাত এসেছে বলে চেঁচামেচি করতে হবে। বুদ্ধিমান সরকারেরা ওই ধর্মানুভূতি রক্ষায় তখন অগ্রসর হবে। খাইছে

অরফিয়াস এর ছবি

হুমম অবশ্যই আছে, শুধু তাই নয়, সেই অপমানকে অপমান বলে সমালোচনা করার অধিকারও আছে, হয়তো পাল্টা অপমান করার অধিকার আছে বৈকি। তবে গানের কিংবা শিল্পের সাথে আরও দশটা পাঁচ-মিশালী অনুভূতি এনে একই মানদন্ডে বিচার করা যায় কিনা প্রশ্নটা সেখানেই। আর সমালোচনা করা আর অপমান করার মাঝে যে পার্থক্য সেটাও কিছু কিছু মানুষকে বুঝিয়ে বলতে হয়, সেখানেই সমস্যা।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

ধ্রুব বর্ণন এর ছবি

গানের সাথে কিংবা শিল্পের সাথে আরও দশটা পাঁচ-মিশালী অনুভূতি এনে বিচার করা যায় কিনা প্রশ্নটা সেখানেই

হুমম। বায়বীয় কিনা সেই বিচারের প্রশ্নে নিশ্চয়ই এগুলোর মধ্যে এক গ্রুপ অন্য গ্রুপের চেয়ে একটু বেশি ইকোয়াল নয়। ধর্মানুভূতি, শিল্পানুভূতি, উচ্চারণানুভূতি, এর সকলগুলোই বায়বীয়ত্বে সমান। যেখানে ব্যক্তিকেই অপমান করা ট্রিভিয়ালি জায়েজ, সেখানে যদি মানি যে সকল বায়বীয় ধারণাকেও অপমান করা জায়েজ, তাহলে অপমানযোগ্যতার প্রশ্নেও গান, শিল্প, ও আরও দশটা পাঁচ-মিশালী অনুভূতির মধ্যে কেউ ইনডেমনিটি পাবে, কেউ পাবে না, তেমন নিশ্চয়ই হবে না।

ধ্রুব বর্ণন এর ছবি

হয়তো পাল্টা অপমান করার অধিকার আছে বৈকি

এইটাতে সম্পূর্ণ সহমত জানালাম। দেঁতো হাসি

তানিম এহসান এর ছবি

নতুন প্রজন্মের কাছে রবীন্দ্রনাথকে উপস্থাপন করতে গেলে নতুন প্রজন্মের উপযোগী করেই উপস্থাপন করতে হবে। সেই সাথে নতুন প্রজন্মের ভালোলাগার সৃজনশীল মূল্যায়ন করা শিখতে হবে। নতুবা প্রজন্মের আবর্তনেই প্রচারবিমুখ এক সঙ্গীতধারা হিসেবে রবীন্দ্রসঙ্গীত অবমূল্যায়িত হলে তার দায়ভার অবশ্যই আপনাদের নিতে হবে

এই জায়গাটায় এসে মনে হলো এটাই আপনার বক্তব্যের মূল জায়গা, আমার ভুলও হতে পারে। নতুন প্রজন্মের সৃজনশীল মূল্যায়ন কেন নতুন কোন ধারা তৈরি করতে পারছেনা এটা আমার একটা বহুদিনের প্রশ্ন, কেন বাংলাদেশের নতুন প্রায় সব শিল্পী ফিউশন (ফিউশন নিয়েও আমার প্রশ্ন আছে) নামের একটা কিছুকে ধরেই এগুতে চাইবে? অর্ণব কিংবা শাহানা যন্ত্রানুষঙ্গ ব্যবহারে পরিমিত, বাহুল্য নেই, আদি ধরে রেখে গাইবার সচেতন প্রয়াস আছে, ঘরানা শিখে আসা শিল্পী; এবং তাদের সৃজনশীলতা ভিন্ন গানের কথায়, সুরে এমন যন্ত্রানুষঙ্গেও আমরা পাই। বাকিদের প্রয়াসগুলো কেমন হয়েছে সে সম্পর্কে আর না বলি।

নতুন প্রজন্ম যদি নিতে না পারে তাহলে কি সেটা নতুন প্রজন্মের ক্রেডিট?

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

একটু ভিন্ন ভাবে দেখলে এই পরিবর্তনটাকে এক্সপ্লেইন করতে পারবেন। মানুষের সমস্ত সৃষ্টি একটার উপর আরেকটা ভর করে গড়ে উঠে। চাকা বারবার আবিষ্কার হয় না। কিন্তু তার উপর ভর করে গাড়ী আবিষ্কার হয়, উড়োজাহাজ আবিষ্কার হয়। এই প্রসেস অনেকটা এভুলিউশানের মতো।

একইভাবে সঙ্গীতের পরিবর্তন এসেছে। ক্রমাগত যন্ত্রের ব্যবহার বেড়েছে। এক পর্যায়ে মাইক্রোপ্রসেসর যুক্ত এফেক্ট এসেছে। এসেছে ড়্যাপ। এরপর এসেছে ফিউশান। এসব কিছুই ক্রমাগত আগের প্লাটফর্মকে ভেঙ্গে গড়ে তুলতে চেয়েছে। যেটা ভালো না সেটা ঝরে যাবে, ভালোটা বেঁচে থাকবে। তাই একটা ইনডিভিজুয়াল এফোর্ট সমালচনা করা ঠিক আছে। কিন্তু এই প্রসেসটাকে চোখ রাঙ্গানোর কিছু নেই। এটা নেসেসারি ইভল।

আবছায়া এর ছবি

চলুক

তানিম এহসান এর ছবি

এটা নেসেসারি ইভল চলুক

কল্যাণ এর ছবি

আপনার লেখার মূল বক্তব্যটা ধরতে পারিনি। নতুন প্রজন্মের ফিউশন পছন্দ তাই রবীন্দ্রসংগীত ফিউশন করে গাইতে হবে এখন? নাকি মাকসুদ অত্যাচারিত হয়েছেন এবং সেটার প্রতিবাদ করছেন আপনি?

_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩

ধ্রুব বর্ণন এর ছবি

রবীন্দ্র মৌলবাদী বলতে যাদের দিকে ইঙ্গিত করছেন, কীভাবে আগামীতে রবীন্দ্রসঙ্গীত গাইতে হবে সেটার ভ্যালু জাজমেন্ট দেয়াটা তাদের সেই মানসিকতার বাইরে যায় কি?

আমার কানে এখনো কণিকা ও বন্যার গাওয়া গানই ভালো লাগে। কিন্তু রবীন্দ্র সঙ্গীত নিয়ে যে কারো যেকোনো রকম কাঁটাছেড়া করাতে আমার আপত্তি নেই। যার কানে সয় সে শুনবে। এ নিয়ে ধার্মিকতা দেখানোর তো কিছু নেই। ধ্রুপদী হোক আর ফিউশনকেন্দ্রিক হোক, যে কারোই রবীন্দ্রানুভূতি নামক অপর্যবেক্ষণসাধ্য দুঃখবেদনার প্রতি বাধ্যতামূলক বশ্যতা স্বীকার করতে হলে তো সমস্যা। এটার সাথে মোহাম্মদের উপর নির্মিত চলচ্চিত্র দেখে দুঃখবেদনা পাওয়া, জবরদস্তিমূলক আচরণ করা তুলনীয়। যে যার মতো খুশি গাবে, যে যার পছন্দমতো শুনবে। যেটা পছন্দ নয়, সেটা শুনবে না। এই অতি সাধারণ প্রিন্সিপলটা অনেকেরই দেখি পছন্দ না।

অসন্তুষ্ট না হওয়ার অধিকার চাইলে কাইজা তৈরি হবেই।

মন মাঝি এর ছবি

কিন্তু সেই সাথে অসন্তুষ্ট হওয়ার অধিকারটাও তো থাকতে হবে, তাই না?

****************************************

ধ্রুব বর্ণন এর ছবি

বটেই! কিন্তু অসন্তুষ্ট হওয়ার অধিকারে কখন টান পড়লো? অসন্তুষ্ট না হবার অধিকার না থাকাটা অসন্তুষ্ট হবার অধিকারকে আরও শক্তিশালীই করে।

মন মাঝি এর ছবি

টান পড়ে বৈকি মাঝে মাঝে, যখন কেউ কেউ কৃত্রিম ভাবে একটা প্রিয়েম্পটিভ ডাইকোটমি তৈরি করেন তাদের বক্তব্যে। বক্তার বক্তব্যের (বা স্রষ্টার) পক্ষে থাকলে ভাল, না থাকলে বা অসন্তুষ্ট হলে - খারাপ । 'ভাল' হতে হলে তখন বক্তার পক্ষেই থাকতে হবে, সন্তুষ্ট থাকতে হবেই। এদের (প্রিয়েম্পটিভ ডাইকোটমিওয়ালা্দের) সবাই সব সময় সরাসরি হয়তো সেটা বলেন না, কিন্তু যারা সরাসরি বলেন না তাদের বক্তব্যে সেটা ইমপ্লাইড থাকে। ধরেন, একটা বিশেষ বা বিশেষ ধরণের নিরীক্ষা/এক্সপেরিমেন্টেশন বা অবস্থানকে যদি পদে পদে, বাক্যে বাক্যে, ছত্রে ছত্রে, প্রাসঙ্গিকতা থাকুক বা না থাকুক - 'নতুন প্রজন্মের', 'তারুন্য', 'তারুন্যদীপ্ত' ইত্যাদি বলে বার বার বিশেষায়িত করা হয় (বা ইকুয়েট করা হয়) এবং এমন ভাবে করা হয় যেন সেটাই একমাত্র ও পরম মূল্য - এবং এর বিপরীত বা ভিন্ন অবস্থানটাকে একটা নেতিবাচক এবং/বা মূল্যহীণ ক্যাটেগরিতে প্রিয়েম্পটিভলিই ফেলে দেয়া হয় (পোস্ট দ্রঃ) - তখন আমার মনে হয় অসন্তুষ্ট হওয়ার অধিকারটা খানিকটা কেড়েই নেয়া হয় আগে ভাগে! কারন আপনি অসন্তুষ্ট হওয়ার সাথে সাথেই কিন্তু ঐ পূর্বনির্ধারিত নেতিবাচক এবং/বা মূল্যহীণ ক্যাটেগরিতে পড়ে যাচ্ছেন এবং এই অগ্রিম শ্রেণিভূক্তির মাধ্যমে আপনার অসন্তুষ্টি নালিফাই করে দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে (অর্থাৎ অধিকারটা কেড়ে নেয়া হচ্ছে), মূল যে নিরীক্ষা/সৃষ্টি/অবস্থান নিয়ে আদতে এত কথাবার্তা (বক্তা/স্রষ্টা/নিরীক্ষকারের) এবং আপনার অসন্তুষ্টি - সেটা আপনার দৃষ্টিকোন থেকে সঠিক ভাবে মূল্যায়ন/দ্বিমত করা বা সেই মূল বিষয়ে দ্বিমত/ভিন্নমত/মূল্যায়নের ধারে কাছে পৌঁছুনোর আগেই। এটাকে আমার কাছে অসন্তুষ্ট হওয়ার অধিকারের অস্বীকৃতি বলেই মনে হচ্ছে। আমি বলছি না এটা কোন কার্যকরী পদ্ধতি, কিন্তু ইন্টেনশন এবং ইফেক্টটা তা-ই।

আপনার কি মনে হয় - আমি বাড়িয়ে দেখছি? এই পোস্ট থেকে উদাহরণ দিলেও, আমার প্রশ্নটা কিন্তু আরও জেনারেল, এবং নেসেসারিলি এই পোস্ট বিষয়েও নয়। এই জিনিষটা বিভিন্ন রূপে বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রায়ই দেখি আমরা, সেজন্যেই এটাকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে হচ্ছে আমার। বুঝাতে পারলাম কিনা জানি না।
---------------------
অঃটঃ "তারুন্যদীপ্ত দূরদর্শিতা"-টা কি জিনিষ ঠিক বুঝতে পারলাম না!

****************************************

ধ্রুব বর্ণন এর ছবি

আপনার কি মনে হয় - আমি বাড়িয়ে দেখছি?

কিছুটা। কিন্তু বক্তব্য ধরতে পেরেছি। আমার মনে হয় না মুখের কথায় কারো অধিকার লঙ্ঘন হয়। তবে মুখে মুখে ফিউশন করা যাবে না বললে যে লেভেলে লঙ্ঘন ঘটে, একমাত্র তারুণ্যেরই অধিকার দাবি করলে সেই লেভেলেই লঙ্ঘন ঘটে। তবে মাকসুদের পেছনে যেভাবে লাগা হয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে, সেটাই একমাত্র যা দুশ্চিন্তার। এই বাকবিতণ্ডাগুলো নয়। মাকসুদের পেছনে এভাবে লাগাটা উলটো পক্ষের প্রতিক্রিয়াশীলদের জন্ম দিবে। আর এই নিয়ে যে মুখে মুখে ঝগড়া ঝাটি, এগুলো বরং তুলনামূলকভাবে সুস্থ চর্চা। খাইছে

সত্যপীর এর ছবি

শান্তিনিকেতন ছায়ানট ইত্যাদি রক্ষণশীল ঠিকই তবে মৌলবাদী একটু বেশি স্ট্রং ওয়ার্ড হয়া গেল।

মোটাদাগে বলসেন চারজনের কথাঃ মাকসুদ অর্ণব সাহানা আর শিরোনামহীনের রবীন্দ্রসঙ্গীত। একে একে আসি।অর্ণব আর সাহানা যতদূর জানি শান্তিনিকেতনের ছাত্র, রবীন্দ্রসঙ্গীত তারা গুলে খাইসেন বলেই ধারণা করি। উনারা যেটা করসেন সেটা হইল, গীটার কিবোর্ড ইত্যাদি ব্যবহার করসেন কিন্তু মূল সুর বেশি নাড়াচাড়া করেন নাই...প্রকৃত শান্তিনিকেতনি রবীন্দ্রভক্ত হিসেবে করার কথাও না। মাকসুদের ঘটনা ভিন্ন, উনি সম্ভবতঃ মূল সুরে ভ্যারিয়েশন আনতে চেষ্টা করসেন। আমার ভুলও হইতে পারে সুরসঙ্গীত আমি বুঝি অল্পই। না চাহিলে যারে পাওয়া যায় গানটা আমি উনারে টিভিতে গাইতে শুনছিলাম, পিছনে এক ঝাঁক শিল্পী হামিং করতেছিল গানের ফাঁকে ফাঁকে। আমার তেমন ভালো লাগে নাই, অনেকেরই লাগসে। উনি এক্সপেরিমেন্ট করতে চাইসেন এই ক্রেডিট উনি পাইতেই পারেন, তবে গান হিসেবে আমার কাছে উৎরায় নাই।

রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পীরা (আপ্নের মৌলবাদী ঘরানা) ঐ গানে ব্যাপক প্রতিবাদ করছিলেন, ব্যান ট্যান করার কথাও উঠসিল। আবার সাদী মোহাম্মদ এক সাক্ষাতকারে (ভুলে গেসি কোথায়) মাকসুদের নাম উল্লেখ না করে বলেছিলেন যে কেউ যদি গান গাইতে না জানে আমাদের কাছে আসলে আমরা সাহায্য করতেই পারি, ঘরানা একেবারে না জেনে গাওয়া ঠিক নয়। এইটা আমার মতে সঠিক তরিকার প্রতিবাদ, যে গান হিসেবে ভালো হয়নাই আরেকটু পড়াশুনা করলে পারতেন। মাকসুদ অসম্ভব বুদ্ধিমান মানুষ, আমি নিশ্চিত এসব ফিডব্যাক তিনি পজিটিভলিই নিসেন।

শিরোনামহীনের রবীন্দ্রসংগীত আমি বেশিদূর শুনতেই পারিনাই, আমার ব্যক্তিগত মত ঐটা উনাদের সর্বনিকৃষ্ট অ্যালবাম। অনেকেরই ভালো লাগসে অবশ্য।

দিনের শেষে আসল কথা হইল গান ভালো হইসে কিনা। মাকসুদের গানে রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পীরা সম্ভবতঃ প্রতিবাদ করছিলেন কারন গান তাদের কাছে যুইতের লাগে নাই, লক্ষ্যণীয় যে অর্ণবের গানে কোন প্রতিবাদ আসেনাই।

অফটপিকঃ বৃত্তের বাইরে চিন্তা করা ভালু পাই। ঈদের কোন এক অনুষ্ঠানে বিভিন্ন শিল্পীকে বলা হয়েছিল তাদের স্টাইলের বাইরে গাইতে, পার্থ গাইসিলেন বাঁশি শুনে কাজ নাই আর প্রয়াত নিলুফার ইয়াসমিন গাইসিলেন হৃদয় কাদা মাটির মূর্তি নয়। আহা কি অপূর্ব অভিজ্ঞতা!

..................................................................
#Banshibir.

ফাহিম হাসান এর ছবি

ভিডিওটা দেখেছেন কিনা জানি না, তবে না দেখে থাকলে মজা পাবেন - (মূলত ২৬ মিনিট পরে বেশ তুমুল তর্ক হয়)

সত্যপীর এর ছবি

হা হা হা, ক্লাসিক। একজন কয় আপ্নেরা ফ্যাসিস্ট আরেকজন কয় এইসব গান ডিরেইল ছেলেরা শোনে। খেক খেক।

দেখা ছিল না ফাহিম, ধন্যবাদ। আবার দেখতে হবে বাসায় গিয়ে।

কিঞ্চিৎ অফটপিক, মিতা ম্যাডাম বেশ কিছু পলিটিকালি ইনকারেক্ট কথা কৈছেন মনে হৈল। এইগুলি সচলে কৈলে উনার বারোটা বাজায় ছাড়ত মানুষ মন খারাপ

..................................................................
#Banshibir.

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

আমি মাকসুদের সাথে সম্পূর্ণ একমত।

ধ্রুব বর্ণন এর ছবি

মুখ খুললে সবাই-ই যে অনন্ত জলিল হবার সক্ষমতা রাখেন, সেটা মিতা হক প্রমাণ করলেন। ইয়ে, মানে...

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

দেঁতো হাসি
আমিও ভাবছিলাম মিতা হক শাড়ি পড়ে ব্যান্ডের গান গাইতে পরামর্শ দিচ্ছেন। "মেয়েটার চাহুনীতে সেক্সি ইঙ্গিত ছিলো" - জাতীয় বক্তব্য দিচ্ছেন!

ধ্রুব বর্ণন এর ছবি

হেহে, মিতা হক সাঈদীর বয়ান দিচ্ছেন। তবে এনাদেরকে "রবীন্দ্র মৌলবাদী" বলার আমিও বিরোধিতা করি। বলি, বুড়ো লোকটার নামটা এখানে না টেনেও কি বিশেষণটা দেয়া যেতো না? খাইছে

মোখলেছুর রহমান সজল এর ছবি

এদেরকে 'রবীন্দ্র-মৌলবাদী' ছাড়া কি-ইবা বলার আছে। শাড়ী পড়লেও-তো দোষ। মাকসুদুল হক যখন বিটিভিতে 'রবীন্দ্রনাথ ২০১০ ইং' গাইলো তখন, পেছেনের দিকে শাড়িপরিহিতা তিনজন নারী ছিল হার্মিং করার জন্য। ঐ সময় মাকসুদের রবীন্দ্রসঙ্গীতে নারীরা অশ্লীল নিত্য করেছে বলে জোরালো প্রচার করেছিল। বোরকা পড়েই তবে রবীন্দ্রসঙ্গীত গাইতে হবে নারীদের। তাহলে, প্রশ্ন এসেই যায়,

কোন কোন অবস্থায় রবীন্দ্রসঙ্গীত শোনা একেবারেই নাজায়েজ?

একটা নতুন নাম প্রপোজ করেন। সঠিক ভাবে উপমায়িত হলে সেইটাই শুরু করা যেতে পারে।

স্যাম এর ছবি

সহমত

গৌতম এর ছবি

চলুক

.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ

হিমু এর ছবি

মাকসুদকে বেশি করে রবীন্দ্রসঙ্গীত গাওয়ার উৎসাহ দিতে হবে আসলে। সবাই কেন তাকে বাধা দেয়? তাকে মন খুলে গাইতে দেয়া হোক। কেউ কি অনন্ত জলিলকে ব্যায়াম করতে বা ইংরেজি বলতে বাধা দেয়? মানুষ এমন বেরসিক কেন? আমরা কি পম জ্ঞানা?

মাকসুদ, ইভা রহমান, মাহফুজুর রহমান, সবাইকেই নিজের মতো করে রবির গান গাইতে দেয়া হোক।

মন মাঝি এর ছবি

তিনজনকে একসাথে গাওয়ানো যায় না?

****************************************

বাপ্পীহায়াত এর ছবি

চলুক

অরফিয়াস এর ছবি

বদলে দাউ, বদলে যাউ সবখানেই !!

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

আইলসা এর ছবি

অত্যন্ত চমৎকার আইডিয়া। জলিল ভাই আর বর্ষা ভাবীর উপস্থাপনায় মাকসুদ-ইভা সংগীত সন্ধ্যা ফলোড বাই একক সংগীত প্রম মাহফুজ।
টিকিটের জন্য মারামারি না হইলেই হয়!!!

আইলসা

অতিথি লেখক এর ছবি

"কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শুধু যে তার যুগেই আধুনিক মনস্ক ছিলেন তা নয়, তিনি এখনও আমাদের কাছে ঠিক তেমনই দীপ্ত ও আধুনিক মনস্ক।"
"নতুন প্রজন্মের কাছে রবীন্দ্রনাথকে উপস্থাপন করতে গেলে নতুন প্রজন্মের উপযোগী করেই উপস্থাপন করতে হবে।"

এত আধুনিক যদি হয়ে থাকেন, তবে কেনো নতুন প্রজন্মের উপযোগী হতে হলে বেগ পেতে হবে।

এত যে আধুনিক ছিলেন তিনি তো তাঁর নিজের গান কীভাবে গাইতে হবে, কতটুকু নতুনত্ব আনা যাবে এগুলো নিয়ে তাঁর নিজেরও তো আধুনিক চিন্তাভাবনা থাকতে পারে, সেটা কিন্তু আপনার ভাঙ্গা গানের উদাহরণেই স্পষ্ট হয়ে ওঠেনা। কোন গানের ছায়া অবলম্বনে সুরারোপ করে বা কোন গানের আদলে নতুন সঙ্গীত সৃষ্টির সঙ্গে রবীন্দ্রসঙ্গীত ভিন্নভাবে গাওয়ার বিষয়টি তুলনীয় বলে আমার মনে হয়না।

আমি সাধারণত বন্যার কণ্ঠে রবীন্দ্রসঙ্গীত বেশি শুনি, একবারের জন্যেও সেখানে 'তোঁতা পাখির মত এক ঘেয়েমি সঙ্গীতায়োজন' রয়েছে বলে মনে হয়নি। বন্যাকে ব্যান্ড শিল্পীদের সাথেও রবীন্দ্রসঙ্গীত গাইতে দেখেছি। এবারকার ঈদে দেশ টিভিতে 'ক্লোজআপ কলেরগান' অনুষ্ঠানে অর্ণব ও রূপঙ্করকে রবীন্দ্রসঙ্গীতে নতুনত্ব নিয়ে কথা বলতে দেখেছি। সে কথার সারমর্ম হলো আদিসুর জানাটা আবশ্যক আর নতুনত্ব নিয়ে আসবারও কিছু নিয়মকানুন রয়েছে।

"আর রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পীরা যদি তাদের মননশীল করে রবীন্দ্রনাথকে উপস্থাপনে ব্যর্থ হন, তখন কি ঘটতে পারে তা ভাবনার বিষয় বলেই আমি মনে করি।"

কি ঘটতে পারে বলে মনে হয় আসলে আপনার যদি সবিস্তারে বলেন ভালো লাগবে। আর বাউল গান কতটা সমৃদ্ধ হলো নতুন প্রজন্মের দ্বারা সেটা জানবার লোভও সামলাতে পারছিনা।

নতুন প্রজন্মের মেটাল, রক শিল্পীদের সঙ্গীত জানাশোনার বিস্তার কতটা সেটা খানিকটা তুলে এনেছেন অঞ্জন দত্ত 'রঞ্জনা আমি আর আসবনা' চলচ্চিত্রে। তাদের হাতে কীভাবে রবীন্দ্রসঙ্গীত ছেড়ে দেওয়া যায়?

সৌরভ কবীর

মোখলেছুর রহমান সজল এর ছবি

তাদের হাতে তুলে দেবেন না, আবার তাদের সৃজনশীল ধারার শিক্ষাও দেবেন না তাহলে হবে কিভাবে? তারা রবীন্দ্রনাথ উপলব্ধিই করতে পারে বলে ধরে নিলাম। সেক্ষেত্রে, রবীন্দ্র গবেষকেরা কোন প্রতিষেধক নিয়ে এসেছেন কি তা প্রতিকার করার। নাকি মিডিয়াতে কেবল বক্তব্য দিয়েই যাবেন--- এটা করা যাবেনা, ওটা করা যাবেনা। তাহলে যাবে কোনটা?

বাউল গান সমৃদ্ধ হয়েছে কিংবা করেছে, এমন ভাষ্য আমি এই পোষ্টে দেইনি বলেই জানি। উদৃতি দিয়ে যাবেন। আমি যা বলার চেষ্টা করেছি, তা হলো, যারা বাউল গান শুনতো তারা শুনছে। এতে করে, বাউল গানকে পেছনে ঠেলে দেয়া নয় বরং সামনে না নিতে পারলেও শ্রোতাদের মনে আব্দুল করিম, লালল, হাসন রাজা এই শব্দগুলোকে অন্তত ঠুকাতে পারছে। সেখানে আমি সফলতাই দেখি। অন্য কিছু তো দেখিনা। আপনি দেখেন কি?

মোখলেছুর রহমান সজল এর ছবি

*তারা রবীন্দ্রনাথ উপলব্ধিই করতে পারেনা বলে ধরে নিলাম।
* যারা বাউল গান শুনতো না তারা শুনছে

মন মাঝি এর ছবি

একেবারেই সহমত হতে পারলাম না!

****************************************

মোখলেছুর রহমান সজল এর ছবি

কি আর করা। কোন অংশটুকুতে সহমত হতে পারেন নি।
আমার লেখায় উদৃতি আছে, রবীন্দ্রনাথ গগন হরকারার 'আমি কোথায় পাবো তারে' এবং স্কটিশ গান Auld Lang Syne -এর সুরারোপের ছায়া অবলম্বনে 'আমার সোনার বাংলা' ও 'পুরানো সেই দিনের কথা' গান দুটি তৈরী করেছেন। মাকসুদুল হককে মিডিয়াতে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল রবীন্দ্রমৌলবাদীদের চাপে। এছাড়াও আরো অনেক তথ্যই সংযোজন করেছি বলেই আমার ধারণা।

একেবারেই সহমত হতে পারেন নি মানে কি এই যে, আপনি আমার দেয়া তথ্যগুলোতে সহমত নন। সেটাই স্বাভাবিক। কারণ বাক্যটা বড় সংক্ষিপ্ত ও নিঃসঙ্গ এবং সেই নিঃসঙ্গতার কারণ আপনার জানা নেই!

শিশিরকণা এর ছবি

নতুন প্রজন্ম হলেই যে রক মেটাল গান প্রিয় এই ধারণাটার প্রতিবাদ জানাইলাম. আমার কখনই ধুম ধারাক্কা গান ভালো লাগে নাই. শান্তি শান্তি সুরেলা গানই বরাবর পছন্দ. তার মধ্যে রবীন্দ্রসঙ্গীত এমনিই চলে আসে.
মাকসুদের ঢোল অনেক পিটাইলেন, তবে তার ফিউশন শ্রুতিমধুর হয় নাই. একবার শুনে দ্বিতীয়বার শুনতে ইচ্ছা করে নাই. অন্যদিকে অর্র্ণব আর সাহানার ভার্সনে যন্ত্র অনুসঙ্গের ব্যবহার কানে পীড়া দেয়নি, এবং সাদী বন্যা, মিতা হকের গাওয়া ভার্সনের চেয়ে সামান্য যন্ত্রের ব্যবহারে সেটা আরো সুমধুর হয়েছে, বারবার ঘুরে ফিরে শুনতে ভালো লেগেছে. এখন যাদের রক হাই ফাই এইরকম ছাড়া আর কিছু শুনতে ভালো লাগে না তাদের জোর করে রবীন্দ্রনাথ শুনাবার কি এত ঠেকা পরেছে? বিভিন্ন শিল্পী বিভিন্ন ভাবে গাইতে পারেন, কারো টা ভালো নাও হতে পারে, সেক্ষেত্রে সমালোছনা সহ্য করার মানসিকতা থাকা উচিত. সব সমালোচনা রবীন্দ্র "মৌলবাদ" বা এইরকম কিছুর ঘাড়ে চাপিয়ে সবকিছু উপেক্ষা করে চেচিয়ে গেলে গাধার মতই শোনাবে. বিভিন্ন রকম ফিউশন বিভিন্ন জনের কাছে ভালো লাগবে. কিন্তু মূল ঘরানা ও মূল সুর ধরে রাখারও প্রয়োজন আছে, নাহলে ফিউশন করবেন কিসের সাথে?

*বি: দর: বানান- ওভরো ছাড়া ওসোহায়! **

~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~

ধ্রুব বর্ণন এর ছবি

কিন্তু মূল ঘরানা ও মূল সুর ধরে রাখারও প্রয়োজন আছে, নাহলে ফিউশন করবেন কিসের সাথে?

চমৎকার!

আবছায়া এর ছবি

চলুক

মোখলেছুর রহমান সজল এর ছবি

শিশিরকণাঃ রবীন্দ্রনাথে গান জোর করে শুনাতে হবে এই কথা কি আমি বলেছি বলে আপনার ধারণা? বিশ্বের জলবায়ুর প্রভাব লক্ষ্য করেছেন? এই প্রভাব আমাদের দেশকে কিভাবে প্রভাবিত করতে পারে সেটা জানেন কি?

যার ইচ্ছা হইল, গাছ কেটে ফেলুক। বন্যপ্রাণি মেরে ফেলুক। বনভূমি উজার করে বসতি, কলকারখানা গড়ে উঠুক। যার যার নিজের জায়গার গাছ কেটে ফেলবে নাকি সোনা দিয়ে বাধায়ে রাখবে সেটা নিয়ে মাথা না ঘামানোই ভালো কি বলেন? আমি আপনার সাথে একমত।

সবকিছু জ্বলে যাক, পুড়ে যাক, উজার হয়ে যাক। যার ইচ্ছা গাছ কাটবে। তাতে বাধা দেয়ার কি আছে? বরং বাধা দিতে গেলে গাছের ডাল ভেঙে মাথায় বাড়ি দেয়া যাবে। এক ঢিলে দুই পাখী। আসলে তিন পাখী। গাছ না থাকলে পাখির বাসাও নাই। কিচিরমিচির শব্দও নাই, মাথায় পায়খানা করে দেবার ভয়ও নাই।

কল্যাণ এর ছবি

কস্কি মমিন!

_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩

শিশিরকণা এর ছবি

কিসের মধ‌্যে কী? পানতা ভাতে ঘি! কস্কি মমিন!

~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~

অতিথি লেখক এর ছবি

ব্যক্তিগতভাবে আমার কাছে মাকসুদের গানটি ভালো লাগেনি। রবীন্দ্রসঙ্গীত নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করা যেতেই পারে, কিন্তু মূল সুরটা ধরে রাখার প্রয়োজনীয়তা আছে।

-অয়ন।

মোখলেছুর রহমান সজল এর ছবি

মাকসুদুল হকের রবীন্দ্র-ফিউশনে সুরারোপটা ভেঙে দেয়াটা ভালো হয়নি মেনে নিলাম, কিন্তু তাই বলে এতকিছু???? না চাইতেই এত পাওয়া!

অতিথি লেখক এর ছবি

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সময়ে প্রযুক্তি এতটা উন্নত ছিল না। তিনি হারমোনিয়াম আর তবলার যোজনায় সংকলন করছেন তার এক একটি সৃষ্টি।

এরকম একটা বিশাল ভুল দেখে কেন যেন মনে হল, রবীন্দ্রসঙ্গীতের শ্রবণ ও পঠনে আপনার বেশ খানিকটা ঘাটতি আছে! তিনি হারমোনিয়াম আর তবলার যোজনায় গান সঙ্কলন করতেন না। রবীন্দ্রনাথ নিদারুণ হারমোনিয়াম-বিদ্বেষী ছিলেন এবং হারমোনিয়ামকেই উনি হিন্দুস্থানী সঙ্গীতের 'জাত মারার' জন্য দায়ী করেছেন। মূলত রবীন্দ্রনাথের নেতৃত্বে এবং রতনজনকর প্রমূখ সঙ্গীতশাস্ত্রী ও শিল্পীর সমর্থনে বেতারে দীর্ঘদিন সব রকম গানে হারমোনিয়াম বাদন নিষিদ্ধ ছিল। পরে জ্ঞানপ্রকাশ ঘোষের অনুপম বাদনশৈলীর মাধ্যমে এবং তারযন্ত্র মেলানোর দুরূহ প্রক্রিয়ার জন্য ধীরে ধীরে হারমোনিয়াম ফিরে আসে বেতারে। তবে রবীন্দ্রনাথ তাঁর যৌবনে বোটে বাংলাদেশ ভ্রমণের সময়, কখনো কখনো হারমোনিয়াম বাজিয়ে একের পর এক গান করেছেন- এমন নজির "সঙ্গীতচিন্তা"য় আছে। কিন্তু হারমোনিয়াম তাঁর মোটেই পছন্দ ছিল না। আপনি কী জানেন, প্রাক-পঙ্কজ মল্লিক যুগে রবীন্দ্রসঙ্গীতে তবলার ব্যবহার ছিল না? রবীন্দ্রনাথ এবং তাঁর ছাত্র-ছাত্রীরা কেউই শান্তিনিকেতনে গানের সাথে তবলার "যোজনা" ব্যবহার করতেন না! প্রথমবার তবলা ব্যবহার করতে পঙ্কজ কুমার মল্লিককে রীতিমত রবীন্দ্রনাথের অনুমতি নিতে হয়েছিল।

রবীন্দ্রসঙ্গীত বাণী ও সুরের যুগল-সম্মিলন, কাজেই মূল গানের ভাবকে ক্ষুণ্ণ করে- এমন অনুষঙ্গ এখানে সার্থক হয় না। ম্যাক ভাই যেটা গেয়েছিল সেটার ভুল-ত্রুটি নিয়ে সমালোচনা হওয়া উচিত ছিল। তা না করে শ্রদ্ধেয় ওয়াহিদুল হক সাহেবের নেতৃত্বে ম্যাককে মিডিয়ায় নিষিদ্ধ করার দাবী তোলা হয় -যেটা আমি মনে করি সাংস্কৃতিক ফ্যাশিজমের লক্ষণ। কোন সংস্কৃতিকে ব্যান করা অনুচিত। সংস্কৃতির রাজ্যে বিচারের ভার মানুষের মননের ওপর, এর ওপর দাদাগিরি চলে না। ম্যাকের ওপর দাদাগিরি করা হয়েছিল!

হারমোনিয়াম-তবলার প্রতি এত বিদ্বেষ কেন? হারমোনিয়ামও গিটার বা ড্রামসের মত বিদেশি যন্ত্র এবং এদেশে আমদানি হয়েছিল। তবলা আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে পৃথিবীর সবচেয়ে বৈচিত্র্যময় পারকাশন ইন্সট্রুমেন্ট কারণ এত রকম ধ্বনিবৈচিত্র্য আর কোন পারকাশন ইন্সট্রুমেন্টে প্রকাশ করা যায় না, ড্রামসে তো নয়ই! অবশ্য এর মানে এই নয় যে, আমি ড্রামস-বিদ্বেষী! কিন্তু নিরপেক্ষ বিচার থেকেই বলছি, তাল নিয়ে আমাদের উপমহাদেশীয় সঙ্গীতে, বিশেষত কীর্তন ও রাগসঙ্গীতে যে বৈচিত্র্যময় ও বিস্তৃত কাজ হয়েছে তার উদাহরণ বিশ্বের আর কোন সঙ্গীতে নেই। তবে এই বৈচিত্র্য উপলব্ধি করবার জন্য শিক্ষার প্রয়োজন। হারমোনিয়াম-তবলা কি রক্তে উন্মাদনা জাগাতে পারে না? আপনি কি উস্তাদ জাকির হুসেনের বাজনা শুনেছেন? আহমদজান থেরাকুয়া, অনোখেলাল, কিষেণ মহারাজ, শ্যামল বোস, আল্লা-রাখা- এদের? এরা তো রক্তে আগুন ধরিয়ে দিতে পারতেন মশাই! জ্ঞানপ্রকাশ ঘোষের সলো হারমোনিয়াম বাদন শুনে দেখবেন, সেই সাথে তুলসীদাস বরকর, অজয় যোগলেকর এবং অজয় চক্রবর্তীর হারমোনিয়াম-বাদন। কাজেই যন্ত্রের নাম নয় বরং বাদনের কোয়ালিটিই নির্ধারণ করে রক্তে উন্মাদনা জাগানোর পরিমান। অবশ্য এর মধ্যে শ্রোতার রুচি, শিক্ষা, মানসিক অবস্থা, নেশা করা বা না করা- ইত্যাদি অনেক বিষয়ই জড়িত।

ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি, "না চাহিলে যারে পাওয়া যায়" গানটির শ্রেষ্ঠ রূপকার মান্না দে এবং তিনি রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী নন। ম্যাক ভাই আমার অত্যন্ত প্রিয় শিল্পী এবং আমাদের পারিবারিক বন্ধু। তাঁর মত সঙ্গীত-প্রতিভা বিরল। যন্ত্রানুষঙ্গ বাদ দিলেও তার এই গানে সুর এবং এক্সপ্রেশনে বেশ কিছু খামতি ছিল, যেটাকে পার্থ বড়ুয়া "মাকসুদ ভাই তো সুরে গাননি" -বলে মন্তব্য করেছিলেন আমার কাছে। কিন্তু গানটাকে রবীন্দ্রনাথের গান বলে চেনা যাচ্ছিল। তাঁকে ব্যান করার দাবি ছিল সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। আচ্ছা, রবীন্দ্রসঙ্গীতে "উ-লা-লা" ঢোকানোটাকে আপনি কী ধরনের ফিউসন মনে করেন?

নির্ঝর অলয়

"

মোখলেছুর রহমান সজল এর ছবি

মাস্টারপিসগুলো শুনে দেখার সৌভাগ্য হয়নি।
রবি ঠাকুর নিজে হারমোনিয়াম অপছন্দ করতেন সেই খবর রাখি। এও জানি তিনি পিয়ানোতেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করতেন বড় বেশী।

একটা প্রশ্ন রেখে গেলামঃ

যেখানে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এত বেশী হারমোনিয়াম বিদ্বেষী ছিলেন যে তিনি হারমোনিয়াম নিষিদ্ধ পর্যন্ত করেছিলেন, সেখানে রবীন্দ্রপ্রেমীরা রবীন্দ্রসঙ্গীত গাইতে গিয়ে চিৎকারে করে বলে কেন, ওরে আমার হারমোনিয়াম দিয়ে যা। দেখছিস না, রবীন্দ্রসঙ্গীত গাইবো এখন। হারমোনিয়াম ছাড়া গাইবো কেমন করে!

কেন হারমোনিয়ামের এই অবাধ ব্যবহার? কেন রবীন্দ্রপ্রেমীরা রবীন্দ্রনাথের অপছন্দকে মূল্যায়ন করতে শেখেনি।

আমি কখনোই, তবলা এবং হারমোনিয়ামকে হেয় করে কথাটা বলিনি। বলেছি মূলত, রবীন্দ্রপ্রেমীদের অনুরাগ ও উন্মদনা দেখে। বাংলাদেশের শুভ্রদেবের তবলা বাদনও কিন্তু আমার প্রিয়।

অতিথি লেখক এর ছবি

কারণ তানপুরা সহযোগে সুরে গান করা অত্যন্ত দুরূহ এবং আয়াসসাধ্য বিষয়। দুঃখজনকভাবে বাংলাদেশের অনেক নামকরা শিল্পীই তানপুরা মেলাতে জানেন না, এবং এস্রাজ শিল্পীও খুবই কম। তাই বাধ্য হয়েই হারমোনিয়াম নিতে হয়। আমি কিন্তু গিটারের পরিমিত আবহ খুব পছন্দ করি। রবিঠাকুর পিয়ানো স্বচ্ছন্দ ছিলেন। কিন্তু উনি ছেলেবেলায় গান অভ্যেস করেছেন স্রেফ তম্বুরা বা তানপুরায়। গান মূলত উনি খালি গলায়, পায়ে তাল দিয়ে বাঁধতেন, পরিবেশনার সময় দক্ষ হাতের এস্রাজ হত আবহসঙ্গীত।
নির্ঝর অলয়

সুমন চৌধুরী এর ছবি

কপিরাইটের জোর যেহেতু নাই, যার যা খুশি সে করতেই পারে।

তবে ক্রেতা হিসাবে আমার স্বাধীনতার বিষয়টাও থাকতেছে।

দিগন্ত এর ছবি

এইটাই কথার কথা। আমাকে জোর করে না শোনাতে এলে যে কেউ যে কোনোভাবে গাইতে পারে, এখন কপিরাইটও নেই - তাই সে যুক্তিও নেই।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

মোখলেছুর রহমান সজল এর ছবি

চলুক

নীড় সন্ধানী এর ছবি

শিরোনামে আপত্তি জানাইলাম।

আমাদের অনেকের একসময়কার প্রিয় মাকসুদুল হক ওরফে ম্যাক বিবর্তনের ধারায় ছাগুতে রূপান্তরিত হয়ে গিয়েছিলেন আরো এক দশক আগেই। তাই তার কোন রকম গবেষণা ফিউশন নিয়ে আমার কোন আগ্রহ নেই। আলমাহমুদ যে কারণে পরিত্যাজ্য একই কারণ ম্যাকও পরিত্যাজ্য।

তবু আলোচনা টেনেছেন বলে অতি সংক্ষিপ্ত মতামতটা জানিয়ে রাখছি। ম্যাক হক রবীন্দ্র সঙ্গীত নিয়ে যা করতে চেয়েছেন সেটাকে কোন জাতের ফিউশন গবেষণা মনে হয়নি বরং ফাজলামি মনে হইছে। এইসব ফাজলেমি ফিউশনবাজদের কানে ধরে চটকানা দিতে চাইলে রবীন্দ্রমৌলবাদী হতে হবে কেন? নতুন প্রজন্মকে জোর করে রবীন্দ্রনাথ গেলানো দায়িত্ব কে দিল ম্যাক ছাগুকে?

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

অরফিয়াস এর ছবি

গুরু গুরু

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

ব্যাঙের ছাতা এর ছবি

চলুক

মোখলেছুর রহমান সজল এর ছবি

আপনি দেখছি সেই ওয়াহিদুল হক সাহেবের মত ধমকি-ধামকি মারছেন। বাংলাদেশের এক শিল্পীসত্তাকে চটকাতে চাচ্ছেন! এই স্পর্ধা আপনাকে কে দিল? ঐ যে শুরুতে বলা, রবীন্দ্র-মৌলবাদী। ধমক, ঝাড়ি, হুমকি দিতেই তারা বেশী স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে।

কতজনকে চটকানোর সাহস ও যোগ্যতা রাখেন? সুযোগ এলে পারবেন তো!

মোখলেছুর রহমান সজল এর ছবি

১৯৯৯-এ মাকসুদুল হকের ওগো ভালবাসা অ্যালবাম প্রকাশের পর সেই অ্যালবামের 'রবীন্দ্রনাথ ২০১০ ইং' শিরোনামের গানটি বিটিভি-তে প্রচার পায়। তখন, ওয়াহিদুল হক সাবেব সহ ও অনেক শিল্পীই বিটিভি-কে চাপ দেয় মাকসুদুল হককে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানোর জন্য। বিটিভি কিন্তু ঠিকই মাকসুদুল হককে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠিয়েছিল।

কথা হল, মাকসুদুল হক কি স্বেচ্ছায় বিটিভিতে গিয়ে 'রবীন্দ্রনাথ ২০১০ ইং' গেয়ে এসেছিল স-দলবলে? তবে কেন বিটিভিতে প্রচার পাবার পরে টিভি কর্তৃপক্ষ তাকে কারণ দশার্নোর নোটিশ পাঠালো? (উপরের ঠেলা খেয়ে নিশ্চয়!)

শুধু তাই নয়, ওয়াহিদুল সাহেবের গ্যাং-রা তখন মাকসুদুল হককে মিডিয়াতে নিষিদ্ধ করার জোর দাবী তুলেছিল। মাকসুদুল হককে মিডিয়া থেকে নিষিদ্ধ করা হলো, মিথ্যে অস্ত্রমামলায় তাকে গ্রেপতার করানো হলো। মাকসুদুল হককে জেলের ভাত খাওয়ালো। আর মৃদু হাসলো!

এই এক 'রবীন্দ্রনাথ ২০১০ ইং' এর কারণে যদি রবীন্দ্রভক্তরা একজন শিল্পীর জন্য এত কিছু করতে পারে, তখন ধর্মান্ধ মৌলবাদীদের মত এদেরকেও কোন যুক্তিতে রবীন্দ্র-মৌলবাদী বলা যাবে না, সেটা ব্যাখ্যার দাবিদার।

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

তবু আলোচনা টেনেছেন বলে অতি সংক্ষিপ্ত মতামতটা জানিয়ে রাখছি। ম্যাক হক রবীন্দ্র সঙ্গীত নিয়ে যা করতে চেয়েছেন সেটাকে কোন জাতের ফিউশন গবেষণা মনে হয়নি বরং ফাজলামি মনে হইছে। এইসব ফাজলেমি ফিউশনবাজদের কানে ধরে চটকানা দিতে চাইলে রবীন্দ্রমৌলবাদী হতে হবে কেন? নতুন প্রজন্মকে জোর করে রবীন্দ্রনাথ গেলানো দায়িত্ব কে দিল ম্যাক ছাগুকে?

আপনার মন্তব্যে "রবীন্দ্র সঙ্গীত" শব্দটা বদলে "ইসলাম", আর "ফিউশন" বদলে ধর্ম বসিয়ে দেখি কেমন লাগে।

তবু আলোচনা টেনেছেন বলে অতি সংক্ষিপ্ত মতামতটা জানিয়ে রাখছি। ম্যাক হক ইসলাম নিয়ে যা করতে চেয়েছেন সেটাকে কোন জাতের ধর্ম গবেষণা মনে হয়নি বরং ফাজলামি মনে হইছে। এইসব ফাজলেমি ধর্মবাজদের কানে ধরে চটকানা দিতে চাইলে ইসলাম মৌলবাদী হতে হবে কেন? নতুন প্রজন্মকে জোর করে ইসলাম গেলানো দায়িত্ব কে দিল ম্যাক ছাগুকে?

হুমম...

অতিথি লেখক এর ছবি

@ নীড় সন্ধানী
এ্যাঁ? মাকসুদুল হক ছাগু, বলেন কী?? এটা জানতাম না একেবারেই, আমি শিওর আমারমত অনেকেই জানেনা। আপনি যে লিংক দিলেন, তাতে ছাগু হওয়ার মত কিছু পাইনি বা চোখ এড়িয়ে গেছে। <"মাকসুদুল হক" ছাগু> আর <মাকসুদ ফিডব্যাক ছাগু> দিয়েসার্চ দিয়েও তেমন কিছু পেলাম না, বরং এই গানটাকে অনেকেই দেখলাম ছাগুবিরোধী হিসাবেতুলে ধরছেন।

মাকসুদের ছাগু হওয়ার কিছু লক্ষণ দেখাবেন কি@নীড় সন্ধানী? ছাগু চিনে রাখাটা জরুরী। কিঞ্চিত অফটপিকের জন্য দুঃখিত @ লেখক।

--দিফিও

নীড় সন্ধানী এর ছবি

মাহমুদুর রহমানের মতো মাকসুদুল হকও খুবই ট্যালেন্টেড ছাগু প্রথম দেখায় যাদের বর্ন চেনা সহজ নয়। মাকসুদুল হকের ছাগুত্বের প্রমাণ পেতে তার সাথে সরাসরি রাজনৈতিক আলাপে যেতে হবে। আমার সাথে এক দশক আগে সরাসরি রাজনৈতিক আলাপ ছিল বলেই জেনেছি মাকসুদ কি জিনিস। মাকসুদুল হককে আমরা পরিত্যাগ করি তখনই। যে সব ফোরামে মাকসুদ গত এক দশক সক্রিয় ছিল/আছে সেসব ফোরামে যদি আপনার যাতায়াত থাকে তবে নব্য ইসলামী চিন্তাবিদ মাকসুদকে চিনতে পারেন। যার অনেক বক্তব্যের মধ্যে জামাত বা হিজবুত তাহরীরের ছায়া দেখতে পাওয়া যায়। ভবিষ্যতে কোনদিন জামাতী বুদ্ধিজীবিদের তালিকায় মাহমুদুর রহমানের পাশাপাশি মাকসুদুল হককে দেখলে অবাক হবেন না। দুঃখের বিষয় এখানে বেশীরভাগ ব্লগার তার সঙ্গীতের পরিচয়টা জানলেও রাজনৈতিক পরিচয়টা জানেন না। জানলে নিশ্চিত অনেক বেশী চমক হতো!

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

অতিথি লেখক এর ছবি

বর্তমান সময়ের সবচেয়ে আলোচিত ফেনোমেনন হল বাংলাদেশের জন্মলগ্নের বিশ্বাসঘাতক, দেশদ্রোহী, পশুতুল্য ঘৃণ্য আলবদর, রাজাকার; সর্বোপরি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার। প্রতিটি প্রজন্মই চায়, সেই সব যুদ্ধপাপীদের বিচার হোক এই বাংলার মাটিতে। ইতিহাসের সবচেয়ে ঘৃণ্য ও ন্যাক্কারজনক এক কালো অধ্যায়ের সমস্ত দুঃখ, কষ্ট ও যন্ত্রনার অবসান হোক এই বাংলায়। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হলে প্রতিটি প্রজন্মই সেখানে সান্ত্বনা খুঁজে পাবে। এ দাবি এদেশের মানুষের। স্বাধীনতার পরবর্তী সময় থেকে এখন পর্যন্ত দীর্ঘ প্রায় চল্লিশ বছরের পুরোনো নতুন এক দাবি। যদিও স্বাধীন বাংলাদেশের প্রাক্বালে সমস্ত যুদ্ধাপরাধীদের সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার মাধ্যমে সেই সব যুদ্ধপাপীদের লাল-সবুজের এই পতাকা তলে আশ্রয় দিয়েছিল তৎকালীন বাংলাদেশ সরকার। আর এই পতাকাতলে ওরা নিরবে নিভৃতে নিয়েছে শকুনের রূপ। তীক্ষ্ণ নখের প্রসারিত থাবায় বার বার চিড়ে দিতে চেয়েছে এদেশের প্রিয় পতাকা।

‘কোন পথে আমরা চলবো হায় পারওয়ারদিগার
তোমার অস্তিত্ব স্বীকার করি আমরা যে গুনাহ্‌গার
ধর্মান্ধ উগ্রবাদীদের নাম দিলাম মৌলবাদ
পাল্টে জবাব ওরা দিল আমাদের তোরা নাস্তিক মুরতাদ।
একি আমরা দেখছি হায় পারওয়ারদিগার
হত্যাকারী আর জেনাহ্‌কারীরা সেজেছে নব্য পয়গাম্বার
একাত্তরের কাফের সন্তানকে ক্ষমা করেছে আদালত
রোজ হাসতে তুমি ক্ষমা করবেনা এই আমাদের ইবাদত

দেশ কাল আর শান্তির কথা ভেবে রয়েছি আমরা নিরব
যখন নিরবতা ওরা দুর্বলতা ভাবে রক্ত করে টগবগ
ওদের প্রতিটি হুমকি প্রতিটি আঘাত রুখতে আমরা শিখেছি
ওদের স্বাধীন বাংলা পতাকাতলে আশ্রয় করে দিয়েছি’

পারওয়ারদিগার
লিরিকঃ মাকসুদুল হক
অ্যালবামঃ প্রাপ্ত বয়স্কের নিষিদ্ধ

ধর্ম নিরপেক্ষতার সাংবিধানিক উল্লেখ থাকলেও আদতে কতটুকু নিরপেক্ষ তা প্রশ্নবিদ্ধ। এই ধর্মকেই রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের হাতিয়ার রূপে ব্যবহার করে ব্যবসাভিত্তিক ধর্মীয় সংগঠনগুলো আত্মপ্রকাশ করে। আর তারই পথ ধরে উন্মেষ ঘটে ‘মৌলবাদের’। মাকসুদুল হক কিন্তু ‘মৌলবাদী’দের বিরুদ্ধে নতুন প্রজন্মের অবস্থান তুলে ধরেছেন তার গানে।

‘কোন পথে আমরা চলবো হায় পারওয়ারদিগার
বাংলাদেশে সব ধর্মের আছে সব অধিকার
অনেক কাল তোমার কেটে গেছে মাবুদ মন্দিরে মসজিদে
এখন সময় হয়েছে মাবুদ তুমি ফিরে এসো অন্তরে’

পারওয়ারদিগার/অ্যালবামঃ নিষিদ্ধ

কোন যুক্তিতে আপনি তাকে ইসলামপন্থী বা জামাতপন্থী বলে দাবী করেন? আপনার বক্তব্য ব্যক্তিগত আক্রমণের মত ঠেকছে। কিছু না জেনে না বুঝে অন্যকে ছাগু বলে আখ্যায়িত করার পন্থা আপনাকে কে শেখালো? নাকি আপনিই ছাগু দলের অন্তর্ভুক্ত? আরেকটা কথা, মাকসুদুল হক সম্পর্কে আপনার জানাশোনা কুয়োর ব্যাঙের মতই ঠেকছে আমার কাছে। তার মিউজিক ও ব্লগকনটেন্টগুলো ভালো ভাবে না দেখেই একটা ‘উড়ো উপমা’ জুড়ে দিলেন। ব্যক্তিগত রাজনৈতিক আলোচনার কথা বললেন! কোন রাজনৈতিক দলের পক্ষে আপনি তার সাথে আলোচনায় মেতে ছিলেন সেটাতে আমার আগ্রহ নেই। কারণ, এরকমত ব্যক্তিগত মতামত যেকেউ জুড়ে দিতে পারে নিজেদের মুদ্রাদোষ জাহির করতে।

------------------------------
মোখলেছুর রহমান সজল

স্যাম এর ছবি

একবার মগবাজার চৌরাস্তার পাশের মসজিদের মুয়াজ্জিন ফজরের আজান দিচ্ছেন - কিন্তু আজান আর থামেনা - কয়েকবার করে আজান দিয়েই যাচ্ছেন - মুসল্লীরা ব্যাস্তসমস্ত হয়ে ছুটে এসে দেখেন - মুয়াজ্জিন এর দিকে পিস্তল ধরে আছেন মাকসুদ - কি ব্যাপার?! মুয়াজ্জিন এর আজানের সুর ঠিক হচ্ছিলনা - বেসুরো আজান এ ম্যাক এর ঘুম ভেঙ্গে যায় - মুয়াজ্জিন এর সুর ঠিক করতেই তার সেখানে যাওয়া---- দেঁতো হাসি

শোনা কথায় কান দিয়েন্না চোখ টিপি

মোখলেছুর রহমান সজল এর ছবি

আপনি সেই বাংলা সিনেমার পরিচালক ছিলেন। তাই না? খাইছে

শোনা কথায় কান দিয়েন্না

আবরার  এর ছবি

একজন গীতিকার যখন গান লেখেন তখন তিনি আশা করেন যে তার গানের কথা বিকৃত হবে না, উচ্চারণ বিকৃত হবে না। একইভাবে একজন সুরকার যখন সুর করেন, তখন তিনিও আশা করেন যে তার সৃষ্ট গানটার সুর, তাল লয়, স্কেল অর্থাৎ ব্যাকরণ এবং গায়কী একই রাখবে পরের প্রজন্ম। প্রতিটা গানই নির্দিষ্ট ব্যাকরণ মেনে চলে, আর রবীন্দ্রনাথ স্বয়ং তাঁর নিজের গানের ব্যাকরণ অক্ষুন্ন রাখার ব্যাপারে জোর দিয়ে গেছেন। কিন্তু তার মানে এই নয় যে রবীন্দ্রনাথ ইন্সট্রুমেন্টের ব্যাপারেও বিশুদ্ধতা অক্ষুন্ন রাখতে বলেছেন। উনি তবলা হারমোনিয়ামে করেছেন বলেই যে সবাইকে তবলা হারমোনিয়ামে করতে হবে এমন নয়। প্যাড ড্রামস এবং কিবোর্ডেও উনার গান গাওয়া যাবে, তবে ব্যাকরণ মেনে চলতেই হবে। পুরানো মাইক ঝেড়ে ফেলে ডিজিটাল সাউন্ড করার মানেকিন্তু এই না যে ব্যাকরণ বদলে ফেলতে হবে। গানের ব্যাকরণ বিজ্ঞানের সূত্রের মতন, অপরিবর্তনীয়। সেটা ঠিক রেখে যদি আধুনিক যন্ত্রের মাধ্যমে করা হয় তবে সমস্যা নেই।
এখন কেউ যদি হারমোনিয়াম ও তবলা ছেড়ে গিটার কিবোর্ডে রবীন্দ্রসঙ্গীত করার সময় গানের স্কেল, গায়কী, উচ্চারণ বদলে ফেলে তাহলে তো সেটা সমস্যা, তাই না ? আমি এখানে অরফিয়াসের সাথে একমত, সব এক্সপেরিমেন্ট ইতিবাচক ফল দেয় না, দেবে না। অতি সম্প্রতি লালনের "পাগল" গানটাতে র‍্যাপের সংযোজন তেমনই বমিউদ্রেককারী একটা উদাহরণ। লালনের গানের মূল স্পিরিট না বুঝে তাতে অন্ধের মত র‍্যাপ লাগালে লালনের কর্পোরেটকরনের ষোলকলা পূর্ণ হয়।

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

একইভাবে একজন সুরকার যখন সুর করেন, তখন তিনিও আশা করেন যে তার সৃষ্ট গানটার সুর, তাল লয়, স্কেল অর্থাৎ ব্যাকরণ এবং গায়কী একই রাখবে পরের প্রজন্ম।

আচ্ছা? তাহলে রবীন্দ্রনাথ যখন লালনের "কোথায় পাবো তারে" গানটির সুর-কথা বদলে "আমার সোনার বাংলা" করাটা কি ঠিক আছে আপনার মতে?

অতিথি লেখক এর ছবি

একটু ঠিক করি “কোথায় পাবো তারে” গানটি গগন হরকরা’র...

এটাকে “ট্রিবিউট” বলে তো আমরা জানি । পাশ্চাত্যে তো এর ব্যবহার অনেক । সেখানে কান্ট্রি মিউজিক পুরো দস্তুর ডেথ মেটালও বানিয়ে ফেলা হয় । আবার আমাদের রক গানের ইতিহাসে আশি বা নব্বই এর দশকের অনেক গানই কিন্তু পাশ্চাত্যের অনেক গান থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে করা । সুর টা ঠিক রেখে নিজেদের কথা বসিয়ে সেটা শ্রোতাদের জানিয়ে গান নতুন ভাবে করা । বা কথা মূল রেখে সুর টা নিয়ে খেলা । রবীন্দ্রনাথ এক্ষেত্রে সুর টা নিয়েছেন- অনুপ্রাণিত হয়ে আবার গগন হরকরা কে হারিয়ে যেতে দেন নি পুরো গানটায় নিজের কৃতিত্ব জাহির করে বা মৌন থেকে ।

কড়িকাঠুরে

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

রবীন্দ্রনাথ এক্ষেত্রে সুর টা নিয়েছেন- অনুপ্রাণিত হয়ে আবার গগন হরকরা কে হারিয়ে যেতে দেন নি পুরো গানটায় নিজের কৃতিত্ব জাহির করে বা মৌন থেকে

আমি এই কাজটা করি? একটা রবীন্দ্রসঙ্গীতের সুর নিয়ে গান বানাই? রবীন্দ্রনাথের নাম উল্লেখ করব। সেটা গ্রহণযোগ‌্য হবে?

আবরার  এর ছবি

রবীন্দ্রনাথ যদি অনুমতি নিয়ে করে থাকেন তাহলে ঠিক আছে, কিন্তু না নিয়ে করে থাকলে ঠিক কাজ করেননি। তবে রবীন্দ্রনাথ গগণের গান ভেঙ্গে চুরমার করেছে, তাই আমি রবীন্দ্রনাথের গানের স্কেল-তাল-সুর-উচ্চারণ বদলে ফেলবো, যুক্তিটা ধোপে টিকছে ?

যার ওই ভয়েস সিন্থেসাইজার দিয়ে গান বানাতে ইচ্ছা করবে সে সেইটা দিয়েই গান বানাক না, মানা করছে না তো কেউ। যারা "ও কাকা ল যাইগা" টাইপ গান পছন্দ করে তারা তেমন শ্রোতার জন্য তেমন লিরিক লিখে তেমন সুর বসাক, সেই স্বাধীনতা তার আছে। কেন খামোখা অন্যের গানে হাত দিতে হবে ? আর্টসেল যত ইচ্ছা প্রথমে মিউজিক বানিয়ে পরে সেইটার উপরে অভিধান শাফল করে লিরিক বসাক না, বাধা তো কেউ দিচ্ছে না। কেন খামোখা নজরুলের গানে বাম হাত ঢুকাতে হবে তাদের ? যদি গান গাওয়াটা শিখে পড়ে নিয়ে করতো তাহলেও না হয় কথা ছিলো

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

তবে রবীন্দ্রনাথ গগণের গান ভেঙ্গে চুরমার করেছে, তাই আমি রবীন্দ্রনাথের গানের স্কেল-তাল-সুর-উচ্চারণ বদলে ফেলবো, যুক্তিটা ধোপে টিকছে

এই যুক্তি আমি দেইনি। বরং যে মন্তব্যের উত্তর দিয়েছি তার কাছে প্রশ্ন ছিলো। আমার যুক্তি হচ্ছে ডিরেভেটিভ কাজের অধীকার শিল্পীর থাকা উচিৎ। ডিরেভেটিভ করা কাজটির সমালচোনা করতে পারেন কিন্তু ডিরেভেটিভ প্রসেসটাকে বন্ধ করে দিতে চাওয়াটা সঠিক নয়।

কেন খামোখা অন্যের গানে হাত দিতে হবে ? আর্টসেল যত ইচ্ছা প্রথমে মিউজিক বানিয়ে পরে সেইটার উপরে অভিধান শাফল করে লিরিক বসাক না, বাধা তো কেউ দিচ্ছে না। কেন খামোখা নজরুলের গানে বাম হাত ঢুকাতে হবে তাদের ?

খোদ শান্তি নিকেতন যেখানে পদক্ষেপ নেয়নি, সেখানে আপনি কে এটা বিচার করার? আপনার এই বক্তব্যই প্রমাণ করে কেনো আপনার অবস্থান মৌলবাদী।

মোখলেছুর রহমান সজল এর ছবি

চলুক

আবরার  এর ছবি

আপনার এই বক্তব্যই প্রমাণ করে কেনো আপনার অবস্থান মৌলবাদী।

আমি যেমন বিচার করিনি ফতোয়া দেইনি কে ফিউশন করবে সেটা নিয়ে, বরং প্রশ্ন রেখেছিলাম কেন ফিউশন করতেই হবে সে ব্যাপারে, এবং সেই প্রশ্ন রেখেছিলাম "কারার ওই লৌহকপাট" গানটাকে আর্টসেল বলাৎকার করার পরে, লালনের "পাগল" গানে লালন ব্যান্ডের র‍্যাপ মেশানো দেখে, কর্পোরেটদের "মোরা ঝঞ্ঝার মত উদ্দাম" গানের সুর খল নলচে বদলে ফেলা দেখে বমি ঠেকাতে ঠেকাতে। ব্যাক্তি আমি এই প্রশ্ন রাখার ফলে "মৌলবাদী" ট্যাগ দেয়ার আপনি কে ? আপনি যেমন একাধারে বলতে পারেন আমার রবীন্দ্রানুভূতি আহত হচ্ছে, আমিও বলতে পারি আপনার ফিউশানুভূতি আহত হচ্ছে, তাই না ? কিন্তু এভাবে ব্যাক্তিপর্যায় টেনে এনে ব্লেম গেম কতটা সুস্থ্য আলোচনার পরিবেশ রাখবে আমি সেটা নিয়ে সন্দীহান।

ডেরিভেটিভ কাজ করুক মানুষজন, স্বাধীনতা আছে তাই সেটা তারা করতেই পারে। যেমন আমি এন্ডি ওরহোলের স্যুপের ক্যানের ছবি নিজের মতন করে ফটোশপ দ্বারা এডিট করে পয়সা খরচ করে দৃকে প্রদর্শনের ব্যাবস্থা করতে পারি, সেই স্বাধীনতা যেমন আমার আছে, তেমনি আমি সেরকম কিছু করলে আমাকে কেন করছি সেই প্রশ্ন করার কিংবা ধুমসে গালি দেয়ার স্বাধীনতাও আপনার থাকবে।

ভাল থাকবেন হাসি

guest_writer এর ছবি

নচিকেতা এবং শ্রেয়া ঘোষালের "গলা হাওয়ার বাদল দিনে" আধুনিক যন্ত্রানুষঙ্গে করা এবং বেশ ধুমধাড়াক্কা টাইপের হয়েছে। এবং সেটি তুমুল জনপ্রিয় হয়েছে বলেই মনে হয়। তবে মূল সুরের খুব বেশি রদবদল হয় নি।তরুণ প্রজন্ম এটিকে বেশ ভালভাবে গ্রহন করেছে বলেই বোধ করি।

মূল সুর রেখে আধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে গাইতেই হবে। এটা সময়ের দাবী।

শ্রী বেকুবেশ্বর

মোখলেছুর রহমান সজল এর ছবি

মূল সুর রেখে আধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে গাইতেই হবে। এটা সময়ের দাবী।

সহমত।

ব্যাঙের ছাতা এর ছবি

নীড় সন্ধানীর সাথে সহমত।

রবীঠাকুরের গান যার ভালো লাগবে সে শুনবে, যার ভালো লাগবে না, সে শুনবেনা। তাঁর গানকে জোর জবরদস্তি করে তরুন প্রজন্মকে (তাদের পছন্দমত করে) শোনানোর কোনো প্রয়োজন আছে বলে আমার মনে হয়না। যারা এই য়ুক্তি দিচ্ছেন তারা আসলেই নিজেদের চোখেই ঠুলি পরে আছেন। আর তরুন প্রজন্মের যারা আছেন তারা অনেক সচেতন, নিজেরাই বেছে নিতে পারবেন কি শুনবেন আর না শুনবেন। রবীঠাকুরকে তথাকথিত তরুন প্রজন্মের মনের মত হতে কি এখন রক এন্ড রোল টাইপের গান লিখতে হবে? নাকি গীতবিতানকে পুনঃলিখন করতে হবে? আর এই দায়িত্ব নিজের হাতে তুলে নেবার তারা কে? পারলে একটা গান লিখে দেখাক না, গীতবিতান নিয়ে টানাটানি করে কেন? নিজেরাই লিখুক তাদের আধুনিক গান, যাদের কাছে রবীঠাকুরের গান পুরানো মনে হয়।

'ফিউশন' এর নাম নিয়ে ইচ্ছেমতন কিছু করার অধিকার কারোরই নাই।

মোখলেছুর রহমান সজল এর ছবি

ফিউশন করার আগে কার সাথে যোগাযোগ রেখে ফিউশন করবে জানাবেন কি? এমন কোন বোর্ড আছে নাকি? যদি থেকেই থাকে তাহলে শিল্পীসত্তা কতটুকু টিকবে তা প্রশ্নবিদ্ধ নয় কি? সবক্ষেত্রেই

দেখি পুরোনো বোতলে ঢালা নতুন সুধা

ব্যাঙের ছাতা এর ছবি

শেক্সপিয়র এর টেম্পেস্ট কে ঢাকা থিয়েটার মঞ্চস্থ করেছে "স্বপ্ন নদীর নাইয়া" শিরোনামে, দেখার আমন্ত্রণ রইলো। হাসি
ব্যক্তিগত আক্রমণ ভালো লাগেনি। মন খারাপ

ধ্রুব বর্ণন এর ছবি

কণিকা শুনে ঠাণ্ডা হোন -

মোখলেছুর রহমান সজল এর ছবি

ধন্যবাদ।

ব্রুনো এর ছবি

এইসব ফাজলেমি ফিউশনবাজদের কানে ধরে চটকানা দিতে চাইলে রবীন্দ্রমৌলবাদী হতে হবে কেন?

যিনি শ্রুতিকটু গানের জন্য ফিউশনবাজদের কান ধরে চটকানা দিতে চা্ন তিনি যে মৌলবাদী তাতে সন্দেহ আছে নাকি?

মোখলেছুর রহমান সজল এর ছবি

আরে ভাই, কন কি? উনি মৌলবাদী হতে যাবেন কোন দুঃখে। চোখ টিপি

মোখলেছুর রহমান সজল এর ছবি

শিরোনামের 'রবীন্দ্র-মৌলবাদ' কীওয়ার্ডটাতেই অনেকের আপত্তি।

১৯৯৯-এ মাকসুদুল হকের ওগো ভালবাসা অ্যালবাম প্রকাশের পর সেই অ্যালবামের 'রবীন্দ্রনাথ ২০১০ ইং' শিরোনামের গানটি বিটিভি-তে প্রচার পায়। তখন, ওয়াহিদুল হক সাবেব সহ ও অনেক শিল্পীই বিটিভি-কে চাপ দেয় মাকসুদুল হককে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানোর জন্য। বিটিভি কিন্তু ঠিকই মাকসুদুল হককে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠিয়েছিল।

কথা হল, মাকসুদুল হক কি স্বেচ্ছায় বিটিভিতে গিয়ে 'রবীন্দ্রনাথ ২০১০ ইং' গেয়ে এসেছিল স-দলবলে? তবে কেন বিটিভিতে প্রচার পাবার পরে টিভি কর্তৃপক্ষ তাকে কারণ দশার্নোর নোটিশ পাঠালো? (উপরের ঠেলা খেয়ে নিশ্চয়!)

শুধু তাই নয়, ওয়াহিদুল সাহেবের গ্যাং-রা তখন মাকসুদুল হককে মিডিয়াতে নিষিদ্ধ করার জোর দাবী তুলেছিল। মাকসুদুল হককে মিডিয়া থেকে নিষিদ্ধ করা হলো, মিথ্যে অস্ত্রমামলায় তাকে গ্রেপতার করানো হলো। মাকসুদুল হককে জেলের ভাত খাওয়ালো। আর মৃদু হাসলো!

এই এক 'রবীন্দ্রনাথ ২০১০ ইং' এর কারণে যদি রবীন্দ্রভক্তরা একজন শিল্পীর জন্য এত কিছু করতে পারে, তখন ধর্মান্ধ মৌলবাদীদের মত এদেরকেও কোন যুক্তিতে রবীন্দ্র-মৌলবাদী বলা যাবে না, সেটা ব্যাখ্যার দাবিদার।

(১৮ নং কমেন্টে ফাহিম হাসান একটি ইউটিউব লিঙ্ক শেয়ার করেছেন। লিঙ্কটি আমিই শেয়ার করে দিতে চেয়েছিলাম পোষ্টের শেষে। আমার পিসিতে ইউটিউবের রেসপন্স না থাকায় লিঙ্কটি শেয়ার করা গেলো না। ধন্যবাদ ফাহিম হাসানকে।)

ইউটিউবের ভিডিওটিতে মিতা হকের মুখের ভাষ্য যারপনায় উস্কানিমূলক ও অমার্জিত বলেই আমি মনে করি।

শিল্পী মাকসুদুল হক, কখনোই দাবী করেন না তিনি অসম্ভব চমৎকার সৃষ্টি করেছেন। 'রবীন্দ্রনাথ ২০১০ ইং' শিরোনামটি মূলত এই কারণেই। এই গানটা মূলত একটা রবীন্দ্রনাথের গানকে নতুন ভাবে উপস্থাপনের একটা প্রস্তাব ছিল মাত্র। এটা রবীন্দ্রসঙ্গীত হিসেবে প্রচার করেন নি তিনি। প্রচার করেছেন 'রবীন্দ্রনাথ ২০১০ ইং' নামেই।

রবীন্দ্রনাথ ২০১০ ইং- এই গানটিকে রবীন্দ্রসঙ্গীত হিসেবে প্রচার করার কোন উদ্দেশ্য আমারও নেই। তবে, এই গানের কারণে মাকসুদুল হক ব্যক্তিগত ভাবে যেসব বিভীষিকার সম্মুখীন হয়েছেন এবং যাদের কুৎসিত আচরণের শিকার হয়েছেন তাদেরকে রবীন্দ্র-মৌলবাদী হিসেবে আখ্যায়িত করার জন্যও এই পোষ্ট নয়।

এই পোষ্টটি সেই-সব শ্রোতাদের কথা ভেবে লেখা, যারা আধুনিক সঙ্গীতায়োজনে গান শুনে অভ্যস্ত হয়ে পড়ছে। আলোচনার খাতিরে বলা যায়, আমি যেই নতুন প্রজন্মের কথা বলছি, তারা কতিপয় আন্ডারগ্রাউন্ড ব্যান্ডের গানছাড়া মূলধারার শিল্পীদের তেমন ভাবে চেনে না। এদের অনেকেই শুনে দেখেনি আজম খান, সোলস্, এল আর বি, ফিলিংস, ফিডব্যাক, রেনেসাঁ, প্রমিথিউস, নোভা, অবস্কিউর, লিজেন্ড, ট্রিলজি, হ্যাপী টাচ্, চাইম, আর্ক, সিম্পনি, ডিফরেন্ট টাচ্ সহ আরও অনেক ব্যান্ডের প্রথম দিকের ম্যাক্সিমাম ভালো গান। এবং তাদের সংখ্যা ক্রমশবর্ধমান। এবং তারাই আগামী দিনের সবচেয়ে বৃহৎ শ্রোতামহল হিসেবে মূল্যায়িত হবে।

যেখানে বাংলাদেশের সঙ্গীতাঙ্গনের একটা বড় অংশ তারা দখল করে আছে, কিংবা অচিরেই দখল হয়ে যাবে, তাদের কাছে রবীন্দ্রনাথকে উপস্থাপন করা জরুরী মনে না করাটা হুমকিস্বরুপ। আর তাই এই উঠিতি শ্রোতাদের ভালোলাগাকে প্রাধান্য দিয়েই সৃজনশীল প্রয়াসেই পৌছে দিতে হবে রবীন্দ্রনাথকে।

শিরোনামহীন রবীন্দ্রনাথ যেমন অনেকের কাছেই ভালো লাগেনি, তেমনি আমার কাছেও নয়। তবে, আমি তাদেরকে হতাশ করতে রাজি নয়। তারা ভালো কিছু করার উপলব্ধি থেকেই শিরোনামহীন রবীন্দ্রনাথের প্রয়াস চালিয়েছে। এর উদ্দেশ্য কিন্তু যারা প্রথাগত রবীন্দ্রসঙ্গীত শুনে অভ্যস্থ তাদের জন্য নয়। রবীন্দ্রভক্তরা এই গান শুনে বাহ্‌বা দিবে এটা মনে করার কোন কারণ নেই। বরং উঠতি শ্রোতাদের যে অংশটি রবীন্দ্রনাথের গানের সাথে পরিচিত নয়, কিংবা রবীন্দ্রসঙ্গীত শোনার সেই অভ্যেসটা এখনও গড়ে উঠেনি তাদের কাছে এই অ্যালবামটির মাধ্যমে রবীন্দ্রনাথকে পরিচিত করে তোলা। আর এটা অবশ্যই রবীন্দ্রনাথের গানের প্রচার ও প্রসারের অনুপ্রয়াস। রবীন্দ্রসঙ্গীতকে অবমূল্যায়ন করার কোন উদ্দেশ্যে নয়।

মোট কথা, যারা প্রচলিত ধারায় রবীন্দ্রসঙ্গীত শুনে অভ্যস্থ তারা সেভাবেই শুনতে থাকুন। আমি বলতে চাইনি, তাদেরকেও এই নব্যধারার রবীন্দ্রসঙ্গীত শুনতে হবে। তবে, যারা প্রচলিত রবীন্দ্রসঙ্গীতকে গ্রহণ না করলেও নিরীক্ষামূলক কাজের মাধ্যমে সৃজনশীল প্রয়াসে যে রবীন্দ্রসঙ্গীত শ্রোতাদের কাছে পৌছে যাচ্ছে আধুনিক যন্ত্রসঙ্গীত ও উপস্থাপনের মাধ্যমে আমি অবশ্যই একে সাধুবাদ জানাই। এবং এটা রবীন্দ্রসঙ্গীতের অস্তিত্বকে হুমকির মুখে ফেলে দেবে বলেও আমি মনে করিনা। বরং এর উলটোটা ছাড়া।

-----------------------------
মোখলেছুর রহমান সজল

কল্যাণ এর ছবি

অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার ক্ষেত্রে ফিউশনের মাধ্যমে মিউটেশন করে টিকিয়ে রাখাকে রবীন্দ্রসঙ্গীত টিকিয়ে রাখা বলাটা কতদূর যৌক্তিক হল বুঝতে পারলাম না। যদি টিকিয়ে রাখাটা উদ্দেশ্য হয়, তাহলে সঠিক ও মূল ফর্মেইতো রাখা উচিত। আর যদি শ্রোতার সংখ্যা বিবেচনা করে অ্যালব্যাম বিক্রি বা ফিউশন করলে শুনতে ভালো লাগবে বা কপিরাইট চলে গেছে ফিউশন আমার স্বাধীনতা উদ্দেশ্য হয়, তাহলে এটাকে জাস্টিফাই করার দরকারটাই বা কি?

না চাহিলে যারে পাওয়া যায় ডেভ মাস্টিনের ভোকালে অলমোস্ট অনেস্ট বা হোলি ওয়ার এর যন্ত্রপাতি দিয়ে গাইলে ভালো লাগবে নতুন প্রজন্মের? অথবা লিংকনের অনিকেত প্রান্তরের মত করে? মানে ফিউশন হইল আরকি। আবার আপেল মাহমুদের তীর হারা এই ঢেউ এর সাগর গেয়েছে বাপ্পা মজুমদার আধুনিক যন্ত্রপাতি সহযোগে। সেইটাও ফিউশন। কৈ যাই ইয়ে, মানে...

_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩

মোখলেছুর রহমান সজল এর ছবি

ব্যান্ড সঙ্গীতের সেই শুরুর সময়ে অনেক শিল্পী ও শ্রোতাগোষ্ঠী ব্যান্ড সঙ্গীতকে অপসংস্কৃতি বলেই জোর প্রচার করেছিল। সেই শিল্পীগোষ্ঠীর অনেকেই উপর মহলের সাধুবাদে ব্যান্ড সঙ্গীত শিল্পীদেরকে রাজনৈতিক চাপে রাখার পক্ষপাতী ছিলেন এবং করতেনও বটে।

১৯৯০ সালের মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বামবা (বাংলাদেশ মিউজিক্যাল ব্যান্ড অ্যাসোসিয়েশন) বাংলাদেশের সর্বপ্রথম (আমি তা-ই জানি) ওপেন এয়ার কনসার্ট করেছিল। সেই কনসার্টের মঞ্চের ব্যাকগ্রাউন্ডে কালো কালিতে বড় বড় করে লেখা ছিলঃ

ব্যান্ড সঙ্গীত বাংলা সঙ্গীতের ধারা
এটা অপসংস্কৃতি নয়

তখন যেমন একদল ছিল, যারা ব্যান্ড সঙ্গীতকে পাগল, ছাগলের গান আর অপসংস্কৃতি বলে অবমূল্যায়ন করেছিল। এখনও তাদেরই উত্তরসূরী রয়ে গেছে বলেই ধারণা।

এখন প্রশ্ন হলঃ বাংলা ব্যান্ড সঙ্গীত কি আসলেই অপসংস্কৃতি ছিল? যা তীব্র প্রচার ও প্রসার হয়েছিল সেই সময়ে।

বাংলা ব্যান্ড মিউজিকের কালজয়ী সৃষ্টিগুলোর দিকে তাকিয়ে কেউ কি বলতে পারেন এখন 'বাংলা ব্যান্ড সঙ্গীত' আসলেই অপসংস্কৃতি। সেই সময়ে যেমন তরুণদের সৃজনশীলতায় অনেকেই আস্থা রাখেনি এখনও তেমনি তরুণ শিল্পীদের প্রয়াসের অনেকেই আস্থা রাখছেন না। ফিউশন-মিউটেশন বলে চিৎকার চেঁচামেচি করছেন। আগেও ছিল, এখনও তেমনই রয়ে গেছে।

হ্যাপী আখন্দের 'কে বাঁশী বাজায়রে' গানটা অনেকেই শুনে থাকবেন। আমি একটা অনুরোধ করবো,

আপনাদের আশেপাশের পরিচিত নতুন কিংবা একটু পুরোনো নতুন শ্রোতাদের জিজ্ঞেস করে দেখবেন 'কে বাঁশী বাজায়রে' গানটা শুনে দেখেছে কিনা? যদি শুনে থাকে এও জিজ্ঞেস করবেন 'দয়াকরে বলবেন কি এটা কার গান?'

আমি জানিনা, আমার ধারণা ঠিক কিনা। অধিকাংশ নতুন শ্রোতাই জানে এটা আনিলার গান (অন্তত আমার চারপাশে যেইসব নতুন শ্রোতাদের আমি চিনি)। যারা হ্যাপী আখন্দের অরিজিনাল গানটা শুনেছেন, তারা নির্ধিদায় মেনে নেবে 'হ্যাপী আখন্দ'-ই সেরা এবং সেটাই স্বাভাবিক। হ্যাপী আখন্দ মারা গেছেন সেই ১৯৮৭-এ। এরপর লাকি আখন্দও মিউজিক থেকে অনেকটাই নীরবে থেকেছেন।

তাহলে 'আবার এলো যে সন্ধ্যা', 'কে বাঁশী বাজায়রে' গানগুলো কে শোনাবে নতুন শ্রোতাদের। আমি যতটুকু জানি, চুমকি নামের একটি রিমিক্স অ্যালবামের সানবীমের কণ্ঠে গাওয়া 'আবার এলো যে সন্ধ্যা' গানটি নতুন শ্রোতামহলে বেশ জনপ্রিয়তা কুড়িয়েছিল। তেমনি, আনিলার কণ্ঠে গাওয়া 'কে বাঁশী বাজায়রে' গানটি কিন্তু নতুন প্রজন্ম বেশ ভালো ভাবেই গ্রহণ করেছে। আনিলা কিন্তু হ্যাপী আখন্দের অরিজিনাল সুরে গায়নি। আমার ব্যক্তিগতভাবে আনিলার গানটা ভালোও লাগেনা। আমি শুনি হ্যাপীর কণ্ঠে। তবুও আমি আনিলাকে সাধুবাদ জানাই। কারণ তিনি এই গানটি নতুন শ্রোতাদের হাতে পৌছে দিয়েছেন নবরূপে, যাদের অনেকেই জানে না আদতে গানটি কার!

আর তাই শিল্পীদের প্রতি আস্থা রাখলে অবশ্যই সৃজনশীলতা তৈরী হবে। শ্রোতারাও এত বেকুব না। একজন শিল্পী যা দিল তাই গ্রহণ করবে। তাদেরও জাজমেন্ট করার তীক্ষ্ণ ক্ষমতা আছে।

এমন অনেক রবীন্দ্রভক্তও আমি দেখেছি, যারা নতুনভাবে করা কিছু গান আগে শুনেন নি কখনোই। নতুনভাবে শুনতে পেয়ে দারুণ সুখি। এবং বেশ ভালো ভাবেই গ্রহণ করেছেন।

----------------------------
মোখলেছুর রহমান সজল

কালো কাক এর ছবি

"কারণ তিনি এই গানটি নতুন শ্রোতাদের হাতে পৌছে দিয়েছেন নবরূপে, যাদের অনেকেই জানে না আদতে গানটি কার"
এটা কি আপনি প্রশংসার কাজ মনে করছেন ?

মোখলেছুর রহমান সজল এর ছবি

গানটি পৌছে দেয়া অবশ্যই প্রশংসনীয় বলেই আমি মনে করি।
গানটি কার সেটা না জানার কারণ অ্যালবাম না কিনে নেট থেকে ডাউনলোড করে গান শোনা।
অ্যালবামে উল্লেখ থাকে প্রকৃত গানটি মূলত কার ছিল।

তানিম এহসান এর ছবি

গানটি পৌছে দেয়া অবশ্যই প্রশংসনীয় বলেই আমি মনে করি।

গানটি পৌঁছে দেয়া নিয়ে কিন্তু কথা হচ্ছেনা, কথা হচ্ছে কিভাবে সেটা পৌঁছে দেয়া হচ্ছে তাই নিয়ে। জোর করে পৌঁছে দেবার দরকার কি? ফুয়াদ আল মুক্তাদির কে কি কেউ হাত-পায়ে ধরে বলেছিলো হ্যাপী’র ‘কে বাঁশী বাজায়রে’ কিংবা নিলয়দা’র ‘যখনিই নিবিড় করে’ -- এইরকম দুইটা গানকে নিয়ে ছেলেখেলা করার জন্য? ফিউশন এর নামে আমাদের প্রচুর গানকে রীতিমত ধর্ষন করা হয়েছে।

ফিউশন এর সিনোনিমস এর মধ্যে একটা হচ্ছে ইউনিফিকেশন আর এন্টোনিম হচ্ছে ডিসকানেকশন। বাংলাদেশে ফিউশন এর নামে যা হচ্ছে তার প্রায় বেশিরভাগ কাজেই আমি ইউনিফিকেশন পাইনা। কম্পিউটারে সফটওয়্যার দিয়ে দারুণ গলা বানিয়ে ফেলা এই কলিযুগে ফিউশন খুব সহজ। সব খিচুড়িই কমবেশি মজা, বাজারে আবার নানান কোম্পানীর রেডিমিক্সও পাওয়া যায়!

সচলে ব্যান্ডসংগীত নিয়ে আপনার লেখা আগেও পড়েছি, ভালো লেগেছে। এই লেখাটাতে নতুন প্রজন্মের কথা বলে আপনি যে উপযোগিতার কথা বলছেন তা যদি সফল হয়েই যায় তাহলে সেইদিন বেশি দূরে নয় যেদিন মানুষ গান শুনবে না, গান চিবিয়ে খাবে!

মোখলেছুর রহমান সজল এর ছবি

বস তাইলে দুঃখের কথাটা আপনাকে বলি। খুব ছোটবেলায় যখন ব্যান্ডের গান শুনতাম মুরব্বিরা কইতো 'এই সব ছাগলের গান শুনে নাকি কেউ। টিভি ম্যাগাজিনে ব্যান্ডের গান এলেই টিভি অফ। অফতো অফ। আর বলতো, কিভাবে ছাগলের মত মাথা ঝাকায়। মাইয়া মাইনষের মত লম্বা লম্বা চুল। কি কয় কিছুই বুঝিনা। অথচ আমার নিজের ভেতরটা ছটফট করতো গান শোনার জন্য। এই ব্যান্ডের গানের জন্যই খেতাব পেয়েছিলাম 'নষ্ট হয়ে গেছে'। সেই মুরব্বিরা আজ নেই। আজ ব্যান্ড সঙ্গীত বাংলা সঙ্গীতের অতি উচ্চ আসনে আছে। টিভি খুললে প্রতিদিনই কোন না কোন পুরোনো জনপ্রিয় ব্যান্ডের দীর্ঘ লাইভ প্রোগ্রাম চোখে পড়ে। কই সেই দিনের মুরব্বি। কই তাদের নানা রকম কুটুক্তি। এটাই সময়ের দাবী।

আরেকটা কথা বলি,

ফিউশন এর নামে আমাদের প্রচুর গানকে রীতিমত ধর্ষন করা হয়েছে।

এর সূত্র ধরেই বলিঃ ২০০১-০২ এর দিকে খুব সম্ভবত সোলসের রিমেক অ্যালবাম মুখরিত জীবন বাজারে আসে। কয়েকটা গান অবশ্য নতুন ছিল। সেখানে, প্রতুল দা'র 'ছোকরা চাঁদ, জোয়ান চাঁদ' গানটি ফিউশন করে সোলস্‌। কণ্ঠে দেন পার্থ দা। প্রতুদ দা'র অরিজিনাল গানের শুরুতে যে 'বিশেষায়িত আবৃতির অংশ ছিল' সেটা সোলসের গানে পাওয়া যায়নি। ঠিক যেমনটি পাওয়া যায়নি সুরের আবেদন ও কণ্ঠের উপস্থাপনাও। সোলসের সেই গানটি কখনোই প্রতুল দা'র গানকে ছাড়িয়ে যেতে পারবে না। এটা সম্ভব নয়।

আপনার উক্তিটি এক্ষেত্রে সঠিক হয়ে গেল। ফিউশন নামক গানকে ধর্ষণের অভিযোগ সোলসের কাধেও পড়ে গেল। তবে আমি সেটা মানি না।

আমি প্রতুল দা'র গানের সাথে সোলসের গানটিও শুনি। শুনি সোলসের প্রতি সন্মান প্রদর্শন করতে। আরেকটা কথা না বললেই নয়, প্রতুল দা'র 'ছোকরা চাঁদ' গানের সন্ধান কিন্তু সোলসের মাধ্যমেই পাই। যেমনটি নতুন প্রজন্ম পাচ্ছে। সমস্যা হলো তারা অ্যালবাম না কিনে ডাউনলোড করে শুনছে। তাই তারা জানতেও পারছেনা এর অরিজিন কি? তবুও তারা যে শুনতে পাচ্ছে এতে আমি খুশি। এবং আশাবাদীও বটে, যদি এরই সূত্র ধরে হ্যাপী আখন্দের দেখা পায় কেউ কেউ, সেখানেই স্বার্থকতা।

নিলয় দা'র যখনই নিবিড় করে গানতা অসম্ভব প্রিয় একটি গান। কত যে খুঁজেছি তোমায় শীর্ষক অ্যালবামের গান। খুব সম্ভবত কাওসার আহমেদ চৌধুরী কিংবা নিলয় দার লেখা। যাই হোক, এলিটা কিন্তু এতটা খারাপ গায়নি। এটা অবশ্যই অবশ্যই সত্যি যে, নিলয় দা'কে স্পর্শ করা যাবে না। কিন্তু নতুনদের জন্য সেটাই বা মন্দ কি?

তানিম এহসান এর ছবি

আপনি নতুন বলতে কাদের বোঝাচ্ছেন? কাদের প্রতিনিধিত্ব করছেন?

আমি প্রচুর নতুনকে চিনি এবং জানি যারা আপনার এই বক্তব্যের বিরোধীতা খুব শক্তভাবে করবে। এখানেও কেউ কেউ করেছে বৈকি। বিষয়টা এত সরল নয় যে আপনি একা চাইলেই সেটা হয়ে যাবে, এইধরনের বিষয়বস্তুতে সামগ্রিকতার যে জায়গাটা আছে তাতে একজন মাকসুদ কোন ফ্যাক্টরই না, কোনদিন ছিলোনা। আপনি বামবার উদাহরন দিচ্ছেন, সেই কনসার্টসহ বামবার প্রথমদিকের প্রতিটি কনসার্টের দর্শক আমি, মাকসুদ ভাই তখন বামবার সভাপতি। এরশাদ বিরোধী আন্দোলনেও বামবা এবং তার ভূমিকা আমি স্বীকার করি। কিন্তু একজন মাকসুদ কোন প্রতিষ্ঠানে পরিণত হতে পারেননি যাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে একটা জোয়ার বয়ে গিয়েছে। মাকসুদ ভাই এর যেসব গান সবচাইতে বেশি হিট সেগুলোর প্রায় বেশিরভাগই বিদেশী গান থেকে সরাসরি মেরে দেয়া কিন্তু কোথাও সেই কথাটি কিন্তু লেখাও থাকেনি।

হ্যাপী আখন্দ, নিলয় দাস কিংবা একজন লাকি আখন্দ এর দেখা পেতে হলে নতুন প্রজন্মকে দুইবার জন্ম নিতে হবে। তারা বিখ্যাত হওয়ার জন্য গান করেননি, গান নিয়ে ব্যবসা করেননি, গান তাদের আত্মজ।

বাংলাদেশতো ভাই, যার যা ইচ্ছা করে তাই করে পার পেয়ে যেতে পারে। মানুষ কোন কোন সময় আসে যখন ঘাস খায় না ভাত খায় বুঝতে পারেনা, একটা সময় যখন বুঝতে পারে তখন ঘাসের জোগানদাতাদের কিন্তু ঠিক সেইভাবেই সবকিছু ফিরিয়ে দেয়। ইতিহাসের আস্তাকুঁড় বলেও একটা কথা আছে।

মোখলেছুর রহমান সজল এর ছবি

মাকসুদ ভাই এর যেসব গান সবচাইতে বেশি হিট সেগুলোর প্রায় বেশিরভাগই বিদেশী গান থেকে সরাসরি মেরে দেয়া কিন্তু কোথাও সেই কথাটি কিন্তু লেখাও থাকেনি।

কোন কোন গানগুলো ঋণস্বীকার না করে সরাসরি মেরে দেয়া?
আমি আপনাকে চ্যালেঞ্জ করতে পারি, আপনি ভুল প্রমাণিত হবেন। উল্লেখ করবেন কি গানগুলো?

তানিম এহসান এর ছবি

আচ্ছা, ভুল প্রমাণিত হয়েই গেলাম চোখ টিপি

সজল ভাই, এইভাবে চ্যালেঞ্জ করছেন!!! খুবই অবাক হলাম। আরে ভাই, মিউজিক সহ হুবহু নিয়ে নেয়া। তিনটা গান বলি আপাতত:

১) প্রেম শুধু একা থাকা (গোধূলি).... ‘কাসাব্ল্যাংকা- Paul Anka

২) সেই প্রেম (চোখ).... গানের নাম ‘টাইম’, ব্যান্ডের নাম Culture Club

৩) ভীরু মন... ‘তোমারি, এত সুখের ছড়াছড়ি, আমি দেখেছি নীরব আড়ালে থেকে... গানের নাম ‘অনেস্টি’, গায়কের নাম Billy Joel

তথ্যটা ফিডব্যাক থেকেই নিলাম। এই ক্রেডিট কি কোথাও দেয়া আছে? মনেই তো পড়ছে না। আপনি বরং মাকসুদ ভাইয়ের কাছে জানতে চান কোন কোন গানগুলোকে তিনি বাংলায় আত্তীকরণ করেছিলেন। ভাই, এই আত্তীকরণে কোন সমস্যা ছিলোনা, আপনি এমনভাবে বিষয়গুলো নিয়ে আসছেন যে এখন এভাবে দেখতে বাধ্য হলাম।

সাফি এর ছবি

চলুক

অরফিয়াস এর ছবি

চলুক

পোস্টদাতা তো চ্যালেঞ্জ জানাইয়া উধাও !!

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

কড়িকাঠুরে এর ছবি

চলুক

স্যাম এর ছবি

চলুক চলুক

সুমন চৌধুরী এর ছবি

জন্মেছি এই যুগে : jailhouse rock - elvis

মোখলেছুর রহমান সজল এর ছবি

উধাও হয়ে যাইনি। খুব ব্যস্ত থাকায় নেটে বসার সুযোগটাই পাইনি।

যাইহোক, সত্য মেনে নিতে আমি কখনোই ভয় পাইনা। আর এই সত্য মেনে নিলে ইজ্জত থাকেনা মতবাদে আমার আস্থা নেই। সত্য সত্যই পক্ষে বা বিপক্ষে।

প্রথম দিকে অ্যালবামের প্রচ্ছদের উপর ব্যান্ড কিংবা শিল্পীর কোন হস্তক্ষেপ ছিল না। প্রযোজনা কোম্পানী অ্যালবামের ডিজাইন থেকে শুরু করে সব কিছুই করতো। আর তাই, শুরুর দিকের ম্যাক্সিমাম অ্যালবামের কাভার খুব সাদামাটা। অনেক অ্যালবামে গীতিকার কিংবা সুরকারের নাম পর্যন্ত উল্লেখ নেই। কৃতজ্ঞতা কিংবা ঋণ স্বীকার তো অনেক পরের ব্যপার।

১৯৮৫-তে প্রকাশিত ফিডব্যাক ভলিয়ম -১ এ গীতিকারদের নাম উল্লেখ নেই। ফিডব্যাকের সেই প্রথম অ্যালবামে ব্যান্ড লাইন-আপটা পর্যন্ত উল্লেখ করা হয়নি।

১৯৮৭-তে প্রকাশিত উল্লাস অ্যালবামে গীতিকারদের নাম উল্লেখ করা হয়। এবং সেই সাথে প্রথমবারের মত ফিডব্যাকের লাইল-আপ দেয়া হয়। এবং মৌসুমী-১ গানের গীতিকার হিসেবে মাকসুদুল হকের নাম সংযোজিত হয়। আসলে গানটির গীতিকার মূলত কাওসার আহমেদ চৌধুরী। কলকাতার এইচএমভি থেকে ১৯৯১-৯২ তে প্রকাশিত জোয়ার অ্যালবামে তা সংশোধিত হয়।

১৯৯০-এ প্রকাশিত মেলা অ্যালবামের কাভারও একই রকম। শুধু মূল প্রচ্ছদ, সাথে সং লিস্টে গীতিকারদের নাম উল্লেখসহ সং লিস্টের এক কোণায় ব্যান্ড লাইন আপ।

১৯৯৩-৯৪ এ প্রকাশিত বঙ্গাব্দ ১৪০০ অ্যালবামের প্রচ্ছদ পরিকল্পনায় স্বাধীনতা আসে। তারই ফলস্বরুপ এত বিশাল বড় অ্যালবাম কাভার পাওয়া যায় উইথ লিরিক। ভীরু মন গানটিতে স্পেসিফিক্যালি কোন গানটির সুর নেয়া হয়েছে তার উল্লেখ নেই। তবে 'মূল সুরঃ বিদেশী গান' উল্লেখ আছে।

বৈশাখী ঝড়ের রাত্রিতে, ওগো ভালবাসা, নিষিদ্ধ অ্যালবামগুলোতেও কিন্তু একই রকম উল্লেখ আছে।

তাছাড়া, আমি বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠানে 'চোখ', 'গৌধুলী' গানগুলো যে গানগুলোর ছায়া অবলম্বনে করা হয়েছে তার উল্লেখ করে অরিজিনাল গান গুলো গাইতে দেখেছি মাকসুদুল হককে।

ঋণতো তিনি ঠিকই স্বীকার করেন। চুপ করে মেরে দেয়াতো আমি দিখিনি।

নোভার 'রাজাকারের তালিকা চাই' অ্যালবামে 'রাজাকারের তালিকা চাই' গানটির সুরারোপ ও সঙ্গীতায়োজন পিংক ফ্লয়ডের 'অ্যানাদার ব্রিক ইন দ্যা ওয়াল' এর হুবহু। যেহেতু অ্যালবামের কাভারের উপর শিল্পীর কোন কর্তৃত্ব ছিলনা তাই নোভা কিংবা আহমেদ ফজলের জোর ইচ্ছা থাকা স্বত্বেও হয়ত আপনার কথা মত 'ঋণস্বীকার' করা হয়নি।

এরকম অ্যালবামের সংখ্যা আরও আছে। আশিকুজ্জামান টুলুর পরিকল্পনা ও সঙ্গীতায়োজনে কপিয়ার-১, কপিয়ার -২ শিরোনামটে দুটি পুর্ণাঙ্গ অ্যালবাম হয়েছে। গীতিকার হিসেবে বাংলাদেশের বিখ্যাত গীতিকারদের নাম উল্লেখ আছে। অথচ, ঐ অ্যালবামদুটির প্রতিটি গান জনপ্রিয় বিদেশী গান থেকে নেয়া। কাভারের উপর কর্তৃত্ব না থাকায় উল্লেখ করা সম্ভব হয় নি কোন কোন গানগুলোর সুর ও সঙ্গীতায়োজন এই অ্যালবামে সংকলিত হয়েছে।

এছাড়া আরও অ্যালবাম আছে, যেই অ্যালবামগুলোতে স্বীমাবব্ধতার দরুণ কিছু উল্লেখ না থাকায় এখন আঙুল তুলে বলে দেয়া যায় 'মেরে দেয়া'।

যাই হোক, এই পোষ্টে আলোচনা কন্টিনিউ করার মানসিকতা নেই।

দ্র। আপনাকে আঘাত করতে চ্যালেঞ্জ নামক 'প্রতিহিংসার' শব্দটি জুড়ে দেইনি।

----------------------------
মোখলেছুর রহমান সজল

তানিম এহসান (অফ্লাইন) এর ছবি

আরও সবাই করেছে বলেই সব শেষ হয়ে গেলো? আপনি বলেছিলেন ভুল প্রমাণিত হবো, আমি সত্যি বলছি ভুল প্রমাণিত হলে খুশী হতাম। আমি প্রমাণ দিলাম আর আপনি তাতে এন্তার বিষয় জুড়ে দিলেন, এটাকে জাস্টিফাই করে নিতে চাইলেন? চুপ করে মেরে দেয়ার কথা বলিনি আমি, আমি পরেও খুব নির্দিষ্টভাবে বলেছি যে মাকুসুদুল হক কে কোনভাবেই ছোট করার প্রয়াস আমার নেই, মেরে দেয়ার বিষয়টা কোনদিনই মেরে দেয়া হিসেবে দেখিনি কিন্তু আপনি তাকে পীর-পয়গম্বর শ্রেণীতে নিয়ে যাচ্ছেন দেখে বাধ্য হয়েছি এভাবে কথা বলতে। আপনার সাথে-তো ভাই এমনকি আলোচনাও করা সম্ভব না! সামনাসামনি কথা বলবেন? সামনাসামনি কথা বললে বুঝতে পারতাম এই এত কথা বলে সময় নষ্ট করলাম নাকি কোন একটা লাভ হল। কি আশ্চর্য!

এই আলোচনাগুলো কোন উপসংহারে পৌঁছুবেনা, তর্কের খাতিরেও তর্ক হচ্ছেনা; প্রতিহিংসা শব্দটি এলো কেন তাইতো বুঝতে পারছিনা! আমি আঘাতপ্রাপ্ত হইনি বরং পুরোটা সময় চেষ্টা করে গেছি একটা জায়গায় পৌঁছুতে যেখানে আপনি আর আমি একমত হতে পারবো, সেটা সম্ভব নয়। মাকসুদ ভাইয়ের ভক্ত হিসেবে আপনি তাকে যেভাবে সচলায়তনের মত একটা জায়গায় ক্রমাগত উল্টাপুল্টা বলে এইভাবে নামাতে সহায়তা করলেন তাতে ব্যথিত হলাম, এতটা তার প্রাপ্য ছিলোনা বোধকরি।

আমি থামলাম, থামতে ভালো লাগলো। ভালো থাকবেন। আপনার জন্য শুভকামনা রইলো।

সুজন চৌধুরী এর ছবি

বাহ! মোখলেস সাহেব, বাহ! এতগুলো ঘটনা মাকসুদ সাহেবের অজান্তেই হয়ে গেলো!!! লাভের গুড় খাইলো মাকসুদ সাহেব আর দোষ ওন্যদের !!! মাকসুদ সাহেব কিছুই জানতেন না!! তার চেয়ে আশ্চর্যের বিষয় আপনিও কিছুই জানতেন না !!!!!!!!! তারপরও চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলে গেলেন!!!!
এবার তাহলে আর ১টা চ্যালেঞ্জ মেরে বলে দিয়ে যান মাকসুদকে বউ পিটানোর জন‌্য পুলিশে ধরে নাই!!
দেখি আপনার আর মাকসুদ সাহেবের অজান্তে আর কি কি ঘটে গেল!!
অনুগ্রহ করে প্রমাণসহ ‌উত্তর দিয়েন।

তানিম এহসান এর ছবি

একটা ভুল হয়েছে। পল এনকা’র ক্যাসাব্লাঙ্কা হবেনা, হবে ‘লাভ ইজ আ লোনলি সং’। দুঃখিত।

অরফিয়াস এর ছবি

গানটি কার সেটা না জানার কারণ অ্যালবাম না কিনে নেট থেকে ডাউনলোড করে গান শোনা।

যুক্তি শুনে আমোদ পেলাম। চালিয়ে যান।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

কল্যাণ এর ছবি

কপিরাইট না থাকলে সেই গান নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করার বা সেই গানে ভিন্ন মাত্রা যোগ করার স্বাধীনতা মানুষের থাকতেই পারে। কিন্তু সেটাকে "নতুন প্রজন্মের উপযোগি করে পরিবেশন করছি" এবং "অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্যে দরকার" এই সব ট্যাগ মারার দরকার নাই। এই অবস্থান থেকেই আমার উপরের মন্তব্য করা। আর ফিউশন করার স্বাধীনতা যদি কারো থাকে, তাহলে সেই ফিউশন ভালো না লাগলে বা সেটা আদতে কিছু না হইলে সেইটা বলার স্বাধীনতাও থাকা দরকার। এখন এইটা বলতে গেলে চিৎকার চেচামেচি আক্ষা দিলেতো মুশকিল। এর মধ্যে দেখেন আপনি বাংলা ব্যান্ড সঙ্গীত সংস্কৃতি না অপসংস্কৃতি সেই তর্ক টেনে নিয়ে আসলেন। তাহলে আগে অপসংস্কৃতি কি সেইটা বলে দিলে তারপর না হয় মন্তব্য করি। না হলে আবার চিৎকার চেচামেচি করছি বলে মনে হবে আপনার। আর আমি যদ্দুর জানি, এই ব্যান্ড সঙ্গীত শব্দটা বাংলাদেশের টার্ম। ব্যান্ড সঙ্গীত নামে মিউজিকের কোন জনরা নাই। আমার জানা ভুল থাকতে পারে। যাই হোক সেইটা আরেক তর্ক, এইখানে অপ্রাসঙ্গিকতো বটেই।

আমার মনে হয় গান করতে গেলে সেটা শেখা লাগে, সুরে গাওয়া লাগে। আর গান তৈরি করতে গেলে প্রতিভা লাগে। যাদের এইগুলা আছে তাদের সমস্যা হয় নাই, হচ্ছে না, হবেও না। সেটা ব্যান্ড হোক আর ব্যান্ডের বাইরে একা বা আলাদা কিছু হোক। আপাতত একটা ভালো ফিউশনের কথা মনে পড়ছিল, সেটার উদাহরণ দিয়েছি (আপেল মাহমুদের তীর হারা এই ঢেউ এর সাগর গেয়েছে দলছুটের বাপ্পা মজুমদার)। আপনি বলবেন আমি এইখানে ভালো বলে চিৎকার চেচামেচি করলেইতো আর সেটা ভালো হয়ে যায় না। যাইহোক, আপনার কথা থেকেই বলি, আবার এলো যে সন্ধ্যা বা কে বাঁশি বাঁজায়রে এরকম দুই একটা ছাড়া এগুলোর মত আরও যেসব পুরন গান আছে সেগুলো ফিউশন করে নতুন করে গাওয়া হচ্ছে না কেন নতুন প্রজন্মের জন্যে? অথবা ধরেন অনেক রাগ আছে যেগুলা মানুষ শুন্তেছে না, সেগুলোর ফিউশন করা হচ্ছে না কেন নতুন প্রজন্মের জন্যে?

তবে উপরে আপনার কোট করা কথা পড়ে একটা আইডিয়া আসলো, রবীন্দ্রসংগীত র‍্যাপের সাথে ফিউশন করে স্লোগান করা যেতে পারে "র‍্যাপান্দ্রসঙ্গীত, রবীন্দ্রসঙ্গীতের ধারা"।

_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩

অতিথি লেখক এর ছবি

প্রায় দু’বছর আগে ফিডব্যাকের জনপ্রিয় ১০টি গান ফুয়াদের সাথে মিলে রিমেক করার কথা ছিল । নোকিয়া স্পন্সর ছিল এ প্রজেক্টের । কিন্তু কপিরাইট আইনের আওতায় মাকসুদ মামলা করেছিলেন । কপিরাইট আইন এর ধারা-১৭ অনুযায়ী যিনি গান রচনা করছেন তাঁর স্বত্ব প্রথম এরপর যিনি সুর করেছেন তাঁর । বলা বাহুল্য- ফিডব্যাকের অনেক জনপ্রিয় গানের কথা ও সুর মাকসুদের করা । অবশ্য এরপর কী হয় তা জানা নেই । গানগুলো কী রিমেক হয়েছিল- শুনি নি তো ।

রবীন্দ্রসঙ্গীত এখন কপিরাইট আওতামুক্ত বলে ‘যেমন খুশি তেমন সাজো’ বলে সাজানোটা পছন্দ করি না । আবার মাত্র ২০বছর মধ্যেই ফিডব্যাক তাদের গানগুলো নতুন করে করবে, ভাল । অনেকই এটা করে । ফুয়াদ এর সাথে কেন? এই ফিউশন টায় ভায় পাই ।

(সূত্র)

কড়িকাঠুরে

অতিথি লেখক এর ছবি

দুঃখিত মামলা নয় আইনি নোটিশ হবে ।

কড়িকাঠুরে

হিমু এর ছবি

একটু খুঁজলে হ্যাপি আখন্দের গলাতেই এই গানগুলো পাওয়া যায়।

আর রবীন্দ্র সঙ্গীত তো হ্যাপির গানের মতো বিরল নয়। এর চর্চা চলমান। কারো যদি সেটা ভালো না লাগে, তাহলে সে আসলে রবীন্দ্র সঙ্গীতের উদ্দিষ্ট শ্রোতা নয়। তার পছন্দমতো রবীন্দ্র সঙ্গীতকে ভেঙেচুরে পরিবেশন করলে তার কাছে রবীন্দ্রসঙ্গীত পৌঁছানো হবে না, একটা ডেরাইভেটিভ পৌঁছানো হবে। এই কাজ করে মাকসুদ রবি ঠাকুরকে উদ্ধার করে ফেলছেন, এমন একটা টোন আছে আপনার লেখায়। ফ্যাক্ট হচ্ছে, রবীন্দ্রনাথের মৃত্যুর একাত্তর বছর পরও তিনি মূলানুগ পন্থায় বহুলচর্চিত। মাকসুদ আজকে চোখ বন্ধ করলে তাকে কয় বছর স্মরণ করা হবে বলে আপনি মনে করেন? হ্যাপি আখন্দের মতো গিফটেড মানুষকেও আজ পঁচিশ বছর পর লোকে ভুলে গেছে। হয়তো মাকসুদের গানগুলোকেও নতুন কোনো আনিলা-চুমকি নিজের মতো করে গেয়ে "নতুন" শ্রোতার কাছে তুলে ধরবে।

রবীন্দ্রনাথের গান নিয়ে এখন যে যা খুশি করতে পারে। কিন্তু যে যা খুশি করলেই সেটাকে সমাজসেবা ভেবে হাততালি দেয়ার জো নাই। কারো ভালো লাগবে, কারো খারাপ লাগবে।

আর প্লিজ, যা ঠিকমতো জানেন না, তা নিয়ে লিখতে বসে যাবেন না। রবীন্দ্র সঙ্গীত সম্পর্কে আপনার জানায় প্রচুর ত্রুটি আছে, পাঠকেরা সেগুলো ধরিয়ে দিয়েছেন। জেনে-বুঝে লিখুন।

অতিথি লেখক এর ছবি

উত্তম জাঝা! চলুক

সৌরভ কবীর

ব্যাঙের ছাতা এর ছবি

চলুক চলুক চলুক

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

চলুক
একমত

লুৎফর রহমান রিটন এর ছবি

মাকসুদ আর আমার ব্যক্তিগত সখ্য ও বন্ধুত্বের বিষয়টি এখানে উহ্য রাখছি। মাকসুদের ওপর গানের কারণে কোনো নির্যাতন নিপীড়ন হয়েছিলো বলে আমার জানা নেই। জানলে সবার আগে প্রতিবাদ করতাম আমি। ওয়াহিদুল হক বনাম মাকসুদের বিরোধের সঙ্গে কিংবা ‘নিষিদ্ধ’ এলবামের সঙ্গে তাঁর গ্রেফতারের কোনো সম্পর্ক ছিলো না। ওটা ছিলো মাকসুদের একান্ত ব্যাক্তিগত পারিবারিক ঝামেলা যাতে আমরা কেউ জড়িত হইনি। কিন্তু মাকসুদকে নিয়ে আমার দীর্ঘ তর্ক-বিতর্ক হয়েছে ওয়াহিদুল হকের সঙ্গে। মাকসুদের ব্যাপারে তাঁর কোনো রকম সহানুভূতি আদায় করা যায়নি। সে আরেক অধ্যায়। আমি যেটা বলতে চাই মাকসুদকে—তুমি বন্ধু নিজেই আমার প্রজন্মের একজন মেধাবী পুরুষ। কী দরকার বুড়ো রবীন্দ্রনাথের গানকে আধুনিক করার? কী দরকার নতুন প্রজন্মের কাছে তাঁকে তুলে ধরার জন্যে রবীন্দ্রনাথকে ‘সংশোধন’ করার? রবীন্দ্রনাথকে রেহাই দিয়ে নিজের মেধা আর যোগ্যতায় নতুন দিনের গান নির্মাণ করে কালোত্তীর্ণ হও। ওই ব্যাটা টিকলে টিকবে না টিকলে বাতিল। এস ডি বর্মণের ‘তুমি এসেছিলে পড়শু কাল কেনো আসোনি’ গানটিকে বলাৎকার করেছে আরেক তরুণ। (নামটা কি ফুয়াদ?) এক সাক্ষাৎকারে সে বলেছে—নতুন প্রজন্মের কাছে শচীন দেব বর্মণকে পরিচিত করাচ্ছি। ওই মূর্খটাকে কে বোঝাবে পিঁপড়ের সাধ্য নেই হাতিকে মাথায় তুলে ধরার।

এখানে এখন একই তরিকায় কোনো মেরামতকারী মিস্তিরি এসে আহ্লাদ করে বলতে পারে--রবীন্দ্রনাথের ছুটি পোস্টমাস্টার নতুন করে লিখলে ক্ষতি কি? ক্ষতি নেই যদি সেটা কোনো কুতুব নিজের নামে নিজের লেখা হিশেবে লেখে। কিন্তু যদি সেই কুতুব রবীন্দ্রনাথের ছুটি বা পোস্টমাস্টার বা শেষের কবিতাকে সংশোধন করে বুড়োর উচিৎ ছিলো এইভাবে লেখার-- বলে ওটাই রবীন্দ্রনাথের রচনা বলে চালিয়ে দিতে চায়, তখন সেটা অবশ্যই ক্ষতি। মুরোদ থাকলে আরেকটা ছুটি কিংবা পোস্টমাস্টার লিখে দেখা না ব্যাটা! ‘মাকসুদের রবীন্দ্রসঙ্গীত’ নিয়ে এখানে-ওখানে যা হচ্ছে এগুলো আসলে উদ্দেশ্যমূলক কুতর্ক। আমি কুতর্কে আগ্রহী নই। এখন আমাকে মাকসুদ কিংবা মাকসুদের কোনো আশেকান ‘রবীন্দ্র মৌলবাদী’ আখ্যা দিলে কিছু করার নেই। পিকাসোর ‘গুয়ের্নিকা’ পেইন্টিংটিকে অসম্পূর্ণ বা সেকেলে আখ্যা দিয়ে কোনো কুতুব যদি সেই পেইন্টিং-এর ক্যানভাসের ডানদিকের কোনায় একটা ইঁদুর সংযোজন করে বলে যে—এই ইঁন্দুর না থাকলে এইটা যুদ্ধ এবং গণহত্যার বিভীষিকারে পরিপূর্ণভাবে ফুটাইয়া তুলতে অক্ষম, ইঁন্দুরটা আমি আঁকলাম এবং এইটাই পিকাসোর ‘গুয়ের্নিকা’; তাহলে আমি ঠিক একই ভাবে প্রতিক্রিয়া জানাবো। তুই ব্যাটা কুতুব পারলে আরেকটা ‘গুয়ের্নিকা’ আঁক কিন্তু সেটা নিজের নামেই আঁক, পিকাসোর নামে না। পিকাসো তোরে মেধাসত্ব দিয়ে যায়নি। এস ডি বর্মণও দিয়ে যায়নি, দিয়ে যায়নি রবীন্দ্রনাথও। এখন, আমি কি রবীন্দ্র মৌলবাদী? আমি কি পিকাসো মৌলবাদী? আমি কি এস ডি বর্মণ মৌলবাদী? কেউ ভাবলে ভাবুক। সময়ের সঙ্গে ঐতিহ্যের নবায়নই আধুনিকতা। পরের ধনে পোদ্দারী কোনো আধুনিকতা নয়। রবীন্দ্রনাথ, এসডি বর্মণদের মেরামত না করে ভবিষ্যতে কুতুব-কেরামতরা নিজেদের মেধাসামগ্রী নিয়ে আমাদের সংস্কৃতির মুখ উজ্জ্বল করবে আমি সেই আশাই করি।

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

রিটন ভাই,
আপনি একস্ট্রিম কিছু উদাহরণ তুলে দিয়েছেন। রবীন্দ্রনাথে ছুটি গল্প "নতুন" করে লেখা, কিংবা ‘গুয়ের্নিকা’ পেইন্টিংয়ের ক্যানভাস শুধরে আর একটা নতুন করে গাওয়া একরম নয়। আপনার উদাহরণে উৎসটাকে বদল করা হচ্ছে। গানের ক্ষেত্রে রবীন্দ্রসঙ্গীতকে শুধরে দেয়া হচ্ছে না। যারা "শুদ্ধ" গাইছেন তাদের বলা হচ্ছে না যে, রবীন্দ্রনাথে গান "ভুল" ছিল, এবার থেকে আপনাকে আমাদের মত করে গাইতে হবে। উপরের ভিডিওতে একজন নাটকের সাথে তুলনা করেছেন। একটা বর্ণ না বদলে একেক পরিচালক নাটককে একটা আলাদা "স্বাদ" দিতে পারেন এবং তাতে নাটকটি বিকৃত হয় না। তাহলে একজন সঙ্গীতশিল্পী গান না বদলে, মূল সুর অবিকৃত রেখে একটা নতুন করে গাইলে সেটা কেন রবীন্দ্রসঙ্গীত বিকৃতি হবে?

সবার নিজস্ব মতামত থাকবে। আপনি যেমন বিষয়টাকে খারাপ বলেছেন সেটা বলতে পারেন। অন্য কেউ মানুক না মানুক, আপনার ভালো মন্দ জানানোর অধীকার আছে। আপনার এই অধীকার এবং অবস্থানের প্রতি সম্মান রেখেই বলছি, একজন শিল্পীর পুরোনো ফর্ম ভেঙ্গে নতুন কিছু করারও অধীকার আছে। এই জায়গাটায় যে কারো সমালোচনা করার অধীকার আছে, কিন্তু নিষেধাজ্ঞা জারি করার মতো অথরিটি মনে হয় কারো নেই, থাকা উচিৎও নয়।

কল্যাণ এর ছবি

মুর্শেদ ভাই, আপনার শেষ কথাটায় দ্বিমত পোষণ করছি। এইটা অনেক জেনারেল হয়ে গেলো। কারো নিজস্ব মেধায় তৈরি যেকোন ধরনের কন্টেন্ট সে নিজে উন্মুক্ত করে না দিলে, সেটা কেউ ইচ্ছা মত পরিবর্তন করতে থাকলে নিষেধাজ্ঞা জারি করার দরকার আছে, থাকা উচিত এবং সেটাকে সম্মান করা উচিত।

_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

আচ্ছা? তাহলে রবীন্দ্রনাথ যখন লালনের "কোথায় পাবো তারে" গানটির সুর-কথা বদলে "আমার সোনার বাংলা" করেন সেটা কি ঠিক আছে আপনার মতে?

কল্যাণ এর ছবি

মুর্শেদ ভাই, উত্তর দিতে দেরি হওয়ায় দুঃখিত।

আমার মতে, অনুমতি সাপেক্ষে করা হয়ে থাকলে এবং মেধাস্বত্ব ভংগ না হলে ঠিক আছে, আর তা না হলে রবীন্দ্রনাথ কেন তাঁর বাবা করে থাকলেও ঠিক নাই।

এই গানটা সম্ভবত লালনের না। যাইহোক, আমি যতদূর জানি লালনের গানের কপিরাইট নাই, সুতরাং সেটার ব্যাপারে আপনার বলা "শিল্পীর পুরোনো ফর্ম ভেঙ্গে নতুন কিছু করারও অধীকার" কিন্তু ঠিক থেকে যাচ্ছে, আর সেই ব্যাপারে আমি আপত্তি জানাই নাই। কিন্তু মেলা বা বঙ্গাব্দ১৪০০ এলবামগুলো কি আমি এখন আমার মত করে কম্পোজ করে জুলু মিউজিকের সাথে ফিউশন করে আমার নিজের নামে জোবার্গ-২০১২ ইং নাম দিয়ে প্রকাশ করতে পারি? এইটা কি ঠিক আছে আপনার মতে?

অট উদাহরণঃ স্যাম মিলস আর পবন দাস বাউলের ফিউশন আছে লালনের গানের। বাংলা গানে এত চমৎকার এবং কোয়ালিটি ফিউশন আমার কানে পড়ে নাই। লালনের বাউল গানের আমেজ-সুর-ভাব নষ্ট হয় নাই অথচ সমানে ওয়েস্টার্ন ইন্সট্রুমেন্টের ব্যাবহার, খুব সুন্দর বেজ গিটারের কাজ আছে।

_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩

মোখলেছুর রহমান সজল এর ছবি

'কোথায় পাবো তারে' গানটি মূলত গগণ হরকারার। রবীন্দ্রনাথ গগণ হরকরার কাছ থেকে অনুমতি নিয়েছিলেন কিনা সেটা উল্লেখ করেন নি। আর রবীন্দ্র-ফিউশন করতে গেলে কার কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে সেটাও বলা প্রয়োজন বোধকরি। বলবেন কি?

ফিডব্যাক ফার্ট ফিউশন করে 'বঙ্গাব্দ ১৪০০' অ্যালবামে 'দিনের আলো নিভে গেল/আপন দেশে চল' গানটি দিয়ে। এরপর আব্দুর রহমান বয়াতীর সাথে সিঙ্গেল ট্র্যাকের অ্যালবাম 'দেহঘড়ি' প্রকাশ করে। আমি যতটুকু জানি, ফিডব্যাক ও মাকসুদুল হক বাউল গানগুলো নিয়ে গবেষণা করেই অ্যালবাম করার পরিকল্পনা করেছিল। তারই প্রথম প্রয়াস ছিল 'দেহঘড়ি'। এবং পরবর্তীতে বাউল গান নিয়ে পুরো অ্যালবাম তৈরী করেন 'বাউলিয়ানা' শিরোনামে।

'বাউলিয়ানা' অ্যালবামে ফিডব্যাকের সাথে কাজ করেছিলনে বাউল-সাধক হিরু শাহ্‌ এবং সন্তোষ বাউল ও তার গরিমা গানের দল। আধুনিক যন্ত্রসঙ্গীতের সেই চমৎকার কাজগুলো শুনে দেখেন নি বোধহয়। কারণ, উদাহরণ হিসেবে আপনি অনেক দূরের রেফারেন্সই উল্লেখ করেছেন। এছাড়াও মাকসুদুল হকের 'প্রাপ্ত বয়স্কের নিষিদ্ধ' অ্যালবামে রাধারমণের 'রায় জাগো'র সঙ্গীতায়োজন অবশ্যই মুগ্ধ করার মত। যার সঙ্গীতায়োজন ভারতীয় চলচ্চিত্রকার গৌতম ঘোষের। সেই সাথে মাকসুদুল হকের গায়কীর উপস্থাপনও মুগ্ধ করার মত (অবশ্য অনেকেই নাক উলটে বলতেই বেশী পছন্দ করে থাকেন)।

মাকসুদুল হক নিজের বাউল-সাধুদের সান্নিধ্যে কাটান অনেকটা সময়। এবং বাউল গান নিয়ে গবেষণাও করেন। ২০০৬ সালে প্রকাশিত মাকসুদুল হকের লাস্ট অ্যালবামের সবগুলো গানই গরিমা ও বাউল ধারার গান। পাপ-পুন্যের কথা আমি কাহারে শুধায় লালনের এই গানটির মিউজিক অ্যারেঞ্জমেন্ট ও উপস্থাপনাও চমৎকার। এবং এই গানে একজন বাউল শিল্পী মাকসুদুল হকের সাথে কণ্ঠ দেন। শুনে দেখবেন আশা করি।

রবীন্দ্রনাথের গান আরও অনেক আগে থেকেই ফিউশন হয়ে আসছে। সমস্যা দেখা দিল যখন মাকসুদুল হক করলো রবীন্দ্রনাথের গান। কারণ, মাকসুদুল হক-কে ব্যক্তিগত ভাবে অনেকেই পছন্দ করেন না কারণ তিনি অকপটে সত্য বলতে দ্বিধা বোধ করেন না। আরেকটা কারণ হতে পারে, রবীন্দ্রভক্তরা কখনোই কোন এক ব্যান্ডের শিল্পী রবীন্দ্রনাথের গান করলে হয়ত তাদের ইজ্জত থাকেনা।

সত্যপীর এর ছবি

দুই নম্বর তিন নম্বর আর চার নম্বর প্যারায় কঠিনভাবে সহমত। অ্যালবামগুলির তুলনা নাই, মাকসুদ একজন প্রথম সারির সঙ্গীতশিল্পী।

কিন্তু শেষ প্যারাটার কোন মানেই হয়না। হতাশ করলেন। ব্যক্তি মাকসুদ নয় গায়ক মাকসুদ রবীন্দ্রভক্তদের অপছন্দ। সুরে পরিবর্তন আনা ব্যক্তি নয় গায়ক মাকসুদের সিদ্ধান্ত। এইখানে ব্যক্তিগত কাইজা ঢুকানোর কোন কারণ দেখিনা।

শেষ লাইনটারও কোন ভিত্তি নাই। বেসলেস। অর্ণব বাপ্পা এরা ব্যান্ডেরই শিল্পী।

..................................................................
#Banshibir.

অতিথি লেখক এর ছবি

সহমত- চলুক -
অর্ণব লোকগান নিয়ে বেশ কিছু কাজ করেছে- এবং এ প্রজন্মের প্রতিনিধি । এছাড়া “রঙ্গমেলা” এ্যালবামটার কথাও আপনার অবশ্যই মনে আছে । @সজল

কড়িকাঠুরে

মোখলেছুর রহমান সজল এর ছবি

দেঁতো হাসি
রঙ্গমেলা অ্যালবামটি নয়। রঙ্গমেলা -১, রঙ্গমেলা -২ দুটি অ্যালবাম প্রকাশিত হয়।

জেমসের ----

বেলা গেলরে ভবের মায়ায় রইলিরে মন ভুলিয়া

সবকিছু একবারে জ্বালিয়ে দেয়। দুর্দান্ত।

মোখলেছুর রহমান সজল এর ছবি

বস, প্রাপ্ত বয়স্কের নিষিদ্ধের লিরিকগুলো মনে আছে। হত্যার হুমকি দিয়েছিল এই গায়ককে। যাইহোক, মাকসুদুল হক সব সময় প্রথা ও মোড়লবৃত্তীয় মানসিকতার বিরোধী মনোভাব নিয়ে চলেন।

জন্মেছি এই যুগে
লিরিক ও কণ্ঠঃ মাকসুদুল হক
সুরবিন্যাস ও সঙ্গীতায়োজনঃ ফিডব্যাক
অ্যালবামঃ মেলা/১৯৯০

শুনিনা পুরোনো দিনের ঐ গান
আমি বুঝিনা তোমার রাগ-রাগিনীর টান
প্রথম যেদিন হল আর্তনাদ
আর পাগল পাগল বলে দিলে অপবাদ আমাকে
আমি জন্মেছি এই যুগে
আমার অহংকার আমি গান গাই এই যুগে

বুঝিনা শুদ্ধ গানের ঐ সুর
আমি শুনিনা তোমার সেতার সন্তুর
দোহাই তোমার থামাও ঐ মতবাদ
আর অপসংস্কৃতির দিলে অপবাদ আমাকে
আমি জন্মেছি এই যুগে
আমার অহংকার আমি গান গাই এই যুগে

পৃথিবী চলছে তীব্র গতিতে
আমার বাংলাদেশ কেন পিছিয়ে থাকে
তথাকথিত কিছু আঁতেলের দল
ভঙ্গ করছে আমার ঐ মনোবল
তারা যে জন্মেছে এই যুগে
আমার দুঃখ মাগো তারা জন্মেছে এই যুগে

সত্যপীর এর ছবি

লিরিকে কোথাও হত্যার হুমকি ধামকি পাইলাম না. পাইলেও কিসু আসত যাইত না, গান গানই.

..................................................................
#Banshibir.

মোখলেছুর রহমান সজল এর ছবি

আমি বলেছি প্রাপ্ত বয়স্কের নিষিদ্ধ অ্যালবামের কথা। লিরিকটাতো ফিডব্যাকের মেলা অ্যালবামের। খুব সম্ভবত ১৯৯০ তে প্রকাশ পায়। নিষিদ্ধ প্রকাশ পায় ১৯৯৬-৯৭ এ।

সত্যপীর এর ছবি

উপরের মন্তব্যের দ্বিতীয় লাইন দ্রষ্টব্য.

..................................................................
#Banshibir.

কল্যাণ এর ছবি

রবীন্দ্রনাথের গান যেহেতু এখন কপিরাইট মুক্ত, সেহেতু কারো কাছে অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি না। কিন্তু তার মানে এই না যে আমি রবীন্দ্রনাথের একটা গান নিয়ে সেটা বেসুরে গেয়ে সেটাকে রবীন্দ্রসঙ্গীতের অস্তিত্ব রক্ষা করছি বলে দাবি করব। আমি আপনার বক্তব্য সমর্থন করি নাই এবং মাকসুদের গাওয়া রবীন্দ্রসংগীত সুরে হয় নাই এই ভাব প্রকাশ করাতে আপনি ধরেই নিয়েছেন আমি মাকসুদুল হকের গান পছন্দ করি না। আপনার এই ধারনা সঠিক নাও হতে পারে। এখন গান সুরে না হলেও কি আমাকে স্বীকার করতে হবে যে সুরে হয়েছে? বা মাকসুদের মেলায় যাইরে বা বঙ্গাব্দ ১৪০০ তে গাওয়া গান ভালো লেগেছে বলে তার সব গানই আমার ভালো লাগতে হবে তারো তো বাধ্যবাধকতা থাকতে পারে না, তাই না?

আমি অনেক দূরের উদাহরন দিয়েছি, তার মূল কারণ দুইটা। এক আমি ধারে কাছের যা শুনেছি তা আমার কাছে উদাহরণ দেয়ার মত জাতের লাগে নাই, দুই আমার উদাহরণে দ্বীমত থাকার সম্ভাবনা কমিয়ে আনা।

এখন আর একটা ব্যাপারে আসি, বিশ্বাসযোগ্যতায়। সব মিলিয়ে আপনার পোস্ট একটা উদ্যোগ হতে পারত মাকসুদের প্রতি শিল্পী সমাজের করা অবিচারের প্রতিবাদ হিসাবে, অথবা ফিউশন করলেও রবীন্দ্রসঙ্গীত তার বৈশিষ্ট বা মাধুর্য হারায় না এর একটা অসাধারণ আলোচনা হিসাবে। কিন্তু আপনি সেদিকে গেলেন না। আর মাকসুদের ব্যাক্তিগত জীবনের কাসুন্দি ঘাটাতে চাচ্ছিলাম না। এটা এড়ানোর জন্যে এবং প্রাসঙ্গিক থাকার জন্যে একেবারে শুরুতে আপনাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম পোস্টের উদ্দেশ্য কি, সেটার উত্তর পাইনি।

যাইহোক বিশ্বাসযোগ্যতায় আসি। আপনার বক্তব্য থেকে মনে হয় আপনি অনেক শোনেন এবং অনেক খবর রাখেন। আপনার পোস্টেও এই ভাব আছে। উপরে একজন অতিথি লেখক কিন্তু আপনার দেয়া রবীন্দ্রসঙ্গীতে হারমোনিয়াম ও তবলা সংক্রান্ত তথ্যের প্রতিবাদ করেছেন এবং সরাসরি বলেছেন আপনি ভুল তথ্য দিয়েছেন। আপনার উত্তর চোখে পড়ে নাই।

আপনি যেভাবে ব্যাখ্যা করেছেন তাতে মনে হয়েছে যে রবীন্দ্রসঙ্গীত গাওয়ার জন্যে মাকসুদকে অনেকে পছন্দ করে না এবং তাকে সেজন্য মিথ্যা মামলায় জেলে যেতে হয়েছিল। এটা আমার কাছে সঠিক মনে হয় নাই। আমার মনে পড়ছে অতিরিক্ত ফেনসিডিলে আসক্তি এবং তাতে বাঁধা দেয়ায় স্ত্রীকে পেটানোর অপরাধে তাঁকে জেলে যেতে হয়েছিল। এটাকে কি খবরের কাগজের প্রপাগান্ডা এবং রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পিদের প্রতিহিংসার স্বীকার বলতে চান? এব্যাপারে আপনার পোস্টে কিছু বলতে দেখলাম না।

সব মিলিয়ে পোস্টের বিশ্বাসযোগ্যতা অনেকটাই চলে গেছে বলে আমার মনে হয়েছে। এটা আমার ভুল হতে পারে। আপনি শুধরে দিতে পারেন ইচ্ছা করলে, ইচ্ছা না করলে নাও দিতে পারেন। এটা আপনার স্বাধীনতা।

_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩

মোখলেছুর রহমান সজল এর ছবি

অবশ্যই তিনি প্রতিহিংসার শিকার হয়েছেন। এবং তার তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করেছি রেফারেন্সসহ। নিচের দিকে একটু দেখে নেবেন দয়াকরে।

একটি কথা না বললেই নয়, শিল্পী ও ব্যক্তি মাকসুদের উপর সেই অতীত সময়ের পুনরাবৃত্তি হতে দেখেছি। যা দেখে মনে হয়েছে, সেই সব মৌলবাদীদের উত্তরসূরি এখনও রয়ে গেছে।

হিমু এর ছবি

আপনি যে রেফারেন্স দিয়েছেন, সেটি কি অকাট্য?

মনে করুন, আমাদের নীড় সন্ধানী একটা বই লিখতে পারেন আগামীকাল। যেহেতু তিনি মাকসুদের সাথে আলাপ করেছেন বলে দাবি করেছেন, তিনি নিজের অভিজ্ঞতা নিয়ে বই লিখে তাতে একটা উপসংহার যোগ করে বলতে পারেন যে মাকসুদ ছাগু বা ছাগুবান্ধব।

ঐ বইয়ের রেফারেন্স দিলে কি আপনি বিনা তর্কে মেনে নেবেন?

মাকসুদকে যে সময়ে পুলিশে ধরেছিলো, সে সময় টিভিতেও তিনি অ্যাপিয়ার করেছিলেন। অপ্রকৃতিস্থ অবস্থায়, বলাই বাহুল্য। সে সময় তিনি কিছু সাপ্তাহিক বা পাক্ষিক পত্রিকাতেও লেখালেখি করতেন, বাহ্যজ্ঞানশূন্য কথাবার্তায় ভর্তি থাকতো সেসব, এটুকু আমার মনে আছে। তাকে বিনা কারণে পুলিশ ধরে হয়রানি করে থাকতে পারে, কিন্তু তার সাথে আপনার দাবি মোতাবেক "রবীন্দ্র মৌলবাদী"দের কানেকশনটা আপনি কীভাবে এস্টাবলিশ করছেন, আমি বুঝতে পারছি না।

মোখলেছুর রহমান সজল এর ছবি

ঠিক যেই কারণে রবীন্দ্রমৌলবাদীরা মাকসুদকে মিডিয়া থেকে নিষিদ্ধ করার জোর দাবী তুলেছিল। এবং পেরেছিলও বটে। তেমনি, যেই কারণে বিটিভিতে গান প্রচার পাবার পর বিটিভি মাকসুদকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠায়।

সুমন চৌধুরী এর ছবি

মানে সেই কারণটা বা প্রমাণটা ঠিক কী? ওয়াহিদুল হক গংই যে মোকছেদের নামে মামলা দিছিল সেইটা আপনে জানলেন কেমনে?

মোখলেছুর রহমান সজল এর ছবি

উত্তরের আগে দুইটা প্রশ্ন করিঃ

১। মাকসুদকে গান প্রচারের বিটিভির পক্ষ থেকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠালো কেন?
২। মাকসুদকে মিডিয়া থেকে নিদিদ্ধ করার জোর দাবী কারা তুলেছিল এবং কেন?

সত্যপীর এর ছবি

আপনি কেন বারবার মাকসুদের ব্যক্তিগত ব্যাপার নিয়ে আসছেন বুঝতে পারছি না. মাকসুদের পুলিশী মামলা কে দিয়েছিল এইটা প্রমান করতে মামলার কাগজ দেখতে হবে বাদী কে ইত্যাদি, যা একান্তই মাকসুদের নিজস্ব ব্যাপার. আমরা জানতে চাই না যদি না মাকসুদ নিজে এ ব্যাপারে পরিষ্কারভাবে কিছু বলেন. আপনি এ নিয়ে কথা বলার অধিকার রাখেন না.

কঠিন কথার জন্য দুঃখিত. আপনি আমি শ্রোতা বলেই গায়কের ব্যক্তিগত ব্যাপার আমাদের জন্য আলোচনা করা হালাল হয় না. আসুন শুধু গান নিয়েই কথা বলি.

..................................................................
#Banshibir.

মোখলেছুর রহমান সজল এর ছবি

ব্যক্তিগত আক্রমণ আমি শুরু করিনি। মাকসুদকে ‘মোকছেদ’ বলে আমি সন্মোধন করিনি। ভিত্তিহীন ভাবে মাকসুদকে ‘ছাগু’ উপাধিতে আমি ভূষিত করিনি। ‘ইভা রহমান, অনন্ত জলিল কিংবা মাহফুজুর রহমান’কে মাকসুদের সাথে জড়িয়ে ব্যঙ্গ কিংবা হাস্যরসের উদ্রেক করিনি। মাকসুদ বউ পিটিয়ে জেলে গিয়েছে - এই বলে তার একান্ত ব্যক্তিগত বিষয়গুলো উত্থাপন করিনি। ‘মাকসুদ ভাই এর যেসব গান সবচাইতে বেশি হিট সেগুলোর প্রায় বেশিরভাগই বিদেশী গান থেকে সরাসরি মেরে দেয়া কিন্তু কোথাও সেই কথাটি কিন্তু লেখাও থাকেনি' – বলে উদ্ভট ও ভিত্তিহীন তথ্যের ঝড় তুলে শিল্পী মাকসুদকে আক্রমণ করিনি। করেছি শুরু রবীন্দ্রমৌলবাদীদের চিহ্নিত করতে। মাকসুদ ও রবীন্দ্রসঙ্গীতকে প্রসঙ্গ করে ব্যক্তি আক্রমণ আমি শুরু করিনি। আমি একটি গোষ্ঠীকে চিহ্নিত করতে চেয়েছি মাত্র।

আর যখন আসলেই মামলাটা রবীন্দ্রমৌলবাদীদের হস্তক্ষেপে হয়েছে কিনা জানতে চাওয়া হয়, তখন আমি উপরের দুটি প্রশ্ন উত্থাপন করার অধিকার রাখি বৈকি। এবং উপরের প্রশ্ন দুটির সদুত্তর পেলে মামলায় কার হাত থাকতে পারে তারও বোধকরি সদুত্তর মিলবে।

ব্যক্তিগত আক্রমণ হালাল হয় না, একথা আপনি শুধুই আমাকে বলেন কিভাবে? সার্বিকভাবে অবস্থান নিয়ে থাকলে, যারা এই পোষ্টে মাকসুদকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করেছে তাদেরকেও একই ‘বোঝ’ (!!) দেয়াটা কি আপনার কাছে হালাল মনে হয় না?

সত্যপীর এর ছবি

শুরু টা আপনেই করেছেন. আপনি দায় এড়াতে চাইলে চলবে?

..................................................................
#Banshibir.

হিমু এর ছবি

মাকসুদকে নিয়ে বিদ্রুপ করলে যদি কারো আঁতে ঘা লাগে, তাকে কি মাকসুদ-মৌলবাদী বলা যাবে?

সাফি এর ছবি

মাক্সুদিজম একটা নতুন ধর্মের নাম। দলে দলে যোগ দিন।

অটঃ মতিকন্ঠরে এই পোস্টটা দেখানো দরকার। নতুন একটা ক্যারেকটার ঢুকাইতে পারবে তাহলে।

অরফিয়াস এর ছবি

রবীন্দ্র সংগীতের আধুনিকায়ন নয় উনি মাক্সুদিয়ায়ন করতে চান। খেপেন কে?

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

তানিম এহসান এর ছবি

‘মাকসুদ ভাই এর যেসব গান সবচাইতে বেশি হিট সেগুলোর প্রায় বেশিরভাগই বিদেশী গান থেকে সরাসরি মেরে দেয়া কিন্তু কোথাও সেই কথাটি কিন্তু লেখাও থাকেনি' – বলে উদ্ভট ও ভিত্তিহীন তথ্যের ঝড় তুলে শিল্পী মাকসুদকে আক্রমণ করিনি।

মাকসুদ’কে ব্যক্তি আক্রমণ করিনি, সত্য বলেছি, উইথ রেফারেন্স। এখানে উদ্ভট কিংবা ভিত্তিহীন কিছুই নেই, আমি ফিডব্যাকের সাথেও কথা বলেছি। আপনি না জেনে সেটাকে চ্যালেঞ্জ করেছেন, বলেছেন ভুল প্রমাণিত হবো।

তিনটি গান-ই যথেষ্ট, আপনি যদি তাতেও সন্তুষ্ট না হোন তাহলে আমাকে আরও একটু কষ্ট করতে হবে, সেটা করতে চাইছিনা। ফিডব্যাক আমাদের বহু কিছু দিয়েছে, মাকসুদ ভাই-ও দিয়েছেন। শুধুশুধু একটা মানুষকে টেনে নামানোর জন্য যথেষ্ট পরিমাণ প্রয়াস আপনি নিয়েছেন শুধুমাত্র অন্ধ আবেগ থেকে, এইভাবে এতোটা প্রচারের আলোয় আসতে মনে হয় মাকসুদুল হক নিজেও চান নি!!

অরফিয়াস এর ছবি

পোস্ট লেখক হিসেবে প্রথম থেকেই কিছু প্রাসঙ্গিক যুক্তির সাথে আপনি আবোল তাবোল অপ্রাসঙ্গিক যুক্তি দেখিয়ে যাচ্ছেন। মাকসুদকে বিটিভি থেকে আপনার যুক্তি অনুযায়ী যদি "রবীন্দ্র-মৌলবাদীরা" ষড়যন্ত্র করে প্রত্যাহার করে তাহলে কি কখনোই এটা প্রমাণিত হয় যে তারাই মাকসুদের পেছনে পুলিশ লেলিয়ে দিয়েছে?

কথাটা কিছুটা এরকম যে, কোন ব্যক্তি আপনাকে দেখে নেয়ার হুমকি দিল, সেই রাতে আপনি খুন হলে, প্রমান থাকুক আর নাই থাকুক, ধরে নিতে হবে ঐ হুমকিদানকারী ব্যক্তিই খুনি?? !!! এবসার্ড !!

আপনার এধরনের কথা শুনে মনে হচ্ছে, রবীন্দ্র সংগীতের আধুনিকায়ন নিয়ে লেখা যতটা না আপনার উদ্দেশ্য তার থেকে বেশি আপনি জোর দিচ্ছেন মাকসুদের ব্যক্তিগত স্ক্যান্ডাল ঢাকা এবং আপনার ভাষায় তথাকথিত রবীন্দ্র-মৌলবাদীদের একহাত নেয়া।

নিচে আপনি যেটাকে রেফারেন্স হিসেবে দিয়েছেন সেই বইয়ের লেখক/তার বক্তব্য যদি মাকসুদ নিজেই হয় তাহলে সেটা কোন রেফারেন্স এর পর্যায়েই পড়ে না। কারণ প্রশ্নটা ব্যক্তি মাকসুদকে নিয়েই। তার বক্তব্য এখানে নিরপেক্ষ হিসেবে মেনে নেয়া যায়না। আর তার প্রথম স্ত্রী ২০০৪ সালে পরলোকগমন করেন, সুতরাং এই বিষয়টি ১৩ বছর পরে আবার সামনে এনে আপনি তর্ক উস্কে দিচ্ছেন কেন? ১৩ বছর পরে আপনি কি কোর্টের সব নথি ঘেঁটে প্রমান করতে পারবেন যে এর পেছনে তথাকথিত রবীন্দ্র-মৌলবাদীরা দায়ী?

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

সুমন চৌধুরী এর ছবি

আপনি যে দুইটা পয়েন্ট বললেন তার সাথে বৌ পিটানোর মামলার সম্পর্ক কী? ঐ মামলার বাদী কারা ছিলেন?

হিমু এর ছবি

কাউকে নিষিদ্ধ করার জোর দাবি তোলা এক জিনিস, আর তার গ্রেফতারের পেছনে হাত খুঁজে পাওয়া অন্য জিনিস। আপনাকে পরিষ্কারভাবে বলতে হবে আপনি কীভাবে দুয়ের মধ্যে সম্পর্ক খুঁজে পেলেন।

বিটিভি মাকসুদকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানোর এখতিয়ার রাখে নাকি রাখে না? বিটিভির কারণ দর্শানোর সাথে পুলিশের গ্রেফতারের কী সম্পর্ক?

ঝোপেঝাড়ে না পিটিয়ে গুছিয়ে উত্তর দেন দেখি।

তানিম এহসান এর ছবি

এই গাঙেয় ব-দ্বীপে’র মানুষের সহজাত প্রজ্ঞা, ভেতরের সরল টানাপড়েন, আবেগের উদ্ভাস আর চিরায়ত সুর এতটাই বেশি-যে এদেশের প্রতিটি এলাকায় আপনি খুঁজে পাবেন গায়েন/গাতক, বয়াতি, কীর্তনিয়া, বৈষ্ণব, পাগল, ফকির... বাউল... এরা কেউ কিন্তু প্রতিষ্ঠিত হবার জন্য, নাম কামানোর জন্য এমন হয়না, ভেতরে গান কথা বলে তাই তারা গান বাঁধেন, আমি আজ পর্যন্ত শুনিনি কোন বাউল বলেছেন তিনি গান লিখেছেন, তারা বলেন ‘গান বাঁধছি’ --সেই গান নিয়ে গবেষণা করে বহু মানুষ বহুকিছু পেয়েছে, যেমন আমার অনার্সের ডিসারটেশান এ আমি পেয়েছি নাম্বার এবং এখানে চাপাবাজি করছি! মাকসুদুল হক কি পেয়েছেন তা তিনিই জানেন!!!

এমনকি জীবদ্দশায় শাহ আব্দুল করিম তার গানের ফিউশন দেখে গেছেন, একটিবারের জন্য কি আমরা শুনেছি তিনি নিজ থেকে বলেছেন তাকে তার গানের মূল্য দেয়া হোক? এই এতটুকু ঊর্ধ্বে উঠতে পারেন বলেই মনে হয় তাদের গান নিয়ে বাকিরা হৈচৈ করে, ফিউশন এর ধাক্কায় আণবিক তাপ উৎপন্ন হয়ে যায় একেবারে! তারপর তার মৃত্যুর পর মৌলবাদিরা যখন তার ঘরে আক্রমণ করে তখন বাংলালিংক কিংবা তার আরও প্রচুর ভক্ত লোকের কোন খোঁজই থাকেনা।

উকিল মুন্সীর গান গেয়ে বারি ভাই তার প্রতিষ্ঠার প্রথম ধাপ পেরিয়েছিলেন, হাবিব যেমন বেছে নিয়েছিলেন শাহ আব্দুল করিম; পাশাপাশি বিজয় সরকার, রাধারমণ এর গান গেয়েছেন কতজন তার কোন হিসেব আছে? নেই --- এরকম কত নাম, তাদের গান মানুষের মুখে মুখে পৃথিবীর সব প্রান্ত প্রদক্ষিণ করেছে, করবে... কারণ সেখানে শুধু ‘নিজেকে খুঁজে ফেরার’ একটা নিরলস চেষ্টা... ব্যবসা নেই।

এইসব সরল, সহজ মানুষের ভেতরের গানকে পরিচিত করানোর পেছনে শুধুমাত্র মহান উদ্দেশ্যেই কাজ করেছে, বিষয়টা এত হালকা ভাবে দেখলে হবে ভাই?

হিরু শাহ বাউল-সাধক!! হীরু শাহ বাউল হতে পারেন কিন্তু সাধক নন। সাধক হওয়া এতো সহজ না, এটাতে জলের কল না যে চাপলেই জল বেরুতে শুরু করবে। মূলত মোবাইল কোম্পানিগুলোর আগ্রাসনে বাংলাদেশে প্রতিদিন একজন করে বাউল গজাচ্ছে, তিনমাসের মাথায় সেইসব বাউলের সাধক তকমা জুটে যাচ্ছে -- পৃথিবী কম্পমান! কিছুদিন আগে টিভিতে দেখলাম ‘পাগলা বাবুল’ নামে একজন বিরাট স্টার, এই লোক এমনকি ‘বাউল’ হতে পারেনি, এখনও ‘পাগল’ স্তরেই আছে, সে হয়েছে বাউল সাধক!!! মাথায় জটা থাকলেই কি আর সবাই বটবৃক্ষ হয়!!!

মাকসুদ ভাই মাকসুদ ভাইয়ের মত, কমও না, বেশিও না। তাকে জোর করে যেমন উঠিয়ে দেয়া যাবেনা তেমনি জোর করে নামানোও সম্ভব না। তবে হ্যাঁ, গায়ের জোরে প্রতিষ্ঠা দিতে গেলে ক্রমশ নামতে থাকবেন তিনি। কি দরকার?

আপনার এই লেখাটা আরও যুক্তিনির্ভর হতে পারতো আপনি যদি মাকসুদুল হক কেন্দ্রিকতা পরিহার করতেন। মুর্শেদ ভাই খুব করে চেষ্টা করেছেন, আপনি সেখান থেকেই না হয় আবার শুরু করুন।

হিমু এর ছবি

লালন না, ঐটা গগন হরকরার।

অরফিয়াস এর ছবি

চলুক

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

অতিথি লেখক এর ছবি

রিটন ভাই, শেক্সপিয়ারের নাটক এখনো মঞ্চস্থ হয়, সেখানে কিন্তু সেই নাটকের পরিচালক তার নিজের মত ইন্টারপ্রেট করেন, এই ধারা বিদেশে তো প্রচলিতই, দেশেও নিশ্চয়ই হয়, আমি শিওর আপনি আরো ভালো বলতে পারবেন। গানের সাথে চিত্রকর্মের তুলনার থেকে, গানের সাথে নাটকের তুলনাটাই কি বেশী যায় না?

--দিফিও

ধ্রুব বর্ণন এর ছবি

কপিরাইট নিয়ে সুমন চৌধুরী উপরে যা বলার বলে দিয়েছেন। নীচে দেখেন মোনালিসার উপর ১৯১৯ সালে Marcel Duchamp এর কুতুবি।

মোনালিসা পাবলিক ডোমেইনে। ওপেন টু কুতুবি।

এই কুতুবির একটা নাম আছে। Derivative work। মজার ব্যাপার হচ্ছে ডেরিভেটিভ ওয়ার্কের আবার কপিরাইট আছে। যেমন উপরের ছবিটার উপর ২০৩৯ পর্যন্ত ফ্রান্সে কুতুবি করা যাবে না। ফলে

পিকাসো তোরে মেধাসত্ব দিয়ে যায়নি। এস ডি বর্মণও দিয়ে যায়নি, দিয়ে যায়নি রবীন্দ্রনাথও

সত্য। তবে এটাও সত্য যে একটা সময় পরে এই সবই পাবলিক ডোমেইনে, ওপেন টু কুতুবি। অবশ্য এইসবের তোয়াক্কা না করে আপনার নিজের মন মতো প্রতিক্রিয়া ও পরামর্শ জানানোর অ্যাবসল্যুট অধিকারকে সম্মান করি। খাইছে

সুজন চৌধুরী এর ছবি

লেখক সাহেব,
আমি রিটন ভাইয়ের সাথে একমত। কু‌তুবি করলে নিজের লেখা গানের ‌উপরই করা উচিৎ।
রবি বুড়া নিজে যখন কুতুবি কর্ছে নিজের লেখা গানের উপরি কর্ছে( সেটা অন্যের সুরে হৈলেও)।
আপনাদের প্রজন্মের সাংগীতিক প্রতিনিধি মাকসুদ সাহেবকে বইলেন নিজের গানের উপর কুতুবি করতে আপনারা তাকে দেখবেন এবং শুনবেন তাতে কারো আপত্তি থাকার কথা না!!
আর বইলেন রবি বুড়ার গান যত পারে গাইতে ... আমাদের বিনুদনের অভাব পর্ছে!
এই যুগে কেউ কাউরে নিষিদ্ধ করতে পারেনা।
আর সবচেয়ে বড় বিষয় মাকসুদ সাহেবকে কেউ নিষিদ্ধ করে নাই কখনো। আপনাদের প্রজন্মের সাংগীতিক প্রতিনিধিকে পুলিশ গ্রেফতার করেছিলো তার বউকে পিটানোর জন‌্য। ঐ সময় সবকতটা জাতীয় দৈনিকে মাকসুদ সাহেবের লুংগী আর স‌্যান্ড গেন্জি পরা পেটে পুলিশের মোটা দড়ি বান্দা ফটো ছাপানো হৈছিলো। আপনাদের প্রজন্মের সাংগীতিক প্রতিনিধিকে বইলেন সবাই ভোলেনা!

অরফিয়াস এর ছবি

সুজনদা আপনার তথ্যানুযায়ী যদি ঘটনাটি ঘটে থাকে, তাহলে,

মিথ্যে মামলায় গ্রেফতার করাতে পর্যন্ত রবীন্দ্র মৌলবাদীদের বুক কাপেনি একটুও।

এই গুরুতর অভিযোগ সম্পর্কে লেখকের সুনির্দিষ্ট বক্তব্য জানতে চাচ্ছি। এই অভিযোগের পেছনে লেখকের উপযুক্ত তথ্য-প্রমান প্রদর্শনের দাবি জানিয়ে গেলাম।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

আপনি সুজনদার বক্তব্যের "উপযুক্ত তথ‌্য-প্রমান প্রদর্শনের" দাবী করছেন না, কিন্তু লেখকের ক্ষেত্রে করছেন দেখে বুঝতে পারছি আপনি "এ বিষয়ে" কতটা একচোখা।

অরফিয়াস এর ছবি

মুর্শেদ ভাই, প্রথমত তথ্যটি লেখক উপস্থাপন করেছেন, যখন সেটা বিষয়ে কথা উঠলো আশা করি তখন সেটার ভিত্তি তুলে ধরা লেখকেরই দায়িত্ব। যদি তিনি সেটা উপস্থাপন করেন তাহলে সুজনদার তথ্য ভুল হলে সেখানেই প্রমাণিত হয়।

আর একটা ব্যাপার, যদি সুজনদা কথাটি নাও তুলতেন, তাও পুলিশি গ্রেফতারের মতো বিষয়ে তিনি যখন জোর দিয়েই বলছেন ঘটনাটি মিথ্যা-বানোয়াট আশা করি তিনি যথেষ্ট তথ্য প্রমানের জোরেই বলছেন। নাহলে সেটা লেখকের একপক্ষের প্রতি ক্ষোভ ছাড়া আর কিছুই প্রকাশ পায়না। সচলে এধরনের বিষয়গুলোর পেছনে তথ্য উপস্থাপনে জোর দেয়া হয় বলেই জানতাম। একচোখার তো কিছু নেই!!

খোঁজাখুজি করে এই পেলাম, সত্যতা জানতে পারলে খুশি হবো।

DAILY STAR, Nov 4, 1999
Maksud sent to jail

Popular vocalist Maksudul Haq, who was arrested by Pallabi
Police on charges of beating his wife on Tuesday, was
granted bail yesterday.

Maksud, however, was sent to the Dhaka Central Jail since his
bail bond could not be furnished within the specified
time limit yesterday.

Maksud was arrested from his own house at Pallabi in the city
Tuesday noon on charges of beating his wife. His wife
had lodged the case, Pallabi police said.

****
DHAKA, Nov 3 (AFP) - A Bangladeshi pop singer famous here for
helping pioneer the mix of Bengali and western music has been
arrested for allegedly beating his wife, police said Wednesday.
Maksud (eds: one name) appeared in court Wednesday but no
details were immediately available.

He was arrested at his suburban Pallabi residence after police
broke down the main door and rescued his wife who was allegedly
being beaten.

The singer recently formed his own band after abandoning the
popular "Feedback" group

তিনি গ্রেফতার হয়েছেন এটা তথ্য। কিন্তু এর পেছনে "রবীন্দ্র-মৌলবাদীদের" হাত আছে এটা লেখকের অভিযোগ। এই অভিযোগের পেছনের ভিত্তিটা জানতে চাইছি।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

যদি তিনি সেটা উপস্থাপন করেন তাহলে সুজনদার তথ্য ভুল হলে সেখানেই প্রমাণিত হয়।

যদি সুজন্দা উপস্থাপন করেন তাহলেও একই লক্ষ্য অর্জিত হয়।

মাকসুদের এই ব্যাপারটা আমরাও শুনেছি। কিন্তু এটাও দেখেছি যে, জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জকে কিভাবে সেক্সুয়াল চার্জ দিয়ে হেনস্থা করা হচ্ছে। যেখানে উন্নত বিশ্বে এই ধরণের কাজ হতে পারে সেখানে আমাদের দেশে এই রকম কিছু হলে অবাক হবো না। তবে এটা সত্যি আমার এই কথাটা স্পেক্যুলেশন। আমার কাছে তথ্য নেই। লেখক হয়ত আলোকপাত করতে পারবেন।

আর মাকসুদ খারাপ না ভালো এই তর্ক যাচ্ছি কেনো? মূল ইস্যু রবীন্দ্র সঙ্গীতকে নতুন ভাবে গাওয়া যাবে কিনা।

অরফিয়াস এর ছবি

আমার তথ্য উপস্থাপনটা আশা করি ঠিক আছে। আর ঘটনা ১৩ বছর আগের, এটাকে এখন যেকোনো ভিত্তিতে উপস্থাপন করলে এর সত্যতা যাচাই করা কষ্টসাধ্য, একারণেই প্রশ্নটা করা। কারণ আমাদের দেশে পুরনো ঘটনার ভিত্তি পরিবর্তন করে তাকে নতুন মোড়কে সাজিয়ে উপস্থাপন করার একটি বিপদজনক ধারা লক্ষিত হয়। আর তাতে জন্ম নেয় সন্দেহ। যাই হোক নিচে লেখক বইয়ের প্রসঙ্গ উল্লেখ করেছেন এছাড়া আমিও একটি লেখা পেয়েছি এখানে। ঘটনাটি স্বচ্ছ নয় এটা বোঝা যাচ্ছে।

জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ এর কাজের প্রতিক্রিয়ার মাত্রার সাথে মাকসুদের গানের আধুনিকায়ন এর কারণে সৃষ্ট বিতর্ক একই মাত্রার বলে মনে হয়না।

আর এখানে ব্যক্তি মাকসুদ খারাপ ভালো কিনা সেটা প্রসঙ্গ নয় অবশ্যই, কিন্তু দুই ছটাক প্রাসঙ্গিক লেখার সাথে যখন এক ছটাক অপ্রাসঙ্গিক তথ্য চলে আসে তখন খাপছাড়া লাগে বৈকি। আর পাঠকের নানা প্রশ্নের জবাবে লেখকের তীর্যক মন্তব্যগুলো দেখলেই কিছুটা আন্দাজ করা সম্ভব। লেখক যেভাবে "রবীন্দ্র-মৌলবাদ" এর বিরোধিতা করেছেন একইভাবে নানা প্রশ্নের উত্তরে তিনি নিজেও কিছুটা একপাক্ষিক অবস্থান নিয়েছেন বৈকি।

তবে যেভাবে একচোখা দাবি করলেন তাতে একটু অবাক হলাম। ব্যাপার না।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

মোখলেছুর রহমান সজল এর ছবি

এখানে উল্লেখিত উদৃতিটুকু 'আমি বাংলাদেশের দালাল বলছি' - শীর্ষক বইয়ের ১৫৮-১৫৯ পৃষ্ঠা থেকে হুবহু উল্লেখিত। লিখেছেনঃ ফখরুল চৌধুরী, ১৬.০৮.২০০২ ইং।

রেফারেন্সঃ আমি বাংলাদেশের দালাল বলছি - মাকসুদুল হক
প্রকাশকঃ সময় প্রকাশন
প্রথম প্রকাশঃ অক্টোবর, ২০০২

১৯৯৯ তে বাংলা গানের ইতিহাসের প্রথম জ্যাজ রক ফিউশন এ্যালবাম 'ওগো ভালবাসা' বের করেন সিডি সাউন্ড প্রকাশন এটি ছিল 'মাকসুদ ও ঢাকা'র দ্বিতীয় এলবাম।

এই এ্যালবামটিতে তিনি রবীন্দ্রনাথের একটি গান নিয়ে 'ইন্ডো জ্যাজ ফিউশন' এক্সপেরিমেন্ট করেন। গানটি যখন বিটিভিতে ১৯৯৯ এর জুলাই-এ সম্প্রচারিত হয়, তখন তা ভীষণ বিতর্কের সৃষ্টি করে। 'রবীন্দ্রনাথ ২০১০' শিরোনামের এই গানটির জন্য ট্রাডিশনাল রবীন্দ্র অনুসারীরা মাকসুদকে পাবলিক লাইফ থেকে নিষিদ্ধ করার ও দৃষ্টান্তমূলক কঠোর শাস্তি দেবার দাবী জানান।

ইন্টারনেটের মাধ্যমে এই বিতর্ক আন্তর্জাতিকতা পেতে খুব বেশি দিন সময় লাগেনি। বিবিসি ওয়ার্ল্ড নিউজ এই বিতর্কটি কাভার করে।

তার এই 'অপরাধে'র কারণে বিটিভি শোকজ করলে মাকসুদ তার স্বভাবগত স্বকীয়তায় তা পাত্তা দেননি ও উত্তর দেবার প্রয়োজনও মনে করেননি।

এই বিতর্কের ফলস্বরুপ বাংলাদেশের মিডিয়া মাফিয়া ও সাংস্কৃতিক সিন্ডিকেট মাকসুদের ঔদ্ধত্যের জন্য তাকে শিক্ষা দেবার সিদ্ধান্ত নেয়। তারই ধারাবাহিকতায় তারা ফাঁদেন এক ভয়াবহ ষড়যন্ত্র। ৫৪ ধারায় কোন অভিযোগ বা ওয়ারেন্ট ছাড়াই ১৯৯৯ এ মাকসুদকে পুলিশ তার পল্লবীর গৃহ থেকে গ্রেফতার করে। তার বিরুদ্ধে আনা হয় বানোয়াট অভিযোগ; সন্ত্রসী চক্রের নেতা, গ্রেফতার প্রতিরোধের চেষ্টা, বেআইনি অস্ত্র রাখা। গ্রেফতারের পর তার ওপরে চালানো হয় পাশবিক, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। তবে মিডিয়া এটাকে প্রচার করে ভিন্নভাবে। মূলধারার মিডিয়া লেখে- 'মাকসুদকে বউ পেটানোর অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে' যদিও তার স্ত্রী এ ধরণের কিছু হওয়ার কথা জোরালোভাবে অস্বীকার করেন। এ গ্রেফতার ও হয়রানী ছিল মাকসুদের পাবলিক ইমেজ ধ্বংস করার এক জঘন্য ষড়যন্ত্র।

মাকসুদের সাথে মিডিয়ার সম্পর্ক কখনই সুখকর ছিল না। মূলধারার মিডিয়াকে মাকসুদ তার গান ও লেখালেখিতে সর্বদাই এস্টাবলিশমেন্ট-এর লেজুর বৃত্তির দায়ে অভিযুক্ত ও তিরস্কার করে এসেছেন। তাদের চিহ্নিত করাতেই মাকসুদের ওপর মিডিয়ার এই ক্ষোভ ও আক্রমণ।

যাই হোক, ২০০০ সালের অক্টোবরে মাকসুদের বিরুদ্ধে আনা সমস্ত অভিযোগ মিথ্যা বলে প্রমাণিত হয় ও মহামান্য আদালত তাকে এই মামলা থেকে অব্যাহতি দেন।

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

চলুক

তানিম এহসান এর ছবি

চলুক

সুমন চৌধুরী এর ছবি

এইখানে প্রমাণ কোথায়? এইটা তো একটা মন্তব্য !!!! আপনি নিজে যা করলেন সেইটা এই মন্তব‌্যের প্রতিধ্বনি। এইখানে তথ্যপ্রমাণ কৈ?

কালো কাক এর ছবি

্রেফারেন্স দিতে পারবো না, তবে মাকসুদ বউ পেটানোর অভিযোগে জেলে গিয়েছিলেন। পত্রিকায় কী ছবি ছাপা হয়েছিলো সেটা অবশ্য মনে নাই। ঘটনাটা মনে আছে কারণ সেইসময় পছন্দের শিল্পীদের একজন ছিলেন মাকসুদ।

অতিথি লেখক এর ছবি

নতুন প্রজন্মের কাছে পুরনো গান নতুন করে তুলে দেয়ার শুরুটা বেশ আগেরই তো । বিশেষ করে লোকগান গুলো’র ক্ষেত্রে এ প্রচেষ্টা লক্ষণীয় । রবীন্দ্র-নজরুল সঙ্গীত’এ যার আঁচ তুলনামূলক ভাবে কম বলেই মনে হয় । এটা খারাপ প্রচেষ্টা কখনই বলি না ততক্ষণ পর্যন্ত যতক্ষণ গানটির মূল ভাব ঠিক রাখা হয় । মূল ভাব আমি যদিও বুঝি না । আমি গানের কেবল শ্রোতা, শুনতে ভাল লাগে বলেই শুনি । লালন-রবীন্দ্র হোক বা হার্ড রক হোক ।

মাকসুদ অনেক পছন্দের হলেও তাঁর পরিবেশিত রবীন্দ্রসঙ্গীত ভাল লাগে নি । অর্ণব বা শাহানা’র কাজ ভাল লেগেছে । তাঁরা শান্তিনিকেতনের বলে? হয়তো, বা কারণ তাঁরা জানেন গানটা কীভাবে ভেতরে ধরে নিয়ে গাইতে হয় । সেটা তাঁরা শিখেছেন । মাকসুদ এর ভুল কোথায় ছিল তা ধরিয়ে দেয়া যেত সে সময় । বা এখনো যারা ভুল সুর-তাল-লয়ে চেষ্টা করছেন তাদেরকেও শোধরানো তো যায় ।

আপনি যন্ত্রসঙ্গীতের উপর বেশ জোর দিয়েছেন । আপত্তি নেই । কিন্তু বাণী নির্ভর গান হেভি ডিসটর্শন দিয়ে গাইলে কেমন লাগবে শুনতে কৌতূহল হচ্ছে বৈকি । আবার এখনকার সফটওয়্যার এর “ডুম ডুম ডুম তাক” এর সাথে “র্যা প” যোগ করলে কেমন লাগবে সেটা শোনার কৌতূহলও নেই । মাফ করবেন । নতুন প্রজন্ম হয়তো শুনবে ।

প্রাসঙ্গিক হবে হয়তো- নতুন অনেকে পুরনো গানগুলো গেয়ে, বা সঙ্গীতায়জন করে রীতিমতো বিখ্যাত হয়ে যাচ্ছে বা গিয়েছে । শ্রোতারা যখন গানগুলো শুনছে(নতুন প্রজন্ম) তারা নতুনদের গান এবং “সম্পূর্ণ নতুন গান” বলে ধরে নিয়েই হয়তো শুনছে । আপনি আনিলা-হ্যাপী আখন্দ এর উদাহরণ দিয়েছেন । এখানে একজন নতুন আলোয় উজ্জ্বল হচ্ছে কিন্তু যার আলোতে সে উজ্জ্বল তাকে কতটুকু মনে করছে? এ্যালবামে বা কনসার্টে? গান গুলো “বাঁচিয়ে” রাখার দাবী নিয়ে আসা নতুনেরা গানগুলো’র স্রষ্টাদের কী ধামাচাপা দিচ্ছে না? এ ব্যাপারটা তো “ট্রিবিউট” বলে পরিচিত- অথচ আক্ষরিক অর্থে কী “কভার” দিয়ে ঢেকে ফেলা হচ্ছে?

কড়িকাঠুরে

মোখলেছুর রহমান সজল এর ছবি

আপনি বোধহয় আমাকে সফটওয়্যার এর “ডুম ডুম ডুম তাক” গানের একনিষ্ঠ শ্রোতা ভেবে বসে আছেন। যাই হোক সেই আলোচনায় যেতে চাচ্ছি না। শুধু আমার লেখা মিউজিকের প্রথম ব্লগটি শেয়ার দিলাম। (দয়াকরে বানান জনিত কোন কিছুই নতুন করে উত্থাপন করবেন না। সেটা ঐ ব্লগেই সুরাহা হয়েছিল বলেই জানি।)
http://www.sachalayatan.com/node/41741

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনার আগের কিছু লেখা পড়ে কখনই মনে হয়নি যে আপনি “ডুম ডুম ডুম তাক” সফটওয়্যার এর ভক্ত । কিন্তু আপনি যখন নতুনদের উপযোগী করে পুরনো গানগুলোকে ঢেলে সাজাতে বলেন তখন আমাকে ডেথ মেটাল এর পাশে তথাকথিত “মেলোডিয়াস” বা “র্যা প” কেউ ধর্তব্যের মধ্যে নিতে হয় কারণ এ ঝোনর্ গুলোও নতুনদের আকৃষ্ট করে রেখেছে । এদের বাদ দেই কী করে বলুন? রবীন্দ্র হোক- শচীন দেব হোক- আরকুম শাহ হোক- যে গানই নতুনরা করুক না কেন বুঝে করুক । যার সৃষ্টি তিনি তা কোন দৃষ্টিকোণ থেকে সৃষ্টি করছিলেন? চিল্লিয়ে-স্টেজ কাপানো রকিং আর নজরুলের মৌনতাই রকিং...

কড়িকাঠুরে

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

চিল্লিয়ে-স্টেজ কাপানো রকিং আর নজরুলের মৌনতাই রকিং...

এই সিদ্ধান্ত বা ফতোয়া কি আপনার?

অতিথি লেখক এর ছবি

আমি কেবল মনের ভাব প্রকাশ করেছি, কোন সিদ্ধান্ত বা ফতোয়া এটাকে বলে না বোধহয় ।

কড়িকাঠুরে

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

কিন্তু আপনার এই বক্তব্য সবার জন্য প্রযোজ্য সেটা ইমপ্লাই করলেন। অর্থাৎ আমি যদি বলি নজরুল আসলে ভালো মানায় রক সঙ্গীত হিসেবে (অর্থাৎ এই বক্তব্য সবার ক্ষেত্র প্রযোজ্য)। সেটা কি মেনে নিবেন? নিজের বক্তব্য আমি এভাবে বলতাম, আমার কাছে নজরুলের গান রক সঙ্গীতের ফর্মেই ভালো লাগে।

মোখলেছুর রহমান সজল এর ছবি

চলুক

অতিথি লেখক এর ছবি

আমার কথা সার্বজনীন হবে তা বলতে চাইনি কিন্তু ঐ ভাবেই প্রকাশ পেয়েছে । যাই হোক- এখন বিদ্রোহী নজরুল দুর্দান্ত রকমের 'রকিং' আবার প্রেমিক নজরুলও 'রকিং' অন্যভাবে । কিন্তু গানের ঝোনর্ ধরে বললে এ গানগুলো 'রক' গান নয় ।

কড়িকাঠুরে

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

রবীন্দ্র-মৌলবাদ শব্দটি নিয়ে কথা উঠেছে। উইকিতে ফান্ডামেন্টালিজমের সংজ্ঞা আছে:

Fundamentalism is the demand for a strict adherence to specific theological doctrines usually understood as a reaction against Modernist theology, primarily to promote continuity and accuracy.

বাংলায় (ভাবানুবাদ)

মৌলবাদ হচ্ছে প্রবাহমানত এবং নির্ভুলতা ধরে রাখার উদ্দেশ্যে একটি ধর্মীয় মতবাদ নির্ভুল ভাবে পালনের দাবী, যেটা ধর্মের আধুনিকায়নের বিরূপ প্রতিক্রিয়া হিসেবে দেখা হয়।

আরও বলা আছে:

"Fundamentalism" is sometimes used as a pejorative term, particularly when combined with other epithets (as in the phrase "right-wing fundamentalists").

অর্থাৎ মৌলবাদ শব্দটিকে কখনো কখনো বিষেশণ হিসেবে জুড়ে নিন্দা করার জন্য ব্যবহৃত হয়।

এখন উপরের সংজ্ঞায় রবীন্দ্রসঙ্গীত বসিয়ে দেখি।

রবীন্দ্র-মৌলবাদ হচ্ছে প্রবাহমানত এবং নির্ভুলতা ধরে রাখার উদ্দেশ্যে রবীন্দ্রসঙ্গীত নির্ভুল ভাবে পালনের দাবী, যেটা রবীন্দ্রসঙ্গীতের আধুনিকায়নের বিরূপ প্রতিক্রিয়া হিসেবে দেখা হয়।

ফিটস দ্যা ইকুয়েশন!

মোখলেছুর রহমান সজল এর ছবি

সুপার!
চলুক

বাপ্পীহায়াত এর ছবি

তা শেষ পর্যন্ত্য কি শিখলাম?
আসুন রবি বুড়োর মত 'ভুল' না করে আমরা আমাদের 'সৃষ্টি' গুলোকে কপিরাইট আইন দিয়ে সংরক্ষিত করে রাখি।
ভবিষ্যতের ম্যাক'রা কিন্তু আরো অনেক প্রতিভাবান(!) হবেন...

সুজন চৌধুরী এর ছবি

লেখক সাহেব,
পোস্টের হেড লাইন থেকে শুরু করে শেষ পর্যন্ত বক্তব‌্য হয়ে দাড়িয়েছে যারা শুদ্ধভাবে রবীন্দ্র সংগীত গাইতে চায় তারা রবীন্দ্র মৌলবাদী আর রবীন্দ্র সংগীতকে বিকৃত করে যারা এক্সপেরিমেন্ট বলে চালাতে চান তারা রবীন্দ্র সংগীতের আধুনিকীকরণ করছেন। আর সেটা প্রমাণের জন্য আপনি বন্দুক রাখলেন মাকসুদের কান্দে, সেই সাথে ১টা মিথ্যাচার করলেন যারা শুদ্ধভাবে রবীন্দ্র সংগীত গাইতে চায় তারা মাকসুদকে পুলিশে ধরি‌য়ে দিয়েছে!!!
আমি মূল ঘটনা উল্লেখ করলাম যে কী কারণে মাকসুদকে পুলিশ ধরেছিল, আপনি আমার কাছে প্রমাণ চাইলেন !!! অথচ আপনি যে ঠিক বলছেন সেটার কোন প্রমাণ দিলেন না এটা কেমন কথা হলো !!??
এরকম জল ঘোলা করে মাছ শিকার করার চেষ্টা করলে তো উষ্ঠা খাইতেই হবে। মাকসুদকে বউ পিটানোর জন্যই এ্যারেস্ট করা হয়েছিলো এবং সেই জল বহুদূর পর্যন্ত গড়ায় প্রয়োজনে সবই উল্লেখ করা হবে। কিন্তু তার আগে আপনাকে প্রমাণ করতে হবে মাকসুদ কে কারা জেলে পাঠিয়েছিলো। যেহেতু আপনি মাকসুদের নাম উল্লেখ করেছেন এটা আপনার দায়িত্ব।
এবার আমার ১টা প্রশ্নের উত্তর সরাসরি দেন কোন রকম ভনিতা না করে
কেন আপনার মনে হচ্ছে যে মাকসুদ গান বিকৃত করে নি ? !!!

অরফিয়াস এর ছবি

চলুক

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

স্যাম এর ছবি

চলুক

সুমন চৌধুরী এর ছবি

মোকছেদের গান্টা শুনলাম মোটে। পুরাটা শোনার রুচি হইলো না। মনে হইল কান প‌্যাচাইয়া একটা চটকানা মারি।

অরফিয়াস এর ছবি

আপনে রবীন্দ্র-মৌলবাদী !! একজন শিল্পীসত্ত্বারে আপনে থাপড়াইতে চান !! উপরে মন্তব্য দেইখেন। চোখ টিপি

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

সুমন চৌধুরী এর ছবি

যা বলার সজ্ঞানে সচেতনভাবে বলেছি।

অরফিয়াস এর ছবি

চলুক

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

মোখলেছুর রহমান সজল এর ছবি

বাহ্‌ একজন থাবড়াইতে চান আরেকজন অ্যাপ্রিশিয়েট করেন।
এটাই কি সচেতনতা? চিন্তিত
হবে হয়ত . . .

সুজন চৌধুরী এর ছবি

মোখলেছুর রহমান সজল সাহেব, আমার প্রশ্নের ‌উত্তর দিলেন্না যে!!!!??

অরফিয়াস এর ছবি

সচেতনতা নিয়া মাথা পরে ঘামান, আগে সবার প্রশ্নের উত্তর দেন, এদিক-ওদিক কথা বহুত ঘুরাইছেন। আর না পারলে অফ যান।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

সুজন চৌধুরী এর ছবি

ভালো মানুষের ছেলে মনে হয় পলাতক!!! প্রশ্নের উত্তর দিতে মনে হয় আরামবোধ করতেছেন না!! দেন্না ভাই উত্তরটা ... বসে আছি পথচেয়ে ! নাহয় একটু ধরা খাইলেনই! সত‌্যটা তো জানা হবে!!!!

অরফিয়াস এর ছবি

আমি যখন প্রথম মন্তব্যটা করি তখনই মনে করেছিলাম পোস্টদাতারে প্রশ্নটা করি, কিন্তু ভাবলাম এতো জোর দিয়ে বলছে যখন তখন জেনে শুনেই বলবে হয়তো আর ঘটনাও তো কম পুরনো না!! এখন দেখি কোন প্রমান নেই উল্টো যাকে তাকে মৌলবাদী ট্যাগ করে যাচ্ছে, তখন মেজাজটা চটে গেলো। একে তো নিজে ফালতু কথা বলছে তার উপরে কেউ প্রশ্ন করলে তাকে ফালতু কথা বলে যাচ্ছে!! কই এখন কই তার প্রমান, এখন তো আওয়াজ নেই !!

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

সুজন চৌধুরী এর ছবি

আমি ... বসে আছি পথচেয়ে ! দেঁতো হাসি

অরফিয়াস এর ছবি

আম্মো !! দেঁতো হাসি

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

সুজন চৌধুরী এর ছবি

মোখলেছুর রহমান সজল সাহেব ভাই, কৈ গ্লেন?!!!

সুজন চৌধুরী এর ছবি

আরে ও ভাই মোখলেছুর রহমান সজল!!!কৈ গ্লেন?!!! চাপাচুপা মাইরা কৈ পলাইলেন !!!
লজ্জা পাইছেন নাকি!!?

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।